#খিঁচুনি রোগের লক্ষণ
Explore tagged Tumblr posts
Text
নিউরো মেডিসিন বিশেষজ্ঞ: কারা এবং কেন প্রয়োজন?
আমাদের দেহের অন্যতম জটিল ও সংবেদনশীল অংশ হলো স্নায়ুতন্ত্র, যা মস্তিষ্ক, মেরুদণ্ড, স্নায়ু ও পেশিকে ঘিরে গঠিত। এই স্নায়ুতন্ত্রে কোনো সমস্যা দেখা দিলে যার ওপর আমরা ভরসা করতে পারি, তিনি হলেন নিউরো মেডিসিন বিশেষজ্ঞ।
নিউরো মেডিসিন চিকিৎসকরা স্নায়ুবিষয়ক রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত।
নিউরো মেডিসিন চিকিৎসকরা কী ধরনের চিকিৎসা করেন?
তারা রোগীর উপসর্গ বিশ্লেষণ করে, প্রয়োজনে MRI, CT স্ক্যান, EEG বা অন্যান্য পরীক্ষার মাধ্যমে সমস্যার মূল কারণ খুঁজে বের করেন।
প্রতিটি রোগীর উপসর্গ ও শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী ওষুধ, থেরাপি অথবা প্রয়োজনে অস্ত্রোপচারের পরিকল্পনা তৈরি করেন।
তারা শুধু রোগ নিরাময়েই নয়, বরং রোগ প্রতিরোধ ও সুস্থ জীবন নিশ্চিত করতেও কাজ করেন। রোগীদের স্বাস্থ্যকর অভ্যাস ও মানসিক যত্ন সম্পর্কে পরামর্শ দেন।
স্ট্রোক, মাইগ্রেন, খিঁচুনি, আলঝেইমার্স, পারকিনসন্স বা নিউরোপ্যাথির মতো কঠিন রোগের ক্ষেত্রেও তারা কার্যকর চিকিৎসা দিতে সক্ষম।
যেসব লক্ষণ দেখলে নিউরো মেডিসিন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া জরুরি
• দীর্ঘদিন ধরে চলা বা হঠাৎ তীব্র মাথাব্যথা
• বারবার মাথা ঘোরা বা ভারসাম্য হারানো
• খিঁচুনি বা হাত-পা কাঁপা
• স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে যাওয়া
• কথা বলার বা চলাফেরায় সমস্যা হওয়া
• শরীরের কোনো অংশে অসাড়তা বা দুর্বলতা অনুভব করা
উপসংহার
নিউরো মেডিসিন বিশেষজ্ঞরা আমাদের স্নায়ুতন্ত্রের সুস্থতা নিশ্চিত করতে নিরলস পরিশ্রম করেন। তাদের অভিজ্ঞতা ও আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতির সাহায্যে আমরা পেতে পারি সুস্থ ও কর্মক্ষম জীবন।
আপনার বা আপনার পরিবারের কারও মাঝে যদি উল্লেখিত উপসর্গ দেখা দেয়, তবে দেরি না করে নিউরো মেডিসিন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
সঠিক সময়ে চিকিৎসা গ্রহণই সুস্থ জীবনের প্রথম পদক্ষেপ।
খুলনায় নিউরোমেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এর সিরিয়াল এর জন্য যোগাযোগ করুন এই নাম্বারে
01924-005 004
সব তথ্যের আপডেট পেতে ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট https://specialistdoctorkhulna.com
0 notes
Video
মৃগী রোগের লক্ষণ | মৃগী রোগের হোমিও চিকিৎসা | মৃগী রোগ বিশেষজ্ঞ ঢাকা | খিচুনি রোগের লক্ষণ চিকিৎসা
#মৃগী রোগের ভেষজ চিকিৎসা#মৃগী রোগের হোমিও চিকিৎসা#মৃগী রোগ বিশেষজ্ঞ ঢাকা#মৃগী রোগের প্রাথমিক লক্ষণ#মৃগী রোগ বিশেষজ্ঞ#খিচুনি কি#খিচুনি রোগের ঔষধের নাম#খিচুনি রোগের চিকিৎসা#খিচুনি রোগের প্রতিকার#মৃগি রোগের হোমিও চিকিৎসা#খিচুনি#খিচুনি রোগের লক্ষণ#খিচুনি রোগের হোমিও চিকিৎসা#খিচুনি কেন হয়#খিচুনি রোগের ডাক্তার#শিশুর খিচুনি রোগের চিকিৎসা#নবজাতকের খিচুনি চিকিৎসা#নবজাতকের খিচুনি কেন হয়#খিঁচুনি হলে করণীয়#খিঁচুনি কেন হয়#খিঁচুনি চিকিৎসা#খিঁচুনি রোগের লক্ষণ
1 note
·
View note
Photo

“বেশ কয়েকদিন ধরে তোকে দেখছিনা কেন? ক্লাসেও আসিস না! কি হইছে?” কাফির দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করলো তাহমিদ। “দেখবি কি করে! আমার যে জ্বর যাচ্ছে সেটা ত খেয়াল রাখিস না” কিছুটা রেগেই উত্তর দিলো কাফি। “জ্বর! কি বলিস! কবে থেকে? তুইও ত কিছু জানালি না। ডাক্তার দেখাইছিস?” এক নিশ্বাসে সবগুলো প্রশ্ন করে বসলো তাহমিদ। “না, ডাক্তার দেখাইনি। জ্বর হুট করে আসে যায়। আর মাথা আর ঘাড় ব্যথা। লাইটের আলো চোখে পড়লে ত আরো মাথা ব্যথা বেড়ে যায়” বিষন্ন কণ্ঠে জানালো কাফি।
শুনে কিছুক্ষণ চুপ দুইজন। খানিকবাদে তাহমিদ বললো, “চিন্তা করিস না। শুনে মনে হচ্ছে মাইগ্রেন এর সমস্যা। আমারো লাইটের আলোতে মাথা ব্যথা হয় মাঝে মধ্যে। আর জ্বর ত সিজন পরিবর্তন হওয়ায় সবারই হচ্ছে। জ্বরের ওষুধ আজকেই কিনে নিয়ে যাবি।” তাতে নিরবে সায় জানালো কাফিও।
এতোক্ষণ আমরা দুইজন বন্ধুর মধ্যকার একটি অতি সাধারণ কথোপকথন পড়লাম। উপরের ঘটনাটি আমাদের সাথে হলে হয়তো আমরাও ঠিক এভাবেই জ্বরের জন্য নাপা জাতীয় ওষুধ খাওয়ার কথা বন্ধুকে বলতাম। কিন্তু এই জ্বর ও তীব্র মাথা ব্যথা হতে পারতো আরো অনেক সমস্যার লক্ষণ। তেমনি একটি সমস্যা নিয়ে আজ আমরা জানবো।
মানুষের মস্তিষ্ক তিনটি সুরক্ষা স্তর দ্বারা আবৃত- ড্যুরা স্তর, অ���যরাকনয়েড স্তর ও পিআ স্তর। এই তিনটি সুরক্ষা স্তরকে একত্রে বলা হয় মেনিনজেস যা আমাদের সম্পূর্ণ মস্তিষ্ক ও সুষুম্নাকাণ্ডকে ঢেকে রাখে। আর এই মেনিনজেসে কোনো ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণে ব্যথা হলে তখন সেটাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় বলে মেনিনজাইটিস(মেডিকেলের ভাষায় কোনো শব্দের শেষে itis দ্বারা প্রদাহ বোঝায়)। মেনিনজাইটিস এর অস্তিত্ব মিলে প্রাচীন ইতিহাসেই। হিপোক্রিটাস তার কাজের মাঝে এর বিবরণ দিয়ে গেছেন বলে ধারণা করা হয়। এমনকি ইবনে সিনাও এই মেনিনজাইটিস সম্পর্কে জানতো যদিও তখন এই সমস্যাকে বলা হত ‘ড্রপসি’। থমাস উইলসের বিবরণ থেকে ১৬৬১ সালে জ্বরসহ মেনিনজাইটিস সমস্যায় আক্রান্ত রোগীর খোঁজ মিলে।১৭৬৮ সালে যক্ষার জীবাণু সংক্রমিত মেনিনজাইটিস এর বিবরণ মিলে স্যার রবার্ট হুইট একটি রিপোর্টে।গেস্পার্ড ভিয়োসসে, এলিসা নর্থ, আন্দ্রে মেথ্যিও সহ আরো বেশকয়েকজন তখন জেনেভা, ইউরোপ ও আমেরিকাতে এর বর্ণনা দেয়। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে মেনিনজাইটিস এর লক্ষণ সম্পর্কে মানুষ বিস্তারিত জানতে পারে।১৮৮২ সালে রাশিয়ান পদার্থবিজ্ঞানী ভ্লাদিমির কার্ণিগ ও ১৯০৯ সালে পোল্যান্ডের বিজ্ঞানী জোসেফ ব্রডযিন্সকি মেনিনজাইটিসের লক্ষণ সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ দেয়।
জেনেভাতে ১৮০৫ সালে ও আফ্রিকাতে ১৮৪০ সালে সর্বপ্রথম এর প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। ১৯০৫ থেকে ১৯০৮ সালের মাঝে এটি নাইজেরিয়াতে ভয়ানক আকার ধারণ করে, মারা যায় অনেক মানুষ। তখন মানুষ মেনিনজাইটিস সম্পর্কে না জানলেও এখন বিজ্ঞানের আধুনিকতায় মেনিনজাইটিস আজ আর অজানা নয়। মেনিনজাইটিক সমস্যায় প্রথম দিকে ফ্লু বা সর্দিকাশির মতো সাধারণ জ্বরের উপসর্গ থাকে। দুই বছরের বেশি বয়সীদের পরে আরো যে সমস্যাগুলো দেখা দেয়- (১)হঠাৎ তীব্র জ্বর হয়।প্রচণ্ড মাথা ব্যথা হয়, যা সাধারণ মাথা ব্যথার মতো নয়। (২)ঘাড় শক্ত হয়ে যায়, এদিক-ওদিক নাড়ানো কঠিন হয়। (৩)প্রায় ৭৫ শতাংশ রোগী জ্বরে অজ্ঞান হয়ে যায়।সাথে খিঁচুনি দেখা দেয়। (৪)ঘুম-ঘুম ভাব হয়, হাঁটতে অসুবিধা হয়। (৫)আলোর দিকে তাকাতে তীব্র অস্বস্তি বোধ (৬)কানের মধ্যে সংক্রমণের ফলে ঘা ও বধিরতা সৃষ্টি হয়। (৭)হাত-পা অবশ হয়, নাড়ানো যায় না। (৮) দৃষ্টিভ্রম হয়, একই বস্তু একাধিক দেখা যায়। (৯) কথা বলতে অসুবিধা হতে পারে।
মেনিনজাইটিসে মস্তিষ্কের সমস্যা ছাড়াও শরীরের অন্যান্য স্থানেও সমস্যা দেখা দিতে পারে, যেমন—ফুসফুসে ঘা হওয়া ও শ্বাসকষ্ট হওয়া, সেফটিসেমিয়ার কারণে গিঁটে গিঁটে ব্যথা হওয়া, অনুচক্রিকা রক্ত উপাদান কমার কারণে শরীরের বিভিন্ন অংশ থেকে রক্ত ঝরা।
নবজাতকের শিশুর ক্ষেত্রে লক্ষণীয় বিষয়গুলো হলো- ভীষণ জ্বর থাকে, ঘাড় ও শরীর শক্ত হয়ে আসা, অনবরত কান্না, দুর্বল হয়ে যাওয়া, সারাক্ষণ ঘুম-ঘুম ভাব, শরীর ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়া, বমি করা, মাথার তালুর নরম জায়গা ফুলে ওঠা, অজ্ঞান হওয়া ইত্যাদি।
মেনিনজাইটিসের কারণঃ অধিকাংশ ক্ষেত্রে মেনিনজাইটিসের কারণ হল বিভিন্ন প্রকারের ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ফাংগাস। তাছাড়া বিভিন্ন পরজীবীও এর জন্য দায়ী। ক)ব্যাকটেরিয়াল মেনিনজাইটিস: বয়সভেদে ভিন্ন ভিন্ন ব্যাকটেরিয়া ভিন্ন ভিন্ন ব্যাকটেরিয়াল মেনিনজাইটিসের জন্য দায়ী। সদ্যজাত থেকে শুরু করে ৩ মাস বয়সী শিশুর ক্ষেত্রে প্রধানত গ্রুপ-বি স্ট্রেপটেকক্কি ও লিস্টেরিয়া জনিত মেনিনজাইটিস হয়ে থাকে।পরিণত শিশুদের মেনিনজাইটিসের জন্য দায়ী নাইসেরিয়া ম��নিনজাইটিডিস, স্ট্রেপটোকক্কাস নিউমোনিয়া এবং হেমোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা টাইপ-বি।
প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে শতকরা ৮০ ভাগ ব্যাকটেরিয়াল মেনিনজাইটিসের কারণ নাইসেরিয়া মেনিনজাইটিডিস ও স্ট্রেপটোকক্কাস নিউমোনিয়া, মাইকোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকুলোসিস ইত্যাদি। পঞ্চাশোর্ধ ব্যক্তির ক্ষেত্রে লিস্টেরিয়া মনোসাইটোজিনেসিস জনিত মেনিনজাইটিসের হার অনেক বেশি।
খ) ভাইরাল মেনিনজাইটিস: ভাইরাস জনিত মেনিনজাইটিস ব্যাকটেরিয়া জনিত মেনিনজাইটিসের চাইতে তুলনামূলক ভাবে কম বিপদজনক। ভাইরাল মেনিনজাইটিসের প্রধান জীবানু এন্টেরোভাইরাস। এর বাইরেও কিছু ভাইরাস এই রোগের সৃষ্টি করে যা মশার মাধ্যমে একজনের কাছ থেকে অন্য জনে ছড়াতে পারে। যেসব ভাইরাস দিয়ে ভাইরাল মেনিনজাইটিস হয় তাদের মধ্যে আছে- মাস্পস ভাইরাস, হার্পিস ভাইরাস, মিসেলস ভাইরাস, ইনফ্লুয়েন্সা ভাইরাস, চিকেনপক্স ভাইরাস, ওয়েস্ট নাইল ভাইরাস, বিভিন্ন আরবোভাইরাস ইত্যাদি।
ঘ)ফাংগাল মেনিনজাইটিস: ফাঙ্গাস বা ছত্রাক দিয়েও মেনিনজাইটিস হতে পারে। ফাংগাল মেনিনজাইটিসের প্রধান জীবানু ক্রিপটোকক্কাস নিউফরমান্স। ফাংগাল মেনিনজাইটিসের প্রকোপ আফ্রিকা মহাদেশে সবচাইতে বেশি এবং তা ২০-২৫% এইডস আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুর কারণ। অন্য যেসব ফাংগাস মেনিনজাইটিস ঘটায় সেগুলো হলো হিস্টোপ্লাজমা ক্যাপসুলাটাম, কক্কিডায়োআইডেস ইমিটিস, ব্লাস্টোমাইসেস ডার্মাটাইটিস, ক্যানডিডা স্পেসিস প্রভৃতি।
ঘ) প্যারাসাইটিক মেনিনজাইটিস: এই ধরনের মেনিনজাইটিসের প্রধান প্রধান জীবাণু অ্যানজিওস্ট্রনজাইলাস ক্যানটোনেসিস, গ্যান্থোসটোমা স্পিনিজেরাম, সিস্টোসোমা প্রভৃতি। এটি সাধারণত খাদ্য, পানি ও মাটির মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে। এই মেনিনজাইটিস যে কারো হতে পারে, তবে যাদের কানে ,গলা বা নাকে অথবা সাইনাসে ইনফেকশন থাকে তাদের বেশি হয়। এর কারণ এ ধরণের ইনফেকশন সাধারণত যে ধরণের জীবাণু দিয়ে হয়, সেগুলো মেনিনজাইটিসও করতে পারে।
জীবাণুর বাইরেও কিছু কারণে মেনিনজাইটিস হতে পারে যার মধ্যে ক্যান্সারের ব��স্তৃতি, কিছু বিশেষ ওষুধ সেবন (পেইনকিলার জাতীয় ওষুধ, ইমিউনোগ্লোবিন, অ্যান্টিবায়োটিক), কানেকটিভ টিস্যু ডিজঅর্ডার উল্লেখযোগ্য।
যদিও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মেনিনজাইটিস অতি অল্প সময়ের মাঝে শরীরে লক্ষণ প্রকাশ করে থাকে হয়ে, তবে দীর্ঘমেয়াদি মেনিনজাইটিসও হতে পারে। তাই বলা হয় মেনিনজাইটিস দুই ধরনের- অ্যাকিউট মেনিনজাইটিস যা জীবাণু প্রবেশের দুই সপ্তাহের মধ্যে হয় এবং ক্রনিক মেনিনজাইটিস যা জীবাণু শরীরে প্রবেশের চার সপ্তাহ বা তার বেশি সময় পরে প্রকাশ পায়।
তীব্র মাথা ব্যথার কারণঃ মেনিনজাইটিসে যে মারাত্মক প্রদাহ হয় তার কারণ ব্যাকটেরিয়ার সরাসরি আক্রমণ নয় বরং ব্যাকটেরিয়ার কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে অনুপ্রবেশের ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধকারী সিস্টেমের প্রতিরোধের চেষ্টা। মস্তিষ্ক ব্যাকটেরিয়া কোষের উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধকারী সিস্টেম বেশি পরিমাণ সাইটোকাইন ও হরমোন জাতীয় পদার্থ নিঃসরণ করে, এতে করে ব্লাড ব্রেইন রেরিয়ার দুর্ভেদ্য থেকে ভেদ্য হয়ে উঠে এবং রক্তনালী থেকে তরল নির্গত হয়ে মস্তিষ্ক ফুলে উঠে। এমতাবস্থায় বেশি বেশি শ্বেত রক্ত কণিকা সেরেব্রো স্পাইনাল ফ্লুইডে প্রবেশ করে, চাপ বৃদ্ধি পায় এবং প্রদাহ আরও তীব্রতর হয়ে উঠে।
চিকিৎসাঃ রোগীর মেরুদণ্ডের ভেতর থাকা কশেরুকা থেকে সিএসএফ (এক ধরনের তরল পদার্থ, যা মস্তিষ্ক ও কশেরুকার ভেতর থাকে) বের করে তা পরীক্ষা করা হয়। সিএসএফে কোষসংখ্যা, প্রোটিন, গ্লুকোজের পরিমাণ এবং সিএসএফের গ্রাম স্টেইন, কালচার পরীক্ষা করে রোগ নির্ণয় করা হয়। সঙ্গে কিছু কিছু ক্ষেত্রে রক্তের কালচার এবং সিবিসি ইত্যাদি পরীক্ষা করা হয়। রোগ নির্ণয়ের আগে শুধু লক্ষণ দেখেই চিকিৎসা শুরু করতে হবে, কারণ দ্রুত চিকিৎসা না শুরু করলে জীবন সংশয় দেখা দিতে পারে। ভাইরাসঘটিত মেনিনজাইটিসে আক্রান্ত হওয়ার দুই সপ্তাহের মধ্যে শরীরের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার কারণেও ভালো হতে পারে। এ ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা না নিলেও চলে। পর্যাপ্ত বিশ্রাম, যথেষ্ট পানি ও তরল পান, জ্বর ও মাথা ব্যথার জন্য ওষুধ সেবন করলেই চলে। ব্যাকটেরিয়াজনিত মেনিনজাইটিসে বহু ক্ষেত্রে মৃত্যু হতে পারে। তবে রোগাক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যথাযথ ও উচ্চমাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা প্রয়োজন। মেনিনজাইটিস প্রতিরোধ মেনিনজাইটিস প্রতিরোধে ভ্যাকসিন বা টিকা আছে। আবার শিশু বয়সে আরো কিছু টিকা নিলে পরোক্ষভাবে তা মেনিনজাইটিস প্রতিরোধ করতে পারে। এগুলো হচ্ছে- MMR(এমএমআর বা মিসেলস-মাম্পস-রুবেলা), চিকেনপক্স, এইচআইবি বা হিব, নিউমোনিয়ার টিকা ইত্যাদি। ১৯৮০ সালের গোড়ার দিকে বিশ্বের অনেক দেশ তাদের বাচ্চাদের জন্য নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচিতে হেমোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা টাইপ-বি’র টিকা অর্��্তভুক্ত করেছে, কারণ এই জীবাণু ইনফ্লুয়েঞ্জার পাশাপাশি মেনিনজাইটিস সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে। মেনিনগোকক্কাস ভ্যাকসিন গ্রুপ-এ, সি, ডাব্লিও-১৩৫ এবং ওয়াই মেনিনজাইটিসের বিরুদ্ধে কার্য্যকরী প্রতিরোধ গড়ে তোলে যা সর্বোচ্চ প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করে। এখানে লক্ষ্য করা যেতে পারে যে, যে সব দেশে মেনিনগোকক্কাস গ্রুপ-সি এর ভ্যাকসিন ব্যবহৃত হচ্ছে সেখানে মেনিনজাইটিসের প্রকোপ উল্লেখযোগ্য হারে কমে গিয়েছে।
বাংলাদেশেও মেনিনজাইটিসের বিরুদ্ধে কার্যকর ও মানসম্পন্ন ভ্যাকসিন বাজারে প্রচলিত আছে যা সর্বোচ্চ প্রতিরক্ষা দেয়।সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির আওতায় নিউমোকক্কাল মেনিনজাইটিস এবং হেমোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা টাইপ বি-এর টিকা শিশুদের বিনা মূল্যে প্রদান করছে। মেনিনগোকক্কাস ভ্যাকসিন গ্রুপ-এ, সি, ডাব্লিও-১৩৫ এবং ওয়াই-এর সুবিধা:
১। শরীরে মেনিনজাইটিসের বিরুদ্ধে দীর্ঘস্থায়ী প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলে। ২। ২ বছর বয়স থেকে ব্যবহার করা যায়। ৩। একবার ব্যবহার করলে পরবর্তীতে আর দিতে হয় না।
মেনিনজাইটিস এখন সহজে ভ্যাকসিন ও চিকিৎসার মাধ্যমে কাটিয়ে উঠা যায় বলে একে অবহেলা করার কোনো সু্যোগ নেই। ১৯৯১-২০১০ সালে আফ্রিকার দেশগুলোতে মেনিনজাইটিস আক্রান্ত প্রায় ১০লাখ রোগীর মাঝে মারা যায় প্রায় ১লাখ। কেবলমাত্র ২০০৯ সালেই ৮০হাজার আফ্রিকান এই মেনিনজাইটিসে আক্রান্ত হয় এবং সেখানেও মারা যায় ৪ হাজারের বেশি মানুষ। আফ্রিকাতে ২০১৩ সালে এই রোগে আক্রান্ত ১২৪৬৪টি রোগীর মাঝে মারা যায় ১১৩১ জন এবং ২০১৪ সালে ১৪৩১৭ জনের মাঝে মারা যায় ১৩০৪জন।[তথ্যসূত্রঃ Global Health Obserbatory(GHO) Data] আমেরিকাতেও প্রতিবছর প্রায় ৪০০০ মানুষ ব্যাকটেরিয়াজনিত মেনিনজাইটিস এ আক্রান্ত হয় এবং সেখানেও প্রায় ৫০০জনের অধিক মানুষ মারা যায়। নিউমোকক্কাল মেনিনজাইটিস এ আক্রান্ত হয় প্রায় ৬০০০ জন ও মেনিনগোকক্কাল মেনিনজাইটিসে ২৬০০জন।(তথ্যসূত্রঃ Statistics of Meningitis, Florida Hospital)
মেনিনজাইটিস এমন একটি রোগ যা ভয়াবহ অাকার ধারণ করলে চিকিৎসার জন্য ২৪ ঘণ্টারও কম সময় পাওয়া যায়। তাই মেনিনজাইটিসের কোনো উপসর্গ দেখা দিলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। সঠিক সময়ে টিকা নেয়ার মাধ্যমে নিজেকে, নিজের পরিবারকে নিরাপদ রাখার পাশাপাশি তৈরি করতে হবে জনসচেতনতাও।
1 note
·
View note
Photo

খিঁচুনি মানেই মৃগী নয়! অনেক সময়, অনেকের শরীরে খিঁচুনি হতে শুরু করে। আমাদের অনেকেরই ধারণা, খিঁচুনি মানেই তা মৃগীরোগের কারণে। কিন্তু জানেন কি, মৃগীরোগ সব খিঁচুনির জন্য দায়ি না-ও হতে পারে। অর্থাত্, কারও হঠাত্ করে খিঁচুনি শুরু হল বা মাঝে ম��্যেই কারও শরীরে খিঁচুনির সমস্যা হয় মানেই যে তিনি মৃগীরোগে আক্রান্ত, তা না-ও হতে পারে। মানসিক চাপের ফলে অনেক সময় খিঁচুনির মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে। যাকে চিকিত্সা বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয় সিউডোসিজার। স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, মৃগীর খিঁচুনি থেকে সিউডোসিজার-এর খিঁচুনিকে পৃথক করা বেশ কঠিন। তবে কিছু ক্ষেত্রে রোগের লক্ষণ ও রোগীর খিঁচুনিতে আক্রান্ত হওয়ার ইতিহাস খুঁটিয়ে বিশ্লেষণ করলে সিউডোসিজার-এর সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পাওয়া যায়। এ বার সিউডোসিজার-এর লক্ষণগুলি চিনে নেওয়া যাক... ১) সিউডোসিজার-এ হাতে, পায়ের খিঁচুনি না হয়ে অনেক সময় পিঠে টান পড়ে মেরুদণ্ড বেঁকে যায় বা নিতম্বের অস্বাভাবিক ঝাঁকুনি (পেলভিক থ্রাস্টিং) হতে থাকে। এ ছাড়াও রোগীর হাত-পায়েও টান পড়ে, যা দেখে প্রত্যক্ষদর্শীরা একে খিঁচুনি বলে ভুল করেন। ২) সিউডোসিজার-এ রোগী সাধারণত পুরোপুরি জ্ঞান হারান না। চারপাশে কী ঘটছে, সে সম্পর্কে সচেতন বা অবগত থাকেন। হাতে, পায়ে স্পর্শ করলে বা খোঁচা দিলে তা অনুভব করতে পারেন। ৩) সিউডোসিজার-এ খিঁচুনির পরবর্তীতে (মৃগীরোগের মতো) স্মৃতি-ভ্রষ্টতা, মাথাব্যথা, মানসিক বিভ্রমের মতো কোনও লক্ষণ দেখা যায় না। স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, সিউডোসিজার ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের মধ্যে প্রায় তিনগুণ বেশী হতে দেখা যায়। সিউডোসিজারের রোগীদের মধ্যে অনেকেরই বিষণ্ণতা ও উদ্বেগের লক্ষণ দেখা দেয়। কোনও খিঁচুনি সিউডোসিজার-এর জন্য হচ্ছে কিনা তা বোঝার জন্য স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী ভিডিওটেলিমেট্রিসহ ইইজি এবং অন্যান্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা জরুরি। চিকিত্সকের পরামর্শ মতো ওষুধ সেবন করতে হতে পারে। স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, শৈশবের কোনও ঘটনার থেকে পাওয়া মারাত্মক মানসিক আঘাত, কোনও বিষয়ে দীর্ঘদিনের কোনও ভয়, আতঙ্ক, শৈশবে যৌন-হয়রানির মতো মারাত্মক অভিজ্ঞতা সিউডোসিজার-এর জন্য দায়ি হতে পারে। তাই এর চিকিত্সায় ওষুধ সেবনের পাশাপাশি প্রয়োজন সাইকোথেরাপি বা কাউন্সেলিংয়ের।
0 notes
Video
youtube
মৃগী রোগের লক্ষণ, চিকিৎসা এবং করণীয়
মৃগী রোগ একটি নিউরোলজিক্যাল বা স্নায়বিক রোগ এবং এতে খিঁচুনি হয়। এটি একপ্রকার মস্তিষ্কের রোগ। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে “নিউরোলোজিক্যাল ডিজিজ” বলা হয়। মৃগী রোগ যে কোনো ��য়সে হতে পারে৷ এটা কোনো সংক্রামক রোগ নয়৷ এই রোগের প্রকৃত কারণ জানা যায়নি কিন্তু জন্মগত ত্রুটি, মস্তিষ্কে আঘাত, মস্তিষ্কে টিউমার বা সংক্রমণ, স্ট্রোক প্রভৃতিকে সম্ভাব্য কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। জিনগত মিউটেশনকেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে দায়ী বলে ধারনা করা হয়। মস্তিষ্কের সেরেব্রাল কর্টেক্সের স্নায়ুকোষগুলোর অতিরিক্ত ও অস্বাভাবিক ক্রিয়ার ফলে খিঁচুনি হয়। এ রোগে রোগী বার বার স্নায়বিক কারণে ফিট অর্থাৎ হঠাৎ খিচুনি বা অজ্ঞান হয়ে যায়। মৃগী রোগের একটি বৈশিষ্ট হলো রোগী বার বার খিঁচুনিতে আক্রান্ত হয় কিন্তু আক্রান্তের পর আবার পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যায়৷ মৃগী রোগ থাকলেই ব্���ক্তির বুদ্ধি-বিচার-বিবেচনা বোধ কমে যাবে এমন ধারনাটা সঠিক নয়। বরং মৃগী রোগে আক্রান্তদের মধ্যে খুব কম অংশের বুদ্ধিমত্তার ঘাটতি হতে পারে।
মৃগী রোগ কেন হয়? মৃগী রোগের প্রকৃত কারণ জানা এখনও সম্ভব হয়নি। তবে মাথায় আঘাত পেলে, প্রসবজনিত জটিলতা অথবা দেরিতে প্রসব হলে, মস্তিস্কে প্রদাহ হলে, মস্তিস্কে টিউমার হলে, জন্মগত ত্রুটি, স্ট্রোক এবং অধিক পরিমান মদ্যপানের অভ্যাস থাকলে মৃগী রোগ হতে পারে।
যে সকল কারণে মৃগী রোগীর খিঁচুনি হতে পারে কিছু কিছু কারনে মৃগী রোগীর খিঁচুনি হতে পারে। যেমন- ঠিকমতো ঘুম না হলে, মানসিক চাপ বেশী থাকলে, শারীরিক অথবা মানসিকভাবে অতিরিক্ত পরিশ্রম করলে, কোন সংক্রমণ রোগ অথবা জ্বরের কারনে, মদ্যপান বা নেশা জাতীও অন্য কোন পানীয় পান করলে, খুব কাছে বসে টিভি দেখলে, উচ্চ শব্দের ফলে, গরম পানিতে গোসল করলে, জোরে গান বাজনা শুনলে, কিছু কিছু ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় এবং অতিরিক্ত আলো ইত্যাদি কারনে হতে পারে।
মৃগী রোগের লক্ষণ, চিকিৎসা এবং করণীয়
মৃগী রোগীর বৈশিষ্ট্য যেসব মানুষ দীর্ঘদিন যাবৎ মৃগী রোগে ভুগছেন, সে সকল মৃগী রোগীদের মধ্যে সাধারনত কিছু বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়। যেমন- অস্বাভাবিক আত্মকেন্দ্রিক হয়, খিটখিটে তিরিক্ষি মেজাজের হয়, ঝগড়া করার প্রবণতা থাকে, বুদ্ধিমত্তার ঘাটতি, বিষণ্ণতাগ্রস্ততা, ধর্মের দিক হতে গোঁড়া হবে, আবেগ মনোবৃত্তি বৃদ্ধি, যেকোনো বিষয় নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা করবে, আত্মহত্যার প্রবণতা ইত্যাদি।
মৃদু ধরনের মৃগী রোগের লক্ষণ
হঠাৎ করে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া৷ এটা সাধারনত ১০ থেকে ১৫ সেকেন্ড স্থায়ী হতে পারে। অজ্ঞান হওয়ার সাথে সাথে খিঁচুনি শুরু হতে পারে। রোগী অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে যেতে পারে আবার সাথে সাথে জ্ঞান ফিরে দাঁড়িয়ে যায়৷ তবে এটা খুব কম ক্ষেত্রেই হয়ে থাকে। জিহ্বা ও দাঁতে কামড় লাগতে পারে। খিঁচুনির সময় পড়ে গিয়ে আঘাত পাওয়া। খিঁচুনির পর মাথাব্যথা, শুয়ে থাকা অথবা কিছু সময় ধরে চুপচাপ থাকা। খিঁচুনির সময় প্রস্রাব-পায়খানা হয়ে যেতে পারে।
বড় ধরনের মৃগী রোগের লক্ষণ
শরীরের কোনো নির্দিষ্ট অংশে খিঁচুনি
কারও মৃগী রোগ উঠলে আশপাশের লোকদের করণীয়
রোগীর জন্য করণীয়
শিক্ষকদের করণীয়
খিঁচুনির সময় প্রাথমিক চিকিৎসা
মৃগী রোগের লক্ষণ, চিকিৎসা এবং করণীয় খিঁচুনী চলাকালীন সময়ে কিছু প্রাথমিক চিকিৎসা ছাড়া আর তেমন কিছু করার থাকে না। আতংকিত না হয়ে নিম্নলিখিত প্রাথমিক কাজগুলো গুরুত্ব সহকারে করতে হবে।
0 notes
Video
youtube
মৃগী রোগের লক্ষণ, চিকিৎসা এবং করণীয়
মৃগী রোগ একটি নিউরোলজিক্যাল বা স্নায়বিক রোগ এবং এতে খিঁচুনি হয়। এটি একপ্রকার মস্তিষ্কের রোগ। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় একে “নিউরোলোজিক্যাল ডিজিজ” বলা হয়। মৃগী রোগ যে কোনো বয়সে হতে পারে৷ এটা কোনো সংক্রামক রোগ নয়৷ এই রোগের প্রকৃত কারণ জানা যায়নি কিন্তু জন্মগত ত্রুটি, মস্তিষ্কে আঘাত, মস্তিষ্কে টিউমার বা সংক্রমণ, স্ট্রোক প্রভৃতিকে সম্ভাব্য কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। জিনগত মিউটেশনকেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে দায়ী বলে ধারনা করা হয়। মস্তিষ্কের সেরেব্রাল কর্টেক্সের স্নায়ুকোষগুলোর অতিরিক্ত ও অস্বাভাবিক ক্রিয়ার ফলে খিঁচুনি হয়। এ রোগে রোগী বার বার স্নায়বিক কারণে ফিট অর্থাৎ হঠাৎ খিচুনি বা অজ্ঞান হয়ে যায়। মৃগী রোগের একটি বৈশিষ্ট হলো রোগী বার বার খিঁচুনিতে আক্রান্ত হয় কিন্তু আক্রান্তের পর আবার পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যায়৷ মৃগী রোগ থাকলেই ব্যক্তির বুদ্ধি-বিচার-বিবেচনা বোধ কমে যাবে এমন ধারনাটা সঠিক নয়। বরং মৃগী রোগে আক্রান্তদের মধ্যে খুব কম অংশের বুদ্ধিমত্তার ঘাটতি হতে পারে।
মৃগী রোগ কেন হয়? মৃগী রোগের প্রকৃত কারণ জানা এখনও সম্ভব হয়নি। তবে মাথায় আঘাত পেলে, প্রসবজনিত জটিলতা অথবা দেরিতে প্রসব হলে, মস্তিস্কে প্রদাহ হলে, মস্তিস্কে টিউমার হলে, জন্মগত ত্রুটি, স্ট্রোক এবং অধিক পরিমান মদ্যপানের অভ্যাস থাকলে মৃগী রোগ হতে পারে।
যে সকল কারণে মৃগী রোগীর খিঁচুনি হতে পারে কিছু কিছু কারনে মৃগী রোগীর খিঁচুনি হতে পারে। যেমন- ঠিকমতো ঘুম না হলে, মানসিক চাপ বেশী থাকলে, শারীরিক অথবা মানসিকভাবে অতিরিক্ত পরিশ্রম করলে, কোন সংক্রমণ রোগ অথবা জ্বরের কারনে, মদ্যপান বা নেশা জাতীও অন্য কোন পানীয় পান করলে, খুব কাছে বসে টিভি দেখলে, উচ্চ শব্দের ফলে, গরম পানিতে গোসল করলে, জোরে গান বাজনা শুনলে, কিছু কিছু ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় এবং অতিরিক্ত আলো ইত্যাদি কারনে হতে পারে।
মৃগী রোগের লক্ষণ, চিকিৎসা এবং করণীয়
মৃগী রোগীর বৈশিষ্ট্য যেসব মানুষ দীর্ঘদিন যাবৎ মৃগী রোগে ভুগছেন, সে সকল মৃগী রোগীদের মধ্যে সাধারনত কিছু বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়। যেমন- অস্বাভাবিক আত্মকেন্দ্রিক হয়, খিটখিটে তিরিক্ষি মেজাজের হয়, ঝগড়া করার প্রবণতা থাকে, বুদ্ধিমত্তার ঘাটতি, বিষণ্ণতাগ্রস্ততা, ধর্মের দিক হতে গোঁড়া হবে, আবেগ মনোবৃত্তি বৃদ্ধি, যেকোনো বিষয় নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তা করবে, আত্মহত্যার প্রবণতা ইত্যাদি।
মৃদু ধরনের মৃগী রোগের লক্ষণ
হঠাৎ করে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া৷ এটা সাধারনত ১০ থেকে ১��� সেকেন্ড স্থায়ী হতে পারে। অজ্ঞান হওয়ার সাথে সাথে খিঁচুনি শুরু হতে পারে। রোগী অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে যেতে পারে আবার সাথে সাথে জ্ঞান ফিরে দাঁড়িয়ে যায়৷ তবে এটা খুব কম ক্ষেত্রেই হয়ে থাকে। জিহ্বা ও দাঁতে কামড় লাগতে পারে। খিঁচুনির সময় পড়ে গিয়ে আঘাত পাওয়া। খিঁচুনির পর মাথাব্যথা, শুয়ে থাকা অথবা কিছু সময় ধরে চুপচাপ থাকা। খিঁচুনির সময় প্রস্রাব-পায়খানা হয়ে যেতে পারে।
বড় ধরনের মৃগী রোগের লক্ষণ
শরীরের কোনো নির্দিষ্ট অংশে খিঁচুনি
কারও মৃগী রোগ উঠলে আশপাশের লোকদের করণীয়
রোগীর জন্য করণীয়
শিক্ষকদের করণীয়
খিঁচুনির সময় প্রাথমিক চিকিৎসা
মৃগী রোগের লক্ষণ, চিকিৎসা এবং করণীয় খিঁচুনী চলাকালীন সময়ে কিছু প্রাথমিক চিকিৎসা ছাড়া আর তেমন কিছু করার থাকে না। আতংকিত না হয়ে নিম্নলিখিত প্রাথমিক কাজগুলো গুরুত্ব সহকারে করতে হবে।
0 notes
Photo

ব্রেন টিউমার কেন হয় ও কাদের হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে? জেনে রাখা উচিত সকলের! ব্রেন টিউমার কেন হয়- ব্রেন টিউমার কী? ডাঃ: টিউমার হচ্ছে শরীরের যে কোনো জায়গায় বা অঙ্গে কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি। এবং এই টিউমারটি যখন ব্রেনের ভেতরে হয় তখন সেটাকে আমরা বলি ব্রেন টিউমার এর লক্ষণগুলো কী কী? ডাঃ : ব্রেন টিউমারের লক্ষণ একেক সময় একেক রকম হতে পারে। এর প্রধান বা স্বাভাবিক লক্ষণ হচ্ছে মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া এবং দৃষ্টিশক্তি ক্রমশ কমে যাওয়ার এই তিনটিকে আমরা সব টিউমারের ক্ষেত্রে ধরতে পারি। এ ছাড়াও অনেক সময় রোগীর অন্য লক্ষণও দেখা দিতে পারে। যেমন: রোগীর খিঁচুনি হতে পারে অথবা শরীরের যে কোনো ��কদিকের হাত বা পা দুর্বল হয়ে যায় অথবা তার মানসিক অবস্থার পরিবর্তন হতে পারে অর্থাৎ তার আচরণে অস্বাভাবিকতা দেখা দেবে। অনেক ক্ষেত্রে হরমোনের নিঃসরণের আধিক্য বা ঘাটতি দেখা দিতে পারে। যা ব্রেন টিউমারের রোগীর ক্ষেত্রে বিভিন্নভাবে প্রকাশ পায়। ব্রেন টিউমার কেন হয়? ডাঃ : ব্রেন টিউমারের কারণ এখন পর্যন্ত অজানা। খারাপ টিউমার শরীরের অন্য জায়গা থেকে ক্যান্সারের রূপ নিয়ে ব্রেনের মধ্যে চলে যায়। বংশগত কারণেও ব্রেন টিউমার হতে পারে। কাদের ক্ষেত্রে হওয়ার প্রবণতা বেশি? বাংলাদেশে এর প্রকোপ কেমন? ডাঃ : কিছু টিউমার আছে ছোটদের বেশি হয়, আবার কিছু টিউমার আছে যা ৬০ বছরের ওপরে গেলে বেশি হয়। মহিলাদের ক্ষেত্রে সব ধরনের টিউমারের প্রতিক্রিয়া এক রকম নয়। একেক ক্ষেত্রে টিউমারটি একেক রকমভাবে প্রকাশ পায়। যার ফলে আমরা ওভাবে বলতে পারব না কাদের ক্ষেত্রে বেশি হয়। এক কথায় বলতে পারি, যে কোনো বয়সের, যে কোনো পুরুষ বা মহিলার টিউমার হতে পারে। একেক ধরনের টিউমার শিশু বা মহিলা বা বয়স্কদের ক্ষেত্রে একেক রকমের হতে পারে। এটা সত্যি দুঃখজনক যে, বাংলাদেশে ক্রমশ আমরা এর প্রকোপ বৃদ্ধি পেতে দেখছি। তবে সঠিক পরিসংখ্যান এখন পর্যন্ত আমাদের হাতে নেই। ব্রেন টিউমার কি সারানো সম্ভব? ডাঃ : ব্রেন টিউমার মানেই ক্যান্সার এটা ভুল ধারণা। কিছু কিছু টিউমার আছে যা খারাপ টিউমার বা ক্যান্সার টিউমার, কিন্তু অনেক টিউমারই আছে যেগুলো সম্পূর্ণভাবে আরোগ্যযোগ্য। কিছু কিছু টিউমার আছে চিকিৎসা করালে সম্পুর্ণ ভালো হয়ে যায়। আর কিছু আছে যা থেকে আপৎ হতে পারে। বিনাইন ব্রেন টিউমার আর ক্যান্সার ব্রেন টিউমারের মধ্যে পার্থক্য কী? ডাঃ: বিনাইন টিউমার মানে ভালো আর ক্যান্সার ব্রেন টিউমার হচ্ছে খারাপ টিউমার। প্রকৃতিগতভাবে পার্থক্য হচ্ছে বিনাইন ব্রেন টিউমার খুব আস্তে আস্তে হয়, যার ফলে এই রোগের লক্ষণ বা প্রকাশ অতটা তাড়াতাড়ি হয় না। আর ক্যান্সার ব্রেন টিউমার খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়। ব্রেন টিউমার কীভাবে চিহ্নিত করা হয়? এর জন্য কী ধরনের পরীক্ষা করা হয়? ডাঃ: যে কোনো রোগ নির্ণয়ের প্রথম পদ্ধতিই হচ্ছে তাকে ক্লিনিকে আনা, পর্যবেক্ষণে রাখা। রোগীর বিশেষ শারীরিক পরীক্ষা করা যেটাকে আমরা বলি নিউরোলজিক্যাল বিশ্লেষণ। রোগীর বর্ণনা থেকে এবং রোগের লক্ষণ দেখে ধারণা করা যায়। মাথার নরমাল প্লেন এক্স-রে পরীক্ষার মাধ্যমে আমরা কিছু ধারণা করতে পারি কিন্তু এটি সম্পূর্ণভাবে রোগ নির্ণয়ের পদ্ধতি নয়। পদ্ধতি হচ্ছে সিটি-স্ক্যান এবং আরও ভালো হচ্ছে এম.আর.আই। ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত রোগীর পরিণতি কী? ডাঃ: সাধারণভাবে আমরা টিউমারকে ২ ভাগে ভাগ করি। ১. ভালো টিউমার, ২. খারাপ টিউমার। ভালো টিউমার যদি সঠিকভাবে অপারেশন করে সম্পূর্ণ বের করা যায় তাহলে রোগী স¤পূর্ণ ভালো হয়ে যাবে। আর যদি ক্যান্সার টিউমার হয় তবে তারও রকমবেদ আছে। কিছু কিছু খারাপ টিউমার আছে যা হলে রোগী কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত কর্মক্ষম থাকতে পারে। আর কিছু কিছু টিউমার আছে যা এতই খারাপ যে, রোগী ৬ মাস থেকে ১ বছরের বেশি বেঁচে থাকে না। ব্রেন টিউমার চিকিৎসায় কী কী পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়? যে কোনো ��িউমারের চিকিৎসা হচ্ছে সার্জারি বা অপারেশন। অপারেশন করে রোগীর টিউমারকে বের করে, বায়োপসি করে প্রকৃতি নির্ণয় করে পরবর্তী চিকিৎসা করা হয়। কী কী ধরনের মুখে খাওয়ার ওষুধ আছে? ডাঃ আবু সাঈদ : ব্রেন টিউমারে মুখে খাওয়ার ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা কোনোভাবেই সম্ভব নয় তবে রোগের লক্ষণগুলোর চিকিৎসা ওষুধ দ্বারা করা সম্ভব। টিউমারের জন্য যেসব লক্ষণ যেমন মাথাব্যথা ও বমি হওয়া এইসব লক্ষণের চিকিৎসায় আমরা ওষুধ দিয়ে করতে পারব। তাও সাময়িকভাবে। টিউমার যখন আস্তে আস্তে বড় হবে টিউমারের লক্ষণগুলো আরও বেশি প্রকট হয়ে ধরা পড়বে; যার ফলে ওষুধ দিয়ে শুধু সাময়িকভাবে তার লক্ষণগুলোকে কিছুদিন কমিয়ে রাখা যাবে। কিন্তু ওষুধের চিকিৎসা টিউমারের জন্য নয়। অপারেশনের মাধ্যমে কীভাবে ব্রেন টিউমারের চিকিৎসা করা হয়? ডাঃ আবু সাঈদ : অপারেশনের মাধ্যমে ব্রেনটা খুলে ব্রেনের যে লোকেশনে টিউমারটা আছে সম্ভব হলে সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে টিউমারটাকে সরিয়ে আনা হয়। ক্যান্সার টিউমারের ক্ষেত্রে আমরা যতটুকু সম্ভব বের করে দিই। যতখানি বের করা যায় রোগীর উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি। এমন কিছু পদ্ধতি আছে, যার মাধ্যমে ব্রেন টিউমার বের করার জন্য মগজ বা ব্রেন খুলতে হয় না। রেডিও সার্জারির মাধ্যমে ছোট ছোট টিউমার যেমন – ২ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার বা ১ ইঞ্চির ছোট যেগুলো হয় সেগুলো ছোট বা নষ্ট করে দেয়া হয়। ব্রেন টিউমারের চিকিৎসায় রঞ্জনরশ্মির ভূমিকা কী? ডাঃ আবু সাঈদ : রঞ্জন-রশ্মি টিউমারটিকে আপাত ছোট করে দেয় বা টিউমারের কর্মক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। আর রঞ্জনরশ্মি বলতে আমরা বুঝি অপারেশন করার পর রেডিওথেরাপি দেয়াকে। যা আমরা দিই অপারেশন করার পর যদি দেখা যায় যে টিউমারি ক্যান্সার টিউমার বা খারাপ টিউমার। সে ক্ষেত্রে রোগীকে আগে থেকেই বলে দেয়া হয় সার্জারি করলে সম্পূর্ণভাবে এটি ভালো হবে না এবং অপারেশন করার পরেও রঞ্জনরশ্মি বা রেডিওথেরাপি মাধ্যমে চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে। টিউমারটি বের করে দেয়ার পর ওই এলাকায় রেডিওথেরাপি দেয়া হয় যেন টিউমারটির ক্ষমতা কমে যায়। আমাদের দেশে বর্তমানে ব্রেন টিউমারের চিকিৎসা কেমন হচ্ছে? ডাঃ আবু সাঈদ : বাংলাদেশে অনেক আগে থেকেই ব্রেন টিউমারের চিকিৎসা হচ্ছে এবং অধিকাংশ টিউমারের চিকিৎসা বাংলাদেশে করা সম্ভব। বিগত ১০ বছরে বাংলাদেশে নিউরো সার্জারি বা ব্রেন টিউমার সার্জারি অনেক দূর এগিয়ে গেছে। যদিও কিছু কিছু আধুনিক ব্যবস্থা এখানো আমাদের দেশে আসেনি। যেমন- রেডিওসার্জারি আমাদের নেই, গামা-নাইফ সার্জারি নেই। বাকি যেগুলো আছে সেগুলোতে আমরা অনেক এগিয়ে গেছি। উন্নত বিশ্বে বর্তমানে ব্রেন টিউমার চিকিৎসায় কী ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার হচ্ছে? বাংলাদেশে এর সম্ভাবনা কতটুকু? ডাঃ আবু সাঈদ : উন্নত বিশ্ব বলতে আমাদের পাশের দেশও প্রযুক্তিগত দিক থেকে আমাদের চেয়ে কিছুটা এগিয়ে আছে বলতে পারেন। ভারতে যেমন- রেডিওসার্জারি, গামা-নাইফ সার্জারি আছে যা আমাদের দেশে এখানা শুরু হয়নি। হয়ত বেশিদিন লাগবে না শুরু করতে। এই দুটি দিক ছাড়া বাকি সব সার্জারি আমাদের এখন দেশেই সম্ভব। এই সব সার্জারি আশপাশের দেশের তুলনায় মনে হয় ভালোই হয়। হয়ত আমরা এখন যে অপারেশন করি সেটা ৫ বছর আগে সম্ভব ছিল না। এগুলো এখন হচ্ছে এবং আস্তে আস্তে প্রযুক্তিগুলো আমাদের দেশে ��সছে । ‘খরচ খুব বেশি’ রোগীদের এই ধারণাটা পরিষ্কার নয়, যখন মনে করবে যে এই সার্জারি বা প্রযুক্তি ব্যবহার করে তারা ভালো হচ্ছে তখন রোগী স্বাভাবিকভাবে চলে আসবে।
0 notes
Video
youtube
অটিজম কি?
অটিজম একটি মানসিক বিকাশঘটিত সমস্যা যা স্নায়ু বা স্নায়ুতন্ত্রের গঠন ও পরিবর্ধন জনিত অস্বাভাবিকতার ফলে হয়। অটিজমে আক্রান্ত শিশুর স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠতে অসুবিধা হয়। অটিজমের কারণে কথাবার্তা, অঙ্গভঙ্গি ও আচরণ একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে আবদ্ধ থাকে আবার অনেকক্ষেত্রে শিশুর মানসিক ও ভাষার উপর দক্ষতা কম থাকে। সাধারনত ১৮ মাস থেকে ৩ বছর সময়ের মধ্যেই এই রোগের লক্ষণগুলো দেখা যায়।
অটিজমে আক্রান্ত একটি শিশুর কিছু আচরণগত সমস্যা লক্ষ্য করা যায়, যেমন- সে সামাজিকভাবে মেলামেশা করতে পারে না। শুধু কথা না বলা অটিজমের মধ্যে পড়ে না। তার সাথে তার অন্যান্য আচরণ, সামাজিকতা, অন্য একটি শিশুর সাথে অথবা বয়স্ক মানুষের সাথে মেশার বিষয়ে গণ্ডগোল থাকলে ধরে নিতে হবে শিশুটি অটিজমে আক্রান্ত হতে পারে।
অটিজমে আক্রান্ত শিশু কথা বলতেও পারে আবার একদম নাও বলতে পারে। আবার কথা বললেও হয়তো ঠিকমতো গুছিয়ে বলতে পারে না। আবার একজন সুস্থ্য মানুষ যেভাবে কথা বলে সেভাবে নাও বলতে পারে। অর্থাৎ, সে হয়ত কথা বলতে পারে কিন্তু সুন্দরভাবে গুছিয়ে বলতে পারে না। এক্ষেত্রেও শিশুটি অটিজমে আক্রান্ত হতে পারে।
অটিজম কেন হয়? অটিজমের নির্দিষ্ট কোনো কারণ নেই। পরিবেশগত ও বংশগত কারণেও এই রোগ হতে পারে। সাধারনত জটিলতা, লক্ষণ অথবা তীব্রতার উপর নির্ভর করে এর কারণগুলো বিভিন্ন হতে পারে। কি কি কারনে অটিজম হতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে সতর্ক হলে অটিজম প্রতিরোধ সম্ভব হতে পারে।
চিকিৎসকদের মতে, ভাইরাল ইনফেকশন, গর্ভকালীন জটিলতা এবং বায়ু দূষণকারী উপাদানসমূহ স্পেক্ট্রাম ডিজঅর্ডার হওয়ার ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা রাখে। বিভিন্ন জীনের কারণে অটিজম স্পেক্ট্রাম ডিজঅর্ডার হতে পারে। আবার কোন কোন শিশুর ক্ষেত্রে জেনেটিক ডিজঅর্ডার যেমন- রেট সিন্ড্রোম বা ফ্র্যাজাইল এক্স সিন্ড্রোমের সাথে এই রোগটি হতে পারে। কিছু জীন মস্তিষ্কের কোষসমূহের পরিবহন ব্যবস্থায় বাধা প্রদান করে এবং রোগের তীব্রতা বৃদ্ধি করে। জেনেটিক বা জীনগত সমস্যা বংশগতও হতে পারে আবার নির্দিষ্ট কোনো কারণ ছাড়াই এই রোগটি হতে পারে। ভ্যাকসিন বা প্রতিষেধকের সাথে অটিজমের কোনও সম্পর্ক পাওয়া যায়নি।
অটিজমের লক্ষন অটিজমের লক্ষণগুলো সঠিকভাবে জানার মাধ্যমে অটিজম বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে সাধারণত যে লক্ষনগুলো দেখতে পাওয়া যায় সেগুলো হলঃ
অটিস্টিক শিশুদের ঘুম সম্পর্কিত কিছু সমস্যা থাকে। ঘুম স্বাভাবিক না হওয়ার কারনে তাদের মনোযোগ ও কাজের সক্ষমতা কমে যায় এবং আচার আচরণে সেটা পরিস্কার বোঝা যায়। অনেক শিশুর সঠিক সময়ে কথা বলতে সমস্যা হয়। মুলত ১৮ মাস থেকে ২ বছর সময়ের মধ্যে এটা বোঝা যায়। অনেক অটিস্টিক শিশুর মাঝে অল্প মাত্রায় হলেও বুদ্ধি প্রতিবন্ধীতা লক্ষ্য করা যায়। অনেক শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি সঠিকভাবে হয় না। অটিজমে আক্রান্ত অনেক শিশু দেখা, শোনা, গন্ধ, স্বাদ অথবা স্পর্শের প্রতি অতি স��বেদনশীল অথবা প্রতিক্রিয়াহীন থাকতে পারে। সাধারণত অটিস্টিক শিশুদের প্রতি চারজনে একজনের খিঁচুনি সমস্যা হতে পারে। অটিজম থাকা শিশুদের মানসিক অস্থিরতার ঝুঁকি বেশী থাকে। এসকল শিশুর বিষন্নতা, উদ্বিগ্নতা ও মনোযোগে ঘাটতিসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। অটিস্টিক শিশুদের প্রায়ই হজমের অসুবিধা, পেট ব্যথা, ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, পেটের গ্যাস, বমি ইত্যাদি হতে পারে।
অটিজম এর চিকিৎসা কোনও শিশু অটিজমে আক্রান্ত মনে হলে অনতিবিলম্বে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। প্রাথমিক অবস্থায় অটিজম নির্ণয় করতে পারলে এবং উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহন করলে অটিজম এর ক্ষতিকারক প্রতিক্রিয়াগুলো অনেক সফলভাবে মোকাবেলা করা যায়। শিশুর কি ধরনের অস্বাভাবিকতা আছে সেটা সঠিকভাবে নির্ণয় করে, নির্দিষ্ট বিষয়ের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সমন্বয়ে চিকিৎসা করলে ভাল ফল পাওয়া যেতে পারে।
এই ধরনের শিশুদের জন্য প্রচুর বিশেষায়িত স্কুল আছে, সেখানে তাদের বিশেষভাবে পাঠদান করা হয়। এ ধরনের স্কুলে ভর্তির ক্ষেত্রে একজন অকুপেশনাল থেরাপিষ্টের পরামর্শ নিতে হবে। তিনি পরামর্শ দেবেন, কোন ধরনের স্কুল আপনার শিশুর জন্য উপযুক্ত হবে।
অনেক অটিস্টিক শিশুর কিছু মানসিক সমস্যা যেমন- অতিরিক্ত চঞ্চলতা, অতিরিক্ত ভিতি, ঘুমের সমস্যা, মনোযোগের সমস্যা ইত্যাদি থাকতে পারে। অনেক সময় এরকম ক্ষেত্রে, চিকিৎসক শিশুটিকে ঔষধ দিতে পারেন।
অটিজম প্রতিরোধে করণীয় কি? অটিজমের যেহেতু কোনও নিরাময় নেই, তাই সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমেই এটি প্রতিরোধ করতে হবে। পরিবারে কারো অটিজম অথবা কোন মানসিক এবং আচরণগত সমস্যা থাকলে, পরবর্তী সন্তানের ক্ষেত্রে অটিজমের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। এক্ষেত্রে পরিকল্পিত গর্ভধারণ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভাবস্থায় অধিক দুশ্চিন্তা না করা, পর্যাপ্ত ঘুম, শিশুর সাথে নিবিড় সম্পর্ক স্থাপন ইত্যাদি ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। আরও কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। যেমন-
বেশি বয়সে বাচ্চা না নেওয়া। বাচ্চা নেয়ার আগে মাকে রুবেলা ভেকসিন দিতে হবে। গর্ভাবস্থায় চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোন ওষুধ খাওয়া যাবে না। মায়ের ধূমপান, মদ্যপানের মত কোন অভ্যাস থাকলে বাচ্চা নেয়ার আগে অবশ্যই তা ছেড়ে দিতে হবে। বাচ্চাকে অবশ্যই মায়ের বুকের দুধ খাওয়াতে হবে।
0 notes
Photo

একজন গর্ভবতী মায়ের পরিপূর্ণ যত্ন মায়ের স্বাস্থ্য ও পুষ্টির ওপর গর্ভস্থ সন্তানের স্বাস্থ্য নির্ভর করে। এ সময় অপর্যাপ্ত খাদ্য ও অপুষ্টি, মা ও শিশুর জন্য মারাত্মক হতে পারে। অপুষ্টিতে আক্রান্ত মায়েরা যে সন্তানের জন্ম দেয়, তাদের জন্ম ওজন কম হয়, বুদ্ধির বিকাশ ব্যাহত হয় ও স্বাস্থ্য ভালো থাকে না। গর্ভাবস্থায় মা নিজের দেহ থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে গর্ভের শিশুকে যথাযথভাবে গড়ে তুলে। এক্ষেত্রে মায়ের দেহে যে ক্ষয় হয় তা পূরণ করা না হলে মায়ের স্বাস্থ্যহানি ঘটে। এজন্য গর্ভাবস্থায় মাকে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি পরিমাণ খাবার খেতে হবে। আমাদের দেশে বেশির ভাগ মেয়েরা কম ��য়সে গর্ভধারণ করে এবং প্রায় সবাই অপুষ্টির শিকার হয়। এর ফলে অপুষ্ট সন্তান জন্মগ্রহণ করে বা কখনও কখনও মহিলারা মৃত সন্তানও প্রসব করে। গর্ভকালীন সেবা * গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন ৩ বেলা খাবারের সঙ্গে নিয়মিত কমপক্ষে এক মুঠ বেশি খাবার খেতে হবে। * মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, কলিজা, ঘন ডাল, গাঢ় সবুজ শাক-সবজি ও মৌসুমি দেশী ফল খেতে হবে। রান্নায় যথেষ্ট পরিমাণ তেল ব্যবহার করতে হবে। * গর্ভাবস্থা নিশ্চিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিদিন রাতের খাবারের পরপরই ১টি করে আয়রন ফলিক এসিড ট্যাবলেট খেতে হবে। * গর্ভাবস্থায় ভিটামিন-সি যুক্ত খাবার খেতে হবে। * গর্ভাবস্থায় তিন মাসের পর থেকে প্রতিদিন (সকালে এবং দুপুরে) ২টি করে ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট ভরা পেটে খেতে হবে। * গর্ভাবস্থায় যথেষ্ট পরিমাণে বিশ্রাম (দুপুরে খাবারের পর ২ ঘণ্টা এবং রাতে ৮ ঘণ্টা) নিতে হবে। * গর্ভবতী মহিলাকে শারীরিক ও মানসিক প্রশান্তিতে রাখতে হবে, এতে গর্ভস্থ শিশুর বৃদ্ধি স্বাভাবিক হবে * ভারী কাজ (যেমন : টিউবওয়েল চাপা, ধান ভানা, ভারী জিনিস তোলা, অতিরিক্ত/ভারী কাপড় ধোয়া) থেকে বিরত থাকতে হবে এবং কষ্টকর পরিশ্রম বর্জন করতে হবে। * আয়োডিন যুক্ত লবণ খেতে হবে * প্রথম তিন মাসের পর প্রয়োজনে ১���ি কৃমিনাশক ট্যাবলেট খেতে হবে * পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে গর্ভকালীন যত্ন গর্ভাবস্থায় অন্তত চারবার গর্ভকালীন স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে (মায়ের ওজন, রক্তস্বল্পতা, রক্তচাপ, গর্ভে শিশুর অবস্থান পরীক্ষা করা) * ১ম স্বাস্থ্য পরীক্ষা = ১৬ সপ্তাহে (৪ মাস) * ২য় স্বাস্থ্য পরীক্ষা = ২৪-২৮ সপ্তাহে (৬-৭ মাস) * ৩য় স্বাস্থ্য পরীক্ষা = ৩২ সপ্তাহে (৮ মাস) * ৪র্থ স্বাস্থ্য পরীক্ষা = ৩৬ সপ্তাহে (৯ মাস) * রোগ সংক্রমণ প্রতিরোধ এবং চিকিৎসা যদি আপনি কোনো টিটি টিকা না দিয়ে থাকেন তাহলে টিকা শুরু করতে হবে এবং গর্ভাবস্থায় ৫ মাস পর ২টি টিটি টিকা নিতে হবে, সিডিউল অনুযায়ী বাকি টিকাগুলো নিতে হবে। দীর্ঘস্থায়ী ইমিউনিটির জন্য ৫টি টিটি টিকার নির্ধারিত সময়সূচি : ১ম ডোজ (TT1) : ১৫ বছর বয়সে অথবা প্রসব পূর্ববর্তী প্রথম ভিজিটে ২য় জ (TT2) : ১ম ডোজ নেয়ার অন্তত ১ মাস (৪ সপ্তাহ) পর ৩য় ডোজ (TT3) : ২য় ডোজ নেয়ার অন্তত ৬ মাস পর ৪র্থ ডোজ (TT4) : ৩য় ডোজ নেয়ার কমপক্ষে ১ বছর পর ৫ম ডোজ (TT5) : ৪র্থ ডোজ নেয়ার কমপক্ষে ১ বছর পর গর্ভাবস্থায় ওজন বৃদ্ধি না হওয়ার কারণ * শিশু ও কিশোরী বয়সে দীর্ঘস্থায়ী অপুষ্টিতে এবং রক্তস্বল্পতায় ভোগা * কিশোরী বা অল্প বয়সে গর্ভধারণ করা * ঘন ঘন সন্তান ধারণ করা * গর্ভাবস্থায় কম খাদ্য গ্রহণ ও সুষম খাদ্য গ্রহণ না করা * গর্ভকালীন সময়ে রক্তস্বল্পতায় ভোগা * বিভিন্ন রোগের সংক্রমণ ও কৃমিতে আক্রান্ত হওয়া * শারীরিক পরিশ্রম বেশি করা ও মানসিক উদ্বেগ থাকা * খাদ্য সংক্রান্ত কুসংস্কার ও পরিবারে অসম খাদ্য বণ্টন প্রসূতিকালীন পরিচর্যা ও প্রসূতি মায়ের পুষ্টি প্রসবোত্তর সেবা নারীদের প্রজনন স্বাস্থ্যের একটি অপরিহার্য অংশ। প্রসবের পর থেকে ৬ সপ্তাহ পর্যন্ত সময়কে ‘প্রসবোত্তর কাল’ বলা হয়। এ সময় মায়ের বিশেষ সেবা প্রয়োজন। কারণ এই সময় শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়ানোর জন্য মায়ের শরীরের ক্ষয় হয়। শিশুর বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি উপাদান মায়ের দুধে বিদ্যমান; যা শিশু মায়ের কাছ থেকে পেয়ে থাকে। এজন্য এ অবস্থায় মায়ের শরীর সুস্থ রাখার জন্য সব ধরনের পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ খাবার এবং বাড়তি যত্নের প্রয়োজন। প্রসব পরবর্তী যত্ন প্রত্যেক বার খাবারের সময় প্রসূতি মাকে স্বাভাবিকের তুলনায় কমপক্ষে ২ মুঠ বেশি পরিমাণে খাবার খেতে হবে। অতিরিক্ত খাবার শিশুর জন্য মায়ের দুধ তৈরি করতে সহায়তা করে এবং মায়ের নিজের শরীরের ঘাটতি পূরণ করে * দুগ্ধদানকারী মাকে সব ধরনের পুষ্টি সমৃদ্ধ (আয়রন, ভিটামিন-এ, আয়োডিন, ক্যালসিয়াম ইত্যাদি) খাবার খেতে হবে * দুগ্ধদানকারী মায়ের কাজে পরিবারের সব সদস্যকে সহযোগিতা করতে হবে * গর্ভবতী ও প্রসূতি মহিলাদের পুষ্টি নিশ্চিত করতে পরিবারের সবার (স্বামী, শাশুড়ি) করণীয় : * গর্ভকালীন সেবা গ্রহণের জন্য গর্ভবতী মহিলার সঙ্গে সেবা কেন্দ্রে যাওয়া এবং আয়রন ফলিক এসিড খাওয়ার জন্য গর্ভবতী মহিলাকে মনে করিয়ে দেয়া * গর্ভবতী মহিলা/দুগ্ধদানকারী মাকে অতিরিক্ত খাবার খেতে উৎসাহিত করা * ঘরের দৈনন্দিন টুকিটাকি কাজে গর্ভবতী মহিলাকে সাহায্য করে তার কাজের বোঝা কমানো * হাসপাতালে প্রসব করানোর বিষয়ে গর্ভবতী মহিলাকে উৎসাহিত করা এবং সহযোগিতা করা * হাসপাতালে প্রসবের জন্য যাতায়াত ব্যবস্থার প্রস্তুতি নেয়া * জন্মের এক ঘণ্টার মধ্যে শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়ানোর জন্য গর্ভবতী মহিলাকে উৎসাহিত করা এবং সহযোগিতা করা * জন্মের সঙ্গে সঙ্গে শিশুকে মায়ের শাল দুধ খাওয়ানোর জন্য গর্ভবতী মহিলাকে উৎসাহিত করা এবং সহযোগিতা করা * মা শিশুকে যথেষ্ট সময় নিয়ে দুধ খাওয়াতে পারে তার জন্য দুগ্ধদানকারী মাকে সুযোগ করে দেয়া গর্ভবতী মহিলার ৫টি বিপদ চিহ্ন একজন গর্ভবতী নারীর যে কোনো সময় যে কোনো বিপদ দেখা দিতে পারে। পরিবারের সবার গর্ভকালীন ৫টি বিপদ চিহ্ন সম্পর্কে জেনে রাখতে হবে এবং যে কোনো একটি দেখা দেয়া মাত্র তাকে স্বাস্থ্য কেন্দ্র বা হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। * রক্তক্ষরণ* প্রচণ্ড জ্বর*তীব্র মাথাব্যথা এবং চোখে ঝাপসা দেখা* খিঁচুনি* অনেকক্ষণ ধরে প্রসব বেদনা/বিলম্বিত প্রসব (১২ ঘণ্টার অধিক সময় ধরে থাকলে) প্রসবকালীন বিপদ লক্ষণ * প্রসবের সময় মাথা ব্যতীত অন্য কোনো অঙ্গ বের হয়ে আসা * বিলম্বিত প্রসব * অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ * খিঁচুনি * গর্ভফুল বের হতে বিলম্ব হওয়া । লেখা- ডা. বেদৌরা শারমিন। স্ত্রী ও শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ।
0 notes
Text
জানি কি মেনিনজাইটিস সম্পর্কে?

“বেশ কয়েকদিন ধরে তোকে দেখছিনা কেন? ক্লাসেও আসিস না! কি হইছে?” কাফির দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করলো তাহমিদ। “দেখবি কি করে! আমার যে জ্বর যাচ্ছে সেটা ত খেয়াল রাখিস না” কিছুটা রেগেই উত্তর দিলো কাফি। “জ্বর! কি বলিস! কবে থেকে? তুইও ত কিছু জানালি না। ডাক্তার দেখাইছিস?” এক নিশ্বাসে সবগুলো প্রশ্ন করে বসলো তাহমিদ। “না, ডাক্তার দেখাইনি। জ্বর হুট করে আসে যায়। আর মাথা আর ঘাড় ব্যথা। লাইটের আলো চোখে পড়লে ত আরো মাথা ব্যথা বেড়ে যায়” বিষন্ন কণ্ঠে জানালো কাফি।
শুনে কিছুক্ষণ চুপ দুইজন। খানিকবাদে তাহমিদ বললো, “চিন্তা করিস না। শুনে মনে হচ্ছে মাইগ্রেন এর সমস্যা। আমারো লাইটের আলোতে মাথা ব্যথা হয় মাঝে মধ্যে। আর জ্বর ত সিজন পরিবর্তন হওয়ায় সবারই হচ্ছে। জ্বরের ওষুধ আজকেই কিনে নিয়ে যাবি।” তাতে নিরবে সায় জানালো কাফিও।
এতোক্ষণ আমরা দুইজন বন্ধুর মধ্যকার একটি অতি সাধারণ কথোপকথন পড়লাম। উপরের ঘটনাটি আমাদের সাথে হলে হয়তো আমরাও ঠিক এভাবেই জ্বরের জন্য নাপা জাতীয় ওষুধ খাওয়ার কথা বন্ধুকে বলতাম। কিন্তু এই জ্বর ও তীব্র মাথা ব্যথা হতে পারতো আরো অনেক সমস্যার লক্ষণ। তেমনি একটি সমস্যা নিয়ে আজ আমরা জানবো।
মানুষের মস্তিষ্ক তিনটি সুরক্ষা স্তর দ্বারা আবৃত- ড্যুরা স্তর, অ্যরাকনয়েড স্তর ও পিআ স্তর। এই তিনটি সুরক্ষা স্তরকে একত্রে বলা হয় মেনিনজেস যা আমাদের সম্পূর্ণ মস্তিষ্ক ও সুষুম্নাকাণ্ডকে ঢেকে রাখে। আর এই মেনিনজেসে কোনো ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণে ব্যথা হলে তখন সে��াকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় বলে মেনিনজাইটিস(মেডিকেলের ভাষায় কোনো শব্দের শেষে itis দ্বারা প্রদাহ বোঝায়)। মেনিনজাইটিস এর অস্তিত্ব মিলে প্রাচীন ইতিহাসেই। হিপোক্রিটাস তার কাজের মাঝে এর বিবরণ দিয়ে গেছেন বলে ধারণা করা হয়। এমনকি ইবনে সিনাও এই মেনিনজাইটিস সম্পর্কে জানতো যদিও তখন এই সমস্যাকে বলা হত ‘ড্রপসি’। থমাস উইলসের বিবরণ থেকে ১৬৬১ সালে জ্বরসহ মেনিনজাইটিস সমস্যায় আক্রান্ত রোগীর খোঁজ মিলে।১৭৬৮ সালে যক্ষার জীবাণু সংক্রমিত মেনিনজাইটিস এর বিবরণ মিলে স্যার রবার্ট হুইট একটি রিপোর্টে।গেস্পার্ড ভিয়োসসে, এলিসা নর্থ, আন্দ্রে মেথ্যিও সহ আরো বেশকয়েকজন তখন জেনেভা, ইউরোপ ও আমেরিকাতে এর বর্ণনা দেয়। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে মেনিনজাইটিস এর লক্ষণ সম্পর্কে মানুষ বিস্তারিত জানতে পারে।১৮৮২ সালে রাশিয়ান পদার্থবিজ্ঞানী ভ্লাদিমির কার্ণিগ ও ১৯০৯ সালে পোল্যান্ডের বিজ্ঞানী জোসেফ ব্রডযিন্সকি মেনিনজাইটিসের লক্ষণ সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ দেয়।
জেনেভাতে ১৮০৫ সালে ও আফ্রিকাতে ১৮৪০ সালে সর্বপ্রথম এর প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। ১৯০৫ থেকে ১৯০৮ সালের মাঝে এটি নাইজেরিয়াতে ভয়ানক আকার ধারণ করে, মারা যায় অনেক মানুষ। তখন মানুষ মেনিনজাইটিস সম্পর্কে না জানলেও এখন বিজ্ঞানের আধুনিকতায় মেনিনজাইটিস আজ আর অজানা নয়। মেনিনজাইটিক সমস্যায় প্রথম দিকে ফ্লু বা সর্দিকাশির মতো সাধারণ জ্বরের উপসর্গ থাকে। দুই বছরের বেশি বয়সীদের পরে আরো যে সমস্যাগুলো দেখা দেয়- (১)হঠাৎ তীব্র জ্বর হয়।প্রচণ্ড মাথা ব্যথা হয়, যা সাধারণ মাথা ব্যথার মতো নয়। (২)ঘাড় শক্ত হয়ে যায়, এদিক-ওদিক নাড়ানো কঠিন হয়। (৩)প্রায় ৭৫ শতাংশ রোগী জ্বরে অজ্ঞান হয়ে যায়।সাথে খিঁচুনি দেখা দেয়। (৪)ঘুম-ঘুম ভাব হয়, হাঁটতে অসুবিধা হয়। (৫)আলোর দিকে তাকাতে তীব্র অস্বস্তি বোধ (৬)কানের মধ্যে সংক্রমণের ফলে ঘা ও বধিরতা সৃষ্টি হয়। (৭)হাত-পা অবশ হয়, নাড়ানো যায় না। (৮) দৃষ্টিভ্রম হয়, একই বস্তু একাধিক দেখা যায়। (৯) কথা বলতে অসুবিধা হতে পারে।
মেনিনজাইটিসে মস্তিষ্কের সমস্যা ছাড়াও শরীরের অন্যান্য স্থানেও সমস্যা দেখা দিতে পারে, যেমন—ফুসফুসে ঘা হওয়া ও শ্বাসকষ্ট হওয়া, সেফটিসেমিয়ার কারণে গিঁটে গিঁটে ব্যথা হওয়া, অনুচক্রিকা রক্ত উপাদান কমার কারণে শরীরের বিভিন্ন অংশ থেকে রক্ত ঝরা।
নবজাতকের শিশুর ক্ষেত্রে লক্ষণীয় বিষয়গুলো হলো- ভীষণ জ্বর থাকে, ঘাড় ও শরীর শক্ত হয়ে আসা, অনবরত কান্না, দুর্বল হয়ে যাওয়া, সারাক্ষণ ঘুম-ঘুম ভাব, শরীর ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়া, বমি করা, মাথার তালুর নরম জায়গা ফুলে ওঠা, অজ্ঞান হওয়া ইত্যাদি।
মেনিনজাইটিসের কারণঃ অধিকাংশ ক্ষেত্রে মেনিনজাইটিসের কারণ হল বিভিন্ন প্রকারের ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ফাংগাস। তাছাড়া বিভিন্ন পরজীবীও এর জন্য দায়ী। ক)ব্যাকটেরিয়াল মেনিনজাইটিস: বয়সভেদে ভিন্ন ভিন্ন ব্যাকটেরিয়া ভিন্ন ভিন্ন ব্যাকটেরিয়াল মেনিনজাইটিসের জন্য দায়ী। সদ্যজাত থেকে শুরু করে ৩ মাস বয়সী শিশুর ক্ষেত্রে প্রধানত গ্রুপ-বি স্ট্রেপটেকক্কি ও লিস্টেরিয়া জনিত মেনিনজাইটিস হয়ে থাকে।পরিণত শিশুদের মেনিনজাইটিসের জন্য দায়ী নাইসেরিয়া মেনিনজাইটিডিস, স্ট্রেপটোকক্কাস নিউমোনিয়া এবং হেমোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা টাইপ-বি।
প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে শতকরা ৮০ ভাগ ব্যাকটেরিয়াল মেনিনজাইটিসের কারণ নাইসেরিয়া মেনিনজাইটিডিস ও স্ট্রেপটোকক্কাস নিউমোনিয়া, মাইকোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকুলোসিস ইত্যাদি। পঞ্চাশোর্ধ ব্যক্তির ক্ষেত্রে লিস্টেরিয়া মনোসাইটোজিনেসিস জনিত মেনিনজাইটিসের হার অনেক বেশি।
খ) ভাইরাল মেনিনজাইটিস: ভাইরাস জনিত মেনিনজাইটিস ব্যাকটেরিয়া জনিত মেনিনজাইটিসের চাইতে তুলনামূলক ভাবে কম বিপদজনক। ভাইরাল মেনিনজাইটিসের প্রধান জীবানু এন্টেরোভাইরাস। এর বাইরেও কিছু ভাইরাস এই রোগের সৃষ্টি করে যা মশার মাধ্যমে একজনের কাছ থেকে অন্য জনে ছড়াতে পারে। যেসব ভাইরাস দিয়ে ভাইরাল মেনিনজাইটিস হয় তাদের মধ্যে আছে- মাস্পস ভাইরাস, হার্পিস ভাইরাস, মিসেলস ভাইরাস, ইনফ্লুয়েন্সা ভাইরাস, চিকেনপক্স ভাইরাস, ওয়েস্ট নাইল ভাইরাস, বিভিন্ন আরবোভাইরাস ইত্যাদি।
ঘ)ফাংগাল মেনিনজাইটিস: ফাঙ্গাস বা ছত্রাক দিয়েও মেনিনজাইটিস হতে পারে। ফাংগাল মেনিনজাইটিসের প্রধান জীবানু ক্রিপটোকক্কাস নিউফরমান্স। ফাংগাল মেনিনজাইটিসের প্রকোপ আফ্রিকা মহাদেশে সবচাইতে বেশি এবং তা ২০-২৫% এইডস আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুর কারণ। অন্য যেসব ফাংগাস মেনিনজাইটিস ঘটায় সেগুলো হলো হিস্টোপ্লাজমা ক্যাপসুলাটাম, কক্কিডায়োআইডেস ইমিটিস, ব্লাস্টোমাইসেস ডার্মাটাইটিস, ক্যানডিডা স্পেসিস প্রভৃতি।
ঘ) প্যারাসাইটিক মেনিনজাইটিস: এই ধরনের মেনিনজাইটিসের প্রধান প্রধান জীবাণু অ্যানজিওস্ট্রনজাইলাস ক্যানটোনেসিস, গ্যান্থোসটোমা স্পিনিজেরাম, সিস্টোসোমা প্রভৃতি। এটি সাধারণত খাদ্য, পানি ও মাটির মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে। এই মেনিনজাইটিস যে কারো হতে পারে, তবে যাদের কানে ,গলা বা নাকে অথবা সাইনাসে ইনফেকশন থাকে তাদের বেশি হয়। এর কারণ এ ধরণের ইনফেকশন সাধারণত যে ধরণের জীবাণু দিয়ে হয়, সেগুলো মেনিনজাইটিসও করতে পারে।
জীবাণুর বাইরেও কিছু কারণে মেনিনজাইটিস হতে পারে যার মধ্যে ক্যান্সারের বিস্তৃতি, কিছু বিশেষ ওষুধ সেবন (পেইনকিলার জাতীয় ওষুধ, ইমিউনোগ্লোবিন, অ্যান্টিবায়োটিক), কানেকটিভ টিস্যু ডিজঅর্ডার উল্লেখযোগ্য।
যদিও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মেনিনজাইটিস অতি অল্প সময়ের মাঝে শরীরে লক্ষণ প্রকাশ করে থাকে হয়ে, তবে দীর্ঘমেয়াদি মেনিনজাইটিসও হতে পারে। তাই বলা হয় মেনিনজাইটিস দুই ধরনের- অ্যাকিউট মেনিনজাইটিস যা জীবাণু প্রবেশের দুই সপ্তাহের মধ্যে হয় এবং ক্রনিক মেনিনজাইটিস যা জীবাণু শরীরে প্রবেশের চার সপ্তাহ বা তার বেশি সময় পরে প্রকাশ পায়।
তীব্র মাথা ব্যথার কারণঃ মেনিনজাইটিসে যে মারাত্মক প্রদাহ হয় তার কারণ ব্যাকটেরিয়ার সরাসরি আক্রমণ নয় বরং ব্যাকটেরিয়ার কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে অনুপ্রবেশের ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধকারী সিস্টেমের প্রতিরোধের চেষ্টা। মস্তিষ্ক ব্যাকটেরিয়া কোষের উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধকারী সিস্টেম বেশি পরিমাণ সাইটোকাইন ও হরমোন জাতীয় পদার্থ নিঃসরণ করে, এতে করে ব্লাড ব্রেইন রেরিয়ার দুর্ভেদ্য থেকে ভেদ্য হয়ে উঠে এবং রক্তনালী থেকে তরল নির্গত হয়ে মস্তিষ্ক ফুলে উঠে। এমতাবস্থায় বেশি বেশি শ্বেত রক্ত কণিকা সেরেব্রো স্পাইনাল ফ্লুইডে প্রবেশ করে, চাপ বৃদ্ধি পায় এবং প্রদাহ আরও তীব্রতর হয়ে উঠে।
চিকিৎসাঃ রোগীর মেরুদণ্ডের ভেতর থাকা কশেরুকা থেকে সিএসএফ (এক ধরনের তরল পদার্থ, যা মস্তিষ্ক ও কশেরুকার ভেতর থাকে) বের করে তা পরীক্ষা করা হয়। সিএসএফে কোষসংখ্যা, প্রোটিন, গ্লুকোজের পরিমাণ এবং সিএসএফের গ্রাম স্টেইন, কালচার পরীক্ষা করে রোগ নির্ণয় করা হয়। সঙ্গে কিছু কিছু ক্ষেত্রে রক্তের কালচার এবং সিবিসি ইত্যাদি পরীক্ষা করা হয়। রোগ নির্ণয়ের আগে শুধু লক্ষণ দেখেই চিকিৎসা শুরু করতে হবে, কারণ দ্রুত চিকিৎসা না শুরু করলে জীবন সংশয় দেখা দিতে পারে। ভাইরাসঘটিত মেনিনজাইটিসে আক্রান্ত হওয়ার দুই সপ্তাহের মধ্যে শরীরের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার কারণেও ভালো হতে পারে। এ ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা না নিলেও চলে। পর্যাপ্ত বিশ্রাম, যথেষ্ট পানি ও তরল পান, জ্বর ও মাথা ব্যথার জন্য ওষুধ সেবন করলেই চলে। ব্যাকটেরিয়াজনিত মেনিনজাইটিসে বহু ক্ষেত্রে মৃত্যু হতে পারে। তবে রোগাক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যথাযথ ও উচ্চমাত্রার অ্যান্টিবায়���টিক প্রয়োগ করা প্রয়োজন। মেনিনজাইটিস প্রতিরোধ মেনিনজাইটিস প্রতিরোধে ভ্যাকসিন বা টিকা আছে। আবার শিশু বয়সে আরো কিছু টিকা নিলে পরোক্ষভাবে তা মেনিনজাইটিস প্রতিরোধ করতে পারে। এগুলো হচ্ছে- MMR(এমএমআর বা মিসেলস-মাম্পস-রুবেলা), চিকেনপক্স, এইচআইবি বা হিব, নিউমোনিয়ার টিকা ইত্যাদি। ১৯৮০ সালের গোড়ার দিকে বিশ্বের অনেক দেশ তাদের বাচ্চাদের জন্য নিয়মিত টিকাদান কর্মসূচিতে হেমোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা টাইপ-বি’র টিকা অর্ন্তভুক্ত করেছে, কারণ এই জীবাণু ইনফ্লুয়েঞ্জার পাশাপাশি মেনিনজাইটিস সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে। মেনিনগোকক্কাস ভ্যাকসিন গ্রুপ-এ, সি, ডাব্লিও-১৩৫ এবং ওয়াই মেনিনজাইটিসের বিরুদ্ধে কার্য্যকরী প্রতিরোধ গড়ে তোলে যা সর্বোচ্চ প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করে। এখানে লক্ষ্য করা যেতে পারে যে, যে সব দেশে মেনিনগোকক্কাস গ্রুপ-সি এর ভ্যাকসিন ব্যবহৃত হচ্ছে সেখানে মেনিনজাইটিসের প্রকোপ উল্লেখযোগ্য হারে কমে গিয়েছে।
বাংলাদেশেও মেনিনজাইটিসের বিরুদ্ধে কার্যকর ও মানসম্পন্ন ভ্যাকসিন বাজারে প্রচলিত আছে যা সর্বোচ্চ প্রতিরক্ষা দেয়।সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির আওতায় নিউমোকক্কাল মেনিনজাইটিস এবং হেমোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা টাইপ বি-এর টিকা শিশুদের বিনা মূল্যে প্রদান করছে। মেনিনগোকক্কাস ভ্যাকসিন গ্রুপ-এ, সি, ডাব্লিও-১৩৫ এবং ওয়াই-এর সুবিধা:
১। শরীরে মেনিনজাইটিসের বিরুদ্ধে দীর্ঘস্থায়ী প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলে। ২। ২ বছর বয়স থেকে ব্যবহার করা যায়। ৩। একবার ব্যবহার করলে পরবর্তীতে আর দিতে হয় না।
মেনিনজাইটিস এখন সহজে ভ্যাকসিন ও চিকিৎসার মাধ্যমে কাটিয়ে উঠা যায় বলে একে অবহেলা করার কোনো সু্যোগ নেই। ১৯৯১-২০১০ সালে আফ্রিকার দেশগুলোতে মেনিনজাইটিস আক্রান্ত প্রায় ১০লাখ রোগীর মাঝে মারা যায় প্রায় ১লাখ। কেবলমাত্র ২০০৯ সালেই ৮০হাজার আফ্রিকান এই মেনিনজাইটিসে আক্রান্ত হয় এবং সেখানেও মারা যায় ৪ হাজারের বেশি মানুষ। আফ্রিকাতে ২০১৩ সালে এই রোগে আক্রান্ত ১২৪৬৪টি রোগীর মাঝে মারা যায় ১১৩১ জন এবং ২০১৪ সালে ১৪৩১৭ জনের মাঝে মারা যায় ১৩০৪জন।[তথ্যসূত্রঃ Global Health Obserbatory(GHO) Data] আমেরিকাতেও প্রতিবছর প্রায় ৪০০০ মানুষ ব্যাকটেরিয়াজনিত মেনিনজাইটিস এ আক্রান্ত হয় এবং সেখানেও প্রায় ৫০০জনের অধিক মানুষ মারা যায়। নিউমোকক্কাল মেনিনজাইটিস এ আক্রান্ত হয় প্রায় ৬০০০ জন ও মেনিনগোকক্কাল মেনিনজাইটিসে ২৬০০জন।(তথ্যসূত্রঃ Statistics of Meningitis, Florida Hospital)
মেনিনজাইটিস এমন একটি রোগ যা ভয়াবহ অাকার ধারণ করলে চিকিৎসার জন্য ২৪ ঘণ্টারও কম সময় পাওয়া যায়। তাই মেনিনজাইটিসের কোনো উপসর্গ দেখা দিলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। সঠিক সময়ে টিকা নেয়ার মাধ্যমে নিজেকে, নিজের পরিবারকে নিরাপদ রাখার পাশাপাশি তৈরি করতে হবে জনসচেতনতাও।
0 notes
Photo

ব্রেন টিউমারের আগে যে ৮টি লক্ষণ দেখা যায় ব্রেন টিউমার ক্যান্সারের মত আরেকটি ভয়াবহ রোগ। মস্তিষ্কে মাংসের অথবা কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়াকে ব্রেন টিউমার বলা হয়। সাধারণত দুই ধরণের ব্রেন টিউমার দেখা দেয় ক্যান্সার(ম্যালিগন্যান্ট) আরেকটি নন-ক্যান্সার( বিনাইন বা কম ক্ষতিকর)। দুটি ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যুক্তরাজ্যে ১০,৬০০ মানুষ প্রতিবছর ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। ব্রেন টিউমারের মূল কারণ এখনও চিকিৎসকের কাছে অজানা। যেকোন বয়সী মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে। সাধারণ কিছু শারীরিক সমস্যার মাধ্যমে ব্রেন টিউমার লক্ষণ প্রকাশ পেয়ে থাকে। এই সমস্যাগুলো অদেখা না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করলে মরণব্যাধি এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। ১. মাথাব্যথা যেকোন ব্রেন টিউমারের প্রধান লক্ষণ হল প্রচন্ড মাথা ব্যথা। মস্তিষ্কে অতিরিক্ত চাপ পড়ার কারণে এই ব্যথা হয়ে থাকে। ঘন ঘন তীব্র মাথা ব্যথা হয়ে থাকে। সাধারণত পেইন কিলার এই ব্যথা দূর করতে ব্যর্থ হয়। ২. বমি বমি ভাব সকালে মাথাব্যথা নিয়ে ঘুম ভাঙ্গা এবং এর সাথে সাথে বমি বমি ভাব হওয়া ব্রেন টিউমারের আরেকটি লক্ষণ। তীব্র মাথাব্যথার সাথে বমি হওয়াকে কখনই অবহেলা করা উচ���ত নয়। ৩. চোখের সমস্যা চোখে ঝাপসা দেখা, বিভিন্ন বস্তু এবং রং চিহ্নিত সমস্যা হয়ে থাকে ব্রেন টিউমার আক্রান্ত রোগীর। মূলত অপটিক্যাল লোব টিউমার আক্রান্ত হলে এই ধরণের সমস্যা হতে দেখা দেয়। ৪. অনুভূতি কমে যাওয়া মস্তিষ্কের প্যারাইটাল লোব টিউমার দ্বারা আক্রান্ত হলে হাত-পায়ের পেশীর অনুভূতি কমে যায়। এটি স্নায়ুকে আক্রমণ করে যা ফলে হাত-পা নাড়ানো কঠিন হয়। অনেক সময় হাত পা ভারী ভারী অনুভূত হয়। ৫. মাথা ঘুরানো মস্তিষ্কে টিউমার বড় হতে থাকলে শরীরের ভারসাম্য ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। হাঁটতে গেলে মাথা ঘুরানো খুব সাধারণ একটি লক্ষণ। ৬. খিঁচুনি ব্রেনের টিউমার বা ক্যান্সারের আরেকটি প্রধান লক্ষণ হল খিঁচুনি হওয়া। এ খিঁচুনি শরীরজুড়ে বা জে��ারালাইজড অথবা কোনো নির্দষ্ট অঙ্গে প্রকাশ পায়। খিঁচুনি অন্যান্য রোগ যেমন মৃগী বা অন্য যে কোনো রোগের লক্ষণ প্রকাশ করে তবে মাথা ব্যাথার সাথে এটি দেখা দিলে অতি দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ৭. শ্রবণে সমস্যা মস্তিষ্কের টিমপোরাল লোব টিউমার দ্বারা আক্রান্ত হলে শুনতে সমস্যা হয়ে থাকে। অনেক সময় এটি শ্রবণ শক্তি কেড়ে নেয়। অনেক সময় কথা বলার জড়তা সৃষ্টি হয় টিমপোরাল লোবের টিউমার কারণে। ৮. স্বাভাবিক মস্তিষ্ক কার্যকলাপে বাঁধা মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কার্যকলাপ যেমন মনোযোগ দেওয়া, যোগাযোগ, আবেগ, কথা বলা ইত্যাদি কার্যকলাপে বাঁধা সৃষ্টি হয়।
0 notes
Video
youtube
অটিজম কি?
অটিজম একটি মানসিক বিকাশঘটিত সমস্যা যা স্নায়ু বা স্নায়ুতন্ত্রের গঠন ও পরিবর্ধন জনিত অস্বাভাবিকতার ফলে হয়। অটিজমে আক্রান্ত শিশুর স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠতে অসুবিধা হয়। অটিজমের কারণে কথাবার্তা, অঙ্গভঙ্গি ও আচরণ একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে আবদ্ধ থাকে আবার অনেকক্ষেত্রে শিশুর মানসিক ও ভাষার উপর দক্ষতা কম থাকে। সাধারনত ১৮ মাস থেকে ৩ বছর সময়ের মধ্যেই এই রোগের লক্ষণগুলো দেখা যায়।
অটিজমে আক্রান্ত একটি শিশুর কিছু আচরণগত সমস্যা লক্ষ্য করা যায়, যেমন- সে সামাজিকভাবে মেলামেশা করতে পারে না। শুধু কথা না বলা অটিজমের মধ্যে পড়ে না। তার সাথে তার অন্যান্য আচরণ, সামাজিকতা, অন্য একটি শিশুর সাথে অথবা বয়স্ক মানুষের সাথে মেশার বিষয়ে গণ্ডগোল থাকলে ধরে নিতে হবে শিশুটি অটিজমে আক্রান্ত হতে পারে।
অটিজমে আক্রান্ত শিশু কথা বলতেও পারে আবার একদম নাও বলতে পারে। আবার কথা বললেও হয়তো ঠিকমতো গুছিয়ে বলতে পারে না। আবার একজন সুস্থ্য মানুষ যেভাবে কথা বলে সেভাবে নাও বলতে পারে। অর্থাৎ, সে হয়ত কথা বলতে পারে কিন্তু সুন্দরভাবে গুছিয়ে বলতে পারে না। এক্ষেত্রেও শিশুটি অটিজমে আক্রান্ত হতে পারে।
অটিজম কেন হয়? অটিজমের নির্দিষ্ট কোনো কারণ নেই। পরিবেশগত ও বংশগত কারণেও এই রোগ হতে পারে। সাধারনত জটিলতা, লক্ষণ অথবা তীব্রতার উপর নির্ভর করে এর কারণগুলো বিভিন্ন হতে পারে। কি কি কারনে অটিজম হতে পারে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে সতর্ক হলে অটিজম প্রতিরোধ সম্ভব হতে পারে।
চিকিৎসকদের মতে, ভাইরাল ইনফেকশন, গর্ভকালীন জটিলতা এবং বায়ু দূষণকারী উপাদানসমূহ স্পেক্ট্রাম ডিজঅর্ডার হওয়ার ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা রাখে। বিভিন্ন জীনের কারণে অটিজম স্পেক্ট্রাম ডিজঅর্ডার হতে পারে। আবার কোন কোন শিশুর ক্ষেত্রে জেনেটিক ডিজঅর্ডার যেমন- রেট সিন্ড্রোম বা ফ্র্যাজাইল এক্স সিন্ড্রোমের সাথে এই রোগটি হতে পারে। কিছু জীন মস্তিষ্কের কোষসমূহের পরিবহন ব্যবস্থায় বাধা প্রদান করে এবং রোগের তীব্রতা বৃদ্ধি করে। জেনেটিক বা জীনগত সমস্যা বংশগতও হতে পারে আবার নির্দিষ্ট কোনো কারণ ছাড়াই এই রোগটি হতে পারে। ভ্যাকসিন বা প্রতিষেধকের সাথে অটিজমের কোনও সম্পর্ক পাওয়া যায়নি।
অটিজমের লক্ষন অটিজমের লক্ষণগুলো সঠিকভাবে জানার মাধ্যমে অটিজম বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে সাধারণত যে লক্ষনগুলো দেখতে পাওয়া যায় সেগুলো হলঃ
অটিস্টিক শিশুদের ঘুম সম্পর্কিত কিছু সমস্যা থাকে। ঘুম স্বাভাবিক না হওয়ার কারনে তাদের মনোযোগ ও কাজের সক্ষমতা কমে যায় এবং আচার আচরণে সেটা পরিস্কার বোঝা যায়। অনেক শিশুর সঠিক সময়ে কথা বলতে সমস্যা হয়। মুলত ১৮ মাস থেকে ২ বছর সময়ের মধ্যে এটা বোঝা যায়। অনেক অটিস্টিক শিশুর মাঝে অল্প মাত্রায় হলেও বুদ্ধি প্রতিবন্ধীতা লক্ষ্য করা যায়। অনেক শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি সঠিকভাবে হয় না। অটিজমে আক্রান্ত অনেক শিশু দেখা, শোনা, গন্ধ, স্বাদ অথবা স্পর্শের প্রতি অতি সংবেদনশীল অথবা প্রতিক্রিয়াহীন থাকতে পারে। সাধারণত অটিস্টিক শিশুদের প্রতি চারজনে একজনের খিঁচুনি সমস্যা হতে পারে। অটিজম থাকা শিশুদের মানসিক অস্থিরতার ঝুঁকি বেশী থাকে। এসকল শিশুর বিষন্নতা, উদ্বিগ্নতা ও মনোযোগে ঘাটতিসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। অটিস্টিক শিশুদের প্রায়ই হজমের অসুবিধা, পেট ব্যথা, ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, পেটের গ্যাস, বমি ইত্যাদি হতে পারে।
অটিজম এর চিকিৎসা কোনও শিশু অটিজমে আক্রান্ত মনে হলে অনতিবিলম্বে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। প্রাথমিক অবস্থায় অটিজম নির্ণয় করতে পারলে এবং উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহন করলে অটিজম এর ক্ষতিকারক প্রতিক্রিয়াগুলো অনেক সফলভাবে মোকাবেলা করা যায়। শিশুর কি ধরনের অস্বাভাবিকতা আছে সেটা সঠিকভাবে নির্ণয় করে, নির্দিষ্ট বিষয়ের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সমন্বয়ে চিকিৎসা করলে ভাল ফল পাওয়া যেতে পারে।
এই ধরনের শিশুদের জন্য প্রচুর বিশেষায়িত স্কুল আছে, সেখানে তাদের বিশেষভাবে পাঠদান করা হয়। এ ধরনের স্কুলে ভর্তির ক্ষেত্রে একজন অকুপেশনাল থেরাপিষ্টের পরামর্শ নিতে হবে। তিনি পরামর্শ দেবেন, কোন ধরনের স্কুল আপনার শিশুর জন্য উপযুক্ত হবে।
অনেক অটিস্টিক শিশুর কিছু মানসিক সমস্যা যেমন- অতিরিক্ত চঞ্চলতা, অতিরিক্ত ভিতি, ঘুমের সমস্যা, মনোযোগের সমস্যা ইত্যাদি থাকতে পারে। অনেক সময় এরকম ক্ষেত্রে, চিকিৎসক শিশুটিকে ঔষধ দিতে পারেন।
অটিজম প্রতিরোধে করণীয় কি? অটিজমের যেহেতু কোনও নিরাময় নেই, তাই সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমেই এটি প্রতিরোধ করতে হবে। পর��বারে কারো অটিজম অথবা কোন মানসিক এবং আচরণগত সমস্যা থাকলে, পরবর্তী সন্তানের ক্ষেত্রে অটিজমের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। এক্ষেত্রে পরিকল্পিত গর্ভধারণ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভাবস্থায় অধিক দুশ্চিন্তা না করা, পর্যাপ্ত ঘুম, শিশুর সাথে নিবিড় সম্পর্ক স্থাপন ইত্যাদি ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। আরও কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। যেমন-
বেশি বয়সে বাচ্চা না নেওয়া। বাচ্চা নেয়ার আগে মাকে রুবেলা ভেকসিন দিতে হবে। গর্ভাবস্থায় চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোন ওষুধ খাওয়া যাবে না। মায়ের ধূমপান, মদ্যপানের মত কোন অভ্যাস থাকলে বাচ্চা নেয়ার আগে অবশ্যই তা ছেড়ে দিতে হবে। বাচ্চাকে অবশ্যই মায়ের বুকের দুধ খাওয়াতে হবে।
0 notes
Video
youtube
জলাতঙ্ক বা হাইড্রোফোবিয়া মূলত একটি ভাইরাসজনিত মারাত্মক রোগ। এ রোগকে হাইড্রোফোবিয়া না বলে র্যাবিস ও (Rabies) বলা হয়। র্যাবিস শব্দটি একটি ল্যাটিন শব্দ, যার অর্থ পাগলামী করা। সাধারণত কুকুর, বিড়াল, বানর, চিকা, শেয়াল, বেজি ইত্যাদি প্রাণী জলাতঙ্কের বাহক। ভাইরাসজনিত র্যাবিস জীবাণু দ্বারা মানুষ আক্রান্ত হলে যে রোগ-লক্ষণ প্রকাশ পায় তাকে জলাতঙ্ক বলা হয়। মূলত জলাতঙ্ক আক্রান্ত পশু বা রোগীর আচরণ থেকেই এই নামকরণের সূত্রপাত। এ রোগের প্রধান লক্ষণ জল দেখলেই ভয় পাওয়া, জল খাওয়া বা পান করার সময় খাদ্য নালীর উর্ধভাগের মাংসপেশীতে তীব্র ব্যথা ইত্যাদি।
জলাতঙ্ক একবার হলে রোগীকে বাঁচানো একটু কঠিন বা অনেক ক্ষেত্রে বাঁচানো সম্ভব হয় না। তবে বর্তমানে এ রোগের উন্নত চিকিৎসা আছে। কুকুরে কামড়ানোর সাথে সাথেই চিকিৎসকের পরামর্শ মত ভ্যাকসিন নেয়া শুরু করলে ভয়ের সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। সাধারনত কুকুর, বিড়াল, শেয়াল, বানর, ইঁদুর, বেজি ইত্যাদি প্রাণী বিশেষ করে কুকুর, র্যাবিস জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হলে এবং মানুষকে কামড়ালে এ রোগ হয়। এসব প্রাণীর মুখের লালায় র্যাবিস ভাইরাস জীবাণু থাকে এবং এ লালা কামড় বা কোন পুরানো ক্ষতের মাধ্যমে বা আঁচড়ের মাধ্যমে রক্তের সংস্পর্শে আসলে রক্তের মাধ্যমে শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং জলাতঙ্ক রোগ সৃষ্টি হয়। সব কুকুরে কামড়ালেই কিন্তু জলাতঙ্ক রোগ হয় না। যদি কুকুরটির লালায় র্যাবিস জীবাণু না থাকে তাহলে কুকুরের কামড়ে এ রোগ হবে না। মূলত কুকুরের কামড়েই আমাদের দেশে শতকরা ৯৫ ভাগ জলাতঙ্ক রোগ হয়। জলাতঙ্ক র্যাবিস এর অনেকগুলো লক্ষণের একটি। বাতাসভীতিও এ রোগের আরেকটি লক্ষণ।
জলাতঙ্ক আক্রান্ত মানুষের লক্ষণ Rabies নামক এক প্রকার ভাইরাস জলাতঙ্ক বা হাইড্রোফোবিয়া (Hydrophobia) রোগের জন্য দায়ী। কুকুর কামড়ানোর ১ থেকে ৭ সপ্তাহের মধ্যে জলাতঙ্কের লক্ষণগুলো দেখা দিতে শুরু করে। লক্ষণ প্রকাশের পূর্বেই অর্থাৎ কুকুরে কামড়ালেই চিকিৎসা শুরু করতে হবে৷ Rabies ভাইরাসে আক্রান্ত কুকুর কোন মানুষকে কামড়ালে, ভাইরাসটি সেই ব্যক্তির দেহে প্রবেশ করে ও কিছু অস্বাভাবিক লক্ষণের প্রকাশ ঘটায়। যেমন-
এর প্রধান লক্ষণ হল জল বা কোন তরল দেখে আতঙ্কিত হওয়া, পানি খেতে চায় না, পানি দেখলে ভয় পায়। কামড়ের জায়গায় ব্যথা ও চিনিচিন করে আবার চুলকানি হতে পারে। পেটে ব্যথা স্নান করতে অনীহা ভাব শরীরের পেশীতে টান লাগা মুখ থেকে অতিরিক্ত থুতু বের হওয়া। শ্বাস কষ্ট হওয়া পানি পিপাসা থাকা মুখ থেকে লালা পড়ে মৃদু জ্বর, ঢোক গিলতে অসুবিধা খিঁচুনি হতে পারে। শান্ত অবস্থা থেকে হঠাৎ রেগে যাওয়া বা অতিরিক্ত উত্তেজনা রোগী অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে এবং প্যার���লাইসিস হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে মৃদু বায়ু প্রবাহেও রোগী ভয় পেতে পারে। আবোল তাবোল কথা বলা। অনেক ক্ষেত্রে আক্রান্ত মানুষ অন্য আক্রান্ত প্রানির মতো অন্য মানুষকে কামরাতে চাইতে পারে।
কুকুর কামড়ালে কি করবেন? লক্ষণ প্রকাশ পাবার পর এ রোগের কোনো চিকিৎসা নেই এবং রোগীর মৃত্যুর সম্ভাবনাই বেশি। তবে এই মারাত্মক রোগ সম্পূর্ণরূপে প্রতিরোধযোগ্য। কুকুর বা অন্য কোন প্রাণীর কামড়ের সাথে সাথে ক্ষতস্থান সাবান বা এনটিসেপটিক দ্বারা পরিস্কার করলে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী যাথাযথ ভেকসিন গ্রহন করলে সহজেই এই রোগ প্রতিরোধ করা যায়।
প্রথমেই ক্ষতস্থানটি সাবান, পটাসিয়াম পারম্যাঙ্গানেট দ্রবণ, ৪০-৭০% অ্যালকোহল, পোভিডিন অথবা আয়োডিন যেকোনো একটি দিয়ে ক্ষতস্থানটিকে ভালো করে ভিজিয়ে পরিস্কার করে নিতে হবে। এতে ক্ষতিকর ভাইরাস ক্ষত স্থানে লেগে থাকলে তা নষ্ট হয়ে যাবে। তারপর দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ইঞ্জেকশান রাবিপুর ০, ৩, ৭, ১৪, ৩০ ও ৯০ তম দিনে মাংসপেশিতে নিতে হবে। আক্রান্ত কুকুর কামড়ানোর পরও টিকা নিলে অনেকটা নিরাপদ অবস্থায় থাকা যায়। আগে বলা হতো, কোনো কুকুর কামড়ালে সেই কুকুরকে ১০ দিন বেধে রেখে পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং ১০ দিনের মধ্যে কুকুরটি যদি মারা না যায়, তাহলে চিকিৎসার প্রয়োজন নেই। কিন্তু এখন সে ধারণা সত্য নয় বলে প্রমাণিত হয়েছে অর্থাৎ বাইরে থেকে আপাত সুস্থ দেখতে কুকুরের মধ্যেও জলাতঙ্কের জীবাণু থাকতে পারে। তাই কুকুরে কামড়ালে দেরি না করে অবশ্যই টিকা নিতে হবে। সেই সঙ্গে ইমিউনোগ্লোবিওলিন ইনজেকশনও দিতে হবে। অপরদিকে যারা এসব প্রাণী নিয়ে কাজ করেন তারা সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আগেই টিকা দিয়ে রাখতে পারে���।
জলাতঙ্ক বা হাইড্রোফোবিয়া কি? কুকুর কামড়ালে করণীয় জলাতঙ্ক প্রতিরোধে করনীয় পোষা কুকুর বা বিড়ালকে নিয়মিত টিকা দিতে হবে। বেওয়ারিশ কুকুর মেরে ফেলার ব্যবস্থা করতে হবে। যেসব প্রাণীর আঁচড় বা কামড়ে জলাতঙ্ক রোগ হয়, যেমন- কুকুর, বিড়াল ইত্যাদি প্রাণী থেকে সাবধানে থাকতে হবে। বিশেষ করে বাচ্চাদের এসব প্রাণী থেকে দূরে রাখতে হবে। পূর্ব প্রস্ততি হিসেবে কুকুরে না কামড়ালেও আগে থেকে এ টিকা দেওয়া যায়। সেক্ষেত্রে ০, ৭, ২১ অথবা ২৮তম দিনে তিন থেকে চারটি টিকা দিতে হবে। কুকুর কামড়ালে সাথে সাথে ক্ষতস্থান সাবান দিয়ে ভালভাবে ধুতে হবে। এরপর সেখানে পভিডন আয়োডিন দিতে হবে।
জলাতঙ্ক আক্রান্ত কুকুরের লক্ষণ কুকুর বা অন্য কোনো প্রাণী কামড়ালে দিশেহারা না হয়ে প্রাণীটিকে ধরে ভালভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। দংশিত প্রাণীটিকে হত্যা না করে ১০ দিন বেঁধে রেখে পর্যবেক্ষণ করে যদি নিম্নলিখিত লক্ষনসমূহ প্রকাশ পায় তবে বুঝতে হবে প্রাণীটি ভাইরাসে আক্রান্ত। দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে।
0 notes
Video
youtube
জলাতঙ্কবা হাইড্রোফোবিয়া মূলত একটি ভাইরাসজনিত মারাত্মক রোগ। এ রোগকে হাইড্রোফোবিয়া না বলে র্যাবিস ও (Rabies) বলা হয়। র্যাবিস শব্দটি একটি ল্যাটিন শব্দ, যার অর্থ পাগলামী করা। সাধারণত কুকুর, বিড়াল, বানর, চিকা, শেয়াল, বেজি ইত্যাদি প্রাণী জলাতঙ্কের বাহক। ভাইরাসজনিত র্যাবিস জীবাণু দ্বারা মানুষ আক্রান্ত হলে যে রোগ-লক্ষণ প্রকাশ পায় তাকে জলাতঙ্ক বলা হয়। মূলত জলাতঙ্ক আক্রান্ত পশু বা রোগীর আচরণ থেকেই এই নামকরণের সূত্রপাত। এ রোগের প্রধান লক্ষণ জল দেখলেই ভয় পাওয়া, জল খাওয়া বা পান করার সময় খাদ্য নালীর উর্ধভাগের মাংসপেশীতে তীব্র ব্যথা ইত্যাদি।
জলাতঙ্ক একবার হলে রোগীকে বাঁচানো একটু কঠিন বা অনেক ক্ষেত্রে বাঁচানো সম্ভব হয় না। তবে বর্তমানে এ রোগের উন্নত চিকিৎসা আছে। কুকুরে কামড়ানোর সাথে সাথেই চিকিৎসকের পরামর্শ মত ভ্যাকসিন নেয়া শুরু করলে ভয়ের সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। সাধারনত কুকুর, বিড়াল, শেয়াল, বানর, ইঁদুর, বেজি ইত্যাদি প্রাণী বিশেষ করে কুকুর, র্যাবিস জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হলে এবং মানুষকে কামড়ালে এ রোগ হয়। এসব প্রাণীর মুখের লালায় র্যাবিস ভাইরাস জীবাণু থাকে এবং এ লালা কামড় বা কোন পুরানো ক্ষতের মাধ্যমে বা আঁচড়ের মাধ্যমে রক্তের সংস্পর্শে আসলে রক্তের মাধ্যমে শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং জলাতঙ্ক রোগ সৃষ্টি হয়। সব কুকুরে কামড়ালেই কিন্তু জলাতঙ্ক রোগ হয় না। যদি কুকুরটির লালায় র্যাবিস জীবাণু না থাকে তাহলে কুকুরের কামড়ে এ রোগ হবে না। মূলত কুকুরের কামড়েই আমাদের দেশে শতকরা ৯৫ ভাগ জলাতঙ্ক রোগ হয়। জলাতঙ্ক র্যাবিস এর অনেকগুলো লক্ষণের একটি। বাতাসভীতিও এ রোগের আরেকটি লক্ষণ।
জলাতঙ্ক আক্রান্ত মানুষের লক্ষণ Rabies নামক এক প্রকার ভাইরাস জলাতঙ্ক বা হাইড্রোফোবিয়া (Hydrophobia) রোগের জন্য দায়ী। কুকুর কামড়ানোর ১ থেকে ৭ সপ্তাহের মধ্যে জলাতঙ্কের লক্ষণগুলো দেখা দিতে শুরু করে। লক্ষণ প্রকাশের পূর্বেই অর্থাৎ কুকুরে কামড়ালেই চিকিৎসা শুরু করতে হবে৷ Rabies ভাইরাসে আক্রান্ত কুকুর কোন মানুষকে কামড়ালে, ভাইরাসটি সেই ব্যক্তির দেহে প্রবেশ করে ও কিছু অস্বাভাবিক লক্ষণের প্রকাশ ঘটায়। যেমন-
এর প্রধান লক্ষণ হল জল বা কোন তরল দেখে আতঙ্কিত হওয়া, পানি খেতে চায় না, পানি দেখলে ভয় পায়। কামড়ের জায়গায় ব্যথা ও চিনিচিন করে আবার চুলকানি হতে পারে। পেটে ব্যথা স্নান করতে অনীহা ভাব শরীরের পেশীতে টান লাগা মুখ থেকে অতিরিক্ত থুতু বের হওয়া। শ্বাস কষ্ট হওয়া পানি পিপাসা থাকা মুখ থেকে লালা পড়ে মৃদু জ্বর, ঢোক গিলতে অসুবিধা খিঁচুনি হতে পারে। শান্ত অবস্থা থেকে হঠাৎ রেগে যাওয়া বা অতিরিক্ত উত্তেজনা রোগী অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে এবং প্যারালাইসিস হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে মৃদু বায়ু প্রবাহেও রোগী ভয় পেতে পারে। আবোল তাবোল কথা বলা। অনেক ক্ষেত্রে আক্রান্ত মানুষ অন্য আক্রান্ত প্রানির মতো অন্য মানুষকে কামরাতে চাইতে পারে।
কুকুর কামড়ালে কি করবেন? লক্ষণ প্রকাশ পাবার পর এ রোগের কোনো চিকিৎসা নেই এবং রোগীর মৃত্যুর সম্ভাবনাই বেশি। তবে এই মারাত্মক রোগ সম্পূর্ণরূপে প্রতিরোধযোগ্য। কুকুর বা অন্য কোন প্রাণীর কামড়ের সাথে সাথে ক্ষতস্থান সাবান বা এনটিসেপটিক দ্বারা পরিস্কার করলে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী যাথাযথ ভেকসিন গ্রহন করলে সহজেই এই রোগ প্রতিরোধ করা যায়।
প্রথমেই ক্ষতস্থানটি সাবান, পটাসিয়াম পারম্যাঙ্গানেট দ্রবণ, ৪০-৭০% অ্যালকোহল, পোভিডিন অথবা আয়োডিন যেকোনো একটি দিয়ে ক্ষতস্থানটিকে ভালো করে ভিজিয়ে পরিস্কার করে নিতে হবে। এতে ক্ষতিকর ভাইরাস ক্ষত স্থানে লেগে থাকলে তা নষ্ট হয়ে যাবে। তারপর দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ইঞ্জেকশান রাবিপুর ০, ৩, ৭, ১৪, ৩০ ও ৯০ তম দিনে মাংসপেশিতে নিতে হবে। আক্রান্ত কুকুর কামড়ানোর পরও টিকা নিলে অনেকটা নিরাপদ অবস্থায় থাকা যায়। আগে বলা হতো, কোনো কুকুর কামড়ালে সেই কুকুরকে ১০ দিন বেধে রেখে পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং ১০ দিনের মধ্যে কুকুরটি যদি মারা না যায়, তাহলে চিকিৎসার প্রয়োজন নেই। কিন্তু এখন সে ধারণা সত্য নয় বলে প্রমাণিত হয়েছে অর্থাৎ বাইরে থেকে আপাত সুস্থ দেখতে কুকুরের মধ্যেও জলাতঙ্কের জীবাণু থাকতে পারে। তাই কুকুরে কামড়ালে দেরি না করে অবশ্যই টিকা নিতে হবে। সেই সঙ্গে ইমিউনোগ্লোবিওলিন ইনজেকশনও দিতে হবে। অপরদিকে যারা এসব প্রাণী নিয়ে কাজ করেন তারা সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আগেই টিকা দিয়ে রাখতে পারেন।
জলাতঙ্ক বা হাইড্রোফোবিয়া কি? কুকুর কামড়ালে করণীয় জলাতঙ্ক প্রতিরোধে করনীয় পোষা কুকুর বা বিড়ালকে নিয়মিত টিকা দিতে হবে। বেওয়ারিশ কুকুর মেরে ফেলার ব্যবস্থা করতে হবে। যেসব প্রাণীর আঁচড় বা কামড়ে জলাতঙ্ক রোগ হয়, যেমন- কুকুর, বিড়াল ইত্যাদি প্রাণী থেকে সাবধানে থাকতে হবে। বিশেষ করে বাচ্চাদের এসব প্রাণী থেকে দূরে রাখতে হবে। পূর্ব প্রস্ততি হিসেবে কুকুরে না কামড়ালেও আগে থেকে এ টিকা দেওয়া যায়। সেক্ষেত্রে ০, ৭, ২১ অথবা ২৮তম দিনে তিন থেকে চারটি টিকা দিতে হবে। কুকুর কামড়ালে সাথে সাথে ক্ষতস্থান সাবান দিয়ে ভালভাবে ধুতে হবে। এরপর সেখানে পভিডন আয়োডিন দিতে হবে।
জলাতঙ্ক আক্রান্ত কুকুরের লক্ষণ কুকুর বা অন্য কোনো প্রাণী কামড়ালে দিশেহারা না হয়ে প্রাণীটিকে ধরে ভালভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। দংশিত প্রাণীটিকে হত্যা না করে ১০ দিন বেঁধে রেখে পর্যবেক্ষণ করে যদি নিম্নলিখিত লক্ষনসমূহ প্রকাশ পায় তবে বুঝতে হবে প্রাণীটি ভাইরাসে আক্রান্ত। দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে।
0 notes
Video
youtube
জলাতঙ্ক বা হাইড্রোফোবিয়া মূলত একটি ভাইরাসজনিত মারাত্মক রোগ। এ রোগকে হাইড্রোফোবিয়া না বলে র্যাবিস ও (Rabies) বলা হয়। র্যাবিস শব্দটি একটি ল্যাটিন শব্দ, যার অর্থ পাগলামী করা। সাধারণত কুকুর, বিড়াল, বানর, চিকা, শেয়াল, বেজি ইত্যাদি প্রাণী জলাতঙ্কের বাহক। ভাইরাসজনিত র্যাবিস জীবাণু দ্বারা মানুষ আক্রান্ত হলে যে রোগ-লক্ষণ প্রকাশ পায় তাকে জলাতঙ্ক বলা হয়। মূলত জলাতঙ্ক আক্রান্ত পশু বা রোগীর আচরণ থেকেই এই নামকরণের সূত্রপাত। এ রোগের প্রধান লক্ষণ জল দেখলেই ভয় পাওয়া, জল খাওয়া বা পান করার সময় খাদ্য নালীর উর্ধভাগের মাংসপেশীতে তীব্র ব্যথা ইত্যাদি।
জলাতঙ্ক একবার হলে রোগীকে বাঁচানো একটু কঠিন বা অনেক ক্ষেত্রে বাঁচানো সম্ভব হয় না। তবে বর্তমানে এ রোগের উন্নত চিকিৎসা আছে। কুকুরে কামড়ানোর সাথে সাথেই চিকিৎসকের পরামর্শ মত ভ্যাকসিন নেয়া শুরু করলে ভয়ের সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। সাধারনত কুকুর, বিড়াল, শেয়াল, বানর, ইঁদুর, বেজি ইত্যাদি প্রাণী বিশেষ করে কুকুর, র্যাবিস জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হলে এবং মানুষকে কামড়ালে এ রোগ হয়। এসব প্রাণীর মুখের লালায় র্যাবিস ভাইরাস জীবাণু থাকে এবং এ লালা কামড় বা কোন পুরানো ক্ষতের মাধ্যমে বা আঁচড়ের মাধ্যমে রক্তের সংস্পর্শে আসলে রক্তের মাধ্যমে শরীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং জলাতঙ্ক রোগ সৃষ্টি হয়। সব কুকুরে কামড়ালেই কিন্তু জলাতঙ্ক রোগ হয় না। যদি কুকুরটির লালায় র্যাবিস জীবাণু না থাকে তাহলে কুকুরের কামড়ে এ রোগ হবে না। মূলত কুকুরের কামড়েই আমাদের দেশে শতকরা ৯৫ ভাগ জলাতঙ্ক রোগ হয়। জলাতঙ্ক র্যাবিস এর অনেকগুলো লক্ষণের একটি। বাতাসভীতিও এ রোগের আরেকটি লক্ষণ।
জলাতঙ্ক আক্রান্ত মানুষের লক্ষণ Rabies নামক এক প্রকার ভাইরাস জলাতঙ্ক বা হাইড্রোফোবিয়া (Hydrophobia) রোগের জন্য দায়ী। কুকুর কামড়ানোর ১ থেকে ৭ সপ্তাহের মধ্যে জলাতঙ্কের লক্ষণগুলো দেখা দিতে শুরু করে। লক্ষণ প্রকাশের পূর্বেই অর্থাৎ কুকুরে কামড়ালেই চিকিৎসা শুরু করতে হবে৷ Rabies ভাইরাসে আক্রান্ত কুকুর কোন মানুষকে কামড়ালে, ভাইরাসটি সেই ব্যক্তির দেহে প্রবেশ করে ও কিছু অস্বাভাবিক লক্ষণের প্রকাশ ঘটায়। যেমন-
এর প্রধান লক্ষণ হল জল বা কোন তরল দেখে আতঙ্কিত হওয়া, পানি খেতে চায় না, পানি দেখলে ভয় পায়। কামড়ের জায়গায় ব্যথা ও চিনিচিন করে আবার চুলকানি হতে পারে। পেটে ব্যথা স্নান করতে অনীহা ভাব শরীরের পেশীতে টান লাগা মুখ থেকে অতিরিক্ত থুতু বের হওয়া। শ্বাস কষ্ট হওয়া পানি পিপাসা থাকা মুখ থেকে লালা পড়ে মৃদু জ্বর, ঢোক গিলতে অসুবিধা খিঁচুনি হতে পারে। শান্ত অবস্থা থেকে হঠাৎ রেগে যাওয়া বা অতিরিক্ত উত্তেজনা রোগী অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে এবং প্যারালাইসিস হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে মৃদু বায়ু প্রবাহেও রোগী ভয় পেতে পারে। আবোল তাবোল কথা বলা। অনেক ক্ষেত্রে আক্রান্ত মানুষ অন্য আক্রান্ত প্রানির মতো অন্য মানুষকে কামরাতে চাইতে পারে।
কুকুর কামড়ালে কি করবেন? লক্ষণ প্রকাশ পাবার পর এ রোগের কোনো চিকিৎসা নেই এবং রোগীর মৃত্যুর সম্ভাবনাই বেশি। তবে এই মারাত্মক রোগ সম্পূর্ণরূপে প্রতিরোধযোগ্য। কুকুর বা অন্য কোন প্রাণীর কামড়ের সাথে সাথে ক্ষতস্থান সাবান বা এনটিসেপটিক দ্বারা পরিস্কার করলে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী যাথাযথ ভেকসিন গ্রহন করলে সহজেই এই রোগ প্রতিরোধ করা যায়।
প্রথমেই ক্ষতস্থানটি সাবান, পটাসিয়াম পারম্যাঙ্গানেট দ্রবণ, ৪০-৭০% অ্যালকোহল, পোভিডিন অথবা আয়োডিন যেকোনো একটি দিয়ে ক্ষতস্থানটিকে ভালো করে ভিজিয়ে পরিস্কার করে নিতে হবে। এতে ক্ষতিকর ভাইরাস ক্ষত স্থানে লেগে থাকলে তা নষ্ট হয়ে যাবে। তারপর দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ইঞ্জেকশান রাবিপুর ��, ৩, ৭, ১৪, ৩০ ও ৯০ তম দিনে মাংসপেশিতে নিতে হবে। আক্রান্ত কুকুর কামড়ানোর পরও টিকা নিলে অনেকটা নিরাপদ অবস্থায় থাকা যায়। আগে বলা হতো, কোনো কুকুর কামড়ালে সেই কুকুরকে ১০ দিন বেধে রেখে পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং ১০ দিনের মধ্যে কুকুরটি যদি মারা না যায়, তাহলে চিকিৎসার প্রয়োজন নেই। কিন্তু এখন সে ধারণা সত্য নয় বলে প্রমাণিত হয়েছে অর্থাৎ বাইরে থেকে আপাত সুস্থ দেখতে কুকুরের মধ্যেও জলাতঙ্কের জীবাণু থাকতে পারে। তাই কুকুরে কামড়ালে দেরি না করে অবশ্যই টিকা নিতে হবে। সেই সঙ্গে ইমিউনোগ্লোবিওলিন ইনজেকশনও দিতে হবে। অপরদিকে যারা এসব প্রাণী নিয়ে কাজ করেন তারা সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আগেই টিকা দিয়ে রাখতে পারেন।
জলাতঙ্ক বা হাইড্রোফোবিয়া কি? কুকুর কামড়ালে করণীয় জলাতঙ্ক প্রতিরোধে করনীয় পোষা কুকুর বা বিড়ালকে নিয়মিত টিকা দিতে হবে। বেওয়ারিশ কুকুর মেরে ফেলার ব্যবস্থা করতে হবে। যেসব প্রাণীর আঁচড় বা কামড়ে জলাতঙ্ক রোগ হয়, যেমন- কুকুর, বিড়াল ইত্যাদি প্রাণী থেকে সাবধানে থাকতে হবে। বিশেষ করে বাচ্চাদের এসব প্রাণী থেকে দূরে রাখতে হবে। পূর্ব প্রস্ততি হিসেবে কুকুরে না কামড়ালেও আগে থেকে এ টিকা দেওয়া যায়। সেক্ষেত্রে ০, ৭, ২১ অথবা ২৮তম দিনে তিন থেকে চারটি টিকা দিতে হবে। কুকুর কামড়ালে সাথে সাথে ক্ষতস্থান সাবান দিয়ে ভালভাবে ধুতে হবে। এরপর সেখানে পভিডন আয়োডিন দিতে হবে।
জলাতঙ্ক আক্রান্ত কুকুরের লক্ষণ কুকুর বা অন্য কোনো প্রাণী কামড়ালে দিশেহারা না হয়ে প্রাণীটিকে ধরে ভালভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। দংশিত প্রাণীটিকে হত্যা না করে ১০ দিন বেঁধে রেখে পর্যবেক্ষণ করে যদি নিম্নলিখিত লক্ষনসমূহ প্রকাশ পায় তবে বুঝতে হবে প্রাণীটি ভাইরাসে আক্রান্ত। দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে।
0 notes
Photo

ব্রেন টিউমার কেন হয় ও কাদের হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে? ব্রেন টিউমার কী? ডাঃ আবু সাঈদ: টিউমার হচ্ছে শরীরের যে কোনো জায়গায় বা অঙ্গে কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি। এবং এই টিউমারটি যখন ব্রেনের ভেতরে হয় তখন সেটাকে আমরা বলি ব্রেন টিউমার এর লক্ষণগুলো কী কী? ডাঃ আবু সাঈদ : ব্রেন টিউমারের লক্ষণ একেক সময় একেক রকম হতে পারে। এর প্রধান বা স্বাভাবিক লক্ষণ হচ্ছে মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া এবং দৃষ্টিশক্তি ক্রমশ কমে যাওয়ার এই তিনটিকে আমরা সব টিউমারের ক্ষেত্রে ধরতে পারি। এ ছাড়াও অনেক সময় রোগীর অন্য লক্ষণও দেখা দিতে পারে। যেমন: রোগীর খিঁচুনি হতে পারে অথবা শরীরের যে কোনো একদিকের হাত বা পা দুর্বল হয়ে যায় অথবা তার মানসিক অবস্থার পরিবর্তন হতে পারে অর্থাৎ তার আচরণে অস্বাভাবিকতা দেখা দেবে। অনেক ক্ষেত্রে হরমোনের নিঃসরণের আধিক্য বা ঘাটতি দেখা দিতে পারে। যা ব্রেন টিউমারের রোগীর ক্ষেত্রে বিভিন্নভাবে প্রকাশ পায়। ব্রেন টিউমার কেন হয়? ডাঃ আবু সাঈদ : ব্রেন টিউমারের কারণ এখন পর্যন্ত অজানা। খারাপ টিউমার শরীরের অন্য জায়গা থেকে ক্যান্সারের রূপ নিয়ে ব্রেনের মধ্যে চলে যায়। বংশগত কারণেও ব্রেন টিউমার হতে পারে। কাদের ক্ষেত্রে হওয়ার প্রবণতা বেশি? বাংলাদেশে এর প্রকোপ কেমন? ডাঃ আবু সাঈদ : কিছু টিউমার আছে ছোটদের বেশি হয়, আবার কিছু টিউমার আছে যা ৬০ বছরের ওপরে গেলে বেশি হয়। মহিলাদের ক্ষেত্রে সব ধরনের টিউমারের প্রতিক্রিয়া এক রকম নয়। একেক ক্ষেত্রে টিউমারটি একেক রকমভাবে প্রকাশ পায়। যার ফলে আমরা ওভাবে বলতে পারব না কাদের ক্ষেত্রে বেশি হয়। এক কথায় বলতে পারি, যে কোনো বয়সের, যে কোনো পুরুষ বা মহিলার টিউমার হতে পারে। একেক ধরনের টিউমার শিশু বা মহিলা বা বয়স্কদের ক্ষেত্রে একেক রকমের হতে পারে। এটা সত্যি দুঃখজনক যে, বাংলাদেশে ক্রমশ আমরা এর প্রকোপ বৃদ্ধি পেতে দেখছি। তবে সঠিক পরিসংখ্যান এখন পর্যন্ত আমাদের হাতে নেই। ব্রেন টিউমার কি সারানো সম্ভব? ডাঃ আবু সাঈদ : ব্রেন টিউমার মানেই ক্যান্সার এটা ভুল ধারণা। কিছু কিছু টিউমার আছে যা খারাপ টিউমার বা ক্যান্সার টিউমার, কিন্তু অনেক টিউমারই আছে যেগুলো সম্পূর্ণভাবে আরোগ্যযোগ্য। কিছু কিছু টিউমার আছে চিকিৎসা করালে সম্পুর্ণ ভালো হয়ে যায়। আর কিছু আছে যা থেকে আপৎ হতে পারে। বিনাইন ব্রেন টিউমার আর ক্যান্সার ব্রেন টিউমারের মধ্যে পার্থক্য কী? ডাঃ আবু সাঈদ : বিনাইন টিউমার মানে ভালো আর ক্যান্সার ব্রেন টিউমার হচ্ছে খারাপ টিউমার। প্রকৃতিগতভাবে পার্থক্য হচ্ছে বিনাইন ব্রেন টিউমার খুব আস্তে আস্তে হয়, যার ফলে এই রোগের লক্ষণ বা প্রকাশ অতটা তাড়াতাড়ি হয় না। আর ক্যান্সার ব্রেন টিউমার খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায়। ব্রেন টিউমার কীভাবে চিহ্নিত করা হয়? এর জন্য কী ধরনের পরীক্ষা করা হয়? ডাঃ আবু সাঈদ : যে কোনো রোগ নির্ণয়ের প্রথম পদ্ধতিই হচ্ছে তাকে ক্লিনিকে আনা, পর্যবেক্ষণে রাখা। রোগীর বিশেষ শারীরিক পরীক্ষা করা যেটাকে আমরা বলি নিউরোলজিক্যাল বিশ্লেষণ। রোগীর বর্ণনা থেকে এবং রোগের লক্ষণ দেখে ধারণা করা যায়। মাথার নরমাল প্লেন এক্স-রে পরীক্ষার মাধ্যমে আ��রা কিছু ধারণা করতে পারি কিন্তু এটি সম্পূর্ণভাবে রোগ নির্ণয়ের পদ্ধতি নয়। পদ্ধতি হচ্ছে সিটি-স্ক্যান এবং আরও ভালো হচ্ছে এম.আর.আই। ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত রোগীর পরিণতি কী? ডাঃ আবু সাঈদ : সাধারণভাবে আমরা টিউমারকে ২ ভাগে ভাগ করি। ১. ভালো টিউমার, ২. খারাপ টিউমার। ভালো টিউমার যদি সঠিকভাবে অপারেশন করে সম্পূর্ণ বের করা যায় তাহলে রোগী স¤পূর্ণ ভালো হয়ে যাবে। আর যদি ক্যান্সার টিউমার হয় তবে তারও রকমবেদ আছে। কিছু কিছু খারাপ টিউমার আছে যা হলে রোগী কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত কর্মক্ষম থাকতে পারে। আর কিছু কিছু টিউমার আছে যা এতই খারাপ যে, রোগী ৬ মাস থেকে ১ বছরের বেশি বেঁচে থাকে না। ব্রেন টিউমার চিকিৎসায় কী কী পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়? যে কোনো টিউমারের চিকিৎসা হচ্ছে সার্জারি বা অপারেশন। অপারেশন করে রোগীর টিউমারকে বের করে, বায়োপসি করে প্রকৃতি নির্ণয় করে পরবর্তী চিকিৎসা করা হয়। কী কী ধরনের মুখে খাওয়ার ওষুধ আছে? ডাঃ আবু সাঈদ : ব্রেন টিউমারে মুখে খাওয়ার ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা কোনোভাবেই সম্ভব নয় তবে রোগের লক্ষণগুলোর চিকিৎসা ওষুধ দ্বারা করা সম্ভব। টিউমারের জন্য যেসব লক্ষণ যেমন মাথাব্যথা ও বমি হওয়া এইসব লক্ষণের চিকিৎসায় আমরা ওষুধ দিয়ে করতে পারব। তাও সাময়িকভাবে। টিউমার যখন আস্তে আস্তে বড় হবে টিউমারের লক্ষণগুলো আরও বেশি প্রকট হয়ে ধরা পড়বে; যার ফলে ওষুধ দিয়ে শুধু সাময়িকভাবে তার লক্ষণগুলোকে কিছুদিন কমিয়ে রাখা যাবে। কিন্তু ওষুধের চিকিৎসা টিউমারের জন্য নয়। অপারেশনের মাধ্যমে কীভাবে ব্রেন টিউমারের চিকিৎসা করা হয়? ডাঃ আবু সাঈদ : অপারেশনের মাধ্যমে ব্রেনটা খুলে ব্রেনের যে লোকেশনে টিউমারটা আছে সম্ভব হলে সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে টিউমারটাকে সরিয়ে আনা হয়। ক্যান্সার টিউমারের ক্ষেত্রে আমরা যতটুকু সম্ভব বের করে দিই। যতখানি বের করা যায় রোগীর উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা তত বেশি। এমন কিছু পদ্ধতি আছে, যার মাধ্যমে ব্রেন টিউমার বের করার জন্য মগজ বা ব্রেন খুলতে হয় না। রেডিও সার্জারির মাধ্যমে ছোট ছোট টিউমার যেমন – ২ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার বা ১ ইঞ্চির ছোট যেগুলো হয় সেগুলো ছোট বা নষ্ট করে দেয়া হয়। ব্রেন টিউমারের চিকিৎসায় রঞ্জনরশ্মির ভূমিকা কী? ডাঃ আবু সাঈদ : রঞ্জন-রশ্মি টিউমারটিকে আপাত ছোট করে দেয় বা টিউমারের কর্মক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। আর রঞ্জনরশ্মি বলতে আমরা বুঝি অপারেশন করার পর রেডিওথেরাপি দেয়াকে। যা আমরা দিই অপারেশন করার পর যদি দেখা যায় যে টিউমারি ক্যান্সার টিউমার বা খারাপ টিউমার। সে ক্ষেত্রে রোগীকে আগে থেকেই বলে দেয়া হয় সার্জারি করলে সম্পূর্ণভাবে এটি ভালো হবে না এবং অপারেশন করার পরেও রঞ্জনরশ্মি বা রেডিওথেরাপি মাধ্যমে চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে। টিউমারটি বের করে দেয়ার পর ওই এলাকায় রেডিওথেরাপি দেয়া হয় যেন টিউমারটির ক্ষমতা কমে যায়। আমাদের দেশে বর্তমানে ব্রেন টিউমারের চিকিৎসা কেমন হচ্ছে? ডাঃ আবু সাঈদ : বাংলাদেশে অনেক আগে থেকেই ব্রেন টিউমারের চিকিৎসা হচ্ছে এবং অধিকাংশ টিউমারের চিকিৎসা বাংলাদেশে করা সম্ভব। বিগত ১০ বছরে বাংলাদেশে নিউরো সার্জারি বা ব্রেন টিউমার সার্জারি অনেক দূর এগিয়ে গেছে। যদিও কিছু কিছু আধুনিক ব্যবস্থা এখানো আমাদের দেশে আসেনি। যেমন- রেডিওসার্জারি আমাদের নেই, গামা-নাইফ সার্জারি নেই। বাকি যেগুলো আছে সেগুলোতে আমরা অনেক এগিয়ে গেছি। উন্নত বিশ্বে বর্তমানে ব্রেন টিউমার চিকিৎসায় কী ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার হচ্ছে? বাংলাদেশে এর সম্ভাবনা কতটুকু? ডাঃ আবু সাঈদ : উন্নত বিশ্ব বলতে আমাদের পাশের দেশও প্রযুক্তিগত দিক থেকে আমাদের চেয়ে কিছুটা এগিয়ে আছে বলতে পারেন। ভারতে যেমন- রেডিওসার্জারি, গামা-নাইফ সার্জারি আছে যা আমাদের দেশে এখানা শুরু হয়নি। হয়ত বেশিদিন লাগবে না শুরু করতে। এই দুটি দিক ছাড়া বাকি সব সার্জারি আমাদের এখন দেশেই সম্ভব। এই সব সার্জারি আশপাশের দেশের তুলনায় মনে হয় ভালোই হয়। হয়ত আমরা এখন যে অপারেশন করি সেটা ৫ বছর আগে সম্ভব ছিল না। এগুলো এখন হচ্ছে এবং আস্তে আস্তে প্রযুক্তিগুলো আমাদের দেশে আসছে । ‘খরচ খুব বেশি’ রোগীদের এই ধারণাটা পরিষ্কার নয়, যখন মনে করবে যে এই সার্জারি বা প্রযুক্তি ব্যবহার করে তারা ভালো হচ্ছে তখন রোগী স্বাভাবিকভাবে চলে আসবে।
0 notes