#ওমর সা
Explore tagged Tumblr posts
Text
ওমর ( রাঃ ) এর স্মৃতি ও দুনিয়ায় চাওয়া পাওয়া । আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সা...
youtube
0 notes
Text
ঈমানের ওপর অবিচল থাকার উপায়
Ways To Stand Firm On Faith
youtube
youtube
youtube
youtube
ঈমানের ওপর অবিচল থাকার উপায়
ইসলাম যেকোনো পরিস্থিতিতে হকের ওপর অবিচল থাকার প্রতি বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়। কারণ মহান আল্লাহ মুমিন বান্দাদের যেকোনো পরিস্থিতিতে হকের ওপর অবিচল থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। এবং অবিশ্বাসীদের কথায় বিভ্রান্ত না হয়ে একনিষ্ঠভাবে দ্বিন পালন ও প্রচার অব্যাহত রাখার আদেশ করেছেন। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তাদের কাছে জ্ঞান আসার পর শুধু পারস্পরিক বিদ্বেষবশত তারা নিজেদের মধ্যে মতভেদ ঘটায়।
এক নির্ধারিতকাল পর্যন্ত অবকাশ সম্পর্কে তোমার রবের পূর্ব সিদ্ধান্ত না থাকলে তাদের বিষয়ে ফায়সালা হয়ে যেত। তাদের পর যারা কিতাবের উত্তরাধিকারী হয়েছে তারা কোরআন সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর সন্দেহে রয়েছে। এ কারণে তুমি আহ্বান করো এবং অবিচল থাকো যেমন তুমি আদিষ্ট হয়েছ। আর তুমি তাদের খেয়াল-খুশির অনুসরণ কোরো না এবং বলো, ‘আল্লাহ যে কিতাব অবতীর্ণ করেছেন আমি তাতে ঈমান এনেছি এবং তোমাদের মধ্যে ন্যায়বিচার করতে আমি আদিষ্ট হয়েছি।
আল্লাহ আমাদের রব এবং তোমাদের রব। আমাদের কর্ম আমাদের এবং তোমাদের কর্ম তোমাদের; আমাদের ও তোমাদের মধ্যে কোনো বিবাদ-বিসংবাদ নেই; আল্লাহ আমাদের একত্র করবেন এবং প্রত্যাবর্তন তাঁরই কাছে। ’ (সুরা : আশ-শুরা, আয়াত : ১৪-১৫)
উপরোক্ত আয়াতে মহান আল্লাহ নবীজি (সা.)-কে উদ্দেশ করে দ্বিনের ওপর অবিচল থেকে দ্বিনপ্রচার অব্যাহত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। তাফসিরবিদরা এর ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, (অবিচল থাকার অর্থ হলো) যাবতীয় বিশ্বাস, কর্ম, চরিত্র, অভ্যাস ও সামাজিকতার যথাযথ সমতা ও ভারসাম্য কায়েম রাখুন।
কোনো দিকেই যেন কোনো রকম বাড়াবাড়ি না হয়। কাফেদের সন্তুষ্ট করার জন্য এই দ্বিনের মধ্যে কোনো রদবদল ও হ্রাস-বৃদ্ধি করবেন না। ‘কিছু নাও এবং কিছু দাও’ নীতির ভিত্তিতে এই পথভ্রষ্ট লোকদের সঙ্গে কোনো আপস করবেন না। বলাবাহুল্য, এ রকম দৃঢ়তা সহজসাধ্য নয়। এ কারণেই রাসুল (সা.)-কে সাহাবায়ে কেরামদের কেউ জিজ্ঞেস করেছিলেন যে হে আল্লাহর রাসুল, আপনাকে বৃদ্ধ দেখাচ্ছে।
তখন রাসুল (সা.) বলেন, সুরা হুদ আমাকে বৃদ্ধ করে দিয়েছে। সুরা হুদের ১১২ নম্বর আয়াতে এ আদেশ এ ভাষায়ই ব্যক্ত হয়েছে। সেখানেও দ্বিনের ওপর অবিচল থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘সুতরাং যেভাবে তুমি নির্দেশিত হয়েছ সেভাবে তুমি ও তোমার সঙ্গী যারা তাওবা করেছে, সবাই অবিচল থাক। আর সীমালঙ্ঘন করো না। তোমরা যা করছ নিশ্চয় তিনি তার সম্যক দ্রষ্টা। ’ (সুরা হুদ, আয়াত : ১১২)
দ্বিনের ওপর অবিচল থাকা যেমন কঠিন, তার পুরস্কারও তেমন বড়। যারা সর্বাবস্থায় হকের ওপর অবিচল থাকে, তাদের প্রশংসা করে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, নিশ্চয় যারা বলে, ‘আল্লাহই আমাদের রব’ অতঃপর অবিচল থাকে, ফেরেশতারা তাদের কাছে অবতীর্ণ হয় (এবং বলে,) ‘তোমরা ভয় পেয়ো না, দুশ্চিন্তা করো না এবং সেই জান্নাতের সুসংবাদ গ্রহণ করো, তোমাদের যার ওয়াদা দেওয়া হয়েছিল। ’ (সুরা ফুসিসলাত, আয়াত : ৩০)
সুবহানাল্লাহ। এ জন্য আমাদের নবীজি (সা.) সাহাবায়ে কেরামকে ঈমানের ওপর অবিচল থাকার শিক্ষা দিয়েছেন। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, সুফিয়ান ইবনে আবদুল্লাহ আস সাকাফি (রা.) বলেন, আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমাকে ইসলাম সম্পর্কে এমন একটি কথা বলুন যে আমাকে এ সম্পর্কে ‘আপনার পরে’ অন্য কারো কাছে জিজ্ঞেস করতে না হয়। আবু উসামার হাদিসে রয়েছে, আপনি ছাড়া আর কাউকে জিজ্ঞেস করব না। তিনি বলেন, ‘বলো আমি আল্লাহর প্রতি ঈমান আনলাম’, অতঃপর এর ওপর অবিচল থাকো। ’ (মুসলিম, হাদিস : ৬৪)
সাহাবায়ে কেরামের পক্ষ থেকে ‘ইসতিকামাত’ বা অবিচল থাকার বিভিন্ন ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। যেমন—আবু বকর (রা.) বলেন, ইসতেকামাত বা অবিচলতার অর্থ হলো, আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক (অংশীদার) না করা। ওমর (রা.) বলেন, অবিচলতার অর্থ হলো, যেকোনো বিষয়ে আল্লাহর আদেশ-নিষেধ পালন করা এবং শিয়ালের মতো এদিক-সেদিক না যাওয়া। ওসমান (রা.) বলেন, আল্লাহর জন্য একনিষ্ঠভাবে আমল করা। আলী (রা.) বলেন, অবিচলতার মানে হলো, ফরজগুলো গুরুত্বসহ আদায় করা। (মাদারিজুস সালিকিন : ২/১০৪)
অতএব আমাদের উচিত, যেকোনো পরিস্থিতিতে ঈমানের ওপর অবিচল থাকা, সব ক্ষেত্রে আল্লাহর আদেশ ও নবীজি (সা.)-এর সুন্নতকে প্রাধান্য দেওয়া। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে হকের ওপর অবিচল থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
ঈমানের ওপর অবিচল থাকার উপায়
Ways To Stand Firm On Faith
0 notes
Text
ঈমানের ওপর অবিচল থাকার উপায়
Ways To Stand Firm On Faith
youtube
youtube
youtube
youtube
ঈমানের ওপর অবিচল থাকার উপায়
ইসলাম যেকোনো পরিস্থিতিতে হকের ওপর অবিচল থাকার প্রতি বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়। কারণ মহান আল্লাহ মুমিন বান্দাদের যেকোনো পরিস্থিতিতে হকের ওপর অবিচল থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। এবং অবিশ্বাসীদের কথায় বিভ্রান্ত না হয়ে একনিষ্ঠভাবে দ্বিন পালন ও প্রচার অব্যাহত রাখার আদেশ করেছেন। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তাদের কাছে জ্ঞান আসার পর শুধু পারস্পরিক বিদ্বেষবশত তারা নিজেদের মধ্যে মতভেদ ঘটায়।
এক নির্ধারিতকাল পর্যন্ত অবকাশ সম্পর্কে তোমার রবের পূর্ব সিদ্ধান্ত না থাকলে তাদের বিষয়ে ফায়সালা হয়ে যেত। তাদের পর যারা কিতাবের উত্তরাধিকারী হয়েছে তারা কোরআন সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর সন্দেহে রয়েছে। এ কারণে তুমি আহ্বান করো এবং অবিচল থাকো যেমন তুমি আদিষ্ট হয়েছ। আর তুমি তাদের খেয়াল-খুশির অনুসরণ কোরো না এবং বলো, ‘আল্লাহ যে কিতাব অবতীর্ণ করেছেন আমি তাতে ঈমান এনেছি এবং তোমাদের মধ্যে ন্যায়বিচার করতে আমি আদিষ্ট হয়েছি।
আল্লাহ আমাদের রব এবং তোমাদের রব। আমাদের কর্ম আমাদের এবং তোমাদের কর্ম তোমাদের; আমাদের ও তোমাদের মধ্যে কোনো বিবাদ-বিসংবাদ নেই; আল্লাহ আমাদের একত্র করবেন এবং প্রত্যাবর্তন তাঁরই কাছে। ’ (সুরা : আশ-শুরা, আয়াত : ১৪-১৫)
উপরোক্ত আয়াতে মহান আল্লাহ নবীজি (সা.)-কে উদ্দেশ করে দ্বিনের ওপর অবিচল থেকে দ্বিনপ্রচার অব্যাহত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। তাফসিরবিদরা এর ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, (অবিচল থাকার অর্থ হলো) যাবতীয় বিশ্বাস, কর্ম, চরিত্র, অভ্যাস ও সামাজিকতার যথাযথ সমতা ও ভারসাম্য কায়েম রাখুন।
কোনো দিকেই যেন কোনো রকম বাড়াবাড়ি না হয়। কাফেদের সন্তুষ্ট করার জন্য এই দ্বিনের মধ্যে কোনো রদবদল ও হ্রাস-বৃদ্ধি করবেন না। ‘কিছু নাও এবং কিছু দাও’ নীতির ভিত্তিতে এই পথভ্রষ্ট লোকদের সঙ্গে কোনো আপস করবেন না। বলাবাহুল্য, এ রকম দৃঢ়তা সহজসাধ্য নয়। এ কারণেই রাসুল (সা.)-কে সাহাবায়ে কেরামদের কেউ জিজ্ঞেস করেছিলেন যে হে আল্লাহর রাসুল, আপনাকে বৃদ্ধ দেখাচ্ছে।
তখন রাসুল (সা.) বলেন, সুরা হুদ আমাকে বৃদ্ধ করে দিয়েছে। সুরা হুদের ১১২ নম্বর আয়াতে এ আদেশ এ ভাষায়ই ব্যক্ত হয়েছে। সেখানেও দ্বিনের ওপর অবিচল থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘সুতরাং যেভাবে তুমি নির্দেশিত হয়েছ সেভাবে তুমি ও তোমার সঙ্গী যারা তাওবা করেছে, সবাই অবিচল থাক। আর সীমালঙ্ঘন করো না। তোমরা যা করছ নিশ্চয় তিনি তার সম্যক দ্রষ্টা। ’ (সুরা হুদ, আয়াত : ১১২)
দ্বিনের ওপর অবিচল থাকা যেমন কঠিন, তার পুরস্কারও তেমন বড়। যারা সর্বাবস্থায় হকের ওপর অবিচল থাকে, তাদের প্রশংসা করে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, নিশ্চয় যারা বলে, ‘আল্লাহই আমাদের রব’ অতঃপর অবিচল থাকে, ফেরেশতারা তাদের কাছে অবতীর্ণ হয় (এবং বলে,) ‘তোমরা ভয় পেয়ো না, দুশ্চিন্তা করো না এবং সেই জান্নাতের সুসংবাদ গ্রহণ করো, তোমাদের যার ওয়াদা দেওয়া হয়েছিল। ’ (সুরা ফুসিসলাত, আয়াত : ৩০)
সুবহানাল্লাহ। এ জন্য আমাদের নবীজি (সা.) সাহাবায়ে কেরামকে ঈমানের ওপর অবিচল থাকার শিক্ষা দিয়েছেন। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, সুফিয়ান ইবনে আবদুল্লাহ আস সাকাফি (রা.) বলেন, আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমাকে ইসলাম সম্পর্কে এমন একটি কথা বলুন যে আমাকে এ সম্পর্কে ‘আপনার পরে’ অন্য কারো কাছে জিজ্ঞেস করতে না হয়। আবু উসামার হাদিসে রয়েছে, আপনি ছাড়া আর কাউকে জিজ্ঞেস করব না। তিনি বলেন, ‘বলো আমি আল্লাহর প্রতি ঈমান আনলাম’, অতঃপর এর ওপর অবিচল থাকো। ’ (মুসলিম, হাদিস : ৬৪)
সাহাবায়ে কেরামের পক্ষ থেকে ‘ইসতিকামাত’ বা অবিচল থাকার বিভিন্ন ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। যেমন—আবু বকর (রা.) বলেন, ইসতেকামাত বা অবিচলতার অর্থ হলো, আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক (অংশীদার) না করা। ওমর (রা.) বলেন, অবিচলতার অর্থ হলো, যেকোনো বিষয়ে আল্লাহর আদেশ-নিষেধ পালন করা এবং শিয়ালের মতো এদিক-সেদিক না যাওয়া। ওসমান (রা.) বলেন, আল্লাহর জন্য একনিষ্ঠভাবে আমল করা। আলী (রা.) বলেন, অবিচলতার মানে হলো, ফরজগুলো গুরুত্বসহ আদায় করা। (মাদারিজুস সালিকিন : ২/১০৪)
অতএব আমাদের উচিত, যেকোনো পরিস্থিতিতে ঈমানের ওপর অবিচল থাকা, সব ক্ষেত্রে আল্লাহর আদেশ ও নবীজি (সা.)-এর সুন্নতকে প্রাধান্য দেওয়া। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে হকের ওপর অবিচল থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
ঈমানের ওপর অবিচল থাকার উপায়
Ways To Stand Firm On Faith
0 notes
Text
ঈমানের ওপর অবিচল থাকার উপায়
Ways To Stand Firm On Faith
youtube
youtube
youtube
youtube
ঈমানের ওপর অবিচল থাকার উপায়
ইসলাম যেকোনো পরিস্থিতিতে হকের ওপর অবিচল থাকার প্রতি বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়। কারণ মহান আল্লাহ মুমিন বান্দাদের যেকোনো পরিস্থিতিতে হকের ওপর অবিচল থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। এবং অবিশ্বাসীদের কথায় বিভ্রান্ত না হয়ে একনিষ্ঠভাবে দ্বিন পালন ও প্রচার অব্যাহত রাখার আদেশ করেছেন। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তাদের কাছে জ্ঞান আসার পর শুধু পারস্পরিক বিদ্বেষবশত তারা নিজেদের মধ্যে মতভেদ ঘটায়।
এক নির্ধারিতকাল পর্যন্ত অবকাশ সম্পর্কে তোমার রবের পূর্ব সিদ্ধান্ত না থাকলে তাদের বিষয়ে ফায়সালা হয়ে যেত। তাদের পর যারা কিতাবের উত্তরাধিকারী হয়েছে তারা কোরআন সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর সন্দেহে রয়েছে। এ কারণে তুমি আহ্বান করো এবং অবিচল থাকো যেমন তুমি আদিষ্ট হয়েছ। আর তুমি তাদের খেয়াল-খুশির অনুসরণ কোরো না এবং বলো, ‘আল্লাহ যে কিতাব অবতীর্ণ করেছেন আমি তাতে ঈমান এনেছি এবং তোমাদের মধ্যে ন্যায়বিচার করতে আমি আদিষ্ট হয়েছি।
আল্লাহ আমাদের রব এবং তোমাদের রব। আমাদের কর্ম আমাদের এবং তোমাদের কর্ম তোমাদের; আমাদের ও তোমাদের মধ্যে কোনো বিবাদ-বিসংবাদ নেই; আল্লাহ আমাদের একত্র করবেন এবং প্রত্যাবর্তন তাঁরই কাছে। ’ (সুরা : আশ-শুরা, আয়াত : ১৪-১৫)
উপরোক্ত আয়াতে মহান আল্লাহ নবীজি (সা.)-কে উদ্দেশ করে দ্বিনের ওপর অবিচল থেকে দ্বিনপ্রচার অব্যাহত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। তাফসিরবিদরা এর ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, (অবিচল থাকার অর্থ হলো) যাবতীয় বিশ্বাস, কর্ম, চরিত্র, অভ্যাস ও সামাজিকতার যথাযথ সমতা ও ভারসাম্য কায়েম রাখুন।
কোনো দিকেই যেন কোনো রকম বাড়াবাড়ি না হয়। কাফেদের সন্তুষ্ট করার জন্য এই দ্বিনের মধ্যে কোনো রদবদল ও হ্রাস-বৃদ্ধি করবেন না। ‘কিছু নাও এবং কিছু দাও’ নীতির ভিত্তিতে এই পথভ্রষ্ট লোকদের সঙ্গে কোনো আপস করবেন না। বলাবাহুল্য, এ রকম দৃঢ়তা সহজসাধ্য নয়। এ কারণেই রাসুল (সা.)-কে সাহাবায়ে কেরামদের কেউ জিজ্ঞেস করেছিলেন যে হে আল্লাহর রাসুল, আপনাকে বৃদ্ধ দেখাচ্ছে।
তখন রাসুল (সা.) বলেন, সুরা হুদ আমাকে বৃদ্ধ করে দিয়েছে। সুরা হুদের ১১২ নম্বর আয়াতে এ আদেশ এ ভাষায়ই ব্যক্ত হয়েছে। সেখানেও দ্বিনের ওপর অবিচল থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘সুতরাং যেভাবে তুমি নির্দেশিত হয়েছ সেভাবে তুমি ও তোমার সঙ্গী যারা তাওবা করেছে, সবাই অবিচল থাক। আর সীমালঙ্ঘন করো না। তোমরা যা করছ নিশ্চয় তিনি তার সম্যক দ্রষ্টা। ’ (সুরা হুদ, আয়াত : ১১২)
দ্বিনের ওপর অবিচল থাকা যেমন কঠিন, তার পুরস্কারও তেমন বড়। যারা সর্বাবস্থায় হকের ওপর অবিচল থাকে, তাদের প্রশংসা করে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, নিশ্চয় যারা বলে, ‘আল্লাহই আমাদের রব’ অতঃপর অবিচল থাকে, ফেরেশতারা তাদের কাছে অবতীর্ণ হয় (এবং বলে,) ‘তোমরা ভয় পেয়ো না, দুশ্চিন্তা করো না এবং সেই জান্নাতের সুসংবাদ গ্রহণ করো, তোমাদের যার ওয়াদা দেওয়া হয়েছিল। ’ (সুরা ফুসিসলাত, আয়াত : ৩০)
সুবহানাল্লাহ। এ জন্য আমাদের নবীজি (সা.) সাহাবায়ে কেরামকে ঈমানের ওপর অবিচল থাকার শিক্ষা দিয়েছেন। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, সুফিয়ান ইবনে আবদুল্লাহ আস সাকাফি (রা.) বলেন, আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমাকে ইসলাম সম্পর্কে এমন একটি কথা বলুন যে আমাকে এ সম্পর্কে ‘আপনার পরে’ অন্য কারো কাছে জিজ্ঞেস করতে না হয়। আবু উসামার হাদিসে রয়েছে, আপনি ছাড়া আর কাউকে জিজ্ঞেস করব না। তিনি বলেন, ‘বলো আমি আল্লাহর প্রতি ঈমান আনলাম’, অতঃপর এর ওপর অবিচল থাকো। ’ (মুসলিম, হাদিস : ৬৪)
সাহাবায়ে কেরামের পক্ষ থেকে ‘ইসতিকামাত’ বা অবিচল থাকার বিভিন্ন ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। যেমন—আবু বকর (রা.) বলেন, ইসতেকামাত বা অবিচলতার অর্থ হলো, আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক (অংশীদার) না করা। ওমর (রা.) বলেন, অবিচলতার অর্থ হলো, যেকোনো বিষয়ে আল্লাহর আদেশ-নিষেধ পালন করা এবং শিয়ালের মতো এদিক-সেদিক না যাওয়া। ওসমান (রা.) বলেন, আল্লাহর জন্য একনিষ্ঠভাবে আমল করা। আলী (রা.) বলেন, অবিচলতার মানে হলো, ফরজগুলো গুরুত্বসহ আদায় করা। (মাদারিজুস সালিকিন : ২/১০৪)
অতএব আমাদের উচিত, যেকোনো পরিস্থিতিতে ঈমানের ওপর অবিচল থাকা, সব ক্ষেত্রে আল্লাহর আদেশ ও নবীজি (সা.)-এর সুন্নতকে প্রাধান্য দেওয়া। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে হকের ওপর অবিচল থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
ঈমানের ওপর অবিচল থাকার উপায়
Ways To Stand Firm On Faith
0 notes
Text
ঈমানের ওপর অবিচল থাকার উপায়
Ways To Stand Firm On Faith
youtube
youtube
youtube
youtube
ঈমানের ওপর অবিচল থাকার উপায়
ইসলাম যেকোনো পরিস্থিতিতে হকের ওপর অবিচল থাকার প্রতি বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়। কারণ মহান আল্লাহ মুমিন বান্দাদের যেকোনো পরিস্থিতিতে হকের ওপর অবিচল থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। এবং অবিশ্বাসীদের কথায় বিভ্রান্ত না হয়ে একনিষ্ঠভাবে দ্বিন পালন ও প্রচার অব্যাহত রাখার আদেশ করেছেন। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তাদের কাছে জ্ঞান আসার পর শুধু পারস্পরিক বিদ্বেষবশত তারা নিজেদের মধ্যে মতভেদ ঘটায়।
এক নির্ধারিতকাল পর্যন্ত অবকাশ সম্পর্কে তোমার রবের পূর্ব সিদ্ধান্ত না থাকলে তাদের বিষয়ে ফায়সালা হয়ে যেত। তাদের পর যারা কিতাবের উত্তরাধিকারী হয়েছে তারা কোরআন সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর সন্দেহে রয়েছে। এ কারণে তুমি আহ্বান করো এবং অবিচল থাকো যেমন তুমি আদিষ্ট হয়েছ। আর তুমি তাদের খেয়াল-খুশির অনুসরণ কোরো না এবং বলো, ‘আল্লাহ যে কিতাব অবতীর্ণ করেছেন আমি তাতে ঈমান এনেছি এবং তোমাদের মধ্যে ন্যায়বিচার করতে আমি আদিষ্ট হয়েছি।
আল্লাহ আমাদের রব এবং তোমাদের রব। আমাদের কর্ম আমাদের এবং তোমাদের কর্ম তোমাদের; আমাদের ও তোমাদের মধ্যে কোনো বিবাদ-বিসংবাদ নেই; আল্লাহ আমাদের একত্র করবেন এবং প্রত্যাবর্তন তাঁরই কাছে। ’ (সুরা : আশ-শুরা, আয়াত : ১৪-১৫)
উপরোক্ত আয়াতে মহান আল্লাহ নবীজি (সা.)-কে উদ্দেশ করে দ্বিনের ওপর অবিচল থেকে দ্বিনপ্রচার অব্যাহত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। তাফসিরবিদরা এর ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, (অবিচল থাকার অর্থ হলো) যাবতীয় বিশ্বাস, কর্ম, চরিত্র, অভ্যাস ও সামাজিকতার যথাযথ সমতা ও ভারসাম্য কায়েম রাখুন।
কোনো দিকেই যেন কোনো রকম বাড়াবাড়ি না হয়। কাফেদের সন্তুষ্ট করার জন্য এই দ্বিনের মধ্যে কোনো রদবদল ও হ্রাস-বৃদ্ধি করবেন না। ‘কিছু নাও এবং কিছু দাও’ নীতির ভিত্তিতে এই পথভ্রষ্ট লোকদের সঙ্গে কোনো আপস করবেন না। বলাবাহুল্য, এ রকম দৃঢ়তা সহজসাধ্য নয়�� এ কারণেই রাসুল (সা.)-কে সাহাবায়ে কেরামদের কেউ জিজ্ঞেস করেছিলেন যে হে আল্লাহর রাসুল, আপনাকে বৃদ্ধ দেখাচ্ছে।
তখন রাসুল (সা.) বলেন, সুরা হুদ আমাকে বৃদ্ধ করে দিয়েছে। সুরা হুদের ১১২ নম্বর আয়াতে এ আদেশ এ ভাষায়ই ব্যক্ত হয়েছে। সেখানেও দ্বিনের ওপর অবিচল থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘সুতরাং যেভাবে তুমি নির্দেশিত হয়েছ সেভাবে তুমি ও তোমার সঙ্গী যারা তাওবা করেছে, সবাই অবিচল থাক। আর সীমালঙ্ঘন করো না। তোমরা যা করছ নিশ্চয় তিনি তার সম্যক দ্রষ্টা। ’ (সুরা হুদ, আয়াত : ১১২)
দ্বিনের ওপর অবিচল থাকা যেমন কঠিন, তার পুরস্কারও তেমন বড়। যারা সর্বাবস্থায় হকের ওপর অবিচল থাকে, তাদের প্রশংসা করে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, নিশ্চয় যারা বলে, ‘আল্লাহই আমাদের রব’ অতঃপর অবিচল থাকে, ফেরেশতারা তাদের কাছে অবতীর্ণ হয় (এবং বলে,) ‘তোমরা ভয় পেয়ো না, দুশ্চিন্তা করো না এবং সেই জান্নাতের সুসংবাদ গ্রহণ করো, তোমাদের যার ওয়াদা দেওয়া হয়েছিল। ’ (সুরা ফুসিসলাত, আয়াত : ৩০)
সুবহানাল্লাহ। এ জন্য আমাদের নবীজি (সা.) সাহাবায়ে কেরামকে ঈমানের ওপর অবিচল থাকার শিক্ষা দিয়েছেন। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, সুফিয়ান ইবনে আবদুল্লাহ আস সাকাফি (রা.) বলেন, আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমাকে ইসলাম সম্পর্কে এমন একটি কথা বলুন যে আমাকে এ সম্পর্কে ‘আপনার পরে’ অন্য কারো কাছে জিজ্ঞেস করতে না হয়। আবু উসামার হাদিসে রয়েছে, আপনি ছাড়া আর কাউকে জিজ্ঞেস করব না। তিনি বলেন, ‘বলো আমি আল্লাহর প্রতি ঈমান আনলাম’, অতঃপর এর ওপর অবিচল থাকো। ’ (মুসলিম, হাদিস : ৬৪)
সাহাবায়ে কেরামের পক্ষ থেকে ‘ইসতিকামাত’ বা অবিচল থাকার বিভিন্ন ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। যেমন—আবু বকর (রা.) বলেন, ইসতেকামাত বা অবিচলতার অর্থ হলো, আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক (অংশীদার) না করা। ওমর (রা.) বলেন, অবিচলতার অর্থ হলো, যেকোনো বিষয়ে আল্লাহর আদেশ-নিষেধ পালন করা এবং শিয়ালের মতো এদিক-সেদিক না যাওয়া। ওসমান (রা.) বলেন, আল্লাহর জন্য একনিষ্ঠভাবে আমল করা। আলী (রা.) বলেন, অবিচলতার মানে হলো, ফরজগুলো গুরুত্বসহ আদায় করা। (মাদারিজুস সালিকিন : ২/১০৪)
অতএব আমাদের উচিত, যেকোনো পরিস্থিতিতে ঈমানের ওপর অবিচল থাকা, সব ক্ষেত্রে আল্লাহর আদেশ ও নবীজি (সা.)-এর সুন্নতকে প্রাধান্য দেওয়া। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে হকের ওপর অবিচল থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
ঈমানের ওপর অবিচল থাকার উপায়
Ways To Stand Firm On Faith
0 notes
Text
ঈমানের ওপর অবিচল থাকার উপায়
Ways To Stand Firm On Faith
youtube
youtube
youtube
youtube
ঈমানের ওপর অবিচল থাকার উপায়
ইসলাম যেকোনো পরিস্থিতিতে হকের ওপর অবিচল থাকার প্রতি বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়। কারণ মহান আল্লাহ মুমিন বান্দাদের যেকোনো পরিস্থিতিতে হকের ওপর অবিচল থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। এবং অবিশ্বাসীদের কথায় বিভ্রান্ত না হয়ে একনিষ্ঠভাবে দ্বিন পালন ও প্রচার অব্যাহত রাখার আদেশ করেছেন। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তাদের কাছে জ্ঞান আসার পর শুধু পারস্পরিক বিদ্বেষবশত তারা নিজেদের মধ্যে মতভেদ ঘটায়।
এক নির্ধারিতকাল পর্যন্ত অবকাশ সম্পর্কে তোমার রবের পূর্ব সিদ্ধান্ত না থাকলে তাদের বিষয়ে ফায়সালা হয়ে যেত। তাদের পর যারা কিতাবের উত্তরাধিকারী হয়েছে তারা কোরআন সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর সন্দেহে রয়েছে। এ কারণে তুমি আহ্বান করো এবং অবিচল থাকো যেমন তুমি আদিষ্ট হয়েছ। আর তুমি তাদের খেয়াল-খুশির অনুসরণ কোরো না এবং বলো, ‘আল্লাহ যে কিতাব অবতীর্ণ করেছেন আমি তাতে ঈমান এনেছি এবং তোমাদের মধ্যে ন্যায়বিচার করতে আমি আদিষ্ট হয়েছি।
আল্লাহ আমাদের রব এবং তোমাদের রব। আমাদের কর্ম আমাদের এবং তোমাদের কর্ম তোমাদের; আমাদের ও তোমাদের মধ্যে কোনো বিবাদ-বিসংবাদ নেই; আল্লাহ আমাদের একত্র করবেন এবং প্রত্যাবর্তন তাঁরই কাছে। ’ (সুরা : আশ-শুরা, আয়াত : ১৪-১৫)
উপরোক্ত আয়াতে মহান আল্লাহ নবীজি (সা.)-কে উদ্দেশ করে দ্বিনের ওপর অবিচল থেকে দ্বিনপ্রচার অব্যাহত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। তাফসিরবিদরা এর ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, (অবিচল থাকার অর্থ হলো) যাবতীয় বিশ্বাস, কর্ম, চরিত্র, অভ্যাস ও সামাজিকতার যথাযথ সমতা ও ভারসাম্য কায়েম রাখুন।
কোনো দিকেই যেন কোনো রকম বাড়াবাড়ি না হয়। কাফেদের সন্তুষ্ট করার জন্য এই দ্বিনের মধ্যে কোনো রদবদল ও হ্রাস-বৃদ্ধি করবেন না। ‘কিছু নাও এবং কিছু দাও’ নীতির ভিত্তিতে এই পথভ্রষ্ট লোকদের সঙ্গে কোনো আপস করবেন না। বলাবাহুল্য, এ রকম দৃঢ়তা সহজসাধ্য নয়। এ কারণেই রাসুল (সা.)-কে সাহাবায়ে কেরামদের কেউ জিজ্ঞেস করেছিলেন যে হে আল্লাহর রাসুল, আপনাকে বৃদ্ধ দেখাচ্ছে।
তখন রাসুল (সা.) বলেন, সুরা হুদ আমাকে বৃদ্ধ করে দিয়েছে। সুরা হুদের ১১২ নম্বর আয়াতে এ আদেশ এ ভাষায়ই ব্যক্ত হয়েছে। সেখানেও দ্বিনের ওপর অবিচল থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘সুতরাং যেভাবে তুমি নির্দেশিত হয়েছ সেভাবে তুমি ও তোমার সঙ্গী যারা তাওবা করেছে, সবাই অবিচল থাক। আর সীমালঙ্ঘন করো না। তোমরা যা করছ নিশ্চয় তিনি তার সম্যক দ্রষ্টা। ’ (সুরা হুদ, আয়াত : ১১২)
দ্বিনের ওপর অবিচল থাকা যেমন কঠিন, তার পুরস্কারও তেমন বড়। যারা সর্বাবস্থায় হকের ওপর অবিচল থাকে, তাদের প্রশংসা করে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, নিশ্চয় যারা বলে, ‘আল্লাহই আমাদের রব’ অতঃপর অবিচল থাকে, ফেরেশতারা তাদের কাছে অবতীর্ণ হয় (এবং বলে,) ‘তোমরা ভয় পেয়ো না, দুশ্চিন্তা করো না এবং সেই জান্নাতের সুসংবাদ গ্রহণ করো, তোমাদের যার ওয়াদা দেওয়া হয়েছিল। ’ (সুরা ফুসিসলাত, আয়াত : ৩০)
সুবহানাল্লাহ। এ জন্য আমাদের নবীজি (সা.) সাহাবায়ে কেরামকে ঈমানের ওপর অবিচল থাকার শিক্ষা দিয়েছেন। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, সুফিয়ান ইবনে আবদুল্লাহ আস সাকাফি (রা.) বলেন, আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমাকে ইসলাম সম্পর্কে এমন একটি কথা বলুন যে আমাকে এ সম্পর্কে ‘আপনার পরে’ অন্য কারো কাছে জিজ্ঞেস করতে না হয়। আবু উসামার হাদিসে রয়েছে, আপনি ছাড়া আর কাউকে জিজ্ঞেস করব না। তিনি বলেন, ‘বলো আমি আল্লাহর প্রতি ঈমান আনলাম’, অতঃপর এর ওপর অবিচল থাকো। ’ (মুসলিম, হাদিস : ৬৪)
সাহাবায়ে কেরামের পক্ষ থেকে ‘ইসতিকামাত’ বা অবিচল থাকার বিভিন্ন ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। যেমন—আবু বকর (রা.) বলেন, ইসতেকামাত বা অবিচলতার অর্থ হলো, আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক (অংশীদার) না করা। ওমর (রা.) বলেন, অবিচলতার অর্থ হলো, যেকোনো বিষয়ে আল্লাহর আদেশ-নিষেধ পালন করা এবং শিয়ালের মতো এদিক-সেদিক না যাওয়া। ওসমান (রা.) বলেন, আল্লাহর জন্য একনিষ্ঠভাবে আমল করা। আলী (রা.) বলেন, অবিচলতার মানে হলো, ফরজগুলো গুরুত্বসহ আদায় করা। (মাদারিজুস সালিকিন : ২/১০৪)
অতএব আমাদের উচিত, যেকোনো পরিস্থিতিতে ঈমানের ওপর অবিচল থাকা, সব ক্ষেত্রে আল্লাহর আদেশ ও নবীজি (সা.)-এর সুন্নতকে প্রাধান্য দেওয়া। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে হকের ওপর অবিচল থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
ঈমানের ওপর অবিচল থাকার উপায়
Ways To Stand Firm On Faith
0 notes
Text
ঈমানের ওপর অবিচল থাকার উপায়
Ways To Stand Firm On Faith
youtube
youtube
youtube
youtube
ঈমানের ওপর অবিচল থাকার উপায়
ইসলাম যেকোনো পরিস্থিতিতে হকের ওপর অবিচল থাকার প্রতি বিশেষভাবে গুরুত্ব দেয়। কারণ মহান আল্লাহ মুমিন বান্দাদের যেকোনো পরিস্থিতিতে হকের ওপর অবিচল থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। এবং অবিশ্বাসীদের কথায় বিভ্রান্ত না হয়ে একনিষ্ঠভাবে দ্বিন পালন ও প্রচার অব্যাহত রাখার আদেশ করেছেন। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তাদের কাছে জ্ঞান আসার পর শুধু পারস্পরিক বিদ্বেষবশত তারা নিজেদের মধ্যে মতভেদ ঘটায়।
এক নির্ধারিতকাল পর্যন্ত অবকাশ সম্পর্কে তোমার রবের পূর্ব সিদ্ধান্ত না থাকলে তাদের বিষয়ে ফায়সালা হয়ে যেত। তাদের পর যারা কিতাবের উত্তরাধিকারী হয়েছে তারা কোরআন সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর সন্দেহে রয়েছে। এ কারণে তুমি আহ্বান করো এবং অবিচল থাকো যেমন তুমি আদিষ্ট হয়েছ। আর তুমি তাদের খেয়াল-খুশির অনুসরণ কোরো না এবং বলো, ‘আল্লাহ যে কিতাব অবতীর্ণ করেছেন আমি তাতে ঈমান এনেছি এবং তোমাদের মধ্যে ন্যায়বিচার করতে আমি আদিষ্ট হয়েছি।
আল্লাহ আমাদের রব এবং তোমাদের রব। আমাদের কর্ম আমাদের এবং তোমাদের কর্ম তোমাদের; আমাদের ও তোমাদের মধ্যে কোনো বিবাদ-বিসংবাদ নেই; আল্লাহ আমাদের একত্র করবেন এবং প্রত্যাবর্তন তাঁরই কাছে। ’ (সুরা : আশ-শুরা, আয়াত : ১৪-১৫)
উপরোক্ত আয়াতে মহান আল্লাহ নবীজি (সা.)-কে উদ্দেশ করে দ্বিনের ওপর অবিচল থেকে দ্বিনপ্রচার অব্যাহত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। তাফসিরবিদরা এর ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, (অবিচল থাকার অর্থ হলো) যাবতীয় বিশ্বাস, কর্ম, চরিত্র, অভ্যাস ও সামাজিকতার যথাযথ সমতা ও ভারসাম্য কায়েম রাখুন।
কোনো দিকেই যেন কোনো রকম বাড়াবাড়ি না হয়। কাফেদের সন্তুষ্ট করার জন্য এই দ্বিনের মধ্যে কোনো রদবদল ও হ্রাস-বৃদ্ধি করবেন না। ‘কিছু নাও এবং কিছু দাও’ নীতির ভিত্তিতে এই পথভ্রষ্ট লোকদের সঙ্গে কোনো আপস করবেন না। বলাবাহুল্য, এ রকম দৃঢ়তা সহজসাধ্য নয়। এ কারণেই রাসুল (সা.)-কে সাহাবায়ে কেরামদের কেউ জিজ্ঞেস করেছিলেন যে হে আল্লাহর রাসুল, আপনাকে বৃদ্ধ দেখাচ্ছে।
তখন রাসুল (সা.) বলেন, সুরা হুদ আমাকে বৃদ্ধ করে দিয়েছে। সুরা হুদের ১১২ নম্বর আয়াতে এ আদেশ এ ভাষায়ই ব্যক্ত হয়েছে। সেখানেও দ্বিনের ওপর অবিচল থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘সুতরাং যেভাবে তুমি নির্দেশিত হয়েছ সেভাবে তুমি ও তোমার সঙ্গী যারা তাওবা করেছে, সবাই অবিচল থাক। আর সীমালঙ্ঘন করো না। তোমরা যা করছ নিশ্চয় তিনি তার সম্যক দ্রষ্টা। ’ (সুরা হুদ, আয়াত : ১১২)
দ্বিনের ওপর অবিচল থাকা যেমন কঠিন, তার পুরস্কারও তেমন বড়। যারা সর্বাবস্থায় হকের ওপর অবিচল থাকে, তাদের প্রশংসা করে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, নিশ্চয় যারা বলে, ‘আল্লাহই আমাদের রব’ অতঃপর অবিচল থাকে, ফেরেশতারা তাদের কাছে অবতীর্ণ হয় (এবং বলে,) ‘তোমরা ভয় পেয়ো না, দুশ্চিন্তা করো না এবং সেই জান্নাতের সুসংবাদ গ্রহণ করো, তোমাদের যার ওয়াদা দেওয়া হয়েছিল। ’ (সুরা ফুসিসলাত, আয়াত : ৩০)
সুবহানাল্লাহ। এ জন্য আমাদের নবীজি (সা.) সাহাবায়ে কেরামকে ঈমানের ওপর অবিচল থাকার শিক্ষা দিয়েছেন। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, সুফিয়ান ইবনে আবদুল্লাহ আস সাকাফি (রা.) বলেন, আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমাকে ইসলাম সম্পর্কে এমন একটি কথা বলুন যে আমাকে এ সম্পর্কে ‘আপনার পরে’ অন্য কারো কাছে জিজ্ঞেস করতে না হয়। আবু উসামার হাদিসে রয়েছে, আপনি ছাড়া আর কাউকে জিজ্ঞেস করব না। তিনি বলেন, ‘বলো আমি আল্লাহর প্রতি ঈমান আনলাম’, অতঃপর এর ওপর অবিচল থাকো। ’ (মুসলিম, হাদিস : ৬৪)
সাহাবায়ে কেরামের পক্ষ থেকে ‘ইসতিকামাত’ বা অবিচল থাকার বিভিন্ন ব্যাখ্যা পাওয়া যায়। যেমন—আবু বকর (রা.) বলেন, ইসতেকামাত বা অবিচলতার অর্থ হলো, আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক (অংশীদার) না করা। ওমর (রা.) বলেন, অবিচলতার অর্থ হলো, যেকোনো বিষয়ে আল্লাহর আদেশ-নিষেধ পালন করা এবং শিয়ালের মতো এদিক-সেদিক না যাওয়া। ওসমান (রা.) বলেন, আল্লাহর জন্য একনিষ্ঠভাবে আমল করা। আলী (রা.) বলেন, অবিচলতার মানে হলো, ফরজগুলো গুরুত্বসহ আদায় করা। (মাদারিজুস সালিকিন : ২/১০৪)
অতএব আমাদের উচিত, যেকোনো পরিস্থিতিতে ঈমানের ওপর অবিচল থাকা, সব ক্ষেত্রে আল্লাহর আদেশ ও নবীজি (সা.)-এর সুন্নতকে প্রাধান্য দেওয়া। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে হকের ওপর অবিচল থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
ঈমানের ওপর অবিচল থাকার উপায়
Ways To Stand Firm On Faith
0 notes
Text
লাখো পাঠকের হৃদয় জয় করেছে বইগুলো। আলোকিত করেছে তাদের বিশ্বাস ও অন্তর। একজন মুসলিমকে প্রোডাক্টিভ করে গড়ে তুলতে অবর্থ হাতিয়ার প্রোডাক্টিভ মুসলিম’। রাসূল সা.-এর স্মার্টনেসের ছাঁচে ঢেলে নিজের শৈশব ও যৌবনকে সাজাতে ‘বি স্মার্ট উইথ মুহাম্মাদ ﷺ’ গ্রন্থটি বিশ্বময় খ্যাত। ঈমানকে সন্দেহ-অবিশ্বাসের আঁচড় থেকে দূরে রাখতে ‘প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ’ গল্প ও যুক্তিতে আপনার ঈমানের পাহারাদার হিসেবে কাজ করবে। ‘দ্যা রিভার্টস’ আপনাকে শোনাবে পৃথবীর বিখ্যাত কিছু নবমুসলিমের ইসলামে ফিরে আসার হৃদয়গ্রাহী গল্পগুলো। সিক্রেটস অব জ*য়োনি*জম আপনাকে জানাবে বিশ্বপ্য্যাপী ই*হু*দি সম্রাজ্য ও তাদের গোয়েন্দা তৎপরতার গো*পন ইতিহাস। ‘রিভাইব ইয়োর হার্ট’ আপনাকে এক নতুন সমাজ ও স্বার্থক জীবনের সন্ধান দেবে। ৬টি বইয়ের মোট মূল্য = ১৪৫০ টাকা (ফিক্সড)। একসাথে বা পৃথকভাবে বইগুলো সংগ্রহ করতে পারবেন। অর্ডার করতে আপনার মোবাইল নম্বর আমাদের ইনবক্স করুন। আমাদের টিম আপনার সাথে যোগাযোগ করবে। এক নজরে বইগুলো : ১. প্রোডাক্টিভ মুসলিম লেখক : মোহাম্মাদ ফারিস অনুবাদ : মিরাজ রহমান ও হামিদ সিরাজী পৃষ্ঠা : ২৫৬ মূল্য : ২৮০ টাকা (ফিক্সড) ২. বি স্মার্ট উইথ মুহাম্মাদ ﷺ লেখক : ড. হিশাম আল আওয়াদি অনুবাদ : মাসুদ শরীফ পৃষ্ঠা : ১৪৪ মূল্য : ১৯৫ টাকা (ফিক্সড) ৩. প্যারাডক্সিক্যাল সাজিদ লেখক : আরিফ আজাদ পৃষ্ঠা : ১৬৮ মূল্য : ২২৫ টাকা (ফিক্সড) ৪. দ্যা রিভার্টস : ফিরে আসার গল্প লেখক : সামছুর রহমান ওমর, কানিজ শারমিন সিঁথি পৃষ্ঠা : ২৫৬ মূল্য : ২৬০ টাকা (ফিক্সড) ৫. সিক্রেটস অব জা*য়োনি*জম ট্যাগলাইন : বিশ্বব্যাপী জা*য়ো*নিস্ট ষড়*যন্ত্রের ভেতর-বাহির লেখক : হেনরি ফোর্ড অনুবাদ : ফুয়াদ আল আজাদ পৃষ্ঠ : ২৯৬ মূল্য : ৩০০ টাকা (ফিক্সড) ৬. রিভাইব ইয়োর হার্ট লেখক : উস্তাদ নোমান আলী খান অনুবাদ : মারদিয়া মমতাজ পৃষ্ঠা : ১৪৪ মূল্য : ১৯০ টাকা (ফিক্সড)
#islamicbooks#islam#islamic#islamicbookstore#books#muslim#islamicquotes#islamicbook#quran#bookstagram#reading#islamicart#read#booklover#muslimah#islamicgifts#islamicknowledge#islamicshop#allah#deen#muslimbooks#urdubooks#islamicreminders#islamicpost#muslimkids#sunnah#islamiccenter#bukuislami#islamicbookshop#muslimhomeschool
0 notes
Text
পুরুষের জন্য আংটি বৈধ? আংটি পরা কি জায়েজ?
পুরুষের জন্য আংটি বৈধ: আংটি পরা কি জায়েজ? সামান্য রুপার আংটি ব্যবহার করা জায়েজ। রাসুল (সা.) নিজেও রুপার আংটি ব্যবহার করেছেন। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.)-এর রুপার আংটি তাঁর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তাঁর হাতেই ছিল।
অতঃপর সেটি আবু বকর (রা.)-এর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তাঁর হাতে। এরপর ওমর (রা.)-এর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তাঁর হাতে ছিল। অতঃপর ওসমান (রা.)-এর হাতে এলে একদিন তিনি কূপের কাছে অবস্থানকালে হঠাৎ তাঁর হাত থেকে সেটি কূপে পড়ে যায়। পরে তাঁর নির্দেশে কূপের পানি সম্পূর্ণ নিষ্কাশন করা হয়; কিন্তু সেটি আর পাওয়া যায়নি।
আরও জানুন: রত্ন পাথর শোধন করার নিয়ম ও মন্ত্র জানতে ভিডিওটি দেখুন
#jewelry#tajmahalgemsworldrashifal#youtube#gemstonejewelry#astrologicalsciencedainikrashifal#meshrashi#ajkerrashifalbangla2022today#astrologerdelowerchishti#gemstone#gemstones
0 notes
Text
‘ওয়াও’লিখে বিতর্কে ওমর সানী
‘ওয়াও’লিখে বিতর্কে ওমর সানী
টপ নিউজ ডেস্কঃ দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জয়া আহসান বেশ সক্রিয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। মাঝেমধ্যে নিজের ফটোশুট আপলোড করেন। ফেসবুক ইনস্টাগ্রামে অভিনয় জীবনের খবরা-খবরও দেন। আর প্রিয় তারকার আপডেট জেনে তার ভক্ত-অনুরাগীরাও কৌতূহল মেটান। তবে সম্প্রতি কয়েকটি বোল্ড ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করে বিতর্কের মুখে জয়া। অভিনেত্রীর সেসব ছবি শীতের আমেজে ব্যাপক উষ্ণতা ছড়ায় নেটপাড়ায়। আর সেই ছবিগুলোর…
View On WordPress
0 notes
Text
আল্লাহর সাথে যোগাযোগ করবেন কিভাবে
How to communicate with Allah
youtube
youtube
youtube
নামাজ আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎতুল্য
নামাজে মানুষ আল্লাহর সামনে দাঁড়ায় এবং কিয়ামতের দিনও মানুষ আল্লাহর সামনে দাঁড়াবে। যে ব্যক্তি নামাজে যথাযথভাবে দাঁড়াবে পরকালে আল্লাহর সামনে দাঁড়ানো তার জন্য সহজ হবে। আর যে নামাজে অবহেলা করবে পরকালে আল্লাহর সামনে দাঁড়ানো কঠিন হয়ে যাবে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘এবং রাতের কিছু অংশে তাঁর প্রতি সিজদাবনত হও আর রাতের দীর্ঘ সময় তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করো।
তারা ভালোবাসে পার্থিব জীবনকে এবং তারা পরবর্তী কঠিন দিনকে উপেক্ষা করে চলে।’ (সুরা : দাহর, আয়াত : ২৬-২৭) আর নামাজে আল্লাহর সামনে দাঁড়ানো সুন্দর হবে তখন, যখন ব্যক্তি আল্লাহর সামনে উপস্থিত হওয়ার ভয় করবে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে স্বীয় প্রতিপালকের সামনে উপস্থিত হওয়ার ভয় রাখে এবং প্রবৃত্তি থেকে নিজেকে বিরত রাখে জান্নাতই হবে তার আবাস।’ (সুরা ; নাজিয়াত, আয়াত : ৪০-৪১)
প্রকৃতপক্ষে নামাজ আল্লাহপ্রেমীদের চোখের শীতলতা, তাদের অন্তরের প্রশান্তি, মানসিক তৃপ্তি ও আনন্দ।
আল্লাহপ্রেমীরা যখন নামাজে দাঁড়ায় তখন সেসব দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত হয়ে যায়। ঠিক যেমন কোনো রণক্লান্ত যোদ্ধা ঘরে ফেরার পর ভারমুক্ত হয়ে যায়। নামাজ যার জন্য চোখের শীতলতা, তার কাছে নামাজের চেয়ে প্রিয় ও অধিক মূল্যবান আর কিছু নেই। তার প্রত্যাশা থাকে নামাজেই তার জীবন কেটে যাক।
সে নামাজ ছেড়ে যায়, কিন্তু নামাজে ফিরতে তার মন উদগ্রীব থাকে। নামাজের মাধ্যমেই আল্লাহর প্রতি বান্দার ভালোবাসার পরিমাণ পরিমাপ করা যায় এবং এটি একটি নির্ভুল পরিমাপক। সাহাবায়ে কেরাম (রা.) নামাজেই প্রশান্তি খুঁজে পেতেন। আমর ইবনে উতবা (রা.)-এর আজাদকৃত গোলাম বলেন, গ্রীষ্মকালে প্রচণ্ড এক গরমের দিনে আমরা আমর ইবনে উতবা (রা.)-কে খুঁজতে বের হলাম। আমরা তাঁকে একটি পাহাড়ের ওপর সিজদারত অবস্থায় পেলাম, তখন তাঁকে এক খণ্ড মেঘ ছায়া দিচ্ছিল।
আমরা একবার তাঁর সঙ্গে যুদ্ধাভিযানে বের হয়েছিলাম। রাত জেগে তাঁর নামাজ ও কান্নার কারণে তখন পৃথক কোনো পাহারার ব্যবস্থা করা হয়নি। একবার আমর ইবনে উতবা (রা.) নামাজ আদায় করছিলেন। হঠাৎ আমরা বাঘের গর্জন শুনলাম। আমরা পালিয়ে গেলাম এবং তিনি নামাজে দাঁড়িয়ে রইলেন। তিনি নামাজ ছেড়ে আসলেন না। এরপর আমরা ফিরে এসে বললাম, আপনি কি বাঘ ভয় করেন না? তিনি বলেন, আমি লজ্জাবোধ করি আল্লাহকে ছাড়া অন্য কাউকে ভয় পাওয়াকে। ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) বলতেন, মানুষের কাছ থেকে নামাজের অঙ্গীকার নাও। যদি তারা সন্তুষ্ট থাকে তবে তাদের ছেড়ে দাও আর যদি তারা অসন্তোষ প্রকাশ করে, তবে তাদের শাস্তি দাও। কেননা নামাজের মাধ্যমেই তাঁর ঈমান ও আমলের স্তর পরিমাপ করা যায়।
আল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম
কোরআনে কারিম মহান আল্লাহর কালাম। যখন কোরআন মজিদ তেলাওয়াত করা হয়, তা বান্দার মুখে উচ্চারিত হয় শুধু; কিন্তু কথাগুলো আল্লাহর। তাই যারা তেলাওয়াত শ্রবণ করে তারা যেন সরাসরি আল্লাহর কথা শ্রবণ করে। আল্লাহতায়ালাও বান্দার তেলাওয়াত শ্রবণ করেন এবং নিকটবর্তী ফেরেশতাদের কাছে তেলাওয়াতের প্রশংসা করেন। আল্লাহর সঙ্গে বান্দার যোগাযোগ ও কথোপকথনের বিষয়টি আরও গভীরভাবে উপলব্ধি করা যায় নামাজ আদায়ের মাধ্যমে। নামাজে যখন সুরা ফাতেহা পাঠ করা হয় তখন আল্লাহ বান্দার প্রতিটি আয়াত পাঠের সময় সাড়া দেন।
একজন নামাজি ব্যক্তি দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে মোট বত্রিশ বার সুরা ফাতেহা পাঠ করেন। আল্লাহর সঙ্গে বান্দার সম্পর্ক স্থাপনে নামাজ সেতুস্বরূপ। যেখানে সুরা ফাতেহা পাঠের মাধ্যমে আল্লাহর সঙ্গে বান্দার কথোপকথন শুরু হয়। বিষয়টি অনুধাবন করতে হলে নামাজিকে স্বীয় নামাজে গভীর মনোযোগী হতে হবে। নিবিষ্ট মনে নামাজের রোকনগুলো আদায় করতে হবে। বিশেষ করে সুরা ফাতেহা পাঠসহ অন্য সুরা মেলানো এবং এ সবের মর্ম অনুধাবন করতে হবে। নামাজে বান্দার পাঠকৃত সুরা ফাতেহার প্রতিটি আয়াতে আল্লাহতায়ালা সাড়া দেন।
এ বিষয়ে হাদিসে বলা হয়েছে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ বলেন, আমি নামাজে (সুরা ফাতেহা) আমার ও আমার বান্দাদের মধ্যে অর্ধেক অর্ধেক করে ভাগ করে নিয়েছি। আমার বান্দা যা চায় তাকে তাই দেওয়া হবে। যখন বান্দা (নামাজে) বলে-১. আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন। সমস্ত প্রশংসা উভয় জগতের প্রতিপালক আল্লাহর। তখন আল্লাহ বলেন, বান্দা আমার প্রশংসা করল। ২. যখন বান্দা বলে, আর রাহমানির রাহিম। যিনি পরম করুণাময় অতি দয়ালু। তখন আল্লাহ বলেন, বান্দা আমার গুণগান করল। ৩. যখন বান্দা বলে, মালিকিইয়াওমিদ্দিন। তিনি প্রতিদান দিবসের মালিক। তখন আল্লাহ বলেন, বান্দা আমার মর্যাদা বর্ণনা করল। ৪. যখন বান্দা বলে, ইয়্যাকানাবুদু ওয়া ইয়্যাকানাসতায়িন। আমরা তোমারই ইবাদত করি এবং তোমার কাছেই সাহায্য প্রার্থনা করি। তখন আল্লাহ বলেন, এটা আমার ও আমার বান্দার মধ্যে বিভক্ত এবং বান্দার জন্য তাই রয়েছে যা সে চায়। ৫. যখন বান্দা বলে, ইহদিনাস সিরাতাল মুস্তাকিম। আমাদের সরলপথ দেখাও। ৬. সিরাতল্লাজিনা আনআমতা আলাইহিম। তাদের পথ, যেখানে তুমি নেয়ামত দিয়েছ। ৭. গায়রিল মাগদুবি আলাইহিম ওয়ালাদ্দল্লিন। তাদের পথ নয়, যারা গজবপ্রাপ্ত ও পথভ্রষ্ট। তখন আল্লাহ বলেন, এসব তো আমার বান্দার জন্য। আর আমার বান্দা যা চায় তার জন্য তাই রয়েছে। মুসলিম শরিফ
এভাবে বান্দা যখন নামাজে সুরা ফাতেহা পাঠ করতে থাকে, তখন আল্লাহ প্রতিটি আয়াতের এভাবেই সাড়া দেন। তবে বিষয়টি দুনিয়াতে মানুষের দৃষ্টি ও শ্রবণ ইন্দ্রিয় দ্বারা দেখা ও শোনা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে নামাজে গভীর মনোযোগী হতে হবে। নামাজের গভীর ধ্যান-মগ্নতা বান্দার নামাজও ক্রমে দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হতে থাকে। এতে নামাজ আদায়ে শারীরিকভাবে যত কষ্টই হোক না কেন বান্দা স্বীয় অন্তরে গভীর স্বাদ অনুভব করেন। বান্দার মনোজগতে প্রশান্তির ফোয়ারা বয়ে যায়। মনের ভেতর একধরনের সুখবোধ ছড়িয়ে পড়ে। এই সুখবোধ বান্দাকে গভীরভাবে আলোড়িত করে। পার্থিব দুঃখ কষ্টে থাকলেও বান্দার চোখে মুখে বিরাজ করে একধরনের স্বস্তিভাব।
আল্লাহর কাছে কীভাবে প্রার্থনা করতে হবে সুরা ফাতেহায় বান্দাকে তা শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। সুতরাং সুরা ফাতেহা হলো প্রার্থনা। আর অবশিষ্ট কোরআন যেন প্রার্থনার উত্তর। যেমন বান্দা নামাজে সুরা ফাতেহায় প্রথমে আল্লাহর প্রশংসা করে। অতঃপর তার কাছে হেদায়েতের সরল-সঠিক পথের প্রার্থনা করে। এটুকু হলো প্রার্থনা। এরপর যখন বান্দা সুরা ফাতেহার সঙ্গে অন্য সুরা মেলায় তখন তা হয়ে যায় আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রার্থনার উত্তর। যেমন সুরা ফাতেহায় আল্লাহর কাছে হেদায়েতের এমন সরল-সঠিক পথের প্রার্থনা করা হয়েছে, যে পথে চলতে পারলে দুনিয়াতে সুখ-শান্তি এবং পরকালে জান্নাত লাভ করা যাবে। সেটি কোন পথ? আল্লাহ অবশিষ্ট কোরআনে সেই পথের সন্ধান দিয়েছেন। ওই পথে চলার বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন। মানবজীবনের প্রতিটি অনুষঙ্গ ও প্রয়োজনীয় সমস্যার সমাধান দিয়েছেন তাতে।
ইসলামি স্কলারদের মতে, গভীর ধ্যান-মগ্নে আল্লাহকে সামনে উপস্থিত ভেবে নামাজ আদায় করলে বান্দা স্বীয় মানসকল্পে আল্লাহর উপস্থিতি অনুভব করতে পারবে। সুরা ফাতেহার প্রতিউত্তরে আল্লাহর কথা হৃদয় দিয়ে শ্রবণ করতে পারবে। আর এতে নামাজ প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে।
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
আল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম
Communication With Allah
0 notes
Text
আল্লাহর সাথে যোগাযোগ করবেন কিভাবে
How to communicate with Allah
youtube
youtube
youtube
নামাজ আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎতুল্য
নামাজে মানুষ আল্লাহর সামনে দাঁড়ায় এবং কিয়ামতের দিনও মানুষ আল্লাহর সামনে দাঁড়াবে। যে ব্যক্তি নামাজে যথাযথভাবে দাঁড়াবে পরকালে আল্লাহর সামনে দাঁড়ানো তার জন্য সহজ হবে। আর যে নামাজে অবহেলা করবে পরকালে আল্লাহর সামনে দাঁড়ানো কঠিন হয়ে যাবে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘এবং রাতের কিছু অংশে তাঁর প্রতি সিজদাবনত হও আর রাতের দীর্ঘ সময় তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করো।
তারা ভালোবাসে পার্থিব জীবনকে এবং তারা পরবর্তী কঠিন দিনকে উপেক্ষা করে চলে।’ (সুরা : দাহর, আয়াত : ২৬-২৭) আর নামাজে আল্লাহর সামনে দাঁড়ানো সুন্দর হবে তখন, যখন ব্যক্তি আল্লাহর সামনে উপস্থিত হওয়ার ভয় করবে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে স্বীয় প্রতিপালকের সামনে উপস্থিত হওয়ার ভয় রাখে এবং প্রবৃত্তি থেকে নিজেকে বিরত রাখে জান্নাতই হবে তার আবাস।’ (সুরা ; নাজিয়াত, আয়াত : ৪০-৪১)
প্রকৃতপক্ষে নামাজ আল্লাহপ্রেমীদের চোখের শীতলতা, তাদের অন্তরের প্রশান্তি, মানসিক তৃপ্তি ও আনন্দ।
আল্লাহপ্রেমীরা যখন নামাজে দাঁড়ায় তখন সেসব দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত হয়ে যায়। ঠিক যেমন কোনো রণক্লান্ত যোদ্ধা ঘরে ফেরার পর ভারমুক্ত হয়ে যায়। নামাজ যার জন্য চোখের শীতলতা, তার কাছে নামাজের চেয়ে প্রিয় ও অধিক মূল্যবান আর কিছু নেই। তার প্রত্যাশা থাকে নামাজেই তার জীবন কেটে যাক।
সে নামাজ ছেড়ে যায়, কিন্তু নামাজে ফিরতে তার মন উদগ্রীব থাকে। নামাজের মাধ্যমেই আল্লাহর প্রতি বান্দার ভালোবাসার পরিমাণ পরিমাপ করা যায় এবং এটি একটি নির্ভুল পরিমাপক। সাহাবায়ে কেরাম (রা.) নামাজেই প্রশান্তি খুঁজে পেতেন। আমর ইবনে উতবা (রা.)-এর আজাদকৃত গোলাম বলেন, গ্রীষ্মকালে প্রচণ্ড এক গরমের দিনে আমরা আমর ইবনে উতবা (রা.)-কে খুঁজতে বের হলাম। আমরা তাঁকে একটি পাহাড়ের ওপর সিজদারত অবস্থায় পেলাম, তখন তাঁকে এক খণ্ড মেঘ ছায়া দিচ্ছিল।
আমরা একবার তাঁর সঙ্গে যুদ্ধাভিযানে বের হয়েছিলাম। রাত জেগে তাঁর নামাজ ও কান্নার কারণে তখন পৃথক কোনো পাহারার ব্যবস্থা করা হয়নি। একবার আমর ইবনে উতবা (রা.) নামাজ আদায় করছিলেন। হঠাৎ আমরা বাঘের গর্জন শুনলাম। আমরা পালিয়ে গেলাম এবং তিনি নামাজে দাঁড়িয়ে রইলেন। তিনি নামাজ ছেড়ে আসলেন না। এরপর আমরা ফিরে এসে বললাম, আপনি কি বাঘ ভয় করেন না? তিনি বলেন, আমি লজ্জাবোধ করি আল্লাহকে ছাড়া অন্য কাউকে ভয় পাওয়াকে। ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) বলতেন, মানুষের কাছ থেকে নামাজের অঙ্গীকার নাও। যদি তারা সন্তুষ্ট থাকে তবে তাদের ছেড়ে দাও আর যদি তারা অসন্তোষ প্রকাশ করে, তবে তাদের শাস্তি দাও। কেননা নামাজের মাধ্যমেই তাঁর ঈমান ও আমলের স্তর পরিমাপ করা যায়।
আল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম
কোরআনে কারিম মহান আল্লাহর কালাম। যখন কোরআন মজিদ তেলাওয়াত করা হয়, তা বান্দার মুখে উচ্চারিত হয় শুধু; কিন্তু কথাগুলো আল্লাহর। তাই যারা তেলাওয়াত শ্রবণ করে তারা যেন সরাসরি আল্লাহর কথা শ্রবণ করে। আল্লাহতায়ালাও বান্দার তেলাওয়াত শ্রবণ করেন এবং নিকটবর্তী ফেরেশতাদের কাছে তেলাওয়াতের প্রশংসা করেন। আল্লাহর সঙ্গে বান্দার যোগাযোগ ও কথোপকথনের বিষয়টি আরও গভীরভাবে উপলব্ধি করা যায় নামাজ আদায়ের মাধ্যমে। নামাজে যখন সুরা ফাতেহা পাঠ করা হয় তখন আল্লাহ বান্দার প্রতিটি আয়াত পাঠের সময় সাড়া দেন।
একজন নামাজি ব্যক্তি দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে মোট বত্রিশ বার সুরা ফাতেহা পাঠ করেন। আল্লাহর সঙ্গে বান্দার সম্পর্ক স্থাপনে নামাজ সেতুস্বরূপ। যেখানে সুরা ফাতেহা পাঠের মাধ্যমে আল্লাহর সঙ্গে বান্দার কথোপকথন শুরু হয়। বিষয়টি অনুধাবন করতে হলে নামাজিকে স্বীয় নামাজে গভীর মনোযোগী হতে হবে। নিবিষ্ট মনে নামাজের রোকনগুলো আদায় করতে হবে। বিশেষ করে সুরা ফাতেহা পাঠসহ অন্য সুরা মেলানো এবং এ সবের মর্ম অনুধাবন করতে হবে। নামাজে বান্দার পাঠকৃত সুরা ফাতেহার প্রতিটি আয়াতে আল্লাহতায়ালা সাড়া দেন।
এ বিষয়ে হাদিসে বলা হয়েছে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ বলেন, আমি নামাজে (সুরা ফাতেহা) আমার ও আমার বান্দাদের মধ্যে অর্ধেক অর্ধেক করে ভাগ করে নিয়েছি। আমার বান্দা যা চায় তাকে তাই দেওয়া হবে। যখন বান্দা (নামাজে) বলে-১. আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন। সমস্ত প্রশংসা উভয় জগতের প্রতিপালক আল্লাহর। তখন আল্লাহ বলেন, বান্দা আমার প্রশংসা করল। ২. যখন বান্দা বলে, আর রাহমানির রাহিম। যিনি পরম করুণাময় অতি দয়ালু। তখন আল্লাহ বলেন, বান্দা আমার গুণগান করল। ৩. যখন বান্দা বলে, মালিকিইয়াওমিদ্দিন। তিনি প্রতিদান দিবসের মালিক। তখন আল্লাহ বলেন, বান্দা আমার মর্যাদা বর্ণনা করল। ৪. যখন বান্দা বলে, ইয়্যাকানাবুদু ওয়া ইয়্যাকানাসতায়িন। আমরা তোমারই ইবাদত করি এবং তোমার কাছেই সাহায্য প্রার্থনা করি। তখন আল্লাহ বলেন, এটা আমার ও আমার বান্দার মধ্যে বিভক্ত এবং বান্দার জন্য তাই রয়েছে যা সে চায়। ৫. যখন বান্দা বলে, ইহদিনাস সিরাতাল মুস্তাকিম। আমাদের সরলপথ দেখাও। ৬. সিরাতল্লাজিনা আনআমতা আলাইহিম। তাদের পথ, যেখানে তুমি নেয়ামত দিয়েছ। ৭. গায়রিল মাগদুবি আলাইহিম ওয়ালাদ্দল্লিন। তাদের পথ নয়, যারা গজবপ্রাপ্ত ও পথভ্রষ্ট। তখন আল্লাহ বলেন, এসব তো আমার বান্দার জন্য। আর আমার বান্দা যা চায় তার জন্য তাই রয়েছে। মুসলিম শরিফ
এভাবে বান্দা যখন নামাজে সুরা ফাতেহা পাঠ করতে থাকে, তখন আল্লাহ প্রতিটি আয়াতের এভাবেই সাড়া দেন। তবে বিষয়টি দুনিয়াতে মানুষের দৃষ্টি ও শ্রবণ ইন্দ্রিয় দ্বারা দেখা ও শোনা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে নামাজে গভীর মনোযোগী হতে হবে। নামাজের গভীর ধ্যান-মগ্নতা বান্দার নামাজও ক্রমে দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হতে থাকে। এতে নামাজ আদায়ে শারীরিকভাবে যত কষ্টই হোক না কেন বান্দা স্বীয় অন্তরে গভীর স্বাদ অনুভব করেন। বান্দার মনোজগতে প্রশান্তির ফোয়ারা বয়ে যায়। মনের ভেতর একধরনের সুখবোধ ছড়িয়ে পড়ে। এই সুখবোধ বান্দাকে গভীরভাবে আলোড়িত করে। পার্থিব দুঃখ কষ্টে থাকলেও বান্দার চোখে মুখে বিরাজ করে একধরনের স্বস্তিভাব।
আল্লাহর কাছে কীভাবে প্রার্থনা করতে হবে সুরা ফাতেহায় বান্দাকে তা শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। সুতরাং সুরা ফাতেহা হলো প্রার্থনা। আর অবশিষ্ট কোরআন যেন প্রার্থনার উত্তর। যেমন বান্দা নামাজে সুরা ফাতেহায় প্রথমে আল্লাহর প্রশংসা করে। অতঃপর তার কাছে হেদায়েতের সরল-সঠিক পথের প্রার্থনা করে। এটুকু হলো প্রার্থনা। এরপর যখন বান্দা সুরা ফাতেহার সঙ্গে অন্য সুরা মেলায় তখন তা হয়ে যায় আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রার্থনার উত্তর। যেমন সুরা ফাতেহায় আল্লাহর কাছে হেদায়েতের এমন সরল-সঠিক পথের প্রার্থনা করা হয়েছে, যে পথে চলতে পারলে দুনিয়াতে সুখ-শান্তি এবং পরকালে জান্নাত লাভ করা যাবে। সেটি কোন পথ? আল্লাহ অবশিষ্ট কোরআনে সেই পথের সন্ধান দিয়েছেন। ওই পথে চলার বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন। মানবজীবনের প্রতিটি অনুষঙ্গ ও প্রয়োজনীয় সমস্যার সমাধান দিয়েছেন তাতে।
ইসলামি স্কলারদের মতে, গভীর ধ্যান-মগ্নে আল্লাহকে সামনে উপস্থিত ভেবে নামাজ আদায় করলে বান্দা স্বীয় মানসকল্পে আল্লাহর উপস্থিতি অনুভব করতে পারবে। সুরা ফাতেহার প্রতিউত্তরে আল্লাহর কথা হৃদয় দিয়ে শ্রবণ করতে পারবে। আর এতে নামাজ প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে।
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
আল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম
Communication With Allah
0 notes
Text
আল্লাহর সাথে যোগাযোগ করবেন কিভাবে
How to communicate with Allah
youtube
youtube
youtube
নামাজ আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎতুল্য
নামাজে মানুষ আল্লাহর সামনে দাঁড়ায় এবং কিয়ামতের দিনও মানুষ আল্লাহর সামনে দাঁড়াবে। যে ব্যক্তি নামাজে যথাযথভাবে দাঁড়াবে পরকালে আল্লাহর সামনে দাঁড়ানো তার জন্য সহজ হবে। আর যে নামাজে অবহেলা করবে পরকালে আল্লাহর সামনে দাঁড়ানো কঠিন হয়ে যাবে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘এবং রাতের কিছু অংশে তাঁর প্রতি সিজদাবনত হও আর রাতের দীর্ঘ সময় তাঁর পবিত্রতা �� মহিমা ঘোষণা করো।
তারা ভালোবাসে পার্থিব জীবনকে এবং তারা পরবর্তী কঠিন দিনকে উপেক্ষা করে চলে।’ (সুরা : দাহর, আয়াত : ২৬-২৭) আর নামাজে আল্লাহর সামনে দাঁড়ানো সুন্দর হবে তখন, যখন ব্যক্তি আল্লাহর সামনে উপস্থিত হওয়ার ভয় করবে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে স্বীয় প্রতিপালকের সামনে উপস্থিত হওয়ার ভয় রাখে এবং প্রবৃত্তি থেকে নিজেকে বিরত রাখে জান্নাতই হবে তার আবাস।’ (সুরা ; নাজিয়াত, আয়াত : ৪০-৪১)
প্রকৃতপক্ষে নামাজ আল্লাহপ্রেমীদের চোখের শীতলতা, তাদের অন্তরের প্রশান্তি, মানসিক তৃপ্তি ও আনন্দ।
আল্লাহপ্রেমীরা যখন নামাজে দাঁড়ায় তখন সেসব দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত হয়ে যায়। ঠিক যেমন কোনো রণক্লান্ত যোদ্ধা ঘরে ফেরার পর ভারমুক্ত হয়ে যায়। নামাজ যার জন্য চোখের শীতলতা, তার কাছে নামাজের চেয়ে প্রিয় ও অধিক মূল্যবান আর কিছু নেই। তার প্রত্যাশা থাকে নামাজেই তার জীবন কেটে যাক।
সে নামাজ ছেড়ে যায়, কিন্তু নামাজে ফিরতে তার মন উদগ্রীব থাকে। নামাজের মাধ্যমেই আল্লাহর প্রতি বান্দার ভালোবাসার পরিমাণ পরিমাপ করা যায় এবং এটি একটি নির্ভুল পরিমাপক। সাহাবায়ে কেরাম (রা.) নামাজেই প্রশান্তি খুঁজে পেতেন। আমর ইবনে উতবা (রা.)-এর আজাদকৃত গোলাম বলেন, গ্রীষ্মকালে প্রচণ্ড এক গরমের দিনে আমরা আমর ইবনে উতবা (রা.)-কে খুঁজতে বের হলাম। আমরা তাঁকে একটি পাহাড়ের ওপর সিজদারত অবস্থায় পেলাম, তখন তাঁকে এক খণ্ড মেঘ ছায়া দিচ্ছিল।
আমরা একবার তাঁর সঙ্গে যুদ্ধাভিযানে বের হয়েছিলাম। রাত জেগে তাঁর নামাজ ও কান্নার কারণে তখন পৃথক কোনো পাহারার ব্যবস্থা করা হয়নি। একবার আমর ইবনে উতবা (রা.) নামাজ আদায় করছিলেন। হঠাৎ আমরা বাঘের গর্জন শুনলাম। আমরা পালিয়ে গেলাম এবং তিনি নামাজে দাঁড়িয়ে রইলেন। তিনি নামাজ ছেড়ে আসলেন না। এরপর আমরা ফিরে এসে বললাম, আপনি কি বাঘ ভয় করেন না? তিনি বলেন, আমি লজ্জাবোধ করি আল্লাহকে ছাড়া অন্য কাউকে ভয় পাওয়াকে। ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) বলতেন, মানুষের কাছ থেকে নামাজের অঙ্গীকার নাও। যদি তারা সন্তুষ্ট থাকে তবে তাদের ছেড়ে দাও আর যদি তারা অসন্তোষ প্রকাশ করে, তবে তাদের শাস্তি দাও। কেননা নামাজের মাধ্যমেই তাঁর ঈমান ও আমলের স্তর পরিমাপ করা যায়।
আল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম
কোরআনে কারিম মহান আল্লাহর কালাম। যখন কোরআন মজিদ তেলাওয়াত করা হয়, তা বান্দার মুখে উচ্চারিত হয় শুধু; কিন্তু কথাগুলো আল্লাহর। তাই যারা তেলাওয়াত শ্রবণ করে তারা যেন সরাসরি আল্লাহর কথা শ্রবণ করে। আল্লাহতায়ালাও বান্দার তেলাওয়াত শ্রবণ করেন এবং নিকটবর্তী ফেরেশতাদের কাছে তেলাওয়াতের প্রশংসা করেন। আল্লাহর সঙ্গে বান্দার যোগাযোগ ও কথোপকথনের বিষয়টি আরও গভীরভাবে উপলব্ধি করা যায় নামাজ আদায়ের মাধ্যমে। নামাজে যখন সুরা ফাতেহা পাঠ করা হয় তখন আল্লাহ বান্দার প্রতিটি আয়াত পাঠের সময় সাড়া দেন।
একজন নামাজি ব্যক্তি দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে মোট বত্রিশ বার সুরা ফাতেহা পাঠ করেন। আল্লাহর সঙ্গে বান্দার সম্পর্ক স্থাপনে নামাজ সেতুস্বরূপ। যেখানে সুরা ফাতেহা পাঠের মাধ্যমে আল্লাহর সঙ্গে বান্দার কথোপকথন শুরু হয়। বিষয়টি অনুধাবন করতে হলে নামাজিকে স্বীয় নামাজে গভীর মনোযোগী হতে হবে। নিবিষ্ট মনে নামাজের রোকনগুলো আদায় করতে হবে। বিশেষ করে সুরা ফাতেহা পাঠসহ অন্য সুরা মেলানো এবং এ সবের মর্ম অনুধাবন করতে হবে। নামাজে বান্দার পাঠকৃত সুরা ফাতেহার প্রতিটি আয়াতে আল্লাহতায়ালা সাড়া দেন।
এ বিষয়ে হাদিসে বলা হয়েছে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ বলেন, আমি নামাজে (সুরা ফাতেহা) আমার ও আমার বান্দাদের মধ্যে অর্ধেক অর্ধেক করে ভাগ করে নিয়েছি। আমার বান্দা যা চায় তাকে তাই দেওয়া হবে। যখন বান্দা (নামাজে) বলে-১. আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন। সমস্ত প্রশংসা উভয় জগতের প্রতিপালক আল্লাহর। তখন আল্লাহ বলেন, বান্দা আমার প্রশংসা করল। ২. যখন বান্দা বলে, আর রাহমানির রাহিম। যিনি পরম করুণাময় অতি দয়ালু। তখন আল্লাহ বলেন, বান্দা আমার গুণগান করল। ৩. যখন বান্দা বলে, মালিকিইয়াওমিদ্দিন। তিনি প্রতিদান দিবসের মালিক। তখন আল্লাহ বলেন, বান্দা আমার মর্যাদা বর্ণনা করল। ৪. যখন বান্দা বলে, ইয়্যাকানাবুদু ওয়া ইয়্যাকানাসতায়িন। আমরা তোমারই ইবাদত করি এবং তোমার কাছেই সাহায্য প্রার্থনা করি। তখন আল্লাহ বলেন, এটা আমার ও আমার বান্দার মধ্যে বিভক্ত এবং বান্দার জন্য তাই রয়েছে যা সে চায়। ৫. যখন বান্দা বলে, ইহদিনাস সিরাতাল মুস্তাকিম। আমাদের সরলপথ দেখাও। ৬. সিরাতল্লাজিনা আনআমতা আলাইহিম। তাদের পথ, যেখানে তুমি নেয়ামত দিয়েছ। ৭. গায়রিল মাগদুবি আলাইহিম ওয়ালাদ্দল্লিন। তাদের পথ নয়, যারা গজবপ্রাপ্ত ও পথভ্রষ্ট। তখন আল্লাহ বলেন, এসব তো আমার বান্দার জন্য। আর আমার বান্দা যা চায় তার জন্য তাই রয়েছে। মুসলিম শরিফ
এভাবে বান্দা যখন নামাজে সুরা ফাতেহা পাঠ করতে থাকে, তখন আল্লাহ প্রতিটি আয়াতের এভাবেই সাড়া দেন। তবে বিষয়টি দুনিয়াতে মানুষের দৃষ্টি ও শ্রবণ ইন্দ্রিয় দ্বারা দেখা ও শোনা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে নামাজে গভীর মনোযোগী হতে হবে। নামাজের গভীর ধ্যান-মগ্নতা বান্দার নামাজও ক্রমে দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হতে থাকে। এতে নামাজ আদায়ে শারীরিকভাবে যত কষ্টই হোক না কেন বান্দা স্বীয় অন্তরে গভীর স্বাদ অনুভব করেন। বান্দার মনোজগতে প্রশান্তির ফোয়ারা বয়ে যায়। মনের ভেতর একধরনের সুখবোধ ছড়িয়ে পড়ে। এই সুখবোধ বান্দাকে গভীরভাবে আলোড়িত করে। পার্থিব দুঃখ কষ্টে থাকলেও বান্দার চোখে মুখে বিরাজ করে একধরনের স্বস্তিভাব।
আল্লাহর কাছে কীভাবে প্রার্থনা করতে হবে সুরা ফাতেহায় বান্দাকে তা শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। সুতরাং সুরা ফাতেহা হলো প্রার্থনা। আর অবশিষ্ট কোরআন যেন প্রার্থনার উত্তর। যেমন বান্দা নামাজে সুরা ফাতেহায় প্রথমে আল্লাহর প্রশংসা করে। অতঃপর তার কাছে হেদায়েতের সরল-সঠিক পথের প্রার্থনা করে। এটুকু হলো প্রার্থনা। এরপর যখন বান্দা সুরা ফাতেহার সঙ্গে অন্য সুরা মেলায় তখন তা হয়ে যায় আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রার্থনার উত্তর। যেমন সুরা ফাতেহায় আল্লাহর কাছে হেদায়েতের এমন সরল-সঠিক পথের প্রার্থনা করা হয়েছে, যে পথে চলতে পারলে দুনিয়াতে সুখ-শান্তি এবং পরকালে জান্নাত লাভ করা যাবে। সেটি কোন পথ? আল্লাহ অবশিষ্ট কোরআনে সেই পথের সন্ধান দিয়েছেন। ওই পথে চলার বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন। মানবজীবনের প্রতিটি অনুষঙ্গ ও প্রয়োজনীয় সমস্যার সমাধান দিয়েছেন তাতে।
ইসলামি স্কলারদের মতে, গভীর ধ্যান-মগ্নে আল্লাহকে সামনে উপস্থিত ভেবে নামাজ আদায় করলে বান্দা স্বীয় মানসকল্পে আল্লাহর উপস্থিতি অনুভব করতে পারবে। সুরা ফাতেহার প্রতিউত্তরে আল্লাহর কথা হৃদয় দিয়ে শ্রবণ করতে পারবে। আর এতে নামাজ প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে।
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
আল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম
Communication With Allah
0 notes
Text
আল্লাহর সাথে যোগাযোগ করবেন কিভাবে
How to communicate with Allah
youtube
youtube
youtube
নামাজ আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎতুল্য
নামাজে মানুষ আল্লাহর সামনে দাঁড়ায় এবং কিয়ামতের দিনও মানুষ আল্লাহর সামনে দাঁড়াবে। যে ব্যক্তি নামাজে যথাযথভাবে দাঁড়াবে পরকালে আল্লাহর সামনে দাঁড়ানো তার জন্য সহজ হবে। আর যে নামাজে অবহেলা করবে পরকালে আল্লাহর সামনে দাঁড়ানো কঠিন হয়ে যাবে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘এবং রাতের কিছু অংশে তাঁর প্রতি সিজদাবনত হও আর রাতের দীর্ঘ সময় তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করো।
তারা ভালোবাসে পার্থিব জীবনকে এবং তারা পরবর্তী কঠিন দিনকে উপেক্ষা করে চলে।’ (সুরা : দাহর, আয়াত : ২৬-২৭) আর নামাজে আল্লাহর সামনে দাঁড়ানো সুন্দর হবে তখন, যখন ব্যক্তি আল্লাহর সামনে উপস্থিত হওয়ার ভয় করবে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে স্বীয় প্রতিপালকের সামনে উপস্থিত হওয়ার ভয় রাখে এবং প্রবৃত্তি থেকে নিজেকে বিরত রাখে জান্নাতই হবে তার আবাস।’ (সুরা ; নাজিয়াত, আয়াত : ৪০-৪১)
প্রকৃতপক্ষে নামাজ আল্লাহপ্রেমীদের চোখের শীতলতা, তাদের অন্তরের প��রশান্তি, মানসিক তৃপ্তি ও আনন্দ।
আল্লাহপ্রেমীরা যখন নামাজে দাঁড়ায় তখন সেসব দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত হয়ে যায়। ঠিক যেমন কোনো রণক্লান্ত যোদ্ধা ঘরে ফেরার পর ভারমুক্ত হয়ে যায়। নামাজ যার জন্য চোখের শীতলতা, তার কাছে নামাজের চেয়ে প্রিয় ও অধিক মূল্যবান আর কিছু নেই। তার প্রত্যাশা থাকে নামাজেই তার জীবন কেটে যাক।
সে নামাজ ছেড়ে যায়, কিন্তু নামাজে ফিরতে তার মন উদগ্রীব থাকে। নামাজের মাধ্যমেই আল্লাহর প্রতি বান্দার ভালোবাসার পরিমাণ পরিমাপ করা যায় এবং এটি একটি নির্ভুল পরিমাপক। সাহাবায়ে কেরাম (রা.) নামাজেই প্রশান্তি খুঁজে পেতেন। আমর ইবনে উতবা (রা.)-এর আজাদকৃত গোলাম বলেন, গ্রীষ্মকালে প্রচণ্ড এক গরমের দিনে আমরা আমর ইবনে উতবা (রা.)-কে খুঁজতে বের হলাম। আমরা তাঁকে একটি পাহাড়ের ওপর সিজদারত অবস্থায় পেলাম, তখন তাঁকে এক খণ্ড মেঘ ছায়া দিচ্ছিল।
আমরা একবার তাঁর সঙ্গে যুদ্ধাভিযানে বের হয়েছিলাম। রাত জেগে তাঁর নামাজ ও কান্নার কারণে তখন পৃথক কোনো পাহারার ব্যবস্থা করা হয়নি। একবার আমর ইবনে উতবা (রা.) নামাজ আদায় করছিলেন। হঠাৎ আমরা বাঘের গর্জন শুনলাম। আমরা পালিয়ে গেলাম এবং তিনি নামাজে দাঁড়িয়ে রইলেন। তিনি নামাজ ছেড়ে আসলেন না। এরপর আমরা ফিরে এসে বললাম, আপনি কি বাঘ ভয় করেন না? তিনি বলেন, আমি লজ্জাবোধ করি আল্লাহকে ছাড়া অন্য কাউকে ভয় পাওয়াকে। ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) বলতেন, মানুষের কাছ থেকে নামাজের অঙ্গীকার নাও। যদি তারা সন্তুষ্ট থাকে তবে তাদের ছেড়ে দাও আর যদি তারা অসন্তোষ প্রকাশ করে, তবে তাদের শাস্তি দাও। কেননা নামাজের মাধ্যমেই তাঁর ঈমান ও আমলের স্তর পরিমাপ করা যায়।
আল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম
কোরআনে কারিম মহান আল্লাহর কালাম। যখন কোরআন মজিদ তেলাওয়াত করা হয়, তা বান্দার মুখে উচ্চারিত হয় শুধু; কিন্তু কথাগুলো আল্লাহর। তাই যারা তেলাওয়াত শ্রবণ করে তারা যেন সরাসরি আল্লাহর কথা শ্রবণ করে। আল্লাহতায়ালাও বান্দার তেলাওয়াত শ্রবণ করেন এবং নিকটবর্তী ফেরেশতাদের কাছে তেলাওয়াতের প্রশংসা করেন। আল্লাহর সঙ্গে বান্দার যোগাযোগ ও কথোপকথনের বিষয়টি আরও গভীরভাবে উপলব্ধি করা যায় নামাজ আদায়ের মাধ্যমে। নামাজে যখন সুরা ফাতেহা পাঠ করা হয় তখন আল্লাহ বান্দার প্রতিটি আয়াত পাঠের সময় সাড়া দেন।
একজন নামাজি ব্যক্তি দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে মোট বত্রিশ বার সুরা ফাতেহা পাঠ করেন। আল্লাহর সঙ্গে বান্দার সম্পর্ক স্থাপনে নামাজ সেতুস্বরূপ। যেখানে সুরা ফাতেহা পাঠের মাধ্যমে আল্লাহর সঙ্গে বান্দার কথোপকথন শুরু হয়। বিষয়টি অনুধাবন করতে হলে নামাজিকে স্বীয় নামাজে গভীর মনোযোগী হতে হবে। নিবিষ্ট মনে নামাজের রোকনগুলো আদায় করতে হবে। বিশেষ করে সুরা ফাতেহা পাঠসহ অন্য সুরা মেলানো এবং এ সবের মর্ম অনুধাবন করতে হবে। নামাজে বান্দার পাঠকৃত সুরা ফাতেহার প্রতিটি আয়াতে আল্লাহতায়ালা সাড়া দেন।
এ বিষয়ে হাদিসে বলা হয়েছে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ বলেন, আমি নামাজে (সুরা ফাতেহা) আমার ও আমার বান্দাদের মধ্যে অর্ধেক অর্ধেক করে ভাগ করে নিয়েছি। আমার বান্দা যা চায় তাকে তাই দেওয়া হবে। যখন বান্দা (নামাজে) বলে-১. আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন। সমস্ত প্রশংসা উভয় জগতের প্রতিপালক আল্লাহর। তখন আল্লাহ বলেন, বান্দা আমার প্রশংসা করল। ২. যখন বান্দা বলে, আর রাহমানির রাহিম। যিনি পরম করুণাময় অতি দয়ালু। তখন আল্লাহ বলেন, বান্দা আমার গুণগান করল। ৩. যখন বান্দা বলে, মালিকিইয়াওমিদ্দিন। তিনি প্রতিদান দিবসের মালিক। তখন আল্লাহ বলেন, বান্দা আমার মর্যাদা বর্ণনা করল। ৪. যখন বান্দা বলে, ইয়্যাকানাবুদু ওয়া ইয়্যাকানাসতায়িন। আমরা তোমারই ইবাদত করি এবং তোমার কাছেই সাহায্য প্রার্থনা করি। তখন আল্লাহ বলেন, এটা আমার ও আমার বান্দার মধ্যে বিভক্ত এবং বান্দার জন্য তাই রয়েছে যা সে চায়। ৫. যখন বান্দা বলে, ইহদিনাস সিরাতাল মুস্তাকিম। আমাদের সরলপথ দেখাও। ৬. সিরাতল্লাজিনা আনআমতা আলাইহিম। তাদের পথ, যেখানে তুমি নেয়ামত দিয়েছ। ৭. গায়রিল মাগদুবি আলাইহিম ওয়ালাদ্দল্লিন। তাদের পথ নয়, যারা গজবপ্রাপ্ত ও পথভ্রষ্ট। তখন আল্লাহ বলেন, এসব তো আমার বান্দার জন্য। আর আমার বান্দা যা চায় তার জন্য তাই রয়েছে। মুসলিম শরিফ
এভাবে বান্দা যখন নামাজে সুরা ফাতেহা পাঠ করতে থাকে, তখন আল্লাহ প্রতিটি আয়াতের এভাবেই সাড়া দেন। তবে বিষয়টি দুনিয়াতে মানুষের দৃষ্টি ও শ্রবণ ইন্দ্রিয় দ্বারা দেখা ও শোনা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে নামাজে গভীর মনোযোগী হতে হবে। নামাজের গভীর ধ্যান-মগ্নতা বান্দার নামাজও ক্রমে দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হতে থাকে। এতে নামাজ আদায়ে শারীরিকভাবে যত কষ্টই হোক না কেন বান্দা স্বীয় অন্তরে গভীর স্বাদ অনুভব করেন। বান্দার মনোজগতে প্রশান্তির ফোয়ারা বয়ে যায়। মনের ভেতর একধরনের সুখবোধ ছড়িয়ে পড়ে। এই সুখবোধ বান্দাকে গভীরভাবে আলোড়িত করে। পার্থিব দুঃখ কষ্টে থাকলেও বান্দার চোখে মুখে বিরাজ করে একধরনের স্বস্তিভাব।
আল্লাহর কাছে কীভাবে প্রার্থনা করতে হবে সুরা ফাতেহায় বান্দাকে তা শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। সুতরাং সুরা ফাতেহা হলো প্রার্থনা। আর অবশিষ্ট কোরআন যেন প্রার্থনার উত্তর। যেমন বান্দা নামাজে সুরা ফাতেহায় প্রথমে আল্লাহর প্রশংসা করে। অতঃপর তার কাছে হেদায়েতের সরল-সঠিক পথের প্রার্থনা করে। এটুকু হলো প্রার্থনা। এরপর যখন বান্দা সুরা ফাতেহার সঙ্গে অন্য সুরা মেলায় তখন তা হয়ে যায় আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রার্থনার উত্তর। যেমন সুরা ফাতেহায় আল্লাহর কাছে হেদায়েতের এমন সরল-সঠিক পথের প্রার্থনা করা হয়েছে, যে পথে চলতে পারলে দুনিয়াতে সুখ-শান্তি এবং পরকালে জান্নাত লাভ করা যাবে। সেটি কোন পথ? আল্লাহ অবশিষ্ট কোরআনে সেই পথের সন্ধান দিয়েছেন। ওই পথে চলার বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন। মানবজীবনের প্রতিটি অনুষঙ্গ ও প্রয়োজনীয় সমস্যার সমাধান দিয়েছেন তাতে।
ইসলামি স্কলারদের মতে, গভীর ধ্যান-মগ্নে আল্লাহকে সামনে উপস্থিত ভেবে নামাজ আদায় করলে বান্দা স্বীয় মানসকল্পে আল্লাহর উপস্থিতি অনুভব করতে পারবে। সুরা ফাতেহার প্রতিউত্তরে আল্লাহর কথা হৃদয় দিয়ে শ্রবণ করতে পারবে। আর এতে নামাজ প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে।
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
আল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম
Communication With Allah
0 notes
Text
আল্লাহর সাথে যোগাযোগ করবেন কিভাবে
How to communicate with Allah
youtube
youtube
youtube
নামাজ আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎতুল্য
নামাজে মানুষ আল্লাহর সামনে দাঁড়ায় এবং কিয়ামতের দিনও মানুষ আল্লাহর সামনে দাঁড়াবে। যে ব্যক্তি নামাজে যথাযথভাবে দাঁড়াবে পরকালে আল্লাহর সামনে দাঁড়ানো তার জন্য সহজ হবে। আর যে নামাজে অবহেলা করবে পরকালে আল্লাহর সামনে দাঁড়ানো কঠিন হয়ে যাবে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘এবং রাতের কিছু অংশে তাঁর প্রতি সিজদাবনত হও আর রাতের দীর্ঘ সময় তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করো।
তারা ভালোবাসে পার্থিব জীবনকে এবং তারা পরবর্তী কঠিন দিনকে উপেক্ষা করে চলে।’ (সুরা : দাহর, আয়াত : ২৬-২৭) আর নামাজে আল্লাহর সামনে দাঁড়ানো সুন্দর হবে তখন, যখন ব্যক্তি আল্লাহর সামনে উপস্থিত হওয়ার ভয় করবে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে স্বীয় প্রতিপালকের সামনে উপস্থিত হওয়ার ভয় রাখে এবং প্রবৃত্তি থেকে নিজেকে বিরত রাখে জান্নাতই হবে তার আবাস।’ (সুরা ; নাজিয়াত, আয়াত : ৪০-৪১)
প্রকৃতপক্ষে নামাজ আল্লাহপ্রেমীদের চোখের শীতলতা, তাদের অন্তরের প্রশান্তি, মানসিক তৃপ্তি ও আনন্দ।
আল্লাহপ্রেমীরা যখন নামাজে দাঁড়ায় তখন সেসব দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত হয়ে যায়। ঠিক যেমন কোনো রণক্লান্ত যোদ্ধা ঘরে ফেরার পর ভারমুক্ত হয়ে যায়। নামাজ যার জন্য চোখের শীতলতা, তার কাছে নামাজের চেয়ে প্রিয় ও অধিক মূল্যবান আর কিছু নেই। তার প্রত্যাশা থাকে নামাজেই তার জীবন কেটে যাক।
সে নামাজ ছেড়ে যায়, কিন্তু নামাজে ফিরতে তার মন উদগ্রীব থাকে। নামাজের মাধ্যমেই আল্লাহর প্রতি বান্দার ভালোবাসার পরিমাণ পরিমাপ করা যায় এবং এটি একটি ���ির্ভুল পরিমাপক। সাহাবায়ে কেরাম (রা.) নামাজেই প্রশান্তি খুঁজে পেতেন। আমর ইবনে উতবা (রা.)-এর আজাদকৃত গোলাম বলেন, গ্রীষ্মকালে প্রচণ্ড এক গরমের দিনে আমরা আমর ইবনে উতবা (রা.)-কে খুঁজতে বের হলাম। আমরা তাঁকে একটি পাহাড়ের ওপর সিজদারত অবস্থায় পেলাম, তখন তাঁকে এক খণ্ড মেঘ ছায়া দিচ্ছিল।
আমরা একবার তাঁর সঙ্গে যুদ্ধাভিযানে বের হয়েছিলাম। রাত জেগে তাঁর নামাজ ও কান্নার কারণে তখন পৃথক কোনো পাহারার ব্যবস্থা করা হয়নি। একবার আমর ইবনে উতবা (রা.) নামাজ আদায় করছিলেন। হঠাৎ আমরা বাঘের গর্জন শুনলাম। আমরা পালিয়ে গেলাম এবং তিনি নামাজে দাঁড়িয়ে রইলেন। তিনি নামাজ ছেড়ে আসলেন না। এরপর আমরা ফিরে এসে বললাম, আপনি কি বাঘ ভয় করেন না? তিনি বলেন, আমি লজ্জাবোধ করি আল্লাহকে ছাড়া অন্য কাউকে ভয় পাওয়াকে। ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) বলতেন, মানুষের কাছ থেকে নামাজের অঙ্গীকার নাও। যদি তারা সন্তুষ্ট থাকে তবে তাদের ছেড়ে দাও আর যদি তারা অসন্তোষ প্রকাশ করে, তবে তাদের শাস্তি দাও। কেননা নামাজের মাধ্যমেই তাঁর ঈমান ও আমলের স্তর পরিমাপ করা যায়।
আল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম
কোরআনে কারিম মহান আল্লাহর কালাম। যখন কোরআন মজিদ তেলাওয়াত করা হয়, তা বান্দার মুখে উচ্চারিত হয় শুধু; কিন্তু কথাগুলো আল্লাহর। তাই যারা তেলাওয়াত শ্রবণ করে তারা যেন সরাসরি আল্লাহর কথা শ্রবণ করে। আল্লাহতায়ালাও বান্দার তেলাওয়াত শ্রবণ করেন এবং নিকটবর্তী ফেরেশতাদের কাছে তেলাওয়াতের প্রশংসা করেন। আল্লাহর সঙ্গে বান্দার যোগাযোগ ও কথোপকথনের বিষয়টি আরও গভীরভাবে উপলব্ধি করা যায় নামাজ আদায়ের মাধ্যমে। নামাজে যখন সুরা ফাতেহা পাঠ করা হয় তখন আল্লাহ বান্দার প্রতিটি আয়াত পাঠের সময় সাড়া দেন।
একজন নামাজি ব্যক্তি দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে মোট বত্রিশ বার সুরা ফাতেহা পাঠ করেন। আল্লাহর সঙ্গে বান্দার সম্পর্ক স্থাপনে নামাজ সেতুস্বরূপ। যেখানে সুরা ফাতেহা পাঠের মাধ্যমে আল্লাহর সঙ্গে বান্দার কথোপকথন শুরু হয়। বিষয়টি অনুধাবন করতে হলে নামাজিকে স্বীয় নামাজে গভীর মনোযোগী হতে হবে। নিবিষ্ট মনে নামাজের রোকনগুলো আদায় করতে হবে। বিশেষ করে সুরা ফাতেহা পাঠসহ অন্য সুরা মেলানো এবং এ সবের মর্ম অনুধাবন করতে হবে। নামাজে বান্দার পাঠকৃত সুরা ফাতেহার প্রতিটি আয়াতে আল্লাহতায়ালা সাড়া দেন।
এ বিষয়ে হাদিসে বলা হয়েছে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ বলেন, আমি নামাজে (সুরা ফাতেহা) আমার ও আমার বান্দাদের মধ্যে অর্ধেক অর্ধেক করে ভাগ করে নিয়েছি। আমার বান্দা যা চায় তাকে তাই দেওয়া হবে। যখন বান্দা (নামাজে) বলে-১. আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন। সমস্ত প্রশংসা উভয় জগতের প্রতিপালক আল্লাহর। তখন আল্লাহ বলেন, বান্দা আমার প্রশংসা করল। ২. যখন বান্দা বলে, আর রাহমানির রাহিম। যিনি পরম করুণাময় অতি দয়ালু। তখন আল্লাহ বলেন, বান্দা আমার গুণগান করল। ৩. যখন বান্দা বলে, মালিকিইয়াওমিদ্দিন। তিনি প্রতিদান দিবসের মালিক। তখন আল্লাহ বলেন, বান্দা আমার মর্যাদা বর্ণনা করল। ৪. যখন বান্দা বলে, ইয়্যাকানাবুদু ওয়া ইয়্যাকানাসতায়িন। আমরা তোমারই ইবাদত করি এবং তোমার কাছেই সাহায্য প্রার্থনা করি। তখন আল্লাহ বলেন, এটা আমার ও আমার বান্দার মধ্যে বিভক্ত এবং বান্দার জন্য তাই রয়েছে যা সে চায়। ৫. যখন বান্দা বলে, ইহদিনাস সিরাতাল মুস্তাকিম। আমাদের সরলপথ দেখাও। ৬. সিরাতল্লাজিনা আনআমতা আলাইহিম। তাদের পথ, যেখানে তুমি নেয়ামত দিয়েছ। ৭. গায়রিল মাগদুবি আলাইহিম ওয়ালাদ্দল্লিন। তাদের পথ নয়, যারা গজবপ্রাপ্ত ও পথভ্রষ্ট। তখন আল্লাহ বলেন, এসব তো আমার বান্দার জন্য। আর আমার বান্দা যা চায় তার জন্য তাই রয়েছে। মুসলিম শরিফ
এভাবে বান্দা যখন নামাজে সুরা ফাতেহা পাঠ করতে থাকে, তখন আল্লাহ প্রতিটি আয়াতের এভাবেই সাড়া দেন। তবে বিষয়টি দুনিয়াতে মানুষের দৃষ্টি ও শ্রবণ ইন্দ্রিয় দ্বারা দেখা ও শোনা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে নামাজে গভীর মনোযোগী হতে হবে। নামাজের গভীর ধ্যান-মগ্নতা বান্দার নামাজও ক্রমে দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হতে থাকে। এতে নামাজ আদায়ে শারীরিকভাবে যত কষ্টই হোক না কেন বান্দা স্বীয় অন্তরে গভীর স্বাদ অনুভব করেন। বান্দার মনোজগতে প্রশান্তির ফোয়ারা বয়ে যায়। মনের ভেতর একধরনের সুখবোধ ছড়িয়ে পড়ে। এই সুখবোধ বান্দাকে গভীরভাবে আলোড়িত করে। পার্থিব দুঃখ কষ্টে থাকলেও বান্দার চোখে মুখে বিরাজ করে একধরনের স্বস্তিভাব।
আল্লাহর কাছে কীভাবে প্রার্থনা করতে হবে সুরা ফাতেহায় বান্দাকে তা শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। সুতরাং সুরা ফাতেহা হলো প্রার্থনা। আর অবশিষ্ট কোরআন যেন প্রার্থনার উত্তর। যেমন বান্দা নামাজে সুরা ফাতেহায় প্রথমে আল্লাহর প্রশংসা করে। অতঃপর তার কাছে হেদায়েতের সরল-সঠিক পথের প্রার্থনা করে। এটুকু হলো প্রার্থনা। এরপর যখন বান্দা সুরা ফাতেহার সঙ্গে অন্য সুরা মেলায় তখন তা হয়ে যায় আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রার্থনার উত্তর। যেমন সুরা ফাতেহায় আল্লাহর কাছে হেদায়েতের এমন সরল-সঠিক পথের প্রার্থনা করা হয়েছে, যে পথে চলতে পারলে দুনিয়াতে সুখ-শান্তি এবং পরকালে জান্নাত লাভ করা যাবে। সেটি কোন পথ? আল্লাহ অবশিষ্ট কোরআনে সেই পথের সন্ধান দিয়েছেন। ওই পথে চলার বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন। মানবজীবনের প্রতিটি অনুষঙ্গ ও প্রয়োজনীয় সমস্যার সমাধান দিয়েছেন তাতে।
ইসলামি স্কলারদের মতে, গভীর ধ্যান-মগ্নে আল্লাহকে সামনে উপস্থিত ভেবে নামাজ আদায় করলে বান্দা স্বীয় মানসকল্পে আল্লাহর উপস্থিতি অনুভব করতে পারবে। সুরা ফাতেহার প্রতিউত্তরে আল্লাহর কথা হৃদয় দিয়ে শ্রবণ করতে পারবে। আর এতে নামাজ প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে।
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
আল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম
Communication With Allah
0 notes
Text
আল্লাহর সাথে যোগাযোগ করবেন কিভাবে
How to communicate with Allah
youtube
youtube
youtube
নামাজ আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎতুল্য
নামাজে মানুষ আল্লাহর সামনে দাঁড়ায় এবং কিয়ামতের দিনও মানুষ আল্লাহর সামনে দাঁড়াবে। যে ব্যক্তি নামাজে যথাযথভাবে দাঁড়াবে পরকালে আল্লাহর সামনে দাঁড়ানো তার জন্য সহজ হবে। আর যে নামাজে অবহেলা করবে পরকালে আল্লাহর সামনে দাঁড়ানো কঠিন হয়ে যাবে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘এবং রাতের কিছু অংশে তাঁর প্রতি সিজদাবনত হও আর রাতের দীর্ঘ সময় তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করো।
তারা ভালোবাসে পার্থিব জীবনকে এবং তারা পরবর্তী কঠিন দিনকে উপেক্ষা করে চলে।’ (সুরা : দাহর, আয়াত : ২৬-২৭) আর নামাজে আল্লাহর সামনে দাঁড়ানো সুন্দর হবে তখন, যখন ব্যক্তি আল্লাহর সামনে উপস্থিত হওয়ার ভয় করবে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে স্বীয় প্রতিপালকের সামনে উপস্থিত হওয়ার ভয় রাখে এবং প্রবৃত্তি থেকে নিজেকে বিরত রাখে জান্নাতই হবে তার আবাস।’ (সুরা ; নাজিয়াত, আয়াত : ৪০-৪১)
প্রকৃতপক্ষে নামাজ আল্লাহপ্রেমীদের চোখের শীতলতা, তাদের অন্তরের প্রশান্তি, মানসিক তৃপ্তি ও আনন্দ।
আল্লাহপ্রেমীরা যখন নামাজে দাঁড়ায় তখন সেসব দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত হয়ে যায়। ঠিক যেমন কোনো রণক্লান্ত যোদ্ধা ঘরে ফেরার পর ভারমুক্ত হয়ে যায়। নামাজ যার জন্য চোখের শীতলতা, তার কাছে নামাজের চেয়ে প্রিয় ও অধিক মূল্যবান আর কিছু নেই। তার প্রত্যাশা থাকে নামাজেই তার জীবন কেটে যাক।
সে নামাজ ছেড়ে যায়, কিন্তু নামাজে ফিরতে তার মন উদগ্রীব থাকে। নামাজের মাধ্যমেই আল্লাহর প্রতি বান্দার ভালোবাসার পরিমাণ পরিমাপ করা যায় এবং এটি একটি নির্ভুল পরিমাপক। সাহাবায়ে কেরাম (রা.) নামাজেই প্রশান্তি খুঁজে পেতেন। আমর ইবনে উতবা (রা.)-এর আজাদকৃত গোলাম বলেন, গ্রীষ্মকালে প্রচণ্ড এক গরমের দিনে আমরা আমর ইবনে উতবা (রা.)-কে খুঁজতে বের হলাম। আমরা তাঁকে একটি পাহাড়ের ওপর সিজদারত অবস্থায় পেলাম, তখন তাঁকে এক খণ্ড মেঘ ছায়া দিচ্ছিল।
আমরা একবার তাঁর সঙ্গে যুদ্ধাভিযানে বের হয়েছিলাম। রাত জেগে তাঁর নামাজ ও কান্নার কারণে তখন পৃথক কোনো পাহারার ব্যবস্থা করা হয়নি। একবার আমর ইবনে উতবা (রা.) নামাজ আদায় করছিলেন। হঠাৎ আমরা বাঘের ��র্জন শুনলাম। আমরা পালিয়ে গেলাম এবং তিনি নামাজে দাঁড়িয়ে রইলেন। তিনি নামাজ ছেড়ে আসলেন না। এরপর আমরা ফিরে এসে বললাম, আপনি কি বাঘ ভয় করেন না? তিনি বলেন, আমি লজ্জাবোধ করি আল্লাহকে ছাড়া অন্য কাউকে ভয় পাওয়াকে। ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) বলতেন, মানুষের কাছ থেকে নামাজের অঙ্গীকার নাও। যদি তারা সন্তুষ্ট থাকে তবে তাদের ছেড়ে দাও আর যদি তারা অসন্তোষ প্রকাশ করে, তবে তাদের শাস্তি দাও। কেননা নামাজের মাধ্যমেই তাঁর ঈমান ও আমলের স্তর পরিমাপ করা যায়।
আল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম
কোরআনে কারিম মহান আল্লাহর কালাম। যখন কোরআন মজিদ তেলাওয়াত করা হয়, তা বান্দার মুখে উচ্চারিত হয় শুধু; কিন্তু কথাগুলো আল্লাহর। তাই যারা তেলাওয়াত শ্রবণ করে তারা যেন সরাসরি আল্লাহর কথা শ্রবণ করে। আল্লাহতায়ালাও বান্দার তেলাওয়াত শ্রবণ করেন এবং নিকটবর্তী ফেরেশতাদের কাছে তেলাওয়াতের প্রশংসা করেন। আল্লাহর সঙ্গে বান্দার যোগাযোগ ও কথোপকথনের বিষয়টি আরও গভীরভাবে উপলব্ধি করা যায় নামাজ আদায়ের মাধ্যমে। নামাজে যখন সুরা ফাতেহা পাঠ করা হয় তখন আল্লাহ বান্দার প্রতিটি আয়াত পাঠের সময় সাড়া দেন।
একজন নামাজি ব্যক্তি দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে মোট বত্রিশ বার সুরা ফাতেহা পাঠ করেন। আল্লাহর সঙ্গে বান্দার সম্পর্ক স্থাপনে নামাজ সেতুস্বরূপ। যেখানে সুরা ফাতেহা পাঠের মাধ্যমে আল্লাহর সঙ্গে বান্দার কথোপকথন শুরু হয়। বিষয়টি অনুধাবন করতে হলে নামাজিকে স্বীয় নামাজে গভীর মনোযোগী হতে হবে। নিবিষ্ট মনে নামাজের রোকনগুলো আদায় করতে হবে। বিশেষ করে সুরা ফাতেহা পাঠসহ অন্য সুরা মেলানো এবং এ সবের মর্ম অনুধাবন করতে হবে। নামাজে বান্দার পাঠকৃত সুরা ফাতেহার প্রতিটি আয়াতে আল্লাহতায়ালা সাড়া দেন।
এ বিষয়ে হাদিসে বলা হয়েছে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ বলেন, আমি নামাজে (সুরা ফাতেহা) আমার ও আমার বান্দাদের মধ্যে অর্ধেক অর্ধেক করে ভাগ করে নিয়েছি। আমার বান্দা যা চায় তাকে তাই দেওয়া হবে। যখন বান্দা (নামাজে) বলে-১. আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন। সমস্ত প্রশংসা উভয় জগতের প্রতিপালক আল্লাহর। তখন আল্লাহ বলেন, বান্দা আমার প্রশংসা করল। ২. যখন বান্দা বলে, আর রাহমানির রাহিম। যিনি পরম করুণাময় অতি দয়ালু। তখন আল্লাহ বলেন, বান্দা আমার গুণগান করল। ৩. যখন বান্দা বলে, মালিকিইয়াওমিদ্দিন। তিনি প্রতিদান দিবসের মালিক। তখন আল্লাহ বলেন, বান্দা আমার মর্যাদা বর্ণনা করল। ৪. যখন বান্দা বলে, ইয়্যাকানাবুদু ওয়া ইয়্যাকানাসতায়িন। আমরা তোমারই ইবাদত করি এবং তোমার কাছেই সাহায্য প্রার্থনা করি। তখন আল্লাহ বলেন, এটা আমার ও আমার বান্দার মধ্যে বিভক্ত এবং বান্দার জন্য তাই রয়েছে যা সে চায়। ৫. যখন বান্দা বলে, ইহদিনাস সিরাতাল মুস্তাকিম। আমাদের সরলপথ দেখাও। ৬. সিরাতল্লাজিনা আনআমতা আলাইহিম। তাদের পথ, যেখানে তুমি নেয়ামত দিয়েছ। ৭. গায়রিল মাগদুবি আলাইহিম ওয়ালাদ্দল্লিন। তাদের পথ নয়, যারা গজবপ্রাপ্ত ও পথভ্রষ্ট। তখন আল্লাহ বলেন, এসব তো আমার বান্দার জন্য। আর আমার বান্দা যা চায় তার জন্য তাই রয়েছে। মুসলিম শরিফ
এভাবে বান্দা যখন নামাজে সুরা ফাতেহা পাঠ করতে থাকে, তখন আল্লাহ প্রতিটি আয়াতের এভাবেই সাড়া দেন। তবে বিষয়টি দুনিয়াতে মানুষের দৃষ্টি ও শ্রবণ ইন্দ্রিয় দ্বারা দেখা ও শোনা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে নামাজে গভীর মনোযোগী হতে হবে। নামাজের গভীর ধ্যান-মগ্নতা বান্দার নামাজও ক্রমে দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হতে থাকে। এতে নামাজ আদায়ে শারীরিকভাবে যত কষ্টই হোক না কেন বান্দা স্বীয় অন্তরে গভীর স্বাদ অনুভব করেন। বান্দার মনোজগতে প্রশান্তির ফোয়ারা বয়ে যায়। মনের ভেতর একধরনের সুখবোধ ছড়িয়ে পড়ে। এই সুখবোধ বান্দাকে গভীরভাবে আলোড়িত করে। পার্থিব দুঃখ কষ্টে থাকলেও বান্দার চোখে মুখে বিরাজ করে একধরনের স্বস্তিভাব।
আল্লাহর কাছে কীভাবে প্রার্থনা করতে হবে সুরা ফাতেহায় বান্দাকে তা শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। সুতরাং সুরা ফাতেহা হলো প্রার্থনা। আর অবশিষ্ট কোরআন যেন প্রার্থনার উত্তর। যেমন বান্দা নামাজে সুরা ফাতেহায় প্রথমে আল্লাহর প্রশংসা করে। অতঃপর তার কাছে হেদায়েতের সরল-সঠিক পথের প্রার্থনা করে। এটুকু হলো প্রার্থনা। এরপর যখন বান্দা সুরা ফাতেহার সঙ্গে অন্য সুরা মেলায় তখন তা হয়ে যায় আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রার্থনার উত্তর। যেমন সুরা ফাতেহায় আল্লাহর কাছে হেদায়েতের এমন সরল-সঠিক পথের প্রার্থনা করা হয়েছে, যে পথে চলতে পারলে দুনিয়াতে সুখ-শান্তি এবং পরকালে জান্নাত লাভ করা যাবে। সেটি কোন পথ? আল্লাহ অবশিষ্ট কোরআনে সেই পথের সন্ধান দিয়েছেন। ওই পথে চলার বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন। মানবজীবনের প্রতিটি অনুষঙ্গ ও প্রয়োজনীয় সমস্যার সমাধান দিয়েছেন তাতে।
ইসলামি স্কলারদের মতে, গভীর ধ্যান-মগ্নে আল্লাহকে সামনে উপস্থিত ভেবে নামাজ আদায় করলে বান্দা স্বীয় মানসকল্পে আল্লাহর উপস্থিতি অনুভব করতে পারবে। সুরা ফাতেহার প্রতিউত্তরে আল্লাহর কথা হৃদয় দিয়ে শ্রবণ করতে পারবে। আর এতে নামাজ প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে।
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
আল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম
Communication With Allah
0 notes