Tumgik
#ঈমানের মৌলিক ৬ স্তম্ভ
quransunnahdawah · 2 months
Text
Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media
৩. আসমানি কিতাবের প্রতি বিশ্বাস : আল্লাহ তাআলা মানুষের পথপ্রদর্শনের জন্য নবী-রাসুলদের ওপর বিভিন্ন আসমানি কিতার নাজিল করেছেন। এ ধরনের বড় কিতাবগুলো হচ্ছে—কোরআন, তাওরাত, জাবুর ও ইঞ্জিল।ঈমানের মৌলিক ৬ স্তম্ভ
The basic 6 pillars of faith
ঈমানের মৌলিক ৬ স্তম্ভ
১, আলাহ তায়ালার প্রতি বিশ্বাস
২.ফেরেস্তাদের প্রতি বিশ্বাস
৩. আসমানী কিতাব সমূহের প্রতি বিশ্বাস
৪.নবী রাসূল গণের প্রতি বিশ্বাস
৫.আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস
৬.তাকদীরের প্রতি বিশ্বাস ঈমানের ছয় স্তম্ভ
মুসলমান হতে হলে ছয় বিষয়ে বিশ্বাস স্থাপন করতে হয়। এগুলো ঈমানের স্তম্ভ। বিষয়গুলো হলো—
১. আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস : আল্লাহর ওপর ঈমান আনার অর্থ এ কথা বিশ্বাস করা, আল্লাহ এক, অদ্বিতীয় ও অতুলনীয়। তাঁর কোনো অংশীদার নেই, তাঁর কোনো কিছুর অভাব নেই।
তিনিই সবার সব অভাব পূরণকারী। তিনি কারো বাবা নন, ছেলেও নন। তাঁর সমতুল্য কেউ নেই। একমাত্র তিনিই সব কিছুর সৃষ্টিকর্তা, রক্ষাকর্তা ও পালনকর্তা, বিধানদাতা।
আল্লাহ ছাড়া আর কোনো মাবুদ নেই।
২. ফেরেশতাদের প্রতি বিশ্বাস : ফেরেশতাদের প্রতি ঈমান বা বিশ্বাস স্থাপনের অর্থ হলো, ফেরেশতাদের অস্তিত্ব দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করা। তারাও আল্লাহ তাআলার সৃষ্টি। আল্লাহ তাদের যা আদেশ করেন, তারা সঙ্গে সঙ্গে তা পালন করেন।
৩. আসমানি কিতাবের প্রতি বিশ্বাস : আল্লাহ তাআলা মানুষের পথপ্রদর্শনের জন্য নবী-রাসুলদের ওপর বিভিন্ন আসমানি কিতার নাজিল করেছেন। এ ধরনের বড় কিতাবগুলো হচ্ছে—কোরআন, তাওরাত, জাবুর ও ইঞ্জিল।
৪. রাসুলদের প্রতি বিশ্বাস : আল্লাহ তাআলা যুগে যুগে অনেক নবী-রাসুল পাঠিয়েছেন। সব রাসুল সত্যবাদী, সত্যায়নকারী, পুণ্যবান, সঠিক পথের দিশারি, তাকওয়াবান ও বিশ্বস্ত। নবী-রাসুলরা নিষ্পাপ।আল্লাহ তাঁদের যা কিছু দিয়ে পাঠিয়েছেন তাঁরা তা পরিপূর্ণভাবে পৌঁছে দিয়েছেন। আর সর্বশেষ রাসুল হচ্ছেন মুহাম্মদ (সা.)।
৫. পরকালে বিশ্বাস : এ বিশ্বাস থাকতে হবে যে মৃত ব্যক্তিদের কবর থেকে আবার জীবিত করা হবে। সব মানুষ আল্লাহর সামনে দণ্ডায়মান হবে। আল্লাহ কিয়ামতের দিন তাদের যাবতীয় কর্মের হিসাব নেবেন। মিজান বা পাল্লায় আমলগুলো ওজন করা হবে। যার খারাপ কাজের চেয়ে ভালো কাজের পাল্লা ভারী হবে সে জান্নাতি হবে। যার ভালো কাজের চেয়ে খারাপ কাজের পাল্লা ভারী হবে সে জাহান্নামি হবে।
৬. তাকদিরে বিশ্বাস : তাকদিরে বিশ্বাস করা ঈমানের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। তাকদির হচ্ছে আল্লাহর বিশ্বজনীন নিয়মনীতি। আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন—এ চেতনা লালন করা এবং তার বিধিব্যবস্থায় সন্তুষ্ট থাকার মধ্যেই শান্তি ও মঙ্গল নিহিত আছে।
ঈমানের (৬টি) (৫টি) ইসলামের খুঁটি সমূহ 
youtube
ঈমানের পিলার কয়টি ও কি কি জানেন ❤️
youtube
ঈমানের রুকন কয়টি?
https://www.youtube.com/watch?v=2i0u7Ccs7aM
The 6 ( six ) pillars of Iman (faith) - assim al hakeem
https://www.youtube.com/watch?v=R1lkGzKJ5Jw
ঈমানের খুঁটি সমূহ
ঈমানের মৌলিক ৬ স্তম্ভ
Pillars of faith
The basic 6 pillars of faith
জান্নাত পেতে প্রয়োজন ঈমান ও নেক আমল
If you want to go to Paradise, you need faith and good deeds
0 notes
tawhidrisalatakhirah · 2 months
Text
Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media
৩. আসমানি কিতাবের প্রতি বিশ্বাস : আল্লাহ তাআলা মানুষের পথপ্রদর্শনের জন্য নবী-রাসুলদের ওপর বিভিন্ন আসমানি কিতার নাজিল করেছেন। এ ধরনের বড় কিতাবগুলো হচ্ছে—কোরআন, তাওরাত, জাবুর ও ইঞ্জিল।ঈমানের মৌলিক ৬ স্তম্ভ
The basic 6 pillars of faith
ঈমানের মৌলিক ৬ স্তম্ভ
১, আলাহ তায়ালার প্রতি বিশ্বাস
২.ফেরেস্তাদের প্রতি বিশ্বাস
৩. আসমানী কিতাব সমূহের প্রতি বিশ্বাস
৪.নবী রাসূল গণের প্রতি বিশ্বাস
৫.আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস
৬.তাকদীরের প্রতি বিশ্বাস ঈমানের ছয় স্তম্ভ
মুসলমান হতে হলে ছয় বিষয়ে বিশ্বাস স্থাপন করতে হয়। এগুলো ঈমানের স্তম্ভ। বিষয়গুলো হলো—
১. আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস : আল্লাহর ওপর ঈমান আনার অর্থ এ কথা বিশ্বাস করা, আল্লাহ এক, অদ্বিতীয় ও অতুলনীয়। তাঁর কোনো অংশীদার নেই, তাঁর কোনো কিছুর অভাব নেই।
তিনিই সবার সব অভাব পূরণকারী। তিনি কারো বাবা নন, ছেলেও নন। তাঁর সমতুল্য কেউ নেই। একমাত্র তিনিই সব কিছুর সৃষ্টিকর্তা, রক্ষাকর্তা ও পালনকর্তা, বিধানদাতা।
আল্লাহ ছাড়া আর কোনো মাবুদ নেই।
২. ফেরেশতাদের প্রতি বিশ্বাস : ফেরেশতাদের প্রতি ঈমান বা বিশ্বাস স্থাপনের অর্থ হলো, ফেরেশতাদের অস্তিত্ব দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করা। তারাও আল্লাহ তাআলার সৃষ্টি। আল্লাহ তাদের যা আদেশ করেন, তারা সঙ্গে সঙ্গে তা পালন করেন।
৩. আসমানি কিতাবের প্রতি বিশ্বাস : আল্লাহ তাআলা মানুষের পথপ্রদর্শনের জন্য নবী-রাসুলদের ওপর বিভিন্ন আসমানি কিতার নাজিল করেছেন। এ ধরনের বড় কিতাবগুলো হচ্ছে—কোরআন, তাওরাত, জাবুর ও ইঞ্জিল।
৪. রাসুলদের প্রতি বিশ্বাস : আল্লাহ তাআলা যুগে যুগে অনেক নবী-রাসুল পাঠিয়েছেন। সব রাসুল সত্যবাদী, সত্যায়নকারী, পুণ্যবান, সঠিক পথের দিশারি, তাকওয়াবান ও বিশ্বস্ত। নবী-রাসুলরা নিষ্পাপ।আল্লাহ তাঁদের যা কিছু দিয়ে পাঠিয়েছেন তাঁরা তা পরিপূর্ণভাবে পৌঁছে দিয়েছেন। আর সর্বশেষ রাসুল হচ্ছেন মুহাম্মদ (সা.)।
৫. পরকালে বিশ্বাস : এ বিশ্বাস থাকতে হবে যে মৃত ব্যক্তিদের কবর থেকে আবার জীবিত করা হবে। সব মানুষ আল্লাহর সামনে দণ্ডায়মান হবে। আল্লাহ কিয়ামতের দিন তাদের যাবতীয় কর্মের হিসাব নেবেন। মিজান বা পাল্লায় আমলগুলো ওজন করা হবে। যার খারাপ কাজের চেয়ে ভালো কাজের পাল্লা ভারী হবে সে জান্নাতি হবে। যার ভালো কাজের চেয়ে খারাপ কাজের পাল্লা ভারী হবে সে জাহান্নামি হবে।
৬. তাকদিরে বিশ্বাস : তাকদিরে বিশ্বাস করা ঈমানের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। তাকদির হচ্ছে আল্লাহর বিশ্বজনীন নিয়মনীতি। আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন—এ চেতনা লালন করা এবং তার বিধিব্যবস্থায় সন্তুষ্ট থাকার মধ্যেই শান্তি ও মঙ্গল নিহিত আছে।
ঈমানের (৬টি) (৫টি) ইসলামের খুঁটি সমূহ 
youtube
ঈমানের পিলার কয়টি ও কি কি জানেন ❤️
youtube
ঈমানের রুকন কয়টি?
https://www.youtube.com/watch?v=2i0u7Ccs7aM
The 6 ( six ) pillars of Iman (faith) - assim al hakeem
https://www.youtube.com/watch?v=R1lkGzKJ5Jw
ঈমানের খুঁটি সমূহ
ঈমানের মৌলিক ৬ স্তম্ভ
Pillars of faith
The basic 6 pillars of faith
জান্নাত পেতে প্রয়োজন ঈমান ও নেক আমল
0 notes
ilyforallahswt · 2 months
Text
Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media
৩. আসমানি কিতাবের প্রতি বিশ্বাস : আল্লাহ তাআলা মানুষের পথপ্রদর্শনের জন্য নবী-রাসুলদের ওপর বিভিন্ন আসমানি কিতার নাজিল করেছেন। এ ধরনের বড় কিতাবগুলো হচ্ছে—কোরআন, তাওরাত, জাবুর ও ইঞ্জিল।ঈমানের মৌলিক ৬ স্তম্ভ
The basic 6 pillars of faith
ঈমানের মৌলিক ৬ স্তম্ভ
১, আলাহ তায়ালা প্রতি বিশ্বাস
২.ফেরেস্তাদের প্রতি বিশ্বাস
৩. আসমানী কিতাব সমূহের প্রতি বিশ্বাস
৪.নবী রাসূল গণের প্রতি বিশ্বাস
৫.আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস
৬.তাকদীরের প্রতি বিশ্বাস ঈমানের ছয় স্তম্ভ
মুসলমান হতে হলে ছয় বিষয়ে বিশ্বাস স্থাপন করতে হয়। এগুলো ঈমানের স্তম্ভ। বিষয়গুলো হলো—
১. আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস : আল্লাহর ওপর ঈমান আনার অর্থ এ কথা বিশ্বাস করা, আল্লাহ এক, অদ্বিতীয় ও অতুলনীয়। তাঁর কোনো অংশীদার নেই, তাঁর কোনো কিছুর অভাব নেই।
তিনিই সবার সব অভাব পূরণকারী। তিনি কারো বাবা নন, ছেলেও নন। তাঁর সমতুল্য কেউ নেই। একমাত্র তিনিই সব কিছুর সৃষ্টিকর্তা, রক্ষাকর্তা ও পালনকর্তা, বিধানদাতা।
আল্লাহ ছাড়া আর কোনো মাবুদ নেই।
২. ফেরেশতাদের প্রতি বিশ্বাস : ফেরেশতাদের প্রতি ঈমান বা বিশ্বাস স্থাপনের অর্থ হলো, ফেরেশতাদের অস্তিত্ব দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করা। তারাও আল্লাহ তাআলার সৃষ্টি। আল্লাহ তাদের যা আদেশ করেন, তারা সঙ্গে সঙ্গে তা পালন করেন।
৩. আসমানি কিতাবের প্রতি বিশ্বাস : আল্লাহ তাআলা মানুষের পথপ্রদর্শনের জন্য নবী-রাসুলদের ওপর বিভিন্ন আসমানি কিতার নাজিল করেছেন। এ ধরনের বড় কিতাবগুলো হচ্ছে—কোরআন, তাওরাত, জাবুর ও ইঞ্জিল।
৪. রাসুলদের প্রতি বিশ্বাস : আল্লাহ তাআলা যুগে যুগে অনেক নবী-রাসুল পাঠিয়েছেন। সব রাসুল সত্যবাদী, সত্যায়নকারী, পুণ্যবান, সঠিক পথের দিশারি, তাকওয়াবান ও বিশ্বস্ত। নবী-রাসুলরা নিষ্পাপ।আল্লাহ তাঁদের যা কিছু দিয়ে পাঠিয়েছেন তাঁরা তা পরিপূর্ণভাবে পৌঁছে দিয়েছেন। আর সর্বশেষ রাসুল হচ্ছেন মুহাম্মদ (সা.)।
৫. পরকালে বিশ্বাস : এ বিশ্বাস থাকতে হবে যে মৃত ব্যক্তিদের কবর থেকে আবার জীবিত করা হবে। সব মানুষ আল্লাহর সামনে দণ্ডায়মান হবে। আল্লাহ কিয়ামতের দিন তাদের যাবতীয় কর্মের হিসাব নেবেন। মিজান বা পাল্লায় আমলগুলো ওজন করা হবে। যার খারাপ কাজের চেয়ে ভালো কাজের পাল্লা ভারী হবে সে জান্নাতি হবে। যার ভালো কাজের চেয়ে খারাপ কাজের পাল্লা ভারী হবে সে জাহান্নামি হবে।
৬. তাকদিরে বিশ্বাস : তাকদিরে বিশ্বাস করা ঈমানের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। তাকদির হচ্ছে আল্লাহর বিশ্বজনীন নিয়মনীতি। আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন—এ চেতনা লালন করা এবং তার বিধিব্যবস্থায় সন্তুষ্ট থাকার মধ্যেই শান্তি ও মঙ্গল নিহিত আছে।
ঈমানের (৬টি) (৫টি) ইসলামের খুঁটি সমূহ 
youtube
ঈমানের পিলার কয়টি ও কি কি জানেন ❤️
youtube
ঈমানের রুকন কয়টি?
https://www.youtube.com/watch?v=2i0u7Ccs7aM
The 6 ( six ) pillars of Iman (faith) - assim al hakeem
https://www.youtube.com/watch?v=R1lkGzKJ5Jw
ঈমানের খুঁটি সমূহ
ঈমানের মৌলিক ৬ স্তম্ভ
Pillars of faith
The basic 6 pillars of faith
জান্নাত পেতে প্রয়োজন ঈমান ও নেক আমল
If you want to go to Paradise, you need faith and good deeds
0 notes
myreligionislam · 2 months
Text
Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media
৩. আসমানি কিতাবের প্রতি বিশ্বাস : আল্লাহ তাআলা মানুষের পথপ্রদর্শনের জন্য নবী-রাসুলদের ওপর বিভিন্ন আসমানি কিতার নাজিল করেছেন। এ ধরনের বড় কিতাবগুলো হচ্ছে—কোরআন, তাওরাত, জাবুর ও ইঞ্জিল।ঈমানের মৌলিক ৬ স্তম্ভ
The basic 6 pillars of faith
ঈমানের মৌলিক ৬ স্তম্ভ
১, আলাহ তায়ালার প্রতি বিশ্বাস
২.ফেরেস্তাদের প্রতি বিশ্বাস
৩. আসমানী কিতাব সমূহের প্রতি বিশ্বাস
৪.নবী রাসূল গণের প্রতি বিশ্বাস
৫.আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস
৬.তাকদীরের প্রতি বিশ্বাস ঈমানের ছয় স্তম্ভ
মুসলমান হতে হলে ছয় বিষয়ে বিশ্বাস স্থাপন করতে হয়। এগুলো ঈমানের স্তম্ভ। বিষয়গুলো হলো—
১. আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস : আল্লাহর ওপর ঈমান আনার অর্থ এ কথা বিশ্বাস করা, আল্লাহ এক, অদ্বিতীয় ও অতুলনীয়। তাঁর কোনো অংশীদার নেই, তাঁর কোনো কিছুর অভাব নেই।
তিনিই সবার সব অভাব পূরণকারী। তিনি কারো বাবা নন, ছেলেও নন। তাঁর সমতুল্য কেউ নেই। একমাত্র তিনিই সব কিছুর সৃষ্টিকর্তা, রক্ষাকর্তা ও পালনকর্তা, বিধানদাতা।
আল্লাহ ছাড়া আর কোনো মাবুদ নেই।
২. ফেরেশতাদের প্রতি বিশ্বাস : ফেরেশতাদের প্রতি ঈমান বা বিশ্বাস স্থাপনের অর্থ হলো, ফেরেশতাদের অস্তিত্ব দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করা। তারাও আল্লাহ তাআলার সৃষ্টি। আল্লাহ তাদের যা আদেশ করেন, তারা সঙ্গে সঙ্গে তা পালন করেন।
৩. আসমানি কিতাবের প্রতি বিশ্বাস : আল্লাহ তাআলা মানুষের পথপ্রদর্শনের জন্য নবী-রাসুলদের ওপর বিভিন্ন আসমানি কিতার নাজিল করেছেন। এ ধরনের বড় কিতাবগুলো হচ্ছে—কোরআন, তাওরাত, জাবুর ও ইঞ্জিল।
৪. রাসুলদের প্রতি বিশ্বাস : আল্লাহ তাআলা যুগে যুগে অনেক নবী-রাসুল পাঠিয়েছেন। সব রাসুল সত্যবাদী, সত্যায়নকারী, পুণ্যবান, সঠিক পথের দিশারি, তাকওয়াবান ও বিশ্বস্ত। নবী-রাসুলরা নিষ্পাপ।আল্লাহ তাঁদের যা কিছু দিয়ে পাঠিয়েছেন তাঁরা তা পরিপূর্ণভাবে পৌঁছে দিয়েছেন। আর সর্বশেষ রাসুল হচ্ছেন মুহাম্মদ (সা.)।
৫. পরকালে বিশ্বাস : এ বিশ্বাস থাকতে হবে যে মৃত ব্যক্তিদের কবর থেকে আবার জীবিত করা হবে। সব মানুষ আল্লাহর সামনে দণ্ডায়মান হবে। আল্লাহ কিয়ামতের দিন তাদের যাবতীয় কর্মের হিসাব নেবেন। মিজান বা পাল্লায় আমলগুলো ওজন করা হবে। যার খারাপ কাজের চেয়ে ভালো কাজের পাল্লা ভারী হবে সে জান্নাতি হবে। যার ভালো কাজের চেয়ে খারাপ কাজের পাল্লা ভারী হবে সে জাহান্নামি হবে।
৬. তাকদিরে বিশ্বাস : তাকদিরে বিশ্বাস করা ঈমানের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। তাকদির হচ্ছে আল্লাহর বিশ্বজনীন নিয়মনীতি। আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন—এ চেতনা লালন করা এবং তার বিধিব্যবস্থায় সন্তুষ্ট থাকার মধ্যেই শান্তি ও মঙ্গল নিহিত আছে।
ঈমানের (৬টি) (৫টি) ইসলামের খুঁটি সমূহ 
youtube
ঈমানের পিলার কয়টি ও কি কি জানেন ❤️
youtube
ঈমানের রুকন কয়টি?
https://www.youtube.com/watch?v=2i0u7Ccs7aM
The 6 ( six ) pillars of Iman (faith) - assim al hakeem
https://www.youtube.com/watch?v=R1lkGzKJ5Jw
ঈমানের খুঁটি সমূহ
ঈমানের মৌলিক ৬ স্তম্ভ
Pillars of faith
The basic 6 pillars of faith
জান্নাত পেতে প্রয়োজন ঈমান ও নেক আমল
If you want to go to Paradise, you need faith and good deeds
0 notes
allahisourrabb · 2 months
Text
Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media
৩. আসমানি কিতাবের প্রতি বিশ্বাস : আল্লাহ তাআলা মানুষের পথপ্রদর্শনের জন্য নবী-রাসুলদের ওপর বিভিন্ন আসমানি কিতার নাজিল করেছেন। এ ধরনের বড় কিতাবগুলো হচ্ছে—কোরআন, তাওরাত, জাবুর ও ইঞ্জিল।ঈমানের মৌলিক ৬ স্তম্ভ
The basic 6 pillars of faith
ঈমানের মৌলিক ৬ স্তম্ভ
১, আলাহ তায়ালার প্রতি বিশ্বাস
২.ফেরেস্তাদের প্রতি বিশ্বাস
৩. আসমানী কিতাব সমূহের প্রতি বিশ্বাস
৪.নবী রাসূল গণের প্রতি বিশ্বাস
৫.আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস
৬.তাকদীরের প্রতি বিশ্বাস ঈমানের ছয় স্তম্ভ
মুসলমান হতে হলে ছয় বিষয়ে বিশ্বাস স্থাপন করতে হয়। এগুলো ঈমানের স্তম্ভ। বিষয়গুলো হলো—
১. আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস : আল্লাহর ওপর ঈমান আনার অর্থ এ কথা বিশ্বাস করা, আল্লাহ এক, অদ্বিতীয় ও অতুলনীয়। তাঁর কোনো অংশীদার নেই, তাঁর কোনো কিছুর অভাব নেই।
তিনিই সবার সব অভাব পূরণকারী। তিনি কারো বাবা নন, ছেলেও নন। তাঁর সমতুল্য কেউ নেই। একমাত্র তিনিই সব কিছুর সৃষ্টিকর্তা, রক্ষাকর্তা ও পালনকর্তা, বিধানদাতা।
আল্লাহ ছাড়া আর কোনো মাবুদ নেই।
২. ফেরেশতাদের প্রতি বিশ্বাস : ফেরেশতাদের প্রতি ঈমান বা বিশ্বাস স্থাপনের অর্থ হলো, ফেরেশতাদের অস্তিত্ব দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করা। তারাও আল্লাহ তাআলার সৃষ্টি। আল্লাহ তাদের যা আদেশ করেন, তারা সঙ্গে সঙ্গে তা পালন করেন।
৩. আসমানি কিতাবের প্রতি বিশ্বাস : আল্লাহ তাআলা মানুষের পথপ্রদর্শনের জন্য নবী-রাসুলদের ওপর বিভিন্ন আসমানি কিতার নাজিল করেছেন। এ ধরনের বড় কিতাবগুলো হচ্ছে—কোরআন, তাওরাত, জাবুর ও ইঞ্জিল।
৪. রাসুলদের প্রতি বিশ্বাস : আল্লাহ তাআলা যুগে যুগে অনেক নবী-রাসুল পাঠিয়েছেন। সব রাসুল সত্যবাদী, সত্যায়নকারী, পুণ্যবান, সঠিক পথের দিশারি, তাকওয়াবান ও বিশ্বস্ত। নবী-রাসুলরা নিষ্পাপ।আল্লাহ তাঁদের যা কিছু দিয়ে পাঠিয়েছেন তাঁরা তা পরিপূর্ণভাবে পৌ��ছে দিয়েছেন। আর সর্বশেষ রাসুল হচ্ছেন মুহাম্মদ (সা.)।
৫. পরকালে বিশ্বাস : এ বিশ্বাস থাকতে হবে যে মৃত ব্যক্তিদের কবর থেকে আবার জীবিত করা হবে। সব মানুষ আল্লাহর সামনে দণ্ডায়মান হবে। আল্লাহ কিয়ামতের দিন তাদের যাবতীয় কর্মের হিসাব নেবেন। মিজান বা পাল্লায় আমলগুলো ওজন করা হবে। যার খারাপ কাজের চেয়ে ভালো কাজের পাল্লা ভারী হবে সে জান্নাতি হবে। যার ভালো কাজের চেয়ে খারাপ কাজের পাল্লা ভারী হবে সে জাহান্নামি হবে।
৬. তাকদিরে বিশ্বাস : তাকদিরে বিশ্বাস করা ঈমানের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। তাকদির হচ্ছে আল্লাহর বিশ্বজনীন নিয়মনীতি। আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন—এ চেতনা লালন করা এবং তার বিধিব্যবস্থায় সন্তুষ্ট থাকার মধ্যেই শান্তি ও মঙ্গ��� নিহিত আছে।
ঈমানের (৬টি) (৫টি) ইসলামের খুঁটি সমূহ 
youtube
ঈমানের পিলার কয়টি ও কি কি জানেন ❤️
youtube
ঈমানের রুকন কয়টি?
https://www.youtube.com/watch?v=2i0u7Ccs7aM
The 6 ( six ) pillars of Iman (faith) - assim al hakeem
https://www.youtube.com/watch?v=R1lkGzKJ5Jw
ঈমানের খুঁটি সমূহ
ঈমানের মৌলিক ৬ স্তম্ভ
Pillars of faith
The basic 6 pillars of faith
জান্নাত পেতে প্রয়োজন ঈমান ও নেক আমল
If you want to go to Paradise, you need faith and good deeds
0 notes
mylordisallah · 2 months
Text
Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media
৩. আসমানি কিতাবের প্রতি বিশ্বাস : আল্লাহ তাআলা মানুষের পথপ্রদর্শনের জন্য নবী-রাসুলদের ওপর বিভিন্ন আসমানি কিতার নাজিল করেছেন। এ ধরনের বড় কিতাবগুলো হচ্ছে—কোরআন, তাওরাত, জাবুর ও ইঞ্জিল।ঈমানের মৌলিক ৬ স্তম্ভ
The basic 6 pillars of faith
ঈমানের মৌলিক ৬ স্তম্ভ
১, আলাহ তায়ালার প্রতি বিশ্বাস
২.ফেরেস্তাদের প্রতি বিশ্বাস
৩. আসমানী কিতাব সমূহের প্রতি বিশ্বাস
৪.নবী রাসূল গণের প্রতি বিশ্বাস
৫.আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস
৬.তাকদীরের প্রতি বিশ্বাস ঈমানের ছয় স্তম্ভ
মুসলমান হতে হলে ছয় বিষয়ে বিশ্বাস স্থাপন করতে হয়। এগুলো ঈমানের স্তম্ভ। বিষয়গুলো হলো—
১. আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস : আল্লাহর ওপর ঈমান আনার অর্থ এ কথা বিশ্বাস করা, আল্লাহ এক, অদ্বিতীয় ও অতুলনীয়। তাঁর কোনো অংশীদার নেই, তাঁর কোনো কিছুর অভাব নেই।
তিনিই সবার সব অভাব পূরণকারী। তিনি কারো বাবা নন, ছেলেও নন। তাঁর সমতুল্য কেউ নেই। একমাত্র তিনিই সব কিছুর সৃষ্টিকর্তা, রক্ষাকর্তা ও পালনকর্তা, বিধানদাতা।
আল্লাহ ছাড়া আর কোনো মাবুদ নেই।
২. ফেরেশতাদের প্রতি বিশ্বাস : ফেরেশতাদের প্রতি ঈমান বা বিশ্বাস স্থাপনের অর্থ হলো, ফেরেশতাদের অস্তিত্ব দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করা। তারাও আল্লাহ তাআলার সৃষ্টি। ��ল্লাহ তাদের যা আদেশ করেন, তারা সঙ্গে সঙ্গে তা পালন করেন।
৩. আসমানি কিতাবের প্রতি বিশ্বাস : আল্লাহ তাআলা মানুষের পথপ্রদর্শনের জন্য নবী-রাসুলদের ওপর বিভিন্ন আসমানি কিতার নাজিল করেছেন। এ ধরনের বড় কিতাবগুলো হচ্ছে—কোরআন, তাওরাত, জাবুর ও ইঞ্জিল।
৪. রাসুলদের প্রতি বিশ্বাস : আল্লাহ তাআলা যুগে যুগে অনেক নবী-রাসুল পাঠিয়েছেন। সব রাসুল সত্যবাদী, সত্যায়নকারী, পুণ্যবান, সঠিক পথের দিশারি, তাকওয়াবান ও বিশ্বস্ত। নবী-রাসুলরা নিষ্পাপ।আল্লাহ তাঁদের যা কিছু দিয়ে পাঠিয়েছেন তাঁরা তা পরিপূর্ণভাবে পৌঁছে দিয়েছেন। আর সর্বশেষ রাসুল হচ্ছেন মুহাম্মদ (সা.)।
৫. পরকালে বিশ্বাস : এ বিশ্বাস থাকতে হবে যে মৃত ব্যক্তিদের কবর থেকে আবার জীবিত করা হবে। সব মানুষ আল্লাহর সামনে দণ্ডায়মান হবে। আল্লাহ কিয়ামতের দিন তাদের যাবতীয় কর্মের হিসাব নেবেন। মিজান বা পাল্লায় আমলগুলো ওজন করা হবে। যার খারাপ কাজের চেয়ে ভালো কাজের পাল্লা ভারী হবে সে জান্নাতি হবে। যার ভালো কাজের চেয়ে খারাপ কাজের পাল্লা ভারী হবে সে জাহান্নামি হবে।
৬. তাকদিরে বিশ্বাস : তাকদিরে বিশ্বাস করা ঈমানের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। তাকদির হচ্ছে আল্লাহর বিশ্বজনীন নিয়মনীতি। আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন—এ চেতনা লালন করা এবং তার বিধিব্যবস্থায় সন্তুষ্ট থাকার মধ্যেই শান্তি ও মঙ্গল নিহিত আছে।
ঈমানের (৬টি) (৫টি) ইসলামের খুঁটি সমূহ 
youtube
ঈমানের পিলার কয়টি ও কি কি জানেন ❤️
youtube
ঈমানের রুকন কয়টি?
https://www.youtube.com/watch?v=2i0u7Ccs7aM
The 6 ( six ) pillars of Iman (faith) - assim al hakeem
https://www.youtube.com/watch?v=R1lkGzKJ5Jw
ঈমানের খুঁটি সমূহ
ঈমানের মৌলিক ৬ স্তম্ভ
Pillars of faith
The basic 6 pillars of faith
জান্নাত পেতে প্রয়োজন ঈমান ও নেক আমল
If you want to go to Paradise, you need faith and good deeds
0 notes
khutbahs · 4 years
Link
তাওহীদের মৌলিক উপাদান (রুকন) তথা لا إله إلا لله ‘র মৌলিক উপাদান
রুকন হচ্ছে এমন বিষয়, যার অনুপস্থিতিতে অন্য একটি বিষয়ের অনুপস্থিতি অপরিহার্য হয়ে উঠে। রুকন অবশ্যই মূল বিষয়টির অন্তর্গত হওয়া চাই। যেহেতু রুকন কোন জিনিসের আভ্যন্তরীণ বা ভেতরের বিষয়,সেহেতু শুদ্ধ হওয়ার বিষয়টি এর উপর নির্ভরশীল। অতএব কোন জিনিসের রুকন ব্যতীত তা সহীহ বা শুদ্ধ হয় না। রুকন কি জিনিস, এটা জানার পর আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে যে, যে তাওহীদ আল্লাহ তায়ালা আপনার ওপর ওয়াজিব করে দিয়েছেন, সে তাওহীদেরও সালাতের মতোই রুকন আছে। সালাত যেমন তার রুকন যথা- তাকবীরে তাহরিমা, রকু, সেজদা, শেষ বৈঠক ইত্যাদি আদায় করা ব্যতীত শুদ্ধ হয় না, কোনো ব্যক্তি যদি সালাতের কোনো রুকন বাদ দেয় তাহলে তার সালাত যেমন ভাবে বাতিল হয়ে যায়, তেমনি ভাবে কোনো ব্যক্তি যদি তাওহীদের কোনো একটি রুকন বাদ দেয়, তাহলে সে ব্যক্তিও আল্লাহর একত্বে বিশ্বাসী ব্যক্তিতে পরিণত হতে পারবে না। এমতাবস্থায় কলেমা ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ‘ তার কোনো কাজে আসবে না, সে আর মুসলিম থাকবে না বরং সে কাফেরে পরিণত হয়ে যাবে।
তাওহীদের দুটি রুকন (মৌলিক উপাদান) তাওহীদের প্রথম রুকন বা মৌলিক বিষয় হচ্ছে “কুফর বিত ত্বাগুত বা তাগুতকে অস্বীকার করা”। আর দ্বিতীয় রুকন বা মৌলিক বিষয় হচ্ছে “ঈমান বিল্লাহ বা এক আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা”। এর প্রমাণ হচ্ছে, আল্লাহ তায়ালার নিম্মোক্ত বানীঃ “যে ব্যক্তি তাগুতকে অস্বীকার করলো আর আল্লাহর প্রতি ঈমান আনলো, সে এমন এক শক্ত রজ্জু ধারণ করলো যা কখনো ছিড়ে যাবার নয়”। (আল-বাক্বারাহ ২: ২৫৬)
ﺎ ﻣ ﺑ ﻠ উপরোক্ত আয়াতের فمن يكفر الطاغوت হচেছ ১ম রোকন, ﺆن ﺑ ہ ل হচেছ ২য় রোকন এবং العروة الوثقى (শক্ত রজ্জু) বলতে কলেমা কে বুঝানো হয়েছে। আর এটাই মূলতঃ তাওহীদের কলেমা।
সহীহ মুসলিম শরীফে বর্ণিত হাদীসে রাসল (সঃ) ইরশাদ করেছেনঃ “যে ব্যক্তি লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ বললো আর আল্লাহ ছাড়া অন্য সকল উপাস্যকে অস্বীকার করলো তার জান ও মাল পবিত্র “(অর্থাৎ কাফেরদের জান ও মালের মতো গনিমতের মাল নয়।) এবং তার হিসাবের ভার আল্লাহর ওপরই ন্যস্ত (অর্থাৎ মনের কুফরীর বিচার আল্লাহই করবেন।)
প্রথম রুকনঃ তাগুতকে অস্বীকার করা
প্রিয় পাঠক ! (আল্লাহ আপনাকে সঠিক পথের দিশা দান করন) আপনাকে জেনে রাখতে হবে যে, তাগুতের কুফরী ব্যতীত একজন বান্দা কখনো “মুওয়াহ্যিদ” (আল্লাহর একত্বে বিশ্বাসী) হতে পারে না। আর তাগুত কি জিনিস তা জানা ব্যতীত, তাগুতকে অস্বীকার করা কখনো সম্ভব নয়।
তাগুত এর আভিধানিক সংজ্ঞাঃ তাগুত শব্দের অর্থ হচ্ছে সীমালংঘনকারী, আল্লাহদ্রোহী, বিপথে পরিচালনাকারী। তাগুত শব্দটি আরবী (তুগইয়ান) শব্দ থেকে উৎসারিত, যার অর্থ সীমালংঘন করা, বাড়াবাড়ি করা, স্বেচ্ছাচারিতা। শব্দের ক্রিয়ামূল (ত্বগা) এবং বহুবচন । যেমন পানির একটি নির্দিষ্ট সীমা আছে। নূহ (আঃ) এর সময় যখন জলোচ্ছাস হয়েছিল তখন পানি তার এ সীমা অতিক্রম করেছিল, এ ঘটনাকে কোরআনে এভাবে বলা হয়েছেঃ ‘‘যখন জ্বলোচ্ছাস হয়েছিল তখন আমি তোমাদেরকে চলন্ত নৌযানে আরোহন করিয়েছিলাম”। (সূরা, হাক্কা-৬৯:১১)
কোরআনে আল্লাহ সুবহানাহুওয়াতায়ালা সাধারণ সীমালংঘন এবং সুনির্দিষ্ট সীমালংঘনের বর্ণনা দিতে ব্যবহার করেছেন। যেমন সাধারন সীমালংঘন অর্থে কোরআনে ক্রিয়াটি ব্যবহৃত হয়েছে-
كَلاَّ إِنَّ الإِْنسَانَ لَيَطْغَى অর্থাৎ “বস্তুত মানুষতো সীমালংঘন (لَيَطْغَى লা ইয়াতগা) করেই থাকে।” (সূরা, ‘আলাক- ৯৬:৬)
أَلاَّ تَطْغَوْا فِي الْمِيزَانِ “যাতে তোমরা সীমালংঘন (تَطْغَو লা তাতগা) না কর মানদন্ডে।” (সূরা, আর রাহমান-৫৫:৮)
সুনির্দিষ্ট সীমালংঘন অর্থে ক্রিয়াটি ব্যবহৃত হয়েছে (হালাল খাবার সম্পর্কে): “তোমাদিগকে আমি যা দিয়েছি তা থেকে পবিত্র বস্তুসমূহ খাও এবং সীমালংঘন করো না, তাহলে তোমাদের উপর আমার ক্রোধ নেমে আসবে এবং যার উপর আমার ক্রোধ নেমে আসবে সে ধ্বংস হয়ে যায়।” (সূরা, ত্ব-হাঃ ৮১)
যারা অবিশ্বাসী হয়ে সীমালংঘন করে আল্লাহ তাদের জন্যও এ ক্রিয়া ব্যবহার করেছেন। যারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে অন্যকে রব এবং ইলাহ (ইবাদতের যোগ্য) হিসেবে গ্রহন করে সীমালংঘন করেছে কোরআনে সে কাফিরদেরকে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতা‘য়ালা (ত্বা-গি-ন) বলেছেন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতা‘য়ালা বলেনঃ “আর সীমালংঘনকারীদের (লিত ত্বাগিন) জন্য রয়েছে নিকৃষ্ট পরিণাম।” (সূরা, ছোয়াদ-৩৮:৫৫) “প্রকাশ করা হবে জাহান্নাম, অনন্তর যে সীমালংঘন করে এবং পার্থিব জীবনকে প্রাধান্য দেয়।” (সূরা, নাযিয়াত-৭৯: ৩৬-৩৮) অর্থাৎ “ছামুদ সম্প্রদায় অবাধ্যতায় (বি ত্বাগওয়াহা~) অস্বীকার করেছিল।” (সূরা, শামস-৯১:১১)
আল্লাহর প্রতি ঈমান ও তাগুতকে বর্জনের অপরিহার্যতা
প্রত্যেক ব্যক্তির এই জ্ঞান থাকা উচিৎ যে,সমস্ত জীব ও জড়ের সূচনা ও কর্তৃত্ব মহান আল্লাহর।
সালাত, যাকাত বা অন্যান্য ইবাদতের পূর্বে যে দৃঢ় ব্যাপার মহান আল্লাহ আদম (আঃ) এর সন্তানদের আদেশ করেছেন তা হল আল্লাহ তা’য়ালা একত্বের প্রতি ঈমান আনয়ন করা এবং অন্য সমস্ত উপাস্যগুলোকে (তাগুত) পরিত্যাগ ও অস্বীকার করা।
এর জন্যই আল্লাহ জীব সৃষ্টি করলেন, নবীদের প্রেরণ করলেন, আসমানী কিতাবগুলো নাযিল করলেন এবং আদেশ দিলেন জিহাদ ও শাহাদাতের। এর জন্যই মহান আল্লাহর বান্দা ও শয়তানের অনুসারীদের মধ্যে রয়েছে শত্রুতা আর এর দ্বারাই মুসলিম জাতি ও সঠিক খিলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হবে। আল্লাহ তা’য়ালা বলেনঃ “আমি সৃষ্টি করেছি জ্বিন এবং মানুষকে এইজন্য যে, তারা আমারই ইবাদত করবে।” (সূরা-যারিয়াত: ৫৬) এর অর্থ একমাত্র আল্লাহরই ইবাদত করা। তিনি আরও বলেনঃ “আল্লাহর ইবাদত করিবার ও তাগুতকে বর্জন করবার নির্দেশ দিবার জন্য আমি তো প্রত্যেক জাতির মধ্যেই রাসূল পাঠিয়েছি।” (সূরা-নাহল: ৩৬)
কোন ইলাহ নাই আল্লাহ ব্যতীত (আক্ষরিক কোন উপাস্য বা ইবাদতের যোগ্য কোন কিছু বা কেউ নাই একমাত্র আল্লাহ ছাড়া), এই বিশ্বাস হচ্ছে ইসলামের মূল বা ভিত্তি। এই বিশ্বাসের অবর্তমানে কোন দাওয়া, জিহাদ, সালাত, সওম, যাকাত বা হজ্জ কিছুই গ্রহণযোগ্য হবে না। কোন ব্যক্তিকেই জাহান্নামের আগুন থেকে বাচাঁনো যাবে না যদি না সে এই ভিত্তির প্রতি ঈমান না এনে থাকে। কারণ এটাই মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে তাঁর বান্দাদের প্রতি আদেশকৃত অলঙ্ঘনীয় ভিত্তি। এই ভিত্তির অবর্তমানে দ্বীন-ইসলামের অন্যান্য স্তম্ভগুলো কোন ব্যক্তিকে জাহান্নামের আগুন হতে নিরাপদে রাখার জন্য যথেষ্ট নয়। মহান আল্লাহ বলেনঃ “----যে তাগুতকে অস্বীকার করবে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে সে এমন এক মযবুত হাতল ধরবে যা কখনও ভাঙ্গবে না। আল্লাহ সর্বশ্রোতা, প্রজ্ঞাময়।” (সূরা-বাকারা:২৫৬)
মহান আল্লাহ আরও বলেনঃ “যারা ত্বাগুতের ইবাদত হতে দূরে থাকে এবং আল্লাহর অভিমূখী হয়, তাদের জন্য আছে সুসংবাদ। অতএব সুসংবাদ দাও আমার বান্দাদেরকে।” (সূরা-যুমার:১৭) লক্ষ্য করুন কেমন করে আল্লাহ
তা’আলা তাঁর নিজের প্রতি ঈমান আনার পূর্বে সকল (মিথ্যা) উপাস্যদের অস্বীকার ও অবিশ্বাস করার কথা বলেছেন, যেমন তিনি ঈমান আনয়নের পূর্বে কুফরকে ত্যাগ করার কথা বলেছেন।
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ-এই শব্দগুলোর মাধ্যমে আল্লাহ তা’আলার একত্ববাদের আদেশ দিয়েছেন
যা কিনা ইসলামের এই মজবুত ভিত্তির গুরুত্বপূর্ণ মূলনীতির দিকে লক্ষ্য আরোপ করে। অতএব, সকল (ম��থ্যা) উপাস্যদের চরম মাত্রায় অস্বীকার করা ব্যতীত মহান আল্লাহর প্রতি একনিষ্ট ঈমান পোষণ করা যায় না। তাগুতকে চেনার পর নিশ্চয়ই তাগুতকে অস্বীকার করার অপরিহার্যতা কি বুঝতে পারছেন। কারণ এটা অসম্ভব যে, কোন ব্যাপারে বিশ্বাস করা, যতক্ষন না এ বিশ্বাসের বিপরীত কিছুকে অস্বীকার ও অবিশ্বাস করা হয়। উদাহরণস্বরুপ কেউ যদি দাবী করে, ‘আমি এক ইলাহকে বিশ্বাস করি।’ অত:পর সে বলল, ‘আমি দুই ইলাহকে বিশ্বাস করি’। ঐ ব্যক্তির দ্বিতীয় উক্তি প্রথম স্বীকারোক্তিকে মিথ্যায় পরিণত করে বা অস্বীকার করে। কারণ দ্বিতীয় উক্তি প্রথম উক্তির সম্পূর্ণ বিপরীত। এর অর্থ হচ্ছে তার একটা দাবী মিথ্যা অথবা উভয়টিই মিথ্যা। এজন্যই ঐরকম উক্তি সত্যকে মিথ্যা এবং অগ্রহনযোগ্য করে দেয়। সুনিশ্চিত সত্য একটা ব্যাপারে দু‘টি বিপরীতমুখী দিক থাকতে পারে না, যা ঐ নিশ্চিত বিষয়কে অস্বীকার করে।
তাগুতকে অস্বীকার করা আল্লাহর প্রতি ঈমান আনয়নের অনিবার্য দাবী। তাওহীদের প্রথম রুকনই হচ্ছে তাগুতকে অস্বীকার করা, সুতরাং তাগুতকে বর্জন না করলে আল্লাহর প্রতি ঈমানের ��াবী হবে অর্থহীন। ঈমানের প্রথম স্তম্ভ আল্লাহকে বিশ্বাস করা এবং দৃঢ়ভাবে ঘোষনা দেয়া । প্রথম অংশ অস্বীকার করে দ্বিতীয় অংশ এর বিরোধী বা বিপরীত কোন কিছুকে।
নিচের আয়াতটি এ বিষয়টি স্পষ্ট করে দেয় যে, ত্বাগুতকে মেনে নেয়া এককভাবে আল্লাহর ইবাদত করার সম্পূর্ণ বিপরীত। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতা‘য়ালা বলেনঃ অর্থাৎ “আমি প্রত্যেক জাতির নিকট রাসুল প্রেরণ করেছি আল্লাহর ইবাদত করার এবং তাগুতকে বর্জন করার নির্দেশ দেবার জন্য।” (সূরা, নাহল-১৬:৩৬) সুতরাং যে ব্যক্তি তাগুতকে অস্বীকার করল না সে নবীদের মূল দাওয়াতকে অস্বীকার করল এবং মূলতঃ আল্লাহর ইবাদত করতে অস্বীকার করল। কারণ প্রত্যেক নবী তাদের কওমকে তাগুতের ইবাদতকে পরিত্যাগ করে এক আল্লাহর ইবাদত করার আহবান জানিয়েছিলেন।
এখন কেউ যদি নিজেকে ঈমানদার দাবী করে তাকে অবশ্যই তাগুতকে বর্জন করতে হবে। কারণ যে কালেমার স্বীকৃতি দিয়ে সে ইসলামে এসেছে সে কলিমার প্রথমাংশ ঘোষণা করার মাধ্যমে যাবতীয় বাতিল মা‘বুদকে অর্থাৎ তাগুত বর্জনের দৃঢ় ঘোষণা দিয়েছে এবং দ্বিতীয় অংশ ঘোষণার মাধ্যমে একমাত্র আল্লাহকে ইলাহ হিসাবে মেনে নিয়েছে। সুতরাং তাগুতকে বর্জন না করলে ঈমানের দাবী মিথ্যা প্রমানিত হবে। যারা এই তাগুতদের মানে তারা আল্লাহকে মানতে পারে না, আর যারা আল্লাহকে মানে তারা তাগুতদের মানতে পারে না। তবে হ্যাঁ, এমন অনেক ব্যক্তি আছে আল্লাহকে মানে আবার তাগুতদেরকেও মানে, কিন্তু আসলে যে আল্লাহকে মানা হয় না এ বোধ তাদের নেই। আর বর্তমানে অধিকাংশ লোকদের অবস্থাই এরকম।
উদাহরণস্বরূপ, কোরআন মাজীদে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘য়ালা ঐ ব্যক্তির ঈমানের মূল্যহীনতার কথা বলেছেন যে ব্যক্তি নিজেকে ঈমানদার দাবী করে আবার তাগুতের কাছে বিচার-ফায়সালা চায়, আল্লাহ তা‘য়ালা বলেনঃ “আপনি কি তাদেরকে দেখেন নি, যারা দাবী করে যে, আপনার প্রতি যা নাযিল করা হয়েছে এবং আপনার পূর্বে যা নাযিল করা হয়েছে তার প্রতি তারা ঈমান আনয়ন করেছে। তারা বিরোধপূর্ণ বিষয়কে ফয়সালার জন্য তাগুতের দিকে নিয়ে যেতে চায়, অথচ তাদের প্রতি তাকে (তাগুতকে) অমান্য করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।” (আন-নিসাঃ ৬০)
যারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে কিংবা আল্লাহর পাশাপাশি তাগুতের ইবাদত করে তাদের উপর আল্লাহর লানৎ বর্ষিত হবে। আল্লাহতা‘য়ালা বলেন- “তুমি কি তাদেরকে দেখনি, যারা কিতাবের কিছু অংশ প্রাপ্ত হয়েছে, যারা মান্য করে প্রতিমা ও শয়তানকে এবং কাফেরদেরকে বলে যে, এরা মুসলমানদের তুলনায় অধিকতর সরল সঠিক পথে রয়েছে। এরা হলো সে সমস্ত লোক, যাদের উপর লা’নত করেছেন আল্লাহ তা’আলা স্বয়ং। বস্তুতঃ আল্লাহ যার উপর লা’নত করেন তুমি তার কোন সাহায্যকারী খুঁজে পাবে না”। (সূরা নিসা ৪:৫১-৫২)
পূর্ববর্তী জাতি যারা তাগুতের ইবাদত করেছিল তাদের ব্যাপারে আল্লাহ বলেনঃ “বলুনঃ আমি তোমাদেরকে বলি, তাদের মধ্যে কার মন্দ প্রতিফল রয়েছে আল্লাহর কাছে? যাদের প্রতি আল্লাহ অভিসম্পাত করেছেন, যাদের প্রতি তিনি ক্রোধাম্বিত হয়েছেন, যাদের কতককে বানর ও শুকরে রূপান্তরিত করে দিয়েছেন এবং যারা শয়তানের আরাধনা করেছে, তারাই মর্যাদার দিক দিয়ে নিকৃষ্টতর এবং সত্যপথ থেকেও অনেক দূরে।”(সূরা মায়েদাহ-৫:৬০)
আর যারা তাগুতের ইবাদতকে প্রত্যাখ্যান করে আল্লাহ তাদের সুসংবাদ প্রদান করেনঃ
“যারা শয়তানী শক্তির পূজা-অর্চনা থেকে দূরে থাকে এবং আল্লাহ অভিমুখী হয়, তাদের জন্যে রয়েছে সুসংবাদ। অতএব, সুসংবাদ দিন আমার বান্দাদেরকে।যারা মনোনিবেশ সহকারে কথা শুনে, অতঃপর যা উত্তম, তার অনুসরণ করে। তাদেরকেই আল্লাহ সৎপথ প্রদর্শন করেন এবং তারাই বুদ্ধিমান।” (সূরা যুমার ৩৯:১৭-১৮)
যারা তাগুতের ইবাদতকে প্রত্যাখ্যান করে আল্লাহ তাদের ওয়ালী হবেনঃ “যারা ঈমান এনেছে, আল্লাহ তাদের অভিভাবক। তাদেরকে তিনি বের করে আনেন অন্ধকার থেকে আলোর দিকে। আর যারা কুফরী করে তাদের অভিভাবক হচ্ছে তাগুত। তারা তাদেরকে আলো থেকে বের করে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যায়। এরাই হলো দোযখের অধিবাসী, চিরকাল তারা সেখানেই থাকবে”। (সূরা বাকারা ২:২৫৭)
তাগুত শব্দের শর‘য়ী সংজ্ঞা
এখানে আমরা আলোচনা করব তাগুত শব্দের শার’য়ী অর্থ নিয়ে তা, এজন্য যে কোরআন-সু্ন্নাহয় যখন কোন শব্দ ব্যবহৃত হয় তখন তার একটা নির্দিষ্ট শার’য়ী অর্থ দাড়ায়। তাগুত শব্দটি আল্লাহ কর্তৃক প্রেরিত ওহী দ্বারা সাব্যস্ত, যা আক্বীদার সাথে সম্পৃক্ত। তাগুত’ এর ভাষাগত মূল (ত্বা-গি-ন) এর মত একই রকম মূল হলেও তাগুত হচ্ছে সীমালংঘনের সুনির্দিষ্ট ধরণ। সীমালংঘন করলেই ত্বাগুত হয়ে যায় না, যেমন আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন পবিত্র (হালাল) খাবার খাওয়ার জন্য এবং এ ব্যাপারে বাড়াবাড়ি বা সীমালংঘন না করার জন্য (সূরা, ত্ব-হা ২০:৮১)। এখন কেউ যদি হারাম খায় তাহলে সে ত্বাগুত হয়ে যাবে না, বরং সে অবাধ্য হবে। এরকম অন্যান্য পাপের ক্ষেত্রেও শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে। এ ধরনের পাপ বা সীমালংঘন কুফর, শিরক্, নিফাক্ পর্যন্ত পৌছতে পারে কিন্তু এ কারণে কেউ ত্বাগুত হয়ে যায় না। বরং ত্বাগুত হবে ঐ রকম সীমালংঘনের ক্ষেত্রে যখন কোন ব্যক্তি নিজেকে আল্লাহর সাথে শরীক্ করে। সুতরাং একথা সুস্পষ্ট, যে আল্লাহ ছাড়া অন্যের ইবাদত করে সে মুশরিক কিন্তু সে ত্বাগুত নয়। আল্লাহ তাকে ত্বা-গি-ন বলেছেন। আর তাগুত হচ্ছে সে যে নিজেকে (মিথ্যা) রব এবং ইলাহ (অর্থাৎ ইবাদতের যোগ্য) বানিয়ে নেয়। এজন্যই সব তাগুতেরা ত্বা-গি-ন কিন্তু সব ত্বা-গি-নেরা তাগুত নয়।
যে ব্যক্তি আল্লাহর অধিকার, গুনাবলী, কার্যাবলী ও সত্তার দাবীতে সীমালংঘন করে সে তাগুত। আল্লাহ ব্যতীত যে কেউ ইবাদত গ্রহন করে বা দাবী করে সে তাগুত এবং যে কেউ আল্লাহর গুনাবলী দাবী করে সেও ত্বাগুত। তাগুত হচেছ সেই ব্যক্তি যে নিজের প্রতি আল্লাহর কার্যাবলী বা গুনাবলী আরোপ করে। যেমন ফেরাউন আল্লাহ দ্রোহী হয়েছিল এবং সীমালংঘন করেছিল, আল্লাহ সার্বভৌমত্বের মালিক অথচ সে নিজে মিসরের সার্বভৌমত্ব দাবী করেছিল। সে লোকদেরকে জড়ো করে ভাষণ দিয়েছিল যা কোরআনে উল্লেখ করা হয়েছেঃ “ফেরাউন তার জাতির উদ্দেশ্যে (এক) ভাষণ দিলো। সে বললো, মিশরের সার্বভৌমত্ব কি আমার নয়? তোমরা কি দেখছো না যে, এই নদীগুলো আমার (রাজত্বের) অধীনেই বয়ে চলছে--------।”(সূরা যুখরুফ ৪৩:৫১)
আল্লাহতা‘য়ালা তাকে ‘ত্বাগা’ বলেছেন সূরা ত্বাহার ২৪ নং আয়াতে এবং মুসা (আঃ) কে নির্দেশ দিয়েছিলেন তার কাছে যাওয়ার জন্য- “ফেরাউনের নিকট যাও, সে তো সীমালংঘন করেছে।” শরীয়তের পরিভাষায়, এমন প্রত্য���ক ব্যক্তিই তাগুত যে, আল্লাহদ্রোহী হয়েছে এবং সীমালংঘন করেছে, আর আল্লাহর কোনো হককে নিজের দিকে সম্পর্কযুক্ত করেছে এবং এমন বিষয়ে নিজেকে আল্লাহর সাথে সমকক্ষ বানিয়েছে, যা একমাত্র আল্লাহর জন্য খাস।
সুস্পষ্ট ভাবে তাগুত এর অর্থ হচ্ছে, কোন মাখলুক (সৃষ্টি) নিন্মোক্ত তিনটি বিষয়ের যে কোন একটি বিষয়কে (আল্লাহর স্থলে) নিজের দিকে সম্পর্কযুক্ত করাঃ-কোন মাখলুক (সৃষ্টি) কর্তৃক আল্লাহতা‘য়ালার কার্যাবলীর যে কোন কার্য সম্পাদনের বিষয়টি নিজের দিকে সম্পর্কযুক্ত করা। যেমন সৃষ্টি করা, রিজিক দান অথবা শরীয়ত (বিধান) রচনা। এসব বিষয়গুলো সম্পাদনের ব্যাপারকে যে ব্যক্তি নিজের দিকে সম্পর্কযুক্ত করবে (অর্থাৎ কেউ যদি বলে, আমি সৃষ্টি করি,আমি বিধান দেই) সেই তাগুত ।
কোন মাখলুক (সৃষ্টি) আল্লাহতা‘য়ালার কোন সিফাত বা গুন কে নিজের দিকে সম্পর্কযুক্ত করা। যেমন ইলমে গায়েব জানা। যদি কেউ তা করে (অর্থাৎ বলে আমি এলমে গায়েব জানি) তাহলে তাকে তাগুত হিসেবে গন্য করা হবে।
যে কোন ইবাদত মাখলুক কর্তৃক (বা সৃষ্টির) এর উদ্দেশ্যে সম্পাদন করা । যেমনঃ দোয়া, মানত, নৈকট্য লাভের জন্য পশু জবাই অথবা বিচার ফায়সালা চাওয়া। যদি (কোন মাখলুক) এসব ইবাদত গ্রহন করে, দাবীকরে, আকাঙ্খা করে অথবা (নিজের জন্য) সম্পাদন করে, তাহলে সেই তাগুত।
এমনকি কেউ তার জন্য ইবাদত নিবেদন করলে যদি সে নীরব থাকে তাহলেও সে ত্বাগুত বলে গন্য হবে, যতক্ষন পর্যন্ত না সে নিজেকে এ থেকে পবিত্র ও মুক্ত করে নেয় এবং এ হক্ আল্লাহর একথা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়।
উপরোক্ত যে তিনটি বিষয়ে আলোচনা করেছি, তার যে কোন একটি যদি কেউ নিজের দিকে সম্পর্কযুক্ত করে বা নিজের জন্য সম্পাদন করে তাহলে সে তাগুত হিসেবে গন্য এবং নিজেকে আল্লাহর সমকক্ষ করে নিল। ইমাম আত্ তাবারী (রহঃ) বলেন, “আল্লাহর দেয়া সীমালংঘনকারী মাত্রই তাগুত বলে চিহ্নিত, যার অধীনস্থ ব্যক্তিরা চাপের মুখে তার ইবাদত করে বা তাকে তোষামোদ করার জন্য বা তার আনুগত্য প্রকাশ করার জন্য তার ইবাদত করে। এ (তাগুত) উপাস্যটি মানুষ কিংবা শয়তান বা মূর্তি অথবা অন্য যেকোন বস্তু হতে পারে।” (তাফসীরে তাবারী, ইফাবা/৫ম খন্ড, ২৫৬ নং আয়াতের তাফসীর)
সাইয়্যেদ আবুল আ‘লা মওদুদী তাহফীমুল কোরআনে সূরা বাকারার ২৫৬ নং আয়াতের তাফসীরে তাগুতের ব্যাখ্যায় বলেন, “আভিধানিক অর্থে এমন প্রত্যেক ব্যক্তিকে তাগুত বলা হবে, যে নিজের বৈধ অধিকারের সীমালংঘন করেছে। কোরআনের পরিভাষায় তাগুত এমন এক বান্দাকে বলা হয়, যে বন্দেগী ও দাসত্বের সীমা অতিক্রম করে নিজেই প্রভূ এবং রব হবার দাবীদার সাজে এবং আল্লাহর বান্দাদেরকে নিজেদের বন্দেগী এবং দাসত্বে নিযুক্ত করে। কোন ব্যক্তি এই তাগুতকে অস্বীকার না করা পর্যন্ত কোন দিন সঠিক অর্থে আল্লাহর মু‘মিন বান্দা হতে পারে না।”
আল্লামা ড: মুহাম্মদ তকীউদ্দীন হেলালী ও আল্লামা ড: মুহাম্মদ মুহসিন খান কর্তৃক অনুদিত কুরআন মাজীদের ইংরেজী অনুবাদের সূরা বাকারার ২৫৬ নং আয়াতে উল্লেখিত ‘তাগুত’ শব্দের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে- “ The word ‘Taaghoot’ covers a wide range of meaning: it means everything worshipped other that Allah, i.e. all false deities. It may be satan, devils,idols, stones, sun, stars, human beings.” অর্থাৎ “তাগুত” শব্দটি বিস্তৃত অর্থ বোঝায়ঃ এটার অর্থ আল্লাহ ছাড়া যাদের ইবাদত করা হয়। যেমন সকল মিথ্যা উপাস্য; এটা শয়তান, মৃত ব্যক্তির আত্মা, মুর্তি, পাথর, সূর্য, তারকা, অথবা কোন মানুষও হতে পারে। (The Noble Qur’an .English Translation , পৃষ্ঠা ৫৮)
সাইয়্যেদ কুতুব (রহ:) বলেন, “তাগুত বলতে সেইসব ব্যক্তি ও ব্যবস্থাকে বোঝায় যেগুলো ঐশী দ্বীন এবং নৈতিক, সামাজিক ও আইন-শৃঙ্খলাকে অবমাননা করে এবং আল্লাহ নির্দেশিত বা তার দেয়া দিক-নির্দেশনা থেকে উদ্ভুত নয় এমন সব মূল্যবোধ ও রীতিনীতির ভিত্তিতে এই জীবন ব্যবস্থা পরিচালনা করে।” (তাফসীরে ফি যিলালিল কোরআন)
ইমাম মালেক (রহ:) তাগুতের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেছেনঃ “এমন প্রত্যেক জিনিসকেই তাগুত বলা হয়,আল্লাহ তা‘য়ালাকে বাদ দিয়ে যার ইবাদত করা হয়।” (ফতহুল ক্বাদীর, আল্লামা শওক্বানী) এ সংজ্ঞাটি উত্তম এবং ব্যাপক অর্থজ্ঞাপক। আল্লাহ ব্যতীত যারই ইবাদত করা হয় সেই এ সংজ্ঞার অন্তর্ভূক্ত। যেসব উপাস্যকে ‘তাগুত’ হিসেবে গন্য করা হয় সেগুলোর মধ্যে রয়েছেঃ
মূর্তি, এমন সব কবর, গাছ, পাথর ও অচেতন পদার্থ যে গুলোর উপাসনা করা হয়;
আল্লাহর আইন ব্যাতীত এমন সব আইন যার মাধ্যমে বিচার ফায়সালা চাওয়া হয়;
এমনসব বিচারক তাগুতের অন্তর্ভূক্ত যারা আল্লাহর আইনের বিরোধী আইনদ্বারা মানুষের মধ্যে বিচার ফায়সালা করে;
শয়তান, যাদুকর, গনক (যারা ইলমে গায়েবের ব্যাপারে কথা বলে);
উপাস্য হতে যে রাজী;
যারা আইন রচনা বা মানুষের জন্য হালাল-হারাম নির্ধারণ করে কিংবা করার অধিকার রাখে বলে মনে করে;
প্রধান প্রধান তাগুত
তাগুতের সংখ্যা অনেক। তবে পাঁচ ধরণের তাগুত নেতৃত্বের আসনে রয়েছেঃ
১. গায়রুলাহর ইবাদতের দিকে আহবানকারী শয়তান;
২. আল্লাহর আইন পরিবর্তনকারী জালেম শাসক;
৩. আল্লাহ তা‘য়ালার নাযিলকৃত বিধান ছাড়া যে বিচার-ফায়সালা করে;
৪. আল্লাহ ব্যতীত যে ব্যক্তি এলমে গায়েব জানে বলে দাবী করে;
৫. আল্লাহ ছাড়া যার ইবাদত করা হয় এবং সে এই ইবাদত গ্রহণে রাজি বা খুশি থাকে;
Collected From
সরলপথ
0 notes
nill-sagor · 5 years
Text
#আকীদা_বিষয়ক ৫০টি প্রশ্নোত্তর.?
▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬
গ্রন্থনায়: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
লিসান্স,মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সৌদি আরব, দাঈ ও গবেষক, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদী আরব।
▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬
بِسْمِ اللَّـهِ الرَّحْمَـٰنِ الرَّحِيمِ
الحمد لله وحده والصلاة والسلام على من لانبي بعده
সুপ্রিয় দ্বীনী ভাই ও বোনেরা,
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।
অত:পর ‘আকীদা বিষয়ক ৫০টি প্রশ্নোত্তর’ শীর্ষক ছোট্ট এই পুস্তিকাটিতে ইসলামের অত্যন্ত মৌলিক এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে ৫০টি প্রশ্নোত্তর প্রস্তুত করা হয়েছে-যেগুলো সম্পর্কে প্রত্যেক মুসলিমের জন্য জ্ঞান থাকা অপরিহার্য।
এখানে যে সব বিষয় আলোচিত হয়েছে সেগুলো হল:
• মহান আল্লাহর পরিচয়
• ইসলাম এবং তার রোকন সমূহ
• ঈমান ও তার রোকন সমূহ
• তাওহীদ ও তার প্রকারভেদ
• শিরক ও তার প্রকারভেদ।
• কুফরী ও তার প্রকারভেদ
• মুনাফেকি এবং তার প্রকারভেদ
• কালিমার অর্থ এবং শর্তাবলী
• ইবাদতের পরিচয় এবং তা কবুলের শর্তাবলী
• তাগুতের পরিচয় ও তার প্রকারভেদ
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করে জ্ঞানের আলোকিত পথ ধরে জীবন পরিচালনা করার তাওফিক দান করুন। আমীন।
-বিনীত, আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬
❖ ১ম প্রশ্ন: আমার, আপনার এবং পৃথিবীর সব কিছুর স্রষ্টা ও পালনকর্তা কে?
উত্তর: আমার, আপনার এবং সারা জাহানের একমাত্র স্রষ্টা ও পালনকর্তা হলেন মহান আল্লাহ। তিনি দয়া করে আমাকে সহ পৃথিবীর প্রতিটি বস্তু সৃষ্টি করেছেন এবং সবকিছু লালন-পালন করছেন।
❖ ২য় প্রশ্ন: আমাদের দ্বীন বা জীবন ব্যবস্থার নাম কি?
উত্তর: আমাদের দ্বীন বা জীবন ব্যবস্থার নাম হল ইসলাম। ইসলাম মানে হল, আল্লাহকে ভয় করে, তাঁর প্রতি ভালবাসা রেখে এবং তাঁর কাছেই আশা ও আকাঙ্ক্ষা নিয়ে পরিপূর্ণভাবে তাঁর আদেশ-নিষেধ মেনে চলা।
❖ ৩য় প্রশ্ন: আমরা কিভাবে আল্লাহর পরিচয় লাভ করতে পারি?
উত্তর: আমরা এ বিশাল সৃষ্টি জগতের দিকে তাকালে আল্লাহর পরিচয় পাই। ঐ সুবিশাল আকাশ,এই বিস্তীর্ণ পৃথিবী, চাঁদ, সুরুজ, দিন ও রাতের আবর্তন ইত্যাদির দিকে গভীরভাবে তাকালে বুঝতে পারি এ বিশ্বচরাচর একাকী সৃষ্টি হয়ে যায়নি। বরং এসবের পেছনে রয়েছে একজন সুনিপুণ স্রষ্টার হাত। আর তিনি হলেন,মহান আল্লাহ তা’আলা।
❖ ৪র্থ প্রশ্ন: আল্লাহ কোথায় আছেন?
উত্তর: আল্লাহ তা’আলা সাত আসমানের উপর আরশে আযীমে অবস্থান করেন। তিনি তাঁর সব সৃষ্টি থেকে আলাদা।
❖ ৫ম প্রশ্ন: আল্লাহ কি স্বত্বাগতভাবে আমাদের সাথে থাকেন?
উত্তর: আল্লাহ স্বী��় স্বত্বায় আরশে আযীমের উপর অবস্থান করেন। কিন্তু তাঁর জ্ঞান আমাদেরকে পরিবেষ্টন করে আছে। তিনি সব কিছু দেখছেন। সব কিছু শুনছেন। তার শক্তি এবং ক্ষমতা সব জায়গায় বিরাজমান। আল্লাহ তা’আলা মূসা ও হারুন (আলাইহিমাস সালাম)কে লক্ষ্য করে বলেন, “তোমরা ভয় পেও না। আমি তোমদের সাথে আছি। সব কিছু দেখছি এবং শুনছি।” (সূরা ত্ব-হাঃ ৪৬)
❖ ৬ষ্ঠ প্রশ্ন: আল্লাহর অলি কারা?
উত্তর: অলি শব্দের অর্থ, আল্লাহর প্রিয়পাত্র বা বন্ধু। তারাই আল্লাহর প্রিয়পাত্র হন যারা সত্যিকার ভাবে আল্লাহকে ভয় করে জীবন পরিচালনা করেন, সৎ আমল করেন, তাঁর আদেশগুলো বাস-বায়ন করেন এবং নিষেধ কৃত বিষয়গুলো থেকে নিজেদেরকে বাঁচিয়ে রাখেন এবং কুরআন ও হাদিসকে দৃঢ়ভাবে ধরে রাখেন।
❖ ৭ম প্রশ্ন: কি পদ্ধতিতে আমাদের আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগী করা উচিৎ?
উত্তর: আমাদের কর্তব্য হল, এমনভাবে আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগী করব যাতে সবটুকু ইবাদত শুধু তাঁর জন্যই নিবেদিত হয়। অন্য কোন সৃষ্টিকে তাঁর সাথে শরীক বা অংশীদার করা না হয়।
❖ ৮ম প্রশ্ন: কি দায়িত্ব দিয়ে আল্লাহ তা’আলা যুগে যুগে নবীদেরকে প্রের�� করেছিলেন?
উত্তর: যুগে যুগে সকল নবী ও রসূলগণকে প্রেরণের উদ্দেশ্য হল, তারা মানুষকে এ আহবান করবেন যে, মানুষ যেন কেবল আল্লাহর ইবাদত করে এবং তার সাথে অন্য কাউকে শরীক না করে।
আরও উদ্দেশ্য হল, কিয়ামতের দিন আল্লাহর নিকট অজ্ঞতার অজুহাত পেশ করতে না পারে।
❖ ৯ম প্রশ্ন: ইসলাম কাকে বলে?
উত্তর: আল্লাহর একত্ববাদকে মেনে নিয়ে পরিপূর্ণভাবে তার আনুগত্য করা এবং শিরক ও শিরক পন্থীদের থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করাকেই ইসলাম বলে।
❖ ১০ম প্রশ্ন: ইসলামের মূল স্তম্ভ কয়টি ও কি কি?
উত্তর: ইসলামের মূল স্তম্ভ ৫টি। সেগুলো হল:
• ১) ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রসুলুল্লাহ’ অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই। মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর রাসূল- এ কথার স্বীকৃতি প্রদান করা।
• ২) নামায প্রতিষ্ঠা করা।
• ৩) যাকাত আদায় করা।
• ৪) রামাযান মাসে রোযা পালন করা।
• ৫) যে ব্যক্তি পর্যন্ত পৌঁছতে সক্ষম তার জন্য হজ্জ সম্পাদন করা।
❖ ১১তম প্রশ্ন: ঈমান কাকে বলে?
উত্তর: অন্তরে বিশ্বাস, মুখে স্বীকৃতি এবং কাজে বাস্তবায়নকে ঈমান বলে।
❖ ১২তম প্রশ্ন: ঈমান কি বাড়ে ও কমে?
উত্তর: হ্যাঁ, কথা ও কাজ অনুযায়ী ঈমান বাড়ে ও কমে।
❖ ১৩তম প্রশ্ন: ঈমান বাড়ে ও কমে এ কথার অর্থ কি?
উত্তর: একথার অর্থ হচ্ছে, যে ব্যক্তি যত বেশী আল্লাহর আনুগত্য করবে এবং ভাল কাজ করবে তার ঈমান তত বৃদ্ধি পাবে। আর যে যত পাপ ও অন্যায় কাজে জড়িয়ে পড়বে তার ঈমান তত কমবে।
❖ ১৪তম প্রশ্ন: ঈমানের মূল স্তম্ভ কয়টি ও কি কি?
উত্তর: ঈমানের মূল স্তম্ভ ৬টি। যথা:
• ১) আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস
• ২) ফেরেশতাগণের প্রতি বিশ্বাস
• ৩) আসমানি কিতাব সমূহের প্রতি বিশ্বাস
• ৪) নবী ও রসূলগণের প্রতি বিশ্বাস
• ৫) পরকালের প্রতি বিশ্বাস
• ৬) ভাগ্যের ভাল মন্দের প্রতি বিশ্বাস।
❖ ১৫তম প্রশ্ন: আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসের অর্থ কি?
উত্তর: আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসের অর্থ হচ্ছে, এ বিশ্বাস করা যে আল্লাহ তা’আলা রিজিক দাতা, সৃষ্টিকর্তা, সব কিছুর পরিচালক, আসমান ও জমিনের সমস্ত রাজত্ব এবং কর্তৃত্ব তাঁর হাতে। সমস্ত সৃষ্টি তাঁর মুখাপেক্ষী। তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন। তিনি যাবতীয় ইবাদত পাওয়ার একমাত্র অধিকারী; অন্য কেউ নয়। তাঁর রয়েছে অনেক সুন্দর সুন্দর নাম এবং তিনি অসংখ্য পরিপূর্ণগুণের অধিকারী।
❖ ১৬তম প্রশ্ন: ফেরেশতা কারা?
উত্তর: তাঁরা আল্লাহর এমন এক সৃষ্টি যাদেরকে তিনি নূর (আলো) দ্বারা সৃষ্টি করেছে। আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে যে কাজের দায়িত্ব দিয়েছেন বা যে সব কাজ করতে আদেশ করেছেন তা পরিপূর্ণভাবে পালন করেন। তাতে বিন্দুমাত্র অবাধ্যতা করেন না।
❖ ১৭তম প্রশ্ন: আসমানি গ্রন্থসমূহের প্রতি এবং নবী-রসূলগণের প্রতি বিশ্বাসের অর্থ কি?
উত্তর: নবী রসূলগণের প্রতি বিশ্বাসের অর্থ হল, আল্লাহ তা’আলা যুগে যুগে অনেক নবী প্রেরণ করেছেন যেমন, নূহ, ইবরাহীম, মূসা, ঈসা, (আলাইহিমুস সালাম) প্রমুখ । তাদের প্রতি আল্লাহ তা’আলা মানবজাতির দিকনির্দেশনার জন্য আসমানি গ্রন্থ নাজিল করেছেন। যেমন, তাওরাত, ইনজিল, জবুর,ইত্যাদি। নবীগণ তাদের সমসাময়িক মানবগোষ্ঠীকে এক আল্লাহর দাসত্ব করার জন্য আহবান করেছেন এবং শিরক করা থেকে নিষেধ করেছেন।
নবী-রাসূলদের ধারাবাহিকতার সব শেষে আগমন করেছেন মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তাঁর প্রতি আল্লাহ তা’আলা অবতীর্ণ করেছেন আল কুরআন। এ কুরআনের মাধ্যমে পূর্ববর্তী সকল আসমানি গ্রন্থকে বিলুপ্ত করা হয়েছে। তিনি এ কুরআনকে পরিপূর্ণভাবে বাস্ববায়ন করে দেখিয়ে দিয়ে গেছেন তাঁর দীর্ঘ ২৩ বছরের নবুওয়তী যিন্দেগীতে। তাই যে কোন ইবাদত অবশ্যই হতে হবে কুরআনের শিক্ষা এবং নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সুন্নাহ তথা তাঁর নির্দেশিত পদ্ধতি অনুসারে।
❖ ১৮তম প্রশ্ন: পরকালে বিশ্বাসের অর্থ?
উত্তর: পরকালে বি���্বাসের অর্থ হল, একথা বিশ্বাস করা যে, মহান স্রষ্টা আল্লাহ তা’আলা প্রতিটি জিনিসের একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ দিয়েছেন। সে মেয়াদ শেষ হলে সবাইকে অবশ্যই মৃত্যু বরণ করতে হবে। এরপর আল্লাহ সকলকে কবর থেকে পুনরুত্থিত করবেন এবং কৃতকর্মের হিসাব-নিকাশ নেয়ার পর প্রত্যেককে তাদের কাজের যথোপযুক্ত প্রতিদান দিবেন। ভাল কাজের বিনিময়ে তাদেরকে দেয়া হবে ভাল প্রতিদান। আর পাপ ও অন্যায়ের বিনিময়ে প্রদান করবেন কঠিন শাস্তি।
আমাদেরকে এ বিশ্বাস রাখতে হবে যে, যে মহান স্রষ্টা এ সুন্দর দেহাবয়বকে যেমনিভাবে প্রথমবার সৃজন করেছেন তিনি পুণরায় তাকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সক্ষম।
❖ ১৯তমঃ ভাগ্যের ভাল-মন্দের প্রাত বিশ্বাসের অর্থ কী?
এর অর্থ হল, এ জীবনে ভাল-মন্দ যাই ঘটুক না কেন এ বিশ্বাস রাখতে হবে যে, তা অবশ্যই আল্লাহ তা’আলার ইচ্ছা ও পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হয়েছে। কারণ, মহাপ্রজ্ঞাবান আল্লাহ তা’আলা প্রতিটি বিষয় অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে অনেক পূর্বেই নির্ধারণ করে রেখেছেন।
❖ ২০তম প্রশ্ন: “লা-ইলাহা ইল্লালাহ” এর ব্যাখ্যা কী?
উত্তর: ‘লা ইলাহা ইল্লালাহ’ অর্থ হল, আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নাই। বরং যাবতীয় ইবাদত ও উপাসনা পাওয়ার একমাত্র হকদার তিনি। তিনি ব্যতিরেকে যত কিছুর ইবাদত করা হচ্ছে সবই মিথ্যা এবং ভ্রান্ত।
❖ ২১তম প্রশ্ন: ‘মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ এর ব্যাখ্যা কি?
‘মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ’ এর ব্যাখ্যা হল, নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নির্দেশগুলো বাস্তবায়ন করা। তিনি যে সকল সংবাদ ও তথ্য দান করেছেন সেগুলোকে নির্ভুল ও সত্য বলে মেনে নেয়া। তিনি যেসকল বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন বা সতর্ক করেছেন সেগুলো থেকে বিরত থাকা এবং তাঁর দেখানো পদ্ধতি ব্যতিরেকে ইবাদত না করা।
❖ ২২তম প্রশ্ন: ‘লা ইলাহা ইল্লালাহ’ এর কোন শর্ত আছে কি?
উত্তর: তাওহীদের স্বীকৃতি জ্ঞাপক এই মহান বাণীটির জন্য ৮টি শর্ত রয়েছে। সে শর্তগুলো হল:
• ১) ‘লা ইলাহা ইল্লালাহ’ এর অর্থ জেনে-বুঝে স্বীকৃতি দেয়া। এর অর্থ বা তাৎপর্য না বুঝে পাঠ করলে কোন লাভ হবে না।
• ২) দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে স্বীকৃতি দেয়া। এতে কোন সন্দেহ ও অস্পষ্টতা রাখা যাবে না।
• ৩) নির্ভেজাল মনে স্বীকৃতি দেয়া। কোন শিরকী ধ্যান-ধারণা নিয়ে পাঠ করলে কোন লাভ নেই।
• ৪) সত্য মনে করে স্বীকৃতি দেয়া। কপটতা থেকে মুক্ত থাকা অপরিহার্য।
• ৫) ভালবাসা সহকারে স্বীকৃতি দেয়া। মনের মধ্যে ঘৃণা বা ক্রোধ জমা রেখে স্বীকৃতি দিলে কোন উপকার হবে না।
• ৬) পূর্ণ আনুগত্যের মন-মানসিকতা নিয়ে স্বীকৃতি দেয়া। পরিত্যাগ করার বা অমান্য করার মানসিকতা অবশ্যই পরিত্যাজ্য।
• ৭) মনেপ্রাণে নিঃশর্ত ভাবে গ্রহণ করা। এ বিষয়ে কোন প্রতিবাদ করা বা প্রশ্ন তোলা থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।
• ৮) আল্লাহ ছাড়া অন্য যত কিছুর ইবাদত করা হচ্ছে সব অস্বীকার করা।
❖ ২৩তম প্রশ্ন: আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে যে সব বিষয়ের নির্দেশ দিয়েছেন সেগুলোর মধ্যে কোন বিষয়টি সবচেয়ে বড়?
উত্তর: সে বিষয়টি হল তাওহীদ বা আল্লাহর একত্ববাদ।
❖ ২৪তম প্রশ্ন: তাওহীদ কি?
উত্তর: তাওহীদ হল, একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করা, তাঁর সাথে কাউকে শরীক না করা এবং আল্লাহ তা’আলা নিজে কুরআনে বা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাদিসে তার যে সকল নাম ও গুণাবলীর কথা উল্লেখ করেছেন সেগুলোকে কোনরূপ ব্যাখ্যার আশ্রয় না নিয়ে সহজভাবে মেনে নেয়া।
❖ ২৫তম প্রশ্ন: তাওহীদ কত প্রকার?
উত্তর: তাওহীদ তিন প্রকার। যথা:
• ১) প্রকার: রুবূবিয়া
• ২) তাওহীদুল উলূহিয়া
• ৩) তাওহীদুল আসমা ওয়াস্‌ সিফাত।
❖ ২৬ তম প্রশ্ন: ‘তাওহীদুর রুবূবিয়া’ কাকে বলে?
উত্তর: সৃষ্টি করা, রিজিক দান করা, বৃষ্টি বর্ষণ, জীবন দান, মৃত্যু দান ইত্যাদি কার্যক্রমের ক্ষেত্রে আল্লাহকে এক মনে করাকে তাওহীদে রুবূবিয়া বলা হয়।
❖ ২৭তম প্রশ্ন: ‘তাওহীদুল উলূহিয়া’ কাকে বলে?
উত্তর: নামায, রোযা, যাকাত, হজ্জ, দু’আ, মানত ইত্যাদি বান্দার যত প্রকার ইবাদত-বন্দেগী হতে পারে সবকিছুর একমাত্র অধিকারী আল্লাহকে মনে করাকে তাওহীদে উলূহিয়া বলা হয়।
❖ ২৮তম প্রশ্ন: ‘তাওহীদুল আসমা ওয়াস সিফাত’ কাকে বলে?
উত্তর: আল্লাহ তা’আলা নিজে কুরআনে অথবা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হাদিসে আল্লাহর পরিচয় সম্পর্কে যে সব কথা বলেছেন সেগুলো মনে প্রাণে মেনে নেয়া। এ ক্ষেত্রে আল্লাহর কোন গুণকে অস্বীকার করা যাবে না বা তাতে কোন শব্দগত বা অর্থগত বিকৃতি সাধন করা যাবে না। কিংবা সেগুলোর কোন ধরণ বা আকৃতি কল্পনা করা যাবেনা। বরং এ বিশ্বাস পোষণ করতে হবে যে, এ সমস্ত গুণাবলী অবশ্যই সত্য কিন্তু তা মহান আল্লাহর জন্য যেমন হওয়া উচিৎ তেমনই।
❖ ২৯তম প্রশ্ন: ইবাদত বলতে কী বুঝায়?
উত্তর: আল্লাহ তা’আলা যে সমস্ত কথা বা কাজে খুশী হন চাই তা প্রকাশ্য হোক বা অপ্রকাশ্য হোক তাকে ইবাদত বলে।
❖ ৩০তম প্রশ্ন: ইবাদতের কোন শর্ত আছে কি?
উত্তর: ইবাদতের কয়েকটি শর্ত রয়েছে। সেগুলো হল:
• ১) ইখলাস থাকা অর্থাৎ যে কোন কাজ নির্ভেজাল চিত্তে কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় কাজ করা।
• ২) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দেখানো পদ্ধতি অনুসারে সে কাজটি করা।
❖ ৩১তম প্রশ্ন: ইবাদতের কতিপয় উদাহরণ দিন।
উত্তর: নামায রোযা, হজ্জ, যাকাত, ভয়, আশা, সাহায্য চাওয়া, বিপদ থেকে উদ্ধার কামনা ইত্যাদি যে সব কাজ আল্লাহ তা’আলা আমদেরকে করার জন্য আদেশ প্রদান করেছেন সবই আল্লাহর ইবাদত।
❖ ৩২তম প্রশ্ন: আল্লাহ তা’আলা আমদেরকে যে সব কাজ থেকে নিষেধ করেছেন সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ কোনটি?
উত্তর: সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ এবং মারাত্মক হচ্ছে আল্লাহর সাথে শিরক করা।
❖ ৩৩তম প্রশ্ন: শিরক কী?
উত্তর: কাউকে আল্লাহর সমকক্ষ মনে করা শিরক। যেহেতু মহান আল্লাহ তো আমাকে, আপনাকে তথা সমগ্র বিশ্বকে একাই সৃষ্টি করেছেন।
❖ ৩৪তম প্রশ্ন: শিরক কত প্রকার ও কী কী?
উত্তর: শিরক তিন প্রকার। যথা:
• ১) বড় শিরক
• ২) ছোট শিরক
• ৩) গোপন শিরক।
❖ ৩৫তম প্রশ্ন: বড় শিরক বলতে কী বুঝায়?
উত্তর: কোন ইবাদত যদি আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন কিছুর নামে করা হয় তবে সেটা হল বড় শিরক। কোন মুসলমান এ শিরক করলে সে ইসলাম থেকে বের হয়ে যায় এবং তার পূর্বের সমস্ত আমল বরবাদ হয়ে যায়। এমনকি তওবা না করে এ অবস্থায় মৃত্যু বরণ করলে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
❖ ৩৬তম প্রশ্ন: বড় শিরক কত প্রকার ও কী কী?
উত্তর: বড় শিরক চার প্রকার। তা হল:
• ১) দু’আর ক্ষেত্রে শিরক করা। আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নিকট কিছু চাওয়া বা বিপদাপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য দুআ করা বড় শিরক।
• ২) নিয়তের ক্ষেত্রে শিরক করা। ইবাদত করতে গিয়ে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো সন্তুষ্টি অর্জনের নিয়ত করা।
• ৩) ইবাদতের ক্ষেত্রে শিরক। আল্লাহর আদেশ বাস্তবায়ন করার পরিবর্তে কোন পীর, অলী-আউলিয়া বা অন্য কোন সৃষ্টির উ��াসনা করা।
• ৪) ভালোবাসার ক্ষেত্রে শিরক। যে ক্ষেত্রে একমাত্র আল্লাহ তা’আলা ভালবাসা পাওয়ার উপযুক্ত সে ক্ষেত্রে তাকে বাদ দিয়ে অন্য কারো প্রতি ভালবাসা প্রকাশ করা।
❖ ৩৭তম প্রশ্ন: ছোট শিরক কি?
উত্তর: যে কাজ করলে বড় শিরকে পতিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে সেটাই ছোট শিরক। যেমন, লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে বা মানুষের প্রশংসা পাওয়ার জন্যে কিংবা দুনিয়াবি কোন স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে কোন নেক কাজ করা হলে তা ছোট শিরকে রূপান্তরিত হয়।
এ জাতীয় কাজ করলে ইসলামের গণ্ডি থেকে বের হবে না বটে কিন্তু সে অবশ্যই একটি বড় ধরণের পাপ সম্পাদন করল। এ জন্য যে কোন ভাল কাজ করার আগে নিয়তকে পরিশুদ্ধ করার ব্যাপারে ইসলাম অত্যন্ত গুরুত্বারোপ করেছে।
❖ ৩৮তম প্রশ্ন: গোপন শিরক কি?
উত্তর: আল্লাহ তা’আলা কর্তৃক নির্ধারিত তকদীরের ব্যাপারে অসন্তোষ প্রকাশ করাই হল গোপন শিরক।
❖ ৩৯তম প্রশ্ন: গোপন শিরকের প্রমাণ কি?
উত্তর: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “গভীর রাতে একখণ্ড কালো পাথরের উপর দিয়ে একটি কালো পিঁপড়া হেঁটে গেলে তার পায়ের যে আওয়াজ হয় তার চেয়ে আরও বেশী নীরবে আমার উম্মতের মধ্যে গোপন শিরক প্রবেশ করবে।”
❖ ৪০তম প্রশ্ন: গোপন শিরক কি?
উত্তর: আল্লাহ তা’আলা কর্তৃক নির্ধারিত তকদীরের ব্যাপারে অসন্তোষ প্রকাশ করাই হল গোপন শিরক।
❖ ৪১তম প্রশ্ন: গোপন শিরকের প্রমাণ কি?
উত্তর: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “গভীর রাতে একখণ্ড কালো পাথরের উপর দিয়ে একটি কালো পিঁপড়া হেঁটে গেলে তার পায়ের যে আওয়াজ হয় তার চেয়ে আরও বেশী নীরবে আমার উম্মতের মধ্যে গোপন শিরক প্রবেশ করবে।”
❖ ৪২তম প্রশ্ন: কুফরী কয় প্রকার ও কি কি?
উত্তর: কুফরী দু প্রকার। যথা:
• ১) বড় কুফরী। যেমন, কেউ আল্লাহ অসি-ত্বকে অস্বীকার করলে বা ইসলামী আদর্শকে ঘৃণা করলে সে ইসলাম থেকে বের হয়ে যাবে। এ জাতীয় কুফুরী করার কারণে মানুষ ইসলামের গণ্ডি থেকে বের হয়ে কাফের হয়ে যায়।
• ২) ছোট কুফরী। যেমন, কেউ আল্লাহকে অস্বীকার করল না কিন্তু সে আল্লাহর কোন অবদানকে অস্বীকার করল। এ ক্ষেত্রে সে ইসলাম থেকে বের হবে না কিন্তু তা অবশ্যই বিরাট গুনাহের কাজ করল।
❖ ৪৩তম প্রশ্ন: বড় কুফরি কয় প্রকার?
উত্তর: বড় কুফরি পাঁচ প্রকার। যথা:
• ১) অস্বীকার করার মাধ্যমে কুফরি করা। আল্লাহ, রাসূল, ফেরেশতা, ইসলামী কোন বিধান যেমন, নামায, পর্দা ইত্যাদি বিষয়কে সরাসরি অস্বীকার করা বড় কুফুরী। যার কারণে একজন মানুষ নিজেকে মুসলিম হিসেবে দাবী করার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলে।
• ২) অহংকারের মাধ্যমে কুফুরী করা। যেমন, ইসলাম একটি ‘চিরন্তন সত্য জীবন ব্যবস্থা’ এ কথা জানার পরও অহংকার বশত: ইসলাম বা ইসলামের রীতি-নীতিকে এড়িয়ে চলা।
• ৩) সন্দেহ পোষণ করা।
• ৪) অবাধ্যতা করার মাধ্যমে কুফরি করা।
• ৫) মুনাফেকি করা তথা মনের মধ্যে ইসলামের প্রতি বিদ্বেষ লুকিয়ে রেখে বাহ্যিক ভাবে ইসলাম প্রকাশ করা। এটা জঘন্যতম কুফর।
❖ ৪৪তম প্রশ্ন: মুনাফেকি কয় প্রকার?
উত্তর: দু প্রকার। যথা: ১) বিশ্বাসগত ও ২) কর্মগত।
❖ ৪৫তম প্রশ্ন: বিশ্বাসগত মুনাফেকির অর্থ কি? তা কয় প্রকার ও কি কি?
উত্তর: বিশ্বাসগত মুনাফেকির অর্থ হল, মূলত সে ইসলামকে বিশ্বাসই করেনা। বরং বাহ্যিক ভাবে ইসলামকে মেনে চলে মনে হলেও বিশ্বাসগতভাবে সে ইসলামের প্রতি বিদ্বেষী। ইসলামের ক্ষতি করার জন্য সে এ বেশ ধারণ করেছে।
বিশ্বাসগত মুনাফেকি ৬ প্রকার। যথা:
• ১) আল্লাহ ও রাসূলকে অস্বীকার করা।
• ২) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আনিত জীবনাদর্শ ইসলাম এবং ইসলামের মৌলগ্রন্থ কুরআনকে অস্বীকার করা।
• ৩) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে ঘৃণা করা।
• ৪) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আনিত জীবনাদর্শকে ঘৃণা করা।
• ৫) ইসলামকে অপমান করা হলে বা ইসলামের পতন হলে মনে মনে আনন্দিত হওয়া।
• ৬) ইসলামের বিজয় বা ইসলামের বিস্তার লাভ করাকে অপছন্দ করা।
❖ ৪৬তম প্রশ্নঃ কর্মগত মুনাফেকীর বৈশিষ্টগুলো কী কী?
উত্তর: কর্মগত মুনাফেকীর চারটি বৈশিষ্ট রয়েছে। সেগুলো হলঃ
• ১) কথায় কথায় মিথ্যা বলা।
• ২) ওয়াদা ভঙ্গ করা বা কথা দিয়ে কথা না রাখা।
• ৩) আমানতের খেয়ানত করা।
• ৪) ঝগড়া করলে অশ্লীল ভাষা প্রয়োগ করা।
❖ ৪৭তম প্রশ্ন: শিরকে লিপ্ত থাকা অবস্থায় কি কোন আমল গ্রহণযোগ্য হবে?
উত্তর: শিরকে লিপ্ত থাকা অবস্থায় আল্লাহ তা’আলার কাছে কোন আমল গ্রহণযোগ্য হবে না। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন: “তারা যদি শিরক করত তবে তারা যত আমল করেছিল সব বরবাদ হয়ে যেত।” (সূরা আন’আমঃ ৮৮)
আল্লাহ আরও বলেন, “আল্লাহ তা’আলা তাঁর সাথে শিরক করাকে অবশ্যই ক্ষমা করবেন না এবং এর নিন্মোস্তরের যে কোন অপরাধ যাকে ইচ্ছা তিনি ক্ষমা করবেন। যে শিরক করল সে (হেদায়েতের পথ থেকে) অনেক দূরে ছিটকে পড়ল।” (সূরা নিসা: ১১৬)
❖ ৪৮তম প্রশ্ন: ইসলাম ভঙ্গকারী বিষয় কয়টি ও কি কি?
উত্তর: ইসলাম ভঙ্গকারী বিষয় দশটি। যথা:
• ১) ইবাদতে ক্ষেত্রে শিরক করা।
• ২) মুশরিকদেরকে মুশরিক মনে না করা বা তাদের কুফরির ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করা কিংবা তাদেরকে সঠিক পথের অনুসারী মনে করা।
• ৩) আল্লাহ তা’আলার নিকট পৌঁছার উদ্দেশ্যে কোন ‘মাধ্যম’ ধরে তার নিকট দুআ করা বা তার নিকট সুপারিশ প্রার্থনা করা অথবা তার উপর পরকালে নাজাত পাওয়ার ভরসা করা।
• ৪) এ বিশ্বাস পোষণ করা যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আদর্শের চেয়ে অন্য কোন ব্যক্তির মতাদর্শ উত্তম বা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আনিত জীবন ব্যবস্থার চেয়ে অন্য কোন ধর্ম বা মতবাদ শ্রেয়।
• ৫) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নির্দেশিত কোন বিষয়কে মনে মনে ঘৃণা করা যদিও সে তা পালন করে।
• ৬) দ্বীন-ইসলামের কোন বিষয়কে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা বা হেয় মনে করা।
• ৭) যাদু করা অথবা যাদু-তাবিজ ইত্যাদির মাধ্যমে স্বামী-স্ত্রী বা প্রেমিক-প্রেমিকার মনের মিলন কিংবা বিচ্ছেদ ঘটানো।
• ৮) মুসলমানদের বিরুদ্ধে অমুসলিমদেরকে সাহায্য-সহযোগিতা করা।
• ৯) এ বিশ্বাস করা যে, বিশেষ কিছু ব্যক্তি রয়েছে যারা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর শরীয়ত মেনে চলতে বাধ্য নন।
• ১০) ইসলাম থেকে মুখ ফিরিয়ে চলা, ইসলাম শিক্ষা না করা এবং ইসলাম অনুযায়ী আমল না করা।
❖ ৪৯তম প্রশ্ন: এমন তিনটি বিষয় রয়েছে যেগুলো সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করা প্রতিটি মুসলমানের জন্য আবশ্যক। সে বিষয় তিনটি কি?
উত্তর: সে তিনটি বিষয় হল:
• ১) আল্লাহ সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করা
• ২) দ্বীন ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করা
• ৩) নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করা।
❖ ৫০তম প্রশ্ন: তাগুত কাকে বলে?
উত্তর: আল্লাহ ছাড়া যত কিছুর ইবাদত করা হয় সবই তাগুতের অন্তর্ভুক্ত।
❖ প্রশ্ন: তাগুত কতটি এবং মূল তাগুতগ���লো কি কি?
উত্তর: তাগুতের সংখ্যা অনেক। তবে সেগুলোর মধ্যে প্রধান হল ৫টি।
❖ প্রশ্ন: প্রধান প্রধান তাগুতগুলো কি কি?
উত্তর: সেগুলো হল:
• ১) শয়তান।
• ২) যে ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করা হলেও তার কোন প্রতিবাদ করেনা বা তাকে ঘৃণা করেনা বরং তাতে রাজি থাকে।
• ৩) যারা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো ইবাদতের দিকে মানুষকে আহবান করে এবং এজন্য কাজ করে।
0 notes