#পরহেজগারিতা
Explore tagged Tumblr posts
Text
তাকওয়ার পোশাক শ্রেষ্ঠ পোশাক
The Garment of Piety is the Best Garment
তাকওয়া : এক মহিমান্বিত গুণ
তাকওয়া মুমিনের এ��টি অপরিহার্য গুণ। কুরআন মাজীদে তাকওয়া অবলম্বনকারীদের জন্য অনেক সুসংবাদ বর্ণিত হয়েছে। আল্লামা ফাইরোযাবাদী রাহ. তাঁর কিতাব بصائر ذوي التمييز -এ কুরআনে কারীমে বর্ণিত সুসংবাদগুলো উল্লেখ করেছেন। কুরআনে কারীমের প্রায় ২৭ স্থানে মুত্তাকীদের জন্য সুসংবাদ উল্লেখিত হয়েছে। কিছু সুসংবাদের আয়াত এখানে উল্লেখ করা হল-
১. আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্যের সুসংবাদ :
.
নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁদের সাথে থাকেন, যারা তাকওয়া অবলম্বন করে। -সূরা নাহল (১৬) : ১��৮
২. গুনাহ মাফ এবং বিরাট আজরের সুসংবাদ :
যে তাকওয়া অবলম্বন করে আল্লাহ তার গুনাহসমূহ মাফ করে দেন এবং তাকে বিরাট আজর দান করেন। -সূরা ত্বলাক (৬৫) : ৫
৩. মাগফিরাতের সুসংবাদ :
তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল দয়ালু। -সূরা আনফাল (৮) : ৬৯
৪. সকল কাজ সহজ হওয়ার সুসংবাদ :
যে তাক্বওয়া অবলম্বন করে আল্লাহ তার সব বিষয় সহজ করে দেন। -সূরা ত্বলাক (৬৫) : ৪
৫. সফলতার সুসংবাদ :
নিশ্চয়ই মুত্তাকীদের জন্য রয়েছে সফলতা। -সূরা নাবা (৭৮) : ৩১
৬. প্রশস্ত রিযিকের সুসংবাদ :
এবং তাকে রিযিক দান করেন অকল্পনীয়ভাবে। -সূরা ত্বালাক (৬৫) : ৩
৭. সম্মান-মর্যাদার সুসংবাদ :
.
নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তি হচ্ছে মুত্তাকীগণ। -সূরা হুজুরত (৪৯) : ১৩
৮. আল্লাহর মহব্বতের সুসংবাদ :
নিশ্চয়ই আল্লাহ মুত্তাকীদেরকে ভালোবাসেন। -সূরা তাওবা (৯) : ৪
৯. কবূলিয়্যাতের সুসংবাদ :
নিশ্চয়ই আল্লাহ মুত্তাকীদের থেকে কবুল করেন। -সূরা মায়েদা (৫) : ২৭
১০. শ্রেষ্ঠত্বের সুসংবাদ :
যাঁরা তাকওয়া অবলম্বন করে তারা কিয়ামতের দিন তাদের (কাফেরদের) উপরে থাকবে। -সূরা বাকারা (২) : ২১২
১১. শাস্তির ভয় থেকে মুক্ত থাকার সুসংবাদ :
যারা তাকওয়া অবলম্বন করে এবং সৎ থাকে, তাদের কোনো ভয় নেই এবং তারা কখনো দুঃখিত হবে না। -সূরা আরাফ (৮) : ৩৫
১২. জান্নাতে বিভিন্ন নিআমতের এবং আল্লাহর দীদার লাভের সুসংবাদ :
.
যারা তাকওয়া অবলম্বন করেছে তারা থাকবে উদ্যানরাজি ও নহরে। সত্যিকারের মর্যাদাপূর্ণ আসনে, সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী মহা সম্রাটের সান্নিধ্যে। -সূরা ক্বমার (৫৪) : ৫৪-৫৫
তাকওয়া অর্জনের ৭ উপায়
তাকওয়া মানে সতর্ক ও সচেতন থাকা। বান্দা সতর্ক থাকবে কিছুতেই যেন গুনাহের কাজ সংঘটিত না হয়; আর নেক আমল কিছুতেই যেন না ছোটে। হজরত ওমর ফারুক (রা.) উবাই ইবনে কাব (রা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন, তাকওয়া কী? উবাই ইবনে কাব (রা.) বলেন, আপনি কি কখনও কাঁটা বিছানো পথে হেঁটেছেন? ওমর (রা.) বললেন, হ্যাঁ। উবাই ইবনে কাব (রা.) বলেন, কাঁটা বিছানো পথে আপনি কীভাবে হেঁটেছেন? ওমর (রা.) বলেন, সতর্ক-সচেতনতার সঙ্গে যাতে আমার শরীরে কাঁটা না বিঁধে। উবাই ইবনে কাব (রা.) বললেন, এটাই হচ্ছে তাকওয়া।
কাঁটাযুক্ত পথে কাঁটা থেকে বাঁচার জন্য মানুষ যেভাবে সতর্ক হয়ে চলে, ঠিক সেভাবে আল্লাহর শাস্তি থেকে বাঁচার জন্য আল্লাহর নিষিদ্ধ বিধানগুলো থেকে বেঁচে থাকা এবং আল্লাহর কাছ থেকে পুরস্কার পাওয়ার আশায় নেক আমল করার নামই হলো তাকওয়া। অর্থাৎ রবের ভয়ে পাপ থেকে বিরত থাকা। রবের রহমতের আশায় সওয়াবের কাজ না ছাড়া। (তাফসির��� ইবনে কাসির: ১/৪০)
আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের পছন্দের বান্দ��� হতে চাইলে তাকওয়া-পরহেজগারির বিকল্প নেই। এ কারণেই তিনি পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে তাকওয়া অবলম্বনের আদেশ করেছেন এবং তাকওয়া অবলম্বনকারীদের ভালোবাসেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে মুত্তাকি বান্দারা আল্লাহর কাছে পছন্দনীয় এবং ভালোবাসার পাত্র।’ (সুরা হুজরাত: ১৩)
যেসব আমলের মাধ্যমে তাকওয়া অর্জন করা সহজ হয়, পবিত্র কোরআনের আলোকে সে বিষয়গুলো নিচে আলোচনা করা হলো—
১) কোরআন শিক্ষা করা আল্লাহ তাআলা বলেন, নিশ্চয় আমি এ কোরআনে মানুষের জন্য সব দৃষ্টান্তই বর্ননা করেছি, যাতে তারা শিক্ষা গ্রহণ করে। বক্রতামুক্ত আরবি কোরআন,যাতে তারা তাকওয়া অবলম্বন করে। (সুরা জুমার: ২৭-২৮)
২) আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা করা আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা করার মাধ্যমে অন্তরে তাকওয়া সৃষ্টি হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই রাত ও দিবসের বিবর্তন এবং আসমানসমূহ ও জমিনে যা আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন, তাতে বহু নিদর্শন রয়েছে এমন কওমের জন্য, যারা তাকওয়া অবলম্বন করে।’ (সুরা ইউনুস: ৬)
৩) ইখলাসের সঙ্গে আল্লাহর ইবাদত করা আল্লাহ তাআলার ইবাদতের মাধ্যমে অন্তরে তাকওয়া সৃষ্টি হয়, চাই সেটা ফরজ ইবাদত হোক কিংবা নফল। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মানুষ! তোমরা তোমাদের রবের ইবাদত করো। যিনি সৃষ্টি করেছেন তোমাদেরকে এবং তোমাদের আগে যারা ছিল, তাদেরকে। যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করো। (সুরা বাকারা: ২১)
৪) রোজা তাকওয়া সৃষ্টি করে যেসব ইবাদতের মাধ্যমে অন্তরে তাকওয়া সৃষ্টি হয়, তন্মধ্যে একটি হলো ‘রোজা’। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেভাবে ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর। যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করো।’ (সুরা বাকারা: ১৮৩)
৫) পরকালের ভয়াবহতা বিষয়ে আয়াত ও হাদিস পাঠ করা পরকাল ও তার ভয়াবহতা সম্পর্কিত কোরআনের আয়াত ও হাদিসগুলো বেশি বেশি অধ্যয়ন করার মাধ্যমে অন্তরে তাকওয়া সৃষ্টি হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, তাদের জন্য তাদের উপর দিকে থাকবে আগুনের আচ্ছাদন আর তাদের নিচের দিকেও থাকবে (আগুনের) আচ্ছাদন; এর মাধ্যমে আল্লাহ তাঁর বান্দাদের ভয় দেখান। হে আমার বান্দারা! তোমরা আমাকে ভয় করো। (সুরা জুমার: ১৬)
৬) সুবিচার বা ইনসাফ পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমরা সুবিচার করো। কেননা তা তাকওয়ার নিকটবর্তী।’ (সুরা মায়িদা: ৮)
৭) নবীপ্রেম নবীজি (স.)-এর প্রতি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও তাঁর অনুসরণ মানুষকে উত্তম চরিত্র অবলম্বন করতে বাধ্য করে এবং প্রকৃত মুত্তাকিতে রূপান্তর করে। নবীজির প্রতি শ্রদ্ধার গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে মহান আল্লাহ বলেন, ‘যারা আল্লাহর রাসুলের সামনে নিজেদের কণ্ঠস্বর নিচু করে, আল্লাহ তাদের অন্তরকে তাকওয়ার জন্য পরিশোধিত করেছেন। তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও মহা পুরস্কার। (সুরা হুজরাত: ৩)
আমরা যদি তাকওয়ার পথে চলতে পারি, তা হলে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বিশাল পুরস্কার দেবেন। মুত্তাকিদের জন্য দুনিয়া-আখেরাতে আনন্দ এবং স্বাচ্ছন্দ্যের জীবন উপহার প্রদান করবেন তিনি। ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা ঈমান এনেছে এবং তাকওয়া অর্জন করেছে তাদের জন্য রয়েছে সুসংবাদ দুনিয়া এবং আখেরাতে।’ (সুরা ইউনুস: ৬৩-৬৪)
তাকওয়ার আরও একটি নগদপ্রাপ্তি হচ্ছে কামাই-রুজি সহজ হয়ে যাওয়া এবং বরকত লাভ করা। ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি তাকওয়া অবলম্বন করবে, আল্লাহ তার মুক্তির ব্যবস্থা করবেন এবং এমনভাবে রিজিক দান করবেন, যা সে ভাবতেও পারেনি।’ (সুরা তালাক: ২-৩)। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তাকওয়া-পরহেজগারির জীবন অবলম্বনের তাওফিক দান করুন। আমিন।
তাকওয়ার পোশাক কেন শ্রেষ্ঠ ?
youtube
তাক্বওয়ার পোশাক কি?
youtube
তাকওয়া বলতে কি বুঝায় ?
youtube
পোশাকের সাথে তাকওয়ার কোন সম্পর্ক আছে কি।
youtube
তাকওয়ার পোশাক শ্রেষ্ঠ পোশাক
The Garment of Piety is the Best Garment
#ত#তাকওয়ার পোশাক শ্রেষ্ঠ পোশাক#Ta#The Garment of Piety is the Best Garment#তাকওয়া#Piety#পরহেজগারিতা#Taqwa#Abstinence#তাকওয়া অর্জনের ৭ উপায়#7 Ways to Achieve Taqwa#তাকওয়া অর্জন#AchieveTaqwa#Youtube
0 notes
Text
তাকওয়ার পোশাক শ্রেষ্ঠ পোশাক
The Garment of Piety is the Best Garment
তাকওয়া : এক মহিমান্বিত গুণ
তাকওয়া মুমিনের একটি অপরিহার্য গুণ। কুরআন মাজীদে তাকওয়া অবলম্বনকারীদের জন্য অনেক সুসংবাদ বর্ণিত হয়েছে। আল্লামা ফাইরোযাবাদী রাহ. তাঁর কিতাব بصائر ذوي التمييز -এ কুরআনে কারীমে বর্ণিত সুসংবাদগুলো উল্লেখ করেছেন। কুরআনে কারীমের প্রায় ২৭ স্থানে মুত্তাকীদের জন্য সুসংবাদ উল্লেখিত হয়েছে। কিছু সুসংবাদের আয়াত এখানে উল্লেখ করা হল-
১. আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্যের সুসংবাদ :
.
নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁদের সাথে থাকেন, যারা তাকওয়া অবলম্বন করে। -সূরা নাহল (১৬) : ১২৮
২. গুনাহ মাফ এবং বিরাট আজরের সুসংবাদ :
যে তাকওয়া অবলম্বন করে আল্লাহ তার গুনাহসমূহ মাফ করে দেন এবং তাকে বিরাট আজর দান করেন। -সূরা ত্বলাক (৬৫) : ৫
৩. মাগফিরাতের সুসংবাদ :
তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল দয়ালু। -সূরা আনফাল (৮) : ৬৯
৪. সকল কাজ সহজ হওয়ার সুসংবাদ :
যে তাক্বওয়া অবলম্বন করে আল্লাহ তার সব বিষয় সহজ করে দেন। -সূরা ত্বলাক (৬৫) : ৪
৫. সফলতার সুসংবাদ :
নিশ্চয়ই মুত্তাকীদের জন্য রয়েছে সফলতা। -সূরা নাবা (৭৮) : ৩১
৬. প্রশস্ত রিযিকের সুসংবাদ :
এবং তাকে রিযিক দান করেন অকল্পনীয়ভাবে। -সূরা ত্বালাক (৬৫) : ৩
৭. সম্মান-মর্যাদার সুসংবাদ :
.
নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তি হচ্ছে মুত্তাকীগণ। -সূরা হুজুরত (৪৯) : ১৩
৮. আল্লাহর মহব্বতের সুসংবাদ :
নিশ্চয়ই আল্লাহ মুত্তাকীদেরকে ভালোবাসেন। -সূরা তাওবা (৯) : ৪
৯. কবূলিয়্যাতের সুসংবাদ :
নিশ্চয়ই আল্লাহ মুত্তাকীদের থেকে কবুল করেন। -সূরা মায়েদা (৫) : ২৭
১০. শ্রেষ্ঠত্বের সুসংবাদ :
যাঁরা তাকওয়া অবলম্বন করে তারা কিয়ামতের দিন তাদের (কাফেরদের) উপরে থাকবে। -সূরা বাকারা (২) : ২১২
১১. শাস্তির ভয় থেকে মুক্ত থাকার সুসংবাদ :
যারা তাকওয়া অবলম্বন করে এবং সৎ থাকে, তাদের কোনো ভয় নেই এবং তারা কখনো দুঃখিত হবে না। -সূরা আরাফ (৮) : ৩৫
১২. জান্নাতে বিভিন্ন নিআমতের এবং আল্লাহর দীদার লাভের সুসংবাদ :
.
যারা তাকওয়া অবলম্বন করেছে তারা থাকবে উদ্যানরাজি ও নহরে। সত্যিকারের মর্যাদাপূর্ণ আসনে, সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী মহা সম্রাটের সান্নিধ্যে। -সূরা ক্বমার (৫৪) : ৫৪-৫৫
তাকওয়া অর্জনের ৭ উপায়
তাকওয়া মানে সতর্ক ও সচেতন থাকা। বান্দা সতর্ক থাকবে কিছুতেই যেন গুনাহের কাজ সংঘটিত না হয়; আর নেক আমল কিছুতেই যেন না ছোটে। হজরত ওমর ফারুক (রা.) উবাই ইবনে কাব (রা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন, তাকওয়া কী? উবাই ইবনে কাব (রা.) বলেন, আপনি কি কখনও কাঁটা বিছানো পথে হেঁটেছেন? ওমর (রা.) বললেন, হ্যাঁ। উবাই ইবনে কাব (রা.) বলেন, কাঁটা বিছানো পথে আপনি কীভাবে হেঁটেছেন? ওমর (রা.) বলেন, সতর্ক-সচেতনতার সঙ্গে যাতে আমার শরীরে কাঁটা না বিঁধে। উবাই ইবনে কাব (রা.) বললেন, এটাই হচ্ছে তাকওয়া।
কাঁটাযুক্ত পথে কাঁটা থেকে বাঁচার জন্য মানুষ যেভাবে সতর্ক হয়ে চলে, ঠিক সেভাবে আল্লাহর শাস্তি থেকে বাঁচার ��ন্য আল্লাহর নিষিদ্ধ বিধানগুলো থেকে বেঁচে থাকা এবং আল্লাহর কাছ থেকে পুরস্কার পাওয়ার আশায় নেক আমল করার নামই হলো তাকওয়া। অর্থাৎ রবের ভয়ে পাপ থেকে বিরত থাকা। রবের রহমতের আশায় সওয়াবের কাজ না ছাড়া। (তাফসিরে ইবনে কাসির: ১/৪০)
আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের পছন্দের বান্দা হতে চাইলে তাকওয়া-পরহেজগারির বিকল্প নেই। এ কারণেই তিনি পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে তাকওয়া অবলম্বনের আদেশ করেছেন এবং তাকওয়া অবলম্বনকারীদের ভালোবাসেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে মুত্তাকি বান্দারা আল্লাহর কাছে পছন্দনীয় এবং ভালোবাসার পাত্র।’ (সুরা হুজরাত: ১৩)
যেসব আমলের মাধ্যমে তাকওয়া অর্জন করা সহজ হয়, পবিত্র কোরআনের আলোকে সে বিষয়গুলো নিচে আলোচনা করা হলো—
১) কোরআন শিক্ষা করা আল্লাহ তাআলা বলেন, নিশ্চয় আমি এ কোরআনে মানুষের জন্য সব দৃষ্টান্তই বর্ননা করেছি, যাতে তারা শিক্ষা গ্রহণ করে। বক্রতামুক্ত আরবি কোরআন,যাতে তারা তাকওয়া অবলম্বন করে। (সুরা জুমার: ২৭-২৮)
২) আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা করা আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা করার মাধ্যমে অন্তরে তাকওয়া সৃষ্টি হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই রাত ও দিবসের বিবর্তন এবং আসমানসমূহ ও জমিনে যা আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন, তাতে বহু নিদর্শন রয়েছে এমন কওমের জন্য, যারা তাকওয়া অবলম্বন করে।’ (সুরা ইউনুস: ৬)
৩) ইখলাসের সঙ্গে আল্লাহর ইবাদত করা আল্লাহ তাআলার ইবাদতের মাধ্যমে অন্তরে তাকওয়া সৃষ্টি হয়, চাই সেটা ফরজ ইবাদত হোক কিংবা নফল। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মানুষ! তোমরা তোমাদের রবের ইবাদত করো। যিনি সৃষ্টি করেছেন তোমাদেরকে এবং তোমাদের আগে যারা ছিল, তাদেরকে। যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করো। (সুরা বাকারা: ২১)
৪) রোজা তাকওয়া সৃষ্টি করে যেসব ইবাদতের মাধ্যমে অন্তরে তাকওয়া সৃষ্টি হয়, তন্মধ্যে একটি হলো ‘রোজা’। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেভাবে ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর। যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করো।’ (সুরা বাকারা: ১৮৩)
৫) পরকালের ভয়াবহতা বিষয়ে আয়াত ও হাদিস পাঠ করা পরকাল ও তার ভয়াবহতা সম্পর্কিত কোরআনের আয়াত ও হাদিসগুলো বেশি বেশি অধ্যয়ন করার মাধ্যমে অন্তরে তাকওয়া সৃষ্টি হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, তাদের জন্য তাদের উপর দিকে থাকবে আগুনের আচ্ছাদন আর তাদের নিচের দিকেও থাকবে (আগুনের) আচ্ছাদন; এর মাধ্যমে আল্লাহ তাঁর বান্দাদের ভয় দেখান। হে আমার বান্দারা! তোমরা আমাকে ভয় করো। (সুরা জুমার: ১৬)
৬) সুবিচার বা ইনসাফ পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমরা সুবিচার করো। কেননা তা তাকওয়ার নিকটবর্তী।’ (সুরা মায়িদা: ৮)
৭) নবীপ্রেম নবীজি (স.)-এর প্রতি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও তাঁর অনুসরণ মানুষকে উত্তম চরিত্র অবলম্বন করতে বাধ্য করে এবং প্রকৃত মুত্তাকিতে রূপান্তর করে। নবীজির প্রতি শ্রদ্ধার গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে মহান আল্লাহ বলেন, ‘যারা আল্লাহর রাসুলের সামনে নিজেদের কণ্ঠস্বর নিচু করে, আল্লাহ তাদের অন্তরকে তাকওয়ার জন্য পরিশোধিত করেছেন। তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও মহা পুরস্কার। (সুরা হুজরাত: ৩)
আমরা যদি তাকওয়ার পথে চলতে পারি, তা হলে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বিশাল পুরস্কার দেবেন। মুত্তাকিদের জন্য দুনিয়া-আখেরাতে আনন্দ এবং স্বাচ্ছন্দ্যের জীবন উপহার প্রদান করবেন তিনি। ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা ঈমান এনেছে এবং তাকওয়া অর্জন করেছে তাদের জন্য রয়েছে সুসংবাদ দুনিয়া এবং আখেরাতে।’ (সুরা ইউনুস: ৬৩-৬৪)
তাকওয়ার আরও একটি নগদপ্রাপ্তি হচ্ছে কামাই-রুজি সহজ হয়ে যাওয়া এবং বরকত লাভ করা। ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি তাকওয়া অবলম্বন করবে, আল্লাহ তার মুক্তির ব্যবস্থা করবেন এবং এমনভাবে রিজিক দান করবেন, যা সে ভাবতেও পারেনি।’ (সুরা তালাক: ২-৩)। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তাকওয়া-পরহেজগারির জীবন অবলম্বনের তাওফিক দান করুন। আমিন।
তাকওয়ার পোশাক কেন শ্রেষ্ঠ ?
youtube
তাক্বওয়ার পোশাক কি?
youtube
তাকওয়া বলতে কি বুঝায় ?
youtube
পোশাকের সাথে তাকওয়ার কোন সম্পর্ক আছে কি।
youtube
তাকওয়ার পোশাক শ্রেষ্ঠ পোশাক
The Garment of Piety is the Best Garment
#ত#তাকওয়ার পোশাক শ্রেষ্ঠ পোশাক#Ta#The Garment of Piety is the Best Garment#তাকওয়া#Piety#পরহেজগারিতা#Taqwa#Abstinence#তাকওয়া অর্জনের ৭ উপায়#7 Ways to Achieve Taqwa#তাকওয়া অর্জন#AchieveTaqwa#Youtube
0 notes
Text
তাকওয়ার পোশাক শ্রেষ্ঠ পোশাক
The Garment of Piety is the Best Garment
তাকওয়া : এক মহিমান্বিত গুণ
তাকওয়া মুমিনের একটি অপরিহার্য গুণ। কুরআন মাজীদে তাকওয়া অবলম্বনকারীদের জন্য অনেক সুসংবাদ বর্ণিত হয়েছে। আল্লামা ফাইরোযাবাদী রাহ. তাঁর কিতাব بصائر ذوي التمييز -এ কুরআনে কারীমে বর্ণিত সুসংবাদগুলো উল্লেখ করেছেন। কুরআনে কারীমের প্রায় ২৭ স্থানে মুত্তাকীদের জন্য সুসংবাদ উল্লেখিত হয়েছে। কিছু সুসংবাদের আয়াত এখানে উল্লেখ করা হল-
১. আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্যের সুসংবাদ :
.
নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁদের সাথে থাকেন, যারা তাকওয়া অবলম্বন করে। -সূরা নাহল (১৬) : ১২৮
২. গুনাহ মাফ এবং বিরাট আজরের সুসংবাদ :
যে তাকওয়া অবলম্বন করে আল্লাহ তার গুনাহসমূহ মাফ করে দেন এবং তাকে বিরাট আজর দান করেন। -সূরা ত্বলাক (৬৫) : ৫
৩. মাগফিরাতের সুসংবাদ :
তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল দয়ালু। -সূরা আনফাল (৮) : ৬৯
৪. সকল কাজ সহজ হওয়ার সুসংবাদ :
যে তাক্বওয়া অবলম্বন করে আল্লাহ তার সব বিষয় সহজ করে দেন। -সূরা ত্বলাক (৬৫) : ৪
৫. সফলতার সুসংবাদ :
নিশ্চয়ই মুত্তাকীদের জন্য রয়েছে সফলতা। -সূরা নাবা (৭৮) : ৩১
৬. প্রশস্ত রিযিকের সুসংবাদ :
এবং তাকে রিযিক দান করেন অকল্পনীয়ভাবে। -সূরা ত্বালাক (৬৫) : ৩
৭. সম্মান-মর্যাদার সুসংবাদ :
.
নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তি হচ্ছে মুত্তাকীগণ। -সূরা হুজুরত (৪৯) : ১৩
৮. আল্লাহর মহব্বতের সুসংবাদ :
নিশ্চয়ই আল্লাহ মুত্তাকীদেরকে ভালোবাসেন। -সূরা তাওবা (৯) : ৪
৯. কবূলিয়্যাতের সুসংবাদ :
নিশ্চয়ই আল্লাহ মুত্তাকীদের থেকে কবুল করেন। -সূরা মায়েদা (৫) : ২৭
১০. শ্রেষ্ঠত্বের সুসংবাদ :
যাঁরা তাকওয়া অবলম্বন করে তারা কিয়ামতের দিন তাদের (কাফেরদের) উপরে থাকবে। -সূরা বাকারা (২) : ২১২
১১. শাস্তির ভয় থেকে মুক্ত থাকার সুসংবাদ :
যারা তাকওয়া অবলম্বন করে এবং সৎ থাকে, তাদের কোনো ভয় নেই এবং তারা কখনো দুঃখিত হবে না। -সূরা আরাফ (৮) : ৩৫
১২. জান্নাতে বিভিন্ন নিআমতের এবং আল্লাহর দীদার লাভের সুসংবাদ :
.
যারা তাকওয়া অবলম্বন করেছে তারা থাকবে উদ্যানরাজি ও নহরে। সত্যিকারের মর্যাদাপূর্ণ আসনে, সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী মহা সম্রাটের সান্নিধ্যে। -সূরা ক্বমার (৫৪) : ৫৪-৫৫
তাকওয়া অর্জনের ৭ উপায়
তাকওয়া মানে সতর্ক ও সচেতন থাকা। বান্দা সতর্ক থাকবে কিছুতেই যেন গুনাহের কাজ সংঘটিত না হয়; আর নেক আমল কিছুতেই যেন না ছোটে। হজরত ওমর ফারুক (রা.) উবাই ইবনে কাব (রা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন, তাকওয়া কী? উবাই ইবনে কাব (রা.) বলেন, আপনি কি কখনও কাঁটা বিছানো পথে হেঁটেছেন? ওমর (রা.) বললেন, হ্যাঁ। উবাই ইবনে কাব (রা.) বলেন, কাঁটা বিছানো পথে আপনি কীভাবে হেঁটেছেন? ওমর (রা.) বলেন, সতর্ক-সচেতনতার সঙ্গে যাতে আমার শরীরে কাঁটা না বিঁধে। উবাই ইবনে কাব (রা.) বললেন, এটাই হচ্ছে তাকওয়া।
কাঁটাযুক্ত পথে কাঁটা থেকে বাঁচার জন্য মানুষ যেভাবে সতর্ক হয়ে চলে, ঠিক সেভাবে আল্লাহর শাস্তি থেকে বাঁচার জন্য আল্লাহর নিষিদ্ধ বিধানগুলো থেকে বেঁচে থাকা এবং আল্লাহর কাছ থেকে পুরস্কার পাওয়ার আশায় নেক আমল করার নামই হলো তাকওয়া। অর্থাৎ রবের ভয়ে পাপ থেকে বিরত থাকা। রবের রহমতের আশায় সওয়াবের কাজ না ছাড়া। (তাফসিরে ইবনে কাসির: ১/৪০)
আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের পছন্দের বান্দা হতে চাইলে তাকওয়া-পরহেজগারির বিকল্প নেই। এ কারণেই তিনি পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে তাকওয়া অবলম্বনের আদেশ করেছেন এবং তাকওয়া অবলম্বনকারীদের ভালোবাসেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে মুত্তাকি বান্দারা আল্লাহর কাছে পছন্দনীয় এবং ভালোবাসার পাত্র।’ (সুরা হুজরাত: ১৩)
যেসব আমলের মাধ্যমে তাকওয়া অর্জন করা সহজ হয়, পবিত্র কোরআনের আলোকে সে বিষয়গুলো নিচে আলোচনা করা হলো—
১) কোরআন শিক্ষা করা আল্লাহ তাআলা বলেন, নিশ্চয় আমি এ কোরআনে মানুষের জন্য সব দৃষ্টান্তই বর্ননা করেছি, যাতে তারা শিক্ষা গ্রহণ করে। বক্রতামুক্ত আরবি কোরআন,যাতে তারা তাকওয়া অবলম্বন করে। (সুরা জুমার: ২৭-২৮)
২) আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা করা আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা করার মাধ্যমে অন্তরে তাকওয়া সৃষ্টি হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই রাত ও দিবসের বিবর্তন এবং আসমানসমূহ ও জমিনে যা আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন, তাতে বহু নিদর্শন রয়েছে এমন কওমের জন্য, যারা তাকওয়া অবলম্বন করে।’ (সুরা ইউনুস: ৬)
৩) ইখলাসের সঙ্গে আল্লাহর ইবাদত করা আল্লাহ তাআলার ইবাদতের মাধ্যমে অন্তরে তাকওয়া সৃষ্টি হয়, চাই সেটা ফরজ ইবাদত হোক কিংবা নফল। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মানুষ! তোমরা তোমাদের রবের ইবাদত করো। যিনি সৃষ্টি করেছেন তোমাদেরকে এবং তোমাদের আগে যারা ছিল, তাদেরকে। যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করো। (সুরা বাকারা: ২১)
৪) রোজা তাকওয়া সৃষ্টি করে যেসব ইবাদতের মাধ্যমে অন্তরে তাকওয়া সৃষ্টি হয়, তন্মধ্যে একটি হলো ‘রোজা’। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেভাবে ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর। যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করো।’ (সুরা বাকারা: ১৮৩)
৫) পরকালের ভয়াবহতা বিষয়ে আয়াত ও হাদিস পাঠ করা পরকাল ও তার ভয়াবহতা সম্পর্কিত কোরআনের আয়াত ও হাদিসগুলো বেশি বেশি অধ্যয়ন করার মাধ্যমে অন্তরে তাকওয়া সৃষ্টি হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, তাদের জন্য তাদের উপর দিকে থাকবে আগুনের আচ্ছাদন আর তাদের নিচের দিকেও থাকবে (আগুনের) আচ্ছাদন; এর মাধ্যমে আল্লাহ তাঁর বান্দাদের ভয় দেখান। হে আমার বান্দারা! তোমরা আমাকে ভয় করো। (সুরা জুমার: ১৬)
৬) সুবিচার বা ইনসাফ পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমরা সুবিচার করো। কেননা তা তাকওয়ার নিকটবর্তী।’ (সুরা মায়িদা: ৮)
৭) নবীপ্রেম নবীজি (স.)-এর প্রতি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও তাঁর অনুসরণ মানুষকে উত্তম চরিত্র অবলম্বন করতে বাধ্য করে এবং প্রকৃত মুত্তাকিতে রূপান্তর করে। নবীজির প্রতি শ্রদ্ধার গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে মহান আল্লাহ বলেন, ‘যারা আল্লাহর রাসুলের সামনে নিজেদের কণ্ঠস্বর নিচু করে, আল্লাহ তাদের অন্তরকে তাকওয়ার জন্য পরিশোধিত করেছেন। তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও মহা পুরস্কার। (সুরা হুজরাত: ৩)
আমরা যদি তাকওয়ার পথে চলতে পারি, তা হ���ে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বিশাল পুরস্কার দেবেন। মুত্তাকিদের জন্য দুনিয়া-আখেরাতে আনন্দ এবং স্বাচ্ছন্দ্যের জীবন উপহার প্রদান করবেন তিনি। ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা ঈমান এনেছে এবং তাকওয়া অর্জন করেছে তাদের জন্য রয়েছে সুসংবাদ দুনিয়া এবং আখেরাতে।’ (সুরা ইউনুস: ৬৩-৬৪)
তাকওয়ার আরও একটি নগদপ্রাপ্তি হচ্ছে কামাই-রুজি সহজ হয়ে যাওয়া এবং বরকত লাভ করা। ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি তাকওয়া অবলম্বন করবে, আল্লাহ তার মুক্তির ব্যবস্থা করবেন এবং এমনভাবে রিজিক দান করবেন, যা সে ভাবতেও পারেনি।’ (সুরা তালাক: ২-৩)। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তাকওয়া-পরহেজগারির জীবন অবলম্বনের তাওফিক দান করুন। আমিন।
তাকওয়ার পোশাক কেন শ্রেষ্ঠ ?
youtube
তাক্বওয়ার পোশাক কি?
youtube
তাকওয়া বলতে কি বুঝায় ?
youtube
পোশাকের সাথে তাকওয়ার কোন সম্পর্ক আছে কি।
youtube
তাকওয়ার পোশাক শ্রেষ্ঠ পোশাক
The Garment of Piety is the Best Garment
#ত#তাকওয়ার পোশাক শ্রেষ্ঠ পোশাক#Ta#The Garment of Piety is the Best Garment#তাকওয়া#Piety#পরহেজগারিতা#Taqwa#Abstinence#তাকওয়া অর্জনের ৭ উপায়#7 Ways to Achieve Taqwa#তাকওয়া অর্জন#AchieveTaqwa#Youtube
0 notes
Text
তাকওয়ার পোশাক শ্রেষ্ঠ পোশাক
The Garment of Piety is the Best Garment
তাকওয়া : এক মহিমান্বিত গুণ
তাকওয়া মুমিনের একটি অপরিহার্য গুণ। কুরআন মাজীদে তাকওয়া অবলম্বনকারীদের জন্য অনেক সুসংবাদ বর্ণিত হয়েছে। আল্লামা ফাইরোযাবাদী রাহ. তাঁর কিতাব بصائر ذوي التمييز -এ কুরআনে কারীমে বর্ণিত সুসংবাদগুলো উল্লেখ করেছেন। কুরআনে কারীমের প্রায় ২৭ স্থানে মুত্তাকীদের জন্য সুসংবাদ উল্লেখিত হয়েছে। কিছু সুসংবাদের আয়াত এখানে উল্লেখ করা হল-
১. আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্যের সুসংবাদ :
.
নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁদের সাথে থাকেন, যারা তাকওয়া অবলম্বন করে। -সূরা নাহল (১৬) : ১২৮
২. গুনাহ মাফ এবং বিরাট আজরের সুসংবাদ :
যে তাকওয়া অবলম্বন করে আল্লাহ তার গুনাহসমূহ মাফ করে দেন এবং তাকে বিরাট আজর দান করেন। -সূরা ত্বলাক (৬৫) : ৫
৩. মাগফিরাতের সুসংবাদ :
তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল দয়ালু। -সূরা আনফাল (৮) : ৬৯
৪. সকল কাজ সহজ হওয়ার সুসংবাদ :
যে তাক্বওয়া অবলম্বন করে আল্লাহ তার সব বিষয় সহজ করে দেন। -সূরা ত্বলাক (৬৫) : ৪
৫. সফলতার সুসংবাদ :
নিশ্চয়ই মুত্তাকীদের জন্য রয়েছে সফলতা। -সূরা নাবা (৭৮) : ৩১
৬. প্রশস্ত রিযিকের সুসংবাদ :
এবং তাকে রিযিক দান করেন অকল্পনীয়ভাবে। -সূরা ত্বালাক (৬৫) : ৩
৭. সম্মান-মর্যাদার সুসংবাদ :
.
নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তি হচ্ছে মুত্তাকীগণ। -সূরা হুজুরত (৪৯) : ১৩
৮. আল্লাহর মহব্বতের সুসংবাদ :
নিশ্চয়ই আল্লাহ মুত্তাকীদেরকে ভালোবাসেন। -সূরা তাওবা (৯) : ৪
৯. কবূলিয়্যাতের সুসংবাদ :
নিশ্চয়ই আল্লাহ মুত্তাকীদের থেকে কবুল করেন। -সূরা মায়েদা (৫) : ২৭
১০. শ্রেষ্ঠত্বের সুসংবাদ :
যাঁরা তাকওয়া অবলম্বন করে তারা কিয়ামতের দিন তাদের (কাফেরদের) উপরে থাকবে। -সূরা বাকারা (২) : ২১২
১১. শাস্তির ভয় থেকে মুক্ত থাকার সুসংবাদ :
যারা তাকওয়া অবলম্বন করে এবং সৎ থাকে, তাদের কোনো ভয় নেই এবং তারা কখনো দুঃখিত হবে না। -সূরা আরাফ (৮) : ৩৫
১২. জান্নাতে বিভিন্ন নিআমতের এবং আল্লাহর দীদার লাভের সুসংবাদ :
.
যারা তাকওয়া অবলম্বন করেছে তারা থাকবে উদ্যানরাজি ও নহরে। সত্যিকারের মর্যাদাপূর্ণ আসনে, সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী মহা সম্রাটের সান্নিধ্যে। -সূরা ক্বমার (৫৪) : ৫৪-৫৫
তাকওয়া অর্জনের ৭ উপায়
তাকওয়া মানে সতর্ক ও সচেতন থাকা। বান্দা সতর্ক থাকবে কিছুতেই যেন গুনাহের কাজ সংঘটিত না হয়; আর নেক আমল কিছুতেই যেন না ছোটে। হজরত ওমর ফারুক (রা.) উবাই ইবনে কাব (রা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন, তাকওয়া কী? উবাই ইবনে কাব (রা.) বলেন, আপনি কি কখনও কাঁটা বিছানো পথে হেঁটেছেন? ওমর (রা.) বললেন, হ্যাঁ। উবাই ইবনে কাব (রা.) বলেন, কাঁটা বিছানো পথে আপনি কীভাবে হেঁটেছেন? ওমর (রা.) বলেন, সতর্ক-সচেতনতার সঙ্গে যাতে আমার শরীরে কাঁটা না বিঁধে। উবাই ইবনে কাব (রা.) বললেন, এটাই হচ্ছে তাকওয়া।
কাঁটাযুক্ত পথে কাঁটা থেকে বাঁচার জন্য মানুষ যেভাবে সতর্ক হয়ে চলে, ঠিক সেভাবে আল্লাহর শাস্তি থেকে বাঁচার জন্য আল্লাহর নিষিদ্ধ বিধানগুলো থেকে বেঁচে থাকা এবং আল্লাহর কাছ থেকে পুরস্কার পাওয়ার আশায় নেক আমল করার নামই হলো তাকওয়া। অর্থাৎ রবের ভয়ে পাপ থেকে বিরত থাকা। রবের রহমতের আশায় সওয়াবের কাজ না ছাড়া। (তাফসিরে ইবনে কাসির: ১/৪০)
আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের পছন্দের বান্দা হতে চাইলে তাকওয়া-পরহেজগারির বিকল্প নেই। এ কারণেই তিনি পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে তাকওয়া অবলম্বনের আদেশ করেছেন এবং তাকওয়া অবলম্বনকারীদের ভালোবাসেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে মুত্তাকি বান্দারা আল্লাহর কাছে পছন্দনীয় এবং ভালোবাসার পাত্র।’ (সুরা হুজরাত: ১৩)
যেসব আমলের মাধ্যমে তাকওয়া অর্জন করা সহজ হয়, পবিত্র কোরআনের আলোকে সে বিষয়গুলো নিচে আলোচনা করা হলো—
১) কোরআন শিক্ষা করা আল্লাহ তাআলা বলেন, নিশ্চয় আমি এ কোরআনে মানুষের জন্য সব দৃষ্টান্তই বর্ননা করেছি, যাতে তারা শিক্ষা গ্রহণ করে। বক্রতামুক্ত আরবি কোরআন,যাতে তারা তাকওয়া অবলম্বন করে। (সুরা জুমার: ২৭-২৮)
২) আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা করা আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা করার মাধ্যমে অন্তরে তাকওয়া সৃষ্টি হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই রাত ও দিবসের বিবর্তন এবং আসমানসমূহ ও জমিনে যা আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন, তাতে বহু নিদর্শন রয়েছে এমন কওমের জন্য, যারা তাকওয়া অবলম্বন করে।’ (সুরা ইউনুস: ৬)
৩) ইখলাসের সঙ্গে আল্লাহর ইবাদত করা আল্লাহ তাআলার ইবাদতের মাধ্যমে অন্তরে তাকওয়া সৃষ্টি হয়, চাই সেটা ফরজ ইবাদত হোক কিংবা নফল। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মানুষ! তোমরা তোমাদের রবের ইবাদত করো। যিনি সৃষ্টি করেছেন তোমাদেরকে এবং তোমাদের আগে যারা ছিল, তাদেরকে। যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করো। (সুরা বাকারা: ২১)
৪) রোজা তাকওয়া সৃষ্টি করে যেসব ইবাদতের মাধ্যমে অন্তরে তাকওয়া সৃষ্টি হয়, তন্মধ্যে একটি হলো ‘রোজা’। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেভাবে ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর। যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করো।’ (সুরা বাকারা: ১৮৩)
৫) পরকালের ভয়াবহতা বিষয়ে আয়াত ও হাদিস পাঠ করা পরকাল ও তার ভয়াবহতা সম্পর্কিত কোরআনের আয়াত ও হাদিসগুলো বেশি বেশি অধ্যয়ন করার মাধ্যমে অন্তরে তাকওয়া সৃষ্টি হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, তাদের জন্য তাদের উপর দিকে থাকবে আগুনের আচ্ছাদন আর তাদের নিচের দিকেও থাকবে (আগুনের) আচ্ছাদন; এর মাধ্যমে আল্লাহ তাঁর বান্দাদের ভয় দেখান। হে আমার বান্দারা! তোমরা আমাকে ভয় করো। (সুরা জুমার: ১৬)
৬) সুবিচার বা ইনসাফ পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমরা সুবিচার করো। কেননা তা তাকওয়ার নিকটবর্তী।’ (সুরা মায়িদা: ৮)
৭) নবীপ্রেম নবীজি (স.)-এর প্রতি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও তাঁর অনুসরণ মানুষকে উত্তম চরিত্র অবলম্বন করতে বাধ্য করে এবং প্রকৃত মুত্তাকিতে রূপান্তর করে। নবীজির প্রতি শ্রদ্ধার গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে মহান আল্লাহ বলেন, ‘যারা আল্লাহর রাসুলের সামনে নিজেদের কণ্ঠস্বর নিচু করে, আল্লাহ তাদের অন্তরকে তাকওয়ার জন্য পরিশোধিত করেছেন। তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও মহা পুরস্কার। (সুরা হুজরাত: ৩)
আমরা যদি তাকওয়ার পথে চলতে পারি, তা হলে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বিশাল পুরস্কার দেবেন। মুত্তাকিদের জন্য দুনিয়া-আখেরাতে আনন্দ এবং স্বাচ্ছন্দ্যের জীবন উপহার প্রদান করবেন তিনি। ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা ঈমান এনেছে এবং তাকওয়া অর্জন করেছে তাদের জন্য রয়েছে সুসংবাদ দুনিয়া এবং আখেরাতে।’ (সুরা ইউনুস: ৬৩-৬৪)
তাকওয়ার আরও একটি নগদপ্রাপ্তি হচ্ছে কামাই-রুজি সহজ হয়ে যাওয়া এবং বরকত লাভ করা। ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি তাকওয়া অবলম্বন করবে, আল্লাহ তার মুক্তির ব্যবস্থা করবেন এবং এমনভাবে রিজিক দান করবেন, যা সে ভাবতেও পারেনি।’ (সুরা তালাক: ২-৩)। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তাকওয়া-পরহেজগারির জীবন অবলম্বনের তাওফিক দান করুন। আমিন।
তাকওয়ার পোশাক কেন শ্রেষ্ঠ ?
youtube
তাক্বওয়ার পোশাক কি?
youtube
তাকওয়া বলতে কি বুঝায় ?
youtube
পোশাকের সাথে তাকওয়ার কোন সম্পর্ক আছে কি।
youtube
তাকওয়ার পোশাক শ্রেষ্ঠ পোশাক
The Garment of Piety is the Best Garment
#ত#তাকওয়ার পোশাক শ্রেষ্ঠ পোশাক#Ta#The Garment of Piety is the Best Garment#তাকওয়া#Piety#পরহেজগারিতা#Taqwa#Abstinence#তাকওয়া অর্জনের ৭ উপায়#7 Ways to Achieve Taqwa#তাকওয়া অর্জন#AchieveTaqwa#Youtube
0 notes
Text
তাকওয়ার পোশাক শ্রেষ্ঠ পোশাক
The Garment of Piety is the Best Garment
তাকওয়া : এক মহিমান্বিত গুণ
তাকওয়া মুমিনের একটি অপরিহার্য গুণ। কুরআন মাজীদে তাকওয়া অবলম্বনকারীদের জন্য অনেক সুসংবাদ বর্ণিত হয়েছে। আল্লামা ফাইরোযাবাদী রাহ. তাঁর কিতাব بصائر ذوي التمييز -এ কুরআনে কারীমে বর্ণিত সুসংবাদগুলো উল্লেখ করেছেন। কুরআনে কারীমের প্রায় ২৭ স্থানে মুত্তাকীদের জন্য সুসংবাদ উল্লেখিত হয়েছে। কিছু সুসংবাদের আয়াত এখানে উল্লেখ করা হল-
১. আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্যের সুসংবাদ :
.
নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁদের সাথে থাকেন, যারা তাকওয়া অবলম্বন করে। -সূরা নাহল (১৬) : ১২৮
২. গুনাহ মাফ এবং বিরাট আজরের সুসংবাদ :
যে তাকওয়া অবলম্বন করে আল্লাহ তার গুনাহসমূহ মাফ করে দেন এবং তাকে বিরাট আজর দান করেন। -সূরা ত্বলাক (৬৫) : ৫
৩. মাগফিরাতের সুসংবাদ :
তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল দয়ালু। -সূরা আনফাল (৮) : ৬৯
৪. সকল কাজ সহজ হওয়ার সুসংবাদ :
যে তাক্বওয়া অবলম্বন করে আল্লাহ তার সব বিষয় সহজ করে দেন। -সূরা ত্বলাক (৬৫) : ৪
৫. সফলতার সুসংবাদ :
নিশ্চয়ই মুত্তাকীদের জন্য রয়েছে সফলতা। -সূরা নাবা (৭৮) : ৩১
৬. প্রশস্ত রিযিকের সুসংবাদ :
এবং তাকে রিযিক দান করেন অকল্পনীয়ভাবে। -সূরা ত্বালাক (৬৫) : ৩
৭. সম্মান-মর্যাদার সুসংবাদ :
.
নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তি হচ্ছে মুত্তাকীগণ। -সূরা হুজুরত (৪৯) : ১৩
৮. আল্লাহর মহব্বতের সুসংবাদ :
নিশ্চয়ই আল্লাহ মুত্তাকীদেরকে ভালোবাসেন। -সূরা তাওবা (৯) : ৪
৯. কবূলিয়্যাতের সুসংবাদ :
নিশ্চয়ই আল্লাহ মুত্তাকীদের থেকে কবুল করেন। -সূরা মায়েদা (৫) : ২৭
১০. শ্রেষ্ঠত্বের সুসংবাদ :
যাঁরা তাকওয়া অবলম্বন করে তারা কিয়ামতের দিন তাদের (কাফেরদের) উপরে থাকবে। -সূরা বাকারা (২) : ২১২
১১. শাস্তির ভয় থেকে মুক্ত থাকার সুসংবাদ :
যারা তাকওয়া অবলম্বন করে এবং সৎ থাকে, তাদের কোনো ভয় নেই এবং তারা কখনো দুঃখিত হবে না। -সূরা আরাফ (৮) : ৩৫
১২. জান্নাতে বিভিন্ন নিআমতের এবং আল্লাহর দীদার লাভের সুসংবাদ :
.
যারা তাকওয়া অবলম্বন করেছে তারা থাকবে উদ্যানরাজি ও নহরে। সত্যিকারের মর্যাদাপূর্ণ আসনে, সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী মহা সম্রাটের সান্নিধ্যে। -সূরা ক্বমার (৫৪) : ৫৪-৫৫
তাকওয়া অর্জনের ৭ উপায়
তাকওয়া মানে সতর্ক ও সচেতন থাকা। বান্দা সতর্ক থাকবে কিছুতেই যেন গুনাহের কাজ সংঘটিত না হয়; আর নেক আমল কিছুতেই যেন না ছোটে। হজরত ওমর ফারুক (রা.) উবাই ইবনে কাব (রা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন, তাকওয়া কী? উবাই ইবনে কাব (রা.) বলেন, আপনি কি কখনও কাঁটা বিছানো পথে হেঁটেছেন? ওমর (রা.) বললেন, হ্যাঁ। উবাই ইবনে কাব (রা.) বলেন, কাঁটা বিছানো পথে আপনি কীভাবে হেঁটেছেন? ওমর (রা.) বলেন, সতর্ক-সচেতনতার সঙ্গে যাতে আমার শরীরে কাঁটা না বিঁধে। উবাই ইবনে কাব (রা.) বললেন, এটাই হচ্ছে তাকওয়া।
কাঁটাযুক্ত পথে কাঁটা থেকে বাঁচার জন্য মানুষ যেভাবে সতর্ক হয়ে চলে, ঠিক সেভাবে আল্লাহর শাস্তি থেকে বাঁচার জন্য আল্লাহর নিষিদ্ধ বিধানগুলো থেকে বেঁচে থাকা এবং আল্লাহর কাছ থেকে পুরস্কার পাওয়ার আশায় নেক আমল করার নামই হলো তাকওয়া। অর্থাৎ রবের ভয়ে পাপ থেকে বিরত থাকা। রবের রহমতের আশায় সওয়াবের কাজ না ছাড়া। (তাফসিরে ইবনে কাসির: ১/৪০)
আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের পছন্দের বান্দা হতে চাইলে তাকওয়া-পরহেজগারির বিকল্প নেই। এ কারণেই তিনি পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে তাকওয়া অবলম্বনের আদেশ করেছেন এবং তাকওয়া অবলম্বনকারীদের ভালোবাসেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে মুত্তাকি বান্দারা আল্লাহর কাছে পছন্দনীয় এবং ভালোবাসার পাত্র।’ (সুরা হুজরাত: ১৩)
যেসব আমলের মাধ্যমে তাকওয়া অর্জন করা সহজ হয়, পবিত্র কোরআনের আলোকে সে বিষয়গুলো নিচে আলোচনা করা হলো—
১) কোরআন শিক্ষা করা আল্লাহ তাআলা বলেন, নিশ্চয় আমি এ কোরআনে মানুষের জন্য সব দৃষ্টান্তই বর্ননা করেছি, যাতে তারা শিক্ষা গ্রহণ করে। বক্রতামুক্ত আরবি কোরআন,যাতে তারা তাকওয়া অবলম্বন করে। (সুরা জুমার: ২৭-২৮)
২) আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা করা আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা করার মাধ্যমে অন্তরে তাকওয়া সৃষ্টি হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই রাত ও দিবসের বিবর্তন এবং আসমানসমূহ ও জমিনে যা আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন, তাতে বহু নিদর্শন রয়েছে এমন কওমের জন্য, যারা তাকওয়া অবলম্বন করে।’ (সুরা ইউনুস: ৬)
৩) ইখলাসের সঙ্গে আল্লাহর ইবাদত করা আল্লাহ তাআলার ইবাদতের মাধ্যমে অন্তরে তাকওয়া সৃষ্টি হয়, চাই সেটা ফরজ ইবাদত হোক কিংবা নফল। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মানুষ! তোমরা তোমাদের রবের ইবাদত করো। যিনি সৃষ্টি করেছেন তোমাদেরকে এবং তোমাদের আগে যারা ছিল, তাদেরকে। যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করো। (সুরা বাকারা: ২১)
৪) রোজা তাকওয়া সৃষ্টি করে যেসব ইবাদতের মাধ্যমে অন্তরে তাকওয়া সৃষ্টি হয়, তন্মধ্যে একটি হলো ‘রোজা’। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেভাবে ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর। যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করো।’ (সুরা বাকারা: ১৮৩)
৫) পরকালের ভয়াবহতা বিষয়ে আয়াত ও হাদিস পাঠ করা পরকাল ও তার ভয়াবহতা সম্পর্কিত কোরআনের আয়াত ও হাদিসগুলো বেশি বেশি অধ্যয়ন করার মাধ্যমে অন্তরে তাকওয়া সৃষ্টি হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, তাদের জন্য তাদের উপর দিকে থাকবে আগুনের আচ্ছাদন আর তাদের নিচের দিকেও থাকবে (আগুনের) আচ্ছাদন; এর মাধ্যমে আল্লাহ তাঁর বান্দাদের ভয় দেখান। হে আমার বান্দারা! তোমরা আমাকে ভয় করো। (সুরা জুমার: ১৬)
৬) সুবিচার বা ইনসাফ পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ ব���েছেন, ‘তোমরা সুবিচার করো। কেননা তা তাকওয়ার নিকটবর্তী।’ (সুরা মায়িদা: ৮)
৭) নবীপ্রেম নবীজি (স.)-এর প্রতি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও তাঁর অনুসরণ মানুষকে উত্তম চরিত্র অবলম্বন করতে বাধ্য করে এবং প্রকৃত মুত্তাকিতে রূপান্তর করে। নবীজির প্রতি শ্রদ্ধার গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে মহান আল্লাহ বলেন, ‘যারা আল্লাহর রাসুলের সামনে নিজেদের কণ্ঠস্বর নিচু করে, আল্লাহ তাদের অন্তরকে তাকওয়ার জন্য পরিশোধিত করেছেন। তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও মহা পুরস্কার। (সুরা হুজরাত: ৩)
আমরা যদি তাকওয়ার পথে চলতে পারি, তা হলে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বিশাল পুরস্কার দেবেন। মুত্তাকিদের জন্য দুনিয়া-আখেরাতে আনন্দ এবং স্বাচ্ছন্দ্যের জীবন উপহার প্রদান করবেন তিনি। ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা ঈমান এনেছে এবং তাকওয়া অর্জন করেছে তাদের জন্য রয়েছে সুসংবাদ দুনিয়া এবং আখেরাতে।’ (সুরা ইউনুস: ৬৩-৬৪)
তাকওয়ার আরও একটি নগদপ্রাপ্তি হচ্ছে কামাই-রুজি সহজ হয়ে যাওয়া এবং বরকত লাভ করা। ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি তাকওয়া অবলম্বন করবে, আল্লাহ তার মুক্তির ব্যবস্থা করবেন এবং এমনভাবে রিজিক দান করবেন, যা সে ভাবতেও পারেনি।’ (সুরা তালাক: ২-৩)। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তাকওয়া-পরহেজগারির জীবন অবলম্বনের তাওফিক দান করুন। আমিন।
তাকওয়ার পোশাক কেন শ্রেষ্ঠ ?
youtube
তাক্বওয়ার পোশাক কি?
youtube
তাকওয়া বলতে কি বুঝায় ?
youtube
পোশাকের সাথে তাকওয়ার কোন সম্পর্ক আছে কি।
youtube
তাকওয়ার পোশাক শ্রেষ্ঠ পোশাক
The Garment of Piety is the Best Garment
#ত#তাকওয়ার পোশাক শ্রেষ্ঠ পোশাক#Ta#The Garment of Piety is the Best Garment#তাকওয়া#Piety#পরহেজগারিতা#Taqwa#Abstinence#তাকওয়া অর্জনের ৭ উপায়#7 Ways to Achieve Taqwa#তাকওয়া অর্জন#AchieveTaqwa#Youtube
0 notes
Text
তাকওয়ার পোশাক শ্রেষ্ঠ পোশাক
The Garment of Piety is the Best Garment
তাকওয়া : এক মহিমান্বিত গুণ
তাকওয়া মুমিনের একটি অপরিহার্য গুণ। কুরআন মাজীদে তাকওয়া অবলম্বনকারীদের জন্য অনেক সুসংবাদ বর্ণিত হয়েছে। আল্লামা ফাইরোযাবাদী রাহ. তাঁর কিতাব بصائر ذوي التمييز -এ কুরআনে কারীমে বর্ণিত সুসংবাদগুলো উল্লেখ করেছেন। কুরআনে কারীমের প্রায় ২৭ স্থানে মুত্তাকীদের জন্য সুসংবাদ উল্লেখিত হয়েছে। কিছু সুসংবাদের আয়াত এখানে উল্লেখ করা হল-
১. আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্যের সুসংবাদ :
.
নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁদের সাথে থাকেন, যারা তাকওয়া অবলম্বন করে। -সূরা নাহল (১৬) : ১২৮
২. গুনাহ মাফ এবং বিরাট আজরের সুসংবাদ :
যে তাকওয়া অবলম্বন করে আল্লাহ তার গুনাহসমূহ মাফ করে দেন এবং তাকে বিরাট আজর দান করেন। -সূরা ত্বলাক (৬৫) : ৫
৩. মাগফিরাতের সুসংবাদ :
তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমাশীল দয়ালু। -সূরা আনফাল (৮) : ৬৯
৪. সকল কাজ সহজ হওয়ার সুসংবাদ :
যে তাক্বওয়া অবলম্বন করে আল্লাহ তার সব বিষয় সহজ করে দেন। -সূরা ত্বলাক (৬৫) : ৪
৫. সফলতার সুসংবাদ :
নিশ্চয়ই মুত্তাকীদের জন্য রয়েছে সফলতা। -সূরা নাবা (৭৮) : ৩১
৬. প্রশস্ত রিযিকের সুসংবাদ :
এবং তাকে রিযিক দান করেন অকল্পনীয়ভাবে। -সূরা ত্বালাক (৬৫) : ৩
৭. সম্মান-মর্যাদার সুসংবাদ :
.
নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট সবচেয়ে সম্মানিত ব্যক্তি হচ্ছে মুত্তাকীগণ। -সূরা হুজুরত (৪৯) : ১৩
৮. আল্লাহর মহব্বতের সুসংবাদ :
নিশ্চয়ই আল্লাহ মুত্তাকীদেরকে ভালোবাসেন। -সূরা তাওবা (৯) : ৪
৯. কবূলিয়্যাতের সুসংবাদ :
নিশ্চয়ই আল্লাহ মুত্তাকীদের থেকে কবুল করেন। -সূরা মায়েদা (৫) : ২৭
১০. শ্রেষ্ঠত্বের সুসংবাদ :
যাঁরা তাকওয়া অবলম্বন করে তারা কিয়ামতের দিন তাদের (কাফেরদের) উপরে থাকবে। -সূরা বাকারা (২) : ২১২
১১. শাস্তির ভয় থেকে মুক্ত থাকার সুসংবাদ :
যারা তাকওয়া অবলম্বন করে এবং সৎ থাকে, তাদের কোনো ভয় নেই এবং তারা কখনো দুঃখিত হবে না। -সূরা আরাফ (৮) : ৩৫
১২. জান্নাতে বিভিন্ন নিআমতের এবং আল্লাহর দীদার লাভের সুসংবাদ :
.
যারা তাকওয়া অবলম্বন করেছে তারা থাকবে উদ্যানরাজি ও নহরে। সত্যিকারের মর্যাদাপূর্ণ আসনে, সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী মহা সম্রাটের সান্নিধ্যে। -সূরা ক্বমার (৫৪) : ৫৪-৫৫
তাকওয়া অর্জনের ৭ উপায়
তাকওয়া মানে সতর্ক ও সচেতন থাকা। বান্দা সতর্ক থাকবে কিছুতেই যেন গুনাহের কাজ সংঘটিত না হয়; আর নেক আমল কিছুতেই যেন না ছোটে। হজরত ওমর ফারুক (রা.) উবাই ইবনে কাব (রা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন, তাকওয়া কী? উবাই ইবনে কাব (রা.) বলেন, আপনি কি কখনও কাঁটা বিছানো পথে হেঁটেছেন? ওমর (রা.) বললেন, হ্যাঁ। উবাই ইবনে কাব (রা.) বলেন, কাঁটা বিছানো পথে আপনি কীভাবে হেঁটেছেন? ওমর (রা.) বলেন, সতর্ক-সচেতনতার সঙ্গে যাতে আমার শরীরে কাঁটা না বিঁধে। উবাই ইবনে কাব (রা.) বললেন, এটাই হচ্ছে তাকওয়া।
কাঁটাযুক্ত পথে কাঁটা থেকে বাঁচার জন্য মানুষ যেভাবে সতর্ক হয়ে চলে, ঠিক সেভাবে আল্লাহর শাস্তি থেকে বাঁচার জন্য আল্লাহর নিষিদ্ধ বিধানগুলো থেকে বেঁচে থাকা এবং আল্লাহর কাছ থেকে পুরস্কার পাওয়ার আশায় নেক আমল করার নামই হলো তাকওয়া। অর্থাৎ রবের ভয়ে পাপ থেকে বিরত থাকা। রবের রহমতের আশায় সওয়াবের কাজ না ছাড়া। (তাফসিরে ইবনে কাসির: ১/৪০)
আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের পছন্দের বান্দা হতে চাইলে তাকওয়া-পরহেজগারির বিকল্প নেই। এ কারণেই তিনি পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে তাকওয়া অবলম্বনের আদেশ করেছেন এবং তাকওয়া অবলম্বনকারীদের ভালোবাসেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে মুত্তাকি বান্দারা আল্লাহর কাছে পছন্দনীয় এবং ভালোবাসার পাত্র।’ (সুরা হুজরাত: ১৩)
যেসব আমলের মাধ্যমে তাকওয়া অর্জন করা সহজ হয়, পবিত্র কোরআনের আলোকে সে বিষয়গুলো নিচে আলোচনা করা হলো—
১) কোরআন শিক্ষা করা আল্লাহ তাআলা বলেন, নিশ্চয় আমি এ কোরআনে মানুষের জন্য সব দৃষ্টান্তই বর্ননা করেছি, যাতে তারা শিক্ষা গ্রহণ করে। বক্রতামুক্ত আরবি কোরআন,যাতে তারা তাকওয়া অবলম্বন করে। (সুরা জুমার: ২৭-২৮)
২) আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা করা আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা করার মাধ্যমে অন্তরে তাকওয়া সৃষ্টি হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই রাত ও দিবসের বিবর্তন এবং আসমানসমূহ ও জমিনে যা আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন, তাতে বহু নিদর্শন রয়েছে এমন কওমের জন্য, যারা তাকওয়া অবলম্বন করে।’ (সুরা ইউনুস: ৬)
৩) ইখলাসের সঙ্গে আল্লাহর ইবাদত করা আল্লাহ তাআলার ইবাদতের মাধ্যমে অন্তরে তাকওয়া সৃষ্টি হয়, চাই সেটা ফরজ ইবাদত হোক কিংবা নফল। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মানুষ! তোমরা তোমাদের রবের ইবাদত করো। যিনি সৃষ্টি করেছেন তোমাদেরকে এবং তোমাদের আগে যারা ছিল, তাদেরকে। যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করো। (সুরা বাকারা: ২১)
৪) রোজা তাকওয়া সৃষ্টি করে যেসব ইবাদতের মাধ্যমে অন্তরে তাকওয়া সৃষ্টি হয়, তন্মধ্যে একটি হলো ‘রোজা’। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেভাবে ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর। যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করো।’ (সুরা বাকারা: ১৮৩)
৫) পরকালের ভয়াবহতা বিষয়ে আয়াত ও হাদিস পাঠ করা পরকাল ও তার ভয়াবহতা সম্পর্কিত কোরআনের আয়াত ও হাদিসগুলো বেশি বেশি অধ্যয়ন করার মাধ্যমে অন্তরে তাকওয়া সৃষ্টি হয়। আল্লাহ তাআলা বলেন, তাদের জন্য তাদের উপর দিকে থাকবে আগুনের আচ্ছাদন আর তাদের নিচের দিকেও থাকবে (আগুনের) আচ্ছাদন; এর মাধ্যমে আল্লাহ তাঁর বান্দাদের ভয় দেখান। হে আমার বান্দারা! তোমরা আমাকে ভয় করো। (সুরা জুমার: ১৬)
৬) সুবিচার বা ইনসাফ পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমরা সুবিচার করো। কেননা তা তাকওয়ার নিকটবর্তী।’ (সুরা মায়িদা: ৮)
৭) নবীপ্রেম নবীজি (স.)-এর প্রতি ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও তাঁর অনুসরণ মানুষকে উত্তম চরিত্র অবলম্বন করতে বাধ্য করে এবং প্রকৃত মুত্তাকিতে রূপান্তর করে। নবীজির প্রতি শ্রদ্ধার গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে মহান আল্লাহ বলেন, ‘যারা আল্লাহর রাসুলের সামনে নিজেদের কণ্ঠস্বর নিচু করে, আল্লাহ তাদের অন্তরকে তাকওয়ার জন্য পরিশোধিত করেছেন। তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও মহা পুরস্কার। (সুরা হুজরাত: ৩)
আমরা যদি তাকওয়ার পথে চলতে পারি, তা হলে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বিশাল পুরস্কার দেবেন। মুত্তাকিদের জন্য দুনিয়া-আখেরাতে আনন্দ এবং স্বাচ্ছন্দ্যের জীবন উপহার প্রদান করবেন তিনি। ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা ঈমান এনেছে এবং তাকওয়া অর্জন করেছে তাদের জন্য রয়েছে সুসংবাদ দুনিয়া এবং আখেরাতে।’ (সুরা ইউনুস: ৬৩-৬৪)
তাকওয়ার আরও একটি নগদপ্রাপ্তি হচ্ছে কামাই-রুজি সহজ হয়ে যাওয়া এবং বরকত লাভ করা। ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি তাকওয়া অবলম্বন করবে, আল্লাহ তার মুক্তির ব্যবস্থা করবেন এবং এমনভাবে রিজিক দান করবেন, যা সে ভাবতেও পারেনি।’ (সুরা তালাক: ২-৩)। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তাকওয়া-পরহেজগারির জীবন অবলম্বনের তাওফিক দান করুন। আমিন।
তাকওয়ার পোশাক কেন শ্রেষ্ঠ ?
youtube
তাক্বওয়ার পোশাক কি?
youtube
তাকওয়া বলতে কি বুঝায় ?
youtube
পোশাকের সাথে তাকওয়ার কোন সম্পর্ক আছে কি।
youtube
তাকওয়ার পোশাক শ্রেষ্ঠ পোশাক
The Garment of Piety is the Best Garment
#তাকওয়া#Piety#পরহেজগারিতা#Taqwa#Abstinence#তাকওয়া অর্জনের ৭ উপায়#7 Ways to Achieve Taqwa#তাকওয়া অর্জন#AchieveTaqwa#ত#তাকওয়ার পোশাক শ্রেষ্ঠ পোশাক#Ta#The Garment of Piety is the Best Garment#তাকওয়া#Youtube
0 notes
Text
রোজা ভঙ্গের যত কারণ
রোজা ভঙ্গের যত কারণ
পরহেজগারিতা অবলম্বনের অনন্য উপায় হিসেবে রমজানের রোজাকে পবিত্র কুরআনের ‘কুতিবা’ শব্দের মাধ্যমে ফরজ করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে ‘লাআল্লাকুম তাত্তাকুন’। অর্থাৎ, মানুষেরা যাতে পরহেজগারিতা অর্জন করতে পারে।যথাযথভাবে রোজা পালনের মধ্যে রয়েছে মহান আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি। যেমনটি হাদিসে কুদসিতে তিনি বলেছেন, “আদম সন্তানের প্রতিটি সৎকর্ম তার জন্যই; কিন্তু রোজা ব্যতিক্রম।তা আমারই জন্য, আর আমিই তার প্রতিদান দেব।”…
View On WordPress
0 notes
Text
অহেতুক রাগ মানুষকে ধ্বংস করে, ইসলাম কী বলে?
প্রবাদ আছে, ‘রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন’-এতো দুনিয়ার কথা। অঞ্চলভেদে রাগকে ক্রোধ বা গোস্বা হিসেবে জেনে থাকে। মানুষকে বিপদগ্রস্ত করার জন্য রাগ বা ক্রোধ হচ্ছে শয়তানের জঘন্যতম অস্ত্র। রাগের বশবর্তী হয়ে মানুষ বিপদ বা ক্ষতির দিকে ধাবিত হয়।
সুস্বাস্থ ও শান্তিময় জীবনের জন্য রাগ বা ক্রোধ দমন করা জরুরি। রাগের ফলেই মানুষের স্বাভাবিক বুদ্ধি ও বিবেক-বিবেচনা লোপ পায়। সুতরাং মুমিন বান্দার অন্যতম গুণ হলো রাগ বা ক্রোধ থেকে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা। রাগ বা ক্রোধ দমনে কুরআন-সুন্নাহ মোতাবেক যেসব কাজ করা জরুরি-
- অন্যায় কাজ ছেড়ে দেয়া
এ কারণেই আল্লাহ তাআলা মানুষকে রাগ দমনে সতর্কতা অবলম্বনের উপদেশ প্রদান করেছেন। রাগ দমনকে মুত্তাকিদের গুণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘এবং যারা অন্যায় ও পাপকর্ম থেকে নিজেদেরকে বিরত রাখে এবং যখন তারা রাগান্বিত হয় তখন তারা আত্মসংবরণ (ক্ষমা) করে।’ (সুরা আশ-শুরা : আয়াত ৩৭)
- তাকওয়া ও পরহেজগারি অবলম্বন করা
সুতরাং প্রবল রাগের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার অন্যতম উপায় হলো তাকওয়া ও পরহেজগারিতা অবলম্বন করা। কেননা আল্লাহ তাআলাই কুরআনে পাকে তাকওয়া ও পরহেজগারিকে রাগ দমনের অন্যতম উপায় হিসেবে সাব্যস্ত করেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘আর তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে মাগফেরাত ও জান্নাতের দিকে দ্রুত অগ্রসর হও এবং সেই জান্নাতের দিকে অগ্রসর হও, যার পিরিধি আসমানসমূহ ও জমিনে বিস্তৃত। যা মুত্তাকিদের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যারা সুসময়ে ও দুঃসময়ে ব্যয় করে এবং রাগ সংবরণ করে ও মানুষকে ক্ষমা করে দেয়। আর আল্লাহ নেক বান্দাদের ভালোবাসেন।’ (সুরা আল-ইমরান : আয়াত ১৩৩-১৩৪)
- আল্লাহর জিকির বা স্মরণ বাড়িয়ে দেয়া
অভিশপ্ত শয়তানই মানুষের অন্তরে ক্রোধের আগুন জালিয়ে দেয়। কাজেই ক্রোধের আগুন থেকে বাঁচার অন্যতম কার্যকর পন্থা হচ্ছে আল্লাহর জিকির করা। যাতে শয়তানের প্ররোচনা হতে নিরাপদ থাকা যায়। তাই বেশি বেশি ইসতেগফার করা-
‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়িল আজিম।’
- আল্লাহকে বেশি বেশি সেজদা করা
রাগ ও ক্রোধ থেকে মুক্তি পাওয়ার অন্যতম উপায় হচ্ছে আল্লাহকে বেশি বেশি সেজদা করা। কেননা সেজদা ক্রোধের আগুনকে থামিয়ে দেয়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন-
‘রাগ বা ক্রোধ হচ্ছে অগ্নি স্ফুলিঙ্গের ন্যায়, যা মানুষের মন ও মানসিকতার ওপর (নেতিবাচক) প্রভাব ফেলে। ফলে ক্রোধান্বিত ব্যক্তির চোখ রক্ত ব��্ণ হয়ে যায়। কাজেই যদি কারও মধ্যে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়, তবে তার উচিত সেজদাবনত হওয়া। নিঃসন্দেহে যে ব্যক্তি ক্রোধান্বিত অবস্থায় সেজদাবনত হবে, আল্লাহ তাকে শয়তানের প্রজ্বলিত আগুন থেকে রক্ষা করবেন আর তার অন্তরে প্রশান্তির সৃষ্টি হবে।’
- ওজু করা
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘রাগ বা ক্রোধ শয়তানের তরফ থেকে আসে। শয়তান আগুনের তৈরি। আর আগুনকে পানি দ্বারা ঠান্ডা করা হয়। তাই যদি কারো রাগ বা ক্রোধ হয় তবে তার উচিত ওজু করে নেয়া।’ (আবু দাউদ ও মিশকাত)
- বেশি বেশি দরূদ পড়া
রাগের সময় অধিক পরিমাণে দরুদ পাঠ করা। রাগ বা ক্রোধের সময় বেশি বেশি দরূদ পাঠ করলে মানুষের রাগ বা ক্রোধ কমে যায় এবং তাতে মানুষের আত্মা প্রশান্তি লাভ করে।
- রাগের সময় বসে যাওয়া
হজরত আবু যর গিফারি রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘যদি দাঁড়ানো অবস্থায় রাগ বা ক্রোধ আসে তবে সে যেন বসে যায়। এতেও যদি রাগ না থামে, তবে সে যেন শুয়ে পড়ে।’ (মুসনাদে আহমদ, তিরমিজি, মিশকাত)
মনে রাখতে হবে
অকারণে রাগ মানুষের ঈমানকে নষ্ট করে দেয়। প্রিয়নবি বলেন, রাগ বা ক্রোধ মানুষের ঈমানকে নষ্ট করে দেয় যেমনিভাবে তিক্ত ফল মধুকে নষ্ট করে দেয়।’ (বায়হাকি, মিশকাত)
আবার সাধারণ সময়ে ক্ষমা করা স্বাভাবিক। কিন্তু রাগের সময় কাউকে ক্ষমা করা অনেক বড় বীরত্বের কাজ। তাই তো মুমিন ব্যক্তি রাগের সময়েও নিজের রাগকে সংবরণ করে অন্যায়কারীকে ক্ষমা করে। হাদিসে এসেছে-
‘ওই ব্যক্তি বীর পুরুষ নয়, যে অন্যকে ধরাশায়ী করে; বরং সেই ব্যক্তিই প্রকৃত বীর, যে রাগের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।’ (বুখারি, মুসলিম, মিশকাত)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে রাগ দমনে কুরআন সুন্নাহর দিক-নির্দেশনার প্রতি মনোযোগী হওয়ার তাওফিক দান করুন। রাগের কারণে দুনিয়া ও পরকালের ক্ষতি থেকে নিজেদের হেফাজত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
via Blogger https://ift.tt/2HcIJkm
0 notes
Photo
রোজার মূল উদ্দেশ্য কী মহান রাব্বুল আলামিন তার পবিত্রগ্রন্থ আল-কুরআনে এরশাদ করেছেন- ‘ও মানুষেরা তোমরা যারা ঈমান এনেছ, রোজা অর্থাৎ রমজান মাসের রোজা তোমাদের ওপর ফরজ করা হয়েছে, যেমনটা ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী জাতির লোকদের ওপর; যাতে করে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার বা মোত্তাকি হতে পার’। ‘আস-সউম’ শব্দের অর্থ হলো- রোজা বা একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বিরত থাকা। এটা হলো সাধারণ অর্থ। বাহ্যিক অর্থ এবং এই বাহ্যিক শব্দের মধ্যে তাকওয়া খুঁজে পাওয়া যাবে না, শুধু রোজা রাখা হবে, ক্ষুদার্ত ও তৃষ্ণার্ত থাকা হবে। কিন্তু এই শব্দের আরেকটি অর্থ আছে, যাকে বলে অভ্যন্তরীণ বা ভেতরের অর্থ অথবা বলা যায় কুরআনিক অর্থ। যার মানে হলো- আল্লাহর জন্য রমজানের ফরজ রোজার নিয়তে সেহরি খাবেন। তারপর, ফজরের আজান থেকে নিয়ে ম��গরিবের আজান পযর্š— কোনো প্রকার খাদ্য গ্রহণ না করা, স্ত্রীর কাছে না যাওয়া, খারাপ কথা না বলার নাম হলো রোজা। সেই তাকওয়া অর্জন করার জন্য রোজা রা���ার নিয়ম আল্লাহর রাসূল সা: এভাবে বলেছেন, যে রোজা আমাদের তাকওয়া দিবে, সংশোধন করবে, পরহেজগার বানাবে ও সম্মানের সাথে পৃথক দরজা দিয়ে জান্নাতে যাওয়ার সুযোগ করে দেবে; সেই ধরনের রোজা রাখতে হলে প্রথমে আমাদের রোজা রাখার নিয়তে সেহরির সময়ে সেহরি খেতে হবে। আল্লাহর রাসূল সা: বলেছেন- ‘তোমরা সেহরি খাও, কেননা সেহরি খাওয়ার মধ্যে বরকত রয়েছে’(বুখারি-মুসলিম)। সেহরি না খেলে আপনার রোজা হয়ে যাবে কিন্তু সেহরির সওয়াব থেকে আপনি বঞ্চিত হবেন। সুতরাং, সেহরির সময় সেহরি খেয়ে আপনি নিয়ত করেন। ফজর পড়েন এবং জামায়াতে পড়তে চেষ্টা করেন। তারপর হাতে বেশি সময় থাকলে একটু ঘুমুতে যান। আর কম সময় থাকলে কিছু সময় কুরআন তিলাওয়াত করেন। বাজে ও মিথ্যা কথা, ধোঁকাবাজী এবং এই ধরনের যাবতীয় গুনাহের কাজ থেকে আপনাকে বেঁচে থাকতে হবে। আপনার চোখ, হাত পাসহ আপনার শরীরের প্রত্যেকটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কিন্তু রোজা রেখেছে, সেটা আপনার মাথায় থাকতে হবে। তাই আপনি অফিস আদালতে এমন কোনো কাজ করতে পারবেন না, যা হালাল নয় বা যা অন্যের ক্ষতি করে। ইসলামি শরিয়তে রোজা রাখা মানে সমস্ত শরীরের রোজা রাখা। ইফতারির আগমুহূর্তে দোয়া কবুল হয়। এভাবে যখন আপনি-আমি পূর্ণ একমাস রোজার হক আদায় করে রোজা রাখব, তখন দেখবেন ইন’শা আল্লাহ আমাদের মধ্যে পরিবর্তন আসবে। এই পরিবর্তনের মাধ্যমে আমরা আগামী ১১ মাস তাকওয়ার সাথে জীবনযাপন করতে পারব। ইসলামের এত গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদাত রমজান মাসের রোজাগুলো যাতে সঠিকভাবে রোজার হক আদায় করে পালন করা যায়, সেজন্য আল্লাহর রাসূল সা: একটি হাদিসের মাধ্যমে আমাদেরকে সতর্ক করে দিয়েছেন। হুজুর সা: বলেছেন- ‘যখন তোমাদের মধ্যে কেউ কোনো দিন রোজা রাখে, তখন রোজা অবস্থায় সে যেন কখনো খারাপ ভাষা, চিৎকার, গালিগালাজ, অপ্রয়োজনীয় তর্কে জড়িয়ে না পড়ে। কেউ যদি তার সাথে গায়ে পড়ে ঝগড়া করতে চায় বা তর্কে লিপ্ত করতে চায় তাহলে সে যেন বলে, ভাই আমাকে ক্ষমা করবেন, আমি রোজা রেখেছি। (বুখারি -মুসলিম) রোজার উদ্দেশ্য হলো- তাকওয়া অর্জন। যেটার জন্য আল্লাহ রোজাকে ফরজ করেছেন। তাই রমজান মাসের সব আমল- সেহরি, ইফতার, তারাবিহ, খতমে কুরআন, তাহাজ্জুদ, সদাকাতুল ফিতর ও ঈদের আনন্দ এ সব ইবাদাতের আগে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে যে, এগুলো করার পেছনে উদ্দেশ্য হলো তাকওয়া অর্জন করা। সুতরাং, রোজা অবস্থায় আমাদের কোনো অহেতুক কথা বা ঝগড়ায় জড়ানো মোটেই ঠিক নয়। এভাবে আমরা রোজা রাখার মাধ্যমে তাকওয়া অর্জন করতে পারব ইন’শা আল্লাহ। লেখক : প্রবাসী, ভার্জিনিয়া, ইউএসএ আরো পড়ুন : রমজান মানুষকে কল্যাণের পথে নিয়ে যায় সালমা সাহলি ইসলামের পাঁচটি রোকনের মধ্যে সাওম চতুর্থ এবং অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি রোকন বা স্তম্ভ। যা ফরজ করা হয়েছে মুসলমানের জন্য। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ, তোমাদের ওপর সিয়াম ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের ওপর, যাতে তোমরা পরহেজগারিতা অর্জন করতে পারো।’ (সূরা বাকারা-১৮৩)। মহান আল্লাহ তার সৃষ্টি মানবজাতির পথপ্রদর্শনের জন্য এই মাসেই পবিত্র কুরআন নাজিল করেন। এই মাসের শেষ দশকে রয়েছে এক মহিমা¤িœত রাত, যা হাজার মাসের (ইবাদতের) থেকে উত্তম; আল্লাহ তায়ালা যাকে লাইলাতুল কদর বলেছেন। পূর্ণ মর্যাদাসম্পন্ন এই মাসের গুরুত্ব সম্পর্কে কুরআনে বেশ কয়েকটি আয়াত অবতীর্ণের পাশাপাশি অনেক হাদিসও বর্ণিত হয়েছে। যেমন, হজরত আবু হুরায়রা রা: হতে বর্ণিত- আল্লাহর রাসূল সা: বলেন, সিয়াম ঢাল স্বরূপ। সুতরাং অশ্লীলতা করবে না, মূর্খের মতো কাজ করবে না। যদি কেউ তার সাথে ঝগড়া করতে চায়, তাকে গালি দেয় তবে সে যেনো বলে, আমি রোজাদার। ওই সত্তার শপথ; যার হাতে আমার প্রাণ, অবশ্যই সাওম পালনকারীর মুখের গন্ধ আল্লাহর কাছে মিসকের সুগন্ধির চাইতেও উৎকৃষ্ট। আল্লাহ বলেন, সে আমার জন্য পানাহার ও কামাচার পরিত্যাগ করে, সিয়াম আমারই জন্য, আমি নিজেই এর পুরস্কার দান করব। আর প্রত্যেক নেক কাজের বিনিময় দশগুন, (বুখারি, মুসলিম, আহমেদ)। ১) পূর্ণ আন্তরিকতার সাথে আল্লাহমুখী হয়ে রমজান মাসের রোজা পালন এবং একনিষ্ঠ ইবাদতের নিয়ত করা। ২) এই মাসে বেশি বেশি ইবাদতের জন্য সময় বের করার লক্ষ্যে দুনিয়াবি ব্যস্ততা কমিয়ে ফেলা। এ জন্য যতটুকু সম্ভব রোজা শুরু হওয়ার পূর্বেই দফতরিক কাজসহ প্রত্যেকে তার নিজ পেশা অনুযায়ী কিছু কাজ সেরে রাখা উচিত। রোজার সময় অনেক পরিবারে মহিলাদের কাজ বেশি থাকে। কিছু কাজ তারা সংক্ষিপ্ত করতে পারেন। ৩) আগের সব গুনার জন্য লজ্জিত হয়ে তাওবা-ইস্তেগফারের মাধ্যমে তা থেকে ফিরে আসা। খাঁটি দিলে তাওবাহকারীকে আল্লাহ পছন্দ করেন। ইচ্ছা এবং অনিচ্ছাকৃত করা সব পাপ থেকে নিজেকে সরিয়ে এনে তার বদলে বেশি করে নফল ইবাদত করা। কেননা হাদিসে এসেছে, ভুলে কেউ একটি পাপ করে ফেললে সে যেনো একটি পুণ্য করে নেয়। বেশি ইবাদত পাপকে মিটিয়ে ��েয়। ৪) পুরুষেরা পাঁচ ওয়াক্ত সলাত মাসজিদে জামাতে আদায় করা এবং মহিলারা আওয়া�� সময় খুসুখুজর সাথে সলাত পড়া। আমাদের আরো বেশি সচেতন এবং যতœবান হতে হবে সলাতের ব্যাপারে। প্রত্যেকটা রোকন পালন করে ধীর-স্থিরতার সাথে সলাত আদায় করা খুবই জরুরি। হাদিসে দ্রুত সলাতকে মোরগের ঠোকর দেয়ার সাথে তুলনা করা হয়েছে। এমন সলাতকে তার মুখে ছুড়ে মারা হবে এমন সাবধানবাণীও এসেছে। ৫) রমজান মাস কুরআন অবতীর্ণের মাস। নিয়মিত কুরআন তিলাওয়াত, কুরআন শিক্ষা করা, শিক্ষা দেয়া খুবই মর্যাদাপূর্ণ একটি আমল। কুরআন বুঝে পড়ে আমল করার মর্তবা অপরিসীম। এ বিষয়ে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা স্বয়ং বেশ কিছু আয়াত নাযিল করেছেন। যেমন, (ক) শুদ্ধ ও যথাযথভাবে কুরআন তিলাওয়াত প্রসঙ্গে, আমি যাদেরকে কিতাব দিয়েছি, তারা তা যথার্থভাবে পাঠ করে। তারাই তার প্রতি ঈমান আনে। আর যে তা অস্বীকার করে, তারাই ক্ষতিগ্রস্ত’ (সূরা বাকারাহ, আয়াত- ১২১)। (খ) কুরআন নিয়ে চিন্তা গবেষণা করা প্রসঙ্গেÑ ‘আমি তোমার প্রতি নাজিল করেছি এক বরকতময় কিতাব, যাতে তারা এর আয়াতসমূহ নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করে এবং যাতে বুদ্ধিমানগণ তা অনুধাবন করে’ (সূরা সোয়াদ, আয়াত- ২৯)। ৬) কিয়ামুল লাইল বা তারাবির সলাত পড়া। তাড়াহুড়া করে বা যেনোতেনোভাবে অনেক বেশি সালাত পড়ার থেকে শুদ্ধ ও তারতিলের সাথে দীর্ঘ সূরা পড়ে কবুলযোগ্য আট-দশ রাকাত সলাত পড়া অনেক উত্তম। সলাতের প্রতি সবার বিশেষভাবে যতœবান হওয়া জরুরি, হোক তা জামাতের সাথে ফরজ সলাত কিংবা ঘরে একাকী সুন্নত বা নফল সলাত। ৭) সময়মতো নিয়ত করা, সেহরি খাওয়া এবং সময়মতো ইফতার করা। ফরজ সিয়ামে নিয়ত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সময়মতো এবং অন্তর থেকে নিয়াত করা শর্ত। শেষ রাতে সেহরি খাওয়া উত্তম এবং এতে বরকত রয়েছে। সূর্য অস্তমিত হওয়ার সাথে সাথে ইফতার করার নির্দেশ এসেছে হাদিসে। সবাই একসাথে ইফতার করা উচিত। ৮) জাকাতুল মাল ও বেশি বেশি সদাকা করা। নিসাব পরিমাণ সম্পদ থাকলে তার যাকাত বের করে সময়মতো পরিশোধ করা ফরজ। ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে যাকাতের স্থান তৃতীয়। যাকাত অন্যের হক। কুরআনে বার বার সলাতের পর যাকাতের প্রসঙ্গটি এসেছে। রমজান মাসে যেহেতু সব ভালো কর্মের প্রতিদান বেশি, তাই এই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে বেশি বেশি দান করা উচিত। ৯) কল্যাণকর কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখা। রামাদানের প্রত্যেকটি মুহূর্তকে ফলদায়ক করাতে নিজেকে সচেষ্ট হতে হবে। আল্লাহর শুকরিয়া আদায়, দ্বীনের দাওয়াতি কাজসহ অন্যের প্রয়োজনে এগিয়ে যাওয়া এবং সর্বক্ষণ জিকিরের মাঝে নিজেকে নিয়োজিত রাখুন। পরিবারের বয়সীদের সেবাযতœ করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা সহজ, বিশেষ করে পিতা-মাতার সন্তুষ্টিতে ��ল্লাহর সন্তুষ্টি এবং জান্নাত পাওয়া সহজ হয়। ১০) লাইলাতুল কদর সন্ধান করা।‘সূরা কদর, আয়াত ১-৫। এ ছাড়া সূরা দুখানের তিন নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন- ‘নিশ্চয় আমি একে (কুরআান) এক বরকতময় রাতে নাজিল করেছি। নিশ্চয়ই আমি সতর্ককারী’। এ থেকে বুঝা যয়, এই রাতটি কতটা মহিমান্বিত। এই রাত যেনো হারিয়ে না যায় সেই জন্যে এই রাতের সন্ধানে ইতিকাফ করা উচিত এবং তা করা সুন্নত।. ১১) ওমরা করা। এই মাসে উমরা পালন করার কথা হাদিসে এসেছে যা গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদাত। ১২) রোজা রাখা অবস্থায় সব রকম পাপ থেকে বেঁচে থাকা। আমাদের সমাজে কিছু অন্যায় অহরহ করা হয়। অনেকে রোজা অবস্থায়ও এসব থেকে মুক্ত হতে পারে না। বিশেষ করে জিহবা দ্বারা সংঘটিত পাপ। উল্লিখিত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করে এবং বাস্তবায়িত করতে পারলে আশা করা যায়, রামজান মাসটিকে আমরা যথাযথভাবে কাজে লাগাতে সক্ষম হবো ইন’শা আল্লাহ। রাসূল সা: বলেন, যে রমজান মাস পেলো অথচ নিজের গুনাহ মাফ করিয়ে নিতে পারল না, সে সব কল্যাণ থেকে বঞ্চিত। তাহলে আসুন আমরা সচেষ্ট হই রমজানের আদব রক্ষা করে আল্লাহ তায়ালার ইবাদত এবং তাওবাহ ইস্তেগফারের মাধ্যমে গুনাহ মাফ করিয়ে তার নৈকট্য অর্জনে কামিয়াব হতে। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন। আমিন।
0 notes