#শসাগাছেরসকলরোগেরনাম
Explore tagged Tumblr posts
Text
শসা গাছ : বিভিন্ন রোগ ও প্রতিকার
শসা গাছের বিভিন্ন রোগ ও প্রতিকার
শসা গাছ আমাদের দেশে সবজি হিসেবে খুবই জনপ্রিয়। শসা আমাদের দেশে সারা বছরই চাষ করা যায়। অনেকেই শখের বসেও ছাদে, টবে, খালি জমিতে চাষ করে থাকেন। সঠিক পরিচর্যা ও রোগ-ব্যাধি মুক্ত করে শসা চাষ করলে কৃষকরা লাভবান হতে পারবে। আমাদের দেশের কৃষকরা শসা গাছের বিভিন্ন রোগ সম্পর্কে অনেকেই জানেন না, কোন রোগ হলে কোন ঔষধ প্রয়োগ করতে হবে, কতটুকু দিতে হবে। তাই আজকে শসা গাছের সকল রোগের নাম ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
শসা গাছের রোগ ও প্রতিকার ব্যবস্থা : সমস্যা-১ : ছত্রাকজনিত রোগে চারার গোড়া পঁচে যাওয়া। ক্ষতির কারন : ছত্রাকের আক্রমন। ব্যবস্থাপনা : কুপ্রোফিক্স ছত্রাকনাশক ১ লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে এবং ইউনিজুম ছত্রাকনাশক ১ গ্রাম দৈনিক ২ বার করে দিন স্প্রে করুন। সমস্যা-২ : কাটুই পোকার আক্রমনর চারা গাছের গোড়া কেটে দেয়। ক্ষতির কারন : কাটুই পোকা ব্যবস্থাপনা : বজ্র ২.৫ ইসি ১ লিটার পানিতে ২ মিলি মিশিয়ে গাছের গোড়ায় বিকাল বেলায় স্প্রে করুন। সমস্যা-৩ : পাতা ও গাছের গায়ে সাদা পাউডারের মত দাগ দেখা যায়, যা ধীরে ধীরে সমস্ত পাতায় ছড়িয়ে পড়ে। আক্রান্ত বেশী হলে পাতা হলুদ বা কা��ো হয়ে মারা যায় । ক্ষতির কারন : ছত্রাকের আক্রমনের কারনে শসার পাউডারি মিলডিউ রোগ হয়। ব্যবস্থাপনা : কুপ্রোফিক্স ছত্রাকনাশক ১ লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে এবং ইউনিজুম ছত্রাকনাশক ১ গ্রাম দৈনিক ২ বার করে টানা ৭দিন পর পর স্প্রে করুন। সমস্যা-৪ : বয়স্ক পাতায় ডাউনি মিলডিউ রোগ প্রথম দেখা যায়। আক্রান্ত পাতার গায়ে সাদা বা হলদে থেকে বাদামী রঙের দাগ দেখা যায়। ধীরে ধীরে গাছের সমস্ত পাতায় ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষতির কারন : ডাউনি মিলডিউ। ছত্রাকজনিত একটি মারাত্মক রোগ। ব্যবস্থাপনা : কুপ্রোফিক্স ছত্রাকনাশক ১ লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে এবং ইউনিজুম ছত্রাকনাশক ১ গ্রাম দৈনিক ২বার করে ৭ দিন পর পর স্প্রে করুন। সমস্যা-৫ : গাছে হলুদ ও গাঢ় সবুজ ছোপ ছোপ মোজাইক করা পাতা দেখা দেয়। ক্ষতির কারন : ভাইরাস জনিত কারনে শসার মোজাইক রোগ হয়। ব্যবস্থাপনা : রোগমুক্ত গাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করুন। জমিতে সাদা মাছি দেখা গেলে (বাহক পোকা) ইমিডাক্লোরোপ্রিড গ্রুপের কীটনাশক (যেমনঃ এডমায়ার অথবা টিডো ১০ মি.লি. ২ মুখ ) ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে প্রতি ৫ শতকে স্প্রে করতে হবে। তামাকের গুড়া (১০ গ্রাম), সাবানের গুড়া (৫ গ্রাম) ও নিমের পাতার রস প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ব্যবহার করা যায়। সমস্যা-৬ : গাছের পাতা, ফুল ও কচি ফলের রস চুষে খায়। তাছাড়া জাব পোকা হলুদ মোজাইক ভাইরাস রোগ ছড়ায়। ক্ষতির কারন : জাব পোকার আক্রমন। ব্যবস্থাপনা : ইমিক্সট্রিম ১ লিটার পানিতে ০.৫ গ্রাম হারে মিশিয়ে ৭ দিন পর পর স্প্রে করুন। সমস্যা-৭ : খুদে কীড়া পাতার দুইপাশের সবুজ অংশ খেয়ে ফেলে। তাই পাতার উপর আঁকা বাঁকা রেখার মত দাগ পড়ে এবং পাতা শুকিয়ে ঝড়ে যায়। ক্ষতির কারন : লিফ মাইনার ব্যবস্থাপনা : প্রতি লিটার পানিতে ২ মিলি বিরাট মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। সমস্যা-৮ : সাদা মাছির আক্রমনে গাছের কচি পাতার রস চুষে খায় ও পাতা কুঁকড়ে যায়। ক্ষতির কারনঃ সাদা মাছির আক্রমন। ব্যবস্থাপনা : ইমিক্সট্রিম ১ লিটার পানিতে ০.৫০ গ্রাম হারে অথবা রেনোভা ০.৫০ গ্রাম মিশিয়ে ৭দিন পর পর স্প্রে করুন। সমস্যা-৯ : চারা গাছের পাতায় ফুটো করে এবং পাতার কিনারা থেকে খাওয়া শুরু করে সম্পূর্ণ পাতা খেয়ে ফেলে। এ পোকা ফুল ও কচি ফলেও আক্রমণ করে। ক্ষতির কারন : রেড পাম্পকিন বিটল ব্যবস্থাপনাঃ সাইরাক্স ২ মিলি অথবা বজ্র ১ মিলি প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে হারে ১০ দিন পর পর স্প্রে করুন। সমস্যা-১০ : শসা গাছে গামি স্টেম ব্লাইট রোগ হলে পাতায় পানি ভেজা দাগ দেখা যায়। ব্যাপক আক্রমনে পাতা পঁচে যায়। কান্ড ফেটে লালচে আঠা বের হয়। ক্ষতির কারন : শসার গামি স্টেম ব্লাইট রোগ ব্যবস্থাপনা : আক্রান্ত গাছ সংগ্রহ করে ধ্বংস করুন । ম্যানকোজেব অথবা ম্যানকোজেব + মেটালক্সিল জাতীয় বালাইনাশক (যেমনঃ রিডোমিল গোল্ড ২০ গ্রাম প্রতি ১০লিটার পানিতে মিশিয়ে) ৭-১০ দিন পর পর ৩ বার স্প্রে করুন। সমস্যা-১১ : মাছি পোকার আক্রমনে গাছের ফল ছিদ্র করে ডিম পাড়ে। পরবর্তীতর ডিম থেকে কীড়া হয় এবং ফল পঁচে যায়। ক্ষতির কারন : ফলের মাছি পোকা ব্যবস্থাপনা : বিষ টোপ বা সেক্স ফেরোমন ব্যবহার করে মাছি পোঁকা পোকা দমন করা যায়। সমস্যা-১২ : গাছের পাতা ও ডাটা দ্রুত নেতিয়ে পড়ে ও গাছ মারা যায়। ক্ষতির কারন : ছত্রাক বা ব্যাকটেরিয়া (কিন্তু ব্যাকটেরিয়া দিয়ে আক্রান্ত হলে উজ বা সাদা কষ বের হবে।) ব্যবস্থাপনা : স্ট্রেপটোমাইসিন সালফেট (৯%) + ��েট্রাসাইক্লিন গ্রুপের ক্রোজিন এজি ১০ এসপি ৫ গ্রাম ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। বিশেষ সতর্কতা : সকল বালাইনাশকই একপ্রকার বিষ। তাই বালাইনাশক ব্যবহারের পূর্বে এবং সংরক্ষণের সময় প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করুন। বালাইনাশক ছিটানোর সময় ধূমপান বা পানাহার থেকে বিরত থাকুন। কখনোই বাতাসের বিপরীতে স্প্রে করবেন না।বালাইনাশক শিশুদের নাগালের বাইরে রাখুন। মেয়াদোত্তীর্ণ বালাইনাশক ব্যবহার থেকে সবসময় বিরত থাকুন। কৃষি সম্পর্কিত আরো তথ্য পড়ুন : কৃষি বিষয়ক তথ্য শসা গাছ লতানো জাতীয় উদ্ভিদ। অতিরিক্ত শুকনো, স্যাতস্যাতে স্থান উভয়ই শসা গাছের জন্য ক্ষতিকর। শসা গাছ চাষাবাদ সম্পর্কে যেকোনো পরামর্শের জন্য আপনার নিকটস্থ কৃষি অফিসে যোগাযোগ করতে পারেন। লেখক : শরিফুল ইসলাম, সত্ত্বাধিকারী, মুনলাইট সীডস্। Read the full article
0 notes