#শেষ হবে তুমি
Explore tagged Tumblr posts
Text
শষ হব তম
https://www.jagojobsnews.xyz/%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a8%e0%a7%8b%e0%a6%a6%e0%a6%a8/%e0%a6%b6%e0%a7%87%e0%a6%b7-%e0%a6%b9%e0%a6%ac%e0%a7%87-%e0%a6%a4%e0%a7%81%e0%a6%ae%e0%a6%bf/
0 notes
Text
তুমি কি এতই অবুঝ?
আর কত প্রহর কাটাবো আমি তোমারই অপেক্ষায়?
কেনো জাগাও ভালোবাসা যদি নাই বা আসো?
এই অপেক্ষা কি কখনো শেষ হবে!?
কখনও কি পাবো তোমায় ফিরে?
#writeblr#writers and poets#writerscommunity#lit#casper#caspersoo#on love#qoutes#বাংলা#wabisabi#hiraeth#tara rant#bhalobasha#writer#writers on tumblr#photography#nature lovers#nature
17 notes
·
View notes
Text
আপনারা অনেকেই মনের মত এবং চাহিদা সম্পন্ন শর্ট ক্যাপশন খুঁজে পান না। আপনাদের জন্য আমরা বাংলা শর্ট ক্যাপশন রোমান্টিক, ভালোবাসার শর্ট ক্যাপশন, নিজেকে নিয়ে শর্ট ক্যাপশন, বাংলা শর্ট ক্যাপশন বন্ধু সহ মজার মজার ক্যাপ���ন নিয়ে হাজির হয়েছি। তাহলে চলুন বাংলা শর্ট ক্যাপশনগুলো বিস্তারিত জেনে নিই।
বাংলা শর্ট ক্যাপশন বাস্তবতা :
🦋✺শরীরটা খুব🤍 খারাপ🦋✺🤒 Doctor n'বলেছে রক্তে🤍 একদম🦋✺ 🦋✺ভালোবাসা নেই🦋✺🙂
࿐❥🦋🍀জীবন নিয়ে🤍 গল্প লেখা সহজ࿐❥🦋🍀 ࿐❥🦋🍀কিন্তুু࿐❥🦋🍀গল্পের মতো করে জীবন ࿐❥🦋🍀সাজানো খুব কঠিন࿐❥🦋🍀
🌺📱🌻দূরত্ব”কিছুই🤍”না”যদি🌺📱🌻 🌺📱🌻তোমার”n'অনূভুতি”🌺📱🌻 🌺📱🌻আমার”জন্য”সত্যি”হয়🌺📱🌻
🐰🐰সারাদিন 𝗙𝗮𝗰𝗲𝗯𝗼𝗼𝗸🐰🤍🐰 চালানোর পর🐰😌 🐰🐰𝗠𝗼𝗯𝗶𝗹𝗲🐰চালানোর সময় এ পাই না 🐰📱🐸
🐰পৃথিবীর সবচেয়ে n'দামী দুটি জিনিস হলো༉💜 🐰বিশ্বাস আর ༉💜 অপেক্ষা🐰🌸༉_💜
বাংলা শর্ট ক্যাপশন :
😥🥀পরিবারেরn'🤍দিকে তাকালে নিজে শেষ😥🥀 🤍🤍আর নিজের দিকে তাকালে পরিবার শেষ.😥🥀😥
😥🥀নিজেকে অনেক ধৈর্যশীল হতে হবে😥🥀 😥🥀সব কিছুতে মন খারাপ করা যাবে না😥🥀
😘✨বাস্তবতা যতই🤍 কঠিন হক না কেনো😘✨ 🤍মানিয়ে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর. 💙
😘✨পৃথিবীরn'🤍 সবচেয়ে দামী দুটি জিনিস হলো 😘✨বিশ্বাস আর অপেক্ষা 🌸🖤
✨𝐃𝐨 𝐍𝐨𝐭 𝐇𝐢𝐝𝐞 𝐘𝐨𝐮𝐫 𝐄𝐲𝐞𝐬 𝐅𝐫𝐨𝐦 𝐓𝐡𝐞 𝐎𝐧𝐞 𝐘𝐨𝐮 𝐋𝐨𝐯𝐞 !🦋😥🥀 🐻😘যাকে ভালোবাসো তাকে চোখের আড়াল করো না 3💜☺😘✨🍀
🙄চায়া থাকোসn'🤍 কেন কি কবি ক �🥴 🤍তুই কইলেই তো আমি কমূ হ 😐🤍😂🥱
বাংলা শর্ট ক্যাপশন নতুন :
📱🌻কাশফুল তুমি🤍 ছুঁয়ে দিও তাকে🐰🌾🥀🥀 🐰🌾প্রতিটা মুহূর্তে আমি ভালোবাসি যাকে📱🌻💘💘
🐰🌾সব পরিস্থিতিরn'🤍সাথে নিজেকে🐰🌾 🐰🌾মানিয়ে নিতে পারলেই জীবন সুন্দর🐰🌾✨
🌸💫যে নারী শূন্য 🤍পকেটে পাশে থাকে🌸💫 🌸💫সে নারী সাফল্য🤍 শেষে🌸💫 🌸💫স্ত্রী হওয়ারও যোগ্যতা রাখে!’💜🌸
আরো পড়ুন
4 notes
·
View notes
Text
লাঠির গুণ
বনের মধ্যে পড়ন্ত বিকাল। খরগোশ ও সজাঁরু, দুই বন্ধু, গল্প করতে করতে বাড়ি ফিরছিল।
এই সময় কিছু একটাতে হেঁাচট খেয়ে খরগোশ মহা বিরক্ত হয়ে এক লাথিতে তা পথ থেকে সরিয়ে দিল। সজাঁরু তা লক্ষ্য করছিল, দৌড়ে গিয়ে তা কুড়িয়ে এনে বলল, “বাহ, কি সুন্দর একটা লাঠি পেলাম, খুব তো উড়িয়ে দিচ্ছিলে, দেখো, এটা কত কাজে লাগে।” খরগোশ কিছু না বলে মুচকি হাসল। তারা আবার পথ চলা শুরু করল।
কিছুদূর পরে হঠাৎ দেখা গেল পথ শেষ, সামনে একটা উঁচু ধাপ। খরগোশ এক লাফে উপরে উঠে টিটকারির সুরে বলল, “সঁজারু ভায়া, তুমি তো আবার লাফাতে পার না। কি করবে? কোনও ঘুর পথ ধরে না হয় এসো, আমি বসি।” সজাঁরু কিছুই না বলে একটু ভাবল, তারপর লাঠিটির উপর ভর করে পোল—ভল্টের কায়দায় লাফ দিয়ে উপরে উঠে এল। খরগোশ অবাক। “দেখলে ফেলনা জিনিস কি কাজ লাগে। চল, সময় হলে আরও কাজ দেখবে।” সঁজারু বলল।
একটু পরে চলার পথে কিছু ফলের গাছের দেখা মিলল। খুব সুন্দর সুন্দর পাকা ফল হযেছে, ঘ্রাণে মৌ মৌ, খরগোশ অনেক লাফ—ঝাঁপ করল, কিন্তু নাগাল পেল না। এদিকে সজাঁরু তার লাঠিটিকেই ছঁুড়ে মারল ও এতে ঝরঝর করে অনেক ফল পড়ল। লাঠিটি লগির কায়দায় ব্যবহার করেও কিছু ফল পাড়ল। পেট ভরে খেয়ে তারা আবার এগুল। কিন্তু, একটু পর একটা পনির নালা তাদের পথ অঁাটকাল। খরগোশও তা লাফিয়ে পার হতে পারবে না বলে জানাল। কিন্তু সজাঁরু লাঠিটি সাঁকোর মতো করে পাতালো ও দুজনে তার উপর দিয়ে হেঁটে পার হল।
এদিকে অন্ধকার হয়ে এলে কয়েকটি শেয়াল এসে খরগোশের উপর ��ামলা করল। কাঁটার ভয়ে সজাঁরুর দিকে তারা এগুল না, কিন্তু তাই বলে সজাঁরু বসে রইল না। সে লাঠিটি নিয়ে দমাদম শেয়ালগুলিকে পেটাতে লাগল। এই অদ্ভুত অস্ত্রের আঘাতে বাবারে মারে বলে শেয়ালগুলি পালাল। খরগোশ বসে বসে হাঁপাচ্ছিল, কোথায়ও তেমন না লাগলেও ভয়েই সে আধমরা, ভাল করে হাঁটতে পারছিল না। সঁজারু তাকে লাঠিটি দিল, তা নিয়ে সে ঠুক ঠুক করে এগুল।
একটু পরে তারা খরগোশের বাড়ি পেঁৗছুলো, খরগোশের বউ বাচ্চারা খুব চিন্তা করছিল। খরগোশ তার বৌকে বলল, “এই দেখো, এই বন্ধু আমার জীবন বাঁচিয়েছে।” “আমি না, এই লাঠি।” সঁজারুর এই কথা শুনে খরগোশ পরিবারের সবাই হেসে উঠল ও এরপর খুব সমীহ সহকারে লাঠিটিতে হাতে নিয়ে দেখতে লাগল। তা দেখে সঁজারু বলল, “আপনাদের এই লাঠিটি আমি উপহার দিলাম।” সঁজারুর এই কথা শুনে বাচ্চারা খুশীতে হাততালি দিতে লাগল।
খরগোশের বৌ বলল, “ভাইয়া, তবে একটা শর্তে আপনার এই উপহার নেব, আপনাকে আজ খেয়ে যেতে হবে।” খরগোশ বলল, “না, শুধু খাওয়া নয়। রাতটাও থেকেই যাও। খেয়ে দেয়ে আমরা অনেক গল্প করব।” সঁজারু মুচকি হেসে রাজী হয়ে গেল।
5 notes
·
View notes
Text
আমাদের ফেসবুক পোস্ট দেওয়ার সময় বিভিন্ন ক্যাপশন লিখে লিখে বা খুজে থাকি। প্রায় সময় আমরা ফেসবুকে কি লিখে ক্যাপশন দিব তা খুঁজে পাই না। আবার খুজতে খুজতে মাথা খারাপ হয়ে যায়। তাই, আপনারা চাইলে এই পোস্ট থেকে আপনাদের পছন্দের Facebook caption bangla stylish স্ট্যাটাস সংগ্রহ করতে পারেন।
বাংলা শর্ট ক্যাপশন :
◉ যদি কারো সাথে, বন্ধুত্ব শেষ হয়ে যায় ❥
তবে তার, গোপন কথাগুলো গোপন রেখো!✿✿◉●•·
◉ জীবন সঙ্গি হিসেবে তাকেই বেছে নাও!
যার কাছে হাজার অপশন থাকলেও একমাএ চয়েস হবে তুমি
Facebook caption bangla romantic
2 notes
·
View notes
Text
ঘুঘু দেখেছ, ফাঁদ দেখনি – জসীম উদ্দীন
বাপ মরে গিয়েছে। ঘুঘু আর ফাঁদ দুই ভাই। কি একটা কাজে দুই ভাইয়ের লাগল মারামারি। ফাদ রেগে বলল, “তুই ঘুঘু দেখেছিস। কিন্তু ফাঁদ দেখিস নাই।”
ঘুঘু রাগ করে বাড়ি হতে পালিয়ে গেল। বিদেশে গিয়ে সে এ বাড়ি, সে বাড়ি, কত বাড়ি ঘুরল। সবাইকে বলল, আমি ধান নিড়াইতে পারি-পাট কাটতে পারি-গরুর হেফাজত করতে পারি। কিন্তু কার চাকর কে রাখে! দেশে বড় আকাল। অবশেষে ঘুঘু গিয়ে উপস্থিত হল কিরপন (কৃপণ) মোল্লার বাড়ি। কিরপন মোল্লা চাকর রেখে খেতে দেয় না, খেতে দিলেও তার বেতন দেয় না, তাই কেউই তার বাড়িতে চাকর থাকে না।
ঘুঘুকে দেখে কিরপন মোল্লা বলল, “আমার বাড়িতে যদি থাকতে চাও তবে প্রতিদিন তিন পাখি করে জমি চাষ করতে হবে, বেগুন ক্ষেত সাফ করতে হবে। আর যখন যে কাজ করতে বলব তাই করতে হবে। তেঁতুল পাতায় যতটা ভাত ধরে তাই খেতে দিব। উহার বেশি চাইলে দিব না। মাসে আট আনা করে বেতন দিব। উহাতে রাজী হলে আমার বাড়ি থাকতে পার।”
আর কোথাও কাজ যখন জোটে না, ঘুঘু তাতেই রাজী হল। কিরপন মোল্লা বলল, “আমার আরও একটি শর্ত আছে। আমার কাজ ছেড়ে যেতে পারবে না। কাজ ছেড়ে গেলে তোমার নাক কেটে নিব।”
ঘুঘু বলল, “আমি এই শর্তেও রাজী আছি।”
কিরপন মোল্লা পাকা লোক। সে গ্রামের লোকজন ডেকে সমস্ত শর্ত একটি কলা পাতায় লিখে নিল। তিন পাখি জমি চাষ করতে ঘুঘুর প্রায় দুপুর গড়িয়ে গেল। তারপর গোছল করে খেতে আসল। কিরপন মোল্লার বউ বলল, “তেঁতুল পাতা নিয়ে আস।”
ঘুঘু একটি তেঁতুল পাতা এনে সামনে বিছিয়ে খেতে বসল। তেঁতুল পাতায় আর কয়টিই বা ভাত ধরে? একে তো সারাদিনের হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম! এমন ক্ষুধা পেয়েছে যে সমস্ত দুনিয়া গিলে খেলেও পেট ভরবে না। সেই তেঁতুল পাতার উপরে চারটি ভাত মুখে দিয়ে ঘুঘু কিরপন মোল্লার বৌকে কাকুতি মিনতি করল, “আর কয়টি ভাত দিন।”
কিরপন মোল্লা সাথে সাথেই তার কলা পাতায় লেখা শর্তগুলি পড়ে শুনিয়ে দিল। বেচারা ঘুঘু আস্তে আস্তে উঠে বেগুন ক্ষেত সাফ করতে গেল।
রাতে আবার সেই তেঁতুল পাতায় বাড়া ভাত। সারাদিনের হাড় ভাঙ্গা খাটুনি। তিন চারদিনেই ঘুঘু একেবারে আধমরা হয়ে গেল। তখন চাকরি না ছাড়লে জীবন যায় যায় অবস্থা; কিন্তু যখনই কিরপন মোল্লার কাছে চাকরি ছাড়ার কথা বলেছে তখনি সে তার নাকটা কেটে ফেলল। নেকড়া দিয়ে কোনো রকমে নাক বেঁধে ঘুঘু দেশে ফিরল।
তার ভাই ফাঁদ জিজ্ঞাসা করল, “কিরে! তোর নাকটা কাটা কেন?
”
ঘুঘু কেঁদে সমস্ত ঘটনা খুলে বলল। শুনে ফাঁদ বলল, “ভাই! তুমি বাড়ি থাক। আমি যাব কিরপন মোল্লার বাড়ি চাকরি করতে।”
ঘুঘু কত বারণ করল। ফাঁদ তা কানেও নিল না। সে বলল, “কিরপন মোল্লা ঘুঘু দেখেছে কিন্তু ফঁদ দেখে নাই। আমি তাঁকে ফাঁদ দেখিয়ে আসতেছি।”
ফাঁদ গিয়ে কিরপন মোল্লার বাড়িতে উপস্থিত। জিজ্ঞাসা করল, “আপনারা কোনো চাকর রাখবেন?”
কিরপন মোল্লা বলল, “আমার একজন চাকর ছিল সে অল্প কয় দিন হয় চলে গেছে। তা তুমি যদি থাকতেই চাও, তবে আমার কয়েকটি শর্ত আছে। তা যদি মেনে নাও তবেই তোমাকে রাখতে পারি।”
ফাঁদ জিজ্ঞাসা করল, “কি কি শর্ত?”
কিরপন মোল্লা কলার পাতায় লেখা আগের চাকরের শর্তগুলি তাঁকে পড়ে শুনাল।
“প্রতিদিন তিন পাখি করে জমি চষিতে হবে। বেগুন ক্ষেত সাফ করতে হবে। আর যখন যে কাজ বলব তা করতে হবে! তেঁতুল পাতায় করে ভাত দিব! মাসে আট আনা (৫০ পয়সা) করে বেতন। চাকরি ছেড়ে গেলে নাক কেটে রাখব।”
ফাঁদ সমস্ত শর্ত মেনে নিয়ে বলল, “আমারও একটি শর্ত আছে। আমাকে চাকরি হতে বরখাস্ত করতে পারবেন না। বরখাস্ত করলে ��মি আপনার নাক কেটে নিব।”
কিরপন মোল্লা বলল, “বেশ, তাতেই আমি রাজী।”
সে পাড়ার আরও দশজনকে ডেকে সাক্ষী মেনে আর একটা কলা পাতায় সমস্ত শর্ত লিখে নিল।
সকালে ফাঁদ চলল ক্ষেতে লাঙল চষিতে। সে তিন পাখি জমির এদিক হতে ওদিকে দিল এক রেখ, আর ওদিক হতে এদিক দিল এক রেখ। এইভাবে সমস্ত জমিতে তিন চারটি রেখ দিয়ে গরু-বাছুর নিয়ে, বেলা দশটা না বাজতেই বাড়ি ফিরে আসল। এসেই বলল, “ক্ষেতে লাঙল দেওয়া শেষ হয়েছে। এখন আমাকে খেতে দাও।”
কিরপন মোল্লার বউ বলল, “আগে তেঁতুল পাতা নিয়ে আস।”
ফাঁদ বলল, “একটি ধামা দাও আর একখানা কুড়াল আমাকে দাও।” ধামা কুড়াল নিয়ে ফাঁদ কিরপন মোল্লার উঠানের তেঁতুল গা��টির বড় ডালটি কুপিয়ে কেটে ফেলল।
কিরপন মোল্লার বউ চেঁচাতে লাগল, “কর কি? কর কি? সমস্ত গাছটা তুমি কেটে ফেললে?” কার কথা কে শোনে। সেই কাটা ডাল হতে মুঠি মুঠি তেঁতুল পাতা এনে অর্ধেক উঠানে বিছিয়ে দিয়ে বলল, “এবার আমাকে ভাত দাও।”
কিরপন মোল্লার বউ সামান্য কয়টি ভাত একটি তেঁতুল পাতার উপর দিতে যাচ্ছিল। ফাঁদ বলল, “আমার সঙ্গে চালাকি করলে চলবে না। শর্তে লেখা আছে তেঁতুল পাতায় করে ভাত দিতে হবে। কয়টা তেঁতুল পাতায় করে ভাত দিতে হবে তা লেখা নাই। সুতরাং তোমাদের উঠানে যতগুলি তেঁতুল পাতা বিছিয়েছি তার সবগুলি ভরে ভাত দিতে হবে।”
কিরপন মোল্লা তার ভাঙ্গা চশমা জোড়া নিয়ে সেই কলার পাতায় লেখা শর্তগুলি বহুক্ষণ পরীক্ষা করল। ফাঁদ যা বলেছে তা সত্য। সে তখন বউকে বলল, “দাও, হাঁড়িতে যত ভাত আছে তেঁতুল পাতার উপর বেড়ে দাও।”
একবার ভাত দেওয়া হলে ফাঁদ বলল, “আরও ভাত এনে দাও। সমস্ত তেঁতুল পাতা ভাতে ঢাকে নাই।”
কিরপন মোল্লার বউ কি আর করে? হাঁড়িতে যত ভাত ছিল সব এনে সেই তেঁতুল পাতায় ঢেলে দিল। ফাঁদ বলল, “ইহাতে আমার পেট ভরবে না। আরও ভাত এনে দাও।”
“আর ভাত হাড়িতে নাই।”
কিরপন মোল্লা বলল, “কাল তোমার জন্য আরো বেশি করে ভাত রান্না করব। আজ এগুলোই খাও।”
ফাঁদ কতক খেল-কতক ছিটিয়ে ফেলল। তারপর ঢেঁকুর তুলতে তুলতে হাত মুখ ধুতে লাগল।
বিকাল হলে কিরপন মোল্লা ফাঁদকে বলল, বেগুন ক্ষেত সাফ করতে। ফাঁদ গিয়ে সব বেগুন গাছ কেটে ফেলল।
কিরপন মোল্লা হায় হায় করে মাথায় হাত দিয়ে বেগুন ক্ষেতের পাশে বসে পড়ল। ফাঁদকে বলল, “ও ফাঁদ! তুই তো আমার সর্বনাশ করেছিস।”
ফাঁদ বলল, “তুমি আমাকে সমস্ত বেগুন ক্ষেত সাফ করতে বলেছ। সমস্ত বেগুন গাছ না কাটিলে ক্ষেত সাফ হবে কেমন করে?”
তার পরদিন কিরপন মোল্লা ফাঁদকে পাঠাল ধান ক্ষেত নিড়াতে। ফাঁদ ক্ষেতের সমস্ত ধান গাছ কেটে ঘাসগুলি রেখে আসল।
সেদিন তাকে নদীতে পাঠাল জাল ফেলতে। জাল ফেলতে মানে নদীতে গিয়ে জাল দিয়ে মাছ ধরতে। ফাঁদ সেই কথাটার উল্টা ব্যাখ্যা করল। নদীতে গিয়ে সে কিরপন মোল্লার এত হাউসের খেপলা জালটা ফেলে দিয়ে আসল। কিরপন মোল্লা নদীতে গিয়ে এত খোঁজাখুঁজি করল। অত বড় নদী কোথায় জাল তলিয়ে গেছে! খুঁজে বের করতে পারল না।
সেদিন সন্ধ্যাবেলা তার ছেলেটি ধুলো কাদা গায়ে মেখে নোংরা হয়েছিল। কিরপন মোল্লা বলল “ফাঁদ, যাও তো ছেলেটাকে সাফ করে আন।”
ফাঁদ তার ছেলেটিকে পুকুরের কাছে নিয়ে গিয়ে পানিতে চুবিয়ে ধোপার পাটে দিল তিন চার আছাড়। ছেলের হাত পা শরীর ফেটে গেল। সে চিৎকার করে কেঁদে উঠল। কিরপন মোল্লা তাড়াতাড়ি ফাঁদের হাত হতে ছেলেকে ছাড়িয়ে নিয়ে তাঁকে বকতে লাগল।
ফাঁদ বলল, “আমাকে বকলে কি হবে? আপনি ছেলেকে সাফ করে আনতে বলেছেন। ধোপার পাটে না আছড়াইলে (আছাড় দিলে) তাকে সাফ করব কিভাবে?”
রাত্রে কিরপন মোল্লা আর তার বউ মনে মনে ফন্দি আঁটে, কি করে এই দুর্মুখ চাকরকে বিদায় করা যায়, কিন্তু কোনো উপায় নাই। তাকে বরখাস্ত করলেই কলা পাতায় লেখা শর্তানুসারে সে কিরপন মোল্লার নাক কেটে নিবে।
পরদিন সকালে কিরপন মোল্লা ফাঁদকে একটি বড় গাছ ফেড়ে চেলা (চিকন ও লম্বা কাঠের টুকরা) বানাতে হুকুম করল। ফাঁদ গাছটি কেটে অনেক গুলো চেলা বানালো। তারপর চেলার বোঝা মাথায় করে বাড়ি ফিরল।
কিরপন মোল্লার বৃদ্ধ মা বারান্দায় বসে পান চিবাচ্ছিল। ফাঁদ তাঁকে গিয়ে জিজ্ঞাসা করল, “খড়ির বোঝা কোথায় নামাব?”
সারা উঠান খালি পড়ে আছে। যেখানে সেখানে নামান যায়। তবুও ফাঁদ এই সামান্য ব্যাপারটির জন্যে বুড়ীকে জিজ্ঞাসা করায় বুড়ি ভীষণ রেগে গেল। সে বলল, “বুঝতে পার না কোথায় নামাতে হবে? আমার ঘাড়ে নামাও।”
যেই বলা অমনি ফাদ খড়ির বোঝা বুড়ীর ঘাড়ের উপর ফেলে দিল। ঘাড়ের উপর এতগুলো কাঠের ভার সইতে না পেড়ে বুড়ী দাঁত কেলিয়ে মরে গেল।
কিরপন মোল্লা ফাঁদকে কিছু বলতেও পারে না। কারণ সে বুড়ীর আদেশ মতোই কাজ করেছে। ফাঁদকে বাড়ি হতে তাড়িয়ে দিতে গেলেও সে তার নাক কেটে নিবে। ফাঁদকে নিয়া কি করা যায়?
প্রতিদিন সে একটা না একটা অঘটন করে বসে। অনেক ভেবে চিন্তে কিরপন মোল্লা ঠিক করল, সে আর তার বউ তীর্থযাত্রা গিয়ে অন্ততঃ কিছুদিনের জন্য ফাঁদের হাত হতে রক্ষা পাবে। যাওয়ার সময় কিরপন মোল্লা ফাঁদকে বলল, “ফাঁদ! আমরা চললাম। তুই বাড়ি-ঘর দেখিস।”
ফাঁদ জবাব দিল, “আর বলতে হবে না। তোমরা নিশ্চিন্তে চলে যাও। আমি সব দেখব।”
কিরপন মোল্লা চলে গেল। ফাঁদ তার ভাই ঘুঘুকে ডেকে এনে বাড়ির সর্বেসর্বা হয়ে বসল। বাড়িতে আম, জাম, কাঁঠাল, সুপারি, নারিকেল, কত রকমের গাছ। দুই ভাই সেই সব গাছের ফল বিক্রি করে অনেক টাকা জমাল। তার মধ্যে গ্রামে আসল সেটেলমেন্টের আমিন। ফাঁদ কিরপন মোল্লার বাড়ি-ঘর, জমা-জমি সকল নিজের নামে লেখিয়ে নিল।
কিছুদিন পরে তীর্থ থেকে কিরপন মোল্লা আর তার বউ দেশে ফিরল। ফাদ তাদের বাড়িতে ঢুকতে দিল না। সে বলল, “এ বাড়ি তো আমাকে বেচে গিয়েছো। দেখ না গিয়ে সেটেলমেন্টের অফিসে, সেখানে বাড়ি আমার নামে লেখা হয়েছে।”
গচ্ছিত টাকা-পয়সা যা ছিল তা ��িরপন মোল্লা তীর্থে গিয়ে খরচ করে এসেছে। ফাঁদের নামে মামলা করার টাকা পাবে কোথায়? আর মামলায় জিতলেই বা কি হবে? কলার পাতায় লেখা যে শর্তে সে ফাঁদের সঙ্গে আটকা পড়েছে তাহা হতে কে তাঁকে রক্ষা করবে?
কিরপন মেল্লার বাড়িতে ফাঁদ আর ঘুঘু সুখে বাস করতে লাগল। কিরপন মোল্লার উপর কারো কোনো দয়া নাই! কারণ সে বিনা অপরাধে ঘুঘুর নাক কেটেছিল। সে গ্রামের কোন মানুষের কোন উপকার করে নাই বা কাউকেই কোনোদিন আধ পয়সাও দান করে নাই।
3 notes
·
View notes
Text
ঘুম থেকে উঠে দেখি ধোন ফুলে আছে। ফরিদার গুদের রস দরকার দ্রুত নাইলে সারাদিন ধোন এমন ফুলেই থাকবে। চলে গেলাম ফরিদা কাকির ঘরে। গিয়ে দেখি সে পায়খানাতে গেছে হাগতে। পায়খান ছিলো ঘরের থেকে একটু নিচের দিকে মানে ফাঁকা জায়গা। গ্রামের পায়খানা যেমন হয় আরকি ঘরের থেকে দুরে। কিন্তু ফরিদা কাকির পায়খানা ছিলো পাকা করে ইটের পায়খানা। ঘরে না পেয়ে চেলে গেলাম পায়খানার কাছে তখন বাজে ভোর ৫ টার একটু বেশি।
- কাকি দরজা খোলো।
- কে? দরজা খোলবো মানে!!?
- আমি মাগী তোর দামানা দরজা খোল আগে।
- ছি কি বলে, এত ভোরে তুমি কেনো?
- আগে দরজা খোল বলতেছি.
- না, আমি হাগতেছি
- তা আমি আসলে কি হাগা বন্ধ হয়ে যাবে?
- ঘেন্না কারো হাগার সময় সামনে থাকতে হয় নাকি।
- আগে দরজা খোল নাইলে আমি ভেংজ্ঞে ফেলবো কিন্তু
(দরজার একটা লাথি দিলাম)
- আস্তে আস্তে খুলতেছি...
ফরিদা কাকি উপায় না দেখে দরজা খুলে দিলো... আমি অবাক হয়ে দেখলাম হাগতে বসা ফরিদা কাকি তখন আমার কাছে মনে হচ্ছিলো জান্নাতের হুরের মত। মোটা থাই দুইটা ঝুলিয়ে বিশাল পাছা থেকে কালকের চুদে বড় করা পুটকি থেকে যেনো গু না কোন দামি পদার্থ বের হচ্ছে। আমি দরজা লাগিয়ে দিলাম আর কাকি হাগতে বসে মাথা নিচু করে বলতে লাগলো...
- এত ভোরে এখানে কেনো?
- ধোন দাঁড়িয়ে গেছে তোমার ভোদার রস খাবে।
- ইসসস.. যখন তখন এত ভোদার রস লাগে কেনো? আর পায়খানতে ও চলে আসতে হবে?
- হ্যাঁ যখন মন চাইবে তখন চুদবো তোমাকে যেখানে যেখানে মন চাইবে সেখানে ল্যাংটা করে চুদবো তোমাকে কারন তুমি যে আমার বেশ্যা।
- এখন এখানে কিছু করা যাবে না।
- কথা না বলে ধোন চুষে দে মাগী..
বলেই ধোন দিয়ে দিলাম ফরিদার মুখে। ফরিদা কাকি ও হাগতে হাগতে ধোন চুষা শুরু করে দিলো। কাকি এখন খুব মজা করে ধোন খায় সেটা তার চুষাতে আমি অনুভব করি। কেমন জানি সে আমার ধোনটা গিলে নিতে চায় জিবাহ দিয়ে এত সুন্দর নাড়াচাড়া দিয়ে চোষে সেটা ভাষায় প্রকাশ করার মত না। এমন ভাবে ৫/৬ মিনিট চলার পরে ফরিদা মুখ থেকে ধোন বের করে বল্লো....
- আমার হাগা হয়ে গেছে ছোছবো আমি একটু সরো।
- আচ্ছা, তাড়াতাড়ি করো ডুকাবো।
- এই না এখানে করা যাবে না।
- তুমি আগে ছোছো।
কাকি ছোছা শেষ করে উঠে দাড়ালো। সাথে সাথে আমি জড়িয়ে নিলাম আমার ভিতরে আমার প্রিয় মাগীকে আমার ধোনের দেবিকে৷ চুমু খেতে শুরু করলাম ফুলা ঠোঁট দুইটাকে নিজের ঠোঁটের ভিতরে নিয়ে আর হাত দিয়ে টিপতে লাগলাম মাগীর বিশাল দুধ দুইটাকে। আমার চুমু আর দুধের চাপে ফরিদার গরম হতে বেশি সময় লাগলো না। এভার মাগী নিজেই গরম হয়ে বলতে লাগলো...
- তাড়াতাড়ি ভোদায় মুখ দে..
- হ���হাহাহা...আমার বেশ্যা কি তাহলে রেডি মাল গিলার জন্য?
- হ্যাঁ তোর বেশ্যার গুদে আগুন লাগছে। জিব্বাহ লাগা আগুন নিভা।
- পা ফাক করো কাকি।
- এই নে...
ফরিদা কাকি পা ফাঁক করে দাঁড়িয়ে আছে পায়খানার ভিতরে আমি তার কাপড় ছায়ার ভিতরে ধুকে গেলাম ভোদা চুষতে গিয়ে দেখি অন্ধকার।
- কাকি কিছু দেখিনা তো এভাবে।
- দেখা লাগবে কেনো বোকাচোদা? ঘ্রাণ শুকে জিব্বাহ লাগা।
- আরে মাগী আজকে তোরে এমন চোদা চুদবো তোর ভোদায় ব্যাথা থাকবে এক মাস।
- ভোদা খুঁজে মুখ লাগা কথা না বলে কাজে প্রমান করা।
আমি জিব্বাহ দিয়ে চাটা শুরু করলাম ফরিদা কাকির থাই থেকে। থাইয়ে যখন মুখ দিছি অনুভব করলাম ফরিদা কাকি কেপে উঠলো। চাটতে চাটতে খুঁজে ফেলাম মাগীর ভোদা জিব্বাহ লাগাতে বুঝলাম ভিজে গেছে আগে থেকেই পুরো ভোদা। প্রিয় স্বাদ পেয়ে শুরু করলাম আমার চোষা চাটা কামড় ফরিদা কাকির ভোদায়। কাকিও দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে গুদ নাচিয়ে ভোদা দিয়ে জল ছেড়ে যাচ্ছে এভাবে প্রায় ১০/১৫ চলতে থাকলো। এক পর্যায়ে ফরিদা কাকি বল্লো...
- উঠ তাড়াতাড়ি বের হতে এখন না হলে আলো উঠে গেলে কেউ দেখে ফেলবে৷
- কই যাবো এখন চুদবো আমি তোমাকে।
- না না এখন চোদা যাবে না এখানে।
- না চুদতে দিলে আমি কিভাবে এই ধোন নিয়ে ঘুরবো সারা সকাল?
- চুষে বের করে দেই?
- না না আমি চুদে বের করবো ভিতরে ফেলবো তোমার।
- না আজকে ভিতরে ফেলা যাবে না। সেদিন তো পিল ছিলো বলে ফেলতে দিছিলাম।
- পিল লাগবে না। আমি তোমার পেটে আমার বাচ্চার জন্ম দিবো।
- আরে পাগল কিসব বলে এইটা সবাই বুঝে যাবে। এত বছর বাচ্চা হলো না এখনকিভাবে হলো?
- কেউ কিছু বুঝবে না আমার মাথায় প্লান আছে দেখি ধুকাতে দেও, একটু গুদ জাগিয়ে মাথা নিচু করে দাড়াও।
- এখানে কিভাবে আল্লাহ... দ্রুত শেষ করবি আর বাইরে ফেলবি রাজি?
- আচ্ছা রাজি, দাড়াও
ফরিদা কাকি বিশাল পাছা জাগিয়ে মাথা নিচু করে হাত পায়খানার দেয়ালে লাগিয়ে দিলো। আমি পিছনে দাঁড়িয়ে আমার বাড়া সেট করলাম ফরিদার রসে ভড়া ভোদার মুখে। হাল্কা একটু চাপ দিতেই পুচুত করে ধোনের মাথা ডুকে গেলো ফরিদা কাকির ভোদায়। আস্তে আস্তে আমি থাপ শুরু করলাম। কাকি ও আহ উহ করতে লাগলো। পুরো ধোন ডুকিয়ে যখন দেখলাম মাগীর ভোদা এখন আমার রাম থাপের জন্য রেডি। তখনি শুরু করলাম জোরে জোরে রাম থাপ মারা। মাগী ও নিচ থেকে ভোদার ঠোঁট দিয়ে কামড় দিতে লাগলো ধোনে।
- কাকি কামড় দিচ্ছো কেনো মাল বের হয়ে যাবে দ্রুত।
- হ্যাঁ, দ্রুতই বের করতে হবে নাইলে আমার গলা দিয়ে বের হয়ে যাবে তোর ধোন। এত জোরে জোরে কেউ চোদে নাকি আহ আহ উহ ঊহ উহ আহ উহ...
- এই নে মাগী এই নে...
বলে আমি মাল ছেড়ে দিলাম ফরিদা কাকির ভোদার ভিতেরে।
6 notes
·
View notes
Text
খোঁজ ৩
প্রদীপ খাবার টেবিলে। তবে খাওয়া বাদে যেন খাবার দেখেই যাচ্ছে যেন খাবার গুলো খেলেই নিজের সব উত্তর পেয়ে যাবে।
একমাএ ডাইনিংয়েই সবার ফোন ব্যবহারের অনুমতি আছে। বাকি সময় ফোনের দিকে তাকানোই যেন পাপ
,অদ্ভুত সব নিয়মকানুন কোন অফিসে প্রদীপ আজ পর্যন্ত এমন দেখেনি।
এক পর্যায়ে প্রদীপের নিজেকে পাগল মনে হল। তাই সে ঠিক করলো যেভাবেই হোক কাজে মনোযোগী হতে হবে। কোনোভাবেই চাকরি টা ছাড়া চলবে না। নিজের আদঘুটে স্বভাবের জন্য প্রথম থেকে চাকরি পালটিয়ে আসতে হচ্ছে প্রদীপকে তবে আর না।
নিজেকে খুব অসহায় লাগছে প্রদীপের। কিভাবে মনকে সারিয়ে তুলবে বুঝতে পারছে না এমন সময় পাশে রাখা ফোনটা বেজে উঠলো।
প্রদীপের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে যেন কোন আকাঙ্ক্ষা পূরন হয়েছে।
কলটা কাটার আগেই প্রদীপ তাড়াহুড়ো করে ফোনটা রিসিভ করল।
- কেমন আছো?
- এইতো তোমার কি খবর?
- কি করছো আজকাল?
- এইতো, লাঞ্চ করছিলাম। তোমার খাওয়া হয়েছে?
কি রান্না করেছিলে আজকে?
- তোমার পছন্দের খাসির কষা রান্না করেছিলাম। তোমার কথা খুব মনে পড়ছিল। তাই আর কল না করে পারলাম না।
- সে তুমি কষা রাধো আর যাই রাধো। আমার মন খারাপ হলে কিভাবে যে বুঝতে পারো আজ অব্দি বুঝলাম না।
- কি হয়েছে আবার নতুন চাকরিতে সমস্যা হয়েছে বুঝি।
- প্রথম দিনে কি বা আর হবে! বাদ দাও ওসব।
কি করছো তাই বল।
- এই শোনো না আমি এখন রাখছি। নাতিকের দুধ খাওয়ানোর সময় হয়ে গে��ে নিজের খেয়াল রেখো।
এই বলতেই ওপাশ থেকে কলটা কেটে গেল। প্রদীপের হাসি ভরা মুখ এবার যেন নিথর হয়ে গেল। খাবারটা রেখেই চলে গেলো কাজ করতে।
বিন্দু তাহলে সুখেই আছে স্বামী আর বাচ্চাদের নিয়ে শুধু আমিই এগোতে পারলাম না!
সারাদিনের সকল কাজ শেষ প্রদীপ ফাইল জমা দিয়ে এসেছে ম্যানেজারের রুমে। বাসার জন্য রওনা করবে এমন সময় ম্যানেজার পেছন থেকে,
- কি করতাছো ? এহনো পাঁচ মিনিট বাকি কাইলকার কাজখানা গুছায়া যাও!
আর এই লও চাবি, যাওয়ার সময় দারোয়ানরে দিয়া যায়ো।
- ৭ ডিসেম্বর, ২০২২
- মোনালিসা মিতু।
2 notes
·
View notes
Text
কোরআন তিলাওয়াতের আদব ও শিষ্টাচার
Etiquette and Etiquette of Quran Recitation
আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা। আল্লাহ অদ্বিতীয়, সর্বশক্তিমান, একমাত্র উপাস্য। আল্লাহ একমাত্র সত্য মাবুদ। আল্লাহ ছাড়া কোনো 'সত্য ইলাহ'/ 'সত্য উপাস্য' নেই। আল্লাহ তাঁর কর্মে-পরিচালনায়, প্রভুত্ব-কর্তৃত্বে, উপাস্যের যোগ্যতা-অধিকারে এক, অদ্বিতীয় অংশীদারমুক্ত। আল্লাহ তায়ালা আসমানে আরশের ঊরধে সমুন্নত আছেন। আল্লাহকে জানতে হবে তাঁর সুন্দর নাম 'আসমাউল হুসনা' ও পরিপূর্ণ সিফাত দ্বারা। কোরআন আল্লাহর বাণী। মানবজাতির জন্য চূড়ান্ত পথ নির্দেশনা।
কোরআন পাঠ করতে হয় যথাযথ ভক্তি, শ্রদ্ধা ও আদব সহকারে। এর আদবগুলো হলো—
প্রথম আদব : নিয়ত শুদ্ধ করা। রাসুলুল্লাহ (সা.) কিয়ামতের দিন তিন শ্রেণির মানুষের ওপর আগুনের শাস্তি কঠোর করা হবে বলে জানিয়েছেন।
তাদের মধ্যে একজন ওই কারি, যিনি ইখলাসের সঙ্গে কোরআন তিলাওয়াত করতেন না। (তিরমিজি, হাদিস : ২৩৮২; সহিহ ইবন হিব্বান, হাদিস : ৪০৮)
দ্বিতীয় আদব : পবিত্র হয়ে অজু অবস্থায় কোরআন তিলাওয়াত করা। অজু ছাড়াও কোরআন পড়া যাবে, তবে তা অজু অবস্থায় পড়ার সমান হতে পারে না।
তৃতীয় আদব : কোরআন তিলাওয়াতের আগে মিসওয়াক করা।
আলী (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে এসেছে, ‘তোমাদের মুখগুলো কোরআনের পথ। তাই সেগুলোকে মিসওয়াক দ্বারা সুরভিত করো।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৯১)
চতুর্থ আদব : তিলাওয়াতের শুরুতে আউজুবিল্লাহ পড়া। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘সুতরাং যখন তুমি কোরআন পড়বে, তখন আল্লাহর কাছে বিতাড়িত শয়তান থেকে আশ্রয় চাও।
(সুরা : নাহল, আয়াত : ৯৮)
পঞ্চম আদব : বিসমিল্লাহ পড়া। তিলাওয়াতকারীর উচিত সুরা তাওবা ছাড়া সব সুরার শুরুতে বিসমিল্লাহ পড়া। রাসুলুল্লাহ (সা.) থেকে প্রমাণিত যে তিনি এক সুরা শেষ করে বিসমিল্লাহ বলে আরেক সুরা শুরু করতেন। শুধু সুরা আনফাল শেষ করে সুরা তাওবা শুরু করার সময় বিসমিল্লাহ পড়তেন না।
ষষ্ঠ আদব : তারতিলের সঙ্গে (ধীরস্থিরভাবে) কোরআন পড়া।
কারণ আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা তারতিলের সঙ্গে কোরআন তিলাওয়াত করো।’ (সুরা : মুজ্জাম্মিল, আয়াত : ৪)
সপ্তম আদব : সুন্দর করে মনের মাধুরী মিশিয়ে কোরআন পড়া। বারা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে এশার নামাজে সুরা ত্বিন পড়তে শুনেছি। আমি তাঁর চেয়ে সুন্দর কণ্ঠে আর কাউকে তিলাওয়াত করতে শুনিনি।’ (বুখারি, হাদিস : ৭৫��৬; মুসলিম, হাদিস : ১০৬৭)
অষ্টম আদব : সুরসহকারে কোরআন তিলাওয়াত করা। এটি সুন্দর করে কোরআন তিলাওয়াতের অংশ। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘সে আমার উম্মত নয়, যে সুরসহযোগে কোরআন পড়ে না।’ (বুখারি, হাদিস : ৭৫২৭; আবু দাউদ, হাদিস : ১৪৭১)
নবম আদব : রাতে ঘুম পেলে বা ঝিমুনি এলে তিলাওয়াত থেকে বিরত থাকা। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেন, ‘যখন তোমাদের কেউ রাতে নামাজ পড়ে, ফলে তার জিহ্বায় কোরআন এমনভাবে জড়িয়ে আসে যে সে কী পড়ছে তা টের পায় না, তাহলে সে যেন শুয়ে পড়ে।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৮৭২; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ৮২১৪)
অর্থাৎ তার উচিত এমতাবস্থায় নামাজ না পড়ে বিছানায় গিয়ে ঘুমিয়ে পড়া, যাতে তার মুখে কোরআন ও অন্য কোনো শব্দের মিশ্রণ না ঘটে এবং কোরআনের আয়াত এলোমেলো হয়ে না যায়।
দশম আদব : ফজিলতপূর্ণ সুরাগুলো ভালোভাবে শিক্ষা করা এবং সেগুলো বেশি বেশি তিলাওয়াত করা। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ কি রাত্রিকালে কোরআনের এক-তৃতীয়াংশ তিলাওয়াতে অক্ষম? তারা বলল, কোরআনের এক-তৃতীয়াংশ কিভাবে পড়া যাবে! তিনি বলেন, ‘সুরা ইখলাস কোরআনের এক-তৃতীয়াংশের সমতুল্য।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৯২২; বুখারি, হাদিস : ৫০১৫)
একাদশ আদব : ধৈর্য নিয়ে কোরআন তিলাওয়াত করা। যিনি অনায়াসে কোরআন পড়তে পারেন না, তিনি আটকে আটকে ধৈর্যসহ পড়বেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘কোরআন পাঠে যে অভিজ্ঞ ব্যক্তি কোরআন তিলাওয়াত করে, সে সম্মানিত রাসুল ও পুণ্যাত্মা ব্যক্তিদের সঙ্গে থাকবে। আর যে ব্যক্তি তোতলাতে তোতলাতে সক্লেশে কোরআন তিলাওয়াত করবে, তার জন্য দ্বিগুণ নেকি লেখা হবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৪৯৩৭; মুসলিম, হাদিস : ১৮৯৮)
দ্বাদশ আদব : কোরআন তিলাওয়াতের আরেকটি আদব হলো তিলাওয়াতের সময় ক্রন্দন করা। আল্লাহ তাআলা তিলাওয়াতের সময় ক্রন্দনরতদের প্রশংসা করে বলেন, ‘আর তারা কাঁদতে কাঁদতে লুটিয়ে পড়ে এবং এটা তাদের বিনয় বৃদ্ধি করে।’ (সুরা : বনি ইসরাঈল, আয়াত : ১০৯)
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করিম (সা.) আমাকে বলেছেন, আমাকে তুমি তিলাওয়াত করে শোনাও। বললাম, আমি আপনাকে তিলাওয়াত শোনাব, অথচ আপনার ওপরই এটি অবতীর্ণ হয়েছে? তিনি বলেন, আমি অন্যের তিলাওয়াত শুনতে পছন্দ করি। অতঃপর আমি তাঁকে সুরা নিসা পড়ে শোনাতে লাগলাম। যখন আমি সুরা নিসার ৪১ নম্বর আয়াত তিলাওয়াত করলাম, তিনি বললেন, ব্যস, যথেষ্ট হয়েছে। আমি তাঁর দিকে তাকিয়ে দেখলাম তাঁর চোখ থেকে অঝোর ধারায় অশ্রু প্রবাহিত হচ্ছে। (বুখারি, হাদিস : ৫০৫০; মুসলিম, হাদিস : ১৯০৩)
আয়াতটি হলো, ‘যখন আমি প্রত্যেক উম্মত থেকে একজন সাক্ষী উপস্থিত করব এবং তোমাকে উপস্থিত করব তাদের ওপর সাক্ষীরূপে, তখন কী অবস্থা হবে?’
কাসিম (রহ.) একবার আয়েশা (রা.)-এর কাছ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন। তিনি দেখেন, আয়েশা (রা.) একটি আয়াত বারবার আবৃত্তি করছেন আর কেঁদে কেঁদে দোয়া করছেন। আয়াতটি হলো, ‘অতঃপর আল্লাহ আমাদের প্রতি দয়া করেছেন এবং আগুনের আজাব থেকে আমাদের রক্ষা করেছেন।’ (সুরা : তুর, আয়াত : ২৭)
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) যখন এ আয়াত তিলাওয়াত করেন, ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করেন। আয়াতটি হলো, ‘আর মৃত্যুর যন্ত্রণা অবশ্যই আসবে, যা থেকে তুমি পলায়ন করতে চাইতে।’ (সুরা : ক্বফ, আয়াত : ১৯)
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) যখন এ আয়াতটি পড়তেন, তখনই তিনি কান্নাকাটি করতেন। আয়াতটি হলো, ‘...আর তোমাদের মনে যা আছে, তা যদি তোমরা প্রকাশ করো অথবা গোপন করো, আল্লাহ সে বিষয়ে তোমাদের হিসাব নেবেন...।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ২৮৪)
মূল কথা হলো, কোরআন তিলাওয়াতের সময় কান্নাকাটি করা এবং চোখে পানি আসা ঈমানের আলামত। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘কোরআনের পাঠকদের মধ্যে ওই ব্যক্তির কণ্ঠ সর্বোত্তম, যার তিলাওয়াত কেউ শুনলে মনে হয় যে সে কাঁদছে।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৩৩৯)
ত্রয়োদশ আদব : কোরআন তিলাওয়াতের আরেকটি আদব হলো এর মর্ম নিয়ে চিন্তা করা। এটিই তিলাওয়াতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আদব। তিলাওয়াতের সময় চিন্তা-গবেষণা করাই এর প্রকৃত সুফল ���য়ে আনে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘আমি তোমার প্রতি নাজিল করেছি এক বরকতময় কিতাব, যাতে তারা এর আয়াতগুলো নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করে এবং যাতে বুদ্ধিমানরা উপদেশ গ্রহণ করে।’ (সুরা : সদ, আয়াত : ২৯)
ইসলামী আইন বিশেষজ্ঞরা লিখেছেন, তিন দিনের কম সময়ে কোরআন খতম করা অনুচিত। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘তিন দিনের কম সময়ে যে কোরআন খতম করবে, সে কোরআন বুঝবে না।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১৩৯৬)
জায়েদ বিন সাবেত (রা.)-কে একজন জিজ্ঞেস করলেন, সাত দিনে কোরআন খতম করাকে আপনি কোন দৃষ্টিতে দেখেন? তিনি বলেন, এটা ভালো। অবশ্য আমি এটাকে ১৫ দিনে বা ১০ দিনে খতম করাই পছন্দ করি। আমাকে জিজ্ঞেস করো, তা কেন? তিনি বলেন, আমি আপনাকে জিজ্ঞেস করছি। জায়েদ বলেন, যাতে আমি তার স্থানে স্থানে চিন্তা করতে পারি এবং থামতে পারি।’ (মুয়াত্তা মালেক, হাদিস : ৪৭২)
চতুর্দশ আদব : তিলাওয়াতের সময় সিজদার আয়াত এলে সিজদা দেওয়া। সিজদার নিয়ম হলো, তাকবির দিয়ে সিজদায় চলে যাওয়া।
পঞ্চদশ আদব : যথাসম্ভব আদবসহ বসা। আর বসা, দাঁড়ানো, চলমান ও হেলান দেওয়া—সর্বাবস্থায় তিলাওয়াত করার অনুমতি রয়েছে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, ‘যারা আল্লাহকে স্মরণ করে দাঁড়িয়ে, বসে ও কাত হয়ে এবং আসমান ও জমিনের সৃষ্টি সম্পর্কে চিন্তা করে...।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৯১)
কোরআন তিলাওয়াতের আদব ও শিষ্টাচার
Etiquette and Etiquette of Quran Recitation
আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা। আল্লাহ অদ্বিতীয়, সর্বশক্তিমান, একমাত্র উপাস্য। আল্লাহ একমাত্র সত্য মাবুদ। আল্লাহ ছাড়া কোনো 'সত্য ইলাহ'/ 'সত্য উপাস্য' নেই। আল্লাহ তাঁর কর্মে-পরিচালনায়, প্রভুত্ব-কর্তৃত্বে, উপাস্যের যোগ্যতা-অধিকারে এক, অদ্বিতীয় অংশীদারমুক্ত। আল্লাহ তায়ালা আসমানে আরশের ঊরধে সমুন্নত আছেন। আল্লাহকে জানতে হবে তাঁর সুন্দর নাম 'আসমাউল হুসনা' ও পরিপূর্ণ সিফাত দ্বারা। কোরআন আল্লাহর বাণী। মানবজাতির জন্য চূড়ান্ত পথ নির্দেশনা।
কোরআন পাঠ করতে হয় যথাযথ ভক্তি, শ্রদ্ধা ও আদব সহকারে।
পৃথিবীর বুকে মানুষের জন্য আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে সর্বশ্রেষ্ঠ উপহার হচ্ছে কোরআনে কারিম। কোরআন তেলাওয়াত শোনার মানে হলো শ্রেষ্ঠ বাণী শোনা।
কোরআনে কারিমের তেলাওয়াত স্বতন্ত্র ইবাদত হিসেবে গণ্য। এর ফজিলত অনেক বেশি���
কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে আল্লাহতায়ালার আদেশ-নিষেধগুলোর সঙ্গে পরিচিত হওয়া এবং সে অনুযায়ী আমল করা। কোরঅান তেলাওয়াত করে ক্বারি হিসেবে খ্যাতি লাভ করার উদ্দেশ্যে কোরআন তেলাওয়াত করা ঠিক নয়। অনেকে আবার দুনিয়ার স্বার্থ সিদ্ধির লক্ষ্যে কোরআন তেলাওয়াত করে। এ ধরনের তেলাওয়াতে কোনো কল্যাণ নেই। তবে, নিজ জীবনে কোরআন বাস্তবায়নের পর্যায়ে উন্নীত হওয়ার জন্য তেলাওয়াত করাটা একটা ধারা।
কোরআনে কারিম তেলাওয়াতের ক্ষেত্রে শিষ্টতাপূর্ণ কিছু নিয়ম-কানুন রয়েছে। এগুলোর কোনোটা বাহ্যিক আবার কোনো কোনোটা অভ্যন্তরীণ। কোরআন তেলাওয়াতের ক্ষেত্রে বিষয়গুলো অনুসরণ করা জরুরি।
বাহ্যিক সৌন্দর্যের মাঝে রয়েছে তেলাওয়াতের জন্য অবস্থান নির্ণয় করা। কোরআন সর্বাবস্থায় তেলাওয়াত করা যায়। দাঁড়িয়ে, বসে কিংবা শুয়েও কোরআন পড়া যায়।
এই যে আমরা কোরআন তেলাওয়াতের ক্ষেত্রে নিয়ম-শৃঙ্খলার কথা বললাম- কোরআনের আলোকে সেদিকে একটু দৃষ্টি দেওয়া যাক। সূরা ওয়াকিয়ার ৭৯ নম্বর আয়াতে কোরআনের পবিত্রতার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। ইরশাদ করা হয়েছে, ‘পবিত্র সত্তা ছাড়া কেউ এ কোরআন স্পর্শ করতে পারে না। ’
এ আয়াতের তাফসির প্রসঙ্গে কোনো কোনো মুফাসসির বলেছেন, ‘পাক-পবিত্র নয় এমন কোনো ব্যক্তি যেন তা স্পর্শ না করে। ’ তার মানে অজু গোসল ছাড়া কোরআন স্পর্শ করা ঠিক নয়।
কোরআন তেলাওয়াত করার সময় পবিত্র থাকা শরিয়তের বিধান মতে মোস্তাহাব। অনেক আলেম তো এটাও বলেছেন যে, কোরআন তেলাওয়াতের আগে মুখটাকে পরিষ্কার করো। কেননা মানুষের মুখ হলো কোরআনের পথ। তার মানে কোরআনের আধ্যাত্মিক গুণে যিনি সমৃদ্ধ হতে চান তার উচিত আত্মিক পবিত্রতা এবং আন্তরিক বিশ্বাস স্থাপন করা।
কোরআন তেলাওয়াতের শুরুতে এস্তেআজা বাক্যটি পড়ে নিতে হবে। এস্তেআজা বলা হয়, আউজুবিল্লাহি মিনাশ শায়তানির রাজিম বলাকে। এর উদ্দেশ্য হলো, কোরআন তেলাওয়াতের শুরুতে আল্লাহতায়ালার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা। এ প্রসঙ্গে সূরা নামলের ৯৮ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘যখন কোরআন পাঠ করবে, তখন অভিশপ্ত শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করবে। ’
এরপর ‘তাসমিয়া’ মানে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম পড়ে কোরআন তেলাওয়াত শুরু করবে। কোরআন তেলাওয়াতের শুরুতে এস্তেআজার মাধ্যমে গুনাহের দরজাগুলো বন্ধ করে রেখে তাসমিয়ার মাধ্যমে আল্লাহর আনুগত্যের দ্বার উন্মোচন করা হয়।
কোরআনে কারিম নীরবে শোনাও তেলাওয়াতের একটি শিষ্টাচার। সূরা আরাফের ২০৪ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘যখন কোরআন তোমাদের সামনে পড়া হয়, তা মনোযোগ সহকারে শোনো এবং নীরব থাকো, হয়তো তোমাদের প্রতিও রহমত বর্ষিত হবে। ’
এ আয়াতের দাবি অনুযায়ী কোরআন তেলাওয়াতের সময় নীরবে আল্লাহর ওহির মর্যাদাময় বাণী মনোযোগ সহকারে শুনতে হবে। কোরআন তেলাওয়াত করার সময় আল্লাহতায়ালা তেলাওয়াতকারীর সঙ্গে কথা বলেন। সেজন্য খুব ভালোভাবে শোনা উচিত এবং ��ুনে মনোযোগের সঙ্গে আয়াতের বক্তব্য নিয়ে চিন্তাভাবনা করা উচিত। যাতে করে মহান আল্লাহতায়ালা ঐশী বাণী থেকে বেশি করে উপকৃত হওয়া যায়।
তেলাওয়াত হলো- আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ গ্রন্থ বিশেষ করে পবিত্র কোরআন পড়া। এই কোরআন পড়ার জন্য কিছু নিয়ম-কানুন যাকে ব্যাকরণ বলা হয়, সেগুলো মেনে চলতে হবে। কোরআনের পরিভাষায় এই নিয়ম-কানুনকে বলা হয় তারতিল।
‘তারতিল’ মানে কোরআন থেমে থেমে পাঠ করাকে বোঝায়। তাই কোরআন তাড়াতাড়ি বা দ্রুতগতিতে না পড়াই শ্রেয়। ধীরে ধীরে প্রতিটি শব্দ সুন্দরভাবে মুখে উচ্চারণ করে কোরআন তেলাওয়াতের বিশেষ মাহাত্ম রয়েছে। তা হলো, এক একটি আয়াত পড়ে থামলে বা বিরতি নিলে মন আল্লাহর বাণীর অর্থ ও তার দাবীকে পুরোপুরি উপলদ্ধি করতে পারবে এবং তার বিষয়বস্তু দ্বারা প্রভাবিত হবে।
তারতিলের ভেতর কোরআনের প্রতিটি শব্দের বিশুদ্ধ উচ্চারণ করার বিষয়টিও রয়েছে। উচ্চারণের ক্ষেত্রে দু’টি বিষয়ের ওপর খেয়াল রাখতে হবে। একটি হলো মাখরাজ বা উচ্চারণ স্থান। প্রতিটি ধ্বনি বাক প্রত্যঙ্গের ঠিক কোন স্থান থেকে উচ্চারিত হবে সেটি জানতে হবে।
আরেকটি হলো- সিফাত বা শব্দের অবস্থা ও গুণাবলি অনুযায়ী উচ্চারণ করা। কোরআন তেলাওয়াতের এই ব্যাকরণকে তাজবিদ বলা হয়। তাজবিদ জানার কোনো বিকল্প নেই।
কোরআনকে সুন্দর করে সুরেলা কণ্ঠে পড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে কোরআন দেখে দেখে পড়ার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এবার কোরআন তেলাওয়াতের বাতেনি বা অদৃশ্য শিষ্টাচারের কথা আলোচনা করা যাক।
একজন ক্বারি কতটুকু তেলাওয়াত করবেন সেটা বিবেচ্য বিষয়। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ... তাই কোরআনের যতটা পরিমাণ সহজেই পড়া যায়- ততটাই পড়তে থাকো! নামাজ কায়েম করো, জাকাত দাও।
ইসলামি স্কলারদের অভিমত হচ্ছে,কোরআন নিয়মিত তেলাওয়াত করা। ধীরে ধীরে তেলাওয়াতের পরিমাণ বাড়াতে থাকা। নিজে নির্ধারণ করে নেওয়া, প্রতিদিন কতটুকু করে তেলাওয়াত করবে সে বিষয়ে। আল্লাহ সবাইকে নিয়ম করে, যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে প��রতিদিন কোরআন তেলাওয়াত করার তওফিক দান করুন। আমিন।
অসাধারণ কিছু তেলাওয়াত
অসাধারণ কিছু আবৃত্তি
Some Wonderful Recitations
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
কোরআন তিলাওয়াতের আদব ও শিষ্টাচার
#allah'snature#qur'an#তিলাওয়াত#আদব#শিষ্টাচার#QuranicRecitation#Etiquette and Etiquette of Quran Recitation#কোরআনতিলাওয়াত#Etiquette#Quran#Recitation#quranicverses#Youtube
1 note
·
View note
Text
কোরআন তিলাওয়াতের আদব ও শিষ্টাচার
Etiquette and Etiquette of Quran Recitation
আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা। আল্লাহ অদ্বিতীয়, সর্বশক্তিমান, একমাত্র উপাস্য। আল্লাহ একমাত্র সত্য মাবুদ। আল্লাহ ছাড়া কোনো 'সত্য ইলাহ'/ 'সত্য উপাস্য' নেই। আল্লাহ তাঁর কর্মে-পরিচালনায়, প্রভুত্ব-কর্তৃত্বে, উপাস্যের যোগ্যতা-অধিকারে এক, অদ্বিতীয় অংশীদারমুক্ত। আল্লাহ তায়ালা আসমানে আরশের ঊরধে সমুন্নত আছেন। আল্লাহকে জানতে হবে তাঁর সুন্দর নাম 'আসমাউল হুসনা' ও পরিপূর্ণ সিফাত দ্বারা। কোরআন আল্লাহর বাণী। মানবজাতির জন্য চূড়ান্ত পথ নির্দেশনা।
কোরআন পাঠ করতে হয় যথাযথ ভক্তি, শ্রদ্ধা ও আদব সহকারে। এর আদবগুলো হলো—
প্রথম আদব : নিয়ত শুদ্ধ করা। রাসুলুল্লাহ (সা.) কিয়ামতের দিন তিন শ্রেণির মানুষের ওপর আগুনের শাস্তি কঠোর করা হবে বলে জানিয়েছেন।
তাদের মধ্যে একজন ওই কারি, যিনি ইখলাসের সঙ্গে কোরআন তিলাওয়াত করতেন না। (তিরমিজি, হাদিস : ২৩৮২; সহিহ ইবন হিব্বান, হাদিস : ৪০৮)
দ্বিতীয় আদব : পবিত্র হয়ে অজু অবস্থায় কোরআন তিলাওয়াত করা। অজু ছাড়াও কোরআন পড়া যাবে, তবে তা অজু অবস্থায় পড়ার সমান হতে পারে না।
তৃতীয় আদব : কোরআন তিলাওয়াতের আগে মিসওয়াক করা।
আলী (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে এসেছে, ‘তোমাদের মুখগুলো কোরআনের পথ। তাই সেগুলোকে মিসওয়াক দ্বারা সুরভিত করো।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৯১)
চতুর্থ আদব : তিলাওয়াতের শুরুতে আউজুবিল্লাহ পড়া। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘সুতরাং যখন তুমি কোরআন পড়বে, তখন আল্লাহর কাছে বিতাড়িত শয়তান থেকে আশ্রয় চাও।
(সুরা : নাহল, আয়াত : ৯৮)
পঞ্চম আদব : বিসমিল্লাহ পড়া। তিলাওয়াতকারীর উচিত সুরা তাওবা ছাড়া সব সুরার শুরুতে বিসমিল্লাহ পড়া। রাসুলুল্লাহ (সা.) থেকে প্রমাণিত যে তিনি এক সুরা শেষ করে বিসমিল্লাহ বলে আরেক সুরা শুরু করতেন। শুধু সুরা আনফাল শেষ করে সুরা তাওবা শুরু করার সময় বিসমিল্লাহ পড়তেন না।
ষষ্ঠ আদব : তারতিলের সঙ্গে (ধীরস্থিরভাবে) কোরআন পড়া।
কারণ আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা তারতিলের সঙ্গে কোরআন তিলাওয়াত করো।’ (সুরা : মুজ্জাম্মিল, আয়াত : ৪)
সপ্তম আদব : সুন্দর করে মনের মাধুরী মিশিয়ে কোরআন পড়া। বারা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে এশার নামাজে সুরা ত্বিন পড়তে শুনেছি। আমি তাঁর চেয়ে সুন্দর কণ্ঠে আর কাউকে তিলাওয়াত করতে শুনিনি।’ (বুখারি, হাদিস : ৭৫৪৬; মুসলিম, হাদিস : ১০৬৭)
অষ্টম আদব : সুরসহকারে কোরআন তিলাওয়াত করা। এটি সুন্দর করে কোরআন তিলাওয়াতের অংশ। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘সে আমার উম্মত নয়, যে সুরসহযোগে কোরআন পড়ে না।’ (বুখারি, হাদিস : ৭৫২৭; আবু দাউদ, হাদিস : ১৪৭১)
নবম আদব : রাতে ঘুম পেলে বা ঝিমুনি এলে তিলাওয়াত থেকে বিরত থাকা। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেন, ‘যখন তোমাদের কেউ রাতে নামাজ পড়ে, ফলে তার জিহ্বায় কোরআন এমনভাবে জড়িয়ে আসে যে সে কী পড়ছে তা টের পায় না, তাহলে সে যেন শুয়ে পড়ে।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৮৭২; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ৮২১৪)
অর্থাৎ তার উচিত এমতাবস্থায় নামাজ না পড়ে বিছানায় গিয়ে ঘুমিয়ে পড়া, যাতে তার মুখে কোরআন ও অন্য কোনো শব্দের মিশ্রণ না ঘটে এবং কোরআনের আয়াত এলোমেলো হয়ে না যায়।
দশম আদব : ফজিলতপূর্ণ সুরাগুলো ভালোভাবে শিক্ষা করা এবং সেগুলো বেশি বেশি তিলাওয়াত করা। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ কি রাত্রিকালে কোরআনের এক-তৃতীয়াংশ তিলাওয়াতে অক্ষম? তারা বলল, কোরআনের এক-তৃতীয়াংশ কিভাবে পড়া যাবে! তিনি বলেন, ‘সুরা ইখলাস কোরআনের এক-তৃতীয়াংশের সমতুল্য।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৯২২; বুখারি, হাদিস : ৫০১৫)
একাদশ আদব : ধৈর্য নিয়ে কোরআন তিলাওয়াত করা। যিনি অনায়াসে কোরআন পড়তে পারেন না, তিনি আটকে আটকে ধৈর্যসহ পড়বেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘কোরআন পাঠে যে অভিজ্ঞ ব্যক্তি কোরআন তিলাওয়াত করে, সে সম্মানিত রাসুল ও পুণ্যাত্মা ব্যক্তিদের সঙ্গে থাকবে। আর যে ব্যক্তি তোতলাতে তোতলাতে সক্লেশে কোরআন তিলাওয়াত করবে, তার জন্য দ্বিগুণ নেকি লেখা হবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৪৯৩৭; মুসলিম, হাদিস : ১৮৯৮)
দ্বাদশ আদব : কোরআন তিলাওয়াতের আরেকটি আদব হলো তিলাওয়াতের সময় ক্রন্দন করা। আল্লাহ তাআলা তিলাওয়াতের সময় ক্রন্দনরতদের প্রশংসা করে বলেন, ‘আর তারা কাঁদতে কাঁদতে লুটিয়ে পড়ে এবং এটা তাদের বিনয় বৃদ্ধি করে।’ (সুরা : বনি ইসরাঈল, আয়াত : ১০৯)
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করিম (সা.) আমাকে বলেছেন, আমাকে তুমি তিলাওয়াত করে শোনাও। বললাম, আমি আপনাকে তিলাওয়াত শোনাব, অথচ আপনার ওপরই এটি অবতীর্ণ হয়েছে? তিনি বলেন, আমি অন্যের তিলাওয়াত শুনতে পছন্দ করি। অতঃপর আমি তাঁকে সুরা নিসা পড়ে শোনাতে লাগলাম। যখন আমি সুরা নিসার ৪১ নম্বর আয়াত তিলাওয়াত করলাম, তিনি বললেন, ব্যস, যথেষ্ট হয়েছে। আমি তাঁর দিকে তাকিয়ে দেখলাম তাঁর চোখ থেকে অঝোর ধারায় অশ্রু প্রবাহিত হচ্ছে। (বুখারি, হাদিস : ৫০৫০; মুসলিম, হাদিস : ১৯০৩)
আয়াতটি হলো, ‘যখন আমি প্রত্যেক উম্মত থেকে একজন সাক্ষী উপস্থিত করব এবং তোমাকে উপস্থিত করব তাদের ওপর সাক্ষীরূপে, তখন কী অবস্থা হবে?’
কাসিম (রহ.) একবার আয়েশা (রা.)-এর কাছ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন। তিনি দেখেন, আয়েশা (রা.) একটি আয়াত বারবার আবৃত্তি করছেন আর কেঁদে কেঁদে দোয়া করছেন। আয়াতটি হলো, ‘অতঃপর আল্লাহ আমাদের প্রতি দয়া করেছেন এবং আগুনের আজাব থেকে আমাদের রক্ষা করেছেন।’ (সুরা : তুর, আয়াত : ২৭)
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) যখন এ আয়াত তিলাওয়াত করেন, ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করেন। আয়াতটি হলো, ‘আর মৃত্যুর যন্ত্রণা অবশ্যই আসবে, যা থেকে তুমি পলায়ন করতে চাইতে।’ (সুরা : ক্বফ, আয়াত : ১৯)
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) যখন এ আয়াতটি পড়তেন, তখনই তিনি কান্নাকাটি করতেন। আয়াতটি হলো, ‘...আর তোমাদের মনে যা আছে, তা যদি তোমরা প্রকাশ করো অথবা গোপন করো, আল্লাহ সে বিষয়ে তোমাদের হিসাব নেবেন...।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ২৮৪)
মূল কথা হলো, কোরআন তিলাওয়াতের সময় কান্নাকাটি করা এবং চোখে পানি আসা ঈমানের আলামত। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘কোরআনের পাঠকদের মধ্যে ওই ব্যক্তির কণ্ঠ সর্বোত্তম, যার তিলাওয়াত কেউ শুনলে মনে হয় যে সে কাঁদছে।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৩৩৯)
ত্রয়োদশ আদব : কোরআন তিলাওয়াতের আরেকটি আদব হলো এর মর্ম নিয়ে চিন্তা করা। এটিই তিলাওয়াতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আদব। তিলাওয়াতের সময় চিন্তা-গবেষণা করাই এর প্রকৃত সুফল বয়ে আনে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘আমি তোমার প্রতি নাজিল করেছি এক বরকতময় কিতাব, যাতে তারা এর আয়াতগুলো নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করে এবং যাতে বুদ্ধিমানরা উপদেশ গ্রহণ করে।’ (সুরা : সদ, আয়াত : ২৯)
ইসলামী আইন বিশেষজ্ঞরা লিখেছেন, তিন দিনের কম সময়ে কোরআন খতম করা অনুচিত। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘তিন দিনের কম সময়ে যে কোরআন খতম করবে, সে কোরআন বুঝবে না।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১৩৯৬)
জায়েদ বিন সাবেত (রা.)-কে একজন জিজ্ঞেস করলেন, সাত দিনে কোরআন খতম করাকে আপনি কোন দৃষ্টিতে দেখেন? তিনি বলেন, এটা ভালো। অবশ্য আমি এটাকে ১৫ দিনে বা ১০ দিনে খতম করাই পছন্দ করি। আমাকে জিজ্ঞেস করো, তা কেন? তিনি বলেন, আমি আপনাকে জিজ্ঞেস করছি। জায়েদ বলেন, যাতে আমি তার স্থানে স্থানে চিন্তা করতে পারি এবং থামতে পারি।’ (মুয়াত্তা মালেক, হাদিস : ৪৭২)
চতুর্দশ আদব : তিলাওয়াতের সময় সিজদার আয়াত এলে সিজদা দেওয়া। সিজদার নিয়ম হলো, তাকবির দিয়ে সিজদায় চলে যাওয়া।
পঞ্চদশ আদব : যথাসম্ভব আদবসহ বসা। আর বসা, দাঁড়ানো, চলমান ও হেলান দেওয়া—সর্বাবস্থায় তিলাওয়াত করার অনুমতি রয়েছে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, ‘যারা আল্লাহকে স্মরণ করে দাঁড়িয়ে, বসে ও কাত হয়ে এবং আসমান ও জমিনের সৃষ্টি সম্পর্কে চিন্তা করে...।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৯১)
কোরআন তিলাওয়াতের আদব ও শিষ্টাচার
Etiquette and Etiquette of Quran Recitation
আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা। আল্লাহ অদ্বিতীয়, সর্বশক্তিমান, একমাত্র উপাস্য। আল্লাহ একমাত্র সত্য মাবুদ। আল্লাহ ছাড়া কোনো 'সত্য ইলাহ'/ 'সত্য উপাস্য' নেই। আল্লাহ তাঁর কর্মে-পরিচালনায়, প্রভুত্ব-কর্তৃত্বে, উপাস্যের যোগ্যতা-অধিকারে এক, অদ্বিতীয় অংশীদারমুক্ত। আল্লাহ তায়ালা আসমানে আরশের ঊরধে সমুন্নত আছেন। আল্লাহকে জানতে হবে তাঁর সুন্দর নাম 'আসমাউল হুসনা' ও পরিপূর্ণ সিফাত দ্বারা। কোরআন আল্লাহর বাণী। মানবজাতির জন্য চূড়ান্ত পথ নির্দেশনা।
কোরআন পাঠ করতে হয় যথাযথ ভক্তি, শ্রদ্ধা ও আদব সহকারে।
পৃথিবীর বুকে মানুষের জন্য আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে সর্বশ্রেষ্ঠ উপহার হচ্ছে কোরআনে কারিম। কোরআন তেলাওয়াত শোনার মানে হলো শ্রেষ্ঠ বাণী শোনা।
কোরআনে কারিমের তেলাওয়াত স্বতন্ত্র ইবাদত হিসেবে গণ্য। এর ফজিলত অনেক বেশি।
কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে আল্লাহতায়ালার আদেশ-নিষেধগুলোর সঙ্গে পরিচিত হওয়া এবং সে অনুযায়ী আমল করা। কোরঅান তেলাওয়াত করে ক্বারি হিসেবে খ্যাতি লাভ করার উদ্দেশ্যে কোরআন তেলাওয়াত করা ঠিক নয়। অনেকে আবার দুনিয়ার স্বার্থ সিদ্ধির লক্ষ্যে কোরআন তেলাওয়াত করে। এ ধরনের তেলাওয়াতে কোনো কল্যাণ নেই। তবে, নিজ জীবনে কোরআন বাস্তবায়নের পর্যায়ে উন্নীত হওয়ার জন্য তেলাওয়াত করাটা একটা ধারা।
কোরআনে কারিম তেলাওয়াতের ক্ষেত্রে শিষ্টতাপূর্ণ কিছু নিয়ম-কানুন রয়েছে। এগুলোর কোনোটা বাহ্যিক আবার কোনো কোনোটা অভ্যন্তরীণ। কোরআন তেলাওয়াতের ক্ষেত্রে বিষয়গুলো অনুসরণ করা জরুরি।
বাহ্যিক সৌন্দর্যের মাঝে রয়েছে তেলাওয়াতের জন্য অবস্থান নির্ণয় করা। কোরআন সর্বাবস্থায় তেলাওয়াত করা যায়। দাঁড়িয়ে, বসে কিংবা শুয়েও কোরআন পড়া যায়।
এই যে আমরা কোরআন তেলাওয়াতের ক্ষেত্রে নিয়ম-শৃঙ্খলার কথা বললাম- কোরআনের আলোকে সেদিকে একটু দৃষ্টি দেওয়া যাক। সূরা ওয়াকিয়ার ৭৯ নম্বর আয়াতে কোরআনের পবিত্রতার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। ইরশাদ করা হয়েছে, ‘পবিত্র সত্তা ছাড়া কেউ এ কোরআন স্পর্শ করতে পারে না। ’
এ আয়াতের তাফসির প্রসঙ্গে কোনো কোনো মুফাসসির বলেছেন, ‘পাক-পবিত্র নয় এমন কোনো ব্যক্তি যেন তা স্পর্শ না করে। ’ তার মানে অজু গোসল ছাড়া কোরআন স্পর্শ করা ঠিক নয়।
কোরআন তেলাওয়াত করার সময় পবিত্র থাকা শরিয়তের বিধান মতে মোস্তাহাব। অনেক আলেম তো এটাও বলেছেন যে, কোরআন তেলাওয়াতের আগে মুখটাকে পরিষ্কার করো। কেননা মানুষের মুখ হলো কোরআনের পথ। তার মানে কোরআনের আধ্যাত্মিক গুণে যিনি সমৃদ্ধ হতে চান তার উচিত আত্মিক পবিত্রতা এবং আন্তরিক বিশ্বাস স্থাপন করা।
কোরআন তেলাওয়াতের শুরুতে এস্তেআজা বাক্যটি পড়ে নিতে হবে। এস্তেআজা বলা হয়, আউজুবিল্লাহি মিনাশ শায়তানির রাজিম বলাকে। এর উদ্দেশ্য হলো, কোরআন তেলাওয়াতের শুরুতে আল্লাহতায়ালার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা। এ প্রসঙ্গে সূরা নামলের ৯৮ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘যখন কোরআন পাঠ করবে, তখন অভিশপ্ত শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করবে। ’
এরপর ‘তাসমিয়া’ মানে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম পড়ে কোরআন তেলাওয়াত শুরু করবে। কোরআন তেলাওয়াতের শুরুতে এস্তেআজার মাধ্যমে গুনাহের দরজাগুলো বন্ধ করে রেখে তাসমিয়ার মাধ্যমে আল্লাহর আনুগত্যের দ্বার উন্মোচন করা হয়।
কোরআনে কারিম নীরবে শোনাও তেলাওয���াতের একটি শিষ্টাচার। সূরা আরাফের ২০৪ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘যখন কোরআন তোমাদের সামনে পড়া হয়, তা মনোযোগ সহকারে শোনো এবং নীরব থাকো, হয়তো তোমাদের প্রতিও রহমত বর্ষিত হবে। ’
এ আয়াতের দাবি অনুযায়ী কোরআন তেলাওয়াতের সময় নীরবে আল্লাহর ওহির মর্যাদাময় বাণী মনোযোগ সহকারে শুনতে হবে। কোরআন তেলাওয়াত করার সময় আল্লাহতায়ালা তেলাওয়াতকারীর সঙ্গে কথা বলেন। সেজন্য খুব ভালোভাবে শোনা উচিত এবং শুনে মনোযোগের সঙ্গে আয়াতের বক্তব্য নিয়ে চিন্তাভাবনা করা উচিত। যাতে করে মহান আল্লাহতায়ালা ঐশী বাণী থেকে বেশি করে উপকৃত হওয়া যায়।
তেলাওয়াত হলো- আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ গ্রন্থ বিশেষ করে পবিত্র কোরআন পড়া। এই কোরআন পড়ার জন্য কিছু নিয়ম-কানুন যাকে ব্যাকরণ বলা হয়, সেগুলো মেনে চলতে হবে। কোরআনের পরিভাষায় এই নিয়ম-কানুনকে বলা হয় তারতিল।
‘তারতিল’ মানে কোরআন থেমে থেমে পাঠ করাকে বোঝায়। তাই কোরআন তাড়াতাড়ি বা দ্রুতগতিতে না পড়াই শ্রেয়। ধীরে ধীরে প্রতিটি শব্দ সুন্দরভাবে মুখে উচ্চারণ করে কোরআন তেলাওয়াতের বিশেষ মাহাত্ম রয়েছে। তা হলো, এক একটি আয়াত পড়ে থামলে বা বিরতি নিলে মন আল্লাহর বাণীর অর্থ ও তার দাবীকে পুরোপুরি উপলদ্ধি করতে পারবে এবং তার বিষয়বস্তু দ্বারা প্রভাবিত হবে।
তারতিলের ভেতর কোরআনের প্রতিটি শব্দের বিশুদ্ধ উচ্চারণ করার বিষয়টিও রয়েছে। উচ্চারণের ক্ষেত্রে দু’টি বিষয়ের ওপর খেয়াল রাখতে হবে। একটি হলো মাখরাজ বা উচ্চারণ স্থান। প্রতিটি ধ্বনি বাক প্রত্যঙ্গের ঠিক কোন স্থান থেকে উচ্চারিত হবে সেটি জানতে হবে।
আরেকটি হলো- সিফাত বা শব্দের অবস্থা ও গুণাবলি অনুযায়ী উচ্চারণ করা। কোরআন তেলাওয়াতের এই ব্যাকরণকে তাজবিদ বলা হয়। তাজবিদ জানার কোনো বিকল্প নেই।
কোরআনকে সুন্দর করে সুরেলা কণ্ঠে পড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে কোরআন দেখে দেখে পড়ার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এবার কোরআন তেলাওয়াতের বাতেনি বা অদৃশ্য শিষ্টাচারের কথা আলোচনা করা যাক।
একজন ক্বারি কতটুকু তেলাওয়াত করবেন সেটা বিবেচ্য বিষয়। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ... তাই কোরআনের যতটা পরিমাণ সহজেই পড়া যায়- ততটাই পড়তে থাকো! নামাজ কায়েম করো, জাকাত দাও।
ইসলামি স্কলারদের অভিমত হচ্ছে,কোরআন নিয়মিত তেলাওয়াত করা। ধীরে ধীরে তেলাওয়াতের পরিমাণ বাড়াতে থাকা। নিজে নির্ধারণ করে নেওয়া, প্রতিদিন কতটুকু করে তেলাওয়াত করবে সে বিষয়ে। আল্লাহ সবাইকে নিয়ম করে, যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে প্রতিদিন কোরআন তেলাওয়াত করার তওফিক দান করুন। আমিন।
অসাধারণ কিছু তেলাওয়াত
অসাধারণ কিছু আবৃত্তি
Some Wonderful Recitations
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
কোরআন তিলাওয়াতের আদব ও শিষ্টাচার
#allah'snature#তিলাওয়াত#আদব#শিষ্টাচার#QuranicRecitation#Etiquette and Etiquette of Quran Recitation#কোরআনতিলাওয়াত#Etiquette#Quran#Recitation#Youtube
0 notes
Text
ইচ্ছা করে তোমাকে বলি 'কতোটা চাই তোমাকে! তোমাকে ছাড়া কতোটা খালি খালি লাগে সেটা তোমাকে জানাই!'
ইচ্ছে করে তোমাকে বলি 'কি দরকার ছিলো এইভাবে প্রেমে ফেলার? ঘুম কেড়ে নেওয়ার? কি দরকার ছিলো?'
ইচ্ছে করে তোমাকে বলি 'সকাল ভাল্লাগেনা তোমাকে ছাড়া! আমার সারা বিকাল খালি খালি লাগে তোমাকে ছাড়া!'
ইচ্ছে করে তোমাকে বলি 'অশান্তি কেনো লাগে তুমি কাছে না থাকলে? তোমাকে না পাইলে মেজাজ কেনো খারাপ হয়ে যায় আমার?'
আমার অনেক কিছু বলতে ইচ্ছে করে তোমাকে,তারপর মনে পড়ে 'কি লাভ বলে? দাম আছে কোনো?
————
মনের সকল বাধা উপেক্ষা করে এক প��� এগুতেও বোধ করি তুমি আমায় কত তাচ্ছিল্যের চোখে দেখেছো।
তুমি তো সবই জানতে। তাও কেন নিজের মাথার কাছে আমার জন্য লড়াই করলে না? আমি তো চলে এসছি জানতাম আমার মূল্য, আর কিছুদিন থাকলে তোমার পায়ের কাছে চলে যাবে। আচ্ছা তুমি জানো তো? ভালোবাসি বলে কাওকে তোমার সেই ভালোবাসার অযোগ্য মনে করানোর যে দুঃখ তা কতটা কষ্টের হতে পারে?
আমি তো জানতাম আমি এইসবের যোগ্য না। তাও তো তোমাকে সবটা দিয়ে ভালোবেসেছি। ভালোবাসা মানে একজন কেই সব না। ভালোবাসা মানে হাজার মানুষ হাজার অপশন এর মাঝেও ওই একটা মানুষকেই প্রাধান্য দেওয়া। তুমি যেভাবে আমার জন্য দিয়েছ আমিও তোমার জন্য এইরকম সবাই কে উপেক্ষা করে তোমার জন্যই অপেক্ষা করেছি। তাও মাঝে মাঝে জ্বালাতন এর সেই ক্ষুদ্র গল্প গুলো থেকে একদিনের বড় কাহিনী ই আমার এই সুখের সাজানো ঘর ভেঙে দিয়ে গেলো। আর আমি একটা টু শব্দও করিনি। ভেবেছি বাকি সব সময়ের মতো তুমি বুঝে নিবে।
শুনেছি পুরুষ মানুষ নাকি যার সাথে থাকে তার চেয়ে যার সাথে সে থাকতে পারে না তাকে নিয়েই রিগ্রেট করে। তুমি তো তাই প্রমাণ করেছিলে।
তোমার সেই শেষ মুহূর্তের চেষ্টা গুলোই তোমার কাছে মনে হয়েছে তুমি অনেক করেছো। হ্যা প্রথম থেকেই অনেক করেছ তুমি অস্বীকার করিনি।
কিন্তু আমি যে শুরু থেকে নিজের মাঝে বয়ে যাওয়া ঝড় আটকে রেখে দিনকে দিন তোমাকে নিরবে আপন ভেবে গিয়েছি তার চিন্হ পর্যন্ত নেই । আমি যে এখন প্রতিনিয়ত তোমাকে ছেড়ে আগানোর চেষ্টা করি প্রতিনিয়তই তোমার কাছে ফিরে যাই এই সবের কি হবে? তোমাকে তো সুযোগ করে দিলাম আমাকে আরো ঘৃনা করার জন্য আমি কেন আজও তোমাকে ঘৃণার চোখে দেখতে পারি না। কম তো ভালোবাসিনি। কম তো তাচ্ছিল্যের স্বীকার হই নি। কম তো নিজেকে তোমার চোখে ছোট কিংবা 'not enough ' এর অনুভব পাই নি।
জানো আজও তোমায় স্বপ্নে দেখি। গতকাল যা দেখলাম সারা রাত ঘুমাইনি। ঘুম কেড়ে নিয়েছে এই বলদ বাঁদর টা। তাও তো ঘৃণার চোখে দেখতে পারছিনা। মনে হয় আজও একটা ডাক দিলে আমি যেন দৌড়ে শত সমুদ্র পারি দিতে পারব। এটাই কি ভালোবাসা?
তুমি না হয় ঘৃণার চোখেই দেখে যাও আমাকে কিন্তু এক ঝলক হলেও দেখা দিও। শুধু প্রত্যাশা ছিল কোন একদিন হয়ত তুমি বুঝবে। কিন্তু সেটা আর হবে না। জানি আমি তোমার যোগ্য না। জানি আমাকে তুমি আর ভালোবাসো না। ভুলবোনা তোমাকে কিন্তু তোমার জীবনে বাধা হয়ে আমি কখনোই থাকবো না। আমি তোমার খারাপ অতীত হলেও তুমি আমার সর্বশেষ প্রধান চরিত্র চরিত্র থাকবে। আমি চাই তুমি অনেক সুখী হও । যেইগুলো আমি পাই নি আমি জানি সেই সবকিছুই তুমি একদিন অন্য একজনকে দিতে প্রস্তুত থাকবে। পারলে তার সব আব্দার রেখো। কষ্ট দিও না আমার মত এটাই আশা রাখি।
8 notes
·
View notes
Text
নতুন ফেসবুক ক্যাপশন | সেরা ফেসবুক ক্যাপশন বাংলা | Facebook Caption Bangla
এই পোস্টে ফেসবুক এর জন্য স্টাইলিশ ফেসবুক ক্যাপশন বাংলা Facebook Caption Bangla পাবেন। সব গুলোই নতুন, তাই ভালো লাগবে। আপনাদের জন্য এই পোস্টে বাছাই করা সেরা আকর্ষণীয় ফেসবুক ক্যাপশন নিয়ে এসেছি। এইম পোস্টে আপনার পছন্দের ফেসবুক ক্যাপশন খুঁজে পাবেন আশাকরি।
আমাদের ফেসবুক পোস্ট দেওয়ার সময় বিভিন্ন ক্যাপশন লিখে লিখে বা খুজে থাকি। প্রায় সময় আমরা ফেসবুকে কি লিখে ক্যাপশন দিব তা খুঁজে পাই না। আবার খুজতে খুজতে মাথা খারাপ হয়ে যায়। তাই, আপনারা চাইলে এই পোস্ট থেকে আপনাদের পছন্দের Facebook caption bangla stylish স্ট্যাটাস সংগ্রহ করতে পারেন।
বাংলা শর্ট ক্যাপশন :
◉ যদি কারো সাথে, বন্ধুত্ব শেষ হয়ে যায় ❥ তবে তার, গোপন কথাগুলো গোপন রেখো!✿✿◉●•·
◉ জীবন সঙ্গি হিসেবে তাকেই বেছে নাও! যার কাছে হাজার অপশন থাকলেও একমাএ চয়েস হবে তুমি
Facebook caption bangla romantic
◉ আমার থেকে ভালো অনেক পাবা, কিন্তু সব ভালোতে কি আর ভালোবাসা থাকে যদি!আমার!জন্য!আসো
◉ তবে-আমার-জন্যই-আসবে তার”ভিতরে”যেন”অন্য”কেউ”না”থাকে
জনপ্রিয় ফেসবুক ক্যাপশন :
◉ কিছু❞|| হারিয়ে❞|| গেলে❞|| যতটা❞|| না❞|| কষ্ট❞|| হয়❞ তার❞|| চেয়ে❞|| বেশী❞|| কষ্ট❞|| হয়❞|| প্রিয়❞ মানুষের❞|| কথা❞|| বলার❞|| ধরন❞|| বদলে❞|| গেলে❞
◉ হাজার কষ্ট পেলেও নিজের ভেতর চেপে রাখাটা এখন অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে
আরো পড়ুন- কষ্টের ফেসবুক স্ট্যাটাস বাংলা ইমোশনাল স্ট্যাটাস নতুন রোমান্টিক ক্যাপশন ছেলেদের কষ্টের ম্যাসেজ সেরা ফেসবুক ক্যাপশন
বেস্ট ক্যাপশন বাংলা attitude :
◉ জীবন ༊❝মানে ༊❝এক ༊❝ভূমিকাহীন ༊❝গল্প যার” ༎༎প্রতিটি” ༎༎লাইন” ༎༎পড়া” ༎༎সহজ কিন্তু” ༎༎বোঝা” ༎༎কঠিন
◉ তোমার অনুপস্থিতিতে❝যে❝মানুষটা❝❝ অন্য❝কাউকে❝খুঁজে❝নিতে❝পারে তার❝কাছে❝তুমি❝আর❝যাই❝হও❝
ফেসবুক ইমুজি ক্যাপশন :
◉ মূল্যবান❝ কেউ❝ হতে❝ পারোনি❝❝ ❝তুমি ──❝শুধুমাত্র──❝তার ❝প্রয়োজন❝হয়েই ছিলে
◉ কিছু সম্পের্কর কোনো অস্তিত্ব নেই ✿✿◉●•·
Get More - Facebook Caption
Bangla short caption, bangla caption for Facebook, bangla caption attitude, unique bangla caption, bangla caption stylish, bangla caption, bangla caption love, bangla caption for profile picture.
6 notes
·
View notes
Text
কোরআন তিলাওয়াতের আদব ও শিষ্টাচার
Etiquette and Etiquette of Quran Recitation
আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা। আল্লাহ অদ্বিতীয়, সর্বশক্তিমান, একমাত্র উপাস্য। আল্লাহ একমাত্র সত্য মাবুদ। আল্লাহ ছাড়া কোনো 'সত্য ইলাহ'/ 'সত্য উপাস্য' নেই। আল্লাহ তাঁর কর্মে-পরিচালনায়, প্রভুত্ব-কর্তৃত্বে, উপাস্যের যোগ্যতা-অধিকারে এক, অদ্বিতীয় অংশীদারমুক্ত। আল্লাহ তায়ালা আসমানে আরশের ঊরধে সমুন্নত আছেন। আল্লাহকে জানতে হবে তাঁর সুন্দর নাম 'আসমাউল হুসনা' ও পরিপূর্ণ সিফাত দ্বারা। কোরআন আল্লাহর বাণী। মানবজাতির জন্য চূড়ান্ত পথ নির্দেশনা।
কোরআন পাঠ করতে হয় যথাযথ ভক্তি, শ্রদ্ধা ও আদব সহকারে। এর আদবগুলো হলো—
প্রথম আদব : নিয়ত শুদ্ধ করা। রাসুলুল্লাহ (সা.) কিয়ামতের দিন তিন শ্রেণির মানুষের ওপর আগুনের শাস্তি কঠোর করা হবে বলে জানিয়েছেন।
তাদের মধ্যে একজন ওই কারি, যিনি ইখলাসের সঙ্গে কোরআন তিলাওয়াত করতেন না। (তিরমিজি, হাদিস : ২৩৮২; সহিহ ইবন হিব্বান, হাদিস : ৪০৮)
দ্বিতীয় আদব : পবিত্র হয়ে অজু অবস্থায় কোরআন তিলাওয়াত করা। অজু ছাড়াও কোরআন পড়া যাবে, তবে তা অজু অবস্থায় পড়ার সমান হতে পারে না।
তৃতীয় আদব : কোরআন তিলাওয়াতের আগে মিসওয়াক করা।
আলী (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে এসেছে, ‘তোমাদের মুখগুলো কোরআনের পথ। তাই সেগুলোকে মিসওয়াক দ্বারা সুরভিত করো।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৯১)
চতুর্থ আদব : তিলাওয়াতের শুরুতে আউজুবিল্লাহ পড়া। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘সুতরাং যখন তুমি কোরআন পড়বে, তখন আল্লাহর কাছে বিতাড়িত শয়তান থেকে আশ্রয় চাও।
(সুরা : নাহল, আয়াত : ৯৮)
পঞ্চম আদব : বিসমিল্লাহ পড়া। তিলাওয়াতকারীর উচিত সুরা তাওবা ছাড়া সব সুরার শুরুতে বিসমিল্লাহ পড়া। রাসুলুল্লাহ (সা.) থেকে প্রমাণিত যে তিনি এক সুরা শেষ করে বিসমিল্লাহ বলে আরেক সুরা শুরু করতেন। শুধু সুরা আনফাল শেষ করে সুরা তাওবা শুরু করার সময় বিসমিল্লাহ পড়তেন না।
ষষ্ঠ আদব : তারতিলের সঙ্গে (ধীরস্থিরভাবে) কোরআন পড়া।
কারণ আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা তারতিলের সঙ্গে কোরআন তিলাওয়াত করো।’ (সুরা : মুজ্জাম্মিল, আয়াত : ৪)
সপ্তম আদব : সুন্দর করে মনের মাধুরী মিশিয়ে কোরআন পড়া। বারা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে এশার নামাজে সুরা ত্বিন পড়তে শুনেছি। আমি তাঁর চেয়ে সুন্দর কণ্ঠে আর কাউকে তিলাওয়াত করতে শুনিনি।’ (বুখারি, হাদিস : ৭৫৪৬; মুসলিম, হাদিস : ১০৬৭)
অষ্টম আদব : সুরসহকারে কোরআন তিলাওয়াত করা। এটি সুন্দর করে কোরআন তিলাওয়াতের অংশ। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘সে আমার উম্মত নয়, যে সুরসহযোগে কোরআন পড়ে না।’ (বুখারি, হাদিস : ৭৫২৭; আবু দাউদ, হাদিস : ১৪৭১)
নবম আদব : রাতে ঘুম পেলে বা ঝিমুনি এলে তিলাওয়াত থেকে বিরত থাকা। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেন, ‘যখন তোমাদের কেউ রাতে নামাজ পড়ে, ফলে তার জিহ্বায় কোরআন এমনভাবে জড়িয়ে আসে যে সে কী পড়ছে তা টের পায় না, তাহলে সে যেন শুয়ে পড়ে।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৮৭২; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ৮২১৪)
অর্থাৎ তার উচিত এমতাবস্থায় নামাজ না পড়ে বিছানায় গিয়ে ঘুমিয়ে পড়া, যাতে তার মুখে কোরআন ও অন্য কোনো শব্দের মিশ্রণ না ঘটে এবং কোরআনের আয়াত এলোমেলো হয়ে না যায়।
দশম আদব : ফজিলতপূর্ণ সুরাগুলো ভালোভাবে শিক্ষা করা এবং সেগুলো বেশি বেশি তিলাওয়াত করা। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ কি রাত্রিকালে কোরআনের এক-তৃতীয়াংশ তিলাওয়াতে অক্ষম? তারা বলল, কোরআনের এক-তৃতীয়াংশ কিভাবে পড়া যাবে! তিনি বলেন, ‘সুরা ইখলাস কোরআনের এক-তৃতীয়াংশের সমতুল্য।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৯২২; বুখারি, হাদিস : ৫০১৫)
একাদশ আদব : ধৈর্য নিয়ে কোরআন তিলাওয়াত করা। যিনি অনায়াসে কোরআন পড়তে পারেন না, তিনি আটকে আটকে ধৈর্যসহ পড়বেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘কোরআন পাঠে যে অভিজ্ঞ ব্যক্তি কোরআন তিলাওয়াত করে, সে সম্মানিত রাসুল ও পুণ্যাত্মা ব্যক্তিদের সঙ্গে থাকবে। আর যে ব্যক্তি তোতলাতে তোতলাতে সক্লেশে কোরআন তিলাওয়াত করবে, তার জন্য দ্বিগুণ নেকি লেখা হবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৪৯৩৭; মুসলিম, হাদিস : ১৮৯৮)
দ্বাদশ আদব : কোরআন তিলাওয়াতের আরেকটি আদব হলো তিলাওয়াতের সময় ক্রন্দন করা। আল্লাহ তাআলা তিলাওয়াতের সময় ক্রন্দনরতদের প্রশংসা করে বলেন, ‘আর তারা কাঁদতে কাঁদতে লুটিয়ে পড়ে এবং এটা তাদের বিনয় বৃদ্ধি করে।’ (সুরা : বনি ইসরাঈল, আয়াত : ১০৯)
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করিম (সা.) আমাকে বলেছেন, আমাকে তুমি তিলাওয়াত করে শোনাও। বললাম, আমি আপনাকে তিলাওয়াত শোনাব, অথচ আপনার ওপরই এটি অবতীর্ণ হয়েছে? তিনি বলেন, আমি অন্যের তিলাওয়াত শুনতে পছন্দ করি। অতঃপর আমি তাঁকে সুরা নিসা পড়ে শোনাতে লাগলাম। যখন আমি সুরা নিসার ৪১ নম্বর আয়াত তিলাওয়াত করলাম, তিনি বললেন, ব্যস, যথেষ্ট হয়েছে। আমি তাঁর দিকে তাকিয়ে দেখলাম তাঁর চোখ থেকে অঝোর ধারায় অশ্রু প্রবাহিত হচ্ছে। (বুখারি, হাদিস : ৫০৫০; মুসলিম, হাদিস : ১৯০৩)
আয়াতটি হলো, ‘যখন আমি প্রত্যেক উম্মত থেকে একজন সাক্ষী উপস্থিত করব এবং তোমাকে উপস্থিত করব তাদের ওপর সাক্ষীরূপে, তখন কী অবস্থা হবে?’
কাসিম (রহ.) একবার আয়েশা (রা.)-এর কাছ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন। তিনি দেখেন, আয়েশা (রা.) একটি আয়াত বারবার আবৃত্তি করছেন আর কেঁদে কেঁদে দোয়া করছেন। আয়াতটি হলো, ‘অতঃপর আল্লাহ আমাদের প্রতি দয়া করেছেন এবং আগুনের আজাব থেকে আমাদের রক্ষা করেছেন।’ (সুরা : তুর, আয়াত : ২৭)
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) যখন এ আয়াত তিলাওয়াত করেন, ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করেন। আয়াতটি হলো, ‘আর মৃত্যুর যন্ত্রণা অবশ্যই আসবে, যা থেকে তুমি পলায়ন করতে চাইতে।’ (সুরা : ক্বফ, আয়াত : ১৯)
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) যখন এ আয়াতটি পড়তেন, তখনই তিনি কান্নাকাটি করতেন। আয়াতটি হলো, ‘...আর তোমাদের মনে যা আছে, তা যদি তোমরা প্রকাশ করো অথবা গোপন করো, আল্লাহ সে বিষয়ে তোমাদের হিসাব নেবেন...।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ২৮৪)
মূল কথা হলো, কোরআন তিলাওয়াতের সময় কান্নাকাটি করা এবং চোখে পানি আসা ঈমানের আলামত। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘কোরআনের পাঠকদের মধ্যে ওই ব্যক্তির কণ্ঠ সর্বোত্তম, যার তিলাওয়াত কেউ শুনলে মনে হয় যে সে কাঁদছে।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৩৩৯)
ত্রয়োদশ আদব : কোরআন তিলাওয়াতের আরেকটি আদব হলো এর মর্ম নিয়ে চিন্তা করা। এটিই তিলাওয়াতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আদব। তিলাওয়াতের সময় চিন্তা-গবেষণা করাই এর প্রকৃত সুফল বয়ে আনে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘আমি তোমার প্রতি নাজিল করেছি এক বরকতময় কিতাব, যাতে তারা এর আয়াতগুলো নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করে এবং যাতে বুদ্ধিমানরা উপদেশ গ্রহণ করে।’ (সুরা : সদ, আয়াত : ২৯)
ইসলামী আইন বিশেষজ্ঞরা লিখেছেন, তিন দিনের কম সময়ে কোরআন খতম করা অনুচিত। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘তিন দিনের কম সময়ে যে কোরআন খতম করবে, সে কোরআন বুঝবে না।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১৩৯৬)
জায়েদ বিন সাবেত (রা.)-কে একজন জিজ্ঞেস করলেন, সাত দিনে কোরআন খতম করাকে আপনি কোন দৃষ্টিতে দেখেন? তিনি বলেন, এটা ভালো। অবশ্য আমি এটাকে ১৫ দিনে বা ১০ দিনে খতম করাই পছন্দ করি। আমাকে জিজ্ঞেস করো, তা কেন? তিনি বলেন, আমি আপনাকে জিজ্ঞেস করছি। জায়েদ বলেন, যাতে আমি তার স্থানে স্থানে চিন্তা করতে পারি এবং থামতে পারি।’ (মুয়াত্তা মালেক, হাদিস : ৪৭২)
চতুর্দশ আদব : তিলাওয়াতের সময় সিজদার আয়াত এলে সিজদা দেওয়া। সিজদার নিয়ম হলো, তাকবির দিয়ে সিজদায় চলে যাওয়া।
পঞ্চদশ আদব : যথাসম্ভব আদবসহ বসা। আর বসা, দাঁড়ানো, চলমান ও হেলান দেওয়া—সর্বাবস্থায় তিলাওয়াত করার অনুমতি রয়েছে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, ‘যারা আল্লাহকে স্মরণ করে দাঁড়িয়ে, বসে ও কাত হয়ে এবং আসমান ও জমিনের সৃষ্টি সম্পর্কে চিন্তা করে...।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৯১)
কোরআন তিলাওয়াতের আদব ও শিষ্টাচার
Etiquette and Etiquette of Quran Recitation
আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা। আল্লাহ অদ্বিতীয়, সর্বশক্তিমান, একমাত্র উপাস্য। আল্লাহ একমাত্র সত্য মাবুদ। আল্লাহ ছাড়া কোনো 'সত্য ইলাহ'/ 'সত্য উপাস্য' নেই। আল্লাহ তাঁর কর্মে-পরিচালনায়, প্রভুত্ব-কর্তৃত্বে, উপাস্যের যোগ্যতা-অধিকারে এক, অদ্বিতীয় অংশীদারমুক্ত। আল্লাহ তায়ালা আসমানে আরশের ঊরধে সমুন্নত আছেন। আল্লাহকে জানতে হবে তাঁর সুন্দর নাম 'আসমাউল হুসনা' ও পরিপূর্ণ সিফাত দ্বারা। কোরআন আল্লাহর বাণী। মানবজাতির জন্য চূড়ান্ত পথ নির্দেশনা।
কোরআন পাঠ করতে হয় যথাযথ ভক্তি, শ্রদ্ধা ও আদব সহকারে।
পৃথিবীর বুকে মানুষের জন্য আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে সর্বশ্রেষ্ঠ উপহার হচ্ছে কোরআনে কারিম। কোরআন তেলাওয়াত শোনার মানে হলো শ্রেষ্ঠ বাণী শোনা।
কোরআনে কারিমের তেলাওয়াত স্বতন্ত্র ইবাদত হিসেবে গণ্য। এর ফজিলত অনেক বেশি।
কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে আল্লাহতায়ালার আদেশ-নিষেধগুলোর সঙ্গে পরিচিত হওয়া এবং সে অনুযায়ী আমল করা। কোরঅান তেলাওয়াত করে ক্বারি হিসেবে খ্যাতি লাভ করার উদ্দেশ্যে কোরআন তেলাওয়াত করা ঠিক নয়। অনেকে আবার দুনিয়ার স্বার্থ সিদ্ধির লক্ষ্যে কোরআন তেলাওয়াত করে। এ ধরনের তেলাওয়াতে কোনো কল্যাণ নেই। তবে, নিজ জীবনে কোরআন বাস্তবায়নের পর্যায়ে উন্নীত হওয়ার জন্য তেলাওয়াত করাটা একটা ধারা।
কোরআনে কারিম তেলাওয়াতের ক্ষেত্রে শিষ্টতাপূর্ণ কিছু নিয়ম-কানুন রয়েছে। এগুলোর কোনোটা বাহ্যিক আবার কোনো কোনোটা অভ্যন্তরীণ। কোরআন তেলাওয়াতের ক্ষেত্রে বিষয়গুলো অনুসরণ করা জরুরি।
বাহ্যিক সৌন্দর্যের মাঝে রয়েছে তেলাওয়াতের জন্য অবস্থান নির্ণয় করা। কোরআন সর্বাবস্থায় তেলাওয়াত করা যায়। দাঁড়িয়ে, বসে কিংবা শুয়েও কোরআন পড়া যায়।
এই যে আমরা কোরআন তেলাওয়াতের ক্ষেত্রে নিয়ম-শৃঙ্খলার কথা বললাম- কোরআনের আলোকে সেদিকে একটু দৃষ্টি দেওয়া যাক। সূরা ওয়াকিয়ার ৭৯ নম্বর আয়াতে কোরআনের পবিত্রতার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। ইরশাদ করা হয়েছে, ‘পবিত্র সত্তা ছাড়া কেউ এ কোরআন স্পর্শ করতে পারে না। ’
এ আয়াতের তাফসির প্রসঙ্গে কোনো কোনো মুফাসসির বলেছেন, ‘পাক-পবিত্র নয় এমন কোনো ব্যক্তি যেন তা স্পর্শ না করে। ’ তার মানে অজু গোসল ছাড়া কোরআন স্পর্শ করা ঠিক নয়।
কোরআন তেলাওয়াত করার সময় পবিত্র থাকা শরিয়তের বিধান মতে মোস্তাহাব। অনেক আলেম তো এটাও বলেছেন যে, কোরআন তেলাওয়াতের আগে মুখটাকে পরিষ্কার করো। কেননা মানুষের মুখ হলো কোরআনের পথ। তার মানে কোরআনের আধ্যাত্মিক গুণে যিনি সমৃদ্ধ হতে চান তার উচিত আত্মিক পবিত্রতা এবং আন্তরিক বিশ্বাস স্থাপন করা।
কোরআন তেলাওয়াতের শুরুতে এস্তেআজা বাক্যটি পড়ে নিতে হবে। এস্তেআজা বলা হয়, আউজুবিল্লাহি মিনাশ শায়তানির রাজিম বলাকে। এর উদ্দেশ্য হলো, কোরআন তেলাওয়াতের শুরুতে আল্লাহতায়ালার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা। এ প্রসঙ্গে সূরা নামলের ৯৮ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘যখন কোরআন পাঠ করবে, তখন অভিশপ্ত শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করবে। ’
এরপর ‘তাসমিয়া’ মানে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম পড়ে কোরআন তেলাওয়াত শুরু করবে। কোরআন তেলাওয়াতের শুরুতে এস্তেআজার মাধ্যমে গুনাহের দরজাগুলো বন্ধ করে রেখে তাসমিয়ার মাধ্যমে আল্লাহর আনুগত্যের দ্বার উন্মোচন করা হয়।
কোরআনে কারিম নীরবে শোনাও তেলাওয়াতের একটি শিষ্টাচার। সূরা আরাফের ২০৪ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘যখন কোরআন তোমাদের সামনে পড়া হয়, তা মনোযোগ সহকারে শোনো এবং নীরব থাকো, হয়তো তোমাদের প্রতিও রহমত বর্ষিত হবে। ’
এ আয়াতের দাবি অনুযায়ী কোরআন তেলাওয়াতের সময় নীরবে আল্লাহর ওহির মর্যাদাময় বাণী মনোযোগ সহকারে শুনতে হবে। কোরআন তেলাওয়াত করার সময় আল্লাহতায়ালা তেলাওয়াতকারীর সঙ্গে কথা বলেন। সেজন্য খুব ভালোভাবে শোনা উচিত এবং শুনে মনোযোগের সঙ্গে আয়াতের বক্তব্য নিয়ে চিন্তাভাবনা করা উচিত। যাতে করে মহান আল্লাহতায়ালা ঐশী বাণী থেকে বেশি করে উপকৃত হওয়া যায়।
তেলাওয়াত হলো- আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ গ্রন্থ বিশেষ করে পবিত্র কোরআন পড়া। এই কোরআন পড়ার জন্য কিছু নিয়ম-কানুন যাকে ব্যাকরণ বলা হয়, সেগুলো মেনে চলতে হবে। কোরআনের পরিভাষায় এই নিয়ম-কানুনকে বলা হয় তারতিল।
‘তারতিল’ মানে কোরআন থেমে থেমে পাঠ করাকে বোঝায়। তাই কোরআন তাড়াতাড়ি বা দ্রুতগতিতে না পড়াই শ্রেয়। ধীরে ধীরে প্রতিটি শব্দ সুন্দরভাবে মুখে উচ্চারণ করে কোরআন তেলাওয়াতের বিশেষ মাহাত্ম রয়েছে। তা হলো, এক একটি আয়াত পড়ে থামলে বা বিরতি নিলে মন আল্লাহর বাণীর অর্থ ও তার দাবীকে পুরোপুরি উপলদ্ধি করতে পারবে এবং তার বিষয়বস্তু দ্বারা প্রভাবিত হবে।
তারতিলের ভেতর কোরআনের প্রতিটি শব্দের বিশুদ্ধ উচ্চারণ করার বিষয়টিও রয়েছে। উচ্চারণের ক্ষেত্রে দু’টি বিষয়ের ওপর খেয়াল রাখতে হবে। একটি হলো মাখরাজ বা উচ্চারণ স্থান। প্রতিটি ধ্বনি বাক প্রত্যঙ্গের ঠিক কোন স্থান থেকে উচ্চারিত হবে সেটি জানতে হবে।
আরেকটি হলো- সিফাত বা শব্দের অবস্থা ও গুণাবলি অনুযায়ী উচ্চারণ করা। কোরআন তেলাওয়াতের এই ব্যাকরণকে তাজবিদ বলা হয়। তাজবিদ জানার কোনো বিকল্প নেই।
কোরআনকে সুন্দর করে সুরেলা কণ্ঠে পড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে কোরআন দেখে দেখে পড়ার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এবার কোরআন তেলাওয়াতের বাতেনি বা অদৃশ্য শিষ্টাচারের কথা আলোচনা করা যাক।
একজন ক্বারি কতটুকু তেলাওয়াত করবেন সেটা বিবেচ্য বিষয়। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ... তাই কোরআনের যতটা পরিমাণ সহজেই পড়া যায়- ততটাই পড়তে থাকো! নামাজ কায়েম করো, জাকাত দাও।
ইসলামি স্কলারদের অভিমত হচ্ছে,কোরআন নিয়মিত তেলাওয়াত করা। ধীরে ধীরে তেলাওয়াতের পরিমাণ বাড়াতে থাকা। নিজে নির্ধারণ করে নেওয়া, প্রতিদিন কতটুকু করে তেলাওয়াত করবে সে বিষয়ে। আল্লাহ সবাইকে নিয়ম করে, যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে প্রতিদিন কোরআন তেলাওয়াত করার তওফিক দান করুন। আমিন।
অসাধারণ কিছু তেলাওয়াত
অসাধারণ কিছু আবৃত্তি
Some Wonderful Recitations
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
কোরআন তিলাওয়াতের আদব ও শিষ্টাচার
#তিলাওয়াত#আদব#শিষ্টাচার#QuranicRecitation#Etiquette and Etiquette of Quran Recitation#কোরআনতিলাওয়াত#Etiquette#Quran#Recitation#Youtube
0 notes
Text
কোরআন তিলাওয়াতের আদব ও শিষ্টাচার
Etiquette and Etiquette of Quran Recitation
আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা। আল্লাহ অদ্বিতীয়, সর্বশক্তিমান, একমাত্র উপাস্য। আল্লাহ একমাত্র সত্য মাবুদ। আল্লাহ ছাড়া কোনো 'সত্য ইলাহ'/ 'সত্য উপাস্য' নেই। আল্লাহ তাঁর কর্মে-পরিচালনায়, প্রভুত্ব-কর্তৃত্বে, উপাস্যের যোগ্যতা-অধিকারে এক, অদ্বিতীয় অংশীদারমুক্ত। আল্লাহ তায়ালা আসমানে আরশের ঊরধে সমুন্নত আছেন। আল্লাহকে জানতে হবে তাঁর সুন্দর নাম 'আসমাউল হুসনা' ও পরিপূর্ণ সিফাত দ্বারা। কোরআন আল্লাহর বাণী। মানবজাতির জন্য চূড়ান্ত পথ নির্দেশনা।
কোরআন পাঠ করতে হয় যথাযথ ভক্তি, শ্রদ্ধা ও আদব সহকারে। এর আদবগুলো হলো—
প্রথম আদব : নিয়ত শুদ্ধ করা। রাসুলুল্লাহ (সা.) কিয়ামতের দিন তিন শ্রেণির মানুষের ওপর আগুনের শাস্তি কঠোর করা হবে বলে জানিয়েছেন।
তাদের মধ্যে একজন ওই কারি, যিনি ইখলাসের সঙ্গে কোরআন তিলাওয়াত করতেন না। (তিরমিজি, হাদিস : ২৩৮২; সহিহ ইবন হিব্বান, হাদিস : ৪০৮)
দ্বিতীয় আদব : পবিত্র হয়ে অজু অবস্থায় কোরআন তিলাওয়াত করা। অজু ছাড়াও কোরআন পড়া যাবে, তবে তা অজু অবস্থায় পড়ার সমান হতে পারে না।
তৃতীয় আদব : কোরআন তিলাওয়াতের আগে মিসওয়াক করা।
আলী (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে এসেছে, ‘তোমাদের মুখগুলো কোরআনের পথ। তাই সেগুলোকে মিসওয়াক দ্বারা সুরভিত করো।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৯১)
চতুর্থ আদব : তিলাওয়াতের শুরুতে আউজুবিল্লাহ পড়া। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘সুতরাং যখন তুমি কোরআন পড়বে, তখন আল্লাহর কাছে বিতাড়িত শয়তান থেকে আশ্রয় চাও।
(সুরা : নাহল, আয়াত : ৯৮)
পঞ্চম আদব : বিসমিল্লাহ পড়া। তিলাওয়াতকারীর উচিত সুরা তাওবা ছাড়া সব সুরার শুরুতে বিসমিল্লাহ পড়া। রাসুলুল্লাহ (সা.) থেকে প্রমাণিত যে তিনি এক সুরা শেষ করে বিসমিল্লাহ বলে আরেক সুরা শুরু করতেন। শুধু সুরা আনফাল শেষ করে সুরা তাওবা শুরু করার সময় বিসমিল্লাহ পড়তেন না।
ষষ্ঠ আদব : তারতিলের সঙ্গে (ধীরস্থিরভাবে) কোরআন পড়া।
কারণ আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা তারতিলের সঙ্গে কোরআন তিলাওয়াত করো।’ (সুরা : মুজ্জাম্মিল, আয়াত : ৪)
সপ্তম আদব : সুন্দর করে মনের মাধুরী মিশিয়ে কোরআন পড়া। বারা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে এশার নামাজে সুরা ত্বিন পড়তে শুনেছি। আমি তাঁর চেয়ে সুন্দর কণ্ঠে আর কাউকে তিলাওয়াত করতে শুনিনি।’ (বুখারি, হাদিস : ৭৫৪৬; মুসলিম, হাদিস : ১০৬৭)
অষ্টম আদব : সুরসহকারে কোরআন তিলাওয়াত করা। এটি সুন্দর করে কোরআন তিলাওয়াতের অংশ। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘সে আমার উম্মত নয়, যে সুরসহযোগে কোরআন পড়ে না।’ (বুখারি, হাদিস : ৭৫২৭; আবু দাউদ, হাদিস : ১৪৭১)
নবম আদব : রাতে ঘুম পেলে বা ঝিমুনি এলে তিলাওয়াত থেকে বিরত থাকা। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেন, ‘যখন তোমাদের কেউ রাতে নামাজ পড়ে, ফলে তার জিহ্বায় কোরআন এমনভাবে জড়িয়ে আসে যে সে কী পড়ছে তা টের পায় না, তাহলে সে যেন শুয়ে পড়ে।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৮৭২; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ৮২১৪)
অর্থাৎ তার উচিত এমতাবস্থায় নামাজ না পড়ে বিছানায় গিয়ে ঘুমিয়ে পড়া, যাতে তার মুখে কোরআন ও অন্য কোনো শব্দের মিশ্রণ না ঘটে এবং কোরআনের আয়াত এলোমেলো হয়ে না যায়।
দশম আদব : ফজিলতপূর্ণ সুরাগুলো ভালোভাবে শিক্ষা করা এবং সেগুলো বেশি বেশি তিলাওয়াত করা। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ কি রাত্রিকালে কোরআনের এক-তৃতীয়াংশ তিলাওয়াতে অক্ষম? তারা বলল, কোরআনের এক-তৃতীয়াংশ কিভাবে পড়া যাবে! তিনি বলেন, ‘সুরা ইখলাস কোরআনের এক-তৃতীয়াংশের সমতুল্য।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৯২২; বুখারি, হাদিস : ৫০১৫)
একাদশ আদব : ধৈর্য নিয়ে কোরআন তিলাওয়াত করা। যিনি অনায়াসে কোরআন পড়তে পারেন না, তিনি আটকে আটকে ধৈর্যসহ পড়বেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘কোরআন পাঠে যে অভিজ্ঞ ব্যক্তি কোরআন তিলাওয়াত করে, সে সম্মানিত রাসুল ও পুণ্যাত্মা ব্যক্তিদের সঙ্গে থাকবে। আর যে ব্যক্তি তোতলাতে তোতলাতে সক্লেশে কোরআন তিলাওয়াত করবে, তার জন্য দ্বিগুণ নেকি লেখা হবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৪৯৩৭; মুসলিম, হাদিস : ১৮৯৮)
দ্বাদশ আদব : কোরআন তিলাওয়াতের আরেকটি আদব হলো তিলাওয়াতের সময় ক্রন্দন করা। আল্লাহ তাআলা তিলাওয়াতের সময় ক্রন্দনরতদের প্রশংসা করে বলেন, ‘আর তারা কাঁদতে কাঁদতে লুটিয়ে পড়ে এবং এটা তাদের বিনয় বৃদ্ধি করে।’ (সুরা : বনি ইসরাঈল, আয়াত : ১০৯)
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করিম (সা.) আমাকে বলেছেন, আমাকে তুমি তিলাওয়াত করে শোনাও। বললাম, আমি আপনাকে তিলাওয়াত শোনাব, অথচ আপনার ওপরই এটি অবতীর্ণ হয়েছে? তিনি বলেন, আমি অন্যের তিলাওয়াত শুনতে পছন্দ করি। অতঃপর আমি তাঁকে সুরা নিসা পড়ে শোনাতে লাগলাম। যখন আমি সুরা নিসার ৪১ নম্বর আয়াত তিলাওয়াত করলাম, তিনি বললেন, ব্যস, যথেষ্ট হয়েছে। আমি তাঁর দিকে তাকিয়ে দেখলাম তাঁর চোখ থেকে অঝোর ধারায় অশ্রু প্রবাহিত হচ্ছে। (বুখারি, হাদিস : ৫০৫০; মুসলিম, হাদিস : ১৯০৩)
আয়াতটি হলো, ‘যখন আমি প্রত্যেক উম্মত থেকে একজন সাক্ষী উপস্থিত করব এবং তোমাকে উপস্থিত করব তাদের ওপর সাক্ষীরূপে, তখন কী অবস্থা হবে?’
কাসিম (রহ.) একবার আয়েশা (রা.)-এর কাছ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন। তিনি দেখেন, আয়েশা (রা.) একটি আয়াত বারবার আবৃত্তি করছেন আর কেঁদে কেঁদে দোয়া করছেন। আয়াতটি হলো, ‘অতঃপর আল্লাহ আমাদের প্রতি দয়া করেছেন এবং আগুনের আজাব থেকে আমাদের রক্ষা করেছেন।’ (সুরা : তুর, আয়াত : ২৭)
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) যখন এ আয়াত তিলাওয়াত করেন, ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করেন। আয়াতটি হলো, ‘আর মৃত্যুর যন্ত্রণা অবশ্যই আসবে, যা থেকে তুমি পলায়ন করতে চাইতে।’ (সুরা : ক্বফ, আয়াত : ১৯)
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) যখন এ আয়াতটি পড়তেন, তখনই তিনি কান্নাকাটি করতেন। আয়াতটি হলো, ‘...আর তোমাদের মনে যা আছে, তা যদি তোমরা প্রকাশ করো অথবা গোপন করো, আল্লাহ সে বিষয়ে তোমাদের হিসাব নেবেন...।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ২৮৪)
মূল কথা হলো, কোরআন তিলাওয়াতের সময় কান্নাকাটি করা এবং চোখে পানি আসা ঈমানের আলামত। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘কোরআনের পাঠকদের মধ্যে ওই ব্যক্তির কণ্ঠ সর্বোত্তম, যার তিলাওয়াত কেউ শুনলে মনে হয় যে সে কাঁদছে।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৩৩৯)
ত্রয়োদশ আদব : কোরআন তিলাওয়াতের আরেকটি আদব হলো এর মর্ম নিয়ে চিন্তা করা। এটিই তিলাওয়াতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আদব। তিলাওয়াতের সময় চিন্তা-গবেষণা করাই এর প্রকৃত সুফল বয়ে আনে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘আমি তোমার প্রতি নাজিল করেছি এক বরকতময় কিতাব, যাতে তারা এর আয়াতগুলো নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করে এবং যাতে বুদ্ধিমানরা উপদেশ গ্রহণ করে।’ (সুরা : সদ, আয়াত : ২৯)
ইসলামী আইন বিশেষজ্ঞরা লিখেছেন, তিন দিনের কম সময়ে কোরআন খতম করা অনুচিত। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘তিন দিনের কম সময়ে যে কোরআন খতম করবে, সে কোরআন বুঝবে না।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১৩৯৬)
জায়েদ বিন সাবেত (রা.)-কে একজন জিজ্ঞেস করলেন, সাত দিনে কোরআন খতম করাকে আপনি কোন দৃষ্টিতে দেখেন? তিনি বলেন, এটা ভালো। অবশ্য আমি এটাকে ১৫ দিনে বা ১০ দিনে খতম করাই পছন্দ করি। আমাকে জিজ্ঞেস করো, তা কেন? তিনি বলেন, আমি আপনাকে জিজ্ঞেস করছি। জায়েদ বলেন, যাতে আমি তার স্থানে স্থানে চিন্তা করতে পারি এবং থামতে পারি।’ (মুয়াত্তা মালেক, হাদিস : ৪৭২)
চতুর্দশ আদব : তিলাওয়াতের সময় সিজদার আয়াত এলে সিজদা দেওয়া। সিজদার নিয়ম হলো, তাকবির দিয়ে সিজদায় চলে যাওয়া।
পঞ্চদশ আদব : যথাসম্ভব আদবসহ বসা। আর বসা, দাঁড়ানো, চলমান ও হেলান দেওয়া—সর্বাবস্থায় তিলাওয়াত করার অনুমতি রয়েছে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, ‘যারা আল্লাহকে স্মরণ করে দাঁড়িয়ে, বসে ও কাত হয়ে এবং আসমান ও জমিনের সৃষ্টি সম্পর্কে চিন্তা করে...।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৯১)
কোরআন তিলাওয়াতের আদব ও শিষ্টাচার
Etiquette and Etiquette of Quran Recitation
আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা। আল্লাহ অদ্বিতীয়, সর্বশক্তিমান, একমাত্র উপাস্য। আল্লাহ একমাত্র সত্য মাবুদ। আল্লাহ ছাড়া কোনো 'সত্য ইলাহ'/ 'সত্য উপাস্য' নেই। আল্লাহ তাঁর কর্মে-পরিচালনায়, প্রভুত্ব-কর্তৃত্বে, উপাস্যের যোগ্যতা-অধিকারে এক, অদ্বিতীয় অংশীদারমুক্ত। আল্লাহ তায়ালা আসমানে আরশের ঊরধে সমুন্নত আছেন। আল্লাহকে জানতে হবে তাঁর সুন্দর নাম 'আসমাউল হুসনা' ও পরিপূর্ণ সিফাত দ্বারা। কোরআন আল্লাহর বাণী। মানবজাতির জন্য চূড়ান্ত পথ নির্দেশনা।
কোরআন পাঠ করতে হয় যথাযথ ভক্তি, শ্রদ্ধা ও আদব সহকারে।
পৃথিবীর বুকে মানুষের জন্য আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে সর্বশ্রেষ্ঠ উপহার হচ্ছে কোরআনে কারিম। কোরআন তেলাওয়াত শোনার মানে হলো শ্রেষ্ঠ বাণী শোনা।
কোরআনে কারিমের তেলাওয়াত স্বতন্ত্র ইবাদত হিসেবে গণ্য। এর ফজিলত অনেক বেশি।
কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে আল্লাহতায়ালার আদেশ-নিষেধগুলোর সঙ্গে পরিচিত হওয়া এবং সে অনুযায়ী আমল করা। কোরঅান তেলাওয়াত করে ক্বারি হিসেবে খ্যাতি লাভ করার উদ্দেশ্যে কোরআন তেলাওয়াত করা ঠিক নয়। অনেকে আবার দুনিয়ার স্বার্থ সিদ্ধির লক্ষ্যে কোরআন তেলাওয়াত করে। এ ধরনের তেলাওয়াতে কোনো কল্যাণ নেই। তবে, নিজ জীবনে কোরআন বাস্তবায়নের পর্যায়ে উন্নীত হওয়ার জন্য তেলাওয়াত করাটা একটা ধারা।
কোরআনে কারিম তেলাওয়াতের ক্ষেত্রে শিষ্টতাপূর্ণ কিছু নিয়ম-কানুন রয়েছে। এগুলোর কোনোটা বাহ্যিক আবার কোনো কোনোটা অভ্যন্তরীণ। কোরআন তেলাওয়াতের ক্ষেত্রে বিষয়গুলো অনুসরণ করা জরুরি।
বাহ্যিক সৌন্দর্যের মাঝে রয়েছে তেলাওয়াতের জন্য অবস্থান নির্ণয় করা। কোরআন সর্বাবস্থায় তেলাওয়াত করা যায়। দাঁড়িয়ে, বসে কিংবা শুয়েও কোরআন পড়া যায়।
এই যে আমরা কোরআন তেলাওয়াতের ক্ষেত্রে নিয়ম-শৃঙ্খলার কথা বললাম- কোরআনের আলোকে সেদিকে একটু দৃষ্টি দেওয়া যাক। সূরা ওয়াকিয়ার ৭৯ নম্বর আয়াতে কোরআনের পবিত্রতার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। ইরশাদ করা হয়েছে, ‘পবিত্র সত্তা ছাড়া কেউ এ কোরআন স্পর্শ করতে পারে না। ’
এ আয়াতের তাফসির প্রসঙ্গে কোনো কোনো মুফাসসির বলেছেন, ‘পাক-পবিত্র নয় এমন কোনো ব্যক্তি যেন তা স্পর্শ না করে। ’ তার মানে অজু গোসল ছাড়া কোরআন স্পর্শ করা ঠিক নয়।
কোরআন তেলাওয়াত করার সময় পবিত্র থাকা শরিয়তের বিধান মতে মোস্তাহাব। অনেক আলেম তো এটাও বলেছেন যে, কোরআন তেলাওয়াতের আগে মুখটাকে পরিষ্কার করো। কেননা মানুষের মুখ হলো কোরআনের পথ। তার মানে কোরআনের আধ্যাত্মিক গুণে যিনি সমৃদ্ধ হতে চান তার উচিত আত্মিক পবিত্রতা এবং আন্তরিক বিশ্বাস স্থাপন করা।
কোরআন তেলাওয়াতের শুরুতে এস্তেআজা বাক্যটি পড়ে নিতে হবে। এস্তেআজা বলা হয়, আউজুবিল্লাহি মিনাশ শায়তানির রাজিম বলাকে। এর উদ্দেশ্য হলো, কোরআন তেলাওয়াতের শুরুতে আল্লাহতায়ালার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা। এ প্রসঙ্গে সূরা নামলের ৯৮ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘যখন কোরআন পাঠ করবে, তখন অভিশপ্ত শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করবে। ’
এরপর ‘তাসমিয়া’ মানে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম পড়ে কোরআন তেলাওয়াত শুরু করবে। কোরআন তেলাওয়াতের শুরুতে এস্তেআজার মাধ্যমে গুনাহের দরজাগুলো বন্ধ করে রেখে তাসমিয়ার মাধ্যমে আল্লাহর আনুগত্যের দ্বার উন্মোচন করা হয়।
কোরআনে কারিম নীরবে শোনাও তেলাওয়াতের একটি শিষ্টাচার। সূরা আরাফের ২০৪ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘যখন কোরআন তোমাদের সামনে পড়া হয়, তা মনোযোগ সহকারে শোনো এবং নীরব থাকো, হয়তো তোমাদের প্রতিও র��মত বর্ষিত হবে। ’
এ আয়াতের দাবি অনুযায়ী কোরআন তেলাওয়াতের সময় নীরবে আল্লাহর ওহির মর্যাদাময় বাণী মনোযোগ সহকারে শুনতে হবে। কোরআন তেলাওয়াত করার সময় আল্লাহতায়ালা তেলাওয়াতকারীর সঙ্গে কথা বলেন। সেজন্য খুব ভালোভাবে শোনা উচিত এবং শুনে মনোযোগের সঙ্গে আয়াতের বক্তব্য নিয়ে চিন্তাভাবনা করা উচিত। যাতে করে মহান আল্লাহতায়ালা ঐশী বাণী থেকে বেশি করে উপকৃত হওয়া যায়।
তেলাওয়াত হলো- আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ গ্রন্থ বিশেষ করে পবিত্র কোরআন পড়া। এই কোরআন পড়ার জন্য কিছু নিয়ম-কানুন যাকে ব্যাকরণ বলা হয়, সেগুলো মেনে চলতে হবে। কোরআনের পরিভাষায় এই নিয়ম-কানুনকে বলা হয় তারতিল।
‘তারতিল’ মানে কোরআন থেমে থেমে পাঠ করাকে বোঝায়। তাই কোরআন তাড়াতাড়ি বা দ্রুতগতিতে না পড়াই শ্রেয়। ধীরে ধীরে প্রতিটি শব্দ সুন্দরভাবে মুখে উচ্চারণ করে কোরআন তেলাওয়াতের বিশেষ মাহাত্ম রয়েছে। তা হলো, এক একটি আয়াত পড়ে থামলে বা বিরতি নিলে মন আল্লাহর বাণীর অর্থ ও তার দাবীকে পুরোপুরি উপলদ্ধি করতে পারবে এবং তার বিষয়বস্তু দ্বারা প্রভাবিত হবে।
তারতিলের ভেতর কোরআনের প্রতিটি শব্দের বিশুদ্ধ উচ্চারণ করার বিষয়টিও রয়েছে। উচ্চারণের ক্ষেত্রে দু’টি বিষয়ের ওপর খেয়াল রাখতে হবে। একটি হলো মাখরাজ বা উচ্চারণ স্থান। প্রতিটি ধ্বনি বাক প্রত্যঙ্গের ঠিক কোন স্থান থেকে উচ্চারিত হবে সেটি জানতে হবে।
আরেকটি হলো- সিফাত বা শব্দের অবস্থা ও গুণাবলি অনুযায়ী উচ্চারণ করা। কোরআন তেলাওয়াতের এই ব্যাকরণকে তাজবিদ বলা হয়। তাজবিদ জানার কোনো বিকল্প নেই।
কোরআনকে সুন্দর করে সুরেলা কণ্ঠে পড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে কোরআন দেখে দেখে পড়ার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এবার কোরআন তেলাওয়াতের বাতেনি বা অদৃশ্য শিষ্টাচারের কথা আলোচনা করা যাক।
একজন ক্বারি কতটুকু তেলাওয়াত করবেন সেটা বিবেচ্য বিষয়। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ... তাই কোরআনের যতটা পরিমাণ সহজেই পড়া যায়- ততটাই পড়তে থাকো! নামাজ কায়েম করো, জাকাত দাও।
ইসলামি স্কলারদের অভিমত হচ্ছে,কোরআন নিয়মিত তেলাওয়াত করা। ধীরে ধীরে তেলাওয়াতের পরিমাণ বাড়াতে থাকা। নিজে নির্ধারণ করে নেওয়া, প্রতিদিন কতটুকু করে তেলাওয়াত করবে সে বিষয়ে। আল্লাহ সবাইকে নিয়ম করে, যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে প্রতিদিন কোরআন তেলাওয়াত করার তওফিক দান করুন। আমিন।
অসাধারণ কিছু তেলাওয়াত
অসাধারণ কিছু আবৃত্তি
Some Wonderful Recitations
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
কোরআন তিলাওয়াতের আদব ও শিষ্টাচার
#allah'snature#তিলাওয়াত#আদব#শিষ্টাচার#QuranicRecitation#Etiquette and Etiquette of Quran Recitation#কোরআনতিলাওয়াত#Etiquette#Quran#Recitation#Youtube
0 notes
Text
কোরআন তিলাওয়াতের আদব ও শিষ্টাচার
Etiquette and Etiquette of Quran Recitation
আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা। আল্লাহ অদ্বিতীয়, সর্বশক্তিমান, একমাত্র উপাস্য। আল্লাহ একমাত্র সত্য মাবুদ। আল্লাহ ছাড়া কোনো 'সত্য ইলাহ'/ 'সত্য উপাস্য' নেই। আল্লাহ তাঁর কর্মে-পরিচালনায়, প্রভুত্ব-কর্তৃত্বে, উপাস্যের যোগ্যতা-অধিকারে এক, অদ্বিতীয় অংশীদারমুক্ত। আল্লাহ তায়ালা আসমানে আরশের ঊরধে সমুন্নত আছেন। আল্লাহকে জানতে হবে তাঁর সুন্দর নাম 'আসমাউল হুসনা' ও পরিপূর্ণ সিফাত দ্বারা। কোরআন আল্লাহর বাণী। মানবজাতির জন্য চূড়ান্ত পথ নির্দেশনা।
কোরআন পাঠ করতে হয় যথাযথ ভক্তি, শ্রদ্ধা ও আদব সহকারে। এর আদবগুলো হলো—
প্রথম আদব : নিয়ত শুদ্ধ করা। রাসুলুল্লাহ (সা.) কিয়ামতের দিন তিন শ্রেণির মানুষের ওপর আগুনের শাস্তি কঠোর করা হবে বলে জানিয়েছেন।
তাদের মধ্যে একজন ওই কারি, যিনি ইখলাসের সঙ্গে কোরআন তিলাওয়াত করতেন না। (তিরমিজি, হাদিস : ২৩৮২; সহিহ ইবন হিব্বান, হাদিস : ৪০৮)
দ্বিতীয় আদব : পবিত্র হয়ে অজু অবস্থায় কোরআন তিলাওয়াত করা। অজু ছাড়াও কোরআন পড়া যাবে, তবে তা অজু অবস্থায় পড়ার সমান হতে পারে না।
তৃতীয় আদব : কোরআন তিলাওয়াতের আগে মিসওয়াক করা।
আলী (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে এসেছে, ‘তোমাদের মুখগুলো কোরআনের পথ। তাই সেগুলোকে মিসওয়াক দ্বারা সুরভিত করো।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৯১)
চতুর্থ আদব : তিলাওয়াতের শুরুতে আউজুবিল্লাহ পড়া। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘সুতরাং যখন তুমি কোরআন পড়বে, তখন আল্লাহর কাছে বিতাড়িত শয়তান থেকে আশ���রয় চাও।
(সুরা : নাহল, আয়াত : ৯৮)
পঞ্চম আদব : বিসমিল্লাহ পড়া। তিলাওয়াতকারীর উচিত সুরা তাওবা ছাড়া সব সুরার শুরুতে বিসমিল্লাহ পড়া। রাসুলুল্লাহ (সা.) থেকে প্রমাণিত যে তিনি এক সুরা শেষ করে বিসমিল্লাহ বলে আরেক সুরা শুরু করতেন। শুধু সুরা আনফাল শেষ করে সুরা তাওবা শুরু করার সময় বিসমিল্লাহ পড়তেন না।
ষষ্ঠ আদব : তারতিলের সঙ্গে (ধীরস্থিরভাবে) কোরআন পড়া।
কারণ আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা তারতিলের সঙ্গে কোরআন তিলাওয়াত করো।’ (সুরা : মুজ্জাম্মিল, আয়াত : ৪)
সপ্তম আদব : সুন্দর করে মনের মাধুরী মিশিয়ে কোরআন পড়া। বারা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে এশার নামাজে সুরা ত্বিন পড়তে শুনেছি। আমি তাঁর চেয়ে সুন্দর কণ্ঠে আর কাউকে তিলাওয়াত করতে শুনিনি।’ (বুখারি, হাদিস : ৭৫৪৬; মুসলিম, হাদিস : ১০৬৭)
অষ্টম আদব : সুরসহকারে কোরআন তিলাওয়াত করা। এটি সুন্দর করে কোরআন তিলাওয়াতের অংশ। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘সে আমার উম্মত নয়, যে সুরসহযোগে কোরআন পড়ে না।’ (বুখারি, হাদিস : ৭৫২৭; আবু দাউদ, হাদিস : ১৪৭১)
নবম আদব : রাতে ঘুম পেলে বা ঝিমুনি এলে তিলাওয়াত থেকে বিরত থাকা। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেন, ‘যখন তোমাদের কেউ রাতে নামাজ পড়ে, ফলে তার জিহ্বায় কোরআন এমনভাবে জড়িয়ে আসে যে সে কী পড়ছে তা টের পায় না, তাহলে সে যেন শুয়ে পড়ে।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৮৭২; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ৮২১৪)
অর্থাৎ তার উচিত এমতাবস্থায় নামাজ না পড়ে বিছানায় গিয়ে ঘুমিয়ে পড়া, যাতে তার মুখে কোরআন ও অন্য কোনো শব্দের মিশ্রণ না ঘটে এবং কোরআনের আয়াত এলোমেলো হয়ে না যায়।
দশম আদব : ফজিলতপূর্ণ সুরাগুলো ভালোভাবে শিক্ষা করা এবং সেগুলো বেশি বেশি তিলাওয়াত করা। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ কি রাত্রিকালে কোরআনের এক-তৃতীয়াংশ তিলাওয়াতে অক্ষম? তারা বলল, কোরআনের এক-তৃতীয়াংশ কিভাবে পড়া যাবে! তিনি বলেন, ‘সুরা ইখলাস কোরআনের এক-তৃতীয়াংশের সমতুল্য।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৯২২; বুখারি, হাদিস : ৫০১৫)
একাদশ আদব : ধৈর্য নিয়ে কোরআন তিলাওয়াত করা। যিনি অনায়াসে কোরআন পড়তে পারেন না, তিনি আটকে আটকে ধৈর্যসহ পড়বেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘কোরআন পাঠে যে অভিজ্ঞ ব্যক্তি কোরআন তিলাওয়াত করে, সে সম্মানিত রাসুল ও পুণ্যাত্মা ব্যক্তিদের সঙ্গে থাকবে। আর যে ব্যক্তি তোতলাতে তোতলাতে সক্লেশে কোরআন তিলাওয়াত করবে, তার জন্য দ্বিগুণ নেকি লেখা হবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৪৯৩৭; মুসলিম, হাদিস : ১৮৯৮)
দ্বাদশ আদব : কোরআন তিলাওয়াতের আরেকটি আদব হলো তিলাওয়াতের সময় ক্রন্দন করা। আল্লাহ তাআলা তিলাওয়াতের সময় ক্রন্দনরতদের প্রশংসা করে বলেন, ‘আর তারা কাঁদতে কাঁদতে লুটিয়ে পড়ে এবং এটা তাদের বিনয় বৃদ্ধি করে।’ (সুরা : বনি ইসরাঈল, আয়াত : ১০৯)
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করিম (সা.) আমাকে বলেছেন, আমাকে তুমি তিলাওয়াত করে শোনাও। বললাম, আমি আপনাকে তিলাওয়াত শোনাব, অথচ আপনার ওপরই এটি অবতীর্ণ হয়েছে? তিনি বলেন, আমি অন্যের তিলাওয়াত শুনতে পছন্দ করি। অতঃপর আমি তাঁকে সুরা নিসা পড়ে শোনাতে লাগলাম। যখন আমি সুরা নিসার ৪১ নম্বর আয়াত তিলাওয়াত করলাম, তিনি বললেন, ব্যস, যথেষ্ট হয়েছে। আমি তাঁর দিকে তাকিয়ে দেখলাম তাঁর চোখ থেকে অঝোর ধারায় অশ্রু প্রবাহিত হচ্ছে। (বুখারি, হাদিস : ৫০৫০; মুসলিম, হাদিস : ১৯০৩)
আয়াতটি হলো, ‘যখন আমি প্রত্যেক উম্মত থেকে একজন সাক্ষী উপস্থিত করব এবং তোমাকে উপস্থিত করব তাদের ওপর সাক্ষীরূপে, তখন কী অবস্থা হবে?’
কাসিম (রহ.) একবার আয়েশা (রা.)-এর কাছ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন। তিনি দেখেন, আয়েশা (রা.) একটি আয়াত বারবার আবৃত্তি করছেন আর কেঁদে কেঁদে দোয়া করছেন। আয়াতটি হলো, ‘অতঃপর আল্লাহ আমাদের প্রতি দয়া করেছেন এবং আগুনের আজাব থেকে আমাদের রক্ষা করেছেন।’ (সুরা : তুর, আয়াত : ২৭)
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) যখন এ আয়াত তিলাওয়াত করেন, ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করেন। আয়াতটি হলো, ‘আর মৃত্যুর যন্ত্রণা অবশ্যই আসবে, যা থেকে তুমি পলায়ন করতে চাইতে।’ (সুরা : ক্বফ, আয়াত : ১৯)
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) যখন এ আয়াতটি পড়তেন, তখনই তিনি কান্নাকাটি করতেন। আয়াতটি হলো, ‘...আর তোমাদের মনে যা আছে, তা যদি তোমরা প্রকাশ করো অথবা গোপন করো, আল্লাহ সে বিষয়ে তোমাদের হিসাব নেবেন...।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ২৮৪)
মূল কথা হলো, কোরআন তিলাওয়াতের সময় কান্নাকাটি করা এবং চোখে পানি আসা ঈমানের আলামত। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘কোরআনের পাঠকদের মধ্যে ওই ব্যক্তির কণ্ঠ সর্বোত্তম, যার তিলাওয়াত কেউ শুনলে মনে হয় যে সে কাঁদছে।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৩৩৯)
ত্রয়োদশ আদব : কোরআন তিলাওয়াতের আরেকটি আদব হলো এর মর্ম নিয়ে চিন্তা করা। এটিই তিলাওয়াতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আদব। তিলাওয়াতের সময় চিন্তা-গবেষণা করাই এর প্রকৃত সুফল বয়ে আনে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘আমি তোমার প্রতি নাজিল করেছি এক বরকতময় কিতাব, যাতে তারা এর আয়াতগুলো নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করে এবং যাতে বুদ্ধিমানরা উপদেশ গ্রহণ করে।’ (সুরা : সদ, আয়াত : ২৯)
ইসলামী আইন বিশেষজ্ঞরা লিখেছেন, তিন দিনের কম সময়ে কোরআন খতম করা অনুচিত। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘তিন দিনের কম সময়ে যে কোরআন খতম করবে, সে কোরআন বুঝবে না।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১৩৯৬)
জায়েদ বিন সাবেত (রা.)-কে একজন জিজ্ঞেস করলেন, সাত দিনে কোরআন খতম করাকে আপনি কোন দৃষ্টিতে দেখেন? তিনি বলেন, এটা ভালো। অবশ্য আমি এটাকে ১৫ দিনে বা ১০ দিনে খতম করাই পছন্দ করি। আমাকে জিজ্ঞেস করো, তা কেন? তিনি বলেন, আমি আপনাকে জিজ্ঞেস করছি। জায়েদ বলেন, যাতে আমি তার স্থানে স্থানে চিন্তা করতে পারি এবং থামতে পারি।’ (মুয়াত্তা মালেক, হাদিস : ৪৭২)
চতুর্দশ আদব : তিলাওয়াতের সময় সিজদার আয়াত এলে সিজদা দেওয়া। সিজদার নিয়ম হলো, তাকবির দিয়ে সিজদায় চলে যাওয়া।
পঞ্চদশ আদব : যথাসম্ভব আদবসহ বসা। আর বসা, দাঁড়ানো, চলমান ও হেলান দেওয়া—সর্বাবস্থায় তিলাওয়াত করার অনুমতি রয়েছে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, ‘যারা আল্লাহকে স্মরণ করে দাঁড়িয়ে, বসে ও কাত হয়ে এবং আসমান ও জমিনের সৃষ্টি সম্পর্কে চিন্তা করে...।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৯১)
কোরআন তিলাওয়াতের আদব ও শিষ্টাচার
Etiquette and Etiquette of Quran Recitation
আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা। আল্লাহ অদ্বিতীয়, সর্বশক্তিমান, একমাত্র উপাস্য। আল্লাহ একমাত্র সত্য মাবুদ। আল্লাহ ছাড়া কোনো 'সত্য ইলাহ'/ 'সত্য উপাস্য' নেই। আল্লাহ তাঁর কর্মে-পরিচালনায়, প্রভুত্ব-কর্তৃত্বে, উপাস্যের যোগ্যতা-অধিকারে এক, অদ্বিতীয় অংশীদারমুক্ত। আল্লাহ তায়ালা আসমানে আরশের ঊরধে সমুন্নত আছেন। আল্লাহকে জানতে হবে তাঁর সুন্দর নাম 'আসমাউল হুসনা' ও পরিপূর্ণ সিফাত দ্বারা। কোরআন আল্লাহর বাণী। মানবজাতির জন্য চূড়ান্ত পথ নির্দেশনা।
কোরআন পাঠ করতে হয় যথাযথ ভক্তি, শ্রদ্ধা ও আদব সহকারে।
পৃথিবীর বুকে মানুষের জন্য আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে সর্বশ্রেষ্ঠ উপহার হচ্ছে কোরআনে কারিম। কোরআন তেলাওয়াত শোনার মানে হলো শ্রেষ্ঠ বাণী শোনা।
কোরআনে কারিমের তেলাওয়াত স্বতন্ত্র ইবাদত হিসেবে গণ্য। এর ফজিলত অনেক বেশি।
কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে আল্লাহতায়ালার আদেশ-নিষেধগুলোর সঙ্গে পরিচিত হওয়া এবং সে অনুযায়ী আমল করা। কোরঅান তেলাওয়াত করে ক্বারি হিসেবে খ্যাতি লাভ করার উদ্দেশ্যে কোরআন তেলাওয়াত করা ঠিক নয়। অনেকে আবার দুনিয়ার স্বার্থ সিদ্ধির লক্ষ্যে কোরআন তেলাওয়াত করে। এ ধরনের তেলাওয়াতে কোনো কল্যাণ নেই। তবে, নিজ জীবনে কোরআন বাস্তবায়নের পর্যায়ে উন্নীত হওয়ার জন্য তেলাওয়াত করাটা একটা ধারা।
কোরআনে কারিম তেলাওয়াতের ক্ষেত্রে শিষ্টতাপূর্ণ কিছু নিয়ম-কানুন রয়েছে। এগুলোর কোনোটা বাহ্যিক আবার কোনো কোনোটা অভ্যন্তরীণ। কোরআন তেলাওয়াতের ক্ষেত্রে বিষয়গুলো অনুসরণ করা জরুরি।
বাহ্যিক সৌন্দর্যের মাঝে রয়েছে তেলাওয়াতের জন্য অবস্থান নির্ণয় করা। কোরআন সর্বাবস্থায় তেলাওয়াত করা যায়। দাঁড়িয়ে, বসে কিংবা শুয়েও কোরআন পড়া যায়।
এই যে আমরা কোরআন তেলাওয়াতের ক্ষেত্রে নিয়ম-শৃঙ্খলার কথা বললাম- কোরআনের আলোকে সেদিকে একটু দৃষ্টি দেওয়া যাক। সূরা ওয়াকিয়ার ৭৯ নম্বর আয়াতে কোরআনের পবিত্রতার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। ইরশাদ করা হয়েছে, ‘পবিত্র সত্তা ছাড়া কেউ এ কোরআন স্পর্শ করতে পারে না। ’
এ আয়াতের তাফসির প্রসঙ্গে কোনো কোনো মুফাসসির বলেছেন, ‘পাক-পবিত্র নয় এমন কোনো ব্যক্তি যেন তা স্পর্শ না করে। ’ তার মানে অজু গোসল ছাড়া কোরআন স্পর্শ করা ঠিক নয়।
কোরআন তেলাওয়াত করার সময় পবিত্র থাকা শরিয়তের বিধান মতে মোস্তাহাব। অনেক আলেম তো এটাও বলেছেন যে, কোরআন তেলাওয়াতের আগে মুখটাকে পরিষ্কার করো। কেননা মানুষের মুখ হলো কোরআনের পথ। তার মানে কোরআনের আধ্যাত্মিক গুণে যিনি সমৃদ্ধ হতে চান তার উচিত আত্মিক পবিত্রতা এবং আন্তরিক বিশ্বাস স্থাপন করা।
কোরআন তেলাওয়াতের শুরুতে এস্তেআজা বাক্যটি পড়ে নিতে হবে। এস্তেআজা বলা হয়, আউজুবিল্লাহি মিনাশ শায়তানির রাজিম বলাকে। এর উদ্দেশ্য হলো, কোরআন তেলাওয়াতের শুরুতে আল্লাহতায়ালার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা। এ প্রসঙ্গে সূরা নামলের ৯৮ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘যখন কোরআন পাঠ করবে, তখন অভিশপ্ত শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করবে। ’
এরপর ‘তাসমিয়া’ মানে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম পড়ে কোরআন তেলাওয়াত শুরু করবে। কোরআন তেলাওয়াতের শুরুতে এস্তেআজার মাধ্যমে গুনাহের দরজাগুলো বন্ধ করে রেখে তাসমিয়ার মাধ্যমে আল্লাহর আনুগত্যের দ্বার উন্মোচন করা হয়।
কোরআনে কারিম নীরবে শোনাও তেলাওয়াতের একটি শিষ্টাচার। সূরা আরাফের ২০৪ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘যখন কোরআন তোমাদের সামনে পড়া হয়, তা মনোযোগ সহকারে শোনো এবং নীরব থাকো, হয়তো তোমাদের প্রতিও রহমত বর্ষিত হবে। ’
এ আয়াতের দাবি অনুযায়ী কোরআন তেলাওয়াতের সময় নীরবে আল্লাহর ওহির মর্যাদাময় বাণী মনোযোগ সহকারে শুনতে হবে। কোরআন তেলাওয়াত করার সময় আল্লাহতায়ালা তেলাওয়াতকারীর সঙ্গে কথা বলেন। সেজন্য খুব ভালোভাবে শোনা উচিত এবং শুনে মনোযোগের সঙ্গে আয়াতের বক্তব্য নিয়ে চিন্তাভাবনা করা উচিত। যাতে করে মহান আল্লাহতায়ালা ঐশী বাণী থেকে বেশি করে উপকৃত হওয়া যায়।
তেলাওয়াত হলো- আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ গ্রন্থ বিশেষ করে পবিত্র কোরআন পড়া। এই কোরআন পড়ার জন্য কিছু নিয়ম-কানুন যাকে ব্যাকরণ বলা হয়, সেগুলো মেনে চলতে হবে। কোরআনের পরিভাষায় এই নিয়ম-কানুনকে বলা হয় তারতিল।
‘তারতিল’ মানে কোরআন থেমে থেমে পাঠ করাকে বোঝায়। তাই কোরআন তাড়াতাড়ি বা দ্রুতগতিতে না পড়াই শ্রেয়। ধীরে ধীরে প্রতিটি শব্দ সুন্দরভাবে মুখে উচ্চারণ করে কোরআন তেলাওয়াতের বিশেষ মাহাত্ম রয়েছে। তা হলো, এক একটি আয়াত পড়ে থামলে বা বিরতি নিলে মন আল্লাহর বাণীর অর্থ ও তার দাবীকে পুরোপুরি উপলদ্ধি করতে পারবে এবং তার বিষয়বস্তু দ্বারা প্রভাবিত হবে।
তারতিলের ভেতর কোরআনের প্রতিটি শব্দের বিশুদ্ধ উচ্চারণ করার বিষয়টিও রয়েছে। উচ্চারণের ক্ষেত্রে দু’টি বিষয়ের ওপর খেয়াল রাখতে হবে। একটি হলো মাখরাজ বা উচ্চারণ স্থান। প্রতিটি ধ্বনি বাক প্রত্যঙ্গের ঠিক কোন স্থান থেকে উচ্চারিত হবে সেটি জানতে হবে।
আরেকটি হলো- সিফাত বা শব্দের অবস্থা ও গুণাবলি অনুযায়ী উচ্চারণ করা। কোরআন তেলাওয়াতের এই ব্যাকরণকে তাজবিদ বলা হয়। তাজবিদ জানার কোনো বিকল্প নেই।
কোরআনকে সুন্দর করে সুরেলা কণ্ঠে পড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে কোরআন দেখে দেখে পড়ার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এবার কোরআন তেলাওয়াতের বাতেনি বা অদৃশ্য শিষ্টাচারের কথা আলোচনা করা যাক।
একজন ক্বারি কতটুকু তেলাওয়াত করবেন সেটা বিবেচ্য বিষয়। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ... তাই কোরআনের যতটা পরিমাণ সহজেই পড়া যায়- ততটাই পড়তে থাকো! নামাজ কায়েম করো, জাকাত দাও।
ইসলামি স্কলারদের অভিমত হচ্ছে,কোরআন নিয়মিত তেলাওয়াত করা। ধীরে ধীরে তেলাওয়াতের পরিমাণ বাড়াতে থাকা। নিজে নির্ধারণ করে নেওয়া, প্রতিদিন কতটুকু করে তেলাওয়াত করবে সে বিষয়ে। আল্লাহ সবাইকে নিয়ম করে, যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে প্রতিদিন কোরআন তেলাওয়াত করার তওফিক দান করুন। আমিন।
অসাধারণ কিছু তেলাওয়াত
অসাধারণ কিছু আবৃত্তি
Some Wonderful Recitations
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
কোরআন তিলাওয়াতের আদব ও শিষ্টাচার
#allah'snature#তিলাওয়াত#আদব#শিষ্টাচার#QuranicRecitation#Etiquette and Etiquette of Quran Recitation#কোরআনতিলাওয়াত#Etiquette#Quran#Recitation#Youtube
0 notes
Text
কোরআন তিলাওয়াতের আদব ও শিষ্টাচার
Etiquette and Etiquette of Quran Recitation
আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা। আল্লাহ অদ্বিতীয়, সর্বশক্তিমান, একমাত্র উপাস্য। আল্লাহ একমাত্র সত্য মাবুদ। আল্লাহ ছাড়া কোনো 'সত্য ইলাহ'/ 'সত্য উপাস্য' নেই। আল্লাহ তাঁর কর্মে-পরিচালনায়, প্রভুত্ব-কর্তৃত্বে, উপাস্যের যোগ্যতা-অধিকারে এক, অদ্বিতীয় অংশীদারমুক্ত। আল্লাহ তায়ালা আসমানে আরশের ঊরধে সমুন্নত আছেন। আল্লাহকে জানতে হবে তাঁর সুন্দর নাম 'আসমাউল হুসনা' ও পরিপূর্ণ সিফাত দ্বারা। কোরআন আল্লাহর বাণী। মানবজাতির জন্য চূড়ান্ত পথ নির্দেশনা।
কোরআন পাঠ করতে হয় যথাযথ ভক্তি, শ্রদ্ধা ও আদব সহকারে। এর আদবগুলো হলো—
প্রথম আদব : নিয়ত শুদ্ধ করা। রাসুলুল্লাহ (সা.) কিয়ামতের দিন তিন শ্রেণির মানুষের ওপর আগুনের শাস্তি কঠোর করা হবে বলে জানিয়েছেন।
তাদের মধ্যে একজন ওই কারি, যিনি ইখলাসের সঙ্গে কোরআন তিলাওয়াত করতেন না। (তিরমিজি, হাদিস : ২৩৮২; সহিহ ইবন হিব্বান, হাদিস : ৪০৮)
দ্বিতীয় আদব : পবিত্র হয়ে অজু অবস্থায় কোরআন তিলাওয়াত করা। অজু ছাড়াও কোরআন পড়া যাবে, তবে তা অজু অবস্থায় পড়ার সমান হতে পারে না।
তৃতীয় আদব : কোরআন তিলাওয়াতের আগে মিসওয়াক করা।
আলী (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিসে এসেছে, ‘তোমাদের মুখগুলো কোরআনের পথ। তাই সেগুলোকে মিসওয়াক দ্বারা সুরভিত করো।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৯১)
চতুর্থ আদব : তিলাওয়াতের শুরুতে আউজুবিল্লাহ পড়া। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘সুতরাং যখন তুমি কোরআন পড়বে, তখন আল্লাহর কাছে বিতাড়িত শয়তান থেকে আশ্রয় চাও।
(সুরা : নাহল, আয়াত : ৯৮)
পঞ্চম আদব : বিসমিল্লাহ পড়া। তিলাওয়াতকারীর উচিত সুরা তাওবা ছাড়া সব সুরার শুরুতে বিসমিল্লাহ পড়া। রাসুলুল্লাহ (সা.) থেকে প্রমাণিত যে তিনি এক সুরা শেষ করে বিসমিল্লাহ বলে আরেক সুরা শুরু করতেন। শুধু সুরা আনফাল শেষ করে সুরা তাওবা শুরু করার সময় বিসমিল্লাহ পড়তেন না।
ষষ্ঠ আদব : তারতিলের সঙ্গে (ধীরস্থিরভাবে) কোরআন পড়া।
কারণ আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা তারতিলের সঙ্গে কোরআন তিলাওয়াত করো।’ (সুরা : মুজ্জাম্মিল, আয়াত : ৪)
সপ্তম আদব : সুন্দর করে মনের মাধুরী মিশিয়ে কোরআন পড়া। বারা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে এশার নামাজে সুরা ত্বিন পড়তে শুনেছি। আমি তাঁর চেয়ে সুন্দর কণ্ঠে আর কাউকে তিলাওয়াত করতে শুনিনি।’ (বুখারি, হাদিস : ৭৫৪৬; মুসলিম, হাদিস : ১০৬৭)
অষ্টম আদব : সুরসহকারে কোরআন তিলাওয়াত করা। এটি সুন্দর করে কোরআন তিলাওয়াতের অংশ। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘সে আমার উম্মত নয়, যে সুরসহযোগে কোরআন পড়ে না।’ (বুখারি, হাদিস : ৭৫২৭; আবু দাউদ, হাদিস : ১৪৭১)
নবম আদব : রাতে ঘুম পেলে বা ঝিমুনি এলে তিলাওয়াত থেকে বিরত থাকা। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেন, ‘যখন তোমাদের কেউ রাতে নামাজ পড়ে, ফলে তার জিহ্বায় কোরআন এমনভাবে জড়িয়ে আসে যে সে কী পড়ছে তা টের পায় না, তাহলে সে যেন শুয়ে পড়ে।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৮৭২; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ৮২১৪)
অর্থাৎ তার উচিত এমতাবস্থায় নামাজ না পড়ে বিছানায় গিয়ে ঘুমিয়ে পড়া, যাতে তার মুখে কোরআন ও অন্য কোনো শব্দের মিশ্রণ না ঘটে এবং কোরআনের আয়াত এলোমেলো হয়ে না যায়।
দশম আদব : ফজিলতপূর্ণ সুরাগুলো ভালোভাবে শিক্ষা করা এবং সেগুলো বেশি বেশি তিলাওয়াত করা। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ কি রাত্রিকালে কোরআনের এক-তৃতীয়াংশ তিলাওয়াতে অক্ষম? তারা বলল, কোরআনের এক-তৃতীয়াংশ কিভাবে পড়া যাবে! তিনি বলেন, ‘সুরা ইখলাস কোরআনের এক-তৃতীয়াংশের সমতুল্য।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৯২২; বুখারি, হাদিস : ৫০১৫)
একাদশ আদব : ধৈর্য নিয়ে কোরআন তিলাওয়াত করা। যিনি অনায়াসে কোরআন পড়তে পারেন না, তিনি আটকে আটকে ধৈর্যসহ পড়বেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘কোরআন পাঠে যে অভিজ্ঞ ব্যক্তি কোরআন তিলাওয়াত করে, সে সম্মানিত রাসুল ও পুণ্যাত্মা ব্যক্তিদের সঙ্গে থাকবে। আর যে ব্যক্তি তোতলাতে তোতলাতে সক্লেশে কোরআন তিলাওয়াত করবে, তার জন্য দ্বিগুণ নেকি লেখা হবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৪৯৩৭; মুসলিম, হাদিস : ১৮৯৮)
দ্বাদশ আদব : কোরআন তিলাওয়াতের আরেকটি আদব হলো তিলাওয়াতের সময় ক্রন্দন করা। আল্লাহ তাআলা তিলাওয়াতের সময় ক্রন্দনরতদের প্রশংসা করে বলেন, ‘আর তারা কাঁদতে কাঁদতে লুটিয়ে পড়ে এবং এটা তাদের বিনয় বৃদ্ধি করে।’ (সুরা : বনি ইসরাঈল, আয়াত : ১০৯)
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করিম (সা.) আমাকে বলেছেন, আমাকে তুমি তিলাওয়াত করে শোনাও। বললাম, আমি আপনাকে তিলাওয়াত শোনাব, অথচ আপনার ওপরই এটি অবতীর্ণ হয়েছে? তিনি বলেন, আমি অন্যের তিলাওয়াত শুনতে পছন্দ করি। অতঃপর আমি তাঁকে সুরা নিসা পড়ে শোনাতে লাগলাম। যখন আমি সুরা নিসার ৪১ নম্বর আয়াত তিলাওয়াত করলাম, তিনি বললেন, ব্যস, যথেষ্ট হয়েছে। আমি তাঁর দিকে তাকিয়ে দেখলাম তাঁর চোখ থেকে অঝোর ধারায় অশ্রু প্রবাহিত হচ্ছে। (বুখারি, হাদিস : ৫০৫০; মুসলিম, হাদিস : ১৯০৩)
আয়াতটি হলো, ‘যখন আমি প্রত্যেক উম্মত থেকে একজন সাক্ষী উপস্থিত করব এবং তোমাকে উপস্থিত করব তাদের ওপর সাক্ষীরূপে, তখন কী অবস্থা হবে?’
কাসিম (রহ.) একবার আয়েশা (রা.)-এর কাছ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন। তিনি দেখেন, আয়েশা (রা.) একটি আয়াত বারবার আবৃত্তি করছেন আর কেঁদে কেঁদে দোয়া করছেন। আয়াতটি হলো, ‘অতঃপর আল্লাহ আমাদের প্রতি দয়া করেছেন এবং আগুনের আজাব থেকে আমাদের রক্ষা করেছেন।’ (সুরা : তুর, আয়াত : ২৭)
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) যখন এ আয়াত তিলাওয়াত করেন, ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করেন। আয়াতটি হলো, ‘আর মৃত্যুর যন্ত্রণা অবশ্যই আসবে, যা থেকে তুমি পলায়ন করতে চাইতে।’ (সুরা : ক্বফ, আয়াত : ১৯)
আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) যখন এ আয়াতটি পড়তেন, তখনই তিনি কান্নাকাটি করতেন। আয়াতটি হলো, ‘...আর তোমাদের মনে যা আছে, তা যদি তোমরা প্রকাশ করো অথবা গোপন করো, আল্লাহ সে বিষয়ে তোমাদের হিসাব নেবেন...।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ২৮৪)
মূল কথা হলো, কোরআন তিলাওয়াতের সময় কান্নাকাটি করা এবং চোখে পানি আসা ঈমানের আলামত। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘কোরআনের পাঠকদের মধ্যে ওই ব্যক্তির কণ্ঠ সর্বোত্তম, যার তিলাওয়াত কেউ শুনলে মনে হয় যে সে কাঁদছে।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৩৩৯)
ত্রয়োদশ আদব : কোরআন তিলাওয়াতের আরেকটি আদব হলো এর মর্ম নিয়ে চিন্তা করা। এটিই তিলাওয়াতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আদব। তিলাওয়াতের ��ময় চিন্তা-গবেষণা করাই এর প্রকৃত সুফল বয়ে আনে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘আমি তোমার প্রতি নাজিল করেছি এক বরকতময় কিতাব, যাতে তারা এর আয়াতগুলো নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করে এবং যাতে বুদ্ধিমানরা উপদেশ গ্রহণ করে।’ (সুরা : সদ, আয়াত : ২৯)
ইসলামী আইন বিশেষজ্ঞরা লিখেছেন, তিন দিনের কম সময়ে কোরআন খতম করা অনুচিত। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘তিন দিনের কম সময়ে যে কোরআন খতম করবে, সে কোরআন বুঝবে না।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১৩৯৬)
জায়েদ বিন সাবেত (রা.)-কে একজন জিজ্ঞেস করলেন, সাত দিনে কোরআন খতম করাকে আপনি কোন দৃষ্টিতে দেখেন? তিনি বলেন, এটা ভালো। অবশ্য আমি এটাকে ১৫ দিনে বা ১০ দিনে খতম করাই পছন্দ করি। আমাকে জিজ্ঞেস করো, তা কেন? তিনি বলেন, আমি আপনাকে জিজ্ঞেস করছি। জায়েদ বলেন, যাতে আমি তার স্থানে স্থানে চিন্তা করতে পারি এবং থামতে পারি।’ (মুয়াত্তা মালেক, হাদিস : ৪৭২)
চতুর্দশ আদব : তিলাওয়াতের সময় সিজদার আয়াত এলে সিজদা দেওয়া। সিজদার নিয়ম হলো, তাকবির দিয়ে সিজদায় চলে যাওয়া।
পঞ্চদশ আদব : যথাসম্ভব আদবসহ বসা। আর বসা, দাঁড়ানো, চলমান ও হেলান দেওয়া—সর্বাবস্থায় তিলাওয়াত করার অনুমতি রয়েছে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন, ‘যারা আল্লাহকে স্মরণ করে দাঁড়িয়ে, বসে ও কাত হয়ে এবং আসমান ও জমিনের সৃষ্টি সম্পর্কে চিন্তা করে...।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৯১)
কোরআন তিলাওয়াতের আদব ও শিষ্টাচার
Etiquette and Etiquette of Quran Recitation
আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা। আল্লাহ অদ্বিতীয়, সর্বশক্তিমান, একমাত্র উপাস্য। আল্লাহ একমাত্র সত্য মাবুদ। আল্লাহ ছাড়া কোনো 'সত্য ইলাহ'/ 'সত্য উপাস্য' নেই। আল্লাহ তাঁর কর্মে-পরিচালনায়, প্রভুত্ব-কর্তৃত্বে, উপাস্যের যোগ্যতা-অধিকারে এক, অদ্বিতীয় অংশীদারমুক্ত। আল্লাহ তায়ালা আসমানে আরশের ঊরধে সমুন্নত আছেন। আল্লাহকে জানতে হবে তাঁর সুন্দর নাম 'আসমাউল হুসনা' ও পরিপূর্ণ সিফাত দ্বারা। কোরআন আল্লাহর বাণী। মানবজাতির জন্য চূড়ান্ত পথ নির্দেশনা।
কোরআন পাঠ করতে হয় যথাযথ ভক্তি, শ্রদ্ধা ও আদব সহকারে।
পৃথিবীর বুকে মানুষের জন্য আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে সর্বশ্রেষ্ঠ উপহার হচ্ছে কোরআনে কারিম। কোরআন তেলাওয়াত শোনার মানে হলো শ্রেষ্ঠ বাণী শোনা।
কোরআনে কারিমের তেলাওয়াত স্বতন্ত্র ইবাদত হিসেবে গণ্য। এর ফজিলত অনেক বেশি।
কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে আল্লাহতায়ালার আদেশ-নিষেধগুলোর সঙ্গে পরিচিত হওয়া এবং সে অনুযায়ী আমল করা। কোরঅান তেলাওয়াত করে ক্বারি হিসেবে খ্যাতি লাভ করার উদ্দেশ্যে কোরআন তেলাওয়াত করা ঠিক নয়। অনেকে আবার দুনিয়ার স্বার্থ সিদ্ধির লক্ষ্যে কোরআন তেলাওয়াত করে। এ ধরনের তেলাওয়াতে কোনো কল্যাণ নেই। তবে, নিজ জীবনে কোরআন বাস্তবায়নের পর্যায়ে উন্নীত হওয়ার জন্য তেলাওয়াত করাটা একটা ধারা।
কোরআনে কারিম তেলাওয়াতের ক্ষেত্রে শিষ্টতাপূর্ণ কিছু নিয়ম-কানুন রয়েছে। এগুলোর কোনোটা বাহ্যিক আবার কোনো কোনোটা অভ্যন্তরীণ। কোরআন তেলাওয়াতের ক্ষেত্রে বিষয়গুলো অনুসরণ করা জরুরি।
বাহ্যিক সৌন্দর্যের মাঝে রয়েছে তেলাওয়াতের জন্য অবস্থান নির্ণয় করা। কোরআন সর্বাবস্থায় তেলাওয়াত করা যায়। দাঁড়িয়ে, বসে কিংবা শুয়েও কোরআন পড়া যায়।
এই যে আমরা কোরআন তেলাওয়াতের ক্ষেত্রে নিয়ম-শৃঙ্খলার কথা বললাম- কোরআনের আলোকে সেদিকে একটু দৃষ্টি দেওয়া যাক। সূরা ওয়াকিয়ার ৭৯ নম্বর আয়াতে কোরআনের পবিত্রতার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। ইরশাদ করা হয়েছে, ‘পবিত্র সত্তা ছাড়া কেউ এ কোরআন স্পর্শ করতে পারে না। ’
এ আয়াতের তাফসির প্রসঙ্গে কোনো কোনো মুফাসসির বলেছেন, ‘পাক-পবিত্র নয় এমন কোনো ব্যক্তি যেন তা স্পর্শ না করে। ’ তার মানে অজু গোসল ছাড়া কোরআন স্পর্শ করা ঠিক নয়।
কোরআন তেলাওয়াত করার সময় পবিত্র থাকা শরিয়তের বিধান মতে মোস্তাহাব। অনেক আলেম তো এটাও বলেছেন যে, কোরআন তেলাওয়াতের আগে মুখটাকে পরিষ্কার করো। কেননা মানুষের মুখ হলো কোরআনের পথ। তার মানে কোরআনের আধ্যাত্মিক গুণে যিনি সমৃদ্ধ হতে চান তার উচিত আত্মিক পবিত্রতা এবং আন্তরিক বিশ্বাস স্থাপন করা।
কোরআন তেলাওয়াতের শুরুতে এস্তেআজা বাক্যটি পড়ে নিতে হবে। এস্তেআজা বলা হয়, আউজুবিল্লাহি মিনাশ শায়তানির রাজিম বলাকে। এর উদ্দেশ্য হলো, কোরআন তেলাওয়াতের শুরুতে আল্লাহতায়ালার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা। এ প্রসঙ্গে সূরা নামলের ৯৮ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘যখন কোরআন পাঠ করবে, তখন অভিশপ্ত শয়তান থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করবে। ’
এরপর ‘তাসমিয়া’ মানে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম পড়ে কোরআন তেলাওয়াত শুরু করবে। কোরআন তেলাওয়াতের শুরুতে এস্তেআজার মাধ্যমে গুনাহের দরজাগুলো বন্ধ করে রেখে তাসমিয়ার মাধ্যমে আল্লাহর আনুগত্যের দ্বার উন্মোচন করা হয়।
কোরআনে কারিম নীরবে শোনাও তেলাওয়াতের একটি শিষ্টাচার। সূরা আরাফের ২০৪ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘যখন কোরআন তোমাদের সামনে পড়া হয়, তা মনোযোগ সহকারে শোনো এবং নীরব থাকো, হয়তো তোমাদের প্রতিও রহমত বর্ষিত হবে। ’
এ আয়াতের দাবি অনুযায়ী কোরআন তেলাওয়াতের সময় নীরবে আল্লাহর ওহির মর্যাদাময় বাণী মনোযোগ সহকারে শুনতে হবে। কোরআন তেলাওয়াত করার সময় আল্লাহতায়ালা তেলাওয়াতকারীর সঙ্গে কথা বলেন। সেজন্য খুব ভালোভাবে শোনা উচিত এবং শুনে মনোযোগের সঙ্গে আয়াতের বক্তব্য নিয়ে চিন্তাভাবনা করা উচিত। যাতে করে মহান আল্লাহতায়ালা ঐশী বাণী থেকে বেশি করে উপকৃত হওয়া যায়।
তেলাওয়াত হলো- আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ গ্রন্থ বিশেষ করে পবিত্র কোরআন পড়া। এই কোরআন পড়ার জন্য কিছু নিয়ম-কানুন যাকে ব্যাকরণ বলা হয়, সেগুলো মেনে চলতে হবে। কোরআনের পরিভাষায় এই নিয়ম-কানুনকে বলা হয় তারতিল।
‘তারতিল’ মানে কোরআন থেমে থেমে পাঠ করাকে বোঝায়। তাই কোরআন তাড়াতাড়ি বা দ্রুতগতিতে না পড়াই শ্রেয়। ধীরে ধীরে প্রতিটি শব্দ সুন্দরভাবে মুখে উচ্চারণ করে কোরআন তেলাওয়াতের বিশেষ মাহাত্ম রয়েছে। তা হলো, এক একটি আয়াত পড়ে থামলে বা বিরতি নিলে মন আল্লাহর বাণীর অর্থ ও তার দাবীকে পুরোপুরি উপলদ্ধি করতে পারবে এবং তার বিষয়বস্তু দ্বারা প্রভাবিত হবে।
তারতিলের ভেতর কোরআনের প্রতিটি শব্দের বিশুদ্ধ উচ্চারণ করার বিষয়টিও রয়েছে। উচ্চারণের ক্ষেত্রে দু’টি বিষয়ের ওপর খেয়াল রাখতে হবে। একটি হলো মাখরাজ বা উচ্চারণ স্থান। প্রতিটি ধ্বনি বাক প্রত্যঙ্গের ঠিক কোন স্থান থেকে উচ্চারিত হবে সেটি জানতে হবে।
আরেকটি হলো- সিফাত বা শব্দের অবস্থা ও গুণাবলি অনুযায়ী উচ্চারণ করা। কোরআন তেলাওয়াতের এই ব্যাকরণকে তাজবিদ বলা হয়। তাজবিদ জানার কোনো বিকল্প নেই।
কোরআনকে সুন্দর করে সুরেলা কণ্ঠে পড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে কোরআন দেখে দেখে পড়ার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এবার কোরআন তেলাওয়াতের বাতেনি বা অদৃশ্য শিষ্টাচারের কথা আলোচনা করা যাক।
একজন ক্বারি কতটুকু তেলাওয়াত করবেন সেটা বিবেচ্য বিষয়। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ... তাই কোরআনের যতটা পরিমাণ সহজেই পড়া যায়- ততটাই পড়তে থাকো! নামাজ কায়েম করো, জাকাত দাও।
ইসলামি স্কলারদের অভিমত হচ্ছে,কোরআন নিয়মিত তেলাওয়াত করা। ধীরে ধীরে তেলাওয়াতের পরিমাণ বাড়াতে থাকা। নিজে নির্ধারণ করে নেওয়া, প্রতিদিন কতটুকু করে তেলাওয়াত করবে সে বিষয়ে। আল্লাহ সবাইকে নিয়ম করে, যথাযথ প্রক্রিয়া মেনে প্রতিদিন কোরআন তেলাওয়াত করার তওফিক দান করুন। আমিন।
অসাধারণ কিছু তেলাওয়াত
অসাধারণ কিছু আবৃত্তি
Some Wonderful Recitations
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
কোরআন তিলাওয়াতের আদব ও শিষ্টাচার
#qur'an#তিলাওয়াত#আদব#শিষ্টাচার#QuranicRecitation#Etiquette and Etiquette of Quran Recitation#কোরআনতিলাওয়াত#Etiquette#Quran#Recitation#Youtube
0 notes