#বিচারব্যবস্থা
Explore tagged Tumblr posts
bangavumi · 24 days ago
Text
ছয় মাসে নির্বাচন এক কথায় অবাস্তব ও অসম্ভব: সারজিস আলম
ছয় মাসে নির্বাচন এক কথায় অবাস্তব ও অসম্ভব: সারজিস আলম সংবিধান ও বিচারব্যবস্থার সংস্কার ছাড়া দ্রুত নির্বাচন নিয়ে বাস্তবতা তুলে ধরলেন সারজিস আলম। পঞ্চগড় থেকে প্রতিনিধি: জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক ও জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেছেন, “ছয় মাসের মধ্যে স্বচ্ছ নির্বাচন করা এক কথায় অবাস্তব এবং অসম্ভব।” তিনি মনে করেন, নতুন ভোটার তালিকা হালনাগাদ, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন,…
0 notes
kalernouka · 16 days ago
Text
কোমায় যখন বিচারব্যবস্থা
সত্তর দশকের শেষের দিকে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের একজন চিকিৎসকের লেখা একটি ক্রাইম থ্রিলার প্রায় বিশ্বজুড়েই সাড়া ফেলে দিয়েছিল। লেখকের নাম রবিন কুক। নিজে চিকিৎসা পেশার সাথে জড়িত ছিলেন বলেই, সেই দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার ণত্ব ষত্ব তাঁর ভালো করেই জানা ছিল। মূলত তার উপরে ভিত্তি করেই তাঁর লেখা সেই জনপ্রিয় ক্রাইম থ্রিলার ‘কোমা’ পাঠক মাত্রকেই শিহরিত করে তুলেছিল। হাড়হিম করা রহস্য এবং রোমাঞ্চের সেই কাল্পনিক…
0 notes
guardianpubs17 · 7 months ago
Text
জিয়াউল হক-এর নতুন বই- ‘মুসলিম উম্মাহর পতন; উত্তরণের পথ’ থেকে…
Tumblr media
একদিন আলি (রা.) কুফার একটি মসজিদে দাঁড়িয়ে ভাষণ দিচ্ছেন। এমন সময় মসজিদের এক কোনায় ‘লা হুকমা ইল্লা লিল্লাহ’ বা ‘আল্লাহর হুকুম ছাড়া আরও হুকুম মানি না’ স্ল���গানে একটা হট্টগোল শুরু হয়। মুয়াবিয়া (রা.)-এর সাথে বিরোধের নিষ্পত্তিক��্পে গঠিত সালিশি কমিটির দিকে ইঙ্গিত করে তারা আলি (রা.)-কে উদ্দেশ্য করে বলে, আপনি বিচারব্যবস্থা মানুষের হাতে তুলে দিয়েছেন! অথচ বিচারের মালিক হচ্ছেন আল্লাহ। তারা নিজেদের দাবির সপক্ষে সূরা আনআমের ৫৭ নং আয়াত— ‘আল্লাহ ব্যতীত কারও ফয়সালা গ্রহণযোগ্য নয়’-এর উদ্ধৃতি তুলে দাবি করে, আলি (রা.) আল্লাহর হুকুম ভঙ্গ করেছেন। আর আল্লাহর বিধানের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শনের কারণে আলি (রা.) মুশরিক (!) হয়ে গেছেন! যেহেতু কাফিরের আনুগত্য করা জায়েজ নেই, তাই যে বা যারা আলি (রা.)-কে কাফির মানবে না, সে-ই কাফির হয়ে যাবে। এই হিসেবে সকল সাহাবি কাফির ও মুরতাদ হয়ে গেছে! ইতিহাসে এরা খারেজি হিসেবে পরিচিত। খারেজি শব্দের অর্থ বের হয়ে যাওয়া বা বহিষ্কৃত। এরাই সর্বপ্রথম একটি বৈধ খিলাফত অস্বীকার করে মুসলিম উম্মাহর মূল অংশ থেকে বের হয়ে মদিনার অদূরে হারুরা প্রান্তরে আলাদা বসতি স্থাপন করে। একটি ইসলামি রাষ্ট্রের ভেতর সূচনা করে স্বতন্ত্র সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথ। এই উগ্র দলটি প্রকাশ্যে এসেছিল আলী (রা.) ও মুয়াবিয়া (রা.)-এর মধ্যে রাজনৈতিক ও সামরিক সমঝোতার জন্য সালিশকে কেন্দ্র করে। সালিশের ফয়সালা পছন্দ না হওয়ায় আলি (রা.)-এর দল থেকে কয়েক হাজার সৈন্য বিদ্রোহ করে দল ত্যাগ করেছিল। তাদের অভিযোগ— খলিফা আলি (রা.) কাফির (!) হয়ে গেছেন! তাঁর ঈমান চলে গেছে। কেননা, তিনি সূরা হুজুরাতের ৯ নং আয়াতের নির্দেশনাটি মানেননি। সেই আয়াতে বলা আছে—‘মুমিনদের দুই দল যু- দ্ধে লিপ্ত হলে তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দাও। অতঃপর তাদের একদল যদি সীমালঙ্ঘন করে, তবে সীমালঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে যু- দ্ধ করো; যতক্ষণ না তারা আল্লাহর নির্দেশের দিকে ফিরে না আসে।’ মুয়াবিয়া (রা.)-এর দল যেহেতু সীমালঙ্ঘনকারী, তাই তারা আত্মসমর্পণ না করা পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে যু- দ্ধ চালিয়ে যেতে হবে। কিন্তু আলি (রা.) তা না করে মুয়াবিয়া (রা.)-এর সাথে সন্ধি করার মাধ্যমে সূরা হুজুরাতের উক্ত আয়াতটির স্পষ্ট লঙ্ঘন করেছেন। ফলে তিনি কাফির (!) হয়ে গেছেন। খারিজিদের উগ্রতার সীমা ছাড়িয়ে গেলে সকল সচেতন মহল থেকেই তাদের সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা শুরু হয়। এ লক্ষ্যে খলিফা আলি (রা.) খারিজিদের নিকট পাঠান আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.)-কে। তাঁর এই প্রচেষ্টা একেবারে বিফলে যায়নি। দীর্ঘ আলোচনার পর খারেজিদের একটা অংশ সঠিক পথে ফিরে আসে। তবে অধিকাংশ পথভ্রষ্টই থেকে যায়। | এরা প্রায় সকলেই ��িল কট্টরপন্থি, অত্যন্ত উগ্র মতাবলম্বী। আলি (রা.)-এর প্র��ি অনুগত এবং তাঁর খিলাফতের অধীনে থাকা সকল মুসলিমকে তারা কাফির বলে মনে করত। এই সূত্র ধরেই তারা প্রখ্যাত সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে খাব্বাব (রা.)-কে সপরিবারে হ+/ত্যা করে। সম্মানিত এই সাহাবির অপরাধ কেবল এতটুকুই ছিল, তিনি আলি ও মুয়াবিয়া (রা.)-সহ এই রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে জড়িত পক্ষ-বিপক্ষের সাহাবিদের কাফির মনে করতেন না। শুধু এ কারণেই তারা ইবনে খাব্বাব (রা.)-কে নদীর পার নিয়ে গিয়ে জবাই করে। শুধু তাই নয় তাঁর সন্তানসম্ভবা স্ত্রীর পেট চিরে তাঁকেও নৃশংসভাবে হ+/ত্যা করে! খলিফা আলি (রা.) নৃশংস ও বর্বর এই হ+/ত্যাকাণ্ডের তদন্ত শুরু করলে হ+/ত্যাকারীরা অত্যন্ত দম্ভভরে এ হ+/ত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে প্রকাশ্যে ঘোষণা দেয়, এই কাফিরকে (!) তারাই হ+/ত্যা করেছে।
0 notes
advocate-sheikh-jamal · 2 years ago
Text
আদর্শ পরিবর্তন ও মৌলিক অধিকার।
আদর্শ পরিবর্তন ও মৌলিক অধিকার।
সময়ের সাথে সাথে মানুষের মৌলিক অধিকারগুলোতেও কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন আসে, যা সকল সভ্য সমাজ ও রাষ্ট্র কর্তৃক অতীপ্রাচীণকাল হতেই স্বীকৃত। স্বাধীন বিচারব্যবস্থা ও শক্তিশালী গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানসমূহ নাগরিক অধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে সর্বোত্তম রক্ষাকবচ। সংবিধানের চতুর্থ পরিচ্ছেদের ১০২ অনুচ্ছেদ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগকে মৌলিক অধিকার বলবৎ করার এখতিয়ার দিয়েছে। বাংলাদেশের সংবিধান অনুসারে প্রত্যেক…
View On WordPress
0 notes
thenewshamim · 6 years ago
Text
অসহায় আদালত: বিষয় এনআরসি
মহসিন আলম ভাট বাংলা অনুবাদ প্রচেষ্টা: শামীম আহমেদ লস্কর প্রথম পর্ব নাঃ এবার আমাদের স্বীকার করতেই হবে। ঘরবাড়ি বন্ধক দিয়ে, জমিজিরেত বিক্রি করে ৩০ লাখ মানুষের আদালত থেকে ট্রাইবুন্যালে মাসের পর মাস যে অমানুষিক দৌড়ঝাঁপ, কায়িক ও মানসিক ক্লেশের পরও বিদেশী তকমা জোটার ভীতি থেকে রেহাই নেই। ন্যাশনাল রেজিস্টার অব সিটিজেনস (এনআরসি) এবং যে শীর্ষ আদালতের উদ্যোগে তা চলছে সেটি এবার সাংঘাতিক বিপর্যয়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। প্রায় ১ লক্ষ মানুষকে রাষ্ট্রহীন করার মুখে দাঁড় করিয়ে রেখে এই নাগরিকপঞ্জী নবায়ন কোনও নতুন খাতে বইছে না। শীর্ষ আদালতও কোনওমতে নিজেকে রাজনৈতিকভাবে বহুদাবিভক্ত এবং আইনত অস্বস্তিকর এক অবস্থানে দাঁড় করিয়েছে। আমরা ভেবেছিলাম এই এনআরসি কয়েক দশকের ভাতৃঘাতী বিভাজন, অভিবাসন এবং অনুপ্রবেশ বিবাদের সমাপ্তি ঘটাবে। কিন্তু তা না হয়ে সেটি বিপথগামী—অসমের সীমানা ছাড়িয়ে অন্যান্য রাজ্যেও ধর্মীয় এবং জাতিতত্ত্বমূলক মেরুকরণ ঘটাচ্ছে। দুহাজার আঠারোর ৩০ শে জুলাই প্রকাশিত নাগরিকপঞ্জির নবায়িত খসড়ায় নাম বাদ পড়েছে চল্লিশ লক্ষ মানুষের। তখন থেকেই শীর্ষ আদালতকে বারবার এই প্রক্রিয়ার ব্যাপ্তি বুঝেশুনে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে হয়েছে যার ফলে দাবী এবং আপত্তি জানানোর সময়সীমা বেশ ক’বার বাড়ানো হয়। দ্বিতীয় দফার শেষদিকে ১৫ই ডিসেম্বর ২০১৮তে পনের লাখেরও কম মানুষ নতুন দাবী দায়ের করাতে সক্ষম হন, বাদবাকি ২৫ লক্ষ রয়ে গেলেন রাষ্ট্রহীন ঘোষিত হবার অপ���ক্ষায়। এমনকী এমনকি ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৮-র তৃতীয় দফায়ও দাবী জানানোর প্রক্রিয়াটি যথেষ্টভাবে কার্যকর হয়নি। পত্রপত্রিকার প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী ১০ লাখেরও বেশী মানুষ ফাইল ক্লেইম করতে ব্যর্থ হয়েছেন। কারণখানা ক্রমশই স্পষ্ট হয়ে উঠছে। ডিসেম্বর ২০১৮য় অসম সরকার আদালতে স্বীকার করে যে যেসব মানুষ ক্লেইম প্রক্রিয়ায় অংশ নেননি তারা অশিক্ষিত এবং দরিদ্র তাই ফর্ম ফিল-আপ করতে পারেননি, তাদের হয়ত বিষয়টি জটিল লেগেছে। গরীব সম্প্রদায়ভুক্ত জনগণের ক্ষেত্রে শুরুতেই তো কোনও পরিচয়পত্র থাকার সম্ভাবনা প্রায় নেই-র কোঠায়, সেখানে খুঁজেপেতে বের করে যোগাড় করাটাই একটি কঠিন কর্ম। বিষয়টিকে আরও গোলমেলে করে তুলতে আইনি প্রক্রিয়াও শেষমেষ বাড়িয়ে তোলে আমলাতান্ত্রিক দূর্বোধ্যতা। জনগণ তাদের নাগরিকত্ব প্রমাণে কোন কোন নথি জমা দিতে পারবেন, এই বিষয়টি আদালত নিয়মিত পর্যালোচনা করেছে । কিন্তু এই আদালত নির্ধারিত নথিমালা ছিল খুবই বিতর্কিত, যাতে ব্যাপকহারে ভোগান্তি, আতঙ্ক এবং যন্ত্রণায় শিকার হয়েছেন বহু মানুষ। নব্য দেশভক্তির এই যুগে সরকারের কাজকর্মের প্রতি প্রবল আশাবাদ এবং শর্তহীন সমর্থন রাখাটাই চলতি রীতি।  সেই রীতি অনুযায়ী আমরা বলতেই পারি এনআরসি প্রক্রিয়ার মতো প্রকান্ড মাপের রাজসূয় যজ্ঞে এমনটা হবারই ছিল। সামান্য পরিমাণে আইনি অনিশ্চিয়তা এবং কার্যকারিতার অভাব সেখানে থাকবেই। হয়ত আমাদের বলা হয়েছিল বিষয়টি আদালতের দেখাশোনায় থাকবে এ ব্যাপার সুনিশ্চিত। এবং আদালতের সুপারভিশন বহাল রইবে। কিন্ত আইনি প্রক্রিয়ায় আমাদের এই স্বআরোপিত বিশ্বাস ছিল ভুল এবং তা আদালত-পরিচালিত প্রক্রিয়াটির গভীর বৈপরীত্যগুলোকে এড়িয়ে যায়।   বিচার বিভাগীয় তত্ত্বাবধানের আপাতবিরোধীতার ভিত্তি: শীর্ষ আদালত ২০১৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর অসম সম্মিলিত মহাসংঘ বনাম ইউনিয়ন অব ইন্ডিয়া  মামলাটিতে দেওয়া নির্দেশ অনুযায়ী এনআরসি নবায়নের কাজ শুরু করে। মহাসংঘ নাগরিকত্ব আইনের অনুচ্ছেদ 6A কে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিল যা কিনা রাজ্যে নাগরিকত্বের জন্য আলাদা-আলাদা নিয়ম প্রদান করার মাধ্যমে অসম চুক্তিকে কার্যকর করার জন্য প্রণয়ন করা হয়েছিল। প্রভিশন অনুসারে, অন্যান্য রাজ্যের বিপরীতে, ২৫ মার্চ, ১৯৭১ সালের আগে অসমে অভিবাসনকারী ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা ভারতীয় নাগরিক হিসাবে বা নাগরিকত্ব প্রাপ্তির যোগ্যতা ��র্জন করতে পারেন। নিজেদের পিটিশনে মহাসংঘ যুক্তি দেখায় যে ওই প্রভিশন বাংলাদেশ থেকে ব্যাপকহারে অবৈধ অভিবাসীদের অনুপ্রবেশে উৎসাহ দেওয়ার মাধ্যমে এ রাজ্যের নাগরিকদের ‘জীবনের অধিকার’কে লঙ্ঘন করছে। এতে এটাও বলা হয় নির্দিষ্ট শাসকদল তাদের সংবিধান-সুনিশ্চিত সাংস্কৃতিক অধিকারকে খর্ব করছে। বিচারপতি জাস্টিস গগৈ (এখনকার মুখ্য ন্যায়াধীশ) এবং জাস্টিস নরিম্যানের অধীনে বিচারপতিদের এক সহানুভূতিশীল বেঞ্চ সুপারিশ করেন যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য বিষয়টিকে একটি বৃহত্তর সাংবিধানিক বেঞ্চে পাঠান হোক। এরকম করতে গিয়ে ওই বেঞ্চ অনুচ্ছেদ 6A-র সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে গভীর প্রশ্ন তোলে। কিন্তু ওই একই নির্দেশনামাতেই বেঞ্চ এনআরসি নবায়নে তদারকি শুরুর সিদ্ধান্ত নেয়: এক আদালত নির্ধারিত ক্যালেন্ডারে এবং অনুচ্ছেদ 6A তে উল্লিখিত আবশ্যিকতারগুলোর ভিত্তিতে। কী আশ্চর্য! শীর্ষ আদালত দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বিরাটমাপের বিচারব্যবস্থা-নেতৃত্বাধীন এক আমলাতান্ত্রিক মহাপ্রক্রিয়া শুরু করেছে এমনসব নিয়মের ভিত্তিতে যার আইনি বৈধতাও এ অবধি নির্ধারিত হয়নি! এনআরসি নিয়ে চলতি আলোচনায় পুরোপুরিভাবে উপেক্ষিত মনে হওয়া এই আপাতবিরোধিতা,  বিচারবিভাগীয় প্রক্রিয়ার কিছু বেশ অস্বস্তিকর জিজ্ঞাসার জন্ম দেয়। অনুচ্ছেদ 6A-র চূড়ান্ত আইনি মূল্যায়ন করার জন্য শীর্ষ আদালতের পক্ষে অপেক্ষা করাটাই কি বেশি বিবেচ্য ছিল না? ভবিষ্যতে আদালতের কোনও বিষয় নিয়ে সাংবিধানিক বেঞ্চকে রেফার করাও কি অনাবশ্যক করে দিল এই এনআরসি? অথবা আদালত কি অবশেষে এটা শুনছে যে ওই সাংবিধানিক বেঞ্চ অনুযায়ী এনআরসি প্রক্রিয়া কি খুব ত্রুটিপূর্ণ? অলীক-অবাস্তব সংখ্যামালা: অস্বস্তিকর স্ববিরোধগুলি এখানেই শেষ হচ্ছে না। এনআরসি নবায়নের আগে এবং পরে অসমে অভিবাসন বিতর্কে শীর্ষ আদালতের জড়িত হওয়া বিষয়টি উদ্বেগ এবং অনথিভুক্ত বাংলাদেশী অভিবাসীদের সংখ্যা নিয়ে অযৌক্তিক ভীতির ভিত্তিতে হয়ে এসেছে। তিনজন বিচারক বিশিষ্ট বেঞ্চের হয়ে লিখতে গিয়ে বিচারপতি জিপি মাথুর ২০০৫ সালের সর্বানন্দ সনোয়াল মামলার রায়ে ‘আইএমডিটি' (ইললিগাল মাইগ্র্যান্টস ডিটারমিনেশন বাই ট্রাইবুনাল) অ্যাক্টের অংশবিশেষ বেআইনি বলে খারিজ করে দেন, ‘অসমে নিঃশব্দ, এবং বৈরিতা সৃষ্টিকারী জনতাত্ত্বিক আক্রমণ’ এই ভিত্তিতে নাগরিকত্ব প্রমাণের দায়ভার রাষ্ট্রের হাত থেকে নিয়ে বর্তান ব্যক্তির উপরে। ওই বেঞ্চ সরকারের দায়ের করা বিভিন্ন হলফনামা গ্রহণ করে নামমাত্র গুরুত্ব দিয়ে। আদালত জানায় যে, ‘বৃহৎ মাপের এই অবৈধ অভিবাসন’ শুধু��াত্র অনুপ্রবেশই নয়,  একধরণের ‘বাহ্যিক আগ্রাসন’ও যা ‘অভ্যন্তরীণ অশান্তি’-র দিকে নিয়ে যায়। ‘ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক ইসলামিক মৌলবাদ’ এবং আঞ্চলিক উত্তরাধিকার নিয়ে ভয় প্রকাশ করে আদালত। এগুলো নেহাৎই বাগাড়ম্বরতা ছিল না। ‘বিপদজনক’ অনথিভুক্ত অভিবাসনের ব্যাপ্তি এবং পরিমাণ ছিল ওই মামলার এক আইনি ভিত্তি। বিচারপতি মাথুরের জানান, আইএমডিটি অ্যাক্টের ফলে যে বিদেশীদের সনাক্ত করা হয় তা দাবীকৃত প্রকৃত বিদেশীদের সংখ্যার চেয়ে অনেক কম এবং কেন্দ্রীয় সরকার অনুচ্ছেদ ৩৫৫ তে নির্দেশিত বাহ্যিক আক্রমণ এবং অভ্যন্তরীণ ব্যাঘাত থেকে তার নাগরিকদের রক্ষা করার সংসদীয় দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হচ্ছে। কিন্তু আইএমডিটি অ্যাক্ট যে যথেষ্ট নয়, এর প্রমাণ কী ছিল? বিচারপতি মাথুর যদিও স্বীকার করেছিলেন আসামের অনথিভুক্ত বাংলাদেশি অভিবাসীদের সম্পূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হবে না, আদালত সংসদে দায়ের করা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এক বিবৃতির উপর নির্ভর করে, যে নথি অনথিভুক্ত বাংলাদেশি অভিবাসীদের সংখ্যা ৫০ লক্ষ হতে পারে বলে নির্দেশ করে। অসমের জনসংখ্যার প্রায় এক-পঞ্চমাংশের এই নাটকীয় সংখ্যামালা মনে হয় আদালতকে বিশ্বাস যোগায় যে আইএমডিটি আইনের অধীনে মাত্র ১০,০১৫ জন ব্যক্তির সনাক্তকরণ হওয়া সম্পূর্ণভাবেই অপর্যাপ্ত। মহাসংঘের মামলায় বিচারপতি নরিমান ঠিকই এই বিষয়ে নির্ভর করে সুনিশ্চিত হলেন যে রাজনৈতিক শাখাগুলো অনথিভুক্ত অভিবাসন মোকাবিলায় ‘মূল্যবান যতসামান্য’ই কাজ করছে, আদালতের সক্রিয় ভূমিকা চেয়ে। (…political branches were doing “precious little” to deal with undocumented immigration, necessitating an active role for the courts…) কিন্তু সমস্যা হল এসবের কিছুই নিয়ে কোনও তথ্য ছিল না। আরটিআই করে জানা তথ্যভিত্তিক এক সাম্প্রতিক প্রবন্ধে দেখা যাচ্ছে ২০০৪ সালে বিবৃতি দেওয়ার পরই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক একটি ���্পষ্টীকরণ জানায় যে ওই সংখ্যা ‘কোনও পরিসংখ্যান বা গবেষণা ভিত্তিক নয়’ এবং আরও মন্দ খবর ‘লোকের মুখে শোনা এবং তাও আগ্রহী পক্ষের’। স্পষ্টীকরণে বলা হয়েছে, “অসমের অবৈধ বাংলাদেশী অভিবাসীদের কোনও বাস্তবসম্মত পরিসংখ্যান দেওয়া সম্ভব নয়”।এই ত্রুটিপূর্ণ সংখ্যামালা অভিবাসন সমস্যাকে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে বিপদজনক করে দেখিয়েছে। এনআরসি নবায়নের সময় এগুলোই প্রক্রিয়াটির সাফল্যের মানদন্ড হয়ে ওঠে। অসমের অনেকের কাছে, এমনকী এই ৪০ লক্ষও অনেক কম। সকলেই এবার ওই অলীক-অবাস্তব সংখ্যামালার পেছনে ছুটছে।  (চলবে)  মূল লেখা: https://thewire.in/law/nrc-supreme-court-crisis
1 note · View note
shesssngraam · 3 years ago
Photo
Tumblr media
বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা দেখে অবাক হওয়ার মত অবস্থা এক যুগ পরে তাও সঠিক বিচার করতে পারল না,নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে দলবদ্ধ ধর্ষণের পর এক নারী ও তার স্বামীকে হত্যার ঘটনায় ছয় আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।   সোমবার (৬ জুন) নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক নাজমুল হক শ্যামল এ রায় ঘোষণা দেন। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- সুমন, লোকমান, শফিক, সুমন-২, আরিফুল ও জামাল। আসামিদের মধ্যে পলাতক আছেন সুমন, লোকমান ও শফিক। মামলার বরাত দিয়ে নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান জানান, ২০০৯ সালের ১১ আগস্ট রাতে রূপগঞ্জের দেবই গ্রামে খাদিজা নামের নারী ও তার স্বামী আবদুর রহমানকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে যায় আসামিরা। তারা স্বামীকে বেঁধে খাদিজাকে দলবেঁধে ধর্ষণ করেন। https://www.instagram.com/p/Cee5pnUPzLW/?igshid=NGJjMDIxMWI=
0 notes
rangpurdaily · 3 years ago
Text
প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইন সংবাদপত্রের বিকাশ সংকুচিত করবে: নোয়াব
প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইন সংবাদপত্রের বিকাশ সংকুচিত করবে: নোয়াব
প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইন প্রচলিত বিচারব্যবস্থা, শিল্প আইন ও বাংলাদেশ শ্রম আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মনে করে দৈনিক সংবাদপত্রের মালিকদের সংগঠন নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব)। সংগঠনটি বলেছে, এই আইন পাস হলে স্বাধীন সাংবাদিকতা এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বাধাগ্রস্তসহ সংবাদপত্রের বিকাশ সংকুচিত হবে। আজ রোববার নোয়াবের সভাপতি এ কে আজাদ ও সহসভাপতি এ এস এম শহীদুল্লাহ খানের সই করা এক…
Tumblr media
View On WordPress
0 notes
cladust · 3 years ago
Text
এলাহাবাদ হাইকোর্টের এক বিচারপতি শেখার কুমার যাদব বলেছে গরুকে জাতীয় পশু করা হোক, তালিবান তো আফগানিস্তান দখল করেছে।
এরপর তো বিদেশীরা বলবে, আমাদের মত ভারতীয়দের গরুর মত‌ই বুদ্ধি, যে ইচ্ছে মেরে যাবে..আমরা ��িছু করব না! ভেতরে গিয়ে মারব না! তাছাড়া তালিবানরা তো গরুকে লাগায়। 🤔 এটাই প্রমাণ করে আমাদের ভারতীয় বিচারব্যবস্থা কতটা পক্ষপাতদুষ্ট, আগের দিন সুপ্রিম কোর্টের এক প্রাক্তন বিচারপতি আর‌এস‌এস প্রধানের সঙ্গে দেখা করে সুবিধাবাদী রাজনীতি করে নির্বাচনে জেতার পরিকল্পনা করে এলেন। যাদবীয় বুদ্ধি যেরম হয় আরকি। আমি শুধু ভাবছি, আমরা বাঘের দেশ থেকে গরুর লেভেলে নেমে এলাম কিভাবে? 🤔
An Allahabad HC Judge shekhar kumar yadav says, Cow should be the national animal, taliban have taken afghanistan.
Now foreigners will joke about us indians that our intelligence is the same level as a Cow, whoever want will beat us.. we won't do anything! We won't go in and retaliate! Other than that taliban sticks in cow anyways. 🤔 This proves how biased our Indian Court Justice System is, last day i heard that a former SC Judge also met with rss leadership to make plans to win elections using opportunist politics. this is jadavic intelligence level. The only thing i'm concerned now is, how we came down to the level of cow from a tiger country? #AllahabadHC #shekharkumaryadav #cow #taliban #india #afghanistan #tiger #nationalanimal #court #Justice #Science #Intelligence #Democracy #Freedom #religionpoison
0 notes
kalernouka · 3 years ago
Text
বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতা
“For the judiciary to apply checks on governmental power and action, it has to have complete freedom. The judiciary cannot be controlled, directly or indirectly, by the legislature or the executive, or else the rule of law would become illusory.”N.V Ramana. Chief Justice Supreme Court of India. না, ভারতের সুপ্রীম কোর্টের প্রধান বিচারপতি নতুন কোন কথা বলেন নি। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের বিচারব্যবস্থা…
Tumblr media
View On WordPress
0 notes
paathok · 5 years ago
Photo
Tumblr media
New Post has been published on https://paathok.news/88852
বিচার বিভাগে যা হচ্ছে তা অরাজকতা
.
সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ও আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির প্রশ্নে আইনজীবীদের ভূমিকা রাখার সময় এসেছে। আইনের শাসন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষার্থে আইন পেশায় সংশ্লিষ্টদেরই এগিয়ে আসতে হবে। দেশে বিচার বিভাগে যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে, তাকে অরাজকতা বলা যেতে পারে। তারা বলেন, আইনজীবীরা যদি ঐক্যবদ্ধভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলা না করতে পারেন, তবে সামনে বিপর্যয় অপেক্ষা করছে। বেগম খালেদা জিয়াকে সরকারের ইশারায় অন্যায়ভাবে কারাবন্দী করে রাখা হয়েছে। আইন তার নিজস্ব গতিতে চললে তিনি অবশ্যই মুক্তি পাবেন।
সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান প্রবীণ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছেন, বর্তমানে দেশের আইন অঙ্গনে একটি অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আমি মনে করি দলমত নির্বিশেষে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করার জন্য আইনজীবীরা যদি ঐক্যবদ্ধ হন তা হলে বিচারাঙ্গনে যে অবিচারমূলক কর্মকাণ্ড হয়, তা থেকে মুক্ত হওয়া সম্ভব।
তিনি বলেন, আমার দুর্ভাগ্য আমরা দলীয় রাজনীতিতে এমনভাবে আটকে গিয়েছি, যার ফলে দলীয় বিবেচনার ঊর্ধ্বে উঠে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য ভূমিকা রাখতে পারছি না। আমি মনে করি বিচার বিভাগ আমাকে অবিচারের হাত থেকে মুক্ত করার জন্য এবং দেশের মানুষ যাতে দলমত নির্বিশেষে ন্যায়বিচার পান তার জন্য আইনজীবীদের এখানে ভূমিকা রাখার সময় এসেছে।
তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের প্রতি একটি জামিনযোগ্য মামলায় যেখানে তাকে মহানগর দায়রা জজ জামিন দিয়েছেন, সেই ক্ষেত্রে এবং সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ আগাম জামিনের ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট গাইড লাইন দিয়েছেন। তার পরও তার মতো একজন সিনিয়র আইনজীবী এবং সমাজের একজন স্বনামধন্য ব্যক্তির জামিন বাতিল করে সিএমএম আদালত শুধু বেআইনি কাজ করেননি, আইনের শাসনের প্রতি চরম অবজ্ঞা প্রকাশ করেছেন। আইনজীবীরা এ বিষয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদ করেছেন। এটি আমি মনে করি বর্তমান অবস্থায় আইনের শাসনের ক্ষেত্রে আইনজীবীদের একটি বলিষ্ঠ পদক্ষেপ। আমরা যদি দলমত নির্বিশেষে এই ভূমিকা সব অবিচার ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে বজায় রাখতে পারি, তা হলে বর্তমানে যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চলছে, তা থেকে মুক্তি পাবো।
তিনি বলেন, দেশ এখন ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। গণতন্ত্র হত্যা করা হচ্ছে। দেশে অবৈধ সরকার চেপে বসেছে। গণতন্ত্র ছাড়া খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে না। এ জন্য আইনজীবীদের গণ-আন্দোলনে যেতে হবে। দেশের মানুষের মুক্তির জন্য ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করা এখন সময়ের দাবি।
এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ও সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মামলা তো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সরকার ইচ্ছা করেই বিভিন্নভাবে প্রভাব বিস্তার করছে; যাতে বেগম খালেদা জিয়া জামিন না পান। আদালতও অসহায়, আদালত আমাদের বক্তব্য শোনেন। তবে দেখা যাচ্ছে অন্যের বেলায় যে রকম আদেশ দেন, বেগম খালেদা জিয়ার ব্যাপারে সে রকম আদেশ দেন না। সে রকম আদেশ আমরা পাই না। তার পরও আমরা ক্লান্ত হই না। আইনজীবীদের কাজ বারবার অ্যাপ্রোচ করা। আদালতের বাইরে খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য যারা আন্দোলন কর��েন। আমরা আইনজীবীরা আইনগতভাবে যেটা করার, তা করছি। আমরাও চেষ্টা করব, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির চেষ্টায় শেষ পর্যন্ত আন্দোলন করব। এ ব্যাপারে শিগগিরই আমাদের জাতীয় আইনজীবী ঐক্যফ্রন্ট মিটিং করবে এবং সব আইনজীবীকে ঐক্যবদ্ধ করবে। আমরা যা কিছু করব আইনগতভাবে করব।
এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের টানা সাতবার নির্বাচিত সম্পাদক ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, মাসদার হোসেন মামলার রায়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে বিচার বিভাগ স্বাধীন থাকবে। এই আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী দলে থাকলে স্বাধীন বিচার বিভাগের কথা বলে। আর সরকারে এলে আওয়ামী লীগের অধীনে বিচারব্যবস্থা নিতে চায়। বিচার ও বিচারব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। এবার ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগ বেপরোয়া হয়ে গেছে। ছলে বলে কৌশলে এবং ভয়ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে দেশের বিচারব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করছে। সর্বশেষ প্রমাণ সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে কে সিনহা ১৬তম সংশোধনীর হাইকোর্টের রায় সুপ্রিম কোর্টে বহাল রাখার ফলে বিচার বিভাগের বিরুদ্ধে সরকারের ষড়যন্ত্র এবং সরকারের কথা অনুযায়ী রায় না দেয়ার কারণে আওয়ামী লীগের এমপি ও নেতারা যেভাবে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছেন, তা সে সময় সব পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে; তারই পরিপ্রেক্ষিতে সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাকে ক্যান্সারের রোগী বানিয়ে দেশ থেকে বিতাড়ন এবং সর্বশেষ তাকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে।
দেশের সাবেক প্রধান বিচারপতি বর্তমানে আমেরিকা কানাডায় রিফিউজি স্ট্যাটাস পাওয়ার জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছেন। তার পদত্যাগের পর ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞার সময় একটি গেজেট অনুমোদন করে নেয়া হয়। এর ফলে বিচারব্যবস্থা এখন আইন মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। এ ছাড়া একটি মানিলন্ডারিং মামলায় একজন জজ তারেক রহমানকে খালাস দেয়ার পর তাকে গ্রেফতার করার জন্য দুদক ও পুলিশ হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকে। তিনি বিদেশে আশ্রয় নিয়ে প্রাণে বাঁচেন।
তিনি বলেন, বিচার বিভাগের এ অবস্থায় উচ্চ আদালত থেকে নি¤œ আদালত সরকারের পছন্দের রায় না দিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার জামিন দিতে তারা ভয় পাচ্ছেন। জামিন দিতে তারা আতঙ্কগ্রস্ত হচ্ছে। তাকেও সাবেক প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার পরিণতি ভোগ করতে হতে পারে।
রাষ্ট্র বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে রাখতে চায় এ অবস্থায় গত বুধবার খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনের শুনানি করা তো দূরের কথা, রাষ্ট্রপক্ষের অ্যাটর্নি জেনারেলের আপত্তির কারণে বেগম খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন শুনানির জন্য বিচারপতিরা রাজি হননি। আমি মনে করি দেশের জন্য এটি অশনি সঙ্কেত। যে পর্যন্ত দেশের বিচারব্যবস্থা শক্তিশালী না হবে; আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হবে না; বিচারকেরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে না পারবেন; তত দিন দেশে শক্তিশালী গণতন্��্র আসা করতে পারি না। মান��ষের মৌলিক অধিকার রক্ষা না হলে, নিয়ন্ত্রণহীন আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সরকার তোষণ এবং অর্থনৈতিক নৈরাজ্য দেশকে হয়তো একসময় অকার্যকর রাষ্ট্রের দিকে এগিয়ে নিচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় পেশিশক্তি দিয়ে হয়তোবা অল্প কিছু দিন আটকে রাখতে পারে। আটকে রেখে বেগম খালেদা জিয়ার ন্যায্য কারামুক্তির বাধা সৃষ্টি করতে সাময়িকভাবে পারছে। একপর্যায়ে আইনজীবী ও জনতা ধৈর্য ভাঙলে এগুলোর কিছুই না। কারণ ইতিহাস বলে কোনো জাতিকে চিরস্থায়ীভাবে শৃঙ্খলিত করা যায় না। আইনের শাসন, এবং বেগম খালেদা জিয়া ন্যায়বিচার পাওয়া না পর্যন্ত আইনজীবী ও জনগণের আন্দোলন চলবে। আইনজীবীরা ঐক্যবদ্ধভাবে বেগম খালেদা জিয়ার জন্য আইনি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। দেশবাসী ঐক্যবদ্ধ বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য তারা খালেদা জিয়ার মুক্তি কামনা করছে। এবং আমি মনে করি সরকারের দমন-পীড়ন যত বাড়বে আন্দোলনের গভীরতা তত বাড়বে। বেগম খালেদা জিয়া মুক্ত হবেন ইনশা আল্লাহ।
এ বিষয়ে বিএনপির আইন সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, বেগম খালেদা জিয়া সাংবিধানিক ও আইনগত অধিকার থেকে বরাবরই বঞ্চিত হচ্ছেন। এ-জাতীয় মামলায় অন্যদের আপিল গ্রহণের সময় জামিন দেয়া হলেও বেগম খালেদা জিয়া প্রথমত অসুস্থ, তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন, দ্বিতীয়ত মহিলা এবং স্বল্পকালীন সাত বছরের সাজা মামলায় দুই বছর কারাগারে অতিক্রান্ত হলেও তাকে জামিন দেয়া হচ্ছে না। তিনি বলেন, আইন যদি তার নিজস্ব গতিতে চলত, তা হলে এরই মধ্যে বেগম খালেদা জিয়া কারাগার থেকে মুক্তি পেতেন। যেহেতু আইন তার নিজস্ব গতিতে চলছে না, সে জন্য বেগম খালেদা জিয়া জামিন পাচ্ছেন না। তিনি বলেন, আইন ও সংবিধান সমুন্নত রাখার জন্য আইনজীবীরা এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য তারা কাজ করবেন।
সূত্র- নয়া দিগন্ত
0 notes
sentoornetwork · 5 years ago
Text
নির্ভয়াকাণ্ডে অভিযুক্তের আর্জির শুনানি সুপ্রিম কোর্টে
New Post has been published on https://sentoornetwork.com/nirbhaya-review-petition-rejected-in-sc/
নির্ভয়াকাণ্ডে অভিযুক্তের আর্জির শুনানি সুপ্রিম কোর্টে
বিশেষ সংবাদদাতা : নির্ভয়াকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত অক্ষয় সিংয়ের ফাঁসি বদলে কম সাজার আবেদন নিয়ে শুনানি চলছে সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতির বেঞ্চে। বুধবার বিচারপতি আর ভানুমতি, বিচারপতি অশোক ভূষণ ও বিচারপতি এস এ বোপান্না তার ফাঁসির সাজা বহাল রাখেন। গত ২০১৭ সালের মে মাসে সুপ্রিম কোর্ট এই মামলায় অভিযুক্ত মুকেশ, অক্ষয়, পবন ও বিনয়ের সাজা মকুবের আর্জি খারিজ করে দেয়। ২০১২ সালের ডিসেম্বরে রাতে দিল্লিতে ২৩ বছরের প্যারামেডিক্যাল ছাত্রী নির্ভয়াকে বাসের ছয়জন ধর্ষণ করে নিষ্ঠুর অত্যাচার চালিয়ে চলন্ত বাস থেকে ফেলে দেয়। এই ঘটনায় দেশজুড়ে প্রতিবাদ আন্দোলন ফেটে পড়ে। সেই নির্যাতিতা তরুণীর মৃত্যু হয়। ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে নিম্ন আদালত চারজনকে ফাঁসির সাজা দেয়। তার আগেই মূল অভিযুক্ত বাসের চালক জেলের মধ্যে আত্মঘাতী হয়। অভিযুক্তদের একজন নাবালক থাকায় জুভেনাইল আদালতে তার বিচার হয়। চারজন ফাঁসির সাজার বিরুদ্ধে দিল্লি হাইকোর্টে আবেদন করে এবং তা খারিজ হয়ে যায়। তখন তারা সুপ্রিম কোর্টে যায়। শাস্তি কা��্যকর করা নিয়ে টালবাহানা চলতে থাকায় নির্ভয়ার মা ও বাবা দেশের বিচারব্যবস্থা দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
0 notes
khoborbarta · 5 years ago
Text
শুদ্ধি অভিযানের নামে জনগণকে বোকা বানানোর চেষ্টা: মান্না
শুদ্ধি অভিযানের নামে জনগণকে বোকা বানানোর চেষ্টা: মান্না
‘শুদ্ধি অভিযানের নামে জনগণকে বোকা বানানোর চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ করেছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।
দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লা��ে নাগরিক ঐক্যের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
মান্না বলেন, শুদ্ধি অভিযানের নামে যা হচ্ছে, তা আইওয়াশ। এর মাধ্যমে জনগণকে বোকা বানানোর চেষ্টা চলছে।
দেশের আইন ও বিচারব্যবস্থা ‘দেউলিয়া’ বলেই…
View On WordPress
0 notes
ctnews7 · 6 years ago
Text
‘খালেদা জিয়ার বিচার ও জামিনে সরকারের হস্তক্ষেপ নেই’
‘খালেদা জিয়ার বিচার ও জামিনে সরকারের হস্তক্ষেপ নেই’
ব্রা‏হ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি: বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিচার ও জামিনে সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ নেই বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।
��িনি বলেন, বিচারব্যবস্থা সম্পূর্ণ স্বাধীন। আর এ কারণেই দুর্নীতিবাজদের বিচার হচ্ছে।
শুক্রবার সকালে ব্রা‏হ্মণবাড়িয়ার কসবায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
বিএনপি…
View On WordPress
0 notes
kalernouka · 3 years ago
Text
সুপ্রীমকোর্টে বিদ্রোহ ও অতঃপর
সুপ্রীমকোর্টে বিদ্রোহ ও অতঃপর
ভারতীয় সংসদীয় গণতন্ত্রের অন্যতম স্তম্ভ বিচার ব্যবস্থাই আজ প্রশ্নের মুখে। প্রশ্ন তুলেছেন আর কেউ নন, খোদ বিচারপতিরাই। না সব বিচারপতিই নন। ��িশেষ কয়েকজন। হাতে গোনা মাত্র। কিন্তু যাঁরা ভারতীয় বিচার ব্যবস্থাকে সর্বসমক্ষে এমন এক গভীরতর প্রশ্নের সামনে দাঁড় করিয়ে দিলেন নজিরবিহীন ভাবে, তাঁরা কেউই আবার যে সে বিচারপতি নন। খোদ সুপ্রীম কোর্টের অভিজ্ঞতম বরিষ্ঠ সব বিচারপতি। তাঁদের কথা এড়িয়ে যাওয়া মানে ঘরে আগুন লাগলে চোখ বুঁজে বসে থাকার সামিল। কিন্তু কি তাঁদের মূল অভিযোগ? অভিযোগ সত্যই গুরুতর। অভিযোগ ভারতীয় সুপ্রীমকোর্টের প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধেই। অভিযোগ নানাবিধ নিয়ম বহির্ভূত কাজকর্মের। ভারতের মত বৃহত্তম গণতান্ত্রিক একটি দেশের সুপ্রীমকোর্টের প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধেই অন্যান্য সহ বিচারপতিদের এহন অভিযোগের গুরুত্ব সহজেই অনুমেয়। বস্তুত স্বাধীনতার সাত দশকে এহন নজির এই প্রথম। আর সেই কারণেই আলোড়ন উঠেছে দেশের সর্বত্র।
ভারতবর্ষের সাধারণ মানুষ আজও বসে থাকে সুপ্রীম কোর্টের ভরসায়। আজও অধিকাংশ মানুষই বিশ্বাস করে সুপ্রীম কোর্টের বিচার ব্যবস্থার নিরপেক্ষতায়। আজও সুপ্রীম কোর্টের আইনি দিকনির্দেশকে চুড়ান্ত বলেই স্বীকার করে নিতে অভ্যস্থ সকলেই। কিন্তু সেই সুপ্রীম কোর্টের প্রধান বিচারপতির নিরপেক্ষতার বিষয়েই যদি প্রশ্ন উঠে যায়, তবে অবস্থা যে কতটা ভয়ানক সেটি আর বলার অপেক্ষা রাখে না। অভিযোগকারী বিচারপতিদের কথায় এটা সুস্পষ্ট যে প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলি ভারতীয় বিচার ব্যবস্থার দূর্বলতার বাস্তবিক পরিস্থিতির হিমশৈলীর চূড়া মাত্র। ভারতবর্ষের বিচারব্যবস্থা মূলত ঔপনিবেশিক ঘরাণার। ব্রিটিশের তৈরী করে দিয়ে যাওয়া পরিকাঠামোর উপরেই নির্ভরশীল। এই বিচার ব্যবস্থার প্রধান বৈশিষ্টই হলো দীর্ঘসূত্রিতা। কিন্তু বিচারপতিদের নিরপেক্ষতার বিষয়ে জনসাধারণের বিস্তর অভিযোগ থাকলেও খোদ সুপ্রীমকোর্টের বিচারপতিরাই যখন একই অভিযোগ তোলেন প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে, তখন গোটা দেশের ভিতটাই টলে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরী হয়। ব্রিটিশের ফেলে যাওয়া রাজ্যপাটের মূল বৈশিষ্টই হলো ফেল কড়ি মাখো তেল। সকলেই জানে যার অর্থের জোর যত বেশি তার পক্ষেই আইনি সহায়তা পাওয়া তত বেশি সহজ। আর ক্ষমতার গদীতে বসে গেলে সেই আইনকে নিজের স্বার্থে কাজে লাগানো এদেশে নতুন কোন ঘটনা নয়। কিন্তু তবুও গণতন্ত্রের শেষ রক্ষাকবচ ভারতীয় সুপ্রীমকোর্টের নিরপেক্ষতা নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে বিশেষ কোন সংশয় ছিল না। সকলেরই ধারণা ছিল, অন্যান্য আদালত যে রায়ই দিক, শেষ অব্দি সুপ্রীমকোর্টে পৌঁছাতে পারলে সঠিক বিচারটুকু অন্তত পাওয়া যাবে। আর সাম্প্রতিক এই ঘটনা সুপ্ত লালিত সেই বাসনাতেই জল ঢেলে দিল একেবারে। অভিযোগকারী বিচারপতিদের কথায় এটা সুস্পষ্ট যে প্রধান বিচারপতির কর্মপদ্ধতি সুপ্রীমকোর্টের রীতিনীতিকে লঙ্ঘন করে চলেছে। এবং এর ফলে বিচারব্যবস্থার আইনী স্বচ্ছতা নিয়ে ও প্রধান বিচারপতির নিরপেক্ষতা নিয়েই সংশয় তৈরী হয়েছে। বস্তুত ভারতীয় গণতন্ত্রের উপর এটি একটি প্রবল আঘাত। এখন সুপ্রীমকোর্টের প্রধান বিচারপতির উদ্দেশ্যে কোন কোন বিচারপতির নির্দিষ্ট কি কি অভিযোগ, সেই সকল তথ্য সংবাদ মাধ্যম মারফত সর্বত্রই ছড়িয়ে গিয়েছে। আগ্রহী ব্যাক্তিরা খুব সহজেই সেই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পেয়ে যাবেন। বর্তমান প্রবন্ধের বিষয় সেই সকল তথ্যের নির্ঘন্ট নির্মাণ নয়। আমরা বুঝে নিতে চাইছি, এই ঘটনার মূল প্রক্ষিতটুকু ও এর অভিঘাত ঠিক কিরকম হতে পারে। ব্রিটিশের হাত থেকে ক্ষমতা হস্তান্তরের পর এদেশের শাসনকার্য মূলত এদেশীয় শাসক শ্রেণীর স্বার্থ রক্ষার কাজই করে এসেছে বরাবর। আর সেই কাজে সমগ্র বিচারব্যবস্থাকেই শাসক শ্রেণীর স্বার্থরক্ষায় ব্যবহার করাটাই ভারতীয় গণতন্ত্রের রীতিরেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়ে গিয়েছে বিগত সাত দশক ব্যাপি সময় সীমায়। ফলে ভারতীয় বিচার ব্যবস্থার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন নতুন কোন বিষয় নয়। কিন্তু সুপ্রীমকোর্টের বিচারপতিদের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন কিন্তু এই প্রথম। এবং অভিযোগ উঠেছে একেবারে অভ্যন্তর থেকেই। ভারতীয় রাজনীতিতে শাসক শ্রেণী তার ক্ষমতাবলে আইনকে প্রয়োজনে অপ্রয়োজনে নিজের দিকে টেনে নেবে, এ আর নতুন কথা কি। ভারতীয় জনগণ এতেই অভ্যস্থ। কিন্তু তার পরেও জনমানসে এতদিন একটি দৃঢ় বিশ্বাস ছিল যে, শেষ পর্য্যন্ত সুপ্রীমকোর্ট অব্দি যেতে পারলে নিরপেক্ষ বিচার নিশ্চয়ই পাওয়া যাবে। এবং সেরকম বিশ্বাস করার যথেষ্ঠ কারণও ছিল। সেরকম দৃষ্টান্তের অভাব নেই মোটেও। কিন্তু খোদ প্রধান বিচারপতির নিরপেক্ষতা নিয়েই যদি প্রশ্ন উঠে যায়, তবে জনমানসের প্রতিক্রিয়া যে মোটেই সুখকর হয় না, সে কথা বলাই বাহুল্য। এখন, বিষয়টা হচ্ছে গণতন্ত্রের ভবিষ্যত নিয়েই। আজকের অভিযুক্ত প্রধান বিচারপতির অবসরের পর নতুন যাঁরা প্রধান বিচারপতি হবেন ভবিষ্যতে, তাঁরাও যে সব ধোয়া তুলসীপাতা হবেন, সে বিষয়ে নিশ্চয়তা কে দেবে? এবং যেখানে সুপ্রীমকোর্টের প্রধান বিচারপতির নিরপেক্ষতা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গেল, সেখানে দেশের অন্যান্য আদালতের বিচারপতিদের নিরপেক্ষতা নিয়ে তো আর দায়বদ্ধতার জায়গাই রইল না। কি ভয়ানক এক পরিস্থিতির উপর দাঁড়িয়ে ভারতীয় গণতন্ত্র! আজকে এটা দিবালোকের মতো সুস্পষ্ট যে, প্রয়োজনে শাসক শ্রেণীর ক্ষমতার কাছে বিচারকও নতজানু হতে বাধ্য। আর তা না হলে তাঁর ব্যক্তিগত নিরাপত্তাও আর সুনিশ্চিত নয়। এবং শাসকদলও সবসময় চাইবে তাদের বশংবদ বিচারপতিরাই সর্বোচ্চ আদালতের দায়িত্বও সমালাক। এবং এটাই যদি ভারতীয় গণতন্ত্রের রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়ে যায়, তবে এই গণতন্ত্রের ভিতর দিয়েই স্বৈরতান্ত্রিক শক্তির উত্থান অবশ্যাম্ভাবি কিন্তু। তখন সুপ্রীমকোর্টও ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক শক্তির হাতের পুতুলেই পরিণত হবে। ভারতীয় গণতন্ত্রের পক্ষে সেটা আদৌ সুখকর হবে না। একটু খেয়াল করলেই দেখা যাবে, আজকের ভারতবর্ষের ��িভিন্ন প্রান্তের সমাজজীবনেই ক্ষমতাসীন শাসকদলের নিরঙ্কুশ দাপট। এই যে নিরঙ্কুশ দাপট, এটাই কিন্তু স্বৈরতন্ত্রের আগাম পূর্বাভাস। এবং অধিকাংশ সর্বভারতীয় রাজনৈতিক দলেরই মূল কার্যক্রম সারা ভারতের
সর্বত্র একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করা। তাদের সকল রাজনৈতিক কর্মসূচীই সেই লক্ষ্যেই পরিচালিত হতে থাকে। এবং যে দল যে অঞ্চলেই প্রশাসনিক ক্ষমতার গদী দখল করে নেয়, তার প্রথম কাজই হয় আইনকে নিজের স্বার্থে কাজে লাগানোর চেষ্টা করা। এর থেকে ভয়াবহ ব্যাপার গণতন্ত্রে আর কি হতে পারে? অথচ ভারতীয় গণতন্ত্রে এটাই প্রচলিত রেওয়াজ। ফলে আজকে সর্বোচ্চো আদলতের প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খুব একটা বিস্ময়কর ব্যাপারও নয়। এটাই তো হওয়ার কথাই ছিল। এবং সেটাই হয়েছে। শাসক শ্রেণী তার স্বার্থেই সমাজকে পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রণ করে। আর সেই কাজে আইন আদালত বিচার ব্যবস্থাকে নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে সবসময় তৎপার থাকে। সংসদীয় গণতন্ত্রের পক্ষে এর থেকে বড়ো অভিশাপ আর কি হতে পারে? দুঃখের বিষয়, স্বাধীন ভারতের সূচনালগ্ন থেকেই এই অভিশাপই এই দেশের গণতন্ত্রের মূল পরিচয় হয়ে উঠেছে। প্রতিটি রাজনৈতিক দলই এই অভিশাপটিকেই পাখির চোখ করে নিয়ে ক্ষমতা দখলের রাজনীতিতে অগ্রসর হয়েছে। আর জনগণ নিরব দর্শক হয়ে থেকেছে। কিন্তু এই পরিস্থিতির সবচেয়ে ভয়াবহ দিকটি হলো এই যে, এই সুযোগটাকেই কাজে লাগিয়ে কোন একটি স্বৈরাচারী শক্তি যদি একবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে, তবে ভারতীয় গণতন্ত্রের এই দুর্বলতম দিকটি দিয়েই সেই শক্তি গোটা ভারতটাকেই একদিন নিজেদের কুক্ষিগত করে নেবে। আর সেই কুক্ষিগত করে নেওয়ার পথে সর্বোচ্চ আদালতেই যদি নিজেদের বশংবদ বিচারপতিদের বসিয়ে দেওয়া যায়, তবে তো সোনায় সোহাগা। তার থেকে সহজ পথ আর কি হতে পারে? সুপ্রীমকোর্টের চার বিচারপতির সাম্প্রতিক বিদ্রোহ ঠিক এই কারণেই এতটা গুরুত্বপূর্ণ। ফলে বিচারপতিদের এই অভিযোগ নির্দিষ্ট একজন প্রধান বিচারপতিকে কেন্দ্র করেই ধরে নিলে কিন্তু মস্ত বড়ো ভুল হবে। তাদের অভিযোগের মূল গুরুত্ব অনুধাবন না করতে পারলে ভবিষ্যত খুব একটা আশাপ্রদ নয়। আজকের ভারতবর্ষের সমাজ ও রাজনীতিতে স্বৈরতান্ত্রিক শক্তিগুলির বাড়বাড়ন্ত লক্ষ্য করলেই প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের মূলে প্রবেশ করা যাবে। তখন বোঝা যাবে মূল বিষয়টি আদৌ কোন ব্যক্তি মানুষের নৈতিকতার অবক্ষয়ের বিষয় নয়। মূল বিষয়টি ভারতীয় গণতন্ত্রের অস্তিত্ব রক্ষার। মূল বিষয়টি ভারতবর্ষের মধ্যে পুষ্ট হতে থাকা স্বৈরতান্ত্রিক শক্তিগুলিকে চিহ্নিতকরণের। মূল বিষয়টি ভারতীয় জনগণের সচেতন হয়ে ওঠার। মূল বিষয়টি ভারতের ভবিষ্যতের। ১৪ই জানুয়ারী’ ২০১৮ কপিরাইট শ্রীশুভ্র কর্তৃক সংরক্ষিত
0 notes
onusondhitsa · 6 years ago
Text
তত্ত্ব ছেড়ে জীবন
তত্ত্ব ছেড়ে জীবনে। লেখক : শরীফ আবু হায়াত অপু। শরয়ি দৃষ্টিকোণ থেকে নিরীক্ষণ করে ভুল সংশোধন করেছেন : শাইখ আকরামুযযামান এবং ড. মানজুরে ইলাহী। বইটি প্রকাশ করেছে সিয়ান পাবলিকেশন। বইয়ের রিভিউ লেখা একরকম ছেড়েই দিয়েছিলাম, তাই এ বই নিয়েও কিছু বলার ইচ্ছা ছিল না। কিন্তু অপবাদের তীরগুলো যখন গায়ে এসে বিঁধে, তখন দু-চার কথা বলারও বোধ হয় কোনো বিকল্প থাকে না।
এ বইটি নিয়ে আমি আপাতত কোনো পর্যালোচনা লিখব না। ��িখলেও সবিশেষ লাভ হবে না। বলা হবে, এত বড় বড় সালাফি শাইখ এ বইটাকে সম্পাদনা করে দিলেন, সিয়ানের মতো আন্তর্জাতিক মানের দাবিকারী পাবলিকেশন বইটা প্রকাশ করল, সেই ২০১১ থেকে আজ সাত বছর ধরে এত এত পাঠক বইটা পড়ল, কারও চোখে কিছু ধরা পড়ল না। সব ধরা পড়ল এরই চোখে! আসলে সবই বিদ্বেষ! লেখকের খ্যাতি, সম্পাদকের গ্রহণযোগ্যতা এবং প্রকাশনীর সুনামকে নষ্ট করার জন্য সব ষড়যন্ত্র! ব্লা ব্লা...।
যাহোক, এসব কারণে আপাতত শুধু কিছ��� পয়েন্ট কোট করব। দু-এক জায়গার বন্ধনীর মধ্যে এদিক-ওদিক সামান্য আলোকপাত করব। আর এ ছোট্ট পোস্টে সবগুলো আপত্তিকর পয়েন্ট কোট করা সম্ভবও নয়। কারণ, সব পয়েন্ট কোট করা হলে আর প্রতিটার সঙ্গে অল্পস্বল্প পর্যালোচনা যোগ করা হলে এটা আর পোস্ট থাকবে না; হয়ে যাবে স্বতন্ত্র পুস্তিকা। কেউ বলতে পারেন, কোটকৃত পয়েন্ট থেকে অনেক সময় ভুল বোঝা যায়; কিন্তু আগপাছ দেখলে মনে আর খটকা থাকে না। তাদের জন্য প্রতিটা পয়েন্টের শেষে পৃষ্ঠা নম্বর সংযুক্ত করে দিয়েছি। এবার চাইলে মূল বই খুলে এই পয়েন্টগুলোকে মিলিয়ে নিন, আমাদের কোনো জালিয়াতি আছে কি না তাও চেক করে নিন। আর সাথে আগপাছ মিলিয়েও কয়েকবার করে পড়ে নিজের মতো করে বিচার করুন।
এটা কোনো জরুরি বিষয় নয় যে, এই পয়েন্টগুলো সবাই একভাবে মূল্যায়ন করবে। আর এটা কখনো হওয়ারও নয়। আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাআহ, খারেজি, মুরজিয়া, জাহমি, মুতাজিলা, শিয়া, কাদিয়ানি থেকে শুরু করে গণতান্ত্রিক ইসলামপন্থী; আলিম, অ-আলিম, সচেতন, অচেতন, সূক্ষ্মদর্শী, আঁতেল, হেকমতি, চাটুকার, সত্যান্বেষী, অকুতোভয়—একেক জনের দৃষ্টিভঙ্গি হবে একেক রকম। যার কাছে এগুলো সমস্যাজনক মনে হবে তাকেও সালাম। আর যার কাছে এগুলোকেই যথার্থ মনে হবে তাকেও সালাম। সকলের জন্যই শুভকামনা। যে বলবে, এগুলো মৌলিক কোনো বিষয় না, এর দ্বারা পাঠকের মন-মননও প্রভাবিত হবে না, কুরআন ছাড়া সব গ্রন্থে এমনটা ঘটতেই পারে, এরপরও বইটা তো কত সুন্দর, আপনারা কি চান দুনিয়ার সবাই আপনাদের মানহাজের ওপর উঠে আসুক আর আহলুস সুন্নাহর বাইরের মানহাজগুলোকে পরিত্যাগ করুক, তার প্রতিও জ্ঞাপন করছি আন্তরিক অভিনন্দন। ইন্নামা আলাইনাল বালাগ। লাসনা আলাইহিম বি মুসাইতির।
বইয়ের কিছু পয়েন্ট রয়েছে, যেগুলো হানাফি- সালাফি, আশআরি-আসারি দ্বন্দ্বের পর্যায়ে। এমন পয়েন্ট রয়েছে বড় বড় কয়েকটা। এগুলোকে আমরা আমাদের লেখায় উদ্ধৃত করব না। কারণ, সালাফি ধারার প্রকাশন�� সালাফি বারতা প্রচার করবে, এটাই স্বাভাবিক। এ জন্য তাদের আলাদাভাবে নিন্দা করারও কিছু নেই। একই কাজ তো অন্যরাও করে থাকে। যাহোক, আল্লাহর নামে শুরু করছি। এটা অজানা নয় যে, এই লেখার পরিণতি কী হবে। তবে পরিণতি যা-ই হোক না কেন, যা বলার তা বলতেই হবে। ‘কখনোই পরোয়া করিনি যে, আমার ব্যাপারে কী বলা হচ্ছে; তবে সর্বদা তা-ই বলেছি, যা বলা আমার ওপর অপরিহার্য।’ প্রিয় শাইখ প্রখ্যাত মুহাদ্দিস আহমাদ মুহাম্মাদ শাকির রহ.-এর এই বক্তব্য ভেতরে সাহস এবং অনুপ্রেরণা সৃষ্টি করে।
১. ইসলাম পুরোটা না বুঝে খণ্ডিত বুঝ নিয়ে অনেক মানুষ নিজে বিভ্রান্ত হয়, অন্যদের বিভ্রান্ত করে ও সমস্ত মুসলিমদের বিপদে ফেলে। একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর জিহাদের আয়াতের ব্যাখ্যার চোটে আফগানিস্তান আর ইরাক এক সাথে কাত হয়ে গেছে! হতে পারে উনাদের আন্তরিক ইচ্ছা ছিল আল্লাহকে খুশি করা; কিন্তু মুসলিম শাসকদের কাফের ঘোষণা দিয়ে, বিন বাযের মতো আলিমদের পরামর্শ না শুনে, নিজের খেয়াল খুশি মতো জিহাদ করে তারা মুসলিম উম্মাহর অপরিমাণ ক্ষতি করেছেন। আল্লাহর রাসুলের সুন্নাত উপেক্ষা করে কিছু নিরীহ মানুষের উপর হামলা করে আরও কত নিরীহ মুসলিমের চোখের জলের যে কারণ হয়েছেন তা আল্লাহই জানেন। (পৃ. ২০৪)
২. যারা বলেন খিলাফাহ চাই, যারা বলে বেড়ান ইসলাম কায়েম করব, যারা বলেন বয়ান হবে বহুত ফায়দা হবে, তাঁদের কেউই সলাতে আল্লাহর সামনে ভেদাভেদ ভুলে, বিশ্বাসীদের অনুসৃত পথ অনুসরণ করতে পারেন না। এই লোকগুলোকে দিয়ে মাসজিদের বাইরে কীভাবে ইসলাম কায়েম হবে? রাসুলুল্লাহ সা.-এর কথার সত্যতা প্রমাণ করে আমরা ইসলামের দিকে ডাকা মানুষদের মধ্যে খালি বিভেদ আর হিংসা দেখি। দেওয়ানবাগি পীরের ভক্তরা বলে চরমোনাইরা কাফের আর চরমোনাই পীরের মুরিদরা বলে দেওয়ানবাগিরা কাফের। জামাতিরা তাবলিগিদের দেখতে পারে না, তাবলিগিরা জামাতিদের সহ্য করতে পারে না। রাজারবাগী পীরের দলের কাজ দেয়ালে চিকা মারা আর সব কাজকে হারাম ঘোষণা করা। একই ইসলামের নামে কত দল আছে আল্লাহই জানেন। সবাই নাকি ইসলাম চায় কিন্তু কেউ কাউকে সহ্য করতে পারে না! তাইতো আল্লাহ মুসলিমদের দলে দলে বিভক্ত হওয়াকে নিষিদ্ধ করেছেন। (পৃ. ১৮১-১৮২)
(মন্তব্য : বাতিলপন্থী বা বিদআতি মুসলিমদের সঙ্গে আল-বারা’র কতটুকু নির্দেশিত ও অনুমোদিত, সেই মাসআলা বোধ হয় লেখকের জানা নেই। আর কার সঙ্গে কাকে মেলান, হকপন্থী-বাতিলপন্থীকে পাশাপাশি দাঁড় করিয়ে যেভাবে সমীকরণ টানেন, তা সত্যিই বিস্ময়কর।)
৩. সরকারের মাথাদের একশ বার গালি দিচ্ছি কাফের বলে। কখনো খোঁজ নিয়েছি—তাকে কেউ কখনো বলেছে কি না যে, আল্লাহর আইন দিয়ে শাসন না করার পরিণাম কী হতে পারে? শাসক যদি আল্লাহর আইন অনুসারে দেশ শাসন না করে তাহলে তাকে জিজ্ঞেস করা হবে, কেন করেনি; আমাকে উনার হয়ে জবাবদিহি করতে হবে না। কিন্তু কোনোভাবে যদি উনি আল্লাহর কাছে মুসলিম হিসেবে গণ্য হন, তবে উনাকে কাফের বলার কারণে আমি নিশ্চিত কাফের হয়ে যাব। কারণ স্বয়ং রাসুলুল্লাহ সা. বললেন, ‘যেকোনো ব্যক্তি অন্য ব্যক্তিকে কাফের আখ্যা দিলে তাদের দুজনের যেকোনো একজন কাফের হিসেবে গণ্য হবে।’ অথচ আল্লাহ সুবহানাহু ইসলামের দাবিদারকে কাফের বলতে নিষেধ করলেন, ‘যে তোমাদেরকে সালাম করে, তাকে বলো না যে, তুমি মুমিন নও।’ (পৃ. ১৪৮)
(মন্তব্য : ‘উনাকে কাফের বলার কারণে আমি নিশ্চিত কাফের হয়ে যাব’— কী আজিব নিশ্চয়তা! আর হাদিসের অনুবাদের কী অবস্থা! ইন্নালিল্লাহ। জাহেরি ছাড়া আর কেউ এভাবে চরম অভিনব ফিকহ উদগীরণ করে কি না, তা আল্লাহই ভালো জানেন। ‘আল্লাহ সুবহানাহু ইসলামের দাবিদারকে কাফের বলতে নিষেধ করলেন’—হায়রে, উপমহাদেশীয় কোনো আলিমই মাসআলাটা বুঝলেন না, আরব আলিমরাও কিনা বোকার মতো তাদের সমর্থন করে বসলেন, তারা কিনা কাদিয়ানিদের সদলবলে কাফির ফতোয়া দিয়ে ছাড়লেন, অথচ কাদিয়ানিরা নিজেদের নিখাদ মুসলিম দাবি করে! একইভাবে শিয়াদেরও কাফির বলা ফতোয়া দেওয়া হচ্ছে, অথচ তারা নিজেদের মুসলিম বলে দাবি করে। সালাফের জামানা থেকে যুগ যুগ ধরে এভাবেই চলে আসছে। একেক যুগে একেক গোষ্ঠীকে তাকফির করা হয়েছে। ‘উসুলুত তাকফির’ এবং সালাফের মানহাজ সম্পর্কে কারও শতভাগ অজ্ঞতা থাকলেই বোধ হয় তার পক্ষে এমন মন্তব্য করা সম্ভব।)
৪. আমরা আজ বাংলাদেশকে দারুল কুফর বলছি! আল্লাহু আকবার! রাসুলুল্লাহ সা. কোনো জনপদে আক্রমণ করার আগে ভোরবেলায় কান পেতে রাখতেন আজান শুনতে। আজান শুনলে তিনি আক্রমণ না করে ফিরে যেতেন। আর আজ আমরা এমন শক্ত মুসলিম হলাম যে, আল্লাহর আইনের শাসন নেই বলে আমরা এ দেশকে দারুল কুফর তকমা লাগিয়ে দিলাম, ভোরবেলায় যে দশবার আজান শোনা গেল সেটার প্রতি ভ্রূক্ষেপও করলাম না। সৌদি আরবে খলিফার বদলে বাদশাহ কেন? এরা কাফের। সৌদি আলিমরা তাদের পা-চাটা দালাল! এরা জিহাদ করে না কেন? এরা কাফের। (পৃ. ১৪৮)
(মন্তব্য : ইমামগণের সুস্পষ্ট বক্তব্যের আলোকে প্রমাণিত, কোনো দেশ দারুল ইসলাম হতে পারে; যদিও তার সকল নাগরিক অমুসলিম হয়; যেহেতু তাতে ইসলামের শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত রয়েছে। নাগরিকরা অমুসলিম হলেও রাষ্ট্র ইসলামি শাসনক্ষমতার অধীন রয়েছে। একইভাবে কোনো দেশ দারুল কুফর হতে পারে; যদিও তার অধিকাংশ নাগরিক মুসলিম হয়ে থাকে। কারণ, তাতে কুফরের শাসন ও বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত রয়েছে। নাগরিকরা মুসলিম হলেও রাষ্ট্র কুফরি শাসনক্ষমতার অধীন রয়েছে। ‘যেসব ��েশে ইসলামি শাসনব্যবস্থা নেই, যদিও তাতে মুসলমানরা ওয়াজ-মাহফিল, ইদ-জামাআত ইত্যাদি আদায় করতে পারে, তা দারুল ইসলাম হিসেবে পরিগণিত হবে না।’ (মাজাল্লাতুল কানুন ওয়াল ইকতিছাদ, যিলহজ সংখ্যা, ১৩৫৪ হিজরি, পৃ. ২০৩, তা‘লিক : ১) এ জন্যই সারাখসি রহ. বলেন, ‘দারকে আমাদের দিকে বা তাদের দিকে নিসবত করাটা মূলত ক্ষমতা এবং প্রাধান্যতার বিচারে।’ (আলমাবসুত, সারাখসি : ১০/১১৪) এ বিষয়টাকেই আল্লামা কাসানি রহ. আরও স্পষ্ট করে এভাবে বলেছেন, ‘কোনো রাষ্ট্রে কুফরের আহকাম-বিধিবিধান প্রকাশিত হলে তা দারুল কুফর হয়ে যায়। ...রাষ্ট্র শুধু কুফরের বিধানাবলী প্রকাশিত হওয়ার দ্বারাই দারুল কুফর বলে গণ্য হয়।’ (বাদায়িউস সানায়ি : ৯/৪৩৭৫; আরও দেখুন—আহকামুদ দিয়ার, আবিদ সুফয়ানি : ১৫)। এ বিষয়ক বিস্তারিত আলোচনা ‘দ্রোহের তপ্ত লাভা’য় দ্রষ্টব্য।
আর সৌদি-সংক্রান্ত বিষয়টা নিয়ে কিছুই বলার নেই। কারণ, ব্যাপকভাবে মাদখালিরা সৌদি শাসকদের বিরোধিতাকে এভাবেই মূল্যায়ন করে। তারা সৌদি পূজার মধ্যেই সার্বিক কল্যাণ দেখতে পায়। এখান থেকেই তো কেউ কেউ মুহাম্মাদ বিন সালমান নিয়েও ইয়া বড় বড় লেখা লেখে, এমনকি তার মধ্যে নাকি মাহদির প্রতিচ্ছবিও দেখতে পায়। যারা সৌদি শাসক এবং দরবারি আলিমদের বিরোধী, তাদের ওপর কী সুন্দর অপবাদ চাপানো হলো এবং বিরোধিতার কার্যকারণকে নিজের মনমতো বিশ্লেষণ করে দেওয়া হলো! সুবহানাকা হাজা বুহতানুন আজিম!)
৫. ইমাম মালিক বলেন, ‘নিরানব্বই দিক থেকে যদি কোনো মুসলিম ব্যক্তিকে কাফের আখ্যাদানের সম্ভাবনা থাকে আর এক দিক থেকে তার ঈমানদার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে; তাহলে মুসলিমের উপর ভালো ধারণা পোষণ করার লক্ষ্যে আমি তাকে ঈমানদার হিসেবেই গণ্য করব।’ (পৃ. ১৪৯)
(মন্তব্য : অনুবাদ এবং অপপ্রয়োগের কী আজিব দৃষ্টান্ত! অবশ্য ভালোই হলো। এ ব্যাখ্যা মেনে নিলে পৃথিবীতে কখনো কোনো মুসলিম আর কাফির হবে না। কাদিয়ানিরাও তো হওয়ার কথা নয়। কারণ, শুধু একদিক কেন, তাদের প্রতি সুধারণা রাখার দিক রয়েছে অসংখ্য।)
৬. কালের পরিক্রমায় মুসলিম খিলাফাত লুপ্ত হলো। পরবর্তী প্রজন্মের মুসলিম উম্মাহর চিন্তাশীলরা ভাবতে শুরু করলেন যে, সমাজের মঙ্গল করতে হলে আগে দখল করতে হবে ক্ষমতা, শাসনতন্ত্র/হুকুমাত/খিলাফাহ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। গদিতে বসে জনগণকে হুকুম করলেই জনগণ সুরসুর করে তাওহীদ মেনে নেবে, কবর-মূর্তি-ব্যক্তি পূজা ছেড়ে দেবে। ...ধর্ম কখনো মানুষের ওপর চাপিয়ে দেওয়া যায় না। ইসলামি শরীয়াতে কখনোই ‘টপ টু বটম’ অ���যাপ্রোচ কার্যকর হবে না, হবে ‘বটম টু টপ’ অ্যাপ্রোচে। এ জন্য ক্ষমতার হাতছানিকে উপেক্ষা করে রাসুলুল্লাহ সা. ১৩ বছর ধরে জনে জনে তাওহীদের শিক্ষা দিয়ে গিয়েছিলেন। মদিনার মানুষরা তাওহীদ উপলব্ধি করার পর স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তাঁকে শাসনভার অর্পণ করেছিলেন। আগে ক্ষমতা পরে ইসলাম—এটা কখনোই হওয়ার নয়। ইসলাম না বুঝিয়েই জোর এর আইন জোর করে মানানোর পরিণতি : তালিবানদের পতনের সাথে সাথে কাবুলের সেলুনে দাড়ি শেভ করার লাইন। তথাকথিত ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানে বিশুদ্ধ তাওহীদ প্রচারকারী আলিমদের সুন্নী ‘অপবাদ’ দিয়ে হত্যা করা হয়। এখান থেকে পালিয়ে গিয়ে মানুষ ইসলাম রক্ষা করে! (পৃ. ২৬-২৮)
(মন্তব্য : মদিনার মানুষরা তো স্বতংপ্রণোদিত হয়ে শাসনভার অর্পণ করেছিল, কিন্তু মক্কাবাসীরা করেনি, উলটো বরং চুক্তি লঙ্ঘন করেছে বিধায় তাদের থেকে সশস্ত্র অপারেশন চালিয়ে ক্ষমতা ছিনিয়ে নেওয়া হলো। খোলাফায়ে রাশেদিন থেকে শুরু করে উসমানি সালতানাত পর্যন্ত চলল নতুন নতুন দেশ দখল করে তাতে ইসলাম প্রতিষ্ঠার ধারা। এমনকি ফিকহের গ্রন্থাদিতে রাষ্ট্রীয়ভাবে ইসলামের নতি স্বীকার করেনি, এমন সব পার্শ্ববর্তী কুফরি রাষ্ট্রগুলোতে বছরে অন্তত দুবার হামলা করার বিধান শাসকের ওপর চাপানো হলো। এসব কিছুর পর এখানে বটম টু টপ অ্যাপ্রোচের নয়া সবক শেখানো হচ্ছে।
তালিবানদের ভুল অ্যাপ্রোচের কারণে তাদের পতনের পর দেখা গেল, সেই ভূমির সব আসলে এতদিনে ফেরেশতা হয়ে যায়নি, বরং এতগুলো বছর ইমারাহ থাকার পরও তাদের মধ্যে কিনা শয়তান ওয়াসওয়াসা সৃষ্টি করতে সমর্থ হলো, মানুষেরা দাড়ি শেভ করে বসল। হায় হায়! তবে তারা এই পাঁচটি বছর কী শাসন করল! সবগুলো মানুষকে পাঁচ বছরেও ফেরেশতা বানাতে পারল না! অথচ পুরো বিশ্বে, বিশেষ করে আমাদের মতো শান্তিপ্রিয় রাষ্ট্রগুলোতে অ্যাপ্রোচ ঠিক হওয়ার কারণে এখানকার সেলুনগুলোতে কাউকে দাড়ি শেভ করতে দেখা যায় না। কেন যে তালিবানরা এ সহজ জিনিসটা বুঝল না! কেন যে তারা আমাদের মতো গলা ফাটিয়ে আর কালির সাগর ভাসিয়ে তাওহিদ প্রতিষ্ঠা না করে সশস্ত্র সংগ্রামের পথ বেছে নিল!)
৭. প্রসঙ্গত জ্ঞাতব্য যে, জোর করে কোনো কিছু চাপিয়ে দেওয়া ইসলাম পছন্দ করে না। যদি বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ইসলামের শাসন চায় তবেই আমাদের বর্তমান সংবিধান বদলে কুরআন এবং হাদীসভিত্তিক সংবিধান আসবে। বোমা ফুটিয়ে, মানুষ মেরে বামদের বিপ্লব হয়, ইসলাম প্রতিষ্ঠা হয় না। কল্যাণ কখনো অকল্যাণের পথ বেয়ে আসবে না। ইসলাম চে গুয়েভারার দর্শনে চলে না, মুহাম্মাদ সা.-এর অনুসরণে চলে। (পৃ. ৩৬)
(মন্তব্য : বাহ্যত চকচকে গণতান্ত্রিক মডারেট ইসলামের বুলি!)
৮. ইসলামের একটি মূলনীতি হলো, যে নিজেকে মুসলিম দাবি করবে তা��ে মুসলিম হিসেবেই গণ্য করতে হবে। তার কাজ-কর্ম যদি চরম ইসলাম বিরোধীও হয় তবু তাকে মুসলিম হিসেবে গণ্য করেই উপদেশ দিতে হবে, বোঝাতে হবে। বর্তমানে বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ যে ধর্ম পালন করে তা ইসলাম নয়; হিন্দু, খ্রিষ্টান বা বৌদ্ধধর্ম নয়—এ ধর্মের নাম অধর্ম। কিন্তু তাদের আমরা গণ্য করি তাদের কাজ দিয়ে নয়, তারা নিজেদের কী দাবি করছে তা দিয়ে। ব্যক্তির কাজের বিচার আল্লাহ সুবহানা ওয়া তা‘আলা করবেন, আমরা নই। একই মূলনীতি কিছুটা বড় পরিসরে রাষ্ট্রের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। (পৃ. ৩৮)
(মন্তব্য : ঠিক মুরজিয়াদের মতো আমলি কুফরকে কিংবা খোদ নাওয়াকিজুল ইমানকেই অস্বীকার!)
৯. যারা তাওহীদ বোঝা, বোঝানো বাদ দিয়ে মানুষকে খিলাফাহ-হুকুমাতের দিকে ডাকে, লম্বা লম্বা ফযিলাতের দিকে ডাকে—তারা বোঝে না যে, এভাবে ইসলাম আসে না। রাসুলুল্লাহ সা.-এর তাওহীদের দাওয়াতের মাত্র তেরো বছরে ইসলামি সমাজ দাঁড়িয়ে গেল। আর আমাদের আন্দোলনে আন্দোলনে অর্ধশতক পার হওয়ার পরেও সমাজে ক্লেদ কেবল বেড়েছেই। তাওহীদ প্রতিষ্ঠাকে দূরে ফেলে ব্যানারে ব্যানারে ‘ইসলামি ব্যাংক’-এর নাম প্রতিষ্ঠাতে গিয়ে ঠেকেছে আজ মুসলিমদের আন্দোলন। (পৃ. ৭৩)
(এসকল তাওহিদপন্থীরা বোধ হয় তাওহিদ বলতে শুধু আল্লাহর হাত-পা, আল্লাহ কোথায়, তিনি সাকার না নিরাকার—এগুলোই বোঝে। আর এসব বিতর্ক প্রতিষ্ঠাকেই জীবনের পরম লক্ষ্য মনে করে। তাওহিদুল হাকিমিয়্যাহ বলতেও যে কিছু আছে, আমার মনে হয় না, এ ব্যাপারটি এরা জানে বা মানে। আর দু-চার পৃষ্ঠা তাওহিদ পড়ে, এক-দু চামচ তাওহিদ গিলেই এরা ভাবে যে, গোটা তাওহিদ বোধ হয় এদেরই অধিকারে চলে এসেছে। অথচ যারা নিজেদের জীবনকেই ওয়াকফ করেছে তাওহিদের জন্য, যারা তাওহিদকে তত্ত্ব ছেড়ে জীবনে বাস্তবায়িত করেছে, তাত্ত্বিক তাওহিদের পাশাপাশি তাওহিদে আমালির ওপর আজীবন চলেছে, নিজেদের দাওয়াত এবং সংগ্রামের ভিত্তিও তাওহিদের ওপর রেখেছে, আজ তাদেরই নতুন করে মোডারেট তাওহিদ শেখানো হচ্ছে! তার এই অসার যুক্তির সুদীর্ঘ খণ্ডন ‘মিল্লাতে ইবরাহিমের জাগরণ’-এর পাতায় পাতায় রয়েছে। তবে এসব বই তো আবার অস্পৃশ্য। এগুলো শুধু মানহাজপন্থীরাই পড়বে; মাদখালি, মুরজিয়া, হেকমতি শান্তিপ্রিয় বা মোডারেটরা নয়।)
১০. ইসলামের বিষয়গুলোর একটিকে নিয়ে অত্যুৎসাহের অর্থ ইসলামের অন্য বিষয়গুলোকে অবহেলা করা। আল্লাহ ও তাঁর রাসুল সা. কুরআন এবং ও সহীহ সুন্নাহতে সামগ্রিকভাবে যেটার গুরুত্ব বেশি দিয়েছেন, তাকে গুরুত্ব না দিলে প্রকারান্তরে আল্লাহর প্রজ্ঞা ও রাসুলুল্লাহ সা.-এর শিক্ষকতাকে অবজ্ঞা করা হয়। একটা জিহাদি সাইট থেকে এক খামচা, মকসুদুল মোমেনিন থেকে আরেক খামচি—এভাবে পড়লে ‘অনেক জানি’—এই মিথ্যা অহ��কার ছাড়া আর কোনো প্রাপ্তি হ��ে না। (পৃ. ১০১)
১১. প্রথমত বলে নিই, আমি সকল ধর্মের অনুসারীদের প্রতি সহনশীল। জ্ঞানত, অমুসলিম কারও প্রতি আমি অসৌজন্যমূলক কোনো ব্যবহার কোনোদিনও করিনি। শুধু সাদা-কালো কেন, পৃথিবীর তাবৎ রেসিস্ট হয় মুখে, নয় মনে মনে নিজের রেস ছাড়া অন্য রেসের মানুষদের ঘৃণা করে। কিন্তু আমি আমার মন থেকে বলছি, আমি খ্রিষ্টানদের ঘৃণা করি না, তাদের ধর্মকে হেয় করি না, যিশুকে অসম্মান করি না। করি না, কারণ ইসলাম আমাকে ঘৃণার সীমারেখাটা শিখিয়েছে। আল-কুরআন আমাকে শিখিয়েছে যে, আমি যাকে ইসলামের পথে আহ্বান করছি সে যদি আমার সাথে শত্রুভাবও পোষণ করে, তবুও তাকে উষ্ণ বন্ধুত্ব উপহার দিতে। তবে এটা ঠিক যে, আমাকে ইসলাম ঘৃণা করতে শিখিয়েছে নষ্ট ধর্মব্যবসায়ীদের বানানো রীতি-নীতিকে, রূপকথাকে, কুসংস্কারকে, মিথ্যা কথার ব্যবসাকে, যা ধর্মের নামে সমাজে চলে। মানুষের বানোয়াট ধর্মকে আমি ঘৃণা করি—সেটা ইসলামের নামে পালন করা হোক বা হোক খ্রিষ্টান ধর্মের নামে। তবে সমাজের দশ জন মানুষ, যারা চোখ-কান বুঁজে অন্ধের মরো ধর্ম পালন করে চলছে তাদের প্রতি আমার ক্ষোভ আছে, বিরক্তি আছে। তবে ঘৃণা নেই। (পৃ. ১০৯)
(মন্তব্য : সহিহ হাদিসের ভাষ্যানুযায়ী আল্লাহর কাছে সবচে পছন্দনীয় আমল হলো তাঁর জন্য ভালোবাসা এবং তাঁর জন্য ঘৃণা করা। আল-ওয়ালার ভিত্তিও আল-হুব্বু ফিল্লাহর ওপর। একইভাবে আল-বারার ভিত্তিও হলো আল-বুগজু ফিল্লাহর ওপর। যাহোক, আমরা অসহষ্ণুতার কথা বলে উগ্র ইসলাম প্রচার করে লাভ নেই। পৃথিবীতে প্রচারিত হোক মোডারেটদের শান্তিপূর্ণ ইসলাম, আল-বুগজু ফিল্লাহ এবং আল-বারা মুক্ত নির্মল ও সুন্দর অসহিংস ধর্ম ইসলাম। আর দাওয়াত হিকমাহ এবং সুন্দর কথার অনুমোদন দিলেও কখনোই ‘উষ্ণ বন্ধুত্বে’র অনুমোদন দেয় না। এসব হলো পশ্চিমা দাওয়াতের নীতি, ইসলামের দাওয়াতের নয়।)
পুনশ্চ : আজ এতটুকুই থাক। আশা করি, এর আলোকে লেখকের মানসিকতা, প্রকাশনীর রুচি, সম্পাদকদ্বয়ের দৃষ্টিভঙ্গি এবং সুন্দর উপস্থাপনা ও মনোরম সাহিত্য-সংবলিত জনপ্রিয় বইয়ের কনসেপ্ট সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পাওয়া যাবে। হাঁ, আমি বলছি না, বইয়ে ভালো কোনো দিক নেই। ভালো দিক অসংখ্য রয়েছে। তবে ভালো দিক থাকলেই কোনো জিনিস বোধ হয় ভালো হয়ে যায় না। যদিও এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, তবে উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে, আব্দুল্লাহ ইবনু উবাই ইবনু সালুল কিন্তু মসজিদে নামাজ আদায় করত, ইসলামের অসংখ্য বিধান মানত, মুসলিমদের সঙ্গে মিলে যুদ্ধের ময়দানের উদ্দেশে ঘোড়া পর্যন্ত হাঁকাত আর মাঝপথ থেকে হঠাৎ করে উধাও হয়ে যেত। এতকিছুর পরও সে কিন্তু মুনাফিক; মুনাফিকই নয় শুধু, বরং তাদের সর্দার। আর মুনাফিক��া অবস্থান করবে জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে। তাদের নামাজ, রোজা, হজ, ইবাদত কোনো কিছুই কোনো কাজে আসবে না। একইভাবে মক্কার মুশরিকরা, আবু জাহল থেকে শুরু করে কুরাইশের অন্যান্য সর্দাররা তো হজ করত, আরও অনেক ইবাদত করত। এতকিছুর পরও তারা মুশরিক। আর আল্লাহ মুশরিকের শিরককে কখনোই ক্ষমা করবেন না, এ ছাড়া অন্যান্য গুনাহ, যার জন্য চান ক্ষমা করবেন। তাই কিছু ভালো জিনিস থাকলে, বরং অধিকাংশ জিনিস ভালো হলেও, শুধু মৌলিক কনসেপ্টে বিষ মেশানো থাকলে তা আর ভালো থাকে না। তা হয়ে যায় ঘৃণিত, গর্হিত এবং পরিত্যাজ্য। ওয়া মা আলাইনা ইল্লাল বালাগ। —আলী হাসান উসামা
0 notes
paathok · 5 years ago
Photo
Tumblr media
New Post has been published on https://paathok.news/88718
চট্টগ্রামে প্রবল বৃষ্টি উপেক্ষা করে খালেদার মুক্তির দাবীতে বিএনপির মানববন্ধন
.
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, সরকার সর্বক্ষেত্রে দেশের স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিচ্ছে। তারা রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান করতে পারছে না। কারণ তাদের সেই বৈধতা ও সাহস নেই। তাদের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে পারছে না। ২ বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও তারা ফেরত পাঠাতে পারেনি। আসামে নাগরিকপঞ্জির নামে গভীর চক্রান্ত চলছে। আসামের নাগরিকপঞ্জির দাবি ভুল। নাগরিকপঞ্জির নামে দেশকে বিপদগ্রস্ত করতে গভীর চক্রান্ত শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব আজ হুমকীর সম্মুখীন। সরকার এখন মাকাল ফলে পরিণত হয়েছে।
তিনি আজ ১২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে ১১ টা পর্যন্ত নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে নূর আহমদ সড়কে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে প্রবল বৃষ্টি উপেক্ষা করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবীতে আয়োজিত মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
.
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আয়োজনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে আরো বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া খুবই অসুস্থ। তাঁকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। অবিলম্বে তাঁকে মুক্তি দিতে হবে। জনগণের অধিকার, ভোটের অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
মানববন্ধনে মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর বলেন, দেশে খুনি, সন্ত্রাসী, ধর্ষণকারী, মাদক ও অস্ত্র ব্যবসায়ীর জামিন হলেও বেগম খালেদা জিয়ার জামিন হয় না। কারান্তরিন বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। তিনি ঠিকমত চলাফেরা করতে পারছেন না। সরকার তার জামিন দেয়া তো দূরের কথা চিকিৎসারও কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না।
কেন্দ্রীয় বিএনপির শ্রমবিষ��ক সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দিন বলেন, আদালত প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার বাইরে এক কদম হাঁটতে পারে না, তাই আদালতের ওপর নির্ভরশীলতা আর বেগম খালেদা জিয়াকে কারাবন্দি রাখা একই কথা। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য সরকার একমাত্র বাধা। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে আদালতকে প্রভাবিত করে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি বিলম্বিত করা হচ্ছে। এজন্য জনগণকে সাথে নিয়ে রাজপথে আন্দোলন করতে হবে এবং নেত্রীকে মুক্ত করতে হবে।
এ সময় চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সিঃ সহ সভাপতি আবু সুফিয়ান বলেন, দেশে এখন ভয়াবহ সংকট চলছে। জনগণের কাঁধে একদলীয় শাসন ভর করেছে। মানুষের গণ��ান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। বিচারব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। সবমিলিয়ে বিপর্যয়ের মুখে মাতৃভূমি। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিতে একমাত্র বাধা শেখ হাসিনা। তাই এই সরকারের বিরুদ্ধে সারাদেশে আন্দোলনের কর্মসূচি চলবে। রাজপথের আন্দোলনের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল ইসলাম’র পরিচালনায় মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি আলহাজ এম এ আজিজ, সামছুল আলম, এস এম অবুল ফয়েজ, যুগ্ম সম্পাদক কাজী বেলাল উদ্দিন, ইসকান্দর মির্জা, আর ইউ চৌধুরী শাহীন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, আবদুল মান্নান, আনোয়ার হোসেন লিপু, শাহেদ বক্স, সহসাধারণ সম্পাদক সামশুল আলম (ডক), জিএম আইয়ুব খান, মো. সালাহ উদ্দিন, এস এম জাহাঙ্গির আলম, বিএনপি শিহাব উদ্দিন মুবিন, কাউন্সিলর মনোয়ারা বেগম মনি, হামিদ হোসেন, শেখ নুরউল্লাহ বাহার, থানা বিএনপির সভাপতি মঞ্জুর রহমান চৌধুরী, মামুনুল ইসলাম হুমায়ুন, হাজী বাবুল হক, মোশাররফ হোসেন ডেপটি, সরফরাজ কাদের রাসেল, আবদুল্লাহ আল হারুন, সালাউদ্দিন কায়সার লাভু, আবদুল হালিম স্বপন, রফিকুল ইসলাম, মো. ইদ্রিস আলী, খোরশেদ আলম কুতুবী, জেলী চৌধুরী, আজাদ বাঙালী, আবু মুসা, আবুল খায়ের মেম্বার, মোস্তাফিজুর রহমান বুলু, আবদুল হাই, আলী আজম, সালাহ উদ্দিন লাতু, থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ জাকির হোসেন, মনির আহমেদ চৌধুরী, জসিম উদ্দিন জিয়া, হাজী বাদশা মিয়া, শরীফ উদ্দিন খান, নূর হোসাইন, আবদুল কাদের জসিম প্রমুখ।
0 notes