#বিচারব্যবস্থা
Explore tagged Tumblr posts
Text
নিশ্চয়ই আল্লাহ আহকামিল হাকিমীন, তিনি শ্রেষ্ঠতম বিচারক
Surely Allah is Ahkamil Hakimeen, He is the best judge
আল্লাহর বিচার চিরন্তন।
আপনি মানুষের উপর জুলুম করছেন, জমি কেড়ে নিচ্ছেন, মিথ্যা সাক্ষী দিচ্ছেন, খুন করছেন হয়তো সমাজের মাতবরীর জন্য অথবা কিছু জমা-জমি, টাকা-পয়সার জন্য, বা রাজনৈতিক ক্ষমতার জন্য কিন্তু আপনি কি করছেন? আপনি কয়দিন এ ক্ষমতা ভোগ করবেন?
"আল্লাহ কি বিচারকদের মধ্যে শ্রেষ্টতম বিচারক নন?" -- [সূরা আত-ত্বীন, আয়াত ৮,
তিনি, যিনি এই বিশ্বজগতের ��্রতিপালক, পালনকর্তা। যিনি সমস্ত জ্ঞানের মালিক, তিনি প্রশ্ন করছেন আমাদের রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে) এবং প্রশ্নটি আমাদের সবার জন্যই... যিনি সবকিছুই জানেন, আহকামিল হাকিমীন নিজেই যখন প্রশ্ন ছুঁড়ে দিচ্ছেন, তখন কি আমাদেরকে আরেকটু ঝাঁকি দিয়ে উপলব্ধি করিয়ে দেয়ার জন্যই নয়? আমরা কি সন্দিগ্ধ হয়ে পড়েছি শ্রেষ্ঠ বিচারকের ব্যাপারে? আমরা কি ভেবে বসছি দুনিয়ার শাসন, ক্ষমতা, শক্তি যদি ভুল হয় এবং আমরা ভুলে কাউক জুলুম করে বসি, তাহলে প্রতিফল পাবো না? আহকামিল হাকিমীন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা আমাদের দুনিয়ার সকল বিচারকের চেয়ে শ্রেষ্ঠ বিচারক। সবার সবকিছুর পরে তার আদালত, তিনি আমাদের পইপই করে দেখিয়ে দেবেন সূক্ষ্ম থেকে সূক্ষ্মতর বিষয়গুলো। সেদিন কেউ পুরষ্কার থেকে বঞ্চিত হবে না; সেদিন অবশ্যই অত্যাচারী, মিথ্যাচারী, যালিম, কাফির, মুশরিকরা তাদের উপযুক্ত শান্তি পাবে পুরষ্কার। নিশ্চয়ই আল্লাহ 'আহকামিল হাকিমীন', তিনি শ্রেষ্ঠ বিচারক; তার বিচার নিপুণ, নিখুঁত, সূক্ষ্ম।
ন্যায়বিচার সম্পর্কে কুরআনের ৮টি আয়াত
পবিত্র কুরআনের দৃষ্টিতে আল্লাহর সকল সৃষ্টি ন্যায়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত এবং সেখানে অন্যায়, অবিচার ও জুলুমের কোনো স্থান নেই। এমনকি পার্থিব জগতে নবী-রাসূলগণের আবির্ভাবের তিনটি উদ্দেশ্যেরও অন্যতম ছিল ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা। ন্যায়বিচারের মানদণ্ডে প্রতিটি জিনিসকে তার প্রকৃত জায়গায় স্থান দিতে হবে এবং যার যে অধিকার তা তাকে সঠিকভাবে বুঝিয়ে দিতে হবে।
ন্যায়বিচার হচ্ছে এমন একটি মৌলিক পরিভাষা যা পবিত্র কুরআনের বহু স্থানে নানা ধরনের উদাহরণ, অলঙ্কার ও সত্য ঘটনার আকারে খুলে খুলে বর্ণনা করা হয়েছে। সেইসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাদেরকে বারবার ন্যায়বিচারের ওপর অটল ও অবিচল থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
ন্যায় ও ন্যায়বিচারের গুরুত্ব উপলব্ধি করার সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে মহাগ্রন্থ আল-কুরআনে বর্ণিত এ সংক্রান্ত আয়াতগুলো বোঝার চেষ্টা করা। পবিত্র কুরআনের এরকম ৮টি আয়াত তুলে ধরব যেখানে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ন্যায় ও ন্যায়বিচারের প্রসঙ্গ বর্ণিত হয়েছে:
১- আল্লাহর সকল কাজ ন্যায়বিচারের ওপর প্রতিষ্ঠিত।"আল্লাহ সাক্ষ্য দেন যে, তিনি ছাড়া অন্য কোনো মাবুদ নেই, ফেরেশতাগণ ও জ্ঞানী ব্যক্তিগণও (এই একই বিষয়ে) সাক্ষ্য প্রদান করেন যে, [আল্লাহর সকল কাজ] ন্যায়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত এ��ং মহাপরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময় আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন (সত্য) উপাস্য নেই।" [আলে-ইমরান, ১৮]
২- আল্লাহ তায়ালা বিন্দু পরিমাণ জুলুম বা অন্যায় করেন না।
"নিশ্চয়ই আল্লাহ অণু পরিমাণও অত্যাচার বা অন্যায় করেন না [তাঁর প্রতিটি কাজ ন্যায়ভিত্তিক] এবং যদি কেউ [ওই অণু পরিমাণ] সৎ কাজ করে তাহলে তিনি তা দ্বিগুণ করে দেন এবং স্বীয় পক্ষ হতে ওর মহান প্রতিদান প্রদান করেন।" [নিসা, ৪০]
৩- মানুষের মাঝে ন্যায়ভিত্তিক বিচার করুন। "নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন যে, আমানত তার মালিককে প্রত্যর্পণ করবে। আর যখন তোমরা মানুষের মধ্যে বিচার-কার্য পরিচালনা করবে, তখন ন্যায়পরায়ণতার সাথে বিচার করবে। আল্লাহ তোমাদেরকে যে উপদেশ দেন, তা কত উৎকৃষ্ট! নিশ্চয় আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।" [নিসা, ৫৮]
৪- অপরের সঙ্গে শত্রুতার কারণে অন্যায় করো না। "হে মুমিনগণ! আল্লাহর উদ্দেশ্যে ন্যায় সাক্ষাদানে তোমরা অবিচল থাকবে কোন সম্প্রদায়ের প্রতি শক্ৰতা তোমাদেরকে যেন সুবিচার বুর্জনে প্ররোচিত না করে। তোমরা সুবিচার করবে, এটা তাকওয়ার অধিকতর নিকটবর্তী। আর তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর। নিশ্চয় তোমরা যা কর, আল্লাহ সে বিষয়ে সম্যক অবহিত।" [মায়েদা, ৮]
৫- মহান আল্লাহ এমনকি জালিমদের প্রতিও জুলুম করেন না।
"আর যমীনে যা রয়েছে, তা যদি প্রত্যেক যুলুমকারী ব্যক্তির হয়ে যায়, তবে সে মুক্তির বিনিময়ে সেসব দিয়ে দেবে এবং অনুতাপ গোপন করবে যখন তারা শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে। আর তাদের মীমাংসা ন্যায়ভিত্তিক করা হবে এবং তাদের প্রতি যুলুম করা হবে না।" [ইউনূস, ৫৪]
৬- মানুষের অধিকার প্রদান করার ক্ষেত্রে অন্যায় করো না। "হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা ন্যায়সঙ্গতভাবে মাপো ও ওজন করো, লোকদেরকে তাদের প্রাপ্য বস্তু কম দিও না এবং যমীনে বিপর্যয় সৃষ্টি করে বেড়িও না।" [হুদ, ৮৫]
৭- মানুষকে ন্যায় ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করতে হবে। "নিশ্চয় আমি আমার রাসূলদেরকে স্পষ্ট প্রমাণাদিসহ পাঠিয়েছি এবং তাদের সাথে কিতাব ও (ন্যায়ের) মানদন্ড নাযিল করেছি, যাতে মানুষ সুবিচার প্রতিষ্ঠা করে।" [হাদিদ, ২৫]
৮- মহান আল্লাহ সুবিচারকারীদের ভালোবাসেন। "তাদের মধ্যে ইনসাফের সঙ্গে ফয়সালা কর আর সুবিচার কর; আল্লাহ সুবিচারকারীদেরকে ভালোবাসেন।" [হুজুরাত, ৯]
আল্লাহ কিভাবে ন্যায় বিচার করেন
youtube
আল্লাহ তায়ালার দয়া ���বং বিচার।
youtube
যেভাবে আল্লাহ হাশরের মাঠে বিচার করবেন |
youtube
হাশরের মাঠে আল্লাহর উপস্থিতিতে কীভাবে বিচার শুরু হবে? |
youtube
বিচার দিবসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
youtube
নিশ্চয়ই আল্লাহ আহকামিল হাকিমীন, তিনি শ্রেষ্ঠতম বিচারক
Surely Allah is Ahkamil Hakimeen, He is the best judge
ইসলামের দৃষ্টিতে বিচারক ও বিচারব্যবস্থা
Judges and judiciary in the Sight of Islam
#ইসলামের দৃষ্টিতে বিচারক ও বিচারব্যবস্থা#Judges and judiciary in the Sight of Islam#ন্যায়বিচার#justice#আল্লাহর বিচার চিরন্তন#Allah's Judgment is Eternal#আল্লাহরবিচারচিরন্তন#Allah'sJudgmentisEternal#বিচারক#বিচারব্যবস্থা#Judge#Judiciary#Justice#allahswt#youtube#Youtube
0 notes
Text
নিশ্চয়ই আল্লাহ আহকামিল হাকিমীন, তিনি শ্রেষ্ঠতম বিচারক
Surely Allah is Ahkamil Hakimeen, He is the best judge
আল্লাহর বিচার চিরন্তন।
আপনি মানুষের উপর জুলুম করছেন, জমি কেড়ে নিচ্ছেন, মিথ্যা সাক্ষী দিচ্ছেন, খুন করছেন হয়তো সমাজের মাতবরীর জন্য অথবা কিছু জমা-জমি, টাকা-পয়সার জন্য, বা রাজনৈতিক ক্ষমতার জন্য কিন্তু আপনি কি করছেন? আপনি কয়দিন এ ক্ষমতা ভোগ করবেন?
"আল্লাহ কি বিচারকদের মধ্যে শ্রেষ্টতম বিচারক নন?" -- [সূরা আত-ত্বীন, আয়াত ৮,
তিনি, যিনি এই বিশ্বজগতের প্রতিপালক, পালনকর্তা। যিনি সমস্ত জ্ঞানের মালিক, তিনি প্রশ্ন করছেন আমাদের রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে) এবং প্রশ্নটি আমাদের সবার জন্যই... যিনি সবকিছুই জানেন, আহকামিল হাকিমীন নিজেই যখন প্রশ্ন ছুঁড়ে দিচ্ছেন, তখন কি আমাদেরকে আরেকটু ঝাঁকি দিয়ে উপলব্ধি করিয়ে দেয়ার জন্যই নয়? আমরা কি সন্দিগ্ধ হয়ে পড়েছি শ্রেষ্ঠ বিচারকের ব্যাপারে? আমরা কি ভেবে বসছি দুনিয়ার শাসন, ক্ষমতা, শক্তি যদি ভুল হয় এবং আমরা ভুলে কাউক জুলুম করে বসি, তাহলে প্রতিফল পাবো না? আহকামিল হাকিমীন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা আমাদের দুনিয়ার সকল বিচারকের চেয়ে শ্রেষ্ঠ বিচারক। সবার সবকিছুর পরে তার আদালত, তিনি আমাদের পইপই করে দেখিয়ে দেবেন সূক্ষ্ম থেকে সূক্ষ্মতর বিষয়গুলো। সেদিন কেউ পুরষ্কার থেকে বঞ্চিত হবে না; সেদিন অবশ্যই অত্যাচারী, মিথ্যাচারী, যালিম, কাফির, মুশরিকরা তাদের উপযুক্ত শান্তি পাবে পুরষ্কার। নিশ্চয়ই আল্লাহ 'আহকামিল হাকিমীন', তিনি শ্রেষ্ঠ বিচারক; তার বিচার নিপুণ, নিখুঁত, সূক্ষ্ম।
ন্যায়বিচার সম্পর্কে কুরআনের ৮টি আয়াত
পবিত্র কুরআনের দৃষ্টিতে আল্লাহর সকল সৃষ্টি ন্যায়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত এবং সেখানে অন্যায়, অবিচার ও জুলুমের কোনো স্থান নেই। এমনকি পার্থিব জগতে নবী-রাসূলগণের আবির্ভাবের তিনটি উদ্দেশ্যেরও অন্যতম ছিল ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা। ন্যায়বিচারের মানদণ্ডে প্রতিটি জিনিসকে তার প্রকৃত জায়গায় স্থান দিতে হবে এবং যার যে অধিকার তা তাকে সঠিকভাবে বুঝিয়ে দিতে হবে।
ন্যায়বিচার হচ্ছে এমন একটি মৌলিক পরিভাষা যা পবিত্র কুরআনের বহু স্থানে নানা ধরনের উদাহরণ, অলঙ্কার ও সত্য ঘটনার আকারে খুলে খুলে বর্ণনা করা হয়েছে। সেইসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাদেরকে বারবার ন্যায়বিচারের ওপর অটল ও অবিচল থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
ন্যায় ও ন্যায়বিচারের গুরুত্ব উপলব্ধি করার সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে মহাগ্রন্থ আল-কুরআনে বর্ণিত এ সংক্রান্ত আয়াতগুলো বোঝার চেষ্টা করা। পবিত্র কুরআনের এরকম ৮টি আয়াত তুলে ধরব যেখানে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ন্যায় ও ন্যায়বিচারের প্রসঙ্গ বর্ণিত হয়েছে:
১- আল্লাহর সকল কাজ ন্যায়বিচারের ওপর প্রতিষ্ঠিত।"আল্লাহ সাক্ষ্য দেন যে, তিনি ছাড়া অন্য কোনো মাবুদ নেই, ফেরেশতাগণ ও জ্ঞানী ব্যক্তিগণও (এই একই বিষয়ে) সাক্ষ্য প্রদান করেন যে, [আল্লাহর সকল কাজ] ন্যায়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত এবং মহাপরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময় আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন (সত্য) উপাস্য নেই।" [আলে-ইমরান, ১৮]
২- আল্লাহ তায়ালা বিন্দু পরিমাণ জুলুম বা অন্যায় করেন না।
"নিশ্চয়ই আল্লাহ অণু পরিমাণও অত্যাচার বা অন্যায় করেন না [তাঁর প্রতিটি কাজ ন্যায়ভিত্তিক] এবং যদি কেউ [ওই অণু পরিমাণ] সৎ কাজ করে তাহলে তিনি তা দ্বিগুণ করে দেন এবং স্বীয় পক্ষ হতে ওর মহান প্রতিদান প্রদান করেন।" [নিসা, ৪০]
৩- মানুষের মাঝে ন্যায়ভিত্তিক বিচার করুন। "নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন যে, আমানত তার মালিককে প্রত্যর্পণ করবে। আর যখন তোমরা মানুষের মধ্যে বিচার-কার্য পরিচালনা করবে, তখন ন্যায়পরায়ণতার সাথে বিচার করবে। আল্লাহ তোমাদেরকে যে উপদেশ দেন, তা কত উৎকৃষ্ট! নিশ্চয় আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।" [নিসা, ৫৮]
৪- অপরের সঙ্গে শত্রুতার কারণে অন্যায় করো না। "হে মুমিনগণ! আল্লাহর উদ্দেশ্যে ন্যায় সাক্ষাদানে তোমরা অবিচল থাকবে কোন সম্প্রদায়ের প্রতি শক্ৰতা তোমাদেরকে যেন সুবিচার বুর্জনে প্ররোচিত না করে। তোমরা সুবিচার করবে, এটা তাকওয়ার অধিকতর নিকটবর্তী। আর তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর। নিশ্চয় তোমরা যা কর, আল্লাহ সে বিষয়ে সম্যক অবহিত।" [মায়েদা, ৮]
৫- মহান আল্লাহ এমনকি জালিমদের প্রতিও জুলুম করেন না।
"আর যমীনে যা রয়েছে, তা যদি প্রত্যেক যুলুমকারী ব্যক্তির হয়ে যায়, তবে সে মুক্তির বিনিময়ে সেসব দিয়ে দেবে এবং অনুতাপ গোপন করবে যখন তারা শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে। আর তাদের মীমাংসা ন্যায়ভিত্তিক করা হবে এবং তাদের প্রতি যুলুম করা হবে না।" [ইউনূস, ৫৪]
৬- মানুষের অধিকার প্রদান করার ক্ষেত্রে অন্যায় করো না। "হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা ন্যায়সঙ্গতভাবে মাপো ও ওজন করো, লোকদেরকে তাদের প্রাপ্য বস্তু কম দিও না এবং যমীনে বিপর্যয় সৃষ্টি করে বেড়িও না।" [হুদ, ৮৫]
৭- মানুষকে ন্যায় ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করতে হবে। "নিশ্চয় আমি আমার রাসূলদেরকে স্পষ্ট প্রমাণাদিসহ পাঠিয়েছি এবং তাদের সাথে কিতাব ও (ন্যায়ের) মানদন্ড নাযিল করেছি, যাতে মানুষ সুবিচার প্রতিষ্ঠা করে।" [হাদিদ, ২৫]
৮- মহান আল্লাহ সুবিচারকারীদের ভালোবাসেন। "তাদের মধ্যে ইনসাফের সঙ্গে ফয়সালা কর আর সুবিচার কর; আল্লাহ সুবিচারকারীদেরকে ভালোবাসেন।" [হুজুরাত, ৯]
আল্লাহ কিভাবে ন্যায় বিচার করেন
youtube
আল্লাহ তায়ালার দয়া এবং বিচার।
youtube
যেভাবে আল্লাহ হাশরের মাঠে বিচার করবেন |
youtube
হাশরের মাঠে আল্লাহর উপস্থিতিতে কীভাবে বিচার শুরু হবে? |
youtube
বিচার দিবসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
youtube
নিশ্চয়ই আল্লাহ আহকামিল হাকিমীন, তিনি শ্রেষ্ঠতম বিচারক
Surely Allah is Ahkamil Hakimeen, He is the best judge
ইসলামের দৃষ্টিতে বিচারক ও বিচারব্যবস্থা
Judges and judiciary in the Sight of Islam
#ইসলামের দৃষ্টিতে বিচারক ও বিচারব্যবস্থা#Judges and judiciary in the Sight of Islam#ন্যায়বিচার#justice#আল্লাহর বিচার চিরন্তন#Allah's Judgment is Eternal#আল্লাহরবিচারচিরন্তন#Allah'sJudgmentisEternal#বিচারক#বিচারব্যবস্থা#Judge#Judiciary#Justice#Youtube
0 notes
Text
নিশ্চয়ই আল্লাহ আহকামিল হাকিমীন, তিনি শ্রেষ্ঠতম বিচারক
Surely Allah is Ahkamil Hakimeen, He is the best judge
আল্লাহর বিচার চিরন্তন।
আপনি মানুষের উপর জুলুম করছেন, জমি কেড়ে নিচ্ছেন, মিথ্যা সাক্ষী দিচ্ছেন, খুন করছেন হয়তো সমাজের মাতবরীর জন্য অথবা কিছু জমা-জমি, টাকা-পয়সার জন্য, বা রাজনৈতিক ক্ষমতার জন্য কিন্তু আপনি কি করছেন? আপনি কয়দিন এ ক্ষমতা ভোগ করবেন?
"আল্লাহ কি বিচারকদের মধ্যে শ্রেষ্টতম বিচারক নন?" -- [সূরা আত-ত্বীন, আয়াত ৮,
তিনি, যিনি এই বিশ্বজগতের প্রতিপালক, পালনকর্তা। যিনি সমস্ত জ্ঞানের মালিক, তিনি প্রশ্ন করছেন আমাদের রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে) এবং প্রশ্নটি আমাদের সবার জন্যই... যিনি সবকিছুই জানেন, আহকামিল হাকিমীন নিজেই যখন প্রশ্ন ছুঁড়ে দিচ্ছেন, তখন কি আমাদেরকে আরেকটু ঝাঁকি দিয়ে উপলব্ধি করিয়ে দেয়ার জন্যই নয়? আমরা কি সন্দিগ্ধ হয়ে পড়েছি শ্রেষ্ঠ বিচারকের ব্যাপারে? আমরা কি ভেবে বসছি দুনিয়ার শাসন, ক্ষমতা, শক্তি যদি ভুল হয় এবং আমরা ভুলে কাউক জুলুম করে বসি, তাহলে প্রতিফল পাবো না? আহকামিল হাকিমীন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা আমাদের দুনিয়ার সকল বিচারকের চেয়ে শ্রেষ্ঠ বিচারক। সবার সবকিছুর পরে তার আদালত, তিনি আমাদের পইপই করে দেখিয়ে দেবেন সূক্ষ্ম থেকে সূক্ষ্মতর বিষয়গুলো। সেদিন কেউ পুরষ্কার থেকে বঞ্চিত হবে না; সেদিন অবশ্যই অত্যাচারী, মিথ্যাচারী, যালিম, কাফির, মুশরিকরা তাদের উপযুক্ত শান্তি পাবে পুরষ্কার। নিশ্চয়ই আল্লাহ 'আহকামিল হাকিমীন', তিনি শ্রেষ্ঠ বিচারক; তার বিচার নিপুণ, নিখুঁত, সূক্ষ্ম।
ন্যায়বিচার সম্পর্কে কুরআনের ৮টি আয়াত
পবিত্র কুরআনের দৃষ্টিতে আল্লাহর সকল সৃষ্টি ন্যায়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত এবং সেখানে অন্যায়, অবিচার ও জুলুমের কোনো স্থান নেই। এমনকি পার্থিব জগতে নবী-রাসূলগণের আবির্ভাবের তিনটি উদ্দেশ্যেরও অন্যতম ছিল ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা। ন্যায়বিচারের মানদণ্ডে প্রতিটি জিনিসকে তার প্রকৃত জায়গায় স্থান দিতে হবে এবং যার যে অধিকার তা তাকে সঠিকভাবে বুঝিয়ে দিতে হবে।
ন্যায়বিচার হচ্ছে এমন একটি মৌলিক পরিভাষা যা পবিত্র কুরআনের বহু স্থানে নানা ধরনের উদাহরণ, অলঙ্কার ও সত্য ঘটনার আকারে খুলে খুলে বর্ণনা করা হয়েছে। সেইসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাদেরকে বারবার ন্যায়বিচারের ওপর অটল ও অবিচল থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
ন্যায় ও ন্যায়বিচারের গুরুত্ব উপলব্ধি করার সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে মহাগ্রন্থ আল-কুরআনে বর্ণিত এ সংক্রান্ত আয়াতগুলো বোঝার চেষ্টা করা। পবিত্র কুরআনের এরকম ৮টি আয়াত তুলে ধরব যেখানে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ন্যায় ও ন্যায়বিচারের প্রসঙ্গ বর্ণিত হয়েছে:
১- আল্লাহর সকল কাজ ন্যায়বিচারের ওপর প্রতিষ্ঠিত।"আল্লাহ সাক্ষ্য দেন যে, তিনি ছাড়া অন্য কোনো মাবুদ নেই, ফেরেশতাগণ ও জ্ঞানী ব্যক্তিগণও (এই একই বিষয়ে) সাক্ষ্য প্রদান করেন যে, [আল্লাহর সকল কাজ] ন্যায়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত এবং মহাপরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময় আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন (সত্য) উপাস্য নেই।" [আলে-ইমরান, ১৮]
২- আল্লাহ তায়ালা বিন্দু পরিমাণ জুলুম বা অন্যায় করেন না।
"নিশ্চয়ই আল্লাহ অণু পরিমাণও অত্যাচার বা অন্যায় করেন না [তাঁর প্রতিটি কাজ ন্যায়ভিত্তিক] এবং যদি কেউ [ওই অণু পরিমাণ] সৎ কাজ করে তাহলে তিনি তা দ্বিগুণ করে দেন এবং স্বীয় পক্ষ হতে ওর মহান প্রতিদান প্রদান করেন।" [নিসা, ৪০]
৩- মানুষের মাঝে ন্যায়ভিত্তিক বিচার করুন। "নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন যে, আমানত তার মালিককে প্রত্যর্পণ করবে। আর যখন তোমরা মানুষের মধ্যে বিচার-কার্য পরিচালনা করবে, তখন ন্যায়পরায়ণতার সাথে বিচার করবে। আল্লাহ তোমাদেরকে যে উপদেশ দেন, তা কত উৎকৃষ্ট! নিশ্চয় আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।" [নিসা, ৫৮]
৪- অপরের সঙ্গে শত্রুতার কারণে অন্যায় করো না। "হে মুমিনগণ! আল্লাহর উদ্দেশ্যে ন্যায় সাক্ষাদানে তোমরা অবিচল থাকবে কোন সম্প্রদায়ের প্রতি শক্ৰতা তোমাদেরকে যেন সুবিচার বুর্জনে প্ররোচিত না করে। তোমরা সুবিচার করবে, এটা তাকওয়ার অধিকতর নিকটবর্তী। আর তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর। নিশ্চয় তোমরা যা কর, আল্লাহ সে বিষয়ে সম্যক অবহিত।" [মায়েদা, ৮]
৫- মহান আল্লাহ এমনকি জালিমদের প্রতিও জুলুম করেন না।
"আর যমীনে যা রয়েছে, তা যদি প্রত্যেক যুলুমকারী ব্যক্তির হয়ে যায়, তবে সে মুক্তির বিনিময়ে সেসব দিয়ে দেবে এবং অনুতাপ গোপন করবে যখন তারা শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে। আর তাদের মীমাংসা ন্যায়ভিত্তিক করা হবে এবং তাদের প্রতি যুলুম করা হবে না।" [ইউনূস, ৫৪]
৬- মানুষের অধিকার প্রদান করার ক্ষেত্রে অন্যায় করো না। "হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা ন্যায়সঙ্গতভাবে মাপো ও ওজন করো, লোকদেরকে তাদের প্রাপ্য বস্তু কম দিও না এবং যমীনে বিপর্যয় সৃষ্টি করে বেড়িও না।" [হুদ, ৮৫]
৭- মানুষকে ন্যায় ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করতে হবে। "নিশ্চয় আমি আমার রাসূলদেরকে স্পষ্ট প্রমাণাদিসহ পাঠিয়েছি এবং তাদের সাথে কিতাব ও (ন্যায়ের) মানদন্ড নাযিল করেছি, যাতে মানুষ সুবিচার প্রতিষ্ঠা করে।" [হা��িদ, ২৫]
৮- মহান আল্লাহ সুবিচারকারীদের ভালোবাসেন। "তাদের মধ্যে ইনসাফের সঙ্গে ফয়সালা কর আর সুবিচার কর; আল্লাহ সুবিচারকারীদেরকে ভালোবাসেন।" [হুজুরাত, ৯]
আল্লাহ কিভাবে ন্যায় বিচার করেন
youtube
আল্লাহ তায়ালার দয়া এবং বিচার।
youtube
যেভাবে আল্লাহ হাশরের মাঠে বিচার করবেন |
youtube
হাশরের মাঠে আল্লাহর উপস্থিতিতে কীভাবে বিচার শুরু হবে? |
youtube
বিচার দিবসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
youtube
নিশ্চয়ই আল্লাহ আহকামিল হাকিমীন, তিনি শ্রেষ্ঠতম বিচারক
Surely Allah is Ahkamil Hakimeen, He is the best judge
ইসলামের দৃষ্টিতে বিচারক ও বিচারব্যবস্থা
Judges and judiciary in the Sight of Islam
#ইসলামের দৃষ্টিতে বিচারক ও বিচারব্যবস্থা#Judges and judiciary in the Sight of Islam#ন্যায়বিচার#justice#আল্লাহর বিচার চিরন্তন#Allah's Judgment is Eternal#আল্লাহরবিচারচিরন্তন#Allah'sJudgmentisEternal#বিচারক#বিচারব্যবস্থা#Judge#Judiciary#Justice#Youtube
0 notes
Text
নিশ্চয়ই আল্লাহ আহকামিল হাকিমীন, তিনি শ্রেষ্ঠতম বিচারক
Surely Allah is Ahkamil Hakimeen, He is the best judge
আল্লাহর বিচার চিরন্তন।
আপনি মানুষের উপর জুলুম করছেন, জমি কেড়ে নিচ্ছেন, মিথ্যা সাক্ষী দিচ্ছেন, খুন করছেন হয়তো সমাজের মাতবরীর জন্য অথবা কিছু জমা-জমি, টাকা-পয়সার জন্য, বা রাজনৈতিক ক্ষমতার জন্য কিন্তু আপনি কি করছেন? আপনি কয়দিন এ ক্ষমতা ভোগ করবেন?
"আল্লাহ কি বিচারকদের মধ্যে শ্রেষ্টতম বিচারক নন?" -- [সূরা আত-ত্বীন, আয়াত ৮,
তিনি, যিনি এই বিশ্বজগতের প্রতিপালক, পালনকর্তা। যিনি সমস্ত জ্ঞানের মালিক, তিনি প্রশ্ন করছেন আমাদের রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে) এবং প্রশ্নটি আমাদের সবার জন্যই... যিনি সবকিছুই জানেন, আহকামিল হাকিমীন নিজেই যখন প্রশ্ন ছুঁড়ে দিচ্ছেন, তখন কি আমাদেরকে আরেকটু ঝাঁকি দিয়ে উপলব্ধি করিয়ে দেয়ার জন্যই নয়? আমরা কি সন্দিগ্ধ হয়ে পড়েছি শ্রেষ্ঠ বিচারকের ব্যাপারে? আমরা কি ভেবে বসছি দুনিয়ার শাসন, ক্ষমতা, শক্তি যদি ভুল হয় এবং আমরা ভুলে কাউক জুলুম করে বসি, তাহলে প্রতিফল পাবো না? আহকামিল হাকিমীন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা আমাদের দুনিয়ার সকল বিচারকের চেয়ে শ্রেষ্ঠ বিচারক। সবার সবকিছুর পরে তার আদালত, তিনি আমাদের পইপই করে দেখিয়ে দেবেন সূক্ষ্ম থেকে সূক্ষ্মতর বিষয়গুলো। সেদিন কেউ পুরষ্কার থেকে বঞ্চিত হবে না; সেদিন অবশ্যই অত্যাচারী, মিথ্যাচারী, যালিম, কাফির, মুশরিকরা তাদের উপযুক্ত শান্তি পাবে পুরষ্কার। নিশ্চয়ই আল্লাহ 'আহকামিল হাকিমীন', তিনি শ্রেষ্ঠ বিচারক; তার বিচার নিপুণ, নিখুঁত, সূক্ষ্ম।
ন্যায়বিচার সম্পর্কে কুরআনের ৮টি আয়াত
পবিত্র কুরআনের দৃষ্টিতে আল্লাহর সকল সৃষ্টি ন্যায়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত এবং সেখানে অন্যায়, অবিচার ও জুলুমের কোনো স্থান নেই। এমনকি পার্থিব জগতে নবী-রাসূলগণের আবির্ভাবের তিনটি উদ্দেশ্যেরও অন্যতম ছিল ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা। ন্যায়বিচারের মানদণ্ডে প্রতিটি জিনিসকে তার প্রকৃত জায়গায় স্থান দিতে হবে এবং যার যে অধিকার তা তাকে সঠিকভাবে বুঝিয়ে দিতে হবে।
ন্যায়বিচার হচ্ছে এমন একটি মৌলিক পরিভাষা যা পবিত্র কুরআনের বহু স্থানে নানা ধরনের উদাহরণ, অলঙ্কার ও সত্য ঘটনার আকারে খুলে খুলে বর্ণনা করা হয়েছে। সেইসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাদেরকে বারবার ন্যায়বিচারের ওপর অটল ও অবিচল থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
ন্যায় ও ন্যায়বিচারের গুরুত্ব উপলব্ধি করার সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে মহাগ্রন্থ আল-কুরআনে বর্ণিত এ সংক্রান্ত আয়াতগুলো বোঝার চেষ্টা করা। পবিত্র কুরআনের এরকম ৮টি আয়াত তুলে ধরব যেখানে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ন্যায় ও ন্যায়বিচারের প্রসঙ্গ বর্ণিত হয়েছে:
১- আল্লাহর সকল কাজ ন্যায়বিচারের ওপর প্রতিষ্ঠিত।"আল্লাহ সাক্ষ্য দেন যে, তিনি ছাড়া অন্য কোনো মাবুদ নেই, ফেরেশতাগণ ও জ্ঞানী ব্যক্তিগণও (এই একই বিষয়ে) সাক্ষ্য প্রদান করেন যে, [আল্লাহর সকল কাজ] ন্যায়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত এবং মহাপরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময় আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন (সত্য) উপাস্য নেই।" [আলে-ইমরান, ১৮]
২- আল্লাহ তায়ালা বিন্দু পরিমাণ জুলুম বা অন্যায় করেন না।
"নিশ্চয়ই আল্লাহ অণু পরিমাণও অত্যাচার বা অন্যায় করেন না [তাঁর প্রতিটি কাজ ন্যায়ভিত্তিক] এবং যদি কেউ [ওই অণু পরিমাণ] সৎ কাজ করে তাহলে তিনি তা দ্বিগুণ করে দেন এবং স্বীয় পক্ষ হতে ওর মহান প্রতিদান প্রদান করেন।" [নিসা, ৪০]
৩- মানুষের মাঝে ন্যায়ভিত্তিক বিচার করুন। "নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন যে, আমানত তার মালিককে প্রত্যর্পণ করবে। আর যখন তোমরা মানুষের মধ্যে বিচার-কার্য পরিচালনা করবে, তখন ন্যায়পরায়ণতার সাথে বিচার করবে। আল্লাহ তোমাদেরকে যে উপদেশ দেন, তা কত উৎকৃষ্ট! নিশ্চয় আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।" [নিসা, ৫৮]
৪- অপরের সঙ্গে শত্রুতার কারণে অন্যায় করো না। "হে মুমিনগণ! আল্লাহর উদ্দেশ্যে ন্যায় সাক্ষাদানে তোমরা অবিচল থাকবে কোন সম্প্রদায়ের প্রতি শক্ৰতা তোমাদেরকে যেন সুবিচার বুর্জনে প্ররোচিত না করে। তোমরা সুবিচার করবে, এটা তাকওয়ার অধিকতর নিকটবর্তী। আর তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর। নিশ্চয় তোমরা যা কর, আল্লাহ সে বিষয়ে সম্যক অবহিত।" [মায়েদা, ৮]
৫- মহান আল্লাহ এমনকি জালিমদের প্রতিও জুলুম করেন না।
"আর যমীনে যা রয়েছে, তা যদি প্রত্যেক যুলুমকারী ব্যক্তির হয়ে যায়, তবে সে মুক্তির বিনিময়ে সেসব দিয়ে দেবে এবং অনুতাপ গোপন করবে যখন তারা শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে। আর তাদের মীমাংসা ন্যায়ভিত্তিক করা হবে এবং তাদের প্রতি যুলুম করা হবে না।" [ইউনূস, ৫৪]
৬- মানুষের অধিকার প্রদান করার ক্ষেত্রে অন্যায় করো না। "হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা ন্যায়সঙ্গতভাবে মাপো ও ওজন করো, লোকদেরকে তাদের প্রাপ্য বস্তু কম দিও না এবং যমীনে বিপর্যয় সৃষ্টি করে বেড়িও না।" [হুদ, ৮৫]
৭- মানুষকে ন্যায় ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করতে হবে। "নিশ্চয় আমি আমার রাসূলদেরকে স্পষ্ট প্রমাণাদিসহ পাঠিয়েছি এবং তাদের সাথে কিতাব ও (ন্যায়ের) মানদন্ড নাযিল করেছি, যাতে মানুষ সুবিচার প্রতিষ্ঠা করে।" [হাদিদ, ২৫]
৮- মহান আল্লাহ সুবিচারকারীদের ভালোবাসেন। "তাদের মধ্যে ইনসাফের সঙ্গে ফয়সালা কর আর সুবিচার কর; আল্লাহ সুবিচারকারীদেরকে ভালোবাসেন।" [হুজুরাত, ৯]
আল্লাহ কিভাবে ন্যায় বিচার করেন
youtube
আল্লাহ তায়ালার দয়া এবং বিচার।
youtube
যেভাবে আল্লাহ হাশরের মাঠে বিচার করবেন |
youtube
হাশরের মাঠে আল্লাহর উপস্থিতিতে কীভাবে বিচার শুরু হবে? |
youtube
বিচার দিবসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
youtube
নিশ্চয়ই আল্লাহ আহকামিল হাকিমীন, তিনি শ্রেষ্ঠতম বিচারক
Surely Allah is Ahkamil Hakimeen, He is the best judge
ইসলামের দৃষ্টিতে বিচারক ও বিচারব্যবস্থা
Judges and judiciary in the Sight of Islam
#ইসলামের দৃষ্টিতে বিচারক ও বিচারব্যবস্থা#Judges and judiciary in the Sight of Islam#ন্যায়বিচার#justice#আল্লাহর বিচার চিরন্তন#Allah's Judgment is Eternal#আল্লাহরবিচারচিরন্তন#Allah'sJudgmentisEternal#বিচারক#বিচারব্যবস্থা#Judge#Judiciary#Justice#Youtube
0 notes
Text
নিশ্চয়ই আল্লাহ আহকামিল হাকিমীন, তিনি শ্রেষ্ঠতম বিচারক
Surely Allah is Ahkamil Hakimeen, He is the best judge
আল্লাহর বিচার চিরন্তন।
আপনি মানুষের উপর জুলুম করছেন, জমি কেড়ে নিচ্ছেন, মিথ্যা সাক্ষী দিচ্ছেন, খুন করছেন হয়তো সমাজের মাতবরীর জন্য অথবা কিছু জমা-জমি, টাকা-পয়সার জন্য, বা রাজনৈতিক ক্ষমতার জন্য কিন্তু আপনি কি করছেন? আপনি কয়দিন এ ক্ষমতা ভোগ করবেন?
"আল্লাহ কি বিচারকদের মধ্যে শ্রেষ্টতম বিচারক নন?" -- [সূরা আত-ত্বীন, আয়াত ৮,
তিনি, যিনি এই বিশ্বজগতের প্রতিপালক, পালনকর্তা। যিনি সমস্ত জ্ঞানের মালিক, তিনি প্রশ্ন করছেন আমাদের রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে) এবং প্রশ্নটি আমাদের সবার জন্যই... যিনি সবকিছুই জানেন, আহকামিল হাকিমীন নিজেই যখন প্রশ্ন ছুঁড়ে দিচ্ছেন, তখন কি আমাদেরকে আরেকটু ঝাঁকি দিয়ে উপলব্ধি করিয়ে দেয়ার জন্যই নয়? আমরা কি সন্দিগ্ধ হয়ে পড়েছি শ্রেষ্ঠ বিচারকের ব্যাপারে? আমরা কি ভেবে বসছি দুনিয়ার শাসন, ক্ষমতা, শক্তি যদি ভুল হয় এবং আমরা ভুলে কাউক জুলুম করে বসি, তাহলে প্রতিফল পাবো না? আহকামিল হাকিমীন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা আমাদের দুনিয়ার সকল বিচারকের চেয়ে শ্রেষ্ঠ বিচারক। সবার সবকিছুর পরে তার আদালত, তিনি আমাদের পইপই করে দেখিয়ে দেবেন সূক্ষ্ম থেকে সূক্ষ্মতর বিষয়গুলো। সেদিন কেউ পুরষ্কার থেকে বঞ্চিত হবে না; সেদিন অবশ্যই অত্যাচারী, মিথ্যাচারী, যালিম, কাফির, মুশরিকরা তাদের উপযুক্ত শান্তি পাবে পুরষ্কার। নিশ্চয়ই আল্লাহ 'আহকামিল হাকিমীন', তিনি শ্রেষ্ঠ বিচারক; তার বিচার নিপুণ, নিখুঁত, সূক্ষ্ম।
ন্যায়বিচার সম্পর্কে কুরআনের ৮টি আয়াত
পবিত্র কুরআনের দৃষ্টিতে আল্লাহর সকল সৃষ্টি ন্যায়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত এবং সেখানে অন্যায়, অবিচার ও জুলুমের কোনো স্থান নেই। এমনকি পার্থিব জগতে নবী-রাসূলগণের আবির্ভাবের তিনটি উদ্দেশ্যেরও অন্যতম ছিল ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা। ন্যায়বিচারের মানদণ্ডে প্রতিটি জিনিসকে তার প্রকৃত জায়গায় স্থান দিতে হবে এবং যার যে অধিকার তা তাকে সঠিকভাবে বুঝিয়ে দিতে হবে।
ন্যায়বিচার হচ্ছে এমন একটি মৌলিক পরিভাষা যা পবিত্র কুরআনের বহু স্থানে নানা ধরনের উদাহরণ, অলঙ্কার ও সত্য ঘটনার আকারে খুলে খুলে বর্ণনা করা হয়েছে। সেইসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাদেরকে বারবার ন্যায়বিচারের ওপর অটল ও অবিচল থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
ন্যায় ও ন্যায়বিচারের গুরুত্ব উপলব্ধি করার সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে মহাগ্রন্থ আল-কুরআনে বর্ণিত এ সংক্রান্ত আয়াতগুলো বোঝার চেষ্টা করা। পবিত্র কুরআনের এরকম ৮টি আয়াত তুলে ধরব যেখানে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ন্যায় ও ন্যায়বিচারের প্রসঙ্গ বর্ণিত হয়েছে:
১- আল্লাহর সকল কাজ ন্যায়বিচারের ওপর প্রতিষ্ঠিত।"আল্লাহ সাক্ষ্য দেন যে, তিনি ছাড়া অন্য কোনো মাবুদ নেই, ফেরেশতাগণ ও জ্ঞানী ব্যক্তিগণও (এই একই বিষয়ে) সাক্ষ্য প্রদান করেন যে, [আল্লাহর সকল কাজ] ন্যায়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত এবং মহাপরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময় আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন (সত্য) উপাস্য নেই।" [আলে-ইমরান, ১৮]
২- আল্লাহ তায়ালা বিন্দু পরিমাণ জুলুম বা অন্যায় করেন না।
"নিশ্চয়ই আল্লাহ অণু পরিমাণও অত্যাচার বা অন্যায় করেন না [তাঁর প্রতিটি কাজ ন্যায়ভিত্তিক] এবং যদি কেউ [ওই অণু পরিমাণ] সৎ কাজ করে তাহলে তিনি তা দ্বিগুণ করে দেন এবং স্বীয় পক্ষ হতে ওর মহান প্রতিদান প্রদান করেন।" [নিসা, ৪০]
৩- মানুষের মাঝে ন্যায়ভিত্তিক বিচার করুন। "নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন যে, আমানত তার মালিককে প্রত্যর্পণ করবে। আর যখন তোমরা মানুষের মধ্যে বিচার-কার্য পরিচালনা করবে, তখন ন্যায়পরায়ণতার সাথে বিচার করবে। আল্লাহ তোমাদেরকে যে উপদেশ দেন, তা কত উৎকৃষ্ট! নিশ্চয় আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।" [নিসা, ৫৮]
৪- অপরের সঙ্গে শত্রুতার কারণে অন্যায় করো না। "হে মুমিনগণ! আল্লাহর উদ্দেশ্যে ন্যায় সাক্ষাদানে তোমরা অবিচল থাকবে কোন সম্প্রদায়ের প্রতি শক্ৰতা তোমাদেরকে যেন সুবিচার বুর্জনে প্ররোচিত না করে। তোমরা সুবিচার করবে, এটা তাকওয়ার অধিকতর নিকটবর্তী। আর তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর। নিশ্চয় তোমরা যা কর, আল্লাহ ��ে বিষয়ে সম্যক অবহিত।" [মায়েদা, ৮]
৫- মহান আল্লাহ এমনকি জালিমদের প্রতিও জুলুম করেন না।
"আর যমীনে যা রয়েছে, তা যদি প্রত্যেক যুলুমকারী ব্যক্তির হয়ে যায়, তবে সে মুক্তির বিনিময়ে সেসব দিয়ে দেবে এবং অনুতাপ গোপন করবে যখন তারা শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে। আর তাদের মীমাংসা ন্যায়ভিত্তিক করা হবে এবং তাদের প্রতি যুলুম করা হবে না।" [ইউনূস, ৫৪]
৬- মানুষের অধিকার প্রদান করার ক্ষেত্রে অন্যায় করো না। "হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা ন্যায়সঙ্গতভাবে মাপো ও ওজন করো, লোকদেরকে তাদের প্রাপ্য বস্তু কম দিও না এবং যমীনে বিপর্যয় সৃষ্টি করে বেড়িও না।" [হুদ, ৮৫]
৭- মানুষকে ন্যায় ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করতে হবে। "নিশ্চয় আমি আমার রাসূলদেরকে স্পষ্ট প্রমাণাদিসহ পাঠিয়েছি এবং তাদের সাথে কিতাব ও (ন্যায়ের) মানদন্ড নাযিল করেছি, যাতে মানুষ সুবিচার প্রতিষ্ঠা করে।" [হাদিদ, ২৫]
৮- মহান আল্লাহ সুবিচারকারীদের ভালোবাসেন। "তাদের মধ্যে ইনসাফের সঙ্গে ফয়সালা কর আর সুবিচার কর; আল্লাহ সুবিচারকারীদেরকে ভালোবাসেন।" [হুজুরাত, ৯]
আল্লাহ কিভাবে ন্যায় বিচার করেন
youtube
আল্লাহ তায়ালার দয়া এবং বিচার।
youtube
যেভাবে আল্লাহ হাশরের মাঠে বিচার করবেন |
youtube
হাশরের মাঠে আল্লাহর উপস্থিতিতে কীভাবে বিচার শুরু হবে? |
youtube
বিচার দিবসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
youtube
নিশ্চয়ই আল্লাহ আহকামিল হাকিমীন, তিনি শ্রেষ্ঠতম বিচারক
Surely Allah is Ahkamil Hakimeen, He is the best judge
ইসলামের দৃষ্টিতে বিচারক ও বিচারব্যবস্থা
Judges and judiciary in the Sight of Islam
#ইসলামের দৃষ্টিতে বিচারক ও বিচারব্যবস্থা#Judges and judiciary in the Sight of Islam#ন্যায়বিচার#justice#আল্লাহর বিচার চিরন্তন#Allah's Judgment is Eternal#আল্লাহরবিচারচিরন্তন#Allah'sJudgmentisEternal#বিচারক#বিচারব্যবস্থা#Judge#Judiciary#Justice#Youtube
0 notes
Text
নিশ্চয়ই আল্লাহ আহকামিল হাকিমীন, তিনি শ্রেষ্ঠতম বিচারক
Surely Allah is Ahkamil Hakimeen, He is the best judge
আল্লাহর বিচার চিরন্তন।
আপনি মানুষের উপর জুলুম করছেন, জমি কেড়ে নিচ্ছেন, মিথ্যা সাক্ষী দিচ্ছেন, খুন করছেন হয়তো সমাজের মাতবরীর জন্য অথবা কিছু জমা-জমি, টাকা-পয়সার জন্য, বা রাজনৈতিক ক্ষমতার জন্য কিন্তু আপনি কি করছেন? আপনি কয়দিন এ ক্ষমতা ভোগ করবেন?
"আল্লাহ কি বিচারকদের মধ্যে শ্রেষ্টতম বিচারক নন?" -- [সূরা আত-ত্বীন, আয়াত ৮,
তিনি, যিনি এই বিশ্বজগতের প্রতিপালক, পালনকর্তা। যিনি সমস্ত জ্ঞানের মালিক, তিনি প্রশ্ন করছেন আমাদের রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে) এবং প্রশ্নটি আমাদের সবার জন্যই... যিনি সবকিছুই জানেন, আহকামিল হাকিমীন নিজেই যখন প্রশ্ন ছুঁড়ে দিচ্ছেন, তখন কি আমাদেরকে আরেকটু ঝাঁকি দিয়ে উপলব্ধি করিয়ে দেয়ার জন্যই নয়? আমরা কি সন্দিগ্ধ হয়ে পড়েছি শ্রেষ্ঠ বিচারকের ব্যাপারে? আমরা কি ভেবে বসছি দুনিয়ার শাসন, ক্ষমতা, শক্তি যদি ভুল হয় এবং আমরা ভুলে কাউক জুলুম করে বসি, তাহলে প্রতিফল পাবো না? আহকামিল হাকিমীন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা আমাদের দুনিয়ার সকল বিচারকের চেয়ে শ্রেষ্ঠ বিচারক। সবার সবকিছুর পরে তার আদালত, তিনি আমাদের পইপই করে দেখিয়ে দেবেন সূক্ষ্ম থেকে সূক্ষ্মতর বিষয়গুলো। সেদিন কেউ পুরষ্কার থেকে বঞ্চিত হবে না; সেদিন অবশ্যই অত্যাচারী, মিথ্যাচারী, যালিম, কাফির, মুশরিকরা তাদের উপযুক্ত শান্তি পাবে পুরষ্কার। নিশ্চয়ই আল্লাহ 'আহকামিল হাকিমীন', তিনি শ্রেষ্ঠ বিচারক; তার বিচার নিপুণ, নিখুঁত, সূক্ষ্ম।
ন্যায়বিচার সম্পর্কে কুরআনের ৮টি আয়াত
পবিত্র কুরআনের দৃষ্টিতে আল্লাহর সকল সৃষ্টি ন্যায়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত এবং সেখানে অন্যায়, অবিচার ও জুলুমের কোনো স্থান নেই। এমনকি পার্থিব জগতে নবী-রাসূলগণের আবির্ভাবের তিনটি উদ্দেশ্যেরও অন্যতম ছিল ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা। ন্যায়বিচারের মানদণ্ডে প্রতিটি জিনিসকে তার প্রকৃত জায়গায় স্থান দিতে হবে এবং যার যে অধিকার তা তাকে সঠিকভাবে বুঝিয়ে দিতে হবে।
ন্যায়বিচার হচ্ছে এমন একটি মৌলিক পরিভাষা যা পবিত্র কুরআনের বহু স্থানে নানা ধরনের উদাহরণ, অলঙ্কার ও সত্য ঘটনার আকারে খুলে খুলে বর্ণনা করা হয়েছে। সেইসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাদেরকে বারবার ন্যায়বিচারের ওপর অটল ও অবিচল থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
ন্যায় ও ন্যায়বিচারের গুরুত্ব উপলব্ধি করার সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে মহাগ্রন্থ আল-কুরআনে বর্ণিত এ সংক্রান্ত আয়াতগুলো বোঝার চেষ্টা করা। পবিত্র কুরআনের এরকম ৮টি আয়াত তুলে ধরব যেখানে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ন্যায় ও ন্যায়বিচারের প্রসঙ্গ বর্ণিত হয়েছে:
১- আল্লাহর সকল কাজ ন্যায়বিচারের ওপর প্রতিষ্ঠিত।"আল্লাহ সাক্ষ্য দেন যে, তিনি ছাড়া অন্য কোনো মাবুদ নেই, ফেরেশতাগণ ও জ্ঞানী ব্যক্তিগণও (এই একই বিষয়ে) সাক্ষ্য প্রদান করেন যে, [আল্লাহর সকল কাজ] ন্যায়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত এবং মহাপরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময় আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন (সত্য) উপাস্য নেই।" [আলে-ইমরান, ১৮]
২- আল্লাহ তায়ালা বিন্দু পরিমাণ জুলুম বা অন্যায় করেন না।
"নিশ্চয়ই আল্লাহ অণু পরিমাণও অত্যাচার বা অন্যায় করেন না [তাঁর প্রতিটি কাজ ন্যায়ভিত্তিক] এবং যদি কেউ [ওই অণু পরিমাণ] সৎ কাজ করে তাহলে তিনি তা দ্বিগুণ করে দেন এবং স্বীয় পক্ষ হতে ওর মহান প্রতিদান প্রদান করেন।" [নিসা, ৪০]
৩- মানুষের মাঝে ন্যায়ভিত্তিক বিচার করুন। "নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন যে, আমানত তার মালিককে প্রত্যর্পণ করবে। আর যখন তোমরা মানুষের মধ্যে বিচার-কার্য পরিচালনা করবে, তখন ন্যায়পরায়ণতার সাথে বিচার করবে। আল্লাহ তোমাদেরকে যে উপদেশ দেন, তা কত উৎকৃষ্ট! নিশ্চয় আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।" [নিসা, ৫৮]
৪- অপরের সঙ্গে শত্রুতার কারণে অন্যায় করো না। "হে মুমিনগণ! আল্লাহর উদ্দেশ্যে ন্যায় সাক্ষাদানে তোমরা অবিচল থাকবে কোন সম্প্রদায়ের প্রতি শক্ৰতা তোমাদেরকে যেন সুবিচার বুর্জনে প্ররোচিত না করে। তোমরা সুবিচার করবে, এটা তাকওয়ার অধিকতর নিকটবর্তী। আর তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর। নিশ্চয় তোমরা যা কর, আল্লাহ সে বিষয়ে সম্যক অবহিত।" [মায়েদা, ৮]
৫- মহান আল্লাহ এমনকি জালিমদের প্রতিও জুলুম করেন না।
"আর যমীনে যা রয়েছে, তা যদি প্রত্যেক যুলুমকারী ব্যক্তির হয়ে যায়, তবে সে মুক্তির বিনিময়ে সেসব দিয়ে দেবে এবং অনুতাপ গোপন করবে যখন তারা শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে। আর তাদের মীমাংসা ন্যায়ভিত্তিক করা হবে এবং তাদের প্রতি যুলুম করা হবে না।" [ইউনূস, ৫৪]
৬- মানুষের অধিকার প্রদান করার ক্ষেত্রে অন্যায় করো না। "হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা ন্যায়সঙ্গতভাবে মাপো ও ওজন করো, লোকদেরকে তাদের প্রাপ্য বস্তু কম দিও না এবং যমীনে বিপর্যয় সৃষ্টি করে বেড়িও না।" [হুদ, ৮৫]
৭- মানুষকে ন্যায় ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করতে হবে। "নিশ্চয় আমি আমার রাসূলদেরকে স্পষ্ট প্রমাণাদিসহ পাঠিয়েছি এবং তাদের সাথে কিতাব ও (ন্যায়ের) মানদন্ড নাযিল করেছি, যাতে মানুষ সুবিচার প্রতিষ্ঠা করে।" [হাদিদ, ২৫]
৮- মহান আল্লাহ সুবিচারকারীদের ভালোবাসেন। "তাদের মধ্যে ইনসাফের সঙ্গে ফয়সালা কর আর সুবিচার কর; আল্লাহ সুবিচারকারীদেরকে ভালোবাসেন।" [হুজুরাত, ৯]
আল্লাহ কিভাবে ন্যায় বিচার করেন
youtube
আল্লাহ তায়ালার দয়া এবং বিচার।
youtube
যেভাবে আল্লাহ হাশরের মাঠে বিচার করবেন |
youtube
হাশরের মাঠে আল্লাহর উপস্থিতিতে কীভাবে বিচার শুরু হবে? |
youtube
বিচার দিবসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
youtube
নিশ্চয়ই আল্লাহ আহকামিল হাকিমীন, তিনি শ্রেষ্ঠতম বিচারক
Surely Allah is Ahkamil Hakimeen, He is the best judge
ইসলামের দৃষ্টিতে বিচারক ও বিচারব্যবস্থা
Judges and judiciary in the Sight of Islam
ইসলামের দৃষ্টিতে বিচারক ও বিচারব্যবস্থা
#Judges and judiciary in the Sight of Islam#ন্যায়বিচার#justice#আল্লাহর বিচার চিরন্তন#Allah's Judgment is Eternal#আল্লাহরবিচারচিরন্তন#Allah'sJudgmentisEternal#বিচারক#বিচারব্যবস্থা#Judge#Judiciary#Justice#বিচারক ও বিচারব্যবস্থা#Youtube
0 notes
Text
জিয়াউল হক-এর নতুন বই- ‘মুসলিম উম্মাহর পতন; উত্তরণের পথ’ থেকে…
একদিন আলি (রা.) কুফার একটি মসজিদে দাঁড়িয়ে ভাষণ দিচ্ছেন। এমন সময় মসজিদের এক কোনায় ‘লা হুকমা ইল্লা লিল্লাহ’ বা ‘আল্লাহর হুকুম ছাড়া আরও হুকুম মানি না’ স্লোগানে একটা হট্টগোল শুরু হয়। মুয়াবিয়া (রা.)-এর সাথে বিরোধের নিষ্পত্তিকল্পে গঠিত সালিশি কমিটির দিকে ইঙ্গিত করে তারা আলি (রা.)-কে উদ্দেশ্য করে বলে, আপনি বিচারব্যবস্থা মানুষের হাতে তুলে দিয়েছেন! অথচ বিচারের মালিক হচ্ছেন আল্লাহ। তারা নিজেদের দাবির সপক্ষে সূরা আনআমের ৫৭ নং আয়াত— ‘আল্লাহ ব্যতীত কারও ফয়সালা গ্রহণযোগ্য নয়’-এর উদ্ধৃতি তুলে দাবি করে, আলি (রা.) আল্লাহর হুকুম ভঙ্গ করেছেন। আর আল্লাহর বিধানের প্রতি অ��জ্ঞা প্রদর্শনের কারণে আলি (রা.) মুশরিক (!) হয়ে গেছেন! যেহেতু কাফিরের আনুগত্য করা জায়েজ নেই, তাই যে বা যারা আলি (রা.)-কে কাফির মানবে না, সে-ই কাফির হয়ে যাবে। এই হিসেবে সকল সাহাবি কাফির ও মুরতাদ হয়ে গেছে! ইতিহাসে এরা খারেজি হিসেবে পরিচিত। খারেজি শব্দের অর্থ বের হয়ে যাওয়া বা বহিষ্কৃত। এরাই সর্বপ্রথম একটি বৈধ খিলাফত অস্বীকার করে মুসলিম উম্মাহর মূল অংশ থেকে বের হয়ে মদিনার অদূরে হারুরা প্রান্তরে আলাদা বসতি স্থাপন করে। একটি ইসলামি রাষ্ট্রের ভেতর সূচনা করে স্বতন্ত্র সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথ। এই উগ্র দলটি প্রকাশ্যে এসেছিল আলী (রা.) ও মুয়াবিয়া (রা.)-এর মধ্যে রাজনৈতিক ও সামরিক সমঝোতার জন্য সালিশকে কেন্দ্র করে। সালিশের ফয়সালা পছন্দ না হওয়ায় আলি (রা.)-এর দল থেকে কয়েক হাজার সৈন্য বিদ্রোহ করে দল ত্যাগ করেছিল। তাদের অভিযোগ— খলিফা আলি (রা.) কাফির (!) হয়ে গেছেন! তাঁর ঈমান চলে গেছে। কেননা, তিনি সূরা হুজুরাতের ৯ নং আয়াতের নির্দেশনাটি মানেননি। সেই আয়াতে বলা আছে—‘মুমিনদের দুই দল যু- দ্ধে লিপ্ত হলে তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দাও। অতঃপর তাদের একদল যদি সীমালঙ্ঘন করে, তবে সীমালঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে যু- দ্ধ করো; যতক্ষণ না তারা আল্লাহর নির্দেশের দিকে ফিরে না আসে।’ মুয়াবিয়া (রা.)-এর দল যেহেতু সীমালঙ্ঘনকারী, তাই তারা আত্মসমর্পণ না করা পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে যু- দ্ধ চালিয়ে যেতে হবে। কিন্তু আলি (রা.) তা না করে মুয়াবিয়া (রা.)-এর সাথে সন্ধি করার মাধ্যমে সূরা হুজুরাতের উক্ত আয়াতটির স্পষ্ট লঙ্ঘন করেছেন। ফলে তিনি কাফির (!) হয়ে গেছেন। খারিজিদের উগ্রতার সীমা ছাড়িয়ে গেলে সকল সচেতন মহল থেকেই তাদের সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা শুরু হয়। এ লক্ষ্যে খলিফা আলি (রা.) খারিজিদের নিকট পাঠান আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.)-কে। তাঁর এই প্রচেষ্টা একেবারে বিফলে যায়নি। দীর্ঘ আলোচনার পর খারেজিদের একটা অংশ সঠিক পথে ফ���রে আসে। তবে অধিকাংশ পথভ্রষ্টই থেকে যায়। | এরা প্রায় সকলেই ছিল কট্টরপন্থি, অত্যন্ত উগ্র মতাবলম্বী। আলি (রা.)-এর প্রতি অনুগত এবং তাঁর খিলাফতের অধীনে থাকা সকল মুসলিমকে তারা কাফির বলে মনে করত। এই সূত্র ধরেই তারা প্রখ্যাত সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে খাব্বাব (রা.)-কে সপরিবারে হ+/ত্যা করে। সম্মানিত এই সাহাবির অপরাধ কেবল এতটুকুই ছিল, তিনি আলি ও মুয়াবিয়া (রা.)-সহ এই রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে জড়িত পক্ষ-বিপক্ষের সাহাবি��ের কাফির মনে করতেন না। শুধু এ কারণেই তারা ইবনে খাব্বাব (রা.)-কে নদীর পার নিয়ে গিয়ে জবাই করে। শুধু তাই নয় তাঁর সন্তানসম্ভবা স্ত্রীর পেট চিরে তাঁকেও নৃশংসভাবে হ+/ত্যা করে! খলিফা আলি (রা.) নৃশংস ও বর্বর এই হ+/ত্যাকাণ্ডের তদন্ত শুরু করলে হ+/ত্যাকারীরা অত্যন্ত দম্ভভরে এ হ+/ত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে প্রকাশ্যে ঘোষণা দেয়, এই কাফিরকে (!) তারাই হ+/ত্যা করেছে।
#islamicpost#islamicknowledge#read#islamiccenter#deen#bukuislami#islamicbookshop#islamicart#booklover#islamicgifts
0 notes
Text
আদর্শ পরিবর্তন ও মৌলিক অধিকার।
আদর্শ পরিবর্তন ও মৌলিক অধিকার।
সময়ের সাথে সাথে মানুষের মৌলিক অধিকারগুলোতেও কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন আসে, যা সকল সভ্য সমাজ ও রাষ্ট্র কর্তৃক অতীপ্রাচীণকাল হতেই স্বীকৃত। স্বাধীন বিচারব্যবস্থা ও শক্তিশালী গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানসমূহ নাগরিক অধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সর্বোত্তম রক্ষাকবচ। সংবিধানের চতুর্থ পরিচ্ছেদের ১০২ অনুচ্ছেদ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগকে মৌলিক অধিকার বলবৎ করার এখতিয়ার দিয়েছে। বাংলাদেশের সংবিধান অনুসারে প্রত্যেক…
View On WordPress
0 notes
Text
অসহায় আদালত: বিষয় এনআরসি
মহসিন আলম ভাট বাংলা অনুবাদ প্রচেষ্টা: শামীম আহমেদ লস্কর প্রথম পর্ব নাঃ এবার আমাদের স্বীকার করতেই হবে। ঘরবাড়ি বন্ধক দিয়ে, জমিজিরেত বিক্রি করে ৩০ লাখ মানুষের আদালত থেকে ট্রাইবুন্যালে মাসের পর মাস যে অমানুষিক দৌড়ঝাঁপ, কায়িক ও মানসিক ক্লেশের পরও বিদেশী তকমা জোটার ভীতি থেকে রেহাই নেই। ন্যাশনাল রেজিস্টার অব সিটিজেনস (এনআরসি) এবং যে শীর্ষ আদালতের উদ্যোগে তা চলছে সেটি এবার সাংঘাতিক বিপর্যয়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। প্রায় ১ লক্ষ মানুষকে রাষ্ট্রহীন করার মুখে দাঁড় করিয়ে রেখে এই নাগরিকপঞ্জী নবায়ন কোনও নতুন খাতে বইছে না। শীর্ষ আদালতও কোনওমতে নিজেকে রাজনৈতিকভাবে বহুদাবিভক্ত এবং আইনত অস্বস্তিকর এক অবস্থানে দাঁড় করিয়েছে। আমরা ভেবেছিলাম এই এনআরসি কয়েক দশকের ভাতৃঘাতী বিভাজন, অভিবাসন এবং অনুপ্রবেশ বিবাদের সমাপ্তি ঘটাবে। কিন্তু তা না হয়ে সেটি বিপথগামী—অসমের সীমানা ছাড়িয়ে অন্যান্য রাজ্যেও ধর্মীয় এবং জাতিতত্ত্বমূলক মেরুকরণ ঘটাচ্ছে। দুহাজার আঠারোর ৩০ শে জুলাই প্রকাশিত নাগরিকপঞ্জির নবায়িত খসড়ায় নাম বাদ পড়েছে চল্লিশ লক্ষ মানুষের। তখন থেকেই শীর্ষ আদালতকে বারবার এই প্রক্রিয়ার ব্যাপ্তি বুঝেশুনে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে হয়েছে যার ফলে দাবী এবং আপত্তি জানানোর সময়সীমা বেশ ক’বার বাড়ানো হয়। দ্বিতীয় দফার শেষদিকে ১৫ই ডিসেম্বর ২০১৮তে পনের লাখেরও কম মানুষ নতুন দাবী দায়ের করাতে সক্ষম হন, বাদবাকি ২৫ লক্ষ রয়ে গেলেন রাষ্ট্রহীন ঘোষিত হবার অপেক্ষায়। এমনকী এমনকি ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৮-র তৃতীয় দফায়ও দাবী জানানোর প্রক্রিয়াটি যথেষ্টভাবে কার্যকর হয়নি। পত্রপত্রিকার প্রকাশিত প্র��িবেদন অনুযায়ী ১০ লাখেরও বেশী মানুষ ফাইল ক্লেইম করতে ব্যর্থ হয়েছেন। কারণখানা ক্রমশই স্পষ্ট হয়ে উঠছে। ডিসেম্বর ২০১৮য় অসম সরকার আদালতে স্বীকার করে যে যেসব মানুষ ক্লেইম প্রক্রিয়ায় অংশ নেননি তারা অশিক্ষিত এবং দরিদ্র তাই ফর্ম ফিল-আপ করতে পারেননি, তাদের হয়ত বিষয়টি জটিল লেগেছে। গরীব সম্প্রদায়ভুক্ত জনগণের ক্ষেত্রে শুরুতেই তো কোনও পরিচয়পত্র থাকার সম্ভাবনা প্রায় নেই-র কোঠায়, সেখানে খুঁজেপেতে বের করে যোগাড় করাটাই একটি কঠিন কর্ম। বিষয়টিকে আরও গোলমেলে করে তুলতে আইনি প্রক্রিয়াও শেষমেষ বাড়িয়ে তোলে আমলাতান্ত্রিক দূর্বোধ্যতা। জনগণ তাদের নাগরিকত্ব প্রমাণে কোন কোন নথি জমা দিতে পারবেন, এই বিষয়টি আদালত নিয়মিত পর্যালোচনা করেছে । কিন্তু এই আদালত নির্ধারিত নথিমালা ছিল খুবই বিতর্কিত, যাতে ব্যাপকহারে ভোগান্তি, আতঙ্ক এবং যন্ত্রণায় শিকার হয়েছেন বহু মানুষ। নব্য দেশভক্তির এই যুগে সরকারের কাজকর্মের প্রতি প্রবল আশাবাদ এবং শর্তহীন সমর্থন রাখাটাই চলতি রীতি। সেই রীতি অনুযায়ী আমরা বলতেই পারি এনআরসি প্রক্রিয়ার মতো প্রকান্ড মাপের রাজসূয় যজ্ঞে এমনটা হবারই ছিল। সামান্য পরিমাণে আইনি অনিশ্চিয়তা এবং কার্যকারিতার অভাব সেখানে থাকবেই। হয়ত আমাদের বলা হয়েছিল বিষয়টি আদালতের দেখাশোনায় থাকবে এ ব্যাপার সুনিশ্চিত। এবং আদালতের সুপারভিশন বহাল রইবে। কিন্ত আইনি প্রক্রিয়ায় আমাদের এই স্বআরোপিত বিশ্বাস ছিল ভুল এবং তা আদালত-পরিচালিত প্রক্রিয়াটির গভীর বৈপরীত্যগুলোকে এড়িয়ে যায়। বিচার বিভাগীয় তত্ত্বাবধানের আপাতবিরোধীতার ভিত্তি: শীর্ষ আদালত ২০১৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর অসম সম্মিলিত মহাসংঘ বনাম ইউনিয়ন অব ইন্ডিয়া মামলাটিতে দেওয়া নির্দেশ অনুযায়ী এনআরসি নবায়নের কাজ শুরু করে। মহাসংঘ নাগরিকত্ব আইনের অনুচ্ছেদ 6A কে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিল যা কিনা রাজ্যে নাগরিকত্বের জন্য আলাদা-আলাদা নিয়ম প্রদান করার মাধ্যমে অসম চুক্তিকে কার্যকর করার জন্য প্রণয়ন করা হয়েছিল। প্রভিশন অনুসারে, অন্যান্য রাজ্যের বিপরীতে, ২৫ মার্চ, ১৯৭১ সালের আগে অসমে অভিবাসনকারী ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা ভারতীয় নাগরিক হিসাবে বা নাগরিকত্ব প্রাপ্তির যোগ্যতা অর্জন করতে পারেন। নিজেদের পিটিশনে মহাসংঘ যুক্তি দেখায় যে ওই প্রভিশন বাংলাদেশ থেকে ব্যাপকহারে অবৈধ অভিবাসীদের অনুপ্রবেশে উৎসাহ দেওয়ার মাধ্যমে এ রাজ্যের নাগরিকদের ‘জীবনের অধিকার’কে লঙ্ঘন করছে। এতে এটাও বলা হয় নির্দিষ্ট শাসকদল তাদের সংবিধান-সুনিশ্চিত সাংস্কৃতিক অধিকারকে খর্ব করছে। বিচারপতি জাস্টিস গগৈ (এখনকার মুখ্য ন্যায়াধীশ) এবং জাস্টিস নরিম্যানের অধীনে বিচারপতিদের এক সহানুভূতিশীল বেঞ্চ সুপারিশ করেন যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য বিষয়টিকে একটি বৃহত্তর সাংবিধানিক বেঞ্চে পাঠান হোক। এরকম করতে গিয়ে ওই বেঞ্চ অনুচ্ছেদ 6A-র সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে গভীর প্রশ্ন তোলে। কিন্তু ওই একই নির্দেশনামাতেই বেঞ্চ এনআরসি নবায়নে তদারকি শুরুর সিদ্ধান্ত নেয়: এক আদালত নির্ধারিত ক্যালেন্ডারে এবং অনুচ্ছেদ 6A তে উল্লিখিত আবশ্যিকতারগুলোর ভিত্তিতে। কী আশ্চর্য! শীর্ষ আদালত দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বিরাটমাপের বিচারব্যবস্থা-নেতৃত্বাধীন এক আমলাতান্ত্রিক মহাপ্রক্রিয়া শুরু করেছে এমনসব নিয়মের ভিত্তিতে যার আইনি বৈধতাও এ অবধি নির্ধারিত হয়নি! এনআরসি নিয়ে চলতি আলোচনায় পুরোপুরিভাবে উপেক্ষিত মনে হওয়া এই আপাতবিরোধিতা, বিচারবিভাগীয় প্রক্রিয়ার কিছু বেশ অস্বস্তিকর জিজ্ঞাসার জন্ম দেয়। অনুচ্ছেদ 6A-র চূড়ান্ত আইনি মূল্যায়ন করার জন্য শীর্ষ আদালতের পক্ষে অপেক্ষা করাটাই কি বেশি বিবেচ্য ছিল না? ভবিষ্যতে আদালতের কোনও বিষয় নিয়ে সাংবিধানিক বেঞ্চকে রেফার করাও কি অনাবশ্যক করে দিল এই এনআরসি? অথবা আদালত কি অবশেষে এটা শুনছে যে ওই সাংবিধানিক বেঞ্চ অনুযায়ী এনআরসি প্রক্রিয়া কি খুব ত্রুটিপূর্ণ? অলীক-অবাস্তব সংখ্যামালা: অস্বস্তিকর স্ববিরোধগুলি এখানেই শেষ হচ্ছে না। এনআরসি নবায়নের আগে এবং পরে অসমে অভিবাসন বিতর্কে শীর্ষ আদালতের জড়িত হওয়া বিষয়টি উদ্বেগ এবং অনথিভুক্ত বাংলাদেশী অভিবাসীদের সংখ্যা নিয়ে অযৌক্তিক ভীতির ভিত্তিতে হয়ে এসেছে। তিনজন বিচারক বিশিষ্ট বেঞ্চের হয়ে লিখতে গিয়ে বিচারপতি জিপি মাথুর ২০০৫ সালের সর্বানন্দ সনোয়াল মামলার রায়ে ‘আইএমডিটি' (ইললিগাল মাইগ্র্যান্টস ডিটারমিনেশন বাই ট্রাইবুনাল) অ্যাক্টের অংশবিশেষ বেআইনি বলে খারিজ করে দেন, ‘অসমে নিঃশব্দ, এবং বৈরিতা সৃষ্টিকারী জনতাত্ত্বিক আক্রমণ’ এই ভিত্তিতে নাগরিকত্ব প্রমাণের দায়ভার রাষ্ট্রের হাত থেকে নিয়ে বর্তান ব্যক্তির উপরে। ওই বেঞ্চ সরকারের দায়ের করা বিভিন্ন হলফনামা গ্রহণ করে নামমাত্র গুরুত্ব দিয়ে। আদালত জানায় যে, ‘বৃহৎ মাপের এই অবৈধ অভিবাসন’ শুধুমাত্র অনুপ্রবেশই নয়, একধরণের ‘বাহ্যিক আগ্রাসন’ও যা ‘অভ্যন্তরীণ অশান্তি’-র দিকে নিয়ে যায়। ‘ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক ইসলামিক মৌলবাদ’ এবং আঞ্চলিক উত্তরাধিকার নিয়ে ভয় প্রকাশ করে আদালত। এগুলো নেহাৎই বাগাড়ম্বরতা ছিল না। ‘বিপদজনক’ অনথিভুক্ত অভিবাসনের ব্যাপ্তি এবং পরিমাণ ছিল ওই মামলার এক আইনি ভিত্তি। বিচারপতি মাথুরের জানান, আইএমডিটি অ্যাক্টের ফলে যে বিদেশীদের সনাক্ত করা হয় তা দাবীকৃত প্রকৃত বিদেশীদের সংখ্যার চেয়ে অনেক কম এবং কেন্দ্রীয় সরকার অনুচ্ছেদ ৩৫৫ তে নির্দেশিত বাহ্যিক আক্রমণ এবং অভ্যন্তরীণ ব্যাঘাত থেকে তার নাগরিকদের রক্ষা করার সংসদীয় দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হচ্ছে। কিন্তু আইএমডিটি অ্যাক্ট যে যথেষ্ট নয়, এর প্রমাণ কী ছিল? বিচারপতি মাথুর যদিও স্বীকার করেছিলেন আসামের অনথিভুক্ত বাংলাদেশি অভিবাসীদের সম্পূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হবে না, আদালত সংসদে দায়ের করা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এক বিবৃতির উপর নির্ভর করে, যে নথি অনথিভুক্ত বাংলাদেশি অভিবাসীদের সংখ্যা ৫০ লক্ষ হতে পারে বলে নির্দেশ করে। অসমের জনসংখ্যার প্রায় এক-পঞ্চমাংশের এই নাটকীয় সংখ্যামালা মনে হয় আদালতকে বিশ্বাস যোগায় যে আইএমডিটি আইনের অধীনে মাত্র ১০,০১৫ জন ব্যক্তির সনাক্তকরণ হওয়া সম্পূর্ণভাবেই অপর্যাপ্ত। মহাসংঘের মামলায় বিচারপতি নরিমান ঠিকই এই বিষয়ে নির্ভর করে সুনিশ্চিত হলেন যে রাজনৈতিক শাখাগুলো অনথিভুক্ত অভিবাসন মোকাবিলায় ‘মূল্যবান যতসামান্য’ই কাজ করছে, আদালতের সক্রিয় ভূমিকা চেয়ে। (…political branches were doing “precious little” to deal with undocumented immigration, necessitating an active role for the courts…) কিন্তু সমস্যা হল এসবের কিছুই নিয়ে কোনও তথ্য ছিল না। আরটিআই করে জানা তথ্যভিত্তিক এক সাম্প্রতিক প্রবন্ধে দেখা যাচ্ছে ২০০৪ সালে বিবৃতি দেওয়ার পরই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক একটি স্পষ্টীকরণ জানায় যে ওই সংখ্যা ‘কোনও পরিসংখ্যান বা গবেষণা ভিত্তিক নয়’ এবং আরও মন্দ খবর ‘লোকের মুখে শোনা এবং তাও আগ্রহী পক্ষের’। স্পষ্টীকরণে বলা হয়েছে, “অসমের অবৈধ বাংলাদেশী অভিবাসীদের কোনও বাস্তবসম্মত পরিসংখ্যান দেওয়া সম্ভব নয়”।এই ত্রুটিপূর্ণ সংখ্যামালা অভিবাসন সমস্যাকে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে বিপদজনক করে দেখিয়েছে। এনআরসি নবায়নের সময় এগুলোই প্রক্রিয়াটির সাফল্যের মানদন্ড হয়ে ওঠে। অসমের অনেকের কাছে, এমনকী এই ৪০ লক্ষও অনেক কম। সকলেই এবার ওই অলীক-অবাস্তব সংখ্যামালার পেছনে ছুটছে। (চলবে) মূল লেখা: https://thewire.in/law/nrc-supreme-court-crisis
1 note
·
View note
Text
বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতা
“For the judiciary to apply checks on governmental power and action, it has to have complete freedom. The judiciary cannot be controlled, directly or indirectly, by the legislature or the executive, or else the rule of law would become illusory.”N.V Ramana. Chief Justice Supreme Court of India. না, ভারতের সুপ্রীম কোর্টের প্রধান বিচারপতি নতুন কোন কথা বলেন নি। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের বিচারব্যবস্থা…
View On WordPress
0 notes
Photo
বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা দেখে অবাক হওয়ার মত অবস্থা এক যুগ পরে তাও সঠিক বিচার করতে পারল না,নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে দলবদ্ধ ধর্ষণের পর এক নারী ও তার স্বামীকে হত্যার ঘটনায় ছয় আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার (৬ জুন) নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক নাজমুল হক শ্যামল এ রায় ঘোষণা দেন। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- সুমন, লোকমান, শফিক, সুমন-২, আরিফুল ও জামাল। আসামিদের মধ্যে পলাতক আছেন সুমন, লোকমান ও শফিক। মামলার বরাত দিয়ে নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান জানান, ২০০৯ সালের ১১ আগস্ট রাতে রূপগঞ্জের দেবই গ্রামে খাদিজা নামের নারী ও তার স্বামী আবদুর রহমানকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে যায় আসামিরা। তারা স্বামীকে বেঁধে খাদিজাকে দলবেঁধে ধর্ষণ করেন। https://www.instagram.com/p/Cee5pnUPzLW/?igshid=NGJjMDIxMWI=
0 notes
Text
প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইন সংবাদপত্রের বিকাশ সংকুচিত করবে: নোয়াব
প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইন সংবাদপত্রের বিকাশ সংকুচিত করবে: নোয়াব
প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইন প্রচলিত বিচারব্যবস্থা, শিল্প আইন ও বাংলাদেশ শ্রম আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মনে করে দৈনিক সংবাদপত্রের মালিকদের সংগঠন নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব)। সংগঠনটি বলেছে, এই আইন পাস হলে স্বাধীন সাং���াদিকতা এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বাধাগ্রস্তসহ সংবাদপত্রের বিকাশ সংকুচিত হবে। আজ রোববার নোয়াবের সভাপতি এ কে আজাদ ও সহসভাপতি এ এস এম শহীদুল্লাহ খানের সই করা এক…
View On WordPress
0 notes
Text
এলাহাবাদ হাইকোর্টের এক বিচারপতি শেখার কুমার যাদব বলেছে গরুকে জাতীয় পশু করা হোক, তালিবান তো আফগানিস্তান দখল করেছে।
এরপর তো বিদেশীরা বলবে, আমাদের মত ভারতীয়দের গরুর মতই বুদ্ধি, যে ইচ্ছে মেরে যাবে..আমরা কিছু করব না! ভেতরে গিয়ে মারব না! তাছাড়া তালিবানরা তো গরুকে লাগায়। 🤔 এটাই প্রমাণ করে আমাদের ভারতীয় বিচারব্যবস্থা কতটা পক্ষপাতদুষ্ট, আগের দিন সুপ্রিম কোর্টের এক প্রাক্তন বিচারপতি আরএসএস প্রধানের সঙ্গে দেখা করে সুবিধাবাদী রাজনীতি করে নির্বাচনে জেতার পরিকল্পনা করে এলেন। যাদবীয় বুদ্ধি যেরম হয় আরকি। আমি শুধু ভাবছি, আমরা বাঘের দেশ থেকে গরুর লেভেলে নেমে এলাম কিভাবে? 🤔
An Allahabad HC Judge shekhar kumar yadav says, Cow should be the national animal, taliban have taken afghanistan.
Now foreigners will joke about us indians that our intelligence is the same level as a Cow, whoever want will beat us.. we won't do anything! We won't go in and retaliate! Other than that taliban sticks in cow anyways. 🤔 This proves how biased our Indian Court Justice System is, last day i heard that a former SC Judge also met with rss leadership to make plans to win elections using opportunist politics. this is jadavic intelligence level. The only thing i'm concerned now is, how we came down to the level of cow from a tiger country? #AllahabadHC #shekharkumaryadav #cow #taliban #india #afghanistan #tiger #nationalanimal #court #Justice #Science #Intelligence #Democracy #Freedom #religionpoison
0 notes
Photo
New Post has been published on https://paathok.news/88852
বিচার বিভাগে যা হচ্ছে তা অরাজকতা
.
সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ও আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির প্রশ্নে আইনজীবীদের ভূমিকা রাখার সময় এসেছে। আইনের শাসন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষার্থে আইন পেশায় সংশ্লিষ্টদেরই এগিয়ে আসতে হবে। দেশে বিচার বিভাগে যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে, তাকে অরাজকতা বলা যেতে পারে। তারা বলেন, আইনজীবীরা যদি ঐক্যবদ্ধভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলা না করতে পারেন, তবে সামনে বিপর্যয় অপেক্ষা করছে। বেগম খালেদা জিয়াকে সরকারের ইশারায় অন্যায়ভাবে কারাবন্দী করে রাখা হয়েছে। আইন তার নিজস্ব গতিতে চললে তিনি অবশ্যই মুক্তি পাবেন।
সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান প্রবীণ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছেন, বর্তমানে দেশের আইন অঙ্গনে একটি অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আমি মনে করি দলমত নির্বিশেষে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করার জন্য আইনজীবীরা যদি ঐক্যবদ্ধ হন তা হলে বিচারাঙ্গনে যে অবিচারমূলক কর্মকাণ্ড হয়, তা থেকে মুক্ত হওয়া সম্ভব।
তিনি বলেন, আমার দুর্ভাগ্য আমরা দলীয় রাজনীতিতে এমনভাবে আটকে গিয়েছি, যার ফলে দলীয় বিবেচনার ঊর্ধ্বে উঠে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য ভূমিকা রাখতে পারছি না। আমি মনে করি বিচার বিভাগ আমাকে অবিচারের হাত থেকে মুক্ত করার জন্য এবং দেশের মানুষ যাতে দলমত নির্বিশেষে ন্যায়বিচার পান তার জন্য আইনজীবীদের এখানে ভূমিকা রাখার সময় এসেছে।
তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের প্রতি একটি জামিনযোগ্য মামলায় যেখানে তাকে মহানগর দায়রা জজ জামিন দিয়েছেন, সেই ক্ষেত্রে এবং সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ আগাম জামিনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট গাইড লাইন দিয়েছেন। তার পরও তার মতো একজন সিনিয়র আইনজীবী এবং সমাজের একজন স্বনামধন্য ব্যক্তির জামিন বাতিল করে সিএমএম আদালত শুধু বেআইনি কাজ করেননি, আইনের শাসনের প্রতি চরম অবজ্ঞা প্রকাশ করেছেন। আইনজীবীরা এ বিষয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদ করেছেন। এটি আমি মনে করি বর্তমান অবস্থায় আইনের শাসনের ক্ষেত্রে আইনজীবীদের একটি বলিষ্ঠ পদক্ষেপ। আমরা যদি দলমত নির্বিশেষে এই ভূমিকা সব অবিচার ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে বজায় রাখতে পারি, তা হলে বর্তমানে যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চলছে, তা থেকে মুক্তি পাবো।
তিনি বলেন, দেশ এখন ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। গণতন্ত্র হত্যা করা হচ্ছে। দেশে অবৈধ সরকার চেপে বসেছে। গণতন্ত্র ছাড়া খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে না। এ জন্য আইনজীবীদের গণ-আন্দোলনে যেতে হবে। দেশের মানুষের মুক্তির জন্য ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করা এখন সময়ের দাবি।
এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ও সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মামলা তো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সরকার ইচ্ছা করেই বিভিন্নভাবে প্রভাব বিস্তার করছে; যাতে বেগম খালেদা জিয়া জামিন না পান। আদালতও অসহায়, আদালত আমাদের বক্তব্য শোনেন। তবে দেখা যাচ্ছে অন্যের বেলায় যে রকম আদেশ দেন, বেগম খালেদা জিয়ার ব্যাপারে সে রকম আদেশ দেন না। সে রকম আদেশ আমরা পাই না। তার পরও আমরা ক্লান্ত হই না। আইনজীবীদের কাজ বারবার অ্যাপ্রোচ করা। আদালতের বাইরে খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য যারা আন্দোলন করছেন। আমরা আইনজীবীরা আইনগতভাবে যেটা করার, তা করছি। আমরাও চেষ্টা করব, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির চেষ্টায় শেষ পর্যন্ত আন্দোলন করব। এ ব্যাপারে শিগগিরই আমাদের জাতীয় আইনজীবী ঐক্যফ্রন্ট মিটিং করবে এবং সব আইনজীবীকে ঐক্যবদ্ধ করবে। আমরা যা কিছু করব আইনগতভাবে করব।
এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের টানা সাতবার নির্বাচিত সম্পাদক ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, মাসদার হোসেন মামলার রায়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে বিচার বিভাগ স্বাধীন থাকবে। এই আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী দলে থাকলে স্বাধীন বিচার বিভাগের কথা বলে। আর সরকারে এলে আওয়ামী লীগের অধীনে বিচারব্যবস্থা নিতে চায়। বিচার ও বিচারব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। এবার ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ বেপরোয়া হয়ে গেছে। ছলে বলে কৌশলে এবং ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে দেশের বিচারব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করছে। সর্বশেষ প্রমাণ সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে কে সিনহা ১৬তম সংশোধনীর হাইকোর্টের রায় সুপ্রিম কোর্টে বহাল রাখার ফলে বিচার বিভাগের বিরুদ্ধে সরকারের ষড়যন্ত্র এবং সরকারের কথা অনুযায়ী রায় না দেয়ার কারণে আওয়ামী লীগের এমপি ও নেতারা যেভাবে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছেন, তা সে সময় সব পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে; তারই পরিপ্রেক্ষিতে সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাকে ক্যান্সারের রোগী বানিয়ে দেশ থেকে বিতাড়ন এবং সর্বশেষ তাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে।
দেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি বর্তমানে আমেরিকা কানাডায় রিফিউজি স্ট্যাটাস পাওয়ার জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছেন। তার পদত্যাগের পর ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞার সময় একটি গেজেট অনুমোদন করে নেয়া হয়। এর ফলে বিচারব্যবস্থা এখন আইন মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। এ ছাড়া একটি মানিলন্ডারিং মামলায় একজন জজ তারেক রহমানকে খালাস দেয়ার পর তাকে গ্রেফতার করার জন্য দুদক ও পুলিশ হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকে। তিনি বিদেশে আশ্রয় নিয়ে প্রাণে বাঁচেন।
তিনি বলেন, বিচার বিভাগের এ অবস্থায় উচ্চ আদালত থেকে নি¤œ আদালত সরকারের পছন্দের রায় না দিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার জামিন দিতে তারা ভয় পাচ্ছেন। জামিন দিতে তারা আতঙ্কগ্রস্ত হচ্ছে। তাকেও সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার পরিণতি ভোগ করতে হতে পারে।
রাষ্ট্র বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে রাখতে চায় এ অবস্থায় গত বুধবার খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানি করা তো দূরের কথা, রাষ্ট্রপক্ষের অ্যাটর্নি জেনারেলের আপত্তির কারণে বেগম খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন শুনানির জন্য বিচারপতিরা রাজি হননি। আমি মনে করি দেশের জন্য এটি অশনি সঙ্কেত। যে পর্যন্ত দেশের বিচারব্যবস্থা শক্তিশালী না হবে; আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হবে না; বিচারকেরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে না পারবেন; তত দিন দেশে শক্তিশালী গণতন্ত্র আসা করতে পারি না। মানুষের মৌলিক অধিকার রক্ষা না হলে, নিয়ন্ত্রণহীন আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সরকার তোষণ এবং অর্থনৈতিক নৈরাজ্য দেশকে হয়তো একসময় অকার্যকর রাষ্ট্রের দিকে এগিয়ে নিচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় পেশিশক্তি দিয়ে হয়তোবা অল্প কিছু দিন আটকে রাখতে পারে। আটকে রেখে বেগম খালেদা জিয়ার ন্যায্য কারামুক্তির বাধা সৃষ্টি করতে সাময়িকভাবে পারছে। একপর্যায়ে আইনজীবী ও জনতা ধৈর্য ভাঙলে এগুলোর কিছুই না। কারণ ইতিহাস বলে কোনো জাতিকে চিরস্থায়ীভাবে শৃঙ্খলিত করা যায় না। আইনের শাসন, এবং বেগম খালেদা জিয়া ন্যায়বিচার পাওয়া না পর্যন্ত আইনজীবী ও জনগণের আন্দোলন চলবে। আইনজীবীরা ঐক্যবদ্ধভাবে বেগম খালেদা জিয়ার জন্য আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। দেশবাসী ঐক্যবদ্ধ বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য তারা খালেদা জিয়ার মুক্তি কামনা করছে। এবং আমি মনে করি ��রকারের দমন-পীড়ন যত বাড়বে আন্দোলনের গভীরতা তত বাড়বে। বেগম খালেদা জিয়া মুক্ত হবেন ইনশা আল্লাহ।
এ বিষয়ে বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, বেগম খালেদা জিয়া সাংবিধানিক ও আইনগত অধিকার থেকে বরাবরই বঞ্চিত হচ্ছেন। এ-জাতীয় মামলায় অন্যদের আপিল গ্রহণের সময় জামিন দেয়া হলেও বেগম খালেদা জিয়া প্রথমত অসুস্থ, তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন, দ্বিতীয়ত মহিলা এবং স্বল্পকালীন সাত বছরের সাজা মামলায় দুই বছর কারাগারে অতিক্রান্ত হলেও তাকে জামিন দেয়া হচ্ছে না। তিনি বলেন, আইন যদি তার নিজস্ব গতিতে চলত, তা হলে এরই মধ্যে বেগম খালেদা জিয়া কারাগার থেকে মুক্তি পেতেন। যেহেতু আইন তার নিজস্ব গতিতে চলছে না, সে জন্য বেগম খালেদা জিয়া জামিন পাচ্ছেন না। তিনি বলেন, আইন ও সংবিধান সমুন্নত রাখার জন্য আইনজীবীরা এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য তারা কাজ করবেন।
সূত্র- নয়া দিগন্ত
0 notes
Text
নির্ভয়াকাণ্ডে অভিযুক্তের আর্জির শুনানি সুপ্রিম কোর্টে
New Post has been published on https://sentoornetwork.com/nirbhaya-review-petition-rejected-in-sc/
নির্ভয়াকাণ্ডে অভিযুক্তের আর্জির শুনানি সুপ্রিম কোর্টে
বিশেষ সংবাদদাতা : নির্ভয়াকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত অক্ষয় সিংয়ের ফাঁসি বদলে কম সাজার আবেদন নিয়ে শুনানি চলছে সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতির বেঞ্চে। বুধবার বিচারপতি আর ভানুমতি, বিচারপতি অশোক ভূষণ ও বিচারপতি এস এ বোপান্না তার ফাঁসির সাজা বহাল রাখেন। গত ২০১৭ সালের মে মাসে সুপ্রিম কোর্ট এই মামলায় অভিযুক্ত মুকেশ, অক্ষয়, পবন ও বিনয়ের সাজা মকুবের আর্জি খারিজ করে দেয়। ২০১২ সালের ডিসেম্বরে রাতে দিল্লিতে ২৩ বছরের প্যারামেডিক্যাল ছাত্রী নির্ভয়াকে বাসের ছয়জন ধর্ষণ করে নিষ্ঠুর অত্যাচার চালিয়ে চলন্ত বাস থেকে ফেলে দেয়। এই ঘটনায় দেশজুড়ে প্রতিবাদ আন্দোলন ফেটে পড়ে। সেই নির্যাতিতা তরুণীর মৃত্যু হয়। ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে নিম্ন আদালত চারজনকে ফাঁসির সাজা দেয়। তার আগেই মূল অভিযুক্ত বাসের চালক জেলের মধ্যে আত্মঘাতী হয়। অভিযুক্তদের একজন নাবালক থাকায় জুভেনাইল আদালতে তার বিচার হয়। চারজন ফাঁসির সাজার বিরুদ্ধে দিল্লি হাইকোর্টে আবেদন করে এবং তা খারিজ হয়ে যায়। তখন তারা সুপ্রিম কোর্টে যায়। শাস্তি কার্যকর করা নিয়ে টালবাহানা চলতে থাকায় নির্ভয়ার মা ও বাবা দেশের বিচারব্যবস্থা দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
0 notes
Text
সুপ্রীমকোর্টে বিদ্রোহ ও অতঃপর
সুপ্রীমকোর্টে বিদ্রোহ ও অতঃপর
ভারতীয় সংসদীয় গণতন্ত্রের অন্যতম স্তম্ভ বিচার ব্যবস্থাই আজ প্রশ্নের মুখে। প্রশ্ন তুলেছেন আর কেউ নন, খোদ বিচারপতিরাই। না সব বিচারপতিই নন। বিশেষ কয়েকজন। হাতে গোনা মাত্র। কিন্তু যাঁরা ভারতীয় বিচার ব্যবস্থাকে সর্বসমক্ষে এমন এক গভীরতর প্রশ্নের সামনে দাঁড় করিয়ে দিলেন নজিরবিহীন ভাবে, তাঁরা কেউই আবার যে সে বিচারপতি নন। খোদ সুপ্রীম কোর্টের অভিজ্ঞতম বরিষ্ঠ সব বিচারপতি। তাঁদের কথা এড়িয়ে যাওয়া মানে ঘরে আগুন লাগলে চোখ বুঁজে বসে থাকার সামিল। কিন্তু কি তাঁদের মূল অভিযোগ? অভিযোগ সত্যই গুরুতর। অভিযোগ ভারতীয় সুপ্রীমকোর্টের প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধেই। অভিযোগ নানাবিধ নিয়ম বহির্ভূত কাজকর্মের। ভারতের মত বৃহত্তম গণতান্ত্রিক একটি দেশের সুপ্রীমকোর্টের প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধেই অন্যান্য সহ বিচারপতিদের এহন অভিযোগের গুরুত্ব সহজেই অনুমেয়। বস্তুত স্বাধীনতার সাত দশকে এহন নজির এই প্রথম। আর সেই কারণেই আলোড়ন উঠেছে দেশের সর্বত্র।
ভারতবর্ষের সাধারণ মানুষ আজও বসে থাকে সুপ্রীম কোর্টের ভরসায়। আজও অধিকাংশ মানুষই বিশ্বাস করে সুপ্রীম কোর্টের বিচার ব্যবস্থার নিরপেক্ষতায়। আজও সুপ্রীম কোর্টের আইনি দিকনির্দেশকে চুড়ান্ত বলেই স্বীকার করে নিতে অভ্যস্থ সকলেই। কিন্তু সেই সুপ্রীম কোর্টের প্রধান বিচারপতির নিরপেক্ষতার বিষয়েই যদি প্রশ্ন উঠে যায়, তবে অবস্থা যে কতটা ভয়ানক সেটি আর বলার অপেক্ষা রাখে না। অভিযোগকারী ��িচারপতিদের কথায় এটা সুস্পষ্ট যে প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলি ভারতীয় বিচার ব্যবস্থার দূর্বলতার বাস্তবিক পরিস্থিতির হিমশৈলীর চূড়া মাত্র। ভারতবর্ষের বিচারব্যবস্থা মূলত ঔপনিবেশিক ঘরাণার। ব্রিটিশের তৈরী করে দিয়ে যাওয়া পরিকাঠামোর উপরেই নির্ভরশীল। এই বিচার ব্যবস্থার প্রধান বৈশিষ্টই হলো দীর্ঘসূত্রিতা। কিন্তু বিচারপতিদের নিরপেক্ষতার বিষয়ে জনসাধারণের বিস্তর অভিযোগ থাকলেও খোদ সুপ্রীমকোর্টের বিচারপতিরাই যখন একই অভিযোগ তোলেন প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে, তখন গোটা দেশের ভিতটাই টলে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরী হয়। ব্রিটিশের ফেলে যাওয়া রাজ্যপাটের মূল বৈশিষ্টই হলো ফেল কড়ি মাখো তেল। সকলেই জানে যার অর্থের জোর যত বেশি তার পক্ষেই আইনি সহায়তা পাওয়া তত বেশি সহজ। আর ক্ষমতার গদীতে বসে গেলে সেই আইনকে নিজের স্বার্থে কাজে লাগানো এদেশে নতুন কোন ঘটনা নয়। কিন্তু তবুও গণতন্ত্রের শেষ রক্ষাকবচ ভারতীয় সুপ্রীমকোর্টের নিরপেক্ষতা নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে বিশেষ কোন সংশয় ছিল না। সকলেরই ধারণা ছিল, অন্যান্য আদালত যে রায়ই দিক, শেষ অব্দি সুপ্রীমকোর্টে পৌঁছাতে পারলে সঠিক বিচারটুকু অন্তত পাওয়া যাবে। আর সাম্প্রতিক এই ঘটনা সুপ্ত লালিত সেই বাসনাতেই জল ঢেলে দিল একেবারে। অভিযোগকারী বিচারপতিদের কথায় এটা সুস্পষ্ট যে প্রধান বিচারপতির কর্মপদ্ধতি সুপ্রীমকোর্টের রীতিনীতিকে লঙ্ঘন করে চলেছে। এবং এর ফলে বিচারব্যবস্থার আইনী স্বচ্ছতা নিয়ে ও প্রধান বিচারপতির নিরপেক্ষতা নিয়েই সংশয় তৈরী হয়েছে। বস্তুত ভারতীয় গণতন্ত্রের উপর এটি একটি প্রবল আঘাত। এখন সুপ্রীমকোর্টের প্রধান বিচারপতির উদ্দেশ্যে কোন কোন বিচারপতির নির্দিষ্ট কি কি অভিযোগ, সেই সকল তথ্য সংবাদ মাধ্যম মারফত সর্বত্রই ছড়িয়ে গিয়েছে। আগ্রহী ব্যাক্তিরা খুব সহজেই সেই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পেয়ে যাবেন। বর্তমান প্রবন্ধের বিষয় সেই সকল তথ্যের নির্ঘন্ট নির্মাণ নয়। আমরা বুঝে নিতে চাইছি, এই ঘটনার মূল প্রক্ষিতটুকু ও এর অভিঘাত ঠিক কিরকম হতে পারে। ব্রিটিশের হাত থেকে ক্ষমতা হস্তান্তরের পর এদেশের শাসনকার্য মূলত এদেশীয় শাসক শ্রেণীর স্বার্থ রক্ষার কাজই করে এসেছে বরাবর। আর সেই কাজে সমগ্র বিচারব্যবস্থাকেই শাসক শ্রেণীর স্বার্থরক্ষায় ব্যবহার করাটাই ভারতীয় গণতন্ত্রের রীতিরেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়ে গিয়েছে বিগত সাত দশক ব্যাপি সময় সীমায়। ফলে ভারতীয় বিচার ব্যবস্থার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন নতুন কোন বিষয় নয়। কিন্তু সুপ্রীমকোর্টের বিচারপতিদের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন কিন্তু এই প্রথম। এবং অভিযোগ উঠেছে একেবারে অভ্যন্তর থেকেই। ভারতীয় রাজনীতিতে শাসক শ্রেণী তার ক্ষমতাবলে আইনকে প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে নিজের দিকে টেনে নেবে, এ আর নতুন কথা কি। ভারতীয় জনগণ এতেই অভ্যস্থ। কিন্তু তার পরেও জনমানসে এতদিন একটি দৃঢ় বিশ্বাস ছিল যে, শেষ পর্য্যন্ত সুপ্রীমকোর্ট অব্দি যেতে পারলে নিরপেক্ষ বিচার নিশ্চয়ই পাওয়া যাবে। এবং সেরকম বিশ্বাস করার যথেষ্ঠ কারণও ছিল। সেরকম দৃষ্টান্তের অভাব নেই মোটেও। কিন্তু খোদ প্রধান বিচারপতির নিরপেক্ষতা নিয়েই যদি প্রশ্ন উঠে যায়, তবে জনমানসের প্রতিক্রিয়া যে মোটেই সুখকর হয় না, সে কথা বলাই বাহুল্য। এখন, বিষয়টা হচ্ছে গণতন্ত্রের ভবিষ্যত নিয়েই। আজকের অভিযুক্ত প্রধান বিচারপতির অবসরের পর নতুন যাঁরা প্রধান বিচারপতি হবেন ভবিষ্যতে, তাঁরাও যে সব ধোয়া তুলসীপাতা হবেন, সে বিষয়ে নিশ্চয়তা কে দেবে? এবং যেখানে সুপ্রীমকোর্টের প্রধান বিচারপতির নিরপেক্ষতা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গেল, সেখানে দেশের অন্যান্য আদালতের বিচারপতিদের নিরপেক্ষতা নিয়ে তো আর দায়বদ্ধতার জায়গাই রইল না। কি ভয়ানক এক পরিস্থিতির উপর দাঁড়িয়ে ভারতীয় গণতন্ত্র! আজকে এটা দিবালোকের মতো সুস্পষ্ট যে, প্রয়োজনে শাসক শ্রেণীর ক্ষমতার কাছে বিচারকও নতজানু হতে বাধ্য। আর তা না হলে তাঁর ব্যক্তিগত নিরাপত্তাও আর সুনিশ্চিত নয়। এবং শাসকদলও সবসময় চাইবে তাদের বশংবদ বিচারপতিরাই সর্বোচ্চ আদালতের দায়িত্বও সমালাক। এবং এটাই যদি ভারতীয় গণতন্ত্রের রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়ে যায়, তবে এই গণতন্ত্রের ভিতর দিয়েই স্বৈরতান্ত্রিক শক্তির উত্থান অবশ্যাম্ভাবি কিন্তু। তখন সুপ্রীমকোর্টও ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক শক্তির হাতের পুতুলেই পরিণত হবে। ভারতীয় গণতন্ত্রের পক্ষে সেটা আদৌ সুখকর হবে না। একটু খেয়াল করলেই দেখা যাবে, আজকের ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্তের সমাজজীবনেই ক্ষমতাসীন শাসকদলের নিরঙ্কুশ দাপট। এই যে নিরঙ্কুশ দাপট, এটাই কিন্তু স্বৈরতন্ত্রের আগাম পূর্বাভাস। এবং অধিকাংশ সর্বভারতীয় রাজনৈতিক দলেরই মূল কার্যক্রম সারা ভারতের
সর্বত্র একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করা। তাদের সকল রাজনৈতিক কর্মসূচীই সেই লক্ষ্যেই পরিচালিত হতে থাকে। এবং যে দল যে অঞ্চলেই প্রশাসনিক ক্ষমতার গদী দখল করে নেয়, তার প্রথম কাজই হয় আইনকে নিজের স্বার্থে কাজে লাগানোর চেষ্টা করা। এর থেকে ভয়াবহ ব্যাপার গণতন্ত্রে আর কি হতে পারে? অথচ ভারতীয় গণতন্ত্রে এটাই প্রচলিত রেওয়াজ। ফলে আজকে সর্বোচ্চো আদলতের প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খুব একটা বিস্ময়কর ব্যাপারও নয়। এটাই তো হওয়ার কথাই ছিল। এবং সেটাই হয়েছে। শাসক শ্রেণী তার স্বার্থেই সমাজকে পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রণ করে। আর সেই কাজে আইন আদালত বিচার ব্যবস্থাকে নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে সবসময় তৎপার থাকে। সংসদীয় গণতন্ত্রের পক্ষে এর থেকে বড়ো অভিশাপ আর কি হতে পারে? দুঃখের বিষয়, স্বাধীন ভারতের সূচনালগ্ন থেকেই এই অভিশাপই এই দেশের গণতন্ত্রের মূল পরিচয় হয়ে উঠেছে। প্রতিটি রাজনৈতিক দলই এই অভিশাপটিকেই পাখির চোখ করে নিয়ে ক্ষমতা দখলের রাজনীতিতে অগ্রসর হয়েছে। আর জনগণ নিরব দর্শক হয়ে থেকেছে। কিন্তু এই পরিস্থিতির সবচেয়ে ভয়াবহ দিকটি হলো এই যে, এই সুযোগটাকেই কাজে লাগিয়ে কোন একটি স্বৈরাচারী শক্তি যদি একবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে, তবে ভারতীয় গণতন্ত্রের এই দুর্বলতম দিকটি দিয়েই সেই শক্তি গোটা ভারতটাকেই একদিন নিজেদের কুক্ষিগত করে নেবে। আর সেই কুক্ষিগত করে নেওয়ার পথে সর্বোচ্চ আদালতেই যদি নিজেদের বশংবদ বিচারপতিদের বসিয়ে দেওয়া যায়, তবে তো সোনায় সোহাগা। তার থেকে সহজ পথ আর কি হতে পারে? সুপ্রীমকোর্টের চার বিচারপতির সাম্প্রতিক বিদ্রোহ ঠিক এই কারণেই এতটা গুরুত্বপূর্ণ। ফলে বিচারপতিদের এই অভিযোগ নির্দিষ্ট একজন প্রধান বিচারপতিকে কেন্দ্র করেই ধরে নিলে কিন্তু মস্ত বড়ো ভুল হবে। তাদের অভিযোগের মূল গুরুত্ব অনুধাবন না করতে পারলে ভবিষ্যত খুব একটা আশাপ্রদ নয়। আজকের ভারতবর্ষের সমাজ ও রাজনীতিতে স্বৈরতান্ত্রিক শক্তিগুলির বাড়বাড়ন্ত লক্ষ্য করলেই প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের মূলে প্রবেশ করা যাবে। তখন বোঝা যাবে মূল বিষয়টি আদৌ কোন ব্যক্তি মানুষের নৈতিকতার অবক্ষয়ের বিষয় নয়। মূল বিষয়টি ভারতীয় গণতন্ত্রের অস্তিত্ব রক্ষার। মূল বিষয়টি ভারতবর্ষের মধ্যে পুষ্ট হতে থাকা স্বৈরতান্ত্রিক শক্তিগুলিকে চিহ্নিতকরণের। মূল বিষয়টি ভারতীয় জনগণের সচেতন হয়ে ওঠার। মূল বিষয়টি ভারতের ভবিষ্যতের। ১৪ই জানুয়ারী’ ২০১৮ কপিরাইট শ্রীশুভ্র কর্তৃক সংরক্ষিত
0 notes