Tumgik
#ভেঙ্গে ফেলা
quran-translation · 2 months
Text
youtube
সূরা আল-হুমাযাহ Ayah: 1 وَيۡلٞ لِّكُلِّ هُمَزَةٖ لُّمَزَةٍ দুর্ভোগ প্রত্যেকের, যে পিছনে ও সামনে লোকের নিন্দা করে [১], ১০৪- সূরা আল-হুমাযাহ ৯ আয়াত, মক্কী [১] আয়াতে ‘হুমাযাহ’ ও ‘লুমাযাহ’ দু’টি শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। অধিকাংশ তাফসীরকারের মতে همز এর অর্থ গীবত অর্থাৎ পশ্চাতে পরনিন্দা করা এবং لمز এর অর্থ সামনাসামনি দোষারোপ করা ও মন্দ বলা। এ দুটি কাজই জঘন্য গোনাহ। [আদ্ওয়াউল বায়ান] তাফসীরকারগণ এ শব্দ দু’টির আরও অর্থ বর্ণনা করেছেন। তাদের বর্ণিত তাফসীর অনুসারে উভয় শব্দ মিলে এখানে যে অর্থ দাঁড়ায় তা হচ্ছে: সে কাউকে লাঞ্ছিত ও তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে। কারোর প্রতি তাচ্ছিল্য ভরে অংগুলি নির্দেশ করে। চোখের ইশারায় কাউকে ব্যঙ্গ করে কারো বংশের নিন্দা করে। কারো ব্যক্তি সত্তার বিরূপ সমালোচনা করে। কারো মুখের ওপর তার বিরুদ্ধে মন্তব্য করে। কারো পেছনে তার দোষ বলে বেড়ায়। কোথাও এর কথা ওর কানে লাগিয়ে বন্ধুদেরকে পরস্পরের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেয়। কোথাও ভাইদের পারস্পরিক ঐক্যে ফাটল ধরায়। কোথাও লোকদের নাম বিকৃত করে খারাপ নামে অভিহিত করে। কোথাও কথার খোঁচায় কাউকে আহত করে এবং কাউকে দোষারোপ করে। Ayah: 2 ٱلَّذِي جَمَعَ مَالٗا وَعَدَّدَهُۥ যে সম্পদ জমায় ও তা বার বার গণনা করে [১]; [১] অর্থাৎ নিজের অগাধ ধনদৌলতের অহংকারে সে মানুষকে এভাবে লাঞ্ছিত ও অপমানিত করে। যেসব বদভ্যাসের কারণে আয়াতে শাস্তির কথা উচ্চারণ করা হয়েছে, তন্মধ্যে এটি হচ্ছে তৃতীয়। যার মূল কথা হচ্ছে অর্থালিপ্সা। আয়াতে একে এভাবে ব্যক্ত করা হয়েছে—অর্থালিপ্সার কারণে সে তা বার বার গণনা করে। গুণে গুণে রাখা বাক্য থেকে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কার্পণ্য ও অর্থ লালসার ছবি চোখের সামনে ভেসে ওঠে। তবে অন্যান্য আয়াত ও হাদীস সাক্ষ্য দেয় যে, অর্থ সঞ্চয় করা সর্বাবস্থায় হারাম ও গোনাহ নয়। তাই এখানেও উদ্দেশ্য সেই সঞ্চয় হবে, যাতে জরুরি হক আদায় করা হয় না, কিংবা গর্ব ও অহমিকা লক্ষ্য হয় কিংবা লালসার কারণে দীনের জরুরি কাজ বিঘ্নিত হয়। [আদ্ওয়াউল বায়ান] Ayah: 3 يَحۡسَبُ أَنَّ مَالَهُۥٓ أَخۡلَدَهُۥ সে ধারণা করে যে, তার অর্থ তাকে অমর করে রাখবে [১] ; [১] এর অর্থ হচ্ছে এই যে, সে মনে করে তার অর্থ-সম্পদ তাকে চিরন্তন জীবন দান করবে। অর্থাৎ অর্থ জমা করার এবং তা গুণে রেখে দেয়ার কাজে সে এত বেশী মশগুল যে নিজের মৃত্যুর কথা তার মনে নেই। তার মনে কখনো এ চিন্তার উদয় হয় না যে, এক সময় তাকে এসব কিছু ছেড়ে দিয়ে খালি হাতে দুনিয়া থেকে বিদায় নিতে হবে। তাছাড়া তাকে এ সম্পদের হিসাবও দিতে হবে। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, কিয়ামতের দিন কোনো বান্দার দু‘পা সামনে অগ্রসর হতে পারবে না যতক্ষণ না তাকে নিম্নোক্ত বিষয় জিজ্ঞাসা করা না হয়, তার জীবনকে কিসে নিঃশেষ করেছে; তার জ্ঞান দ্বারা সে কী করেছে; তার সম্পদ কোথেকে আহরণ করেছে ও কিসে ব্যয় করেছে এবং তার শরীর কিসে খাটিয়েছে।” [তিরমিয়ী ২৪১৭] [আত-তাফসীরুস সাহীহ] Ayah: 4 كَلَّاۖ لَيُنۢبَذَنَّ فِي ٱلۡحُطَمَةِ কখনও না, সে অবশ্যই নিক্ষিপ্ত হবে [১] হুতামায় [২]; [১] আরবী ভাষায় কোনো জিনিসকে তুচ্ছ মনে করে ছুঁড়ে ফেলে দেয়া অর্থে ‘নবয’ نبذ শব্দটি ব্যবহার করা হয়। [কুরতুবী, তাহরীর ওয়াত-তানওয়ীর] এ থেকে আপনা আপনি এই ইংগিত সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে যে, নিজের ধনশালী হওয়ার কারণে সে দুনিয়ায় নিজেকে অনেক বড় কিছু মনে করে। কিন্তু কিয়ামতের দিন তাকে ঘৃণাভরে জাহান্নামে ছুঁড়ে দেয়া হবে। [২] হুতামা শব্দটির মূল হচ্ছে, হাতম। হাতম মানে ভেঙ্গে ফেলা, পিষে ফেলা ও টুকরা করে ফেলা। জাহান্নামকে হাতম নামে অভিহিত করার কারণ হচ্ছে এই যে, তার মধ্যে যা কিছু ফেলে দেয়া হবে তাকে সে নিজের গভীরতা ও আগুনের কারণে ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে রেখে দেবে। [কুরতুবী] Ayah: 5 وَمَآ أَدۡرَىٰكَ مَا ٱلۡحُطَمَةُ আর আপনাকে কিসে জানাবে হুতামা কী? Ayah: 6 نَارُ ٱللَّهِ ٱلۡمُوقَدَةُ এটা আল্লাহর প্রজ্বলিত আগুন [১] , [১] এখানে ٱلۡمُوقَدَةُ অর্থ অত্যন্ত লেলিহান শিখাযুক্ত প্ৰজ্বলিত আগুন। [মুয়াসসার] এখানে এই আগুনকে আল্লাহ্র সাথে সম্পর্কিত করার মাধ্যমে কেবল এর প্রচণ্ডতা ও ভয়াবহতা প্রকাশ পাচ্ছে। [রাহুল মা‘আনী, ফাতহুল কাদীর] Ayah: 7 ٱلَّتِي تَطَّلِعُ عَلَى ٱلۡأَفۡـِٔدَةِ যা হৃদয়কে গ্ৰাস করবে [১] ; [১] ‘তাত্তালিউ’ শব্দটির মূলে হচ্ছে ইত্তিলা। আর ‘ইত্তিলা’ শব্দটির অর্থ হচ্ছে চড়া, আরোহণ করা ও ওপরে পৌছে যাওয়া।
0 notes
wewayfarerposts · 2 years
Video
এরশাদ শিকদারের সেই 'স্বর্ণকমল' বাড়িটি ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে || Ershad Sikde...
0 notes
salman7912 · 2 years
Photo
Tumblr media
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র দাঁত মুবারক শহিদ হওয়ার ঘটনা>>>>>>>>>>>> দাঁত ভাঙ্গার ঘটনা:>>> ওহুদ উনার জিহাদে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনা দাঁত মুবারক শহিদ হন। আর তৎখনা আল্লাহ্ পাক উনাকে উলহামের মাধ্যমে জানিয়ে দেন। আর তারপর হযরত উয়ায়েস্ আল-কারনী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ব্যথা অনুভবের মহব্বতে একটি দাঁত ভেঙ্গে ফেলেন। অতঃপর তিনি চিন্তা করেন কোন দাঁত মুবারক শহীদ হয়েছে তা তো উনি জানেন না তাহলে যদি অন্য দাঁত মুবারক হয়? এই ভাবে তিনি এক এক করে সমস্ত দাঁত পাথর দ্বারা ভেঙ্গে ফেলন। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সাক্ষাত লাভের চেষ্টা:>>> হযরত উয়ায়েস্ আল-কারনী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার দাঁত মুবারক ভেঙ্গে ফেলা এবং মদিনা বশী আসলে তাদের কাছে বেকুল হয়ে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কথা জানতে চাওয়া সব সময় নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি গভীর ভাবে মনোনিবেশ করা উপলব্ধি করে উনার মাতা হযরত উয়ায়েস্ আল-কারনী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনাকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার গৃহে গিয়ে দেখা করার অনুমতি দান করেন কিন্তু করন (ইয়েমেন) থেকে মদিনা শরীফ অনেক দূর অনেক দিনের রাস্তা প্রায় ৪শ মাইল। একদিকে উয়ায়েস্ আল-কারনী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মাতা বৃদ্ধ চোখে দেখেন না হাটতে পারেন না আবার অসুস্থ তাই তিনি উনার প্রতিবেশীদের উনার মায়ের খিদমতে রেখে গেলেন। তিনি সুদীর্ঘ পথ কোথাও মরুময় দিনে চরম গরম বিভ্রান্তিকর কোথাও উঁচু পাহাড় রতে ঠাণ্ডা কিছুকেই তোয়াক্কা করলেন না একটান চললেন মদীনাতুল মনওয়ারায় প্রিয় নবী আহমদ মুসতফা হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দিদারে। এভাবে তিনি মদিনা শরীফ পৌঁছেই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উনার গৃহ মুবারক উনার প্রধান দরজায় এসে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে খোজ করেন। বিস্তারিত দেখুন: #90daysMahfil #90daysmahfil #90DaysMahfil #90_Days_Mahfil #৯০দিনব্যাপী_মাহফিল #12shareef #Saiyidul_Aayaad_Shareef #সাইয়্যিদুল_আইয়াদ_শরীফ #sm40 sm40.com https://sunnat.info/ Google Map: https://goo.gl/maps/iT4z79DEENarpJtn7 https://www.instagram.com/p/CmGC1VgL283/?igshid=NGJjMDIxMWI=
0 notes
rajshahitimes · 2 years
Text
নিউজ প্রকাশের পর, বাগমারায় ইট ভাটা'য় অভিযান, ৫০ হাজার ���াকা জরিমানা
নিউজ প্রকাশের পর, বাগমারায় ইট ভাটা’য় অভিযান, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা
বাগমারা প্রতিনিধিঃ রাজশাহীর বাগমারায় অবৈধ ভাবে গড়ে উঠা চারটি ইট ভাটায়, নিউজ প্রকাশের পর অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে উপজেলা প্রশাসন ও জেলা বন ও পরিবেশ অধিদপ্তর এসব অবৈধ ইট ভাটায় অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় তিনটি ভাটার মালিকসহ ইট ভাটায় কাউকে না পাওয়ায় পানি দিয়ে ভাটা নিভে দেয়া হয়। এছাড়া ড্রাম চিমনী ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। অন্যদিকে ভাটায় কয়লার পরিবর্তে কাঠ এবং ড্রাম চিমনী ব্যবহারের…
Tumblr media
View On WordPress
0 notes
nr24bd · 2 years
Text
বাগমারায় ইট ভাটায় অভিযানে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা
বাগমারায় ইট ভাটায় অভিযানে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা
নিউজ রাজশাহী ডেস্কঃ রাজশাহীর বাগমারায় অবৈধ ভাবে গড়ে উঠা চারটি ইট ভাটায় অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। সোমবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে উপজেলা প্রশাসন ও জেলা বন ও পরিবেশ অধিদপ্তর এসব অবৈধ ইট ভাটায় অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় তিনটি ভাটার মালিকসহ ইট ভাটায় কাউকে না পাওয়ায় পানি দিয়ে ভাটা নিভে দেয়া হয়। এছাড়া ড্রাম চিমনী ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। অন্যদিকে ভাটায় কয়লার পরিবর্তে কাঠ এবং ড্রাম চিমনী ব্যবহারের অভিযোগে…
Tumblr media
View On WordPress
0 notes
sobdosoinik · 2 years
Text
নির্ভয় নিঃশঙ্ক
নির্ভয় নিঃশঙ্ক
চারদিকে মৃত্যুভয়। ছড়িয়ে পড়ছে দ্রুত। আরও দ্রুত হারে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে সেই ভয়। তার থেকেও দ্রুত ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে সরকারী পরিসেবা সমূহ। হাসপাতাল নাই। থাকলেও বেড নাই। বেড থাকলেও অক্সিজেন নাই। অক্সিজেন থাকলেও জীবনদায়ী ওষুধ নাই। ওষুধ থাকলেও, তা সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। কোথায় যাবে মানুষ? শুধুমাত্র ঘরে বন্দী হয়ে থেকে করোনা মোকাবিলার এই যে দাওয়াই প্রচারিত হচ্ছে দুইবেলা। এর থেকে আত্মঘাতী…
Tumblr media
View On WordPress
0 notes
atique-rejvee · 2 years
Text
তারাবীহঃ আহলে হাদীস/সালাফী VS আহলুস সুন্নাহ
সকলে পড়বেন, সে ই ভ করে রাখবেন। প্র চা র করবেন। রফিকুল ইসলাম রফিক একজন সালাফী শায়খ। সোশ্যাল মিডিয়াতে সে লেখালেখির পাশাপাশি ভিডিও কন্টেন্ট তৈরি করে আপলোড করে থাকে। ফেইসবুকে তাদের একটি গ্রুপে সে তারাবীহ নামাজ বিষয়ে লিখেছিল। সেখানে কমেন্ট করেছিলাম। রফিকুল ইসলাম রফিক কে বলেছিলাম, সারাজীবন নবীজী সাঃ তারবীহ পড়েছেন? পড়তে বলেছেন? তিনি বলেছেন, ছল্লু কামা রআইতুমুনি উছল্লী। তো, নবীজী সাঃ যা সারা জীবন করেন…
View On WordPress
0 notes
khutbahs · 4 years
Link
ইসলামের দৃষ্টিতে মূর্তি ও ভাস্কর্য দুটোই অপবিত্র ও পরিত্যাজ্য বস্তু।
কুরআন ও হাদীসে এ প্রসঙ্গে যে শব্দগুলো ব্যবহৃত হয়েছে সেগুলো মূর্তি ও ভাস্কর্য দুটোকেই নির্দেশ করে। কুরআন মজীদের স্পষ্ট নির্দেশ - ‘তোমরা পরিহার করো অপবিত্র বস্ত্ত অর্থাৎ মূর্তিসমূহ এবং পরিহার করো মিথ্যাকথন।’ কুরআন, সূরা হজ্জ: ৩০
https://www.youtube.com/watch?v=x-TzLsK2qzo 
মূর্তি ও ভাস্কর্যের মধ্যে পার্থক্য নেই । বাংলা একাডেমি ব্যবহারিক বাংলা অভিধান’ অনুযায়ী ‘মূর্তি’ বা ‘মূরতি’ শব্দের অর্থ হচ্ছে— দেহ, আকৃতি, রূপ, প্রতিমা। ইংরেজিতে মূর্তি শব্দের প্রতিশব্দ— Statue। ভাস্কর শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে, প্রস্তরাদি থেকে মূর্তি প্রভৃতি নির্মাণকারী, যে ব্যক্তি প্রস্তরাদি প্রভৃতি থেকে মূর্তি নির্মাণ করে। ইংরেজি ভাষায় ভাস্কর শব্দের প্রতিশব্দ— Sculptor। একই অভিধানমতে, ভাস্কর্য শব্দের অর্থ— প্রস্তরাদি খোদাই করে তা দিয়ে মূর্তি নির্মাণের কাজ, ভাস্কর শিল্প প্রভৃতি। ইংরেজিতে ভাস্কর্য শব্দের প্রতিশব্দ হচ্ছে sculpture। 
ইসলামের দৃষ্টিতে মূর্তি ও ভাস্কর্য দুটোই পরিত্যাজ্য।
কুরআন মজীদ ও হাদীসে এ প্রসঙ্গে যে শব্দগুলো ব্যবহৃত হয়েছে সেগুলো মূর্তি ও ভাস্কর্য দুটোকেই নির্দেশ করে। এ প্রসঙ্গে কুরআন মজীদের স্পষ্ট নির্দেশ-‘তোমরা পরিহার করো অপবিত্র বস্ত্ত অর্থাৎ মূর্তিসমূহ এবং পরিহার করো মিথ্যাকথন।’ কুরআন, সূরা হজ্জ : ৩০
1 note · View note
ranichakma · 5 years
Text
Tumblr media
সূর্য ওঠার প্রহরে আক্রান্ত হলাম আমরা।
গভীর ঘুমে তলিয়ে ছিলাম তিনজনই, বিলাইছড়ির কাছাকাছি একটা নিরিবিলি গ্রামে। গত কয়েকদিনে খুব সামান্যই ঘুমোতে পেরেছি আমরা। একটু সুযোগ পেয়েই মড়ার মত ঘুমিয়েছিলাম সবাই। যে বুড়োর বাড়ীতে আশ্রয় নিয়েছিলাম সে আশ্বস্ত করেছিল এই বলে যে এখানে কোন বিপদ নেই। তাছাড়া সে আমাদের জন্য সারারাত পাহারা দেবেও বলেছিল। কোন বিপদ আসার আগেই আমাদেরকে সতর্ক করবে বলেছিল। ফলে নিশ্চিন্ত মনেই ঘুমোতে গিয়েছিলাম আমরা।
দড়াম করে দরজা ভেঙ্গে সেনাবাহিনীর লোকেরা ঘরে ঢুকতেই নিমেষেই জেগে গেলাম সবাই। দীর্ঘদিন ধরে বিপদকে সঙ্গী করে চলতে অভ্যস্ত আমরা। স্নায়ুগুলো বিপদের জন্য প্রস্তুত হয়েই থাকে সারাক্ষণ। কে যেন শক্তিশালী সার্চ লাইটের আলো ফেললো আমাদের উপর। তীব্র আলোয় চোখ ধাধিয়ে গেল আমার। কিশোর আর জুনুকে দেখলাম পাহাড়ি চিতার ক্ষিপ্রতায় ঝাঁপিয়ে পড়লো পাশে রাখা অস্ত্রের দিকে। কিন্তু দেরি হয়ে গেছে অনেক। অস্ত্র হাতে তুলতে না তুলতে একরাশ গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গেলো দুজনেই। অস্ত্র হাতে নিতে গেলে কিশোর আর জুনুকে টপকে যেতে হবে আমাকে। আমি অসহায়ের মত দু’হাত উপরে তুলে দাঁড়িয়ে গেলাম। তীব্র আলোয় সবকিছুই আবছা দেখছি। চারিদিকে কিছু ছায়ামুর্তির অস্পষ্ট নড়াচড়া । যে কোনো মুহুর্তেই একঝাক গুলি এসে কিশোর আর জুনুর মত আমাকে ঝাঁঝরা করে দেবে হয়তো এক্ষুনি। মৃত্যুর কত কাছে এসে দাঁড়িয়েছি আমি। আচ্ছা, মৃত্যুর সময় কেমন লাগে মানুষের? কিশোর আর জুনু কি কিছু ভাবার সময় পেয়েছিল? চারপাশ থেকে কর্কশ আওয়াজ ভেসে আসছে। চারিদিকে ধাতব ঝংকার। এর মধ্যেই কেউ একজন আদেশের স্বরে চেঁচিয়ে উঠলো, ‘খবরদার, কেউ গুলি করবে না। ও নিরস্ত্র’।
গলার স্বরটা আবছাভাবে পরিচিত মনে হলো আমার। আগে কোথাও শুনেছি। কোথায় শুনেছি, সেটা নিয়ে ভাবার সময় পেলাম না। ঘাড়ের উপর রাইফেলের বাট দিয়ে কেউ একজন সজোরে বাড়ি দিল। হাটুর উপরে ভা্রি বুটের লাথি খেয়ে মেঝেতে পড়ে গেলাম আমি। আবারো ধমকে উঠলো সেই একই কণ্ঠস্বর। ‘কোন মারপিটও নয়’।
টেনে হিঁচড়ে আমাকে উঠোনে নিয়ে এলো সৈনিকেরা। সাতজনের একটা দল। ইস্পাত কঠিন চেহারা সকলেরই। সকালের নরম আলোতে কেন যেন আরো কঠিন দেখাচ্ছে সবাইকে। তরুণ একটা ছেলে দলনেতা। কাঁধে ক্যাপ্টেনের ব্যাজ। ওকে দেখেই বিস্ময়ে চমকে উঠি আমি। আরে, এতো সুমন। কবে ক্যাপ্টেন হয়ে গেছে। আমার বিস্ময় অবশ্য চোখের পলকে সামলে নেই আমি। সুমনের চেহারায় আমাকে চেনার কোন লক্ষণই দেখি না। সুমন কি আমাকে চিনেছে? নিশ্চয়ই চিনেছে। তা না হলে নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচাতো না আমাকে। আমার মতই হয়তো না চেনার ভান করছে। যুদ্ধ যে সব কিছুকেই পালটে দেয় তার নিজস্ব নিয়মে।
উপজাতীয় কোটায় আমি তখন ভর্তি হয়েছি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুপালন অনুষদে। থাকতাম আশরাফুল হক হলে। কৃষি অর্থনীতির ছাত্র ছিল সুমন। আমি আর সুমন আরো চারজন ছাত্রের সাথে গাদাগাদি করে এক রুমে থাকতাম। দুর্দান্ত ফুটবলার ছিল সুমন। আমিও খুব একটা খারাপ খেলতাম না। সুমনের কারণেই আন্তঃ হল ফুটবল প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে গিয়েছিলাম আমরা সেবার। ফার্স্ট ইয়ারের শেষের দিকে আইএসএসবিতে টিকে গিয়ে বিএমএর লং কোর্স করতে ভাটিয়ারির মিলিটারী একাডেমিতে চলে গেল সুমন। তারপর থেকেই আর কোন যোগাযোগ নেই ওর সাথে আমার। থাকার কথাও নয়। আমার পৃথিবী যে উলটে যেতে শুরু করেছে তখন।
সেকেণ্ড ইয়ারে পড়ার সময়ই আমার জীবনের সবচেয়ে বড় দুঃসংবাদটা এলো। আবদুর রশীদ নামের এক বাঙালি নেতাকে অজ্ঞাত পরিচয় কেউ গুলি করে মেরে ফেলেছিল। তারই জের ধরে সেনাবাহিনী আর গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সহায়তায় অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে বাঙালি সেটলাররা নৃশংসভাবে রাতের আঁধারে হামলা চালিয়েছিল আমাদের গ্রামে। সমস্ত গ্রামটাকেই জ্বালিয়ে দিয়েছিল তারা সুতীব্র ঘৃণায়। আমার কিশোরী ছোট বোনটাকে ছিনিয়ে নিয়ে বিধবা মাকে ঘরের মধ্যে আটকে রেখে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিল তারা। ছোট বোনটার মানুষ নামক শকুনে খাওয়া রক্তাক্ত শরীর পড়ে ছিল পাশের বাঁশ ঝাড়ের নিচে। খবর পেয়ে সাথে সাথেই লংগদুতে ছুটে গিয়েছিলাম আমি।
আগুনে পোড়া ঝলসানো মা আর ক্ষত বিক্ষত বোনটার সৎকার করে পোড়াবাড়ির দিকে শুন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলাম আমি বহুক্ষণ। আপনার বলতে এই বিশাল পৃথিবীতে এখন আর কেউ রইলো না আমার।
ঘরের মধ্যে আটকে রেখে যখন আগুন দিয়েছিল মায়ের আমার কেমন লেগেছিল? খুব কী কষ্ট পেয়েছিল মা আমার? ব্যথায় কী চিৎকার করেছিল গলা ফাটিয়ে? আমাকে কী ডেকেছিল বাঁচানোর জন্য? কী ভেবেছিল তখন আমার গর্ভধারিনী? জীবন্ত রোষ্ট হতে হতে নিশ্চয়ই তার কিশোরী মেয়ের কল্যানের কথাই ভেবেছিলেন তিনি। মায়ের যে আমাদের দুজনকে ছাড়া আর কোন চিন্তা ছিল না কখনো। আ��রা দু ভাইবোনই ছিলাম তার গোটা পৃথিবী। মায়ের কারণেই পাহাড়ের অস্থিরতা থেকে নিজেকে সরিয়ে রেখে ছিলাম আমি সযত্নে। পড়ালেখা শেষ করে কীভাবে মায়ের মুখে হাসি ফোঁটাবো সেই চিন্তাতেই বিভোর ছিলাম আমি।
যে কাজটা এর আগে অনেক বলেও আমাকে দিয়ে করাতে পারেনি কেউ, সেই কাজটাই নির্দ্বিধায় করে ফেলি আমি। মা-বোনকে সৎকারের পরের দিনই শান্তি বাহিনীতে যোগ দেই আমি।
কিশোর আর জুনুর লাশকে বাশের সাথে ঝুলিয়ে দুই মাথা দুজন করে সৈনিক কাঁধে ঝুলিয়ে নেয়। আমার হাত পিছন দিকে নিয়ে হাতকড়া পরিয়ে দেয়। গ্রাম থেকে মাইল খানেক দূরে জঙ্গলের হেঁটে যাই সবাই। আমাদের আক্রমণ করার আগে এখানেই আর্মির লোকজন তাদের ট্রাকটাকে লুকিয়ে রেখেছিল। ট্রাকের শব্দ পেয়ে আমরা যেন সতর্ক হতে না পারি সে কারণে। ট্রাকে করে পাহাড়ের উঁচু নীচু আঁকাবাঁকা পথ বেয়ে ঘন্টা খানেকের মধ্যেই মেরাংছড়ি আর্মি ক্যাম্পে পৌঁছে যাই আমরা। একটা স্কুলকে আর্মি ক্যাম্পে পরিণত করা হয়েছে। এর মধ্যে একবারো সুমন আমার সঙ্গে কথা বলার কোন চেষ্টা করে নাই। এমনকি একবার ফিরেও তাকায়নি আমার দিকে। ভাবলেশহীন মুখ করে রেখেছে। ক্যাম্পে নিয়ে একটা রুমে আটকে রাখা হলো আমাকে।
ঘন্টা দুয়েক পরে হেলিকপ্টারের শব্দ শুনতে পেলাম। স্কুলের মাঠেই নামছে মনে হলো। বিকট শব্দ হচ্ছে। একটু পরেই থেমে গেল সে শব্দ। কিছুক্ষণের মধ্যেই দরজা খুলে দুইজন সৈনিক আসে আমার কক্ষে। ধাক্কাতে ধাক্কাতে বাইরে নিয়ে যায় আমাকে। স্কুলের মাঠে জলপাই রঙ এর বিশাল হেলিকপ্টারটা অলস ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছে। একটা গাছের নীচে দাঁড়িয়ে সুমন আর মুষ্টিযোদ্ধাদের মত সুঠামদেহী এক মেজর কথা বলছে। মেজরের হাতে জ্বলন্ত সিগারেট। উত্তেজিত ভাবভঙ্গি দুজনেরই। কিছু একটা নিয়ে দুজনেই তর্ক করছিল মনে হয়। আমাকে দেখেই থেমে গেল দুজনেই। এই মেজর সাহেবই তাহলে হেলিকপ্টারে করে এসেছেন। মেজরের বুকের ডানদিকে নেম ট্যাগ ঝুলানো। তানভীর নাম ভদ্রলোকের।
‘গাছের সাথে বাঁধো ব্যাটাকে’। আমাকে টেনে আনতে দেখেই জলদ গম্ভীর স্বরে হুকুম দেয় মেজর তানভীর।
শক্ত করে গাছের সাথে বেঁধে ফেলা হয় আমাকে।
‘একে কি ইন্টারোগেশন করেছো?’ সুমনকে জিজ্ঞেস করে মেজর।
‘না করিনি এখনো।‘
‘কেন করোনি?’ ধমকে উঠেন মেজর।
‘আমার সৈন্যরা ক্লান্ত ছিল। গতরাতে অনেক ধকল গেছে ওদের উপর দিয়ে। তাছাড়া আমিও ক্লান্ত ছিলাম’।
কটমট করে সুমনের দিকে তাকালো মেজর তানভীর। দায়িত্বে এতখানি অবহেলা মেনে নিতে পারছে না।
‘ঠিক আছে। আমার সৈন্যরা ক্লান্ত না। আমিও ক্লান্ত নই। আমরাই জেরা করছি’।
‘নাম কি?’ আমার দিকে ফিরে আমাকে জিজ্ঞেস করলো মেজর।
‘কুসুম, কুসুম চাকমা’।
‘বাড়ী কোথায়?’
‘লংগদু’।
‘ট্রেনিং নিয়েছো কোথায়? ইণ্ডিয়ায়?’
কথা বলি না আমি।
‘চুপ করে আছিস কেন শুওরের বাচ্চা। কি বলছি শুনিস নাই’। তুই তোকারিতে নেমে এসেছে মেজর সাহেব এখন।
‘দেশেই ট্রেনিং নিয়েছি। ইণ্ডিয়াতে যাইনি’।
ঘুষিটা এতো দ্রুত গতিতে এলো যে মুখটা সরাবার সময় পেলাম না আমি। নাকের হাড় ভাঙ্গার শব্দ হলো। গলগল করে রক্ত আমার মুখ বেয়ে বুকে এসে পড়লো।
‘মিথ্যাবাদী লোকজন আমি দুই চোখে দেখতে পারি না। এটা হলো মিথ্যা বলার শাস্তি’।
‘তোদের নেতা সন্তু লারমা এখন কোথায়?’
‘জানি না’। মৃদু স্বরে বলি আমি।
‘বলিস কি? জানিস না? নেতার কথায় সাধারণ মানুষজনকে মারিস আর নেতার খবরই রাখিস না’।
সন্তু লারমার খবর সত্যিই জানি না আমি। এমনকি কোনদিন চোখেও দেখিনি তাকে। শান্তি বাহিনীতে আমরা ছোট ছোট ইউনিট হিসাবে কাজ করি। কোন একটা ইউনিট ধরা পড়লেও পুরো অর্গানাইজেশনের কোন ক্ষতি হয় না। কিছু না জানার কারণে হাজার অত্যাচারেও অন্যদের বিষয়ে কোন তথ্য দিতে পারে না তারা। আর্মির লোকেরাও তা জানে। তারপরও খামোখাই অত্যাচার চালায় বন্দীদের উপর।
‘সোজা আঙুলে ঘি উঠবে না। কীভাবে কথা বলাতে হয় জানি আমি।‘
মেজর কাছে দাঁড়ানো একজন সৈন্যকে ঈশারা দিলেন। দেড় হাত লম্বা কাঠের একটা ব্যাটন এনে দিল সে মেজরের হাতে। ব্যাটনটা দিয়ে আমার দুই হাটুতে নির্দয়ভাবে পেটাতে শুরু করলেন তিনি। তীব্র বেদনায় অমানুষিক চিৎকার বেরিয়ে এলো আমার মুখ দিয়ে। পশুর মত আমাকে পেটাতে পেটাতে এক সময় হয়রান হয়ে গেলেন তিনি। ব্যাটনটা তুলে দিলেন সৈন্যটার হাতে। পূর্ণ শক্তিতে সৈন্যটাও আমার হাটুতে পেটাতে শুরু করলো। তীব্র যন্ত্রণায় কখন যে জ্ঞান হারিয়েছি নিজেই জানি না। যখন জ্ঞান ফিরলো দেখলাম আমার সারা শরীর ভেজা। গায়ে পানি ঢেলে জ্ঞান ফিরিয়েছে আমার। দু হাটু ফুলে ঢোল হয়ে গেছে। কোন চেতনাই নেই আর সেখানে। সারা জীবনের জন্য পঙ্গু করে দিয়েছে আমাকে এরা। ঘাড় ঘুরিয়ে দেখি সুমন দাঁড়িয়ে আছে এখনো সেই একি জায়গায়। চেহারা আগের মতই ভাবলেশহীন। কয়েকমন ওজন মনে হচ্ছে মাথটাকে আমার। ধরে রাখতে কষ্ট হচ্ছে। নিজের অজান্তেই বুকের কাছে চলে এলো সেটা।
চুলের মুঠি ধরে আমার মাথাটা উঁচু করে ধরলেন মেজর। ‘সন্তু লারমা কোথায়?’ আবারো জিজ্ঞেস করলেন তিনি।
‘জানি না, আমি জানি না’। জড়ানো গলায় উত্তর দেই আমি।
আমার গালে জ্বলন্ত সিগারেট চেপে ধরেন তিনি। কেন যেন কোন ব্যথাই লাগছে না এখন আর আমার। শুধু ঘুম পাচ্ছে। গভীর ঘুম। ঘুমের অতলে তলিয়ে যেতে যেতে চামড়া পোড়ার গন্ধ পাই আমি। মায়ের চামড়া পোড়া গন্ধ আসছে কোথা থেকে?
পেটের উপর হাটুর গুঁতো খেয়ে চেতনা ফেরে আমার। চোখ মেলে তাকাই। রক্ত চক্ষু নিয়ে পৈশাচিক উন্মত্ততায় গালিগালাজ করে চলেছে মেজর তানভীর তখনো।
‘শালা, নাক বোঁচা বেজন্মা কোথাকার। ভেবেছিস ইণ্ডিয়ার সাহায্য নিয়ে স্বাধীন হয়ে যাবি তোরা। স্বাধীন হওয়া ছুটাচ্ছি তোদের। স্বাধীনতা তোদের পাছার মধ্য দিয়ে ঢুকিয়ে দেবো’।
‘স্বাধীনতা না, আমরা স্বায়ত্বশাসন চাইছি’। দুর্বল স্বরে মেজরের ভুল শোধরানোর চেষ্টা করি আমি।
ঠাস করে গালে প্রচণ্ড থাবড়া কষায় মেজর তানভীর। গালের ভিতরটা কেটে যায় আমার। ‘বান্দীর বাচ্চা, জ্ঞান দিতে আসিস। আমার কাছে দু’টোই এক জিনিষ’।
আমার মাকে নিয়ে প্রচণ্ড কুৎসিত একটা গালি দেয় সে। আর সহ্য হয় না আমার। তীব্র ঘৃণায় মুখের মধ্যে জমে থাকা থুথু আর রক্ত ছুড়ে দেই ওর গালে।
গালে থুথু পড়তেই কয়েক সেকেণ্ডের জন্য হতভম্ভ হয়ে যায় মেজর তানভীর। তারপরই প্রচণ্ড রাগে আগুনের মত জ্বলে উঠে তার চোখ দুটো। চোখ মুখ বিকৃত হয়ে গেছে ক্রোধে। দুই পা পিছিয়ে কোমর থেকে পিস্তল বের করে সে। আমার বুকের দিকে তাক করে আঙুলের চাপ বাড়াতে থাকে। পরিষ্কার খুনের নেশা দেখতে পাই আমি তার চোখ।
ঠিক তখনই পিস্তলের সেফটি ক্লাচ অফ করার মৃদু একটা শব্দ ভেসে আসে। মেজরের দিকে অস্ত্র বাগিয়ে ধরেছে সুমন।
‘ওকে গুলি করলে আপনাকেও মরতে হবে স্যার’। হিমশীতল কন্ঠে সুমন বলে।
অবাক বিস্ময়ে সুমনের দিকে হা করে তাকিয়ে থাকে মেজর।
‘ও নিরস্ত্র, যুদ্ধবন্দী। ওকে হত্যা করার অধিকার আপনার নেই’। সুমনের গলার স্বর এখনো শান্ত।
‘নিরস্ত্র? যুদ্ধবন্দী? এই বদমায়েশগুলো একেকটা সন্ত্রাসী। যুদ্ধবন্দীতো দূরের কথা বন্দীর মর্যাদাও এরা পাবে না। কুকুরের মত গুলি করে মারতে হবে এগুলোকে। পুরো এলাকাটাতে অশান্তি বানিয়ে রেখেছে এরা’।
‘আপনি ওদেরকে যা খুশি ভাবতে পারেন। আমার কাছে ও বন্দী এবং নিরস্ত্র। ওকে গুলি করেছেনতো আপনাকেও মরতে হবে’।
‘তুমি বোধ হয় ভুলে যাচ্ছ যে, আমি তোমার উপরের পোস্টে আছি’। রাগী গলায় চেঁচিয়ে উঠেন মেজর তানভীর।
‘ভুলি নাই, স্যার। কিন্তু এটা আমার ক্যাম্প, আপনার নয়। আমিই এখানকার ইনচার্জ। এখানে আমার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত’।
সুমনের গলার স্বরে এমন একটা কিছু ছিল যে মেজর অস্ত্র নামিয়ে নেয়। হিংস্র চোখে তাকিয়ে থাকে সুমনের দিকে।
‘এর ফল তোমাকে পেতে হবে ক্যাপ্টেন। ফিরে গিয়েই অফিসিয়ালি অভিযোগ করবো আমি। তোমার যাতে কোর্ট মার্শাল হয় তার সব ব্যবস্থাই করবো আমি’। সাপের মত হিসহিস করে বলে সে।
‘বেজন্মাটাকে আমার সাথে চিটাগং নিয়ে যাচ্ছি আমি। অর্ডার সাথেই আছে আমার। কাজেই বোকার মত বাধা দিতে যেওনা। ওখানে নিয়ে গেলে ওরাই ওকে পরপারে পাঠিয়ে দেবে। আমাকে কিছু করতে হবে না’। ঠা ঠা করে বিকৃত হাসি দেয় মেজর।
বাঁধন খুলে দেয়া হয় আমার। হুমড়ি খেয়ে মাটিতে পড়ে যাই আমি। পায়ে ভর করে দাঁড়ানোর অবস্থা নষ্ট করে দিয়েছে ওরা আমার। দু’জন সৈনিক দুপাশ থেকে আমাকে ধরে ছেঁচড়ে ছেঁচড়ে হেলিকপ্টারে তোলে। হেলিকপ্টারে উঠার আগে আমি শেষবারের মত সুমনের দিকে তাকাই। কঠিন মুখ করে দাঁড়িয়ে আছে সে। চোয়ালে হাড়্গুলো উঁচু হয়ে আছে। কোথায় যেন সূক্ষ্ণ একটু পরিবর্তন হয়েছে সুমনের। চোখ দুটো কি একটু কুঁচকে আছে ওর? সুমনের জন্য বুকের মধ্যে গভীর ভালবাসা অনুভব করি আমি।
‘ভাল থাকিস দোস্ত, খুব ভাল থাকিস’। মনে মনে বলি।
আমাদের নিয়ে বিশাল ফড়িঙটা উড়াল দেয় আকাশে। বাতাস কেটে চট্টগ্রামের দিকে ছুটে চলেছে দ্রুতগতিতে। হাত বাধা অবস্থায় কপ্টারের মেঝেতে ফেলে রাখা হয়েছে আমাকে। আমার ডানদিকে বসে আছে মেজর তানভীর। পিছনের দিকে সৈন্যরা।
কিছুক্ষণ পরেই ঘাড় ঘুরিয়ে পিছনের দুই সৈনিকের দিকে তাকালেন মেজর।
‘কী করতে হবে জানোতো তোমরা। দেরি করার আর দরকার নেই।‘
হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়ে তারা। নিঃশব্দ হাসিতে উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে মুখ। সিট থেকে উঠে আমার পাশে এসে দাঁড়ায় তারা। হ্যাচকা টানে আমাকে নিয়ে আসে হেলিকপ্টারের দরজার কাছে। ঠেলা দিয়ে উন্মুক্ত করে দেয় দরজা। আমার পিছনে নিঃশব্দে এসে দাঁড়িয়েছে মেজর তানভীর। কী ঘটতে যাচ্ছে বুঝতে কোন অসুবিধা হয় না আমার। তবে, কোন বিকার ঘটে না আমার। কোন ভীতিও স্পর্শ করে না আমাকে। ভয় ভীতির অনেক উর্ধ্বে চলে গিয়েছি আমি এখন।
খোলা দরজা দিয়ে বাইরে তাকাই আমি। অনেক নীচে পাহাড়ের বুক চিরে সাপের মত আঁকাবাকা হয়ে শুয়ে আছে চেংগি নদী। তার পাশেই পাহাড়ী উপতক্যায় নানান জাতের গাছ-গাছালিগুলো গভীর মমতায় কাধে কাধ মিশিয়ে বন্ধুর মত দাঁড়িয়ে আছে। কারো সাথে কারো কোন ঝগড়াঝাটি নেই, নেই কোন বিবাদ, নেই কোন বিসম্বাদ। শুধু মানুষগুলোই আলাদা। কেন যেন মিলে মিশে একসাথে থাকতে পারে না কিছুতেই।
পিঠে প্রচণ্ড একটা লাথি খেয়ে আমি ছিটকে পড়লাম অসীম শূন্যতায়। পাখির পালকের মত হালকা হয়ে গেছে শরীরটা আমার। নীচে চোখ গেলো। নীল পাহাড়ের চূড়ায় চূড়ায় সূর্যের আলো পড়ে লাল আভা তৈরি হয়েছে। তার পাশেই স্নেহময়ী সবুজ বনভূমি। পরম আদরে আমাকে তার কোলে তুলে নেবার জন্যই মনে হয় দ্রুতগতি আমার দিকে এগিয়ে আসছে সেই সবুজ জমিন। ভারী চোখ মেলে আকাশের দিকে তাকালাম আমি। নীল আকাশে পাল তোলা সাদা সাদা মেঘের ভেলা ভেসে চলেছে এলোমেলো। কী আশ্চর্য! ওই ভেলাতেই দেখি আমার মমতাময়ী মা সজল চোখে দাঁড়িয়ে আছে। গভীর ভালবাসায় দু’হাত বাড়িয়ে রেখেছে আমার দিকে।
ছটফট করে উঠি আমি। মায়ের বুকের নিশ্চিন্ত আশ্রয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য মনটা ব্যাকুল হয়ে উঠে আমার। আকুল স্বরে বিড়বিড় করে উঠি আমি, ‘মা, মাগো, একটুখানি অপেক্ষা করো। আমি আসছি’।
লেখ: Farid Ahmed
ছবিঃ ভিক্তিম কসুম চাকমা'র মা।
1 note · View note
alaminshorkar76 · 2 years
Text
কুয়াকাটায় ওয়াটার লেভেল ঘেঁষা পাবলিক টয়লেটটি অপসারণ
কলাপাড়া (পটুয়াখালী) সংবাদদাতাঃ   পটুয়াখালী জেলার কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের জিরো পয়েন্টে ওয়াটার লেভেল ঘেঁষা পাবলিক টয়লেটটি ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। বুধবার সকাল থেকে এটি ভাঙ্গার কাজ শুরু হয়েছে। পাবলিক টয়লেটের ট্যাংকসহ স্থাপনা সাগরের জোয়ারে ঢেউয়ের ঝাপটা লেগে ময়লা পানি সাগরের পানিতে মিশতো। পর্যটকরা জিরো পয়েন্টে সাগরে গোসলে নামলে এ টয়লেটের কারণে বিব্রতকর অবস্থায় পরতো।   পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক ও কুয়াকাটা বীচ…
Tumblr media
View On WordPress
0 notes
banglashangbad · 2 years
Text
৬৩ বছরের রেকর্ড ভাঙ্গলেন লিটন ও মুশফিক
৬৩ বছরের রেকর্ড ভাঙ্গলেন লিটন ও মুশফিক
ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে মাত্র ২৪ রানে ৫ উইকেটের পতনের পর বাংলাদেশ দলের ইনিংস মেরামতে নেমে ৬৩ বছরের টেস্ট ক্রিকেটের রেকর্ড ভেঙ্গে দিলেন লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিম। মাত্র ২৫ বা এর কম রানে প্রথম ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলা বাংলাদেশ দলের হয়ে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে রেকর্ড পার্টনারশীপ গড়েছেন এই দুই টাইগার ব্যাটসম্যান। বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার  (বাসস) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।এবার বাংলাদেশ দলের এই দুই ব্যাটসম্যান…
Tumblr media
View On WordPress
0 notes
wewayfarerposts · 2 years
Video
এরশাদ শিকদারের সেই 'স্বর্ণকমল' বাড়িটি ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে || Ershad Sikde...
0 notes
sadatshoweb · 3 years
Link
0 notes
cvoice24 · 3 years
Link
0 notes
deshershongbad · 3 years
Text
বাগেরহাটের রনজিৎপুরে ভোলা নদীর পূর্বপাশ দখল করে কাচা-পাকা ইমারাত নির্মাণ
মেহেদী হাসান - রামপাল (বাগেরহাট) সংবাদাতা ।বাগেরহাটের রনজিৎপুর গ্রামে বহুবির্তকিত বিনোদন কেন্দ্র চন্দ্র মহল ইকোপার্ক কর্তৃপক্ষ....
নদীতে চর পড়ার আশংকা মেহেদী হাসান – রামপাল (বাগেরহাট) সংবাদাতা ।বাগেরহাটের রনজিৎপুর গ্রামে বহুবির্তকিত বিনোদন কেন্দ্র চন্দ্র মহল ইকোপার্ক কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ভোলা নদীর পূর্বপাশ দখল করে সেখানে অর্ধশতাধিক পাকা ভবন নির্মাণ করে অবৈধ স্থাপনা তৈরী করা হয়েছে। যে কারণে প্রবাহমান নদী তার গতি হারিয়ে নদীটি এখন মারা যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। অতিদ্রুত অবৈধ স্থাপনা গুলি ভেঙ্গে ফেলা না হলে প্রবাহমান নদীর শ্রোত…
Tumblr media
View On WordPress
0 notes
neon-mine · 3 years
Text
শিক্ষণীয় একটা পোস্ট 🌿
সবাই পড়বেন।
আমি যেভাবে জ্ঞানপাপী হিন্দু হওয়া থেকে বাঁচলাম!!!!!!!
আমার বয়স যখন ৫ থেকে ১৫ বছর,
যখন আমার অন্য ধর্মীয় বন্ধুরা সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি তাদের ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহণ করতো তখন আমি সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি নাচ,গান,আর্ট স্কুলে দৌড়াই,আমি শিল্পকলায়,স্কুলে নাচি আর গান গাই।
আমার বয়স যখন ১৬ থেকে ২৫ বছর,
তখন আমি অন্যান্য ধর্মীয় বন্ধুদের কাছ থেকে নানা প্রশ্নের সম্মুখীন হই,
হিন্দুরা কেন মূর্তিপূজা করে?
মূর্তি খায় না,মশা মাছি তাড়াতে পারে না,এ আবার কেমন সৃষ্টিকর্তা?
হিন্দুরা কেন মৃতদেহ জ্বালিয়ে ফেলে?
বেদে,গীতায় নাকি মূর্তিপূজা নিষিদ্ধ!!
উত্তরায়ন বেদে,অল্লোপনিষদে নাকি আল্লাহর,নবীর কথা বলা আছে!!
হিন্দুরা কেন গরু খায় না?
হিন্দুদের জীবনের মূল লক্ষ্য কি?
আমি তাদের উত্তর দিতে পারিনা !
কারণ,আমি কোনদিন কোন ধর্ম বই পড়িনি !গীতা,বেদ,উপনিষদ পড়িনি !
আমার মা সবসময় স্কুলের বই পড়াতেন আর বলতেন,
"ভালো রেজাল্ট করতে হবে!A + পেতে হবে! ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হতে হবে!বেশী টাকা আয় করতে হবে!!যেখানে টাকা নেই,লাভ নেই সেখানে আমার মা বাবা যেতে দিতেন না!বেদ,গীতা
,উপনিষদ পড়লে পরীক্ষায় A+ পাবো না,
A+ না পেলে ভালো চাকরী,টাকা পাবো না তাই ওগুলো পড়ে সময় নষ্ট!"
এই লাভ লোকসানের হিসাবটা আমাদের বংশের ধারা, আমার দাদু ঠাকুমাও আমার বাবাকে লাভ,লোকসানের হিসাব ভালোই শিখিয়েছিলেন।
তাই,বুড়ো বাবা মা ঘরে রাখলে লাভ হবেনা,অযথা খরচ ভেবে আমার বাবা উনাদের বৃদ্ধাশ্রমে রেখে এসেছেন!
তো আমি প্রশ্নের উত্তর গুলো খুঁজতে,
পুরোহিতের কাছে গেলাম,
উনি হু!!!!হা!!!!!এএএএএ!!!! বলে চলে গেলেন!!
কারণ,উত্তরগুলো উনিও জানেন না।উনার কাছে ধর্মবই মানে পুরোহিত দর্পণ, পঞ্জিকা।যেগুলো দিয়ে পেটপুঁজি চলে।বোকা হিন্দুগুলোর এটাই ইচ্ছা,মন্ত্রের অর্থ না জানলেও চলবে,পুরোহিতের পেছনে বসে মন্ত্রপাঠই কেবল ধর্ম!
আমার বাবা মার গুরু আসলে উনার কাছে গেলাম,
উনি তার শিষ্যদের কোন জ্ঞান না দিলেও নিজের এঁটো খাওয়ানোর জন্য থালা আনতে ডাকছেন।গুরুকে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করলে উনি বললেন,"কলিযুগে নামই সব।এত জানার দরকার নেই!"
আমি গেলাম কীর্তন আসরে,
কীর্তনে কৃষ্ণ লীলা বলতে শুধু জটিলা, কুটিলা, বড়াই,রাধা,যমুনা !!অথচ কৃষ্ণের জীবনের মূল ছিলো গীতা,মহাভারত, ভাগবত,মুক্তি, মোক্ষলাভ!
সেখান থেকেও আমি হতাশ হয়ে ফিরে এলাম!
আমি গেলাম পূজায়,
পাড়ার ছেলেমেয়েদের উদ্যম নাচ,Dj গান আর মাতলামির ধাক্কাধাক্কিতে আমি ঠাকুর মশাই অবধি যেতেও পারলাম না।
হতাশ হয়ে গীতা,বেদ,উপনিষদ কিনে পড়া শুরু করলাম।
♥♥♥আমি জানলাম,
মূর্তি ভগবান না!!!!!!! এটি কাঠ,মাটি দিয়ে তৈরী একটা উদাহরণ মাত্র!!
তাই,মূর্তি খায় না,মূর্তিতে মশা মাছি বসতে পারে,মূর্তি ভেঙ্গে অনেক মূর্খ ভাবে হিন্দুদের সৃষ্টিকর্তাকে ভেঙেছি।
মূর্তি হিন্দুদের সৃষ্টিকর্তাও না!!!!!!
মূর্তি হলো সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের অসংখ্য রূপের একটি রূপক মাত্র,যেটা কেবলমাত্র একটা চিহ্ন।যেটার মাধ্যমের ঈশ্বরের প্রতি ভক্তি প্রকাশ করা হয় মাত্র।ভক্তের ঈশ্বরের প্রতি ভক্তি প্রকাশের একটা মাধ্যম।
হিন্দু শাস্ত্র মতে ঈশ্বরের নিরাকার, সাকার দুই রূপেই বিরাজিত।ঈশ্বরের সাকার রূপ হলো দেবদেবী আর নিরাকার রূপ হলো আকৃতিবিহীন।বর্তমান যুগে আমাদের অশান্ত মনকে শান্ত করতে একটা মাধ্যম প্রয়োজন হয়,তাই মূর্তিকে মাধ্যম হিসেবে ধরলে ঈশ্বর আরাধনা সহজ হয়।
আমরা যখন প্রার্থনায় বসি তখন ঈশ্বরের রূপ মূর্তি বা ছবি হিসেবে সামনে থাকলে প্রার্থনায় মন বসানো যায়।
ঈশ্বরকে সহজে কল্পনা করা যায়।
ভগবানের অস্তিত্ব উপলব্ধি করা যায়।
যেমন,ক্লাসে সমগ্র বিশ্বকে বুঝাতে ম্যাপ বা গ্লোব ব্যবহার হয়।এতে ছাত্রছাত্রীরা সহজে বিশ্ব সম্পর্কে জানতে পারে।
ঠিক তেমনি মূর্তির মাধ্যমে ঈশ্বরের রূপকে সহজে বুঝানো হয়।
একটা ম্যাপ বা গ্লোব মানে যেমন সমগ্র পৃথিবী না,তেমনি মূর্তি মানেই হিন্দুদের ভগবান না।
♥♥♥ আমি জানলাম,
বেদে,গীতায় আল্লাহ,নবীর কথা লিখা নেই।
উত্তরায়ণ বেদ আর অল্লোপনিষদ নামে কোন বেদ,উপনিষদ নেই।এগুলো হিন্দুদের বিভ্রান্ত করার জন্য,বোকা বানানোর জন্য সম্রাট আকবরের সময় লিখা হয়েছিলো।
♥♥♥আমি জানলাম,
হিন্দুধর্মে মূর্তিপূজা নিষেধ না। মূর্তিপূজা নিষেধ বলে যে মন্ত্র বলা হয় এগুলো বিকৃত অর্থে প্রচারিত।
✍️(যজুর্বেদ ৪০/৯)
অন্ধং তমঃ প্রবিশন্তি যেহ সংভূতি মুপাস্তে।
ততো ভুয় ইব তে তমো য অসম্ভুত্যাঃ রতাঃ।।
✍️সরলার্থঃ যারা সকামকর্ম(অর্থাৎ ফলের আশায় কাজ করা,স্বার্থপরতা,লোভ ইত্যাদি) আসক্ত হয় তারা অন্ধকারে প্রবেশ করে এবং যারা "অসম্ভুত্যাং" অর্থাৎ বিধ্বংসী কার্যকলাপে লিপ্ত হয় তারা আরো অন্ধকারে প্রবেশ করেন।
✍️এখানে,
**প্রবিশ্যন্তি- প্রবেশ করে
**সম্ভুতি- সকাম কর্ম
**মু উপাস্তে- সংযুক্ত হওয়া
**রত্যাঃ- আসক্ত হওয়া
👉বিকৃত অর্থ - প্রকৃতির পূজা করলে অন্ধকারে নরকে যাবে,আর কার্যব্রহ্মে মানে মাটি দিয়ে কিছু বানানো, একদম স্পষ্ট, একদম স্পষ্ট ভাবে মূর্তিপূজা নিষিদ্ধ!
✍️(যজুর্বেদ ৩২/৩)
ন তস্য প্রতিমা অস্তি যস্য নাম মহদ্ যশঃ।
হিরণ্যগর্ভ ইত্যেষ মা মা হিংসীদিত্যেষা যস্মান্ন জাত ইত্যেষঃ।।
✍️এখানে যে প্রতিমা শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে তা সংস্কৃত শব্দ প্রতিম এর সাথে 'আ' প্রত্যয় যুক্ত হয়ে। প্রতিম শব্দের অর্থ তুল্য বা সমতুল্য।
এখানে এর সরলার্থ করলে হবে নিরাকার ব্রহ্মের সমতুল্য কেউ নেই।
কিন্তু এখানে ও বলা নেই যে দেব-দেবীর পূজা করা যাবে না। কারণ দেব-দেবী ঈশ্বরেরই সাকার রূপ।
👉ভূল ব্যাখ্যাঃ-তারা এর ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে থাকে এবং তারা যে লাইন ব্যবহার করে তা নিম্নরুপঃ
"ন তস্য প্রতিমা অস্থি"
এবং তাদের কথা হচ্ছে যেহেতু প্রতিমা অর্থ ইংরেজিতে sculpture, icon etc. তাই এখানে বলা হয়েছে ঈশ্বরের কোনো প্রতিমা নেই। যা সম্পূর্ণ ভুলভাবে তারা উপস্থাপন করে থাকে। যদি তাদের এই ব্যবহার করা মাত্র দুইলাইন শব্দ নিই সম্পূর্ণ মন্ত্র থেকে
👉"ন তস্য প্রতিমা অস্থি"
তদাপি এখানে তাদের ব্যাখ্যা কোনোভাবেই আসে না। এখানে এর সরলার্থ হয় ঈশ্বরের সমতুল্য কেউ নেই। কিন্তু তার সাকার রূপকে দেব-দেবী মেনে পূজা নিষিদ্ধ এটা কোথাও নেই৷
♥♥♥আমি জানলাম,
হিন্দুরা মৃতদেহ জ্বালায় কারণ,হিন্দু শাস্ত্রমতে মৃতদেহ প্রকৃতির পঞ্চভূত(পাঁচটি জিনিসে) তৈরী।তাই মৃতদেহকে এই পঞ্চভূতে মেশানোর উদ্দেশ্যেই জ্বালিয়ে ভস্ম নদীতে ফেলা হয়।তবে মুখাগ্নি করে মৃতদেহ মাটিতে সমাধি করারও বিধান আছে।
আর মৃতদেহের কোন অনুভূতি নেই।পুড়ালে যা,মাটিতে দিলেও তা।
তাই পুড়িয়ে আগুনে মেশানোকে অমানবিক আর মাটিতে পঁচিয়ে,দুর্গন্ধযুক্ত করে মেশানোকে মানবিক বলা যাবে না।দুটোই সমান।
♥♥♥আমি জানলাম,
বেদে গোহত্যা, গোমাংস খাওয়া নিষেধ।তাই হিন্দুরা গোমাংস খায় না।গোহত্যা করে না।
♥♥♥আমি জানলাম,
হিন্দুদের জীবনের মূল লক্ষ্য মোক্ষ লাভ বা মুক্তি লাভ।সুখ দূঃখের উর্দ্ধে উঠে পরমাত্মা(ঈশ্বরের) কাছে যাওয়া।ঈশ্বর লাভ করা।
আমি তো বেদ,গীতা,উপনিষদ পড়ে জেনে গেলাম!!
বেঁচে গেলাম অধঃপতনের হাত থেকে!!
কিন্তু বাকি হিন্দুরা??
আসুন, সনাতনী হিন্দু ভাইবোনেরা নিজেরা ধর্মজ্ঞান অর্জন করি।বাচ্চাদের শিখাই।আর কোন হিন্দু যেনো জ্ঞানপাপী না হয়।
স্বর্গের লোভ নয়,নয় নরকের ভয়।
সৃষ্টিকর্তাকে ভয় নয়,ভালোবাসুন।
আসুন মুক্তির পথে সত্য,শান্তি,সুন্দর সনাতনে।
Collected
জয় মা 🙏🙏🙏
0 notes