#যিলহজ্ব : গুরুত্ব ফযীলত ও বিশেষ আমল
Explore tagged Tumblr posts
Link
কুরআন ও হাদীসের আলোকে আশারায়ে যিলহজ্ব : গুরুত্ব, ফযীলত ও বিশেষ আমল
আল্লাহর তাআলার বিধানানুসারে যে চারটি মাস পবিত্র ও সম্মানিত, তার একটি হল যিলহজ্ব মাস। আর এ মাসের সবচেয়ে উৎকৃষ্ট ও মর্যাদাপূর্ণ সময় হল আশারায়ে যিলহজ্ব বা যিলহজ্ব মাসের প্রথম দশক। দুটি ইবাদত এ দশকের মর্যাদাকে আরো অধিক বৈশিষ্ট্যমন্ডিত করেছে। কুরআন-হাদীসে এই দশকের বিশেষ ফযীলত ও অসীম গুরুত্ব ও তাৎপর্যের কথা বর্ণিত হয়েছে। স্বয়ং আল্লাহ তাআলা এই দশকের সম্মান ও পবিত্রতা প্রকাশান্তে এই দশকের রজনীগুলোর নামে শপথ করেছেন। ইরশাদ হয়েছে। ﻭﺍﻟﻔﺠﺮ، ﻭﻟﻴﺎﻝ ﻋﺸﺮ শপথ ভোরবেলার, শপথ দশ রাত্রির।-সূরা ফজর (৮৯) : ১-২ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আববাস রা., হযরত আবদুল্লাহ ইবনে যুবাইর রা. ও মুজাহিদ রাহ. সহ অধিকাংশ সাহাবী, তাবেয়ী ও মুফাসসিরের মতে এখানে দশ রাত্রির দ্বারা যিলহজ্ব মাসের প্রথম দশ রাতকেই বুঝানো হয়েছে। হাফেয ইবনে কাসীর রাহ. বলেন, এটিই বিশুদ্ধ মত।-তাফসীরে ইবনে কাসীর ৪/৫৩৫-৫৩৬ হাদীস শরীফে এই দশককে দুনিয়ার সবচেয়ে উত্তম ও মর্যাদাবান দশক হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। হযরত জাবির রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন- ﺃﻓﻀﻞ ﺃﻳﺎﻡ ﺍﻟﺪﻧﻴﺎ ﺍﻟﻌﺸﺮ، ﻳﻌﻨﻲ ﻋﺸﺮ ﺫﻱ ﺍﻟﺤﺠﺔ، ﻗﻴﻞ ﻭﻻ ﻣﺜﻠﻬﻦ ﻓﻲ ﺳﺒﻴﻞ ﺍﻟﻠﻪ؟ ﻗﺎﻝ : ﻭﻻ ﻣﺜﻠﻬﻦ ﻓﻲ ﺳﺒﻴﻞ ﺍﻟﻠﻪ، ﺇﻻ ﺭﺟﻞ ﻋُﻔِّﺮ ﻭﺟﻬﻪ ﺑﺎﻟﺘﺮﺍﺏ . দুনিয়ার সর্বোত্তম দিনগুলো হল যিলহজ্বের দশ দিন। জিজ্ঞাসা করা হল, আল্লাহর রাস্তায়ও কি তার সমতুল্য নেই? তিনি বললেন, আল্লাহর রাস্তায়ও তার সমতুল্য নেই, তবে ঐ ব্যক্তি, যার চেহারা ধূলিযুক্ত হয়েছে, অর্থাৎ শাহদাতের মর্যাদা লাভ করেছে।-মুসনাদে বাযযার, হাদীস : ১১২৮; মুসনাদে আবু ইয়ালা, হাদীস : ২০১০ অন্য বর্ণনায় হযরত জাবির রা. হতে বর্ণিত হয়েছে ু ﻣﺎ ﻣﻦ ﺃﻳﺎﻡ ﺃﻓﻀﻞ ﻋﻨﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﻣﻦ ﺃﻳﺎﻡ ﻋﺸﺮ ﺫﻱ ﺍﻟﺤﺠﺔ ... যিলহজ্বের দশ দিনের চেয়ে কোনো দিনই আল্লাহর নিকট উত্তম নয়।-সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ২৮৪২ এই দশকের নেক আমল আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় কুরআন-হাদীসে আশারায়ে যিলহজ্বের উপরোক্ত বৈশিষ্ট্য ও বিশেষ তাৎপর্যের কথা যেমন বর্ণিত হয়েছে তেমনি দশকের আমল ও ইবাদত-বন্দেগীর বিশেষ ফযীলত ও সওয়াবের কথাও অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বর্ণিত হয়েছে। এই দশকের নেক আমল, বিশেষত আল্লাহর যিকির সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন ﻭﻳﺬﻛﺮﻭﺍ ﺍﺳﻢ ﺍﻟﻠﻪ ﻓﻲ ﺃﻳﺎﻡ ﻣﻌﻠﻮﻣﺎﺕ ﻋﻠﻰ ﻣﺎ ﺭﺯﻗﻬﻢ ﻣﻦ ﺑﻬﻴﻤﺔ ﺍﻷﻧﻌﺎﻡ (তরজমা) নির্দিষ্ট দিনসমূহে তারা যেন আললাহর নাম উচ্চারণ করে সেই সকল পশুর উপর, যা তিনি তাদের দিয়েছেন।-সূরা হজ্ব (২২) : ২৮ ইমাম বুখারী রাহ. বলেন, হযরত ইবনে আববাস রা. বলেছেন, ‘‘সুনির্দিষ্ট দিনসমূহ’’ দ্বারা যিলহজ্বের দশ দিনই উদ্দেশ্য। অনুরূপভাবে হযরত ইবনে ওমর রা., হযান বসরী রাহ., আতা রাহ., মুজাহিদ রাহ., ইকরামা রাহ., কাতাদাহ রাহ., ইমাম নাখায়ী রাহ., ইমাম আবু হানীফা, ইমাম শাফেয়ী, ইমাম আহমদ রাহ.সহ অধিকাংশ উলামায়ে কেরামের অভিমত, সুনির্দিষ্ট দিনসমূহ দ্বারা যিলহজ্বের দশ দিনই বোঝানো হয়েছে।-তাফসীরে ইবনে কাসীর ৩/২৮৯; লাতায়িফুল মাআরিফ ৩৬১ ইমাম ইবনে রজব হাম্বলী রাহ. বলেন, আল্লাহকে স্মরণ ও তার নাম উচ্চারণ শুধু যবেহ করার সময় নির্দিষ্ট নয়; বরং সুনির্দিষ্ট দিনসমূহে আল্লাহর নাম উচ্চারণ অর্থ হল, আল্লাহ তাআলা তার বান্দাদের যেসব নেয়ামত দান করেছেন, বিশেষত জীব-জন্তুকে তাদের অধীন করে দিয়েছেন, তাদের খাদ্য বানিয়েছেন, ইত্যাদি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা।-প্রাগুক্ত এই দশকের দিন-রাতসমূহে নেক আমলের গুরুত্ব হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে। হযরত ইবনে আববাস রা. বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন ﻣﺎ ﻣﻦ ﺃﻳﺎﻡ ﺍﻟﻌﻤَﻞُ ﺍﻟﺼﺎﻟﺢ ﻓﻴﻬﺎ ﺃﺣﺐ ﺇﻟﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﺰ ﻭﺟﻞ ﻣﻦ ﻫﺬﻩ ﺍﻷﻳﺎﻡ ﻳﻌﻨﻲ ﺃﻳﺎﻡ ﺍﻟﻌﺸﺮ، ﻗﺎﻟﻮﺍ : ﻳﺎ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ، ﻭﻻ ﺍﻟﺠﻬﺎﺩ ﻓﻲ ﺳﺒﻴﻞ ﺍﻟﻠﻪ؟ ﻗﺎﻝ : ﻭﻻ ﺍﻟﺠﻬﺎﺩ ﻓﻲ ﺳﺒﻴﻞ ﺍﻟﻠﻪ، ﺇﻻ ﺭﺟﻞ ﺧﺮﺝ ﺑﻨﻔﺴﻪ ﻭﻣﺎﻟﻪ، ﺛﻢ ﻟﻢ ﻳﺮﺟﻊ ﻣﻦ ﺫﻟﻚ ﺑﺸﻲﺀ . আল্লাহর নিকট যিলহজ্বের দশ দিনের নেক আমলের চেয়ে অধিক প্রিয় অন্য কোনো দিনের আমল নেই। সাহাবায়ে কেরাম আরজ করলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আল্লাহর রাস্তায় জিহাদও (এর চেয়ে উত্তম) নয়? তিনি বললেন, না, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদও নয়। তবে হ্যাঁ, সেই ব্যক্তির জিহাদ এর চেয়ে উত্তম, যে নিজের জানমাল নিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের জন্য বের হয়েছে, তারপর কোনো কিছুই নিয়ে ফিরে আসেনি।- সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২৪৩৮; সহীহ বুখারী, হাদীস : ৯৬৯; সুনানে তিরমিযী, হাদীস : ৭৫৭; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ১৭২৭; মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ১৯৬৮; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৩২৪ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন- (অর্থ) আল্লাহ তাআলার নিকট আশারায়ে যিলহজ্বের আমলের চেয়ে অধিক মহৎ এবং অধিক প্রিয় অন্য কোনো দিনের আমল নেই। সুতরাং তোমরা সেই দিবসগুলোতে অধিক পরিমাণে তাসবীহ (সুবহানাল্লাহ) তাহমিদ (আলহামদুলিল্লাহ) তাহলীল (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) ও তাকবীর (আল্লাহু আকবার) পাঠ কর।-মুসনাদে আহমাদ, হাদীস : ৫৪৪৬; মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস : ১৪১১০; বায়হাকী, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস : ৩৭৫০; ত্ববারানী, হাদীস : ১১১১৬; মাজমাউয যাওয়াইদ, হাদীস : ৫৯৩২; শরহু মুশকিলিল আছার, হাদীস : ২৯৭১ কুরআনের উপরোক্ত আয়াত ও হাদীসসমূহের আলোকে স্পষ্ট বুঝা যায়, এই দশ দিনের যে কোনো নেক আমল আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয়। তাই মুমিন বান্দার জন্য অধিক পরিমাণে সওয়াব অর্জন, আল্লাহর নৈকট্য লাভ এবং আখেরাতের পাথেয় সংগ্রহের এরচেয়ে উপযুক্ত সময় আর কী হতে পারে? এজন্য পূর্ববর্তীদের জীবনীতে এই দশকের আমল সম্পর্কে বর্ণিত হয়েছে যে, যখন এই দশকের দিনগুলোর আগমন ঘটত এত অধিক আমল ও মুজাহাদা করতেন, যা পরিমাপ করাও সম্ভব নয়। আমাদেরও উচিত বিভিন্ন নেক আমলের মাধ্যমে এই দশকের রাত- দিনগুলোকে জীবন্ত ও প্রাণবন্ত করে তোলা। আশারায়ে যিলহজ্বের বিশেষ আমল এই দশক যেহেতু নেক আমলের বিশেষ সময় তাই এই দশ দিনের যেকোনো আমল যেমন আল্লাহর নিকট প্রিয় ও পছন্দনীয় অধিক পরিমাণে নফল নামায আদায় করা, রোযা রাখা, যিকির-আযকার, কুরআন তিলাওয়াত, তাসবীহ-তাহলীল ইত্যাদি। তাই আল্লাহর নেয়ামত ও বিশেষ অনুগ্রহ মনে করে এই দশকে সাধ্যমতো নেক আমলের পাবন্দী করা একান্ত প্রয়োজন। তাছাড়া বিভিন্ন হাদীসে এই দশকের বিশেষ কিছু আমলের কথাও বর্ণিত হয়েছে। যেমন- ১. চুল, নখ, মোচ ইত্যাদি না কাটা যিলহজ্বের চাঁদ দেখার পর থেকে কুরবানীর আগ পর্যন্ত নিজের নখ, চুল, মোচ, নাভীর নিচের পশম ইত্যাদি না কাটা। এটা মুস্তাহাব আমল। হযরত উম্মে সালামা রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- ﺇﺫﺍ ﺭﺃﻳﺘﻢ ﻫﻼﻝ ﺫﻱ ﺍﻟﺤﺠﺔ ﻭﺃﺭﺍﺩ ﺃﺣﺪﻛﻢ ﺃﻥ ﻳﻀﺤﻲ ﻓﻠﻴﻤﺴﻚ ﻋﻦ ﺷﻌﺮﻩ ﻭﺃﻇﻔﺎﺭﻩ . তোমরা যদি ��িলহজ্ব মাসের চাঁদ দেখতে পাও আর তোমাদের কেউ কুরবানী করার ইচ্ছা করে তবে সে যেন স্বীয় চুল ও নখ কাটা থেকে বিরত থাকে।-সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১৯৭৭; জামে তিরমিযী, হাদীস : ১৫২৩; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২৭৯১; সুনানে নাসায়ী, হাদীস : ৪৩৬২; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৫৮৯৭ যে ব্যক্তি কুরবানী করতে সক্ষম নয় সেও এ আমল পালন করবে। অর্থাৎ নিজের চুল, নখ, গোঁফ ইত্যাদি কাটবে না; বরং তা কুরবানীর দিন কাটবে। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা. হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন- ﺃﻣﺮﺕ ﺑﻴﻮﻡ ﺍﻷﺿﺤﻰ ﺟﻌﻠﻪ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻴﺪﺍ ﻟﻬﺬﻩ ﺍﻷﻣﺔ . ﻗﺎﻝ ﻟﻪ ﺭﺟﻞ : ﻳﺎ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ! ﺃﺭﺃﻳﺖ ﺇﻥ ﻟﻢ ﺃﺟﺪ ﺇﻻ ﻣﻨﻴﺤﺔ ﺃﻧﺜﻰ ﺃﻓﺄﺿﺤﻲ ﺑﻬﺎ؟ ﻗﺎﻝ : ﻻ، ﻭﻟﻜﻦ ﺧﺬ ﻣﻦ ﺷﻌﺮﻙ ﻭﺃﻇﻔﺎﺭﻙ ﻭﺗﻘﺺ ﺷﺎﺭﺑﻚ ﻭﺗﺤﻠﻖ ﻋﺎﻧﺘﻚ، ﻓﺬﻟﻚ ﺗﻤﺎﻡ ﺃﺿﺤﻴﺘﻚ . আমি কুরবানীর দিন সম্পর্কে আদিষ্ট হয়েছি (অর্থাৎ এ দিবসে কুরবানী করার আদেশ করা হয়েছে।) আল্লাহ তাআলা তা এ উম্মতের জন্য ঈদ হিসাবে নির্ধারণ করেছেন। এক ব্যক্তি আরজ করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! যদি আমার কাছে শুধু একটি মানীহা থাকে অর্থাৎ যা শুধু দুধপানের জন্য দেওয়া হয়েছে? আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, না; বরং সেদিন তুমি তোমার চুল কাটবে (মুন্ডাবে বা ছোট করবে), নখ কাটবে, মোচ এবং নাভীর নিচের পশম পরিষ্কার করবে। এটাই আল্লাহর কাছে তোমার পূর্ণ কুরবানী বলে গণ্য হবে।- মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ৬৫৭৫; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৭৭৩; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২৭৮৯; সুনানে নাসায়ী, হাদীস : ৪৩৬৫ অর্থাৎ যারা কুরবানী করতে সক্ষম নয় তারাও যেন মুসলমানদের সাথে ঈদের আনন্দ ও খুশি উদযাপনে অংশীদার হয়। তারা এগুলো কর্তন করেও পরিপূর্ণ সওয়াবের অধিকারী হবে। অনুরূপভাবে হাজীদের সাদৃশ্য অবলম্বনকারী হবে। ২. ঈদের দিন ছাড়া বাকি নয় দিন রোযা রাখা আশারায়ে যিলহজ্বের আরেকটি বিশেষ আমল হল, ঈদুল আযহার দিন ছাড়া প্রথম নয় দিন রোযা রাখা। হাদীস শরীফে বর্ণিত হয়েছে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই নয়টি দিবসে (যিলহজ্ব মাসের প্রথম নয় দিন) রোযা রাখতেন।-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২৪৩৭; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস : ২২২৩৪; সুনানে নাসায়ী, হাদীস : ২৪১৬ অন্য হাদীসে হযরত হাফসা রা. বর্ণনা করেন- ﺃﺭﺑﻊ ﻟﻢ ﻳﻜﻦ ﻳﺪﻋﻬﻦ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ : ﺻﻴﺎﻡ ﻋﺎﺷﻮﺭﺍﺀ ﻭﺍﻟﻌﺸﺮ ﻭﺛﻼﺛﺔ ﺃﻳﺎﻡ ﻣﻦ ﻛﻞ ﺷﻬﺮ ﻭﺭﻛﻌﺘﻴﻦ ﻗﺒﻞ ﺍﻟﻐﺪﺍﺓ . চারটি আমল নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো ছাড়তেন না। আশুরার রোযা, যিলহজ্বের প্রথম দশকের রোযা, প্রত্যেক মাসের তিন দিনের রোযা, ফজরের আগে দুই রাকাত সুন্নত নামায।-সুনানে নাসায়ী, হাদীস :২৪১৫; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৬৪২২; মুসনাদে আবু ইয়ালা, হাদীস : ৭০৪২; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস : ২৬৩৩৯ ৩. বিশেষভাবে নয় তারিখের রোযা রাখা যিলহজ্বের প্রথম নয় দিনের মধ্যে নবম তারিখের রোযা সর্বাধিক ফযীলতপূর্ণ। সহীহ হাদীসে এই দিবসের রোযার ফযীলত বর্ণিত হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- ﺻﻴﺎﻡ ﻳﻮﻡ ﻋﺮﻓﺔ ﺃﺣﺘﺴﺐ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﺃﻥ ﻳﻜﻔﺮ ﺍﻟﺴﻨﺔ ﺍﻟﺘﻲ ﺑﻌﺪﻩ ﻭﺍﻟﺴﻨﺔ ﺍﻟﺘﻲ ﻗﺒﻠﻪ . আরাফার দিনের (নয় তারিখের) রোযার বিষয়ে আমি আল্লাহর নিকট আশাবাদী যে, তিনি এর দ্বারা বিগত এক বছর ও আগামী বছরের গুনাহ মিটিয়ে দিবেন।- সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১১৬২; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ২৪২৫; জামে তিরমিযী, হাদীস : ৭৪৯; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস : ১৭৩০ আরেক হাদীসে এসেছে- ﻣﻦ ﺻﺎﻡ ﻳﻮﻡ ﻋﺮﻓﺔ ﻏﻔﺮ ﻟﻪ ﺳﻨﺘﻴﻦ ﻣﺘﺘﺎﺑﻌﺘﻴﻦ . যে ব্যক্তি আরাফার দিন রোযা রাখবে তার লাগাতার দুই বছরের (গুনাহ ক্ষমা করা হবে।-মুসনাদে আবু ইয়ালা, হাদীস : ৭৫৪৮; মাজমাউয যাওয়াইদ, হাদীস : ৫১৪১ যারা যিলহজ্বের নয় রোযা রাখতে সক্ষম হবে না তারা যেন অন্তত এই দিনের রোযা রাখা থেকে বঞ্চিত না হয়। আল্লাহ তাআলা আশারায়ে যিলহজ্বের মতো অন্যান্য বিশেষ বৈশিষ্ট্যমন্ডিত দিনগুলোতে ইবাদত-বন্দেগী করার তাওফীক দিন। আমীন।
#The masala masayel of Qurbani#যিলহজ্ব মাসের আমল#Zilhaj in the light of Qur'an and Hadith#যিলহজ্ব : গুরুত্ব ফযীলত ও বিশেষ আমল#Zilhaj in the light of Qur'an#আশারায়ে যিলহজ্ব : গুরুত্ব ফযীলত ও বিশেষ আমল
0 notes
Link
হজ্বের নিয়ম-কানুন: সামর্থবান মুসলমানদের জন্য হজ্ব একটি অত্যাবশ্যকীয় ইবাদত। হজ্বের নিয়ম-কানুন সম্পর্কে অনেককেই বিভ্রান্তির শিকার হতে দেখা যায়। সে কারণে হজ্বের পূর্বে ও হজ্বে থাকাকালীন হজের বিধি-বিধান সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান থাকা আবশ্যক। উমরাহ হজ্ব কি? মিকাত থেকে ইহরাম বেঁধে বায়তুল্লাহ শরিফ তাওয়াফ করা, সাফা-মারওয়া সাঈ করা ও মাথার চুল ফেলে দেওয়া বা ছোট করাকে উমরাহ বলে। হজ তিন প্রকার-তামাত্তু, কিরান ও ইফরাদ। হজ্বে তামাত্তু হজের মাসসমূহে (শাওয়াল, জিলকদ, জিলহজ ) উমরাহর নিয়তে ইহরাম বেঁধে, উমরাহ পালন করে, পরে হজের নিয়ত করে হজ পালন করাকে হজ্জে তামাত্তু বলে।
হজ্জে কিরান হজের মাসসমূহে একই সঙ্গে হজ ও উমরাহ পালনের নিয়তে ইহরাম করে উমরাহ ও হজ করাকে হজ্জে কিরান বলে। হজ্জে ইফরাদ শুধু হজ পালনের উদ্দেশে ইহরাম বেঁধে হজ সম্পাদনকে হজ্জে ইফরাদ বলে। তামাত্তু হজ্বের নিয়ম ১. উমরাহর ইহরাম (ফরজ) পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নভাবে গোসল বা অজু করে নিন। মিকাত অতিক্রমের আগেই সেলাইবিহীন একটি সাদা কাপড় পরিধান করুন, আরেকটি গায়ে জড়িয়ে নিয়ে ইহরামের নিয়তে দুই রাকাত নামাজ পড়ে নিন। শুধু উমরাহর নিয়ত করে এক বা তিনবার তালবিয়া পড়ে নিন। তালবিয়া হলো-লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হাম্দা ওয়ান নিমাতা লাকা ওয়াল মুল্ক, লা শারিকা লাক। ২. উমরার তাওয়াফ (ফরজ) অজুর সঙ্গে ইজতিবাসহ তা��য়াফ করুন। ইহরামের চাদরকে ডান বগলের নিচের দিক থেকে পেঁচিয়ে এনে বাঁ কাঁধের ওপর রাখাকে ‘ইজতিবা’ বলে। হাজরে আসওয়াদকে সামনে রেখে তার বরাবর ডান পাশে দাঁড়ান (২০০৬ সাল থেকে মেঝেতে সাদা মার্বেল পাথর আর ডান পাশে সবুজ বাতি)। তারপর দাঁড়িয়ে তাওয়াফের নিয়ত করুন। তারপর ডানে গিয়ে এমনভাবে দাঁড়াবেন, যেন হাজরে আসওয়াদ পুরোপুরি আপনার সামনে থাকে। এরপর দুই হাত কাঁধ পর্যন্ত তুলে-বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবর, লা ইলাহা ইল্লাল্লা-হু ওয়া লিল্লাহিল হামদ, ওয়াস সালাতু ওয়াস-সালামু আলা রাসুলিল্লাহ পড়ুন। পরে হাত ছেড়ে দিন এবং হাজরে আসওয়াদের দিকে হাত দিয়ে ইশারা করে হাতের তালুতে চুমু খেয়ে ডান দিকে চলতে থাকুন, যাতে পবিত্র কা’বাঘর পূর্ণ বাঁয়ে থাকে। পুরুষের জন্য প্রথম তিন চক্করে রমল করা সুন্নাত। রমল অর্থ বীরের মতো বুক ফুলিয়ে কাঁধ দুলিয়ে ঘন ঘন কদম রেখে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলা। রুকনে ইয়ামানিকে সম্ভব হলে শুধু হাতে স্পর্শ করুন। রুকনে ইয়ামানিতে এলে বলুন-রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া হাসানাতাও ওয়াফিল আখিরাতি হাসানাতাও ওয়াকিনা আজাবান্নার, ওয়াআদখিলনাল জান্নাতা মা’আল আবরার, ইয়া আজিজু ইয়া গাফফার, ইয়া রাব্বাল আলামিন। চুমু খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। অতঃপর হাজরে আসওয়াদ পর্যন্ত এসে চক্কর পুরো করুন। পুনরায় হাজরে আসওয়াদ বরাবর দাঁড়িয়ে হাত দিয়ে ইশারা করে হাতের তালুতে চুমু খেয়ে দ্বিতীয় চক্কর শুরু করুন। এভাবে ৭ চক্করে তাওয়াফ শেষ করুন। হাতে ৭ দানার তসবি অথবা গণনাযন্ত্র রাখতে পারেন। তাহলে ৭ চক্কর ভুল হবে না। ৩. তাওয়াফের দুই রাকা’আত নামাজ (ওয়াজিব) মাকামে ইবরাহিমের পেছনে বা হারামের যেকোনো স্থানে তাওয়াফের নিয়তে (মাকরুহ সময় ছাড়া) দুই রাকা’আত নামাজ পড়ে দুআ করুন। মনে রাখবেন, এটা দোয়া কবুলের সময়। ৪. উমরাহর সাঈ (ওয়াজিব) সাফা পাহাড়ের কিছুটা উপরে উঠে (এখন আর পাহাড় নেই, মেঝেতে মার্বেল পাথর, শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত) কা’বা শরিফের দিকে মুখ করে সাঈ-এর নিয়ত করে, দোয়ার মতো করে হাত তুলে তিনবার তাকবির বলে দোয়া করুন। তারপর মারওয়ার দিকে রওনা হয়ে দুই সবুজ দাগের মধ্যে (এটা সেই জায়গা, যেখানে হজরত হাজেরা (রা.) পানির জন্য দৌড়েছিলেন) একটু দ্রুত পথ চলে মারওয়ায় পৌঁছালে এক চক্কর পূর্ণ হয়। মারওয়া পাহাড়ে উঠে কাবা শরিফের দিকে মুখ করে দোয়ার মতো করে হাত তুলে তাকবির পড়ুন ও আগের মতো চলে সেখান থেকে সাফায় পৌঁছালে দ্বিতীয় চক্কর পূর্ণ হয়। এভাবে সপ্তম চক্করে মারওয়ায় গিয়ে সাঈ শেষ করে দোয়া করুন। ৫. হলক করা (ওয়াজিব) পুরুষ হলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদশের অনুসরণে সম্পূর্ণ মাথা মুণ্ডন করবেন, তবে মাথার চুল ছাঁটতেও পারেন। নারীরা মাথার চুল এক ইঞ্চি পরিমাণ কাটবেন। এ পর্যন্ত উমরাহর কাজ শেষ। হজের ইহরাম না বাঁধা পর্যন্ত ইহরামের আগের মতো সব কাজ করতে পারবেন। ৬. হজ্বের ইহরাম (ফরজ) হারাম শরিফ বা বাসা থেকে আগের নিয়মে শুধু হজের নিয়তে ইহরাম বেঁধে ৮ জিলহজ জোহরের আগেই মিনায় পৌঁছে যাবেন। ৭. মিনায় অবস্থান (সুন্নাত) ৮ জিলহজ জোহর থেকে ৯ জিলহজ ফজরসহ মোট পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মিনায় আদায় করুন ও এ সময় মিনায় অবস্থান করুন। ৮. আরাফাতের ময়দানে অবস্থান (ফরজ) আরাফাতের ময়দানে অবস্থান হজের অন্যতম ফরজ। ৯ জিলহজ দুপুরের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করুন। এদিন নিজ তাঁবুতে জোহর ও আসরের নামাজ স্ব স্ব সময়ে আলাদাভাবে আদায় করুন। মুকিম হলে চার রাকাত পূর্ণ পড়ুন। মসজিদে নামিরায় উভয় নামাজ জামা’আতে পড়লে একসঙ্গে আদায় করতে পারেন। যদি ইমাম মুসাফির হন আর মসজিদে নামিরা যদি আপনার থেকে দূরে থাকে, তাহলে নিজ স্থানে অবস্থান করবেন। মাগরিবের নামাজ না পড়ে মুজদালিফার দিকে রওনা হন। ৯. মুজদালিফায় অবস্থান (ওয়াজিব) ও রাত্রি যাপন (সুন্নত) আরাফায় সূর্যাস্তের পর মুজদালিফায় গিয়ে এশার সময়ে মাগরিব ও এশা এক আজান ও এক ইকামতে একসঙ্গে আদায় করুন। এখানেই রাত যাপন করুন (এটি সুন্নত) । ১০ জিলহজ ফজরের পর সূর্যোদয়ের আগে কিছু সময় মুজদালিফায় অবশ্যই অবস্থান করুন (এটি ওয়াজিব)। তবে দুর্বল (অপারগ) ও নারীদের বেলায় এটা অপরিহার্য নয়। রাতে ছোট ছোট ছোলার দানার মতো ৭০টি কঙ্কর সংগ্রহ করুন। মুজদালিফায় কঙ্কর খুব সহজেই পেয়ে যাবেন। ১০. কঙ্কর মারা (প্রথম দিন) ১০ জিলহজ ফজর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত শুধু বড় জামারাকে (বড় শয়তান) ৭টি কঙ্কর নিক্ষেপ করুন (ওয়াজিব)। এ সময়ে সম্ভব না হলে এ রাতের শেষ পর্যন্ত কঙ্কর মারতে পারেন। দুর্বল ও নারীদের জন্য রাতেই কঙ্কর মারা উত্তম ও নিরাপদ। কঙ্কর মারার স্থানে বাংলা ভাষাসহ বিভিন্ন ভাষায় গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়; তা (বাংলা) মনোযোগ দিয়ে শুনুন ও মেনে চলুন। ১১. কোরবানি করা (ওয়াজিব) ১০ জিলহজ কঙ্কর মারার পরই কেবল কোরবানি নিশ্চিত পন্থায় আদায় করুন। কোরবানির পরেই কেবল রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের আদর্শের অনুসরণে মাথা হলক করুন (ওয়াজিব)। তবে চুল ছোটও করতে পারেন। খেয়াল রাখবেন: কঙ্কর মারা, কোরবানি করা ও চুল কাটার মধ্যে ধারাবাহিকতা জরুরি ও ওয়াজিব, অন্যথায় দম বা কাফফারা দিয়ে হজ শুদ্ধ করতে হবে। বর্তমানে এই সমস্যা সমাধানের সহজ উপায় হজ্জে ইফরাদ করা। যেখানে কোরবানি নেই। হজের ��রে কেউ উমরা পালন করতে চাইলে ১৩ তারিখ দিবাগত রাত থেকে উমরাহ পালন করতে পারবেন। ১২. তাওয়াফে জিয়ারত (ফরজ) ১২ জিলহজ সূর্যাস্তের আগেই তাওয়াফে জিয়ারত করে নিতে হবে। তা না হলে ১২ জিলহজের পরে তাওয়াফটি করে দম দিতে হবে। তবে নারীরা প্রাকৃতিক কারণে করতে না পারলে পবিত্র হওয়ার পরে করবেন। ১৩. কঙ্কর মারা (ওয়াজিব) ১১ ও ১২ জিলহজ কঙ্কর মারা (ওয়াজিব)। ১১-১২ জিলহজ দুপুর থেকে সময় আরম্ভ হয়। ভিড় এড়ানোর জন্য আসরের পর অথবা আপনার সুবিধাজনক সময়ে ৭টি করে কঙ্কর মারবেন-প্রথমে ছোট, মধ্যম, তারপর বড় শয়তানকে। ছোট জামারা থেকে শুরু করে বড় জামারায় শেষ করুন। সম্ভব না হলে শেষরাত পর্যন্ত মারতে পারেন। দুর্বল ও নারীদের জন্য রাতেই নিরাপদ। ১৪. মিনা ত্যাগ ১৩ জিলহজ মিনায় না থাকতে চাইলে ১২ জিলহজ সন্ধ্যার আগে অথবা সন্ধ্যার পর ভোর হওয়ার আগে মিনা ত্যাগ করুন। সূর্যাস্তের আগে মিনা ত্যাগ করতেই হবে-এটা ঠিক নয়। তবে সূর্যাস্তের আগে মিনা ত্যাগ করা উত্তম। ১৫. বিদায়ী তাওয়াফ (ওয়াজিব) বাংলাদেশ থেকে আগত হজযাত্রীদের হজ শেষে বিদায়ী তাওয়াফ করতে হয় (ওয়াজিব)। তবে হজ শেষে যেকোনো নফল তাওয়াফই বিদায়ী তাওয়াফে পরিণত হয়ে যায়। নারীদের মাসিকের কারণে বিদায়ী তাওয়াফ করতে না পারলে কোনো ক্ষতি নেই; দম বা কাফফারাও দিতে হয় না। ১৬. মিনায় অবস্থানরত দিনগুলোতে (১০, ১১ জিলহজ) মিনায়ই রাতযাপন করুন। আর ১২ তারিখ রাতযাপন করুন যদি ১৩ তারিখ রমি (কঙ্কর ছুড়ে মারা) শেষ করে ফিরতে চান (সুন্নত)। কিরান হজ্বের নিয়ম ১. ইহরাম বাঁধা (ফরজ) জেদ্দা পৌঁছানোর আগে একই নিয়মে ইহরাম করার কাজ সমাপ্ত করুন। তবে তালবিয়ার আগেই হজ ও উমরাহ উভয়ের নিয়ত একসঙ্গে করুন। ২. উমরাহর তাওয়াফ (পূর্বে বর্ণিত) নিয়মে আদায় করুন (ওয়াজিব)। ৩. উমরাহর সাঈ করুন, তবে এরপর চুল ছাঁটবেন না; বরং ইহরামের সব বিধিবিধান মেনে চলুন (ওয়াজিব)। ৪. তাওয়াফে কুদুম করুন (সুন্নত)। ৫. এরপর সাঈ করুন, যদি এ সময় সাঈ করতে না পারা যায় তাওয়াফে জিয়ারতের পরে করুন (ওয়াজিব)। ৬. ৮ জিলহজ জোহর থেকে ৯ জিলহজ ফজর পর্যন্ত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মিনায় পড়ুন। এ সময়ে মিনায় অবস্থান করুন (সুন্নত)। ৭. আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করুন (ফরজ)। ৮. ৯ জিলহজ সূর্যাস্তের পর থেকে মু���দালিফায় অবস্থান এবং মাগরিব ও এশা একসঙ্গে এশার সময়ে আদায় করুন (সুন্নত)। তবে ১০ জিলহজ ফজরের পর কিছু সময় অবস্থান করুন (ওয়াজিব)। ৯. ওপরে বর্ণিত নিয়ম ও সময় অনুসারে ১০ জিলহজ কঙ্কর নিক্ষেপ করুন (ওয়াজিব)। ১০. কোরবানি করুন (ওয়াজিব)। ১১. মাথার চুল মুণ্ডন করে নিন (ওয়াজিব)। তবে চুল ছেঁটেও নিতে পারেন। ১২. তাওয়াফে জিয়ারত করুন (ফরজ) ও সাঈ করে নিন, যদি তাওয়াফে কুদুমের পরে না করে থাকেন। ১৩. ১১-১২ জিলহজ কঙ্কর নিক্ষেপ করুন (ওয়াজিব)। ১৩ জিলহজ কঙ্কর মারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আদর্শ। ১৪. মিনায় থাকাকালীন মিনায়ই রাতযাপন করুন (সুন্নত)। ১৫. মিকাতের বাইরে থেকে আগত হাজিরা বিদায়ী তাওয়াফ করুন (ওয়াজিব)। ইফরাদ হজ্বের নিয়ম ১. শুধু হজের নিয়তে (আগে বর্ণিত) ইহরাম বাঁধুন (ফরজ)। ২. মক্কা শরিফ পৌঁছে তাওয়াফে কুদুম করুন (সুন্নত)। ৩. সাঈ করুন (ওয়াজিব)। এ সময়ে সম্ভব না হলে সাঈ তাওয়াফে জিয়ারতের পরে করুন। ৪. মিনায় পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ও রাতযাপন করুন (সুন্নত)। ৫. আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করুন (ফরজ)। ৬. মুজদালিফায় অবস্থান করুন (সুন্নত)। তবে ১০ জিলহজ ফজরের পর কিছু সময় অবস্থান ওয়াজিব। ৭. ১০ জিলহজ জামারাতে ৭টি কঙ্কর নিক্ষেপ করুন (ওয়াজিব)। ৮. যেহেতু এ হজে কোরবানি ওয়াজিব নয়, তাই কঙ্কর নিক্ষেপের পর মাথা হলক করে নিন; তবে চুল ছেঁটেও নিতে পারেন (ওয়াজিব)। ৯. তাওয়াফে জিয়ারত করুন (ফরজ) ও যদি তাওয়াফে কুদুমের পর সাঈ না করে থাকেন, তাহলে সাঈ করে নিন (ওয়াজিব)। ১০. ১১-১২ জিলহজ আগে বর্ণিত নিয়ম ও সময়ে কঙ্কর নিক্ষেপ করুন (ওয়াজিব)। ১১. ��দলি হজকারী ইফরাদ হজ করবেন। ইহরাম, অন্যান্য পরামর্শ ইহরাম সম্পর্কে জরুরি বিষয়: যারা সরাসরি বাংলাদেশ থেকে মক্কা শরিফ যাবেন, তারা বাড়িতে, হাজি ক্যাম্পে বা বিমানে ইহরাম করে নেবেন। বাড়িতে বা হাজি ক্যাম্পে ইহরাম করে নেওয়া সহজ। ইহরাম ছাড়া যেন মিকাত অতিক্রম না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। যারা মদিনা শরিফ যাবেন, তারা মদিনা শরিফ থেকে মক্কা যাওয়ার সময় ইহরাম করবেন। কোনো নারী প্রাকৃতিক কারণে অপবিত্র হয়ে থাকলে ইহরামের প্রয়োজন হলে অজু-গোসল করে নামাজ ব্যতীত লাব্বাইক পড়ে ইহরাম করে নেবেন। তাওয়াফ ছাড়া হজ, উমরাহর সমস্ত কাজ নির্ধারিত নিয়মে আদায় করবেন। তাওয়াফ ও সাঈ করার সময় বিশেষভাবে লক্ষণীয়। তাওয়াফের সময় অজু থাকা জরুরি। তবে সাঈ করার সময় অজু না থাকলেও সাঈ সম্পন্ন হয়ে যাবে। হাজরে আসওয়াদে চুমু দেওয়া একটি সুন্নত। তা আদায় করতে গিয়ে লোকজনকে ধাক্কাধাক্কির মাধ্যমে কষ্ট দেওয়া বড় গুনাহ। তাই তাওয়াফকালে বেশি ভিড় দেখলে ইশারায় চুমু দেবেন। সাঈ করার সময় সাফা থেকে মারওয়া কিংবা মারওয়া থেকে সাফা প্রতিটি ভিন্ন ভিন্ন চক্কর। এভাবে ৭টি চক্কর সম্পূর্ণ হলে একটি সাঈ পূর্ণ হবে। (সংগৃহীত)
#Hajj:#Rules of Hajj in Bangla#হজ্বের নিয়ম-কানুন:#হজ্জ করার নিয়ম#যিলহজ্ব : গুরুত্ব ফযীলত ও বিশেষ আমল#উমরাহ হজ্ব#হজ্ব
0 notes