#ঈমান এবং কুফর
Explore tagged Tumblr posts
quransunnahdawah · 2 days ago
Text
Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media
ঈমানের উপকারিতা এবং কুফরের ভয়াবহতা
ঈমান ও কুফর
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
ঈমানের উপকারিতা এবং কুফরের ভয়াবহতা
ঈমান অর্থ আস্থা, বিশ্বাস, প্রত্যয়, প্রতিজ্ঞা। ঈমান বলতে একক অদ্বিতীয় আল্লাহকে বিশ্বাস করা বোঝায়। আর কুফর হলো অস্বীকার, অবিশ্বাস ও অমান্যতার নাম। পরিভাষায়, এক আল্লাহয় অবিশ্বাস ও অমান্যতাকে কুফর বলে।
ইমান এর পূর্ণ অর্থ কি?
ইমান (আরবি: إِيمَان, ʾīmān, lit. 'বিশ্বাস' বা 'বিশ্বাস', এছাড়াও 'স্বীকৃতি ') ইসলামী ধর্মতত্ত্বে ইসলামের ধর্মীয় দিকগুলিতে একজন বিশ্বাসীর বিশ্বাস এবং কর্মের স্বীকৃতিকে বোঝায়। এর সবচেয়ে সহজ সংজ্ঞা হল বিশ্বাসের ছয়টি প্রবন্ধে বিশ্বাস, যা আরকান আল-ইমান নামে পরিচিত।
ঈমানের সর্বপ্রথম ও সর্বপ্রধান বিষয় কি?
ঈমানের ছয়টি মৌলিক স্তম্ভের প্রথম এবং প্রধান স্তম্ভ হলো মহান আল্লাহর ওপর ঈমান তথা বিশ্বাস স্থাপন করা। আল্লাহর ওপর ঈমান আনার অর্থ এ কথা বিশ্বাস করা, আল্লাহ এক, অদ্বিতীয় ও অতুলনীয়।
ঈমানের ফল কি?
ইমানের ফল : ইমান মানুষের মনে আল্লাহর আনুগত্য ও আল্লাহর ভয় সৃষ্টি করে। ইমানের ফলে মানুষের নৈতিক চরিত্র উন্নত হয়। একজন মানুষ ইমানদার হলে তার মধ্যে আল্লাহ ও পরকালের ভয় থাকবে। একজন মুমিন ব্যক্তি সদা সত্য কথা বলবেন।
ইমানের বহিঃপ্রকাশ কোনটি?
ইসলাম হলো ইমানের বহিঃপ্রকাশ ।
ঈমান ও ইসলামের মধ্যে পার্থক্য কি?
ইমান হলো আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সা.) যা কিছু আদেশ করেছেন সেগুলোর ওপর দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন করা। আর ইসলাম হলো আল্লাহ ও তার রাসূল (সা.) যা কিছু আদেশ করেছেন এবং সে অনুযায়ী আমল করার নাম।
কুফর বলতে কি বুঝায়?
‌‌‌কাফির (আরবি: كافِر) একটি আরবি শব্দ, যা আরবি কুফর (আরবি: َكَفَر) ধাতু থেকে আগত, যার শাব্দিক অর্থ হল ঢেকে রাখা, লুকিয়ে রাখা এবং এর ব্যবহারিক অর্থ হল অবাধ্যতা, অস্বীকার করা, অকৃতজ্ঞতা। ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় কুফর ঈমানের বিপরীত।
ঈমান মানুষকে সঠিক পথে পরিচালিত করার মাধ্যমে সৌভাগ্যবান বানায়। পক্ষান্তরে কুফর মানুষকে হতভাগ্য ও দুর্ভাগা বানায়। ঈমান মানুষকে আলোর পথ দেখায়, আর কুফর মানুষকে অন্ধকারের পথে পরিচালিত করে। ঈমানের শেষ পরিণাম জান্নাত আর কুফরের চূড়ান্ত পরিণতি জাহান্নাম।
আমাদের উচিত ঈমানের পথে পরিচালিত হওয়া, কুফরের পথ পরিহার করা। আসুন, কোরআন-হাদিসের আলোকে ঈমানের উপকারিতা এবং কুফরের ভয়াবহতা সম্পর্কে জেনে নিই।
ঈমানের উপকারিতা
ঈমান হলো আল্লাহ তাআলার একত্ববাদে বিশ্বাস করা। তার ফেরেশতা, কিতাব, নবী-রাসুল, শেষ দিবস ও ভাগ্যের ভালো-মন্দের ওপর বিশ্বাস রাখা (মুসলিম, হাদিস : ১)
এগুলো মনেপ্রাণে বিশ্বাস করা, মুখে স্বীকৃতি দেওয়া এবং কার্যে পরিণত করা।
যে ব্যক্তি এমনটা করবে সে মুমিন বলে স্বীকৃত হবে। সে দুনিয়া ও আখিরাতে আল্লাহ ঘোষিত বিভিন্ন পুরস্কারে পুরস্কৃত হবে।
পবিত্র ও আনন্দময় জীবন লাভ : ঈমানের কারণে ব্যক্তি দুনিয়ায় পবিত্র ও আনন্দময় জীবন লাভ করবে। মুমিন ব্যক্তি আল্লাহর পক্ষ থেকে দুনিয়ায় কলুষমুক্ত, স্বচ্ছ-সফেদ, নির্ঝঞ্ঝাট জীবনের উত্তারাধিকারী হবে। আল্লাহ পকিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘মুমিন হয়ে পুরুষ ও নারীর মধ্যে যে কেউ সৎকাজ করবে, অবশ্যই আমরা তাকে পবিত্র জীবন দান করব।
(সুরা : নাহল, আয়াত : ৯৭)
বেশির ভাগ মুফাসসিরের মতে, আয়াতে ‘হায়াতে তাইয়্যিবা’ বলতে দুনিয়ার স্বাচ্ছন্দ্যময় পবিত্র জীবনকে বোঝানো হয়েছে। (মাআরেফুল কোরআন : ১৪৪৬)
নিজ কর্মে দৃঢ়তা ও অবিচলতা অর্জন : ঈমানের কারণে ব্যক্তি দুনিয়া ও আখিরাতে আল্লাহর পক্ষ থেকে নিরাপত্তা লাভ করে। কাজকর্মে অবিচলতা ও অটলতা অর্জন করে। আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য লাভে ধন্য হয়। ঈমানহারা মানুষ প্রবৃত্তির তাড়নায় যখন দিশাহারা হয়ে যায়, উদ্ভ্রান্তের মতো ঘুরতে থাকে, ঈমানদাররা তখন আল্লাহ বিশ্বাসের কারণে তাড়না ও হতাশামুক্ত জীবনের তাওফিক পায়। আবার কবরে ফেরেশতাদের প্রশ্নে এবং কিয়ামতের বিভীষিকায়ও আল্লাহ তাআলার নিরাপত্তার চাদরে বেষ্টিত থাকবে এবং দৃঢ়তা অর্জন করবে। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘যারা ঈমান এনেছে, আল্লাহ তাদের সুদৃঢ় বাক্যের দ্বারা দুনিয়ার জীবনে ও আখিরাতে সুপ্রতিষ্ঠিত রাখবেন।’ (সুরা : ইবরাহিম, আয়াত : ২৭)
দুনিয়ার জীবনে বরকতপ্রাপ্তি : ঈমানের কারণে ব্যক্তি দুনিয়ার জীবনে বরকত লাভ করবে, প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে। বরকত ��লতে শুধু কোনো কিছুর আধিক���য বোঝায় না; বরকত হচ্ছে কোনো কিছু নিয়মিত থাকা। ঈমানের কারণে ব্যক্তি আসমান ও জমিনের বরকত লাভে ধন্য হয়। সঠিক সময়ে আসমান বৃষ্টি বর্ষণ করে আর জমিন থেকে মনঃপূত জিনিস উৎপন্ন হয়। সুরা আরাফের ৯৬ নম্বর আয়াতে এসেছে, ‘আর যদি সেই সব জনপদের অধিবাসীরা ঈমান আনত এবং তাকওয়া অবলম্বন করত তাহলে অবশ্যই আমরা তাদের জন্য আসমান ও জমিনের বরকতসমূহ উন্মুক্ত করে দিতাম।’ একমাত্র ঈমানের কারণে মানুষ দুনিয়া ও আখিরাতের এই বরকত পেতে পারে।
আল্লাহর নিরাপত্তা লাভে ধন্য হওয়া : আল্লাহর নিরাপত্তাই প্রকৃত নিরাপত্তা। সেই ব্যক্তি ধন্য, যে তা লাভ করবে। ঈমানদাররা দুনিয়া ও আখিরাতে আল্লাহ তাআলার আজাব, গজব, শাস্তি ও বিভীষিকা থেকে নিরাপত্তা লাভ করবে একমাত্র ঈমানের ওপর অটল থাকার কারণে। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের ঈমানকে জুলুম (শিরক) দ্বারা কলুষিত করেনি, নিরাপত্তা তাদেরই জন্য এবং তারাই হিদায়াতপ্রাপ্ত।’(সুরা : আনআম, আয়াত : ৮২)
শত্রুদের থেকে হেফাজত থাকবে : ঈমানের কারণে আল্লাহ তাআলা ব্যক্তিকে শারীরিক, মানসিক, আর্থিকসহ সব ধরনের ক্ষয়ক্ষতি থেকে হেফাজতে রাখবেন। কোরআনে এসেছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ মুমিনদের পক্ষ থেকে প্রতিরোধ করেন।’ (সুরা : হাজ, আয়াত : ৩৮)
চিরকাঙ্ক্ষিত জান্নাত অর্জন : ঈমানের চূড়ান্ত পরিণাম হলো, ঈমান ব্যক্তিকে চিরকাঙ্ক্ষিত জান্নাতে প্রবেশ করাবে। যারা ঈমান আনবে, আল্লাহ খুশি হয়ে তাদের জন্য চিরস্থায়ী জান্নাতে বসবাসের সুযোগ করে দেবেন। অনন্তকালের জন্য সুখের বন্দোবস্ত হয়ে যাবে। কোরআনে এসেছে, ‘আর যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে তাদের শুভ সংবাদ দিন যে তাদের জন্য আছে জান্নাত, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত।’
(সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ২৫)
কুফরের ভয়াবহতা
কুফর অর্থ অবিশ্বাস করা, অস্বীকার করা, অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা ইত্যাদি। ইসলামী পরিভাষায় কুফর বলতে বোঝায় আল্লাহ, তার রাসুল ও ঈমানের অন্যান্য বিষয়ে বিশ্বাসের অবিদ্যমানতা। কুফর ব্যক্তিকে আল্লাহর অবাধ্য বানায় এবং জাহান্নামের উপযুক্ত করে। কোরআনে এসেছে, ‘তারা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যারা আল্লাহর সাক্ষাৎ অস্বীকার করেছে।’ (সুরা : ইউনুস, আয়াত : ৪৫)
সংকীর্ণ জীবনের অধিকারী হওয়া : মনুষ্যজীবনে কুফর এমন এক অভিশাপের নাম, যার কারণে আল্লাহ ব্যক্তির জীবন সংকীর্ণ করে দেন। দুনিয়াবি আসবাব আর ধন-সম্পদ পরিপূর্ণ থাকার পরও মনে হবে, যেন কিছুই নেই। মনের স্বস্তি ও শান্তি উবে যাবে। কোনো কিছুতেই মন ভরবে না। চারদিক থেকে সংকীর্ণতা জেঁকে বসবে। আল্লাহ বলেছেন, ‘আর যে আমার স্মরণ থেকে বিমুখ হয়, তার জীবনযাপন হবে সংকুচিত আর আমরা তাকে কিয়ামতের দিন উত্থিত করব অন্ধ অবস্থায়।’
(সুরা : ত্বহা, আয়াত : ১২৪)
সংঘাতময় অশান্ত পৃথিবী : কুফর এমন একটি খারাপ কর্ম, যার কারণে মানুষ নিজ স্রষ্টাকে অস্বীকার করে�� তার ওপর এমন কিছু অপবাদ আরোপ করে, যা তার সত্তার সঙ্গে যায় না। তখন আল্লাহর গোসসা ও ক্রোধ এতটাই বেড়ে যায় যে আসমান-জমিন ধ্বংস হওয়ার উপক্রম হয়। তবে আল্লাহ তার অনুগ্রহে পৃথিবীকে শান্ত রাখেন। কোরআনে এসেছে, ‘আর তারা বলে, দয়াময় সন্তান গ্রহণ করেছেন। তোমরা তো এমন এক বীভৎস বিষয়ের অবতারণা করেছ, যাতে আসমানসমূহ বিদীর্ণ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়, আর জমিন খণ্ডবিখণ্ড এবং পর্বতমালা চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে আপতিত হবে।’
(সুরা : মারইয়াম, আয়াত : ৮৮-৯০)
কুফর ব্যক্তিকে দয়ামায়াবঞ্চিত করে : পৃথিবীকে সংঘাতময়, বসবাসের অনপুযোগী করার দায়ভার একমাত্র কুফরের। আল্লাহর ওপর অবিশ্বাসীরাই দুনিয়াকে অশান্ত করার পেছনে একমাত্র দায়ী। তাই কাফেরের প্রতি দুনিয়ার কোনো সৃষ্টজীবের মায়া থাকে না। তাদের কষ্টে ও ধ্বংসে কেউ ব্যথিত হয় না। কাঁদে না। কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘আকাশ ও পৃথিবী কেউই তাদের জন্য অশ্রুপাত করেনি এবং তাদের অবকাশও দেওয়া হয়নি।’
(সুরা : দুখান, আয়াত : ২৯)
আল্লাহর ঘৃণা ও আজাবের উপযুক্ত করে : কুফর ব্যক্তিকে আল্লাহর ঘৃণা ও আজাব-গজবের উপযুক্ত করে। দুনিয়ায় যত জাতি ধ্বংস হয়েছে, তারা নিজেদের পাপ ও কুফরির কারণে ধ্বংস হয়েছে। পরকালে যারা জাহান্নামে চিরস্থায়ী হবে, তারাও কুফরের কারণে শাস্তির সম্মুখীন হবে। দুনিয়ায় বালা-মুসিবত নাজিলের কারণ মানুষের কুফরি। আল্লাহ বলেন, ‘যারা কুকর্মের ষড়যন্ত্র করে, তারা কি এ বিষয়ে নির্ভয় হয়েছে যে আল্লাহ তাদের ভূগর্ভে বিলীন করবেন না অথবা তাদের ওপর আসবে না শাস্তি এমনভাবে যে তারা উপলব্ধিও করবে না। অথবা চলাফেরাকালে তিনি তাদের পাকরাও করবেন না? আর তারা তা ব্যর্থ করতে পারবে না।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ৪৫,৪৬)
অনিবার্য ধ্বংসের মুখোমুখি করে : কিয়ামতের সফলতা প্রকৃত সফলতা, আর সেদিনের ব্যর্থতা প্রকৃত ব্যর্থতা। কুফর ব্যক্তিকে সেদিন অনিবার্য ধ্বংসের মুখোমুখি করে। তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপের মাধ্যমে চূড়ান্ত ব্যর্থ করে। আল্লাহ বলেন, ‘আর যাদের নেকির পাল্লা হালকা হবে, তারা হবে সেই সব লোক, যারা নিজেদের ধ্বংস ও ক্ষতি নিজেরাই করেছে, কারণ তারা আমার নিদর্শনসমূহ প্রত্যাখ্যান করত।’
(সুরা : আরাফ, আয়াত : ৯)
কুফরের চূড়ান্ত পরিণাম চিরস্থায়ী জাহান্নাম : কুফর কাফেরকে চিরস্থায়ীভাবে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবে, যা থেকে পরিত্রাণের কোনো উপায় তাদের থাকবে না। আল্লাহ বলেছেন, ‘আর আপনি যদি সেই অবস্থা দেখতেন, যখন ফেরেশতারা তাদের রুহ কবজ করার সময় তাদের মুখমণ্ডলে ও পৃষ্ঠদেশে আঘাত করেন।’
(সুরা : আনফাল, আয়াত : ৫০)
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
ঈমানের উপকারিতা এবং কুফরের ভয়াবহতা
0 notes
tawhidrisalatakhirah · 2 days ago
Text
Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media
ঈমানের উপকারিতা এবং কুফরের ভয়াবহতা
ঈমান ও কুফর
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
ঈমানের উপকারিতা এবং কুফরের ভয়াবহতা
ঈমান অর্থ আস্থা, বিশ্বাস, প্রত্যয়, প্রতিজ্ঞা। ঈমান বলতে একক ���দ্বিতীয় আল্লাহকে বিশ্বাস করা বোঝায়। আর কুফর হলো অস্বীকার, অবিশ্বাস ও অমান্যতার নাম। পরিভাষায়, এক আল্লাহয় অবিশ্বাস ও অমান্যতাকে কুফর বলে।
ইমান এর পূর্ণ অর্থ কি?
ইমান (আরবি: إِيمَان, ʾīmān, lit. 'বিশ্বাস' বা 'বিশ্বাস', এছাড়াও 'স্বীকৃতি ') ইসলামী ধর্মতত্ত্বে ইসলামের ধর্মীয় দিকগুলিতে একজন বিশ্বাসীর বিশ্বাস এবং কর্মের স্বীকৃতিকে বোঝায়। এর সবচেয়ে সহজ সংজ্ঞা হল বিশ্বাসের ছয়টি প্রবন্ধে বিশ্বাস, যা আরকান আল-ইমান নামে পরিচিত।
ঈমানের সর্বপ্রথম ও সর্বপ্রধান বিষয় কি?
ঈমানের ছয়টি মৌলিক স্তম্ভের প্রথম এবং প্রধান স্তম্ভ হলো মহান আল্লাহর ওপর ঈমান তথা বিশ্বাস স্থাপন করা। আল্লাহর ওপর ঈমান আনার অর্থ এ কথা বিশ্বাস করা, আল্লাহ এক, অদ্বিতীয় ও অতুলনীয়।
ঈমানের ফল কি?
ইমানের ফল : ইমান মানুষের মনে আল্লাহর আনুগত্য ও আল্লাহর ভয় সৃষ্টি করে। ইমানের ফলে মানুষের নৈতিক চরিত্র উন্নত হয়। একজন মানুষ ইমানদার হলে তার মধ্যে আল্লাহ ও পরকালের ভয় থাকবে। একজন মুমিন ব্যক্তি সদা সত্য কথা বলবেন।
ইমানের বহিঃপ্রকাশ কোনটি?
ইসলাম হলো ইমানের বহিঃপ্রকাশ ।
ঈমান ও ইসলামের মধ্যে পার্থক্য কি?
ইমান হলো আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সা.) যা কিছু আদেশ করেছেন সেগুলোর ওপর দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন করা। আর ইসলাম হলো আল্লাহ ও তার রাসূল (সা.) যা কিছু আদেশ করেছেন এবং সে অনুযায়ী আমল করার নাম।
কুফর বলতে কি বুঝায়?
‌‌‌কাফির (আরবি: كافِر) একটি আরবি শব্দ, যা আরবি কুফর (আরবি: َكَفَر) ধাতু থেকে আগত, যার শাব্দিক অর্থ হল ঢেকে রাখা, লুকিয়ে রাখা এবং এর ব্যবহারিক অর্থ হল অবাধ্যতা, অস্বীকার করা, অকৃতজ্ঞতা। ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় কুফর ঈমানের বিপরীত।
ঈমান মানুষকে সঠিক পথে পরিচালিত করার মাধ্যমে সৌভাগ্যবান বানায়। পক্ষান্তরে কুফর মানুষকে হতভাগ্য ও দুর্ভাগা বানায়। ঈমান মানুষকে আলোর পথ দেখায়, আর কুফর মানুষকে অন্ধকারের পথে পরিচালিত করে। ঈমানের শেষ পরিণাম জান্নাত আর কুফরের চূড়ান্ত পরিণতি জাহান্নাম।
আমাদের উচিত ঈমানের পথে পরিচালিত হওয়া, কুফরের পথ পরিহার করা। আসুন, কোরআন-হাদিসের আলোকে ঈমানের উপকারিতা এবং কুফরের ভয়াবহতা সম্পর্কে জেনে নিই।
ঈমানের উপকারিতা
ঈমান হলো আল্লাহ তাআলার একত্ববাদে বিশ্বাস করা। তার ফেরেশতা, কিতাব, নবী-রাসুল, শেষ দিবস ও ভাগ্যের ভালো-মন্দের ওপর বিশ্বাস রাখা (মুসলিম, হাদিস : ১)
এগুলো মনেপ্রাণে বিশ্বাস করা, মুখে স্বীকৃতি দেওয়া এবং কার্যে পরিণত করা।
যে ব্যক্তি এমনটা করবে সে মুমিন বলে স্বীকৃত হবে। সে দুনিয়া ও আখিরাতে আল্লাহ ঘোষিত বিভিন্ন পুরস্কারে পুরস্কৃত হবে।
পবিত্র ও আনন্দময় জীবন লাভ : ঈমানের কারণে ব্যক্তি দুনিয়ায় পবিত্র ও আনন্দময় জীবন লাভ করবে। মুমিন ব্যক্তি আল্লাহর পক্ষ থেকে দুনিয়ায় কলুষমুক্ত, স্বচ্ছ-সফেদ, নির্ঝঞ্ঝাট জীবনের উত্তারাধিকারী হবে। আল্লাহ পকিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘মুমিন হয়ে পুরুষ ও নারীর মধ্যে যে কেউ সৎকাজ করবে, অবশ্যই আমরা তাকে পবিত্র জীবন দান করব।
(সুরা : নাহল, আয়াত : ৯৭)
বেশির ভাগ মুফাসসিরের মতে, আয়াতে ‘হায়াতে তাইয়্যিবা’ বলতে দুনিয়ার স্বাচ্ছন্দ্যময় পবিত্র জীবনকে বোঝানো হয়েছে। (মাআরেফুল কোরআন : ১৪৪৬)
নিজ কর্মে দৃঢ়তা ও অবিচলতা অর্জন : ঈমানের কারণে ব্যক্তি দুনিয়া ও আখিরাতে আল্লাহর পক্ষ থেকে নিরাপত্তা লাভ করে। কাজকর্মে অবিচলতা ও অটলতা অর্জন করে। আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য লাভে ধন্য হয়। ঈমানহারা মানুষ প্রবৃত্তির তাড়নায় যখন দিশাহারা হয়ে যায়, উদ্ভ্রান্তের মতো ঘুরতে থাকে, ঈমানদাররা তখন আল্লাহ বিশ্বাসের কারণে তাড়না ও হতাশামুক্ত জীবনের তাওফিক পায়। আবার কবরে ফেরেশতাদের প্রশ্নে এবং কিয়ামতের বিভীষিকায়ও আল্লাহ তাআলার নিরাপত্তার চাদরে বেষ্টিত থাকবে এবং দৃঢ়তা অর্জন করবে। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘যারা ঈমান এনেছে, আল্লাহ তাদের সুদৃঢ় বাক্যের দ্বারা দুনিয়ার জীবনে ও আখিরাতে সুপ্রতিষ্ঠিত রাখবেন।’ (সুরা : ইবরাহিম, আয়াত : ২৭)
দুনিয়ার জীবনে বরকতপ্রাপ্তি : ঈমানের কারণে ব্যক্তি দুনিয়ার জীবনে বরকত লাভ করবে, প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে। বরকত বলতে শুধু কোনো কিছুর আধিক্য বোঝায় না; বরকত হচ্ছে কোনো কিছু নিয়মিত থাকা। ঈমানের কারণে ব্যক্তি আসমান ও জমিনের বরকত লাভে ধন্য হয়। সঠিক সময়ে আসমান বৃষ্টি বর্ষণ করে আর জমিন থেকে মনঃপূত জিনিস উৎপন্ন হয়। সুরা আরাফের ৯৬ নম্বর আয়াতে এসেছে, ‘আর যদি সেই সব জনপদের অধিবাসীরা ঈমান আনত এবং তাকওয়া অবলম্বন করত তাহলে অবশ্যই আমরা তাদের জন্য আসমান ও জমিনের বরকতসমূহ উন্মুক্ত করে দিতাম।’ একমাত্র ঈমানের কারণে মানুষ দুনিয়া ও আখিরাতের এই বরকত পেতে পারে।
আল্লাহর নিরাপত্তা লাভে ধন্য হওয়া : আল্লাহর নিরাপত্তাই প্রকৃত নিরাপত্তা। সেই ব্যক্তি ধন্য, যে তা লাভ করবে। ঈমানদাররা দুনিয়া ও আখিরাতে আল্লাহ তাআলার আজাব, গজব, শাস্তি ও বিভীষিকা থেকে নিরাপত্তা লাভ করবে একমাত্র ঈমানের ওপর অটল থাকার কারণে। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের ঈমানকে জুলুম (শিরক) দ্বারা কলুষিত করেনি, নিরাপত্তা তাদেরই জন্য এবং তারাই হিদায়াতপ্রাপ্ত।’(সুরা : আনআম, আয়াত : ৮২)
শত্রুদের থেকে হেফাজত থাকবে : ঈমানের কারণে আল্লাহ তাআলা ব্যক্তিকে শারীরিক, মানসিক, আর্থিকসহ সব ধরনের ক্ষয়ক্ষতি থেকে হেফাজতে রাখবেন। কোরআনে এসেছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ মুমিনদের পক্ষ থেকে প্রতিরোধ করেন।’ (সুরা : হাজ, আয়াত : ৩৮)
চিরকাঙ্ক্ষিত জান্নাত অর্জন : ঈমানের চূড়ান্ত পরিণাম হলো, ঈমান ব্যক্তিকে চিরকাঙ্ক্ষিত জান্নাতে প্রবেশ করাবে। যারা ঈমান আনবে, আল্লাহ খুশি হয়ে তাদের জন্য চিরস্থায়ী জান্নাতে বসবাসের সুযোগ করে দেবেন। অনন্তকালের জন্য সুখের বন্দোবস্ত হয়ে যাবে। কোরআনে এসেছে, ‘আর যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে তাদের শুভ সংবাদ দিন যে তাদের জন্য আছে জান্নাত, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত।’
(সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ২৫)
কুফরের ভয়াবহতা
কুফর অর্থ অবিশ্বাস করা, অস্বীকার করা, অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা ইত্যাদি। ইসলামী পরিভাষায় কুফর বলতে বোঝায় আল্লাহ, তার রাসুল ও ঈমানের অন্যান্য বিষয়ে বিশ্বাসের অবিদ্যমানতা। কুফর ব্যক্তিকে আল্লাহর অবাধ্য বানায় এবং জাহান্নামের উপযুক্ত করে। কোরআনে এসেছে, ‘তারা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যারা আল্লাহর সাক্ষাৎ অস্বীকার করেছে।’ (সুরা : ইউনুস, আয়াত : ৪৫)
সংকীর্ণ জীবনের অধিকারী হওয়া : মনুষ্যজীবনে কুফর এমন এক অভিশাপের নাম, যার কারণে আল্লাহ ব্যক্তির জীবন সংকীর্ণ করে দেন। দুনিয়াবি আসবাব আর ধন-সম্পদ পরিপূর্ণ থাকার পরও মনে হবে, যেন কিছুই নেই। মনের স্বস্তি ও শান্তি উবে যাবে। কোনো কিছুতেই মন ভরবে না। চারদিক থেকে সংকীর্ণতা জেঁকে বসবে। আল্লাহ বলেছেন, ‘আর যে আমার স্মরণ থেকে বিমুখ হয়, তার জীবনযাপন হবে সংকুচিত আর আমরা তাকে কিয়ামতের দিন উত্থিত করব অন্ধ অবস্থায়।’
(সুরা : ত্বহা, আয়াত : ১২৪)
সংঘাতময় অশান্ত পৃথিবী : কুফর এমন একটি খারাপ কর্ম, যার কারণে মানুষ নিজ স্রষ্টাকে অস্বীকার করে। তার ওপর এমন কিছু অপবাদ আরোপ করে, যা তার সত্তার সঙ্গে যায় না। তখন আল্লাহর গোসসা ও ক্রোধ এতটাই বেড়ে যায় যে আসমান-জমিন ধ্বংস হওয়ার উপক্রম হয়। তবে আল্লাহ তার অনুগ্রহে পৃথিবীকে শান্ত রাখেন। কোরআনে এসেছে, ‘আর তারা বলে, দয়াময় সন্তান গ্রহণ করেছেন। তোমরা তো এমন এক বীভৎস বিষয়ের অবতারণা করেছ, যাতে আসমানসমূহ বিদীর্ণ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়, আর জমিন খণ্ডবিখণ্ড এবং পর্বতমালা চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে আপতিত হবে।’
(সুরা : মারইয়াম, আয়াত : ৮৮-৯০)
কুফর ব্যক্তিকে দয়ামায়াবঞ্চিত করে : পৃথিবীকে সংঘাতময়, বসবাসের অনপুযোগী করার দায়ভার একমাত্র কুফরের। আল্লাহর ওপর অবিশ্বাসীরাই দুনিয়াকে অশান্ত করার পেছনে একমাত্র দায়ী। তাই কাফেরের প্রতি দুনিয়ার কোনো সৃষ্টজীবের মায়া থাকে না। তাদের কষ্টে ও ধ্বংসে কেউ ব্যথিত হয় না। কাঁদে না। কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘আকাশ ও পৃথিবী কেউই তাদের জন্য অশ্রুপাত করেনি এবং তাদের অবকাশও দেওয়া হয়নি।’
(সুরা : দুখান, আয়াত : ২৯)
আল্লাহর ঘৃণা ও আজাবের উপযুক্ত করে : কুফর ব্যক্তিকে আল্লাহর ঘৃণা ও আজাব-গজবের উপযুক্ত করে। দুনিয়ায় যত জাতি ধ্বংস হয়েছে, তারা নিজেদের পাপ ও কুফরির কারণে ধ্বংস হয়েছে। পরকালে যারা জাহান্নামে চিরস্থায়ী হবে, তারাও কুফরের কারণে শাস্তির সম্মুখীন হবে। দুনিয়ায় বালা-মুসিবত নাজিলের কারণ মানুষের কুফরি। আল্লাহ বলেন, ‘যারা কুকর্মের ষড়যন্ত্র করে, তারা কি এ বিষয়ে নির্ভয় হয়েছে যে আল্লাহ তাদের ভূগর্ভে বিলীন করবেন না অথবা তাদের ওপর আসবে না শাস্তি এমনভাবে যে তারা উপলব্ধিও করবে না। অথবা চলাফেরাকালে তিনি তাদের পাকরাও করবেন না? আর তারা তা ব্যর্থ করতে পারবে না।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ৪৫,৪৬)
অনিবার্য ধ্বংসের মুখোমুখি করে : কিয়ামতের সফলতা প্রকৃত সফলতা, আর সেদিনের ব্যর্থতা প্রকৃত ব্যর্থতা। কুফর ব্যক্তিকে সেদিন অনিবার্য ধ্বংসের মুখোমুখি করে। তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপের মাধ্যমে চূড়ান্ত ব্যর্থ করে। আল্লাহ বলেন, ‘আর যাদের নেকির পাল্লা হালকা হবে, তারা হবে সেই সব লোক, যারা নিজেদের ধ্বংস ও ক্ষতি নিজেরাই করেছে, কারণ তারা আমার নিদর্শনসমূহ প্রত্যাখ্যান করত।’
(সুরা : আরাফ, আয়াত : ৯)
কুফরের চূড়ান্ত পরিণাম চিরস্থায়ী জাহান্নাম : কুফর কাফেরকে চিরস্থায়ীভাবে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবে, যা থেকে পরিত্রাণের কোনো উপায় তাদের থাকবে না। আল্লাহ বলেছেন, ‘আর আপনি যদি সেই অবস্থা দেখতেন, যখন ফেরেশতারা তাদের রুহ কবজ করার সময় তাদের মুখমণ্ডলে ও পৃষ্ঠদেশে আঘাত করেন।’
(সুরা : আনফাল, আয়াত : ৫০)
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
ঈমানের উপকারিতা এবং কুফরের ভয়াবহতা
0 notes
ilyforallahswt · 2 days ago
Text
Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media
ঈমানের উপকারিতা এবং কুফরের ভয়াবহতা
ঈমান ও কুফর
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
ঈমানের উপকারিতা এবং কুফরের ভয়াবহতা
ঈমান অর্থ আস্থা, বিশ্বাস, প্রত্যয়, প্রতিজ্ঞা। ঈমান বলতে একক অদ্বিতীয় আল্লাহকে বিশ্বাস করা বোঝায়। আর কুফর হলো অস্বীকার, অবিশ্বাস ও অমান্যতার নাম। পরিভাষায়, এক আল্লাহয় অবিশ্বাস ও অমান্যতাকে কুফর বলে।
ইমান এর পূর্ণ অর্থ কি?
ইমান (আরবি: إِيمَان, ʾīmān, lit. 'বিশ্বাস' বা 'বিশ্বাস', এছাড়াও 'স্বীকৃতি ') ইসলামী ধর্মতত্ত্বে ইসলামের ধর্মীয় দিকগুলিতে একজন বিশ্বাসীর বিশ্বাস এবং কর্মের স্বীকৃতিকে বোঝায়। এর সবচেয়ে সহজ সংজ্ঞা হল বিশ্বাসের ছয়টি প্রবন্ধে বিশ্বাস, যা আরকান আল-ইমান নামে পরিচিত।
ঈমানের সর্বপ্রথম ও সর্বপ্রধান বিষয় কি?
ঈমানের ছয়টি মৌলিক স্তম্ভের প্রথম এবং প্রধান স্তম্ভ হলো মহান আল্লাহর ওপর ঈমান তথা বিশ্বাস স্থাপন করা। আল্লাহর ওপর ঈমান আনার অর্থ এ কথা বিশ্বাস করা, আল্লাহ এক, অদ্বিতীয় ও অতুলনীয়।
ঈমানের ফল কি?
ইমানের ফল : ইমান মানুষের মনে আল্লাহর আনুগত্য ও আল্লাহর ভয় সৃষ্টি করে। ইমানের ফলে মানুষের নৈতিক চরিত্র উন্নত হয়। একজন মানুষ ইমানদার হলে তার মধ্যে আল্লাহ ও পরকালের ভয় থাকবে। একজন মুমিন ব্যক্তি সদা সত্য কথা বলবেন।
ইমানের বহিঃপ্রকাশ কোনটি?
ইসলাম হলো ইমানের বহিঃপ্রকাশ ।
ঈমান ও ইসলামের মধ্যে পার্থক্য কি?
ইমান হলো আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সা.) যা কিছু আদেশ করেছেন সেগুলোর ওপর দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন করা। আর ইসলাম হলো আল্লাহ ও তার রাসূল (সা.) যা কিছু আদেশ করেছেন এবং সে অনুযায়ী আমল করার নাম।
কুফর বলতে কি বুঝায়?
‌‌‌কাফির (আরবি: كافِر) একটি আরবি শব্দ, যা আরবি কুফর (আরবি: َكَفَر) ধাতু থেকে আগত, যার শাব্দিক অর্থ হল ঢেকে রাখা, লুকিয়ে রাখা এবং এর ব্যবহারিক অর্থ হল অবাধ্যতা, অস্বীকার করা, অকৃতজ্ঞতা। ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় কুফর ঈমানের বিপরীত।
ঈমান মানুষকে সঠিক পথে পরিচালিত করার মাধ্যমে সৌভাগ্যবান বানায়। পক্ষান্তরে কুফর মানুষকে হতভাগ্য ও দুর্ভাগা বানায়। ঈমান মানুষকে আলোর পথ দেখায়, আর কুফর মানুষকে অন্ধকারের পথে পরিচালিত করে। ঈমানের শেষ পরিণাম জান্নাত আর কুফরের চূড়ান্ত পরিণতি জাহান্নাম।
আমাদের উচিত ঈমানের পথে পরিচালিত হওয়া, কুফরের পথ পরিহার করা। আসুন, কোরআন-হাদিসের আলোকে ঈমানের উপকারিতা এবং কুফরের ভয়াবহতা সম্পর্কে জেনে নিই।
ঈমানের উপকারিতা
ঈমান হলো আল্লাহ তাআলার একত্ববাদে বিশ্বাস করা। তার ফেরেশতা, কিতাব, নবী-রাসুল, শেষ দিবস ও ভাগ্যের ভালো-মন্দের ওপর বিশ্বাস রাখা (মুসলিম, হাদিস : ১)
এগুলো মনেপ্রাণে বিশ্বাস করা, মুখে স্বীকৃতি দেওয়া এবং কার্যে পরিণত করা।
যে ব্যক্তি এমনটা করবে সে মুমিন বলে স্বীকৃত হবে। সে দুনিয়া ও আখিরাতে আল্লাহ ঘোষিত বিভিন্ন পুরস্কারে পুরস্কৃত হবে।
পবিত্র ও আনন্দময় জীবন লাভ : ঈমানের কারণে ব্যক্তি দুনিয়ায় পবিত্র ও আনন্দময় জীবন লাভ করবে। মুমিন ব্যক্তি আল্লাহর পক্ষ থেকে দুনিয়ায় কলুষমুক্ত, স্বচ্ছ-সফেদ, নির্ঝঞ্ঝাট জীবনের উত্তারাধিকারী হবে। আল্লাহ পকিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘মুমিন হয়ে পুরুষ ও নারীর মধ্যে যে কেউ সৎকাজ করবে, অবশ্যই আমরা তাকে পবিত্র জীবন দান করব।
(সুরা : নাহল, আয়াত : ৯৭)
বেশির ভাগ মুফাসসিরের মতে, আয়াতে ‘হায়াতে তাইয়্যিবা’ বলতে দুনিয়ার স্বাচ্ছন্দ্যময় পবিত্র জীবনকে বোঝানো হয়েছে। (মাআরেফুল কোরআন : ১৪৪৬)
নিজ কর্মে দৃঢ়তা ও অবিচলতা অর্জন : ঈমানের কারণে ব্যক্তি দুনিয়া ও আখিরাতে আল্লাহর পক্ষ থেকে নিরাপত্তা লাভ করে। কাজকর্মে অবিচলতা ও অটলতা অর্জন করে। আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য লাভে ধন্য হয়। ঈমানহারা মানুষ প্রবৃত্তির তাড়নায় যখন দিশাহারা হয়ে যায়, উদ্ভ্রান্তের মতো ঘুরতে থাকে, ঈমানদাররা তখন আল্লাহ বিশ্বাসের কারণে তাড়না ও হতাশামুক্ত জীবনের তাওফিক পায়। আবার কবরে ফেরেশতাদের প্রশ্নে এবং কিয়ামতের বিভীষিকায়ও আল্লাহ তাআলার নিরাপত্তার চাদরে বেষ্টিত থাকবে এবং দৃঢ়তা অর্জন করবে। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘যারা ঈমান এনেছে, আল্লাহ তাদের সুদৃঢ় বাক্যের দ্বারা দুনিয়ার জীবনে ও আখিরাতে সুপ্রতিষ্ঠিত রাখবেন।’ (সুরা : ইবরাহিম, আয়াত : ২৭)
দুনিয়ার জীবনে বরকতপ্রাপ্তি : ঈমানের কারণে ব্যক্তি দুনিয়ার জীবনে বরকত লাভ করবে, প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে। বরকত বলতে শুধু কোনো কিছুর আধিক্য বোঝায় না; বরকত হচ্ছে কোনো কিছু নিয়মিত থাকা। ঈমানের কারণে ব্যক্তি আসমান ও জমিনের বরকত লাভে ধন্য হয়। সঠিক সময়ে আসমান বৃষ্টি বর্ষণ করে আর জমিন থেকে মনঃপূত জিনিস উৎপন্ন হয়। সুরা আরাফের ৯৬ নম্বর আয়াতে এসেছে, ‘আর যদি সেই সব জনপদের অধিবাসীরা ঈমান আনত এবং তাকওয়া অবলম্বন করত তাহলে অবশ্যই আমরা তাদের জন্য আসমান ও জমিনের বরকতসমূহ উন্মুক্ত করে দিতাম।’ একমাত্র ঈমানের কারণে মানুষ দুনিয়া ও আখিরাতের এই বরকত পেতে পারে।
আল্লাহর নিরাপত্তা লাভে ধন্য হওয়া : আল্লাহর নিরাপত্তাই প্রকৃত নিরাপত্তা। সেই ব্যক্তি ধন্য, যে তা লাভ করবে। ঈমানদাররা দুনিয়া ও আখিরাতে আল্লাহ তাআলার আজাব, গজব, শাস্তি ও বিভীষিকা থেকে নিরাপত্তা লাভ করবে একমাত্র ঈমানের ওপর অটল থাকার কারণে। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের ঈমানকে জুলুম (শিরক) দ্বারা কলুষিত করেনি, নিরাপত্তা তাদেরই জন্য এবং তারাই হিদায়াতপ্রাপ্ত।’(সুরা : আনআম, আয়াত : ৮২)
শত্রুদের থেকে হেফাজত থাকবে : ঈমানের কারণে আল্লাহ তাআলা ব্যক্তিকে শারীরিক, মানসিক, আর্থিকসহ সব ধরনের ক্ষয়ক্ষতি থেকে হেফাজতে রাখবেন। কোরআনে এসেছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ মুমিনদের পক্ষ থেকে প্রতিরোধ করেন।’ (সুরা : হাজ, আয়াত : ৩৮)
চিরকাঙ্ক্ষিত জান্নাত অর্জন : ঈমানের চূড়ান্ত পরিণাম হলো, ঈমান ব্যক্তিকে চিরকাঙ্ক্ষিত জান্নাতে প্রবেশ করাবে। যারা ঈমান আনবে, আল্লাহ খুশি হয়ে তাদের জন্য চিরস্থায়ী জান্নাতে বসবাসের সুযোগ করে দেবেন। অনন্তকালের জন্য সুখের বন্দোবস্ত হয়ে যাবে। কোরআনে এসেছে, ‘আর যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে তাদের শুভ সংবাদ দিন যে তাদের জন্য আছে জান্নাত, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত।’
(সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ২৫)
কুফরের ভয়াবহতা
কুফর অর্থ অবিশ্বাস করা, অস্বীকার করা, অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা ইত্যাদি। ইসলামী পরিভাষায় কুফর বলতে বোঝায় আল্লাহ, তার রাসুল ও ঈমানের অন্যান্য বিষয়ে বিশ্বাসের অবিদ্যমানতা। কুফর ব্যক্তিকে আল্লাহর অবাধ্য বানায় এবং জাহান্নামের উপযুক্ত করে। কোরআনে এসেছে, ‘তারা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যারা আল্লাহর সাক্ষাৎ অস্বীকার করেছে।’ (সুরা : ইউনুস, আয়াত : ৪৫)
সংকীর্ণ জীবনের অধিকারী হওয়া : মনুষ্যজীবনে কুফর এমন এক অভিশাপের নাম, যার কারণে আল্লাহ ব্যক্তির জীবন সংকীর্ণ করে দেন। দুনিয়াবি আসবাব আর ধন-সম্পদ পরিপূর্ণ থাকার পরও মনে হবে, যেন কিছুই নেই। মনের স্বস্তি ও শান্তি উবে যাবে। কোনো কিছুতেই মন ভরবে না। চারদিক থেকে সংকীর্ণতা জেঁকে বসবে। আল্লাহ বলেছেন, ‘আর যে আমার স্মরণ থেকে বিমুখ হয়, তার জীবনযাপন হবে সংকুচিত আর আমরা তাকে কিয়ামতের দিন উত্থিত করব অন্ধ অবস্থায়।’
(সুরা : ত্বহা, আয়াত : ১২৪)
সংঘাতময় অশান্ত পৃথিবী : কুফর এমন একটি খারাপ কর্ম, যার কারণে মানুষ নিজ স্রষ্টাকে অস্বীকার করে। তার ওপর এমন কিছু অপবাদ আরোপ করে, যা তার সত্তার সঙ্গে যায় না। তখন আল্লাহর গোসসা ও ক্রোধ এতটাই বেড়ে যায় যে আসমান-জমিন ধ্বংস হওয়ার উপক্রম হয়। তবে আল্লাহ তার অনুগ্রহে পৃথিবীকে শান্ত রাখেন। কোরআনে এসেছে, ‘আর তারা বলে, দয়াময় সন্তান গ্রহণ করেছেন। তোমরা তো এমন এক বীভৎস বিষয়ের অবতারণা করেছ, যাতে আসমানসমূহ বিদীর্ণ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়, আর জমিন খণ্ডবিখণ্ড এবং পর্বতমালা চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে আপতিত হবে।’
(সুরা : মারইয়াম, আয়াত : ৮৮-৯০)
কুফর ব্যক্তিকে দয়ামায়াবঞ্চিত করে : পৃথিবীকে সংঘাতময়, বসবাসের অনপুযোগী করার দায়ভার একমাত্র কুফরের। আল্লাহর ওপর অবিশ্বাসীরাই দুনিয়াকে অশান্ত করার পেছনে একমাত্র দায়ী। তাই কাফেরের প্রতি দুনিয়ার কোনো সৃষ্টজীবের মায়া থাকে না। তাদের কষ্টে ও ধ্বংসে কেউ ব্যথিত হয় না। কাঁদে না। কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘আকাশ ও পৃথিবী কেউই তাদের জন্য অশ্রুপাত করেনি এবং তাদের অবকাশও দেওয়া হয়নি।’
(সুরা : দুখান, আয়াত : ২৯)
আল্লাহর ঘৃণা ও আজাবের উপযুক্ত করে : কুফর ব্যক্তিকে আল্লাহর ঘৃণা ও আজাব-গজবের উপযুক্ত করে। দুনিয়ায় যত জাতি ধ্বংস হয়েছে, তারা নিজেদের পাপ ও কুফরির কারণে ধ্বংস হয়েছে। পরকালে যারা জাহান্নামে চিরস্থায়ী হবে, তারাও কুফরের কারণে শাস্তির সম্মুখীন হবে। দুনিয়ায় বালা-মুসিবত নাজিলের কারণ মানুষের কুফরি। আল্লাহ বলেন, ‘যারা কুকর্মের ষড়যন্ত্র করে, তারা কি এ বিষয়ে নির্ভয় হয়েছে যে আল্লাহ তাদের ভূগর্ভে বিলীন করবেন না অথবা তাদের ওপর আসবে না শাস্তি এমনভাবে যে তারা উপলব্ধিও করবে না। অথবা চলাফেরাকালে তিনি তাদের পাকরাও করবেন না? আর তারা তা ব্যর্থ করতে পারবে না।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ৪৫,৪৬)
অনিবার্য ধ্বংসের মুখোমুখি করে : কিয়ামতের সফলতা প্রকৃত সফলতা, আর সেদিনের ব্যর্থতা প্রকৃত ব্যর্থতা। কুফর ব্যক্তিকে সেদিন অনিবার্য ধ্বংসের মুখোমুখি করে। তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপের মাধ্যমে চূড়ান্ত ব্যর্থ করে। আল্লাহ বলেন, ‘আর যাদের নেকির পাল্লা হালকা হবে, তারা হবে সেই সব লোক, যারা নিজেদের ধ্বংস ও ক্ষতি নিজেরাই করেছে, কারণ তারা আমার নিদর্শনসমূহ প্রত্যাখ্যান করত।’
(সুরা : আরাফ, আয়াত : ৯)
কুফরের চূড়ান্ত পরিণাম চিরস্থায়ী জাহান্নাম : কুফর কাফেরকে চিরস্থায়ীভাবে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবে, যা থেকে পরিত্রাণের কোনো উপায় তাদের থাকবে না। আল্লাহ বলেছেন, ‘আর আপনি যদি সেই অবস্থা দেখতেন, যখন ফেরেশতারা তাদের রুহ কবজ করার সময় তাদের মুখমণ্ডলে ও পৃষ্ঠদেশে আঘাত করেন।’
(সুরা : আনফাল, আয়াত : ৫০)
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
ঈমানের উপকারিতা এবং কুফরের ভয়াবহতা
0 notes
myreligionislam · 2 days ago
Text
Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media
ঈমানের উপকারিতা এবং কুফরের ভয়াবহতা
ঈমান ও কুফর
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
ঈমানের উপকারিতা এবং কুফরের ভয়াবহতা
ঈমান অর্থ আস্থা, বিশ্বাস, প্রত্যয়, প্রতিজ্ঞা। ঈমান বলতে একক অদ্বিতীয় আল্লাহকে বিশ্বাস করা বোঝায়। আর কুফর হলো অস্বীকার, অবিশ্বাস ও অমান্যতার নাম। পরিভাষায়, এক আল্লাহয় অবিশ্বাস ও অমান্যতাকে কুফর বলে।
ইমান এর পূর্ণ অর্থ কি?
ইমান (আরবি: إِيمَان, ʾīmān, lit. 'বিশ্বাস' বা 'বিশ্বাস', এছাড়াও 'স্বীকৃতি ') ইসলামী ধর্মতত্ত্বে ইসলামের ধর্মীয় দিকগুলিতে একজন বিশ্বাসীর বিশ্বাস এবং কর্মের স্বীকৃতিকে বোঝায়। এর সবচেয়ে সহজ সংজ্ঞা হল বিশ্বাসের ছয়টি প্রবন্ধে বিশ্বাস, যা আরকান আল-ইমান নামে পরিচিত।
ঈমানের সর্বপ্রথম ও সর্বপ্রধান বিষয় কি?
ঈমানের ছয়টি মৌলিক স্তম্ভের প্রথম এবং প্রধান স্তম্ভ হলো মহান আল্লাহর ওপর ঈমান তথা বিশ্বাস স্থাপন করা। আল্লাহর ওপর ঈমান আনার অর্থ এ কথা বিশ্বাস করা, আল্লাহ এক, অদ্বিতীয় ও অতুলনীয়।
ঈমানের ফল কি?
ইমানের ফল : ইমান মানুষের মনে আল্লাহর আনুগত্য ও আল্লাহর ভয় সৃষ্টি করে। ইমানের ফলে মানুষের নৈতিক চরিত্র উন্নত হয়। একজন মানুষ ইমানদার হলে তার মধ্যে আল্লাহ ও পরকালের ভয় থাকবে। একজন মুমিন ব্যক্তি সদা সত্য কথা বলবেন।
ইমানের বহিঃপ্রকাশ কোনটি?
ইসলাম হলো ইমানের বহিঃপ্রকাশ ।
ঈমান ও ইসলামের মধ্যে পার্থক্য কি?
ইমান হলো আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সা.) যা কিছু আদেশ করেছেন সেগুলোর ওপর দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন করা। আর ইসলাম হলো আল্লাহ ও তার রাসূল (সা.) যা কিছু আদেশ করেছেন এবং সে অনুযায়ী আমল করার নাম।
কুফর বলতে কি বুঝায়?
‌‌‌কাফির (আরবি: كافِر) একটি আরবি শব্দ, যা আরবি কুফর (আরবি: َكَفَر) ধাতু থেকে আগত, যার শাব্দিক অর্থ হল ঢেকে রাখা, লুকিয়ে রাখা এবং এর ব্যবহারিক অর্থ হল অবাধ্যতা, অস্বীকার করা, অকৃতজ্ঞতা। ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় কুফর ঈমানের বিপরীত।
ঈমান মানুষকে সঠিক পথে পরিচালিত করার মাধ্যমে সৌভাগ্যবান বানায়। পক্ষান্তরে কুফর মানুষকে হতভাগ্য ও দুর্ভাগা বানায়। ঈমান মানুষকে আলোর পথ দেখায়, আর কুফর মানুষকে অন্ধকারের পথে পরিচালিত করে। ঈমানের শেষ পরিণাম জান্নাত আর কুফরের চূড়ান্ত পরিণতি জাহান্নাম।
আমাদের উচিত ঈমানের পথে পরিচালিত হওয়া, কুফরের পথ পরিহার করা। আসুন, কোরআন-হাদিসের আলোকে ঈমানের উপকারিতা এবং কুফরের ভয়াবহতা সম্পর্কে জেনে নিই।
ঈমানের উপকারিতা
ঈমান হলো আল্লাহ তাআলার একত্ববাদে বিশ্বাস করা। তার ফেরেশতা, কিতাব, নবী-রাসুল, শেষ দিবস ও ভাগ্যের ভালো-মন্দের ওপর বিশ্বাস রাখা (মুসলিম, হাদিস : ১)
এগুলো মনেপ্রাণে বিশ্বাস করা, মুখে স্বীকৃতি দেওয়া এবং কার্যে পরিণত করা।
যে ব্যক্তি এমনটা করবে সে মুমিন বলে স্বীকৃত হবে। সে দুনিয়া ও আখিরাতে আল্লাহ ঘোষিত বিভিন্ন পুরস্কারে পুরস্কৃত হবে।
পবিত্র ও আনন্দময় জীবন লাভ : ঈমানের কারণে ব্যক্তি দুনিয়ায় পবিত্র ও আনন্দময় জীবন লাভ করবে। মুমিন ব্যক্তি আল্লাহর পক্ষ থেকে দুনিয়ায় কলুষমুক্ত, স্বচ্ছ-সফেদ, নির্ঝঞ্ঝাট জীবনের উত্তারাধিকারী হবে। আল্লাহ পকিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘মুমিন হয়ে পুরুষ ও নারীর মধ্যে যে কেউ সৎকাজ করবে, অবশ্যই আমরা তাকে পবিত্র জীবন দান করব।
(সুরা : নাহল, আয়াত : ৯৭)
বেশির ভাগ মুফাসসিরের মতে, আয়াতে ‘হায়াতে তাইয়্যিবা’ বলতে দুনিয়ার স্বাচ্ছন্দ্যময় পবিত্র জীবনকে বোঝানো হয়েছে। (মাআরেফুল কোরআন : ১৪৪৬)
নিজ কর্মে দৃঢ়তা ও অবিচলতা অর্জন : ঈমানের কারণে ব্যক্তি দুনিয়া ও আখিরাতে আল্লাহর পক্ষ থেকে নিরাপত্তা লাভ করে। কাজকর্মে অবিচলতা ও অটলতা অর্জন করে। আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য লাভে ধন্য হয়। ঈমানহারা মানুষ প্রবৃত্তির তাড়নায় যখন দিশাহারা হয়ে যায়, উদ্ভ্রান্তের মতো ঘুরতে থাকে, ঈমানদাররা তখন আল্লাহ বিশ্বাসের কারণে তাড়না ও হতাশামুক্ত জীবনের তাওফিক পায়। আবার কবরে ফেরেশতাদের প্রশ্নে এবং কিয়ামতের বিভীষিকায়ও আল্লাহ তাআলার নিরাপত্তার চাদরে বেষ্টিত থাকবে এবং দৃঢ়তা অর্জন করবে। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘যারা ঈমান এনেছে, আল্লাহ তাদের সুদৃঢ় বাক্যের দ্বারা দুনিয়ার জীবনে ও আখিরাতে সুপ্রতিষ্ঠিত রাখবেন।’ (সুরা : ইবরাহিম, আয়াত : ২৭)
দুনিয়ার জীবনে বরকতপ্রাপ্তি : ঈমানের কারণে ব্যক্তি দুনিয়ার জীবনে বরকত লাভ করবে, প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে। বরকত বলতে শুধু কোনো কিছুর আধিক্য বোঝায় না; বরকত হচ্ছে কোনো কিছু নিয়মিত থাকা। ঈমানের কারণে ব্যক্তি আসমান ও জমিনের বরকত লাভে ধন্য হয়। সঠিক সময়ে আসমান বৃষ্টি বর্ষণ করে আর জমিন থেকে মনঃপূত জিনিস উৎপন্ন হয়। সুরা আরাফের ৯৬ নম্বর আয়াতে এসেছে, ‘আর যদি সেই সব জনপদের অধিবাসীরা ঈমান আনত এবং তাকওয়া অবলম্বন করত তাহলে অবশ্যই আমরা তাদের জন্য আসমান ও জমিনের বরকতসমূহ উন্মুক্ত করে দিতাম।’ একমাত্র ঈমানের কারণে মানুষ দুনিয়া ও আখিরাতের এই বরকত পেতে পারে।
আল্লাহর নিরাপত্তা লাভে ধন্য হওয়া : আল্লাহর নিরাপত্তাই প্রকৃত নিরাপত্তা। সেই ব্যক্তি ধন্য, যে তা লাভ করবে। ঈমানদাররা দুনিয়া ও আখিরাতে আল্লাহ তাআলার আজাব, গজব, শাস্তি ও বিভীষিকা থেকে নিরাপত্তা লাভ করবে একমাত্র ঈমানের ওপর অটল থাকার কারণে। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের ঈমানকে জুলুম (শিরক) দ্বারা কলুষিত করেনি, নিরাপত্তা তাদেরই জন্য এবং তারাই হিদায়াতপ্রাপ্ত।’(সুরা : আনআম, আয়াত : ৮২)
শত্রুদের থেকে হেফাজত থাকবে : ঈমানের কারণে আল্লাহ তাআলা ব্যক্তিকে শারীরিক, মানসিক, আর্থিকসহ সব ধরনের ক্ষয়ক্ষতি থেকে হেফাজতে রাখবেন। কোরআনে এসেছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ মুমিনদের পক্ষ থেকে প্রতিরোধ করেন।’ (সুরা : হাজ, আয়াত : ৩৮)
চিরকাঙ্ক্ষিত জান্নাত অর্জন : ঈমানের চূড়ান্ত পরিণাম হলো, ঈমান ব্যক্তিকে চিরকাঙ্ক্ষিত জান্নাতে প্রবেশ করাবে। যারা ঈমান আনবে, আল্লাহ খুশি হয়ে তাদের জন্য চিরস্থায়ী জান্নাতে বসবাসের সুযোগ করে দেবেন। অনন্তকালের জন্য সুখের বন্দোবস্ত হয়ে যাবে। কোরআনে এসেছে, ‘আর যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে তাদের শুভ সংবাদ দিন যে তাদের জন্য আছে জান্নাত, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত।’
(সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ২৫)
কুফরের ভয়াবহতা
কুফর অর্থ অবিশ্বাস করা, অস্বীকার করা, অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা ইত্যাদি। ইসলামী পরিভাষায় কুফর বলতে বোঝায় আল্লাহ, তার রাসুল ও ঈমানের অন্যান্য বিষয়ে বিশ্বাসের অবিদ্যমানতা। কুফর ব্যক্তিকে আল্লাহর অবাধ্য বানায় এবং জাহান্নামের উপযুক্ত করে। কোরআনে এসেছে, ‘তারা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যারা আল্লাহর সাক্ষাৎ অস্বীকার করেছে।’ (সুরা : ইউনুস, আয়াত : ৪৫)
সংকীর্ণ জীবনের অধিকারী হওয়া : মনুষ্যজীবনে কুফর এমন এক অভিশাপের নাম, যার কারণে আল্লাহ ব্যক্তির জীবন সংকীর্ণ করে দেন। দুনিয়াবি আসবাব আর ধন-সম্পদ পরিপূর্ণ থাকার পরও মনে হবে, যেন কিছুই নেই। মনের স্বস্তি ও শান্তি উবে যাবে। কোনো কিছুতেই মন ভরবে না। চারদিক থেকে সংকীর্ণতা জেঁকে বসবে। আল্লাহ বলেছেন, ‘আর যে আমার স্মরণ থেকে বিমুখ হয়, তার জীবনযাপন হবে সংকুচিত আর আমরা তাকে কিয়ামতের দিন উত্থিত করব অন্ধ অবস্থায়।’
(সুরা : ত্বহা, আয়াত : ১২৪)
সংঘাতময় অশান্ত পৃথিবী : কুফর এমন একটি খারাপ কর্ম, যার কারণে মানুষ নিজ স্রষ্টাকে অস্বীকার করে। তার ওপর এমন কিছু অপবাদ আরোপ করে, যা তার সত্তার সঙ্গে যায় না। তখন আল্লাহর গোসসা ও ক্রোধ এতটাই বেড়ে যায় যে আসমান-জমিন ধ্বংস হওয়ার উপক্রম হয়। তবে আল্লাহ তার অনুগ্রহে পৃথিবীকে শান্ত রাখেন। কোরআনে এসেছে, ‘আর তারা বলে, দয়াময় সন্তান গ্রহণ করেছেন। তোমরা তো এমন এক বীভৎস বিষয়ের অবতারণা করেছ, যাতে আসমানসমূহ বিদীর্ণ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়, আর জমিন খণ্ডবিখণ্ড এবং পর্বতমালা চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে আপতিত হবে।’
(সুরা : মারইয়াম, আয়াত : ৮৮-৯০)
কুফর ব্যক্তিকে দয়ামায়াবঞ্চিত করে : পৃথিবীকে সংঘাতময়, বসবাসের অনপুযোগী করার দায়ভার একমাত্র কুফরের। আল্লাহর ওপর অবিশ্বাসীরাই দুনিয়াকে অশান্ত করার পেছনে একমাত্র দায়ী। তাই কাফেরের প্রতি দুনিয়ার কোনো সৃষ্টজীবের মায়া থাকে না। তাদের কষ্টে ও ধ্বংসে কেউ ব্যথিত হয় না। কাঁদে না। কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘আকাশ ও পৃথিবী কেউই তাদের জন্য অশ্রুপাত করেনি এবং তাদের অবকাশও দেওয়া হয়নি।’
(সুরা : দুখান, আয়াত : ২৯)
আল্লাহর ঘৃণা ও আজাবের উপযুক্ত করে : কুফর ব্যক্তিকে আল্লাহর ঘৃণা ও আজাব-গজবের উপযুক্ত করে। দুনিয়ায় যত জাতি ধ্বংস হয়েছে, তারা নিজেদের পাপ ও কুফরির কারণে ধ্বংস হয়েছে। পরকালে যারা জাহান্নামে চিরস্থায়ী হবে, তারাও কুফরের কারণে শাস্তির সম্মুখীন হবে। দুনিয়ায় বালা-মুসিবত নাজিলের কারণ মানুষের কুফরি। আল্লাহ বলেন, ‘যারা কুকর্মের ষড়যন্ত্র করে, তারা কি এ বিষয়ে নির্ভয় হয়েছে যে আল্লাহ তাদের ভূগর্ভে বিলীন করবেন না অথবা তাদের ওপর আসবে না শাস্তি এমনভাবে যে তারা উপলব্ধিও করবে না। অথবা চলাফেরাকালে তিনি তাদের পাকরাও করবেন না? আর তারা তা ব্যর্থ করতে পারবে না।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ৪৫,৪৬)
অনিবার্য ধ্বংসের মুখোমুখি করে : কিয়ামতের সফলতা প্রকৃত সফলতা, আর সেদিনের ব্যর্থতা প্রকৃত ব্যর্থতা। কুফর ব্যক্তিকে সেদিন অনিবার্য ধ্বংসের মুখোমুখি করে। তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপের মাধ্যমে চূড়ান্ত ব্যর্থ করে। আল্লাহ বলেন, ‘আর যাদের নেকির পাল্লা হালকা হবে, তারা হবে সেই সব লোক, যারা নিজেদের ধ্বংস ও ক্ষতি নিজেরাই করেছে, কারণ তারা আমার নিদর্শনসমূহ প্রত্যাখ্যান করত।’
(সুরা : আরাফ, আয়াত : ৯)
কুফরের চূড়ান্ত পরিণাম চিরস্থায়ী জাহান্নাম : কুফর কাফেরকে চিরস্থায়ীভাবে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবে, যা থেকে পরিত্রাণের কোনো উপায় তাদের থাকবে না। আল্লাহ বলেছেন, ‘আর আপনি যদি সেই অবস্থা দেখতেন, যখন ফেরেশতারা তাদের রুহ কবজ করার সময় তাদের মুখমণ্ডলে ও পৃষ্ঠদেশে আঘাত করেন।’
(সুরা : আনফাল, আয়াত : ৫০)
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
ঈমানের উপকারিতা এবং কুফরের ভয়াবহতা
0 notes
allahisourrabb · 2 days ago
Text
Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media
ঈমানের উপকারিতা এবং কুফরের ভয়াবহতা
ঈমান ও কুফর
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
ঈমানের উপকারিতা এবং কুফরের ভয়াবহতা
ঈমান অর্থ আস্থা, বিশ্বাস, প্রত্যয়, প্রতিজ্ঞা। ঈমান বলতে একক অদ্বিতীয় আল্লাহকে বিশ্বাস করা বোঝায়। আর কুফর হলো অস্বীকার, অবিশ্বাস ও অমান্যতার নাম। পরিভাষায়, এক আল্লাহয় অবিশ্বাস ও অমান্যতাকে কুফর বলে।
ইমান এর পূর্ণ অর্থ কি?
ইমান (আরবি: إِيمَان, ʾīmān, lit. 'বিশ্বাস' বা 'বিশ্বাস', এছাড়াও 'স্বীকৃতি ') ইসলামী ধর্মতত্ত্বে ইসলামের ধর্মীয় দিকগুলিতে একজন বিশ্বাসীর বিশ্বাস এবং কর্মের স্বীকৃতিকে বোঝায়। এর সবচেয়ে সহজ সংজ্ঞা হল বিশ্বাসের ছয়টি প্রবন্ধে বিশ্বাস, যা আরকান আল-ইমান নামে পরিচিত।
ঈমানের সর্বপ্রথম ও সর্বপ্রধান বিষয় কি?
ঈমানের ছয়টি মৌলিক স্তম্ভের প্রথম এবং প্রধান স্তম্ভ হলো মহান আল্লাহর ওপর ঈমান তথা বিশ্বাস স্থাপন করা। আল্লাহর ওপর ঈমান আনার অর্থ এ কথা বিশ্বাস করা, আল্লাহ এক, অদ্বিতীয় ও অতুলনীয়।
ঈমানের ফল কি?
ইমানের ফল : ইমান মানুষের মনে আল্লাহর আনুগত্য ও আল্লাহর ভয় সৃষ্টি করে। ইমানের ফলে মানুষের নৈতিক চরিত্র উন্নত হয়। একজন মানুষ ইমানদার হলে তার মধ্যে আল্লাহ ও পরকালের ভয় থাকবে। একজন মুমিন ব্যক্তি সদা সত্য কথা বলবেন।
ইমানের বহিঃপ্রকাশ কোনটি?
ইসলাম হলো ইমানের বহিঃপ্রকাশ ।
ঈমান ও ইসলামের মধ্যে পার্থক্য কি?
ইমান হলো আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সা.) যা কিছু আদেশ করেছেন সেগুলোর ওপর দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন করা। আর ইসলাম হলো আল্লাহ ও তার রাসূল (সা.) যা কিছু আদেশ করেছেন এবং সে অনুযায়ী আমল করার নাম।
কুফর বলতে কি বুঝায়?
‌‌‌কাফির (আরবি: كافِر) একটি আরবি শব্দ, যা আরবি কুফর (আরবি: َكَفَر) ধাতু থেকে আগত, যার শাব্দিক অর্থ হল ঢেকে রাখা, লুকিয়ে রাখা এবং এর ব্যবহারিক অর্থ হল অবাধ্যতা, অস্বীকার করা, অকৃতজ্ঞতা। ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় কুফর ঈমানের বিপরীত।
ঈমান মানুষকে সঠিক পথে পরিচালিত করার মাধ্যমে সৌভাগ্যবান বানায়। পক্ষান্তরে কুফর মানুষকে হতভাগ্য ও দুর্ভাগা বানায়। ঈমান মানুষকে আলোর পথ দেখায়, আর কুফর মানুষকে অন্ধকারের পথে পরিচালিত করে। ঈমানের শেষ পরিণাম জান্নাত আর কুফরের চূড়ান্ত পরিণতি জাহান্নাম।
আমাদের উচিত ঈমানের পথে পরিচালিত হওয়া, কুফরের পথ পরিহার করা। আসুন, কোরআন-হাদিসের আলোকে ঈমানের উপকারিতা এবং কুফরের ভয়াবহতা সম্পর্কে জেনে নিই।
ঈমানের উপকারিতা
ঈমান হলো আল্লাহ তাআলার একত্ববাদে বিশ্বাস করা। তার ফেরেশতা, কিতাব, নবী-রাসুল, শেষ দিবস ও ভাগ্যের ভালো-মন্দের ওপর বিশ্বাস রাখা (মুসলিম, হাদিস : ১)
এগুলো মনেপ্রাণে বিশ্বাস করা, মুখে স্বীকৃতি দেওয়া এবং কার্যে পরিণত করা।
যে ব্যক্তি এমনটা করবে সে মুমিন বলে স্বীকৃত হবে। সে দুনিয়া ও আখিরাতে আল্লাহ ঘোষিত বিভিন্ন পুরস্কারে পুরস্কৃত হবে।
পবিত্র ও আনন্দময় জীবন লাভ : ঈমানের কারণে ব্যক্তি দুনিয়ায় পবিত্র ও আনন্দময় জীবন লাভ করবে। মুমিন ব্যক্তি আল্লাহর পক্ষ থেকে দুনিয়ায় কলুষমুক্ত, স্বচ্ছ-সফেদ, নির্ঝঞ্ঝাট জীবনের উত্তারাধিকারী হবে। আল্লাহ পকিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘মুমিন হয়ে পুরুষ ও নারীর মধ্যে যে কেউ সৎকাজ করবে, অবশ্যই আমরা তাকে পবিত্র জীবন দান করব।
(সুরা : নাহল, আয়াত : ৯৭)
বেশির ভাগ মুফাসসিরের মতে, আয়াতে ‘হায়াতে তাইয়্যিবা’ বলতে দুনিয়ার স্বাচ্ছন্দ্যময় পবিত্র জীবনকে বোঝানো হয়েছে। (মাআরেফুল কোরআন : ১৪৪৬)
নিজ কর্মে দৃঢ়তা ও অবিচলতা অর্জন : ঈমানের কারণে ব্যক্তি দুনিয়া ও আখিরাতে আল্লাহর পক্ষ থেকে নিরাপত্তা লাভ করে। কাজকর্মে অবিচলতা ও অটলতা অর্জন করে। আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য লাভে ধন্য হয়। ঈমানহারা মানুষ প্রবৃত্তির তাড়নায় যখন দিশাহারা হয়ে যায়, উদ্ভ্রান্তের মতো ঘুরতে থাকে, ঈমানদাররা তখন আল্লাহ বিশ্বাসের কারণে তাড়না ও হতাশামুক্ত জীবনের তাওফিক পায়। ���বার কবরে ফেরেশতাদের প্রশ্নে এবং কিয়ামতের বিভীষিকায়ও আল্লাহ তাআলার নিরাপত্তার চাদরে বেষ্টিত থাকবে এবং দৃঢ়তা অর্জন করবে। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘যারা ঈমান এনেছে, আল্লাহ তাদের সুদৃঢ় বাক্যের দ্বারা দুনিয়ার জীবনে ও আখিরাতে সুপ্রতিষ্ঠিত রাখবেন।’ (সুরা : ইবরাহিম, আয়াত : ২৭)
দুনিয়ার জীবনে বরকতপ্রাপ্তি : ঈমানের কারণে ব্যক্তি দুনিয়ার জীবনে বরকত লাভ করবে, প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে। বরকত বলতে শুধু কোনো কিছুর আধিক্য বোঝায় না; বরকত হচ্ছে কোনো কিছু নিয়মিত থাকা। ঈমানের কারণে ব্যক্তি আসমান ও জমিনের বরকত লাভে ধন্য হয়। সঠিক সময়ে আসমান বৃষ্টি বর্ষণ করে আর জমিন থেকে মনঃপূত জিনিস উৎপন্ন হয়। সুরা আরাফের ৯৬ নম্বর আয়াতে এসেছে, ‘আর যদি সেই সব জনপদের অধিবাসীরা ঈমান আনত এবং তাকওয়া অবলম্বন করত তাহলে অবশ্যই আমরা তাদের জন্য আসমান ও জমিনের বরকতসমূহ উন্মুক্ত করে দিতাম।’ একমাত্র ঈমানের কারণে মানুষ দুনিয়া ও আখিরাতের এই বরকত পেতে পারে।
আল্লাহর নিরাপত্তা লাভে ধন্য হওয়া : আল্লাহর নিরাপত্তাই প্রকৃত নিরাপত্তা। সেই ব্যক্তি ধন্য, যে তা লাভ করবে। ঈমানদাররা দুনিয়া ও আখিরাতে আল্লাহ তাআলার আজাব, গজব, শাস্তি ও বিভীষিকা থেকে নিরাপত্তা লাভ করবে একমাত্র ঈমানের ওপর অটল থাকার কারণে। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের ঈমানকে জুলুম (শিরক) দ্বারা কলুষিত করেনি, নিরাপত্তা তাদেরই জন্য এবং তারাই হিদায়াতপ্রাপ্ত।’(সুরা : আনআম, আয়াত : ৮২)
শত্রুদের থেকে হেফাজত থাকবে : ঈমানের কারণে আল্লাহ তাআলা ব্যক্তিকে শারীরিক, মানসিক, আর্থিকসহ সব ধরনের ক্ষয়ক্ষতি থেকে হেফাজতে রাখবেন। কোরআনে এসেছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ মুমিনদের পক্ষ থেকে প্রতিরোধ করেন।’ (সুরা : হাজ, আয়াত : ৩৮)
চিরকাঙ্ক্ষিত জান্নাত অর্জন : ঈমানের চূড়ান্ত পরিণাম হলো, ঈমান ব্যক্তিকে চিরকাঙ্ক্ষিত জান্নাতে প্রবেশ করাবে। যারা ঈমান আনবে, আল্লাহ খুশি হয়ে তাদের জন্য চিরস্থায়ী জান্নাতে বসবাসের সুযোগ করে দেবেন। অনন্তকালের জন্য সুখের বন্দোবস্ত হয়ে যাবে। কোরআনে এসেছে, ‘আর যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে তাদের শুভ সংবাদ দিন যে তাদের জন্য আছে জান্নাত, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত।’
(সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ২৫)
কুফরের ভয়াবহতা
কুফর অর্থ অবিশ্বাস করা, অস্বীকার করা, অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা ইত্যাদি। ইসলামী পরিভাষায় কুফর বলতে বোঝায় আল্লাহ, তার রাসুল ও ঈমানের অন্যান্য বিষয়ে বিশ্বাসের অবিদ্যমানতা। কুফর ব্যক্তিকে আল্লাহর অবাধ্য বানায় এবং জাহান্নামের উপযুক্ত করে। কোরআনে এসেছে, ‘তারা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যারা আল্লাহর সাক্ষাৎ অস্বীকার করেছে।’ (সুরা : ইউনুস, আয়াত : ৪৫)
সংকীর্ণ জীবনের অধিকারী হওয়া : মনুষ্যজীবনে কুফর এমন এক অভিশাপের নাম, যার কারণে আল্লাহ ব্যক্তির জীবন সংকীর্ণ করে দেন। দুনিয়াবি আসবাব আর ধন-সম্পদ পরিপূর্ণ থাকার পরও মনে হবে, যেন কিছুই নেই। মনের স্বস্তি ও শান্তি উবে যাবে। কোনো কিছুতেই মন ভরবে না। চারদিক থেকে সংকীর্ণতা জেঁকে বসবে। আল্লাহ বলেছেন, ‘আর যে আমার স্মরণ থেকে বিমুখ হয়, তার জীবনযাপন হবে সংকুচিত আর আমরা তাকে কিয়ামতের দিন উত্থিত করব অন্ধ অবস্থায়।’
(সুরা : ত্বহা, আয়াত : ১২৪)
সংঘাতময় অশান্ত পৃথিবী : কুফর এমন একটি খারাপ কর্ম, যার কারণে মানুষ নিজ স্রষ্টাকে অস্বীকার করে। তার ওপর এমন কিছু অপবাদ আরোপ করে, যা তার সত্তার সঙ্গে যায় না। তখন আল্লাহর গোসসা ও ক্রোধ এতটাই বেড়ে যায় যে আসমান-জমিন ধ্বংস হওয়ার উপক্রম হয়। তবে আল্লাহ তার অনুগ্রহে পৃথিবীকে শান্ত রাখেন। কোরআনে এসেছে, ‘আর তারা বলে, দয়াময় সন্তান গ্রহণ করেছেন। তোমরা তো এমন এক বীভৎস বিষয়ের অবতারণা করেছ, যাতে আসমানসমূহ বিদীর্ণ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়, আর জমিন খণ্ডবিখণ্ড এবং পর্বতমালা চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে আপতিত হবে।’
(সুরা : মারইয়াম, আয়াত : ৮৮-৯০)
কুফর ব্যক্তিকে দয়ামায়াবঞ্চিত করে : পৃথিবীকে সংঘাতময়, বসবাসের অনপুযোগী করার দায়ভার একমাত্র কুফরের। আল্লাহর ওপর অবিশ্বাসীরাই দুনিয়াকে অশান্ত করার পেছনে একমাত্র দায়ী। তাই কাফেরের প্রতি দুনিয়ার কোনো সৃষ্টজীবের মায়া থাকে না। তাদের কষ্টে ও ধ্বংসে কেউ ব্যথিত হয় না। কাঁদে না। কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘আকাশ ও পৃথিবী কেউই তাদের জন্য অশ্রুপাত করেনি এবং তাদের অবকাশও দেওয়া হয়নি।’
(সুরা : দুখান, আয়াত : ২৯)
আল্লাহর ঘৃণা ও আজাবের উপযুক্ত করে : কুফর ব্যক্তিকে আল্লাহর ঘৃণা ও আজাব-গজবের উপযুক্ত করে। দুনিয়ায় যত জাতি ধ্বংস হয়েছে, তারা নিজেদের পাপ ও কুফরির কারণে ধ্বংস হয়েছে। পরকালে যারা জাহান্নামে চিরস্থায়ী হবে, তারাও কুফরের কারণে শাস্তির সম্মুখীন হবে। দুনিয়ায় বালা-মুসিবত নাজিলের কারণ মানুষের কুফরি। আল্লাহ বলেন, ‘যারা কুকর্মের ষড়যন্ত্র করে, তারা কি এ বিষয়ে নির্ভয় হয়েছে যে আল্লাহ তাদের ভূগর্ভে বিলীন করবেন না অথবা তাদের ওপর আসবে না শাস্তি এমনভাবে যে তারা উপলব্ধিও করবে না। অথবা চলাফেরাকালে তিনি তাদের পাকরাও করবেন না? আর তারা তা ব্যর্থ করতে পারবে না।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ৪৫,৪৬)
অনিবার্য ধ্বংসের মুখোমুখি করে : কিয়ামতের সফলতা প্রকৃত সফলতা, আর সেদিনের ব্যর্থতা প্রকৃত ব্যর্থতা। কুফর ব্যক্তিকে সেদিন অনিবার্য ধ্বংসের মুখোমুখি করে। তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপের মাধ্যমে চূড়ান্ত ব্যর্থ করে। আল্লাহ বলেন, ‘আর যাদের নেকির পাল্লা হালকা হবে, তারা হবে সেই সব লোক, যারা নিজেদের ধ্বংস ও ক্ষতি নিজেরাই করেছে, কারণ তারা আমার নিদর্শনসমূহ প্রত্যাখ্যান করত।’
(সুরা : আরাফ, আয়াত : ৯)
কুফরের চূড়ান্ত পরিণাম চিরস্থায়ী জাহান্নাম : কুফর কাফেরকে চিরস্থায়ীভাবে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবে, যা থেকে পরিত্রাণের কোনো উপায় তাদের থাকবে না। আল্লাহ বলেছেন, ‘আর আপনি যদি সেই অবস্থা দেখতেন, যখন ফেরেশতারা তাদের রুহ কবজ করার সময় তাদের মুখমণ্ডলে ও পৃষ্ঠদেশে আঘাত করেন।’
(সুরা : আনফাল, আয়াত : ৫০)
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
ঈমানের উপকারিতা এবং কুফরের ভয়াবহতা
0 notes
mylordisallah · 2 days ago
Text
Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media
ঈমানের উপকারিতা এবং কুফরের ভয়াবহতা
ঈমান ও কুফর
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
ঈমানের উপকারিতা এবং কুফরের ভয়াবহতা
ঈমান অর্থ আস্থা, বিশ্বাস, প্রত্যয়, প্রতিজ্ঞা। ঈমান বলতে একক অদ্বিতীয় আল্লাহকে বিশ্বাস করা বোঝায়। আর কুফর হলো অস্বীকার, অবিশ্বাস ও অমান্যতার নাম। পরিভাষায়, এক আল্লাহয় অবিশ্বাস ও অমান্যতাকে কুফর বলে।
ইমান এর পূর্ণ অর্থ কি?
ইমান (আরবি: إِيمَان, ʾīmān, lit. 'বিশ্বাস' বা 'বিশ্বাস', এছাড়াও 'স্বীকৃতি ') ইসলামী ধর্মতত্ত্বে ইসলামের ধর্মীয় দিকগুলিতে একজন বিশ্বাসীর বিশ্বাস এবং কর্মের স্বীকৃতিকে বোঝায়�� এর সবচেয়ে সহজ সংজ্ঞা হল বিশ্বাসের ছয়টি প্রবন্ধে বিশ্বাস, যা আরকান আল-ইমান নামে পরিচিত।
ঈমানের সর্বপ্রথম ও সর্বপ্রধান বিষয় কি?
ঈমানের ছয়টি মৌলিক স্তম্ভের প্রথম এবং প্রধান স্তম্ভ হলো মহান আল্লাহর ওপর ঈমান তথা বিশ্বাস স্থাপন করা। আল্লাহর ওপর ঈমান আনার অর্থ এ কথা বিশ্বাস করা, আল্লাহ এক, অদ্বিতীয় ও অতুলনীয়।
ঈমানের ফল কি?
ইমানের ফল : ইমান মানুষের মনে আল্লাহর আনুগত্য ও আল্লাহর ভয় সৃষ্টি করে। ইমানের ফলে মানুষের নৈতিক চরিত্র উন্নত হয়। একজন মানুষ ইমানদার হলে তার মধ্যে আল্লাহ ও পরকালের ভয় থাকবে। একজন মুমিন ব্যক্তি সদা সত্য কথা বলবেন।
ইমানের বহিঃপ্রকাশ কোনটি?
ইসলাম হলো ইমানের বহিঃপ্রকাশ ।
ঈমান ও ইসলামের মধ্যে পার্থক্য কি?
ইমান হলো আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সা.) যা কিছু আদেশ করেছেন সেগুলোর ওপর দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন করা। আর ইসলাম হলো আল্লাহ ও তার রাসূল (সা.) যা কিছু আদেশ করেছেন এবং সে অনুযায়ী আমল করার নাম।
কুফর বলতে কি বুঝায়?
‌‌‌কাফির (আরবি: كافِر) একটি আরবি শব্দ, যা আরবি কুফর (আরবি: َكَفَر) ধাতু থেকে আগত, যার শাব্দিক অর্থ হল ঢেকে রাখা, লুকিয়ে রাখা এবং এর ব্যবহারিক অর্থ হল অবাধ্যতা, অস্বীকার করা, অকৃতজ্ঞতা। ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় কুফর ঈমানের বিপরীত।
ঈমান মানুষকে সঠিক পথে পরিচালিত করার মাধ্যমে সৌভাগ্যবান বানায়। পক্ষান্তরে কুফর মানুষকে হতভাগ্য ও দুর্ভাগা বানায়। ঈমান মানুষকে আলোর পথ দেখায়, আর কুফর মানুষকে অন্ধকারের পথে পরিচালিত করে। ঈমানের শেষ পরিণাম জান্নাত আর কুফরের চূড়ান্ত পরিণতি জাহান্নাম।
আমাদের উচিত ঈমানের পথে পরিচালিত হওয়া, কুফরের পথ পরিহার করা। আসুন, কোরআন-হাদিসের আলোকে ঈমানের উপকারিতা এবং কুফরের ভয়াবহতা সম্পর্কে জেনে নিই।
ঈমানের উপকারিতা
ঈমান হলো আল্লাহ তাআলার একত্ববাদে বিশ্বাস করা। তার ফেরেশতা, কিতাব, নবী-রাসুল, শেষ দিবস ও ভাগ্যের ভালো-মন্দের ওপর বিশ্বাস রাখা (মুসলিম, হাদিস : ১)
এগুলো মনেপ্রাণে বিশ্বাস করা, মুখে স্বীকৃতি দেওয়া এবং কার্যে পরিণত করা।
যে ব্যক্তি এমনটা করবে সে মুমিন বলে স্বীকৃত হবে। সে দুনিয়া ও আখিরাতে আল্লাহ ঘোষিত বিভিন্ন পুরস্কারে পুরস্কৃত হবে।
পবিত্র ও আনন্দময় জীবন লাভ : ঈমানের কারণে ব্যক্তি দুনিয়ায় পবিত্র ও আনন্দময় জীবন লাভ করবে। মুমিন ব্যক্তি আল্লাহর পক্ষ থেকে দুনিয়ায় কলুষমুক্ত, স্বচ্ছ-সফেদ, নির্ঝঞ্ঝাট জীবনের উত্তারাধিকারী হবে। আল্লাহ পকিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘মুমিন হয়ে পুরুষ ও নারীর মধ্যে যে কেউ সৎকাজ করবে, অবশ্যই আমরা তাকে পবিত্র জীবন দান করব।
(সুরা : নাহল, আয়াত : ৯৭)
বেশির ভাগ মুফাসসিরের মতে, আয়াতে ‘হায়াতে তাইয়্যিবা’ বলতে দুনিয়ার স্বাচ্ছন্দ্যময় পবিত্র জীবনকে বোঝানো হয়েছে। (মাআরেফুল কোরআন : ১৪৪৬)
নিজ কর্মে দৃঢ়তা ও অবিচলতা অর্জন : ঈমানের কারণে ব্যক্তি দুনিয়া ও আখিরাতে আল্লাহর পক্ষ থেকে নিরাপত্তা লাভ করে। কাজকর্মে অবিচলতা ও অটলতা অর্জন করে। আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য লাভে ধন্য হয়। ঈমানহারা মানুষ প্রবৃত্তির তাড়নায় যখন দিশাহারা হয়ে যায়, উদ্ভ্রান্তের মতো ঘুরতে থাকে, ঈমানদাররা তখন আল্লাহ বিশ্বাসের কারণে তাড়না ও হতাশামুক্ত জীবনের তাওফিক পায়। আবার কবরে ফেরেশতাদের প্রশ্নে এবং কিয়ামতের বিভীষিকায়ও আল্লাহ তাআলার নিরাপত্তার চাদরে বেষ্টিত থাকবে এবং দৃঢ়তা অর্জন করবে। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘যারা ঈমান এনেছে, আল্লাহ তাদের সুদৃঢ় বাক্যের দ্বারা দুনিয়ার জীবনে ও আখিরাতে সুপ্রতিষ্ঠিত রাখবেন।’ (সুরা : ইবরাহিম, আয়াত : ২৭)
দুনিয়ার জীবনে বরকতপ্রাপ্তি : ঈমানের কারণে ব্যক্তি দুনিয়ার জীবনে বরকত লাভ করবে, প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে। বরকত বলতে শুধু কোনো কিছুর আধিক্য বোঝায় না; বরকত হচ্ছে কোনো কিছু নিয়মিত থাকা। ঈমানের কারণে ব্যক্তি আসমান ও জমিনের বরকত লাভে ধন্য হয়। সঠিক সময়ে আসমান বৃষ্টি বর্ষণ করে আর জমিন থেকে মনঃপূত জিনিস উৎপন্ন হয়। সুরা আরাফের ৯৬ নম্বর আয়াতে এসেছে, ‘আর যদি সেই সব জনপদের অধিবাসীরা ঈমান আনত এবং তাকওয়া অবলম্বন করত তাহলে অবশ্যই আমরা তাদের জন্য আসমান ও জমিনের বরকতসমূহ উন্মুক্ত করে দিতাম।’ একমাত্র ঈমানের কারণে মানুষ দুনিয়া ও আখিরাতের এই বরকত পেতে পারে।
আল্লাহর নিরাপত্তা লাভে ধন্য হওয়া : আল্লাহর নিরাপত্তাই প্রকৃত নিরাপত্তা। সেই ব্যক্তি ধন্য, যে তা লাভ করবে। ঈমানদাররা দুনিয়া ও আখিরাতে আল্লাহ তাআলার আজাব, গজব, শাস্তি ও বিভীষিকা থেকে নিরাপত্তা লাভ করবে একমাত্র ঈমানের ওপর অটল থাকার কারণে। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের ঈমানকে জুলুম (শিরক) দ্বারা কলুষিত করেনি, নিরাপত্তা তাদেরই জন্য এবং তারাই হিদায়াতপ্রাপ্ত।’(সুরা : আনআম, আয়াত : ৮২)
শত্রুদের থেকে হেফাজত থাকবে : ঈমানের কারণে আল্লাহ তাআলা ব্যক্তিকে শারীরিক, মানসিক, আর্থিকসহ সব ধরনের ক্ষয়ক্ষতি থেকে হেফাজতে রাখবেন। কোরআনে এসেছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ মুমিনদের পক্ষ থেকে প্রতিরোধ করেন।’ (সুরা : হাজ, আয়াত : ৩৮)
চিরকাঙ্ক্ষিত জান্নাত অর্জন : ঈমানের চূড়ান্ত পরিণাম হলো, ঈমান ব্যক্তিকে চিরকাঙ্ক্ষিত জান্নাতে প্রবেশ করাবে। যারা ঈমান আনবে, আল্লাহ খুশি হয়ে তাদের জন্য চিরস্থায়ী জান্নাতে বসবাসের সুযোগ করে দেবেন। অনন্তকালের জন্য সুখের বন্দোবস্ত হয়ে যাবে। কোরআনে এসেছে, ‘আর যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে তাদের শুভ সংবাদ দিন যে তাদের জন্য আছে জান্নাত, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত।’
(সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ২৫)
কুফরের ভয়াবহতা
কুফর অর্থ অবিশ্বাস করা, অস্বীকার করা, অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা ইত্যাদি। ইসলামী পরিভাষায় কুফর বলতে বোঝায় আল্লাহ, তার রাসুল ও ঈমানের অন্যান্য বিষয়ে বিশ্বাসের অবিদ্যমানতা। কুফর ব্যক্তিকে আল্লাহর অবাধ্য বানায় এবং জাহান্নামের উপযুক্ত করে। কোরআনে এসেছে, ‘তারা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যারা আল্লাহর সাক্ষাৎ অস্বীকার করেছে।’ (সুরা : ইউনুস, আয়াত : ৪৫)
সংকীর্ণ জীবনের অধিকারী হওয়া : মনুষ্যজীবনে কুফর এমন এক অভিশাপের নাম, যার কারণে আল্লাহ ব্যক্তির জীবন সংকীর্ণ করে দেন। দুনিয়াবি আসবাব আর ধন-সম্পদ পরিপূর্ণ থাকার পরও মনে হবে, যেন কিছুই নেই। মনের স্বস্তি ও শান্তি উবে যাবে। কোনো কিছুতেই মন ভরবে না। চারদিক থেকে সংকীর্ণতা জেঁকে বসবে। আল্লাহ বলেছেন, ‘আর যে আমার স্মরণ থেকে বিমুখ হয়, তার জীবনযাপন হবে সংকুচিত আর আমরা তাকে কিয়ামতের দিন উত্থিত করব অন্ধ অবস্থায়।’
(সুরা : ত্বহা, আয়াত : ১২৪)
সংঘাতময় অশান্ত পৃথিবী : কুফর এমন একটি খারাপ কর্ম, যার কারণে মানুষ নিজ স্রষ্টাকে অস্বীকার করে। তার ওপর এমন কিছু অপবাদ আরোপ করে, যা তার সত্তার সঙ্গে যায় না। তখন আল্লাহর গোসসা ও ক্রোধ এতটাই বেড়ে যায় যে আসমান-জমিন ধ্বংস হওয়ার উপক্রম হয়। তবে আল্লাহ তার অনুগ্রহে পৃথিবীকে শান্ত রাখেন। কোরআনে এসেছে, ‘আর তারা বলে, দয়াময় সন্তান গ্রহণ করেছেন। তোমরা তো এমন এক বীভৎস বিষয়ের অবতারণা করেছ, যাতে আসমানসমূহ বিদীর্ণ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়, আর জমিন খণ্ডবিখণ্ড এব��� পর্বতমালা চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে আপতিত হবে।’
(সুরা : মারইয়াম, আয়াত : ৮৮-৯০)
কুফর ব্যক্তিকে দয়ামায়াবঞ্চিত করে : পৃথিবীকে সংঘাতময়, বসবাসের অনপুযোগী করার দায়ভার একমাত্র কুফরের। আল্লাহর ওপর অবিশ্বাসীরাই দুনিয়াকে অশান্ত করার পেছনে একমাত্র দায়ী। তাই কাফেরের প্রতি দুনিয়ার কোনো সৃষ্টজীবের মায়া থাকে না। তাদের কষ্টে ও ধ্বংসে কেউ ব্যথিত হয় না। কাঁদে না। কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘আকাশ ও পৃথিবী কেউই তাদের জন্য অশ্রুপাত করেনি এবং তাদের অবকাশও দেওয়া হয়নি।’
(সুরা : দুখান, আয়াত : ২৯)
আল্লাহর ঘৃণা ও আজাবের উপযুক্ত করে : কুফর ব্যক্তিকে আল্লাহর ঘৃণা ও আজাব-গজবের উপযুক্ত করে। দুনিয়ায় যত জাতি ধ্বংস হয়েছে, তারা নিজেদের পাপ ও কুফরির কারণে ধ্বংস হয়েছে। পরকালে যারা জাহান্নামে চিরস্থায়ী হবে, তারাও কুফরের কারণে শাস্তির সম্মুখীন হবে। দুনিয়ায় বালা-মুসিবত নাজিলের কারণ মানুষের কুফরি। আল্লাহ বলেন, ‘যারা কুকর্মের ষড়যন্ত্র করে, তারা কি এ বিষয়ে নির্ভয় হয়েছে যে আল্লাহ তাদের ভূগর্ভে বিলীন করবেন না অথবা তাদের ওপর আসবে না শাস্তি এমনভাবে যে তারা উপলব্ধিও করবে না। অথবা চলাফেরাকালে তিনি তাদের পাকরাও করবেন না? আর তারা তা ব্যর্থ করতে পারবে না।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ৪৫,৪৬)
অনিবার্য ধ্বংসের মুখোমুখি করে : কিয়ামতের সফলতা প্রকৃত সফলতা, আর সেদিনের ব্যর্থতা প্রকৃত ব্যর্থতা। কুফর ব্যক্তিকে সেদিন অনিবার্য ধ্বংসের মুখোমুখি করে। তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপের মাধ্যমে চূড়ান্ত ব্যর্থ করে। আল্লাহ বলেন, ‘আর যাদের নেকির পাল্লা হালকা হবে, তারা হবে সেই সব লোক, যারা নিজেদের ধ্বংস ও ক্ষতি নিজেরাই করেছে, কারণ তারা আমার নিদর্শনসমূহ প্রত্যাখ্যান করত।’
(সুরা : আরাফ, আয়াত : ৯)
কুফরের চূড়ান্ত পরিণাম চিরস্থায়ী জাহান্নাম : কুফর কাফেরকে চিরস্থায়ীভাবে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবে, যা থেকে পরিত্রাণের কোনো উপায় তাদের থাকবে না। আল্লাহ বলেছেন, ‘আর আপনি যদি সেই অবস্থা দেখতেন, যখন ফেরেশতারা তাদের রুহ কবজ করার সময় তাদের মুখমণ্ডলে ও পৃষ্ঠদেশে আঘাত করেন।’
(সুরা : আনফাল, আয়াত : ৫০)
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
ঈমানের উপকারিতা এবং কুফরের ভয়াবহতা
0 notes
khutbahs · 4 years ago
Link
ঈমান মজবুত এবং বৃদ্ধি করার উপায়
ঈমান আল্লাহ ও বান্দার মাঝের সেতুবন্ধন। ঈমান হ্রাস পেলে আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্কও হ্রাস পায়। আর ঈমান বৃদ্ধি পেলে আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্কও বৃদ্ধি পায়। বিভিন্ন কারণে বান্দার ঈমানে প্রভাব পড়ে। ঈমান বাড়াতে করনীয়- আল্লাহর জিকির করা, আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করা, আল্লাহর জন্য বন্ধুত্ব ও শত্রæতা, বিনম্রতা ও লজ্জাশীলতা, সর্বোপরি বেশি বেশি নেক আমল করা এবং যাবতীয় গুনাহ বর্জন করা। হে আল্লাহ! আপনি ঈমানকে আমাদের নিকট প্রিয় করে দিন এবং ঈমানকে আমাদের অন্তরে সুশোভিত করে দিন। কুফর, পাপাচার ও আপনার অবাধ্যতাকে আমাদের নিকট অপছন্দনীয় করে দিন এবং আমাদেরকে সুপথপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত করে নিন। আমীন।https://www.youtube.com/watch?v=1SW-CmCrAxc
0 notes
srkshazu · 4 years ago
Text
৩য় রোজার তারাবীহ - সুরা আল ইমরানের ৯৩ আয়াত থেকে সুরা নিসার ৮৭ আয়াত পর্যন্ত সংক্ষেপে কিছু অংশ তুলে ধরা হলো:-
৩য় রোজার তারাবীহ নামাজে পবিত্র কোরআন থেকে সর্বমোট দেড় পারা (সম্পুর্ন চতুর্থ পারা এবং পঞ্চম পারার প্রথম অর্ধেকাংশ) তেলাওয়াত করা হবে।৩য় রোজার তারাবীহ নামাজে পবিত্র কোরআন থেকে সর্বমোট দেড় পারা (সম্পুর্ন চতুর্থ পারা এবং পঞ্চম পারার প্রথম অর্ধেকাংশ) তেলাওয়াত করা হবে।
এই দেড় পারা থেকে (সুরা আল ইমরানের ৯৩ আয়াত থেকে সুরা নিসার ৮৭ আয়াত পর্যন্ত) সংক্ষেপে কিছু অংশ তুলে ধরা হলো:-এই দেড় পারা থেকে (সুরা আল ইমরানের ৯৩ আয়াত থেকে সুরা নিসার ৮৭ আয়াত পর্যন্ত) সংক্ষেপে কিছু অংশ তুলে ধরা হলো:-
•আল্লাহর প্রতি যারা মিথ্যা আরোপ করেছে, তারাই যালেম সীমালংঘনকারী। [ সুরা আল ইমরান- ৯৪ ]
•(কাবা) ঘরের হজ্ব করা হলো মানুষের উপর আল্লাহর প্রাপ্য; যে লোকের সামর্থ রয়েছে এ পর্যন্ত পৌছার। [ সুরা আল ইমরান-৯৭ ]
•হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে যেমন ভয় করা উচিৎ ঠিক তেমনিভাবে ভয় করতে থাক। এবং অবশ্যই মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না। [ সুরা আল ইমরান-১০২ ]
•তোমরা সকলে আল্লাহর রজ্জুকে সুদৃঢ় হস্তে ধারণ কর; পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না। [ সুরা আল ইমরান-১০৩ ]
•তোমাদের মধ্যে এমন একটা দল থাকা উচিত যারা আহবান জানাবে সৎকর্মের প্রতি; নির্দেশ দেবে ভাল কাজের এবং বারণ করবে অন্যায় কাজ থেকে; আর তারাই হলো সফলকাম। [ সুরা আল ইমরান-১০৪ ]
•যা কিছু আসমান ও যমীনে রয়েছে সে সবই আল্লাহর; এবং আল্লাহর প্রতিই সব কিছু প্রত্যাবর্তনশীল। [ সুরা আল ইমরান-১০৯ ]
•তোমরাই হলে সর্বোত্তম উম্মত, মানবজাতির কল্যানের জন্যেই তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে। তোমরা সৎকাজের নির্দেশ দান করবে ও অন্যায় কাজে বাধা দেবে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে। [ সুরা আল ইমরান-১১০ ]
•নিশ্চয় যারা কাফের হয়, তাদের ধন সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি আল্লাহর সামনে কখনও কোন কাজে আসবে না। আর তারাই হলো দোযখের আগুনের অধিবাসী। তারা সে আগুনে চিরকাল থাকবে। [ সুরা আল ইমরান-১১৬ ]
•হে ঈমানদারগণ! তোমরা মুমিন ব্যতীত অন্য কাউকে অন্তরঙ্গরূপে গ্রহণ করো না, তারা তোমাদের অমঙ্গল সাধনে কোন ক্রটি করে না; তোমরা কষ্টে থাক, তাতেই তাদের আনন্দ। শত্রুতাপ্রসুত বিদ্বেষ তাদের মুখেই ফুটে বেরোয়। আর যা কিছু তাদের মনে লুকিয়ে রয়েছে, তা আরো অনেকগুণ বেশী জঘন্য। তোমাদের জন্যে নিদর্শন বিশদভাবে বর্ণনা করে দেয়া হলো, যদি তোমরা তা অনুধাবন করতে সমর্থ হও। [ সুরা আল ইমরান- ১১৮ ]
•মুমিনদের উচিত আল্লাহর উপরই ভরসা করা। [ সুরা আল ইমরান-১২২ ]
•হে ঈমানদারগণ, তোমরা চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ খেয়ো না। [ সুরা আল ইমরান-১৩০ ]
•তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহ ও রসূলের, যাতে তোমাদের উপর রহমত করা হয়। [ সুরা আল ইমরান-১৩২ ]
•তারা কখনও কোন অশ্লীল কাজ করে ফেললে, কিংবা কোন মন্দ কাজে জড়িত হয়ে নিজের উপর জুলুম করে ফেললে, আল্লাহকে স্মরণ করে এবং নিজের পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। আল্লাহ ছাড়া আর কে পাপ ক্ষমা করবেন? .... তাদেরই জন্য প্রতিদান হলো তাদের পালনকর্তার ক্ষমা ও জান্নাত, যার তলদেশে প্রবাহিত হচ্ছে প্রস্রবণ, যেখানে তারা থাকবে অনন্তকাল। [ সুরা আল ইমরান-১৩৫,১৩৬ ]
•তোমরা নিরাশ হয়ো না এবং দুঃখ করো না। যদি তোমরা মুমিন হও তবে তোমরাই জয়ী হবে। [ সুরা আল ইমরান-১৩৯ ]
•তোমাদের কি ধারণা, তোমরা জান্নাতে প্রবেশ করবে? অথচ আল্লাহ এখনও দেখেননি তোমাদের মধ্যে কারা জেহাদ করেছে এবং কারা ধৈর্য্যশীল। [ সুরা আল ইমরান-১৪২ ]
•যে লোক দুনিয়ায় বিনিময় কামনা করবে, আমি তাকে তা দুনিয়াতেই দান করব। পক্ষান্তরে- যে লোক আখেরাতে বিনিময় কামনা করবে, তা থেকে আমি তাকে তাই দেবো। আর যারা কৃতজ্ঞ তাদেরকে আমি প্রতিদান দেবো [ সুরা আল ইমরান-১৪৫ ]
•বহু নবী ছিলেন, যাঁদের সঙ্গী-সাথীরা তাঁদের অনু��র্তী হয়ে জেহাদ করেছে; আল্লাহর পথে-তাদের কিছু কষ্ট হয়েছে বটে, কিন্তু আল্লাহর রাহে তারা হেরেও যায়নি, ক্লান্তও হয়নি, এবং দমেও যায়নি। আর যারা সবর করে, আল্লাহ তাদেরকে ভালবাসেন। [ সুরা আল ইমরান-১৪৬ ]
•আল্লাহ তোমাদের সাহায্যকারী, আর তাঁর সাহায্যই হচ্ছে উত্তম সাহায্য। [ সুরা আল ইমরান-১৫০ ]
•আল্লাহ যদি তোমাদের সহায়তা করেন, তাহলে কেউ তোমাদের উপর পরাক্রান্ত হতে পারবে না। আর যদি তিনি তোমাদের সাহায্য না করেন, তবে এমন কে আছে, যে তোমাদের সাহায্য করতে পারে? আর আল্লাহর ওপরই মুসলমানের ভরসা ক��া উচিত। [ সুরা আল ইমরান-১৬০ ]
•যারা আল্লাহর রাহে নিহত হয়, তাদেরকে তুমি কখনো মৃত মনে করো না। বরং তারা নিজেদের পালনকর্তার নিকট জীবিত ও জীবিকাপ্রাপ্ত। [ সুরা আল ইমরান-১৬৯ ]
•আল্লাহ ঈমানদারদের শ্রমফল বিনষ্ট করেন না। [ সুরা আল ইমরান-১৭১ ]
•যারা ঈমানের পরিবর্তে কুফর ক্রয় করে নিয়েছে, তারা আল্লাহ তা'আলার কিছুই ক্ষতিসাধন করতে পারবে না। আর তাদের জন্য রয়েছে বেদনাদায়ক শাস্তি। [ সুরা আল ইমরান-১৭৭ ]
•যারা কার্পন্য করে, তাদের সে সমস্ত ধন-সম্পদকে কিয়ামতের দিন তাদের গলায় বেড়ী বানিয়ে পরানো হবে। [ সুরা আল ইমরান-১৮০ ]
•প্রত্যেক প্রাণীকে মৃত্যু আস্বাদন করতে হবে। তোমরা কিয়ামতের দিন পরিপূর্ণ বদলা প্রাপ্ত হবে। ...আর পার্থিব জীবন ধোঁকা ছাড়া অন্য কোন সম্পদ নয়। [ সুরা আল ইমরান-১৮৫ ]
•নিশ্চয় আসমান ও যমীন সৃষ্টিতে এবং রাত্রি ও দিনের আবর্তনে নিদর্শন রয়েছে বোধসম্পন্ন লোকদের জন্যে। [ সুরা আল ইমরান-১৯০ ]
•যাঁরা দাঁড়িয়ে, বসে, ও শায়িত অবস্থায়, আল্লাহকে স্মরণ করে এবং চিন্তা গবেষণা করে আসমান ও জমিন সৃষ্টির বিষয়ে, তারা বলে হে পরওয়ারদেগার! এসব তুমি অনর্থক সৃষ্টি করনি। সকল পবিত্রতা তোমারই, আমাদিগকে তুমি দোযখের শাস্তি থেকে বাঁচাও। [ সুরা আল ইমরান-১৯১ ]
•আমি তোমাদের কোন পরিশ্রমকারীর পরিশ্রমই বিনষ্ট করি না, তা সে পুরুষ হোক কিংবা স্ত্রীলোক। তোমরা পরস্পর এক। [ সুরা আল ইমরান-১৯৫ ]
•নগরীতে কাফেরদের চাল-চলন যেন তোমাদিগকে ধোঁকা না দেয়। [ সুরা আল ইমরান-১৯৬ ]
•তোমরা স্ত্রীদেরকে তাদের মোহর দিয়ে দাও খুশীমনে। তারা যদি খুশী হয়ে তা থেকে অংশ ছেড়ে দেয়, তবে তা তোমরা স্বাচ্ছন্দ্যে ভোগ কর। [ সুরা নিসা-৪ ]
•যারা এতীমদের অর্থ-সম্পদ অন্যায়ভাবে খায়, তারা নিজেদের পেটে আগুনই ভর্তি করেছে এবং সত্ত্বরই তারা অগ্নিতে প্রবেশ করবে। [ সুরা নিসা-১০ ]
•এমন লোকদের জন্য কোন ক্ষমা নেই, যারা মন্দ কাজ করতেই থাকে; এমন কি যখন তাদের কারো মাথার উপর মৃত্যু উপস্থিত হয়, তখন বলতে থাকেঃ আমি এখন তওবা করছি। আর তওবা নেই তাদের জন্য, যারা কুফরী অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। আমি তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি। [ সুরা নিসা-১৮ ]
•আল্লাহ তোমাদের বোঝা হালকা করতে চান। মানুষকে দুর্��ল করে সৃজিত করা হয়েছে। [ সুরা নিসা-২৮ ]
•পুরুষরা নারীদের উপর কৃর্তত্বশীল এ জন্য যে, আল্লাহ একের উপর অন্যের বৈশিষ্ট্য দান করেছেন এবং এ জন্য যে, তারা তাদের অর্থ ব্যয় করে। সেমতে নেককার স্ত্রীলোকগণ হয় অনুগতা এবং আল্লাহ যা হেফাযতযোগ্য করে দিয়েছেন, লোক চক্ষুর অন্তরালেও তার হেফাযত করে [ সুরা নিসা-৩৪ ]
•নিশ্চয়ই আল্লাহ কারো প্রাপ্য হক বিন্দু-বিসর্গও রাখেন না; আর যদি তা সৎকর্ম হয়, তবে তাকে দ্বিগুণ করে দেন এবং নিজের পক্ষ থেকে বিপুল সওয়াব দান করেন। [ সুরা নিসা-৪০ ]
•এতে সন্দেহ নেই যে, আমার নিদর্শন সমুহের প্রতি যেসব লোক অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করবে, আমি তাদেরকে আগুনে নিক্ষেপ করব। তাদের চামড়াগুলো যখন জ্বলে-পুড়ে যাবে, তখন আবার আমি তা পালটে দেব অন্য চামড়া দিয়ে, যাতে তারা আযাব আস্বাদন করতে থাকে। নিশ্চয়ই আল্লাহ মহাপরাক্রমশালী, হেকমতের অধিকারী। [ সুরা নিসা-৫৬ ]
•নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদিগকে নির্দেশ দেন যে, তোমরা যেন প্রাপ্য আমানতসমূহ প্রাপকদের নিকট পৌছে দাও। আর যখন তোমরা মানুষের কোন বিচার-মীমাংসা করতে আরম্ভ কর, তখন মীমাংসা কর ন্যায়ভিত্তিক। [ সুরা নিসা-৫৮ ]
•যে কেউ আল্লাহর হুকুম এবং তাঁর রসূলের হুকুম মান্য করবে, তাহলে যাঁদের প্রতি আল্লাহ নেয়ামত দান করেছেন, সে তাঁদের সঙ্গী হবে। তাঁরা হলেন নবী, ছিদ্দীক, শহীদ ও সৎকর্মশীল ব্যক্তিবর্গ। আর তাদের সান্নিধ্যই হল উত্তম। [ সুরা নিসা-৬৯ ]
•তোমাদের কি হল যে, তোমরা আল্লাহর রাহে লড়াই করছ না - দুর্বল সেই পুরুষ, নারী ও শিশুদের পক্ষে, যারা বলে, হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদিগকে এই জনপদ থেকে নিষ্কৃতি দান কর; এখানকার অধিবাসীরা যে, অত্যাচারী! আর তোমার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য পক্ষালম্বনকারী নির্ধারণ করে দাও এবং তোমার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য সাহায্যকারী নির্ধারণ করে দাও। [ সুরা নিসা-৭৫ ]
•তোমরা যেখানেই থাক না কেন; মৃত্যু কিন্তু তোমাদেরকে পাকড়াও করবেই। যদি তোমরা সুদৃঢ় দূর্গের ভেতরেও অবস্থান কর, তবুও। [ সুরা নিসা-৭৮ ]
•যে লোক সৎকাজের জন্য কোন সুপারিশ করবে, তা থেকে সেও একটি অংশ পাবে। আর যে লোক সুপারিশ করবে মন্দ কাজের জন্যে সে তার বোঝারও একটি অংশ পাবে। বস্তুতঃ আল্লাহ সর্ব বিষয়ে ক্ষমতাশীল। [ সুরা নিসা-৮৫ ]
0 notes
paathok · 5 years ago
Photo
Tumblr media
New Post has been published on https://paathok.news/97751
কাদিয়ানীদের অমুসলিম ও নাস্তিকদের শাস্তির আইন সংসদে পাশ করুন, অন্যথায় কঠিন আন্দোলন
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির ও দারুল উলুম হাটহাজারীর মহাপরিচালক শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী (দা. বা.) বলেছেন- ইসলামের মৌলকি স্তম্ভ হলো পাঁচটি। যারা এ পাঁচ স্তম্ভ মেনে চলে তারা আস্তিক। যারা মানেনা তারা নাস্তিক। এই নাস্তিকরাই ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। কাদিয়ানীরা খতমে নবুওয়ত স্বীকার করেনা, তাই তারা কাফের। তারা নিজেদের আহমদীয়া মুসলিম পরিচয় দিয়ে জনগণকে ধোঁকা দিচ্ছে। এরা ইসলামের পরিভাষা ব্যবহার করতে পারেনা। তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, কাদিয়ানী সম্প্রদায়কে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করুন। নাস্তিকদের শাস্তির আইন সংসদে পাশ করুন। অন্যথায় রাসূল সা. এর খতমে নবুওয়তের হেফাজতের জন্য আমরা কঠিন আন্দোলনের ডাক দিতে বাধ্য হবো।
তিনি শুক্রবার ১৩ ডিসেম্বর রাতে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের উদ্যোগে নগরীর জমিয়তুল ফালাহ জাতীয় মসজিদ মাঠে দু’দিন-ব্যাপী শা’নে রেসালত সম্মেলনের সমাপনি দিবসে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী বলেন, আল্লাহর কুরআনের বিধানেই জনগণের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। অন্য কোন তন্ত্র-মন্ত্রে শান্তি আশা করা যায়না। আমরা যদি রাসূল সা.এর প্রকৃত অনুসরণ করে চলি তাহলে সমাজে হানাহানি, রক্তপাত থাকবেনা। দেশের নেতৃত্ব যাদের হাতে তাদের অন্তরে আল্লাহর ভয় না থাকার কারণে যে কোনো অন্যায়, অনাচার, পাপাচার ও জুলুম নিপীড়ন করতে তারা কুণ্ঠাবোধ করছেনা। এটা দেশের জন্য মঙ্গলজনক নয়। তাই মুসলমানদেরকে খোদাভীরু নেতৃত্ব সৃষ্টি করতে হবে।
.
আহমদ শফী তাওহিদী জনতার উদ্দেশ্যে বলেন, শিরকমুক্ত স্বচ্ছ ঈমান-আকীদা ও আমলে সালেহ মুসলমানের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। মহান আল্লাহর দরবারে কবুল হওয়ার জন্য বিদআতমুক্ত আমল হতে হবে। কুরআন-হাদিসে হালাল হারাম, সত্য-মিথ্যা, হক-বাতিল, ঈমান-কুফর-শিরক বিদআত প্রতিটি বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে বিধৃত হয়েছে। নামাজ যাবতীয় অন্যায়, অশ্লীলতা থেকে মানুষকে মুক্ত রাখে। জিকির মানুষের কলব পরিশুদ্ধ করে। ইবাদতে বন্দেগীতে অগ্রহ তৈরী হয়। আল্লাহর রেজা��ন্দী লাভ হয়। তাই সবাইকে ইবাদ বন্দেগীতে মনোযোগী হওয়ার আহবান জানাচ্ছি। তিনি আরো বলেন, নারীরা সমাজের অর্ধেক। তাদের নিরাপত্তার জন্য আল্লাহ পর্দার বিধান জারী করেছেন। পর্দা পালনেই তাদের নিরাপত্তার গ্যারান্টি। আল্লাহর আইন না মানলে খাঁটি মুমিন হওয়া যায়না। তিনি উপস্থিত জনসাধরণকে বায়ত করা এবং সুদ. ঘুষ, দুর্নীতি, চুরি, ডাকাতি, খুন রাহজানী এবং মানুষের হক নষ্ট না করার অঙ্গিকার নেন।
দু’দিন-ব্যাপী শা’নে রেসালত সম্মেলনের সমাপনি দিবসে সভাপতিত্ব করেন, যথাক্রমে হেফাজত মহাসচিব আল্লামা হাফেজ জুনাইদ বাবুনগরী, মাওলানা সরোয়ার কামাল আজিজী, মাওলানা ফোরকানুল্লাহ খলিল, মাওলানা মোহাম্মদ শফী বাথুয়া।
এতে বক্তব্য রাখেন, আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়তের মহাসচিব মাওলানা হাফেজ নুরুল ইসলাম, মাওলানা আবদুল বাসেত খান, ড. এবিএম হিজবুল্লাহ, মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ ফয়জুল্লাহ, মাওলানা আজিজুল হক আল মাদানী, মাওলানা মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন, মুফতি রহিমুল্লাহ কাসেমী, মাওলানা ইয়াকুব ওসমানী, মুফতি মাহমুদ হাসান গুনবী, মাওলানা লোকমান হাকীম, মাওলানা মুফতি কুতুব উদ্দিন নানুপুরী, মাওলানা শামসুদ্দিন আফতাব প্রমূখ।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন, মাওলানা মঈনুদ্দিন রুহী, মাওলানা আনাস মাদানী, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, হাফেজ মোহাম্মদ ফায়সাল, আনম আহমদুল্লাহ।
সম্মেলনে দেশ ও মুসলিম উম্মাহর কল্যান কামনা করে দোয়া ও মুনাজাত পরিচালনা করেন শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী দা. বা.।
0 notes
quransunnahdawah · 11 days ago
Text
Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media
আল্লাহর পথে দাওয়াতের গুরুত্ব
The Importance Of Calling to The Path of Allah
youtube
youtube
youtube
সৎ কাজে আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ, প্রচার, নসিহত, ওয়াজ বা আল্লাহর দ্বিন পালনের পথে আহ্বান করাই ছিল সব নবী ও রাসুলের দায়িত্ব। সব নবী তাঁর ��ম্মতকে তাওহিদ ও ইবাদতের আদেশ করেছেন। শিরক, কুফর ও পাপকাজ থেকে নিষেধ করেছেন। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘যারা অনুসরণ করে বার্তাবাহক উম্মি নবীর, যার উল্লেখ তারা তাদের কাছে রক্ষিত তাওরাত ও ইনজিলে লিপিবদ্ধ পায়, যিনি তাদের সৎ কাজের নির্দেশ দেন এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করেন।’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ১৫৭)
এই দাওয়াতি কার্যক্রমের কর্মপন্থা কী হবে—এ বিষয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আপনি আপনার রবের দিকে আহ্বান করুন হিকমত বা প্রজ্ঞা দ্বারা, সুন্দর ওয়াজ-উপদেশ দ্বারা এবং তাদের সঙ্গে উত্কৃষ্টতর পদ্ধতিতে আলোচনা-বিতর্ক করুন।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ১২৫)
কোরআনুল কারিমে বারবার বলা হয়েছে যে প্রচার বা পৌঁছানোই নবী-রাসুলদের একমাত্র দায়িত্ব। ইরশাদ হয়েছে : ‘রাসুলদের দায়িত্ব শুধু সুস্পষ্টভাবে প্রচার করা।’
সুরা : নাহল, আয়াত : ৩৫)
যুগে যুগে নবীরা মানুষের কাছে আল্লাহর বাণী পৌঁছে দিয়েছেন।
নুহ (আ.)-এর জবানিতে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আমি আমার রবের রিসালাতের দায়িত্ব তোমাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি এবং আমি তোমাদের নসিহত করছি।’(সুরা : আরাফ, আয়াত : ৬২)
দাওয়াত, আদেশ-নিষেধ, দ্বিন প্রতিষ্ঠা বা নসিহতের এই দায়িত্ব উম্মতে মুহাম্মদির অন্যতম দায়িত্ব ও বৈশিষ্ট্য। ইরশাদ হয়েছে : ‘আর যেন তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল হয়, যারা কল্যাণের প্রতি আহ্বান করবে, ভালো কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করবে। আর তারাই সফল।
(সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১০৪)
অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি, মানবজাতির (কল্যাণের) জন্য তোমাদের আবির্ভাব হয়েছে। তোমরা ন্যায়সংগত কাজের আদেশ দাও এবং অন্যায় কাজে নিষেধ করো এবং আল্লাহর ওপর ঈমান আনো...।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১১০)
প্রকৃত মুমিন শুধু নিজেই ইবাদত করেই ক্ষ্যান্ত হয় না, সে মানুষকে আল্লাহর পথে আহ্বান করতে থাকে। প্রকৃত মুমিনের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করে আল্লাহ বলেন, ‘আর মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীরা একে অপরের বন্ধু, তারা ভালো কাজের আদেশ দেয় এবং অন্যায় কাজ থেকে নিষেধ করে। আর তারা সালাত কায়েম করে, জাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করে।
সৎ কাজে আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ, প্রচার, নসিহত, ওয়াজ বা আল্লাহর দ্বিন পালনের পথে আহ্বান করাই ছিল সব নবী ও রাসুলের দায়িত্ব। সব নবী তাঁর উম্মতকে তাওহিদ ও ইবাদতের আদেশ করেছেন। শিরক, কুফর ও পাপকাজ থেকে নিষেধ করেছেন। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘যারা অনুসরণ করে বার্তাবাহক উম্মি নবীর, যার উল্লেখ তারা তাদের কাছে রক্ষিত তাওরাত ও ইনজিলে লিপিবদ্ধ পায়, যিনি তাদের সৎ কাজের নির্দেশ দেন এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করেন।
’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ১৫৭)
এই দাওয়াতি কার্যক্রমের কর্মপন্থা কী হবে—এ বিষয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আপনি আপনার রবের দিকে আহ্বান করুন হিকমত বা প্রজ্ঞা দ্বারা, সুন্দর ওয়াজ-উপদেশ দ্বারা এবং তাদের সঙ্গে উত্কৃষ্টতর পদ্ধতিতে আলোচনা-বিতর্ক করুন।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ১২৫)
কোরআনুল কারিমে বারবার বলা হয়েছে যে প্রচার বা পৌঁছানোই নবী-রাসুলদের একমাত্র দায়িত্ব। ইরশাদ হয়েছে : ‘রাসুলদের দায়িত্ব শুধু সুস্পষ্টভাবে প্রচার করা।’
(সুরা : নাহল, আয়াত : ৩৫)
যুগে যুগে নবীরা মানুষের কাছে আল্লাহর বাণী পৌঁছে দিয়েছেন।
নুহ (আ.)-এর জবানিতে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আমি আমার রবের রিসালাতের দায়িত্ব তোমাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি এবং আমি তোমাদের নসিহত করছি।’
(সুরা : আরাফ, আয়াত : ৬২)
দাওয়াত, আদেশ-নিষেধ, দ্বিন প্রতিষ্ঠা বা নসিহতের এই দায়িত্ব উম্মতে মুহাম্মদির অন্যতম দায়িত্ব ও বৈশিষ্ট্য। ইরশাদ হয়েছে : ‘আর যেন তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল হয়, যারা কল্যাণের প্রতি আহ্বান করবে, ভালো কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করবে। আর তারাই সফল।
(সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১০৪)
অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি, মানবজাতির (কল্যাণের) জন্য তোমাদের আবির্ভাব হয়েছে। তোমরা ন্যায়সংগত কাজের আদেশ দাও এবং অন্যায় কাজে নিষেধ করো এবং আল্লাহর ওপর ঈমান আনো...।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১১০)
প্রকৃত মুমিন শুধু নিজেই ইবাদত করেই ক্ষ্যান্ত হয় না, সে মানুষকে আল্লাহর পথে আহ্বান করতে থাকে। প্রকৃত মুমিনের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করে আল্লাহ বলেন, ‘আর মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীরা একে অপরের বন্ধু, তারা ভালো কাজের আদেশ দেয় এবং অন্যায় কাজ থেকে নিষেধ করে। আর তারা সালাত কায়েম কর��, জাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করে।
শিগগির আল্লাহ তাদের প্রতি দয়া করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।’
(সুরা : তাওবা, আয়াত : ৭১)
দ্বিন প্রচারের দায়িত্ব পালনকারী মুমিনদের সর্বোত্তম মানুষ বলে ঘোষণা করা হয়েছে পবিত্র কোরআনে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘ওই ব্যক্তির চেয়ে কথায় কে উত্তম—যে আল্লাহর প্রতি মানুষকে আহ্বান করে, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি তো মুসলমানদের একজন।’
(সুরা : ফুসসিলাত, আয়াত : ৩৩)
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
আল্লাহর পথে দাওয়াতের গুরুত্ব
The Importance Of Calling to The Path of Allah
0 notes
tawhidrisalatakhirah · 11 days ago
Text
Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media
আল্লাহর পথে দাওয়াতের গুরুত্ব
The Importance Of Calling to The Path of Allah
youtube
youtube
youtube
সৎ কাজে আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ, প্রচার, নসিহত, ওয়াজ বা আল্লাহর দ্বিন পালনের পথে আহ্বান করাই ছিল সব নবী ও রাসুলের দায়িত্ব। সব নবী তাঁর উম্মতকে তাওহিদ ও ইবাদতের আদেশ করেছেন। শিরক, কুফর ও পাপকাজ থেকে নিষেধ করেছেন। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘যারা অনুসরণ করে বার্তাবাহক উম্মি নবীর, যার উল্লেখ তারা তাদের কাছে রক্ষিত তাওরাত ও ইনজিলে লিপিবদ্ধ পায়, যিনি তাদের সৎ কাজের নির্দেশ দেন এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করেন।’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ১৫৭)
এই দাওয়াতি কার্যক্রমের কর্মপন্থা কী হবে—এ বিষয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আপনি আপনার রবের দিকে আহ্বান করুন হিকমত বা প্রজ্ঞা দ্বারা, সুন্দর ওয়াজ-উপদেশ দ্বারা এবং তাদের সঙ্গে উত্কৃষ্টতর পদ্ধতিতে আলোচনা-বিতর্ক করুন।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ১২৫)
কোরআনুল কারিমে বারবার বলা হয়েছে যে প্রচার বা পৌঁছানোই নবী-রাসুলদের একমাত্র দায়িত্ব। ইরশাদ হয়েছে : ‘রাসুলদের দায়িত্ব শুধু সুস্পষ্টভাবে প্রচার করা।’
সুরা : নাহল, আয়াত : ৩৫)
যুগে যুগে নবীরা মানুষের কাছে আল্লাহর বাণী পৌঁছে দিয়েছেন।
নুহ (আ.)-এর জবানিতে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আমি আমার রবের রিসালাতের দায়িত্ব তোমাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি এবং আমি তোমাদের নসিহত করছি।’(সুরা : আরাফ, আয়াত : ৬২)
দাওয়াত, আদেশ-নিষেধ, দ্বিন প্রতিষ্ঠা বা নসিহতের এই দায়িত্ব উম্মতে মুহাম্মদির অন্যতম দায়িত্ব ও বৈশিষ্ট্য। ইরশাদ হয়েছে : ‘আর যেন তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল হয়, যারা কল্যাণের প্রতি আহ্বান করবে, ভালো কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করবে। আর তারাই সফল।
(সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১০৪)
অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি, মানবজাতির (কল্যাণের) জন্য তোমাদের আবির্ভাব হয়েছে। তোমরা ন্যায়সংগত কাজের আদেশ দাও এবং অন্যায় কাজে নিষেধ করো এবং আল্লাহর ওপর ঈমান আনো...।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১১০)
প্রকৃত মুমিন শুধু নিজেই ইবাদত করেই ক্ষ্যান্ত হয় না, সে মানুষকে আল্লাহর পথে আহ্বান করতে থাকে। প্রকৃত মুমিনের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করে আল্লাহ বলেন, ‘আর মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীরা একে অপরের বন্ধু, তারা ভালো কাজের আদেশ দেয় এবং অন্যায় কাজ থেকে নিষেধ করে। আর তারা সালাত কায়েম করে, জাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করে।
সৎ কাজে আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ, প্রচার, নসিহত, ওয়াজ বা আল্লাহর দ্বিন পালনের পথে আহ্বান করাই ছিল সব নবী ও রাসুলের দায়িত্ব। সব নবী তাঁর উম্মতকে তাওহিদ ও ইবাদতের আদেশ করেছেন। শিরক, কুফর ও পাপকাজ থেকে নিষেধ করেছেন। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘যারা অনুসরণ করে বার্তাবাহক উম্মি নবীর, যার উল্লেখ তারা তাদের কাছে রক্ষিত তাওরাত ও ইনজিলে লিপিবদ্ধ পায়, যিনি তাদের সৎ কাজের নির্দেশ দেন এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করেন।
’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ১৫৭)
এই দাওয়াতি কার্যক্রমের কর্মপন্থা কী হবে—এ বিষয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আপনি আপনার রবের দিকে আহ্বান করুন হিকমত ব��� প্রজ্ঞা দ্বারা, সুন্দর ওয়াজ-উপদেশ দ্বারা এবং তাদের সঙ্গে উত্কৃষ্টতর পদ্ধতিতে আলোচনা-বিতর্ক করুন।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ১২৫)
কোরআনুল কারিমে বারবার বলা হয়েছে যে প্রচার বা পৌঁছানোই নবী-রাসুলদের একমাত্র দায়িত্ব। ইরশাদ হয়েছে : ‘রাসুলদের দায়িত্ব শুধু সুস্পষ্টভাবে প্রচার করা।’
(সুরা : নাহল, আয়াত : ৩৫)
যুগে যুগে নবীরা মানুষের কাছে আল্লাহর বাণী পৌঁছে দিয়েছেন।
নুহ (আ.)-এর জবানিতে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আমি আমার রবের রিসালাতের দায়িত্ব তোমাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি এবং আমি তোমাদের নসিহত করছি।’
(সুরা : আরাফ, আয়াত : ৬২)
দাওয়াত, আদেশ-নিষেধ, দ্বিন প্রতিষ্ঠা বা নসিহতের এই দায়িত্ব উম্মতে মুহাম্মদির অন্যতম দায়িত্ব ও বৈশিষ্ট্য। ইরশাদ হয়েছে : ‘আর যেন তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল হয়, যারা কল্যাণের প্রতি আহ্বান করবে, ভালো কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করবে। আর তারাই সফল।
(সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১০৪)
অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি, মানবজাতির (কল্যাণের) জন্য তোমাদের আবির্ভাব হয়েছে। তোমরা ন্যায়সংগত কাজের আদেশ দাও এবং অন্যায় কাজে নিষেধ করো এবং আল্লাহর ওপর ঈমান আনো...।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১১০)
প্রকৃত মুমিন শুধু নিজেই ইবাদত করেই ক্ষ্যান্ত হয় না, সে মানুষকে আল্লাহর পথে আহ্বান করতে থাকে। প্রকৃত মুমিনের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করে আল্লাহ বলেন, ‘আর মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীরা একে অপরের বন্ধু, তারা ভালো কাজের আদেশ দেয় এবং অন্যায় কাজ থেকে নিষেধ করে। আর তারা সালাত কায়েম করে, জাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করে।
শিগগির আল্লাহ তাদের প্রতি দয়া করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।’
(সুরা : তাওবা, আয়াত : ৭১)
দ্বিন প্রচারের দায়িত্ব পালনকারী মুমিনদের সর্বোত্তম মানুষ বলে ঘোষণা করা হয়েছে পবিত্র কোরআনে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘ওই ব্যক্তির চেয়ে কথায় কে উত্তম—যে আল্লাহর প্রতি মানুষকে আহ্বান করে, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি তো মুসলমানদের একজন।’
(সুরা : ফুসসিলাত, আয়াত : ৩৩)
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
আল্লাহর পথে দাওয়াতের গুরুত্ব
The Importance Of Calling to The Path of Allah
0 notes
ilyforallahswt · 11 days ago
Text
Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media
আল্লাহর পথে দাওয়াতের গুরুত্ব
The Importance Of Calling to The Path of Allah
youtube
youtube
youtube
সৎ কাজে আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ, প্রচার, নসিহত, ওয়াজ বা আল্লাহর দ্বিন পালনের পথে আহ্বান করাই ছিল সব নবী ও রাসুলের দায়িত্ব। সব নবী তাঁর উম্মতকে তাওহিদ ও ইবাদতের আদেশ করেছেন। শিরক, কুফর ও পাপকাজ থেকে নিষেধ করেছেন। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘যারা অনুসরণ করে বার্তাবাহক উম্মি নবীর, যার উল্লেখ তারা তাদের কাছে রক্ষিত তাওরাত ও ইনজিলে লিপিবদ্ধ পায়, যিনি তাদের সৎ কাজের নির্দেশ দেন এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করেন।’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ১৫৭)
এই দাওয়াতি কার্যক্রমের কর্মপন্থা কী হবে—এ বিষয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আপনি আপনার রবের দিকে আহ্বান করুন হিকমত বা প্রজ্ঞা দ্বারা, সুন্দর ওয়াজ-উপদেশ দ্বারা এবং তাদের সঙ্গে উত্কৃষ্টতর পদ্ধতিতে আলোচনা-বিতর্ক করুন।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ১২৫)
কোরআনুল কারিমে বারবার বলা হয়েছে যে প্রচার বা পৌঁছানোই নবী-রাসুলদের একমাত্র দায়িত্ব। ইরশাদ হয়েছে : ‘রাসুলদের দায়িত্ব শুধু সুস্পষ্টভাবে প্রচার করা।’
সুরা : নাহল, আয়াত : ৩৫)
যুগে যুগে নবীরা মানুষের কাছে আল্লাহর বাণী পৌঁছে দিয়েছেন।
নুহ (আ.)-এর জবানিতে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আমি আমার রবের রিসালাতের দায়িত্ব তোমাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি এবং আমি তোমাদের নসিহত করছি।’(সুরা : আরাফ, আয়াত : ৬২)
দাওয়াত, আদেশ-নিষেধ, দ্বিন প্রতিষ্ঠা বা নসিহতের এই দায়িত্ব উম্মতে মুহাম্মদির অন্যতম দায়িত্ব ও বৈশিষ্ট্য। ইরশাদ হয়েছে : ‘আর যেন তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল হয়, যারা কল্যাণের প্রতি আহ্বান করবে, ভালো কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করবে। আর তারাই সফল।
(সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১০৪)
অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি, মানবজাতির (কল্যাণের) জন্য তোমাদের আবির্ভাব হয়েছে। তোমরা ন্যায়সংগত কাজের আদেশ দাও এবং অন্যায় কাজে নিষেধ করো এবং আল্লাহর ওপর ঈমান আনো...।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১১০)
প্রকৃত মুমিন শুধু নিজেই ইবাদত করেই ক্ষ্যান্ত হয় না, সে মানুষকে আল্লাহর পথে আহ্বান করতে থাকে। প্রকৃত মুমিনের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করে আল্লাহ বলেন, ‘আর মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীরা একে অপরের বন্ধু, তারা ভালো কাজের আদেশ দেয় এবং অন্যায় কাজ থেকে নিষেধ করে। আর তারা সালাত কায়েম করে, জাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করে।
সৎ কাজে আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ, প্রচার, নসিহত, ওয়াজ বা আল্লাহর দ্বিন পালনের পথে আহ্বান করাই ছিল সব নবী ও রাসুলের দায়িত্ব। সব নবী তাঁর উম্মতকে তাওহিদ ও ইবাদতের আদেশ করেছেন। শিরক, কুফর ও পাপকাজ থেকে নিষেধ করেছেন। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘যারা অনুসরণ করে বার্তাবাহক উম্মি নবীর, যার উল্লেখ তারা তাদের কাছে রক্ষিত তাওরাত ও ইনজিলে লিপিবদ্ধ পায়, যিনি তাদের সৎ কাজের নির্দেশ দেন এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করেন।
’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ১৫৭)
এই দাওয়াতি কার্যক্রমের কর্মপন্থা কী হবে—এ বিষয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আপনি আপনার রবের দিকে আহ্বান করুন হিকমত বা প্রজ্ঞা দ্বারা, সুন্দর ওয়াজ-উপদেশ দ্বারা এবং তাদের সঙ্গে উত্কৃষ্টতর পদ্ধতিতে আলোচনা-বিতর্ক করুন।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ১২৫)
কোরআনুল কারিমে বারবার বলা হয়েছে যে প্রচার বা পৌঁছানোই নবী-রাসুলদের একমাত্র দায়িত্ব। ইরশাদ হয়েছে : ‘রাসুলদের দায়িত্ব শুধু সুস্পষ্টভাবে প্রচার করা।’
(সুরা : নাহল, আয়াত : ৩৫)
যুগে যুগে নবীরা মানুষের কাছে আল্লাহর বাণী পৌঁছে দিয়েছেন।
নুহ (আ.)-এর জবানিতে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আমি আমার রবের রিসালাতের দায়িত্ব তোমাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি এবং আমি তোমাদের নসিহত করছি।’
(সুরা : আরাফ, আয়াত : ৬২)
দাওয়াত, আদেশ-নিষেধ, দ্বিন প্রতিষ্ঠা বা নসিহতের এই দায়িত্ব উম্মতে মুহাম্মদির অন্যতম দায়িত্ব ও বৈশিষ্ট্য। ইরশাদ হয়েছে : ‘আর যেন তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল হয়, যারা কল্যাণের প্রতি আহ্বান করবে, ভালো কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করবে। আর তারাই সফল।
(সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১০৪)
অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি, মানবজাতির (কল্যাণের) জন্য তোমাদের আবির্ভাব হয়েছে। তোমরা ন্যায়সংগত কাজের আদেশ দাও এবং অন্যায় কাজে নিষেধ করো এবং আল্লাহর ওপর ঈমান আনো...।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১১০)
প্রকৃত মুমিন শুধু নিজেই ইবাদত করেই ক্ষ্যান্ত হয় না, সে মানুষকে আল্লাহর পথে আহ্বান করতে থাকে। প্রকৃত মুমিনের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করে আল্লাহ বলেন, ‘আর মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীরা একে অপরের বন্ধু, তারা ভালো কাজের আদেশ দেয় এবং অন্যায় কাজ থেকে নিষেধ করে। আর তারা সালাত কায়েম করে, জাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করে।
শিগগির আল্লাহ তাদের প্রতি দয়া করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।’
(সুরা : তাওবা, আয়াত : ৭১)
দ্বিন প্রচারের দায়িত্ব পালনকারী মুমিনদের সর্বোত্তম মানুষ বলে ঘোষণা করা হয়েছে পবিত্র কোরআনে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘ওই ব্যক্তির চেয়ে কথায় কে উত্তম—যে আল্লাহর প্রতি মানুষকে আহ্বান করে, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি তো মুসলমানদের একজন।’
(সুরা : ফুসসিলাত, আয়াত : ৩৩)
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
আল্লাহর পথে দাওয়াতের গুরুত্ব
The Importance Of Calling to The Path of Allah
আল্লাহর পথে দাওয়াতের গুরুত্ব
The Importance Of Calling to The Path of Allah
0 notes
myreligionislam · 11 days ago
Text
Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media
আল্লাহর পথে দাওয়াতের গুরুত্ব
The Importance Of Calling to The Path of Allah
youtube
youtube
youtube
সৎ কাজে আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ, প্রচার, নসিহত, ওয়াজ বা আল্লাহর দ্বিন পালনের পথে আহ্বান করাই ছিল সব নবী ও রাসুলের দায়িত্ব। সব নবী তাঁর উম্মতকে তাওহিদ ও ইবাদতের আদেশ করেছেন। শিরক, কুফর ও পাপকাজ থেকে নিষেধ করেছেন। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘যারা অনুসরণ করে বার্তাবাহক উম্মি নবীর, যার উল্লেখ তারা তাদের কাছে রক্ষিত তাওরাত ও ইনজিলে লিপিবদ্ধ পায়, যিনি তাদের সৎ কাজের নির্দেশ দেন এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করেন।’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ১৫৭)
এই দাওয়াতি কার্যক্রমের কর্মপন্থা কী হবে—এ বিষয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আপনি আপনার রবের দিকে আহ্বান করুন হিকমত বা প্রজ্ঞা দ্বারা, সুন্দর ওয়াজ-উপদেশ দ্বারা এবং তাদের সঙ্গে উত্কৃষ্টতর পদ্ধতিতে আলোচনা-বিতর্ক করুন।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ১২৫)
কোরআনুল কারিমে বারবার বলা হয়েছে যে প্রচার বা পৌঁছানোই নবী-রাসুলদের একমাত্র দায়িত্ব। ইরশাদ হয়েছে : ‘রাসুলদের দায়িত্ব শুধু সুস্পষ্টভাবে প্রচার করা।’
সুরা : নাহল, আয়াত : ৩৫)
যুগে যুগে নবীরা মানুষের কাছে আল্লাহর বাণী পৌঁছে দিয়েছেন।
নুহ (আ.)-এর জবানিতে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আমি আমার রবের রিসালাতের দায়িত্ব তোমাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি এবং আমি তোমাদের নসিহত করছি।’(সুরা : আরাফ, আয়াত : ৬২)
দাওয়াত, আদেশ-নিষেধ, দ্বিন প্রতিষ্ঠা বা নসিহতের এই দায়িত্ব উম্মতে মুহাম্মদির অন্যতম দায়িত্ব ও বৈশিষ্ট্য। ইরশাদ হয়েছে : ‘আর যেন তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল হয়, যারা কল্যাণের প্রতি আহ্বান করবে, ভালো কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করবে। আর তারাই সফল।
(সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১০৪)
অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি, মানবজাতির (কল্যাণের) জন্য তোমাদের আবির্ভাব হয়েছে। তোমরা ন্যায়সংগত কাজের আদেশ দাও এবং অন্যায় কাজে নিষেধ করো এবং আল্লাহর ওপর ঈমান আনো...।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১১০)
প্রকৃত মুমিন শুধু নিজেই ইবাদত করেই ক্ষ্যান্ত হয় না, সে মানুষকে আল্লাহর পথে আহ্বান করতে থাকে। প্রকৃত মুমিনের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করে আল্লাহ বলেন, ‘আর মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীরা একে অপরের বন্ধু, তারা ভালো কাজের আদেশ দেয় এবং অন্যায় কাজ থেকে নিষেধ করে। আর তারা সালাত কায়েম করে, জাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করে।
সৎ কাজে আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ, প্রচার, নসিহত, ওয়াজ বা আল্লাহর দ্বিন পালনের পথে আহ্বান করাই ছিল সব নবী ও রাসুলের দায়িত্ব। সব নবী তাঁর উম্মতকে তাওহিদ ও ইবাদতের আদেশ করেছেন। শিরক, কুফর ও পাপকাজ থেকে নিষেধ করেছেন। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘যারা অনুসরণ করে বার্তাবাহক উম্মি নবীর, যার উল্লেখ তারা তাদের কাছে রক্ষিত তাওরাত ও ইনজিলে লিপিবদ্ধ পায়, যিনি তাদের সৎ কাজের নির্দেশ দেন এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করেন।
’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ১৫৭)
এই দাওয়াতি কার্যক্রমের কর্মপন্থা কী হবে—এ বিষয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আপনি আপনার রবের দিকে আহ্বান করুন হিকমত বা প্রজ্ঞা দ্বারা, সুন্দর ওয়াজ-উপদেশ দ্বারা এবং তাদের সঙ্গে উত্কৃষ্টতর পদ্ধতিতে আলোচনা-বিতর্ক করুন।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ১২৫)
কোরআনুল কারিমে বারবার বলা হয়েছে যে প্রচার বা পৌঁছানোই নবী-রাসুলদের একমাত্র দায়িত্ব। ইরশাদ হয়েছে : ‘রাসুলদের দায়িত্ব শুধু সুস্পষ্টভাবে প্রচার করা।’
(সুরা : নাহল, আয়াত : ৩৫)
যুগে যুগে নবীরা মানুষের কাছে আল্লাহর বাণী পৌঁছে দিয়েছেন।
নুহ (আ.)-এর জবানিতে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আমি আমার রবের রিসালাতের দায়িত্ব তোমাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি এবং আমি তোমাদের নসিহত করছি।’
(সুরা : আরাফ, আয়াত : ৬২)
দাওয়াত, আদেশ-নিষেধ, দ্বিন প্রতিষ্ঠা বা নসিহতের এই দায়িত্ব উম্মতে মুহাম্মদির অন্যতম দায়িত্ব ও বৈশিষ্ট্য। ইরশাদ হয়েছে : ‘আর যেন তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল হয়, যারা কল্যাণের প্রতি আহ্বান করবে, ভালো কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করবে। আর তারাই সফল।
(সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১০৪)
অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি, মানবজাতির (কল্যাণের) জন্য তোমাদের আবির্ভাব হয়েছে। তোমরা ন্যায়সংগত কাজের আদেশ দাও এবং অন্যায় কাজে নিষেধ করো এবং আল্লাহর ওপর ঈমান আনো...।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১১০)
প্রকৃত মুমিন শুধু নিজেই ইবাদত করেই ক্ষ্যান্ত হয় না, সে মানুষকে আল্লাহর পথে আহ্বান করতে থাকে। প্রকৃত মুমিনের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করে আল্লাহ বলেন, ‘আর মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীরা একে অপরের বন্ধু, তারা ভালো কাজের আদেশ দেয় এবং অন্যায় কাজ থেকে নিষেধ করে। আর তারা সালাত কায়েম করে, জাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করে।
শিগগির আল্লাহ তাদের প্রতি দয়া করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।’
(সুরা : তাওবা, আয়াত : ৭১)
দ্বিন প্রচারের দায়িত্ব পালনকারী মুমিনদের সর্বোত্তম মানুষ বলে ঘোষণা করা হয়েছে পবিত্র কোরআনে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘ওই ব্যক্তির চেয়ে কথায় কে উত্তম—যে আল্লাহর প্রতি মানুষকে আহ্বান করে, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি তো মুসলমানদের একজন।’
(সুরা : ফুসসিলাত, আয়াত : ৩৩)
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
আল্লাহর পথে দাওয়াতের গুরুত্ব
The Importance Of Calling to The Path of Allah
0 notes
allahisourrabb · 2 days ago
Text
Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media
ঈমানের উপকারিতা এবং কুফরের ভয়াবহতা
ঈমান ও কুফর
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
ঈমানের উপকারিতা এবং কুফরের ভয়াবহতা
ঈমান অর্থ আস্থা, বিশ্বাস, প্রত্যয়, প্রতিজ্ঞা। ঈমান বলতে একক অদ্বিতীয় আল্লাহকে বিশ্বাস করা বোঝায়। আর কুফর হলো অস্বীকার, অবিশ্বাস ও অমান্যতার নাম। পরিভাষায়, এক আল্লাহয় অবিশ্বাস ও অমান্যতাকে কুফর বলে।
ইমান এর পূর্ণ অর্থ কি?
ইমান (আরবি: إِيمَان, ʾīmān, lit. 'বিশ্বাস' বা 'বিশ্বাস', এছাড়াও 'স্বীকৃতি ') ইসলামী ধর্মতত্ত্বে ইসলামের ধর্মীয় দিকগুলিতে একজন বিশ্বাসীর বিশ্বাস এবং কর্মের স্বীকৃতিকে বোঝায়। এর সবচেয়ে সহজ সংজ্ঞা হল বিশ্বাসের ছয়টি প্রবন্ধে বিশ্বাস, যা আরকান আল-ইমান নামে পরিচিত।
ঈমানের সর্বপ্রথম ও সর্বপ্রধান বিষয় কি?
ঈমানের ছয়টি মৌলিক স্তম্ভের প্রথম এবং প্রধান স্তম্ভ হলো মহান আল্লাহর ওপর ঈমান তথা বিশ্বাস স্থাপন করা। আল্লাহর ওপর ঈমান আনার অর্থ এ কথা বিশ্বাস করা, আল্লাহ এক, অদ্বিতীয় ও অতুলনীয়।
ঈমানের ফল কি?
ইমানের ফল : ইমান মানুষের মনে আল্লাহর আনুগত্য ও আল্লাহর ভয় সৃষ্টি করে। ইমানের ফলে মানুষের নৈতিক চরিত্র উন্নত হয়। একজন মানুষ ইমানদার হলে তার মধ্যে আল্লাহ ও পরকালের ভয় থাকবে। একজন মুমিন ব্যক্তি সদা সত্য কথা বলবেন।
ইমানের বহিঃপ্রকাশ কোনটি?
ইসলাম হলো ইমানের বহিঃপ্রকাশ ।
ঈমান ও ইসলামের মধ্যে পার্থক্য কি?
ইমান হলো আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সা.) যা কিছু আদেশ করেছেন সেগুলোর ওপর দৃঢ় বিশ্বাস স্থাপন করা। আর ইসলাম হলো আল্লাহ ও তার রাসূল (সা.) যা কিছু আদেশ করেছেন এবং সে অনুযায়ী আমল করার নাম।
কুফর বলতে কি বুঝায়?
‌‌‌কাফির (আরবি: كافِر) একটি আরবি শব্দ, যা আরবি কুফর (আরবি: َكَفَر) ধাতু থেকে আগত, যার শাব্দিক অর্থ হল ঢেকে রাখা, লুকিয়ে রাখা এবং এর ব্যবহারিক অর্থ হল অবাধ্যতা, অস্বীকার করা, অকৃ��জ্ঞতা। ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় কুফর ঈমানের বিপরীত।
ঈমান মানুষকে সঠিক পথে পরিচালিত করার মাধ্যমে সৌভাগ্যবান বানায়। পক্ষান্তরে কুফর মানুষকে হতভাগ্য ও দুর্ভাগা বানায়। ঈমান মানুষকে আলোর পথ দেখায়, আর কুফর মানুষকে অন্ধকারের পথে পরিচালিত করে। ঈমানের শেষ পরিণাম জান্নাত আর কুফরের চূড়ান্ত পরিণতি জাহান্নাম।
আমাদের উচিত ঈমানের পথে পরিচালিত হওয়া, কুফরের পথ পরিহার করা। আসুন, কোরআন-হাদিসের আলোকে ঈমানের উপকারিতা এবং কুফরের ভয়াবহতা সম্পর্কে জেনে নিই।
ঈমানের উপকারিতা
ঈমান হলো আল্লাহ তাআলার একত্ববাদে বিশ্বাস করা। তার ফেরেশতা, কিতাব, নবী-রাসুল, শেষ দিবস ও ভাগ্যের ভালো-মন্দের ওপর বিশ্বাস রাখা (মুসলিম, হাদিস : ১)
এগুলো মনেপ্রাণে বিশ্বাস করা, মুখে স্বীকৃতি দেওয়া এবং কার্যে পরিণত করা।
যে ব্যক্তি এমনটা করবে সে মুমিন বলে স্বীকৃত হবে। সে দুনিয়া ও আখিরাতে আল্লাহ ঘোষিত বিভিন্ন পুরস্কারে পুরস্কৃত হবে।
পবিত্র ও আনন্দময় জীবন লাভ : ঈমানের কারণে ব্যক্তি দুনিয়ায় পবিত্র ও আনন্দময় জীবন লাভ করবে। মুমিন ব্যক্তি আল্লাহর পক্ষ থেকে দুনিয়ায় কলুষমুক্ত, স্বচ্ছ-সফেদ, নির্ঝঞ্ঝাট জীবনের উত্তারাধিকারী হবে। আল্লাহ পকিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘মুমিন হয়ে পুরুষ ও নারীর মধ্যে যে কেউ সৎকাজ করবে, অবশ্যই আমরা তাকে পবিত্র জীবন দান করব।
(সুরা : নাহল, আয়াত : ৯৭)
বেশির ভাগ মুফাসসিরের মতে, আয়াতে ‘হায়াতে তাইয়্যিবা’ বলতে দুনিয়ার স্বাচ্ছন্দ্যময় পবিত্র জীবনকে বোঝানো হয়েছে। (মাআরেফুল কোরআন : ১৪৪৬)
নিজ কর্মে দৃঢ়তা ও অবিচলতা অর্জন : ঈমানের কারণে ব্যক্তি দুনিয়া ও আখিরাতে আল্লাহর পক্ষ থেকে নিরাপত্তা লাভ করে। কাজকর্মে অবিচলতা ও অটলতা অর্জন করে। আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য লাভে ধন্য হয়। ঈমানহারা মানুষ প্রবৃত্তির তাড়নায় যখন দিশাহারা হয়ে যায়, উদ্ভ্রান্তের মতো ঘুরতে থাকে, ঈমানদাররা তখন আল্লাহ বিশ্বাসের কারণে তাড়না ও হতাশামুক্ত জীবনের তাওফিক পায়। আবার কবরে ফেরেশতাদের প্রশ্নে এবং কিয়ামতের বিভীষিকায়ও আল্লাহ তাআলার নিরাপত্তার চাদরে বেষ্টিত থাকবে এবং দৃঢ়তা অর্জন করবে। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘যারা ঈমান এনেছে, আল্লাহ তাদের সুদৃঢ় বাক্যের দ্বারা দুনিয়ার জীবনে ও আখিরাতে সুপ্রতিষ্ঠিত রাখবেন।’ (সুরা : ইবরাহিম, আয়াত : ২৭)
দুনিয়ার জীবনে বরকতপ্রাপ্তি : ঈমানের কারণে ব্যক্তি দুনিয়ার জীবনে বরকত লাভ করবে, প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে। বরকত বলতে শুধু কোনো কিছুর আধিক্য বোঝায় না; বরকত হচ্ছে কোনো কিছু নিয়মিত থাকা। ঈমানের কারণে ব্যক্তি আসমান ও জমিনের বরকত লাভে ধন্য হয়। সঠিক সময়ে আসমান বৃষ্টি বর্ষণ করে আর জমিন থেকে মনঃপূত জিনিস উৎপন্ন হয়। সুরা আরাফের ৯৬ নম্বর আয়াতে এসেছে, ‘আর যদি সেই সব জনপদের অধিবাসীরা ঈমান আনত এবং তাকওয়া অবলম্বন করত তাহলে অবশ্যই আমরা তাদের জন্য আসমান ও জমিনের বরকতসমূহ উন্মুক্ত করে দিতাম।’ একমাত্র ঈমানের কারণে মানুষ দুনিয়া ও আখিরাতের এই বরকত পেতে পারে।
আল্লাহর নিরাপত্তা লাভে ধন্য হওয়া : আল্লাহর নিরাপত্তাই প্রকৃত নিরাপত্তা। সেই ব্যক্তি ধন্য, যে তা লাভ করবে। ঈমানদাররা দুনিয়া ও আখিরাতে আল্লাহ তাআলার আজাব, গজব, শাস্তি ও বিভীষিকা থেকে নিরাপত্তা লাভ করবে একমাত্র ঈমানের ওপর অটল থাকার কারণে। আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের ঈমানকে জুলুম (শিরক) দ্বারা কলুষিত করেনি, নিরাপত্তা তাদেরই জন্য এবং তারাই হিদায়াতপ্রাপ্ত।’(সুরা : আনআম, আয়াত : ৮২)
শত্রুদের থেকে হেফাজত থাকবে : ঈমানের কারণে আল্লাহ তাআলা ব্যক্তিকে শারীরিক, মানসিক, আর্থিকসহ সব ধরনের ক্ষয়ক্ষতি থেকে হেফাজতে রাখবেন। কোরআনে এসেছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ মুমিনদের পক্ষ থেকে প্রতিরোধ করেন।’ (সুরা : হাজ, আয়াত : ৩৮)
চিরকাঙ্ক্ষিত জান্নাত অর্জন : ঈমানের চূড়ান্ত পরিণাম হলো, ঈমান ব্যক্তিকে চিরকাঙ্ক্ষিত জান্নাতে প্রবেশ করাবে। যারা ঈমান আনবে, আল্লাহ খুশি হয়ে তাদের জন্য চিরস্থায়ী জান্নাতে বসবাসের সুযোগ করে দেবেন। অনন্তকালের জন্য সুখের বন্দোবস্ত হয়ে যাবে। কোরআনে এসেছে, ‘আর যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে তাদের শুভ সংবাদ দিন যে তাদের জন্য আছে জান্নাত, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত।’
(সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ২৫)
কুফরের ভয়াবহতা
কুফর অর্থ অবিশ্বাস করা, অস্বীকার করা, অকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা ইত্যাদি। ইসলামী পরিভাষায় কুফর বলতে বোঝায় আল্লাহ, তার রাসুল ও ঈমানের অন্যান্য বিষয়ে বিশ্বাসের অবিদ্যমানতা। কুফর ব্যক্তিকে আল্লাহর অবাধ্য বানায় এবং জাহান্নামের উপযুক্ত করে। কোরআনে এসেছে, ‘তারা অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যারা আল্লাহর সাক্ষাৎ অস্বীকার করেছে।’ (সুরা : ইউনুস, আয়াত : ৪৫)
সংকীর্ণ জীবনের অধিকারী হওয়া : মনুষ্যজীবনে কুফর এমন এক অভিশাপের নাম, যার কারণে আল্লাহ ব্যক্তির জীবন সংকীর্ণ করে দেন। দুনিয়াবি আসবাব আর ধন-সম্পদ পরিপূর্ণ থাকার পরও মনে হবে, যেন কিছুই নেই। মনের স্বস্তি ও শান্তি উবে যাবে। কোনো কিছুতেই মন ভরবে না। চারদিক থেকে সংকীর্ণতা জেঁকে বসবে। আল্লাহ বলেছেন, ‘আর যে আমার স্মরণ থেকে বিমুখ হয়, তার জীবনযাপন হবে সংকুচিত আর আমরা তাকে কিয়ামতের দিন উত্থিত করব অন্ধ অবস্থায়।’
(সুরা : ত্বহা, আয়াত : ১২৪)
সংঘাতময় অশান্ত পৃথিবী : কুফর এমন একটি খারাপ কর্ম, যার কারণে মানুষ নিজ স্রষ্টাকে অস্বীকার করে। তার ওপর এমন কিছু অপবাদ আরোপ করে, যা তার সত্তার সঙ্গে যায় না। তখন আল্লাহর গোসসা ও ক্রোধ এতটাই বেড়ে যায় যে আসমান-জমিন ধ্বংস হওয়ার উপক্রম হয়। তবে আল্লাহ তার অনুগ্রহে পৃথিবীকে শান্ত রাখেন। কোরআনে এসেছে, ‘আর তারা বলে, দয়াময় সন্তান গ্রহণ করেছেন। তোমরা তো এমন এক বীভৎস বিষয়ের অবতারণা করেছ, যাতে আসমানসমূহ বিদীর্ণ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়, আর জমিন খণ্ডবিখণ্ড এবং পর্বতমালা চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে আপতিত হবে।’
(সুরা : মারইয়াম, আয়াত : ৮৮-৯০)
কুফর ব্যক্তিকে দয়ামায়াবঞ্চিত করে : পৃথিবীকে সংঘাতময়, বসবাসের অনপুযোগী করার দায়ভার একমাত্র কুফরের। আল্লাহর ওপর অবিশ্বাসীরাই দুনিয়াকে অশান্ত করার পেছনে একমাত্র দায়ী। তাই কাফেরের প্রতি দুনিয়ার কোনো সৃষ্টজীবের মায়া থাকে না। তাদের কষ্টে ও ধ্বংসে কেউ ব্যথিত হয় না। কাঁদে না। কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘আকাশ ও পৃথিবী কেউই তাদের জন্য অশ্রুপাত করেনি এবং তাদের অবকাশও দেওয়া হয়নি।’
(সুরা : দুখান, আয়াত : ২৯)
আল্লাহর ঘৃণা ও আজাবের উপযুক্ত করে : কুফর ব্যক্তিকে আল্লাহর ঘৃণা ও আজাব-গজবের উপযুক্ত করে। দুনিয়ায় যত জাতি ধ্বংস হয়েছে, তারা নিজেদের পাপ ও কুফরির কারণে ধ্বংস হয়েছে। পরকালে যারা জাহান্নামে চিরস্থায়ী হবে, তারাও কুফরের কারণে শাস্তির সম্মুখীন হবে। দুনিয়ায় বালা-মুসিবত নাজিলের কারণ মানুষের কুফরি। আল্লাহ বলেন, ‘যারা কুকর্মের ষড়যন্ত্র করে, তারা কি এ বিষয়ে নির্ভয় হয়েছে যে আল্লাহ তাদের ভূগর্ভে বিলীন করবেন না অথবা তাদের ওপর আসবে না শাস্তি এমনভাবে যে তারা উপলব্ধিও করবে না। অথবা চলাফেরাকালে তিনি তাদের পাকরাও করবেন না? আর তারা তা ব্যর্থ করতে পারবে না।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ৪৫,৪৬)
অনিবার্য ধ্বংসের মুখোমুখি করে : কিয়ামতের সফলতা প্রকৃত সফলতা, আর সেদিনের ব্যর্থতা প্রকৃত ব্যর্থতা। কুফর ব্যক্তিকে সেদিন অনিবার্য ধ্বংসের মুখোম���খি করে। তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপের মাধ্যমে চূড়ান্ত ব্যর্থ করে। আল্লাহ বলেন, ‘আর যাদের নেকির পাল্লা হালকা হবে, তারা হবে সেই সব লোক, যারা নিজেদের ধ্বংস ও ক্ষতি নিজেরাই করেছে, কারণ তারা আমার নিদর্শনসমূহ প্রত্যাখ্যান করত।’
(সুরা : আরাফ, আয়াত : ৯)
কুফরের চূড়ান্ত পরিণাম চিরস্থায়ী জাহান্নাম : কুফর কাফেরকে চিরস্থায়ীভাবে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবে, যা থেকে পরিত্রাণের কোনো উপায় তাদের থাকবে না। আল্লাহ বলেছেন, ‘আর আপনি যদি সেই অবস্থা দেখতেন, যখন ফেরেশতারা তাদের রুহ কবজ করার সময় তাদের মুখমণ্ডলে ও পৃষ্ঠদেশে আঘাত করেন।’
(সুরা : আনফাল, আয়াত : ৫০)
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
ঈমানের উপকারিতা এবং কুফরের ভয়াবহতা
0 notes
mylordisallah · 11 days ago
Text
Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media Tumblr media
আল্লাহর পথে দাওয়াতের গুরুত্ব
The Importance Of Calling to The Path of Allah
youtube
youtube
youtube
সৎ কাজে আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ, প্রচার, নসিহত, ওয়াজ বা আল্লাহর দ্বিন পালনের পথে আহ্বান করাই ছিল সব নবী ও রাসুলের দায়িত্ব। সব নবী তাঁর উম্মতকে তাওহিদ ও ইবাদতের আদেশ করেছেন। শিরক, কুফর ও পাপকাজ থেকে নিষেধ করেছেন। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘যারা অনুসরণ করে বার্তাবাহক উম্মি নবীর, যার উল্লেখ তারা তাদের কাছে রক্ষিত তাওরাত ও ইনজিলে লিপিবদ্ধ পায়, যিনি তাদের সৎ কাজের নির্দেশ দেন এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করেন।’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ১৫৭)
এই দাওয়াতি কার্যক্রমের কর্মপন্থা কী হবে—এ বিষয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আপনি আপনার রবের দিকে আহ্বান করুন হিকমত বা প্রজ্ঞা দ্বারা, সুন্দর ওয়াজ-উপদেশ দ্বারা এবং তাদের সঙ্গে উত্কৃষ্টতর পদ্ধতিতে আলোচনা-বিতর্ক করুন।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ১২৫)
কোরআনুল কারিমে বারবার বলা হয়েছে যে প্রচার বা পৌঁছানোই নবী-রাসুলদের একমাত্র দায়িত্ব। ইরশাদ হয়েছে : ‘রাসুলদের দায়িত্ব শুধু সুস্পষ্টভাবে প্রচার করা।’
সুরা : নাহল, আয়াত : ৩৫)
যুগে যুগে নবীরা মানুষের কাছে আল্লাহর বাণী পৌঁছে দিয়েছেন।
নুহ (আ.)-এর জবানিতে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আমি আমার রবের রিসালাতের দায়িত্ব তোমাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি এবং আমি তোমাদের নসিহত করছি।’(সুরা : আরাফ, আয়াত : ৬২)
দাওয়াত, আদেশ-নিষেধ, দ্বিন প্রতিষ্ঠা বা নসিহতের এই দায়িত্ব উম্মতে মুহাম্মদির অন্যতম দায়িত্ব ও বৈশিষ্ট্য। ইরশাদ হয়েছে : ‘আর যেন তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল হয়, যারা কল্যাণের প্রতি আহ্বান করবে, ভালো কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করবে। আর তারাই সফল।
(সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১০৪)
অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি, মানবজাতির (কল্যাণের) জন্য তোমাদের আবির্ভাব হয়েছে। তোমরা ন্যায়সংগত কাজের আদেশ দাও এবং অন্যায় কাজে নিষেধ করো এবং আল্লাহর ওপর ঈমান আনো...।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১১০)
প্রকৃত মুমিন শুধু নিজেই ইবাদত করেই ক্ষ্যান্ত হয় না, সে মানুষকে আল্লাহর পথে আহ্বান করতে থাকে। প্রকৃত মুমিনের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করে আল্লাহ বলেন, ‘আর মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীরা একে অপরের বন্ধু, তারা ভালো কাজের আদেশ দেয় এবং অন্যায় কাজ থেকে নিষেধ করে। আর তারা সালাত কায়েম করে, জাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করে।
সৎ কাজে আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ, প্রচার, নসিহত, ওয়াজ বা আল্লাহর দ্বিন পালনের পথে আহ্বান করাই ছিল সব নবী ও রাসুলের দায়িত্ব। সব নবী তাঁর উম্মতকে তাওহিদ ও ইবাদতের আদেশ করেছেন। শিরক, কুফর ও পাপকাজ থেকে নিষেধ করেছেন। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘যারা অনুসরণ করে বার্তাবাহক উম্মি নবীর, যার উল্লেখ তারা তাদের কাছে রক্ষিত তাওরাত ও ইনজিলে লিপিবদ্ধ পায়, যিনি তাদের সৎ কাজের নির্দেশ দেন এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ করেন।
’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ১৫৭)
এই দাওয়াতি কার্যক্রমের কর্মপন্থা কী হবে—এ বিষয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আপনি আপনার রবের দিকে আহ্বান করুন হিকমত বা প্রজ্ঞা দ্বারা, সুন্দর ওয়াজ-উপদেশ দ্বারা এবং তাদের সঙ্গে উত্কৃষ্টতর পদ্ধতিতে আলোচনা-বিতর্ক করুন।’ (সুরা : নাহল, আয়াত : ১২৫)
কোরআনুল কারিমে বারবার বলা হয়েছে যে প্রচার বা পৌঁছানোই নবী-রাসুলদের একমাত্র দায়িত্ব। ইরশাদ হয়েছে : ‘রাসুলদের দায়িত্ব শুধু সুস্পষ্টভাবে প্রচার করা।’
(সুরা : নাহল, আয়াত : ৩৫)
যুগে যুগে নবীরা মানুষের কাছে আল্লাহর বাণী পৌঁছে দিয়েছেন।
নুহ (আ.)-এর জবানিতে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আমি আমার রবের রিসালাতের দায়িত্ব তোমাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছি এবং আমি তোমাদের নসিহত করছি।’
(সুরা : আরাফ, আয়াত : ৬২)
দাওয়াত, আদেশ-নিষেধ, দ্বিন প্রতিষ্ঠা বা নসিহতের এই দায়িত্ব উম্মতে মুহাম্মদির অন্যতম দায়িত্ব ও বৈশিষ্ট্য। ইরশাদ হয়েছে : ‘আর যেন তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল হয়, যারা কল্যাণের প্রতি আহ্বান করবে, ভালো কাজের আদেশ দেবে এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করবে। আর তারাই সফল।
(সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১০৪)
অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি, মানবজাতির (কল্যাণের) জন্য তোমাদের আবির্ভাব হয়েছে। তোমরা ন্যায��সংগত কাজের আদেশ দাও এবং অন্যায় কাজে নিষেধ করো এবং আল্লাহর ওপর ঈমান আনো...।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১১০)
প্রকৃত মুমিন শুধু নিজেই ইবাদত করেই ক্ষ্যান্ত হয় না, সে মানুষকে আল্লাহর পথে আহ্বান করতে থাকে। প্রকৃত মুমিনের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করে আল্লাহ বলেন, ‘আর মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীরা একে অপরের বন্ধু, তারা ভালো কাজের আদেশ দেয় এবং অন্যায় কাজ থেকে নিষেধ করে। আর তারা সালাত কায়েম করে, জাকাত প্রদান করে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আনুগত্য করে।
শিগগির আল্লাহ তাদের প্রতি দয়া করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।’
(সুরা : তাওবা, আয়াত : ৭১)
দ্বিন প্রচারের দায়িত্ব পালনকারী মুমিনদের সর্বোত্তম মানুষ বলে ঘোষণা করা হয়েছে পবিত্র কোরআনে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘ওই ব্যক্তির চেয়ে কথায় কে উত্তম—যে আল্লাহর প্রতি মানুষকে আহ্বান করে, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি তো মুসলমানদের একজন।’
(সুরা : ফুসসিলাত, আয়াত : ৩৩)
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
youtube
আল্লাহর পথে দাওয়াতের গুরুত্ব
The Importance Of Calling to The Path of Allah
0 notes
khutbahs · 4 years ago
Photo
Tumblr media
ঈমান মজবুত এবং বৃদ্ধি করার উপায়
ঈমান আল্লাহ ও বান্দার মাঝের সেতুবন্ধন। ঈমান হ্রাস পেলে আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্কও হ্রাস পায়। আর ঈমান বৃদ্ধি পেলে আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্কও বৃদ্ধি পায়। বিভিন্ন কারণে বান্দার ঈমানে প্রভাব পড়ে। ঈমান বাড়াতে করনীয়- আল্লাহর জিকির করা, আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করা, আল্লাহর জন্য বন্ধুত্ব ও শত্রæতা, বিনম্রতা ও লজ্জাশীলতা, সর্বোপরি বেশি বেশি নেক আমল করা এবং যাবতীয় গুনাহ বর্জন করা। হে আল্লাহ! আপনি ঈমানকে আমাদের নিকট প্রিয় করে দিন এবং ঈমানকে আমাদের অন্তরে সুশোভিত করে দিন। কুফর, পাপাচার ও আপনার অবাধ্যতাকে আমাদের নিকট অপছন্দনীয় করে দিন এবং আমাদেরকে সুপথপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত করে নিন। আমীন।https://www.youtube.com/watch?v=1SW-CmCrAxc
0 notes