#রাসূল (সা.) আমার ঘরে আসলেন
Explore tagged Tumblr posts
rasikulindia · 15 days ago
Text
#দাঁড়িয়ে পানি পান করাকে অনেকে ��ারাপ মনে করে। কিন্তু দাঁড়িয়ে পানি পান করা সবসময়ই জায়েজ।।#আয়শা (রাঃ) বলেন#আমি রাসূল (সা.)-কে দাঁড়িয়ে ও বসে পানি পান করতে#খালি পায়ে ও জুতা পরিহিত অবস্থায় সালাত আদায় করতে এবং সালাত শেষে তাঁর ডান দিক থেকে ও বাম দিক থেকে#(সুনানে আন-নাসায়ী:১৩৬১)#কাবশা (রাঃ) বলেন#রাসূল (সা.) আমার ঘরে আসলেন#তিনি দাঁড়িয়ে থাকাবস্থায় একটি ঝুলন্ত মশকের মুখ হতে পানি পান করলেন। আমি পরে উঠে গিয়ে মশকের মুখে#(তিরমিজি:১৮৯২#ইবনে মাজাহ:৩৪২৩; মিশকাত:৪২৮১)#কূফা মসজিদের ফটকে ‘আলী (রাঃ)-এর নিকট পানি আনা হলে তিনি দাঁড়িয়ে তা পান করলেন। এরপর তিনি বললেনঃ লো#অথচ আমি নবী (সা.)-কে দেখেছি#তোমরা আমাকে যেমনভাবে পান করতে দেখলে তিনিও তেমনি করেছেন।#(বুখারী:৫৬১৫)#ইবনু উমার (রাঃ) বলেন#রাসূল (সা.)-এর যামানায় আমরা হাঁটতে হাঁটতে খাবার খেতাম এবং দাঁড়িয়ে থাকাবস্থায় পানি পান করতাম।#(তিরমিজি:১৮৮০#মিশকাত:৪২৭৫)#এছাড়া সহিহ মুসলিমের দাড়িয়ে পানি পান নিষেধ মর্মে হাদিসগুলো অনেকের মতেই মানসুখ কারণ এর বিপরীতে#শাইখ আব্দুল্লাহ বিন বায (রহ.) বলেন#الشرب قاعدًا أفضل والشرب قائمًا لا بأس به، والحديث الذي فيه الاستقاء منسوخ#“(পানি) বসে পান করা উত্তম। দাঁড়িয়ে পান করায় কোনও অসুবিধা নেই। আর যে হাদিসে বমি করার কথা এসেছে তা#আল্লাহু 'আলাম#vedio waz
0 notes
khutbahs · 5 years ago
Text
পবিত্র ঈদুল ফিতর: করণীয় বর্জণীয়
ঈদের দিন আমরা কি করতে পারি ?
ঈদ আরবি শব্দ। যার অর্থ ফিরে আসা। এমন দিনকে ঈদ বলা হয় যে দিন মানুষ একত্র হয় ও দিনটি বারবার ফিরে আসে। এ শব্দ দ্বারা এ দিবসের নাম রাখার তাৎপর্য হলো আল্লাহতায়ালা এ দিবসে তার বান্দাদেরকে নিয়ামত ও অনুগ্রহ দ্বারা বারবার ধন্য করেন ও বারবার তার ইহসানের দৃষ্টি দান করেন।
ঈদ আরবি শব্দ। যার অর্থ ফিরে আসা। এমন দিনকে ঈদ বলা হয় যে দিন মানুষ একত্র হয় ও দিনটি বারবার ফিরে আসে। এ শব্দ দ্বারা এ দিবসের নাম রাখার তাৎপর্য হলো আল্লাহতায়ালা এ দিবসে তার বান্দাদেরকে নিয়ামত ও অনুগ্রহ দ্বারা বারবার ধন্য করেন ও বারবার তার ইহসানের দৃষ্টি দান করেন। ইসলামে ঈদের প্রচলন আল্লাহতায়ালা মুসলিম উম্মাহর প্রতি নিয়ামত হিসেবে ঈদ দান করেছেন। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) যখন মদিনাতে আগমন করলেন তখন মদিনাবাসীদের দুটো দিবস ছিল, যে দিবসে তারা খেলাধুলা করত। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) জিজ্ঞেস করলেন এ দু’দিনের কী তাৎপর্য আছে? মদিনাবাসীরা উত্তর দিলেন, আমরা জাহেলি যুগে এ দু দিনে খেলাধুলা করতাম। তখন তিনি বললেন, ‘আল্লাহতায়ালা এ দু দিনের পরিবর্তে তোমাদের এর চেয়ে শ্রেষ্ঠ দু’টো দিন দিয়েছেন। তা হল ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতর।’ -আবু দাউদ: ১১৩৪ শুধু খেলাধুলা, আমোদ-ফুর্তির জন্য যে দু’টো দিন ছিল আল্লাহতায়ালা তা পরিবর্তন করে এমন দু’টো দিন দান করলেন যে দিনে আল্লাহর শোকরিয়া, তার জিকির, তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনার সঙ্গে সঙ্গে শালীন আমোদ-ফুর্তি, সাজ-সজ্জা, খাওয়া-দাওয়া করা হবে। বিদায়াহ ওয়ান নিহায়াহ  গ্রন্থে ইবনে জারীর (রা.)-এর বর্ণনা মতে, দ্বিতীয় হিজরিতে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) প্রথম ঈদ পালন করেছেন। ঈদে করণীয় ঈদ আমাদের জন্য এক বিরাট নিয়ামত। কিন্তু আমরা এ দিনকে নিয়ামত হিসাবে গ্রহণ করি না। এ দিনে অনেক কাজ আছে যার মাধ্যমে আমরা আল্লাহতায়ালার নিকটবর্তী হতে পারি এবং ঈদ উদযাপনও একটি ইবাদতে পরিণত হতে পারে। এখানে তেমন কিছু বিষয়ে আলোচনা করা হলো- ফজরের নামাজ জামাতে আদায় করা আমাদের দেশের অনেকেই ফজরের নামাজ আদায় করে না। ঈদের জন্য ফজরের নামাজ জামাতে পড়ার গুরুত্বও দেয় না। অথচ ফজরের নামাজের গুরুত্ব অপরিসীম। হরজত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যদি তারা ইশা ও ফজর নামাজের মধ্যে কী আছে তা জানতে পারতো তবে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও এ দুটি নামাজের জামাতে শামিল হত।’ –সহিহ বোখারি: ৬১৫ ঈদের নামাজ আদায় করা ঈদের দিনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ঈদের নামাজ আদায় করা। প্রকৃতপক্ষে একজন ঈমানদার বান্দা নামাজ আদায়ের মাধ্যমে বেশি আন��্দিত হয়ে থাকে। হাদিসে এসেছে, ‘নবী করিম (সা.) ঈদুল ফিতরের দিনে বের হয়ে দু রা���াত ঈদের নামাজ আদায় করেছেন। এর পূর্বে ও পরে অন্য কোন নামাজ আদায় করেননি।’ –সহিহ বোখারি: ৯৮৯ ঈদের দিন গোসল করা ঈদের দিন গোসল করার মাধ্যমে পরিষ্কার-পরিচ্ছছন্নতা অর্জন করা একান্ত প্রয়োজন। কেননা এ দিনে সকল মানুষ নামাজ আদায়ের জন্য মিলিত হয়। ইবনে উমার (রা.) থেকে বিশুদ্ধ সূত্রে বর্ণিত যে, ‘তিনি ঈদুল ফিতরের দিনে ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে গোসল করতেন।’-সুনান বায়হাকি: ৫৯২০ পায়ে হেঁটে ঈদগাহে যাওয়া ঈদগাহে পায়ে হেঁটে যাওয়া হল সুন্নত। হজরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘সুন্নত হল ঈদগাহে পায়ে হেঁটে যাওয়া।’ -তিরমিজি: ৫৩৩ উভয় পথের লোকদেরকে সালাম দেয়া ও ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করার জন্য যে পথে যাবে সে পথে না ফিরে অন্য পথে ফিরে আসা। হাদিসে বর্ণনা করা হয়েছে, ‘নবী করিম (সা.) ঈদের দিনে পথ বিপরীত করতেন।’ –সহিহ বোখারি: ৯৮৬ ঈদের দিনে খাবার গ্রহণ ঈদুল ফিতরের দিনে ঈদের নামাজ আদায়ের পূর্বে খাবার গ্রহণ করা এবং  ঈদুল আজহার দিন ঈদের সালাতের পূর্বে কিছু না খেয়ে নামাজ আদায়ের পর কোরবানির গোশত খাওয়া সুন্নত। হজরত বুরাইদা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘নবী করিম (সা.) ঈদুল ফিতরের দিনে না খেয়ে বের হতেন না, আর ঈদুল আজহার দিনে ঈদের সালাতের পূর্বে খেতেন না।’ –তিরমিজি:  ৫৪৫ ঈদে শুভেচ্ছা বিনিময়ের ভাষা ঈদে পরস্পরকে শুভেচ্ছা জানানো শরিয়ত অনুমোদিত একটি বিষয়। বিভিন্ন বাক্য দ্বারা এ শুভেচ্ছা বিনিময় করা যায়। যেমন- ক. হাফেয ইবনে হাজার (রহ.) বলেছেন, সাহাবারা ঈদের দিন সাক্ষাৎকালে একে অপরকে বলতেন, ‘তাকাববালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকা’ অর্থ- আল্লাহতায়ালা আমাদের ও আপনার ভালো কাজগুলো কবুল করুন। খ. ‘ঈদ মোবারক’ ইনশাআল্লাহ। গ. ‘ঈদুকুম সাঈদ’ বলে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করা যায়। ঈদের চাঁদ দেখার পর থেকে তাকবির পাঠ করা তাকবির পাঠ করার মাধ্যমে আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব  প্রকাশ করা হয়। তাকবির হলো- আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার। লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ। আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার। ওয়া লিল্লাহিল হামদ। বাক্যটি উচ্চস্বরে পড়া। আবদুল্লাহ ইবনে উমার (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ঈদুল ফিতরের দিন ঘর থেকে বের হয়ে ঈদগাহে পৌঁছা পর্যন্ত তাকবির পাঠ করতেন।’ -মুসতাদরাক: ১১০৬ যখন নামাজ শেষ হয়ে যেত তখন আর তাকবির পাঠ করতেন না। বিশেষভাবে ঈদগাহের উদ্দেশ্যে যখন বের হবে ও ঈদগাহে সালাতের অপেক্ষায় যখন থাকবে তখন গুরুত্বসহকারে তাকবির পাঠ করতে হবে। নতুন বা পরিচ্ছন্ন পোশাক পরিধান করা ঈদে উত্তম জামা-কাপড় পরিধান করে ঈদ উদযাপন করা। এ দিনে সকল মানুষ একত্রে জমায়েত হয়, তাই প্রত্যেক মুসলিমের উচিত হল তার প্রতি আল্লাহর যে নিয়ামাত তা প্রকাশ করণার্থে ও আল্লাহর শোকরিয়া আদায়স্বরূপ নিজেকে সর্বোত্তম সাজে সজ্জিত করা। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহ রাববুল আলামিন তার বান্দার ওপর তার প্রদত্ত নিয়ামতের প্রকাশ দেখতে পছন্দ করেন।’ –সহিহ আল জামে: ১��৮৭ ইবনুল কায়্যিম বলেছেন, ‘নবী করিম (সা.) দু ঈদেই ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে সর্বোত্তম পোশাক পরিধান করতেন।’ -যাদুল মায়াদ ঈদের খুতবা শ্রবণ করা ঈদের খুতবা বিশেষ গুরুত্বের দাবি রাখে। এতে ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ে নির্দেশনা দেয়া হয়ে থাকে। হজরত আবদুল্লাহ বিন সায়েব (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমি নবী করিম (সা.)-এর সঙ্গে ঈদ উদযাপন করলাম। যখন তিনি ঈদের নামাজ শেষ করলেন, বললেন, আমরা এখন খুতবা দেব। যার ভালো লাগে সে যেন বসে আর যে চলে যেতে চায় সে যেতে পারে।’  -আবু দাউদ: ১১৫৭ দোয়া ও ইস্তেগফার করা ঈদের দিনে আল্লাহতায়ালা অনেক বান্দাহকে মাপ করে দেন। মুয়ারিরক আলঈজলী (রাহ.) বলেন, ঈদের এই দিনে আল্লাহতায়ালা একদল লোককে এভাবে মাফ করে দিবেন, যেমনি তাদের মা তাদের নিষ্পাপ জন্ম দিয়েছিল। নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তারা যেন এই দিনে মুসলিমদের জামাতে দোয়ায় অংশগ্রহণ করে।’ -লাতাইফুল মায়ারিফ মুসাফাহা ও মুয়ানাকা করা মুসাফাহা ও মুয়ানাকা করার মাধ্যমে পারস্পরিক সম্পর্ক বৃদ্ধি হয়। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘একদা হাসান ইবনে আলী (রা.) নবী করিম (সা.)-এর নিকট আসলেন, তিনি তখন তাকে জড়িয়ে ধরলেন এবং মুয়ানাকা (কোলাকুলি) করলেন।’ -শারহুস সুন্নাহ ফিতরা দেয়া রমজান মাসে সিয়ামের ত্রুটি-বিচ্যুতি পূরণার্থে এবং অভাবগ্রস্তদের খাবার প্রদানের উদ্দেশ্যে ঈদের সালাতের পূর্বে নির্ধারিত পরিমাণের যে খাদ্য সামগ্রী দান করা হয়ে থাকে, শরিয়তের পরিভাষায় তাকেই জাকাতুল ফিতর বা ফিতরা বলা হয়। হাদিসে বর্ণিত, ‘হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ঈদের নামাজে যাওয়ার পূর্বে ফিতরা আদায় করার আদেশ দিলেন।’ –সহিহ বোখারি: ১৫০৩ ইয়াতিম ও অভাবীকে খাবার খাওয়ানো ইয়াতিমের খোঁজ-খবর নেয়া, তাদেরকে খাবার খাওয়ানো এবং সম্ভব হলে তাদের নতুন কাপড়ের ব্যবস্থা করে দেয়া। এটা ঈমানদারদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। পবিত্র কোরআনে কারিমে বলা হয়েছে, তারা খাদ্যের প্রতি আসক্তি থাকা সত্ত্বেও মিসকিন, ইয়াতিম ও বন্দীকে খাদ্য দান করে। -সূরা আদ দাহর: ৮ আত্মীয়-স্বজনের খোঁজ-খবর নেয়া ঈদের সময় বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজনের খোঁজ-খবর নেয়া ও তাদের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার বিশেষ সুযোগ তৈরি হয়। এ সম্পর্কে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে আখেরাতে বিশ্বাস করে, সে যেন আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখে।’ –সহিহ বোখারি: ৬১৩৮ প্রতিবেশীর খোঁজ-খবর নেয়া ঈদের সময় প্রতিবেশীর হক আদায়ের সুযোগ তৈরি হয়। কোরআনে কারিমে বলা হয়েছে, ‘তোমরা ইবাদত কর আল্লাহর, তার সঙ্গে কোনো কিছুকে শরিক করো না। আর সদ্ব্যবহার কর মাতা-পিতার সঙ্গে, নিকট আত্মীয়ের সঙ্গে, ইয়াতিম, মিসকিন,  প্রতিবেশী, অনাত্মীয় প্রতিবেশী, পার্শ্ববর্তী সাথী, মুসাফির এবং তোমাদের মালিকানাভুক্ত দাস-দাসীদের সঙ্গে। নিশ্চয়ই আল্লাহ পছন্দ করেন না তাদেরকে, যারা দাম্ভিক, অহঙ্কারী।’ -সূরা আন নিসা: ৩৬ ��ন-মালিন্য দূর করা জীবন চলার পথে বিভিন্ন পর্যায়ে কারো কারো সম্পর্কের অবনতি হতে পারে। ঈদের সময় পারস্পরিক মন-মলিন্য দূর করা ও সম্পর্ক সুদৃঢ় করার উত্তম সময়। হাদিসে এসেছে, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘কোনো মুসলিমের জন্য বৈধ নয় যে তার ভাইকে তিন দিনের বেশি সময় সম্পর্ক ছিন্ন রাখবে। তাদের অবস্থা এমন যে দেখা সাক্ষাৎ হলে একজন অন্য জনকে এড়িয়ে চলে। এ দুজনের মাঝে ওই ব্যক্তি শ্রেষ্ঠ যে প্রথম সালাম দেয়।’ -সহিহ মুসলিম: ৬৬৯৭ আনন্দ প্রকাশ  করা ইসলাম এমন একটি জীবনব্যবস্থা যেখানে সুস্থ বিনোদনের সুযোগ রয়েছে। উম্মুল মুমিনীন হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, ‘রাসূলুল্লাহ (সা.) ঈদের দিন আমার ঘরে আগমন করলেন, তখন আমার নিকট দু’টি ছোট মেয়ে গান গাইতেছিল, বুয়াস যুদ্ধের বীরদের স্মরণে। তারা পেশাদার গায়িকা ছিল না। ইতোমধ্যে আবু বকর (রা.) ঘরে প্রবেশ করে এই বলে আমাকে ধমকাতে লাগলেন যে, নবীজির ঘরে শয়তানের বাঁশি? রাসূলুল্লাহ (সা.) তার কথা শুনে বললেন, ‘মেয়ে দুটিকে গাইতে দাও হে আবু বকর! প্রত্যেক জাতির ঈদ আছে, আর এটি আমাদের ঈদের দিন।’ –সহিহ বোখারি: ৯৫২ ঈদে যা বর্জনীয় ঈদ মুসলিম জাতির গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। আর আমাদের রয়েছে নিজস্ব সংস্কৃতি। আমরা ঈদ পালনে অনেকে ইসলাম সমর্থন করে না এমন সব সংস্কৃতিতে নিমজ্জিত হচ্ছি। যা আমাদের বর্জন করা দরকার। ঈদে বর্জনীয় বিষয়গুলো হলো- ঈদের দিন রোজা পালন করা ঈদের দিন রোজা পালন করলে ঈদের দিনের কাজসমূহ যথাযথ পালন করা যাবে না। সেজন্য হাদিসে ঈদের দিন রোজা পালন করা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ এসেছে। সহিহ বোখারি ও মুসলিমে বর্ণিত আছে, ‘হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দিনে রোজা রাখতে নিষেধ করেছেন।’ -সহিহ মুসলিম: ২৭৩০ বিজাতীয় আচরণ প্রদর্শন বিজাতীয় আচরণ মুসলিম সমাজে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। পোশাক-পরিচ্ছদে, ��াল-চলনে, শুভেচ্ছা বিনিময়ে অমুসলিমদের অনুকরণে লিপ্ত হয়ে পড়েছে মুসলমানদের অনেকেই। ঈদের দিনে এ কাজটি অন্যান্য দিনের চেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হয়। এটা করা যাবে না। সেই সঙ্গে গান-বাজনা করা, অশ্লীল সিনেমা ও নাটক দেখা- যা ইসলাম অনুমোদন করে না, তা থেকে বিরত থাকতে হবে। বেহুদা কাজে সময় ব্যয় করা অনেকে বেহুদা কাজে ঈদে রাত জাগরণ ও দিনে বেহুদা কাজে সময় নষ্ট করে থাকে। সেজন্য বেহুদা কাজে সময় নষ্ট করা থেকে বিরত থাকা দরকার। কোরআনে মুমিনের গুণাবলি সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘আর যারা অনর্থক কথা-কর্ম থেকে বিমুখ থাকে।’ -সূরা মুমিনুন: ০৩ জামাতের সঙ্গে ফরজ নামাজ আদায়ে অলসতা করা ঈদের আনন্দে এমনভাবে উদাসীন থাকেন যে, ফরজ নামাজ আদায়ে অলসতা করেন, যা গ্রহণযোগ্য নয়। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘অতএব সেই নামাজ আদায়কারীদের জন্য দুর্ভোগ, যারা নিজেদের নামাজে অমনোযোগী।’ -সূরা মাউন: ৪-৫ অপচয় ও অপব��যয় করা ঈদের কেনাকাটা থেকে শুরু করে এ উপলক্ষে সব কিছুতেই অপচয় ও অপব্যয় করা  হয়। অথচ কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আর তোমরা কোনভাবেই অপব্যয় করো না, নিশ্চয়ই অপব্যয়কারী শয়তানের ভাই।’ -সূরা বনি ইসরাঈল: ২৬-২৭ ঈদের দিনকে কবর জিয়ারতের জন্য নির্দিষ্ট করা অনেকে এ দিনকে কবর জিয়ারতের জন্য নির্দিষ্ট করে থাকেন, যা হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবায়ে কেরাম থেকে সাব্যস্ত হয়নি। অতএব ঈদের দিনকে কবর জিয়ারতের জন্য নির্দিষ্ট করা যাবে না। এজন্য রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘যে এমন ইবাদত করল যাতে আমাদের কোনো নির্দেশনা নেই তা পরিত্যাজ্য হিসাবে গণ্য হবে।’ -সহিহ মুসলিম: ৪৫৯০ জুয়া খেলা ও আতশবাজি করা এগুলো শরিয়ত বিরোধী কাজ। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে মুমিনগণ, নিশ্চয়ই মদ, জুয়া, প্রতিমা-বেদী ও ভাগ্যনির্ধারক তীরসমূহ তো নাপাক শয়তানের কর্ম। সুতরাং তোমরা তা পরিহার কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ -সূরা মায়িদা: ৯০ মানুষকে কষ্ট দেয়া ঈদের দিনে অনেকে এমন কাজ করেন যা মানুষকে কষ্ট দেয়। যেমন, রাস্তা আটকিয়ে মানুষের কাছ থেকে টাকা নেয়া, এমন আনন্দ করা যাতে অন্যরা কষ্ট পায়। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘মুসলিম ওই ব্যক্তি যার  হাত ও জিহবা থেকে অন্যরা নিরাপদ।’ –সহিহ বোখারি: ৬৪৮৪ ঈদের নামাজ আদায় না করে কেবল আনন্দ ফুর্তি করা অনেকে ঈদের আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে নতুন জামা-কাপড় পরিধান, সেমাই, ফিরনী ইত্যাদি নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন, ঈদের নামাজ আদায় করার কথা ভুলে যান। অথচ এই দিনে ঈদের নামাজ আদায় করা হচ্ছে মূল করণীয়। ঈদ একটি ইবাদত। আনন্দ ও ফুর্তি করার মাধ্যমেও যে ইবাদত পালন করা যায়, ঈদ তার অন্যতম উদাহরণ। শরিয়াসম্মতভাবে আনন্দ প্রকাশ করার বিষয়ে কোরআনে এসেছে, ‘বল, এটা আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমত, সুতরাং এ নিয়েই যেন তারা খুশি হয়। এটি যা তারা জমা করে তা থেকে উত্তম।’ -সূরা ইউনুস: ৫৮
0 notes
kalombani · 6 years ago
Text
বিশ্বনবীর (সা.) চাচা আবু তালিব (রা.) এর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
আজ হতে ১৪৪২ বছর আগে দ্বিতীয় হিজরির এই দিনে (৭ ই রমজান) ইন্তিকাল করেন বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)’র প্রিয় চাচা হযরত আবু তালিব (রা.)। আবু তালিব ছিলেন মহানবীর দাদা হযরত আব্দুল মুত্তালিবের সন্তান এবং আমিরুল মু’মিনীন আলী (আ.) এর পিতা।
মুসলমানদের অনেকেই মনে করেন তিনি রাসূল (স.) এর রেসালাতে বিশ্বাসী ছিলেন এবং ইসলামের প্রাথমিক যুগের বিভিন্ন সমস্যার মুখে ও বিভিন্ন সংকটময় মুহূর্তে রাসূল (স.) এর একনিষ্ঠ সাহায্যকারী ও পূর্ণ আস্থাভাজন  ছিলেন। রাসূল (সা.)’র পিতা আবদুল্লাহ (তাঁর ওপর শান্তি বর্ষিত হোক) ছেলে মুহাম্মাদের (দ.) জন্মের আগেই ইন্তিকাল করেছিলেন। এ সময় দাদা আবদুল মুত্তালিব (তাঁর ওপর শান্তি বর্ষিত হোক)  ও চাচা আবু তালিব শিশু নবীর দেখাশুনা বা ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নেন। আর আবদুল মুত্তালিবের ইন্তিকালের পর ভাইয়ের ছেলে  ৮ বছর বয়স্ক মুহাম্মাদ (সা.)-কে নিজের ঘরে এনে নিজ ছেলের মত লালন-পালন করেছিলেন চাচা আবু তালিব (রা.)। ইতিহাস থেকে জানা যায় মহানবী (সা.)’র পিতা ও দাদা একত্ববাদী বা হানিফ ছিলেন এবং কোনো নবীর পিতাই কখনও কাফির ছিলেন না।  
আবদুল্লাহ ও আবু তালিবের পিতা আব্দুল মুত্তালিব (আ.) নিজের জীবনের কঠিনতম সংকটে ও বিপদের সময়ও আল্লাহর ইবাদত  ত্যাগ করেননি ও একত্ববাদের দ্বীনের সহায়তা করতে কুণ্ঠা বোধ করেননি। যখন আবরাহার হস্তি সওয়ার বিশাল বাহিনী কা’বা গৃহ ধ্বংসের উদ্দেশ্যে মক্কার দিকে অগ্রসর হয় তখন পথিমধ্যে আব্দুল মুত্তালিবের কিছু উট তারা ধরে নিয়ে যায়। অতঃপর আব্দুল মুত্তালিব (আ.) যখন উটগুলো ফিরিয়ে নিতে তার কাছে আসলেন তখন আবরাহা আশ্চার্যান্বিত হয়ে জিজ্ঞেস করল: উট ফেরত না চেয়ে কেন আমার বাহিনী ফেরত নিতে ও কা’বা ঘর ধ্বংস না করার আবেদন জানালে না?
তখন আব্দুল মুত্তালিব (আ.) আল্লাহর প্রতি পরিপূর্ণ ঈমান ও তাঁর ওপর ভরসা করে বললেন:
 “আমি হলাম এই উটগুলোর মালিক আর এই কা’বা ঘরেরও প্রভু রয়েছেন তিনি সেটা রক্ষা করবেন।” (কামেলে ইবনে আসির)
এরপর তিনি মক্কার দিকে রওয়ানা দিলেন এবং কা’বা ঘরের কাছে এসে কা’বার দরজার কড়া ধরে বলেছিলেন:
 “হে আমার প্রতিপালক! তুমি ছাড়া আমি কারো ওপর ভরসা করি না। হে আমার প্রভু! (সকলের জন্য নির্ধারিত)নিজের এই  নিরাপদ আশ্রয় স্থলকে রক্ষা কর। এই ঘরের শত্রুরা তোমার সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত, তাদেরকে তোমার ঘর ধ্বংস করা হতে বিরত রাখো।” (কামেলে ইবনে আসির)
এই কথাগুলো হযরত আব্দুল মুত্তালিবের আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী হওয়ার স্পষ্ট দলিল। ইয়াকুবী নিজ ইতিহাস গ্রন্থে আব্দুল মুত্তালিব (আ.) সম্পর্কে লিখেছেন:
 “আব্দুল মুত্তালিব মূর্তিপূজা থেকে দূরে ছিলেন এবং মহিমান্বিত ও গৌরবময় এক আল্লাহ ছাড়া কারো ইবাদত করতেন না।” (তারিখে ইয়াকুবি)
আব্দুল মুত্তালিবের দৃষ্টিতে আবু তালিব:
ইতিহাসের নানা পর্যায়ের দলিল প্রমাণের দিকে দৃষ্টি দিলে এ বিষয়টি স্পষ্ট হয় যে,  কোনো কোনো স্বচ্ছ অন্তরের অধিকারী ও ভবিষ্যৎ প্রবক্তা আব্দুল মুত্তালিবকে মহানবীর (স.) উজ্জ্বল ভবিষ্যত এবং তাঁর নবুওয়্যত সম্পর্কে অবহিত করেন।
যখন সাইফ ইবনে যি ইয়াযান আবিসিনিয়ার  শাসনভার গ্রহণ করেন তখন আব্দুল মুত্তালিব এক প্রতিনিধি  দলের প্রধান হয়ে তার দরবারে উপস্থিত হন। বাদশাহ কিছু মনোজ্ঞ বা বাগ্মীতাপূর্ণ ভাষণের পর তাঁকে (আব্দুল মুত্তালিবকে) সুসংবাদ দেন যে, তোমার বংশে এক সম্মানিত নবীর আগমন ঘটবে। অতঃপর তিনি মহানবী (স.) এর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বলেন:
 “তাঁর নাম হলো মুহাম্মাদ (স.)। (শৈশবেই) তাঁর বাবা-মা মৃত্যুবরণ করবেন এবং তাঁর দাদা ও চাচা তাঁর দেখাশুনার দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।” (সিরায়ে হালাবি)
তিনি বিশ্বনবী (সা.)’র আরো কিছু বৈশিষ্ট্য বর্ণনার পর আব্দুল মুত্তালিবকে বলেন:
 “নিঃসন্দেহে তুমিই তার পিতামহ, হে আব্দুল মুত্তালিব।” (সিরায়ে হালাবি)
আব্দুল মুত্তালিব এ সুসংবাদ শোনার পর শুকরানার সিজদা আদায় করে উক্ত অনাগত পবিত্র শিশুটি সম্পর্কে বললেন:
 “আমার অতি প্রিয় এক সন্তান ছিল। এক মহিমান্বিত রমণীর সঙ্গে তাঁর বিয়ে দিলাম যার নাম আমেনা বিনতে ওয়াহাব ইবনে আব্দে মানা�� ইবনে যোহরাহ। সেই রমণী একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেয় যার নাম রেখেছি মুহাম্মাদ। কিছু কাল পর তাঁর পিতা-মাতা ইন্তেকাল করলে আমি ও তাঁর চাচা (আবু তালিব) তাঁর দেখাশুনার দায়িত্ব নিই।” (সিরায়ে হালাবি)
এটা স্পষ্ট যে, আব্দুল মুত্তালিব ওই এতিম শিশুর উজ্জ্বল ভবিষ্যত সম্পর্কে অবহিত ছিলেন বলেই  তিনি নিজের পর ওই শিশুর প্রতিপালনের দায়িত্ব নিজের সবচেয়ে প্রিয় সন্তান আবু তালিবের হাতে অর্পণের উদ্যোগ নেন এবং অন্যদেরকে এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত করেন।
এও স্পষ্ট যে, আবু তালিব নিজের একত্ববাদী ও মু’মিন পিতার দৃষ্টিতে ঈমানের ওই উচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তাই সন্তানদের মধ্য হতে কেবল তিনিই রাসূল (স.) এর লালন-পালনের জন্য যোগ্য বিবেচিত হলেন।
হযরত আবু তালিব (রা.)-এর ঈমানের দলিল-প্রমাণ:
১। আবু তালিবের সাহিত্য-কর্ম ও ইলমী রচনা :
ইসলামী ঐতিহাসিক ও মুহাদ্দিসরা আবু তালিবের কিছু সুললিত ও প্রাঞ্জল কাসিদা (বিশেষ ধরনের  কবিতা বা গীতি) বর্ণনা করেছেন। উচ্চ মানের ওই কবিতাগুলোর অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন পংক্তির অর্থ হতে আমরা তাঁর ঈমান আনার বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারি। তাঁর বহু কবিতার মধ্য হতে কেবল কয়েকটি এখানে উল্লেখ করছি:
 “সম্মানিত লোকদের জানা উচিত যে- মুহাম্মাদ (স.) হযরত মূসা ও ঈসা ইবনে মারইয়ামের মতোই একজন নবী। আর যে হেদায়েত বা মুক্তির দিশা তাদের কাছে ছিল তাঁর কাছেও তা রয়েছে। সুতরাং, সব নবীই আল্লাহর নির্দেশে মানুষকে হেদায়েত করেন এবং গুনাহ হতে বিরত রাখেন।” (আল হুজ্জা ও মুসতাদরাকে হাকিম)
 “তোমরা কি জানো না যে, আমরা মুহাম্মাদ (স.)-কে মূসা (আ.) এর মতো একজন নবী হিসেবে পেয়েছি যার বর্ণনা আসমানী গ্রন্থগুলোতে বর্ণিত হয়েছে? লোকেরা তাঁকে ভালোবাসে, আর মহান আল্লাহ যার ভালোবাসা মানুষের অন্তরে দিয়েছেন তাঁর প্রতি অন্যায় করা সমীচীন নয়।” (তারিখে ইবনে কাসির)
 “মহান আল্লাহ নিজ নবী মুহাম্মাদকে সম্মানিত করেছেন। অতএব, সর্বোত্তম সৃষ্টি হলেন আহমাদ। মহান আল্লাহ পয়গম্বরের নামকে নিজের নামের শব্দমূল থেকেই নির্ধারণ করেছেন যাতে তাকে সম্মান দান করতে পারেন। সুতরাং, আরশ অধিপতি হলেন ‘মাহমুদ’ (প্রশংসিত) এবং তাঁর নবী হলেন আহমাদ (অধিক প্রশংসাকারী)।’ (শারহে নাহজুল বালাগাহ)
 “হে আল্লাহর রাসূল (স.), আমি মাটির বিছানায় না ঘুমানো পর্যন্ত (মৃত্যুবরণ না করা পর্যন্ত) শত্রুর হাত কখনই তোমার পর্যন্ত পৌঁছাবে না। অতএব, ভয় পেয়ো না, যে সব বিষয়ের জন্য তুমি নির্দেশিত হয়েছ সেগুলো (নির্ভিকচিত্তে) প্রকাশ কর ও সুসংবাদ দাও এবং চোখগুলোকে নূরান্বিত কর। তুমি আমাকে আল্লাহর দ্বীনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছ আর আমি এটাও জানি যে, তুমি আমার মঙ্গল কামনা কর এবং নিজের দাওয়াতের ক্ষেত্রে দ���ঢ় ও সৎ। আমি স্পষ্টভাবে জানতাম যে, মুহাম্মাদের দ্বীন দুনিয়ার সর্বশ্রেষ্ঠ দ্বীন।” (খাজানাতুল আদাব বাগদাদি)
 “হে আমার ওপর আল্লাহর সাক্ষী, তুমি সাক্ষ্য দিও আমি আহমাদ বা রাসূল (স.) এর দ্বীনের প্রতি ঈমান আনলাম, যে ব্যক্তিই পথভ্রষ্ট হোক না কেন আমি হেদায়াতের মধ্যেই রয়েছি ।” (শারহে নাহজুল বালাগাহ)
আবু তালিব নিজের জীবনের শেষ দিগুলোতে রাসূল (স.) এর সাহায্যার্থে কোরাইশ গোত্রপতিদের উদ্দেশে নিম্নোক্ত কবিতাটি রচনা করেন:
“চারজনকে সত্য বা কল্যাণের নবী (স.)-এর সহযোগিতা করার তাগিদ দিচ্ছি: আমার পুত্র আলী, আমাদের  গোত্রের প্রধান আব্বাস,  খোদার সিংহ হামযাহ যে তার সত্য (ঈমানকে) রক্ষা করছে এবং আমার আরেক পুত্র জাফারকে যাতে তাঁর সাথী ও সহযোগী হতে পারে। তোমরা- আমার মা ও তাঁর সন্তানরা তোমাদের জন্য উৎসর্গ হোক- সদা রাসূল (স.) এর জন্য শত্রুর বিরুদ্ধে ঢালের মত থেকো।”
২। রাসূল (স.) এর সঙ্গে আবু তালিবের আচরণই তাঁর মজবুত ঈমানের অন্যতম দলিল:
সব প্রসিদ্ধ মুসলিম ঐতিহাসিক রাসূল (স.)-এর সুরক্ষার জন্য হযরত আবু তালিব (রা.)’র নজিরবিহীন আত্মত্যাগ ও কোরবানিকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। আর এটাই তাঁর দৃঢ় ঈমানের আরো একটি স্পষ্ট দলিল।
আবু তালিব ইসলামের সাহায্যার্থে ও রাসূল (স.) এর রক্ষার্থে নিজের জীবনের তিনটি বছর উদ্বাস্তুর ন্যায় রাসুল (স.) এর পাশে ‘শো’বে আবুতালিব’-এ অবস্থান করাকে কুরাইশদের নেতৃত্ব দেয়ার ওপর প্রাধান্য দেন এবং মুসলমানদের ওপর আরোপিত উক্ত অর্থনৈতিক (ও সামাজিক) বয়কটের শেষ দিন অবধি অসহনীয় নানা কষ্ট সহ্য করেও তাদের পাশে অবস্থান করেন। মক্কার ওই অঞ্চলটি এখনও শোবে আবি তালিব নামে খ্যাত।
এ ছাড়াও হযরত আবু তালিব নিজ পুত্র আলী (আ.) কে, রাসূল (স.)- এর সর্বাত্মক সহযোগিতা করার নির্দেশ দেন এবং ইসলামের প্রাথমিক যুগের সব কঠিন সংকটে তাঁর পাশে অবস্থান করতে বলেন।
(মো’তাযেলী মতবাদে বিশ্বাসী) সুন্নি মনীষী ইবনে আবিল হাদীদ মো’তাযেলী নাহজুল বালাগাহ’র ব্যাখ্যায় হযরত আবু তালিব (আ.) হতে বর্ণনা করেন যে, তিনি নিজ পুত্র আলী (আ.) কে বলেন: “আল্লাহর রাসূল (স.) তোমাকে সত্য ছাড়া অন্য কিছুর দিকে  তোমাদের আহ্বান জানাননি। অতএব, তুমি সর্বদা তাঁর সঙ্গে  থেকো।”
এটা স্পষ্ট যে, আল্লাহর রাসূল (স.) -কে রক্ষা এবং ইসলামের পবিত্র অস্তিত্ব রক্ষার জন্য হযরত আবু তালিবের এমন যথাযোগ্য খেদমত ও আন্তরিক ত্যাগ বা কষ্ট স্বীকার তাঁর ঈমানের সবচেয়ে স্পষ্ট প্রমাণ।
এ কারণেই অন্যতম মুসলিম মনীষী ইবনে আবিল হাদীদ, রাসূল (স.) এর রক্ষণাবেক্ষণ ও তাঁর পবিত্র ধর্মের রক্ষায় হযরত আবু তালিবের অতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় মুগ্ধ হয়ে লিখেছেন:
 “যদি আবু তালিব ও তার সন্তান না থাকতেন তবে কখনই দ্বীন ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হতো না। তিনি মক্কায় আল্লাহর রাসূল (স.)-কে আশ্রয় দিয়েছিলেন ও সাহায্য করেছিলেন এবং তাঁর পুত্র মদি��াতে রাসূল (স.) এর সাহায্যার্থে মৃত্যুর মুখে ঝাঁপিয়ে পড়তেন। কেউই আবু তালিবের সম্মান ও মর্যাদা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারবে না। না অর্থহীন কথা বলতে অভ্যস্ত মূর্খরা, আর না ওই জ্ঞান-পাপী ব্যক্তিরা যারা সত্যকে দেখেও তা স্বীকার করে না।”
৩। আবু তালিবের ওসিয়ত তাঁর ঈমানের অপর এক দলিল:
প্রখ্যাত ইসলামী ঐতিহাসিকরা যেমন: হালাবী শাফেয়ী নিজ সীরাহ’তে, মুহাম্মাদ দিয়ার বাকরী তারিখুল খামীস গ্রন্থে, আবু তালিবের শেষ বাণী বর্ণনা করেছেন। তিনি নিজ গোত্রকে রাসূল (স.) এর সাহায্যের জন্য আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন:
 “হে আমার আত্মীয়-স্বজনরা! মুহাম্মাদকে ভালোবাস, তাঁকে অনুসরণ কর এবং তাঁর দলকে (ইসলাম) সাহায্য কর। আল্লাহর কসম যেই-ই তার হেদায়েতের নূরের অনুসরণ করবে সে সফলকাম হবে। যদি আমি আরো  বেশি দিন বেঁচে থাকতাম এবং মৃত্যু আমাকে সময় দিত, তবে নিঃসন্দেহে আমি তাঁর সব কষ্ট ও বাধা দূর করে দিতাম। এই বলেই তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।” (তারিখুল খামিস ও সিরায়ে হালাবি)
৪। আবু তালিবের প্রতি রাসূল (স.)এর ভালোবাসা তাঁর ঈমানেরই সাক্ষ্য স্বরূপ:
আল্লাহর রাসূল (স.) বিভিন্ন  সময়ে ও অবস্থায় নিজ চাচার প্রশংসা করে তাঁর প্রতি সম্মান  দেখাতেন এবং তাঁর প্রতি ভালোবাসার প্রকাশ ঘটাতেন। সেই দৃষ্টান্তগুলোর মধ্য হতে শুধুমাত্র দু’টির প্রতি ইশারা করছি:
ক. কোনো কোনো ঐতিহাসিক নিম্নোক্ত রেওয়ায়েতটি বর্ণনা করেছেন যে, হযরত মহানবী (স.) আক্বীল ইবনে আবি তালিবকে বলেন:
 “আমি তোমাকে দু’টি কারণে ভালোবাসি; (প্রথমত) আমার সঙ্গে আত্মীয়তার সম্পর্কের কারণে এবং (দ্বিতীয়ত) আমি জানি যে আমার চাচা (আবু তালিব) তোমাকে খুব ভালোবাসতেন।” (তারিখুল খামিস)
খ. হালাবীও নিজ সীরাহ’তে আল্লাহর রাসূল (স.) হতে বর্ণনা করেন যে, তিনি তাঁর প্রিয় চাচাকে সম্মান প্রদর্শনপূর্বক বলেন- 
 “যতদিন আবু তালিব জীবিত ছিলেন কুরাইশের কাফেররা ততদিন আমার কোন মারাত্মক ক্ষতি সাধন করতে পারেনি।” (সিরায়ে হালাবি)
এটা স্পষ্ট যে, হযরত আবু তালিবের প্রতি হযরত মহানবী (স.) এর ভালোবাসা এবং তাঁর সুউচ্চ ব্যক্তিত্বের প্রতি মহানবী (সা.) এর  গভীর শ্রদ্ধা প্রদর্শন হযরত আবু তালিবের ঈমানেরই প্রমাণ স্বরূপ। কেননা আল্লাহর রাসূল (স.) কোরআন ও হাদিসের সাক্ষ্য অনুযায়ী  কেবল মু’মিনদেরকেই ভালোবাসেন এবং কাফের ও মুশরিকদের ব্যাপারে কঠোর। এ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে বলা হচ্ছে:
 “মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসূল এবং তাঁর সহচররা কাফেরদের প্রতি কঠোর, নিজেদের মধ্যে পরস্পর সহানুভূতিশীল...।” (সুরা ফাতহ:২৯)
অন্য এক স্থানে বলা হচ্ছে:
 “যারা আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে, তাদেরকে আপনি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধবাদীদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে দেখবেন না, যদিও তারা তাদের পিতা, পুত্র, ভ্রাতা অথবা জাতি-গোষ্ঠী হয়। তাদের অন্তরে আল্লাহ ঈমান লিখে দিয়েছেন...।” (সুরা মুজাদালাহ:২২)
উক্ত আয়াতগুলোর আলোকে এবং আবু তালিবের প্রতি রাসূল (স.) এর গভীর ভালোবাসাসহ বিভিন্ন সময়ে ��াচার প্রতি তাঁর ব্যতিক্রমধর্মী প্রশংসা বা সম্মান প্রদর্শনের আলোকে বলা যায়, মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (স.) এর ওপর আবু তালিব (আ.) এর ঈমান আনার বিষয়টি সন্দেহাতীতভাবে সত্য।
৫। রাসূল (স.) এর সাহাবীদের সাক্ষ্য:
রাসূল (স.) এর সাহাবীদের একটি দল আবু তালিবের দৃঢ় ঈমানের সত্যতার বিষয়ে সাক্ষ্য দিয়েছেন যার কয়েকটি দৃষ্টান্ত এখানে উল্লেখ করা হল:
ক. একদিন এক অজ্ঞ ব্যক্তি আমিরুল মু’মিনীন আলী (আ.) এর সামনে আবু তালিবের ওপর মিথ্যা আরোপ করল। তখন আলী (আ.) এর চেহারায় ক্রোধ ফুটে ওঠে এবং তিনি বলেন:
 “চুপ কর! আল্লাহ তোমার মুখ ভেঙে দিন। কসম ওই আল্লাহর, যিনি হযরত মুহাম্মাদ (স.)-কে নবী হিসেবে মনোনীত করেছেন, যদি আমার পিতা (আবু তালিব) চান সব পাপীর শাফায়াত করতে তবে আল্লাহ পাক তাকে শাফায়াতকারী হিসেবে মনোনীত করবেন।” (আল হুজ্জা,২৪)
অপর এক স্থানে বর্ণিত হয়েছে:
 “আল্লাহর কসম- আবু তালিব, আব্দে মানাফ ইবনে আব্দুল মুত্তালিব খাঁটি মু’মিন এবং মুসলমান ছিলেন। তিনি নিজের ঈমানকে কুরাইশদের সম্মুখে গোপন করতেন যাতে কুরাইশরা বনি হাশিম গোত্রের সঙ্গে শত্রুতা না করে।” (আল হুজ্জা)
হযরত আলীর (আ.) এমন কথা শুধু আবু তালিবের ঈমানের সত্যতারই প্রমাণ বহন করে না বরং তাঁকে আল্লাহর অলিদের অন্তর্ভুক্ত করে যারা আল্লাহর অনুমতি সাপেক্ষে অন্যদের শাফায়াত করতে সক্ষম হবেন।
খ. আবুযার গিফারী আবু তালিবের ঈমান সম্পর্কে বলেন:
 “ওই প্রভুর কসম যিনি ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই, আবু তালিব (রা.)ইসলাম গ্রহণ করা ব্যতীত ইন্তেকাল করেননি (অর্থাৎ তিনি ঈমান নিয়েই মৃত্যু বরণ করেছিলেন)।” (শারহে নাহজুল বালাগাহ)
গ. আব্বাস ইবনে আব্দুল মুত্তালিব ও  আবি বাকর ইবনে ক্বাহাফাহ(প্রথম খলিফা) হতে বহু সনদের মাধ্যমে নিম্নোক্ত রেওয়ায়েতটি বর্ণিত হয়েছে,
 “আবু তালিব, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ বলা ছাড়া ইন্তেকাল করেননি।” (আল গাদির)
৬। আহলে বাইত (আ.) এর দৃষ্টিতে আবু তালিব:
আহলে বাইত (আ.) এর সব ইমামই আবু তালিবের দৃঢ় ঈমানের সত্যতার বিষয়টি যে সত্য তা জোর দিয়ে উল্লেখ করেছেন এবং বিভিন্ন সময়ে বা উপলক্ষে রাসূল (স.) এর এই আত্ম-উৎসর্গীকৃত সাথীর পক্ষে কথা বলেছেন, (এর দৃষ্টান্ত অসংখ্য) তার মধ্যে কেবল একটি প্রতি এখানে ইশারা করা হলো- ইমাম জাফর সাদিক (আ.) আল্লাহর রাসূল (স.) হতে বর্ণনা করেন যে,
“আসহাবে কাহাফ (কিছু কল্যাণকর বিষয়ের জন্য) নিজেদের ঈমান গোপন করে কুফর প্রকাশ করতেন। এই কারণে মহান আল্লাহ তাদেরকে দু’বার পুরস্কৃত করেন। আবু তালিবও নিজের ইসলামকে গোপন করেছিলেন (কোনো কল্যাণকর বিষয়ের জন্য) এবং শিরক প্রকাশ করেছিলেন । তাই আল্লাহতায়ালা তাঁকেও দু’বার পুরস্কৃত করেন।” (শারহে নাহজুল বালাগাহ)
তাই এটা স্পষ্ট  আবু তালিব  ঈমানদার ছিলেন। যেসব অন্যায় ও অবৈধ অপবাদ আবু তালিবের ওপর আরোপ করা হয়েছে, সেগুলোর কোনো ভিত্তি নেই। শুধু রাজনৈতিক কোনো উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য বনী উমাইয়া ও বনী আব্বাসের কিছু শাসকের উস্কানিতে এসব অপবাদ প্রচার করা হয়েছে।  বনী উমাইয়া ও বনী আব্বাসের শাসকরা সর্বদা আহলে বাইত (আ.) এবং আবু তালিবের ��ন্তানদের সঙ্গে শত্রুতা করেছেন। 
via Blogger http://bit.ly/2JzXLTq
0 notes
gnews71 · 6 years ago
Photo
Tumblr media
রাসূল (সা.) এর জানাজার ইমাম কে ছিলেন? ইবনে মাজাহ শরিফে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন, মঙ্গলবার সাহাবায়ে কেরাম রাসুলে কারিম সা.-এর গোসল ও কাফনের কাজ শেষ করেন। নবীজির দেহ মোবারক রওজার পাশে রাখেন। সাহাবারা দল দলে নবীজির কাছে আসতে থাকেন। কারও ইমামতিতে নয়; সবাই একা একা নামাজ ও দুরুদ শেষে বেরিয়ে যান। (ইবনে মাজাহ) অন্য কিতাবে আছে, রাসুল সা.-এর ইন্তেকাল এর আগে সাহাবিরা নবীজির দরবারে আসলেন। সাহাবাদের দেখে নবীজির চোখে বেদনার জল। নবীজি বললেন, আমি তোমাদের আল্লাহর কাছে সোপর্দ করছি, আল্লাহ তোমাদের সঙ্গী হবে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. জানতে চাইলেন, হে আল্লাহর রাসুল সা.! আপনার যাওয়ার সময় খুব নিকটে চলে এসেছে, আপনার ইন্তেকালের পর আপনাকে কে গোসল দিবে? রাসুল সা. বললেন, আমার আহলে বাইত মানে আমার পরিবারের সদস্যরা। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ আবার জানতে চাইলেন, কে আপনাকে কাফন পরাবে? রাসুল সা. বললেন, আমার আহলে বাইত। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ আবার জানতে চাইলেন কে আপনাকে কবরে নামাবে? রাসুল সা. বললেন, আমার আহলে বাইত। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ আবার জানতে চাইলেন কে আপনার জানাজা কে পড়াবে? তখন রাসুল সা.-এর চোখ বেয়ে বেদনার জল নেমে এলো। তিনি বললেন, তোমাদের নাবীর জানাজা এমন হবে না, যেমন তোমাদের হয়। যখন আমার গোসল হয়ে যাবে তখন তোমরা সবাই ঘর থেকে বের হয়ে যাবে। সবার আগে জিবরাইল আমার জানাজা পড়বে। তারপর মিকাঈল ও ই¯্রাফিল ধারাবাহিকভাবে আরশের অন্যান্য ফেরেশতারা আসবে ও আমার জানাজা পড়বে। তারপরে তোমাদের পুরুষরা, নারীরা এবং শিশুরা আমার জন্য দোয়া ও সালাম পড়বে। অতঃপর তোমরা আমাকে আল্লাহর সোপর্দ করে দিবে। (আলবিদায়া ওয়ান নিহায়া-৫/২২২, দালায়েলুন নবুয়্যাহ লিলবায়হাককি) নবীজি সা.-এর জানাজা বিষয়ে আরো দীর্ঘ হাদিস পাওয়া যায় তিরিমিজি শরিফে। সাহাবি হজরত সালেম বিন ওবায়েদ রা. বলেন, আমি প্রথমে হজরত আবু বকর সিদ্দিক রা. কে রাসুলে কারিম সা.-এর ইন্তেকালের সংবাদ দিই । তখন আবু বকর সিদ্দিক রা. আমাকে বললেন, তুমি আমার সঙ্গে ভেতরে আসো । সাহাবি হজরত সালেম বিন ওবায়েদ রা. বলেন, হজরত আবু বকর রা. যখন রাসুলের নিকট যেতে চাইলেন, তখন চারপাশে মানুষের প্রচন্ড- ভিড় । হজরত আবু বকর রা. লোকদের বললেন, তোমরা আমাকে সামান্য রাস্তা দাও ! লোকেরা ভেতরে যাওয়ার পথ করে দিল ! তিনি ভেতরে গেলেন, মাথা নুইয়ে কাছে গিয়ে নবীজি সা. কে দেখলেন । নবীজির পবিত্র কপালে হজরত আবু বকর রা. চুমু খেলেন । তারপর কোরআনের আয়াত পড়লেন, যার অর্থ হলো, নিশ্চয় তুমিও ইন্তেকাল করবে এবং তারাও ইন্তেকাল করবে । হজরত আবু বকর রা. বেরিয়ে এলে; লোকেরা জানতে চাইলেন, ওগো নবীজির বন্ধু ! নবীজি কি ইন্তেকাল করেছেন ? হজরত আবু বকর রা. বললেন, হ্যা । তখন লোকেরা নবীজির ইন্তেকালের খবর দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করলো । তারপর সাহাবায়ে কেরাম হজরত আবু বকর রা. কে জিজ্ঞেস করলেন, ওগো নবীজির বন্ধু ! নবীজির কি জানাজার নামাজ পড়া হবে ? তিনি বললেন, হ্যা । জিজ্ঞাসা করা হল, কিভাবে ? হজরত আবু বকর রা. বললেন, এভাবে যে, এক এক জামাত নবীজির ঘরে প্রবেশ করবে এবং জানাজা পড়ে বেরিয়ে আসবে । তারপর অন্য জামাত প্রবেশ করবে । সাহাবারা হজরত আবু বকর রা. কে জিজ্ঞাসা করলেন, নবীজিকে কি দাফন করা হবে ? তিনি বললেন, জি । জিজ্ঞাসা করা হল, কোথায় ? তিনি বললেন, যেখানে আল্লাহ তায়ালা নবীজির রূহ কবজ করেছেন সেখানেই । কেননা, আল্লাহ তায়ালা নিশ্চয় নবীজিকে এমন স্থানে মৃত্যু দান করেছেন যে স্থানটি উত্তম ও পবিত্র । সাহাবারা দৃঢ়ভাবে মেনে নিলেন হজরত আবু বকর রা.-এর কথা । হজরত আবু বকর রা. নিজেই নবীজির আহলে বায়াত তথা রাসুলের পরিবার ও বংশের মানুষদের ডেকে গোসল নির্দেশ দেন । (সূত্র : শামায়েলে তিরমিজি, হাদিস : ৩৭৯, ৩৯৭, শরফুল মুস্তফা, বর্ণনা নং-৮৫০, আল আনওয়ার ফি শামায়িলিন নাবিয়্যিল মুখতার, বর্ণনা নং-১২০৯) ইমাম শাফি রহ. এবং কাজি ইয়াজ রা. বলেন, নবীজি সা.-এর জানাজা পড়া হয়েছে । কিতাবুল উম্মু/ সিরাতে মস্তুফা/৩য় খ-: ২৩৫ পুনশ্চ : নবীজির জানাজা হয়েছে । সাহাবারা একা একা পড়েছেন । কেউ ইমামতি করেননি । তবে তাবাকাতে ইবনে সাদের বরাতে বলা হয়, হজরত আবু বকর ও ওমর রা. এক সঙ্গে নবীজি সা.-এর ঘরে উপস্থিত হন । নবীজির দেহ মোবরক সামনে রেখে নামাজ-সালাম ও দুরুদ পেশ করেন । দীর্ঘ দোয়ার সময় পেছনে সারিবদ্ধ সাহাবিরা আমিন আমিন বলেছেন । (আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া : ৫ম খ-: ২৬৫)
0 notes
gnews71 · 7 years ago
Photo
Tumblr media
রাসূল (সা.) এর জানাজার ইমাম কে ছিলেন? ইবনে মাজাহ শরিফে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন, মঙ্গলবার সাহাবায়ে কেরাম রাসুলে কারিম সা.-এর গোসল ও কাফনের কাজ শেষ করেন। নবীজির দেহ মোবারক রওজার পাশে রাখেন। সাহাবারা দল দলে নবীজির কাছে আসতে থাকেন। কারও ইমামতিতে নয়; সবাই একা একা নামাজ ও দুরুদ শেষে বেরিয়ে যান। (ইবনে মাজাহ) অন্য কিতাবে আছে, রাসুল সা.-এর ইন্তেকাল এর আগে সাহাবিরা নবীজির দরবারে আসলেন। সাহাবাদের দেখে নবীজির চোখে বেদনার জল। নবীজি বললেন, আমি তোমাদের আল্লাহর কাছে সোপর্দ করছি, আল্লাহ তোমাদের সঙ্গী হবে। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. জানতে চাইলেন, হে আল্লাহর রাসুল সা.! আপনার যাওয়ার সময় খুব নিকটে চলে এসেছে, আপনার ইন্তেকালের পর আপনাকে কে গোসল দিবে? রাসুল সা. বললেন, আমার আহলে বাইত মানে আমার পরিবারের সদস্যরা। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ আবার জানতে চাইলেন, কে আপনাকে কাফন পরাবে? রাসুল সা. বললেন, আমার আহলে বাইত। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ আবার জানতে চাইলেন কে আপনাকে কবরে নামাবে? রাসুল সা. বললেন, আমার আহলে বাইত। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ আবার জানতে চাইলেন কে আপনার জানাজা কে পড়াবে? তখন রাসুল সা.-এর চোখ বেয়ে বেদনার জল নেমে এলো। তিনি বললেন, তোমাদের নাবীর জানাজা এমন হবে না, যেমন তোমাদের হয়। যখন আমার গোসল হয়ে যাবে তখন তোমরা সবাই ঘর থেকে বের হয়ে যাবে। সবার আগে জিবরাইল আমার জানাজা পড়বে। তারপর মিকাঈল ও ই¯্রাফিল ধারাবাহিকভাবে আরশের অন্যান্য ফেরেশতারা আসবে ও আমার জানাজা পড়বে। তারপরে তোমাদের পুরুষরা, নারীরা এবং শিশুরা আমার জন্য দোয়া ও সালাম পড়বে। অতঃপর তোমরা আমাকে আল্লাহর সোপর্দ করে দিবে। (আলবিদায়া ওয়ান নিহায়া-৫/২২২, দালায়েলুন নবুয়্যাহ লিলবায়হাককি) নবীজি সা.-এর জানাজা বিষয়ে আরো দীর্ঘ হাদিস পাওয়া যায় তিরিমিজি শরিফে। সাহাবি হজরত সালেম বিন ওবায়েদ রা. বলেন, আমি প্রথমে হজরত আবু বকর সিদ্দিক রা. কে রাসুলে কারিম সা.-এর ইন্তেকালের সংবাদ দিই । তখন আবু বকর সিদ্দিক রা. আমাকে বললেন, তুমি আমার সঙ্গে ভেতরে আসো । সাহাবি হজরত সালেম বিন ওবায়েদ রা. বলেন, হজরত আবু বকর রা. যখন রাসুলের নিকট যেতে চাইলেন, তখন চারপাশে মানুষের প্রচন্ড- ভিড় । হজরত আবু বকর রা. লোকদের বললেন, তোমরা আমাকে সামান্য রাস্তা দাও ! লোকেরা ভেতরে যাওয়ার পথ করে দিল ! তিনি ভেতরে গেলেন, মাথা নুইয়ে কাছে গিয়ে নবীজি সা. কে দেখলেন । নবীজির পবিত্র কপালে হজরত আবু বকর রা. চুমু খেলেন । তারপর কোরআনের আয়াত পড়লেন, যার অর্থ হলো, নিশ্চয় তুমিও ইন্তেকাল করবে এবং তারাও ইন্তেকাল করবে । হজরত আবু বকর রা. বেরিয়ে এলে; লোকেরা জানতে চাইলেন, ওগো নবীজির বন্ধু ! নবীজি কি ইন্তেকাল করেছেন ? হজরত আবু বকর রা. বললেন, হ্যা । তখন লোকেরা নবীজির ইন্তেকালের খবর দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করলো । তারপর সাহাবায়ে কেরাম হজরত আবু বকর রা. কে জিজ্ঞেস করলেন, ওগো নবীজির বন্ধু ! নবীজির কি জানাজার নামাজ পড়া হবে ? তিনি বললেন, হ্যা । জিজ্ঞাসা করা হল, কিভাবে ? হজরত আবু বকর রা. বললেন, এভাবে যে, এক এক জামাত নবীজির ঘরে প্রবেশ করবে এবং জানাজা পড়ে বেরিয়ে আসবে । তারপর অন্য জামাত প্রবেশ করবে । সাহাবারা হজরত আবু বকর রা. কে জিজ্ঞাসা করলেন, নবীজিকে কি দাফন করা হবে ? তিনি বললেন, জি । জিজ্ঞাসা করা হল, কোথায় ? তিনি বললেন, যেখানে আল্লাহ তায়ালা নবীজির রূহ কবজ করেছেন সেখানেই । কেননা, আল্লাহ তায়ালা নিশ্চয় নবীজিকে এমন স্থানে মৃত্যু দান করেছেন যে স্থানটি উত্তম ও পবিত্র । সাহাবারা দৃঢ়ভাবে মেনে নিলেন হজরত আবু বকর রা.-এর কথা । হজরত আবু বকর রা. নিজেই নবীজির আহলে বায়াত তথা রাসুলের পরিবার ও বংশের মানুষদের ডেকে গোসল নির্দেশ দেন । (সূত্র : শামায়েলে তিরমিজি, হাদিস : ৩৭৯, ৩৯৭, শরফুল মুস্তফা, বর্ণনা নং-৮৫০, আল আনওয়ার ফি শামায়িলিন নাবিয়্যিল মুখতার, বর্ণনা নং-১২০৯) ইমাম শাফি রহ. এবং কাজি ইয়াজ রা. বলেন, নবীজি সা.-এর জানাজা পড়া হয়েছে । কিতাবুল উম্মু/ সিরাতে মস্তুফা/৩য় খ-: ২৩৫ পুনশ্চ : নবীজির জানাজা হয়েছে । সাহাবারা একা একা পড়েছেন । কেউ ইমামতি করেননি । তবে তাবাকাতে ইবনে সাদের বরাতে বলা হয়, হজরত আবু বকর ও ওমর রা. এক সঙ্গে নবীজি সা.-এর ঘরে উপস্থিত হন । নবীজির দেহ মোবরক সামনে রেখে নামাজ-সালাম ও দুরুদ পেশ করেন । দীর্ঘ দোয়ার সময় পেছনে সারিবদ্ধ সাহাবিরা আমিন আমিন বলেছেন । (আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া : ৫ম খ-: ২৬৫)
0 notes