#আল্লাহ ও বান্দার মধ্যে মধ্যস্থতাকারী নেই
Explore tagged Tumblr posts
Text
যার মধ্যে তাওহীদ নেই তার জান্নাত নেই
He Who Does Not Have Tawheed Does Not Have Paradise
যার মধ্যে তাওহীদ নেই তার জান্নাত নেই
youtube
তাওহীদ কি ? যার তাওহীদ নাই তার ইমান নাই.
https://www.youtube.com/watch?v=r8y87s9R-nM
তাওহীদ বিশুদ্ধ থাকলে, ভয় নেই |
https://www.youtube.com/watch?v=aywwO-uMPZo&t=79s
তাওহীদ 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ'-এর অর্থ, ব্যাখ্যা ও প্রয়োগ
https://www.youtube.com/watch?v=eakqz-3FdFE
বিশুদ্ধ/নির্ভেজাল তাওহীদের প্রতিদান।
https://www.youtube.com/watch?v=XSGAy5gOljQ
ঈমান ছাড়া জান্নাত নাই |
https://www.youtube.com/watch?v=iZOu7jVMBlo&t=34s
তাওহীদ হলো একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করা। তাওহিদ এর অর্থ- আল্লাহ ব্যতীত সকল কিছুর ইবাদত বর্জন করে বাহ্যিক ও অন্তর্নিহিতভাবে সমস্ত বক্তব্য ও কর্ম এবং সমস্ত উপাসনার জন্য আল্লাহকে একচ্ছত্র করা। তাওহীদ স্বীকার করা ও জীবনের সবক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা করা মুসলিম ব্যক্তির উদ্দেশ্য। তাওহীদ হলো ইসলাম ধর্মের কেন্দ্রীয় এবং একক অতি গুরুত্বপূর্ণ সত্য, যে ভিত্তির ওপর একজন মুসলমানের পুরো ধর্মীয় অনুষঙ্গটি নির্ভর করে। এটি দ্ব্যর্থহীনভাবে মনে করা হয় যে ইসলাম অনুসারে ঈশ্বরই (আরবি: الله اللهā) এক (আল-আহাদ) এবং একক (আল-ওয়���হাদ)। আল্লাহ একমাত্র 'সত্য মাবুদ' (ঈশ্বর)। #তাওহীদ হলো আল্লাহ তাআলাকে তাঁর কর্মসমূহে, তাঁর নাম ও গুণাবলীতে এবং বান্দার সমস্ত ইবাদতের কেন্দ্রবিন্দু হিসাবে এক, একক ও একমাত্র মানা। তাওহীদের তিনটি অংশ- 1 - তাওহীদ আর রুবুবিয়াহ (আল্লাহর কর্মে ও প্রভুত্বে ঐক্য বজায় রাখা) তিনি একাই হলেন স্রষ্টা (স্রষ্টা) এবং মহাবিশ্বের নিয়ন্ত্রণকারী (ইত্যাদি) এবং আল্লাহ কারও কাছে দায়বদ্ধ নন। 2 - তাওহীদ আল ইবাদাহ (উলুহিয়াহ) (বান্দার সমস্ত ইবাদত/উপাসনা একমাত্র আল্লাহর জন্য করা) এবং কোনও মধ্যস্থতাকারী ছাড়াই ... কেবলমাত্র আল্লাহরই কাছে প্রার্থনা ও প্রার্থনা পাবার এবং কুরবানী ও উপাসনা পাবার অধিকার রয়েছে। 3 - তাওহীদ আল-আসমা ’ওয়া’ল সিফাত (আল্লাহর নাম ও বৈশিষ্ট্যের একত্ব) এর অর্থ আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর সত্যতা নিশ্চিত করা এবং বিশ্বাস করা যে তাঁর নাম ও গুণাবলীতে আল্লাহর মতো আর কোনো কিছু নেই। আল্লাহর তাওহীদের দিকেই সকলকে আহব্বান করেছেন মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)। (সহীহ আল বুখারী 7372)
আল্লাহর অবিভাজ্য একত্বই তাওহিদ
তাওহিদ সমস্ত ইসলামী বিশ্বাসের কেন্দ্রবিন্দু। তাওহিদ হলো এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস। আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো মাবুদ নেই এবং তাঁর সাথে তুলনীয় কেউ নেই। আমরা কখনই আল্লাহকে বুঝতে পারব না কারণ তাঁর প্রকৃতি আমাদের সীমিত মন জানে না। আমরা আল্লাহর সৃষ্টি, কিন্তু তিনি নিজে সৃষ্ট নন। আল্লাহ অদ্বিতীয়, সর্বশক্তিমান, একমাত্র উপাস্য। আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ তায়ালা। আল্লাহ একমাত্র সত্য মাবুদ। আল্লাহ ছাড়া কোনো 'সত্য ঈশ্বর'/ 'সত্য উপাস্য' নেই।
নিখাঁদ তাওহীদ জান্নাতের নিশ্চয়তা
“‘উবাদাহ্ ইবনুস্ সামেত (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ ফরমান : যে ব্যক্তি এ মর্মে স্বাক্ষ্য দেবে যে, আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া কোনো সত্যিকারের ইলাই নেই, তিনি একক, তার কোনো শরীক নেই। আর এ কথাও স্বাক্ষ্য দেবে যে, মুহাম্মদ (সাঃ) তার বান্দাহ ও রাসূল। (আরও ঈমান রাখবে যে,) নিশ্চয়ই ‘ঈসা ('আঃ) আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল এবং তার কালিমা, যা তিনি মারইয়ামের মাঝে অনুপ্রবিষ্ট করিয়েছিলেন। আর তিনি তার তরফ হতে রূহ্ বিশেষ। (আরো বিশ্বাস রাখবে যে,) জান্নাত সত্য এবং জাহান্নামও সত্য, তার ‘আমল যা হোক না কেনো, আল্লাহ তা‘আলা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। সহীহু�� বুখারী- হাঃ ৩৪৩৫ ও সহীহ মুসলিম- হাঃ ২৮।
তাওহীদের পারিভাষিক অর্থ কি?
তাওহিদ শব্দের অর্থ একত্ববাদ । ইসলামি শরিয���তের পরিভাষায় আল্লাহ তায়ালাকে এক ও অদ্বিতীয় হিসেবে স্বীকার করে নেওয়াকে তাওহিদ বলা হয় । তাওহিদের মূল কথা হলো- আল্লাহ তায়ালা এক ও অদ্বিতীয় । তিনি তাঁর সত্তা ও গুণাবলিতে অদ্বিতীয় ।
তাওহীদে তিন অংশ কি কি?
তাওহিদকে তিনটি অংশে বিভক্ত করা হয়েছে; যথা, তাওহিদ আল-রুবুবিয়্যাহ (ঐশ্বরিক প্রভুত্বের একত্ব), তাওহিদ আল-উলুহিয়্যাহ (ঐশ্বরিকতার একত্ব) এবং তাওহীদ আল-আসমা ওয়াল-সিফাত (ঐশ্বরিক নাম ও গুণাবলীর একত্ব)।
তাওহিদে বিশ্বাসের মূল মন্ত্র কি?
"আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোনো (সত্য) উপাস্য নেই; সুন্দর নামসমূহ তারই।" "তিনিই আল্লাহ্, তোমাদের প্রতিপালক। সমস্ত কর্তৃত্ব তারই। আর তোমরা আল্লাহ্-র পরিবর্তে যাদেরকে ডাকো (যাদের কাছে দুআ করো), তারা তো খেজুর আঁটির উপরে পাতলা আবরণেরও (অতি তুচ্ছ কিছুরও) মালিক নয়।"
কিভাবে তাওহীদ পরিপূর্ণ করা যায়?
উল্লেখ্য যে, তাওহীদ বা আল্লাহর একত্ববাদে সত্যিকারের বিশ্বাস অর্জন করা সম্ভব শুধুমাত্র এই সাক্ষ্য দেওয়ার মাধ্যমে যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর রাসূল । এটি অর্জন করা দুটি স্তরের, একটি ফরয এবং একটি মুস্তাহাব।
বাচ্চাদের তাওহীদ কিভাবে বুঝানো যায়?
তাওহীদ মানে আল্লাহর একত্বে বিশ্বাস করা বা তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক না করা । তাওহীদকেও বোঝা যায় মানুষ একাকী আল্লাহর উপাসনা করে। তাওহীদের শিক্ষা বলতে বিভিন্ন উপায় তৈরি করার প্রচেষ্টা বোঝায় যাতে শিশুরা তাদের জীবনে তাওহীদের ধারণা জানতে, বুঝতে এবং অনুশীলন করতে পারে।
কুরআনে কি তাওহিদ আছে?
কোরান সর্বোপরি আল্লাহর এককতা এবং একক সার্বভৌমত্বের উপর জোর দেয়, আরবি শব্দ তাওহীদ ("একত্ব") দ্বারা নির্দেশিত একটি মতবাদ । তিনি কখনই ঘুমান বা ক্লান্ত হন না, এবং অতিক্রান্ত অবস্থায়, তিনি তাঁর ঐশ্বরিক জ্ঞানের সর্বব্যাপীতার মাধ্যমে প্রতিটি জায়গায় সমস্ত কিছু উপলব্ধি করেন এবং প্রতিক্রিয়া করেন।
তাওহীদের উপর ইনতিকাল করবে, সে অবশ্��ই জান্নাতে প্রবেশ করবে
যে ব্যক্তি তাওহীদের উপর ইনতিকাল করবে, সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে- এর প্রমাণ:-
আবূ বকর ইবনে আবূ শায়বা ও যুহায়র ইবনে হারব রহ…উসমান রাযি. থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন, যে ব্যক্তি লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ-এর নিশ্চিত বিশ্বাস নিয়ে ইনতিকাল করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
দাউদ ইবনে রুশায়দ রাযি…উবাদা ইবনে সামিত রাযি. থেকে বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন, যে ব্যক্তি বলবে আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, তিনি এক, তাঁর কোন শরীক নেই এবং মুহাম্মদ (সা) তাঁর বান্দা ও রাসূল, ঈসা আ. আল্লাহর বান্দা ও তাঁর দাসীর পুত্র, তাঁর কথা দ্বারা পয়দা হয়েছেন যা তিনি মারয়ামের মধ্যে ঢেলে ছিলেন ( অর্থাৎ কালেমায়ে ‘কুন’ দ্বারা মারয়ামের গর্ভে তাঁকে পয়দা করেছেন) তিনি তাঁর আত্মা, জান্নাত সত্য, জাহান্নাম সত্য। সে ব্যক্তিকে আল্লাহ জান্নাতের আটটি তোরণের যেখান দিয়ে সে চাইবে প্রবেশ করাবেন।
তাওহীদের উপরে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি বিনা হিসেবে জান্নাতে যাবে
আল্লাহ তা’আলা এরশাদ করেন,
‘‘নিশ্চয়ই ইবরাহীম ছিলেন একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর হুকুম পালনকারী একটি উম্মত বিশেষ। এবং তিনি মুশরিকদের অন্তর্ভূক্ত ছিলেন না।’’ (নাহলঃ১২০)
২। আল্লাহ তাআলা আরো এরশাদ করেন,
‘‘আর যারা তাদের রবের সাথে শিরক করে না’’ (মুমিনুনঃ ৫৯)
ছাত্রদেরকে তাওহীদ সম্পৰ্কে স্বচ্ছ ও বিশুদ্ধ জ্ঞান দিন
https://www.youtube.com/watch?v=41fcSMqyBmA
তাওহীদ কেন নষ্ট হয়
ঈমান কি | ঈমান ছাড়া জান্নাত নাই
https://www.youtube.com/watch?v=Gw6lLbp0L-w
বিশুদ্ধ আক্বিদা ও তাওহীদ।
https://www.youtube.com/watch?v=F8ZdZXa3UlE
যার মধ্যে তাওহীদ নেই তার জান্নাত নেই
He Who Does Not Have Tawheed Does Not Have Paradise
#allahswt#tawheed#allah'snature#যার মধ্যে তাওহীদ নেই তার জান্নাত নেই#তাওহীদ#তাওহিদ#তৌহিদ#Tawheed#Tauhid#Tauheed#Tawhid#আকিদা#তাওহীদশিক্ষা#তৌহীদ#Youtube
0 notes
Text
যার মধ্যে তাওহীদ নেই তার জান্নাত নেই
He Who Does Not Have Tawheed Does Not Have Paradise
যার মধ্যে তাওহীদ নেই তার জান্নাত নেই
youtube
তাওহীদ কি ? যার তাওহীদ নাই তার ইমান নাই.
https://www.youtube.com/watch?v=r8y87s9R-nM
তাওহীদ বিশুদ্ধ থাকলে, ভয় নেই |
https://www.youtube.com/watch?v=aywwO-uMPZo&t=79s
তাওহীদ 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ'-এর অর্থ, ব্যাখ্যা ও প্রয়োগ
https://www.youtube.com/watch?v=eakqz-3FdFE
বিশুদ্ধ/নির্ভেজাল তাওহীদের প্রতিদান।
https://www.youtube.com/watch?v=XSGAy5gOljQ
ঈমান ছাড়া জান্নাত নাই |
https://www.youtube.com/watch?v=iZOu7jVMBlo&t=34s
তাওহীদ হলো একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করা। তাওহিদ এর অর্থ- আল্লাহ ব্যতীত সকল কিছুর ইবাদত বর্জন করে বাহ্যিক ও অন্তর্নিহিতভাবে সমস্ত বক্তব্য ও কর্ম এবং সমস্ত উপাসনার জন্য আল্লাহকে একচ্ছত্র করা। তাওহীদ স্বীকার করা ও জীবনের সবক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা করা মুসলিম ব্যক্তির উদ্দেশ্য। তাওহীদ হলো ইসলাম ধর্মের কেন্দ্রীয় এবং একক অতি গুরুত্বপূর্ণ সত্য, যে ভিত্তির ওপর একজন মুসলমানের পুরো ধর্মীয় অনুষঙ্গটি নির্ভর করে। এটি দ্ব্যর্থহীনভাবে মনে করা হয় যে ইসলাম অনুসারে ঈশ্বরই (আরবি: الله اللهā) এক (আল-আহাদ) এবং একক (আল-ওয়াহাদ)। আল্লাহ একমাত্র 'সত্য মাবুদ' (ঈশ্বর)। #তাওহীদ হলো আল্লাহ তাআলাকে তাঁর কর্মসমূহে, তাঁর নাম ও গুণাবলীতে এবং বান্দার সমস্ত ইবাদতের কেন্দ্রবিন্দু হিসাবে এক, একক ও একমাত্র মানা। তাওহীদের তিনটি অংশ- 1 - তাওহীদ আর রুবুবিয়াহ (আল্লাহর কর্মে ও প্রভুত্বে ঐক্য বজায় রাখা) তিনি একাই হলেন স্রষ্টা (স্রষ্টা) এবং মহাবিশ্বের নিয়ন্ত্রণকারী (ইত্যাদি) এবং আল্লাহ কারও কাছে দায়বদ্ধ নন। 2 - তাওহীদ আল ইবাদাহ (উলুহিয়াহ) (বান্দার সমস্ত ইবাদত/উপাসনা একমাত্র আল্লাহর জন্য করা) এবং কোনও মধ্যস্থতাকারী ছাড়াই ... কেবলমাত্র আল্লাহরই কাছে প্রার্থনা ও প্রার্থনা পাবার এবং কুরবানী ও উপাসনা পাবার অধিকার রয়েছে। 3 - তাওহীদ আল-আসমা ’ওয়া’ল সিফাত (আল্লাহর নাম ও বৈশিষ্ট্যের একত্ব) এর অর্থ আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর সত্যতা নিশ্চিত করা এবং বিশ্বাস করা যে তাঁর নাম ও গুণাবলীতে আল্লাহর মতো আর কোনো কিছু নেই। আল্লাহর তাওহীদের দিকেই সকলকে আহব্বান করেছেন মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)। (সহীহ আল বুখারী 7372)
আল্লাহর অবিভাজ্য একত্বই তাওহিদ
তাওহিদ সমস্ত ইসলামী বিশ্বাসের কেন্দ্রবিন্দু। তাওহিদ হলো এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস। আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো মাবুদ নেই এবং তাঁর সাথে তুলনীয় কেউ নেই। আমরা কখনই আল্লাহকে বুঝতে পারব না কারণ তাঁর প্রকৃতি আমাদের সীমিত মন জানে না। আমরা আল্লাহর সৃষ্টি, কিন্তু তিনি নিজে সৃষ্ট নন। আল্লাহ অদ্বিতীয়, সর্বশক্তিমান, একমাত্র উপাস্য। আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ তায়ালা। আল্লাহ একমাত্র সত্য মাবুদ। আল্লাহ ছাড়া কোনো 'সত্য ঈশ্বর'/ 'সত্য উপাস্য' নেই।
নিখাঁদ তাওহীদ জান্নাতের নিশ্চয়তা
“‘উবাদাহ্ ইবনুস্ সামেত (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ ফরমান : যে ব্যক্তি এ মর্মে স্বাক্ষ্য দেবে যে, আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া কোনো সত্যিকারের ইলাই নেই, তিনি একক, তার কোনো শরীক নেই। আর এ কথাও স্বাক্ষ্য দেবে যে, মুহাম্মদ (সাঃ) তার বান্দাহ ও রাসূল। (আরও ঈমান রাখবে যে,) নিশ্চয়ই ‘ঈসা ('আঃ) আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল এবং তার কালিমা, যা তিনি মারইয়ামের মাঝে অনুপ্রবিষ্ট করিয়েছিলেন। আর তিনি তার তরফ হতে রূহ্ বিশেষ। (আরো বিশ্বাস রাখবে যে,) জান্নাত সত্য এবং জাহান্নামও সত্য, তার ‘আমল যা হোক না কেনো, আল্লাহ তা‘আলা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। সহীহুল বুখারী- হাঃ ৩৪৩৫ ও সহীহ মুসলিম- হাঃ ২৮।
তাওহীদের পারিভাষিক অর্থ কি?
তাওহিদ শব্দের অর্থ একত্ববাদ । ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায় আল্লাহ তায়ালাকে এক ও অদ্বিতীয় হিসেবে স্বীকার করে নেওয়াকে তাওহিদ বলা হয় । তাওহিদের মূল কথা হলো- আল্লাহ তায়ালা এক ও অদ্বিতীয় । তিনি তাঁর সত্তা ও গুণাবলিতে অদ্বিতীয় ।
তাওহীদে তিন অংশ কি কি?
তাওহিদকে তিনটি অংশে বিভক্ত করা হয়েছে; যথা, তাওহিদ আল-রুবুবিয়্যাহ (ঐশ্বরিক প্রভুত্বের একত্ব), তাওহিদ আল-উলুহিয়্যাহ (ঐশ্বরিকতার একত্ব) এবং তাওহীদ আল-আসমা ওয়াল-সিফাত (ঐশ্বরিক নাম ও গুণাবলীর একত্ব)।
তাওহিদে বিশ্বাসের মূল মন্ত্র কি?
"আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোনো (সত্য) উপাস্য নেই; সুন্দর নামসমূহ তারই।" "তিনিই আল্লাহ্, তোমাদের প্রতিপালক। সমস্ত কর্তৃত্ব তারই। আর তোমরা আল্লাহ্-র পরিবর্তে যাদেরকে ডাকো (যাদের কাছে দুআ করো), তারা তো খেজুর আঁটির উপরে পাতলা আবরণেরও (অতি তুচ্ছ কিছুরও) মালিক নয়।"
কিভাবে তাওহীদ পরিপূর্ণ করা যায়?
উল্লেখ্য যে, তাওহীদ বা আল্লাহর একত্ববাদে সত্যিকারের বিশ্বাস অর্জন করা সম্ভব শুধুমাত্র এই সাক্ষ্য দেওয়ার মাধ্যমে যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর রাসূল । এটি অর্জন করা দুটি স্তরের, একটি ফরয এবং একটি মুস্তাহাব।
বাচ্চাদের তাওহীদ কিভাবে বুঝানো যায়?
তাওহীদ মানে আল্লাহর একত্বে বিশ্বাস করা বা তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক না করা । তাওহীদকেও বোঝা যায় মানুষ একাকী আল্লাহর উপাসনা করে। তাওহীদের শিক্ষা বলতে বিভিন্ন উপায় তৈরি করার প্রচেষ্টা বোঝায় যাতে শিশুরা তাদের জীবনে তাওহীদের ধারণা জানতে, বুঝতে এবং অনুশীলন করতে পারে।
কুরআনে কি তাওহিদ আছে?
কোরান সর্বোপরি আল্লাহর এককতা এবং একক সার্বভৌমত্বের উপর জোর দেয়, আরবি শব্দ তাওহীদ ("একত্ব") দ্বারা নির্দেশিত একটি মতবাদ । তিনি কখনই ঘুমান বা ক্লান্ত হন না, এবং অতিক্রান্ত অবস্থায়, তিনি তাঁর ঐশ্বরিক জ্ঞানের সর্বব্যাপীতার মাধ্যমে প্রতিটি জায়গায় সমস্ত কিছু উপলব্ধি করেন এবং প্রতিক্রিয়া করেন।
তাওহীদের উপর ইনতিকাল করবে, সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে
যে ব্যক্তি তাওহীদের উপর ইনতিকাল করবে, সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে- এর প্রমাণ:-
আবূ বকর ইবনে আবূ শায়বা ও যুহায়র ইবনে হারব রহ…উসমান রাযি. থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন, যে ব্যক্তি লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ-এর নিশ্চিত বিশ্বাস নিয়ে ইনতিকাল করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
দাউদ ইবনে রুশায়দ রাযি…উবাদা ইবনে সামিত রাযি. থেকে বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন, যে ব্যক্তি বলবে আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, তিনি এক, তাঁর কোন শরীক নেই এবং মুহাম্মদ (সা) তাঁর বান্দা ও রাসূল, ঈসা আ. আল্লাহর বান্দা ও তাঁর দাসীর পুত্র, তাঁর কথা দ্বারা পয়দা হয়েছেন যা তিনি মারয়ামের মধ্যে ঢেলে ছিলেন ( অর্থাৎ কালেমায়ে ‘কুন’ দ্বারা মারয়ামের গর্ভে তাঁকে পয়দা করেছেন) তিনি তাঁর আত্মা, জান্নাত সত্য, জাহান্নাম সত্য। সে ব্যক্তিকে আল্লাহ জান্নাতের আটটি তোরণের যেখান দিয়ে সে চাইবে প্রবেশ করাবেন।
তাওহীদের উপরে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি বিনা হিসেবে জান্নাতে যাবে
আল্লাহ তা’আলা এরশাদ করেন,
‘‘নিশ্চয়ই ইবরাহীম ছিলেন একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর হুকুম পালনকারী একটি উম্মত বিশেষ। এবং তিনি মুশরিকদের অন্তর্ভূক্ত ছিলেন না।’’ (নাহলঃ১২০)
২। আল্লাহ তাআলা আরো এরশাদ করেন,
‘‘আর যারা তাদের রবের সাথে শিরক করে না’’ (মুমিনুনঃ ৫৯)
ছাত্রদেরকে তাওহীদ সম্পৰ্কে স্বচ্ছ ও বিশুদ্ধ জ্ঞান দিন
https://www.youtube.com/watch?v=41fcSMqyBmA
তাওহীদ কেন নষ্ট হয়
ঈমান কি | ঈমান ছাড়া জান্নাত নাই
https://www.youtube.com/watch?v=Gw6lLbp0L-w
বিশুদ্ধ আক্বিদা ও তাওহীদ।
https://www.youtube.com/watch?v=F8ZdZXa3UlE
যার মধ্যে তাওহীদ নেই তার জান্নাত নেই
He Who Does Not Have Tawheed Does Not Have Paradise
#allahswt#tawhid#tawheed#যার মধ্যে তাওহীদ নেই তার জান্নাত নেই#তাওহীদ#তাওহিদ#তৌহিদ#Tawheed#Tauhid#Tauheed#Tawhid#আকিদা#তাওহীদশিক্ষা#তৌহীদ#whoisallah#allah'snature#Youtube
0 notes
Text
যার মধ্যে তাওহীদ নেই তার জান্নাত নেই
He Who Does Not Have Tawheed Does Not Have Paradise
যার মধ্যে তাওহীদ নেই তার জান্নাত নেই
youtube
তাওহীদ কি ? যার তাওহীদ নাই তার ইমান নাই.
https://www.youtube.com/watch?v=r8y87s9R-nM
তাওহীদ বিশুদ্ধ থাকলে, ভয় নেই |
https://www.youtube.com/watch?v=aywwO-uMPZo&t=79s
তাওহীদ 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ'-এর অর্থ, ব্যাখ্যা ও প্রয়োগ
https://www.youtube.com/watch?v=eakqz-3FdFE
বিশুদ্ধ/নির্ভেজাল তাওহীদের প্রতিদান।
https://www.youtube.com/watch?v=XSGAy5gOljQ
ঈমান ছাড়া জান্নাত নাই |
https://www.youtube.com/watch?v=iZOu7jVMBlo&t=34s
তাওহীদ হলো একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করা। তাওহিদ এর অর্থ- আল্লাহ ব্যতীত সকল কিছুর ইবাদত বর্জন করে বাহ্যিক ও অন্তর্নিহিতভাবে সমস্ত বক্তব্য ও কর্ম এবং সমস্ত উপাসনার জন্য আল্লাহকে একচ্ছত্র করা। তাওহীদ স্বীকার করা ও জীবনের সবক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা করা মুসলিম ব্যক্তির উদ্দেশ্য। তাওহীদ হলো ইসলাম ধর্মের কেন্দ্রীয় এবং একক অতি গুরুত্বপূর্ণ সত্য, যে ভিত্তির ওপর একজন মুসলমানের পুরো ধর্মীয় অনুষঙ্গটি নির্ভর করে। এটি দ্ব্যর্থহীনভাবে মনে করা হয় যে ইসলাম অনুসারে ঈশ্বরই (আরবি: الله اللهā) এক (আল-আহাদ) এবং একক (আল-ওয়াহাদ)। আল্লাহ একমাত্র 'সত্য মাবুদ' (ঈশ্বর)। #তাওহীদ হলো আল্লাহ তাআলাকে তাঁর কর্মসমূহে, তাঁর নাম ও গুণাবলীতে এবং বান্দার সমস্ত ইবাদতের কেন্দ্রবিন্দু হিসাবে এক, একক ও একমাত্র মানা। তাওহীদের তিনটি অংশ- 1 - তাওহীদ আর রুবুবিয়াহ (আল্লাহর কর্মে ও প্রভুত্বে ঐক্য বজায় রাখা) তিনি একাই হলেন স্রষ্টা (স্রষ্টা) এবং মহাবিশ্বের নিয়ন্ত্রণকারী (ইত্যাদি) এবং আল্লাহ কারও কাছে দায়বদ্ধ নন। 2 - তাওহীদ আল ইবাদাহ (উলুহিয়াহ) (বান্দার সমস্ত ইবাদত/উপাসনা একমাত্র আল্লাহর জন্য করা) এবং কোনও মধ্যস্থতাকারী ছাড়াই ... কেবলমাত্র আল্লাহরই কাছে প্রার্থনা ও প্রার্থনা পাবার এবং কুরবানী ও উপাসনা পাবার অধিকার রয়েছে। 3 - তাওহীদ আল-আসমা ’ওয়া’ল সিফাত (আল্লাহর নাম ও বৈশিষ্ট্যের একত্ব) এর অর্থ আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর সত্যতা নিশ্চিত করা এবং বিশ্বাস করা যে তাঁর নাম ও গুণাবলীতে আল্লাহর মতো আর কোনো কিছু নেই। আল্লাহর তাওহীদের দিকেই সকলকে আহব্বান করেছেন মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)। (সহীহ আল বুখারী 7372)
আল্লাহর অবিভাজ্য একত্বই তাওহিদ
তাওহিদ সমস্ত ইসলামী বিশ্বাসের কেন্দ্রবিন্দু। তাওহিদ হলো এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস। আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো মাবুদ নেই এবং তাঁর সাথে তুলনীয় কেউ নেই। আমরা কখনই আল্লাহকে বুঝতে পারব না কারণ তাঁর প্রকৃতি আমাদের সীমিত মন জানে না। আমরা আল্লাহর সৃষ্টি, কিন্তু তিনি নিজে সৃষ্ট নন। আল্লাহ অদ্বিতীয়, সর্বশক্তিমান, একমাত্র উপাস্য। আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ তায়ালা। আল্লাহ একমাত্র সত্য মাবুদ। আল্লাহ ছাড়া কোনো 'সত্য ঈশ্বর'/ 'সত্য উপাস্য' নেই।
নিখাঁদ তাওহীদ জান্নাতের নিশ্চয়তা
“‘উবাদাহ্ ইবনুস্ সামেত (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ ফরমান : যে ব্যক্তি এ মর্মে স্বাক্ষ্য দেবে যে, আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া কোনো সত্যিকারের ইলাই নেই, তিনি একক, তার কোনো শরীক নেই। আর এ কথাও স্বাক্ষ্য দেবে যে, মুহাম্মদ (সাঃ) তার বান্দাহ ও রাসূল। (আরও ঈমান রাখবে যে,) নিশ্চয়ই ‘ঈসা ('আঃ) আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল এবং তার কালিমা, যা তিনি মারইয়ামের মাঝে অনুপ্রবিষ্ট করিয়েছিলেন। আর তিনি তার তরফ হতে রূহ্ বিশেষ। (আরো বিশ্বাস রাখবে যে,) জান্নাত সত্য এবং জাহান্নামও সত্য, তার ‘আমল যা হোক না কেনো, আল্লাহ তা‘আলা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। সহীহুল বুখারী- হাঃ ৩৪৩৫ ও সহীহ মুসলিম- হাঃ ২৮।
তাওহীদের পারিভাষিক অর্থ কি?
তাওহিদ শব্দের অর্থ একত্ববাদ । ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায় আল্লাহ তায়ালাকে এক ও অদ্বিতীয় হিসেবে স্বীকার করে নেওয়াকে তাওহিদ বলা হয় । তাওহিদের মূল কথা হলো- আল্লাহ তায়ালা এক ও অদ্বিতীয় । তিনি তাঁর সত্তা ও গুণাবলিতে অদ্বিতীয় ।
তাওহীদে তিন অংশ কি কি?
তাওহিদকে তিনটি অংশে বিভক্ত করা হয়েছে; যথা, তাওহিদ আল-রুবুবিয়্যাহ (ঐশ্বরিক প্রভুত্বের একত্ব), তাওহিদ আল-উলুহিয়্যাহ (ঐশ্বরিকতার একত্ব) এবং তাওহীদ আল-আসমা ওয়াল-সিফাত (ঐশ্বরিক নাম ও গুণাবলীর একত্ব)।
তাওহিদে বিশ্বাসের মূল মন্ত্র কি?
"আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোনো (সত্য) উপাস্য নেই; সুন্দর নামসমূহ তারই।" "তিনিই আল্লাহ্, তোমাদের প্রতিপালক। সমস্ত কর্তৃত্ব তারই। আর তোমরা আল্লাহ্-র পরিবর্তে যাদেরকে ডাকো (যাদের কাছে দুআ করো), তারা তো খেজুর আঁটির উপরে পাতলা আবরণেরও (অতি তুচ্ছ কিছুরও) মালিক নয়।"
কিভাবে তাওহীদ পরিপূর্ণ করা যায়?
উল্লেখ্য যে, তাওহীদ বা আল্লাহর একত্ববাদে সত্যিকারের বিশ্বাস অর্জন করা সম্ভব শুধুমাত্র এই সাক্ষ্য দেওয়ার মাধ্যমে যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর রাসূল । এটি অর্জন করা দুটি স্তরের, একটি ফরয এবং একটি মুস্তাহাব।
বাচ্চাদের তাওহীদ কিভাবে বুঝানো যায়?
তাওহীদ মানে আল্লাহর একত্বে বিশ্বাস করা বা তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক না করা । তাওহীদকেও বোঝা যায় মানুষ একাকী আল্লাহর উপাসনা করে। তাওহীদের শিক্ষা বলতে বিভিন্ন উপায় তৈরি করার প্রচেষ্টা বোঝায় যাতে শিশুরা তাদের জীবনে তাওহীদের ধারণা জানতে, বুঝতে এবং অনুশীলন করতে পারে।
কুরআনে কি তাওহিদ আছে?
কোরান সর্বোপরি আল্লাহর এককতা এবং একক সার্বভৌমত্বের উপর জোর দেয়, আরবি শব্দ তাওহীদ ("একত্ব") দ্বারা নির্দেশিত একটি মতবাদ । তিনি কখনই ঘুমান বা ক্লান্ত হন না, এবং অতিক্রান্ত অবস্থায়, তিনি তাঁর ঐশ্বরিক জ্ঞানের সর্বব্যাপীতার মাধ্যমে প্রতিটি জায়গায় সমস্ত কিছু উপলব্ধি করেন এবং প্রতিক্রিয়া করেন।
তাওহীদের উপর ইনতিকাল করবে, সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে
যে ব্যক্তি তাওহীদের উপর ইনতিকাল করবে, সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে- এর প্রমাণ:-
আবূ বকর ইবনে আবূ শায়বা ও যুহায়র ইবনে হারব রহ…উসমান রাযি. থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন, যে ব্যক্তি লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ-এর নিশ্চিত বিশ্বাস নিয়ে ইনতিকাল করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
দাউদ ইবনে রুশায়দ রাযি…উবাদা ইবনে সামিত রাযি. থেকে বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন, যে ব্যক্তি বলবে আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, তিনি এক, তাঁর কোন শরীক নেই এবং মুহাম্মদ (সা) তাঁর বান্দা ও রাসূল, ঈসা আ. আল্লাহর বান্দা ও তাঁর দাসীর পুত্র, তাঁর কথা দ্বারা পয়দা হয়েছেন যা তিনি মারয়ামের মধ্যে ঢেলে ছিলেন ( অর্থাৎ কালেমায়ে ‘কুন’ দ্বারা মারয়ামের গর্ভে তাঁকে পয়দা করেছেন) তিনি তাঁর আত্মা, জান্নাত সত্য, জাহান্নাম সত্য। সে ব্যক্তিকে আল্লাহ জান্নাতের আটটি তোরণের যেখান দিয়ে সে চাইবে প্রবেশ করাবেন।
তাওহীদের উপরে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি বিনা হিসেবে জান্নাতে যাবে
আল্লাহ তা’আলা এরশাদ করেন,
‘‘নিশ্চয়ই ইবরাহীম ছিলেন একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর হুকুম পালনকারী একটি উম্মত বিশেষ। এবং তিনি মুশরিকদের অন্তর্ভূক্ত ছিলেন না।’’ (নাহলঃ১২০)
২। আল্লাহ তাআলা আরো এরশাদ করেন,
‘‘আর যারা তাদের রবের সাথে শিরক করে না’’ (মুমিনুনঃ ৫৯)
ছাত্রদেরকে তাওহীদ সম্পৰ্কে স্বচ্ছ ও বিশুদ্ধ জ্ঞান দিন
https://www.youtube.com/watch?v=41fcSMqyBmA
তাওহীদ কেন নষ্ট হয়
ঈমান কি | ঈমান ছাড়া জান্নাত নাই
https://www.youtube.com/watch?v=Gw6lLbp0L-w
বিশুদ্ধ আক্বিদা ও তাওহীদ।
https://www.youtube.com/watch?v=F8ZdZXa3UlE
যার মধ্যে তাওহীদ নেই তার জান্নাত নেই
He Who Does Not Have Tawheed Does Not Have Paradise
#tawheed#tawhid#allah'snature#trueGod#allah'sdefinition#whoisallah#যার মধ্যে তাওহীদ নেই তার জান্নাত নেই#তাওহীদ#তাওহিদ#তৌহিদ#Tawheed#Tauhid#Tauheed#Tawhid#আকিদা#তাওহীদশিক্ষা#তৌহীদ#Youtube
0 notes
Text
যার মধ্যে তাওহীদ নেই তার জান্নাত নেই
He Who Does Not Have Tawheed Does Not Have Paradise
যার মধ্যে তাওহীদ নেই তার জান্নাত নেই
youtube
তাওহীদ কি ? যার তাওহীদ নাই তার ইমান নাই.
https://www.youtube.com/watch?v=r8y87s9R-nM
তাওহীদ বিশুদ্ধ থাকলে, ভয় নেই |
https://www.youtube.com/watch?v=aywwO-uMPZo&t=79s
তাওহীদ 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ'-এর অর্থ, ব্যাখ্যা ও প্রয়োগ
https://www.youtube.com/watch?v=eakqz-3FdFE
বিশুদ্ধ/নির্ভেজাল তাওহীদের প্রতিদান।
https://www.youtube.com/watch?v=XSGAy5gOljQ
ঈমান ছাড়া জান্নাত নাই |
https://www.youtube.com/watch?v=iZOu7jVMBlo&t=34s
তাওহীদ হলো একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করা। তাওহিদ এর অর্থ- আল্লাহ ব্যতীত সকল কিছুর ইবাদত বর্জন করে বাহ্যিক ও অন্তর্নিহিতভাবে সমস্ত বক্তব্য ও কর্ম এবং সমস্ত উপাসনার জন্য আল্লাহকে একচ্ছত্র করা। তাওহীদ স্বীকার করা ও জীবনের সবক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা করা মুসলিম ব্যক্তির উদ্দেশ্য। তাওহীদ হলো ইসলাম ধর্মের কেন্দ্রীয় এবং একক অতি গুরুত্বপূর্ণ সত্য, যে ভিত্তির ওপর একজন মুসলমানের পুরো ধর্মীয় অনুষঙ্গটি নির্ভর করে। এটি দ্ব্যর্থহীনভাবে মনে করা হয় যে ইসলাম অনুসারে ঈশ্বরই (আরবি: الله اللهā) এক (আল-আহাদ) এবং একক (আল-ওয়াহাদ)। আল্লাহ একমাত্র 'সত্য মাবুদ' (ঈশ্বর)। #তাওহীদ হলো আল্লাহ তাআলাকে তাঁর কর্মসমূহে, তাঁর নাম ও গুণাবলীতে এবং বান্দার সমস্ত ইবাদতের কেন্দ্রবিন্দু হিসাবে এক, একক ও একমাত্র মানা। তাওহীদের তিনটি অংশ- 1 - তাওহীদ আর রুবুবিয়াহ (আল্লাহর কর্মে ও প্রভুত্বে ঐক্য বজায় রাখা) তিনি একাই হলেন স্রষ্টা (স্রষ্টা) এবং মহাবিশ্বের নিয়ন্ত্রণকারী (ইত্যাদি) এবং আল্লাহ কারও কাছে দায়বদ্ধ নন। 2 - তাওহীদ আল ইবাদাহ (উলুহিয়াহ) (বান্দার সমস্ত ইবাদত/উপাসনা একমাত্র আল্লাহর জন্য করা) এবং কোনও মধ্যস্থতাকারী ছাড়াই ... কেবলমাত্র আল্লাহরই কাছে প্রার্থনা ও প্রার্থনা পাবার এবং কুরবানী ও উপাসনা পাবার অধিকার রয়েছে। 3 - তাওহীদ আল-আসমা ’ওয়া’ল সিফাত (আল্লাহর নাম ও বৈশিষ্ট্যের একত্ব) এর অর্থ আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর সত্যতা নিশ্চিত করা এবং বিশ্বাস করা যে তাঁর নাম ও গুণাবলীতে আল্লাহর মতো আর কোনো কিছু নেই। আল্লাহর তাওহীদের দিকেই সকলকে আহব্বান করেছেন মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)। (সহীহ আল বুখারী 7372)
আল্লাহর অবিভাজ্য একত্বই তাওহিদ
তাওহিদ সমস্ত ইসলামী বিশ্বাসের কেন্দ্রবিন্দু। তাওহিদ হলো এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস। আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো মাবুদ নেই এবং তাঁর সাথে তুলনীয় কেউ নেই। আমরা কখনই আল্লাহকে বুঝতে পারব না কারণ তাঁর প্রকৃতি আমাদের সীমিত মন জানে না। আমরা আল্লাহর সৃষ্টি, কিন্তু তিনি নিজে সৃষ্ট নন। আল্লাহ অদ্বিতীয়, সর্বশক্তিমান, একমাত্র উপাস্য। আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ তায়ালা। আল্লাহ একমাত্র সত্য মাবুদ। আল্লাহ ছাড়া কোনো 'সত্য ঈশ্বর'/ 'সত্য উপাস্য' নেই।
নিখাঁদ তাওহীদ জান্নাতের নিশ্চয়তা
“‘উবাদাহ্ ইবনুস্ সামেত (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ ফরমান : যে ব্যক্তি এ মর্মে স্বাক্ষ্য দেবে যে, আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া কোনো সত্যিকারের ইলাই নেই, তিনি একক, তার কোনো শরীক নেই। আর এ কথাও স্বাক্ষ্য দেবে যে, মুহাম্মদ (সাঃ) তার বান্দাহ ও রাসূল। (আরও ঈমান রাখবে যে,) নিশ্চয়ই ‘ঈসা ('আঃ) আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল এবং তার কালিমা, যা তিনি মারইয়ামের মাঝে অনুপ্রবিষ্ট করিয়েছিলেন। আর তিনি তার তরফ হতে রূহ্ বিশেষ। (আরো বিশ্বাস রাখবে যে,) জান্নাত সত্য এবং জাহান্নামও সত্য, তার ‘আমল যা হোক না কেনো, আল্লাহ তা‘আলা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। সহীহুল বুখারী- হাঃ ৩৪৩৫ ও সহীহ মুসলিম- হাঃ ২৮।
তাওহীদের পারিভাষিক অর্থ কি?
তাওহিদ শব্দের অর্থ একত্ববাদ । ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায় আল্লাহ তায়ালাকে এক ও অদ্বিতীয় হিসেবে স্বীকার করে নেওয়াকে তাওহিদ বলা হয় । তাওহিদের মূল কথা হলো- আল্লাহ তায়ালা এক ও অদ্বিতীয় । তিনি তাঁর সত্তা ও গুণাবলিতে অদ্বিতীয় ।
তাওহীদে তিন অংশ কি কি?
তাওহিদকে তিনটি অংশে বিভক্ত করা হয়েছে; যথা, তাওহিদ আল-রুবুবিয়্যাহ (ঐশ্বরিক প্রভুত্বের একত্ব), তাওহিদ আল-উলুহিয়্যাহ (ঐশ্বরিকতার একত্ব) এবং তাওহীদ আল-আসমা ওয়াল-সিফাত (ঐশ্বরিক নাম ও গুণাবলীর একত্ব)।
তাওহিদে বিশ্বাসের মূল মন্ত্র কি?
"আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোনো (সত্য) উপাস্য নেই; সুন্দর নামসমূহ তারই।" "তিনিই আল্লাহ্, তোমাদের প্রতিপালক। সমস্ত কর্তৃত্ব তারই। আর তোমরা আল্লাহ্-র পরিবর্তে যাদেরকে ডাকো (যাদের কাছে দুআ করো), তারা তো খেজুর আঁটির উপরে পাতলা আবরণেরও (অতি তুচ্ছ কিছুরও) মালিক নয়।"
কিভাবে তাওহীদ পরিপূর্ণ করা যায়?
উল্লেখ্য যে, তাওহীদ বা আল্লাহর একত্ববাদে সত্যিকারের বিশ্বাস অর্জন করা সম্ভব শুধুমাত্র এই সাক্ষ্য দেওয়ার মাধ্যমে যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর রাসূল । এটি অর্জন করা দুটি স্তরের, একটি ফরয এবং একটি মুস্তাহাব।
বাচ্চাদের তাওহীদ কিভাবে বুঝানো যায়?
তাওহীদ মানে আল্লাহর একত্বে বিশ্বাস করা বা তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক না করা । তাওহীদকেও বোঝা যায় মানুষ একাকী আল্লাহর উপাসনা করে। তাওহীদের শিক্ষা বলতে বিভিন্ন উপায় তৈরি করার প্রচেষ্টা বোঝায় যাতে শিশুরা তাদের জীবনে তাওহীদের ধারণা জানতে, বুঝতে এবং অনুশীলন করতে পারে।
কুরআনে কি তাওহিদ আছে?
কোরান সর্বোপরি আল্লাহর এককতা এবং একক সার্বভৌমত্বের উপর জোর দেয়, আরবি শব্দ তাওহীদ ("একত্ব") দ্বারা নির্দেশিত একটি মতবাদ । তিনি কখনই ঘুমান বা ক্লান্ত হন না, এবং অতিক্রান্ত অবস্থায়, তিনি তাঁর ঐশ্বরিক জ্ঞানের সর্বব্যাপীতার মাধ্যমে প্রতিটি জায়গায় সমস্ত কিছু উপলব্ধি করেন এবং প্রতিক্রিয়া করেন।
তাওহীদের উপর ইনতিকাল করবে, সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে
যে ব্যক্তি তাওহীদের উপর ইনতিকাল করবে, সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে- এর প্রমাণ:-
আবূ বকর ইবনে আবূ শায়বা ও যুহায়র ইবনে হারব রহ…উসমান রাযি. থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন, যে ব্যক্তি লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ-এর নিশ্চিত বিশ্বাস নিয়ে ইনতিকাল করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
দাউদ ইবনে রুশায়দ রাযি…উবাদা ইবনে সামিত রাযি. থেকে বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন, যে ব্যক্তি বলবে আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, তিনি এক, তাঁর কোন শরীক নেই এবং মুহাম্মদ (সা) তাঁর বান্দা ও রাসূল, ঈসা আ. আল্লাহর বান্দা ও তাঁর দাসীর পুত্র, তাঁর কথা দ্বারা পয়দা হয়েছেন যা তিনি মারয়ামের মধ্যে ঢেলে ছিলেন ( অর্থাৎ কালেমায়ে ‘কুন’ দ্বারা মারয়ামের গর্ভে তাঁকে পয়দা করেছেন) তিনি তাঁর আত্মা, জান্নাত সত্য, জাহান্নাম সত্য। সে ব্যক্তিকে আল্লাহ জান্নাতের আটটি তোরণের যেখান দিয়ে সে চাইবে প্রবেশ করাবেন।
তাওহীদের উপরে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি বিনা হিসেবে জান্নাতে যাবে
আল্লাহ তা’আলা এরশাদ করেন,
‘‘নিশ্চয়ই ইবরাহীম ছিলেন একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর হুকুম পালনকারী একটি উম্মত বিশেষ। এবং তিনি মুশরিকদের অন্তর্ভূক্ত ছিলেন না।’’ (নাহলঃ১২০)
২। আল্লাহ তাআলা আরো এরশাদ করেন,
‘‘আর যারা তাদের রবের সাথে শিরক করে না’’ (মুমিনুনঃ ৫৯)
ছাত্রদেরকে তাওহীদ সম্পৰ্কে স্বচ্ছ ও বিশুদ্ধ জ্ঞান দিন
https://www.youtube.com/watch?v=41fcSMqyBmA
তাওহীদ কেন নষ্ট হয়
ঈমান কি | ঈমান ছাড়া জান্নাত নাই
https://www.youtube.com/watch?v=Gw6lLbp0L-w
বিশুদ্ধ আক্বিদা ও তাওহীদ।
https://www.youtube.com/watch?v=F8ZdZXa3UlE
যার মধ্যে তাওহীদ নেই তার জান্নাত নেই
He Who Does Not Have Tawheed Does Not Have Paradise
#যার মধ্যে তাওহীদ নেই তার জান্নাত নেই#তাওহীদ#তাওহিদ#তৌহিদ#Tawheed#Tauhid#Tauheed#Tawhid#আকিদা#তাওহীদশিক্ষা#তৌহীদ#Youtube#Shirk
0 notes
Text
যার মধ্যে তাওহীদ নেই তার জান্নাত নেই
He Who Does Not Have Tawheed Does Not Have Paradise
যার মধ্যে তাওহীদ নেই তার জান্নাত নেই
youtube
তাওহীদ কি ? যার তাওহীদ নাই তার ইমান নাই.
https://www.youtube.com/watch?v=r8y87s9R-nM
তাওহীদ বিশুদ্ধ থাকলে, ভয় নেই |
https://www.youtube.com/watch?v=aywwO-uMPZo&t=79s
তাওহীদ 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ'-এর অর্থ, ব্যাখ্যা ও প্রয়োগ
https://www.youtube.com/watch?v=eakqz-3FdFE
বিশুদ্ধ/নির্ভেজাল তাওহীদের প্রতিদান।
https://www.youtube.com/watch?v=XSGAy5gOljQ
ঈমান ছাড়া জান্নাত নাই |
https://www.youtube.com/watch?v=iZOu7jVMBlo&t=34s
তাওহীদ হলো একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করা। তাওহিদ এর অর্থ- আল্লাহ ব্যতীত সকল কিছুর ইবাদত বর্জন করে বাহ্যিক ও অন্তর্নিহিতভাবে সমস্ত বক্তব্য ও কর্ম এবং সমস্ত উপাসনার জন্য আল্লাহকে একচ্ছত্র করা। তাওহীদ স্বীকার করা ও জীবনের সবক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা করা মুসলিম ব্যক্তির উদ্দেশ্য। তাওহীদ হলো ইসলাম ধর্মের কেন্দ্রীয় এবং একক অতি গুরুত্বপূর্ণ সত্য, যে ভিত্তির ওপর একজন মুসলমানের পুরো ধর্মীয় অনুষঙ্গটি নির্ভর করে। এটি দ্ব্যর্থহীনভাবে মনে করা হয় যে ইসলাম অনুসারে ঈশ্বরই (আরবি: الله اللهā) এক (আল-আহাদ) এবং একক (আল-ওয়াহাদ)। আল্লাহ একমাত্র 'সত্য মাবুদ' (ঈশ্বর)। #তাওহীদ হলো আল্লাহ তাআলাকে তাঁর কর্মসমূহে, তাঁর নাম ও গুণাবলীতে এবং বান্দার সমস্ত ইবাদতের কেন্দ্রবিন্দু হিসাবে এক, একক ও একমাত্র মানা। তাওহীদের তিনটি অংশ- 1 - তাওহীদ আর রুবুবিয়াহ (আল্লাহর কর্মে ও প্রভুত্বে ঐক্য বজায় রাখা) তিনি একাই হলেন স্রষ্টা (স্রষ্টা) এবং মহাবিশ্বের নিয়ন্ত্রণকারী (ইত্যাদি) এবং আল্লাহ কারও কাছে দায়বদ্ধ নন। 2 - তাওহীদ আল ইবাদাহ (উলুহিয়াহ) (বান্দার সমস্ত ইবাদত/উপাসনা একমাত্র আল্লাহর জন্য করা) এবং কোনও মধ্যস্থতাকারী ছাড়াই ... কেবলমাত্র আল্লাহরই কাছে প্রার্থনা ও প্রার্থনা পাবার এবং কুরবানী ও উপাসনা পাবার অধিকার রয়েছে। 3 - তাওহীদ আল-আসমা ’ওয়া’ল সিফাত (আল্লাহর নাম ও বৈশিষ্ট্যের একত্ব) এর অর্থ আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর সত্যতা নিশ্চিত করা এবং বিশ্বাস করা যে তাঁর নাম ও গুণাবলীতে আল্লাহর মতো আর কোনো কিছু নেই। আল্লাহর তাওহীদের দিকেই সকলকে আহব্বান করেছেন মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)। (সহীহ আল বুখারী 7372)
আল্লাহর অবিভাজ্য একত্বই তাওহিদ
তাওহিদ সমস্ত ইসলামী বিশ্বাসের কেন্দ্রবিন্দু। তাওহিদ হলো এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস। আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো মাবুদ নেই এবং তাঁর সাথে তুলনীয় কেউ নেই। আমরা কখনই আল্লাহকে বুঝতে পারব না কারণ তাঁর প্রকৃতি আমাদের সীমিত মন জানে না। আমরা আল্লাহর সৃষ্টি, কিন্তু তিনি নিজে সৃষ্ট নন। আল্লাহ অদ্বিতীয়, সর্বশক্তিমান, একমাত্র উপাস্য। আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ তায়ালা। আল্লাহ একমাত্র সত্য মাবুদ। আল্লাহ ছাড়া কোনো 'সত্য ঈশ্বর'/ 'সত্য উপাস্য' নেই।
নিখাঁদ তাওহীদ জান্নাতের নিশ্চয়তা
“‘উবাদাহ্ ইবনুস্ সামেত (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ ফরমান : যে ব্যক্তি এ মর্মে স্বাক্ষ্য দেবে যে, আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া কোনো সত্যিকারের ইলাই নেই, তিনি একক, তার কোনো শরীক নেই। আর এ কথাও স্বাক্ষ্য দেবে যে, মুহাম্মদ (সাঃ) তার বান্দাহ ও রাসূল। (আরও ঈমান রাখবে যে,) নিশ্চয়ই ‘ঈসা ('আঃ) আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল এবং তার কালিমা, যা তিনি মারইয়ামের মাঝে অনুপ্রবিষ্ট করিয়েছিলেন। আর তিনি তার তরফ হতে রূহ্ বিশেষ। (আরো বিশ্বাস রাখবে যে,) জান্নাত সত্য এবং জাহান্নামও সত্য, তার ‘আমল যা হোক না কেনো, আল্লাহ তা‘আলা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। সহীহুল বুখারী- হাঃ ৩৪৩৫ ও সহীহ মুসলিম- হাঃ ২৮।
তাওহীদের পারিভাষিক অর্থ কি?
তাওহিদ শব্দের অর্থ একত্ববাদ । ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায় আল্লাহ তায়ালাকে এক ও অদ্বিতীয় হিসেবে স্বীকার করে নেওয়াকে তাওহিদ বলা হয় । তাওহিদের মূল কথা হলো- আল্লাহ তায়ালা এক ও অদ্বিতীয় । তিনি তাঁর সত্তা ও গুণাবলিতে অদ্বিতীয় ।
তাওহীদে তিন অংশ কি কি?
তাওহিদকে তিনটি অংশে বিভক্ত করা হয়েছে; যথা, তাওহিদ আল-রুবুবিয়্যাহ (ঐশ্বরিক প্রভুত্বের একত্ব), তাওহিদ আল-উলুহিয়্যাহ (ঐশ্বরিকতার একত্ব) এবং তাওহীদ আল-আসমা ওয়াল-সিফাত (ঐশ্বরিক নাম ও গুণাবলীর একত্ব)।
তাওহিদে বিশ্বাসের মূল মন্ত্র কি?
"আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোনো (সত্য) উপাস্য নেই; সুন্দর নামসমূহ তারই।" "তিনিই আল্লাহ্, তোমাদের প্রতিপালক। সমস্ত কর্তৃত্ব তারই। আর তোমরা আল্লাহ্-র পরিবর্তে যাদেরকে ডাকো (যাদের কাছে দুআ করো), তারা তো খেজুর আঁটির উপরে পাতলা আবরণেরও (অতি তুচ্ছ কিছুরও) মালিক নয়।"
কিভাবে তাওহীদ পরিপূর্ণ করা যায়?
উল্লেখ্য যে, তাওহীদ বা আল্লাহর একত্ববাদে সত্যিকারের বিশ্বাস অর্জন করা সম্ভব শুধুমাত্র এই সাক্ষ্য দেওয়ার মাধ্যমে যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর রাসূল । এটি অর্জন করা দুটি স্তরের, একটি ফরয এবং একটি মুস্তাহাব।
বাচ্চাদের তাওহীদ কিভাবে বুঝানো যায়?
তাওহীদ মানে আল্লাহর একত্বে বিশ্বাস করা বা তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক না করা । তাওহীদকেও বোঝা যায় মানুষ একাকী আল্লাহর উপাসনা করে। তাওহীদের শিক্ষা বলতে বিভিন্ন উপায় তৈরি করার প্রচেষ্টা বোঝায় যাতে শিশুরা তাদের জীবনে তাওহীদের ধারণা জানতে, বুঝতে এবং অনুশীলন করতে পারে।
কুরআনে কি তাওহিদ আছে?
কোরান সর্বোপরি আল্লাহর এককতা এবং একক সার্বভৌমত্বের উপর জোর দেয়, আরবি শব্দ তাওহীদ ("একত্ব") দ্বারা নির্দেশিত একটি মতবাদ । তিনি কখনই ঘুমান বা ক্লান্ত হন না, এবং অতিক্রান্ত অবস্থায়, তিনি তাঁর ঐশ্বরিক জ্ঞানের সর্বব্যাপীতার মাধ্যমে প্রতিটি জায়গায় সমস্ত কিছু উপলব্ধি করেন এবং প্রতিক্রিয়া করেন।
তাওহীদের উপর ইনতিকাল করবে, সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে
যে ব্যক্তি তাওহীদের উপর ইনতিকাল করবে, সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে- এর প্রমাণ:-
আবূ বকর ইবনে আবূ শায়বা ও যুহায়র ইবনে হারব রহ…উসমান রাযি. থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন, যে ব্যক্তি লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ-এর নিশ্চিত বিশ্বাস নিয়ে ইনতিকাল করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
দাউদ ইবনে রুশায়দ রাযি…উবাদা ইবনে সামিত রাযি. থেকে বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন, যে ব্যক্তি বলবে আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, তিনি এক, তাঁর কোন শরীক নেই এবং মুহাম্মদ (সা) তাঁর বান্দা ও রাসূল, ঈসা আ. আল্লাহর বান্দা ও তাঁর দাসীর পুত্র, তাঁর কথা দ্বারা পয়দা হয়েছেন যা তিনি মারয়ামের মধ্যে ঢেলে ছিলেন ( অর্থাৎ কালেমায়ে ‘কুন’ দ্বারা মারয়ামের গর্ভে তাঁকে পয়দা ক���েছেন) তিনি তাঁর আত্মা, জান্নাত সত্য, জাহান্নাম সত্য। সে ব্যক্তিকে আল্লাহ জান্নাতের আটটি তোরণের যেখান দিয়ে সে চাইবে প্রবেশ করাবেন।
তাওহীদের উপরে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি বিনা হিসেবে জান্নাতে যাবে
আল্লাহ তা’আলা এরশাদ করেন,
‘‘নিশ্চয়ই ইবরাহীম ছিলেন একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর হুকুম পালনকারী একটি উম্মত বিশেষ। এবং তিনি মুশরিকদের অন্তর্ভূক্ত ছিলেন না।’’ (নাহলঃ১২০)
২। আল্লাহ তাআলা আরো এরশাদ করেন,
‘‘আর যারা তাদের রবের সাথে শিরক করে না’’ (মুমিনুনঃ ৫৯)
ছাত্রদেরকে তাওহীদ সম্পৰ্কে স্বচ্ছ ও বিশুদ্ধ জ্ঞান দিন
https://www.youtube.com/watch?v=41fcSMqyBmA
তাওহীদ কেন নষ্ট হয়
ঈমান কি | ঈমান ছাড়া জান্নাত নাই
https://www.youtube.com/watch?v=Gw6lLbp0L-w
বিশুদ্ধ আক্বিদা ও তাওহীদ।
https://www.youtube.com/watch?v=F8ZdZXa3UlE
যার মধ্যে তাওহীদ নেই তার জান্নাত নেই
He Who Does Not Have Tawheed Does Not Have Paradise
#tawheed#youtube#allah'snature#যার মধ্যে তাওহীদ নেই তার জান্নাত নেই#তাওহীদ#তাওহিদ#তৌহিদ#Tawheed#Tauhid#Tauheed#Tawhid#আকিদা#তাওহীদশিক্ষা#তৌহীদ#Youtube
0 notes
Text
যার মধ্যে তাওহীদ নেই তার জান্নাত নেই
He Who Does Not Have Tawheed Does Not Have Paradise
যার মধ্যে তাওহীদ নেই তার জান্নাত নেই
youtube
তাওহীদ কি ? যার তাওহীদ নাই তার ইমান নাই.
https://www.youtube.com/watch?v=r8y87s9R-nM
তাওহীদ বিশুদ্ধ থাকলে, ভয় নেই |
https://www.youtube.com/watch?v=aywwO-uMPZo&t=79s
তাওহীদ 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ'-এর অর্থ, ব্যাখ্যা ও প্রয়োগ
https://www.youtube.com/watch?v=eakqz-3FdFE
বিশুদ্ধ/নির্ভেজাল তাওহীদের প্রতিদান।
https://www.youtube.com/watch?v=XSGAy5gOljQ
ঈমান ছাড়া জান্নাত নাই |
https://www.youtube.com/watch?v=iZOu7jVMBlo&t=34s
তাওহীদ হলো একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করা। তাওহিদ এর অর্থ- আল্লাহ ব্যতীত সকল কিছুর ইবাদত বর্জন করে বাহ্যিক ও অন্তর্নিহিতভাবে সমস্ত বক্তব্য ও কর্ম এবং সমস্ত উপাসনার জন্য আল্লাহকে একচ্ছত্র করা। তাওহীদ স্বীকার করা ও জীবনের সবক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা করা মুসলিম ব্যক্তির উদ্দেশ্য। তাওহীদ হলো ইসলাম ধর্মের কেন্দ্রীয় এবং একক অতি গুরুত্বপূর্ণ সত্য, যে ভিত্তির ওপর একজন মুসলমানের পুরো ধর্মীয় অনুষঙ্গটি নি���্ভর করে। এটি দ্ব্যর্থহীনভাবে মনে করা হয় যে ইসলাম অনুসারে ঈশ্বরই (আরবি: الله اللهā) এক (আল-আহাদ) এবং একক (আল-ওয়াহাদ)। আল্লাহ একমাত্র 'সত্য মাবুদ' (ঈশ্বর)। #তাওহীদ হলো আল্লাহ তাআলাকে তাঁর কর্মসমূহে, তাঁর নাম ও গুণাবলীতে এবং বান্দার সমস্ত ইবাদতের কেন্দ্রবিন্দু হিসাবে এক, একক ও একমাত্র মানা। তাওহীদের তিনটি অংশ- 1 - তাওহীদ আর রুবুবিয়াহ (আল্লাহর কর্মে ও প্রভুত্বে ঐক্য বজায় রাখা) তিনি একাই হলেন স্রষ্টা (স্রষ্টা) এবং মহাবিশ্বের নিয়ন্ত্রণকারী (ইত্যাদি) এবং আল্লাহ কারও কাছে দায়বদ্ধ নন। 2 - তাওহীদ আল ইবাদাহ (উলুহিয়াহ) (বান্দার সমস্ত ইবাদত/উপাসনা একমাত্র আল্লাহর জন্য করা) এবং কোনও মধ্যস্থতাকারী ছাড়াই ... কেবলমাত্র আল্লাহরই কাছে প্রার্থনা ও প্রার্থনা পাবার এবং কুরবানী ও উপাসনা পাবার অধিকার রয়েছে। 3 - তাওহীদ আল-আসমা ’ওয়া’ল সিফাত (আল্লাহর নাম ও বৈশিষ্ট্যের একত্ব) এর অর্থ আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর সত্যতা নিশ্চিত করা এবং বিশ্বাস করা যে তাঁর নাম ও গুণাবলীতে আল্লাহর মতো আর কোনো কিছু নেই। আল্লাহর তাওহীদের দিকেই সকলকে আহব্বান করেছেন মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)। (সহীহ আল বুখারী 7372)
আল্লাহর অবিভাজ্য একত্বই তাওহিদ
তাওহিদ সমস্ত ইসলামী বিশ্বাসের কেন্দ্রবিন্দু। তাওহিদ হলো এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস। আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো মাবুদ নেই এবং তাঁর সাথে তুলনীয় কেউ নেই। আমরা কখনই আল্লাহকে বুঝতে পারব না কারণ তাঁর প্রকৃতি আমাদের সীমিত মন জানে না। আমরা আল্লাহর সৃষ্টি, কিন্তু তিনি নিজে সৃষ্ট নন। আল্লাহ অদ্বিতীয়, সর্বশক্তিমান, একমাত্র উপাস্য। আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ তায়ালা। আল্লাহ একমাত্র সত্য মাবুদ। আল্লাহ ছাড়া কোনো 'সত্য ঈশ্বর'/ 'সত্য উপাস্য' নেই।
নিখাঁদ তাওহীদ জান্নাতের নিশ্চয়তা
“‘উবাদাহ্ ইবনুস্ সামেত (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ ফরমান : যে ব্যক্তি এ মর্মে স্বাক্ষ্য দেবে যে, আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া কোনো সত্যিকারের ইলাই নেই, তিনি একক, তার কোনো শরীক নেই। আর এ কথাও স্বাক্ষ্য দেবে যে, মুহাম্মদ (সাঃ) তার বান্দাহ ও রাসূল। (আরও ঈমান রাখবে যে,) নিশ্চয়ই ‘ঈসা ('আঃ) আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল এবং তার কালিমা, যা তিনি মারইয়ামের মাঝে অনুপ্রবিষ্ট করিয়েছিলেন। আর তিনি তার তরফ হতে রূহ্ বিশেষ। (আরো বিশ্বাস রাখবে যে,) জান্নাত সত্য এবং জাহান্নামও সত্য, তার ‘আমল যা হোক না কেনো, আল্লাহ তা‘আলা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। সহীহুল বুখারী- হাঃ ৩৪৩৫ ও সহীহ মুসলিম- হাঃ ২৮।
তাওহীদের পারিভাষিক অর্থ কি?
তাওহিদ শব্দের অর্থ একত্ববাদ । ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায় আল্লাহ তায়ালাকে এক ও অদ্বিতীয় হিসেবে স্বীকার করে নেওয়াকে তাওহিদ বলা হয় । তাওহিদের মূল কথা হলো- আল্লাহ তায়ালা এক ও অদ্বিতীয় । তিনি তাঁর সত্তা ও গুণাবলিতে অদ্বিতীয় ।
তাওহীদে তিন অংশ কি কি?
তাওহিদকে তিনটি অংশে বিভক্ত করা হয়েছে; যথা, তাওহিদ আল-রুবুবিয়্যাহ (ঐশ্বরিক প্রভুত্বের একত্ব), তাওহিদ আল-উলুহিয়্যাহ (ঐশ্বরিকতার একত্ব) এবং তাওহীদ আল-আসমা ওয়াল-সিফাত (ঐশ্বরিক নাম ও গুণাবলীর একত্ব)।
তাওহিদে বিশ্বাসের মূল মন্ত্র কি?
"আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোনো (সত্য) উপাস্য নেই; সুন্দর নামসমূহ তারই।" "তিনিই আল্লাহ্, তোমাদের প্রতিপালক। সমস্ত কর্তৃত্ব তারই। আর তোমরা আল্লাহ্-র পরিবর্তে যাদেরকে ডাকো (যাদের কাছে দুআ করো), তারা তো খেজুর আঁটির উপরে পাতলা আবরণেরও (অতি তুচ্ছ কিছুরও) মালিক নয়।"
কিভাবে তাওহীদ পরিপূর্ণ করা যায়?
উল্লেখ্য যে, তাওহীদ বা আল্লাহর একত্ববাদে সত্যিকারের বিশ্বাস অর্জন করা সম্ভব শুধুমাত্র এই সাক্ষ্য দেওয়ার মাধ্যমে যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর রাসূল । এটি অর্জন করা দুটি স্তরের, একটি ফরয এবং একটি মুস্তাহাব।
বাচ্চাদের তাওহীদ কিভাবে বুঝানো যায়?
তাওহীদ মানে আল্লাহর একত্বে বিশ্বাস করা বা তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক না করা । তাওহীদকেও বোঝা যায় মানুষ একাকী আল্লাহর উপাসনা করে। তাওহীদের শিক্ষা বলতে বিভিন্ন উপায় তৈরি করার প্রচেষ্টা বোঝায় যাতে শিশুরা তাদের জীবনে তাওহীদের ধারণা জানতে, বুঝতে এবং অনুশীলন করতে পারে।
কুরআনে কি তাওহিদ আছে?
কোরান সর্বোপরি আল্লাহর এককতা এবং একক সার্বভৌমত্বের উপর জোর দেয়, আরবি শব্দ তাওহীদ ("একত্ব") দ্বারা নির্দেশিত একটি মতবাদ । তিনি কখনই ঘুমান বা ক্লান্ত হন না, এবং অতিক্রান্ত অবস্থায়, তিনি তাঁর ঐশ্বরিক জ্ঞানের সর্বব্যাপীতার মাধ্যমে প্রতিটি জায়গায় সমস্ত কিছু উপলব্ধি করেন এবং প্রতিক্রিয়া করেন।
তাওহীদের উপর ইনতিকাল করবে, সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে
যে ব্যক্তি তাওহীদের উপর ইনতিকাল করবে, সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে- এর প্রমাণ:-
আবূ বকর ইবনে আবূ শায়বা ও যুহায়র ইবনে হারব রহ…উসমান রাযি. থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন, যে ব্যক্তি লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ-এর নিশ্চিত বিশ্বাস নিয়ে ইনতিকাল করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
দাউদ ইবনে রুশায়দ রাযি…উবাদা ইবনে সামিত রাযি. থেকে বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন, যে ব্যক্তি বলবে আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, তিনি এক, তাঁর কোন শরীক নেই এবং মুহাম্মদ (সা) তাঁর বান্দা ও রাসূল, ঈসা আ. আল্লাহর বান্দা ও তাঁর দাসীর পুত্র, তাঁর কথা দ্বারা পয়দা হয়েছেন যা তিনি মারয়ামের মধ্যে ঢেলে ছিলেন ( অর্থাৎ কালেমায়ে ‘কুন’ দ্বারা মারয়ামের গর্ভে তাঁকে পয়দা করেছেন) তিনি তাঁর আত্মা, জান্নাত সত্য, জাহান্নাম সত্য। সে ব্যক্তিকে আল্লাহ জান্নাতের আটটি তোরণের যেখান দিয়ে সে চাইবে প্রবেশ করাবেন।
তাওহীদের উপরে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি বিনা হিসেবে জান্নাতে যাবে
আল্লাহ তা’আলা এরশাদ করেন,
‘‘নিশ্চয়ই ইবরাহীম ছিলেন একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর হুকুম পালনকারী একটি উম্মত বিশেষ। এবং তিনি মুশরিকদের অন্তর্ভূক্ত ছিলেন না।’’ (নাহলঃ১২০)
২। আল্লাহ তাআলা আরো এরশাদ করেন,
‘‘আর যারা তাদের রবের সাথে শিরক করে না’’ (মুমিনুনঃ ৫৯)
ছাত্রদেরকে তাওহীদ সম্পৰ্কে স্বচ্ছ ও বিশুদ্ধ জ্ঞান দিন
https://www.youtube.com/watch?v=41fcSMqyBmA
তাওহীদ কেন নষ্ট হয়
ঈমান কি | ঈমান ছাড়া জান্নাত নাই
https://www.youtube.com/watch?v=Gw6lLbp0L-w
বিশুদ্ধ আক্বিদা ও তাওহীদ।
https://www.youtube.com/watch?v=F8ZdZXa3UlE
যার মধ্যে তাওহীদ নেই তার জান্নাত নেই
He Who Does Not Have Tawheed Does Not Have Paradise
#tawheed#tawhid#��ার মধ্যে তাওহীদ নেই তার জান্নাত নেই#তাওহীদ#তাওহিদ#তৌহিদ#Tawheed#Tauhid#Tauheed#Tawhid#আকিদা#তাওহীদশিক্ষা#তৌহীদ#allah'snature#Youtube
0 notes
Link
আল্লাহ ও বান্দার মধ্যে মধ্যস্থতাকারী সাব্যস্ত করা ঈমানভঙ্গের অন্যতম কারণ।
আল্লাহ ও বান্দার মধ্যে মধ্যস্থতা সাব্যস্ত করার পরিণামঃ
ঈমান বিনষ্টকারী কারণ সমূহের মধ্যে একটি কারণ হলো আল্লাহ ও বান্দার মধ্যে মধ্যস্থতা সাব্যস্ত রাখা। কিয়ামত দিবস ব্যতীত [এর পূর্বে] কোন ব্যক্তিকেই অন্যের জন্য সুপারিশ করার ক্ষমতা আল্লাহ তা'আলা প্রদান করবেন না। কিয়ামত দিবসে আল্লাহ তা'আলা আমাদের শেষ নবীসহ আরো কতিপয় ব্যক্তিকে অন্যদের জন্য সুপারিশ করার অনুমতি প্রদান করবেন। আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ (হে নবী,) তুমি বলো, তোমরা যাদের আল্লাহর বদলে শরীক মনে করো তাদের ডাকো, তারা আসমান ও যমীনের এক অনু পরিমাণ কিছুরও মালিক নয়, এ দুটো বানানোর ব্যাপারেও তাদের কোন অংশিদারিত্ব নেই, না তার কোন সাহায্যকারী রয়েছে। (কিয়ামতের দিন) তার সামনে কারো সুপারিশ কাজে আসবে না, অবশ্য তিনি যাকে অনুমতি দেবেন সে ব্যক্তি বাদে। (আল কোরআন, সুরা সাবাঃ ২২-২৩)।
#Faith#ঈমানভঙ্গের কারণ#ঈমানভঙ্গ#ইমানভঙ্গেরকারণ#ঈমানভঙ্গেরকারণ#মধ্যস্থতাকারী#সুপারিশ#মধ্যস্থতা#আল্লাহ ও বান্দার মধ্যে মধ্যস্থতাকারী নেই#শিশুশিক্ষা#শিশু
0 notes
Text
মাযার নির্মাণ ও তাতে ক্বুরআন তেলাওয়াত-সম্পর্কিত আহলুস্ সুন্নাহ’র ফতোওয়া
[Bengali translation of www.ahlus-sunna.com's fatwa entitled "Building Structures over Graves & Recitation of Quran there." Translator: Kazi Saifuddin Hossain]
মূল: ডব্লিউ,ডব্লিউ,ডব্লিউ-ডট-আহলুস-সুন্নাহ-ডট-কম অনুবাদ: কাজী সাইফুদ্দীন হোসেন
আরবী ও অনলাইন সেট-আপ: দ্বীনীভাই ও ফেইসবুক বন্ধু Mahmud Hasan
[উৎসর্গ: পীর ও মোর্শেদ আউলিয়াকুল শিরোমণি সৈয়দ মওলানা এ, জেড, এম, সেহাবউদ্দীন খালেদ সাহেব কেবলা (রহ:)-এর পুণ্যস্মৃতিতে....]
জরুরি জ্ঞাতব্য
ইসলাম-বিদ্বেষী চক্র পায়ের ওপর পা রেখে বসে নিশ্চয় ভাবছে, আহ, কী মজা! আমরা বৃটিশের সহায়তায় মুসলমানদের মধ্যে এমন একটি দল সৃষ্টি করেছি, যারা সেই কাজ করতে পারবে যা আমরা যুগ যুগ ধরে পারিনি (অর্থাৎ, তথাকথিত মুসলমানদের হাতে ইসলামী ঐতিহ্যবাহী পুণ্যময় স্থানগুলো ধ্বংস করে মুসলিম বিশ্বে গণ্ডগোল-হট্টগোল বা��ানো)।
এ কাজে বাধা দেয়া না গেলে শয়তান (ইবলীস)-এর মূল লক্ষ্য হবে কা’বা শরীফ (যা’তে রয়েছে মাকাম আল-ইবরাহীম তথা তাঁর কদম মোবারকের ছাপবিশিষ্ট পুণ্যস্থান; এর পবিত্রতা কুরআনের ‘নস’ দ্বারা সমর্থিত) ধ্বংস করা; আর এর সাথে মহানবী (صلى الله عليه و آله و سلم) -এর রওযা শরীফ-সহ অন্যান্য শআ’রিল্লাহ (সম্মান প্রদর্শনযোগ্য স্থান)-কেও ধ্বংস করা; কেননা, রওযা-এ-আকদস (রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের মাযার)-কে অনেক ওহাবী লেখনীতে সর্ববৃহৎ মূর্তি বলে প্রচার করা হয়েছে।
মাযার নির্মাণ ও সেখানে কুরআন তেলাওয়াত
বর্তমানে কতিপয় মুসলমান ভ্রান্ত ধারণা পোষণ করে যে মহানবী (দ:)-সহ ঈমানদার পুণ্যাত্মাবৃন্দের মাযার-রওযা যেয়ারত করে কেউ তাঁদেরকে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করার সময় অসীলা বা মধ্যস্থতাকারী হিসেবে গ্রহণ করলে বা তাঁদের স্মৃতিবহ কোনো জিনিসকে বরকত আদায়ের মাধ্যম মনে করলে শেরক কিংবা বেদআত হবে। ভ্রান্তদের মধ্যে কেউ কেউ এমনও দাবি করে যে এই কাজ সাহাবা-এ-কেরাম (রা:)-বৃন্দ করেননি, বিগত শতাব্দীগুলোতেও এগুলো অনুশীলিত হয়নি; আর মাযার-রওযার ওপর স্থাপত্য নির্মাণও শরীয়তে আদিষ্ট হয়নি। তারা রাসূলুল্লাহ (দ:)-এর রওযা শরীফের ওপর নির্মিত সবুজ গুম্বজকে বেদআত আখ্যা দিয়ে থাকে (’সালাফী’গুরু নাসিরুদ্দীন আলবানী এর প্রবক্তা)। আমরা চূড়ান্তভাবে কুরআন ও হাদীসের আলোকে এতদসংক্রান্ত ফায়সালা এক্ষণে অনুধাবন করবো:
কুরআন মজীদে এরশাদ হয়েছে,
وَكَذَلِكَ أَعْثَرْنَا عَلَيْهِمْ لِيَعْلَمُوا أَنَّ وَعْدَ اللَّهِ حَقٌّ وَأَنَّ السَّاعَةَ لاَ رَيْبَ فِيهَا إِذْ يَتَنَازَعُونَ بَيْنَهُمْ أَمْرَهُمْ فَقَالُوا ابْنُوا عَلَيْهِم بُنْيَانًا رَّبُّهُمْ أَعْلَمُ بِهِمْ قَالَ الَّذِينَ غَلَبُوا عَلَى أَمْرِهِمْ لَنَتَّخِذَنَّ عَلَيْهِم مَّسْجِدًا
অর্থাৎ: “এবং এভাবে আমি তাদের (আসহাবে কাহাফ) বিষয় জানিয়ে দিলাম, যাতে লোকেরা জ্ঞাত হয় যে আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য এবং কিয়ামতে কোনো সন্দেহ নেই; যখন এই সব লোক তাদের (আসহাবে কাহাফ) ব্যাপারে নিজেদের মধ্যে বিতর্ক করতে লাগলো, অতঃপর তারা বল্লো, ’ত���দের গুহার ওপর কোনো ইমারত নির্মাণ করো! তাদের রব (খোদা)-ই তাদের বিষয়ে ভালো জানেন। ওই লোকদের মধ্যে যারা (এ বিষয়ে) ক্ষমতাধর ছিল তারা বল্লো, ‘শপথ রইলো, আমরা তাদের (আসহাবে কাহাফের পুণ্যময় স্থানের) ওপর মসজিদ নির্মাণ করবো’।” [সূরা কাহাফ, ২১ আয়াত]
ইমাম ফখরুদ্দীন রাযী (রহ:) এই আয়াতের তাফসীরে লেখেন,
ثم قال تعالى: {قَالَ ٱلَّذِينَ غَلَبُوا۴ عَلَىٰۤ أَمْرِهِمْ} قيل المراد به الملك المسلم، وقيل: أولياء أصحاب الكهف، وقيل: رؤساء البلد: {لَنَتَّخِذَنَّ عَلَيْهِم مَّسْجِدًا} نعبد الله فيه ونستبقي آثار أصحاب الكهف بسبب ذلك المسجد
অর্থাৎ: “কেউ কেউ (ওদের মধ্যে) বলেন যে গুহার দরজা বন্ধ করে দেয়া হোক, যাতে আসহাবে কাহাফ আড়ালে গোপন থাকতে পারেন। আরও কিছু মানুষ বলেন, গুহার দরজায় একটি মসজিদ নির্মাণ করা হোক। তাঁদের এই বক্তব্য প্রমাণ করে যে এই মানুষগুলো ছিলেন ’আল্লাহর আরেফীন (আল্লাহ-জ্ঞানী), যাঁরা এক আল্লাহর এবাদত-বন্দেগীতে বিশ্বাস করতেন এবং নামাযও পড়তেন’।” [তাফসীরে কবীর, ৫ম খণ্ড, ৪৭৫ পৃষ্ঠা]
ইমাম রাযী (রহ:) আরও লেখেন: “এবং আল্লাহর কালাম - ‘(এ বিষয়ে) যারা ক্ষমতাশালী’ বলতে বোঝানো হয়ে থাকতে পারে ‘মুসলমান শাসকবৃন্দ’, অথবা আসহাবে কাহাফ (মো’মেনীন)-এর বন্ধুগণ, কিংবা শহরের নেতৃবৃন্দ। ‘আমরা নিশ্চয় তাদের স্মৃতিস্থানের ওপরে মসজিদ নির্মাণ করবো’ - এই আয়াতটিতে এ কথাই বোঝানো হয়েছে, ‘আমরা যাতে সেখানে আল্লাহর এবাদত-বন্দেগী করতে পারি এবং এই মসজিদের সুবাদে আসহাবে কাহাফ তথা গুহার সাথীদের স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণ করতে পারি’।” [তাফসীরে কবীর, ৫ম খণ্ড, ৪৭৫ পৃষ্ঠা]
অতএব, যারা মাযার-রওযা ধ্বংস করে এবং আল্লাহর আউলিয়াবৃন্দের প্রতি বিদ্বেষভাব প্রদর্শন করে, তারা কুরআন মজীদের সূরা কাহাফে বর্ণিত উপরোক্ত সুস্পষ্ট আয়াতের সরাসরি বিরোধিতা করে। অথচ কুরআন মজীদ স্পষ্টভাবে ব্যক্ত করে যে আউলিয়া কেরাম (রহ:)-এর মাযার-রওযা নির্মাণ ও তাঁদের স্মৃতিচিহ্ন সংরক্ষণ বৈধ। এটি কুরআনের ‘নস’ (দলিল), যাকে নাকচ করা যায় না; এমন কি কোনো হাদীস দ্বারাও নয়। সুতরাং সীমা লঙ্ঘনকারীরা যতো হাদীসের অপব্যাখ্যা করে এ ব্যাপারে অপপ্রয়োগ করে থাকে, সবগুলোকে ভিন্নতর ব্যাখ্যা দিতে হবে। অর্থাৎ, ‘সাধারণ মানুষের’ কবর নির্মাণ করা যাবে না (তবে একবার নির্মিত হলে তা ভাঙ্গাও অবৈধ)। কিন্তু আম্বিয়া (আ:) ও আউলিয়া (রহ:)-এর মাযার-রওযা অবশ্যঅবশ্যই নির্মাণ করা জায়েয বা বৈধ, যেমনটি আমরা দেখতে পাই মদীনা মোনাওয়ারায় মহানবী (দ:) এবং সর্ব-হযরত আবূ বকর সিদ্দিক (রা:) ও উমর ফারূক (রা:)-এর রওযা মোবারক সবুজ গুম্বজের নিচে সুশোভি�� আছে। সাহাবা-এ-কেরাম (রা:)-ই এই রওযাগুলো নির্মাণ করেন যা শরীয়তের দলিল। [জরুরি জ্ঞাতব্য: সউদী, বৃটিশ ও মার্কিন তহবিলপুষ্ট ‘পণ্ডিতেরা’ এই সকল পবিত্র স্থানকে মসজিদে নববী থেকে অপসারণের অসৎ পরিকল্পনায় মাযার-রওযার বিরুদ্ধে অপপ্রচারে নেমেছে - নাউযুবিল্লাহ!]
’তাফসীরে জালালাইন’ শিরোনামের বিশ্বখ্যাত সংক্ষিপ্ত ও সহজে বোধগম্য আল-কুরআনের ব্যাখ্যামূলক গ্রন্থে ইমাম জালালউদ্দীন সৈয়ুতী (রহ:) ও আল-মোহাল্লী (রহ:) লেখেন:
يَتَنَـٰزَعُونَ} أي المؤمنون والكفار {بَيْنَهُمْ أَمْرَهُمْۖ} أمر الفتية في البناء حولهم {فَقَالُوۤا۴} أي الكفار {ٱبْنُوا۴ عَلَيْهِم} أي حولهم {بُنْيَـٰنًاۖ} يسترهم {رَّبُّهُمْ أَعْلَمُ بِهِمْۚ قَالَ ٱلَّذِينَ غَلَبُوا۴ عَلَىٰۤ أَمْرِهِمْ} أمر الفتية وهم المؤمنون {لَنَتَّخِذَنَّ عَلَيْهِم} حولهم {مَّسْجِدًا} يصلى فيه، وفعل ذلك على باب الكهف.
অর্থাৎ: ”(মানুষেরা বিতর্কে লিপ্ত হয়েছিল), মানে বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসীরা (ওই) তরুণ (আসহাবে কাহাফ)-দের বিষয়ে বিতর্ক করছিল যে তাঁদের পার্শ্বে কোনো স্মৃতিচিহ্ন নির্মাণ করা যায় কি-না। এমতাবস্থায় অবিশ্বাসীরা বলে, তাঁদেরকে ঢেকে দেয়ার জন্যে ইমারত নির্মাণ করা হোক। তাঁদের প্রভু-ই তাঁদের অবস্থা সম্পর্কে অধিক জ্ঞাত। কিন্তু যে মানুষেরা ওই তরুণ আসহাবে কাহাফের বিষয়ে বেশি প্রভাবশালী ছিলেন, মানে বিশ্বাসীরা, তারা বল্লেন, আমরা তাঁদের পার্শ্বে এবাদতের উদ্দেশ্যে মসজিদ নির্মাণ করবো। আর এটি গুহার প্রবেশপথে প্রকৃতই নির্মিত হয়েছিল। [তাফসীর আল-জালালাইন, ১ম খণ্ড, ৩৮৯ পৃষ্ঠা]
ইমাম নাসাফী (রহ:) নিজ ‘তাফসীরে নাসাফী’ পুস্তকে লেখেন:
قَالَ ٱلَّذِينَ غَلَبُوا۴ عَلَىٰۤ أَمْرِهِمْ} من المسلمين وملكهم وكانوا أولى بهم وبالبناء عليهم {لَنَتَّخِذَنَّ عَلَيْهِم} على باب الكهف {مَّسْجِدًا} يصلي فيه المسلمون ويتبركون
অর্থাৎ: “যারা (আসহাবে কাহাফের বিষয়ে) প্রভাবশালী ছিলেন, তারা মুসলমান এবং শাসকবর্গ; এরা বলেন যে গুহার প্রবেশপথে একটি মসজিদ নির্মাণ করে দেবেন, যাতে ‘মুসলমানবৃন্দ সেখানে এবাদত-বন্দেগী করতে পারেন এবং তা (স্মৃতিচিহ্ন) থেকে বরকত আদায় করতে সক্ষম হন’।” [তাফসীর আল-নাসাফী, ৩য় খণ্ড, ১৮ পৃষ্ঠা]
ইমাম শেহাবউদ্দীন খাফফাজী (রহ:) লেখেন:
مسجد ايدل على جوازا لبناء على قبور الصلحاء ونحوهم كما اشار الي فى الكشاف وجواز الصلوة فى ذلك البناء
অর্থাৎ: “(গুহামুখে মসজিদ নির্মাণ) সালেহীন তথা পুণ্যাত্মাবৃন্দের মাযার-রওযার পার্শ্বে মসজিদ নির্মাণের প্রামাণিক দলিল, যেমনটি উল্লেখিত হয়েছে ‘তাফসীরে কাশশাফ’ পুস্তকে; আর এই দালানের ভেতরে এবাদত-বন্দেগী করা ’জায়েয’ (বৈধ)।” [ইমাম খাফফাজী কৃত ‘এনায়াতুল কাদী’, ৬ষ্ঠ খণ্ড, ৮৭ পৃষ্ঠা; দারুস্ সাদির, বৈরুত, লেবানন হতে প্রকাশিত]
ইমাম মোহাম্মদ বিন হাসান শায়বানী (রহ:) বলেন,
محمد قال :اخبرنا ابو حنيفة قال ح��ثنا سالم الافطس قال: ما من نبي الا ويحرب من قومة الي الكعبة يعبد رحبا وان حولحا لقبر ثلاث ماة نبي
অর্থাৎ: “হযরত ইমাম আবূ হানিফাহ (রহ:) আমাদের জানিয়েছেন এই বলে যে সালিম আফতাস্ আমাদের (তাঁর কাছে) বর্ণনা করেন: ‘এমন কোনো নবী নেই যিনি কা’বা শরীফে আল্লাহর এবাদত-বন্দেগী করতে নিজ জাতিকে ছেড়ে আসেন নি; আর এর আশপাশে ৩০০ জন নবী (আ:)-এর মাযার-রওযা বিদ্যমান’।” [ইমাম শায়বানীর ‘কিতাবুল আসার’; লন্ডনে Truth Publishing কর্তৃক প্রকাশিত; ১৫০ পৃষ্ঠা]
ইমাম শায়বানী (রহ:) আরও বলেন,
محمد قال :اخبرنا ابو حنيفة قال حدثنا عطاء بن الساءب قال :قبر حود وصالح وثعيب عليحم السلام في المسجد الحرام
অর্থাৎ: “ইমাম আবূ হানিফা (রহ:) আমাদেরকে জানিয়েছেন এই বলে যে হযরত আতা’ বিন সায়েব (রা:) আমাদের (তাঁর কাছে) বর্ণনা করেন, ‘আম্বিয়া সর্ব-হযরত হুদ (আ:), সালেহ (আ:) ও শোয়াইব (আ:)-এর মাযার-রওযা মসজিদে হারামে অবস্থিত’।” [প্রাগুক্ত]
ইমাম ইবনে জারির তাবারী (রহ:) নিজ ‘তাফসীরে তাবারী’ পুস্তকে লেখেন:
فقال الـمشركون: نبنـي علـيهم بنـياناً، فإنهم أبناء آبـائنا، ونعبد الله فـيها، وقال الـمسلـمون: بل نـحن أحقّ بهم، هم منا، نبنـي علـيهم مسجداً نصلـي فـيه، ونعبد الله فـيه
অর্থাৎঃ “মুশরিকরা বলেছিল, আমরা গুহার পার্শ্বে একটি ইমারত নির্মাণ করবো এবং আল্লাহর উপাসনা করবো; কিন্তু মুসলমানগণ বলেন, আসহাবে কাহাফের ওপর আমাদের হক বেশি এবং নিশ্চয় আমরা ওখানে ‘মসজিদ নির্মাণ করবো’ যাতে আমরা ওতে আল্লাহর এবাদত-বন্দেগী করতে পারি।” [তাফসীরে তাবারী, ১৫:১৪৯]
মোল্লা আলী কারী ওপরে উদ্ধৃত আয়াতের সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন: “যে ব্যক্তি কোনো সত্যনিষ্ঠ বুযুর্গ বান্দার মাযারের সন্নিকটে মসজিদ নির্মাণ করেন, কিংবা ওই মাযারে (মাক্কবারা) এবাদত-বন্দেগী করেন, অথবা উক্ত বুযুর্গের রূহ মোবারকের অসীলায় (মধ্যস্থতায়) সাহায্য প্রার্থনা করেন, বা তাঁর রেখে যাওয়া কোনো বস্তু থেকে বরকত তথা আশীর্বাদ অন্বেষণ করেন, তিনি যদি (এবাদতে) ওই বুযুর্গকে তা’যিম বা তাওয়াজ্জুহ পালন না করেই এগুলো করেন, তবে এতে কোনো দোষ বা ভ্রান্তি নেই। আপনারা কি দেখেননি, মসজিদে হারামের ভেতরে হাতীম নামের জায়গায় হযরত ইসমাঈল (আ:)-এর রওযা শরীফ অবস্থিত? আর সেখানে এবাদত-বন্দেগী পালন করা অন্যান্য স্থানের চেয়েও উত্তম। তবে কবরের কাছে এবাদত-বন্দেগী পালন তখনই নিষিদ্ধ হবে, যদি মৃতের নাজাসাত (ময়লা) দ্বারা মাটি অপবিত্র হয়ে যায়। ....হাজর আল-আসওয়াদ (কালো পাথর) ও মিযা’য়াব-এর কাছে হাতীম জায়গাটিতে ’৭০জন নবী (আ:)-এর মাযার-রওযা’ বিদ্যমান।” [মিরক্কাত শরহে মিশক্কাত, ২য় খণ্ড, ২০২ পৃষ্ঠা]
ইমাম আবূ হাইয়ান আল-আনদালুসী (রহ:) বলেন:
وروي أن التي دعت إلى البنيان كانت كافرة أرادت بناء بيعة أو مصنع لكفرهم فمانعهم المؤمنون وبنوا عليهم مسجداً
অর্থাৎ: “তাঁদের (আসহাবে কাহাফের) পার্শ্বে ইমারত নির্মাণের কথা যে ব্যক্তি বলেছিল, সে এক অবিশ্বাসী মহিলা। সে গীর্জা নির্মাণের কথা-ই বলেছিল, যেখানে কুফরী কাজ করা যেতো। কিন্তু মো’মেন বান্দারা তাকে থামিয়ে দেন এবং ওর পরিবর্তে মসজিদ নির্মাণ করেন।” [তাফসীরে বাহর আল-মুহীত, ৭ম খণ্ড, ১৫৮ পৃষ্ঠা]
ইবনুল জাওযী, যাকে কট্টর হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং ‘সালাফী’রাও মানে, তিনি উক্ত আয়াতের (১৮:২১) তাফসীরে বলেন:
قال ابن قتيبة: يعني المُطاعين والرؤساء، قال المفسرون: وهم الملك وأصحابه المؤمنون اتخذوا عليهم مسجداً
অর্থাৎঃ “ইবনে কুতায়বা (রা:) বর্ণনা করেন যে মুফাসসিরীনবৃন্দ মত প্রকাশ করেছিলেন, ওখানে যাঁরা মসজিদ নির্মাণ করেন, তাঁরা ছিলেন মুসলমান রাজা ও তাঁর মো’মেন সাথীবৃন্দ।” [তাফসীরে যা’য়াদ আল-মাসীর, ৫ম খণ্ড, ১২৪ পৃষ্ঠা]
সুস্পষ্ট হাদীস শরীফ
হযরত ইবনে উমর (রা:) বর্ণনা করেন রাসূলুল্লাহ (দ:)-এর হাদীস, যিনি বলেন:
وعن ابن عمر أن النبي صلى الله عليه وسلم قال: "في مسجد الخيف قبر سبعون نبياً". رواه البزار ورجاله ثقات.
অর্থাৎ: “মসজিদে আল-খায়ফের মধ্যে (’ফী’) ৭০ জন নবী (আ:)-এর মাযার-রওযা (এক সাথে) বিদ্যমান।” ইমাম আল-হায়তামী (রহ:) বলেন যে এটি আল-বাযযার বর্ণনা করেন এবং ”এর সমস্ত রাবী (বর্ণনাকারী)-ই আস্থাভাজন”। মানে এই হাদীস সহীহ। ইমাম আল-হায়তামী (রহ:) নিজ ‘মজমাউয্ যাওয়াইদ’ পুস্তকের ৩য় খণ্ডে ‘বাবু ফী মসজিদিল্ খায়ফ’ অধ্যায়ে লিপিবদ্ধ #৫৭৬৯ নং হাদীসটি উদ্ধৃত করেন, যা’তে বিবৃত হয়:
- في مسجد الخيف قبر سبعون نبيا
الراوي: عبدالله بن عمر - خلاصة الدرجة: إسناده صحيح - المحدث: ابن حجر العسقلاني - المصدر: مختصر البزار - الصفحة أو الرقم: 1/476
অর্থাৎ: “মসজিদে খায়ফের মধ্যে (’ফী’) ৭০ জন আম্বিয়া (আ:)-এর মাযার-রওযা বিদ্যমান।”
হুকুম: শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবনে হাজর আসকালানী (রহ:) এ প্রসঙ্গে বলেন, “এই হাদীসের সনদ সহীহ।” [মোখতাসারুল বাযযার, ১:৪৭৬]
আল-কুরআন ও হাদীস শরীফের এই সমস্ত ‘নস’ তথা দালিলিক প্রমাণ থেকে পরিস্ফুট হয় যে আম্বিয়া (আ:) ও আউলিয়া (রহ:)-বৃন্দের মাযার-রওযায় ইমারত নির্মাণ করা ইসলামে বৈধ ও সওয়াবদায়ক কাজ। সীমা লঙ্ঘনকারীরা বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদেরকে ’মুশরিকীন’ বা মূর্তিপূজারী বলে আখ্যা দেয় এই বলে যে মাযার-রওযাগুলো হচ্ছে ‘মূর্তির ঘর’ (নাউযুবিল্লাহ); আর তাই বুযূর্গানে দ্বীনের মাযার, এমন কি মহানবী (দ:)-এর রওযা শরীফ�� ধ্বংস করতে হবে বা মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হবে। জান্নাতে বাকী ও মু’য়াল্লায় বহু সাহাবা-এ-কেরামে (রা:)-এর মাযার-রওযা এভাবে তারা গুঁড়িয়ে দেবার মতো জঘন্য কাজ করেছে। কিন্তু মুসলমানদের চাপে তারা হুযূর পূর নূর (দ:)-এর রওযা শরীফ ভাঙ্গতে পারেনি।
আল-কুরআনের ২য় ‘নস’ (দলিল)
আল্লাহ পাক তাঁর পবিত্র কুরআনে এরশাদ ফরমান:
وَإِذْ جَعَلْنَا الْبَيْتَ مَثَابَةً لِّلنَّاسِ وَأَمْنًا وَاتَّخِذُوا مِن مَّقَامِ إِبْرَاهِيمَ مُصَلًّى ۖ وَعَهِدْنَا إِلَىٰ إِبْرَاهِيمَ وَإِسْمَاعِيلَ أَن طَهِّرَا بَيْتِيَ لِلطَّائِفِينَ وَالْعَاكِفِينَ وَالرُّكَّعِ السُّجُودِ
অর্থাৎ: “এবং স্মরণ করুন, যখন আমি এ ঘরকে (কা’বা শরীফকে) মানবজাতির জন্যে আশ্রয়স্থল ও নিরাপদ স্থান করেছি; আর (বল্লাম), ‘ইবরাহীমের দাঁড়াবার স্থানকে (মাকামে ইবরাহীম নামের পাথর যার ওপর দাঁড়িয়ে কা’বা ঘর নির্মাণকালে হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালামের পায়ের ছাপ পড়েছিলো) নামাযের স্থান হিসেবে গ্রহণ করো’; এবং ইবরাহীম ও ইসমাঈলকে তাকিদ দিয়েছি, ‘আমার ঘরকে পুতঃপবিত্র করো, তাওয়াফকারী, এ’তেকাফকারী এবং রুকু’ ও সেজদাকারীদের জন্যে।” (জ্ঞাতব্য: তাওয়াফের পরে দু’রাকআত নামায ওখানে পড়তে হয়) [সূরা বাকারাহ, ১২৫ আয়াত; মুফতী আহমদ এয়ার খানের ’নূরুল এরফান’ বাংলা তাফসীর থেকে সংগৃহীত; অনুবাদক: মওলানা এম, এ, মন্নান, চট্টগ্রাম]
আল-কুরআনের অন্যত্র এরশাদ হয়েছে:
فِيهِ آيَاتٌ بَيِّنَاتٌ مَّقَامُ إِبْرَاهِيمَ ۖ وَمَن دَخَلَهُ كَانَ آمِنًا ۗ وَلِلَّهِ عَلَى النَّاسِ حِجُّ الْبَيْتِ مَنِ اسْتَطَاعَ إِلَيْهِ سَبِيلًا ۚ وَمَن كَفَرَ فَإِنَّ اللَّهَ غَنِيٌّ عَنِ الْعَالَمِينَ
অর্থাৎ: "সেটির মধ্যে সুস্পষ্ট নিদর্শনাদি রয়েছে - ইবরাহীমের দাঁড়াবার স্থান (মাকাম-এ-ইব্রাহীম); আর যে ব্যক্তি সেটির অভ্যন্তরে প্রবেশ করে, সে নিরাপত্তার মধ্যে থাকে; এবং আল্লাহর জন্যে মানবকুলের ওপর ওই ঘরের হজ্জ্ব করা (ফরয), যে ব্যক্তি সেটি পর্যন্ত যেতে পারে। আর যে ব্যক্তি অস্বীকারকারী হয়, তবে আল্লাহ সমগ্র জাহান (জ্বিন ও ইনসান) থেকে বে-পরোয়া।” [সূরা আল-এ-ইমরান, ৯৭ আয়াত; মুফতী আহমদ এয়ার খান কৃত ‘নূরুল এরফান’ তাফসীর হতে সংগৃহীত]
আল্লাহতা’লা তাঁর প্রিয় বন্ধুদের এতো ভালোবাসেন যে ‘এই ধরনের নির্দিষ্ট বা চিহ্নিত করা স্থানে’ প্রার্থনা করাকে তিনি হজ্জ্বের প্রথা ��িসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এতে যদি বিন্দু পরি��াণ শেরকের (অংশীবাদের বা মূর্তিপূজার) সম্ভাবনা থাকতো, অর্থাৎ, মানুষেরা আম্বিয়া (আ:)-এর মাযার-রওযা ও পদচিহ্নকে ‘আল্লাহ ভিন্ন অন্য উপাস্য দেবতা’ হিসেবে যদি গ্রহণ করা আরম্ভ করতো, তাহলে আল্লাহতা’লা নিজ কুরআন মজীদে তাঁর অবারিত রাজকীয় সম্মান তাঁরই প্রিয় বন্ধুদের প্রতি দেখাতেন না।
বস্তুতঃ পবিত্র কুরআন মজীদ এই সব স্থানকে ‘শআয়েরুল্লাহ’ (আল্লাহকে স্মরণ হয় এমন সম্মান প্রদর্শনযোগ্য চিহ্ন) হিসেবে সম্বোধন করে; আর আম্বিয়া (আ:) ও আউলিয়া (রহ:)-বৃন্দের মাযার-রওযা (নবীদের কারো কারো রওযা মসজিদে হারামের মধ্যেও বর্তমান) অবশ্যঅবশ্য শআয়েরুল্লাহ’র অন্তর্ভুক্ত। যে কেউ এই মাযার-রওযার ক্ষতি করলে প্রকৃতপ্রস্তাবে আল্লাহতা’লার সাথেই যুদ্ধে জড়িয়ে যাবে, যেমনটি সহীহ বেখারী শরীফে বর্ণিত একটি হাদীসে কুদসীতে ঘোষিত হয়েছে: “যে ব্যক্তি আমার ওলী (বন্ধু)’র প্রতি বৈরীভাবাপন্ন হয়, তাকে আমি আমার সাথে যুদ্ধ করার জন্যে আহ্বান জানাই।” [সহীহ বোখারী, হাদীসে কুদসী, ৮ম খণ্ড, ১৩১ পৃষ্ঠা]
বিরোধীরা হয়তো ধারণা করতে পারে যে তারা মাযার-রওযা ভেঙ্গে কোনো না কোনোভাবে আল্লাহর সাথে যুদ্ধে জয়ী হচ্ছে, কিন্তু বাস্তবে আল্লাহতা’লা ওহাবী/’সালাফী’ গোষ্ঠীর নিষ্ঠুর ও বর্বরতা প্রকাশ করে দিয়ে আহল্ আস্ সুন্নাহ’র শিক্ষাকেই সারা বিশ্বে প্রচার-প্রসার করছেন। সীমা লঙ্ঘনকারীদের জঘন্য কাজের পরে আহল্ আস্ সুন্নাহ (সুন্নী মুসলমানবৃন্দ) বিশ্বব্যাপী গোমরাহদের বদ আকীদার খণ্ডন করছেন, এবং আল-হামদু লিল্লাহ, এটি নিশ্চয় আল-ফাতহুল বারী (খোদাতা’লার বিজয় তথা তাঁর পক্ষ হতে বিজয়), যা সীমা লঙ্ঘনকারীরা উপলব্ধি করতে পারছে না। আল্লাহ হলেন সবচেয়ে সেরা পরিকল্পনাকারী এবং তিনি তাঁর সালেহীন বা পুণ্যবান বান্দাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণকারী লোকদেরকে জমিনের ওপর তাদের ধ্বংসযজ্ঞ/নৈরাজ্য চালানোর ক্ষণিক সুযোগ দেন; কিন্তু বাস্তবে তাদের প্রতি আল্লাহর লা’নত বা অভিসম্পাত বর্ষিত হয়, যেমনটি আল-কুরআন এরশাদ ফরমায়:
وَالَّذِينَ يَنقُضُونَ عَهْدَ اللَّهِ مِن بَعْدِ مِيثَاقِهِ وَيَقْطَعُونَ مَا أَمَرَ اللَّهُ بِهِ أَن يُوصَلَ وَيُفْسِدُونَ فِي الْأَرْضِ ۙ أُولَٰئِكَ لَهُمُ اللَّعْنَةُ وَلَهُمْ سُوءُ الدَّارِ
অর্থাৎ: ”এবং ওই সব লোক, যারা আল্লাহর সাথে কৃত অঙ্গীকারকে তা পাকাপাকি হবার পর ভঙ্গ করে, এবং যা জুড়ে রাখার জন্যে আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন, সেটি ছিন্ন করে এবং জমিনে ফাসাদ ছড়ায়, তাদের অংশ হচ্ছে অভিসম্পাত-ই এবং তাদের ভাগ্যে জুটবে মন্দ আবাস-ঘর।” [সূরা রা’দ, ২৫ আয়াত]
অতএব, এ ধরনের লা’নতপ্রাপ্ত লোকেরা জ���িনের ওপর ফাসাদ (বিবাদ-বিসম্বাদ) সৃষ্টি করে এবং পবিত্র স্থানগুলো ধ্বংস করে। তারা মনে করে যে তারা সত্যপথে আছে, কিন্ত বাস্তবে খারেজী-সম্পর্কিত আল-বোখারীর হাদীসে যেমন প্রমাণিত, ঠিক তেমনি তারাও খারেজীদের মতোই পথভ্রষ্ট হয়েছে।
আল্লাহতা’লা এরশাদ করেন,
وقيل هذه الآية نزلت في الخوارج الذين يحرفون تأويل الكتاب والسنة ويستحلون بذلك دماء المسلمين وأموالهم كما هو مشاهد الآن في نظائرهم، وهم فرقة بأرض الحجاز يقال لهم الوهابية يحسبون أنهم على شىء ألا انهم هم الكاذبون، استحوذ عليهم الشيطان فأنساهم ذكر الله أولئك حزب الشيطان ألا إن حزب الشيطان هم الخاسرون، نسأل الله الكريم أن يقطع دابرهم
অর্থাৎ: “নিশ্চয় শয়তান তোমাদের শত্রু; সুতরাং তোমরাও তাকে শত্রু মনে করো। সে তো আপন দলকে এ জন্যেই আহ্বান করে যেন তারা দোযখীদের অন্তর্ভুক্ত হয়” (সূরা ফাতির, ৬ আয়াত)। ইমাম আহমদ আল-সাবী (রহ:) ইমাম জালালউদ্দীন সৈয়ুতী (রহ:)-এর কৃত ‘তাফসীরে জালালাইন’ গ্রন্থের চমৎকার হাশিয়ায় এ আয়াতের ব্যাখ্যায় লেখেন: “এ কথা বলা হয় যে এই আয়াতটি খারেজীদের (ভবিষ্যতে আবির্ভাব) সম্পর্কে নাযেল হয়েছিল, যারা কুরআন-সুন্নাহ’র অর্থ ও ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ পরিবর্তন করেছিল এবং এরই ভিত্তিতে মুসলমান হত্যা ও তাঁদের ধন-সম্পত্তি লুঠপাটকে বৈধ জ্ঞান করেছিল, যেমনটি আজকাল দেখা যায় তাদের উত্তরসূরী হেজায অঞ্চলের ওহাবীদের মাঝে (فرقة بأرض الحجاز يقال لهم الوهابية)। ওহাবীরা ‘এ কথা মনে করছে তারা (বড় কূটনীতিমূলক) কিছু করেছে। ওহে শুনছো, নিশ্চয় তারাই মিথ্যুক। তাদের ওপর শয়তান বিজয়ী হয়ে গিয়েছে, সুতরাং সে তাদেরকে ভুলিয়ে দিয়েছে আল্লাহর স্মরণ। তারা শয়তানের দল। শুনছো! নিশ্চয় শয়তানের দল-ই ক্ষতিগ্রস্ত’ (আল-কুরআন, ৫৮:১৮-৯)। আমরা আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করি যাতে তিনি তাদেরকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দেন। [হাশিয়া আল-সাবী আ’লাল জালালাইন, ৩:২৫৫]
জরুরি জ্ঞাতব্য: ওহাবীরা ধূর্ততার সাথে এই বইটির মধ্য থেকে ‘ওহাবী’ শব্দটি অপসারণ করতে চেয়েছিল। কিন্তু তারা হাতে-নাতে ধরা পড়ে যায়। আল্লাহতালা-ই ইসলামী জ্ঞানকে হেফাযত করেন।
দলিল নং - ১
আমরা এবার ‘কবরের আকার-আকৃতি’ বিষয়টির ফয়সালা করবো।
হযরত আবূ বকর বিন আইয়াশ (রা:) বর্ণনা করেন: হযরত সুফিয়ান আত্ তাম্মার (রা:) আমাকে জানান যে তিনি মহানবী (দ:)-এর রওযা মোবারককে উঁচু ও উত্তল দেখতে পেয়েছেন। [সহীহ বোখারী, ���য় খণ্ড, ২৩তম বই, হাদীস নং ৪৭৩]
অতএব, মাযার-রওযা ভেঙ্গে ফেলা বা গুঁড়িয়ে দেয়া ‘সালাফী’দের দ্বারা ‘নস’ বা শরয়ী দলিলের চরম অপব্যাখ্যা ছাড়া কিছুই নয়।
মহান হানাফী মুহাদ্দীস ইমাম মোহাম্মদ ইবনে হাসসান শায়বানী (রহ:) এতদসংক্রান্ত বিষয়ে গোটা একটি অধ্যায় বরাদ্দ করে তার শিরোনাম দেন ‘কবরের ওপর উঁচু স্তূপাকৃতির ফলক ও আস্তর’। এই অধ্যায়ে তিনি নিম্নের হাদীসটি লিপিবদ্ধ করেন:
ইমাম আবূ হানিফা (রহ:) আমাদের কাছে হযরত হাম্মাদ (রহ:)-এর কথা বর্ণনা করেন, তিনি হযরত ইবরাহীম (রা:)-এর কথা উদ্ধৃত করেন, যিনি বলেন, কেউ একজন আমাকে জানান যে তাঁরা মহানবী (দ:), হযরত আবূ বকর (রা:) ও হযরত উমর (রা:)-এর মাযার-রওযার ওপরে ‘উঁচু স্তূপাকৃতির ফলক যা (চোখে পড়ার মতো) বাইরে প্রসারিত ছিল তা দেখতে পেয়েছিলেন এবং তাতে আরও ছিল সাদা এঁটেলমাটির টুকরো।
ইমাম মুহাম্মদ (রহ:) আরও বলেন, আমরা (আহনা’ফ) এই মতকেই সমর্থন করি; মাযার-রওযা বড় স্তূপাকৃতির ফলক দ্বারা চিহ্নিত করতে হবে। কিন্তু তা বর্গাকৃতির হতে পারবে না। এটি-ই হচ্ছে ’ইমাম আবূ হানিফা (রহ:)-এর সিদ্ধান্ত’। [কিতাবুল আসা’র, ১৪৫ পৃষ্ঠা, Truth Publishing কর্তৃক প্রকাশিত]
সীমা লঙ্ঘনকারীরা দাবি করে, সকল মাযার-রওযা-ই গুঁড়িয়ে দিতে বা ধ্বংস করতে হবে। এটি সরাসরি সুন্নাহর সাথে সাংঘর্ষিক। কেননা, তারা যে হাদীসটিকে এ ক্ষেত্রে অপপ্রয়োগ করে, তা মুশরিকীন (অংশীবাদী)-দের সমাধি সম্পর্কে বর্ণিত, মো’মেনীন (বিশ্বাসী মুসলমান)-দের কবর সম্পর্কে নয়। মাযার-রওযা নির্মাণ বৈধ, কারণ রাসূলুল্লাহ (দ:), সর্ব-হযরত আবূ বকর (রা:) ও উমর ফারূক (রা:) এবং অন্যান্য সাহাবা (রা:)-দের মাযার-রওযা উঁচু স্তূপাকৃতির ফলক দ্বারা নির্মিত হয়েছিল মর্মে দলিল বিদ্যমান। আমরা জানি, ওহাবীরা চিৎকার করে বলবে আমরা কেন ইমাম মুহাম্মদ (রহ:)-এর বইয়ের পরবর্তী পৃষ্ঠার উদ্ধৃতি দেই নি, যেখানে তিনি কবরে আস্তর না করার ব্যাপারে বলেছেন। কিন্তু মনে রাখতে হবে যে তিনি তাতে সাধারণ কবরের কথা-ই বলেছিলেন, আম্বিয়া (আ:) ও আউলিয়া (রহ:)-এর মাযার-রওযা সম্পর্কে নয়, যেমনিভাবে ইতিপূর্বে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। আমরা এখানে কিছু ছবি দেখাতে চাই যা’তে দৃশ্যমান হয় যে মুশরিকীন/খৃষ্টানদের সমাধি এমন কি তাদের দ্বারাও (মাটির সাথে) ‘সমান’ রাখা হয় (অতএব, ইসলামী প্রথানুযায়ী মুসলমানদের কবর মাটির সাথে সমান নয়, বরং উচুঁ স্তূপাকৃতির ফলক দ্বারা মাটি থেকে ওপরে হওয়া চাই)। তবে খৃষ্টান সম্প্রদায় মরিয়ম ও যিশুর মূর্তি তাদের মৃতদের সমাধিতে স্থাপন করে যা ইসলাম ধর্মমতে নিষেধ।
মুসলমানদের কবর ও মুশরিকীন (অংশীবাদী)-দের সমাধির মধ্যকার পার্থক্য বোঝার জন্যে গুরুত্বপূর্ণ ��বি
(ক) প্রথম ছবিটিতে দেখা যায় খৃষ্টানদের সমাধি সম্পূর্ণভাবে মাটির সাথে মেশানো তথা মাটির সমান, যা ওহাবীরা আমাদের বিশ্বাস করতে বলে এই মর্মে যে, মুসলমানদের কবরও অনু��ূপ হওয়া উচিত। [কিন্তু বেশ কিছু হাদীসে ইহুদী ও খৃষ্টানদের বিপরীত করতে আমরা আদিষ্ট হয়েছি, যা প্রমাণ করে যে মুসলমানদের কবর পাকা হওয়া উচিত; তবে কোনো মূর্তি ওর ওপরে নির্মাণ করা চলবে না]
(খ) দ্বিতীয় দুটি ছবিতে স্পষ্ট হয় যে খৃষ্টানগণ ‘সমাধির ঠিক ওপরে মূর্তি নির্মাণ করেন’। অথচ মুসলমান সূফী-দরবেশদের মাযার-রওযার ঠিক ওপরে ইমারত (অবকাঠামো) নির্মিত হয় না, বরং তাঁদের মাযার-রওযাগুলো দালান হতে পৃথক, যেটি বিভিন্ন হাদীসের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ, যে হাদীসগুলো এমন কি ওহাবীরাও অপপ্রয়োগ করে থাকে। [অনুবাদকের নোট: বর্তমানে আহলুস্ সুন্নাহ-ডট-কমের সাইটে ছবিগুলো নেই]
পক্ষান্তরে, নিচের ছবিগুলো ইসলামের অত্যন্ত পবিত্র স্থানসমূহের, যা’তে অন্তর্ভুক্ত মহানবী (দ:), সাইয়েদুনা আবূ বকর (রা:) ও সাইয়েদুনা উমর ফারূক (রা:)-এর মোবারক রওযাগুলো, যেগুলো নির্মিত হয়েছিল বহু শতাব্দী আগে। জেরুসালেমে বায়তুল আকসা’র গুম্বজটি মুসলমানদের জন্যে তৃতীয় সর্বাধিক পবিত্র স্থান। অথচ এতে শুধু রয়েছে মহানবী (দ:)-এর কদম মোবারকের চিহ্ন, যেখান থেকে তিনি মে’রাজে গমন করেন!
বায়তুল মোকাদ্দসের এই সুপ্রাচীন গুম্বজসম্বলিত ইসলামী ইমারতটি এখন হুমকির মুখোমুখি, কারণ ওহাবী মতবাদ অনুযায়ী এ ধরনের ইমারত মন্দ বেদআত (উদ্ভাবন)। মে’রাজের গুম্বজটি এর পাশেই অবস্থিত, যেখান থেকে রাসূলুল্লাহ (দ:) ঊর্ধ্বগমন শুরু করেন। ওহাবী ধর্মমতে, পবিত্র স্থানে এ ধরনের গুম্বজ নির্মাণ ও একে গুরুত্ব প্রদান মন্দ একটি বেদআত এবং তারা শেরকের ভয়ে এটি বুলডজার দিয়ে ধূলিসাৎ করা সমীচীন মনে করে। ইসলামের শত্রুদের শুধু ওহাবী মতাবলম্বীদের হাতে ক্ষমতা দেয়াই বাকি, যা দ্বারা ওহাবীরা মে’রাজের গুম্বজসহ সকল বিদ্যমান ইসলামী ঐতিহ্যবাহী স্থানকে মাটির সাথে মিশিয়ে দেবে।
যমযম কুয়ার ওপরে গুম্বজ নির্মিত হয় ইসলামের প্রাথমিক যুগে, খলীফা আল-মনসূরের শাসনামলে (১৪৯ হিজরী)। ওহাবী মতবাদ অনুসারে এটিও মন্দ বেদআত ও শেরেকী কর্ম হবার কথা। তাদের কুপ্রথানুযায়ী পৃথিবীতে ঐতিহ্যবাহী আল্লাহর শ’আয়ের তথা স্মারক চিহ্নের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা শেরেকের পর্যায়ভুক্ত হবে। অথচ এই ফেরকাহ’র স্ববিরোধিতার চূড়ান্ত নিদর্শনস্বরূপ খোদায়ী আশীর্বাদধন্য যমযম কুয়ার ওপর ওহাবী-সমর্থক সউদী রাজা-বাদশাহবর্গ-ই ইমারত নির্মাণ করে দিয়েছে।
এক্ষণে আমরা চিরতরে ওপরে উদ্ধৃত ওহাবীদের অপযুক্তির মূলোৎপাটন করবো, এমন কি কবরে আস্তর করা, ওর ওপরে ’মাকতাব’ স্থাপন, বা কবরের ধারে বসার বিষয়গুলোও এতে অন্তর্ভুক্ত হবে।
হাদীসশাস্ত্রে ইচ্ছাকৃতভাবে হাদীস জাল করা এবং কোনো রওয়ায়াতের প্রথমাংশ সম্পর্কে স্পষ্ট ব্যাখ্যাকারী বাকি অংশগুলোর গোপনকারী হিসেবে ওহাবীদের কুখ্যাতি আছে। কবর আস্তর না করার পক্ষে হাদীস উদ্ধৃত করার পরে আপনারা কোনো ওহাবীকেই কখনো দেখবেন না ইমাম তিরমিযী (রহ:) ও ইমাম হাকিম (রহ:)-এর এতদসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত বর্ণনা করতে। পক্ষান্তরে, আমাদের সুন্নীপন্থী ইসলাম ’আওয়ামুন্ নাস’ তথা সর্বসাধারণের সামনে পুরো চিত্রটুকু তুলে ধরতেই আমাদেরকে আদেশ করে, যাতে তাঁরা বুঝতে সক্ষম হন কেন হযরত হাসান আল-বসরী (রহ:), ইমাম শাফেঈ (রহ:) ও ইমাম হাকিম (রহ:)-এর মতো সর্বোচ্চ পর্যায়ের মেধাসম্পন্ন মোহাদ্দেসীনবৃন্দ এই সব হাদীসকে আক্ষরিক অর্থে গ্রহণ করেননি।
’কবরে আস্তর না করা, না লেখা বা বসা’ সংক্রান্ত হাদীসটি বর্ণনার পরে ইমাম তিরমিযী (রহ:) বলেন:
قال أبو عيسى هذا حديث حسن صحيح قد روي من غير وجه عن جابر وقد رخص بعض أهل العلم منهم الحسن البصري في تطيين القبور وقال الشافعي لا بأس أن يطين القبر
অর্থাৎ: “এই হাদীসটি হাসান সহীহ এবং এটি বিভিন্ন সনদ বা সূত্রে হযরত জাবের (রা:) হতে বর্ণিত হয়েছে। কিছু উলেমা (কাদা) মাটি দ্বারা কবর আস্তর করার অনুমতি দিয়েছেন; এঁদের মধ্যে রয়েছেন ইমাম হাসান আল-বসরী (আমীরুল মো’মেনেীন ফীল্ হাদীস)। অধিকন্তু, ইমাম শাফেঈ (রহ:) কাদামাটি দ্বারা কবর আস্তর করাতে কোনো ক্ষতি দেখতে পাননি।” [সুনানে তিরমিযী, কবর আস্তর না করার হাদীস #১০৫২]
ওহাবীরা তবুও অজুহাত দেখাবে যে ইমাম তিরমিযী (রহ:) তো কাদামাটি দিয়ে কবর আস্তর করতে বলেছিলেন, সিমেন্ট দিয়ে করতে বলেননি। এমতাবস্থায় এর উত্তর দিয়েছেন ইমাম আল-হাকিম (রহ:), যিনি অনুরূপ আহাদীস বর্ণনার পরে বলেন:
هذه الأسانيد صحيحة وليس العمل عليها فإن أئمة المسلمين من الشرق إلى الغرب مكتوب على قبورهم وهو عمل أخذ به الخلف عن السلف
অর্থাৎ: “এ সকল আসানীদ (সনদ) সহীহ, কিন্তু পূর্ব হতে পশ্চিম পর্যন্ত মুসলমান জ্ঞান বিশারদগণ এগুলো আমল বা অনুশীলন করেননি। কবরের ওপরে ফলকে লেখা মুসলমানদের পরবর্তী প্রজন্ম ‘সালাফ’বৃন্দ থেকেই গ্রহণ করেছিলেন।” [’মোস্তাদরাক-এ-হাকিম’, ১:৩৭০, হাদীস #১৩৭০]
সুতরাং এতোজন ইসলামী বিদ্বান এই মত পোষণ করার দরুন প্রমাণিত হয় যে ওহাবীরা যেভাবে উক্ত হাদীসগুলোকে বুঝে থাকে, প্রকৃতপক্ষে সেগুলো সেই অর্থজ্ঞাপক নয়। মনে রাখা জ��ুরি যে, এই মহান মোহাদ্দেসীনবৃন্দ ওহাবীদের মনগড়া চিন্তাভাবনা থেকে আরও ভালোভাবে হাদীসশাস্ত্র সম্পর্কে জানতেন এবং বুঝতেন।
হযরত আম্বিয়া (আ:)-এর মাযার-রওযা আস্তর করার বৈধতা প্রমাণকারী রওয়ায়াতটি হযরত আবূ আইয়ুব আনসারী (রা:) কর্তৃক বর্ণিত হয়েছে; তিনি বলেন:
(جئت رسول الله ولم آتِ الحجر )
অর্থাৎ: “আমি মহানবী (দ:)-এর কাছে এসেছি, পাথরের কাছে নয়” [মুসনাদে আহমদ ইবনে হাম্বল, হাদীস # ২৩৪৭৬]। ইমাম আল-হাকিম (রহ:)-ও এটি বর্ণনা করে এর সনদকে সহীহ বলেছেন; তিনি বলেন, “আয্ যাহাবীও তাঁর (ইমাম আহমদের) তাসহিহ-এর সাথে একমত হয়েছেন এবং একে সহীহ বলেছেন।” [’মোস্তাদরাক আল-হাকিম’, আয্ যাহাবীর তালখীস সহকারে, ৪:৫৬০, হাদীস # ৮৫৭১]
এই রওয়ায়াত প্রমাণ করে যে নবী পাক (দ:)-এর রওযা মোবারক আস্তরকৃত ছিল, নতুবা হযরত আবূ আইয়ুব আনসারী (রা:) স্বৈরশাসক মারওয়ানকে খণ্ডন করার সময় ‘পাথর’ শব্দটি ব্যবহার করতেন না। এই আনসার সাহাবী (রা:)-এর রওয়ায়াতটি হযরতে সাহাবা-এ-কেরাম (রা:)-এর আকীদা-বিশ্বাস ও মারওয়ানের মতো স্বৈরশাসকদের ভ্রান্ত ধারণার পার্থক্যও ফুটিয়ে তোলে (অনুরূপভাবে আমাদের পবিত্র স্থানগুলোও ওহাবীদের মতো স্বৈরশাসক জবরদখল করে রেখেছে, যা তাদের ন্যায়পরায়ণতা সাব্যস্ত করে না; কারণ ইতিপূর্বেও মক্কা মোয়াযযমা ও মদীনা মোনাওয়ারা এয়াযীদ, হাজ্জাজ বিন ইউসূফ, মারওয়ানের মতো জালেমদের অধীনে ছিল)। মহানবী (দ:)-এর পবিত্র রওযায় কাউকে মুখ ঘষতে দেখে মারওয়ান হতভম্ব হয়েছিল। সে যখন বুঝতে পারে এই ব্যক্তি-ই সাহাবী হযরত আবূ আইয়ুব আল-আনসারী (রহ:), তখন একেবারেই কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে যায়।
ওহাবীরা অপর যে বিষয়টির অপব্যবহার করে, তা হলো কবরের ধারে বসা। এ প্রসঙ্গে ইমাম মালেক (রহ:) প্রণীত ‘মুওয়াত্তা’ গ্রন্থে একটি চমৎকার হাদীস বর্ণিত হয়েছে, আর এতে ইমাম মালেক (রহ:)-এর নিজেরও একটি চূড়ান্ত মীমাংসাকারী সিদ্ধান্ত বিদ্যমান, যা প্রমাণ করে যে রাসূলুল্লাহ (দ:) সার্বিকভাবে মানুষদেরকে কবরের ধারে বসতে নিষেধ করেননি, বরং পেশাব-মলত্যাগ করতে নিষেধ করেছিলেন; কেননা, ’তা আক্ষরিক অর্থেই কবরবাসীর ক্ষতি করে।’ এই সব হাদীসে ব্যবহৃত ‘আ’লা (على)’ (ওপরে) শব্দটি ইচ্ছাকৃতভাবে ওহাবীরা ভুল বুঝে থাকে, যাতে তাদের ধোকাবাজির প্রসার ঘটানো যায়।
ইমাম মালেক (রহ:) নিম্নবর্ণিত শিরোনামে ��োটা একখানা অধ্যায় বরাদ্দ করেছেন:
باب الوقوف للجنائز والجلوس على المقابر
অর্থাৎ: ”জানাযার জন্যে থামা এবং কবরস্থানের পাশে বসা”
ওপরে উক্ত অধ্যায়ে বর্ণিত দ্বিতীয় রওয়ায়াতে বিবৃত হয়:
وحدثني عن مالك أنه بلغه أن علي بن أبي طالب كان يتوسد القبور ويضطجع عليها قال مالك وإنما نهي عن القعود على القبور فيما نرى للمذاهب
অর্থাৎ: “এয়াহইয়া (রা:) আমার (ইমাম মালেকের) কাছে বর্ণনা করেন মালেক (রা:) হতে, যিনি শুনেছিলেন এই মর্মে যে, হযরত আলী ইবনে আবি তালেব (ক:) কবরে মাথা রেখে পাশে শুয়ে থাকতেন। মালেক (রা:) বলেন, ‘আমরা যা দেখেছি, কবরের ধারে পেশাব-মলত্যাগ করার ক্ষেত্রেই কেবল নিষেধ করা হয়েছে’।” [’মুওয়াত্তা-এ-ইমাম মালেক’, ১৬তম বই, অধ্যায় # ১১, হাদীস # ৩৪]
মনে রাখা জরুরি, অনেক ইসলামী পণ্ডিতের মতে বোখারী শরীফ হতে ইমাম মালেক (রহ:)-এর ’মুওয়াত্তা’ গ্রন্থটি অধিক কর্তৃত্বসম্পন্ন।
কুরআন মজীদে যেমন এরশাদ হয়েছে:
يُضِلُّ بِهِ كَثِيرًا وَيَهْدِي بِهِ كَثِيرًا ۚ
অর্থাৎ: “আল্লাহ তা (কুরআন মজীদ) দ্বারা অনেককে গোমরাহ (পথভ্রষ্ট) করেন এবং অনেককে হেদায়াত (পথপ্রদর্শন) করেন।” [আল-কুরআন, ২:২৬]
যদি কুরআন মজীদ পাঠ করে মানুষেরা গোমরাহ হতে পারে (যেমনটি হয়েছে ওহাবীরা), তাহলে একইভাবে হাদীস শরীফও যথাযথভাবে বিশেষজ্ঞদের অধীনে পাঠগ্রহণ না করে অধ্যয়নের চেষ্টা করলে তা দ্বারা মানুষজন পথভ্রষ্ট হতে পারে।
এ কারণেই মহান সালাফ আস্ সালেহীন (প্রাথমিক যুগের পুণ্যাত্মাবৃন্দ) ইমাম সুফিয়ান ইবনে উবায়না (রহ:) ও ইবনে ওহাব (রহ:) কী সুন্দর বলেছেন:
সুফিয়ান ইবনে উবায়না (রহ:) বলেন,
وقال ابن عيينة " الحديث مضلة إلا للفقهاء " قال عبد الله بن وهب:"الحديث مضلة إلا للعلماء
অর্থাৎ: “হাদীসশাস্ত্র পথভ্রষ্টতা, ছেড়ে ফকীহমণ্ডলীর মধ্যস্থতা।”
ইবনে ওহাব (রহ:) বলেন, “হাদীসশাস্ত্র গোমরাহী, উলেমাবৃন্দের মধ্যস্থতা ব্যতিরেকে।” [দ্বিতীয় উদ্ধৃতিটি ইমাম কাজী আয়ায কৃত ‘তারতীব আল-মাদারিব’ গ্রন্থের ২৮ পৃষ্ঠায় বিদ্যমান]
অধিকন্তু, ইমাম আবূ হানীফা (রহ:)-কে একবার বলা হয়, ‘অমুক মসজিদে তমুক এক দল আছে যারা ফেকাহ (ইসলাম ধর্মশাস্ত্র সম্পর্কিত সূক্ষ্ম জ্ঞান) বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করে।’ তিনি জিজ্ঞেস করেন, ‘তাদের কি কোনো শিক্ষক আছে?’ উত্তরে বলা হয়, ‘না।’ এমতাবস্থায় হযরত ইমাম (রহ:) বলেন, ‘তাহলে তারা কখনোই এটি বুঝতে সক্ষম হবে না।’ [ইবনে মুফলিহ রচিত ‘আল-আদাব আশ্ শরিয়াহ ওয়াল্ মিনাহ আল-মারিয়া’, ৩ খণ্ডে প্রকাশিত, কায়রোতে পুনর্মুদ্রিত সংস্করণ, মাকতাবা ইবনে তাইমিয়া, কায়রো, ১৩৯৮ হিজরী/১৯৭৮ খৃষ্টাব্দ, ৩:৩৭৪]
অতএব, এক্ষণে ওহাবীদের পথভ্রষ্টতা সম্পর্কে ভাবুন, যাদের হাদীসশাস্ত্র-বিষয়ক প্রধান হর্তাকর্তা নাসের আদ্ দালালাহ মানে আলবানীর এই শাস্ত্রে কোনো এজাযা ও স্তর-ই নেই; ঘুরে ঘুরে ফতোয়াদাতা সাধারণ ‘সালাফী’দের কথা তো বহু দূরেই রইলো!
দলিল নং - ২
মহান হানাফী আলেম মোল্লা আলী কারী তাঁর চমৎকার ’মিরকাত শরহে মিশকাত’ গ্রন্থে লেখেন:
وقد أباح السلف البناء على قبر المشايخ والعلماء المشهورين ليزورهم الناس ويستريحوا بالجلوس فيه
অর্থাৎ: “সালাফ তথা প্রাথমিক যুগের মুসলমানগণ প্রখ্যাত মাশায়েখ (পীর-বোযর্গ) ও হক্কানী উলেমাবৃন্দের মাযার-রওযা নির্মাণকে মোবাহ, অর্থাৎ, জায়েয (অনুমতিপ্রাপ্ত) বিবেচনা করেছেন, যাতে মানুষেরা তাঁদের যেয়ারত করতে পারেন এবং সেখানে (সহজে) বসতে পারেন।” [মিরকাত শরহে মিশকাত, ৪র্থ খণ্ড, ৬৯ পৃষ্ঠা]
মহান শাফেঈ আলেম ও সূফী ইমাম আব্দুল ওয়াহহাব শারানী (রহ:) লেখেন: “আমার শিক্ষক আলী (রহ:) ও ভাই আফযালউদ্দীন (রহ:) সাধারণ মানুষের কবরের ওপরে গুম্বজ নির্মাণ ও কফিনে মৃতদের দাফন এবং (সাধারণ মানুষের) কবরের ওপরে চাদর বিছানোকে নিষেধ করতেন। তাঁরা সব সময়-ই বলতেন, গুম্বজ ও চাদর চড়ানোর যোগ্য একমাত্র আম্বিয়া (আ:) ও মহান আউলিয়া (রহ:)-বৃন্দ। অথচ, আমরা মনুষ্য সমাজের প্রথার বন্ধনেই রয়েছি আবদ্ধ।” [আল-আনওয়ারুল কুদসিয়্যা, ৫৯৩ পৃষ্ঠা]
দলিল নং - ৩
হযরত দাউদ ইবনে আবি সালেহ হতে বর্ণিত; তিনি বলেন: “একদিন মারওয়ান (মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের রওযা মোবারকে) এসে দেখে, এক ব্যক্তি রওযা শরীফের খুব কাছাকাছি মুখ রেখে মাটিতে শুয়ে আছেন। মারওয়ান তাঁকে বলে, ‘জানো তুমি কী করছো?’ সে তাঁর দিকে এগিয়ে গেলে সাহাবী হযরত খালেদ বিন যাঈদ আবূ আইয়ুব আল-আনসারী (রহ:)-কে দেখতে পায়। তিনি (সাহাবী) জবাবে বলেন, ‘হ্যাঁ (আমি জানি); আমি রাসূলুল্লাহ (দ:)-এর কাছে (দর্শনার্থী হতে) এসেছি, কোনো পাথরের কাছে আসি নি। আমি মহানবী (দ:)-এর কাছে শুনেছি, (ধর্মের) অভিভাবক যোগ্য হলে ধর্মের ব্যাপারে কাঁদতে না; তবে হ্যাঁ, অভিভাবক অযোগ্য হলে ধর্মের ব্যাপারে কেঁদো।”
রেফারেন্স/সূত্র
* আল-হাকিম এই বর্ণনাকে সহীহ বলেছেন; অপরদিকে, আয্ যাহাবীও তাঁর সত্যায়নের সাথে একমত হয়েছেন। [হাকিম, আল-মোস্তাদরাক, ৪র্থ খণ্ড, হাদীস নং ৫১৫]
* ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ:)-ও তাঁর ’মুসনাদ’ গ্রন্থের ৫ম খণ্ডে সহীহ সনদে এটি বর্ণনা করেন। [হাদীস নং ৪২২]
এবার আমরা মাযার যেয়ারত এবং সেখানে কুরআন তেলাওয়াত ও যিকর-আযকার পালনের ব্��াপারে আলোচনায় প্রবৃত্ত হবো। হযরত আম্বিয়া কেরাম (আ:) ও আউলিয়া (রহ:)-বৃন্দের মাযার-রওযা যেয়ারতের উদ্দেশ্যে সফর করার পক্ষে আদেশসম্বলিত মহানবী (দ:) হতে সরাসরি একখানা ’নস’ তথা হাদীস শরীফ এক্ষেত্রে বিদ্যমান, যা বোখারী শরীফে লিপিবদ্ধ আছে।
বোখারী শরীফ, ২য় খণ্ড, বই নং ২৩, হাদীস নং ৪২৩
হুযূর পাক (দ:) এরশাদ ফরমান: “আমি যদি সেখানে থাকতাম, তাহলে আমি তোমাদেরকে মূসা (আ:)-এর মাযারটি দেখাতাম, যেটি লাল বালির পাহাড়ের সন্নিকটে পথের ধারে অবস্থিত।”
এই হাদীস আবারও রাসূলে খোদা (দ:)-এর কাছ থেকে একটি ‘নস’ (স্পষ্ট দলিল) এই মর্মে যে তিনি আম্বিয়া (আ:)-গণের মাযার-রওযা যেয়ারত পছন্দ করতেন; উপরন্ত, তিনি সাহাবা-এ-কেরাম (রা:)-এর কাছে জোরালোভাবে তা ব্যক্তও করেছেন।
উপলব্ধির জন্যে নিম্নে পেশকৃত হাদীসটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর এটি মাযার-রওযা যেয়ারতের আদব পালনে সাহাবা-এ-কেরাম (রা:)-এর আকীদা-বিশ্বাসেরও প্রতিফলন করে।
হযরত সাইয়্যেদাহ আয়েশা (রা:) বর্ণনা করেন:
أخبرنا أحمد بن جعفر القطيعي ثنا عبد الله بن أحمد بن حنبل حدثني أبي ثنا حماد بن أسامة أنبأ هشام بن عروة عن أبيه عن عائشة رضي الله عنها قالت : كنت أدخل بيتي الذي فيه رسول الله صلى الله عليه و سلم و أني واضع ثوبي و أقول إنما هو زوجي و أبي فلما دفن عمر معهم فو الله ما دخلت إلا و أنا مشدودة علي ثيابي حياء من عمر رضي الله عنه
অর্থাৎ: “যে ঘরে মহানবী (দ:) ও আমার পিতা (আবূ বকর - রা:)-কে দাফন করা হয়, সেখানে যখন-ই আমি প্রবেশ করেছি, তখন আমার মাথা থেকে পর্দা সরিয়ে ফেলেছি এই ভেবে যে আমি যাঁদের যেয়ারতে এসেছি তাঁদের একজন আমার পিতা ও অপরজন আমার স্বামী। কিন্তু আল্লাহর নামে শপথ! যখন হযরত উমর ফারূক (রা:) ওই ঘরে দাফন হলেন, তখন থেকে আমি আর কখনোই ওখানে পর্দা না করে প্রবেশ করি নি; আমি হযরত উমর (রা:)-এর প্রতি লজ্জার কারণেই এ রকম করতাম।” [মুসনাদে আহমদ ইবনে হাম্বল, ৬ষ্ঠ খণ্ড, ২০২ পৃষ্ঠা, হাদীস # ২৫৭০১]
জরুরি জ্ঞাতব্য: প্রথমতঃ এই হাদীসে প্রমাণিত হয় যে শুধু আম্বিয়া (আ:)-এর মাযার-রওযা নির্মাণ-ই ইসলামে বৈধ নয়, পাশাপাশি সালেহীন তথা পুণ্যবান মুসলমানদের জন্যেও তা নির্মাণ করা বৈধ। লক্ষ্য করুন যে হাদীসে ‘বায়ত’ বা ‘ঘর’ শব্দটি উল্লেখিত হয়েছে। মানে মহানবী (দ:)-এর রওযা শরীফের সাথে সর্ব-হযরত আবূ বকর (রা:) ও উমর (রা:)-এর মাযার-রওযাও ‘একটি নির্মিত ঘরের অভ্যন্তরে’ অবস্থিত ছিল।
দ্বিতীয়তঃ হযরত উমর ফারূক (রা:)-এর উক্ত ঘরে দাফনের পরে হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা:) পূর্ণ পর্দাসহ সেখানে যেয়ারতে যেতেন। এটি এতদসংক্রান্ত বিষয়ে হযরতে সাহাবা-এ-কেরাম (রা:)-এর আকীদা-বিশ্বাস প্রতিফলনকারী স্পষ্ট দলিল, যা’তে বোঝা যায় তাঁরা মাযারস্থদের দ্বারা যেয়ারতকারীদের চিনতে পারার ব্যাপারটিতে স্থির বিশ্বাস পোষণ করতেন। হাদীসটির স্পষ্ট বর্ণনার দিকে লক্ষ্য করুন। তাতে বলা হয়েছে ‘হায়া মিন উমর (حياء من عمر)’, মানে হযরত উমর (রা:)-এর প্রতি লজ্জার কারণে হযরত আয়েশা (রা:) ওখানে পর্দা করতেন।
আমরা জানি, ওহাবীদের ধ্যান-ধারণার বিরুদ্ধে গেলে প্রতিটি সহীহ ��াদীসকে অস্বীকার করা তাদের স্বভাবসিদ্ধ ব্যাপার। তারা অহরহ আলবানী (বেদআতী-গুরু)-এর হাওয়ালা দেয় নিজেদের যুক্তি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে; কিন্তু এক্ষেত্রে তারা তাদের ওই নেতারও শরণাপন্ন হতে পারছে না। কেননা, এই হাদীস এতোই বিশুদ্ধ ও নির্ভরযোগ্য যে এমন কি আলবানীও এটিকে যয়ীফ বা দুর্বল ঘোষণা করতে পারেনি (নতুবা তার কুখ্যাতি ছিল বাঁকা পথে সহীহ হাদীসকে অস্বীকার করার, যখন-ই তা তার মতবাদের পরিপন্থী হতো)। এ কথা বলার পাশাপাশি আমরা এও স্পষ্ট করে বলতে চাই যে, শুধু ওহাবীরাই নয়, আলবানী-ও উসূলে হাদীস তথা হাদীসের নীতিমালাবিষয়ক শাস্ত্রে একেবারেই কাঁচা ছিল। আমরা কেবল তার উদ্ধৃতি দিয়েছি এই কারণে যাতে শত্রুদের মধ্য থেকেই সত্যের স্বীকৃতি পাওয়া যায়।
ইমাম নূরুদ্দীন হায়তামী (রহ:) এই হাদীসটি সম্পর্কে বলেন:
رواه أحمد ورجاله رجال الصحيح
অর্থাৎঃ “এটি ইমাম আহমদ (রহ:) কর্তৃক বর্ণিত এবং এর বর্ণনাকারীরা সবাই সহীহ মানব।” [মজমাউয্ যাওয়াইদ, ৯:৪০, হাদীস # ১২৭০৪]
ইমাম আল-হাকিম (রহ:) এটি বর্ণনা করার পর বলেন,
هذا حديث صحيح على شرط الشيخين
অর্থাৎ: “এই হাদীস বোখারী ও মুসলিমের শর্ত অনুযায়ী সহীহ।” [মোস্তাদরাক আল-হাকিম, হাদীস # ৪৪৫৮]
নাসিরুদ্দীন আলবানী আল-মোবতাদি আল-মাশহুর (কুখ্যাত বেদআতী) এই হাদীসকে মেশকাতুল মাসাবিহ গ্রন্থের ওপর নিজ ব্যাখ্যামূলক ‘তাখরিজ’পুস্তকে সমর্থন করেছে (# ১৭১২)।
ইবনে কাসীর লিখেছে, “ইবনে আসাকির হযরত আমর ইবনে জামাহ (রহ:)-এর জীবনীগ্রন্থে বর্ণনা করেন: ‘এক তরুণ বয়সী ব্যক্তি নামায পড়তে নিয়মিত মসজিদে আসতেন। একদিন এক নারী তাঁকে অসৎ উদ্দেশ্যে নিজ গৃহে আমন্ত্রণ করে। তিনি যখন ওই নারীর ঘরে ছিলেন, তখন তিনি উচ্চস্বরে তেলাওয়াত করেন কুরআনের আয়াত - (إِنَّ ٱلَّذِينَ ٱتَّقَوْاْ إِذَا مَسَّهُمْ طَـٰئِفٌ مِّنَ ٱلشَّيْطَـٰنِ تَذَكَّرُواْ فَإِذَا هُم مُّبْصِرُونَ) নিশ্চয় ওই সব মানুষ যারা তাকওয়ার অধিকারী হন, যখন-ই তাদেরকে কোনো শয়তানী খেয়ালের ছোঁয়া স্পর্শ করে, তখন তারা সাবধান হয়ে যান; তৎক্ষণাৎ তাদের চোখ খুলে যায় (৭:২০১)। অতঃপর তিনি মূর্ছা যান এবং আল্লাহর ভয়ে ইন্তেকাল করেন। মানুষেরা তাঁর জানাযার নামায পড়েন এবং তাঁকে দাফনও করেন। হযরত উমর (রা:) এমতাবস্থায় একদিন জিজ্ঞেস করেন, নিয়মিত মসজিদে নামায পড়ার জন্যে আগমনকারী ওই তরুণ কোথায়? মানুষেরা জবাব দেন, তিনি ইন্তেকাল করেছেন এবং আমরা তাঁকে দাফন করেছি। এ কথা শুনে হযরত উমর (রা:) ওই তরুণের কবরে যান এবং তাঁকে সম্ভাষণ জানিয়ে নিম্নের কুরআনের আয়াতটি তেলাওয়াত করেন- এবং যে ব্যক্তি আপন রবের সম্মুখে দণ্ডায়মান হওয়াকে ভয় করেন, তার জন্যে রয়েছে দুটি জান্নাত (৫৫:৪৬)। ওই তরুণ নিজ কবর থেকে জবাব দেন, নিশ্চয় আল্লাহ আমাকে দুটি জান্নাত দান করেছেন’।” [তাফসীরে ইবনে কাসীর, ৬ষ্ঠ খণ্ড, ৪৯৬ পৃষ্ঠা, আল-কুরআন ৭:২০১-এর ব্যাখ্যায়]
[অনুবাদকের জ্ঞাতব্য: খলীফা উমর ফারূক (রা:)-এর কাশফ বা দিব্যদৃষ্টির প্রমাণ এখানে পাওয়া যায়। তিনি ওই তরুণের ঘটনা কাশফ দ্বারা জানতেন। নতুবা তিনি কেন ’তাকওয়া-বিষয়ক আয়াত’ তেলাওয়াত করলেন? উপরন্তু, তিনি যে ‘কাশফুল কুবুর’ বা কবরবাসীর অবস্থা দিব্যদৃষ্টি দ্বারা জানতে পারতেন তাও এই ঘটনায় প্রমাণিত হয়।]
দলিল নং - ৪
হযরত আবূ হোরায়রা (রা:)-এর সূত্রে বর্ণিত; মহানবী (দ:) এরশাদ ফরমান:
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اﷲِ صلي الله عليه وآله وسلم : لَقَدْ رَأَيْتُنِي فِي الْحِجْرِ، وَقُرَيْشٌ تَسْأَلُنِي عَنْ مَسْرَايَ، فَسَأَلَتْنِي عَنْ أَشْيَاءَ مِنْ بَيْتِ الْمَقْدِسِ لَمْ أُثْبِتْهَا، فَکَرِبْتُ کُرْبَةً مَا کَرِبْتُ مِثْلَهُ قًطُّ، قَالَ : فَرَفَعَهُ اﷲُ لِي أَنْظُرُ إِلَيْهِ. مَا يَسْأَلُوْنِي عَنْ شَيءٍ إِلَّا أَنْبَأْتُهُمْ بِهِ. وَقَدْ رَأَيْتُنِي فِي جَمَاعَةٍ مِنَ الْأَنْبِيَاءِ، فَإِذَا مُوْسَي عليه السلام قَاءِمٌ يُصَلِّي، فَإِذَا رَجُلٌ ضَرْبٌ جَعْدٌ کَأَنَّهُ مِنْ رِجَالِ شَنُوْءَةَ. وَإِِذَا عِيْسَي ابْنُ مَرْيَمَ عليه السلام قَائِمٌ يُصَلِّي، أَقْرَبُ النَّاسِ بِهِ شَبَهًا عُرْوَةُ بْنُ مَسْعُوْدٍ الثَّقَفِيُّ. وَإِذَا إِبْرَاهِيْمُ عليه السلام قَائِمٌ يُصَلِّي، أَشْبَهُ النَّاسِ بِهِ صَاحِبُکُمْ (يَعْنِي نَفْسَهُ) فَحَانَتِ الصَّلَاةُ فَأَمَمْتُهُمْ فَلَمَّا فَرَغْتُ مِنَ الصَّلَاةِ، قَالَ قَائِلٌ : يَا مُحَمَّدُ، هَذَا مَالِکٌ صَاحِبُ النَّارِ فَسَلِّمْ عَلَيْهِ. فَالْتَفَتُّ إِلَيْهِ فَبَدَأَنِي بِالسَّلَامِ
অর্থাৎ: “আমি নিজেকে ’হিজর’-এর মধ্যে পেলাম এবং কোরাইশ গোত্র আমাকে মে’রাজের রাতের ভ্রমণ সম্পর্কে নানা প্রশ্ন জিজ্ঞেস করছিল। আমাকে বায়তুল মাকদিস সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্ন করা হয়, যা আমার স্মৃতিতে রক্ষিত ছিল না। এতে আমি পেরেশানগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলাম; এমন পর্যায়ের পেরেশানির মুখোমুখি ইতিপূর্বে কখনো-ই হই নি। অতঃপর আল্লাহ পাক এটিকে (বায়তুল মাকদিসকে) আমার চোখের সামনে মেলে ধরেন। আমি তখন এর দিকে তাকিয়ে তারা (কুরাইশবর্গ) যা যা প্রশ্ন করছিল সবগুলোরই উত্তর দেই। আমি ওই সময় আম্বিয়া (আ:)-বৃন্দের জমায়েতে নিজেকে দেখতে পাই। আমি হযরত মূসা (আ:)-কে নামায পড়তে দেখি। তিনি দেখতে সুদর্শন (সুঠাম দেহের অধিকারী) ছিলেন, যেন শানু’য়া গোত্রের কোনো পুরুষ। আমি মরিয়ম তনয় ঈসা মসীহ (আ:)-কে দেখি নামায আদায় করতে; সকল মানবের মাঝে তাঁর (চেহারার) সবচেয়ে বেশি সাযুজ্য হলো উরওয়া ইবনে মাস’উদ আস্ সাকাফী (রা:)-এর সাথে। আমি হযরত ইবরাহীম (আ:)-কেও সালাত আদায় করতে দেখি; মানুষের মাঝে তাঁর (চেহারার) সবচেয়ে বেশি সাদৃশ্য হলো তোমাদের সাথী (মহানবী স্বয়ং)-এর সাথে। নামাযের সময় হলে পরে আমি তাতে ইমামতি করি। নামাযশেষে কেউ একজন বল্লেন, ‘এই হলেন মালেক (ফেরেশতা), জাহান্নামের রক্ষণাবেক্ষণকারী; তাঁকে সালাম জানান।’ আমি তাঁর দিকে ফিরতেই তিনি আমার আগে (আমাকে) সালাম জানান।” [সহীহ মুসলিম, ১ম খণ্ড, হাদীস নং ৩২৮; ইমাম হাফেয ইবনে হাজর আসকালানী (রহ:)-ও এটিকে নিজ ‘ফাতহুল বারী’ গ্রন্থের ৬ষ্ঠ খণ্ডের ৪৮৩ পৃষ্ঠায় সমর্থন দিয়েছেন]
হযরত মূসা (আ:) ও অন্যান্য আম্বিয়া (আ:)-বৃন্দ তাঁদের মাযার-রওযায় জীবিতাবস্থায় বর্তমান হযরত আনাস বিন মালেক (রা:) বর্ণনা করেন রাসূলুল্লাহ (দ:)-এর হাদীস, যিনি বলেন:
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِکٍ رضي الله عنه أَنَّ رَسُوْلَ اﷲِ صلي الله عليه وآله وسلم قَالَ : أَتَيْتُ، (وفي رواية هدّاب:) مَرَرْتُ عَلَي مُوْسَي لَيْلَةَ أُسْرِيَ بِي عِنْدَ الْکَثِيْبِ الْأَحْمَرِ وَهُوَ قَائِمٌ يُصَلِّي فِي قَبْرِه
অর্থাৎ: “আমি আগমন করি”; আর হযরত হাদ্দিব (রা:)-এর বর্ণনায় হাদীসের কথাগুলো ছিল এ রকম - “মে’রাজ রজনীতে ভ্রমণের সময় আমি লাল টিলার সন্নিকটে হযরত মূসা (আ:)-কে অতিক্রমকালে তাঁকে তাঁর রওযা শরীফে নামায আদায়রত অবস্থায় দেখতে পাই। [সহীহ মুসলিম, বই নং ৩০, হাদীস নং - ৫৮৫৮]
ইমাম সৈয়ুতী (রহ:)
আম্বিয়া (আ:)-এর মাযার-রওযায় তাঁদের রূহানী হায়াত সম্পর্কে হযরত ইমাম সৈয়ুতী (রহ:) বলেন:
“রাসূলুল্লাহ (দ:)-এর রওযা মোবারকে তাঁর রূহানী জীবন এবং অন্যান্য আম্বিয়া (আ:)-বৃন্দের নিজ নিজ মাযার-রওযায় অনুরূপ জীবন সম্পর্কে যে জ্ঞান আমরা লাভ করেছি তা ‘চূড়ান্ত জ্ঞান’ (এলমান কাতে’য়্যান)। এগুলোর প্রমাণ হচ্ছে ‘তাওয়াতুর’ (সর্বত্র জনশ্রুতির ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত)। ইমাম বায়হাকী (রহ:) আম্বিয়া (আ:)-বৃন্দের মাযার-রওযায় তাঁদের পরকালীন জীবন সম্পর্কে একটি ’জুয’ (আলাদা অংশ/অধ্যায়) লিখেছেন। তাতে প্রদত্ত প্রমাণাদির মধ্যে রয়েছে যেমন, ১/ - সহীহ মুসলিম শরীফে হযরত আনাস ইবনে মালেক (রা:) বর্ণিত একটি হাদীসে হুযূর পূর নূর (দ:) এরশাদ ফরমান, ’মে’রাজ রাতে আমি হযরত মূসা (আ:)-এর (রওযার) পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম এবং ওই সময় তাঁকে দেখতে পাই তিনি তাঁর মাযারে সালাত আদায় করছিলেন’; ২/ - আবূ নুয়াইম নিজ ‘হিলইয়া’ পুস্তকে হযরত ইবনে আব্বাস (রা:) থেকে একটি বর্ণনা লিপিবদ্ধ করেন, যা’তে ওই সাহাবী রাসূলে খোদা (দ:)-কে বলতে শোনেন, ’আমি হযরত মূসা (আ:)-এর (রওযার) পাশ দিয়ে যাবার সময় তাঁকে নামাযে দণ্ডায়মান দেখতে পাই’; ৩/ - আবূ ইয়ালার ‘মুসনাদ’ গ্রন্থে ও ইমাম বায়হাকী (রহ:)-এর ‘হায়াত আল-আম্বিয়া’ পুস্তকে হযরত আনাস (রা:) থেকে বর্ণিত আছে যে নবী করীম (দ:) এরশাদ ফরমান: ’আম্বিয়া (আ:) তাঁদের মাযার-রওযায় জীবিত আছেন এবং তাঁরা (সেখানে) সালাত আদায় করেন’।” [ইমাম ��ৈয়ুতী কৃত ‘আল-হাওয়ী লিল্ ফাতাউইয়ী’, ২য় খণ্ড, ২৬৪ পৃষ্ঠা]
ইমাম হায়তামী (রহ:) ওপরে বর্ণিত সর্বশেষ হাদীস সম্পর্কে বলেন, رواه أبو يعلى والبزار، ورجال أبو يعلى ثقات “আবূ ইয়ালা ও বাযযার এটি বর্ণনা করেছেন এবং আবূ ইয়ালার এসনাদে সকল বর্ণনাকারী-ই আস্থাভাজন।” ইমাম হাফেয ইবনে হাজর আসকালানী (রহ:)-ও এই রওয়ায়াতকে সমর্থন দিয়েছেন নিজ ‘ফাতহুল বারী’ গ্রন্থের ৬ষ্ঠ খণ্ডের ৪৮৩ পৃষ্ঠায়। [কাদিমী কুতুবখানা সংস্করণের ৬০২-৬০৩ পৃষ্ঠায়]
দলিল নং - ৫
ইমাম কুরতুবী (রহ:) হযরত আবূ সাদেক (রা:) থেকে বর্ণনা করেন যে ইমাম আলী (ক:) বলেন, “মহানবী (দ:)-এর বেসালের (পরলোকে আল্লাহর সাথে মিলিত হবার) তিন দিন পর জনৈক আরব এসে তাঁর রওযা মোবারকের ওপর পড়ে যান এবং তা থেকে মাটি নিয়ে মাথায় মাখতে থাকেন। তিনি আরয করেন, ‘এয়া রাসূলাল্লাহ (দ:)! আপনি বলেছিলেন আর আমরাও শুনেছিলাম, আপনি আল্লাহর কাছ থেকে জেনেছিলেন আর আমরাও আপনার কাছ থেকে জেনেছিলাম; আপনার কাছে আল্লাহর প্রেরিত দানগুলোর মধ্যে ছিল তাঁর-ই পাক কালাম - আর যদি কখনো তারা (মো’মেনগণ) নিজেদের আত্মার প্রতি যুলুম করে, তখন হে মাহবুব, তারা আপনার দরবারে হাজির হয় এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে, আর রাসূল (দ:)-ও তাদের পক্ষে সুপারিশ করেন, তবে অবশ্যই তারা আল্লাহকে অত্যন্ত তওবা কবুলকারী, দয়ালু হিসেবে পাবে (আল-কুরআন, ৪:৬৪)। আমি একজন পাপী, আর এক্ষণে আপনার-ই দরবারে আগত, যাতে আপনার সুপারিশ আমি পেতে পারি।’ এই আরযির পরিপ্রেক্ষিতে রওযা মোবারক থেকে জবাব এলো, ‘কোনো সন্দেহ-ই নেই তুমি ক্ষমাপ্রাপ্ত!’ [তাফসীরে কুরতুবী, আল-জামে’ লি আহকাম-ইল কুরআন, ৬ষ্ঠ খণ্ড, উক্ত আল-কুরআনের ৪:৬৪-এর তাফসীর] জ্ঞাতব্য: এটি সমর্থনসূচক দলিল হিসেবে উদ্ধৃত।
দলিল নং - ৬ [ঈমানদারদের মা হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা:) হতে প্রমাণ]
حدثنا أبو النعمان حدثنا سعيد بن زيد حدثنا عمرو بن مالك النكري حدثنا أبو الجوزاء أوس بن عبد الله قال قحط أهل المدينة قحطا شديدا فشكوا إلى عائشة فقالت انظروا قبر النبي صلى الله عليه وسلم فاجعلوا منه كوى إلى السماء حتى لا يكون بينه وبين السماء سقف قال ففعلوا فمطرنا مطرا حتى نبت العشب وسمنت الإبل حتى تفتقت من الشحم فسمي عام الفتق
ইমাম দারিমী বর্ণনা করেন হযরত আবূল জাওযা’ আউস ইবনে আব্দিল্লাহ (রা:) হতে, যিনি বলেন: মদীনাবাসীগণ একবার দুর্ভিক্ষের কবলে পড়েন। তাঁরা মা আয়েশা (রা:)-এর কাছে এ (শোচনীয় অবস্থার) ব্যাপারে ফরিয়াদ করেন। তিনি তাঁদেরকে মহানবী (দ:)-এর রওযা শরীফে গিয়ে ওর ছাদে একটি ছিদ্র করতে বলেন এবং রওযা পাক ও আকাশের মাঝে কোনো বাধা না রাখতে নির্দেশ দেন। তাঁরা তা-ই করেন। অতঃপর মুষলধারে বৃষ্টি নামে। এতে সর্বত্র সবুজ ঘাস জন্মায় এবং উট হৃষ্টপুষ্ট হয়ে মনে হয় যেন চর্বিতে ফেটে পড়বে। এই বছরটিকে ‘প্রাচুর্যের বছর’ বলা হয়। [সুনানে দারিমী, ১ম খণ্ড, ২২৭ পৃষ্ঠা, হাদীস নং ৯৩]
রেফারেন্স: * শায়খ মুহাম্মদ বিন আলাউইয়ী মালেকী (মক্কা শরীফ) বলেন, “এই রওয়ায়াতের এসনাদ ভাল; বরঞ্চ, আমার মতে, এটি সহীহ (বিশুদ্ধ)। উলেমাবৃন্দ এর নির্ভরযোগ্যতার বিষয়টি সমর্থন করেছেন এবং প্রায় সমকক্ষ বিশ্বস্ত প্রামাণিক দলিল দ্বারা এর খাঁটি হবার বিষয়টি প্রতিষ্ঠা করেছেন।” [শেফা’উল ফু’য়াদ বি-যেয়ারতে খায়রিল এ’বাদ, ১৫৩ পৃষ্ঠা]
* ইবনে আল-জাওযী, আল-ওয়াফা’ বি-আহওয়ালিল্ মোস্তফা (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম) [২:৮০১]
* ইমাম তাকিউদ্দীন সুবকী (রহ:) কৃত ‘শেফাউস্ সেকাম ফী যেয়ারাতে খায়রিল আনাম’ [১২৮ পৃষ্ঠা]
* ইমাম কসতলানী (রহ:) প্রণীত ‘আল-মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়াহ’ [৪:২৭৬]; এবং ইমাম যুরকানী মালেকী (রহ:) ‘শরহে মাওয়াহিব’ [১১:১৫০]
সনদ: “আবূ নুয়াইম এই বর্ণনা শুনেছিলেন সাঈদ ইবনে যায়দ হতে; তিনি আ’মর ইবনে মালেক আল-নুকরী হতে; তিনি হযরত আবূল জাওযা আউস্ বিন আবদিল্লাহ (রা:) হতে, যিনি এটি বর্ণনা করেন।
দলিল নং - ৭
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رضي الله عنه أَنَّ رَسُوْلَ اﷲِ صلي الله عليه وآله وسلم قَالَ : مَا مِنْ أَحَدٍ يُسَلِّمُ عَلَيَّ إِلَّا رَدَّ اﷲُ عَلَيَّ رُوْحِي، حَتَّي أَرُدَّ عَلَيْهِ السَّلَامَ
অর্থাৎঃ হযরত আবূ হোরায়রা (রা:) বর্ণনা করেন যে মহানবী (দ:) এরশাদ ফরমান, কেউ আমাকে সালাম জানালে আল্লাহ আমার রূহকে আমার কাছে ফিরিয়ে দেন এবং আমি তার সালামের প্রত্যুত্তর দেই। [আবূ দাউদ শরীফ, ৪র্থ বই, হাদীস নং ২০৩৬]
ইমাম নববী (রহ:) এ হাদীস সম্পর্কে বলেন,
رَوَاهُ أبُو دَاوُدَ بإسناد صحيح
অর্থাৎ: “আবূ দাউদ (রহ:) এটি সহীহ সনদে বর্ণনা করেছেন।” [রিয়াযুস্ সালেহীন, ১:২৫৫, হাদীস # ১৪০২]
গায়রে মুকাল্লিদীন তথা লা-মযহাবী (আহলে হাদীস/’সালাফী’) গোষ্ঠীর নেতা কাজী শওকানী এই হাদীস বর্ণনার আগে বলে,
وأصح ما ورد في ذلك ما رواه أحمد وأبو داود عن أبي هريرة مرفوعاً
অর্থাৎ: “এটি ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ:) ও ইমাম আবূ দাউদ (রহ:) সহীহ এবং মারফু’ সনদে হযরত আবূ হোরায়রা (রা:) থেকে বর্ণনা করেন।” [নায়ল আল-আওতার, ৫:১৬৪]
দলিল নং - ৮
عَنْ أَبِي الدَّرْدَاءِ رضي الله عنه قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اﷲِ صلي الله عليه وآله وسلم : اَکْثِرُوْا الصَّلَاةَ عَلَيَّ يَوْمَ الْجُمُعَةِ فَإِنَّهُ مَشْهُوْدٌ تَشْهَدُهُ الْمَلَائِکَةُ وَإِنَّ أَحَدًا لَنْ يُصَلِّيَ عَلَيَّ إِلَّا عُرِضَتْ عَلَيَّ صَلَاتُهُ حَتَّي يَفْرُغَ مِنْهَا قَالَ : قُلْتُ : وَبَعْدَ الْمَوْتِ؟ قَالَ : وَبَعْدَ الْمَوْتِ إِنَّ اﷲَ حَرَّمَ عَلَي الْأَرْضِ أَنْ تَأْکُلَ أَجْسَادَ الْأَنْبِيَاءِ فَنَبِيُّ اﷲِ حَيٌّ يُرْزَقُ رَوَاهُ ابْنُ مَاجَه بِإِسْنَادٍ صَحِيْحٍ
অর্থাৎ: হযরত আবূদ্ দারদা (রা:) হতে বর্ণিত; মহানবী (দ:) এরশাদ ফরমান: “শুক্রবার দিন আমার প্রতি অগণিত সালাওয়াত পাঠ করো, কেননা তার সাক্ষ্য বহন করা হবে। ফেরেশতাকুল এর খেদমতে উপস্থিত থাকবেন। কেউ সালাওয়াত পাঠ আরম্ভ করলে তা শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমার কাছে পেশ হতে থাকবে।” আমি (আবূদ্ দারদা) জিজ্ঞেস করলাম তাঁর বেসালপ্রাপ্তির পরও কি তা জারি থাকবে। তিনি জবাবে বল্লেন: “আল্লাহ পাক আম্বিয়া (আ:)-এর মোবারক শরীরকে মাটির জন্যে হারাম করে দিয়েছেন। তাঁরা তাঁদের মাযার-রওযায় জীবিতাস্থায় আছেন এবং সেখানে তাঁরা রিযক-ও পেয়ে থাকেন।”
রেফারেন্স
* হযরত আবূদ্ দারদা (রা:) বর্ণিত ও তিরমিযী শরীফে লিপিবদ্ধ; হাদীস নং ১৩৬৬
* সুনানে ইবনে মাজাহ, ১ম খণ্ড, হাদীস নং ১৬২৬
* আবূ দাউদ শরীফ, ২য় খণ্ড, হাদীস নং ১৫২৬
দলিল নং - ৯
ইমাম যাহাবী বর্ণনা করেন: একবার সমরকন্দ অঞ্চলে খরা দেখা দেয়। মানুষজন যথাসাধ্য চেষ্টা করেন; কেউ কেউ সালাত আল-এস্তেসক্কা (বৃষ্টির জন্যে নামায-দোয়া) পড়েন, কিন্তু তাও বৃষ্টি নামে নি। এমতাবস্থায় সালেহ নামের এক প্রসিদ্ধ নেককার ব্যক্তি শহরের কাজী (বিচারক)-এর কাছে উপস্থিত হন এবং বলেন, আমার মতে আপনার এবং মুসলমান সর্বসাধারণের ইমাম বোখারী (রহ:)-এর মাযার শরীফ যেয়ারত করা উচিত। তাঁর মাযার শরীফ খারতাংক এলাকায় অবস্থিত। ওখানে মাযারের কাছে গিয়ে বৃষ্টি চাইলে আল্লাহ হয়তো বৃষ্টি মঞ্জুর করতেও পারেন। অতঃপর বিচারক ওই পুণ্যবান ব্যক্তির পরামর্শে সায় দেন এবং মানুষজনকে সাথে নিয়ে ইমাম সাহেব (রহ:)-এর মাযারে যান। সেখানে (মাযারে) বিচারক সবাইকে সাথে নিয়ে একটি দোয়া পাঠ করেন; এ সময় মানুষেরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন এবং ইমাম সাহেব (রহ:)-কে দোয়ার মধ্যে অসীলা হিসেবে গ্রহণ করেন। আর অমনি আল্লাহতা’লা মেঘমালা পাঠিয়ে ভারি বর্ষণ অবতীর্ণ করেন। সবাই খারতাঙ্ক এলাকায় ৭ দিন যাবত অবস্থান করেন এবং তাঁদের কেউই সামারকান্দ ফিরে যেতে চাননি। অথচ এই দুটি স্থানের দূরত্ব মাত্র ৩ মাইল। [ইমাম যাহাবী কৃত সিয়্যার আল-আ’লম ওয়ান্ নুবালাহ, ১২তম খণ্ড, ৪৬৯ পৃষ্ঠা]
জ্ঞাতব্য: এটি সমর্থনসূচক দলিল হিসেবে এখানে উদ্ধৃত।
দলিল নং - ১০
ইমাম ইবনুল হাজ্জ্ব (রহ:) বলেন: সালেহীন তথা পুণ্যবানদের মাযার-রওযা হতে বরকত আদায় (আশীর্বাদ লাভ) করার লক্ষ্যে যেয়ারত করতে বলা হয়েছে। কেননা, বুযূর্গদের হায়াতে জিন্দেগীর সময় যে বরকত আদায় করা যেতো, তা তাঁদের বেসালের পরও লাভ করা যায়। উলেমাবৃন্দ ও মোহাক্কিক্কীন (খোদার নৈকট্যপ্রাপ্তজন) এই রীতি অনুসরণ করতেন যে তাঁরা আউলিয়াবৃন্দের মাযার-রওযা যেয়ারত করে তাঁদের শাফায়াত (সুপারিশ) কামনা করতেন......কারো কোনো হাজত ��া প্রয়োজন থাকলে তার উচিত আউলিয়া কেরামের মাযার-রওযা যেয়ারত করে তাঁদেরকে অসীলা করা। আর এ কাজে (বাধা দিতে) এই যুক্তি দেখানো উচিত নয় যে মহানবী (দ:) তিনটি মসজিদ (মসজিদে হারাম, মসজিদে নববী ও মসজিদে আকসা) ছাড়া অন্য কোথাও সফর করতে নিষেধ করেছিলেন। মহান ইমাম আবূ হামীদ আল-গাযযালী (রহ:) নিজ ‘এহইয়া’ পুস্তকের ’আদাব আস্ সফর’ অধ্যায়ে উল্লেখ করেন যে হজ্জ্ব ও জেহাদের মতো এবাদতগুলোর ক্ষেত্রে সফর করা বাধ্যতামূলক। অতঃপর তিনি বলেন, ‘এতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে আম্বিয়া (আ:), সাহাবা-এ-কেরাম (রা:), তাবেঈন (রহ:) ও সকল আউলিয়া ও হক্কানী উলেমাবৃন্দের মাযার-রওযা যেয়ারতের উদ্দেশ্যে সফর। যাঁর কাছে তাঁর যাহেরী জীবদ্দশায় সাহায্য চাওয়া জায়েয ছিল, তাঁর কাছে তাঁর বেসালের পরও (যেয়ারত করে) সাহায্য চাওয়া জায়েয’। [ইমাম ইবনুল হাজ্জ্ব প্রণীত আল-মাদখাল, ১ম খণ্ড, ২১৬ পৃষ্ঠা]
ইমাম আবূ আবদিল্লাহ ইবনিল হাজ্জ্ব আল-মালেকী (রহ:) আউলিয়া ও সালেহীনবৃন্দের মাযার-রওযা যেয়ারত সম্পর্কে একটি সম্পূর্ণ অধ্যায় রচনা করেন। তাতে তিনি লেখেন: মুতা’লিম (শিক্ষার্থী)-দের উচিত আউলিয়া ও সালেহীনবৃন্দের সান্নিধ্যে যাওয়া; কেননা তাঁদের দেখা পাওয়াতে অন্তর জীবন লাভ করে, যেমনিভাবে বৃষ্টি দ্বারা মাটি উর্বর হয়। তাঁদের সন্দর্শন দ্বারা পাষাণ হৃদয়ও নরম বা বিগলিত হয়। কারণ তাঁরা আল্লাহ পাকেরই বরগাহে সর্বদা উপস্থিত থাকেন, যে মহাপ্রভু পরম করুণাময়। তিনি কখনােই তাঁদের এবাদত-বন্দেগী বা নিয়্যতকে প্রত্যাখ্যান করেন না, কিংবা যারা তাঁদের মাহফিলে হাজির হন ও তাঁদেরকে চিনতে পারেন এবং তাঁদেরকে ভালোবোসেন, তাদেরকেও প্রত্যাখ্যান করেন না। এটি এ কারণে যে তাঁরা হলেন আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (দ:)-এর পরে রহমতস্বরূপ, যে রহমত আল্লাহ-ওয়ালাদের জন্যে অবারিত। অতএব, কেউ যদি এই গুণে গুণান্বিত হন, তাহলে সর্বসাধারণের উচিত ত্বরিত তাঁর কাছ থেকে বরকত আদায় করা। কেননা, যারা এই আল্লাহ-ওয়ালাদের দেখা পান, তারা এমন রহমত-বরকত, জ্ঞান-প্রজ্ঞা ও স্মৃতিশক্তি লাভ করেন যা ব্যাখ্যার অতীত। আপনারা দেখবেন ওই একই মা’আনী দ্বারা যে কেউ অনেক মানুষকে জ্ঞান-প্রজ্ঞা ও জযবা (ঐশী ভাব)-এর ক্ষেত্রে পূর্ণতা লাভ করতে দেখতে পাবেন। যে ব্যক্তি এই রহমত-বরকতকে শ্রদ্ধা বা সম্মান করেন, তিনি কখনোই তা থেকে দূরে থাকেন না (মানে বঞ্চিত হন না)। তবে শর্ত হলো এই যে, যাঁর সান্নিধ্য তলব করা হবে, তাঁকে অবশ্যই সুন্নাতের পায়রুবী করতে হবে এবং সুন্নাহ’কে হেফাযত তথা সমুন্নত রাখতে হবে; আর তা নিজের কর্মেও প্রতিফলিত করতে হবে। [ইবনুল হাজ্জ্ব রচিত আল-মাদখাল, ২য় খণ্ড, ১৩৯ পৃষ্ঠা]
দলিল নং - ১১
عَنِ ابْنِ عُمَرَ رضي اﷲ عنهما قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اﷲِ صلي الله عليه وآله وسلم : مَنْ زَارَ قَبْرِي بَعْدً مَوْتِي کَانَ کَمَنْ زَارَنِي فِي حَيَاتِي
অর্থাৎ: হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা:) বর্ণনা করেন যে হুযূর পূর নূর (দ:) এরশাদ ফরমান: “আমার বেসালপ্রাপ্তির পরে যে ব্যক্তি আমার রওযা মোবারক যেয়ারত করে, সে যেন আমার হায়াতে জিন্দেগীর সময়েই আমার দেখা পেল।”
রেফারেন্স
* আত্ তাবারানী, ২য় খণ্ড, হাদীস নং ৪০৬
* ইমাম বায়হাকী প্রণীত শু’য়াবুল ঈমান, ৩য় খণ্ড, হাদীস নং ৪৮৯
জ্ঞাতব্য: এই হাদীসটি হযরত ইবনে উমর (রা:) কর্তৃক বর্ণিত হলেও এর এসনাদে বর্ণনাকারীরা একেবারেই ভিন্ন; আর তাই এ হাদীস হাসান পর্যায়ভুক্ত।
ইমাম ইবনে কুদামা (রহ:) বলেন,
ويستحب زيارة قبر النبي لما روى الدارقطني بإسناد�� عن ابن عمر قال: قال رسول الله : «من حج فزار قبري بعد وفاتي فكأنما زارني في حياتي» وفي رواية، «من زار قبري وجبت له شفاعتي
অর্থাৎ: “মহানবী (দ:)-এর রওযা শরীফের যেয়ারত মোস্তাহাব (প্রশংসনীয়), যা হযরত ইবনে উমর (রা:)-এর সূত্রে আদ্ দারাকুতনী সহীহ সনদে বর্ণনা করেছেন এই মর্মে যে রাসূলুল্লাহ (দ:) এরশাদ করেন, ’যে ব্যক্তি হজ্জ্ব করে, তার উচিত আমার রওযা শরীফ য়েযারত করা; কারণ তা যেন আমার হায়াতে জিন্দেগীর সময়ে আমার-ই দর্শন লাভ হবে।’ তিনি আরেকটি হাদীসে এরশাদ ফরমান, ‘যে কেউ আমার রওযা যেয়ারত করলে তার জন্যে শাফায়াত (সুপারিশ) করা আমার প্রতি ওয়াজিব হয়’।” [ইমাম ইবনে কুদামা কৃত আল-মুগনী, ৫ম খণ্ড, ৩৮১ পৃষ্ঠা]
* ইমাম আল-বাহুতী আল-হাম্বলী (রহ:) নিজ আল-কাশাফ আল-ক্কান্না গ্রন্থের ২য় খণ্ডের ২৯০ পৃষ্ঠায় একই কথা বলেন।
ইমাম কাজী আয়ায (রহ:) তাঁর সুপ্রসিদ্ধ ‘শেফা শরীফ’ পুস্তকের ‘মহানবী (দ:)-এর রওযা মোবারক যেয়ারতের নির্দেশ এবং কারো দ্বারা তা যেয়ারত ও সালাম (সম্ভাষণ) জানানোর ফযীলত’ শীর্ষক অধ্যায়ে বলেন,
في حكم زيارة قبره صلى الله عليه وسلم، وفضيلة من زاره وسلم عليه و زيارة قبره صلى الله عليه وسلم سنة من سنن المسلمين مجمع عليها، وفضيلة مرغب فيها: روى عن ابن عمر
অর্থাৎ: ”এটি জ্ঞাত হওয়া উচিত যে মহানবী (দ:)-এর মোবারক রওযা যেয়ারত করা সকল মুসলমানের জন্যে ‘মাসনূন’ (সর্বজনবিদিত রীতি); আর এ ব্যাপারে উলেমাবৃন্দের এজমা’ হয়েছে। এর এমন-ই ফযীলত যা হযরত ইবনে উমর (রা:)-এর বর্ণিত হাদীস দ্বারা আমাদের জন্যে সাব্যস্ত হয়েছে (অর্থাৎ, ’কেউ আমার রওযা যেয়ারত করলে তার জন্যে আমার শাফায়াত ওয়াজিব হবে’)।” [ইমাম কাজী আয়ায কৃত ’শেফা শরীফ’, ২য় খণ্ড, ৫৩ পৃষ্ঠা]
জ্ঞাতব্য: চার মযহাবের সবগুলোতেই এটি অনুসরণীয়। অতএব, এই রওয়ায়াত দুর্বল মর্মে ওহাবীদের দাবির প্রতি কর্ণপাতের কোনো সুযোগ নেই। এটি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোকপাত করা হয়েছে আমাদের ওয়েবসাইটে।
দলিল নং - ১২
عن عبد الله بن مسعود عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: "إن لله ملائكة سياحين يبلغون عن أمتي السلام". قال: وقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: "حياتي خير لكم تحدثون ويُحدث لكم، ووفاتي خير لكم تعرض علي أعمالكم، فما رأيت من خير حمدت الله عليه وما رأيت من شر استغفرت الله لكم".
অর্থাৎ: হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা:) বর্ণনা করেন রাসূলে খোদা (দ:)-এর হাদীস, যা’তে তিনি এরশাদ ফরমান: “আমার হায়াতে জিন্দেগী (প্রকাশ্য জীবন) তোমাদের জন্যে উপকারী, তোমরা তা বলবে এবং তোমাদেরকেও তা বলা হবে; আমার বেসালপ্রাপ্তিও তোমাদের জন্যে উপকারী, কেননা তোমাদের কর্মগুলো আমার কাছে পেশ করা হবে। নেক-কর্ম দেখলে আমি আল্লাহর প্রশংসা করি, আর বদ আমল দেখলে আমি তোমাদের হয়ে আল্লাহর দরবারে সুপারিশ করি।”
রেফারেন্স
* ইমাম হায়তামী (রহ:) নিজ ‘মজমুয়া’-উয-যাওয়াইদ’ (৯:২৪) পুস্তকে জানান যে হাদীসটি আল-বাযযার তাঁর ’মুসনাদ’ গ্রন্থে বর্ণনা করেন এবং এর সকল ’রাবী’ (বর্ণনাকারী) সহীহ (মানে হাদীসটি সহীহ)।
* এরাকী (সম্ভবতঃ যাইনউদ্দীন) এ হাদীসের বিশুদ্ধতা নিশ্চিত করেছেন তাঁর-ই ‘তারহ-উত-তাতরিব ফী শারহ-ইত-তাক্করিব’ গ্রন্থে (৩:২৯৭)।
* ইবনে সা’আদ নিজস্ব ‘আত-তাবাক্কাত-উল-কুবরা’ পুস্তকে (২:১৯৪) এটি লিপিবদ্ধ করেন।
* ইমাম কাজী আয়ায (রহ:) স্বরচিত ‘শেফা’ গ্রন্থে (১:১৯) এই হাদীসটি উদ্ধৃত করেন।
* ইমাম সৈয়ুতী (রহ:), যিনি এটি নিজ ‘আল-খাসাইস আল-কুবরা’ (২:২৮১) ও ‘মানাহিল-উস- সেফা ফী তাখরিজ-এ-আহাদীসআশ-শেফা’ (পৃষ্ঠা ৩) পুস্তকগুলোতে লিপিবদ্ধ করেন, তিনি বিবৃত করেন যে আবূ উসামাহ নিজ ‘মুসনাদ’ পুস্তকে বকর বিন আব্দিল্লাহ মুযানী (রা:)-এর সূত্রে এবং আল-বাযযার তাঁর ‘মুসনাদ’ বইয়ে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা:)-এর সূত্রে সহীহ সনদে এই হাদীস লিপিবদ্ধ করেন। খাফাযী স্বরচিত ‘নাসিমুর রিয়াদ’ (১:১০২) ও মোল্লা আলী কারী তাঁর ‘শরহে শেফা’(১:৩৬) শিরোনামের ব্যাখ্যাগ্রন্থগুলোতে এটি সমর্থন করেন।
* মোহাদ্দীস ইবনুল জাওযী এটি বকর বিন আব্দিল্লাহ (রা:) ও হযরত আনাস বিন মালেক (রা:)-এর সূত্রে বর্ণনা করেন তাঁর-ই প্রণীত ‘আল-ওয়াফা বি-আহওয়ালিল মোস্তফা’ পুস্তকে (২:৮০৯-১০)। ইমাম তাকিউদ্দীন সুবকী (রহ:) নিজ ‘শেফাউস্ সেকাম ফী যেয়ারাতে খায়রিল আনাম’ (৩৪ পৃষ্ঠা) বইয়ে বকর ইবনে আব্দিল্লাহ মুযানী (রা:) হতে এ হাদীস নকল করেছেন এবং ইবনে আব্দিল হাদী তাঁর ‘আস্ সারিম-উল-মুনকি’ (২৬৬-৭ পৃষ্ঠায়) পুস্তকে এটির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
* আল-বাযযারের বর্ণনাটি ইবনে কাসীরও তার ‘আল-বেদায়া ওয়ান-নেহায়া’ (৪:২৫৭) পুস্তকে লিপিবদ্ধ করে।
* ইমাম ইবনে হাজর আসকালানী (রহ:) নিজ ‘আল-মাতালিব-উল-আলিয়্যাহ’ (৪:২২-৩ #৩৮৫৩) গ্রন্থে এই হাদীসটি বকর ইবনে আব্দিল্লাহ মুযানী (রা:)-এর সূত্রে লিপিবদ্ধ করেন।
* আলাউদ্দীন আলী নিজস্ব ‘কানযুল উম্মাল’ পুস্তকে (১১:৪০৭ #৩১৯০৩) ইবনে সাআদের বর্ণিত হাদীসটি উদ্ধৃত করেন এবং হারিস হতেও একটি রওয়ায়াত উদ্ধৃত করেন (# ৩১৯০৪)।
* ইমাম ইউসূফ নাবহানী (রহ:) স্বরচিত ‘হুজ্জাতুল্লাহ আলাল আ’লামীন ফী মো’জেযাত-এ-সাইয়্যেদিল মুরসালীন’ শীর্ষক পুস্তকে (৭১৩ পৃষ্ঠা) এই হাদীস বর্ণনা করেন।
দলিল নং - ১৩
হযরত নাফে’ (রহ:) বলেন, “আমি হযরত (আবদুল্লাহ) ইবনে উমর (রা:)-কে দেখেছি এক’শ বার বা তারও বেশি সময় মহানবী (দ:)-এর পবিত্র রওযা শরীফ যেয়ারত করেছেন। তিনি সেখানে বলতেন, ‘রাসূলুল্লাহ (দ:)-এর প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক; আল্লাহতা’লা তাঁকে আশীর্বাদধন্য করুন এবং সুখ-শান্তি দিন। হযরত আবূ বকর (রা:)-এর প্রতিও শান্তি বর্ষিত হোক।’ অতঃপর তিনি প্রস্থান করতেন। হযরত ইবনে উমর (রা:)-কে রওযা মোবারক হাতে স্পর্শ করে ওই হাত মুখে (বরকত আদায় তথা আশীর্বাদ লাভের উদ্দেশ্যে) মুছতেও দেখা গিয়েছে।” [ইমাম কাজী আয়ায (রহ:) কৃত ‘শেফা শরীফ’ গ্রন্থের ৯ম অনুচ্ছেদে বর্ণিত]
দলিল নং - ১৪ [হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাযযালী (রহ:)-এর ভাষ্য]
ইমাম গাযযালী (রহ:) বলেন এবং এটি কোনো হাদীস নয়:
وقد ذكره الغزالي ولذا قيل - وليس بحديث كما توهم - إذا تحيرتم في الأمور فاستعينوا من أصحاب القبور أي أصحاب النفوس الفاضلة المتوفين ولا شك في أنه يحصل لزائرهم مدد روحاني ببركتهم وكثيراً ما تنحل عقد الأمور بأنامل التوسل إلى الله تعالى بحرمتهم
অর্থাৎ: “কারো যখন কোনো অসুবিধা (তথা পেরেশানি) হয়, তখন তার উচিত মাযারস্থ আউলিয়াবৃন্দের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা; এঁরা হলেন সে সকল পুণ্যাত্মা যাঁরা দুনিয়া থেকে বেসাল হয়েছেন। এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ-ই নেই, যে ব্যক্তি তাঁদের মাযার যেয়ারত করেন, তিনি তাঁদের কাছ থেকে রূহানী মদদ (আধ্যাত্মিক সাহায্য) লাভ করেন এবং বরকত তথা আশীর্বাদও প্রাপ্ত হন; আর বহুবার আল্লাহর দরবারে তাঁদের অসীলা পেশ হবার দরুন মসিবত বা অসুবিধা দূর হয়েছে।” [তাফসীরে রূহুল মা’আনী, ৩০তম খণ্ড, ২৪ পৃষ্ঠা]
জ্ঞাতব্য: ‘এসতেগাসাহ’ তথা আম্বিয়া (আ:) ও আউলিয়া (রহ:)-এর কাছে সাহায্য প্রার্থনার বিষয়টি সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে আহলুস্ সুন্নাহ’র ওয়েবসাইটের ‘ফেকাহ’ বিভাগে ‘আম্বিয়া (আ:) ও আউলিয়া (রহ:)-এর রূহানী মদদ’ শীর্ষক লেখাটি দেখুন [অনুবাদকের নোট: সময়-সুযোগ মতো বাংলায় অনুবাদ করা হবে, ইনশা’আল্লাহ]।
দলিল নং - ১৫ [ইমাম শাফেঈ (রহ:)]
ইমাম আবূ হানিফা (রহ:)-এর মাযারে নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনাকালে ইমাম শাফেঈ (রহ:) বলেন, “আমি ইমাম আবু হানিফা (রা:) হতে বরকত আদায় করি এবং তাঁর মাযার শরীফ প্রতিদিন যেয়ারত করি। আমি যখন কোনো সমস্যার মুখোমুখি হই, তখন-ই দুই রাকআত নফল নামায পড়ে তাঁর মাযার শরীফ যেয়ারত করি; আর (দাঁড়িয়ে) সমাধানের জন্যে আল্লাহর কাছ�� ফরিয়াদ করি। ওই স্থান ত্যাগ করার আগেই আমার সমস্যা সমাধান হয়ে যায়।”
রেফারেন্স
* খতীব বাগদাদী সহীহ সনদে এই ঘটনা বর্ণনা করেন তাঁর কৃত ‘তারিখে বাগদাদ’ গ্রন্থে (১:১২৩)
* ইবনে হাজর হায়তামী প্রণীত ‘আল-খায়রাত আল-হিসান ফী মানাক্কিবিল ইমাম আল-আ’যম আবূ হানিফা’ (৯৪ পৃষ্ঠা)
* মোহাম্মদ যাহেদ কাওসারী, ‘মাক্কালাত’ (৩৮১ পৃষ্ঠা)
* ইবনে আবেদীন শামী, ‘রাদ্দুল মোহতার আ’লা দুররিল মোখতার’ (১:৪১)
জ্ঞাতব্য: এটি সমর্থনকারী দালিলিক প্রমাণ হিসেবে পেশকৃত এবং এটি একটি ’হুজ্জাহ’, কেননা চার মযহাবের অনেক ফুকাহা একে দলিল হিসেবে গ্রহণ করেছেন।
দলিল নং - ১৬ [শায়খুল ইসলাম হাফেয ইমাম নববী (রহ:)]
ইমাম সাহেব নিজ ’কিতাবুল আযকার’ পুস্তকের ‘মহানবী (দ:)-এর মোবারক রওযা যেয়ারত ও সেখানে পালিত যিকর’ শীর্ষক অধ্যায়ে লেখেন:
اعلم أنه ينبغي لكل من حجّ أن يتوجه إلى زيارة رسول اللّه صلى اللّه عليه وسلم، سواء كان ذلك طريقه أو لم يكن، فإن زيارته صلى اللّه عليه وسلم من أهمّ القربات وأربح المساعي وأفضل الطلبات، فإذا توجَّه للزيارة أكثرَ من الصلاة عليه صلى اللّه عليه وسلم في طريقه، فإذا وقعَ بصرُه على أشجار المدينة وحَرمِها وما يَعرفُ بها زاد من الصلاة والتسليم عليه صلى اللّه عليه وسلم، وسألَ اللّه تعالى أن ينفعَه بزيارته صلى اللّه عليه وسلم، وأن يُسعدَه بها في الدارين، وليقلْ: اللَّهُمَّ افْتَحْ عَليَّ أبْوَابَ رَحْمَتِكَ وَارْزُقْنِي في زِيارَةِ قَبْرِ نَبِيِّكَ صلى اللّه عليه وسلم ما رزقْتَهُ أوْلِياءَكَ وأهْلَ طَاعَتِكَ واغْفِرْ لي وارْحمنِي يا خَيْرَ مَسْؤُول
অর্থাৎ: “এ কথা জ্ঞাত হওয়া উচিত, ’যে কেউ’ হজ্জ্ব পালন করলে তাকে রাসূলুল্লাহ (দ:)-এর রওযা মোবারক যেয়ারত করতে হবে, ’তা তার গন্তব্য পথের ওপর হোক বা না-ই হোক’; কারণ যেয়ারতে রাসূল (দ:) হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবাদতগুলোর অন্যতম, সবচেয়ে পুরস্কৃত আমল, এবং সবচেয়ে ইপ্সিত লক্ষ্য। যেয়ারতের উদ্দেশ্যে কেউ বের হলে পথে বেশি বেশি সালাত ও সালাম পড়া উচিত। আর মদীনা মোনাওয়ারার গাছ, পবিত্র স্থান ও সীমানার চিহ্ন দৃশ্যমান হওয়ামাত্র-ই সালাত-সালাম আরও বেশি বেশি পড়তে হবে তার; অধিকন্তু এই ‘যেয়ারত’ দ্বারা যাতে নিজের উপকার হয়, সে জন্যে আল্লাহর দরবারে তার ফরিয়াদ করাও উচিত; আল্লাহ যেন তাকে এই যেয়ারতের মাধ্যমে ইহ-জাগতিক ও পারলৌকিক কল্যাণ দান করেন, এই কামনা তাকে করতে হবে। তার বলা উচিত, ‘এয়া আল্লাহ! আপনার করুণার দ্বার আমার জন্যে অবারিত করুন, এবং রওযায়ে আকদস যেয়ারতের মাধ্যমে সেই আশীর্বাদ আমায় মঞ্জুর করুন, যেটি আপনি মঞ্জুর করেছেন আপনার-ই বন্ধুদের প্রতি, যাঁরা আপনাকে মানেন। যাঁদের কাছে চাওয়া হয় তাঁদের মধ্যে ওহে সেরা সত্তা, আমায় ক্ষমা করুন এবং আমার প্রতি দয়া করুন।” [ইমাম নববী রচিত ‘কিতাবুল আযকার’, ১৭৮ পৃষ্ঠা]
দলিল নং - ১৭ [ইবনে কাইয়্যেম আল-জাওযিয়্যা]
(ইবনে কাইয়্যেম ‘সালাফী’দের গুরু। সে তার শিক্ষক ইবনে তাইমিয়্যার ধ্যান-ধারণার গোঁড়া সমর্থক, যার দরুন সে তার ইমামের সেরা শিষ্য হিসেবে পরিচিতি লাভ করে)
ইবনে কাইয়্যেম লেখে:
المسألة الأولى وهي هل تعرف الأموات زيارة الأحياء وسلامهم أم لا قال ابن عبد البر ثبت عن النبي أنه قال : ما من مسلم يمر على قبر أخيه كان يعرفه في الدنيا فيسلم عليه إلا رد الله عليه روحه حتى يرد عليه السلام فهذا نص في أنه بعينه ويرد عليه السلام وفي الصحيحين عنه من وجوه متعددة أنه أمر بقتلى بدر فألقوا في قليب ثم جاء حتى وقف عليهم وناداهم بأسمائهم يا فلان ابن فلان ويا فلان ابن فلان هل وجدتم ما وعدكم ربكم حقا فإني وجدت ما وعدني ربى حقا فقال له عمر يا رسول الله ما تخاطب من أقوام قد جيفوا فقال والذي بعثنى بالحق ما أنتم بأسمع لما أقول منهم ولكنهم لا يستطيعون جوابا وثبت عنه صلى الله وآله وسلم أن الميت يسمع قرع نعال المشيعين له إذا انصرفوا عنه وقد شرع النبي لأمته إذا سلموا على أهل القبور أن يسلموا عليهم سلام من يخاطبونه فيقول السلام عليكم دار قوم مؤمنين وهذا خطاب لمن يسمع ويعقل ولولا ذلك لكان هذا الخطاب بمنزلة خطاب المعدوم والجماد والسلف مجمعون على هذا وقد تواترت الآثار عنهم بأن الميت يعرف زيارة الحي له ويستبشر به
অর্থাৎ: “প্রথম অধ্যায় - ইন্তেকালপ্রাপ্ত ব্যক্তিগণ তাঁদের কবর যেয়ারতকারীদেরকে চিনতে পারেন কি-না এবং তাঁদের সালামের উত্তর দিতে পারেন কি-না?
”হযরত ইবনু আবদিল বার (রহ:) থেকে বর্ণিত: নবী করীম (দ:) এরশাদ ফরমান, কোনো মুসলমান যখন তাঁর কোনো পূর্ব-পরিচিত ভাইয়ের কবরের পাশে যান এবং তাঁকে সালাম জানান, তখন আল্লাহতা’লা ওই সালামের জবাব দেয়ার জন্যে মরহুমের রূহকে কবরে ফিরিয়ে দেন এবং তিনি সে সালামের জবাব দেন। এর দ্বারা বোঝা গেল যে ইন্তেকালপ্রাপ্ত ব্যক্তি যেয়ারতকারীকে চিনতে পারেন এবং তাঁর সালামের জবাবও দিয়ে থাকেন।
”বোখারী ও মুসলিম শরীফের বিভিন্ন সূত্রে বর্ণিত আছে, মহানবী (দ:) বদর যুদ্ধে নিহত কাফেরদের লাশ একটি কূপে নিক্ষেপ করার আদেশ দেন। এরপর তিনি সেই কূপের কাছে গিয়ে দাঁড়ান এবং এক এক করে তাদের নাম ধরে সম্বোধন করে বলেন, ‘হে অমুকের পুত্র তমুক, হে অমুকের পুত্র তমুক, তোমরা কি তোমাদের রবের (প্রভুর) প্রতিশ্রুতি সঠিকভাবে পেয়েছো? আমি তো আমার রবের ওয়াদা ঠিকই পেয়েছি।’ তা শুনে হযরত উমর ফারূক (রা:) বল্লেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল (দ:), আপনি কি এমন লোকদেরকে সম্বোধন করছেন যারা লাশে পরিণত হয়েছে?’ হুযূর পাক (দ:) বল্লেন, ‘যিনি আমাকে সত্যসহ পাঠিয়েছেন তাঁর শপথ, আমার কথাগুলো তারা তোমাদের চেয়েও অধিকতর স্পষ্টভাবে শুনতে পেয়েছে; কিন্তু তারা এর উত্তর দিতে অক্ষম।’ প্রিয়নবী (দ:) থেকে আরও বর্ণিত আছে, কোনো ইন্তেকালপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে দাফন করার পর লোকেরা যখন ফিরে আসতে থাকে, তখন সেই ইন্তেকালপ্রাপ্তব্যক্তি তাদের জুতোর শব্দ পর্যন্ত শুনতে পান। (আল-ফাতহুল কবীর, ১ম খণ্ড, ১৬৯ পৃষ্ঠা)
”এছাড়া রাসূলে মকবূল (দ:) তাঁর উম্মতদেরকে এ শিক্ষাও দিয়েছেন, যখন তাঁরা কবরবাসীকে সালাম দেবেন, তখন যেন সামনে উপস্থিত মানুষদেরকে যেভাবে সালাম দেন, ঠিক সেভাবে সালাম দেবেন। তাঁরা যেন বলেন, ‘আস্ সালামু আলাইকুম দারা কাওমিম্ মু’মিনীন।’ অর্থাৎ, ‘হে কবরবাসী মু’মিনবৃন্দ, আপনাদের প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক।’ এ ধরনের সম্বোধন তাদেরকেই করা হয় যারা শুনতে পান এবং বুঝতেও পারেন। নতুবা কবরবাসীকে এভাবে সম্বোধন করা হবে জড় পদার্থকে সম্বোধন করার-ই শামিল। [ইবনে কাইয়্যেম কৃত ’কিতাবুর রূহ’ - রূহের র��স্য, ৭-৮ পৃষ্ঠা, বাংলা সংস্করণ ১৯৯৮ খৃষ্টাব্দ, অনুবাদক - মওলানা লোকমান আহমদ আমীমী]
ইবনে কাইয়্যেম আরও লেখে:
حدثني محمد بن الحسين حدثنى يحيى بن أبى بكير حدثنى الفضل بن موفق ابن خال سفيان بن عيينة قال لما مات أبى جزعت عليه جزعا شديدا فكنت آتى قبره في كل يوم ثم قصرت عن ذلك ما شاء الله ثم انى اتيته يوما فبينا أنا جالس عند القبر غلبتنى عيناى فنمت فرأيت كأن قبر ابى قد انفرج وكأنه قاعد في قبره متوحشا أكفانه عليه سحنة الموتى قال فكأني بكيت لما رأيته قال يا بنى ما أبطأ بك عني قلت وإنك لتعلم بمجيئي قال ما جئت مرة إلا علمتها وقد كنت تأتينى فآنس بك وأسر بك ويسر من حولى بدعائك قال فكنت آتية بعد ذلك كثيرا
অর্থাৎ: ”হযরত ফযল (রা:) ছিলেন হযরত ইবনে উবায়না (রা:)-এর মামাতো ভাই। তিনি বর্ণনা করেন, যখন আমার পিতার ইন্তেকাল হলো, তখন আমি তাঁর সম্পর্কে খুবই ভীত-সন্ত্রস্ত ও চিন্তিত হয়ে পড়লাম। আমি প্রত্যহ তাঁর কবর যেয়ারত করতাম। ঘটনাক্রমে আমি কিছুদিন তাঁর কবর যেয়ারত করতে যেতে পারিনি। পরে একদিন আমি তাঁর কবরের কাছে এসে বসলাম এবং ঘুমিয়ে পড়লাম। ঘুমের মধ্যে আমি দেখলাম, আমার পিতার কবরটি যেন হঠাৎ ফেটে গেলো। তিনি কবরের মধ্যে কাফনে আবৃত অবস্থায় বসে আছেন। তাঁকে দেখতে মৃতদের মতোই মনে হচ্ছিলো। এ দৃশ্য দেখে আমি কাঁদতে লাগলাম। তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, প্রিয় বৎস, তুমি এতোদিন পরে এলে কেন? আমি বল্লাম, বাবা, আমার আসার খবর কি আপনি জানতে পারেন? তিনি বল্লেন, তুমি যখন-ই এখানে আসো, তোমার খবর আমি পেয়ে যাই। তোমার যেয়ারত ও দোয়ার বরকতে আমি শুধু উপকৃত হই না, আমার আশপাশে যাঁরা সমাহিত, তাঁরাও উল্লসিত, আনন্দিত এবং উপকৃত হন। এ স্বপ্ন দেখার পর আমি সব সময় আমার পিতার কবর যেয়ারত করতে থাকি।” [ প্রাগুক্ত, ৯-১০ পৃষ্ঠা]
জরুরি জ্ঞাতব্য: এখানে ইবনে কাইয়্যেম স্বয়ং একটি সন্দেহের অপনোদন করেছে এ মর্মে যে স্বপ্ন কীভাবে কোনো কিছুর প্রমাণ হতে পারে, যে প্রশ্নটি কারো ভাবনায় উদিত হওয়া সম্ভব। সে বলে, স্বপ্ন কোনো দালিলিক প্রমাণ না হলেও এর বিবরণ এতো অধিক পরিমাণে এসেছে, আর তাও আবার সত্যনিষ্ঠ ও ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তিদের কাছ থেকে এগুলো বর্ণিত হওয়ায় এগুলোকে তাঁদের (জাগ্রত অবস্থায়) কথপোকথনের সমকক্ষ বিবেচনা করতে হবে। কেননা, তাঁদের দৃষ্টিতে যা মহান, তা আল্লাহর দৃষ্টিতেও উত্তম। এ ছাড়া সুস্পষ্ট প্রামাণ্য দলিল দ্বারাও এই বিষয়টি সপ্রমাণিত। [কিতাবুর রূহ]
ইবনে কাইয়্যেম আরও লেখে:
أيضا ما جرى عليه عمل الناس قديما وإلى الآن من تلقين الميت في قبره ولولا أنه يسمع ذلك وينتفع به لم يكن فيه فائدة وكان عبثا وقد سئل عنه الإمام أحمد رحمه الله فاستحسنه واحتج عليه بالعمل ويروى فيه حديث ضعيف ذكره الطبرانى في معجمه من حديث أبى أمامة قال قال رسول الله إذا مات أحدكم فسويتم عليه التراب فليقم أحدكم على رأس قبره ثم يقول يا فلان ابن فلانة فإنه يسمع ولايجيب ثم ليقل يا فلان ابن فلانة الثانية فإنه يستوي قاعدا ثم ليقل يا فلان ابن فلانة يقول أرشدنا رحمك الله ولكنكم لاتسمعون فيقول أذكر ما خرجت عليه من الدنيا شهادة أن لا إله إلا الله وان محمد رسول الله وأنك رضيت بالله ربا وبالإسلام دينا وبمحمد نبيا وبالقرآن إماما فان منكرا ونكيرا يتأخر كل واحد منهما ويقول انطلق بنا ما يقعدنا عند هذا وقد لقن حجته ويكون الله ورسوله حجيجه دونهما
অর্থাৎ: ”অতীতকাল থেকে ইন্তেকালপ্রাপ্ত ব্যক্তিদেরকে কবরে তালকীন করার নিয়ম চলে আসছে। অর্থাৎ,কলেমা-এ-তাইয়্যেবাহ তাঁদেরকে পড়ে শোনানো হয়ে থাকে। ইন্তেকালপ্রাপ্ত ব্যক্তিবৃন্দ যে ইন্তেকালের পরে শুনতে পান, তালকীনের মাধ্যমেও তা প্রমাণিত হয়। এছাড়া তালকীনের দ্বারা ইন্তেকালপ্রাপ্ত ব্যক্তিবৃন্দ উপকৃত হন; তা না হলে তালকীন করার কোনো অর্থ-ই হয় না।
”উক্ত (তালকীনের) বিষয়ে ইমাম আহমদ হাম্বল (রহ:)-কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি এই অভিমত ব্যক্ত করেন যে ইন্তেকালপ্রাপ্ত ব্যক্তিদেরকে তালকীন করা একটি নেক কাজ; মানুষের আ’মল থেকে তা প্রমাণিত হয়। তালকীন সম্পর্কে মু’জাম তাবরানী গ্রন্থের মধ্যে হযরত আবূ উমামা (রা:) থেকে বর্ণিত একটি দুর্বল হাদীসও রয়েছে। হাদীসটি হলো, নূরনবী (দ:) এরশাদ ফরমান: ‘কোনো ইন্তেকালপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে কবরে মাটি দেয়ার পর তোমাদের একজন তাঁর শিয়রের দিকে দাঁড়িয়ে তাঁর নাম ও তাঁর মায়ের নাম ধরে ডাক দেবে। কেননা, ইন্তেকালপ্রাপ্ত ব্যক্তি তা শুনতে পান, কিন্তু উত্তর দিতে পারেন না। দ্বিতীয়বার তাঁর নাম ধরে ডাক দিলে তিনি উঠে বসেন। আর তৃতীয়বার ডাক দিলে তিনি উত্তর দেন, কিন্তু তোমরা তা শুনতে পাও না। তোমরা তালকীনের মাধ্যমে বলবে, আল্লাহ পাক আপনার প্রতি রহম করুন, আমাদের তালকীনের দ্বারা আপনি উপকৃত হোন। তারপর বলবে, আপনি তাওহীদ ও রেসালাতের যে স্বীকৃতি দিয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন, তা স্মরণ করুন। অর্থাৎ, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ বাক্যটি পাঠ করুন ও তা স্মরণ রাখুন। আল্লাহ রাব্বুল আ’লামীন, দ্বীনে ইসলাম, হযরত মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের নবুয়্যত এবং কুরআন মজীদ যে আমাদের পথপ্রদর্শনকারী, এ সব বিষয়ে যে আপনি রাজি ছিলেন, তাও স্মরণ করুন।’ এই তালকীন শুনে মুনকার-নকীর ফেরেশতা দু’জন সেখান থেকে সরে যান এবং বলেন, চলো, আমরা ফিরে যাই; এর কাছে থাকার আমাদের আর কোনো প্রয়োজন নেই। এ ব্যক্তিকে তাঁর ঈমান ও আকীদা-বিশ্বাস সম্পর্কে সব কিছুই স্মরণ কয়ে দেয়া হয়েছে। আর তাই তিনি তালকীনের মাধ্যমে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (দ:) সম্পর্কে অবহিত হয়েছেন।” [প্রাগুক্ত, ২০ পৃষ্ঠা, বাংলা সংস্করণ]
দলিল নং - ১৮
হযরত সাঈদ ইবনে মুসাইয়াব (রা:) বলেন,
أخبرنا مروانُ بنُ محمدٍ عن سعيدِ بن عبدِالعزيزِ ،، قال: لما كانَ أيام الحرةِ، لم يؤدَّنْ في مسجدِ النبيِّ صلى الله عليه وسلّم ثلاثاً ولم يُقَمْ ولم يبرحْ سعيدُ بن المسيِّبِ من المسجِدِ، وكان لا يعرفُ وقتَ الصلاةِ إلاَّ بهمهمةٍ يَسْمَعُها من قبرِ النبيِّ صلى الله عليه وسلّم فذكَرَ معناه
অর্থাৎ: “মসজিদে নববী শরীফে যেদিন (অর্থাৎ, ’হাররা’র ঘটনার দিন; ৬১ হিজরীর ওই দিনে এয়াজীদী বাহিনী মদীনাবাসীর ওপর অত্যাচার-নিপীড়ন চালিয়েছিল) আযান দেয়া যায়নি এবং নামায পড়া যায়নি, সেদিন ’আল-হুজরাত আন্ নববীয়্যা’ (রওযা শরীফ) হতে আযান ও একামত পাঠ করতে শোনা গিয়েছিল।”
রেফারেন্স
ইবনে তাইমিয়া (মৃত্যু: ৭২৮ হিজরী/১৩২৮ খৃষ্টাব্দ)-ও নিজ ‘একতেদা’ আস্ সিরাতিল্ মুসতাকিম’ পুস্তকে এ ঘটনা বর্ণনা করেছে।
দলিল নং - ১৯
ইবনে কাইয়্যেম আল-জাওযিয়্যা নিজ ‘কিতাবুর রূহ’ পুস্তকে ইবনে আবিদ্ দুনইয়া (রহ:)-এর সূত্রে সাদাকাহ ইবনে সুলাইমান (রা:)-এর কথা উদ্ধৃত করে, যিনি বর্ণনা করেন: একবার তিনি (সাদাকাহ) একটি কুৎসিত চারিত্রিক দোষে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ইতোমধ্যে তাঁর পিতা ইন্তেকাল করেন। পিতার ইন্তেকালের পরে তিনি তাঁর কৃতকর্মের জন্যে লজ্জিত হন। অতঃপর তিনি তাঁর পিতাকে স্বপ্নে দেখেন। তাঁর পিতা বলেন, প্রিয় পুত্র, আমি তোমার নেক আমলের কারণে কবরে শান্তিতে ছিলাম। তোমার নেক আমল আমাদেরকে দেখানো হয়। কিন্তু সম্প্রতি তুমি যা করেছ, তা আমাকে আমার ইন্তেকালপ্রাপ্ত সঙ্গিদের কাছে অত্যন্ত শরমিন্দা (লজ্জিত) করেছে। আমাকে আর তুমি আমার ইন্তেকালপ্রাপ্ত সঙ্গিদের সামনে লজ্জিত করো না। [কিতাবুর রূহ, বাংলা সংস্করণ, ১১ পৃষ্ঠা, ১৯৯৮]
দলিল নং - ২০
ইবরাহিম ইবনে শায়বান বলেন: আমি কোনো এক বছর হজ্জ্বে গেলে মদীনা মোনাওয়ারায় মহানবী (দ:)-এর রওযা শরীফেও যেয়ারত উদ্দেশ্যে যাই। তাঁকে সালাম জানানোর পরে ’হুজরাহ আস্ সাআদা’র ভেতর থেকে জবাব শুনতে পাই: ‘ওয়া আলাইকুম আস্ সালাম’।
এই বর্ণনা লিপিবদ্ধ করেছেন মোহাম্মদ ইবনে হিব্বান (রহ:)-এর সূত্রে আবূ নু’য়াইম তাঁর কৃত ‘আত্ তারগিব’ (# ১০২) পুস্তকে; ইবনে আন্ নাজ্জার নিজ ‘আখবার আল-মদীনা’ গ্রন্থে (১৪৬ পৃষ্ঠা)। ইবনে জাওযী স্বরচিত ‘মুতির আল-গারাম’ বইয়ে (৪৮৬-৪৯৮ পৃষ্ঠা) এটি উদ্ধৃত করেন; আল-ফায়রোযাবাদী এ রওয়ায়াত তার ‘আল-সিলাত ওয়াল্ বুশর’ পুস্তকে (৫৪ পৃষ্ঠা) এবং ইবনে তাইমিয়া নিজ ‘এয়াতেদা’ আল-সীরাত আল-মুস্তাকীম’ গ্রন্থে (পৃষ্ঠা ৩৭৩-৩৭৪) এই বর্ণনা লিপিবদ্ধ করে।
দলিল নং - ২১
ইবনে তাইমিয়াকে জিজ্ঞেস করা হয় ইন্তেকালপ্রাপ্ত মুসলমানবৃন্দ তাঁদের যেয়ারতকারীদেরকে চিনতে পারেন কি-না। সে জবাবে বলে: “যেয়ারতকারীদেরকে যে ��ন্তেকালপ্রাপ্ত মুসলমানবৃন্দ চিনতে পারেন, এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ-ই নেই।” তার কথার সমর্থনে সে নিম্নের হাদীসটি পেশ করে, “ইন্তেকালপ্রাপ্তদের সচেতনতার পক্ষে প্রামাণিক দলিল হচ্ছে বোখারী ও মুসলিম শরীফে বর্ণিত একখানা হাদীস, যা’তে রাসূলুল্লাহ (দ:) এরশাদ করেন যে কোনো ইন্তেকালপ্রাপ্ত মুসলমানকে দাফনের পরে ঘরে প্রত্যাবর্তনকারী মানুষের পায়ের জুতোর শব্দ ইন্তেকালপ্রাপ্ত ব্যক্তি শুনতে পান।” [ইবনে তাইমিয়ার ‘মজমুয়া’ আল-ফাতাওয়া’, ২৪তম খণ্ড, ৩৬২ পৃষ্ঠা]
দলিল নং - ২২ [ইবনুল জাওযী]
ইবনুল জাওযী এ বিষয়ে একখানা বই লেখেন, যেখানে তিনি আউলিয়া কেরাম (রহ:)-এর জীবনীর বিস্তারিত বিবরণ দেন। তিনি লেখেন:
হযরত মা’রূফ কারখী (বেসাল: ২০০ হিজরী): ”তাঁর মাযার শরীফ বাগদাদে অবস্থিত; আর তা থেকে মানুষেরা বরকত আদায় করেন। ইমাম আহমদ বিন হাম্বল (রহ:)-এর সাথী হাফেয ইবরাহীম আল-হারবী (বেসাল: ২৮৫ হিজরী) বলতেন, হযরত মা’রূফ কারখী (রহ:)-এর মাযার শরীফ হচ্ছে পরীক্ষিত আরোগ্যস্থল” (২:২১৪)। ইবনে জাওযী আরও বলেন, “আমরা নিজেরাই ইবরাহ��ম আল-হারবী (রহ:)-এর মাযার যেয়ারত করে তা থেকে বরকত আদায় করে থাকি।” [২:৪১০]
হাফেয যাহাবীও হযরত ইবরাহীম আল-হারবী (রহ:)-এর উপরোক্ত কথা (হযরত মা’রূফ কারখী (রহ:)-এর মাযার শরীফ হচ্ছে পরীক্ষিত আরোগ্যস্থল) বর্ণনা করেন। [‘সিয়্যার আ’লম আল-নুবালা’, ৯:৩৪৩]
ইবনে আল-জাওযী নিজ ‘মুতির আল-গারাম আস্ সাকিন ইলা আশরাফ আল-আমাকিন’ গ্রন্থে লেখেন:
মহানবী (দ:)-এর রওযা মোবারক যেয়ারত অধ্যায়
রাসূলুল্লাহ (দ:)-এর রওযা মোবারক যেয়ারতকারীর উচিত যথাসাধ্য শ্রদ্ধাসহ সেখানে দাঁড়ানো, এমনভাবে যেন তিনি হুযূর পাক (দ:)-এর হায়াতে তাইয়েবার সময়েই তাঁর সাক্ষাৎ লাভ করছেন। হযরত ইবনে উমর (রা:) বর্ণনা করেন মহানবী (দ:)-এর বাণী, যিনি এরশাদ ফরমান: “যে ব্যক্তি হজ্জ্ব সম্পন্ন করে আমার বেসালের পরে আমার-ই রওযা মোবারক যেয়ারত করলো, সে যেন আমার যাহেরী জিন্দেগীর সময়েই আমার সাক্ষাৎ পেলো।” হযরত ইবনে উমর (রা:) আরও বর্ণনা করেন নবী করীম (দ:)-এর হাদীস, যিনি এরশাদ ফরমান: “যে ব্যক্তি আমার রওযা পাক যেয়ারত করে, সে আমার শাফায়াত পাওয়ার যোগ্য হয়।” হযরত আনাস (রা:) মহানবী (দ:)-এর হাদীস বর্ণনা করেন, যিনি এরশাদ ফরমান: “যে ব্যক্তি একমাত্র আমার যেয়ারতের উদ্দেশ্যেই (’মোহতাসিবান’) মদীনায় আমার (রওযা) যেয়ারত করতে আসে, শেষ বিচার দিবসে আমি-ই তার পক্ষে সাক্ষী ও সুপারিশকারী হবো।”
হাফেয ইবনে জাওযী কৃত ‘কিতাব আল-ওয়াফা’
আবূ বকর মিনকারী বলেন: আমি কিছুটুকু পেরেশানি অবস্থায় হাফেয আত্ তাবারানী ও আবূল শায়খের সাথে মসজিদে নববীর ভেতরে অবস্থান করছিলাম। ওই সময় আমরা ভীষণ অভুক্ত ছিলাম। ওই দিন এবং ওর আগের দিন কিছুই আমরা খাইনি। এশা’র নামাযের সময় হলে আমি রাসূলে খোদা (দ:)-এর রওযা পাকের সামনে অগ্রসর হই এবং আরয করি, ‘এয়া রাসূলাল্লাহ (দ:)! আমরা ক্ষুধার্ত, আমরা ক্ষুধার্ত (এয়া রাসূলাল্লাহ আল-জু’ আল-জু’)!’ অতঃপর আমি সরে আসি। আবূ শায়খ আমাকে বলেন, ’বসুন। হয় আমাদের জন্যে খাবারের ব্যবস্থা হবে, নয়তো এখানেই মারা যাবো।’ এমতাবস্থায় আমি ঘুমিয়ে পড়ি এবং আবূ আল-শায়খও ঘুমিয়ে পড়েন। আত্ তাবারানী জেগে থেকে কিছু একটি নিয়ে অধ্যয়ন করছিলেন। ওই সময় এক আলাউইয়ী (হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু’র বংশধর) দরজায় এসে উপস্থিত; তাঁর সাথে ছিল দুইজন বালক, যাদের প্রত্যেকের হাতে ছিল খাবারভর্তি একখানা তাল-পাতার ঝুড়ি। আমরা উঠে বসে খাবার গ্রহণ আরম্ভ করলাম। আমরা মনে করেছিলাম, বাচ্চা দু’জন অবশিষ্ট খাবার ফেরত নিয়ে যাবে। কিন্তু তারা সবই রেখে যায়। আমাদের খাওয়া শেষ হলে ওই আলাউইয়ী বলেন, ‘ওহে মানব সকল, আপনারা কি রাসূলুল্রাহ (দ:)-এর কাছে আরয করেছিলেন? আমি তাঁকে স্বপ্নে দেখি, আর তিনি আমাকে আপনাদের জন্যে খাবার নিয়ে আসতে বলেন। [হাফেয ইবনে জাওযী, ‘কিতাব আল-ওয়াফা, ৮১৮ পৃষ্ঠা; # ১৫৩৬]
জ্ঞাতব্য: ইবনে জাওযী ছিলেন ’আল-জারহ ওয়াত্ তা’দীল’-এর কঠোর মনোভাবসম্পন্ন আলেমদের অন্যতম; আর তিনি এই বইয়ের প্রারম্ভেই উল্লেখ করেন যে তিনি বিশুদ্ধ রওয়ায়াতের সাথে মিথ্যে বিবরণগুলোর সংমিশ্রণ করেননি। (মানে তিনি শুধু বিশুদ্ধ বর্ণনাসম্বলিত ’সীরাহ’-বিষয়ক এ বইটি লিখেছেন; এতে সন্নিবেশিত হাদীসগুলো সহীহ বা হাসান পর্যায়ভুক্ত, যা সনদ কিংবা শওয়াহিদ (সাক্ষ্য)-সূত্রে ওই পর্যায়ে পৌঁছেছে)।
দলিল নং - ২৩ [ইমাম জালালউদ্দীন সৈয়ুতী (রহ:)]
ইমাম ইবনে আল-মোবারক নিজ ‘আয্ যুহদ’ পুস্তকে, হাকীম তিরমিযী তাঁর ‘নওয়াদিরুল উসূল’ গ্রন্থে, ইবনে আবিদ্ দুনইয়া ও ইবনে মুনদাহ বর্ণনা করেন সাঈদ ইবনে মুসাইয়াব (রহ:) থেকে; তিনি হযরত সালমান ফারিসী (রা:) হতে, যিনি বলেন: ”মো’মেনীনবৃন্দের রূহ (আত্মা)-সমূহ এ পৃথিবীর ’বরযখে’ অবস্থান করেন এবং তাঁরা যেখানে ইচ্ছে যেতে পারেন; পক্ষান্তরে ’কুফফার’দের আত্মাগুলো ’সিজ্জিনে’ অবস্থিত....।”
হাকীম তিরমিযী আরও অনুরূপ রওয়ায়াতসমূহ হযরত সালমান ফারিসী (রা:) থেকে বর্ণনা করেন। ইবনে আবিদ্ দুনইয়া হযরত মালেক ইবনে আনাস (ইমাম মালেক) থেকে বর্ণনা করেন; তিনি বলেন: “এই রওয়ায়াত আমার কাছে এসেছে এভাবে যে মো’মেনীনবৃন্দের আত্মাসমূহ মুক্ত এবং তাঁরা যেখানে চান যেতে পারেন।” [ইমাম সৈয়ুতী রচিত ‘শরহে সুদূর’, ১৬৭ পৃষ্ঠা]
অধিকন্তু, ইবনে কাইয়্যেম জাওযিয়্যা-ও নিজ ‘কিতাবুর রূহ’ বইয়ে এ বিষয়টি সপ্রমাণ করেছে [২৪৪ পৃষ্ঠা, দার-এ-ইবনে-কাসীর, দামেশ্ক, সিরিয়া হতে প্রকাশিত]
দলিল নং - ২৪ [হযরত আবূ আউয়ুব আনসারী (রা:)-এর মাযার শরীফ]
হযরত আবূ আইয়ুব আনসারী (রহ:) মহান সাহাবীদের একজন। তিনি কনস্টিনটিনোপোল-এর যুদ্ধে অংশ নেন। শত্রু সীমানায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এই অসুখ বেড়ে গেলে তিনি অসিয়ত (উইল) করেন, “আমার বেসালের পরে তোমরা আমার মরদেহ সাথে নিয়ে যাবে, আর শত্রুর মোকাবেলা করতে যখন তোমরা সারিবদ্ধ হবে, তখন তোমাদের কদমের কাছে আমাকে দাফন করবে।”
* ইবনে আব্দিল বারর, ‘আল-এসতেয়াব ফী মা’রিফাত-ইল-আসহাব’ (১:৪০৪-৫)
অতঃপর ইসলামের সৈনিকবৃন্দ তাঁর অসিয়ত অনুসারে তাঁকে দুর্গের দ্বারপ্রান্তে দাফন করেন এবং শত্রুদের সতর্ক করেন যেন তারা তাঁর মাযারের প্রতি অসম্মান না করে; তা করলে ইসলামী রাজ্যের কোথাও তাদের উপাসনালয়গওলো নিরাপদ থাকবে না। ফলে এমন কি শত্রুরাও তাঁর মাযারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে বাধ্য হয়েছিল। আর মানুষেরাও সত্বর তাঁর মাযার থেকে প্রবাহিত খোদায়ী করুণাধারা সম্পর্কে জানতে পেরেছিলেন। তাঁরা মাযারে এসে যা-ই প্রার্থনা করতেন, তা-ই তৎক্ষণাৎ মঞ্জুর হয়ে যেতো।
”আর হযরত আবূ আইয়ুব (রা:)-এর মাযার কেল্লার কাছে অবস্থিত এবং তা সবাই জানেন....যখন মানুষেরা বৃষ্টির জন্যে প্রার্থনা জানায়, বৃষ্টিপাত আরম্ভ হয়।”
* ইবনে আব্দিল বারর, প্রাগুক্ত ‘আল-এস্তেয়াব ফী মা’রিফাত-ইল-আসহাব’ (১:৪০৫)
মুজাহিদ বলেন, “দুর্ভিক্ষ দেখা দিলে মানুষেরা মাযারের ছাদ খুলে দেন, আর বৃষ্টি নামে।”
দলিল নং - ২৫ [ইমাম বায়হাকী]
[হাদীস নং ৩৮৭৯] আবূ এসহাক আল-কারশী (রা:) বর্ণনা করেন, মদীনা মোনাওয়ারায় আমাদের সাথে এক ব্যক্তি ছিলেন, যিনি যখন-ই এমন কোনো খারাপ কাজ সংঘটিত হতে দেখতেন যাকে তিনি বাধা দিতে অক্ষম, তৎক্ষণাৎ তিনি মহানবী (দ:)-এর মোবারক রওযায় যেতেন এবং আরয করতেন, ‘হে মাযারের অধিবাসীবৃন্দ (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম এবং শায়খাইন রাদিয়াল্লাহু আনহুমা) এবং আমাদের সাহায্যকারীমণ্ডলী! আমাদের অবস্থার দিকে কৃপাদৃষ্টি করুন।’ .... [হাদীস নং ৩৮৮০] আবূ হারব হেলালী (রা:) বর্ণনা করেন যে এক আরবী ব্যক্তি হজ্জ্ব সম্পন্ন করে মসজিদে নববীর দরজায় আসেন। তিনি সেখানে তাঁর উট বেঁধে মসজিদে প্রবেশ করেন এবং রাসূলুল্লাহ (দ:)-এর পবিত্র রওযার সামনে চলে আসেন। তিনি হুযূর পূর নূর (দ:)-এর কদম মোবারকের কাছে দাঁড়িয়ে আরয করেন: ‘এয়া রাসূলাল্লাহ (দ:), আপনার প্রতি সালাম।’ অতঃপর তিনি হযরত আবূ বকর (রা:) ও হযরত উমর (রা:)-এর প্রতিও সালাম-সম্ভাষণ জানান। এরপর তিনি আবার বিশ্বনবী (দ:)-এর দিকে ফিরে আরয করেন: ”এয়া রাসূলাল্লাহ (দ:)! আপনার জন্যে আমার পিতা ও মাতা কোরবান হোন। আমি আপনার দরবারে এসেছি, কারণ আমি পাপকর্ম ও ভুলত্রুটিতে নিমজ্জিত, আর এমতাবস্থায় আপনাকে আল্লাহর কাছে যেন অসীলা করতে পারি এবং আপনিও আমার পক্ষে শাফায়াত করতে পারেন। কেননা, আল্লাহতা’লা এরশাদ ফরমান: ’এবং আমি কোনো রাসূল প্রেরণ করিনি কিন্তু এ জন্যে যে আল্লাহর নির্দেশে তাঁর আনুগত্য করা হবে; আর যদি কখনো তারা (মো’মেনীন) নিজেদের আত্মার প্রতি যুলুম করে, তখন হে মাহবুব, আপনার দরবারে হাজির হয়, অতঃপর আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে, আর রাসূল (দ:)-ও তাদের পক্ষে সুপারিশ করেন, তবে অবশ্যই তারা আল্লাহকে অত্যন্ত তওবা কবুলকারী, দয়ালু পাবে’ [আল-কুরআন, ৪:৬৪; মুফতী আহমদ এয়ার খান কৃত ‘নূরুল এরফান’ বাংলা সংস্করণ]।” অতঃপর ওই ব্যক্তি সাহাবী (রা:)-দের এক বড় দলের দিকে মুখ ফিরিয়ে বলতে থাকেন, ’ওহে সেরা ব্যক্তিবৃন্দ যাঁরা (মাটির) গভীরে শায়িত’; ‘যাঁদের সুগন্ধিতে মাটির অ��্যন্তরভাগ ও বহির্ভাগ মিষ্ট স্বাদ পরিগ্রহ করেছে’; ’আপনি যে মাযারে শায়িত তার জন্যে আমার জান কোরবান’; ‘আর যে মাযার-রওযায় পবিত্রতা, রহমত-বরকত ও অপরিমিত দানশীলতা পাওয়া যায়।’ [‘শুয়াবুল ঈমান, ৬ষ্ঠ খণ্ড, ৬০ পৃষ্ঠা, হাদীস নং ৩৮৭৯-৮০; আরবী উদ্ধৃতি পিডিএফ আকারে ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে ইনশা’আল্লাহ]
দলিল নং - ২৬ [হাফেয ইবনে হিব্বান (রহ:)]
ইমাম ইবনে হিব্বান (রহ:) নিজের অভিজ্ঞতা বর্ণনাকালে আল-রেযা (রহ:)-এর মাযারে তাঁর তাওয়াসসুলের বিবরণ লিপিবদ্ধ করেন এবং বলেন,
…” (مات على بن موسى الرضا بطوس من شربة سقاه إياها المأمون فمات من ساعته وذلك في يوم السبت آخر يوم سنة ثلاث ومائتين وقبره بسناباذ خارج النوقان مشهور يزار بجنب قبر الرشيد، قد زرته مرارا كثيرة وما حلت بي شدة في وقت مقامى بطوس فزرت قبر على بن موسى الرضا صلوات الله على جده وعليه ودعوت الله إزالتها عنى إلا أستجيب لي وزالت عنى تلك الشدة وهذا شيء جربته مرارا فوجدته كذلك أماتنا الله على محبة المصطفى وأهل بيته صلى الله عليه وعليهم أجمعين)
অর্থাৎঃ “তুস্ নগরীতে অবস্থান করার সময় যখনই আমি কোনো সমস্যা দ্বারা পেরেশানগ্রস্ত হয়েছি, তৎক্ষণাৎ আমি হযরত আলী ইবনে মূসা রেযা (তাঁর নানা তথা হুযূর পাক ও তাঁর প্রতি আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক)-এর মাযার শরীফ যেয়ারত করতাম এবং আল্লাহর কাছে সমাধান চাইতাম। এতে আমার দোয়া কবুল হতো এবং পেরেশানিও দূর হতো। আমি এটি-ই করতাম এবং বহুবার এর সুফল পেয়েছি।” [ইবনে হিব্বান প্রণীত ‘কিতাবুস্ সিকাত’, ৮ম খণ্ড, ৪৫৬-৭ পৃষ্ঠা, # ১৪৪১১]
দলিল নং - ২৭
ইমাম আবূ হানিফা (রহ:) বর্ণনা করেন ইমাম নাফে’ (রহ:) হতে, তিনি হযরত ইবনে উমর (রা:) হতে; তিনি বলেন: “কেবলার দিক থেকে আসার সময় মহানবী (দ:)-এর রওযা-এ-আকদস যেয়ারতের সঠিক পন্থা হলো রওযার দিকে মুখ করে এবং কেবলার দিকে পিঠ দিয়ে দাঁড়াতে হবে; অতঃপর সালাম-সম্ভাষণ জানাতে হবে এই বলে - ‘হে আল্লাহর রাসূল এবং তাঁর-ই রহমত ও বরকত (দ:), আপনার প্রতি সালাম’।” [মুসনাদে ইমামে আবি হানিফাহ, বাবে যেয়ারাতে কবর আন্ নবী (দ:)]
কুরআন তেলাওয়াত [কবরের পাশে]
وَالَّذِينَ جَاؤُوا مِن بَعْدِهِمْ يَقُولُونَ رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا وَلِإِخْوَانِنَا الَّذِينَ سَبَقُونَا بِالْإِيْمَانِ وَلَا تَجْعَلْ فِي قُلُوبِنَا غِلًّا لِّلَّذِينَ آمَنُوا رَبَّنَا إِنَّكَ رَؤُوفٌ رَّحِيمٌ
অর্থাৎ: ”এবং ওই সব লোক যারা তাদের পরে এসেছে, তারা আরয করে, ‘হে আমাদের রব্ব! আমাদের ক্ষমা করুন এবং আমাদের ভাইদেরও, যারা আমাদের আগে ঈমান এনেছেন; আর আমাদের অন্তরে ঈমানদারদের দিক থেকে হিংসা-বিদ্বেষ রাখবেন না! হে আমাদের রব্ব, নিশ্চয় আপনি অতি দয়ার্দ্র, দয়াময়।” [আল-কুরআন, ৫৯:১০]
তাফসীরে ইবনে কাসীরে এই আয়াতের ব্যাখ্যায় লেখা হয়:
وَالَّذِينَ جَآءُوا مِن بَعْدِهِمْ يَقُولُون
অর্থাৎ: ”(এবং ওই সব লোক যারা তাদের পরে এসেছে, তারা আরয করে) এই আয়াতের মানে তারা যে বক্তব্য দেয়;
رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا وَلإِخْوَنِنَا الَّذِينَ سَبَقُونَا بِالإَيمَـنِ وَلاَ تَجْعَلْ فِى قُلُوبِنَا غِلاًّ
অর্থাৎ: (হে আমাদের রব্ব! আমাদের ক্ষমা করুন এবং আমাদের ভাইদেরও, যারা আমাদের আগে ঈমান এনেছেন; আর আমাদের অন্তরে ঈমানদারদের দিক থেকে হিংসা-বিদ্বেষ রাখবেন না) অর্থাৎ, কোনো রাগ বা ঈর্ষা;
لِّلَّذِينَ ءَامَنُواْ رَبَّنَآ إِنَّكَ رَءُوفٌ رَّحِيمٌ
(আমাদের অন্তরে ঈমানদারদের দিক থেকে হিংসা-বিদ্বেষ রাখবেন না) সত্যি, এটি একটি উত্তম পন্থা যে ইমাম মালেক (রহ:) এই সম্মানিত আয়াতটি দেখিয়েই ঘোষণা করেছেন যে সাহাবা-এ-কেরাম (রা:)-এর প্রতি অভিসম্পাত দানকারী রাফেযী (শিয়া)-রা এই রহমত-বরকতের শরীকদার হওয়া থেকে বঞ্চিত। কারণ আল্লাহ এখানে যে সৎগুণের কথা উল্লেখ করেছেন তা তাদের নেই, যেমনটি এরশাদ হয়েছে -
رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا وَلإِخْوَنِنَا الَّذِينَ سَبَقُونَا بِالإَيمَـنِ وَلاَ تَجْعَلْ فِى قُلُوبِنَا غِلاًّ لِّلَّذِينَ ءَامَنُواْ رَبَّنَآ إِنَّكَ رَءُوفٌ رَّحِيمٌ
(হে আমাদের রব্ব! আমাদের ক্ষমা করুন এবং আমাদের ভাইদেরও, যারা আমাদের আগে ঈমান এনেছেন; আর আমাদের অন্তরে ঈমানদারদের দিক থেকে হিংসা-বিদ্বেষ রাখবেন না! হে আমাদের রব্ব, নিশ্চয় আপনি অতি দয়ার্দ্র, দয়াময়)। ইবনে হাতিম লিপিবদ্ধ করেন যে হযরত মা আয়েশা (রা:) বলেন, ’তাদেরকে যখন আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে বলা হলো, তখন তারা উল্টো তাঁদেরকে অভিসম্পাত দিলো।’ অতঃপর মা আয়েশা (রা:) এই আয়াতটি তেলাওয়াত করেন -
وَالَّذِينَ جَآءُوا مِن بَعْدِهِمْ يَقُولُونَ رَبَّنَا اغْفِرْ لَنَا وَلإِخْوَنِنَا الَّذِينَ سَبَقُونَا بِالإَيمَـن
অর্থাৎ: (এবং ওই সব লোক যারা তাদের পরে এসেছে, তারা আরয করে, ‘হে আমাদের রব্ব! আমাদের ক্ষমা করুন এবং আমাদের ভাইদেরও, যারা আমাদের আগে ঈমান এনেছেন; আর আমাদের অন্তরে ঈমানদারদের দিক থেকে হিংসা-বিদ্বেষ রাখবেন না)। [তাফসীরে ইবনে কাসীর]
ওপরে উল্লেখিত আয়াতটি পরিস্ফুট করে যে কেউ অপর কারো জন্যে দোয়া করলে আল্লাহর ইচ্ছায় তিনি এর আধ্যাত্মিক সুবিধাগুলো পাবেন। এটি আরও প্রতিভাত করে যে এই কাজটি ভুল (বা গোমরাহী) হলে আল্লাহ এভাবে অন্যদের জন্যে আমাদেরকে দোয়া করতে নির্দেশ দিতেন না। আর এ কথাও তিনি তাঁর কালামে পাকে বলতেন না যে বেসালপ্রাপ্তদের জন্যে ক্ষমাপ্রার্থনাকারীরা আল্লাহর প্রশংসা (তথা আশীর্বাদ) অর্জন করেন।
হাদীস শরীফ থেকে প্রমাণ
দলিল নং - ১
ইমাম বোখারী ও ইমাম মুসলিম লেখেন:
”এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (দ:)-এর দরবারে এসে আরয করেন, ‘(হে আল্লাহর রাসূল - দ:) আমার মা অকস্মাৎ ইন্তেকাল করেছেন এবং তিনি কোনো অসিয়ত (উইল) করে যাননি। তবে আমার মনে উদয় হয়েছে, তিনি তা চাইলে হয়তো কোনো দান-সদকা করার কথা আমাকে বলতেন। এক্ষণে আমি তাঁর পক্ষ থেকে কোনো দান-সদকাহ করলে তিনি কি এর সওয়াব পাবেন?’ মহানবী (দ:) জবাবে বলেন, ‘হ্যাঁ।’ এমতাবস্থায় ওই ব্যক্তি বলেন, ‘হে রাসূল (দ:), আমি আপনাকে আমার (খেজুর) ফলে পরিপূর্ণ বাগানটি সদকাহ হিসেবে দানের ব্যাপারে সাক্ষী করলাম’।”
* আল-বোখারী, ‘অসিয়ত’ অধ্যায়, ৪র্থ খণ্ড, বই নং ৫১, হাদীস নং ১৯
* মুসলিম শরীফ, ‘অসিয়ত‘ অধ্যায়, বই নং ১৩, হাদীস নং ৪০০৩
এই হাদীস থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, ইন্তেকালপ্রাপ্তদের পক্ষে কোনো দান-সদকাহ করা হলে তা ইন্তেকালপ্রাপ্তদের জন্যে সুফল বয়ে আনে।
দলিল নং - ২
ইমাম বোখারী (রহ:) লেখেন: “মহানবী (দ:) এরশাদ ফরমান, ‘(কবর জীবনে) ইন্তেকালপ্রাপ্তের মর্যাদা উন্নীত করা হলে তিনি আল্লাহর কাছে এর কারণ জিজ্ঞেস করেন। আল্লাহতা’লা জবাবে বলেন, তোমার পুত্র তোমার জন্যে ক্ষমা চেয়ে দোয়া করেছে’।”
* আল-বোখারী, আল-আদাব আল-মোফিদ, ‘পিতা-মাতার শ্রেষ্ঠত্ব/মাহাত্ম্য’ অধ্যায়
এই বিশেষ হাদীস থেকে উপলব্ধি করা যায় যে কেবল দান-সদকাহ-ই নয়, বরং দোয়া ও আর্থিক সাহায্য করাও ইন্তেকালপ্রাপ্তদের জন্যে খোদায়ী আশীর্বাদ বয়ে আনে।
দলিল নং - ৩
নবী পাক (দ:) এরশাদ করেন,
حدّثنا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ . حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ الْحَسَنِ بْنِ شَقِيقٍ ، عَنِ ابْنِ الْمُبَارَكِ ، عَنْ سُلَيْمَانَ التَّيْمِيِّ ، عَنْ أَبِي عُثْمَانَ وَلَيْسَ بِالنَّهْدِيِّ ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ مَعْقِلِ بْنِ يَسَارٍ ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ: «اِقْرَؤُوهَا عِنْدَ مَوْتَاكُمْ» يَعْنِي يَس.
অর্থাৎঃ “এটি (সূরা এয়াসিন) ইন��তেকালপ্রাপ্ত বা ইন্তেকাল হতে যাচ্ছে এমন ব্যক্তির কাছে (’ইনদা) পাঠ করো।” [সুনানে ইবনে মাজাহ, কিতাবুল জানায়েয # ১৪৩৮]
’সুনানে ইবনে মাজাহ’ গ্রন্থের ব্যাখ্যাকারী আরও বলেন,
قوله ( عند موتاكم )
“হুযূর পাক (দ:)-এর ‘ইন্তেকালপ্রাপ্ত বা ইন্তেকাল হতে যাচ্ছে এমন ব্যক্তি’ এই বাণীর উদ্দেশ্য ইন্তেকাল হতে যাচ্ছে এমন ব্যক্তি অথবা (’আও’) ইন্তেকালপ্রাপ্ত (বা’দ) ব্যক্তিও।” [শরহে সুনানে ইবনে মাজাহ আল-সনদি, প্রাগুক্ত]
‘সুনানে আবি দাউদ’ পুস্তকের ’আওন আল-মা’বুদ শরহে সুনানে আবি দাউদ’ শীর্ষক ব্যাখ্যাগ্রন্থে বিবৃত হয়: “এবং নাসাঈ (শরীফে) হযরত ইবনে আব্বাস (রা:) থেকে বর্ণিত হাদীসটি (যা’তে এরশাদ হয়েছে), মহানবী (দ:) জানাযার নামায পড়েন এবং সূরা ফাতেহা পাঠ করেন।”
দলিল নং - ৪
হুযূর পূর নূর (দ:) এরশাদ ফরমান, “একরা’ও ‘আলা মওতাকুম এয়াসীন”, মানে ‘তোমাদের মধ্যে ইন্তেকালপ্রাপ্ত বা ইন্তেকাল হতে যাচ্ছে এমন ব্যক্তিদের কাছে সূরা এয়াসীন পাঠ করো।’
রেফারেন্স
* আবূ দাউদ কৃত ‘সুনান’ (জানায়েয)
* নাসাঈ প্রণীত ‘সুনান’ (’আমল আল-এয়াওম ওয়াল-লায়লাহ)
* ইবনে মাজাহ রচিত ‘সুনান’ (জানায়েয)
* ইবনে হিব্বান লিখিত ‘সহীহ’ (এহসান); তিনি এটিকে সহীহ বলেছেন।
দলিল নং - ৫
হযরত মা’কিল ইবনে এয়াসার আল-মুযানি বর্ণনা করেন; মহানবী (দ:) এরশাদ ফরমান: “কেউ যদি সূরা এয়াসীন আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের উদ্দেশ্যে তেলাওয়াত করে, তবে তার পূর্ববর্তী গুনাহ মাফ হবে; অতএব, তোমাদের মধ্যে ইন্তেকাল হতে যাচ্ছে এমন ব্যক্তিদের কাছে তা পাঠ করো।”
ইমাম বায়হাকী (রহ:) এটি নিজস্ব ‘শুয়াবুল ঈমান’ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন।
* আত্ তিরমিযী, হাদীস নং ২১৭৮
দলিল নং - ৬ [ইমাম নববী (রহ:)]
সহীহ মুসলিম শরীফে হযরত আমর ইবনুল আস্ (রা:)-এর কথা বর্ণিত হয়েছে; তিনি বলেন: ’তোমরা যখন আমাকে দাফন করবে, তখন আমার কবরের পাশে ততোক্ষণ দাঁড়াবে যতোক্ষণ একটি উট যবেহ করে তার গোস্ত বিতরণ করতে সময় প্রয়োজন হয়; এতে আমি তোমাদের সঙ্গ লাভের সন্তুষ্টি পাবো এবং আল্লাহর ফেরেশতাদের কী জবাব দেবো তা মনঃস্থির করতে পারবো।’
ইমাম আবূ দাউদ (রহ:) ও ইমাম বায়হাকী (রহ:) ‘হাসান’ এসনাদে হযরত উসমান (রা:) থেকে বর্ণনা করেন; তিনি বলেন: মহানবী (দ:) ইন্তেকালপ্রাপ্ত কারো দাফনের পরে তার (কবরের) পাশে দাঁড়াতেন এবং বলতেন, ‘এই ইন্তেকালপ্রাপ্তের গুনাহ মাফের জন্যে ��োয়া করো, যাতে সে দৃঢ় থাকে; কেননা তাকে (কবরে) প্রশ্ন করা হচ্ছে।’
ইমাম শাফেঈ (রহ:) ও তাঁর শিষ্যবৃন্দ বলেন, ‘(কবরে) কুরআনের অংশবিশেষ তেলাওয়াত করা ভাল; কুরআন খতম করতে পারলে আরও উত্তম।’
’হাসান’ সনদে ‘সুনানে বায়হাকী’ গ্রন্থে বর্ণনা করা হয়েছে যে হযরত ইবনে উমর (রা:) ইন্তেকালপ্রাপ্তদের দাফনের পরে কবরের পাশে সূরা বাকারাহ’র প্রারম্ভিক ও শেষ আয়াতগুলো তেলাওয়াত করাকে মোস্তাহাব বিবেচনা করতেন। [’কিতাবুল আযকার, ২৭৮ পৃষ্ঠা]
ইমাম নববী (রহ:) বলেন: “যে ব্যক্তি কবর যেয়ারত করেন, তিনি সেটির অধিবাসীকে সালাম-সম্ভাষণ জানাবেন, আল-কুরআনের অংশবিশেষ তেলাওয়াত করবেন এবং ইন্তেকালপ্রাপ্তের জন্যে দোয়া করবেন।”
* ইমাম নববী রচিত ‘মিনহাজ আত্ তালেবীন’, কিতাবুল জানায়েয অধ্যায়ের শেষে।
’আল-মজমু’ শারহ আল-মুহাযযাব’ শীর্ষক গ্রন্থে ইমাম নববী (রহ:) আরও লেখেন: “এটি কাঙ্ক্ষিত (ইউস্তাহাব্ব) যে কবর যেয়ারতকারী তাঁর জন্যে সহজে পাঠযোগ্য কুরআনের কোনো অংশ তেলাওয়াত করবেন, যার পরে তিনি কবরস্থদের জন্যে আল্লাহর দরবারে দোয়া করবেন। ইমাম শাফেঈ (রহ:) এই শর্তারোপ করেন এবং তাঁর শিষ্যবৃন্দ তাঁর সাথে ঐকমত্য পোষণ করেন।” বইয়ের আরেক স্থানে তিনি বলেন: “যদি কুরআন খতম করা সম্ভব হয়, তবে তা আরও উত্তম।”
* ইমাম সৈয়ুতী (রহ:) ওপরের দু’টি উদ্ধৃতি-ই তাঁর প্রণীত ‘শরহে সুদুর’ গ্রন্থে উল্লেখ করেন (৩১১ পৃষ্ঠা)।
”উলেমাবৃন্দ কবরের পাশে কুরআন তেলাওয়াতকে মোস্তাহাব (কাম্য) বলে ঘোষণা করেছেন।”
* ইমাম নববী (রহ:) কৃত ‘শরহে সহীহ আল-মুসলিম’ (আল-মায়স্ সংস্করণ, ৩/৪: ২০৬)
দলিল নং - ৭
বর্ণিত আছে যে আল-’আলা ইবনে আল-লাজলাজ তাঁর সন্তানদেরকে বলেন, “তোমরা যখন আমাকে দাফন করবে এবং কবরের ‘লাহদ’ বা পার্শ্ববর্তী খোলা জায়গা স্থাপন করবে, তখন পাঠ করবে - বিসমিল্লাহ ওয়া ‘আলা মিল্লাতি রাসূলিল্লাহ - অর্থাৎ, মহান আল্লাহর নামে এবং মহানবী (দ:)-এর ধর্মীয় রীতি মোতাবেক। অতঃপর আমার ওপর মাটি চাপা দেবে এবং আমার কবরের শিয়রে সূরা বাকারা’র প্রারম্ভিক ও শেষের আয়াতগুলো তেলাওয়াত করবে; কারণ আমি দেখেছি হযরত ইবনে উমর (রা:) তা পছন্দ করতেন।”
রেফারেন্স
* ইমাম বায়হাকী, ‘আল-সুনান আল-কুবরা’ (৪:৫৬)
* ইবনে কুদামা, ’আল-মুগনী’ (২:৪৭৪, ২:৫৬৭, ১৯৯৪ ইং সংস্করণের ২:৩৫৫)
* আত্ তাবারানী, ‘আল-কবীর’; আর ইমাম হায়তামী নিজ ‘মজমা’ আল-যওয়াইদ’ (৩:৪৪) গ্রন্থে জানান যে এর সকল বর্ণনাকারীকেই নির্ভরযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে।
দলিল নং - ৮
ইবনে তাইমিয়া লিখেছে:
”বিশুদ্ধ আহাদীস বা হাদীসসমূহে প্রমাণিত হয় যে ইন্তেকালপ্রাপ্ত জন তাঁর পক্ষে অন্যান্যদের পালিত সমস্ত নেক আমলের সওয়াব বা পুরস্কার লাভ করবেন। কিছু মানুষ আপত্তি উত্থাপন করে এই মর্মে যে কোনো ব্যক্তি শুধু তার নিজের কর্মের ফলেই সওয়াব অর্জন করতে সক্ষম; আর তারা এ যুক্তির পক্ষে আল-কুরআনের দলিল দিতে তৎপর হয়। এটি সঠিক নয়। প্রথমতঃ ( এ কারণে যে) কোনো মুসলমান নিজে যে নেক আমল পালন করেননি, তার সওয়াব-ও তিনি পেতে পারেন; যেমনটি আল্লাহতা’লা কুরআন মজীদে এরশাদ ফরমান যে আল্লাহর আরশের ফেরেশতারা সর্বদা তাঁর-ই প্রশংসা করেন এবং সকল মুসলমানের পক্ষে মাফ চান। আল-কুরআনে আরও পরিস্ফুট হয় যে আল্লাহ পাক তাঁর-ই প্রিয়নবী (দ:)-কে নিজ উম্মতের জন্যে দোয়া করতে বলেছেন, কেননা তাঁর দোয়া উম্মতের মানসিক ও আত্মিক শান্তিস্বরূপ। অনুরূপভাবে, দোয়া করা হয় জানাযার নামাযে, কবর যেয়ারতে এবং ইন্তেকালপ্রাপ্তদের জন্যে।
”দ্বিতীয়তঃ আমরা জানি, আল্লাহ পাক অন্যান্যদের নেক আমল, যা আমাদের পক্ষে তাঁরা পালন করেন, তার বদৌলতে আমাদেরকে পুরস্কৃত করে থাকেন। এর উদাহরণ হচ্ছে রাসূলুল্লাহ (দ:)-এর একখানি হাদীস যা’তে তিনি এরশাদ ফরমান, “কোনো মুসলমান যখন-ই অন্যান্য মুসলমানের জন্যে দোয়া করেন, তৎক্ষণাৎ আল্লাহ পাক একজন ফেরেশতা নিয়োগ করেন ‘আমীন’ বলার জন্যে; অর্থাৎ, ওই ফেরেশতা আল্লাহর কাছে দোয়া কবুলের জন্যে ফরিয়াদ করেন। কখনো কখনো আল্লাহতা’লা জানাযার নামাযে শরিক মুসলমানদেরকে ইন্তেকালপ্রাপ্তদের পক্ষে কৃত তাঁদের প্রার্থনার জবাবে রহমত-বরকত দান করেন; আর ইন্তেকালপ্রাপ্তদেরকেও এর বিপরীতে পুরস্কৃত করেন।”
রেফারেন্স: ইবনে তাইমিয়া রচিত ‘মজমু’ আল-ফাতাওয়া’, সউদী আরবীয় সংস্করণ, ৭ম খণ্ড, ৫০০ পৃষ্ঠা এবং ২৪ খণ্ড, ৩৬৭ পৃষ্ঠা।
দলিল নং - ৯ [হাফেয ইবনে কাইয়্যেম জাওযিয়্যা]
وقد ذكر عن جماعة من السلف أنهم أوصوا أن يقرأ عند قبورهم وقت الدفن قال عبد الحق يروى أن عبد الله بن عمر أمر أن يقرأ عند قبره سورة البقرة وممن رأى ذلك المعلى بن عبد الرحمن وكان الامام أحمد ينكر ذلك أولا حيث لم يبلغه فيه أثر ثم رجع عن ذلك وقال الخلال في الجامع كتاب القراءة عند القبور اخبرنا العباس بن محمد الدورى حدثنا يحيى بن معين حدثنا مبشر الحلبى حدثني عبد الرحمن بن العلاء بن اللجلاج عن أبيه قال قال أبى إذا أنامت فضعنى في اللحد وقل بسم الله وعلى سنة رسول الله وسن على التراب سنا واق��أ عند رأسى بفاتحة البقرة فإنى سمعت عبد الله بن عمر يقول ذلك
قال عباس الدورى سألت أحمد بن حنبل قلت تحفظ في القراءة على القبر شيئا فقال لا وسألت يحيى ابن معين فحدثنى بهذا الحديث قال الخلال وأخبرني الحسن بن أحمد الوراق حدثنى على بن موسى الحداد وكان صدوقا قال كنت مع أحمد بن حنبل ومحمد بن قدامة الجوهرى في جنازة فلما دفن الميت جلس رجل ضرير يقرأ عند القبر فقال له أحمد يا هذا إن القراءة عند القبر بدعة فلما خرجنا من المقابر قال محمد بن قدامة لأحمد بن حنبل يا أبا عبد الله ما تقول في مبشر الحلبي قال ثقة قال كتبت عنه شيئا قال نعم فأخبرني مبشر عن عبد الرحمن بن العلاء اللجلاج عن أبيه أنه أوصى إذا دفن أن يقرأ عند رأسه بفاتحة البقرة وخاتمتها وقال سمعت ابن عمر يوصي بذلك فقال له أحمد فارجع وقل للرجل يقرأ وقال الحسن بن الصباح الزعفراني سألت الشافعي عن القراءة عند القبر فقال لا بأس بها
অর্থাৎ: ”সুদূর অতীতের এক শ্রেণীর বোযূর্গ (এসলাফ) থেকে বর্ণিত আছে যে তাঁরা ইন্তেকালপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের দাফনের পর তাঁদের কবরের কাছে কুরআন পাক তেলাওয়াত করতে অসিয়ত করে গিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে হযরত আব্দুল হক (রহ:) বলেন, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা:) নির্দেশ দিয়েছিলেন তাঁর মাযারে যেন সূরা বাকারাহ পাঠ করা হয়। হযরত মুআল্লা ইবনে আব্দির রহমান (রহ:)-ও তদ্রূপ অভিমত পোষণ করতেন। ইমাম আহমদ (রহ:) প্রথমাবস্থায় উপরোক্ত মতের বিরোধী ছিলেন। কিন্তু পরবর্তীকালে তিনিও কবরে কুরআন শরীফ পাঠ করার পক্ষে অভিমত ব্যক্ত করেছিলেন।
”হযরত আলা ইবনে লাজলাজ (রহ:) থেকে বর্ণিত: তাঁর পিতা অসিয়ত করেছিলেন যে তিনি ইন্তেকাল করলে তাঁকে যেন লাহাদ ধরনের কবরে দাফন করা হয় এবং কবরে মরদেহ নামানোর সময় بسم الله وعلى سنة رسول الله : ‘বিসমিল্লাহি ওয়া আলা সুন্নাতি রাসূলিল্লাহ’ বাক্যটি পাঠ করা হয়। আর মাটি দেয়ার পর তাঁর শিয়রের দিক থেকে যেন সূরা বাকারাহ’র প্রথম অংশের আয়াতগুলো পাঠ করা হয়। কেননা, তিনি হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা:)-কে এ রকম বলতে শুনেছিলেন।
”এই প্রসঙ্গে হযরত আদ্ দুরী (রহ:) বলেন, আমি একবার ইমাম আহমদ (রহ:)-কে জিজ্ঞেস করেছিলাম, কবরের কাছে কুরআন শরীফ পাঠ করা সম্পর্কে কোনো রওয়ায়াত আপনার স্মরণে আছে কি? তিনি তখন বলেছিলেন, ‘না’। কিন্তু হযরত ইয়াহইয়া ইবনে মুয়ীন (রহ:)-কে একই প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা হলে তিনি আলা ইবনে লাজলাজ কর্তৃক উদ্ধৃত হাদীসটি বর্ণনা করেছিলেন। হযরত আলী ইবনে মূসা আল-হাদ্দাদ (রহ:) বলেন, আমি ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহ:) ও হযরত মুহাম্মদ ইবনে কুদামাহ (রহ:)-এর সঙ্গে এক জানাযায় শরীক হয়েছিলাম। লাশ দাফনের পর জনৈক অন্ধ ব্যক্তি কবরের কাছে পবিত্র কুরআন পড়তে লাগলেন। তখন ইমাম আহমদ (রহ:) বল্লেন, ‘এই যে শোনো, কবরের কাছে কুরআন শরীফ পাঠ করা বেদআত।’ আমরা যখন কবরস্থান থেকে বেরিয়ে এলাম, তখন হযরত মুহাম্মদ ইবনে কুদামাহ (রহ:) ইমাম আহমদ (রহ:)-কে জিজ্ঞেস করলেন, হযরত মোবাশশির হালাবী (রহ:) সম্পর্কে আপনার ধারণা কী? তিনি উত্তরে বললেন, হযরত মোবাশশির হালাবী (রহ:) একজন বিশ্বস্ত ব্যক্তি। আমি আবার তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি তাঁর থেকে কোনো রওয়ায়াত লিপিবদ্ধ করেছেন কি? তিনি বল্লেন, ‘হ্যাঁ, করেছি।’ মুহাম্মদ ইবনে কুদামাহ (রহ:) বল্লেন, ’আমাকে হযরত মোবাশশির (রহ:), আর তাঁকে হযরত আবদুর রহমান ইবনে আলা ইবনে লাজলাজ (রহ:), আর তাঁকে তাঁর পিতা অসিয়ত করেছিলেন এই মর্মে যে তাঁর পিতার মরদেহ দাফন করার পর তাঁর শিয়রে যেন সূরা বাকারাহ’র প্রথম ও শেষ অংশ থেকে পাঠ করা হয়। তাঁর পিতা তাঁকে আরও বলেছিলেন যে তিনি হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা:)-কে এই রকম করার জন্যে অসিয়ত করতে শুনেছিলেন।’ উপরোক্ত আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ইমাম আহমদ (রহ:) তাঁর মত পরিবর্তন করে ইবনে কুদামা (রহ:)-কে বলেন, ‘ওই অন্ধ ব্যক্তিকে গিয়ে বলুন, সে যেন কবরে কুরআন শরীফ পাঠ করে’।”
রেফারেন্স
* ইবনে কাইয়্যেম জাওযিয়্যা কৃত ’কিতাবুর রূহ’; বাংলা সংস্করণ ১৬-৭ পৃষ্ঠা; ১৯৯৮ ইং
* ইমাম গাযযালী (রহ:) রচিত ‘এহইয়া’, ইন্তেকাল ও পরকালের স্মরণবিষয়ক বই; ড: আবদুল হাকিম মুরাদ অনূদিত; ক��যামব্রিজ: ইসলামিক টেক্সটস্ সোসাইটি, ১৯৮৯; ১১৭ পৃষ্ঠা।
* আল-খাল্লাল এটি নিজ ‘আল-আমর বিল্ মা’রূফ’ শীর্ষক পুস্তকে বর্ণনা করেন; ১২২ পৃষ্ঠা # ২৪০-২৪১ *ইবনে কুদামাহ প্রণীত ‘আল-মুগনী’ (২:৫৬৭; বৈরুত ১৯৯৪ সংস্করণের ২:৩৫৫) এবং ‘ক্কা’ল আজি-ইন ফেকাহে ইবনে উমর’ (৬১৮ পৃষ্ঠা)
ইমাম গাযযালী (রহ:) এতদসংক্রান্ত বিষয়ে (কবরে কুরআন তেলাওয়াত) তাঁর প্রারম্ভিক মন্তব্যে বলেন, ‘কবরের পাশে কুরআন তেলাওয়াত করাতে কোনো ক্ষতি নেই।’
ইবনে কাইয়্যেম জাওযিয়া আরও লেখেন:
بها وذكر الخلال عن الشعبي قال كانت الأنصار إذا مات لهم الميت اختلفوا إلى قبره يقرءون عنده القرآن قال وأخبرني أبو يحيى الناقد قال سمعت الحسن بن الجروى يقول مررت على قبر أخت لي فقرأت عندها تبارك لما يذكر فيها فجاءني رجل فقال إنى رأيت أختك في المنام تقول جزى الله أبا على خيرا فقد انتفعت بما قرأ أخبرني الحسن بن الهيثم قال سمعت أبا بكر بن الأطروش ابن بنت أبي نصر بن التمار يقول كان رجل يجيء إلى قبر أمه يوم الجمعة فيقرأ سورة يس فجاء في بعض أيامه فقرأ سورة يس ثم قال اللهم إن كنت قسمت لهذه السورة ثوابا فاجعله في أهل هذه المقابر فلما كان يوم الجمعة التي تليها جاءت امرأة فقالت أنت فلان ابن فلانة قال نعم قالت إن بنتا لي ماتت فرأيتها في النوم جالسة على شفير قبرها فقلت ما أجلسك ها هنا فقالت إن فلان ابن فلانة جاء إلى قبر أمه فقرأ سورة يس وجعل ثوابها لأهل المقابر فأصابنا من روح ذلك أو غفر لنا أو نحو ذلك
অর্থাৎ: “হযরত হাসান ইবনে জারবী (রহ:) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি তাঁর এক বোনের কবরের কাছে সূরা মুলক পাঠ করেছিলেন। পরে কোনো এক সময়ে এক ব্যক্তি তাঁকে এসে বললেন, আমি আপনার বোনকে স্বপ্নে দেখেছি; তিনি বলেছেন, ‘আমার ভাইয়ের কুরআন পাঠে আমার খুব-ই উপকার হয়েছে। আল্লাহ তাঁকে জাযায়ে খায়ের দান করুন।’
”হযরত হাসান ইবনে হাইসাম (রহ:) বলেন, আমি আবূ বকর ইবনে আতরূশ (রহ:)-কে বলতে শুনেছি, এক ব্যক্তি নিজের মায়ের কবরের কাছে গিয়ে প্রতি জুমআ-বারে সূরা ইয়াসীন পাঠ করতেন। একদিন তিনি সূরা ইয়াসীন পাঠ করে আল্লাহর কাছে দোয়া চাইলেন, ‘হে আল্লাহ, এই সূরা পাঠ করলে যে সওয়াব পাওয়া যায়, তা আপনি এই কবরস্থানের সকল ইন্তেকালপ্রাপ্তের কাছে পৌঁছে দিন।’ পরের জুমআ-বারে তাঁর কাছে এক মহিলা এসে বললেন, আপনি কি অমুকের পুত্র অমুক? তিনি জবাবে বল্লেন, জ্বি হাঁ। ওই মহিলা বললেন, আমার এক মেয়ে মারা গিয়েছে। আমি তাকে স্বপ্নে দেখলাম, সে নিজের কবরের পাশে বসে আছে। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, তুমি এখানে বসে আছো কেন? সে আপনার নাম উল্লেখ করে বললো, তিনি নিজের মায়ের কবরের কাছে এসে সূরা ইয়াসীন পড়েন এবং এর সওয়াব সমস্ত ইন্তেকালপ্রাপ্তের প্রতি বখশিয়ে দেন। সেই সওয়াবের কিছু অংশ অামিও পেয়েছি এবং সে জন্যে আমাকে মাফ করে দেয়া হয়েছে। আমার ওই মেয়ে আমাকে এ ধরনের আরও কিছু কথা বলেছিল।”
রেফারেন্স: ইবনে কাইয়্যেম আল-জাওযিয়্যা লিখিত ‘কিতাবুর রূহ’ বাংলা সংস্করণ, ১৭ পৃষ্ঠা; ১৯৯৮ ইং সাল।
”কোনো মো’মেন বান্দা যখন কোনো ইন্তেকালপ্রাপ্ত ব্যক্তির উদ্দেশ্যে দোয়া, এস্তেগফার, সাদকাহ, হজ্জ্ব প্রভৃতি নেক আমল পালন করেন, তখন এ সবের সওয়াব ইন্তেকালপ্রাপ্তদের রূহে পৌঁছে যায়। ..এক শ্রেণীর বেদআতী (ভ্রান্ত মতের অনুসারী)-র দৃষ্টিতে ইন্তেকালপ্রাপ্তদের কাছে জীবিতদের নেক আমলের সওয়াব পৌঁছে না। তবে সহীহ হাদীসে প্রমাণিত হয় যে এ ধারণা ভুল।...কুরআন মজীদেই এর প্রমাণ রয়েছে (সূরা আল-হাশর, ১০ম আয়াত), যেখানে মহান আল্লাহ পাক সে সকল মুসলমানের প্রশংসা করেন যাঁরা তাঁদের (অগ্রবর্তী) মুসলমান ভাইদের জন্যে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। ...একটি বিশুদ্ধ হাদীস প্রতীয়মান করে যে মহানবী (দ:) এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, কোনো ইন্তেকালপ্রাপ্তের পক্ষে পেশকৃত সাদকাহ’র সওয়াব তাঁর রূহে পৌঁছে যায় (বোখারী ও মুসলিম)। ...কতিপয় লোক সন্দেহ করে থাকে যে পূর্ববর্তী তথা প্রাথমিক যুগের মুসলমানবৃন্দ ইসালে সওয়াব (ওরস) পালন করেননি; কিন্তু এটি ওই সব লোকের অজ্ঞতা বা জ্ঞানের অভাবে ঘটেছে। প্রাথমিক যুগের মুসলমানবৃন���দ প্রদর্শনীর উদ্দেশ্যে এগুলো করতেন না। ....মহানবী (দ:) স্বয়ং সাদকাহ প্রদানের অনুমতি দিয়েছিলেন। অতএব, ইসালে সওয়াব সঠিক। ...আল-কুরআনের যে আয়াতটিতে ঘোষিত হয়েছে কোনো ব্যক্তি শুধু সে সওয়াবটুকুই পাবেন যা তিনি আমল করেছেন, তাতে বোঝানো হয়েছে তাঁকে সওয়াব অর্জনের মতো যোগ্যতাসম্পন্ন নেককার হতে হবে; কিন্তু আল্লাহ পাক এ ছাড়াও অন্য কারো উপহৃত নেক আমলের সওয়াব ইন্তেকালপ্রাপ্তদের রূহের প্রতি বখশে দেন।” [ইবনে কাইয়্যেম জাওযিয়্যা কৃত ‘কেতাবুর রূহ’, ১৬তম অধ্যায়]
হাফেজ ইবনে কাইয়্যেম আল-জাওযিয়্যা আরও লেখে,
وذكر الخلال عن الشعبي قال كانت الأنصار إذا مات لهم الميت اختلفوا إلى قبره يقرءون عنده القرآن
অর্থাৎ: ”হযরত শায়বী (রহ:) বলেন, আনসার সাহাবা (রা:)-দের কেউ ইন্তেকাল করলে তাঁরা তাঁর কবরের কাছে গিয়ে কুরআন শরীফ তেলাওয়াত করতেন। [প্রাগুক্ত ‘কেতাবুর রূহ’, ১৭ পৃষ্ঠা; বাংলা সংস্করণ]
وقال الحسن بن الصباح الزعفراني سألت الشافعي عن القراءة عند القبر فقال لا بأس به
অর্থাৎ: ”হযরত আল-হাসান ইবনে আস্ সাবাহ আয্ যাফরানী (রহ:) থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন, কবরের পাশে কুরআন শরীফ পাঠ করা সম্পর্কে আমি ইমাম শাফেঈ (রহ:)-কে জিজ্ঞেস করেছিলাম। তিনি জবাবে বলেন, ’এতে আপত্তির কোনো কিছু নেই’।” [প্রাগুক্ত ’কেতাবুর রূহ’, ১৭ পৃষ্ঠা; বাংলা সংস্করণ]
দলিল নং - ১০ [কাজী শওকানী]
”সুন্নী জামাআতের মতানুযায়ী, ইন্তেকালপ্রাপ্ত মুসলমানবৃন্দ (তাঁদের পক্ষে) অন্যদের পেশকৃত দোয়া, হজ্জ্ব, সাদকাহ ইত্যাদির বদৌলতে সওয়াব হাসেল করেন। কিন্তু মো’তাযেলা (ভ্রান্ত মতবাদী) সম্প্রদায় এ সত্য মানতে নারাজ। ইন্তেকালপ্রাপ্তদের উদ্দেশ্যে এগুলো পেশ করা যদি ভ্রান্তি-ই হতো, তবে কবরস্থানে যেয়ারত বা প্রবেশের সময় ইন্তেকালপ্রাপ্তদের প্রতি আমাদের সালাম দেয়াকেও ইসলাম ধর্ম অনুমোদন করতো না।” [কাজী শওকানী রচিত ‘নায়ল আল-আওতার’, জানায়েয অধ্যায়]
”দাফনের পরে কবরের পাশে সূরা বাকারা’র প্রারম্ভিক ও শেষের আয়াতগুলো পাঠ করা হোক। এই সিদ্ধান্ত হযরত ইবনে উমর (রা:)-এর কথার ভিত্তিতে নেয়া হয়েছে, যা বর্ণিত হয়েছে ইমাম বায়হাকী (রহ:)-এর ’সুনান’ (৪:৫৬) গ্রন্থে এবং যা’তে বলা হয়েছে: ‘আমি পছন্দ করি কবরের পাশে সূরা বাকারা’র প্রারম্ভিক ও শেষাংশ পঠিত হোক।’
”ইমাম নববী (রহ:) ঘোষণা করেন যে (ওপরের) এই বর্ণনার এসনাদ হাসান (’হাসসানা এসনাদুহূ’); আর যদিও এটি শুধু হযরত ইবনে উমর (রা:)-এরই বাণী, তথাপি তা স্রেফ কোনো মতামতের ভিত্তিতে উপস্থাপিত নয়। এটির সম্ভাব্য কারণ হতে পারে এই যে, তিনি সার্বিকভাবে আলোচিত এ ধরনের তেলাওয়াতের ফায়দাগুলো সম্পর্কে জেনেছিলেন, এবং এর গুণাগুণের আলোকে কবরের ধারে তা পঠিত হওয়াকে পছন্দনীয় ভেবেছিলেন এই আশায় যে এর তেলাওয়াতের দরুন ইন্তেকালপ্রাপ্ত মুসলমানবৃন্দ সওয়াব হাসেল করতে সক্ষম হবেন।” [শওকানী কৃত ‘তোহফাত আয্ যাকেরীন’, ২২৯ পৃষ্ঠা; আল-জাযুরী দামেশকী (রহ:)-এর প্রণীত ‘হিসনে হাসিন’ গ্রন্থেও এই উদ্ধৃতি আছে]
সমাপ্ত
দ্বীনী ভাই ও ফেইসবুক বন্ধু মাহমূদ হাসানের লিঙ্ক:
পৃথিবীর জীবন ও মৃত্যু পরবর্তী কবরের জীবনের মধ্যে সংযোগ। https://mbasic.facebook.com/hasan.ma…/posts/1733754133606691 ▆ ক্ববর বা মাজার জিয়ারাত। নোট ০১. https://mbasic.facebook.com/hasan.ma…/posts/1717050205277084 নোট ০২. https://mbasic.facebook.com/hasan.ma…/posts/1717051275276977 _______ অসীলা ও মাজার জিয়ারতঃ https://mbasic.facebook.com/hasan.ma…/posts/1825339611114809
2 notes
·
View notes
Text
যার মধ্যে তাওহীদ নেই তার জান্নাত নেই
He Who Does Not Have Tawheed Does Not Have Paradise
যার মধ্যে তাওহীদ নেই তার জান্নাত নেই
youtube
তাওহীদ কি ? যার তাওহীদ নাই তার ইমান নাই.
https://www.youtube.com/watch?v=r8y87s9R-nM
তাওহীদ বিশুদ্ধ থাকলে, ভয় নেই |
https://www.youtube.com/watch?v=aywwO-uMPZo&t=79s
তাওহীদ 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ'-এর অর্থ, ব্যাখ্যা ও প্রয়োগ
https://www.youtube.com/watch?v=eakqz-3FdFE
বিশুদ্ধ/নির্ভেজাল তাওহীদের প্রতিদান।
https://www.youtube.com/watch?v=XSGAy5gOljQ
ঈমান ছাড়া জান্নাত নাই |
https://www.youtube.com/watch?v=iZOu7jVMBlo&t=34s
তাওহীদ হলো একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করা। তাওহিদ এর অর্থ- আল্লাহ ব্যতীত সকল কিছুর ইবাদত বর্জন করে বাহ্যিক ও অন্তর্নিহিতভাবে সমস্ত বক্তব্য ও কর্ম এবং সমস্ত উপাসনার জন্য আল্লাহকে একচ্ছত্র করা। তাওহীদ স্বীকার করা ও জীবনের সবক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা ক���া মুসলিম ব্যক্তির উদ্দেশ্য। তাওহীদ হলো ইসলাম ধর্মের কেন্দ্রীয় এবং একক অতি গুরুত্বপূর্ণ সত্য, যে ভিত্তির ওপর একজন মুসলমানের পুরো ধর্মীয় অনুষঙ্গটি নির্ভর করে। এটি দ্ব্যর্থহীনভাবে মনে করা হয় যে ইসলাম অনুসারে ঈশ্বরই (আরবি: الله اللهā) এক (আল-আহাদ) এবং একক (আল-ওয়াহাদ)। আল্লাহ একমাত্র 'সত্য মাবুদ' (ঈশ্বর)। #তাওহীদ হলো আল্লাহ তাআলাকে তাঁর কর্মসমূহে, তাঁর নাম ও গুণাবলীতে এবং বান্দার সমস্ত ইবাদতের কেন্দ্রবিন্দু হিসাবে এক, একক ও একমাত্র মানা। তাওহীদের তিনটি অংশ- 1 - তাওহীদ আর রুবুবিয়াহ (আল্লাহর কর্মে ও প্রভুত্বে ঐক্য বজায় রাখা) তিনি একাই হলেন স্রষ্টা (স্রষ্টা) এবং মহাবিশ্বের নিয়ন্ত্রণকারী (ইত্যাদি) এবং আল্লাহ কারও কাছে দায়বদ্ধ নন। 2 - তাওহীদ আল ইবাদাহ (উলুহিয়াহ) (বান্দার সমস্ত ইবাদত/উপাসনা একমাত্র আল্লাহর জন্য করা) এবং কোনও মধ্যস্থতাকারী ছাড়াই ... কেবলমাত্র আল্লাহরই কাছে প্রার্থনা ও প্রার্থনা পাবার এবং কুরবানী ও উপাসনা পাবার অধিকার রয়েছে। 3 - তাওহীদ আল-আসমা ’ওয়া’ল সিফাত (আল্লাহর নাম ও বৈশিষ্ট্যের একত্ব) এর অর্থ আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর সত্যতা নিশ্চিত করা এবং বিশ্বাস করা যে তাঁর নাম ও গুণাবলীতে আল্লাহর মতো আর কোনো কিছু নেই। আল্লাহর তাওহীদের দিকেই সকলকে আহব্বান করেছেন মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)। (সহীহ আল বুখারী 7372)
আল্লাহর অবিভাজ্য একত্বই তাওহিদ
তাওহিদ সমস্ত ইসলামী বিশ্বাসের কেন্দ্রবিন্দু। তাওহিদ হলো এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস। আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো মাবুদ নেই এবং তাঁর সাথে তুলনীয় কেউ নেই। আমরা কখনই আল্লাহকে বুঝতে পারব না কারণ তাঁর প্রকৃতি আমাদের সীমিত মন জানে না। আমরা আল্লাহর সৃষ্টি, কিন্তু তিনি নিজে সৃষ্ট নন। আল্লাহ অদ্বিতীয়, সর্বশক্তিমান, একমাত্র উপাস্য। আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ তায়ালা। আল্লাহ একমাত্র সত্য মাবুদ। আল্লাহ ছাড়া কোনো 'সত্য ঈশ্বর'/ 'সত্য উপাস্য' নেই।
নিখাঁদ তাওহীদ জান্নাতের নিশ্চয়তা
“‘উবাদাহ্ ইবনুস্ সামেত (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ ফরমান : যে ব্যক্তি এ মর্মে স্বাক্ষ্য দেবে যে, আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া কোনো সত্যিকারের ইলাই নেই, তিনি একক, তার কোনো শরীক নেই। আর এ কথাও স্বাক্ষ্য দেবে যে, মুহাম্মদ (সাঃ) তার বান্দাহ ও রাসূল। (আরও ঈমান রাখবে যে,) নিশ্চয়ই ‘ঈসা ('আঃ) আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল এবং তার কালিমা, যা তিনি মারইয়ামের মাঝে অনুপ্রবিষ্ট করিয়েছিলেন। আর তিনি তার তরফ হতে রূহ্ বিশেষ। (আরো বিশ্বাস রাখবে যে,) জান্নাত সত্য এবং জাহান্নামও সত্য, তার ‘আমল যা হোক না কেনো, আল্লাহ তা‘আলা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। সহীহুল বুখারী- হাঃ ৩৪৩৫ ও সহীহ মুসলিম- হাঃ ২৮।
তাওহীদের পারিভাষিক অর্থ কি?
তাওহিদ শব্দের অর্থ একত্ববাদ । ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায় আল্লাহ তায়ালাকে এক ও অদ্বিতীয় হিসেবে স্বীকার করে নেওয়াকে তাওহিদ বলা হয় । তাওহিদের মূল কথা হলো- আল্লাহ তায়ালা এক ও অদ্বিতীয় । তিনি তাঁর সত্তা ও গুণাবলিতে অদ্বিতীয় ।
তাওহীদে তিন অংশ কি কি?
তাওহিদকে তিনটি অংশে বিভক্ত করা হয়েছে; যথা, তাওহিদ আল-রুবুবিয়্যাহ (ঐশ্বরিক প্রভুত্বের একত্ব), তাওহিদ আল-উলুহিয়্যাহ (ঐশ্বরিকতার একত্ব) এবং তাওহীদ আল-আসমা ওয়াল-সিফাত (ঐশ্বরিক নাম ও গুণাবলীর একত্ব)।
তাওহিদে বিশ্বাসের মূল মন্ত্র কি?
"আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোনো (সত্য) উপাস্য নেই; সুন্দর নামসমূহ তারই।" "তিনিই আল্লাহ্, তোমাদের প্রতিপালক। সমস্ত কর্তৃত্ব তারই। আর তোমরা আল্লাহ্-র পরিবর্তে যাদেরকে ডাকো (যাদের কাছে দুআ করো), তারা তো খেজুর আঁটির উপরে পাতলা আবরণেরও (অতি তুচ্ছ কিছুরও) মালিক নয়।"
কিভাবে তাওহীদ পরিপূর্ণ করা যায়?
উল্লেখ্য যে, তাওহীদ বা আল্লাহর একত্ববাদে সত্যিকারের বিশ্বাস অর্জন করা সম্ভব শুধুমাত্র এই সাক্ষ্য দেওয়ার মাধ্যমে যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর রাসূল । এটি অর্জন করা দুটি স্তরের, একটি ফরয এবং একটি মুস্তাহাব।
বাচ্চাদের তাওহীদ কিভাবে বুঝানো যায়?
তাওহীদ মানে আল্লাহর একত্বে বিশ্বাস করা বা তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক না করা । তাওহীদকেও বোঝা যায় মানুষ একাকী আল্লাহর উপাসনা করে। তাওহীদের শিক্ষা বলতে বিভিন্ন উপায় তৈরি করার প্রচেষ্টা বোঝায় যাতে শিশুরা তাদের জীবনে তাওহীদের ধারণা জানতে, বুঝতে এবং অনুশীলন করতে পারে।
কুরআনে কি তাওহিদ আছে?
কোরান সর্বোপরি আল্লাহর এককতা এবং একক সার্বভৌমত্বের উপর জোর দেয়, আরবি শব্দ তাওহীদ ("একত্ব") দ্বারা নির্দেশিত একটি মতবাদ । তিনি কখনই ঘুমান বা ক্লান্ত হন না, এবং অতিক্রান্ত অবস্থায়, তিনি তাঁর ঐশ্বরিক জ্ঞানের সর্বব্যাপীতার মাধ্যমে প্রতিটি জায়গায় সমস্ত কিছু উপলব্ধি করেন এবং প্রতিক্রিয়া করেন।
তাওহীদের উপর ইনতিকাল করবে, সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে
যে ব্যক্তি তাওহীদের উপর ইনতিকাল করবে, সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে- এর প্রমাণ:-
আবূ বকর ইবনে আবূ শায়বা ও যুহায়র ইবনে হারব রহ…উসমান রাযি. থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন, যে ব্যক্তি লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ-এর নিশ্চিত বিশ্বাস নিয়ে ইনতিকাল করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
দাউদ ইবনে রুশায়দ রাযি…উবাদা ইবনে সামিত রাযি. থেকে বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন, যে ব্যক্তি বলবে আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, তিনি এক, তাঁর কোন শরীক নেই এবং মুহাম্মদ (সা) তাঁর বান্দা ও রাসূল, ঈসা আ. আল্লাহর বান্দা ও তাঁর দাসীর পুত্র, তাঁর কথা দ্বারা পয়দা হয়েছেন যা তিনি মারয়ামের মধ্যে ঢেলে ছিলেন ( অর্থাৎ কালেমায়ে ‘কুন’ দ্বারা মারয়ামের গর্ভে তাঁকে পয়দা করেছেন) তিনি তাঁর আত্মা, জান্নাত সত্য, জাহান্নাম সত্য। সে ব্যক্তিকে আল্লাহ জান্নাতের আটটি তোরণের যেখান দিয়ে সে চাইবে প্রবেশ করাবেন।
তাওহীদের উপরে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি বিনা হিসেবে জান্নাতে যাবে
আল্লাহ তা’আলা এরশাদ করেন,
‘‘নিশ্চয়ই ইবরাহীম ছিলেন একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর হুকুম পালনকারী একটি উম্মত বিশেষ। এবং তিনি মুশরিকদের অন্তর্ভূক্ত ছিলেন না।’’ (নাহলঃ১২০)
২। আল্লাহ তাআলা আরো এরশাদ করেন,
‘‘আর যারা তাদের রবের সাথে শিরক করে না’’ (মুমিনুনঃ ৫৯)
ছাত্রদেরকে তাওহীদ সম্পৰ্কে স্বচ্ছ ও বিশুদ্ধ জ্ঞান দিন
https://www.youtube.com/watch?v=41fcSMqyBmA
তাওহীদ কেন নষ্ট হয়
ঈমান কি | ঈমান ছাড়া জান্নাত নাই
https://www.youtube.com/watch?v=Gw6lLbp0L-w
বিশুদ্ধ আক্বিদা ও তাওহীদ।
https://www.youtube.com/watch?v=F8ZdZXa3UlE
যার মধ্যে তাওহীদ নেই তার জান্নাত নেই
He Who Does Not Have Tawheed Does Not Have Paradise
#tawheed#tawhid#allah'snature#যার মধ্যে তাওহীদ নেই তার জান্নাত নেই#তাওহীদ#তাওহিদ#তৌহিদ#Tawheed#Tauhid#Tauheed#Tawhid#আকিদা#তাওহীদশিক্ষা#তৌহীদ#Youtube
0 notes
Text
যার মধ্যে তাওহীদ নেই তার জান্নাত নেই
He Who Does Not Have Tawheed Does Not Have Paradise
যার মধ্যে তাওহীদ নেই তার জান্নাত নেই
youtube
তাওহীদ কি ? যার তাওহীদ নাই তার ইমান নাই.
https://www.youtube.com/watch?v=r8y87s9R-nM
তাওহীদ বিশুদ্ধ থাকলে, ভয় নেই |
https://www.youtube.com/watch?v=aywwO-uMPZo&t=79s
তাওহীদ 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ'-এর অর্থ, ব্যাখ্যা ও প্রয়োগ
https://www.youtube.com/watch?v=eakqz-3FdFE
বিশুদ্ধ/নির্ভেজাল তাওহীদের প্রতিদান।
https://www.youtube.com/watch?v=XSGAy5gOljQ
ঈমান ছাড়া জান্নাত নাই |
https://www.youtube.com/watch?v=iZOu7jVMBlo&t=34s
তাওহীদ হলো একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করা। তাওহিদ এর অর্থ- আল্লাহ ব্যতীত সকল কিছুর ইবাদত বর্জন করে বাহ্যিক ও অন্তর্নিহিতভাবে সমস্ত বক্তব্য ও কর্ম এবং সমস্ত উপাসনার জন্য আল্লাহকে একচ্ছত্র করা। তাওহীদ স্বীকার করা ও জীবনের সবক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা করা মুসলিম ব্যক্তির উদ্দেশ্য। তাওহীদ হলো ইসলাম ধর্মের কেন্দ্রীয় এবং একক অতি গুরুত্বপূর্ণ সত্য, যে ভিত্তির ওপর একজন মুসলমানের পুরো ধর্মীয় অনুষঙ্গটি নির্ভর করে। এটি দ্ব্যর্থহীনভাবে মনে করা হয় যে ইসলাম অনুসারে ঈশ্বরই (আরবি: الله اللهā) এক (আল-আহাদ) এবং একক (আল-ওয়াহাদ)। আল্লাহ একমাত্র 'সত্য মাবুদ' (ঈশ্বর)। #তাওহীদ হলো আল্লাহ তাআলাকে তাঁর কর্মসমূহে, তাঁর নাম ও গুণাবলীতে এবং বান্দার সমস্ত ইবাদতের কেন্দ্রবিন্দু হিসাবে এক, একক ও একমাত্র মানা। তাওহীদের তিনটি অংশ- 1 - তাওহীদ আর রুবুবিয়াহ (আল্লাহর কর্মে ও প্রভুত্বে ঐক্য বজায় রাখা) তিনি একাই হলেন স্রষ্টা (স্রষ্টা) এবং মহাবিশ্বের নিয়ন্ত্রণকারী (ইত্যাদি) এবং আল্লাহ কারও কাছে দায়বদ্��� নন। 2 - তাওহীদ আল ইবাদাহ (উলুহিয়াহ) (বান্দার সমস্ত ইবাদত/উপাসনা একমাত্র আল্লাহর জন্য করা) এবং কোনও মধ্যস্থতাকারী ছাড়াই ... কেবলমাত্র আল্লাহরই কাছে প্রার্থনা ও প্রার্থনা পাবার এবং কুরবানী ও উপাসনা পাবার অধিকার রয়েছে। 3 - তাওহীদ আল-আসমা ’ওয়া’ল সিফাত (আল্লাহর নাম ও বৈশিষ্ট্যের একত্ব) এর অর্থ আল্লাহর নাম ও গুণাবলীর সত্যতা নিশ্চিত করা এবং বিশ্বাস করা যে তাঁর নাম ও গুণাবলীতে আল্লাহর মতো আর কোনো কিছু নেই। আল্লাহর তাওহীদের দিকেই সকলকে আহব্বান করেছেন মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)। (সহীহ আল বুখারী 7372)
আল্লাহর অবিভাজ্য একত্বই তাওহিদ
তাওহিদ সমস্ত ইসলামী বিশ্বাসের কেন্দ্রবিন্দু। তাওহিদ হলো এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস। আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো মাবুদ নেই এবং তাঁর সাথে তুলনীয় কেউ নেই। আমরা কখনই আল্লাহকে বুঝতে পারব না কারণ তাঁর প্রকৃতি আমাদের সীমিত মন জানে না। আমরা আল্লাহর সৃষ্টি, কিন্তু তিনি নিজে সৃষ্ট নন। আল্লাহ অদ্বিতীয়, সর্বশক্তিমান, একমাত্র উপাস্য। আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ তায়ালা। আল্লাহ একমাত্র সত্য মাবুদ। আল্লাহ ছাড়া কোনো 'সত্য ঈশ্বর'/ 'সত্য উপাস্য' নেই।
নিখাঁদ তাওহীদ জান্নাতের নিশ্চয়তা
“‘উবাদাহ্ ইবনুস্ সামেত (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ইরশাদ ফরমান : যে ব্যক্তি এ মর্মে স্বাক্ষ্য দেবে যে, আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া কোনো সত্যিকারের ইলাই নেই, তিনি একক, তার কোনো শরীক নেই। আর এ কথাও স্বাক্ষ্য দেবে যে, মুহাম্মদ (সাঃ) তার বান্দাহ ও রাসূল। (আরও ঈমান রাখবে যে,) নিশ্চয়ই ‘ঈসা ('আঃ) আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল এবং তার কালিমা, যা তিনি মারইয়ামের মাঝে অনুপ্রবিষ্ট করিয়েছিলেন। আর তিনি তার তরফ হতে রূহ্ বিশেষ। (আরো বিশ্বাস রাখবে যে,) জান্নাত সত্য এবং জাহান্নামও সত্য, তার ‘আমল যা হোক না কেনো, আল্লাহ তা‘আলা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। সহীহুল বুখারী- হাঃ ৩৪৩৫ ও সহীহ মুসলিম- হাঃ ২৮।
তাওহীদের পারিভাষিক অর্থ কি?
তাওহিদ শব্দের অর্থ একত্ববাদ । ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায় আল্লাহ তায়ালাকে এক ও অদ্বিতীয় হিসেবে স্বীকার করে নেওয়াকে তাওহিদ বলা হয় । তাওহিদের মূল কথা হলো- আল্লাহ তায়ালা এক ও অদ্বিতীয় । তিনি তাঁর সত্তা ও গুণাবলিতে অদ্বিতীয় ।
তাওহীদে তিন অংশ কি কি?
তাওহিদকে তিনটি অংশে বিভক্ত করা হয়েছে; যথা, তাওহিদ আল-রুবুবিয়্যাহ (ঐশ্বরিক প্রভুত্বের একত্ব), তাওহিদ আল-উলুহিয়্যাহ (ঐশ্বরিকতার একত্ব) এবং তাওহীদ আল-আসমা ওয়াল-সিফাত (ঐশ্বরিক নাম ও গুণাবলীর একত্ব)।
তাওহিদে বিশ্বাসের মূল মন্ত্র কি?
"আল্লাহ, তিনি ছাড়া কোনো (সত্য) উপাস্য নেই; সুন্দর নামসমূহ তারই।" "তিনিই আল্লাহ্, তোমাদের প্রতিপালক। সমস্ত কর্তৃত্ব তারই। আর তোমরা আল্লাহ্-র পরিবর্তে যাদেরকে ডাকো (যাদের কাছে দুআ করো), তারা তো খেজুর আঁটির উপরে পাতলা আবরণেরও (অতি তুচ্ছ কিছুরও) মালিক নয়।"
কিভাবে তাওহীদ পরিপূর্ণ করা যায়?
উল্লেখ্য যে, তাওহীদ বা আল্লাহর একত্ববাদে সত্যিকারের বিশ্বাস অর্জন করা সম্ভব শুধুমাত্র এই সাক্ষ্য দেওয়ার মাধ্যমে যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর রাসূল । এটি অর্জন করা দুটি স্তরের, একটি ফরয এবং একটি মুস্তাহাব।
বাচ্চাদের তাওহীদ কিভাবে বুঝানো যায়?
তাওহীদ মানে আল্লাহর একত্বে বিশ্বাস করা বা তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক না করা । তাওহীদকেও বোঝা যায় মানুষ একাকী আল্লাহর উপাসনা করে। তাওহীদের শিক্ষা বলতে বিভিন্ন উপায় তৈরি করার প্রচেষ্টা বোঝায় যাতে শিশুরা তাদের জীবনে তাওহীদের ধারণা জানতে, বুঝতে এবং অনুশীলন করতে পারে।
কুরআনে কি তাওহিদ আছে?
কোরান সর্বোপরি আল্লাহর এককতা এবং একক সার্বভৌমত্বের উপর জোর দেয়, আরবি শব্দ তাওহীদ ("একত্ব") দ্বারা নির্দেশিত একটি মতবাদ । তিনি কখনই ঘুমান বা ক্লান্ত হন না, এবং অতিক্রান্ত অবস্থায়, তিনি তাঁর ঐশ্বরিক জ্ঞানের সর্বব্যাপীতার মাধ্যমে প্রতিটি জায়গায় সমস্ত কিছু উপলব্ধি করেন এবং প্রতিক্রিয়া করেন।
তাওহীদের উপর ইনতিকাল করবে, সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে
যে ব্যক্তি তাওহীদের উপর ইনতিকাল করবে, সে অবশ্যই জান্নাতে প্রবেশ করবে- এর প্রমাণ:-
আবূ বকর ইবনে আবূ শায়বা ও যুহায়র ইবনে হারব রহ…উসমান রাযি. থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন, যে ব্যক্তি লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ-এর নিশ্চিত বিশ্বাস নিয়ে ইনতিকাল করবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
দাউদ ইবনে রুশায়দ রাযি…উবাদা ইবনে সামিত রাযি. থেকে বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন, যে ব্যক্তি বলবে আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, তিনি এক, তাঁর কোন শরীক নেই এবং মুহাম্মদ (সা) তাঁর বান্দা ও রাসূল, ঈসা আ. আল্লাহর বান্দা ও তাঁর দাসীর পুত্র, তাঁর কথা দ্বারা পয়দা হয়েছেন যা তিনি মারয়ামের মধ্যে ঢেলে ছিলেন ( অর্থাৎ কালেমায়ে ‘কুন’ দ্বারা মারয়ামের গর্ভে তাঁকে পয়দা করেছেন) তিনি তাঁর আত্মা, জান্নাত সত্য, জাহান্নাম সত্য। সে ব্যক্তিকে আল্লাহ জান্নাতের আটটি তোরণের যেখান দিয়ে সে চাইবে প্রবেশ করাবেন।
তাওহীদের উপরে প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি বিনা হিসেবে জান্নাতে যাবে
আল্লাহ তা’আলা এরশাদ করেন,
‘‘নিশ্চয়ই ইবরাহীম ছিলেন একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর হুকুম পালনকারী একটি উম্মত বিশেষ। এবং তিনি মুশরিকদের অন্তর্ভূক্ত ছিলেন না।’’ (নাহলঃ১২০)
২। আল্লাহ তাআলা আরো এরশাদ করেন,
‘‘আর যারা তাদের রবের সাথে শিরক করে না’’ (মুমিনুনঃ ৫৯)
ছাত্রদেরকে তাওহীদ সম্পৰ্কে স্বচ্ছ ও বিশুদ্ধ জ্ঞান দিন
https://www.youtube.com/watch?v=41fcSMqyBmA
তাওহীদ কেন নষ্ট হয়
ঈমান কি | ঈমান ছাড়া জান্নাত নাই
https://www.youtube.com/watch?v=Gw6lLbp0L-w
বিশুদ্ধ আক্বিদা ও তাওহীদ।
https://www.youtube.com/watch?v=F8ZdZXa3UlE
যার মধ্যে তাওহীদ নেই তার জান্নাত নেই
He Who Does Not Have Tawheed Does Not Have Paradise
#tawheed#tawhid#allah'snature#whoisallah#যার মধ্যে তাওহীদ নেই তার জান্নাত নেই#তাওহীদ#তাওহিদ#তৌহিদ#Tawheed#Tauhid#Tauheed#Tawhid#আকিদা#তাওহীদশিক্ষা#তৌহীদ#Youtube
0 notes
Photo
আল্লাহ ও বান্দার মধ্যে মধ্যস্থতাকারী সাব্যস্ত করা ঈমানভঙ্গের অন্যতম কারণ। আল্লাহ ও বান্দার মধ্যে মধ্যস্থতা সাব্যস্ত করার পরিণামঃ ঈমান বিনষ্টকারী কারণ সমূহের মধ্যে একটি কারণ হলো আল্লাহ ও বান্দার মধ্যে মধ্যস্থতা সাব্যস্ত রাখা। কিয়ামত দিবস ব্যতীত [এর পূর্বে] কোন ব্যক্তিকেই অন্যের জন্য সুপারিশ করার ক্ষমতা আল্লাহ তা'আলা প্রদান করবেন না। কিয়ামত দিবসে আল্লাহ তা'আলা আমাদের শেষ নবীসহ আরো কতিপয় ব্যক্তিকে অন্যদের জন্য সুপারিশ করার অনুমতি প্রদান করবেন। আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ (হে নবী,) তুমি বলো, তোমরা যাদের আল্লাহর বদলে শরীক মনে করো তাদের ডাকো, তারা আসমান ও যমীনের এক অনু পরিমাণ কিছুরও মালিক নয়, এ দুটো বানানোর ব্যাপারেও তাদের কোন অংশিদারিত্ব নেই, না তার কোন সাহায্যকারী রয়েছে। (কিয়ামতের দিন) তার সামনে কারো সুপারিশ কাজে আসবে না, অবশ্য তিনি যাকে অনুমতি দেবেন সে ব্যক্তি বাদে। (আল কোরআন, সুরা সাবাঃ ২২-২৩)। https://www.facebook.com/HamdanTV/videos/%E0%A6%86%E0%A6%B0%E0%A6%AC-%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6%E0%A7%87-%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%9A%E0%A7%8D%E0%A6%9A%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AA%E0%A7%9C%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%B8%E0%A6%BF%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B8-%E0%A6%B6%E0%A7%81%E0%A6%A8%E0%A6%B2%E0%A7%87-%E0%A6%85%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%95-%E0%A6%B9%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%A8-%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A7%9F%E0%A7%87%E0%A6%96-%E0%A6%86%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%81%E0%A6%B0-%E0%A6%B0%E0%A6%B9%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A8-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A8-%E0%A6%AE%E0%A7%8B%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%95-%E0%A6%A8%E0%A6%BF/3204016136379204/
#Eman breaking#ঈমানভঙ্গ#ইমান ভঙ্গের কারণ#ঈমানভঙ্গেরকারণ#মধ্যস্থতাকারী#সুপারিশ#মধ্যস্থতা#ঈমানভঙ্গের কারণ
0 notes
Text
আল্লাহ ও বান্দার মধ্যে মধ্যস্থতাকারী সাব্যস্ত করা ঈমানভঙ্গের অন্যতম কারণ।
আল্লাহ ও বান্দার মধ্যে মধ্যস্থতাকারী সাব্যস্ত করা ঈমানভঙ্গের অন্যতম কারণ।
আল্লাহ ও বান্দার মধ্যে মধ্যস্থতা সাব্যস্ত করার পরিণামঃ ঈমান বিনষ্টকারী কারণ সমূহের মধ্যে একটি কারণ হলো আল্লাহ ও বান্দার মধ্যে মধ্যস্থতা সাব্যস্ত রাখা। কিয়ামত দিবস ব্যতীত [এর পূর্বে] কোন ব্যক্তিকেই অন্যের জন্য সুপারিশ করার ক্ষমতা আল্লাহ তা'আলা প্রদান করবেন না। কিয়ামত দিবসে আল্লাহ তা'আলা আমাদের শেষ নবীসহ আরো কতিপয় ব্যক্তিকে অন্যদে�� জন্য সুপারিশ করার অনুমতি প্রদান করবেন। আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ (হে নবী,) তুমি বলো, তোমরা যাদের আল্লাহর বদলে শরীক মনে করো তাদের ডাকো, তারা আসমান ও যমীনের এক অনু পরিমাণ কিছুরও মালিক নয়, এ দুটো বানানোর ব্যাপারেও তাদের কোন অংশিদারিত্ব নেই, না তার কোন সাহায্যকারী রয়েছে। (কিয়ামতের দিন) তার সামনে কারো সুপারিশ কাজে আসবে না, অবশ্য তিনি যাকে অনুমতি দেবেন সে ব্যক্তি বাদে। (আল কোরআন, সুরা সাবাঃ ২২-২৩)।
https://www.facebook.com/HamdanTV/videos/%E0%A6%86%E0%A6%B0%E0%A6%AC-%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6%E0%A7%87-%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%9A%E0%A7%8D%E0%A6%9A%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AA%E0%A7%9C%E0%A6%BE%E0%A6%B0-%E0%A6%B8%E0%A6%BF%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B8-%E0%A6%B6%E0%A7%81%E0%A6%A8%E0%A6%B2%E0%A7%87-%E0%A6%85%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%95-%E0%A6%B9%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%A8-%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A7%9F%E0%A7%87%E0%A6%96-%E0%A6%86%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%81%E0%A6%B0-%E0%A6%B0%E0%A6%B9%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A8-%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%A8-%E0%A6%AE%E0%A7%8B%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%95-%E0%A6%A8%E0%A6%BF/3204016136379204/
0 notes
Link
ঈমান' কী? ঈমান ভঙ্গের কারণ কী কী?
একজন মুসলিম যদি ঈমান নিয়ে মৃত্যু বরণ করতে না পারে, তাহলে সারা জীবনের আমল কোনোই কাজে আসবে না। আসুন, ঈমান ও ঈমান ভঙ্গের কারণসমুহ জেনে নেই।
ঈমান ভঙ্গের ১০টি কারণ
ওযু করার পর কিছু কাজ করলে যেমন ওযু নষ্ট হয়ে যায়, ঠিক তেমনি ঈমান আনার পর কিছু কথা, কাজ ও বিশ্বাস আছে, যা সম্পাদন করলে বা পোষণ করলে ঈমান নষ্ট হয়ে যায়। ঈমান ভঙ্গের কারণগুলো মূলত ৩ প্রকার। বিশ্বাসগত, কর্মগত এবং উক্তিগত। আলিমগণ এ ব্যাপারে অনেক বিশদ আলোচনা করেছেন। ইমামুদ দাওয়াহ শাইখ মুহাম্মাদ ইবনু আবদিল ওয়াহহাব (রহ.) সেগুলোকে দশটি পয়েন্টে সাজিয়েছেন।
এক. আল্লাহর সঙ্গে শিরক করা
‘নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর সঙ্গে অংশীদার করা ক্ষমা করেন না। তা ব্যতীত অন্যান্য অপরাধ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন; এবং যে কেউ আল্লাহর সঙ্গে শিরক করে সে এক মহাপাপ করে।’ [সুরা নিসা ৪ : ৪৮] ‘কেউ আল্লাহর সঙ্গে শিরক করলে অবশ্যই আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করবেন এবং তার আবাস জাহান্নাম। আর জালিমদের জন্য কোনো সাহায্যকারী নেই।’ [সুরা মায়িদা, ৫ : ৭২]
দুই. আল্লাহ এবং বান্দার মধ্যে কাউকে মধ্যস্থতাকারী বানানো
‘তারা আল্লাহকে ব্যতীত যার ইবাদাত করে তা তাদের ক্ষতিও করতে পারে না, উপকারও করতে পারে না। তারা বলে, এরা আল্লাহর নিকট আমাদের সুপারিশকারী। বল, তোমরা কি আল্লাহকে আকাশমণ্ডলি ও পৃথিবীর এমন কিছুর সংবাদ দিচ্ছ, যা তিনি জানেন না? তিনি মহান, পবিত্র এবং তারা যাকে শরিক করে তা হতে তিনি ঊর্ধ্বে।’ [সুরা ইউনুস, ১০ : ১৮]
‘জেনে রাখ, অবিমিশ্র আনুগত্য আল্লাহরই প্রাপ্য। যারা আল্লাহর পরিবর্তে অন্যকে অভিভাবকরুপে গ্রহণ করে তারা বলে, ‘আমরা তো এদের পূজা এজন্যই করি যে, ইহারা আমাদের আল্লাহর সান্নিধ্যে নিয়ে যাবে।’ তারা যে বিষয়ে নিজেদের মধ্যে মতভেদ করছে আল্লাহ তার ফয়সালা করে দিবেন। যে মিথ্যাবাদী ও কাফির আল্লাহ তাকে সৎপথে পরিচালিত করেন না।’ [সুরা যুমার, ৩৯ : ৩]
তিন. মুশরিক-কাফিরদের কাফির মনে না করা
এমন কাফির, যার কুফরির ব্যাপারে আহলুস সুন্নাহ একমত। সেটা আসলি কাফির হতে পারে—যেমন ইহুদি, খৃস্টান ও হিন্দু সম্প্রদায়—আবার মুরতাদ, যিনদিকও হতে পারে, যেমন প্রকাশ্যে আল্লাহ, রাসুল বা দীনের কোনো অকাট্য ব্যাপার নিয়ে কটূক্তিকারী; যাদের কুফরির ব্যাপারে হকপন্থি আলিমগণ একমত।
চার. নবি (সা.)’র ফয়সালার তুলনায় অন্য কারও ফয়সালাকে উত্তম মনে করা
‘আপনি কি তাদের দেখেননি, যারা দাবি করে যে, যা আপনার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে এবং আপনার পূর্বে যা অবর্তীণ হয়েছে, আমরা তার ওপর ঈমান এনেছি। তারা বিচার-ফয়সালা নিয়ে যেতে চায় তাগুতের কাছে, অথচ তাদের প্রতি নির্দেশ হয়েছে, যাতে তারা তাকে মান্য না করে। পক্ষান্তরে শয়তান তাদের প্রতারিত করে ��থভ্রষ্ট করে ফেলতে চায়।’ [সুরা নিসা, ৪ : ৬০]
পাঁচ. মুহাম্মাদ (সা.) আনীত কোনো বিধানকে অপছন্দ করা
‘অতএব, তোমার পালনকর্তার কসম, সে লোক ঈমানদার হবে না, যতক্ষণ না তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদের ব্যাপারে তোমাকে বিচারক বলে মনে না করে। এরপর তোমার মীমাংসার ব্যাপারে নিজের মনে কোনো রকম সংকীর্ণতা পাবে না এবং তা সন্তুষ্টচিত্তে কবুল করে নেবে।’ [সুরা নিসা, ৪ : ৬৫]
ছয়. দীনের কোনো বিধান নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা
“তুমি তাদের প্রশ্ন করলে তারা নিশ্চয়ই বলবে, ‘আমরা তো আলাপ-আলোচনা ও ক্রীড়া-কৌতুক করছিলাম।’ বলো, ‘তোমরা কি আল্লাহ, তাঁর আয়াত ও তাঁর রাসুলকে বিদ্রুপ করছিলে?’ তোমরা অযুহাত দেয়ার চেষ্টা করো না। তোমরা তো ঈমান আনার পর কুফরি করেছ।” [সুরা তাওবা, ৯ : ৬৫-৬৬]
সাত. জাদু করা
‘সুলাইমান কুফরি করেনি, কুফরি তো করেছিল শয়তানরাই। তারা মানুষকে জাদু শিক্ষা দিত…।’ [সুরা বাকারা, ২ : ১০২]
আট. মুসলিমদের বিরুদ্ধে মুশরিকদের সমর্থন ও সহযোগিতা করা
‘হে মুমিনগণ! তোমাদের পিতা ও ভাইও যদি ঈমানের বিপরীতে কুফরিকে বেছে নেয়, তবে তাদের অন্তরঙ্গরূপে গ্রহণ করো না। তোমাদের মধ্যে যারা তাদের অন্তরঙ্গরূপে গ্রহণ করে, তারাই সীমালঙ্ঘনকারী।’ [সুরা তাওবা, ৯ : ২৩]
‘হে মুমিনগণ! তোমরা ইহুদি ও খৃস্টানদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তারা পরস্পরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে কেউ তাদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করলে সে তাদেরই একজন বলে গণ্য হবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ পাপাচারী সম্প্রদায়কে সৎপথে পরিচালিত করেন না।’ [সুরা মায়িদা, ৫ : ৫১]
নয়. কাউকে দীন-শরিয়তের ঊর্ধ্বে মনে করা
‘আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দীন পূর্ণাঙ্গ করলাম ও তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দীন হিসেবে মনোনীত করলাম।’ [সুরা মায়িদা, ৫ : ৩]
দশ: দীন থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া
‘যে ব্যক্তি তার প্রতিপালকের নিদর্শনাবলি দ্বারা উপদিষ্ট হয়েও তা হতে মুখ ফিরিয়ে নেয় তার অপেক্ষা অধিক অপরাধী আর কে? আমি অবশ্যই অপরাধীদের শাস্তি দিয়ে থাকি।’ [সুরা সাজদা, ৩২ : ২২]
#Iman Vonger 10 Karon#ঈমান#ইমান#ঈমানভঙ্গ#ঈমান ভঙ্গের কারণ#দুর্বল ঈমানের লক্ষণ#Iman#Faith#Faith Breaking#ImanVonger10TiKaron#ImanVongerKaron#ঈমান ভঙ্গের কারণ কী কী#ঈমান ভঙ্গের ১০ কারণ (সংক্ষেপে)
0 notes
Text
ঈমান ভঙ্গের কারণ কী কী?
আপনি কি জানেন কি কি কারণে আপনার ঈমান ভঙ্গ হয়ে যেতে পারে? একজন মুসলমান যদি ঈমান নিয়ে মৃত্যু বরণ করতে না পারে, তাহলে সারা জীবনের আমল কোনোই কাজে আসবে না। আসুন, ঈমান ও ঈমান ভঙ্গের কারণসমুহ জেনে নেই।
ঈমান ভঙ্গের ১০টি কারণ
ওযু করার পর কিছু কাজ করলে যেমন ওযু নষ্ট হয়ে যায়, ঠিক তেমনি ঈমান আনার পর কিছু কথা, কাজ ও বিশ্বাস আছে, যা সম্পাদন করলে বা পোষণ করলে ঈমান নষ্ট হয়ে যায়। ঈমান ভঙ্গের কারণগুলো মূলত ৩ প্রকার। বিশ্বাসগত, কর্মগত এবং উক্তিগত। আলিমগণ এ ব্যাপারে অনেক বিশদ আলোচনা করেছেন। ইমামুদ দাওয়াহ শাইখ মুহাম্মাদ ইবনু আবদিল ওয়াহহাব (রহ.) সেগুলোকে দশটি পয়েন্টে সাজিয়েছেন।
এক. আল্লাহর সঙ্গে শিরক করা
‘নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর সঙ্গে অংশীদার করা ক্ষমা করেন না। তা ব্যতীত অন্যান্য অপরাধ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন; এবং যে কেউ আল্লাহর সঙ্গে শিরক করে সে এক মহাপাপ করে।’ [সুরা নিসা ৪ : ৪৮] ‘কেউ আল্লাহর সঙ্গে শিরক করলে অবশ্যই আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করবেন এবং তার আবাস জাহান্নাম। আর জালিমদের জন্য কোনো সাহায্যকারী নেই।’ [সুরা মায়িদা, ৫ : ৭২]
দুই. আল্লাহ এবং বান্দার মধ্যে কাউকে মধ্যস্থতাকারী বানানো
‘তারা আল্লাহকে ব্যতীত যার ইবাদাত করে তা তাদের ক্ষতিও করতে পারে না, উপকারও করতে পারে না। তারা বলে, এরা আল্লাহর নিকট আমাদের সুপারিশকারী। বল, তোমরা কি আল্লাহকে আকাশমণ্ডলি ও পৃথিবীর এমন কিছুর সংবাদ দিচ্ছ, যা তিনি জানেন না? তিনি মহান, পবিত্র এবং তারা যাকে শরিক করে তা হতে তিনি ঊর্ধ্বে।’ [সুরা ইউনুস, ১০ : ১৮]
‘জেনে রাখ, অবিমিশ্র আনুগত্য আল্লাহরই প্রাপ্য। যারা আল্লাহর পরিবর্তে অন্যকে অভিভাবকরুপে গ্রহণ করে তারা বলে, ‘আমরা তো এদের পূজা এজন্যই করি যে, ইহারা আমাদের আল্লাহর সান্নিধ্যে নিয়ে যাবে।’ তারা যে বিষয়ে নিজেদের মধ্যে মতভেদ করছে আল্লাহ তার ফয়সালা করে দিবেন। যে মিথ্যাবাদী ও কাফির আল্লাহ তাকে সৎপথে পরিচালিত করেন না।’ [সুরা যুমার, ৩৯ : ৩]
তিন. মুশরিক-কাফিরদের কাফির মনে না করা
এমন কাফির, যার কুফরির ব্যাপারে আহলুস সুন্নাহ একমত। সেটা আসলি কাফির হতে পারে—যেমন ইহুদি, খৃস্টান ও হিন্দু সম্প্রদায়—আবার মুরতাদ, যিনদিকও হতে পারে, যেমন প্রকাশ্যে আল্লাহ, রাসুল বা দীনের কোনো অকাট্য ব্যাপার নিয়ে কটূক্তিকারী; যাদের কুফরির ব্যাপারে হকপন্থি আলিমগণ একমত।
চার. নবি (সা.)’র ফয়সালার তুলনায় অন্য কারও ফয়সালাকে উত্তম মনে করা
‘আপনি কি তাদের দেখেননি, যারা দাবি করে যে, যা আপনার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে এবং আপনার পূর্বে যা অবর্তীণ হয়েছে, আমরা তার ওপর ঈমান এনেছি। তারা বিচার-ফয়সালা নিয়ে যেতে চায় তাগুতের কাছে, অথচ তাদের প্রতি নির্দেশ হয়েছে, যাতে তারা তাকে মান্য না করে। পক্ষান্তরে শয়তান তাদের প্রতারিত করে পথভ্রষ্ট করে ফেলতে চায়।’ [সুরা নিসা, ৪ : ৬০]
পাঁচ. মুহাম্মাদ (সা.) আনীত কোনো বিধানকে অপছন্দ করা
‘অতএব, তোমার পালনকর্তার কসম, সে লোক ঈমানদার হবে না, যতক্ষণ না তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদের ব্যাপারে তোমাকে বিচারক বলে মনে না করে। এরপর তোমার মীমাংসার ব্যাপারে নিজের মনে কোনো রকম সংকীর্ণতা পাবে না এবং তা সন্তুষ্টচিত্তে কবুল করে নেবে।’ [সুরা নিসা, ৪ : ৬৫]
ছয়. দীনের কোনো বিধান নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা
“তুমি তাদের প্রশ্ন করলে তারা নিশ্চয়ই বলবে, ‘আমরা তো আলাপ-আলোচনা ও ক্রীড়া-কৌতুক করছিলাম।’ বলো, ‘তোমরা কি আল্লাহ, তাঁর আয়াত ও তাঁর রাসুলকে বিদ্রুপ করছিলে?’ তোমরা অযুহাত দেয়ার চেষ্টা করো না। তোমরা তো ঈমান আনার পর কুফরি করেছ।” [সুরা তাওবা, ৯ : ৬৫-৬৬]
সাত. জাদু করা
‘সুলাইমান কুফরি করেনি, কুফরি তো করেছিল শয়তানরাই। তারা মানুষকে জাদু শিক্ষা দিত…।’ [সুরা বাকারা, ২ : ১০২]
আট. মুসলিমদের বিরুদ্ধে মুশরিকদের সমর্থন ও সহযোগিতা করা
‘হে মুমিনগণ! তোমাদের পিতা ও ভাইও যদি ঈমানের বিপরীতে কুফরিকে বেছে নেয়, তবে তাদের অন্তরঙ্গরূপে গ্রহণ করো না। তোমাদের মধ্যে যারা তাদের অন্তরঙ্গরূপে গ্রহণ করে, তারাই সীমালঙ্ঘনকারী।’ [সুরা তাওবা, ৯ : ২৩]
‘হে মুমিনগণ! তোমরা ইহুদি ও খৃস্টানদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তারা পরস্পরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে কেউ তাদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করলে সে তাদেরই একজন বলে গণ্য হবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ পাপাচারী সম্প্রদায়কে সৎপথে পরিচালিত করেন না।’ [সুরা মায়িদা, ৫ : ৫১]
নয়. কাউকে দীন-শরিয়তের ঊর্ধ্বে মনে করা
‘আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দীন পূর্ণাঙ্গ করলাম ও তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দীন হিসেবে মনোনীত করলাম।’ [সুরা মায়িদা, ৫ : ৩]
দশ: দীন থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া
‘যে ব্যক্তি তার প্রতিপালকের নিদর্শনাবলি দ্বারা উপদিষ্ট হয়েও তা হতে মুখ ফিরিয়ে নেয় তার অপেক্ষা অধিক অপরাধী আর কে? আমি অবশ্যই অপরাধীদের শাস্তি দিয়ে থাকি।’ [সুরা সাজদা, ৩২ : ২২]
#faith#ঈমান'#ইমান#ঈমান ভঙ্গের কারণ#ঈমানভঙ্গ#দুর্বল ঈমান#Iman#reasons for breaking faith#Belief#Emaan#Breaking Iman#faith breaking
0 notes
Photo
ঈমান ভঙ্গের ১০টি কারণঃ
ওযু করার পর কিছু কাজ করলে যেমন ওযু নষ্ট হয়ে যায়, ঠিক তেমনি ঈমান আনার পর কিছু কথা, কাজ ও বিশ্বাস আছে, যা সম্পাদন করলে বা পোষণ করলে ঈমান নষ্ট হয়ে যায়। ঈমান ভঙ্গের কারণগুলো মূলত ৩ প্রকার। বিশ্বাসগত, কর্মগত এবং উক্তিগত। আলিমগণ এ ব্যাপারে অনেক বিশদ আলোচনা করেছেন। ইমামুদ দাওয়াহ শাইখ মুহাম্মাদ ইবনু আবদিল ওয়াহহাব (রহ.) সেগুলোকে দশটি পয়েন্টে সাজিয়েছেন।
এক. আল্লাহর সঙ্গে শিরক করা
‘নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর সঙ্গে অংশীদার করা ক্ষমা করেন না। তা ব্যতীত অন্যান্য অপরাধ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন; এবং যে কেউ আল্লাহর সঙ্গে শিরক করে সে এক মহাপাপ করে।’ [সুরা নিসা ৪ : ৪৮] ‘কেউ আল্লাহর সঙ্গে শিরক করলে অবশ্যই আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করবেন এবং তার আবাস জাহান্নাম। আর জালিমদের জন্য কোনো সাহায্যকারী নেই।’ [সুরা মায়িদা, ৫ : ৭২]
দুই. আল্লাহ এবং বান্দার মধ্যে কাউকে মধ্যস্থতাকারী বানানো
‘তারা আল্লাহকে ব্যতীত যার ইবাদাত করে তা তাদের ক্ষতিও করতে পারে না, উপকারও করতে পারে না। তারা বলে, এরা আল্লাহর নিকট আমাদের সুপারিশকারী। বল, তোমরা কি আল্লাহকে আকাশমণ্ডলি ও পৃথিবীর এমন কিছুর সংবাদ দিচ্ছ, যা তিনি জানেন না? তিনি মহান, পবিত্র এবং তারা যাকে শরিক করে তা হতে তিনি ঊর্ধ্বে।’ [সুরা ইউনুস, ১০ : ১৮]
‘জেনে রাখ, অবিমিশ্র আনুগত্য আল্লাহরই প্রাপ্য। যারা আল্লাহর পরিবর্তে অন্যকে অভিভাবকরুপে গ্রহণ করে তারা বলে, ‘আমরা তো এদের পূজা এজন্যই করি যে, ইহারা আমাদের আল্লাহর সান্নিধ্যে নিয়ে যাবে।’ তারা যে বিষয়ে নিজেদের মধ্যে মতভেদ করছে আল্লাহ তার ফয়সালা করে দিবেন। যে মিথ্যাবাদী ও কাফির আল্লাহ তাকে সৎপথে পরিচালিত করেন না।’ [সুরা যুমার, ৩৯ : ৩]
তিন. মুশরিক-কাফিরদের কাফির মনে না করা
এমন কাফির, যার কুফরির ব্যাপারে আহলুস সুন্নাহ একমত। সেটা আসলি কাফির হতে পারে—যেমন ইহুদি, খৃস্টান ও হিন্দু সম্প্রদায়—আবার মুরতাদ, যিনদিকও হতে পারে, যেমন প্রকাশ্যে আল্লাহ, রাসুল বা দীনের কোনো অকাট্য ব্যাপার নিয়ে কটূক্তিকারী; যাদের কুফরির ব্যাপারে হকপন্থি আলিমগণ একমত।
চার. নবি (সা.)’র ফয়সালার তুলনায় অন্য কারও ফয়সালাকে উত্তম মনে করা
‘আপনি কি তাদের দেখেননি, যারা দাবি করে যে, যা আপনার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে এবং আপনার পূর্বে যা অবর্তীণ হয়েছে, আমরা তার ওপর ঈমান এনেছি। তারা বিচার-ফয়সালা নিয়ে যেতে চায় তাগুতের কাছে, অথচ তাদের প্রতি নির্দেশ হয়েছে, যাতে তারা তাকে মান্য না করে। পক্ষান্তরে শয়তান তাদের প্রতারিত করে পথভ্রষ্ট করে ফেলতে চায়।’ [সুরা নিসা, ৪ : ৬০]
পাঁচ. মুহাম্মাদ (সা.) আনীত কোনো বিধানকে অপছন্দ করা
‘অতএব, তোমার পালনকর্তার কসম, সে লোক ঈমানদার হবে না, যতক্ষণ না তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদের ব্যাপারে তোমাকে বিচারক বলে মনে না করে। এরপর তোমার মীমাংসার ব্যাপারে নিজের মনে কোনো রকম সংকীর্ণতা পাবে না এবং তা সন্তুষ্টচিত্তে কবুল করে নেবে।’ [সুরা নিসা, ৪ : ৬৫]
ছয়. দীনের কোনো বিধান নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা
“তুমি তাদের প্রশ্ন করলে তারা নিশ্চয়ই বলবে, ‘আমরা তো আলাপ-আলোচনা ও ক্রীড়া-কৌতুক করছিলাম।’ বলো, ‘তোমরা কি আল্লাহ, তাঁর আয়াত ও তাঁর রাসুলকে বিদ্রুপ করছিলে?’ তোমরা অযুহাত দেয়ার চেষ্টা করো না। তোমরা তো ঈমান আনার পর কুফরি করেছ।” [সুরা তাওবা, ৯ : ৬৫-৬৬]
সাত. জাদু করা
‘সুলাইমান কুফরি করেনি, কুফরি তো করেছিল শয়তানরাই। তারা মানুষকে জাদু শিক্ষা দিত…।’ [সুরা বাকারা, ২ : ১০২]
আট. মুসলিমদের বিরুদ্ধে মুশরিকদের সমর্থন ও সহযোগিতা করা
‘হে মুমিনগণ! তোমাদের পিতা ও ভাইও যদি ঈমানের বিপরীতে কুফরিকে বেছে নেয়, তবে তাদের অন্তরঙ্গরূপে গ্রহণ করো না। তোমাদের মধ্যে যারা তাদের অন্তরঙ্গরূপে গ্রহণ করে, তারাই সীমালঙ্ঘনকারী।’ [সুরা তাওবা, ৯ : ২৩]
‘হে মুমিনগণ! তোমরা ইহুদি ও খৃস্টানদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তারা পরস্পরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে কেউ তাদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করলে সে তাদেরই একজন বলে গণ্য হবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ পাপাচারী সম্প্রদায়কে সৎপথে পরিচালিত করেন না।’ [সুরা মায়িদা, ৫ : ৫১]
নয়. কাউকে দীন-শরিয়তের ঊ��্ধ্বে মনে করা
‘আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দীন পূর্ণাঙ্গ করলাম ও তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দীন হিসেবে মনোনীত করলাম।’ [সুরা মায়িদা, ৫ : ৩]
দশ: দীন থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া
‘যে ব্যক্তি তার প্রতিপালকের নিদর্শনাবলি দ্বারা উপদিষ্ট হয়েও তা হতে মুখ ফিরিয়ে নেয় তার অপেক্ষা অধিক অপরাধী আর কে? আমি অবশ্যই অপরাধীদের শাস্তি দিয়ে থাকি।’ [সুরা সাজদা, ৩২ : ২২]
ঈমান ভঙ্গের ১০ কারণ (সংক্ষেপে): 10 Reasons for Breaking Faith (Shorty)
এক. আল্লাহর সঙ্গে শিরক করা,
দুই. আল্লাহ এবং বান্দার মধ্যে কাউকে মধ্যস্থতাকারীবানানো,
তিন. মুশরিক-কাফিরদের কাফির মনে না করা
চার. নবি (সা.)’র ফয়সালার তুলনায় অন্য কারও ফয়সালাকে উত্তম মনে করা
পাঁচ. মুহাম্মাদ (সা.) আনীত কোনো বিধানকে অপছন্দ করা
ছয়. দীনের কোনো বিধান নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা
সাত. জাদু করা
আট. মুসলিমদের বিরুদ্ধে মুশরিকদের সমর্থন ও সহযোগিতা করা
নয়. কাউকে দীন-শরিয়তের ঊর্ধ্বে মনে করা
দশ: দীন থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া
#10 reasons for breaking faith#ঈমান ভঙ্গের ১০ কারণ#ঈমান ভঙ্গের ১০টি কারণ#Reasins to breaking iman#Reasons to breaking eman#Reasons to breaking belief#Ways to increase faith#ঈমান বৃদ্ধির উপায়#How faith increase#ঈমান বৃদ্ধির পায় কিভাবে
0 notes
Link
ঈমান ভঙ্গের ১০টি কারণঃ
ওযু করার পর কিছু কাজ করলে যেমন ওযু নষ্ট হয়ে যায়, ঠিক তেমনি ঈমান আনার পর কিছু কথা, কাজ ও বিশ্বাস আছে, যা সম্পাদন করলে বা পোষণ করলে ঈমান নষ্ট হয়ে যায়। ঈমান ভঙ্গের কারণগুলো মূলত ৩ প্রকার। বিশ্বাসগত, কর্মগত এবং উক্তিগত। আলিমগণ এ ব্যাপারে অনেক বিশদ আলোচনা করেছেন। ইমামুদ দাওয়াহ শাইখ মুহাম্মাদ ইবনু আবদিল ওয়াহহাব (রহ.) সেগুলোকে দশটি পয়েন্টে সাজিয়েছেন।
এক. আল্লাহর সঙ্গে শিরক করা
‘নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর সঙ্গে অংশীদার করা ক্ষমা করেন না। তা ব্যতীত অন্যান্য অপরাধ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন; এবং যে কেউ আল্লাহর সঙ্গে শিরক করে সে এক মহাপাপ করে।’ [সুরা নিসা ৪ : ৪৮] ‘কেউ আল্লাহর সঙ্গে শিরক করলে অবশ্যই আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করবেন এবং তার আবাস জাহান্নাম। আর জালিমদের জন্য কোনো সাহায্যকারী নেই।’ [সুরা মায়িদা, ৫ : ৭২]
দুই. আল্লাহ এবং বান্দার মধ্যে কাউকে মধ্যস্থতাকারী বানানো
‘তারা আল্লাহকে ব্যতীত যার ইবাদাত করে তা তাদের ক্ষতিও করতে পারে না, উপকারও করতে পারে না। তারা বলে, এরা আল্লাহর নিকট আমাদের সুপারিশকারী। বল, তোমরা কি আল্লাহকে আকাশমণ্ডলি ও পৃথিবীর এমন কিছুর সংবাদ দিচ্ছ, যা তিনি জানেন না? তিনি মহান, পবিত্র এবং তারা যাকে শরিক করে তা হতে তিনি ঊর্ধ্বে।’ [সুরা ইউনুস, ১০ : ১৮]
‘জেনে রাখ, অবিমিশ্র আনুগত্য আল্লাহরই প্রাপ্য। যারা আল্লাহর পরিবর্তে অন্যকে অভিভাবকরুপে গ্রহণ করে তারা বলে, ‘আমরা তো এদের পূজা এজন্যই করি যে, ইহারা আমাদের আল্লাহর সান্নিধ্যে নিয়ে যাবে।’ তারা যে বিষয়ে নিজেদের মধ্যে মতভেদ করছে আল্লাহ তার ফয়সালা করে দিবেন। যে মিথ্যাবাদী ও কাফির আল্লাহ তাকে সৎপথে পরিচালিত করেন না।’ [সুরা যুমার, ৩৯ : ৩]
তিন. মুশরিক-কাফিরদের কাফির মনে না করা
এমন কাফির, যার কুফরির ব্যাপারে আহলুস সুন্নাহ একমত। সেটা আসলি কাফির হতে পারে—যেমন ইহুদি, খৃস্টান ও হিন্দু সম্প্রদায়—আবার মুরতাদ, যিনদিকও হতে পারে, যেমন প্রকাশ্যে আল্লাহ, রাসুল বা দীনের কোনো অকাট্য ব্যাপার নিয়ে কটূক্তিকারী; যাদের কুফরির ব্যাপারে হকপন্থি আলিমগণ একমত।
চার. নবি (সা.)’র ফয়সালার তুলনায় অন্য কারও ফয়সালাকে উত্তম মনে করা
‘আপনি কি তাদের দেখেননি, যারা দাবি করে যে, যা আপনার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে এবং আপনার পূর্বে যা অবর্তীণ হয়েছে, আমরা তার ওপর ঈমান এনেছি। তারা বিচার-ফয়সালা নিয়ে যেতে চায় তাগুতের কাছে, অথচ তাদের প্রতি নির্দেশ হয়েছে, যাতে তারা তাকে মান্য না করে। পক্ষান্তরে শয়তান তাদের প্রতারিত করে পথভ্রষ্ট করে ফেলতে চায়।’ [সুরা নিসা, ৪ : ৬০]
পাঁচ. মুহাম্মাদ (সা.) আনীত কোনো বিধানকে অপছন্দ করা
‘অতএব, তোমার পালনকর্তার কসম, সে লোক ঈমানদার হবে না, যতক্ষণ না তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদের ব্যাপারে তোমাকে বিচারক বলে মনে না করে। এরপর তোমার মীমাংসার ব্যাপারে নিজের মনে কোনো রকম সংকীর্ণতা পাবে না এবং তা সন্তুষ্টচিত্তে কবুল করে নেবে।’ [সুরা নিসা, ৪ : ৬৫]
ছয়. দীনের কোনো বিধান নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা
“তুমি তাদের প্রশ্ন করলে তারা নিশ্চয়ই বলবে, ‘আমরা তো আলাপ-আলোচনা ও ক্রীড়া-কৌতুক করছিলাম।’ বলো, ‘তোমরা কি আল্লাহ, তাঁর আয়াত ও তাঁর রাসুলকে বিদ্রুপ করছিলে?’ তোমরা অযুহাত দেয়ার চেষ্টা করো না। তোমরা তো ঈমান আনার পর কুফরি করেছ।” [সুরা তাওবা, ৯ : ৬৫-৬৬]
সাত. জাদু করা
‘সুলাইমান কুফরি করেনি, কুফরি তো করেছিল শয়তানরাই। তারা মানুষকে জাদু শিক্ষা দিত…।’ [সুরা বাকারা, ২ : ১০২]
আট. মুসলিমদের বিরুদ্ধে মুশরিকদের সমর্থন ও সহযোগিতা করা
‘হে মুমিনগণ! তোমাদের পিতা ও ভাইও যদি ঈমানের বিপরীতে কুফরিকে বেছে নেয়, তবে তাদের অন্তরঙ্গরূপে গ্রহণ করো না। তোমাদের মধ্যে যারা তাদের অন্তরঙ্গরূপে গ্রহণ করে, তারাই সীমালঙ্ঘনকারী।’ [সুরা তাওবা, ৯ : ২৩]
‘হে মুমিনগণ! তোমরা ইহুদি ও খৃস্টানদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তারা পরস্পরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে কেউ তাদের বন্ধুরূপে গ্রহণ করলে সে তাদেরই একজন বলে গণ্য হবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ পাপাচারী সম্প্রদায়কে সৎপথে পরিচালিত করেন না।’ [সুরা মায়িদা, ৫ : ৫১]
নয়. কাউকে দীন-শরিয়তের ঊর্ধ্বে মনে করা
‘আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দীন পূর্ণাঙ্গ করলাম ও তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দীন হিসেবে মনোনীত করলাম।’ [সুরা মায়িদা, ৫ : ৩]
দশ: দীন থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া
‘যে ব্যক্তি তার প্রতিপালকের নিদর্শনাবলি দ্বারা উপদিষ্ট হয়েও তা হতে মুখ ফিরিয়ে নেয় তার অপেক্ষা অধিক অপরাধী আর কে? আমি অবশ্যই অপরাধীদের শাস্তি দিয়ে থাকি।’ [সুরা সাজদা, ৩২ : ২২]
ঈমান ভঙ্গের ১০ কারণ (সংক্ষেপে): 10 Reasons for Breaking Faith (Shorty)
এক. আল্লাহর সঙ্গে শিরক করা,
দুই. আল্লাহ এবং বান্দার মধ্যে কাউকে মধ্যস্থতাকারীবানানো,
তিন. মুশরিক-কাফিরদের কাফির মনে না করা
চার. নবি (সা.)’র ফয়সালার তুলনায় অন্য কারও ফয়সালাকে উত্তম মনে করা
পাঁচ. মুহাম্মাদ (সা.) আনীত কোনো বিধানকে অপছন্দ করা
ছয়. দীনের কোনো বিধান নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা
সাত. জাদু করা
আট. মুসলিমদের বিরুদ্ধে মুশরিকদের সমর্থন ও সহযোগিতা করা
নয়. কাউকে দীন-শরিয়তের ঊর্ধ্বে মনে করা
দশ: দীন থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া
#10 Reasons for Breaking Faith (Shorty)#বিশ্বাস ভাঙার 10 কারণ (সংক্ষিপ্ত)#ঈমান ভঙ্গের ১০ কারণ (সংক্ষেপে)#10 Reasons for Breaking Faith (Briefly)#ঈমান ভঙ্গের ১০ কারণ#10 reasons for breaking faith#Breaking Eman#Breaking Faith#Breaking Belief#Breaking Iman
0 notes