#রাগ দূর হয়ে যাবে
Explore tagged Tumblr posts
Text
নিজের ভালোর জন্য যাদের থেকে দূরে থাকবেন
-------------------------------------------------------------
আত্মপ্রেমী মানুষের সঙ্গে থাকলে মানসিক যন্ত্রণায় ভুগতেই হবে।
আশপাশে নানান ধরনের মানুষ। সবার মধ্যেই রয়েছে হিংসা, ভালোবাসা, প্রেম কিংবা রাগ-ক্ষোভ।
তবে কিছু মানুষ রয়েছে যাদের সঙ্গে থাকলে আপনার জীবন হয়ে উঠতে পারে বিষাক্ত।
এই ধরনের মানুষকে চিহ্নিত করার উপায় আর দূরে থাকার কিছু পরামর্শ দেওয়া হল মানসিকস্বাস্থ্য-বিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে।
আত্মপ্রেমী মানুষ: ইংরেজিতে যাদের বলে ‘নারসিসিস্ট’ তাদের থেকে দূর থাকা উচিত। নিজেকে ভালোবাসার স্বাস্থ্যকর। তবে অতিরিক্ত আত্মপ্রেমীদের আশপাশে থাকা মানুষ���ের গুনতে চরম মূল্য।
‘নারসিসিস্ট’দের প্রথমে বেশ মনোহর মনে হবে। তবে তারা হবে ধান্দাবাজ, একগুয়ে, সহজেই অন্যকে দোষ দেবে এবং নিজের পছন্দমতো কাজ না হলে দেবে শীতল মনোভাব।
যদি কাছের কোনো মানুষের মাঝে এই ধরনের বৈশিষ্ট লক্ষ্য করেন তবে উচিত হবে তাদের থেকে নিজেকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে রেখে সম্পর্ক চালিয়ে যাওয়া।
গালগল্প: ‘পার্সোনালিটি অ্যান্ড সোশাল সাইকোলজি বুলেটিন’য়ে প্রকাশিত নেদারল্যান্ডের গ্রোনিনগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী, কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীকে নিয়ে গল্পগুজব করার মাধ্যমে আত্মকেন্দ্রিক ও অলস কর্মচারী সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়, যা অনেকটাই স্বাস্থ্যকর অফিস ব্যবস্থাপনার জন্য।
তবে যারা বেশি গুজব ছড়ানোর উদ্দেশ্যে গালগল্প ফাঁদে বা নিজেদের ভালো সাজানোর জন্য বানিয়ে কথা বলে, তাদের সঙ্গ মোটেই স্বাস্থ্যকর হতে পারে না।
যদি এরকম মানুষের সংস্পর্শে এসে থাকেন তবে তাদেরকে ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে কথা বলা থেকে দূরে থাকুন। অথবা একেবারেই এড়িয়ে চলুন।
আত্ম-ধ্বংসাত্মক মানুষ: অতিরিক্ত মদ্যপান, হাত-পা কাটা কিংবা ক্ষুধামন্দা- এই ধরনের বৈশিষ্ট সম্পন্ন মানুষদের প্রতি বিশেষ করে পরিচিত কেউ হলে তার জন্য আপনার মন খারাপ হতেই পারে। তাদের সাহায্য করতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে পেশাদার মনোবিজ্ঞানির পরামর্শ নিয়ে আগাতে হবে।
তবে তাদের ধ্বংসাত্মক মনোভাব যদি আপনারই মানসিক ক্ষতির কারণ হওয়া শুরু করে তবে অবশ্যই তাদের থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়া হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
আবেগ নিয়ে খেলা: মানুষের সহানুভূতি পাওয়ার জন্য যারা আবেগ নিয়ে খেলে, যাকে বলা যেতে পারে আবেগের পরজীবী, তাদের থেকে দূরে থাকাই ভালো। এই ধরনের মানুষ নিজেকে খুবই ভঙ্গুরভাবে উপস্থাপন করে অন্যের সহানুভূতি যোগাড় করবে। তারপর নিজের কাজ হয়ে গেলে সেই মানুষকে অগ্রাহ্য করবে।
যতক্ষণ না সেই মানুষটার প্রয়োজন ফুরাচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত তারা হয় স্বার্থপর, একগুয়ে, চাহিদা পূরণের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাবে।
এই ধরনের মানুষের সঙ্গে পরিচয় থাকলে দূরে সরে যান। কারণ মনে রাখবেন আবেগ বেঁচে যারা সম্পর্ক করে তারা ভালোবাসা চায় না, তারা খালি আপনার শক্তিটাই শুষে নেবে।
পরশ্রীকাতর: হিংসা মানুষের মধ্যে থাকতেই পারে। সাধারণ সম্পর্কে হিংসা করা অনেক ক্ষেত্রেই ভালোবাসার লক্ষণ হিসেবে দেখা হয়।
তবে সেই হিংসার কারণে যদি কেউ আপনাকে কষ্ট দেয়, কোনো কাজ করতে বাধা দেয় বা প্রতিযোগিতায় নামে তবে সেই মানুষ থেকে দূরে থাকুন।
প্রচণ্ড হিংসুটে মানুষ কখনও স্বাস্থ্যকর সম্পর্ক বজায় রাখতে পারে না। যখন ভালোবাসার সম্পর্কে একে অপরের প্রতি সাহায্য করার মনোভাব না থাকে, দুজন দুজনের ভার বহন করে করার বিষয় না থাকে- সেখান থেকে অবশ্যই সরে আসা উচিত নিজের ভালোর জন্য।
বলির পশু: নিজেকে বলির পশু ভাবা বা নিজেকে সব সময় অন্যের মাধ্যমে অপরাধী হওয়ার মনোভাব কারও মধ্যে দেখতে পান তবে তাকে ভালো উপদেশ আপনি দিতেই পারেন। তবে এই মানসিকতার মানুষরা ভালো উপদেশ গ্রহণ করলেও নিজের নেতিবাচক মনোভাবের জন্য কোনো সমাধানে যেতে পারে না।
যদি এই নিজেকে এই ধরনের অপরাধবোধে ভোগা মানুষের শিকারে পরিণত হন তবে নিজেকে বাঁচাতে অবশ্যই দূর থেকে সম্পর্ক রাখুন।
মাকিয়াভ্যালিয়ান: মানসিক স্বাস্থ্য বিজ্ঞানের ভাষায় ‘মাকিয়াভ্যালিয়জম’কে চিহ্নিত করা হয়েছে তাদেরকে যারা অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করার সময় খুবই শীতল অনুভূতির সঙ্গে বিভিন্ন ধান্দা করে। তাদের অনুভূতি আন্তরিক নয়, থাকে সহানুভূতির অভাব।
মনোবিজ্ঞানিদের সাধারণ পরামর্শ থাকে, ‘মাকিয়াভ্যালিয়ান’ মানুষের দেখা পেলেই পালিয়ে যান। তবে ঘটনাক্রমে যদি তাদের সঙ্গে থাকতেই হয় তাহলে তাদের সঙ্গে ব্যবসায়ীর মতো ব্যবহার করুন। অর্থাৎ তাকে কিছু দিতে হলে সে আপনাকে কী দেবে- সে বিষয়ে আগে নিশ্চিত হয়ে নিন। যাকে বলে ‘উইন উইন সিচুয়েইশন’।
উদাসীন মানুষ: সম্পর্কে একজন মানুষ বেশি দি��়ে যাবে – বিষয়টা খুবই সাধারণ। তবে একজন মানুষের জন্য সেটা অনেক সময় খুবই চাপের বিষয় হয়ে যায় যখন তাকে মানসিক ভরের বেশিরভাগটাই টানতে হয়।
এই এক পক্ষীয় অবস্থার পড়ে সেই মানুষটার মনে হতে থাকে, ‘আমি খালি দিয়েই যাচ্ছি দিয়েই যাচ্ছি’। অন্যদিকে অপর পক্ষ সেই বিষয়টা খেয়াল না করে উদাসিনতার পরিচয় দিয়ে যেতে থাকে।
এই ধরনের সম্পর্ক শেষ পর্যন্ত হৃদয় ভাঙার কারণ হয়। আর যে ব্যক্তি দিয়েই যায় সে এক পর্যায়ে আত্মভিমানে ভুগতে থাকে।
অমোঘ মিথ্যাবাদী: এরকম ভাবার কারণ নেই যে, সবাই সবসময় সত্য কথা বলবে। তবে যদি সন্��েহ হয় আপনার জীবনের কেউ বেশিরভাগ সময় অনুভূতি কাড়তে অতিরিক্ত মিথ্যা বলছে তাহলে সাবধান হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।
অস্বাভাবিক মিথ্যাবাদীদের প্রথমে খুবই ‘চার্মিং’ মনে হবে। তারা জীবনটাকে মজারও করে তুলতে পারে। তবে একটা রেখায় এসে এই ধরনের মানুষদের সঙ্গে মেশা বন্ধ করতে হবে কিংবা কমিয়ে দিতে হবে। কারণ বিশ্বাস না থাকলে সেই সম্পর্ক জোড়ালো হতে পারে না।
এই ধরনের মানুষদের সঙ্গে তরল সম্পর্ক রাখাই ভালো। গভীরে গেলেই মরবেন।
ফ্রেনিমি: মনোবিজ্ঞানের নতুন শব্দ। বাংলায় যাকে বলা যেতে পারে ‘বন্ধু যখন শত্রু’। কর্মক্ষেত্রে বা বন্ধুদের মধ্যে সাধারণ প্রতিযোগিতা থাকতেই পারে। যা একে অপরে উন্নতির দিকে নিয়ে যায়। তবে সেই প্রতিযোগিতায় থাকে সাহায্য ও সহানুভূতির মনোভাব।
তবে কোনো বন্ধু যদি আপনাকে টপকে যেতে চায়, যদি আপনার সাহায্যে এগিয়ে না আসে, সফলতায় খুশি না হয়, অন্যের কাছে আপনাকে নিয়ে গালগল্প করে- তবে বুঝতে সে আপনার বন্ধু-রূপী শত্রু, অর্থাৎ ‘ফ্রেনিমি’।
আপনি যার যত্ন নিচ্ছেন তার কারণেই অসুখী বোধ করছেন। যদি এরকম পরিস্থিতির শিকার হন তবে তার সঙ্গে কথা বলে বিষয়গুলো সমাধান করার চেষ্টা করুন নয়ত নিজের ভালোর জন্য বন্ধন ছিন্ন করে দূরে চলে যান।
খারাপকে ভালো বলা: মানুষ বড় হতে হতে বিভিন্ন খারাপ অভ্যাসে রপ্ত হয়ে যায়। যেমন মদ্যপ হয়ে যাওয়া, সময় কিংবা টাকাপয়সা ঠিক মতো সামাল দিতে না পারা, কিংবা নিজেকে ধ্বংসকরার মতো কাজে লিপ্ত হওয়া- যা আমাদের অনেক সময় হৃদয়ভঙ্গের কারণ হয়। আর সেসব থেকে সেই মানুষটাকে বের করে আনতে আমরা অনেকরকম পদক্ষেপ নিয়ে থাকি।
তবে এই ধরনের খারাপ অভ্যাসগুলোকে যারা এড়িয়ে যায় এমনকি সেই কাজগুলো করতে উদ্বুদ্ধ করে, কিংবা আপনি নিজে কোনো বাজে অভ্যাস থেকে বের হয়ে আসতে চাচ্ছেন কিন্তু সেই ব্যক্তি আপনাকে বাধা দিচ্ছে উল্টো টেনে ধরছে সেই খারাপ পথের দিকে তাহলে অবশ্যেই তাদের এড়িয়ে চলুন।
এড়িয়ে চলতে হবে ততক্ষণ পর্যন্ত যতক্ষণ না আপনি নিজে শক্ত হচ্ছেন।
অহমিকা: রূপক অর্থে ভেবে নেওয়া যাক- আপনার কি কখনও মনে হয়েছে যে, এমন ক���নো মানুষের সঙ্গে আছেন যে সবসময় ঘরের পুরোটা জায়গাটা নিজের জন্য নিতে চাইছে।
বন্ধুমহলে এমন একজন থাকতেই পারে, যে চায় সবাই তার দিকেই নজর দিক। তবে সম্পর্কে যখন এমন চাহিদার সৃষ্টি হয় এবং সেখানে যদি নিজের কোনো জায়গা না থাকে তাহলে উচিত হবে সেই বন্ধুর সঙ্গে সম্পর্কটা নতুন করে সাজিয়ে দূরত্ব বজায় রেখে চলা।
আগ্রাসী মনোভাব: কিছু মানুষ রয়েছে যাদের মেজাজ এই চড়া তো এই শীতল। তারা তাদের মনোভাব সহজে প্রকাশ করতে পারে না। তারা বেশিরভাগ সময় আত্মরক্ষামূলক আচরণ করে। কী বিষয় জানতে চাইল- ছল চতুর উত্তর দেয়। তারা ভালো থাকলেও বলে খারাপ আছি- সহানুভূতি আদায়ের জন্য।
এই ধরনের মানুষ কি আপনার মানসিক শক্তি কেড়ে নিচ্ছে। তবে তাদের সঙ্গে দূরত্ব মেপে যোগাযোগ রাখুন। না হলে হয়ত শত্রুতায় রূপ নেবে সম্পর্ক।
উপহাস: এই ধরনের মানুষ হয় বিরক্তিকর। তারা নতুন অভিজ্ঞতা থেকে দূরে থাকে। শুনতে চায়না কোনো কিছু। সবসময় বিতর্কে জড়ায়। তাদের বাজে ব্যবহার খারাপ কথার কোনো অর্থ থাকে না। তারা হয় সামাজিকভাবে অন্ধ।
এই ধরনের মানুষ যদি আপনার আশপাশে থাকে আর আপনাকে অস্বস্তি ফেলে তাহলে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার কোনো কারণই নেই। খুব স্বাভাবিকভাবে তাদের সঙ্গে দ্রুত কথা শেষ করে ভেগে পড়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
যারা শারীরিকভাবে অপমান করে: ‘ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স’য়ের শিকার নিয়ে নানান তথ্য রয়েছে। সেটা শুধু যে নারীদের ওপর ঘটে তা নয় পুরুষরাও রয়েছে এই তালিকায়।
যারা শারীরিক বা মানসিক ভাবে সারাক্ষণ আঘাত করে, তারপর প্রতিজ্ঞা করে আর করবে না, কিন্তু সেই প্রতিজ্ঞা বেশিদিন টেকে না- এমন মানুষের সঙ্গে বসবাস করার চাইতে দ্রুত সেখান থেকে বের হয়ে যাওয়া হবে ভালো পন্থা।
মানসিক আঘাত: সব আঘাতই যে শারীরিক হবে তা নয়, কেউ কেউ মানসিক-ভাবে আঘাত করতে ওস্তাদ।
প্রতিনিয়ত অবজ্ঞা করা, প্রচণ্ড হিংসুটে ও সারক্ষণ ভাব ধরে থাকা- এই ধরনের মানসিকতার লক্ষণ।
সম্পর্কে রক্ষার্থে এই ধরনের মানুষ যেকোনো বিষয়ে ভীতি দেখাতে পিছ পা হয় না।
যদি এই ধরনের মানুষের সঙ্গে জড়িয়ে থাকেন তবে তাকে সাহায্য করার জন্য মানসিকরোগ বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিতে পারেন। নয়ত যত দ্রুত সম্ভব তার কাছে দূরে সরে যাওয়া হবে মঙ্গল।
অত্যাচারীর ফিরে আসা: শারীরিক ও মানসিক ভাবে আঘাত করা ব্যক্তিরা অনেক সময় জীবনে ফিরে আসে। সেটা হতে পারে পুরানো ব্যক্তি বা নতুন কেউ। এই ধরনের মানুষ ফিরে আসতে চাইলে অতীতের কথা চিন্তা করুন। ফিরে আসাটা যতই প্রেমময় হোক অতীতের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে নিজে ভালো থাকুন, তাদের থেকে দূরে থাকুন।
সমালোচক: অফিসের বস, বন্ধু, আত্মীয় বা সহকর্মীদের মধ্যে এমন কেউ কি আছে সে সবসময় আপনার নেতিবাচক সমালোচনা করে!
আপনার নিজস্ব সময় কাটানো, আপনার পোশাক, কর্মকাণ্ড বা বন্ধুবান্ধব নিয়ে ��টু সমালোচনা করতেই থাকে- মনে রাখবেন এমন মানুষের আশপাশে থাকলে আপনি সবসময় ক্লান্ত অনুভব করবেন।
হয় এই ধরনের মানুষকে বোঝান তার কথা শুনে আপনার কতটা খারাপ লাগে নয়তো নির্দিষ্ট সীমারেখা টেনে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখুন। সারাক্ষণ নেতিবাচক মনোভাব সামলানো কারও জন্যই সম্ভব না।
পুরানো বন্ধু যখন তেতো হয়: পুরানো বন্ধু সবসময়ই আনন্দের। পুরানো বন্ধু ফিরে আসা আরও আনন্দের। তবে যদি দেখা যায় সেই পুরানো বন্ধুর কার্যকলাপ আপনাকে আহত করছে তবে সাবধান হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।
নিজস্বতা হারিয়ে ফেলতে থাকলে সেই বন্ধুর সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখাই হবে মঙ্গলজনক।
সম্পর্ক পাতলা হওয়া: বন্ধুত্ব হোক কিংবা প্রণয়ের সম্পর্ক- সময়ের মূল্য না দিলে সেটার কোনো মর্যাদা থাকে না।
মানসিকভাবে দুর্বল অনুভব করা এক জিনিস আর আপনি সব দিক সামলিয়ে যার জন্য সময় বের করে রাখলেন, অন্তিম মুহূর্তে সেই মানুষটাই আপনাকে ফাঁকি দিল।
যদিও এই ধরনের মনোভাব সম্পর্ক ছেদ করার বিশেষ কারণ হিসেবে পড়ে না। বরং যে এরকম করছে তাকে যদি কাছের ভাবেন, তবে তার সঙ্গে আলোচনায় বসুন। সমস্যাটা কোথায় সেটা কথা বলে সমাধান করা যেতেই পারে।
পাশাপাশি জানিয়ে দিন তার এই পাতলা মনোভাবের জন্য আপনার ধৈর্য্য কমে যাচ্ছে।
#নিজের ভালোর জন্য যাদের থেকে দূরে থাকবেন#-------------------------------------------------------------#আত্মপ্রেমী মানুষের সঙ্গে থাকলে মানসিক যন্ত্রণায় ভুগতেই হবে।#আশপাশে নানান ধরনের মানুষ। সবার মধ্যেই রয়েছে হিংসা#ভালোবাসা#প্রেম কিংবা রাগ-ক্ষোভ।#তবে কিছু মানুষ রয়েছে যাদের সঙ্গে থাকলে আপনার জীবন হয়ে উঠতে পারে বিষাক্ত।#এই ধরনের মানুষকে চিহ্নিত করার উপায় আর দূরে থাকার কিছু পরামর্শ দেওয়া হল মানসিকস্বাস্থ্য-বিষয়ক#আত্মপ্রেমী মানুষ: ইংরেজিতে যাদের বলে ‘নারসিসিস্ট’ তাদের থেকে দূর থাকা উচিত। নিজেকে ভালোবাসা#‘নারসিসিস্ট’দের প্রথমে বেশ মনোহর মনে হবে। তবে তারা হবে ধান্দাবাজ#একগুয়ে#সহজেই অন্যকে দোষ দেবে এবং নিজের পছন্দমতো কাজ না হলে দেবে শীতল মনোভাব।#যদি কাছের কোনো মানুষের মাঝে এই ধরনের বৈশিষ্ট লক্ষ্য করেন তবে উচিত হবে তাদের থেকে নিজেকে নিরাপ#গালগল্প: ‘পার্সোনালিটি অ্যান্ড সোশাল সাইকোলজি বুলেটিন’য়ে প্রকাশিত নেদারল্যান্ডের গ্রোনিনগ#কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীকে নিয়ে গল্পগুজব করার মাধ্যমে আত্মকেন্দ্রিক ও অলস কর্মচারী সম্পর্কে ধা#যা অনেকটাই স্বাস্থ্যকর অফিস ব্যবস্থাপনার জন্য।#তবে যারা বেশি গুজব ছড়ানোর উদ্দেশ্যে গালগল্প ফাঁদে বা নিজেদের ভালো সাজানোর জন্য বানিয়ে কথা বলে#তাদের সঙ্গ মোটেই স্বাস্থ্যকর হতে পারে না।#যদি এরকম মানুষের সংস্পর্শে এসে থাকেন তবে তাদেরকে ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে কথা বলা থেকে দূরে থাকুন।#আত্ম-ধ্বংসাত্মক মানুষ: অতিরিক্ত মদ্যপান#হাত-পা কাটা কিংবা ক্ষুধামন্দা- এই ধরনের বৈশিষ্ট সম্পন্ন মানুষদের প্রতি বিশেষ করে পরিচিত কেউ হ#তবে তাদের ধ্বংসাত্মক মনোভাব যদি আপনারই মানসিক ক্ষতির কারণ হওয়া শুরু করে তবে অবশ্যই তাদের থেকে#আবেগ নিয়ে খেলা: মানুষের সহানুভূতি পাওয়ার জন্য যারা আবেগ নিয়ে খেলে#যাকে বলা যেতে পারে আবেগের পরজীবী#তাদের থেকে দূরে থাকাই ভালো। এই ধরনের মানুষ নিজেকে খুবই ভঙ্গুরভাবে উপস্থাপন করে অন্যের সহানুভ#যতক্ষণ না সেই মানুষটার প্রয়োজন ফুরাচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত তারা হয় স্বার্থপর#চাহিদা পূরণের জন্য চেষ্টা ��ালিয়ে যাবে।#এই ধরনের মানুষের সঙ্গে পরিচয় থাকলে দূরে সরে যান। কারণ মনে রাখবেন আবেগ বেঁচে যারা সম্পর্ক করে ত#তারা খালি আপনার শক্তিটাই শুষে নেবে।#পরশ্রীকাতর: হিংসা মানুষের মধ্যে থাকতেই পারে। সাধারণ সম্পর্কে হিংসা করা অনেক ক্ষেত্রেই ভালোব
0 notes
Text
ত্রিকোণ পতাকার দেশে 🇳🇵
ভোর ৫টা, বেশ ঠান্ডা৷ অনেক দূর যেতে হবে তাই সবাই মালপত্র নিয়ে বাসের সামনে হাজির। বাস ছাড়তে এখনও ঘন্টা খানেক বাকি, আসলে সবাই বাসের সামনের সিট ধরার আশায় অন্ধকার থাকতে থাকতেই হাজির। এমনিতেই দল বেঁধে গেলেই এই সমস্যাটা হয় তবে এবার নেপালের রাস্তার দুরবস্থা এই প্রতিযোগীতাকে অন্য মাত্রা দিয়েছে৷ এটা কাঁথি থেকে যাত্রা শুরু থেকে চলছে এবং শেষ অবদি চলবে, আর অবশ্যই আমিও এই প্রতিযোগীতা থেকে বাদ পড়িনি। ১৩০ কোটির দেশের নাগরিক আমরা লাইন তো পড়বেই।
নেপাল- একমাত্র দেশ যার জাতীয় পতাকা চর্তুভূজ নয়। পুরানো রাজাদের পতাকাই রয়ে গেছে, সদ্য ভোটের মাধ্যমে গণতন্ত্র দেশ হয়েছে, চারদিকে রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ির নির্মাণ চলছে তাই গোটা নেপাল ধুলাময়, আমার কথায় ধুলার সমুদ্র। হ্যাঁ, নেপাল, অন্য দেশ তবে পাসপোর্ট ভিসার বালাই নেই কিন্তু সীমান্তে কাগজপত্র check হয় বইকি। অনেক সময় গেছে তার জন্য, এমনকি নাম-কা-বাস্তে মালপত্রও check হয় তবে ওই বাম হাতের সুড়সুড়ি মিটলেই ছেড়ে দেয়। এবার দুর্গাপূজার পর একাদশীতে নয়, যাত্রা শুরু হয়েছে দ্বাদশীর দিন।
১০ই অক্টোবর ২০১৯
ভোর ৫ঃ৩০-শে বাস ছাড়ার কথা ৫ঃ৪০-শে পৌঁছে দেখি আমরাই প্রথম, বাসের কোন পাত্তা নেই৷ ২-১ জন চেনা মুখ সাথে অনেক অচেনা মুখ৷ অনেক পরে আমাদের বর্ধিত ভ্রমণ পরিবার আশোকবাবুরা পৌঁছালেন। আসলে সেই দক্ষিণ ভারত ভ্রমণ থেকে ওনারা আমাদের সঙ্গী, এবার ওনার ডাক্তার ছোট ছেলেও যাচ্ছে। বাস ছাড়তে ছাড়তে ৭টা বাজল৷ এবার ট্রেন কোলকাতা (চিৎপুর) স্টেশন থেকে তাই বাস ধর্মতলায় নামিয়ে দিল বাকিটা ছোট গাড়িতে যেতে হল, ব্রিজ মেরামতি চলছে তাই। দুপুরে ট্রেন নামব বিহারের গোরক্ষপুরে৷ নেপালে ভারতের sim কাজ করবে না যদি না international roaming না করি, অনেকেই করছে দেখে আমিও করে নিলাম (voda Rs.295) এবারও গতবারের মত টেনশন ছিল RAC, টিকিট confirm হয়নি৷ বারবার PNR status দেখছি, না শেষরক্ষা হল না, এবারেও ২জনের ১টা সিট৷ বাবুদার (ট্রাভেল এজেন্ট) ওপর ভীষণ রাগ হল, তারপর ভাবলাম একটু risk না নিলে বেরোনই হত না, যাক গে! ট্রেনে ঘুমানো ছাড়া তেমন অসুবিধা হয়নি৷
১১ই অক্টোবর ২o১৯
আবার ভোর ৫ঃo৫ নামার সময় হয়ে গেছে, অবাক কান্ড ট্রেন right time-এ যাচ্ছে৷ ভেবেছিলাম ট্রেন লেট করবে ভোর ৫ঃo৫ এর বদলে সকাল ৭টার দিকে পৌঁছাবে তাই নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছিলাম (বসে বসে) সময়ে পৌঁছাতে আমার সুবিধাই হল কম কষ্ট হল, এবার হোটেলে একটু ভালো করে ঘুমিয়ে নেব। নাহ! সে সুখ আমার কপালে ছিল না- ১টা রুমে ৪-৫ জন fresh হওয়ার জন্য দিল মানে আমাদের সাথে অন্য family-ও থাকবে৷ ঘুম আর হল না স্নান করে কাছের গোরক্ষ আশ্রম দেখতে ছুটলাম। আমাদের সাথে অবশ্যই অশোক কাকুর family ছিল। আশ্রম ঘুরে এসে হোটেলে খাওয়া-দাওয়া সারলাম৷ ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে আসার এটাই সবচেয়ে বড় সুবিধা, থাকা-খাওয়া-যাতায়াত নিয়ে ভাবতে হয় না৷ ট্রেন থেকে নেমেই হোটেল ready, ঘুরে এসেই খাবার ready, বেরালেই বাস ready. তবে অন্ধকার দিকও আছে- সমান টাকা দিয়েও খারাপ হোটেল রুম সহ্য করতে হয়েছে, খাবারের জন্য লাইন দিতে হয়েছে, অন্যের জন্য ঘন্টা খানেক অপেক্ষা করতে হয়েছে ইত্যাদি৷ তবে নতুন লোকজনের সাথে পরিচয়ের আলাদা আনন্দ আছে, কিছুজন তো মনের খুব কাছাকাছি চলে আসে৷ যাই হোক খাওয়া-দাওয়া সেরে এবার বাসে চড়লাম, গন্তব্য লুম্বিনী, প্রায় ১২ ঘন্টার যাত্রা, অবশ্যই ভারত ছেড়ে নেপালে (পাতাল নয় নেপাল) প্রবেশ। লুম্বিনীর হোটেলে পৌঁছাতে রাত ১২-১টা বে��ে গেল। আমি এত ক্লান্ত ছিলাম যে পৌঁছে স্নান করে একটু ঘুমাই বলে যে শুয়েছিলাম- যখন ঘুম ভাঙল তখন ভোর ৪টা৷ নাহ! রাতে খাওয়া হয়নি৷
১২ই অক্টোবর ২০১৯
আজ লুম্বিনী দর্শনের পালা৷ নিজেদেরই দল বেঁধে টোটো ধরে ঘুরতে হবে। সকাল সকাল স্নান সেরে হাল্কা টিফিন করে আশোকবাবুদের সাথে লুম্বিনী দর্শনে বেরিয়ে পড়লাম। টোটোই এক এক করে মন্দির দেখিয়ে নিয়ে চলল। যা বুঝলাম বিভিন্ন বৌদ্ধ দেশ বুদ্ধের জন্মস্থানে আলাদা আলাদা বৌদ্ধ-বিহার বানিয়েছে, কোনটা বার্মা, কোনটা মালয়, কোনটা ভারত৷ তবে আমার ব্যক্তিগতভাবে কম্বোডিয়ার মন্দির সবচেয়ে আকর্ষনীয় লেগেছে। সবশেষে বুদ্ধের জন্মস্থানে ছেড়ে টোটো বালা ভারতীয় ৫oo টাকা নিয়ে চলে গেল, টোটোটায় আমরা ৫জন ছিলাম। অশোকবাবু বুদ্ধের জন্মস্থান দেখার জন্য বারবার বলছিলেন। কিন্তু কিছু বুঝে উঠতে পার ছিলাম না- কোনটা কি? অবশেষে ভাবলাম দেখা শেষ, এবার হোটেলে ফিরতে হবে, তখন হঠাৎ টিকিট কাউন্টারে লাইন দেখে আবিষ্কার করলাম আসল জন্মস্থান দেখা হয়নি। ততক্ষণে দেরী হয়ে গেছে, হোটেলে ফিরে খাবার খেয়ে ১২ঃ৩০-এর মধ্যে বাসে উঠতে হবে। ফেরার পথে প্রাচীরের বাইর থেকে উঁকি-ঝুঁকি মেরে দুধের স্বাদ ঘোলে মেটালাম৷ স্বভাবতই অশোকবাবুর মন খারাপ হয়েগেল- লুম্বিনীর প্রধান আকর্ষণটাই ভিতর থেকে দেখতে পেলেন না৷ :(
১৩ই অক্টোবর ২০১৯
গতকাল দুপুরে বাসে চড়ে পোখরার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছিলাম আমরা পৌঁছতে রাত হয়ে গেছিল৷ পাহাড়ী রাস্তায় ৯-১০ ঘন্টা পেরিয়ে সবাই ক্লান্ত৷ তবে এবার ঘুমাইনি, রাতের খাবার খেয়েছি। সকালে হোটেলের বারান্দায় বেরিয়ে গতকালের ধকল একলহমায় ভুলে গেলাম। চারদিক পাহাড়ে ঘেরা, তার মধ্যে কুয়াশা কিম্বা মেঘ খেলা করছে৷ জায়গাটা ঠান্ডা ঠান্ডা৷ সকালে টিফিন করে বাসে চড়ে পোখরা দর্শনে বেরোলাম। প্রথম যেখানে থামলাম, বাস থেকে নেমেই যেটা দেখে 'থ' মেরে গেলাম সেটা হল মাউন্ট অন্নপূর্ণা ৷ রাস্তার প্রান্তে আকাশে কিছুটা উপরে বরফ ঢাকা শৃঙ্গটা৷ নেমেছিলাম কোন একটা মন্দির দেখতে কিন্তু মাউন্ট অন্নপূর্ণা আমার সব আকর্ষণ ছিনিয়ে নিয়েছিল। মন্দিরটা একটা উঁচুতে, সেখান থেকে আরও লাস্যময়ী দেখাচ্ছিল মাউন্ট অন্নপূর্ণাকে। মনের সুখে ছবি তুললাম। আর মনে মনে ভাবলাম -পোখরাতেই এই বরফ ঢাকা শৃঙ্গ দেখা গেলে, হিমালয়ের আরও কাছে কাঠমান্ডু থেকে আরও কতনা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে৷ যাই হোক অন্নপূর্ণার মোহ কাটিয়ে বাকি পোখরা দেখলাম, সত্যি বলতে কি অন্নপূর্ণা দর্শনের পর বাকি জায়গাগুলো গেলাম কিন্তু ভিতরে ঢুকিনি, man made কিছুতেই প্রায় আমি আকর্ষণ খুঁজে পাই না, হ্যাঁ ঐতিহাসিক কিছু হলে চলবে৷ তবে একটা কোন গুহা ছিল অনেকটা বিশাখাপত্তনমের আরাকুর গুহার মত। বৌকে দেখানোর জন্যই তাতে ঢুকেছিলাম, ও এর আগে এমন গুহা দেখেনি তাই। দুপুর ২টো বেজে গেল হোটেলে ফিরতে ফিরতে। খাওয়া-দাওয়া সেরে বিশ্রাম, বিকালে লেকে নিয়ে যাবে নৌকাবিহার করাবে। যথা সময়ে বেরোলাম, বাকিরাও অনেকে বেরিয়েছে কিন্তু যে লেক ঘোরাবে তার দেখা মিলল না, কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে আমরা হ্রদের রাস্তা জিজ্ঞাসা করতে করতে পৌঁছে গেলাম৷ অশোকবাবুরা নৌকাবিহার করবেন, আমার জলাতঙ্গ আছে- খুব বাধ্য না হলে গভীর জল আমি এড়িয়ে চলি৷ তনুকে (আমার স্ত্রী) বললাম অশোকবাবুদের সাথে চলে যেতে, উনি রাজি হলেন না। অগত্যা পাশের বেঞ্চে বসে হ্রদের সৌন্দর্য দুজনে উপভোগ করা শুরু করলাম। মাঝে মাঝেই ছোট-খাট পোষাক পরা সুন্দরীরা যাচ্ছে ইচ্ছে থাকলেও না দেখার ভান করে অন্য দিকে মুখ ঘোরাতে হচ্ছে। পাশে বৌ বসে, পাছে ... :D ইতিমধ্যে একটা ঘটনা ঘটল, আমার কাছে বেশ আকর্ষণীয় ঘটনা- আমরা যেখানে বসেছিলাম তার কাছেই এক ঝালমুড়িওয়ালা সাইকেলে ঝালমুড়ি বেচছিল, স্হানীয়রা ঝালমুড়ি খাচ্ছিল, আমার বৌও লোলুভ দৃষ্টিতে ওই দিকেই বারবার তাকাচ্ছিল, আমার ভয়ে উচ্চবাচ্চ করেনি, মোটির BP out of controle তাই আমাকেই শক্ত হাতে রাশ ধরতে হয়েছে। সব ঠিক চলছিল এমন সময় এক পাগলগোছের অল্প বয়সী এক বিদেশী ছোকরা (উচ্চতার বহর দেখে ইউরোপীয়ানই মনে হল) ঝালমুড়িওয়ালার কাছে এল, অনেকক্ষণ ধরে সব দেখল, তারপর তারও নতুন খাবার চাখার ইচ্ছে হল, একাই ছিল বিদেশী ছোকরা৷ ইসরায় ঝালমুড়ি চাইল। আমরা তখন বিদেশী ছোকরার থেকে ব্রেক নিয়ে হ্রদের দিকে ন���র দিয়েছি। সেখানে আশোকবাবুদের খোঁজার চেষ্টা করলাম, পেলাম না। বরং আমাদের দলের অন্য কিছুজনকে নৌকা বিহার করতে দেখলাম, ওমা একি! ওরা হ্রদের মধ্যেই এক নৌকা থেকে ছোট অন্য নৌকায় উঠছে যে, তাও এতজন ঐটুকু নৌকায়৷ এইজন্য আমি জলযান এড়িয়ে চলি। ওনাদের সাথে পরিচয় নেই বলে জানা হয়নি-ঠিক কি ঘটেছিল, নৌকায় ফুটো জাতীয় কিছু হবে নিশ্চই। ওদের থেকে নজর ঘুরাতেই দেখি বিদেশী ছোকরা আমাদের পাশে বসে তারিয়ে তারিয়ে ঝালমুড়ির মজা নিচ্ছে। আমার খুব ইচ্ছে হচ্ছিল মহাপুরুষের সাথে কথা বলার- বিদেশী বলে কথা, তার ওপর ইউরোপীয়ান (সম্ভবত)। ঠিক তখনই আমার ভিতরের বিবেক বলে উঠল- "থাক! অনেক হয়েছে, ইংরেজীতে তুমি অসম্ভব পটু, তোমার ইংরাজী শুনে উনি আবার ইরাজী বলতে গররাজী না হন।" অগত্যা ইচ্ছাটা গিলতে হল। এদিকে নেপালী লঙ্কার ঝাঁঝে বেচারা নাকের জলে চোখের জলে অবস্থা, বেশীক্ষণ লড়ায়ে টিকতে না পেরে বিদেশী দেশী ভবঘুরেকে বাকি ঝালমুড়ি ধরিয়ে রণক্ষেত্র ছাড়ল৷ না না ভবঘুরেটা আমি না, মানছি আমিও ঘুরতে ভালোবাসি কিন্তু এখনও ভবঘুরে হইনি। এরপর হাঁটতে হাঁটতে পোখরা ডিজনিল্যা��্ড আবিষ্কার করলাম এবং অবশ্যই ছবি তুলনাম৷ সন্ধ্যায় হোটেলের দিকেই ছিলাম রাস্তায় মোমোর দোকান দেখে খাওয়ার জন্য ঘ্যানঘ্যান শুরু করতে ১০টা মোমোর জন্য ভারতের ৮০টাকা খসল৷ হোটেলমুখো হাঁটলেও ভরসন্ধ্যায় রুমে বন্দী থাকতে একদম ইচ্ছে করছিল না, তাই হ্রদের পাশের বাজারে ঘুরে বেড়ালাম দুজনে, ছোট হলেও মোটামুখি সাজানো-গোছানো বাজার, ভালোই লাগছিল আলোর সমুদ্রে ভেসে বেড়াতে। রুমে ফিরে অশোকবাবুর ছেলের কাছে শুনলাম, সবার নৌকাবিহারের জন্য ৫ooটাকা জনপ্রতি ধরা ছিল এবং এজেন্ট অনেক দেরীতে পৌঁচেছিল-শুনে রাগে দাঁত কিড়মিড় করছিল৷
১৪ই অক্টোবর ২০১৯
আজ আবার ভোরে আবার ৯-১০ঘন্টার বাস যন্ত্রণা শুরু হল, শুরুতেই বাসে ব্সা নিয়ে হালকা ঝগড়া-ঝাটি হল৷ বাস ছাড়তে দেরীও হল। গন্তব্য কাঠমান্ডু, নেপালের রাজধানী৷ মাঝে মনোকামনা দেবীর দর্শন৷ মন্দির এবং man made হলেও এটাই এই ভ্রমণের সেরা আকর্ষণ ছিল৷ পৌঁছেই সবার মুখ হাঁ, রোপ-ওয়ে। হ্যাঁ প্রায় সকলেই এর আগেও রোপ-ওয়ে চড়েছি কিন্তু এটা অনেক আলাদা৷ প্রথমতঃ অনেক উঁচু পাহাড়, দ্বিতীয়তঃ নদী পেরিয়ে যেতে হয়। কিন্তু বিশাল লাইন, অনেক ধৈর্য ধরে শেষ পর্যন্ত রোপ-ওয়েতে বসলাম, আমরা ৫জন একসাথে। ওঠা শুরু হল, তনু গতবারের মত আর ভয় পায়নি৷ পরপর উপরে উঠছি, নদী পেরোলাম, গাছগুলো ছোট ছোট লাগছে, একসময় পাহাড়ের চূড়ায় প���ঁছে গেলাম, ওমা! একি, এখনও শেষ হয়নি আবার আর একটা পাহাড়ে আরও উঁচুতে উঠলাম, শেষটা এত উঁচু ছিল যেটা আমাদের সত্যিই অবাক করেছিল৷ এই ভালোলাগাটা আমার পক্ষে লিখে বোঝানো সম্ভব নয়, নিজে অভিজ্ঞতা করলেই কেবলমাত্র অনুভব করা সম্ভব। ওপরে মনোকামনা দেবীর মন্দির৷, যাতে আমার বিন্দুমাত্র আকর্ষণ ছিল না, আমি পাহাড় থেকে নীচে ছবি তোলার চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু বিফলে গেল সব চেষ্টা৷ ফেরার পথে ছবি না তুলে নিজের চোখে পাখির চোখে পাহাড় নদীর অপরূপ সৌন্দর্য তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করলাম। দুপুরে যখন নীচে ফিরলাম তখন ভীড় অনেক কমে গেছিল৷ রোপ-ওয়ের নীচে নদীর কাছে আমাদের দুপুরের খাওয়ার বন্দোবস্ত হল। রাত জেগে রান্না করেই এনেছিল তাই সবার খাওয়া-দাওয়া সারতে বেশী সময় লাগল না। নদীর তীরে বেশ জায়গাটা। খাওয়ার পর সবাই মিলে নদীতে নেমে হুল্লোড করলাম। বিকালে আবার বাস ছাড়ল। কাঠমান্ডু পৌঁছাতে রাত ৯টা বাজল৷ সবাই ক্লান্ত, তবু রাধুনীরা রান্না শুরু করে দিল- ওদের যেন ক্লান্তি থাকতে নেই। রাতে খেতে ১২টা বাজল।
১৫ই অক্টোবর ২০১৯
পরেরদিন সবাই নিজের দায়িত্বে কাঠমান্ডুর প্রধান আকর্ষণ পশুপতিনাথের (শিব) মন্দির দর্শন৷ আমরা অবশ্যই অশোকবাবুদের সাথে বেরোলাম, হোটেলের কাছেই তাই বেশী হাঁটতে হল না। এবং অবশ্যই আমি ভিতরে ঢুকলাম না, বাইর থেকে মন্দিরের চারপাশটা ক্যামেরাবন্দী করা শুরু করলাম। পুরো একপাক ঘুরে ওদের বেরোনোর আগেই গেটের কাছে পৌঁছে গেলাম। তারপর কিছু দোকানে ঘুরে দুপুরে হোটেলে ফিরলাম। ফিরে খাওয়া সেরে বিশ্রাম তবে বেশীক্ষণের নয়, দুপুরেই বাসে করে কাঠমান্ডুর বাকি দর্শনীয় দেখতে বেরোন হবে। যেমন কথা তেমন কাজ, বেরিয়ে পড়লাম রেডি হয়ে। কিন্তু বাঙালীর ব্যবস্থা আর মহাপুরুষ জর্জরিত বাঙালীর সময়জ্ঞান-তার নির্দশন আবার পেলাম৷ বেরিয়ে আধঘন্টা রাস্তায় দাঁড়াতে হল বাকিদের অপেক্ষায়, তারপর ৩০মিঃ রোদে হেঁটে বাস-স্ট্যান্ডে পৌঁছালাম। তারপরও বাস ছাড়ে না অগত্যা অপেক্ষা। আরও প্রায় ১ঘন্টা পর বাকিদের প্রায় কোলে তুলে আনতে বাস ছাড়ল- Great Indian Circus. পরে শুনেছিলাম যারা পরে এসেছিল তাদের জানানোই হয়নি, তারা অন্য হোটেলে ছিল। বলিহারি ব্যবস্থাপনা৷ যাই হোক আরও কিছু মন্দির দেখলাম, সবগুলো অবশ্য বোরিং ছিল না। নিয়ম করে ফিরেও এলাম, তবে আজকের ঘোরাটা... কি আর করা যাবে তৃতীয় বিশ্বের নাগরিক হয়ে মানিয়ে নেওয়া ছাড়া কি আর উপায় আছে? আছে! সবাই আমার মত নয়, দলের কিছুজন পরের দিনের ঘোরার ব্যাপারে কিছু change করার উদ্যোগ নিল। অনেক নাটকের পর সিংহভাগ সদস্যই রাজি হল৷
১৬ই অক্টোবর ২০১৯
ই হি হি হি ... এখন ভোর ৪টা ... বেশ ঠান্ডা! বরফ ঢাকা পাহাড়ের কোলে সূর্যো��য় দেখার লোভে সবাই ৪টাতেই বাসে চড়ে বসেছি, গন্তব্য নাগরকোট৷ ১ঘন্টার মধ্যে পৌঁছেও গোলাম, কাছের একটা টিলায় সবাইকে উঠে অপেক্ষা করতে বলল। কিন্তু অনেকের সন্দেহ হল এখান থেকে পাহাড় তো দেখা যাচ্ছে না, অগত্যা স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হল। তখন জানা গেল সামনে টিকিট কেটে কিছুটা যেতে হবে। সবাই তখন তাড়াহুড়ো করে টিকিট কেটে প্রায় দৌড় শুরু করলাম, যে কোন মুহুর্তে সূর্যোদয় হয়ে যাবে। কিছুক্ষণ হনহন করে হাঁটার পর পিছনে ফিরে তাকাতে আমাদের কাউকে দেখতে পেলাম না, এদিকে viewpoint-এরও কোন পাত্তা নেই তাই ভাবলাম ফিরে যাই। ঠিক তখনই আমাদের দলের একজনকে দেখতে পেয়ে আবার ছুট লাগালাম কিন্তু পথ আর শেষ হয় না, মাঝে আমাদের দলের এক মহিলাকে দেখলাম এক বাইকওয়ালাকে ম্যানেজ করে হাসতে হাসতে হুস করে বেরিয়ে গেল। আমিও হাল ছাড়লাম না, আমার পিছনে অন্যজনও হাল ছাড়েনি ঠিকই আসছেন৷ এইভাবে আর কতদূর? দূর ছাই ফিরে যাই গোছের দ্বন্দ করতে করতে পৌঁছালাম এবং মুগ্ধ হলাম৷ কুয়াশা/মেঘের সাথে লুকোচুরির মাঝেই প্রকৃতির নৈস্বর্গিক সৌন্দর্য দেখে হারিয়ে গেলাম। অবশ্য সূর্যোদয় পথেই দেখতে হল তবে একটা ব্যাপার অাবিষ্কার করলাম - ইন্টারনেট/পত্রিকায় যে sleeping buddha-র কথা পড়তাম সেই sleeping buddha এখান থেকে দেখা যাচ্ছে, এই অযাচিত আবিষ্কার আমার উৎসাহ আরও বহুগুণ বাড়িয়ে দিল৷ এরপর একে একে অনেকেই পৌঁছালেন, এমনকি ৫ বছরের বাচ্চা, ৭০ বছরের বৃদ্ধ বৃদ্ধাও বাদ ছিল না। তবে আমার বৌ সহ অশোকবাবুরা আসেনি৷ বৌএর কথা মনে পড়তে আমি একাই হেঁটে ফেরার পথ ধরলাম। এরপর কিছু মন্দির দেখে হোটেলে যখন ফিরলাম দুপুর হয়ে গেছে। খেয়ে দেয়ে বিশ্রাম৷ বিকালে অশোকবাবুদের সাথে কাছের বাজারে ঘুরলাম, ওনারা কেনাকাটা করলেন আমরা শুধু ঘুরলাম। সন্ধ্যায় সবাই হোটেলে ফিরলাম, আমার রুমে বন্দী থাকার ইচ্ছে ছিল না তাই একাই আশপাশটা চরতে বেরালাম।
১৭ই অক্টোবর ২০১৯
সকাল সকাল বেরোতে হল এবার মালপত্র নিয়ে, ফেরার ঘন্টা বেজে গেছে তবে আপাতত গন্তব্য বিহারের রক্সোল৷ কিছুই নেই শুধু চলা আর চলা, দুপুরে একটা ফাঁকা হোটেল দেখে খাওয়া সারা হল৷ রক্সোল পৌঁছাতে পৌঁছাতে সন্ধ্যা হয়ে গেল৷ রেলক্রসিং-এ ৪৫ মিনিট দাঁড়িয়ে অবশেষে হোটেলে পৌঁছালাম, হোটেল রুম দেখে মন খারাপ হয়ে গেল। আরও ভেঙে পড়লাম যখন শুনলাম অন্যদের রুম শুধু better নয় অনেক বেশী ভালো৷ মশার কামড় খেয়ে সারা রাত একদম ঘুম হয়নি, সালারা মশারির ব্যবস্থাও রাখেনি। একই পয়সা দিয়ে এই কষ্ট মোটেও পছন্দ হল না, রাগে ঘি পড়ল যখন ভালো রুম পাওয়া লোকজন জ্ঞান দিল ১টা তো মাত্র রাত এত নখরার কিছু নেই গোছের মন্তব্যে৷ এবার অবশ্যই ভাবব booking করার আগে। সবাই যাতে একই মানের সার্ভিস পায় সেটা ensure করাই ওদের কাজ, সেটা না পেলে আমি আর নেই। সেদিন রাতে খাসি মাংস হলেও আমার কিছুই ভালো লাগছিল না।
১৮ই অক্টোবর ২০১৯
আজ সকালেই ট্রেন, তাই তলপি-তলপা গুটিয়ে কাছেই স্টেশনে পৌঁছে গেলাম। বাকিটা রুটিন কাজ৷ এত মন খারাপের মাঝে একটা আনন্দ আছে ফেরার টিকিট RAC নয়, confirm টিকিট। বেশ আরামেই কাটল ফেরার ট্রেন যাত্রা৷ সকাল সকাল ভারী খেয়েই ট্রেনে চড়েছিলাম তাই দুপুরে খাওয়ার ঝামেলা ছিল না, রাত্রে কষ্ট করে খাওয়া সেরে নিশ্চিন্তে ঘুম৷
১৯শে অক্টোবর ২০১৯
ভোর ৫টা, এবারও ট্রেন on time আছে। অবাক কান্ড! ভারতে আছি তো? ট্রেন সময়ে দৌড়াচ্ছে কি করে৷ মালপত্র নিয়ে সবাই নামলাম, বাস আমাদের অপেক্ষায় ছিল, কাঁথি ফিরতে বেশী সময় লাগেনি। বাড়ি যখন পৌঁছালাম তখন সকাল ৮ঃ৩০ বাজে। যাক! বাসে বিদেশ যাত্রা ভালোয় ভালোয় মিটে গেল, ওনাকে অশেষ ধন্যবাদ!
13 notes
·
View notes
Text
কিভাবে সুস্থ থাকবেন এবং জীবনকে উপভোেগ করবেন তার কিছু ঘরােয়া টিপস | How to stay healthy and enjoy life
নমস্কার দর্শক বন্ধুরা Bangla Health Solution ওয়েবসাইটে আপনাদের সকলকে স্বাগতম। আজ আমি আপনাদেরকে বলবো কিভাবে সুস্থ থাকবেন এবং জীবনকে উপভোেগ করবেন তার কিছু ঘরােয়া টিপস
how to stay healthy and enjoy life
healthy living
১। শরীরকে সুস্থ রাখতে হলে ভােরে ওঠার অভ্যাস করুন। বেরিয়ে পড়ুন খােলা আকাশের নিচে, প্রকৃতির কাছাকাছি। ভােরের মনােরম বাতাসে শরীরের সঙ্গে সঙ্গে মনও হয়ে উঠবে তরতাজা।
২। ছাদে বা খােলা মাঠে দাঁড়িয়ে যতদূর দৃষ্টি যায় ততদূর একদৃষ্টে ৩/৪ মিনিট তাকিয়ে থাকুন। | সবুজ মাঠ বা সবুজ গাছের দিকে তাকিয়ে থাকুন। চোখ ভাল থাকবে। ঘুম থেকে ওঠার পর এবং রাতে ঘুমােত যাবার পূর্বে পরিষ্কার ঠান্ডা পানির ঝাপটা দেবেন এতে করে চোখের দৃষ্টি ঠিক থাকবে এবং চোখ দুটিও উজ্জ্বল থাকবে। প্রতিদিন গােসলের পূর্বে পায়ের বুড়ো আঙ্গুলের নখে তেল দিন। এতে দৃষ্টি উজ্জ্বল হবে।
৩। ভােরে প্রাতঃভ্রমণে বেরােনাের পূর্বে ভেজানাে কাঁচা ছােলা খেলে হৃদরােগ এবং উচ্চ রক্তচাপের সম্ভাবনা এড়ানাে যায়।
৪। আটার ভূষিতে অল্প আটা মিশিয়ে চাপাটি তৈরি করে প্রতিদিন একটি করে খান এতে করে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে। এভাবে এই চাপাটি ভেঁড়স কিংবা পেপে সেদ্ধ দিয়ে অন্ততপক্ষে ১৫ দিন খেলে তবে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও দূর হবে।
৫। সকালে অন্তত একদিন খালিপেটে ত্রিফলা (আমলকি, হরিতকি, বহেড়া), চিরতা অথবা নিম গাছের ছাল ভেজানাে পানি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এতে করে লিভার ভাল থাকবে।
৬। ভােরে ঘুম থেকে জেগে উঠে খালি পেটে এক গ্লাস পানি পান করলে ভেতরের সব গ্লানি দূর হয়ে যাবে। ভাত খাওয়ার অন্তত আধ ঘণ্টা পরে পানি পান করবেন। পানি পান করার সময় ঢক ঢক করে পান না করে আস্তে আস্তে পান করুন।
৭। বৃদি কোনও কারণে হঠাৎ করে উত্তেজিত হ��়ে পড়েন তবে আয়নার সামনে পাড়িয়ে নিজের রাগ রাগ চেহারার দিকে মিনিট খানেক তাকিয়ে থাকুন এতে করে উত্তেজনা কমে যাবে।
৮। মাসে একদিন হালকা শাক সবৃজি, ফলের রস কিংবা বাড়িতে পাতা দই এর খােল খেলে শরীর ঝরঝরে থাকবে। সেদিন কোনও রকম ভারী খাবার (ভাত/রুটি) খাবেন না। এছাড়া যদি সপ্তাহে একদিন নিরামিষ খাবার, পর্যাপ্ত ফল এবং টক দই খেতে পারেন তবে সুস্বাস্থ্য অর্জন করতে পারবেন। সেই সাথে শরীর থেকে অবাঞ্চিত মেদও ঝরে যাবে।
৯। মলমূত্র ত্যাগ করার সময় দাঁতে দাঁত চেপে রাখলে দাঁত মজবুত হয়। এছাড়া পাঁত ব্রাশ করার পরে আঙ্গুল দিয়ে মাড়ি মসেজ করলেও দাঁত ঝকঝকে থাকে।
১০। শীতের শেষে বাজারে প্রচুর পরিমাণে কাচা আমলকি পাবেন, তখন প্রতিদিন একটি করে কাঁচা আমলকি খাবেন। চা আমলকিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন 'সি' থাকে যা চোখ, চুল ও পাতকে ভাল রাখবে, পেটের গ্যাসকে সারিয়ে তুলে ত্বকে আনিবে এক উজ্জ্বল।
১১। রাতে খাওয়া দাওয়ার পর বাসনে বসে চুল আঁচড়ান। এতে করে চুল পড়া রােধ হবে এবং চুল সহজে পাবে না।
১২। ভাত খাওয়ার পূর্বে প্রতিদিন কিছু রসুন খাবেন। এতে করে বাত হবেএবং চুলও পড়বে না।'
রােগ নিরাময়ে শরীর চর্চা
শরীরের স্বাভাবিক সৌন্দর্য আপনাকে যে মর্যাদা দান করবে, ভাল পােষাৰ কখনও তা পারবে না। সুন্দর কোনও বন্য প্রাণীর পােষাকের দরকার পড়ে না তবুও ওরা সুন্দর। এবং এটিই তাদের স্বাভাবিক সৌন্দর্য। বছর দশেক পূর্বেও আমরা দৈহিক সৌন্দর্য নিয়ে ততটা সচেতন ছিলাম না, আজ হয়েছি। আপে আমরা নাক, চোখ এবং মুখ নিয়েই শুধু মাথা ঘামাতাম । আজ টিকলাে নাকের চাইতেও মানুষকে সুন্দর করে তার সুন্দর শরীর । পাতলা ঠোটের চেয়েও মানুষকে সুন্দর করে তােলে তার চটপটে দ্রুত হাঁটাচলা । | আমাদের শরীর অনেকটা ব্যাংকের মতো। ব্যাংকে যদি আমরা টাকা জমিয়েই রাৰি কিন্তু খরচ না করি, তবে বছর শেষে সুদে আসলে দ্বিগুণ হবে। ঠিক সেরকম ভাবে আমরা যদি কায়িক পরিশ্রম না করে শুধু খেয়েই যাই তবে শরীরে বাড়তি মেদ জমে যাবে।
মেদ কেন জমে ?
আমি মনে করি মেদ জমার প্রধান কারণ আলস্য ও নিষ্ক্রিয়তা। প্রতি দু'বছর অন্তর আমাদের শরীরের মেটাবলিক রেট কমতে থাকে। তাই আমরা ২০ বছর বয়সে যে খাবার খাই ২৬ বছর বয়সেও যদি সে খাবার খেয়ে থাকি তখনই আমাদের শরীরের ওজন বেড়ে যাবে।
মেদ মা কি কোনও ধরনের অসুস্থতা ? মেদ জমা তখনই অসুস্থতায় রূপ নেৰে যখন পুরুষদের দেহের ওজন তার স্বাভাবিক ওজনের ��াইতে ২০ শতাংশ বেশি হবে এবং মেয়েদের ২৫ শতাংশ বেশি হবে।
শরীরের মেদ বৃদ্ধিতে করণীয় মেদ বৃদ্ধি পেলে আপনাকে খাদ্যের পরিমাণ কমাতে হবে নতুবা কায়িক পরিশ্রম বাড়াতে হবে।
মেদ বৃদ্ধিতে খাওয়া দাওয়ায় বিশেষ ভূমিকা আমাদের একটি বিশেষ প্রস্তাব আছে যখন তখন আমরা হুটহাট করে এটা সেটা মুখে দিয়ে ফেলি। এটি অনুচিত। আমাদের এ স্বভাব ত্যাগ করতে হবে। যদি কখনও অসময়ে খিদে পায় তবে মুড়ি, ছােলা কিংবা শশা ও টমেটোর সালাদ খেয়ে নিন।
ভাজাভুজি এবং মিষ্টি জাতীয় খাবার খাবেন না। দুপুরের খাবারের চেয়ে রাতে হালকা খাবার খাবেন। রাত আটটার মধ্যেই রাতের খাবার শেষ করুন। কারণ রাতের দিকে আমাদের শরীরের মেটাবলিক রেট কমে যায়।
যার ফলে ক্যালরির পরিমাণ বাড়তে থাকে এবং শরীরে মেদ জমে যায়। রাতে যদি খাবার খেতে দেরী হয় তবে গ্যাস্ট্রিক সহ নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা দে���া দিতে পারে। এজন্য প্রতি রাতে খাবার পরে ১৫/২০ মিনিট হাঁটুন। বাইরে হটার ব্যবস্থা না থাকলে ঘরেই পায়চারি করুন।
টেনশন কি
কোনও মা হয়তাে জানালা দিয়ে দেখছেন যে, তার ছেলে গাছে উঠছে তখন তার মানে মাতৃসুল একটি উদ্বেগের সৃষ্টি হয়। এই উদ্বেপই হচ্ছে টেনশনের প্রাথমিক অবস্থা। এই উদ্বেগ থেকেই টেনশনের জন্য। সব উদ্বেগের পরিণতি।
কিন্তু টেনশন নয়। ধরুন কোনও ঘটনা হয়তাে ঘটতে পারে আবার নাও ঘটতে পারে। মা যখন দেখতে পাবেন যে, ছেলে গাছে উঠতে উঠতে মগডালে উঠে গিয়েছে তখনই সেই উদ্বেগ টেনশনে পরিণত হয়। সব ধরনের টেনশনের জন্য হয় 'ভয়' থেকে।
যেমন ধরুন পঞ্চাশজন লােকের সামনে দাঁড়িয়ে আপনাকে জীবনের প্রথমবার অভিনয় করতে হচ্ছে, তখনই আপনার ভেতরে টেনশনের সৃষ্টি হচ্ছে। এ সবই ভয়ভীতির অন্যরূপ। আরও যদি গম্ভীরভাবে দেখতে যান তবে দেখবেন- একটি অহংবােধ এই জাতির জনক। | '
আপনি অহংকারী তাই আপনি টেনশনে ভুগে থাকেন' এ কথা বনি আপনি। কাউকে বলতে যান তবে দেখা যাবে, সে অত্যন্ত অবাক হয়ে যাবে। কিন্তু টেনশনের গভীর কারণ এটিই । আমরা যে সমালোচনা করি তা কিন্তু এই অহংবােধ থেকেই। আমরা অন্যকে নিজের চাইতে কাজে কর্মে কিংবা চিন্তা ধারায় খাটো কিংবা অপটু ভেবে থাকি। এর একমাত্র কারণ হচ্ছে, 'প্রতিটি মানুষই নিজেকে অন্যের চাইতে উৎকৃষ্ট ভাবতে ভালবাসে এবং বিশ্বাসও করে।'
প্রতিটি মানুষের মনেই এমন একটি বােধ কাজ করে যে, 'আমি বুঝি পৃথিবীর সৰ বিষয় জেনে ফেলেছি। কিংবা আমি যা করছি বা ভাবছি সেটি বুঝি শুদ্ধ আর অন্যরা যা ভাবছে সবই বুঝি ভুল। মানুষ যদি চুরিও করে থাকে, তবে সে অ��চেতন মনে নিজের পক্ষেই রায় দিয়ে বলে, 'অভাব ছিল বিধায় চুরি করেছি।"
আৰাৱ যে ক্ষেত্রে নিজের চাইতে ভাল কাজ কেউ করে থাকে এবং সে সেটি করতে পারছে না সে ক্ষেত্রে যে হতাশা বা হীনমন্যতা জণ নেয় তাও কিন্তু এই অহংবােধ থেকেই। নাম, যশ, প্রতিষ্ঠা, ঈর্ষা, ক্রোধ ইত্যাদির জনক যেমনঅহংবােধ ভীতির জনকও তেমনি অহংবােধ। আমরা প্রতিটি কাজেই স্বীকৃতি আশা করে থাকি।
যেক্ষেত্রে এই স্বীকৃতি পাওয়া সম্ভবপর হয়ে ওঠে না, তখনই এই টেনশনের জন্ম নেয়। অভিনয়ের সময় আপনার মুখে কথা আটকে গেলে আপনার মনের মধ্যে যে ভাবনার সৃষ্টি হয়, সে ভাবনা থেকে কষ্ট এবং কষ্ট থেকেই টেনশন।
কারা বেশি টেনশনে ভােগেন
সব মানুষই কম বেশি টেনশনে ভুগে থাকেন। আত্মবিশ্বাসী ব্যক্তি থেকে আরম্ভ করে আত্মবিশ্বাসহীন ব্যক্তি জীবনে ব্যর্থ মানুষ থেকে শুরু করে সফল ব্যক্তিটি পর্যন্ত কখনও না কখনও টেনশনে গে থাকেন। কেউ অল্প কেউ বা বেশি টেনশন করে থাকেন। মনস্তাত্ত্বিকদের মতে যারা অমিশুক প্রকৃতির, অত্যন্ত ছােটখাটো সমস্যা যাদেরকে ভােগায়, অল্পতেই দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়েন, নিজের ওপরে আস্থা কম, যারা স্বপ্ন বিলাসী, প্রতিযােগিতামূলক মনােভাব সম্পন্ন এবং স্বার্থপর লােক- এরাই বেশি টেনশন করে থাকেন। যাদের নিজের ওপর আস্থা নেই টেনশন করলে এরা মানসিকভাবে আরও দুর্বল হয়ে পড়েন। যাৱা। দুশ্চিন্তাৰন তারা টেনশন করলে আরও দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়েন। এবং যিনি স্বপ্ন বিলাসী তিনি সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আরও বেশি স্বপ্নকে আঁকড়ে ধরেন। এতে করে সমস্যা তো কমেই না বরং বেড়ে চলে।
টেনশন মুক্তির কয়েকটি উপায় কি করে মানসিক চাপ এড়াবেন তার জন্য এখন থেকেই চেষ্টা শুরু করুন। মানসিক চাপমুক্ত জীবন পালন করা কারও পক্ষেই খুব একটা সম্ভবপর হয়ে ওঠে। না। উচ্চ মানসিক চাপ এখন অতি সাধারণ ঘটনা।
নিয়ে বাস্তবসম্মত কয়েকটি পন্থা উল্লেখ করা হলো যার মাধ্যমে আপনি মানসিক চাপ থেকে মুক্ত থাকতে পারেন।
১। পথে যাকে পাবেন তার সাথেই দ্বন্দে জড়িয়ে পঞ্চবেন না। আপনি যদি কারও সাথে যােগাযােগ রাখেন তবে আসলেই কম মানসিক চাপ বােধ করবেন। এবং ভারমুক্ত থাকবেন।
২। ধীরে ধীরে কথা বলার অভ্যাস রপ্ত করুন। দ্রুত কথা বলা মানসিক চাপের ইঙ্গিতই তুলে ধরে। আপনি যদি শান্ত ভঙ্গিতে কথা বলে থাকেন এবং
থাফুর্ত ভাবে কথা বলেন, তবে আপনার শ্বাস প্রশ্বাস নিম্ন পতিসম্পন্ন হবে। এবং আপনিও কম উওেজিত হবেন।
৩। দেহের উত্তেজনা দূর হলে মনের উত্তেজনাও দূর হয়ে পড়ে। এজন্য হালকা ভাবে পায়চারি করুন। দেহের উত্তেজনা তাড়াবার জন্য দেহের পেশীগুলােকে শিথিল রাখুন, দেহে নিস্পৃহ ভাব আনুন।
৪। সব কিছুতে গতি সঞ্চার করুন। যদি আপনার হাতে অনেক কাজ করার কাক থাকে তবে প্রথমে একটি কাজে মনােনিবেশ করুন। আবার কিছুক্ষণ পর অন্যটিতে মনযােগ ��িন। পরবর্তীতে আবার প্রথম���িতে ফিরে আসুন। এতে করে আপনি কাজ করার প্রতি যে ভীতিজনক অবস্থার সৃষ্টি হবে তা কাটাতে পারবেন এবং নতুন উদ্যম ও গঠনমূলক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে কাজ করতে পারবেন।
৫। চা, কফি ইত্যাদি বার বার খাবেন না। দু'কাপ কফির মধ্যে থাকা ক্যাফেইন আপনার হৃদযন্ত্রের কম্পনকে প্রতি মিনিটে ১৬ বার বৃদ্ধি করবে এবং সেই সাথে আপনি আরও উদ্বিগ্ন ও খিটখিটে হবেন।
৬। টেনশন হলে দুশ্চিন্তাগ্রস্থ না হয়ে প্রথমেই টেনশনের মূল কারণ খুঁজে বের করুন। এবং, কারণটির সঠিক মূল্যায়ন করুন। এজন্য আপনি বিষয়টিকে একতরফা ভাবে না দেখে তৃতীয় ব্যক্তির দৃষ্টি দিয়ে ব্যাপারটিকে পুরােপুরি দেখুন। এতে করে নিজের অবস্থানটা বুঝতে পারা যায় এবং সমস্যার সমাধান করা যায়।
৭। যখনই টেনশন হবে তখনই চিন্তাকে অন্যখাতে বইয়ে দিন। দীর্ঘসময় একই বিষয় নিয়ে চিন্তা করা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। এক্ষেত্রে নামতা পড়তে পারেন কিংবা ১০০ থেকে ১ পর্যন্ত উল্টো দিকে শুনতে পারেন।
৮। হাঁটতে হাঁটতে কথা বলতে পারেন। অন্যের সাথে এই আলােচনা কম আনুষ্ঠানিক মনে হবে এবং পরস্পর দৃষ্টি সংযােগ কম হওয়ার জন্য ক্ষতি উদ্বেগ ও মানসিক চাপ সৃষ্টি হবে না।
৯। দিন শুরুর সাথে সাথেই কাজ আরম্ভ করবেন। কম গুরুত্বপূর্ণ কাজ বন্ধ রেখে গুরুত্বপূর্ণ কাজ দিয়ে দিন শুরু করুন এতে করে বাড়তি সময় বাঁচিয়ে সামান্য আগেই অফিস ছাড়তে পারবেন। | ১০। যখনই আপনি মানসিক চাপ বােধ করবেন তখনই শরীর চর্চার জন্য কিছুটা বিরতি গ্রহণ করুন।
১১। যখনই আপনার মন বিদ্রোহ করবে তখনই দৃষ্টি অন্য ঘটনার দিকে নিবন্ধ করুন। যা আপনার মনযােগ আকর্ষণ করবে। কিংবা এমন কিছু দেখা কিংবা শােনায় মনােনিবেশ করুন যা আপনার মনটাকে ভুলিয়ে রাখবে। 'দুপরি ঐ ধরনের ঘটনায় কখনই মনােনিবেশ করতে যাবেন না বা টেনশন বাড়াবে।
১২। খেলায় অংশগ্রহণ করতে পারেন যেমন- কম্পিউটার গেম, একা একা কোনও খেলা অথবা শব্দ হেয়ালী ইত্যাদি। যখন আপনি শব্দ গঠনে হিমশিম খাবেন তখন মানসিক চাপের কথা চিন্তাই করতে পারবেন না।
১৩। টেনশন তাড়াতাড়ি কমিয়ে ফেলার সহজ উপায় হচ্ছে এমন কোনও ব্যক্তির কাছে আপনার সমস্যাটি বলুন যিনি সহৃদয়, সহানুভূতিসম্পন্ন এবং আপনাকে ভাল পরামর্শ দেবার ক্ষমতা রাখে। এতে করে আপনার মনের কষ্ট উপশম না হলেও অধিকাংশ সমস্যাটিকে অন্য আলােয় দেখতে পারবেন। এ ধরনের সমস্যায় আপনার যদি কোনও ভুল থেকে থাকে তবে ঐ ব্যক্তি আপনার সামনে তা তুলে ধরতে পারবেন।
১৪। কোনও সমস্যায় পড়লে তা নিয়ে একা না ভেবে পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথে আলোচনা করলে সমাধানের চুলে একাধিক সমাধানের পথ উন্মোচিত হবে।
১৫। যখন আপনার প্রাণ প্রাচুর্য খুব উন্নত থাকে, ��খন সবচাইতে বিরক্তি��র কাজগুলাে করুন এবং যখন দিনের শেষে নিম্নমাত্রার উদ্দীপনা বােধ করবেন ঐ সময়টাতে শিল্প চর্চা করুন।
১৬। আপনার ঘরবাড়ি যদি জঞ্জালে পরিণত হয়, তখন আপনি নিয়ন্ত্রণহীনতা বােধ করেন। তাই সর্বদা পরিস্কার পরিচ্ছন্নভাবে চলে নিজেকে মানসিক চাপমুক্ত রাখুন।
১৭। অন্যের ওপর দোষ দেবেন না। নিজেকে নির্দোষ ভেবে অন্যের ওপর দোষ চাপানােটা বুদ্ধিমানের কাজ নয়। এটি মস্ত ভুল। কারণ জীবনটা আপনার। তাই জীবনের সমস্ত ব্যর্থতার দায়িত্বও আপনার।
১৮। বিপর্যয় মুহূর্তে অকথ্য গালিগালাজ না করাই শ্রেয়। ওসব আপনার সমস্যা সমাধানে কোনও ভূমিকা রাখবে না।
১৯। কিছু সময়ের জন্য কাজকর্ম এড়িয়ে চলুন। বাড়ি ফিরে এসে টেলিভিশন দেখলে আপনার ওপরে বােঝর ওপর শাকের আঁটি'র মতাে চাপ আরও বাড়বে। ঐ সময়টা পরিবার পরিজনদের সাথে কাটান অথবা গান শুনুন।
২০। দীর্ঘ সময় ধরে নানা ঘটনা কল্পনায় ঠাঁই দেবেন না। ভাবতে থাকুন আপনি যা ভাবছেন তা সত্য নয় ওগুলো কল্পনা মাত্র।
২১। সমালােচনার ভয়ে অনেকের মনে টেনশনের জন্ম হয়। মনে করুন যিনি আপনার সমালােচনা করছেন তিনি আপনার কাজের সমালােচনা করছেন ব্যক্তি আপনাকে নয়। যিনি আপনার সমালােচনা করছেন তিনি সঠিক নাও হতে পারেন। ভাবুন সমালোচনা থেকেই আপনি আপনার কাজের পদ্ধতি এবং নিক্সের সম্পর্কে চিন্তা করতে পারছেন।
২২। নিয়মিত ভাবে শরীর চর্চা করুন। মনে রাখবেন সুস্থ দেহেই সু মনের
২৩। এ পৃথিবীতে আজ পর্যন্ত এমন কোনও ব্যক্তি অনুগ্রহণ করেননি যিনি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই অপরাজিত থেকেছেন। আপনি যদি বুদ্ধি, বিবেক, নীতি এবং মনের জোর দিয়ে লড়াই করেন তবে পরাজয় আপনার মনকে গ্লানিতে ভরে তুলবে না। পরাজয় যেমন কাম্য নয় তেমন পরাজয় অপমানজনকও নয়। এ সাবলীল দৃষ্টিভঙ্গিটুকু আপনাকে টেনশনের হাত থেকে মুক্তি দেবে। কেন পারব না এই মনােভাব থাকা ভাল কিন্তু বার বার চেষ্টার পরও যদি না পারেন তবে হতাশ হবার কারণ নেই। আমি পারি তবে সব কাজ পারি এটি আপনার দাক্ষিকতারই প্রকাশভঙ্গি। আপনি মনে রাখবেন অনেক
বিখ্যাত ক্ষমতাবান ব্যক্তিই অনেক ব্যাপারে অপদার্থ। আপনাকেই যে সুপারম্যান হতে হবে এমন কোনও কথা নেই।
২৪। স্বপ্ন দেখুন একটু আধটু, তবে পা যেন মাটিতেই থাকে আকাশে না উড়ে। টেনশন যখন খুব বেশি হবে তখন মাঝে মধ্যে জীবন থেকে পালিয়ে যেতে চাইলে নিজেকে এসকেপিস্ট ভেবে ফেলার কারণ নেই। প্রকৃতির কাছাকাছি ঘুরে আসুন। প্রকৃতির প্রতি ভালবাসা এবং প্রকৃতিতে ঘুরে বেড়ানােটা সুস্থ সুন্দর মন ও শরীরের চবিকাঠি।
২৫। পূর্ব পরিকল্পিত হক অনুযায়ী কাজ করুন, ঘুমােতে চেষ্টা করুন। প্রয়োজনীয় খুম মাত্রাতিরিক্ত হতাশা, আবেগ এবং মানসিক সমস্যাকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
২৬। মনের শান্তি অর্জনের একমাত্র শক্তিশালী উপায় হলাে জীবনের উদ্দেশ্য খুঁজে পাওয়া। এটি করা যায় সমাজ সেবায় আত্মনিয়ােগের মাধ্যমে। | ২৭। সব সময়ে নিজেকে নিয়ে ভাববেন না, এতে করে টেনশন বেড়ে যায়। নিজের থেকে মন সরিয়ে অন্য কালে কিংবা অন্যের কাজে মন দিন। নিজের ভালবাসা অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে দিন। | ২৮। নিজেকে একজন অতি সাধারণ মানুষ ভাবুন। দোষ টি আপনারও হতে পারে। সব সময় মনে করবেন না যে, আপনি সাধু। বুঝতে চেষ্টা করুন যে, কোনও সংকট সৃষ্টিতে হয়তাে আপনারও ভুল ভ্রান্তি থাকতে পারে।
২৯। আপনার বাড়ির আশে পাশেই অনেক ছিন্নমূল মানুষ বাস করে থাকে। যারা নিত্য বিপদের সাথে লড়াই করছে, কিন্তু বিপদে মুষড়ে পড়ছে না। ওরা কিন্তু মানুষ। মনে রাখবেন, জগতের সবচেয়ে দুঃখী ব্যক্তিটি আপনি নন, বিপদ যাদের নিত্যসঙ্গি তারা যদি বিপদে মাথা ঠাণ্ডা রাখতে পারে আপনি কেন পারবেন না। আপনার সাময়িক ব্যর্থতার অর্থ আপনার পুরাে জীবনের ব্যর্থতা নয়।
আশা করছি পোস্টটিতে দেওয়া তথ্যগুলি আপনাদের ভালো
লেগেছে। ভালো লাগলে অবশ্যই লাইক ও শেয়ার করুন এবং আপনাদের মতামত কমেন্ট সেকশনে লিখে জানান পরবর্তী পোস্ট সবার আগে দেখার জন্য Bangla Health Solution WebSiteটিকে সাবস্ক্রাইব করে রাখুন ধন্যবাদ
via Blogger https://ift.tt/2SJIrH9
0 notes
Photo
মরা মানুষের আত্মা দেখলে যা করবেন মানুষ জিনকে নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম নয় কারণ এই বিশেষ অলৌকিক ক্ষমতা শুধু পয়গম্বর সোলায়মানকে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু অন্য কাউকে এই ক্ষমতা প্রদান করা হয় নাই। অন্য কাউকে জিন নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা দেয়া হয়নি এবং কেউ পারেও না। কিন্তু জিন অনেক সময়ই আমাদের সামনে বিভিন্ন রূপ নিয়ে হাজির হয়। আর তাদের আমরা দেখে অনেকেই ভয় পেয়ে থাকি। চলুন আজকে জেনে নিবো এবিষয়ে আরো কিছু তথ্য- ১। রাতে একা একা ��াটলে যদি বুঝতে পারে�� পিছে কেউ আছে, তাইলে শুধু ঘাড় ঘুরাবেন না। পুরো শরীর ঘুরিয়ে দেখবেন। ঘাড় ঘুরালে মটকে দেবার সম্ভাবনা আছে। তবে একেবারে না তাকানো উত্তম। ২। ঘরে, মসজিদে ও বিছানার ওপর সাপ দেখতে পেলে মারবেন না, প্রথমে চলে যেতে বলবেন। কারণ জিন সাপের রুপ ধারন করে থাকেন, মারলে আপনার ক্ষতি হওয়ার আশংকা আছে। আর যদি চলে না যায়, তবে বুঝবেন আসলেই ওটা সাপ, তখন মারবেন বা তাড়িয়ে দিবেন। ৩। যদি রাতে দেখেন গাছের কোন ডাল বা বাঁশ ঝুকিয়ে পরেছে তবে তার ওপর বা নিচে দিয়ে যাবেন না। আয়াতুল কুরসি পড়বেন, ক্ষতির কোন আশংকা থাকলে সরে গিয়ে ঠিক হয়ে গেছে, তখন যাবেন। ৪। শুধু গভির রাতে যদি যেকেউ বাহির থেকে আপনার নাম ধরে ডাকলে সাড়া দিবেন না। ৩ বার ডাকার পর সাড়া দিবেন এবং দেখে বুঝে সতর্কতার সহিত বের হবেন। ৫। গাছে যদি কিছু বসা দেখতে পান তাইলে তার দিকে তাকিয়ে থাকবেন না। চুপ করে মাটির দিকে তাকিয়ে চলে যাবেন। ৬। যদি একা রাতে আপনার রুমে এসে দেখেন আপনিই রুমে বসে আছেন। মানে নিজেকে নিজেই দেখতে পান তাইলে ভয় পাবেন না। ওটা আপনার সাথে থাকা জিন। (কারিন জিন)। শুধু চোখ বন্ধ করে আয়াতুল কুরসি পড়বেন ও তারপর চোখ খুলবেন। ৭। রাতে কখনো চিত হয়ে ঘুমাবেন না। আর যদি ভয়ের স্বপ্ন দেখেন, তাইলে উঠে বুকের বাম পাশে আস্তে আস্তে করে ৩ বার থুথু ফেলবেন। - (বুখারী) ৮। পুকুরে গোছল করলে যদি বুঝতে পারেন কেউ আপনার পা ধরে টানিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তবে প্রথমে চিৎকার দিবেন। ও সাথে সাথে দোয়া ইউনুস পড়া শুরু করবেন। কারন পুকুরে বা নদী তে জিন থাকে। ৯। যদি রাতের বেলা একা একা দেখতে পারেন কুকুর আপনাকে আক্রমণ করতে আসছে আর কুকুর টা কে যদি অস্বাভাবিক মনে হয়, তাইলে যথাক্রমে মাটিতে একটা বিত্ত (বাউন্ডারী) আঁকাবেন এবং তার ভিতর দাঁড়িয়ে আয়াতুল কুরসি পড়বেন। ১০। যদি দেখেন আপনি রাতের বেলায় বার বার পথ হারিয়ে বা ভুলিয়ে যাচ্ছেন, একই পথে বার বার ফিরিয়ে আসছেন বা অনেক দূর যাওয়া পরও গন্তব্যে পৌছাতে পারছেন না, সাহস হারাবেন না দাড়িয়ে আজান দিবেন। তাইলে সব ঠিক হয়ে যাবে। গয়রান নামক জিন আপনাকে ঘুরাচ্ছেন। ১১। রাতে ঘুমের মধ্যে যদি বুঝতে পারেন আপনার বুকে কেউ ভর করে আছে। তবে চিৎকার দিবেন না। চিৎকার দিলে কোন লাভ হবে না, কারণ আপনার চিৎকার মুখ দিয়ে বের হবে না। আপনার যানা যেকোনো সুরা বা আয়াত পাঠ করবেন। ১২। মরা মানুষের আত্মা যদি দেখতে পান তাইলে ভয় পাবেন না। ওটা আত্মা নয়। জিন ওই মরা মানুষের রুপ ধারন করেছে। শুধু সালাম দিয়ে চলে যাবেন। ১৩। গভীর রাতে একা রাস্তায় হাঁটার সময় যদি দেখেন কালো কুকুর বা কালো বিড়াল আপনার বামপাশ থেকে আপনাকে ক্রস করার চেষ্টা করছে তবে ক্রস করতে দিন। কোন সমস্যা নেই। এটা সমাজের কুসংস্কার। তবে তাকে মারবেন না। ১৪। অনেকেই বলে কবরস্থান একটা পবিত্র স্থান। কথা টি ঠিক তবে কবরস্থানে ঘুল নামক জিন থাকে। তাই পবিত্র স্থান হলেও সর্তকের সাথে চলবেন। ১৫। আয়নার মধ্যে জিন প্রবেশ করতে পারে। তাই গভির রাতে আয়না না দেখাই ভাল। আর আয়না তে সবসময় পর্��া দিয়ে রাখবেন। বাথরুমে আয়না না রাখাই ভাল কারন বাথরুমে খান্নাস নামক জিন থাকে, যদিও দুর্বল জিন। আর আয়নার সামনে গিয়ে এই দোয়া পাঠ করবেন ‘আল্লাহুম্মা আনতা হাস্সানতা খালকি ফাহাস্সিন খুলুকি’ ১৬। বাসার ছাদের ওপর জিন বসবাস করে, তাই গভির রাতে একলা ছাদে যাবেন না। গেলে কাউকে সাথে নিয়ে যাবেন। ১৭। যদি আপনি একা একা কোন মিষ্টি বা পিঠা জাতিও কিছু খেতে থাকেন ও দেখলেন যে কোন বিড়াল আপনাকে ডিস্টার্ব করছে তবে তাকেও খেতে দিন। কখনোই তাড়িয়ে দিবেন না বা মারবেন না। কারন কোন সময় জিনও আকৃতি ধারন করে আসে, ও মিস্টি জাতিও জিনিস তাদের প্রিয় খাবার। ১৮। অতিরিক্ত রাগ করবেন না। আমাদের মাঝে মধ্যে রাগ এতোটাই বেড়ে যায় যে মুখ দিয়ে কথা আটকে আটকে যায়। এই রাগের কারনে জিন আপনার শরিরে প্রবেশ করতে পারে। তাই রাগ হলে বসে পড়বেন, বা বসে থাকবে দাঁড়িয়ে যাবেন। এবং অযু করে নিবেন। ১৯। মাগরীবের সময়, ঠিক দুপুরবেলা, রাত ১২টার ও আমাবস্যার সময় জিন দের প্রভাব বেশি থাকে। তাই এই সময় সর্তক থাকবেন। ছোট বাচ্চাদের নিরাপদে রাখবেন, বিশেষ করে মাগরীবের সময় বিসমিল্লাহ বলে ঘরের দরজা বন্ধ করে দিবেন। ২০। প্রতিনিয়ত যদি ভয়ের স্বপ্ন দেখেন ও প্রতিনিয়ত দেখেন যে ওপর থেকে নিচে পরে যাচ্ছেন, কাটাকাটি মারামারি ইত্যাদি দেখেন, তাহলে দ্রুত সঠিক চিকিৎসা নিবেন।
0 notes
Text
মোহময়ী মুরগুমা
বেলা ১০টা: এত বেলা হয়ে গেল তবু ঘরে বসে TV দেখতে হচ্ছে৷ ঠিক আছে কথা যখন ১১টায় বেরোনোতে হয়েছে অগত্তা ... বেলা ১১টা: অবশেষে ফোন এল - "কি খবর?" শুনে মেজাজ খারাপ হয়ে গেল৷ যেখানে যাত্রা শুরু হয়ে যাওয়ার কথা সেখানে এই প্রশ্ন৷ তারপর বলল "আমি রেডি, ১০ মিনিটে বেরোচ্ছি৷" আমি বাঙালীর ১০ মিনিটের অপেক্ষা শুরু করলাম৷ ৩০ মিনিট পর আবার ফোন -"তুই আসবি না আমি যাব?" আবার মেজাজ খারাপ হল। বিরক্ত বললাম : "এদিক দিয়ে যাবি তো আমি আবার রোদে রোদে উল্টো পথে তোদের বাড়ি যাব কেন?" তারপরেও আমার বাড়ি আসতে ৩০মিনিট লেগে গেল। (মেয়ে ছাড়া অন্য কারোর জন্য অপেক্ষা করা আমার পছন্দ নয়)। এত দেরি করছে দেখে একবার মনে হয়েছিল 'যাব না' বলে দিই। বেলা১২ টা: অবশেষে যাত্রা শুরু হল। প্রথমেই তেল ট্যাঙ্ক ভর্তি করে ফেললাম। শুরুতে ছবি তুলব প্ল্যান করেছিলাম কিন্তু দেরীর জন্য মেজাজ হারিয়ে সব বন্ধ করে ব্যাগে ঢুকিয়ে দিয়েছিলাম৷ এরপর ন্যাশান্যাল হাইওয়েতে ওঠার আগে একটা গ্যারেজে চাকায় হাওয়া ভরা হল। তারপর হাইওয়েতে ওঠার মুখে আবার একটা দোকানে হালকা হলাম কারণ এবার আর তেমন দাঁড়ানো হবে না। হলও তাই প্রায় ৩ ঘন্টা টানা bike ride করে সোজা শালবনী পৌঁছালাম৷ ততক্ষণে আমার রাগ কমেছে৷ selfie stand বের করে ছবি তোলা শুরু করলাম৷ বাড়ি থেকে টিফিন বক্সে বয়ে আনা মাংসগুলোর গতি করলাম দুজনে৷ যাদের ইচ্ছে ছিল কিন্তু আসতে পারেনি তাদের ফোন করে জ্বালালাম, এই করে ৩০ মিনিট কাটল�� চন্দ্রকোণা রোড পৌঁছে আবার তেল ট্যাঙ্ক ভর্তি করা হল, মাইলেজ বোঝার জন্য। হিসাব করতে দেখা গেল ৪৪কিমি/লিঃ যাচ্ছে৷ ভাবাই যায় না, Royal Enfield 350 এত মাইলেজ পেয়ে দুজনেই অবাক হলাম। তবে বাইকের গতিবেগ কখনই ৮০কিমি/ঘন্টার বেশী ওঠায়নি। রোডে আমার wife-এর সাথে দেখা হল৷ ও আমাদের জন্য খাবার এনেছিল৷ এরপর হোটেল ম্যাডোনার কাছের rail crossing-এ আবার দাঁড়াল, রোড থেকে বেশী দূরে নয়। ওখানে ও cigarette break নিল। দেরী হচ্ছে বুঝে এরপর টানা বাইক চালিয়ে বাঁকুড়ার প্রান্তে দুর্গাপুর মোড়ে পৌঁছ��� বিশ্রাম নিলাম৷ কিছুক্ষণ বিশ্রামের পর আবার চলা শুরু। রাস্তার যত প্রশংসা করা যায় তত কম৷ এতটা ভালো হবে আশা করিনি। কিন্তু অনেকক্ষণ বসে থাকার ফলে পশ্চাৎপ্রদেশের অবস্থা সঙ্গীন ছিল। পড়ন্ত বিকেল, মাঝ রাস্তায় সূর্যাস্ত দেখলাম৷ সন্ধ্যায় ঝড়ো হাওয়া বইতে শুরু করতে একটু ভয় ভয় করছিল৷ ভাগ্যক্রমে একটু পরেই পুরুলিয়া শহরে ঢুকে পড়লাম। ট্রাফিক জ্যামে হোটেল পৌঁছাতে একটু সময় লাগল, তবে হোটেল খুঁজে পেতে g০ogle map অনেক সাহায্য করেছে আমাদের। রুমে যখন ঢুকলাম তখন সন্ধ্যা ৭টা ৪৫মি বেজে গেছে৷ fresh হয়ে বিশ্রাম নিয়ে বাইরে ঘুরতে বেরোলাম। অাশেপাশে খাবার সস্তা হোটেল (সস্তা: সৌজন্যে আমি) অনেক খুঁজে বাস স্ট্যান্ডের কাছে একটা ধাবাতে দুজনে রুটি তড়কা খেলাম৷ খাবার quality ভালোই তবে মাথাটা ধরে ছিল, তাই বেশী খেতে পারলাম না। হোটেলের non AC room-টা অন্যজনের প্রথম থেকেই পছন্দ ছিল না-যেটা আমার মাথা ব্যাথার কারণ। কিন্তু খেয়ে ফেরার পর room-টা আমারও ভালো লাগল না, যদিও চাইছিলাম রাস্তার ধারে nonAC room কিন্তু AC room-ই নিতে হল শেষ পর্যন্ত, ভাগ্যের কি পরিহাস, হোটেলে আমাদের ভরসা করতে পারেনি আমরা রুম ভাড়া দিতে পারব। শেষে advance-এ ৫০০-টাকা দিতে হল। ঠান্ডায় রাতটা ভালোই কাটল, কিন্তু সকালটা room বন্দী থেকে bore হলাম। স্নান সেরে হোটেল ছাড়তে বেলা ১২টা গড়াল। ঠিক হল হোটেল ছেড়ে দেব এখন, মুরগুমায় পাহাড়ের কাছাকাছি থাকার সুযোগ না হলে আবার ফিরে আসব। এবার বেশী দূর যেতে হল না, কিন্তু এতদূর এসেও পাহাড়ের দর্শন এখনও পাইনি বলে সবে আফসোস করেছি অমনি দূরে আবছা আবছা পাহাড়ের মাথা দেখতে পেয়ে আমাদের কি আনন্দ৷ এবার প্রথমেই খোঁজ শুরু হল থাকার ব্যবস্থার৷ ক্যাম্প ভর্তি, অগত্যা ওদেরই জিজ্ঞাসা করা হল, আশেপাশে আর কোন ব্যবস্থা করা যায় নাকি? ব্যবস্থা হল- homestay. ��াহ! আমার অনেক দিনের ইচ্ছে ছিল, TV-তে দেখতাম ট্রাভেলাররা স্থানীয়দের বাড়িতে ওদের মত করে রাত্রি যাপন করে৷ বাড়িঘর দেখে অযোধ্যা পাহাড় চসে বেড়াতে শুরু করলাম৷ নিজেদের bike তাই বাধাহীনভাবে যত খুশি ঘুরলাম৷ রুক্ষ কিন্তু রুক্ষ নয়, প্রকৃতির সেই সৌন্দর্য অবর্ণনীয়, সেটা সেখানে উপস্থিত থেকেই একমাত্র উপভোগ করা যায়। আমরা বেলা ১১-১২-টার দিকে পাহাড়ে ওঠা শুরু করেছিলাম। শুধু ওঠা নয়, জায়গাটা অনেকগুলো পাহাড়ের hub বলা যেতে পারে, উচ্চতা খুব বেশী নয়৷ রাস্তাটা উঠছে নামছে, দূরের দৃশ্য দেখে মালভূমিই মনে হবে, তবে গাছের সমাগমে এক অন্য মাত্রা এনে দিয়েছিল৷ কয়েকটা দৃশ্য আমার ইউরোপের ঘাসে মোড়া গালিচার মত লেগেছিল৷ আমরা বারবার থেমে প্রকৃতির মজা নিচ্ছিলাম, উড়তে না পারলেও আনন্দে ভাসছিলাম আমরা। একদিকে এতটা পথ দুজনে bike-এ আসার আনন্দ অন্যদিকে দুচোখ জোড়ানো প্রকৃতি, সাথে সহজ সরল কর্মঠ মানুষগুলো৷ দুপুর, তাই চারপাশ ফাঁকা, তবে গরম তেমন নেই৷ আসলে কালবৈশাখীর প্রভাবে মেঘ আর রোদের খেলা চলছে৷ আমরা মার্বেল লেকের খোঁজে একে তাকে জিজ্ঞাসা করে এগোচ্ছিলাম। আমি কিন্তু নতুন জায়গায় আসতে পেরেই যারপর নাই খুশি। পাহাড়, জঙ্গল দুটোই আমার প্রিয় তার ওপর নির্জনতা আর bike riding অতিরিক্ত মাত্রা এনে দিয়েছিল৷ ছবি তোলা আমার একটা নেশা তাই যত বেশী করে পারছি সবকিছু ক্যামেরা বন্দী করে রাখছি, তবে মোবাইল ক্যামেরা, আসলে বড় ক্যামেরায় চটজলদি ছবি তোলা দুষ্কর ব্যাপার। অনেকটা পথ পেরিয়ে মার্বেল লেক আবিষ্কার করলাম, signal-এর অভাবে g০ogle map কাজ করছিল না৷ অচেনা পথ শেষ হচ্ছে না দেখে বারবার মনে হচ্ছিল ভুল পথে যাচ্ছি৷ অনেক কষ্টে খুঁজে পাওয়ার আনন্দ সাথে প্রথমবার লেকটা উপর থেকে দেখে মোহিত হয়ে গেছিলাম৷ ওখানে পর্যটকের ভীড় ছিল। দূরে অযোধ্যা পাহাড়ের ড্যাম দেখা যাচ্ছিল৷ যাই হোক উপর থেকে মনের সুখ মিটিয়ে ছবি তুললাম। এরপর নীচে নেমে কাছ থেকে লেকটা দেখলাম৷ কিছুক্ষণ পর বেশ কালো করে মেঘ ধরতে বাকি পর্যটকরা সবাই চলে গেল কিন্তু আমরা নির্জনতায় লেকটা উপভোগ করলাম, কিন্তু তাতে বাধ সাধল দুটো একটা বৃষ্টির ফোঁটা। ক্যামেরা মোবাইল ভিজে নষ্ট হওয়ার ভয়ে আমরাও মুরগুমা ফেরা ঠিক করলাম৷ কিন্তু এত কাছে এসে অযোধ্যার বিখ্যাত ঝর্ণা না দেখে ফিরে যাব, মনটা খারাপ হয়ে গেল কারণ আগের বারে এসেও ঝর্না দেখা হয়নি, এবারেও হবে না। আমার বাংলার ৫-এর মত মুখ দেখে বোধ হয় অন্যজনের দয়া হল তাই ঠিক হল যা হয় হোক একবার দেখেই আসি। বেশী যেতে হল না, ঝর্নার কাছে পৌঁছে ঠিক হল আগে কি��ু খাব, সারাদিন কিছু খাওয়া হয়নি৷ ২-৩টা চায়ের দোকান তারই একটায় ২-জনে ৪টা ডিম সিদ্ধ আর ২-ঠোঙ্গা মুড়ি খেলাম। এর মধ্যে আবহাওয়ার আরও অবনতি হয়েছে৷ ঝড়ো হাওয়া সাথে প্রচণ্ড আওয়াজের বাজ পড়া শুরু হয়েছে। আমি তাড়াহুড়ো করে ঝর্ণা দেখতে ছুটলাম কিন্তু ৩০০সিঁড়ি বেয়ে নামতে হবে৷ অন্যজন বাধা দিল, বৃষ্টি হলে কাদা হয়ে পাহাড়ী রাস্তা ভয়ঙ্কর হবে৷ অগত্যা ঝর্ণা দেখার মায়া ত্যাগ করে উল্টো পথ ধরে মুরগুমা ফেরা শুরু করলাম। অবাক কাণ্ড যত যাচ্ছি তত আকাশ পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে৷ ভাগ্যক্রমে আমাদের আর ভিজতে হয়নি। ফিরতে ফিরতে অন্যজন চাপ দেওয়া শুরু করল আজই বাড়ি ফেরার জন্য, max রাত ২টা বাজবে৷ আমার মন খারাপ হয়ে গেল- কত দিনের স্বপ্ন ছিল homestay করার, সুযোগ এসেও হাতছাড়া হবে৷ হালকা কথা কাটাকাটির পর আজ বাড়ি ফেরার plan drop করা হল৷ তাই হাতে অনেক সময় পেলাম। বিকাল বিকাল homestay-তে না ফিরে ড্যামের কাছে ছবি তুলে সময় কাটালাম। সন্ধ্যায় homestay-তে এলাম৷ ব্যবস্থা মোটেও মন্দ নয়৷ আমরা দোতলায় একটা রুমে গেলাম, সামনে বড় বারান্দা। আমরা ফ্রেস হয়ে একটু শুলাম৷ বারবার loadshadding হচ্ছিল, তবে নিম্নচাপের কারণে তেমন গরম লাগছিল না। একটু বিশ্রাম নেওয়ার পর হালকা টিকিন করে দুজনে ড্যামের দিকে হাঁটা দিলাম। চাঁদের আলোয় ফুরফুরে হাওয়াতে সাথে মোবাইলে হালকা রবীন্দ্রসঙ্গীত ... উফ! just হারিয়ে গেছিলাম৷ আরও ২-১ জন বন্ধু সঙ্গে থাকলে মজাটা double হয়ে যেত, উপায়ান্তে মোবাইলেই ওদের সাথে কথা হল। ৮টার দিকে ফিরে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়লাম। সারাদিনের ক্লান্তিতে ঘুমটা ভালোই হল। আমার আবার তাড়াতাড়ি ওঠার বদঅভ্যাস, মালিককে বলে বাড়ির ছাদে উঠে চারপাশটা ভালো করে দেখে ছবিও তুললাম। এরপর প্রাতঃরাসে লুচি ডাল খেয়ে স্নান করে দুপুর ১টার দিকে মাছ ভাত খেয়ে বেরাতে বেরাতে ১:৩০ বাজল৷ পুরো journey-টা অন্যজনই চালিয়েছে। ফেরার সময় ক্লান্তিতে আর কিছু করার উৎসাহ ছিল না। চন্দ্রকোনা রোড-এ tea break দিতে সবে থেমেছি, সাথে সাথে কাল বৈশাখীর তাণ্ডব শুরু হল। আশা করেছিলাম ১ঘন্টার মধ্যে বৃষ্টি থেমে যাবে, কিন্তু তা হল না৷ এই দুর্যোগের অন্ধকারে বাকি ১৫০কিমি যাওয়ার বোকামী করলাম না৷ কাছেই শকুন্তলা হোটেলে রাতটা কাটালাম। পরের দিন extra ১টা CL নিতেই হল৷ পরের দিন বাড়ি ফিরতে ফিরতে বিকাল গড়িয়ে গেছিল৷ দুজনে bike-এ প্রায় ৭০০ কিমির journey সেরে অক্ষত ফিরতে পেরে নিজেদের ভাগ্যবান মনে করছিলাম ৷৷
1 note
·
View note