Tumgik
#মেয়েদের দুধ
krishokfood · 4 years
Text
যে ১০ কারন জানলে আপনি আজ থেকেই ত্বীন ফল বা ডুমুর খাওয়া শুরু করবেনঃ
পবিত্র কুর-আনে বর্ণিত ত্বীন ফলের গুণের শেষ নেই -যে ১০ কারন জানলে আপনি আজ থেকেই ত্বীন ফল বা ডুমুর খাওয়া শুরু করবেনঃ 
প্রায় সকল ধর্মেই ডুমুর কিংবা ত্বিন গাছের একটি বিশেষ গুরুত্ব আছে …
পবিত্র কুর-আনে ত্বীন নামে একটি সুরা আছে যেখানে মহান আল্লাহ ত্বীন ফলের নামে কসম খেয়েয়েছেন, আবার হযরত আদম ও মা হাওয়া আল্লাহর নিষেধ অমান্য করে গন্ধম খাওয়ার পর যখন বস্ত্রহীন হয়ে পরেছিলেন তখন এই ত্বীন ফলের পাতা দিয়েই লজ্জা নিবারন করেছিলেন, তাতে স্পস্ট করে বুঝা যায় ত্বিন গাছ জান্নাতেও আছে অর্থাৎ ত্বীন একটি জান্নাতী ফল,বিজ্ঞানীরা কুর-আন গবেষনা করে এই ফলের যাদুকরী গুনাগুন আবিস্কার করেছেন এবং ভারত সহ পশ্চিমা বিশ্বে স্বাস্থ্য সচেতন মানুষদের মধ্যে এর চাহিদা ব্যপক ভাবে বেড়েছে। সাথে সাথে বেড়ে চলেছে এর বানিজ্যিক উৎপাদন, অথচ এখন ও আমরা অনেকেই এই মহা বকতময় ও গুন সম্পূর্ণ ফলের ব্যপারে তেমন কিছুই জানিনা, আসুন আজ জেনে নিই পবিত্র কুর-আনে উল্লেখিত ত্বীন ফলের গুনাগুন সমপর্কে-ডুমুর ফলে প্রচুর পরিমান vitamin A,Vitamin C,Vitamin K,B Vitamins,Potassium,Magnesium,Zinc,Copper,Manganese,Ironবিদ্যমান, যাতে আমরা সহজেই বুঝতে পারি যে প্রতিদিন ত্বীন ফল খাওয়া কতটা জরুরী, তো আসুন আলচনা করি সেই ১০ টি কারন নিয়ে , যে কারনে আপনার প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় ত্বীন ফল তথা ডুমুর থাকা উচিতঃ 
১। পুরুষত্ব ও নারীর যৌন স্বাস্থ্যঃ
প্রাচীন গ্রীকদের মতে, ত্বীন হলো একটি পবিত্র ফল এবং একটি প্রাকৃতিক আফ্রোডিসিয়াক হিসাবে বিবেচনা করা হত। এটি যৌন উর্বরতা এবং প্রেমের প্রতীক। প্রাচীন ভারতেও ত্বীন দুধের সাথে একত্রিত করে খাওয়া হত। যেহেতু এটি দস্তা, ম্যাঙ্গানিজ, ম্যাগনেসিয়াম এবং আয়রনের মতো খনিজগুলি দিয়ে বোঝায়, উপাদান গুলি বৈজ্ঞানীক ভাবে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যের উন্নতিতে অবদান রাখে। তদুপরি, একটি ঘরোয়া প্রতিকার হিসাবে, অল্প বয়সী মেয়েদের প্রায়শই পিএমএস সমস্যাগুলি কাটিয়ে উঠতে ত্বীন খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। গবেষণায় আরও দেখা গেছে যেহেতু শুকনো ডুমুরগুলি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইবারের একটি উচ্চ উৎস, তাই এটি নারীদের মেনোপোসাল স্তন ক্যান্সার এবং হরমোন জনিত ভারসাম্যহীনতা থেকে রক্ষা করতে সহায়তা করে।
২। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনেঃ
ডুমুর কোন ঝোপঝারের সাধারন উদ্ভিদ নয় , গবেষনায় জানা গেছে , যে ডুমুরের পাতার রসে উপস্থিত পলিফেনন ডায়াবেটিসের সকল লক্ষনকে নিয়ন্ত্রন করে , ২০১৬ সালে ইদুরের উপর একটি গবেষনা চালিয়ে দেখা গেছে যে , ত্বীন পাতার রসে উপস্থিত ফিকুসিন ইন্সুলিনের বিকল্প একটি প্রাকৃতিক এন্টিবায়োটিক হিসাবে কাজ করে, ২০০৩ সালে করা একটি গবেষনায় দেখা যায় যে ত্বীনের নির্যাস রক্তের ফ্যাটি এসিড ও ভিটামিনE র লেভেল কে স্বাভাবিক রেখে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রনে ভুমিকা পালন করে।ডুমুরের উচ্চ পটাসিয়াম উপাদান দেহে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে, এইভাবে খাওয়ার পরে শর্করা কী পরিমাণ পরিমাণে শোষিত হয় তা পরীক্ষা করে রাখে। ডায়াবেটিস রোগীদেরজন্য সহায়ক উচ্চ পটাসিয়ামযুক্ত খাদ্য বলা হয়।গবেষণায় আরও দেখা গেছে যে ডুমুরগুলিতে উপস্থিত ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড রক্তে শর্করার মাত্রা হ্রাস করতে এবং টাইপ -2 ডায়াবেটিসে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে।
৩। ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রন, হার্ট ও কিডনি সুরক্ষায়ঃ
ত্বীন ফলে থাকা পটাশিয়াম মানব শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে ভুমিকা রাখে পটাসিয়াম একটি গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থ, যা শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় এবং এর নিয়মিত সেবন রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে রাখতে সহায়তা করে কারণ এটি সোডিয়ামের ক্ষতিকারক প্রভাবগুলিকে মোকাবেলা করতে পারে।যেহেতু আমরা এমন একটি পৃথিবীতে বাস করি যেখানে আমরা ক্রমাগত প্রক্রিয়াজাত ভেজাল খাবার এর উপর নির্ভর করি, যার মধ্যে উচ্চ সোডিয়াম উপাদান থাকে তাই পটাসিয়াম সমৃদ্ধ একটি খাদ্য আমাদের জন্য অতি প্রয়োজনীয়। এটি রক্ত ​​সঞ্চালন এবং হজমজনিত অসুস্থতায়ও সহায়তা করতে পারে।জাপানের শিগা মেডিকেল সায়েন্স ইউনিভার্সিটি কর্তৃক করা একটি সমীক্ষা অনুসারে, এটি বলেছে যে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য, পটাসিয়াম সমৃদ্ধ ডায়েট গ্রহণ আপনাকে হার্ট ও কিডনি জনিত অসুস্থতা থেকে রক্ষা করতে পারে।
৪। হার্টের সুরক্ষায় ডুমুরঃগবেষণায় দেখা গেছে যে ডুমুর মানব দেহে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা হ্রাস করতে সহায়তা করে যা চর্বিযুক্ত কণা যা রক্ত ​​প্রবাহে সঞ্চালিত হয় এবং হৃদরোগের একটি প্রধান কারণ , তাছাড়া রক্তচাপ হ্রাস করার বৈশিষ্ট্যযুক্ত শুকনো ত্বীন ফলের উচ্চ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান শরীর থেকে ফ্রি র‍্যাডিক্যালকে নির্মূল করতে সহায়তা করে, যা দীর্ঘকালীন করোনারী ধমনীতে বাধা সৃষ্টি করতে পারে এবং করোনারি হৃদরোগ প্রতিরোধ করতে পারে
৫। কোষ্ঠকাঠিন্য দুর করতে ডুমুরঃ
ডুমুরগুলিতে উচ্চ আঁশযুক্ত উপাদানগুলি একটি স্বাস্থ্যকর হজম ব্যবস্থা ও পরিপাকতন্ত্র বজায় রাখতে সহায়তা করে, এইভাবে কোষ্ঠকাঠিন্য রোধে সহায়তা করে। নিয়মিত অন্ত্রের গতিবিধি বজায় রাখার জন্য আঁশগুলি প্রয়োজনীয় এবং নিয়মিত খাওয়ার সময় ত্বীন ফলের মতো খাদ্য হজম কে অনেক শক্তিশালী করে তোলে।
৬। হাড়ের সুস্থতা বজায় রাখে ডুমুরঃ
শুকনো ত্বীন ক্যালসিয়ামের একটি ভাল উৎস। মানবদেহের খনিজগুলির প্রতিদিনের প্রয়োজন মেটাতে প্রতিদিন প্রায় 1000 মিলিগ্রাম ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন হয়। যেহেতু ক্যালসিয়াম শরীর দ্বারা উত্পাদিত হয় না, তাই আমরা যা খাই তা কেবল দেহের প্রয়োজনে অবদান রাখে। প্রায়শই আমরা দুধ থাকা সত্ত্বেও সেট প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে ব্যর্থ হই, যা ক্যালসিয়ামের সর্বোচ্চ উৎস।সুতরাং আমাদের হাড়ের সুরক্ষায় ক্যালসিয়ামের অনন্য উৎস হিসাবে আমরা প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় ত্বীন যোগ করতে পারি আজ থেকেই।
৭। ত্বকের চিকিতসায়ঃ
ত্বকের নানা ধরনের সমস্যার সমাধান করতে পারে এই ত্বীন ফলের নিয়মিত আহার, যেমন একজিমা , ভ্যাটিলিগো , সেরিয়াসিস ইত্যাদি – আরও অনেক সমস্যায় ত্বীন ফলের ভুমিকা নিয়ে গবেষনা চলমান।ত্বীন এ অনেক গুলি ভিটামিন , মিনারেল ও এন্টি অক্সিডেন্ট থাকায়, নিয়মিত ডুমুর সেবন আপনাকে অনেক লাবন্যময় করে তুলবে, নিয়মিত খেয়ে নিজেই পরীক্ষা করে নিন , নিশ্চিত ভাবে আমি বলতে পারি, কিছুদিন পরে আয়নায় নিজের লাবন্যদীপ্ত চেহারা দেখে আমাদের উপর আপনি খুশি-ই হবেন।
৮। চুলের যত্নেঃ
বিশ্ব নামকরা সকল কোম্পানিই তাদের শ্যাম্পূতে ডুমুরের নির্যাস ব্যাবহার করে, এটি চুল কে ভেতর থেকে শক্তিশালী ও ময়শ্চারাইজ করে থাকে।একটি গবেষনায় প্রমানিত হয়েছে যে , ডুমুরে থাকে জিংক ও কপার চুল পরা রোধে সাহায্য করে। জিংক চুল পুরুদ্ধারে সাহায্য করে থাকে।আরেকটি পরীক্ষায় জানা গেছে মনোপোজের সময় মহিলাদের চুল পরা রোধে ত্বীন ফলের বিশেষ ভুমিকা রয়েছে। মুলতঃ ডুমুরে থাকা zinc,copper,selenium,magnesium,calcium,B vitamins, vitamin C উপাদান গুলি চুলের পরিচর্চার ক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে সহায়ক।
৯ । ওজন কমাতে কিংবা বাড়াতে ডুমুরঃ
ত্বীন ফলে প্রচুর পরিমানে ফাইবার বিদ্যমান তাই আপনার ওজন কমানোর প্রয়োজনে আজই আপনার দৈনিক খাবারের তালিকায় ডুমুর যোগ করে নিন , গবেষনায় জানা গেছে ত্বীন পরিপাকতন্ত্রকে সবল করে তোলে , উন্নত মেটাবলিজম নিশ্চিত করে।শুধু সুন্দর পরিপাকই নয় , ত্বীন ফলে ফাইবার আপনাকে ক্যান্সার ও টাইপ-২ ডায়াবেটিস এর ঝুকি মুক্ত রাখবে ।আমেরিকান জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন এ প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় জানা গেছে , ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার শরীরে অতিরিক্ত ক্যালোরী কমাতে সক্ষম, তবে শুকনা ডুমুর পরিমিত খাওয়া জরুরি বলে তারা জানিয়েছেন , কারন ডুমুর বেশী পরিমানে খেলে আবার আপনার ওজন বাড়বে। 
সেজন্য ত্বীন ফলকে বলা হয় “One of the best Weight management diet” , যার একই সাথে ওজন কমানো ও বাড়ানো উভয় ক্ষমতাই রয়েছে।
১০। পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াঃ
এখন পর্যন্ত ত্বীন খাওয়ার কোন বড় রকমের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সন্ধান করতে পারেন নি গবেষকরা, তবে ত্বীন মোরাসি (Moraceae) পরিবারের সদস্য , এই পরিবারের অন্যন্য খাবার যেমন কাঁঠাল, ওসেজ কমলা কিংবা আপেলে যদি আপনার এলার্জি থাকে সেক্ষেত্রে ত্বীন ফলেও আপনার এলার্জি হওয়ার সম্ভবনা আছে।তাছাড়া ত্বীন ফলে থাকা ভিটামিন K, পাতলা রক্তকে ঘন করে , এক্ষেত্রে কোন ব্যক্তি যদি রক্ত পাতলা করার জন্য ওষুধ সেবন করেন যেমনঃ warfarin (Coumadin) সেক্ষেত্রে তাদের দৈনিক না খাওয়াটাই ভালো, তবে খেতে পারবেন না এমন নয়, পরিমিত পরিমান খেতে কোন বাধা নেই।পরিশেষে একটি কথা, আমরা বিভিন্ন বিদেশী জার্নাল, চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের লেখা ব্লগ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে সহজ ভাবে আপনার সামনে উপস্থাপন করার চেস্টা করি, যা সময়ও কস্ট সাপেক্ষ , তাই আপনার যদি এই লেখাটি একটু ও ভালো লাগে, তাহলে দয়াকরে কমেন্ট বক্সে একটি কমেন্ট করুন, প্রিয়জনদের সাথে পোস্ট টি শেয়ার করুন । এতে আমদের উতসাহ বাড়বে, ভবিষ্যতে আরো ভালো কোন হেলথ কিনবা ফুড টিপস লিখতে। ধন্যবাদ
1 note · View note
mdgazimelon24 · 2 years
Photo
Tumblr media
ভেজালের সুষম বন্টন 🙃 দুধবিক্রেতা ভাবে আমি ৫ কেজি দুধে ৩ কেজি পানি মিশিয়ে নেই, তারপর অতিরিক্ত দুধ বিক্রির টাকা দিয়া আমার ছেলে মেয়েদের জন্য ফ্রেশ ফল কিনে আনব। ফল বিক্রেতা ভাবে আমি আমে ক্যালসিয়াম কার্বনেট মিশাইয়া লই, সেই আম বিক্রি করে বাজার থেকে ফ্রেশ দুধ কিনে আমার সন্তানদের খাওয়াব। সবজি বিক্রেতা ভাবে আমি সবজি তাজা রাখতে সবজিতে ইথানল মিশাইয়া লই,তারপর সেই সবজি বিক্রি করে বাজার থেকে ফ্রেশ মাছ কিনে ছেলে মেয়েদের খাওয়াব। মাছ বিক্রেতা ভাবে আমি মাছে ফর্মালিন দিয়া মাছ তাজা রাখি,তারপর সেই ��াছ বিক্রি করে বাজার থেকে মাংস কিনে ছেলে মেয়েদের খাওয়াব। মাংস বিক্রেতা ভাবে আমি তাজা মাংস,পঁচা মাংস মিক্স কইরা বেইচ্চা লই,সেই টেকা দিয়া বাজার থেইকা পোলা মাইয়ারে ফ্রেশ মাছ কিইন্না খাওয়ামু। সরকারি চাকুরীজিবি ভাবে এই ফাইলের জন্য অতিরিক্ত যা কিছু নিতে পারব তা দিয়ে ছেলে মেয়েদের জন্য শপিং করে দিব। কাপড়ের দোকানি ভাবে ভালো কোয়ালিটির মালের লগে কিছু রিজেক্ট কাপড় মিশাই রাখি,লাভের পরিমান একটু বাড়লে সন্তানদের ভালো স্কুলে পড়াতে পারব। এরকম প্রায় প্রতিটি পেশাজিবি মানুষেরা শুধু মাত্র নিজেদের সন্তানদের কথা ভেবে অন্যের সন্তানদের ক্ষতি করে চলেছে। অতঃপর এভাবেই বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে নিশ্চিত হয়ে চলছে ভেজালের সুষম বন্টন !! © https://www.instagram.com/p/ChukgPMPBCs/?igshid=NGJjMDIxMWI=
0 notes
cladust · 3 years
Text
যত‌ই ICBM পিচকিরিতে দুধ, জল, নারকেল জল ঢালো... বাঙালি আর ভারতীয় মেয়েদের কোরিয়ান ছেলে পাবার চেয়ে বাঙালি আর ভারতীয় ছেলেদের কোরিয়ান মেয়ে পাবার চান্স অনেক বেশী! 🥴
মনে আছে তো সেই কোরিয়ান ছেলের সাথে পালিয়ে গিয়ে মেয়ে দেখে, ছেলে আসলে নেপালি.. মিম টা? #india #bengal #bangla #korea
0 notes
i-tipu1234-us · 3 years
Text
0 notes
mplusnews · 4 years
Link
0 notes
dailynobobarta · 4 years
Text
আকিব শিকদার এর নির্বাচিত ২৫ কবিতা
New Post has been published on https://is.gd/0re9B0
আকিব শিকদার এর নির্বাচিত ২৫ কবিতা
Tumblr media
রঞ্জু, একটা হাতিয়ার... মিছিলটা হয়েছিলো প্রায় তিনশো গজ লম্বা। টানা পাঁচ দিন খেটেখোটে লোক জড় করেছিলে। বিপক্ষ দলের সামনে ইজ্জত রাখা চাই। গলিটা দখলে নিয়ে সাজালে প্যান্ডেল। ঝাঝালো ভাষণে জনপদ কাপিয়ে স্বার্থক জনসভা। নেতা তোমাকে কাছে ডেকে পরিপাটি চুলগুলো আঙুলে উলোঝুলো করে দিয়ে বললো- “বেটা বাঘের বাচ্চা, তোর মতো কেজো ছেলে আগে দেখিনি, একেবারে বিপ্লবী চে গুয়েভারা”। তুমি বাহবা পেয়ে গলে গেলে রঞ্জু। বুঝলে না, ছোটদের বগলবন্দি রাখতে বড়রা এমন প্রশংসার ফাঁদ প্রায়ই পাতেন। পার্টি অফিসে প্রতিদিন কতো কাজ, কতো পরিকল্পনা। নেতা��া তোমায় পিতার মতোই স্নেহ করে। গোলটেবিল বৈঠকে জ্বালাময়ী আলোচনায় রক্ত গরম। বাঁধা এলে অস্ত্র নেবে, প্রয়োজনে প্রাণ দেবে। অফিসের গোপন ঘরে নেতারা গলা ভেজাতে ভেজাতে তোমাদের হাতে বুতল দিয়ে বলে- “নে বাবারা, খা... শুধু খেয়াল রাখবি যেন হুষ ঠিক থাকে”। ভেবে দেখেছোকি রঞ্জু, তাদের ছেলেরা এসব নোংরা জল ছোবার কথা কল্পনাও করতে পাড়ে না। মায়েরা পড়ার টেবিলে গরম দুধে গ্লাস ভরে রাখে। কালো কাচ আটা পাজারু গাড়ি থামলো রাস্তাতে। জানালার কাচ খুলে নেতা হাত বাড়িয়ে দিলেন হাজার টাকার দুটো নোট। বললেন- “রঞ্জু... ঝাপিয়ে পর বাবা, মান সম্মানের বেপার”। তুমি ঝাপিয়ে পরলে পেট্রোল-বোমা আর ককটেল হাতে। দুদিন পর তোমার ঠিকানা হলো সরকারি হাসপাতালের নোংড়া বিছানা। হাত দুটু উড়ে গেছে, দু’পায়ের হাটুঅব্দি ব্যান্ডেজ। একবারও ভাবলে না, তিনি তোমার কেমন বাবা! তার সম্পত্তির ভাগ পাবে? তার কালো কাচের পাজারুটা তোমাকে দেবে? দেবে মখমল বিছানো বেডরোমে ঘুমানোর অনুমতি? তার সম্মান রাখবে তুমি! তার ছেলে বিদেশে পড়ে, নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে; সে তো ঝাপিয়ে পড়ে না! তোমার হোষ কবে হবে রঞ্জু! তুমি ছিলে তাদের স্বার্থের হাতিয়ার, কাটা তোলার কাটা। তোমার মা হাসপাতালে গরাগরি দিয়ে কাদে, বাপ কাদে বাড়ান্দায়। সেই নেতারা, তোমার পাতানো বাবারা, একবারও তো দেখতে এলো না! বলি রঞ্জু, তোমাদের হুশ কবে হবে! অনন্য উপহার মেয়েটা হাতের একটা চুড়ি ��ুলে বললো- "এই নাও, রাখো। যেদিন তোমার ঘরে বউ হয়ে যাবো, বাসর রাতে পরিয়ে দিও"। ছেলেটা একটা চাবির রিং মেয়েটাকে দিয়ে বললো- "যত্নে রেখো। আমাদের সংসারের সব চাবি এটাতে গেঁথে আঁচলে ঝুলাবে"। একদিন ছেলেটার আবদার- "তোমার একটা ওড়না আমাকে দেবে? মধ্যরাতে বালিশে জড়াবো, আর তোমার বুকে নাক গুজে রেখেছি ভেবে চুমো খাবো"। আরেকদিন মেয়েটা নাছড়বান্দা- "হলুদ পাঞ্জাবিটা তো আর পরো না। আমাকে না হয় দিয়ে দাও, বুকের উপর রেখে ঘুমাবো"। তাদের পাশাপাশি দাড়িয়ে তোলা অন্তরঙ্গ ছবির একটি ছেলেটা তার মানিব্যাগে রেখে দিলো। ভাবটা এমন, যেন উপার্জিত সকল টাকা বউয়ের কাছেই জমা রাখছে। এদিকে মেয়েটা এমনই অসংখ্য ছবি মোঠোফোনে গোপন ফোল্ডারে সেভ করে নাম রাখলো "সুখি সংসার"। কালের আবর্তে কি হলো কে জানে (হয়তো পরিজনেরা মানবে না, নয় তো অন্য কিছু) মেয়েটা একটা আংটি রেপিং পেপারে মুড়িয়ে ছেলেটার হাতে দিয়ে বললো- "যে তোমার বউ হবে, তাকে দিও। বলো আমি দিয়েছি। আর আমাকে কোনদিন ভুলে যেও না"। ছেলেটা সে আংটির বক্স হাতে নিয়ে ছুঁড়ে মারলো নর্দমায়। তারপর দুজন দুজনকে জরিয়ে ধরে বসে রইলো কতক্ষন। দুজনেরই চোখ বেয়ে নামলো নিরব কান্না। তারপর? তারপর যা হবার তাই হলো। প্রকৃত ভালোবাসা কোনদিন মরে যায় না। মেয়েটার বিয়ে হয়ে গেলো অচেনা জনের সাথে। প্রেমিকের দেওয়া চাবির রিংটাতেই সব চাবি আঁচলে বেধে শুরু করলো সংসার। আর ছেলেটা অন্য মেয়েকে বিয়ে করে হাতে পরিয়ে দিলো প্রেমিকার চুড়িটা। ভিনদেশে বিপর্যস্ত মা আমাকে তার মাতৃসুলভ আচরণে স্নেহের হাতে তুলে খাইয়ে দিতে চাইতো, আমি দেইনি সম্মতি কখনো তার বুড়ো আঙুলের নখটা কেমন মড়া ঝিনুকের ফ্যাকসা খোলসের মতো ছিল বলে। শৈশবে স্কুলে পৌঁছবার রাজপথে যেদিন প্রথম দেখেছিলাম শিয়ালের থেতলানো দেহ টানা তিনরাত ঘুমোতে পারিনি দুঃস্বপ্ন দেখার ভয়ে, পারিনি করতে আহার স্বাভাবিক। চোখের সামনে শুধু উঠতো ভেসে বিচ্ছিন্ন মস্তক একটা মরা শিয়াল যার উসকোখুসকো চামড়ায় জমে আছে রক্তের স্তূপ আর তকতকে নীল মাছি। খুব বেশি খুতখুতে স্বভাব ছিল আমার। বাবা একবার আমার গামছা দিয়ে মুছে ছিলেন তার শস্যক্ষেত থেকে ফিরে আসা ঘর্মাক্ত পিঠ, সেই অপরাধে তার চৌদ্দগুষ্ঠি উদ্ধার করে দিয়েছিলাম মূর্খের অপবাদ দিয়ে। এক বিছানায় ঘুমোতে গিয়ে আমার যে ছোটভাইটা গায়ের উপর তুলে দিতো পা আমি এক চড়ে তার কান থেকে রক্ত ঝরিয়ে বুঝিয়েছিলাম ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে যাওয়ার খেসারত। এখন আমার ঘুম আসে না, ঘুম আসে না রাতে ছাড়পোকা আর মশাদের উৎপাতে। উৎকট গন্ধে বন্ধ দম, শৌচাগারের পাশে বিছানায় নেই গা ঢাকা দেবার মতো টুকরো কাপড়। শীতে জুবুথুবু হয়ে যখন কুকড়ে যাই তোকে বড়ো মনে পড়ে, তোকে বড়ো মনে পড়ে ভাইরে। ঘুমঘোরে একটি পা গায়ের উপরে তুলে দিবি না আমায় একটু আরাম উত্তাপ? বল, তুই করবি না ক্ষমা আমায়...? ওরা যখন আমাকে নিয়ে এসেছিল ভিনদেশে বলেছিল কাজ দেবে পাঁচতারা হোটেলে, নিদেনপক্ষে মুদির দোকান তো জুটবেই কপালে। সূর্য ওঠার আগে শাবল ক্ষন্তা আঁকশি হাতে লেগে যাই কাজে, নগরের নর্দমা শোধন এখন আমার কাজ। যে হাতে ধরিনি গরুর দড়ি গোবর চনার গন্ধ লাগবে বলে সে হাত ধরে পঁচা ইদুরের লেজ, পলিথিনে মোড়া মাছি ভনভন করা মাছের পুরনো আঁশ। পরিত্যক্ত আবর্জনা তুলে নিই পিঠের ঝুলিতে। বড়ো অসহায়, বড়ো অসহায় লাগে মা, মনে হয় মরে যাই; না গেলে কাজে নিতান্ত বুভূক্ষু কাটে দিন, পানিটাও এইদেশে কিনে খেতে হয়, টাকা ছাড়া জোটে না কান চুলকানোর কাঠিটি পর্যন্ত একবার, শুধু একবার, মা তোমার গোবর গুলে গৈঠা বানানো হাতে একমুঠো ভাত খাইয়ে দিয়ে যাও। বাবা, ও বাবা, আমার গায়ের সবচেয়ে সুন্দর যে জামাটি তাতে মোছো তোমার ভাত খেয়ে না ধোয়া হাত। তোমার সফেদ দাড়ির ভাজে তরকারির যে ঝোল লেগে থাকে সেই ময়লাটি জিহ্বায় চেটে তুলে নিতে বড়ো ইচ্ছা জাগে আমার। নিনিতা এবং ফেব্রুয়ারির একুশ আমার মেয়ে নিনিতা, কতোই বা তার বয়স হবে কান্ড দেখে তাক লেগে যাই যে কেউ অবাক চেয়ে রবে। ফেব্রুয়ারির একুশ তারিখ- সেই যে সকাল বেলাতে প্রভাতফেরীর গানের সুরে চায় গলাটা মেলাতে। ড্রেসিংটেবিল সামনে রেখে- শহিদমিনার মনে করে নতমস্তক দাঁড়িয়ে থাকে ফুল ছুঁড়ে দেয় শ্রদ্ধাভরে। বুকভরা তার ভাষাপ্রীতি, সেই কথাটাই জানাতে বর্ণমালার আদল একে চায় দেয়ালে টানাতে। তিনটে বছর হয়নি বয়স, কতোই বা সে বোদ্ধা ভাষাশহিদের স্মৃতির প্রতি এতো যে তার শ্রদ্ধা...! দুটানায় দিনযাপন বাবার ক্যান্সার। গলায় ব্যান্ডেজ, ব্যান্ডেজে রক্ত। এগারোটি থেরাপিতে চুল সাফ। চামড়ায় কালো দাগ। বিদেশে নিয়ে ভালো ডাক্তার দেখালে হতো। টাকা কোথায়... বউকে ডেকে জানতে চাই- “কী করতে পাড়ি?” বউ বলে- “যা ভালো মনেহয় করো।” বাবা যখন যন্ত্রণায় কুকিয়ে উঠে, চিংড়ি মাছের মতো দলা পাকিয়ে যায়, বড়ো মায়া হয়। সিদ্ধান্ত নিলাম বাড়িটা বেচে দেবো। কিন্তু, বউ সন্তান নিয়ে থাকবো কোথায়! এদিকে বাবার মৃত্যু যন্ত্রণা, ওদিকে একমাত্র ছেলেকে অকুল সাগরে ফেলা। চিকিৎসার অভাবে বাবা মরলে লোকে বলবে- “কেমন ছেলে! বিনাচিকিৎসায় বাবাকে মারলো।” বাড়ি ভিটা বেচে দিলে কুৎসা রটবে- “কেমন বাপ! সন্তানের কথা ভাবলো না!” অসুস্থ বাপ বাড়ি বিক্রির গুঞ্জন শুনে বলেছিলো- “আমি আর কদিন! তোরা সুখে থাক বাবা, নাতিটার খেয়াল রাখিস।” কার খেয়াল রাখবো, নাতিটার? নাকি অসুস্থ বাবার? ভাবতে ভাবতে কাচের গ্লাসে বেলের শরবতে চামচ নাড়ছিলাম। হাত পা কাপছে, মুখ ঘামছে। শরবতে তিন ফোটা বিষ মিশিয়ে দিয়েছি আমি। তিব্র বিষ, মুখে নিলে মৃত্যু। মনেপড়লো ছোট বেলায় ম্যালেরিয়া জরে সতেরো দিন ছিলাম হাসপাতালে। চিকিৎসার খরচ যোগাতে বাবা তার প্রিয় মোটরসাইকেলটি বেচে দিয়েছিলো। কই.. একবারও তো বিষমাখা চকলেট খাইয়ে মেরে ফেলার কথা ভাবেনি। হাতের চামচ থেমে গেলো। বাবার বানানো বাড়ি ভিটা বেচেই বাবাকে বাচাবো। পরক্ষনে মনেপরলো ছেলের পড়াশোনা, বউয়ের আবদার, সংসারের নানা খরচ। বেলের শরবতে বিষ। না... বাবার হাতে কিছুতেই বিষের গ্লাস ধরিয়ে দিতে পারবো না। বাবা কতো স্নেহে মানুষ করেছে আমাকে। শহরে রেখে শিক্ষিত করেছে, মোটা অঙ্কের ঘুষে চাকরী জুটিয়েছে, তার হাতে তুলে দেবো বিষের গ্লাস! বিষমিশ্রিত শর��ত পিরিচে ঢেকে বাবার বিছানার পাশে রেখে চলে গেলাম দুর। যেন কিছুই জানি না, জানতেও চাই না। যেন বাড়ি থেকে পালাতে পারলেই বাচি, এমনকি পৃথিবী থেকেও... আমার ছেলেটা গিয়েছিলো বাবাকে ঔষধ খাওয়াতে। রুগির পথ্য আপেল কমলা আঙুরের বেশি অংশ নাতিকে সস্নেহে খেতে দিতো বাবা, আজ দিলো শরবত ভরা গ্লাস। নাতি এক চুমুক মুখে নিয়েই মেঝেতে ঢলে পড়লো। তারপর... বাবা বিছানায় যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে, ছেলে মেঝেতে পড়ে আছে নিস্তেজ। কী করবো! হায়... কোন দিকে যাবো আমি...! টাইম ফুল বারান্দার ঝুলন্ত টবে ফুটেছে টাইম ফুল। ঘাসের ডগায় গোলাপ-আকার মেরুন ফুলগুলো সকাল দশটায় ফুটে, চুপিসারে চুপসে দুপুরের প্রথম ভাগেই। এই ফুল আমাদের উঠোনে, ভিটের পাশে যেখানে টিনের চালের পানি ঝরে, সেখানে ফুটতো অনেক। বাবা, তখন সাইকেল হাতে দাড়াতে আঙিনায়। ক্রিংক্রিং বেল বাজিয়ে বলতে- ‘দেড়ি হয়ে গেলো, কৈ-রে..! আয় তারাতাড়ি’। আমি বইপত্র গোছানোতে ব্যাস্ত, আর মা আমার চুলে বাধছেন ঝুটি চিরুনী চালিয়ে- তারপর দুটো ক্লিপ। বাবা তুমি প্রাইমারী মাস্টার, আমি তোমার স্কুলে ছাত্রী চতুর্থ শ্রেনীর। উঠোনের কোন থেকে দুটো ফুল ছিড়ে কানে গুজে ছুটলাম, সাইকেলে উঠলাম। তখন মায়ের গলা- ‘গ্লাসভরা দুধ, খেয়ে তো গেলি না ?’ আমাদের ছাই রঙা গাভীটা দিতো দুধ এক হাড়ি, আর তার বাছুর কে রাখতো পারিপাটি জিহ্বায় চেটে। আহা কী মাতৃত্ব ! মায়েদের কতো মায়া ! যেদিন আমার বিয়ে ঠিক, সবাই খুশি, বিদেশে চাকুরে ছেলে,অঢেল টাকা। মা,তুমি চুপচাপ ছিলে কেনো বলতো...? মেয়ে মানুষের জাত, তাই বুঝি যথার্থ বুঝে ছিলে মেয়েদের মনস্তত্ব। টাইম ফুল সময় ধরে ফুটে,সময় ধরেই ঝরে । আমার যৌবন, মাতৃত্ব, সংসার...! সময় গেলে তো আর হবে না সাধন। তোমাদের মেয়ের জামাই বিয়ের প্রথম মাসে গেলো ভিনদেশে। তিনটি বছর পার, তবু দেশে ফিরবার নাম নেই, সে দেশের গ্রীনকার্ড পেয়ে তবেই ফিরবে, জানি না লাগবে কতো দিন। তুমি তো জানো না মা, জানালার গ্রীল ধরে দাড়িয়ে দুরের আকাশ দেখি। দেখি উড়ে যাওয়া মেঘ, পাখি আর বিমান। বড়ো একা একা লাগে, মানুষের সান্নিধ্যের অভাব কি যে যন্ত্রনার, কী করে বুঝাই...! আমি যেন পৃথিবীর বিলুপ্তপ্রায় সেই প্রানী, বেঁচে আছি একটি মাত্র - একাকী। খুব জাগে সাধ,ফিরে যাই শৈশবে। বাবার সাইকেলে ক্রিংক্রিং। তোমার স্নেহে ঝুটিবাধা চুল, কানে গুজা টাইম ফুল। সোনার চুড়ি, হিড়েকুচি নেকলেস, বিদেশি প্রসাধন যেন আমার হাতের শিকল- যেন আমাকে লোহার খাচায় যাপটে ধরে,অজগর হয়ে খেতে চায় গিলে। এমন জীবন আমি চাইনি বাবা,এমন জীবন আমি চাইনি তো মা, এমন জীবন আমি চাই না ইশ্বর। চাকরী সমাচার চাকরী চাই। পিয়ন হবার জন্য পনেরো লাখ। ঘুষে হোক, তবু সরকারি চাকরী। একবার জুটে গেলে ফাঁকিতে ঝাপিতে জীবন পার। আমি জানি, সরকারি চাকরী মানে একজন স্ত্রীর একটাই স্বামী। মাস ফুরালে বেতন, সঙ্গম শেষে যেমন আদর আদর আর আদর। আমি জানি, বেসরকারি চাকরী মানে একজন বেশ্যার অনেকগুলো নাগর; রাতভর বলাৎকারের পর গায়ে মুখে ছুড়ে মারবে কয়টি টাকার নোট। আমি জানি, আত্মকর্মসংস্থান মানে ধর্ণাঢ্য সমাজপতির আদুরে কন্যা। যাকে বাটে ফেলতে লোকেরা তেল মেখে দাড়করিয়ে রেখেছে গোপনাঙ্গ; নিস্ফল আশায়। “কী করো তুমি? সফ্টওয়ার বিজনেস! ওহ... তুমি বুঝি চাকরী পাওনি?” “কী পেশা তোমার? ফ্রিলেন্স ওয়ার্ক! একটা চাকরী জুটিয়ে নিলে ভালো হতো।” “তুমি নাকি সিনেমা বানাও? তোমার নাকি গরু মোটা-তাজাকরণ প্রজেক্ট? হাস-মুরগির খামার? এসব ফেলে চাকরী খোঁজো বেটা। না হলে কেউ মেয়ে দেবে না।” -এই আমাদের সমাজ। বনরাজ সিংহের মুক্তজীবন নয়, এ জাতি পনেরো লাখের বিনিময়ে সোনার শিকল কিনে পোষা কুকুরের মতো গলাতে ঝুলাবে আর অনুগ্রহের আশায় মালিকের মুখে তাকাবে। ধনী বাপের আদুরে কন্যা না হয়ে পুরুষের একমাত্র বউ হওয়াতেই যেন সব আগ্রহ। হায় রে হুজুগে মাতাল জাতি, হায় রে আরামপ্রিয় ফাঁকিবাজ। প্রতীক্ষিতের ফরিয়াদ করিডোরে দাঁড়িয়ে ছিলাম, এমন করে তুমি আসবে ভাবিনি কখনো। তোমার কথা খুব মনে পড়তো। পড়বে না...! আমার পেটে যে তোমার সন্তান। আমি তার মাঝে অনুভবে তোমার স্পর্শ পাই। অনাগত, তবে অচিরেই পৃথিবীর মুখ দেখবে। তোমার খুব জানতে শখ ছিল, উদরগহীনে শিশু কেমনে নড়েচড়ে ওঠে। সে কি হাত পা ছোড়ে এদিক ওদিক, সে কি মাকে মা ডাকতে পারে, সে কি তোমাকে বাবা বাবা ডাকে, কী কৌতূহল তোমার। পেটের মাঝে কান পেতে রইলে আধাঘন্টা, কোন ফল পেলে না। না মা ডাক, না বাবা ডাক, না কোন কান্না-হাসি। আমি শুধু হাসলাম তোমার পাগলামি দেখে আর কুকড়ে গেলাম সুরসুরি পেয়ে। নাভীর উপর চুলের ঘষা, সুরসুরি লাগবে না তো কী...! তুমি কোনদিন বাবা ডাক শুনতে পাবে না; কী দুর্ভাগা তুমি। এমন করে তুমি আসবে ভাবিনি কখনো। সীমান্ত প্রহরীদের ছুটি মেলে না সহজে, তাই আমার মতো স্ত্রী-গণ চিরপ্রতীক্ষার পাত্র। ছুটি নেই বলে হানিমুনটাও করা হয়নি। তুমি বলতে পেনশন পেয়ে তবে যাবে হানিমুনে, সাথে থাকবে নাতি নাতকর। কখনো সখনো ফোনে কথা হলে বলতে তুমি ফোনটা যেন একবার ঠেকাই পেটে, অগ্রীম বাবা ডাক শোনা চাই তোমার; কী পাগলটাই না ছিলে তুমি। করিডোরে দাঁড়িয়ে ছিলাম, এমন করে তুমি আসবে ভাবিনি কখনো। গাড়ি এসে থেমেছিল রাস্তার শেষ সীমানায়, একটা কফিন নেমে এল ক’জনের কাধে ভর করে। বাংলাদেশের পতাকা মোড়ানো তোমার লাশ। গুলিটা তোমার কোথায় লেগেছিল- ফুসফুসে, কলিজায়, নাকি হৃদপিন্ডে? নিশ্বাস যখন বন্ধ হয়ে এল, অন্ধ হয়ে এল পৃৃথিবীর আলো আমার কথা তোমার কি মনে পড়ছিল, কিংবা আমার উদরপুষ্ট শিশুটির কথা? জলে ডোবা মানুষের মুহূর্তে বিস্মৃতি স্মরণের মতো। তোমার অনাগত সন্তান বাবা ডাকবে কাকে? কে শুনবে তার বাবা বাবা ডাক? পিতৃছায়াহীন বেঁচে থাকা কী যে বেদনার। কোনোদিন আর ভুল হবে না কোনোদিন আর ভুল হবে না, আপনি বলতে ঠোঁটের ডগায় আর তুমি বলা এসে যাবে না। এই কান ধরে বলছি গো, মাথা ছুঁয়ে বলছি- আপনার পথের দিকে আর চেয়ে থাকা হবে না। আর কোনোদিন আমি তাকাবো না আড়চোখে, আপনি যতই পরে আসুন নতুন শাড়ি। কপালের টিপ যদি ভুল করে অস্থানে হয়ে যায় ইশারায় আর আমি দেখাবো না... আপনি বলতে ঠোঁটের ডগায় আর তুমি বলা এসে যাবে না; কোনোদিন আর ভুল হবে না। আপনি যদি আমাকে রেখেই চলে যান চুপিচুপি, চলে যান কবিতা পাঠের আসর ছেড়ে। এই মাটি খেয়ে বলছি গো, কিড়া কেটে বলছি- আর রাগ করে আমি মুখ ফোলাব না... আপনি বলতে ঠোঁটের ডগায় আর তুমি বলা এসে যাবে না; কোনোদিন আর ভুল হবে না। আমি তো কারো টাকাতে কেনা গোলাম নই, নিজেকে দেইনি বেচে অন্যের হাতে। কেন আপনারে ভেবে বৃথা হই উচাটন- এই মন আর কারো মনোমত চলবে না... আপনি বলতে ঠোঁটের ডগায় আর তুমি বলা এসে যাবে না; কোনোদিন আর ভুল হবে না। চোখ তেড়া মহাত্মা গান্ধী করেছিলেন তেরোবছর বয়সে, শেখ মুজিবকেও আঠারোতে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয়। আর রবিঠাকুর...? সে যুগের সবাই কমবেশি মুকুল ধরতে না ধরতেই বয়সী বকুল। দাদারা ভারি কাচের চশমায় পড়তেন সংবাদপত্র। কোথাও ধর্ষণ নেই, শব্দটা অভিধানে ছিল না নাকি...! বউকে কুপিয়ে তিনারা এতটাই ঘেমে যেতেন যে ধর্ষণ করার সুযোগই জুটেনি ঘর্মাক্ত কপালে। গোলাম সারওয়ার, এ যুগের বিচক্ষণ সম্পাদক, অনিচ্ছা সত্ত্বেও লাল কালির শিরোনামে ছাপা হয় একটি মেয়ের শ্লীলতাহরণ তার দৈনিকে প্রায় প্রতিদিন। উনত্রিশে আমাদের লেখাপড়ায় ইতি, ত্রিশে চাকরির সন্ধানে জুতো ক্ষয় তেত্রিশে বিবাহ বন্ধন- এই বিশাল সময়ের কাঁনাচে কদাচিৎ ধর্ষণ অস্বাভাবিক কিছু তো নয়। ভুলে গেলে চলবে না, সে যুগের তিনাদের মতো নাভীর নিচের পশম এ যুগেও তেরো চৌদ্দতেই গজায়। সংবাদপত্র হাতে নিয়ে চায়ের কাপে ঠোঁট ডুবিয়ে সহকর্মীর দিকে চোখ তেড়া করেন সরকারি কাচারির দ্বিতীয় শ্রেণির চাকুরে নিরঞ্জন- “বুঝলেন দিদি আমি কি বলি, বাল্যবিবাহের মূল উৎপাটন করতে গেলে বেড়ে যেতেই পারে ধর্ষণ।” রিকশাতে একদিন রিকশাতে একটা মেয়ে একটা ছেলের কাঁধে মাথা রেখে ছেলেটাকে জড়িয়ে ধরে বসেছিল। আর ছেলেটা মেয়েটার চুল-ওড়া কপালে চুমু খেতে খেতে নরম শরীরে শরীর ঘষছিল। রিকশাটা চলে গেল আমারই চোখের সম্মুখ মাড়িয়ে। মুহূর্তে আমি যেন তলিয়ে গেলাম, পুরাতন স্মৃতির আড়ালে গেলাম হারিয়ে। মনে পড়ে তার মুখ তার চোখ, যাকে আমি প্রাণপণ বেসেছি ভালো- আহা, সেই কবেকার কথা- এমন মধুর দিন আমারও তো ছিল। রিকশাতে একটা মেয়ে একটা ছেলের কাঁধে মাথা রেখ ছেলেটাকে জড়িয়ে ধরে বসেছিল। গোপনে বিপন্ন সোনার পিঞ্জিরা রেখে উড়ে যায় পোষা পাখি সোনার কী দাম আহা রইল তবে ঘরের বধূই যদি গেল চলে পৃথিবী ছেড়ে রুপালি খাটটি না হয় পড়ে থাক নীরবে। মেঘ কেন মিশে যায় গহিন নীলিমায় হাসে না হাসনাহেনা বিপন্ন বাগানে জাল ছেঁড়া মাছ দেখায় লেজের দাপট চলে গেল যে তার লাগি মন কাঁদে গোপনে। সে যদি গেলই চলে একাকী নিস্বর্গে আমার থরোথরো বুকে কে ঘুমাবে খোঁপা খুলে এতই যদি রবে অটুট তার অভিমান- আমার চুরুটের ধুঁয়া প্রজাপতি হবে কার চুলে!! নির্যাতনের মতো স্নেহ মায়ের কিছু আচরণ মারাত্মক পীড়া দিতো আমায়। আমি এর নাম রেখেছিলাম নির্যাতনের মতো স্নেহ। ধরা যাক, বন্ধুবান্ধবে আড্ডা। ফোনে যন্ত্রণার ঝড় তুলে মা জানতে চায়- শরীরটা ভালো কি না? খেয়েছি কি না সসময়ে? বাড়িতে নিজ হাতে খাওয়াতো; আমার মোটেই লাগতো না ভালো। অনার্স পড়ুয়া ছেলে মায়ের হাতে ভাত খা��্ছে- কী লজ্জা! গোসলখানার দরজায় ঠক-ঠক। তোয়ালেতে সাবান মেখে উপস্থিত মা। পিঠে কালি-ময়লার চর, ঘষেমেজে তুলবে যখন, আমি সুরসুরি পেয়ে দলাই-মলাই। হঠাৎ যদি অসুখ বাঁধতো, যেমন সামান্য জ্বর, মা রাতজেগে ছেলের মাথায় ঢালতেন জল। ভেজা কাপড়ে জুড়াতেন কপালের উত্তাপ। তার চোখভরা অশ্রু দেখে রাগে তো আমার দাঁত কটমট। কোথাও যাবার বেলায় মা উঠোন পেরিয়ে রাস্তা অব্দি আসতো। ক্ষণে ক্ষণে বলতো- ‘সাবধানে থাকিস’। আঁচলের গিঁট খুলে হাতে দিতো তুলে খুচরো পয়সা কিছু- পথে পড়বে প্রয়োজন। রিক্সাতে উঠে মায়ের উদ্বেগী মুখটায় তাকাতেই খুব কষ্টে জমতো কান্না চোখের কোণায়। মাঝে মাঝে নিঃশব্দে চলে আসতাম। তার এক বদভ্যাস, যাত্রাকালে স্রষ্টার নামে আমার কপালে দেবে অন্তত তিনটি ফুঁ... এতে নাকি বিপদের ছায়া কাটে, কুগ্রহের কালগ্রাস থেকে বাঁচবো আমি। ওসবে বিন্দুমাত্র ছিলো না বিশ্বাস, তবু একদিন বেজেউঠা ফোন রিসিভ করতেই শশ্বব্যস্ত মায়ের গলা- ‘রিক্সাটা থামা বাবা, তোর মাথায় তো ফুঁ দেওয়া হয়নি’। আবদার রাখতে প্রথম বাসটা মিস, দ্বিতীয়টায় চড়ে বসলাম। বাস ছুটছিল বাতাস কাটা বেগে; আচমকা কড়া ব্রেকের ঝাঁকুনিতে যাত্রিরা থতোমতো। বাইরে ভীর, শহরগামী প্রথম গাড়িটা পড়ে আছে ব্রিজের নিচে, আর প্রায় সব কয় যাত্রীই নিহত। আহা... এতোক্ষণে হয়ে যেতাম ওপারের বাসিন্দা। মায়ের মৃত্যুর পর আজই প্রথম বাড়ি ছেড়ে বেরিয়েছি। এতোবার পিছু তাকালাম, মায়ের মুখটা দেখতে পেলাম না; বড়ো উদ্বিগ্ন চিন্তাশঙ্কুল সেই মুখ কোনদিন দেখা হবে না এই পৃথিবীতে। মা... মা গো... তোমার সন্তানের ওপর থেকে সকল বিপদের ছায়া, কুচক্রির কুনজর কি কেটে গেছে...! একটি বার কেনো আসো না তবে দিতে মঙ্গল ফুঁ...! কেন পিছু ডেকে বলো না- ‘এই নে খুচরো কয়টা টাকা, পথে কিছু কিনে খাস’। ব্যর্থ ডুবুরী চেয়েছিলাম একটি বেগুনী ফুল, তুমি এনে দিলে ঝুলবারান্দায় ঝুলিয়ে রাখার মতো দুটো অর্কিড-চারা নারকেলের খয়েরী মালায়। সকাল বিকাল আমি জল ঢালি খুব যতনে- আর তুমি অফিসে যাবার আগে একবার পাতায় পাতায় বুলিয়ে যাও হাত, ফিরে এসে আবার ধরো। যেন পিতা তার চঞ্চল কন্যার ববকাট চুলে স্নেহের আঙুল চালায়। যেদিন ফুটলো প্রথম ফুল তুমিই খুশি হলে সবচেয়ে বেশি। আমাকে একেবারে কোলবালিশের মতো আড়কোলে তোলে কপালে খেলে খপাৎ খপাৎ চুমু, আর বার বার তাকালে হালকা হাওয়ায় কাঁপা প্রজাপতির পাখার মতো ছিটছিট অর্কিড পাপড়িগুলোর দিকে। আমি তো জানি কতো যে ভালো তুমি বাসো আমায়। তাই আমার একাকীত্ব কাটিয়ে দিতে দিলে উপহার খরগোশ একজোড়া, একটি ধবধবে সাদা অন্যটি সাদায় কালোয় মিশ্রিত যাদের লালন করি আমি আপন শিশুর মতো গালে গাল মিশিয়ে- যেন আমিই তাদের মা। মুখে তুলে দেই কতো চাকচাক করে কাটা গাজরের ফালি, বাধাকপির কচি সবুজ পাতা। আমার কোন আবদার রাখোনি অপূর্ণ তুমি। আমিই কেবল পারিনি... মনে কি পড়ে... চেয়েছিলাম পদ্মার ইলিশ-সর্ষে ভাজি? তুমি আমাকেই নিয়ে গেলে পদ্মায় জোয়ারের বেলা জেলেদের নৌকায় উঠে নিজের হাতে ধরলে ইলিশ। যে ইলিশ ভেজেছি পহেলা বৈশাখে উত্তপ্ত উনুনের পাশে দাঁড়িয়ে আর আঁচলে মুছেছি গলার ভাঁজে জমা রূপালি মালার মতো ঘাম। তখন তুমি কোমর জড়িয়ে ধরে কামড়ে দিলে কান, আর হাতের আঙুলে এক চিমটি সর্ষে ইলিশ মুখে নিয়ে বললে- ‘বড়ো মধুর হয়েছে আমার রাধুনীর রান্না।’-মনে কি পড়ে? মনে কি পড়ে? অথচ আমি বারোটি বছর ধরে তোমাকে প্রতিদান কিছু দেবো বলে কতো যে চাই- যেমন একটি সন্তান, তবু পারি না দিতে। হাজার হাজার মাইল সাঁতরে এসে আমি যেন অতলান্তিক সমুদ্রপুরী থেকে শূন্য হাতে উঠে আসা ব্যর্থ ডুবুরী কোন। তুমি যখন আমাকে খুব খুব খুব বেশি ভালোবাসো... ব্যর্থতার গ্লানী আর অপারগ অপরাধের ভার বুকে নিয়ে গলায় কলস বেধে ডুবে মরতে ইচ্ছে করে আমার। অফিসে যাবার বেলায় আমি আর বাবা হাতে পায়ে লোশন মালিশকালে পড়লো মনে বাবা তো এ বস্তু মাখেনি কখনো গায়ে...! নাকে মুখে ছাকা ছাকা সরিষার তেল মেখে বলতেন- ‘খাঁটি জিনিস, বড়ো উপকারী, চোখে ধরলে আরও ভালো’ সে যুগের মানুষ ছিলেন কি না এ যুগের কি বুঝবেন...! অথচ লোশন তখনো দোকানে পাওয়া যেতো ঠিকই। জেল মাখা চুলগুলো পরিপাটি আঁচড়াতে গিয়ে দেখি আগেকার আয়নাটা ছিলো না তো এতো বড় আর এতো মসৃণ...! ছিলো একফালি ভাঙা কাঁচ, তাতেও আবার প্রতিবিম্ব বিকৃত। বাবার মাথায় শুষ্ক চুল, চিরুণীর দাঁত কটা বিলীন, নতুন যোগানোর নেই আয়োজন- টানাপোড়নে এমনি সাদামাটা বেঁচে থাকা। রিক্সাতে উঠে যাই অনায়াসে, শুধাই না ভাড়া বাবা ঠিকই চড়তেন দাম দড় কষে, যেন যাত্রা শেষে ধূর্ত চালক না পারে খসাতে একটি টাকাও বেশি। কিংবা রাজ্যের পথ পায়ে হেঁটেই দিতেন পাড়ি, তবু পকেটের টাকা পকেটেই থেকে যাক- এই যেন পণ। সেন্টের ঘ্রাণমাখা জামা, সিগারেট ফুকে ফুকে চলি পথের ভিখারি যেই চায় দুটো পয়সা হাত বাড়িয়ে অমনি দিলাম রাম ধমক, অকথ্য গালাজ তো আছেই। বাবা তাকে ফেরাতেন খালি হাতে তবু ধমকটা দিতেন না; আর তার কাছে সিগারেট ফুকা মানে অকাতরে অর্থ ওড়ানো। অল্প আয়ের লোক- বাউন্ডুলে তোড়জোড় তাকে কি মানায়...? অফিসে ঢুকেই দেখি বেশুমার মক্কেল প্রতীক্ষা গুণে, চেয়ার টেনে বসতেই টেবিলের আবডালে চলে আসে টাকা। ঘুষ বললে মন্দ শোনায়, বাঁ হাতের কারসাজি ডাকি আমি এ-কে। এমন সুপটুতা ছিলো দুষ্কর বাবার পক্ষে অতি ভীতু ব্যক্তির দ্বারা হবে কেন এ তো নির্ভীক সওদা...! হয়তো তিনি বলতেন- ‘এ কাজ করার আগে মরণ দিও প্রভু, তবু ঘুষ নয়।’ বাবাটার লাগি বড়ো মায়া হয়, জীবনটা তার কোনদিন উপভোগ করা হলো না। সে যুগের মানুষ ছিলেন কি না এ যুগের কি বুঝবেন...! প্রথম পরিচয় সেলিম ভাই, আপনার জন্য আমার ধাঁধাঁ, আচ্ছা বলুন তো... আমাদের প্রথম দেখাটা কখন কোথায় হয়েছিল? মুখ কাচুমাচু করার কিছু নেই, জবাব আমিই বলি- এগারোতম ছড়া উৎসবে আপনার হাতে মাউথপিস, আমার হাতে একটা চিক্কন কাগজ, হিজিবিজি কাটাকাটি সমেত কী সব লিখা। আপনার মাথার গেরুয়া হ্যাটটা বাঁ হাতে ঠিক করে নিয়ে বললেন,- ‘এবার স্বরচিত কবিতা পাঠ করতে আসছে...’ হ্যাঁ, প্রথম একবার আটকে গিয়েছিলেন, তারপর ভুলের মতোই শুনালেন সবাইকে আমার নাম। আমি তখনও অর্বাচীন এক আঁতেল- কবিতাপত্র হাতে ঠকঠক কাঁপছি এবং ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কাঁশি��ে সাফ করছি গলা। সামনে অজস্র শ্রোতা, আমি কবিতা পাঠ শুরু করলাম। কেউ কান চুলকায়, কেউ হাত চুলকায়, কেউ মাথার চুলে আঙুল বোলাতে বোলাতে পায়ের জুতা ঠিক করে। আবার কেউ কেউ ভ্রুয়ের পাশে রাজ্যের যন্ত্রণা নিয়ে কুচকানো কপালে তাকিয়ে থাকে আমার দিকে, তাকিয়ে থাকতে হবে- তাই হয়তো তাকিয়ে থাকা। মনে মনে ভাবি, কবিতা নির্বাচনে ভুল করলাম না তো...! প্রেমের কবিতা হলে ভালো হতো, কিংবা হাসির ছড়া। চোখ বন্ধ করে কাঠের পুতুলের মতো অনড় বসে শুনতো সবাই এক্কেবারে প্রত্নযুগের কালো পাথরের মূর্তি যেমন; তারপর হাসতে হাসতে পড়তো গড়িয়ে এদিক ওদিক। আমার যে প্রেমিকা, আমি যার বাড়ির পথে যাবার বেলায় খোলা জানালায় কমসে কম তিনবার চোখ রাখি, তাকে উদ্দেশ্য করে দাঁত কটমটিয়ে বললাম-‘অন্তত তুমি তোমার ওড়না ধরে টানাটানি বন্ধ করো, অনুরোধ করি, আমার প্রতিভাকে মাঠে মরতে দিও না। আমার অপমান তো তোমারও অপমান।’ একজোড়া জালালী কবুতর হাততালি দেওয়ার মতো শব্দে উড়ে গেল হলরুমের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে, কারও দৃষ্টি গেলো না সে দিকে। একটা শিশু দেয়ালের লেজকাটা টিকটিকিটাকে তাড়া করতে গিয়ে ছুঁড়ে মারলো হাতের বাঁশি, সেদিকে দিলো না মনোযোগ কেউ। ছোট বেলায় চোখে কাঁচপোকা পরে যেমন জল ঝরছিল তেমনি টলমল করে উঠলো আমার চোখ। সবার দৃষ্টি এবার আমার দিকে, শুধুই আমার দিকে... আমি সেলাই কলের নিরবিচ্ছিন্ন ঘূর্ণয়মান চাকার মতো মাইক ফাটিয়ে অনর্গল বলে গেলাম- ‘হে মাটি... হে স্বদেশ... হে মায়ের অশ্রুসিক্ত পিতার কবর, ওগো পূর্বপুরুষের গলিত লাশে উর্বর পুণ্যভূমি। যতক্ষণ হৃৎপিণ্ডে রক্ত আছে, যতক্ষণ ঘাড়ের উপর মাথাটি দণ্ডায়মান কসম তোমার- যে লুটেরা লুটে নেয় তোমার সুখ, যে কুলাঙ্গার চেটে খায় তোমর সম্ভ্রম, তোমার দুর্দিনে যে দুর্বৃত্ত বগল বাজিয়ে হাসে তোষামোদি হাসি বিরুদ্ধে তার রুখে দাঁড়াতে গিয়ে মরণ যদিও আসে- লড়ে যাবো, লড়ে যাবো, লড়ে যাবো।’ সেলিম ভাই, সেদিনই আপনার সাথে আমার প্রথম পরিচয়। পরিণতি মা। যখন সন্তানের মুখে স্তন গুজার কথা, দোলনায় দোল তুলে ঘুমপাড়ানিয়া গান শোনাবার কথা দাসির হাতে দুধের বোতল দিয়ে মজেছো টিভি নাটকে, সিনেমায়। বাবা। যখন সন্তান নিয়ে দৌড়-ঝাপ, লুকোচুরি, ফুটবল এটা ওটা খেলাচ্ছলে কোলে তুলে চুমু বিলাবার কথা পোষা কুকুরের শিকল ধরে ঘুরছো পার্কে-ময়দানে, ভালোবেসে পিঠের লোমে বুলাচ্ছো হাত। শিশুটা কাঁদছে একাকিত্বের যন্ত্রণায়, জানালার গ্রীলে ঠুকছে কপাল। অথচ তোমরা বন্ধুবান্ধব আর প্রিয় খুনসুটিতে কাটাচ্ছো দিন-রাত, ছেলেকে রেখে অবহেলায়। তোমাদের সন্তান ঘরের দেয়ালে একটি দুটি অক্ষর নচেৎ ফুল-পাতা-চিত্র এঁকে দাড়িয়েছে কুড়াতে প্রশংসা। ভ্রুয়ের পাশে যন্ত্রণা এনে ভেবেছো- ধুর ছাই... কেন এই জঞ্জাল পোষা! ঢের ভালো নিঃসন্তান জীবনটা উপভোগ। অথবা তাকে শিশু-সেবাকেন্দ্রে দেবে নির্বাসন আগামী মাসেই। হুম... তোমাদেরকেই বলছি... শোন হে জননী এবং জনক তোমাদের দুর্দিনে, ধরো... প্রবীণ বয়সে হাতের লাঠি অথবা চশমা যদি হাত ফসকে নাক উপচে পড়ে যায়, আসবে না কেউ ছুটে পুনরায় তুলে দিতে। ছেলেটা পাশের ঘরে বউ নিয়ে মাতবে হাসি-তামাসায়! তোমরা একা অন্ধকারে শক্তিহীন সন্ধ্যাবাতি জ্বালাবার। পিঞ্জিরায় কাঠবিড়ালী, তাকে সময় সময় খাবার দিতে ভুলবে না পুত্রবধু। অথচ শ্বশুড়-শ্বাশুড়ীকে অষুধ সেবনে প্রায়ই হবে ভুল। আর যদি বড়ো বেশি বোঝা হয়ে ওঠো তোমাদের আশ্রয় হবে বৃদ্ধাশ্রম, শুধু বৃদ্ধাশ্রম। হরতালে ঠক্ ঠক্ ঠক্ ঠক্-ঠক্-ঠক্- ‘আপনার ঘর করবো তালাশ, আছে নাকি কোন আগ্নেয়াস্ত্র আলমারির আবডালে?’ ঠক-ঠক-ঠক- ‘দরজা খুলুন, আমরা পুলিশ, সরকারি লোক।’ পুলিশের জীপ নিঃশব্দে ছুটছে- আলিগলি, রাজপথ, দোকান-পাট, পার্ক, রেস্তোরাঁ ও বস্তি পাড়ায়। এক রাতে জীপ থামলো আমাদের ছাত্রাবাসে। পাশের ঘরে দরজায় ঠক্-ঠক্-ঠক্, ঠক্-ঠক্-ঠক ্। ভেতর থেকে আওয়াজ- ‘কে রে শালা, মাঝরাতে এলি ঘুম ভাঙতে...?’ পুনরায় একটু জোরে- ঠক্-ঠক্-ঠক্ । দরজা খুলে দাঁড়ালো গৌতম। হাত পা কাঁপছে, মুখ শব্দহীন, সে কিংকর্তব্যবিমূঢ়। তিনজন পুলিশ। একজন বললো- ‘শালাকে জীপে তোল, বড় বদমাশ।’ ‘স্যার, আমি জামাত-শিবির নই, জাত হিন্দু।’ ‘কী প্রমাণ তার, প্যান্ট খোল প্যান্ট খোল ব্যাটা- চেক করি ঠিকঠাক্।’ ভয়ে গৌতমের পেচ্ছাব ছুটবার অবস্থা, অণ্ডকোষ চিমসে তলপেটে মিশেছে। ঘর তালাশ শেষে মিললো রাধাকৃষ্ণের ছবি, দেবী দূর্গার মূর্তি। বেঁচে গেলো সে। এবার রাজুদের দরজায় বন্দুকের বাটের সজোরে আঘাত। দরজা খুলতে বাধ্য ভেতরের দু’জন। নেই জামাতি-শিবিরি প্রমাণ, ঘরে নেই ককটেল-পাটকেল তবু হাতকড়া দুজনের হাতে। দরজা খুলতে দেরিটাই অপরাধ...! জানালায় চুপিচুপি দাঁড়িয়ে দেখছি সব। আমি নিরাপদ। বাইরে লাগিয়ে তালা গ্রিলভাঙা জানালাটা টপকে ঘরেতে ঘুমাই। পুলিশ ভাববে নেই কেউ। বাইরে ঝুলছে তালা, তাই দরজায় বাজবে না ঠক্-ঠক্-ঠক্। ঘটনা কী ঘটছে, কৌতুহলে উঁকি দিলো রমজান। দুইজন পুলিশ ঢুকলো তার কামড়ায়। টেবিলে কুরান, নবীজির জীবনী, অজস্র ইসলামী বই আর টুপি। বিছানায় ভাঁজ করা জায়নামাজ। ‘শালা নিশ্চিত শিবির, দাঁড়ি দেখলেই যায় বুঝা’- একটা পুলিশ বললো এবং জাপটে ধরলো তাকে। ছেলেটা কেঁদেকেটে বলেছিলো- ‘আমি জামাত-শিবির নই, নেই নিষিদ্ধ দলের সাথে যোগাযোগ। পাঁচওয়াক্ত নামাজ পড়ি শুধু।’ আরও দুটো রুম সার্চ। একজন আটক। তার মুঠোফোন ঘেটেঘুটে পুলিশ পেয়েছে উলঙ্গ নারীর ছবি নগ্ন ভিডিও। বেকসুর খালাস। এমন ভিডিও যারা দেখে তারা জামাত-শিবির হতে পারে না। একজন ছাড়া পেলো পকেটে প্যাকেট ভরা সিগারেট ছিল বলে। ইসলামে ধুমপান নিষেধ। অতএব তিনি হেফাজতে ইসলাম নন, পুলিশের জীপ তাকে করবে না বহন । ঠক্-ঠক্-ঠক্... কাল হরতাল। তাই এই ধর-পাকড়, যাতে শান্ত থাকে দেশ; ককটেল-পাটকেল না ফাটে পথে। অপার্থিব ফলে ফরমালিন, মাছের কানকো পঁচা, চালে কাঙ্কর। দোকানিকে বৃথা বকে-ঝকে মুখে তুলছো ফেনা, বুঝোই না তোমার কৃতকর্মই তোমায় ঠকে যেতে বাধ্য করেছে। সুদখোর, মিথ্যাবাদী, ফন্দিবাজ, আমানতের খিয়ানতকারীদের বিধাতা করেন বঞ্চিত সমস্ত নিয়ামত থেকে। ব্যাংকে অসৎ টাকা ক্রমানুপাতিক বাড়ছে, যেন বন্য শুকর মাস মাস সন্তান প্রসবরত। অফিসের ফাইল আটকিয়ে খোঁজ বখশিশ, শিকার সন্ধানী ধূর্ত শিয়াল; তুমি ঘুষখোর নও...! বন্ধুরা টাকা ধার নিলে মহামান্য আবু বকর উঁচু গলায় বাগারম্বর তো নয়, করতেন অপরাধির মতন বিনম্র আচরণ। অতিরিক্ত আদায় দূরে থাক, বৃষ্টির রাতেও ঋণগ্রস্থ বন্ধুর বারান্দায় নিতেন না আশ্রয়, যদি সুদ বিবেচ্য হয়। প্রতিবেশি যথাসময় ঋণ শুধতে না পারায় তুমি পথে পেয়ে করো অপদস্ত। তিরিক্ষি মেজাজ জুড়াতে সে করে আপ্যায়ন । চায়ের কাপে বিস্কুট চুবিয়ে পা নাচাও আয়েশী ভঙ্গিমায়; লজ্জা করে না...! খলিফা ওমর কাচারিতে ব্যস্ত। এক রাতে এলো অতিথি এক। নিভিয়ে দোয়াত আঁধারে বসেই ওমর কথা বলছিলেন আগন্তুুকের সাথে। ব্যক্তিগত ব্যাপারে সরকারি তেল ক্ষয় সমীচীন নয়, কী সাংঘাতিক সৎ মানসিকতা...! তুমি স্কুলগামী সন্তানকে ঘরে ফেরাতে, শ্বাশুড়ীকে হাসপাতাল নিতে পাঠিয়ে দাও অফিসের চৌচাকা, যার কাজ শুধু তোমাকে বহন। অফিসের টেলিফোনে করো পারিবারিক বাৎচিত, বুঝোই না এ যে অন্যায়...! তোমার সন্তান নষ্টের দখলে যাবে। অতি আধুনিক কন্যা অশালীন পোশাকে বন্ধুর হাত ধরে পালাবে, ফিরবে না কোনদিন। ছেলেটা মদের বোতল হাতে আসবে তেড়ে বুনো মহিষের মতো তোমাকেই গুতিয়ে মারতে। সুন্দরী বধূ পরকিয়ায় মেতে নাইট ক্লাবে কাটিয়ে আসবে রাত। তোমার শ্রমে ঘামে গড়া অট্টালিকায় ধরবে ফাটল। যখন মৃত্যুদূত দাঁড়াবে দুয়ারে, এই ধন, এইসব আত্মীয়-স্বজন মুহুর্তে ফেরাবে মুখ। মৃত মানুষের শূন্য মুষ্ঠিবদ্ধ হাতে কেউ দেয় না গুঁজে পার্থিব সম্পদ। বউ বন্দনা পৃথিবীতে বিদুষী কিছু নারী কখনো কখনো পারে বুঝে নিতে মুহূর্তে পড়ে নিতে, স্মিতহেসে জয় করে নিতে পুরুষের মন ঘরেই আমার আছে তেমনি একজন, ভুবন মোহন। প্রচন্ড বৃষ্টিতে মধ্যদুপুর, চুলোর ওপর শর্ষে-ইলিশ লক্ষ্মী ঘরণী আমার ঘেমে ঘেমে রাঁধছো। দেখেই হারাই দিশা পৃথিবীর সমস্ত প্রশান্তি যেন আমারই ঘরে বেধেছে বাসা, ভালোবাসা। রিকশাতে যেতে যেতে হঠাৎ যখন মসজিদে পড়ে আসরের আজান তাড়াহুড়ো করে তুমি তুলো মাথায় কাপড়, ঘোমটাতে ঢাকো মুখ তখন আমার অন্তরজুড়ে স্বর্গীয় সুখ, অজানা সে সুখ। মধ্যরাতের ঘরে সুবাসী সুরভী গায়ে মেখে, টানা চোখে কাজল এঁকে যখন দাঁড়াও শরীর ঘেঁষে। মনে হয় সমস্ত আলো নিভাই ফুৎকারে শুধু কাচের চুড়ি বাজুক নদীর স্রোতের সুরে, নিস্তব্ধ অন্ধকারে। সেই যে পয়লা বৈশাখে দিয়েছিলে কিনে পাঞ্জাবি আকারে একটু বড় আমি কি ঘুরিনি বলো তোমার সাথে সেই ঢিলেঢালা পাঞ্জাবি পরে আঙুলে আঙুল জড়িয়ে হাসিমুখে সারা দিন ধরে, মনে কি পড়ে? ঈদের নামাজ শেষে ফিরেছি ঘরে, তুমি পায়ে ছুঁয়ে করলে সালাম মনে হলো সমস্ত সৌন্দর্য সমস্ত পবিত্রতা রয়েছে তোমাকে ঘিরে যেন স্বর্গীয় অপ্সরা এলো পথ ভুলে আমার ঘরে, যাবে না স্বর্গে ফিরে। আমার কোলে যেদিন দেবে তুলে প্রথম সন্তান, সেদিন মনে হবে পৃথিবী সুন্দর, জীবন সুন্দর, এর থেকে ��েশি সুন্দর ভালোবাসা জাগবে মনে সহ��্র শতাব্দী বাঁচার আশা, অপূর্ণ প্রত্যাশা। এইখানে এইখানে যদি বনের ভেতর ঢুকে যাও তোমাকে ভয় দেখাতে আসবে লকলকে জিহ্বধারী সবুজরঙা সাপ। তোমাকে ভয় দেখাতে আসবে উলুল ঝুলুল খাটাশ, খেকশিয়াল। এইখানে যদি তুমি গাছের সাথে সেঁটে থাকতে চাও- তোমার পা কামড়ে দেবে লাল পিঁপড়ে, তোমাকে আজন্ম বৃক্ষ ভেবে ঘারের উপর ডানা ঝাঁপটাবে হলুদ পালকধারী একটা অচেনা পাখি। এইখানে ঝরা শুকনো পাতার মর্মর ছাড়া কোন কোলাহল নেই, ফুলের সৌন্দর্য ছাড়া কোন নান্দনিকতা নেই- নেই পাখির কিচির মিচির ব্যাতিরেকে কোন গান। এইখানে মানুষ নিতান্ত সহজ সরল, তোমাকে ডেকে এনে চিরচেনা স্বজনের মতো দুবেলা খাইয়ে দেবে যথেষ্ট সমাদর দেখিয়ে। তোমার মুখে তুলে দেবে মগডালের সিঁদুরে পাকা আম, কাজলী গাভীর একবাটি দুধ। এইখানে শ্বেতপাথরে ঘাটবাঁধা পুকুরের অতলান্তিকে ডিগবাজি খেলে চিতল বোয়াল, শামুক কাছিম। শিশুরা টলটলে জলে লাফিয়ে পড়ে মুখে জল নিয়ে আকাশের দিকে ছিটিয়ে ছিটিয়ে স্নান সারে। এইখানে নেই রক্তচোষা পিশাচের দল, নেই গ্রেনেড বোমা। নেই আড়ালে লুকিয়ে থেকে বুকে ছুড়ি মারার মতো অসৎ হাত। এখানে তো নেই কালো ধোঁয়ার আবডালে মতলব আটা মানবরূপী দানবের মুখ। কারও হাতে ঘড়ি নেই- তাই নেই সময়ের তাড়া। এইখানে মানুষের সাদামাটা পান খাওয়া মুখে নির্ঝঞ্ঝাট হাসি লেগে থাকে সর্বক্ষণ। ওরা গাছের পাতার রং বদল দেখে- নিজেকে বদলাতে শেখে। ওরা কাজল দীঘির কাকচক্ষু জলে বলিহাঁসের ডুব সাঁতার দেখে নিজেকে করে কিছুটা রহস্যময়। এইখানে ওরা ঘুঘুপাখির খুনসুটি দেখে আপন বধূর সাথে প্রণয়মাতাল হয়। ওরা ঠকতে জানে- ঠকাতে জানে না। কাঁদতে জানে, অথচ কাউকে কখনো কাঁদিয়ে দেখেনি। এইখানে ওরা মুখ ফুটে কোনদিন বলেনি ‘ভালবাসি’ অথচ কতো গভীর-গভীর-গভীর ভালবাসা দিয়ে যায় একে অন্যকে। মেয়েলী আবদার আমার জন্য কেউ পাগল হোক, তা চাই না শুধু আমাকে বুঝোক। চোখের কোনে বাসি কাজল লেপটে আছে, এ দৃশ্য যেন তার দৃষ্টিগোচর হয়। আমি কাদলে তার কাধটা বাড়িয়ে দিক, আর হাসলে সে তাকাক বিষ্ময় ভরা চোখে। প্রভাতে বিছানা ত্যাগের বেলা আমার আচল ধরে বলুক- “আরেকটু ঘুমাও, আসেনি এখনো রোদ জানালার কাঁচে”। গোসল শেষে ভেজা চুলে আমাকে দেখে কেউ তাকিয়ে থাকুক। অফিসে যাবার আগে তারাহুরু করে তৈরি চিনি দিতে ভুল করা চায়ে চুমুক দিয়ে বলুক- “বেশ হয়েছে”। মন খারাপের দিনে আমাকে নিয়ে ঘুরতে বেরুক। পথের দোকান থেকে দুটো ফুল কিনে বলুক- “আজ সারাদিন শুধু তোমারই আরাধনা”। আমি চাই না ওঠতে বসতে কেউ বলুক- “ভালোবাসি ভালোবাসি”। শুধু চাই যখন রাগ করে চলে যাই, সে আমাকে যেতে না দিক। ভালোবাসার নিবির সুখে মরে যেতে যেতে মধ্যরাতের বিছানায় আদরমাখা শিৎকারে তার নাম ধরে ডাকতে চাই। আর চাই সাজবো বলে আয়নাতে দাড়াই যখন, পেছন থেকে জরিয়ে কাধের চুলগুলো সরিয়ে কানেকানে কেউ তো বলুক- “তোমাকে ছাড়া এই পৃথিবী বড়ো একলা লাগে”। শেলটার ভ্রুম ভ্রুরুম ভ্রুরুরুরুম... একটা মোটর বাইক চষে বেড়াচ্ছে কলেজ ক্যাম্পাসের এপাশ ওপাশ। ক্লাশ ফাকি মেরে কাঠাল তলায় আড্ডাবাজিতে মাতা ছেলেগুলো, একলা আসা মেয়ে দেখলেই সিগারেট-পোরা ঠোটে শিশ বাজানো ছেলেগুলো উত্তেজনার জোয়ারে ভাসছে। ক্ষনেক্ষনে দুজন তিনজন চড়ে বসে বাইকটায়, আকাশ বাতাস কেপে ওঠে বিভৎস শব্দে। আমি ভাবি মালিক কে! সবাই দেখি মালিকশোলভ গাম্ভীর্যে চালায়! একজনকে ডেকে জানতে চাই- "মেটর সাইকেল পেলে কোথায়?" ছেলেটা শ্রদ্ধায় ঝড়কবলিতো সুপারি গাছের মতো মাথা ঝুকিয়ে বললো- "জলিল দারোগা দিয়েছে স্যার... আপন ভাইয়ের সমান স্নেহ করে আমাদের।" দারোগা সাহেবকে পথে পেলে তিনি জানালেন- "বর্ডারক্রস চোরাই মাল, থানায় পরে নষ্ঠ হচ্ছিলো। ছেলেদের দিয়ে দিলাম, চড়ে ফিরে শখ মেটাক।" আমি বলি- "পড়াশোনা তো গোল্লায়, ছেলেগুলো বিপথে যাবে, সারাক্ষন শুধু ভ্রুম ভ্রুরুম ভ্রুরুরুরুম..." "কি যে বলেন মাস্টার! এই বয়সে জীবনটা উপভোগ না করলে আর কখন! ওরা সরকারের ডান হাত, আগামী দিনের নেতা। যা করে তাতেই দেশের মঙ্গল।" বুঝলাম কথা বাড়ানো বৃথা। কদিন যেতেই শুনি বাইক চালকেরা দোকানে দোকানে চাঁদা তুলে, চাঁদা তুলে চলন্ত গাড়ি থেকে রাস্তায়। উত্তলিত টাকার একভাগ নিজেদের একভাগ দারোগার একভাগ যায় উপরমহলে। রাতে দারোগা এসে তাদের সঙ্গে বসে চা-বিস্কুটে, ফিসফাস আলাপনে, অট্টহাসিতে জমান আড্ডা। ছেলেগুলো মদের বোতল হাতে রাস্তা মাতায়, কেউ কিছু বলে না, মেয়েদের ওড়না ধরে টানে, কেউ প্রতিবাদে দাড়ায় না। থানাটি তাদের বৈঠকঘর, দারোগা তাদের তাঁসের সঙ্গী, তারাই আইনপ্রনেতা। তারপর এলো নির্বাচন। ভোট চাওয়া চাওয়ি, মিছিল মিটিং। সরকার বদল। নতুন দল এলো ক্ষমতায়। ভাবলাম এইবার থামবে। কিন্তু একি! এবার দুটো মোটরবাইক, দিগুন শব্দ, তিনগুন হইহুল্লুর, চারগুন চাদাবাজী। পরিচিত দোকানিরা নালিশ জানায়- "ওরা তে আপনরই ছাত্র স্যার, আপনি বললে থামবে। কোমরে পিস্তল গুজে চাঁদা তুলে...." বিকেলে খেলার মাঠে আমি ওদের ডেকেছিলাম। ছেলেগুলো গলে যাওয়া মোমের মতো পায়ের কাছে জড় হয়ে বসলো। আমার সকল উপদেশ মেনে নেওয়ার ভঙ্গিতে ঘাড় নাড়লো। সন্ধায় এলেন জলিল দারোগা- "জং ধরা পিস্তল মাস্টার, গুলি তো বেরোয় না। লকারে রাখলেই কী, আর ওদের হাতে থাকলেই কী! তাছাড়া ওদের উঠতি বয়স, বাধা দিলে ঘাপলা বাধাবে।" দারোগার ফ্যাশফ্যাশে হাসি শুনে কেবলই আমার কানে বাজছিলো উঠতিবয়সি মেয়ের আকুতি- "ওড়নাটা ছেড়ে দিন, আপনারা আমার মায়ের পেটের ভাই।" বৃদ্ধ পথচারীর চোখে ভয়- "দিচ্ছি দিচ্ছি সব, পিস্তল পকেটে রাখো বাবা, তোমরা আমার ছেলের বয়সি।" পরিচিত কারও অভিযোগ- "ওরা তো আপনারই ছাত্র স্যার, একটু থামান..." আর বাজছিলো- "ভ্রুম ভ্রুরুম ভ্রুরুরুরুম... ভ্রুম ভ্রুরুম ভ্রুরুরুরুম..." মুয়াজ্জিনকে চিরকুট শুনুন মুয়াজ্জিন সাহেব... সন্ধেবেলায় আমি আজানের প্রতিক্ষায় থাকি। আকাশ যখন হয় রক্তিম, নীড়ে ফিরে পাখি, আপনার সকরুণ সুর ভিষণ মন্ত্রমুগ্ধ করে আমাকে। টিভির ভলিয়ম কমিয়ে আজানের মায়াময় মূর্ছনায় কান পেতে রাখি। মাথায় আঁচল তুলতে গিয়েই থামি। মুসলিম মেয়ে হলে চলতো, আমি তো হিন্দু, লোকেরা ভাববে পাগলামী...! কিশোরী বয়সে এক মুসলমান ছেলের প্রেমে পড়েছিলাম। বলতো সে, তার ঘরে বউ হয়ে গেলে পড়তে হবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ এবং খুব প্রভাতে তিলাওয়াতে-কুরআন। ���্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। ভালোবাসার মানুষটির উপদেশ যতই কঠিন হোক, অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে কে না চায়? কিন্তুু আমার হলো কই...! ধর্মাশ্রিত সমাজ বাঁধার দেয়াল তুলে দাঁড়ালো। এখন মাথায় সিঁদুর, শাখাপরা হাতে করি অন্যের সংসার। কবুতরগুলো যখন বাকবাকুম ডেকে খোঁপে ফিরে, বাঁদুরেরা ছুটে খাদ্যের খোঁজে, তুলসীতলায় সন্ধ্যা প্রদীপ জ্বালাবার আগে; শুনুন মুয়াজ্জিন সাহেব, আমি আজানের প্রতিক্ষায় থাকি। তুমি কোনটা নেবে...? আমার হাতে বন্দুক, আমার কপালে রক্ত তুমি কোনটা নেবে...? যদি বন্দুক নাও- তুমি হিংস্র ঘাতক। যদি রক্ত নাও- তুমি অপরিণামদর্শী কাতিল। আমার চোখে অশ্রু, আমার ঠোঁটে হাসি তুমি কোনটা নেবে...? যদি অশ্রু নাও, তবে তুমি দুঃখ বিলাসী- মানে আমার প্রকৃত বন্ধু। যদি হাসি নাও, তবে তুমি দুধের মাছি- মানে সুসময়ের ধাপ্পাবাজ। আমার কপালে ঘাম, আমার দু’চোখ লাল তুমি কোনটা নেবে...? যদি কপালের ঘাম মুছে দাও শুষ্ক আঁচলে- তুমি আমার প্রকৃত ঘরণী, আমার অর্ধ-অঙ্গ। যদি রক্তিম চোখে বোলাও হাতের শীতল আঙুল- তুমি আমার স্নেহশীল প্রেমিকা, রমণযোগ্য ভালোবাসা। আকিব শিকদার। জন্ম কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুর থানাধীন তারাপাশা গ্রামে, ০২ ডিসেম্বর ১৯৮৯ সালে। প্রফেসর আলহাজ মোঃ ইয়াকুব আলী শিকদার ও মোছাঃ নূরুন্নাহার বেগম এর জ্যেষ্ঠ সন্তান। স্নাতক পড়েছেন শান্ত-মরিয়ম ইউনিভার্সিটি থেকে ফ্যাশন ডিজাইন বিষয়ে। পাশাপাশি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতিতে স্নাতক ও স্নাতোকোত্তর। খন্ডকালীন শিক্ষকতা দিয়ে কর্মজীবন শুরু; বর্তমানে প্রভাষক হিসেবে আছেন এ্যাপারেল ইন্সটিটিউট অব ফ্যাশন এন্ড টেকনোলজিতে। কবির বিধ্বস্ত কঙ্কাল (২০১৪), দেশদ্রোহীর অগ্নিদগ্ধ মুখ (২০১৫), কৃষ্ণপক্ষে যে দেয় উষ্ণ চুম্বন (২০১৬), জ্বালাই মশাল মানবমনে (২০১৮) তার উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ। “দোলনা দোলার কাব্য” তার প্রকাশিতব্য শিশুতোষ কবিতার বই। সাহিত্য চর্চায় উৎসাহ স্বরুপ পেয়েছেন হোসেনপুর সাহিত্য সংসদ প্রদত্ত “উদ্দীপনা সাহিত্য পদক”, “সমধারা সাহিত্য সম্মাননা”, “মেঠোপথ উদ্দীপনা পদক”। লেখালেখির পাশাপাশি সঙ্গীত ও চিত্রাংকন তার নেশা।
0 notes
khutbahs · 4 years
Link
মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম - সংক্ষিপ্ত জীবনী - পার্ট ১
মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (২৬ এপ্রিল ৫৭০ - ৮ জুন ৬৩২; ইসলামের কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব এবং আল্লাহ কর্তৃক প্রেরিত সর্বশেষ নবী ( আরবি ভাষায়: النبي আন-নাবিয়্যু) তথা "বার্তাবাহক" (আরবি: الرسول আর-রাসুল) যাঁর উপর আল কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে।
(অমুসলিমদের মতে তিনি ইসলামী জীবন ব্যবস্থার প্রবর্তক। অধিকাংশ ইতিহাসবেত্তা ও বিশেষজ্ঞদের মতে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতা। তার এই বিশেষত্বের অন্যতম কারণ হচ্ছে আধ্যাত্মিক ও জাগতিক উভয় জগতেই চূড়ান্ত সফলতা অর্জন। তিনি ধর্মীয় জীবনে যেমন সফল তেমনই রাজনৈতিক জীবনে। সমগ্র আরব বিশ্বের জাগরণের পথিকৃৎ হিসেবে তিনি অগ্রগণ্য। বিবদমান আরব জনতাকে একীভূতকরণ তার জীবনের অন্যতম সফলতা ।)
হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্মের পূর্বে বিশ্বের অবস্থা
আরব বলতে এখানে মক্কা ও মদিনা এবং এদের পার্শ্ববর্তী অঞ্চলগুলো নিয়ে গড়ে ওঠা অংশকে বুঝানো হচ্ছে, কারণ এই অংশের সাথেই হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জীবনের সাক্ষাৎ সম্পৃক্ততা ছিল। অঞ্চলটি ছিল মরুভূমির মধ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা দ্বীপের মত। অবশ্য মরুভূমি পৃথিবীর সর্বত্রই রয়েছে, অর্থাৎ মরুভূমি ও  ইসলামের মধ্যে বিশেষ কোন সম্পর্ক নেই। বিশ্বে হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রভাব মূল্যায়নের জন্য তাঁর জন্মে-পূর্ব্ব আরবের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, ভৌগোলিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় এবং নৈতিক অবস্থা সম্পর্কে জ্ঞান আবশ্যক। তৎকালীন আরব অর্থনীতির মূল ভিত্তি ছিল ব্যবসায় ও পশুপালন। নোমেডীয় অঞ্চলের সাথে এখানকার বাণিজ্য যোগাযোগ ছিল।
মুহাম্মাদের (সাঃ) - জীবনী
জন্ম
হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বর্তমান সৌদি আরবে অবস্থিত মক্কা নগরীর কুরাইশ গোত্রের বনি হাশিম বংশে জন্মগ্রহণ করেন। উনার (সা.) জন্ম ৫৭০ খৃস্টাব্দে। নবীর জন্মের বছরেই হস্তী যুদ্ধের ঘটনা ঘটে এবং সে সময় সম্রাট নরশেরওয়ার সিংহাসনে আরোহনের ৪০ বছর পূর্��ি ছিল ।
শৈশব ও কৈশোর কাল
তত্কালীন আরবের রীতি ছিল যে তারা মরুভূমির মুক্ত আবহাওয়ায় বেড়ে উঠার মাধ্যমে সন্তানদের সুস্থ দেহ এবং সুঠাম গড়ন তৈরির জন্য জন্মের পরপরই দুধ পান করানোর কাজে নিয়োজিত বেদুইন মহিলাদের কাছে দিয়ে দিতেন এবং নির্দিষ্ট সময় পর আবার ফেরত নিতেন। এই রীতি অনুসারে হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে হালিমা বিনতে আবু জুয়াইবের (অপর নাম হালিমা সাদিয়া) হাতে দিয়ে দেয়া হয়। এই শিশুকে ঘরে আনার পর দেখা যায় হালিমার সচ্ছলতা ফিরে আসে এবং তারা শিশুপুত্রকে সঠিকভাবে লালনপালন করতে সমর্থ হন। তখনকার একটি ঘটনা উল্লেখযোগ্য - শিশু হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কেবল হালিমার একটি স্তনই পান করতেন এবং অপরটি তার অপর দুধভাইয়ের জন্য রেখে দিতেন। দুই বছর লালনপালনের পর হালিমা শিশু  হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে আমিনার কাছে ফিরিয়ে দেন। কিন্তু এর পরপরই মক্কায় মহামারী দেখা দেয় এবং শিশু হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হালিমার কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়। হালিমাও চাচ্ছিলেন শিশুটিকে ফিরে পেতে। এতে তার আশা পূর্ণ হল। এর কয়েকদিন পরই একটি অলৌকিক ঘটনা ঘটে - একদিন শিশু নবী (সঃ) র বুক চিরে কলিজার একটি অংশ বের করে তা জমজম কূপের পানিতে ধুয়ে আবার যথাস্থানে স্থাপন করে দেয়া হয়। এই ঘটনাটি ইসলামের ইতিহাসে সিনা চাকের ঘটনা হিসেবে খ্যাত।
এই ঘটনার পরই হালিমা হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে মা আমিনার কাছে ফিরিয়ে দেন। ছয় বছর বয়স পূর্ণ হওয়া পর্যন্ত তিনি মায়ের সাথে কাটান। এই সময় একদিন আমিনার ইচ্ছা হয় ছেলেকে নিয়ে মদীনায় যাবেন। সম্ভবত কোন আত্মীয়ের সাথে দেখা করা এবং স্বামীর কবর জিয়ারত করাই এর কারণ ছিল। আমিনা ছেলে, শ্বশুর এবং দাসীউম্মে আয়মনকে নিয়ে ৫০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে মদীনায় পৌঁছেন। তিনি মদীনায় একমাস সময় অতিবাহিত করেন। একমাস পর মক্কায় ফেরার পথে আরওয়া নামক স্থানে এসে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং সেখানেই মৃত্যুবরণ করেন। মাতার মৃত্যুর পর দাদা আবদুল মোত্তালেব শিশু হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিয়ে মক্কায় পৌঁছেন। এর পর থেকে দাদাই মুহাম্মাদের দেখাশোনা করতে থাকেন। হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বয়স যখন ৮ বছর ২ মাস ১০ দিন তখন তার দাদাও মারা যান। মৃত্যুর আগে তিনি তার পুত্র আবু তালিবকে হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দায়িত্ব দিয়ে যান।
আবু তালিব ব্যবসায়ী ছিলেন এবং আরবদের নিয়ম অনুযায়ী বছরে একবার সিরিয়া সফরে যেতেন। হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বয়স যখন ১২ বছর তখন তিনি চাচার সাথে সিরিয়া যাওয়ার জন্য বায়না ধরলেন। প্রগাঢ় মমতার কারণে আবু তালিব আর নিষেধ করতে পারলেননা। যাত্রাপথে বসরা পৌঁছার পর কাফেলাসহ আবু তালিব তাঁবু ফেললেন। সে সময় আরব উপদ্বীপের রোম অধিকৃত রাজ্যের রাজধানী বসরা অনেক দিক দিয়ে সেরা ছিল। কথিত আছে, শহরটিতে জারজিস সামে এক খ্রিস্টান পাদ্রী ছিলেন যিনি বুহাইরা বা বহিরা নামেই অধিক পরিচিত ছিলেন। তিনি তার গীর্জা হতে বাইরে এসে কাফেলার মুসাফিরদের মেহমানদারী করেন। এ সময় তিনি বালক হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে দেখে শেষ নবী হিসেবে চিহ্নিত করেন। ফুজ্জারের যুদ্ধ যখন শুরু হয় তখন নবী (সঃ) এর বয়স ১৫ বছর। এই যুদ্ধে তিনি স্বয়ং অংশগ্রহণ করেন। যুদ্ধের নির্মমতায় তিনি অত্যন্ত ব্যথিত হন। কিন্তু তাঁর কিছু করার ছিলনা। সে সময় থেকেই তিনি কিছু একটি করার চিন্তাভাবনা শুরু করেন।
নবুয়ত-পূর্ব জীবন
আরবদের মধ্যে বিদ্যমান হিংস্রতা, খেয়ানত প্রবণতা এবং প্রতিশোধস্পৃহা দমনের জন্যই হিলফুল ফুজুল নামক একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠিত হয়। হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এতে যোগদান করেন এবং এই সংঘকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে তিনি বিরাট ভূমিকা রাখেন। তরুণ বয়সে হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর তেমন কোন পেশা ছিলনা। তবে তিনি বকরি চরাতেন । সাধারণত তিনি যে বকরিগুলো চরাতেন সেগুলো ছিল বনি সা'দ গোত্রের। কয়েক কিরাত পারিশ্রমিকের বিনিময়ে তিনি মক্কায় বসবাসরত বিভিন্ন ব্যক্তির বকরিও চরাতেন। এরপর তিনি ব্যবসায় শুরু করেন। হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অল্প সময়ের মধ্যেই একাজে ব্যাপক সফলতা লাভ করেন। এতই খ্যাতি তিনি লাভ করেন যে তার উপাধি হয়ে যায় আল আমিন এবং আল সাদিক যেগুলোর বাংলা অর্থ হচ্ছে যথাক্রমে বিশ্বস্তএবং সত্যবাদী। ব্যবসায় উপলক্ষ্যে তিনি সিরিয়া, বসরা, বাহরাইন এবং ইয়েমেনে বেশ কয়েকবার সফর করেন। হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সুখ্যাতি যখন চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে তখন খাদীজা বিনতে খুওয়াইলিদ তা অবহিত হয়েই তাকে নিজের ব্যবসার জন্য সফরে যাবার অনুরোধ জানান। হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই প্রস্তাব গ্রহণ করেন এবং খাদীজা (র:) পণ্য নিয়ে সিরিয়ার অন্তর্গত বসরা পর্যন্ত যান।
খাদীজা (র:) মাইছারার মুখে হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সততা ও ন্যায়পরায়ণতার ভূয়সী প্রশংশা শুনে অভিভূত হন। এছাড়া ব্যবসায়ের সফলতা দেখে তিনি তার যোগ্যতা সম্বন্ধেও অবহিত হন। এক পর্যায়ে তিনি হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে বিবাহ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তিনি স্বীয় বান্ধবী নাফিসা বিনতে মুনব্বিহরের কাছে বিয়ের ব্যাপরে তার মনের কথা ব্যক্ত করেন। নাফিসার কাছে শুনে হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন যে তিনি তার অভিভাবকদের সাথে কথা বলেন জানাবেন। হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর চাচাদের সাথে কথা বলে বিয়ের সম্মতি জ্ঞাপন করেন। বিয়ের সময় খাদীজার (র:) বয়স ছিল ৪০ আর হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বয়স ছিল ২৫; খাদীজার (র:) জীবদ্দশায় তিনি আর কোন বিয়ে করেননি। খাদীজার গর্ভে মুহাম্মাদের (সাঃ) ৬ জন সন্তান জন্মগ্রহণ করে যার মধ্যে ৪ জন মেয়ে এবং ২ জন ছেলে। তাদের নাম যথাক্রমে কাসেম, যয়নাব, রুকাইয়া, উম্মে কুলসুম', ফাতিমা এবং আবদুল্লাহ। ছেলে সন্তান দুজনই শৈশবে মারা যায়। মেয়েদের মধ্যে সবাই ইসলামী যুগ পায় এবং ইসলাম গ্রহণ করে এবং একমাত্র ফাতিমা ব্যতিত সবাই নবীর জীবদ্দশাতেই মৃত্যুবরণ করে।
হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বয়স যখন ৩৫ বছর তখন কা'বা গৃহের পূনঃনির্মাণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। বেশ কয়েকটি কারণে কাবা গৃহের সংস্কার কাজ শুরু হয়। পুরনো ইমারত ভেঙে ফেলে নতুন করে তৈরি করা শুরু হয়। এভাবে পুনঃনির্মানের সময় যখন হাজরে আসওয়াদ (পবিত্র কালো পাথর) পর্যন্ত নির্মাণ কাজ শেষ হয় তখনই বিপত্তি দেখা দেয়। মূলত কোন গোত্রের লোক এই কাজটি করবে তা নিয়েই ছিল কোন্দল। নির্মাণকাজ সব গোত্রের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু হাজরে আসওয়াদ স্থাপন ছিল একজনের কাজ। কে স্থাপন করবে এ নিয়ে বিবাদ শুরু হয় এবং চার-পাঁচ দিন যাবৎ এ বিবাদ অব্যাহত থাকার এক পর্যায়ে এটি এমনই মারাত্মক রূপ ধারণ করে যে হত্যাকাণ্ড পর্যন্ত ঘটার সম্ভাবনা দেখা দেয়। এমতাবস্থায় আবু উমাইয়া মাখজুমি একটি সমাধান নির্ধারণ করে যে পরদিন প্রত্যুষে মসজিদে হারামের দরজা দিয়ে যে প্রথম প্রবেশ করবে তার সিদ্ধান্তই সবাই মেনে নেবে। পরদিন হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সবার প্রথমে কাবায় প্রবেশ করেন। এতে সবাই বেশ সন্তুষ্ট হয় এবং তাকে বিচারক হিসেবে মেনে নেয়। আর তার প্রতি সবার সুগভীর আস্থাও ছিল। যা হোক এই দায়িত্ব পেয়ে হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অত্যন্ত সুচারুভাবে ফয়সালা করেন। তিনি একটি চাদর বিছিয়ে তার উপর নিজ হাতে হাজরে আসওয়াদ রাখেন এবং বিবদমান প্রত্যেক গোত্রের নেতাদের ডেকে তাদেরকে চাদরের বিভিন্ন কোণা ধরে যথাস্থানে নিয়ে যেতে বলেন এবং তারা তা ই করে। এরপর তিনি পাথর উঠিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে স্থাপন করেন।
নবুওয়ত প্রাপ্তি
চল্লিশ বছর বয়সে হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নবুওয়ত লাভ করেন, অর্থাৎ এই সময়েই স্রষ্টা তার কাছে ওহী প্রেরণ করেন। নবুওয়ত সম্বন্ধে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া যায় আজ-জুহরির বর্ণনায়। জুহরি বর্ণিত হাদীস অনুসারে নবী সত্য দর্শনের মাধ্যমে ওহী লাভ করেন। ত্রিশ বছর বয়স হয়ে যাওয়ার পর হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রায়ই মক্কার অদূরে হেরা গুহায় ধ্যানমগ্ন অবস্থায় কাটাতেন। তাঁর স্ত্রী খাদিজা নিয়মিত তাঁকে খাবার দিয়ে আসতেন। এমনি এক ধ্যানের সময় ফেরেশতা জিব্রাইল (আঃ)  তার কাছে আল্লাহ প্রেরিত ওহী নিয়ে আসেন। জিব্রাইল (আঃ) তাঁকে এই পংক্তি কটি পড়তে বলেন:
পাঠ করুন, আপনার পালনকর্তার নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্ত থেকে। পাঠ করুন, আপনার পালনকর্তা মহা দয়ালু, যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন, শিক্ষা দিয়েছেন মানুষকে যা সে জানত না।
উত্তরে নবী (সাঃ) জানান যে তিনি পড়তে জানেন না, এতে জিব্রাইল (আঃ)  তাকে জড়িয়ে ধরে প্রবল চাপ প্রয়োগ করেন এবং আবার একই পংক্তি পড়তে বলেন। কিন্তু এবারও হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজের অপারগতার কথা প্রকাশ করেন। এভাবে তিনবার চাপ দেয়ার পর হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পংক্তিটি পড়তে সমর্থ হন। অবর্তীর্ণ হয় কুরআনের প্রথম আয়াত গুচ্ছ; সূরা আলাকের প্রথম পাঁচ আয়াত। প্রথম অবতরণের পর হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এতই ভীত হয়ে পড়েন যে কাঁপতে কাঁপতে নিজ গ্রহে প্রবেশ করেই খাদিজাকে কম্বল দিয়ে নিজের গা জড়িয়ে দেয়ার জন্য বলেন। বারবার বলতে থাবেন, "আমাকে আবৃত কর" ; খাদিজা হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সকল কথা সম্পূর্ণ বিশ্বাস করেন এবং তাঁকে নবী হিসেবে মেনে নেন। ভীতি দূর করার জন্য হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে নিয়ে খাদিজা নিজ চাচাতো ভাই ওয়ারাকা ইবন নওফেলের কাছে যান। নওফেল তাঁকে শেষ নবী হিসেবে আখ্যায়িত করে। ধীরে ধীরে আত্মস্থ হন হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম । তারপর আবার অপেক্ষা করতে থাকেন পরবর্তী প্রত্যাদেশের জন্য। একটি লম্বা বিরতির পর তাঁর কাছে দ্বিতীয় বারের মত ওহী আসে। এবার অবতীর্ণ হয় সূরা মুদ্দাস্‌সির-এর কয়েকটি আয়াত। এর পর থেকে গোপনে ইসলাম প্রচারে আত্মনিয়োগ করেন হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই ইসলাম ছিল জীবনকে সম্পূর্ণ বদলে দেয়ার জন্য প্রেরিত একটি আদর্শ ব্যবস্থা। তাই এর প্রতিষ্ঠার পথ ছিল খুবই বন্ধুর। এই প্রতিকূলততার মধ্যেই নবীর মক্কী জীবন শুরু হয়।
মক্কী জীবন
-----------
গোপন প্রচার
প্রত্যাদেশ অবতরণের পর হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বুঝতে পারেন যে, এটি প্রতিষ্ঠা করতে হলে তাকে পুরো আরব সমাজের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড়াতে হবে; কারণ তৎকালীন নেতৃত্বের ভীত ধ্বংস করা ব্যাতীত ইসলাম প্রচার ও প্রতিষ্ঠার অন্য কোন উপায় ছিলনা। তাই প্রথমে তিনি নিজ আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের মাঝে গোপনে ইসলামের বাণী প্রচার শুরু করেন। হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আহ্বানে ইসলাম গ্রহণকারী প্রথম ব্যক্তি ছিলেন খাদিজা (রঃ) । এরপর মুসলিম হন হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর চাচাতো ভাই এবং তার ঘরেই প্রতিপালিত কিশোর আলী, ইসলাম গ্রহণের সময় তার বয়স ছিল মাত্র ১০ বছর। ইসলামের বাণী পৌঁছে দেয়ার জন্য নবী নিজ বংশীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে একটি সভা করেন; এই সভায় কেউই তাঁর আদর্শ মেনে নেয়নি, এ সভাতে শুধু একজনই ইসলাম গ্রহণ করে, সে হলো আলী। ইসলাম গ্রহণকারী তৃতীয় ব্যক্তি ছিল নবীর অন্তরঙ্গ বন্ধূ আবু বকর। এভাবেই প্রথম পর্যায়ে তিনি ইসলাম প্রচারের কাজ শুরু করেন। এবং এই প্রচারকাজ চলতে থাকে সম্পূর্ণ গোপনে।
প্রকাশ্য দাওয়াত
তিন বছর গোপনে দাওয়াত দেয়ার পর হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহ্‌র আদশে প্রকাশ্যে ইসলামের প্রচার শুরু করেন। এ ধরণের প্রচারের সূচনাটা বেশ নাটকীয় ছিল। হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাফা পর্বতের ওপর দাড়িয়ে চিৎকার করে সকলকে সমবেত করেন। এরপর প্রকাশ্যে বলেন যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহা নেই এবং হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহ্‌র রাসূল। কিন্তু এতে সকলে তার বিরুদ্ধে প্রচণ্ড খেপে যায় এবং এই সময় থেকে ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অত্যাচার শুরু হয়।
মক্কায় বিরোধিতার সম্মুখীন
বিরুদ্ধবাদীরা কয়েকটি স্তরে নির্যাতন শুরু করে: প্রথমত উস্কানী ও উত্তেজনার আবহ সৃষ্টি, এরপর অপপ্রচার, কুটতর্ক এবং যুক্তি। এক সময় ইসলামী আন্দোলনকে সহায়হীন করার প্রচেষ্টা শুরু হয় যাকে সফল করার জন্য একটি নেতিবাচক ফ্রন্ট গড়ে উঠে। একই সাথে গড়ে তোলা হয় সাহিত্য ও অশ্লীল গান-বাজনার ফ্রন্ট, এমনকি একং পর্যায়ে হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে আপোষেরও প্রচেষ্টা চালায় কুরাইশরা। কিন্তু হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তা মেনে নেননি; কারণ আপোষের শর্ত ছিল নিজের মত ইসলাম পালন করা, সেক্ষেত্র তার ইসলাম প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যই ভেস্তে যেতো।
ইথিওপিয়ায় হিজরত
ধীরে ধীরে যখন মুসলিমদের বিরুদ্ধে সহিংসতা চরম রূপ ধারণ করে, তখন হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কিছু সংখ্যক মুসলিমকে আবিসিনিয়ায় হিজরত করতে পাঠান। সেখান থেকেও কুরাইশরা মুসলিমদের ফেরত আনার চেষ্টা করে, যদিও তৎকালীন আবিসিনিয়ার সম্রাট নাজ্জাশীর কারণে তা সফল হয়নি।
গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ইসলাম গ্রহণ
এরপর ইসলামের ইতিহাসে যে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাটি ঘটে তা হল উমর ইবনুল খাত্তাবের (রঃ) ইসলাম গ্রহণ। নবী (সঃ) সবসময় চাইতেন যেন আবু জেহেল ও উমরের (রঃ) মধ্যে যেকোন একজন অন্তত ইসলাম গ্রহণ করে। তার এই ইচ্ছা এতে পূর্ণতা লাভ করে। আরব সমাজে উমরের বিশেষ প্রভাব থাকায় তার ইসলাম গ্রহণ ইসলাম প্রচারকে খানিকটা সহজ করে, যদিও কঠিন অংশটিই তখনও মুখ্য বলে বিবিচেত হচ্ছিল। এরপর একসময় নবীর চাচা হামযা (রঃ) ইসলাম গ্রহণ করেন। তার ইসলাম গ্রহণে আরবে মুসলিমদের আধিপত্য কিছুটা হলেও প্রতিষ্ঠিত হয়।
একঘরে অবস্থা
এভাবে ইসলাম যখন শ্লথ গতিতে এগিয়ে চলছে তখন মক্কার কুরাইশরা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তার অনুসারী সহ সহ গোটা বনু হাশেম গোত্রকে একঘরে ও আটক করে। তিন বছর আটক থাকার পর তারা মুক্তি পায়।
দুঃখের বছর ও তায়েফ গমন
কিন্তু মুক্তির পরের বছরটি ছিল হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্য দুঃখের বছর। কারণ এই বছরে খুব স্বল্প সময়ের ব্যবধানে তার স্ত্রী খাদিজা (রঃ) ও চাচা আবু তালিব মারা যায়। দুঃখের সময়ে হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কায় ইসলামের প্রসারের ব্যাপারে অনেকটাই হতাশ হয়ে পড়েন। হতাশ হয়ে তিনি মক্কা বাদ দিয়ে এবার ইসলাম প্রচারের জন্য তায়েফ যান (অবশ্য তায়েফ গমনের তারিখ নিয়ে মতভেদ রয়েছে) কিন্তু সেখানে ইসলাম প্রচার করতে গিয়ে তিনি চূড়ান্ত অপমান, ক্রোধ ও উপহাসের শিকার হন। এমনকি তায়েফের লোকজন তাদের কিশোর-তরুণদেরকে হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পিছনে লেলিয়ে দেয়; তারা ইট-প্রস্তরের আঘাতে নবীকে রক্তাক্ত করে দেয়। কিন্তু তবুও তিনি হাল ছাড়েননি; নব নব সম্ভবনার কথা চিন্তা করতে থাকেন।
0 notes
shopnorong-blog · 7 years
Text
প্রকৃতির এক অদ্ভুত রহস্যময় সৃষ্টি জেসিকা-২য় খন্ড
📝জিবনের প্রথম বার এত দীর্ঘ সময় ধরে এক অদ্ভুত লিঙ্গের মেয়ের সঙ্গে নগ্ন হয়ে একসাথে গোসল করতে করতে শিহরন জাগানো যৌনসুখ উপাভোগ করলাম এবং প্রথম বারই কেউ আমাকে এতো বেশি নিবিড় ভাবে জড়িয়ে ধরে আদর করতে করতে পাগল করা যৌন সুখ দিলো। এ যেনো সত্যিই এক অন্যরকম শিহরন জাগানো পাগল করে দেওয়া অনুভুতি। জীবনে অনেক সুন্দরী মেয়েদের নগ্ন শরীর দেখেছি তাদের সাথে অনেক ভাবেই সেক্স করছি কিন্তু এমন শিহরন কথনোই লাগেনি, এতোদিন জানতাম শুধু মেয়েদের সঙ্গেই যৌনমিলন করতে পারলেই মনেহয় বেশি যৌন সুখ পাওয়া যায়, কিন্তু আজ বুঝতে পারলাম যে প্রকৃত যৌনসুখের জন্য শুধুমাত্র সুন্দর যৌনাঙ্গই যথেষ্ট নয় বরং নিবিড় ভালোবসা আর উষ্ণ যৌন আদরের ও প্রয়োজন l হোক সেটা বিপরিত লিঙ্গের অথবা সমলিঙ্গের। হয়তো এই কারনে অনেকেই সেটা সমলিঙ্গের মধ্যে ও খুঁজে পায়। আর তখন সমাজের কিছু মানুষ তাদেরকে সমকামী বলে দূরে ঠেলে দেয়। হয়তো ওই মানুষ গুলোর ভিতরে অন্যের যৌনসুখ পেতে দেখে হিংসা হয় অথবা তাদের ও পেতে ইচ্ছা করে কিন্তু সামাজিক সমস্যার করনে হয়তো কিছু বলতে পারেনা তাই হয়তো তারা এমন করে। করন যৌনসুখ পেতে চায়না এমন কোনো মানুষই খুঁজে পওয়া যাবেনা তাই সেটা যে ভাবেই হোকনা কেনো , কারন পরিপূর্ন যৌনসুখ ছাড়া মানুষের জীবনটা যে কতটা অপূর্ন থেকে যায় সেটা ওই মানুষ গুলো ও জানে । যাইহোক জেসিকার সঙ্গে ঘটে যাওয়া আমার জীবনের শিহরন জাগানো এই সময় গুলো কখোনো হয়তো ভুলতে পারবোনা। গোসল শেষ করে জেসিকা কে সঙ্গে নিয়ে বের হচ্ছিলাম গোসলখানা থেকে, অনেক ভালো লাগতেছিলো, শরীর টা অনেক ঝরঝরে লাগতেছিলো । ড্রয়িংরুমে এসে জেসিকা ড্রসআপ করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলো কিন্তু চুল গুলো অনেক ভিজে ছিলো তাই তোয়ালে টা দিয়ে পেচিয়ে বেধে রাখার জন্য চেষ্টা করছিলো জেসিকা কিন্তু বার খুলে যাচ্ছিলো তোয়ালেটা তাই আমি ওর সামনে দাড়িয়ে ওঁকে সাহায্য করছিলাম কিন্তু জেসিকা হঠাৎ আচমকা দুষ্টুমি করে আমার ঠোট একটা কামড়ে দিয়ে আমাকে ঠেলে সোফার উপর ফেলে দিয়ে হাসতে হাসতে দৌড়ে পালাতে লাগলো তাই আমিও উঠে জেসিকাকে ধরার জন্য দৌড়াতে লাগলাম জেসিকার পিছু পিছু কিন্তু ওকে ধরতে পারছিলাম না । যদিও আমি ও ধরার জন্য কোনো চেষ্টা করছিলামনা কারন জেসিকা যখন দৌড়াচ্ছিলো তখন ওর ওই ৭ইঞ্চি লম্বা ধোনটা ওর দুই উরুতে বাড়ি খাচ্ছিলো আর ওর দুধ দুইটা এপাশ ওপাশ করে রাবারের মোতো দোল খাচ্ছিলো এবং তানপুরার খোলের মতো মসৃন পাছাটা যেনো ঢেউ খেলে যাচ্ছিলো চোখের সামনে তাই অনেক মজা পাচ্ছিলাম আমি ওই গুলো দেখে । এদিকে আমার নরম হয়ে থাকা ধোনটা কখন যে আবার গরম হয়ে উঠেছে বুঝতে পারিনি ওদিখে জেসিকা দৌড়াতে দৌড়াতে অনেক ক্লান্ত হয়ে পড়েছে দুধে আলতা শরীরটা ঘেমে ভিজে যেতে শুরু করেছে কিন্ত কিছুতেই ধরা দিতে চাচ্ছিলোনা আমার কাছে আমি ও বেশ ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম তাই ফ্রীজ থেকে ঠান্ডা পানির বোতল টা নিয়ে ওকে দেখিয়ে মুখটা খুলতে লাগলাম আর তখনি জেসিকা দৌড়ে এসে আমার কাছে থেকে পানির বোতল টা নিয়ে নিতেই আমি ও জড়িয়ে ধরলাম জেসিকার দুধেআলতা রং নরম শরীর টা ঘামে ভেজা শরীর টাকে, জেসিকা অনেক ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলো তাই কোনো কথা না বলে চুপচাপ পুরো বোতলের পানিটা একদমে ঢকঢক করে খেয়ে নিলো তারপর আমাকে আস্তে করে বললো সরি ডেভিড সবটুকুই খেয়ে ফেললাম তখন আমি বললাম তোমাকে এভাবে ছোট্ট বাচ্চাদের মতো দৌড়াতে দেখতে আমার ভীষন ভালো লগতেছিলো বলতেই জেসিকা আমাকে জড়িয়ে ধরে আমার মুখের মধ্যে জিব ঢুকিয়ে আমার জিব টা নিয়ে লজেন্স এর মতো করে চুষতে লাগলো আমিও শক্ত করে ওকে আমার বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে রেখেছিলাম এভাবে অনেকক্ষন ধরে জেসিকা আমার জিব চুষতে লাগলো কিছুক্ষন পর হঠাৎ বুঝতে পারলাম জেসিকা ওই বড় সাগর কলার মতো সান্তশিষ্ট ধোনটা আস্তে আস্তে গরম হয়ে উঠেছে। জেসিকার ঠোঁট দুটো অনেক ঠান্ডা অনুভব হচ্ছে আমার মুখের মধ্যে, দুধের বোটা গুলো কেমন সক্ত হয়ে যাচ্ছে জেসিকা ওর দুই হাত দিয়ে অনেক সক্ত করে জড়িয়ে জড়িয়ে ধরতে লাগলো আমাকে, তাই আর দেরি না করে জেসিকা কে কোলে তুলে নিয়ে চলে গেলাম আমার বেডরুমে l জেসিকাকে আস্তে করে শুইয়ে দিলাম আমার বেডের উপরে তখন ওর দুধেআলতা রং ঘামে ভেজা শরীর টা যেনো অপরুপ লাগছে লাইটের আলোতে আর সুগভীর নাভি থেকে একটু নিচে জেসিকার ৭ইঞ্চি লম্বা ধোনটা যেনো মিনারের মতো খাড়া হয়ে দাড়িয়ে আছে, পাতলা চামড়ায় মেড়ানো অর্ধ ফোটা ধনের মাথাটা যেনো মনে হচ্ছে একটা বড় মধুমাখা গোলাপের কড়ি এবং কিছুক্ষনের মধ্যেই ফুটে যাবে। আর বিচি দুইটা মনে হচ্ছে গোলাপি চামড়ায় দিয়ে মোড়ানো দুইটা হাঁসের ডিম। একটা ও পশম নেই কোথাও অনেক মসৃন লাগছিলো দেখতে তাই খুব অবাক হয়ে দেখছিলাম সবকিছু আর হাত বুলিয়ে দিচ্ছিলাম জেসিকার ঘামে ভেজা নরম কমল শরীরটাতে, জেসিকা অনেক ঘন ঘন নিশ্বাস নিচ্ছিলো তাই ওর বড় বড় দুধ দুইটা যেনো ঢেউ খেলছিলো বুকের উপরে সবকিছু মিলিয়ে কেমন যেন একটা মাতাল করা সৌন্দর্য উপভোগ করছিলাম আমি, হঠাৎ জেসিকা আমাকে তার দুই হাত দিয়ে বুকের উপর টেনেনিয়ে আমাকে সক্ত করে ওই নরম দুধের সাথে জড়িয় ধরে পাগলের মত কিস করতে করতে লাগলো এবং আমার মুখের মধ্যে জিব ঢুকিয়ে আবার আমার জিব নিয়ে চুষতে লাগলো। ওর ঠোঁট দুটো তখন ঠান্ডা বরপের মতো মনেহচ্ছিলো তাই অনেক সময় সময় ধরে আমরা একে অপরের জিব ও ঠোঁট চুষতে চুষতে আদর করতে লাগলাম। জেসিকার নিশ্বাস অনেক ঘন হয়ে আসছিলো সমস্ত শরীর কাঁপতে লাগলো খুব অস্থির লাগছিলো জেসিকাকে, তাই আমি আর সময় নষ্ট না করে ওর কিসমিসের মতো দুধের বোটা গুলো মুখে নিয়ে চুষতে শুরু করলাম তারপর আস্তে আস্তে কিস করতে করতে নিচের দিকে যেতে শুরু করলাম দেখি জেসিকার ৭ইঞ্চি লম্বা ধোনটা টানটান হয়ে দাড়িয়ে তিরতির করে কাঁপছে আর মাথা থেকে কামরস বেরহয়ে তার গা বেয়ে গড়িয়ে গড়িয়ে পড়ছে ,আর সেই কামরসে বিচি গুলো ভিজে চিকচিক করছে লাইটের আলোতে, আমি অবাক হয়ে দেখছিলাম সেই অপরূপ দৃশ্য । জেসিকা যেনো কিছুতেই ধরে রাখতে পারছিলো না নিজেকে তাই হাত দিয়ে আস্তে করে পিচ্ছিল কামরসে ভেজা জেসিকার খাড়া হয়ে থাকা ধোনটা ধরতেই চামড়ার ভিতর থেকে লাল টকটকে পাকা টমেটোর মতো মুন্ডিটা বের হয়ে গেলো। কামরসে ভিজে চপচপ করছে জেসিকার লাল টকটকে মুন্ডিটা । মনে হচ্ছে যেনো সদ্য রস থেকে উঠানো একটা রসালো রসগোল্লা, দেখতেই যেনো জিবে পানি চলে আসলো আমার। তাই লোভ না সামলাতে পেরে তাড়াতাড়ি জেসিকার রসালো লাল টকটকে মুন্ডিটা মুখের মধ্যে নিয়ে আইসক্রীমের মতো করে চুষতে লাগলাম আর তখন শিহরনে জেসিকার শরীর টা দুমড়ে মুচড়ে উঠতে লাগলো নিজেই নিজের দুধ গুলো ধরে চাপতে লাগলো আর মুখ দিয়ে উহ....আহ..... উম......ওহ.......মই গড......বলে চিৎকার করতে লাগলো পাগোলের মতো। আমার তখন খুব খারাপ লাগছিলো জেসিকার এমন অবস্থা দেখে আমি এতক্ষন জেসিকাকে শুধু শুধু কষ্ট দিয়েছি স্বার্থ পরের মতো, অনেক আগে থেকেই ও এইগুলোর জন্য অপেক্ষা করছিলো কিন্তু আমি শুধু আমার নিজের দিকটাই দেখেছি ওর দিকে একটু ও খেয়াল করিনি একটু ও বোঝার চেষ্টা করিনি ওকে এই সব ভাবতে ভাবতে এক হাতে ওর কামরসে ভেজা পিচ্ছিল বিচি দুটো কচলাচছিলাম আর অন্য হাত দিয়ে ওর খাড়া ধোনটাকে উপর নিচে করে খেচতে খেচতে চুষে যাচছিলাম আর জেসিকা সুখের যন্ত্রনায় পাগোলের মতো ছটফট করছিলো । জেসিকার ওই টমেটোর মতো মুন্ডিটা যেনো মাঝে মাঝে আমার গলার কাছে গিয়ে আটকে যাচ্চিলো , অনেকবার চেষ্টা করেছি ওর পুরো ধোনটা মুখের মধ্যে নিতে কিন্তু পারছিলাম না, এইভাবে প্রায় ১৫মিনিটের মতো চুষতে থাকলাম হঠাৎ একসময় বুঝতে পারলাম জেসিকা অনেক ছটফট করতে শুরু করেছে আর ওর ধোনের মুন্ডিটা আমার মুখের ভিতরে কাঁপতে শুরু করেছে মাল বের হতে হয়তো আর বেশি দেরি নেই তাই একটু দ্রুত চুষতে চেষ্টা করসিলাম কিন্তু বেশি ভিতরে নিতে পারসিলাম না দেখে হঠাৎ করে জেসিকা বেড উপর থেকে উঠে এসে ফ্লোরে দাঁড়ালো এবং আমাকে বেডের উপরে বসে চুষতে বললো, আমি জেসিকার কথামতো বেডের সাইটে বসে জেসিকার ধোনটা আবার মুখের মধ্যে নিয়ে চুষতে লাগলাম আর জেসিকা আমার মাথা ধরে আমার মুখের ভিতরে আস্তে আস্তে গুতো মারতে লাগলো ওর ৭ইঞ্চি লম্বা ধোনটা দিয়ে এবং আমিও চেষ্টা করছিলাম বেশি করে মুখের মধ্যে নিতে কিন্তু কোনো ভাবেই পারসিলাম না তাই জেসিকা যেন আরো বেশি পাগল হয়ে উঠতে লাগলো তখন। প্রায় ৫মিনিট এভাবে চলার পর জেসিকার মাল বেরহওয়ার সময় ঘনিয়ে আসতে লাগলো, আমি কেনো কিছু বুঝে উঠার আগেই হঠাৎ আচমকা দুই হাত দিয়ে আমার মাথাটা শক্ত ধরে ওর ৭ইঞ্চি লম্বা ধোনটা একটা ধাক্কাতেই আমার গলার মধ্যে দিয়ে ঢুকিয়ে দিলো পরেটুকুই ! তারপর আস্তে আস্তে ভিতর বাহির করতে করতে মাল বেরকরতে লাগলো আমার পাকস্থলীর মধ্যে। আমি একটুও নিশ্বাস নিতে পারছিলাম না আর মনেহচ্ছিলো আমার পাকস্থলীর ভিতরটা যেন গরম হয়ে যাচ্ছ জেসিকার গরম বীর্য গুলো ছিটকে ছিটকে পড়ে , আর জেসিকা তার চোখ দুটো বন্ধো করে উম....উম.....আহ..... করে আওয়জ করে যাচ্ছিলো কিন্তু এদিকে আমার অনেক কষ্ট হচ্ছিলো নিশ্বাস না নিতে পেরে তাই আপ্রাণ চেষ্টা করছিলাম জেসিকার ধোনটাকে গলার মধ্যে থেকে বের করে ফেলার জন্য কিন্তু কিছুতেই পারছিলাম না । প্রায় এক মিনিট ধরে আমার নিশ্বাস আটকে রেখে বীর্যপাত শেষ করলো জেসিকা, তারপর আমার গলার মধ্যে গেথে থাকা জেসিকার ৭ইঞ্চি লম্বা ধোনটা এক টানে রের করে নিলো, কিন্তু তারপরেও আমার নিশ্বাস নিতে অনেক কষ্ট হচ্ছিলো তাই দেখে জেসিকা আমাকে সাথে সাথে বেডের উপর শুইয়ে দিয়ে আমার মুখের উপর মুখ লাগিয়ে অনেক জোরে জোরে অক্সিজেন দিতে লাগলো আর আমার ফুসফুস পাম্প করতে লাগলো কিছুক্ষনের মধ্যে স্বাভাবিক হয়ে গেলাম আর তখন আমার দুই চোখের কোনা বেয়ে পানি পড়তে দেখে জেসিকা আমাকে পাগলের মতো আদর করতে লাগলো আর অঝরে কাঁদতে কাঁদতে বলতে লাগলো I'm so sorry to hard you David I'm really so sorry....... তাই জেসিকাকে আমার বুকের উপর জড়িয়ে ধরে পিঠে হাত বুলাতে বুলাতে ওর কপালের উপর আলতো করে একটা কিস দিয়ে বললাম it's okay “Jessi” I'm alright now please don't cry........ এভাবে কাঁদতে কাঁদতে আমার বুকের উপর কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিল জেসিকা বুঝতে পারিনি, ঘুমন্ত জেসিকা কে দেখে মনেহচ্ছিলো যেনো একটা নিস্পাপ শিশু ঘুমিয়ে আছে আমার বুকের উপর তাই ঘুমন্ত জেসিকা কে দেখতে আমিও ঘুমিয়ে পড়েছিলাম ওকে আমার বুকের উপরে জড়িয়ে নিয়ে.......😴😴
2 notes · View notes
techsamirbd24-blog · 5 years
Text
স্তন বড় করার প্রাকৃতিক উপায় | Naturally enlarge your breast
স্তন ছোট? জেনে নিন বড় দুধ বা স্তন পাবার স্বাভাবিক উপায়। অনেক মেয়েদের দুধ ছোট হওয়ার জন্য অনেক মেয়েই দুশ্চিন্তায় ভুগতে থাকে। এর জন্য নিজের কনফিডেন্স কমে যায়। নিজের মনের মত পোশাক পরা যায় না। আর এই সমস্যার কথা কাউকে বলাও যায় না। সারাক্ষণ দুশ্চিন্তা হতে থাকে যে, কিভাবে সঠিক স্তন পাওয়া সম্ভব। যারা এই সমস্যায় ভুগছে তাদের বলব, চিন্তার কারণ নেই কারণ বাড়িতে বসেই প্রাকৃতিক ভাবে স্তন বড় করার অনেক উপায়…
View On WordPress
0 notes
gethealthy18-blog · 5 years
Text
ওজন কমানোর এবং রোগা হওয়ার সহজ উপায় – Weight Loss Tips in Bengali
New Post has been published on http://healingawerness.com/getting-healthy/getting-healthy-women/%e0%a6%93%e0%a6%9c%e0%a6%a8-%e0%a6%95%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a7%8b%e0%a6%b0-%e0%a6%8f%e0%a6%ac%e0%a6%82-%e0%a6%b0%e0%a7%8b%e0%a6%97%e0%a6%be-%e0%a6%b9%e0%a6%93%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a6%be/
ওজন কমানোর এবং রোগা হওয়ার সহজ উপায় – Weight Loss Tips in Bengali
StyleCraze Hyderabd040-395603080 July 26, 2019
বিশেষত মেয়েদের ওজন নিয়ে চিন্তার শেষ নেই। বিয়ে যাওয়ার আগে আপনার পছন্দের গাউ��টা বার করে পড়তে গিয়ে অবাক হচ্ছেন, একি এটা সেদিনও তো ঠিকই ছিল? এখন হঠাৎ টাইট কেন হচ্ছে? কিংবা মেট্রো স্টেশনে দাঁড়িয়ে ট্রেন আসার অপেক্ষা করতে করতে একবার মনে হল ওজন মাপার যন্ত্রে নিজের ওজনটা একবার দেখে নি। আর তখনই চক্ষু চড়কগাছ? এমন হতেই পারে। যতই ভাবছেন ওজন সঠিক রাখবেন, ততই যেন দিনে দিনে ওজন বেড়ে চলে। শারীরিক গঠন এবং খাওয়া-দাওয়ার অভ্যাস এর ওপর মানুষের শরীরে মোটা হয়ে যাওয়ার প্রবণতা নির্ভর করে। আর তাই আমাদের সকলকেই একটা নির্দিষ্ট খাদ্যাভ্যাস, একটি সঠিক জীবনযাত্রার ওপর নির্ভর করে চলতে লাগে। তাই জেনে নিন কিভাবে খুব সহজে ওজন কমিয়ে আপনাকে রোগা করে তুলবেন এবং ওজন কমানোর জন্য কোন কোন খাবার গুলো আপনি খাবেন। এছাড়া আর কি কি মেনে চলবেন? কেননা মেদহীন, একটি তন্বী চেহারা আমাদের সকলেরই স্বপ্ন থাকে। আসুন তবে জেনে নিন রোগা হওয়ার কিছু সহজ উপায়।
ওজন কমানোর উপায় : How to Lose Weight in Bengali
রোগা হওয়ার উপায়গুলি জানার আগে অবশ্যই আপনাকে নিজেকে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ করে তুলতে হবে যে, আমি অবশ্যই এটি মেনে চলবো। নিজেকে সুন্দর ছিপছিপে করে তুলতে চাইলে ওজন কমানোর উপায় গুলি মেনে চলুন এবং নিজের প্রয়োজনীয় খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন। ওজন কমানোর অর্থাৎ রোগা হওয়ার উপায় গুলি এক নজরে দেখে নিন :
১) রান্নাঘরের পরিবর্তন
নিজেকে ওজন কমিয়ে সুন্দর করে তোলার আগে এবং নিজের খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনার আগে অবশ্যই আপনার রান্নাঘরে পরিবর্তন আনতে হবে। হাতের কাছে থাকা প্রক্রিয়াজাত খাদ্য সামগ্রী, চিনি, দুধ, চকলেট, কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার, যে কোনো রকমের জাঙ্কফুড এগুলো আগে সামনে থেকে সরিয়ে ফেলুন। কেননা খিদের পেটে এই সমস্ত জিনিষগুলি আমাদের বেশি আকর্ষণ করে, তাই এগুলি নিজের চোখের সামনে থেকে দূরে রাখুন। সেই জায়গায় শাক, সবজি, ফল, দানাশস্য, গমের রুটি, প্রোটিন জাতীয় খাদ্য দ্রব্য আপনার রান্নাঘরে এবং ফ্রিজে ভালো করে স্টক করে রাখুন। যাতে আপনার খিদে পেলে সেই সমস্ত খাদ্য গুলির দিকে আপনার হাতটা যায় এবং রান্নাঘর থেকে যে জিনিস গুলো বাদ দিয়ে দিয়েছেন সেগুলির কথা একেবারেই ভুলে যান। কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাদ্য, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, উচ্চ সোডিয়াম যুক্ত খাবার, দুধ, চকলেট এগুলো যত পরিমাণে আপনি খাবেন সেগুলি ওজন কমানোর পরিবর্তে আরো আপনার ওজনকে বাড়িয়ে দেবে। যে কারণে এই ধরনের খাবার গুলিকে চোখের সামনে থেকে দূরে রাখতে হবে মানে এগুলিকে এড়িয়ে চলতে হবে। যাতে আপনি সুষম খাদ্য গ্রহণ করতে পারেন আর সেই জন্যই সর্বপ্রথম রোগা হওয়ার উপায় হিসেবে আপনাকে রান্নাঘরে পরিবর্তন আনতে হবে।
২) সকালে খালি পেটে মেথিজল পান করুন
Shutterstock
রোগা হওয়ার উপায় গুলির মধ্যে অন্যতম হলো সকাল বেলা খালি পেটে মেথির জল পান করা। আগের দিন রাতে এক কাপ জলে দুই চামচ মেথি ভিজিয়ে রাখুন। পরদিন সকালে মেথি ছেঁকে নিয়ে জলটা পান করুন। মেথির বীজ শরীরের বিপাক ক্রিয়াকে উন্নত করে, যার ফলে সকালে এই মেথির ভেজা জল খাওয়ার ফলে সারাদিন আপনি যা খাবার খাবেন সেটি দ্রুত হজম হয়ে যাবে এবং বিপাক প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে। এছাড়াও সকালবেলা মেথির জল পান করার ফলে এটি শরীর থেকে টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে। তাই আপনার দিনের শুরুটা যদি সুস্থ এবং স্বাস্থ্যসম্মত হয়, সারাটা দিন ও আপনার শরীর ভালো যাবে এবং ওজন কমানোর জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পদ্ধতি। দিনের শুরুটা আপনার ওজন কমানোর ক্ষেত্রে অনেকাংশে নির্ভর করে।
৩) গ্রিন টি পান করুন
গ্রিন টি হল একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যুক্ত পানীয়, যা শরীর থেকে টক্সিন রিমুভ করতে এবং পেটের চর্বি কমাতে সহায়তা করে। দিনে অন্তত দুই থেকে তিনবার যদি গ্রিন টি পান করতে পারেন তাহলে এক সপ্তাহে প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ ক্যালরি আপনার শরীর থেকে হ্রাস পাবে। তাই সকালে ব্রেকফাস্ট এর সাথে এবং বিকেল বেলা স্নেক টাইমে এক কাপ করে গ্রিন টি পান করুন। এটি শরীরের মেদ কমানোর পাশাপাশি আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা প্রদান করবে। যার ফলে ত্বক সহজে আর্দ্রতা হারাবে না এবং শরীর সুস্থ থাকবে। ওজন কমানোর উপায় গুলির মধ্যে গ্রিন টি পান একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এইটিকে ভুলে গেলে চলবে না। এটি অবশ্যই আপনার দৈনন্দিন জীবনের অঙ্গ করে তুলুন।
৪) ভারসাম্যপূর্ণ খাবার খান
Shutterstock
তাড়াতাড়ি রোগা হওয়ার জন্য খাদ্য তালিকা থেকে ফ্যাট এবং কার্বোহাইড্রেটকে একেবারে বাদ দিয়ে দিলেন, কেবলমাত্র প্রোটিন জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করলেন; এটি কখনো করবেন না। কেননা শরীরের জন্য সব ধরনের খাদ্য উপাদানই প্রয়োজনীয়। হ্যাঁ, কিছু অন্তত বাদ দিতে হবে। তবে আমাদের শরীরের ক্ষেত্রে ভালো কার্বোহাইড্রেট এবং ভালো ফ্যাট এর প্রয়োজন আছে। তাই নিজের খাবার এমনভাবে খান কিংবা খাদ্য তালিকা এমন ভাবে প্রস্তুত করুন যেখানে প্রয়োজনীয় পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও ফ্যাট তিনটিই উপস্থিত থাকে। আপনার খাদ্যতালিকায় এই তিনটি খাদ্য উপাদান সঠিক মাত্রায় থাকলে তা শরীরের ভারসাম্য বজায় রেখে শরীরকে প্রয়োজনীয় শক্তি সরবরাহ করে এবং শরীরের অনাক্রমতা বাড়াতে সাহায্য করবে। এর পাশাপাশি সুস্থভাবে স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাবে। যার ফলে শরীর থেকে চর্বি কমে গেলেও আপনার শরীর সুস্থ এবং প্রাণোজ্বল থাকবে। কারণ রোগা হতে গেলে শরীরে সব ধরনের খাদ্য উপাদানের প্রয়োজন। কোনোটার পরিমাণ কম, কোনোটার বেশি। তাই সেই কথা মাথায় রেখে নিজের দৈনন্দিন আহার গ্রহণ করুন। কেননা ওজন কমানোর টিপসে কখনোই কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাট জাতীয় খাবার বাদ দেওয়া হয় না।
৫) আস্তে আস্তে চিবিয়ে খান
গবেষণায় লক্ষ্য করা গিয়েছে যে, আপনি যত ধীরে ধীরে খাবার চিবিয়ে খাবেন আপনার ক্যালরি কত পরিমান খরচ হতে থাকবে। কেননা আস্তে আস্তে চিবিয়ে খেলে তা শরীরকে বেশি খাবার খেতে বাধা দেয় এবং মস্তিস্ককে একটা নির্দেশনা প্রেরণ করে যে আমার পেট ভর্তি হয়ে গেছে। এছাড়াও এটি পাচন প্রক্রিয়াকে সহায়তা করে। কেননা আপনি খাবার যত ধীরে ধীরে চিবিয়ে খাবেন সেটা খুব দ্রুত হজম হতে সহায়তা করবে। এছাড়াও কোন খাবার যদি প্রতিবার মুখে ৩৫ থেকে ৫০ বার চিবিয়ে খাওয়া যায় এতে আপনার মুখের মেদও যেমন কমতে থাকবে, এর পাশাপাশি খাবারটি ও ভালো করে মিশিয়ে আপনার পেটে যাবে। যা আপনার হজম শক্তিকে আরো উন্নত করবে। তাই রোগা হতে গেলে অবশ্যই আপনি যে খাবারটি খাচ্ছেন সেটি ভালো করে চিবিয়ে খান এবং খেতে বসে তাড়াহুড়ো না করে ধীরে ধীরে সময় নিয়ে খাবারটি খান। এটি আপনার শরীরকে হজমে সহায়তা করবে এবং শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করবে। ওজন কমানোর ঘরোয়া উপায় গুলির মধ্যে এটি অন্যতম।
৬) খাদ্যতালিকায় ফল, শাকসবজি এবং দানা শস্য জাতীয় খাবার রাখুন
Shutterstock
ওজন কমানোর টিপস মেনে রোগা হতে গেলে অবশ্যই আপনার খাদ্য তালিকার দিকে নজর দিতে হবে। আর সেই তালিকায় খাবারগুলি আপনার যেমন পছন্দসই হতে হবে তেমনই তো আপনার শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় হতে হবে। ওজন কমানোর ক্ষেত্রে খাদ্যতালিকায় প্রোটিন জাতীয় খাদ্য, কম ক্যালরি যুক্ত ফল, সবজি এবং দানাশস্য জাতীয় খাদ্য বেশি মাত্রায় রাখতে হবে। এছাড়াও প্রতিদিন তিনটি আলাদা রকমের ফল, ৫ টি আলাদা ধরনের শাকসবজি এবং ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। এ কারণে আপনি খাদ্যতালিকায় ব্রাউন রাইস, বাদামি পাউরুটি, পপকন, বার্লির মতো গোটা দানা শস্য গুলি অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। এটি আপনার শরীরকে প্রয়োজনীয় ফাইবার সরবরাহ করবে। এই ধরনের খাদ্য গুলি গ্রহণ করার ফলে আপনার পেট অনেকক্ষণ ভর্তি মনে হবে এবং কিছুক্ষণ বাদে বাদে খিদে পাবে না। যার ফলে আপনার উল্টোপাল্টা খাবার প্রবণতাটা ও কমবে এবং শরীর নিজের প্রয়োজনীয় ক্যালোরি কমাতে পারবে। ওজন কমানোর খাবার গুলির মধ্যে এই গুলির কথা অবশ্যই মাথায় রাখবেন যা আপনার শরীরকে একটি নির্দিষ্ট গঠন দিতে সাহায্য করবে।
৭) প্রতিবার খাবারের সাথে প্রোটিন গ্রহণ করুন
দিনে কমপক্ষে তিনটি বড় মিল এবং তিনটি ছোট মিল রাখতে চেষ্টা করুন এবং প্রতিবারই খাবার সময় কিছু পরিমাণ প্রোটিন জাতীয় খাদ্য খাওয়ার চেষ্টা করুন। চর্বিহীন প্রোটিন জাতীয় খাবার গুলি যেমন টক দই, বাদামের মাখন, ডিম, মটরশুঁটি, মাংসের ছোট ছোট অংশ এগুলি খাদ্যতালিকায় রাখার চেষ্টা করুন। কিংবা যে কোন ধরনের সেক এর মাধ্যমে শরীরে প্রোটিন জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করুন। কেননা ওজন কমানোর সময় শরীরে যথাযথ পরিমাণে প্রোটিন জাতীয় খাদ্য সরবরাহ করতে হবে। কারণ এটি শরীরকে সচল রাখার পাশাপাশি শরীরকে পরিশ্রম করার প্রয়োজনীয় শক্তি সম্পাদন করে থাকে। এছাড়া প্রোটিন জাতীয় খাদ্য মেদ কমাতে সহায়তা করে। তাই ওজন কমানোর ক্ষেত্রে খাদ্যতালিকায় প্রোটিন জাতীয় খাবার বেশি পরিমাণে গ্রহণ করার চেষ্টা করুন। খাদ্য গ্রহণের সময় অবশ্যই ওজন কমানোর এই টিপসটি মাথায় রাখুন।
৮) একদিন নিজের সাথে প্রতারণা করতেই পারেন
একনাগাড়ে ডায়েট চার্ট মেনে খাবার খেতে খেতে বিরক্ত হয়ে গেছেন কিংবা একঘেয়ে হয়ে যাচ্ছেন মনে হচ্ছে? এটি যাতে না হয় সেই কারণেই সপ্তাহে ছদিন সুষম খাদ্য গ্রহণ করলেও একটি দিন প্রতারণার দিন হিসেবে অর্থাৎ ‘চিট ডে’ হিসেবে রাখতে পারেন। এই দিনটি আপনার মনের খুশিতে আইসক্রিম, ফুচকা, কোল্ড ড্রিংকস, এগরোল, বিরিয়ানি যা খুশি খেতে পারেন। এই দিন আপনাকে কেউ বাধা দেবে না। কেননা এই একদিন আপনি বাইরের খাবার গ্রহণ করার ফলে শরীর একটু অন্য খাবার গ্রহণ করতে সক্ষম হবে। যার ফলে শরীরেরও একঘেয়ে মনে হবে না। যে কোনো কাজই আমরা যদি প্রতিনিয়ত একভাবে করে থাকি সেক্ষেত্রে আমাদের বিরক্ত যেমন আসে শরীরেরও তেমনি একই ধরনের সাদামাটা খাবার খেয়ে খেয়ে বিরক্ত আসতেই পারে। সেই জন্য ডায়েট অনুসরণ করার সময় অবশ্যই একটি ‘চিট ডে’ রাখবেন। না হলে আপনার কষ্ট করে করা ডায়েটটি হয়তো কার্যকর নাও হতে পারে। তাই ওজন কমাতে গিয়ে বাইরের খাবারকে একেবারেই না করবেন না। একটা দিন রাখুন যেদিন আপনি নিজের পছন্দ মতন খাবার খাবেন।
৯) প্যাকেটজাত পানীয় বর্জন করুন
ওজন কমাতে গিয়ে প্যাকেটজাত পানীয় ভুলেও কিন্তু খেতে যাবেন না। কিংবা হঠাৎ করে ইচ্ছা হল বলে ক্যালোরি বিহীন কোল্ড্রিংসের ক্যান একদম খেতে যাবেন না। কেননা ওগুলি স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে। এটাকে প্যাকেটজাত পানীয়গুলি ক্যালোরিবিহীন দাবি করলেও এই গুলিতে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যা শরীরে উপকারের বদলে অপকারই করে। এমন কি এগুলো আপনার শরীরের ওজন না কমিয়ে বৃদ্ধিতে অংশগ্রহণ করবে। তাই যদি ফলের রস খেতে হয় সেটা বাড়িতে বানিয়ে খান। এছাড়া এই ধরনের প্যাকেটজাত পপানীয় গুলিতে চিনির পরিমাণ বেশি থাকে। তাই এগুলি অতিরিক্ত পান করলে ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে। তাছাড়া এগুলি কত দিনের আগেকার তৈরি তা সঠিক জানা যায় না বলে এগুলির তাজা ভাব নিয়েও সন্দেহ থাকে। তাই ফলের রস খেতে হলে অবশ্যই বাড়িতে মিক্সার এটা তৈরি করে নিন। এটি যেমন স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর এবং শরীরের জন্য যথাযথ।
১০) অতিরিক্ত রন্ধন থেকে বিরত থাকুন
ওজন কমানোর খাবার তৈরি করার সময় সেগুলি অতিরিক্ত রন্ধন করা থেকে বিরত থাকুন। কেননা খাদ্য উপাদান গুলির অতিরিক্ত রন্ধন প্রক্রিয়ার ফলে সেগুলি নিজেদের পুষ্টিগুণ হারাতে পারে। সে কারণে আপনি যে জন্য খাচ্ছেন সেই কারণটাই হয়তো পূরণ হলো না অর্থাৎ যে পুষ্টি গুলি শরীরকে দেওয়ার জন্য আপনি খাবারগুলো খাচ্ছেন সেগুলো হয়তো কার্যসিদ্ধি হলো না। কিংবা শরীর সেই প্রয়োজনীয় উপাদান গুলি গ্রহণ করতে পারল না। তাই কোন রান্নাই বেশিক্ষণ করবেন না। হালকা ভাবে করার চেষ্টা করুন। অতিরিক্ত রান্না করার ফলে খাদ্য উপাদান গুলি পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়, সেগুলি জাঙ্ক খাবারের মতন হয়ে যেতে পারে। তাই ভাপে পদ্ধতিতে কিংবা গ্রিল করে, বেকড করে যেকোনো ধরনের খাবার ওজন কমানোর জন্য আপনি খেতে পারেন। এতে শরীর তার পুষ্টি তাও পাবে এবং আপনার খেতেও ভালো লাগবে। খুব বেশি মসলা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। প্রয়োজনে দিনে তিনবার বড় মিল গুলি নেওয়ার সময় অবশ্যই চার পাঁচটি ফল সবজির মিশ্রনে স্যালাড গ্রহণ করুন এবং রঙিন শাকসবজি খাদ্যতালিকায় রাখুন। এগুলি আপনার মনকে যেমন ভালো রাখবে তেমনি আপনার শরীরকে সুস্থ রাখতে সচেষ্ট হবে। তাই ওজন কমানোর জন্য খুব বেশি রান্না এড়িয়ে চলুন।
১১) রাতের খাবার ৭:৩০ টার আগে খান
খাদ্য তালিকা তৈরীর সময় অবশ্যই মাথায় রাখবেন প্রত্যেকটা খাদ্যের মাঝে যেন দু’ঘণ্টার একটি বিরতি থাকে এবং রাতের শেষ খাওয়া অর্থাৎ ডিনার যাতে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার আগেই হয়ে যায় সেই বিষয়টি নিশ্চিত করবেন। খুব বেশি যদি খিদে পায় সে ক্ষেত্রে ঘুমোতে যাবার আগে মাখন তোলা দুধ কিংবা গ্রিন টি খেতে পারেন। তবে রাতের খাবারটা সেটি অবশ্যই সাড়ে সাতটার মধ্যে শেষ করবেন। কেননা ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত তিন ঘণ্টা আগে রাতের খাবার খাওয়া উচিত। খেয়ে ঘুমোতে যাওয়া একদমই উচিত নয়। এর ফলে খাবার গুলো সঠিক ভাবে হজম হতে পারে না এবং রাত্তিরবেলা সেগুলি পেটের মধ্যে জমে থেকে পেটে এক ধরনের বাড়তি মেদ সৃষ্টি করে। সুতরাং খাবার ৩ ঘণ্টা আগে যদি রাতের খাবারটা সেরে নেওয়া যায় তারপর গল্পের বই পড়ুন, টিভি দেখুন, বা যেকোন হালকা কাজ আপনি করে নিতে পারেন। যার ফলে ঘুমাতে যাওয়ার আগেই সেই খাবারটি হজম হয়ে যাবে। তাই যদি খিদে পেয়ে যায় ঘুমোতে যাওয়ার আগে সে ক্ষেত্রে এক কাপ গ্রিন-টি কিংবা অল্প মাখন তোলা দুধ কিংবা জল খেয়ে আপনি সেই সামরিক ক্ষুধাটা নিবারণ করতে পারেন। অথবা আপনি যদি খাওয়া থেকে রাত্রিবেলা বিরত থাকতে চান সে ক্ষেত্রে তখন দাঁত ব্রাশ করে নিন, এতে খিদের যে ইচ্ছাটা সেটা আপনি ভুলে যাবেন এবং আপনি সুস্থ এবং স্বাস্থ্যকর থাকতে পারবেন এবং ওজন কমানোর বিষয়ে আপনি আর এক ধাপ এগিয়ে যাবেন। ওজন কমানোর জন্য এই ঘরোয়া উপায় গুলি অবলম্বন করুন দেখবেন খুব দ্রুতই আপনার পছন্দের পোশাক টা আপনি পড়তে পারছেন।
১২) আপনার খাদ্য তালিকায় নজর দিন
আপনি সারাদিন কি ধরনের খাবার খাচ্ছেন কিংবা আপনার খাদ্য তালিকার খাদ্য গুলির দ্বারা আপনার শরীরের প্রয়োজন মিটছে কিনা সেই বিষয়টি অবশ্যই মাথায় রাখবেন। কেননা ওজন কমাতে গিয়ে যদি কোন রকম খাবারের পরিমাণ কমে যায় সে ক্ষেত্রে ওজন কমার পাশাপাশি আপনি শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে যাবেন এবং শরীরের অনাক্রমতা ক্ষমতাও লোপ পাবে এবং শরীর অসুস্থ হয়ে উঠবে। তাই শরীরকে সুস্থ সম্মতভাবে তন্বী করে তোলার জন্য রোগা হওয়ার উপায় গুলি অবলম্বন করার পাশাপাশি অবশ্যই আপনার খাদ্যতালিকায় নজর দিতে হবে। যাতে খাদ্যতালিকায় কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন, মিনারেল জাতীয় উপাদান গুলি সঠিক মাত্রায় থাকে। যা আপনার শরীরকে সুস্থ এবং স্বাস্থ্যকর করে তুলবে। আর নিজেকে স্বাস্থ্যকর রাখলে আপনি যেমন অন্য একজনের প্রেরণা হবেন তেমনি আপনার মন ভালো থাকবে নিজেকে সুস্থ দেখে। এর পাশাপাশি ওজন কমানোর জন্য ব্যায়াম করতে ভুলবেন না যেন।
১৩) নিজেকে হাইড্রেটেড রাখার চেষ্টা করুন
Shutterstock
ওজন কমানোর উপায় গুলি অবলম্বন করার পাশাপাশি যে বিষয়টি আপনাকে মাথায় রাখতে হবে, একটি সুষম খাদ্য তালিকা যেমন প্রয়োজন, তেমনি সঠিক জীবনযাত্রা এবং ব্যায়াম আপনাকে আপনার পুরনো চেহারা ফেরত দিতে পারে। কিন্তু সেই সঙ্গে অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে ডায়েট চার্ট অনুসরণ করে যেমনি খাবারগুলো খাচ্ছেন তার পাশাপাশি দৈনিক ৮ থেকে ১০ গ্লাস জল আপনাকে খেতে হবে। সঠিক পরিমাণে জল পান করলে শরীর থেকে প্রয়োজনীয় টক্সিন বের হয়ে যেতে যেমন সাহায্য করবে তেমনি খারাপ জিনিসগুলিও জল এর মাধ্যমে আপনার শরীর থেকে বেরিয়ে যাবে। তাই দৈনিক যারা কঠোর পরিশ্রম করেন মোটামুটি চার থেকে পাঁচ লিটার জল খেতে হবে। অন্যথায় যারা সাধারন পরিশ্রমী কিংবা কম পরিশ্রমী দৈনিক তাদের ৩ লিটার করে জল পান করতে হবে। কেননা ওজন কমানোর উপায় গুলির মধ্যে অন্যতম একটি উপায় হলো জল পান। শরীরে যদি জল পানের পরিমাণ কম দেখা যায় সে ক্ষেত্রে আপনি ক্লান্ত বোধ করতে পারেন কিংবা শরীর অবসন্ন থাকতে পারে। এর পাশাপাশি এর প্রভাব আপনার বিপাক প্রক্রিয়াতেও পড়তে পারে। যার ফলে শরীর থেকে চর্বি কমার বদলে সেটা বেড়ে যেতে পারে। প্রয়োজনীয় জল না খেলে যে খাদ্য গুলি আপনি খাচ্ছেন সেটি আপনার বিপাক ক্রিয়াকে সচল করতে পারবে না, যার ফলে আপনার ওজন কমানোর ক্ষেত্রে সেটি বাধা দান করবে। তাই ঘরোয়া উপায়ে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে নিজেকে রোগা করতে গেলে অবশ্যই খাদ্যতালিকায় জলের পরিমাণটা নির্দিষ্ট রাখুন। প্রয়োজন হলে ফোনে অ্যালার্ম দিয়ে রাখুন কখন কতটা পরিমাণে জল আপনি গ্রহণ করবেন। সেটি যাতে আপনার মনে থাকে, সে কারণে। কেননা সঠিক মাত্রায় জল গ্রহণ না করলে আপনার শরীর আর্দ্রতা হারাবে এবং শুষ্ক হয়ে উঠবে যার ফলস্বরূপ আপনার ওজন কমাতে এটি বাধা দান করবে। মেয়েদের ওজন কমানোর ক্ষেত্রে এটি একটি প্রয়োজনীয় উপায়।
১৪) প্রতিটি পদক্ষেপ গণনা করুন
দৈনিক ব্যস্ততার মাঝে কিংবা কাজের চাপে আমরা হয়তো ভুলেই যাই আমাদের হাঁটাচলাটাও খুব প্রয়োজনীয়। সে ক্ষেত্রে যদি সময় করে মর্নিং ওয়াক, ইভিনিং ওয়াকে যেতে না পারেন আপনার কাজের মধ্যেই আপনি আপনার প্রয়োজনীয় হাঁটা টা কিন্তু সেরে ফেলতে পারেন। একভাবে অফিসে বসে কাজ করতে করতে একঘেয়ে হয়ে যেতেই পারেন, তাই কাজের মাঝে ৩০ মিনিট অন্তর অন্তর যদি পাঁচ মিনিটের জন্য হাঁটাচলা করে নেন কিংবা বাড়িতে থাকাকালীন একভাবে ঘন্টার পর ঘন্টা না বসে যদি এক ঘন্টা পর পর পনেরো থেকে কুড়ি মিনিট ঘরের মধ্যে হাঁটা চলার অভ্যাস গড়ে তোলেন তাহলে এটি আপনার শরীরকে আরো সচল করে তুলবে এবং আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করবে। এছাড়াও অফিসে যাওয়া, স্কুল পৌঁছানোর ক্ষেত্রে যদি ছোটখাটো যানবাহনের ব্যবহার না করে আপনার দুটো পাকে এই কাজে লাগান এক্ষেত্রে আখেরে লাভ আপনারই। অফিসে ওপরে সিঁড়ি ভেঙ্গে ওঠার জন্য লিফটের ব্যবহার বন্ধ করুন, দিয়ে হেটে যান। এর ফলে আপনার শরীর ভালো থাকবে। অফিস থেকে এসে সম্ভব হলে একটু ইভিনিং ওয়াক করুন কিংবা আপনার পোষা প্রাণীকে নিয়ে একটু বাইরে ঘুরে আসুন। এতে আপনার মনটা যেমন পরিবর্তন হবে তেমনি আপনার শরীরটা ও স্বাস্থ্যজ্জ্বল হয়ে উঠবে। এবং চেষ্টা করুন সারা দিন আপনি কয়বার হাঁটলেন সেই পদক্ষেপগুলি গোনার। সম্ভব না হলে মোটামুটি একটি হিসাব করে নিন, আপনি কতটা হাঁটলে পরে সেটি আপনার শরীরের পক্ষে ভালো। কেননা শরীরকে যতটা সচল রাখবেন আপনার ওজন কমানোর ক্ষেত্রে এটা আরো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। তাই ওজন যদি সত্যিই কমাতে চান রোগা হতে গেলে মেয়েদের ওজন কমানোর উপায় গুলির মধ্যে অবশ্যই হাঁটাচলা করতে হবে।
১৫) মন ভরে হাসুন
Shutterstock
অবাক হচ্ছেন তো? ভাবছেন ওজন কমানোর ক্ষেত্রে হাসির ভূমিকা কি? ওজন কমাতে হাসির ভূমিকা সর্বাগ্রে। এটি ওজন কমানোর অন্যতম একটি ঘরোয়া উপায়। কেননা একটি সুস্থ মনই একটি সুস্থ শরীর গঠন করতে পারে। এছাড়াও দৈনিক যদি একটি নির্দিষ্ট সময় করে হাসা যায় এটি আপনার হার্ট রেট কে সঠিক রাখে এবং শরীরের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে। এছাড়াও আপনার শরীরের পেশিগুলিকে এক ধরনের টান অনুভব করে, যেগুলি আপনার শরীরকে সুস্থ এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও হাসির মধ্য দিয়ে দৈনিক প্রায় কিছু ক্যালোরি কমানো যায় যেটি আপনাকে রোগা করে তুলতে অত্যন্ত সহায়তা করবে। তাই দিনে ১০ থেকে ১৫ মিনিট আপনি যদি সময় করে হাসতে পারেন সে ক্ষেত্রে আপনার ৫০ ক্যালোরি মত আপনার শরীর থেকে কমতে পারে। বছরের শেষে যেটা গিয়ে দাঁড়ায় চার থেকে পাঁচ পাউন্ড। সুতরাং এই ফ্যাটই আপনি বিনা পরিশ্রমে কেবলমাত্র মনকে খুশি দিয়েই কিংবা হেসেই কমাতে পারে। তাই আর এখন ভাবছেন কেন? ডায়েটিং ছাড়াই আপনি বছরে চার থেকে পাঁচ পাউন্ড ওয়েট কমাচ্ছেন কেবলমাত্র হেসে। তাহলে আর অপেক্ষা কিসের? দিনে একটা নির্দিষ্ট সময় বার করে নিন হাসার জন্য এবং নিজেকে খুশি রাখার জন্য। এই কারণেই ওজন কমানোর ক্ষেত্রে হাসির গুরুত্ব অনেক।
১৬) প্রক্রিয়াজাত খাদ্য এড়িয়ে চলুন
বাজারজাত যেকোনো ধরনের প্রক্রিয়াজাত কিংবা প্যাকেটজাত খাদ্য গুলি এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। কেননা এই ধরনের খাদ্য গুলি চটজলদি তৈরি করা গেলেও এর মধ্যে স্বাস্থ্যকর কোন পুষ্টিগুণ থাকে না। বরং এটি শরীরে বাড়তি ফ্যাট প্রদান করে যেগুলি আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তাই ঘরে তৈরি খাবার তৈরি করে খাওয়ার চেষ্টা করুন এবং বাইরের খাবার গুলো এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। তবে একেবারে বন্ধ না করে এগু���ো আপনি আপনার ‘চিট ডে’তেও খেতে পারেন। একদিন যদি এগুলি খান সে ক্ষেত্রে বাকি ৬ দিনের সেই ক্যালোরিটা পূরণ হয়ে যাবে। কিন্তু দৈনিক খাবার তালিকা থেকে এই ধরনের প্যাকেটজাত খাবার গুলি কে বাদ দিন এবং দৈনিক কম ক্যালরিযুক্ত পুষ্টিকর খাওয়া গুলিকে নিজের খাদ্য তালিকায় রাখার চেষ্টা করুন। এগুলি আপনাকে খুব তাড়াতাড়ি ওজন কমিয়ে রোগা হতে সাহায্য করবে।
১৭)ভাল করে ঘুমান
Shutterstock
নিজেকে সুস্থ রাখতে ওজন কমিয়ে রোগা করতে গেলে অবশ্যই আপনাকে দিনে ঘুমটা ঠিকমত পূরণ করতে হবে। এটি ওজন কমানোর জন্য একটি অন্যতম ঘরোয়া উপায়। কেননা শরীর একটি যন্ত্রের মত,এর প্রয়োজন বিশ্রামের সেই কথাটা ভুলে গেলে চলবে না। তাই শরীরকে বিশ্রাম দিন। দিনে অন্তত আট ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন। যারা ৪ ঘন্টা কিংবা ৬ ঘণ্টা ঘুমান সে ক্ষেত্রে তাদের শরীরে মেদের পরিমাণ অত্যধিক লক্ষ্য করা যা।য় তাই শরীরকে বিশ্রাম দিন এবং দিনে ৮ ঘণ্টা নিশ্চিন্তে ঘুমানোর চেষ্টা করুন। ঘুমোতে যাওয়ার আগে কোন ধরনের মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ এ কাজ করবেন না। এটি আপনার ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে কিংবা ঘুমের ক্ষতি করতে পারে। সে জন্য আপনি ঘুমানোর জন্য একটা নির্দিষ্ট সময় ঠিক করে নিন। যে সময়টি আপনি ভালভাবে ঘুমাতে পারবেন। আমরা যখন ঘুমিয়ে থাকি শরীর কিন্তু তখন তার ক্ষত নিরাময়ের কাজগুলি সেরে ফেলে এবং পাচন ক্রিয়া সম্পন্ন করে। সারাদিন ধরে যে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট জাতীয় খাবার গুলি আপনি গ্রহণ করলেন সেই খাদ্যগুলির পাচন প্রক্রিয়াটাকে যথাযথভাবে সম্পন্ন করতে সহায়তা করে। তাই ঘুম যদি কম হয় সে ক্ষেত্রে হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে কিংবা ইনসুলিনের পরিমাণ শরীরে বেড়ে যেতে পারে। যার ফলে বিভিন্ন ধরনের রোগ দেখা দিতে পারে। তাই রাতে সঠিক পরিমাণে ঘুমান। মোট ৮ ঘন্টা ঘুমালে এটি আপনার ওজন কমাতেও সাহায্য করে আপনাকে রোগা করে তুলবে। কেননা রাতে ভালো ঘুম না হলে এটি আপনার শরীরে মেদ বৃদ্ধি করতে সহায়তা করবে।
১৮) মেডিটেশন করুন
দিনের শুরুতে ভোরবেলা অন্তত ১০ মিনিট মেডিটেশন করুন। কেননা আমাদের জীবনের মানসিক চিন্তা, স্ট্রেস কিংবা বিভিন্ন চাপ, বিষণ্ণতা ইত্যাদি নানান ধরনের নেতিবাচক আবেগ আমাদের শরীরের ওপর প্রভাব ফেলে। যার ফলে ওজন বৃদ্ধি হতে পারে। তাই নিজেকে সুস্থ রাখতে এবং ওজন কমানোর জন্য অবশ্যই আপনাকে ইতিবাচক চিন্তা ধারা করতে হবে। এজন্য নিজের মনকে শান্ত করুন এবং রোজ সকালবেলা ১০ মিনিট করে মেডিটেশন করুন। দৈনিক মেডিটেশন করার ফলে শরীর তার প্রয়োজনীয় অক্সিজেন গ্রহণ করতে পারবে। কেননা যদি আমরা অত্যধিক চিন্তা বা স্ট্রেস এর মধ্য দিয়ে জীবন যাপন করি সে ক্ষেত্রে শরীর তার প্রয়োজনীয় অক্সিজেন গ্রহণ করতে পারে না, যার ফলে শরীরের সর্বাঙ্গে রক্ত সঞ্চালন ঠিক ভাবে হয় না। ফলস্বরূপ আমাদের ওজন বৃদ্ধি হয়। তাই নিজেকে সুস্থ এবং রোগা করে তুলতে অবশ্যই দৈনিক ১০ মিনিট করে মেডিটেশন করুন। এবং ওজন কমানোর জন্য ব্যায়াম ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, এটি আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করবে।
১৯) প্রেরণামূলক উক্তি পড়ুন
ওজন কমানোর জন্য ডায়েটিং ছাড়াও বেশ কয়েকটি বিষয় আছে যেগুলি আমরা মেনে চললে আমাদের খুব সহজেই ওজন কমবে। তার মধ্যে অন্যতম হলো প্রেরণামূলক উক্তি পড়া। দৈনিক যদি আপনি বেশি মাত্রায় ইতিবাচক চিন্তা ভাবনা করেন কিংবা নিজেকে প্রেরণা দিতে পারেন সে ক্ষেত্রে আপনি ওজন কমাতে সচেষ্ট হবেন। ডায়েট করার পাশাপাশি আপনি যে কাজটি দিনে পছন্দ করেন সে খেলাধুলা হোক ছবি আঁকা হোক সেই কাজটি করার চেষ্টা করুন এবং আপনার ঘরের বিভিন্ন কোণে সেই কাজটি সম্পর্কে নিজের লেখা বিভিন্ন ধরনের প্রেরণামূলক উক্তি লিখে রাখুন। এটি দৈনিক যখন আপনার চোখে পড়বে, আপনার মনে এক ধরনের প্রেরণা সৃষ্টি হবে। যার ফলে দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যেই আপনি ডায়েটিং ছাড়াও কিছু পরিমান ওজন কমাতে সচেষ্ট হবেন এবং দৈনিক এই কাজটি করতে করতে আপনার দৈনন্দিন জীবনে অভ্যাসে পরিণত হবে। তাই নিজের শরীরকে সুস্থ করে তুলতে এবং নিজেকে ওজন কমিয়ে রোগা করে তুলতে অবশ্যই প্রেরণামূলক উদ্ধৃতিগুলি লেখার এবং পড়ার অভ্যাস করুন।
ওজন কমানোয় ডায়েট এর ভূমিকা : Diet for Weight Loss in Bengali
Shutterstock
ওজন কমানোর জন্য আমাদের মাথায় প্রথম যে বিষয়টি আসে সেটি হলো আমাদের খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দিতে হবে। আর এটি হলো প্রথম ওজন কমানোর ক্ষেত্রে আমাদের ভুল পদক্ষেপ। কেন না রোগা হতে গেলে অর্থাৎ ওজন কমাতে গেলে আমাদের খাওয়া টাকে আরও বাড়াতে হবে, আর এটাই হল ওজন কমানোর মূল উপায়। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। তবে অবশ্যই আপনার খাদ্য তালিকা যাতে সুষম খাদ্য দ্বারা পরিপূর্ণ হয় সেই বিষয়টিকে মাথায় রাখতে হবে। ওজন কমাবো বলে এই নয় খাবার দাবার তালিকা থেকে সব খাবার বাদ দিয়ে কেবল সারাদিন কাঁচা শাকসবজি খাচ্ছি কিংবা ফল খাচ্ছি। রোগা হতে গেলে আমাদের সর্বপ্রথম প্রয়োজন আমাদের শরীর অনুযায়ী একটি উন্নত ডায়েট চার্ট এবং তা অবশ্যই একজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ডায়েটিশিয়ানের থেকে তৈরি করে নেওয়া উচিত, ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে। কেননা ওজন কমাতে গিয়ে যাতে আপনার শরীরে পুষ্টির ঘাটতি না হয় সেই বিষয়টিকে খেয়াল রাখবেন। শরীরে পুষ্টির ঘাটতি হলে আপনি দুর্বল হয়ে যাবেন, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাবে এবং অবশেষে শরীর রোগে জরাজীর্ণ হবে। তাই জেনে নিন ওজন কমানোর ক্ষেত্রে ডায়েটের ভূমিকা কি?
১) ওজন কমানোর ক্ষেত্রে ডায়েট প্রয়োজনীয় কেন?
ওজন কমানোর খাবার গুলির মধ্যে অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে যাতে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন, মিনারেলস সব ধরনের খাবার আপনার খাদ্যতালিকায় থাকে এবং রোগা হতে গেলে অবশ্যই আপনার একটি নির্দিষ্ট খাদ্য তালিকা করে নিতে হবে। যেই তালিকায় আপনার শরীরের উপযোগী সঠিক খাদ্য থাকবে। রোগা হব মানে এই নয় খাদ্য তালিকা থেকে কার্বোহাইড্রেট ফ্যাট সম্পূর্ণরূপে বাদ দিয়ে দেব, কেননা ওজন কমাতে গেলে আমাদের শরীরে বেশ কিছু ভালো কার্বোহাইড্রেট কিংবা ভালো ফ্যাট এর প্রয়োজন আছে। তাই আপনার শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী একটি ডায়েট চার্ট তৈরি করে নিন। যেখানে আপনি কী কী খাবেন আর কী কী খাবেন না তা স্পষ্ট থাকবে। এর পাশাপাশি আপনার শরীরে অন্যান্য কোন যদি সমস্যা থাকে সেই বিষয়গুলির কথা মাথায় রেখেই আপনার ডায়েট চার্ট তৈরি হবে। সেটি যেকোনো প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ডায়েটিশিয়ানের থেকে আপনি তৈরি করে নিতে পারেন অথবা ইন্টারনেট দেখেও ক্যালোরি গুনে নিয়ে আপনি সেটি তৈরি করতে পারেন।
২) আপনার ডায়েট চার্ট জানুন
ওজন কমানোর জন্য ডায়েট চার্ট তৈরির ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম আপনার শরীরের জন্য কত পরিমান কিংবা কত ক্যালরির খাদ্য প্রয়োজন সেটা জানুন। এজন্য বি এম আর ক্যালকুলেটর এ আপনার বয়স, উচ্চতা এবং শারীরিক ওজন এবং আপনি দৈনিক কতটা পরিশ্রম করেন সেই বিষয়টি নথিভুক্ত করলেই আপনার দৈনিক কত পরিমান খাদ্য প্রয়োজন সেটি আপনি পেয়ে যাবেন। তবে সাধারনত একজন কম পরিশ্রমী মহিলার দৈনিক ১৫০০ থেকে ২০০০ ক্যালরি খাদ্য প্রয়োজন এবং একজন পুরুষের ক্ষেত্রে এই পরিমাণটা ২০০০ থেকে ২৫০০ ক্যালোরি। এবার পরিশ্রমের ওপর নির্ভর করে এই পরিমাণটা কখনো বৃদ্ধি পায় কিংবা কখনো কমে। তাই সবার প্রথমে আপনার কত পরিমান ক্যালরি প্রয়োজন সেটি আপনি জানুন। এর পাশাপাশি খাদ্যতালিকায় প্রোটিন জাতীয় খাদ্য বেশিরভাগ রাখার চেষ্টা কর��ন। কেননা খাদ্য তালিকায় অতিরিক্ত প্রোটিন রাখলেই তা ওজন কমাতে সহায়তা করে। এর পাশাপাশি দিনের শুরুতে একটি পানীয় পান করুন যেটি আপনার শরীর থেকে মেদ কমাতে সহায়তা করে। সে ক্ষেত্রে আপনি ওজন কমানোর উপায় গুলি অবলম্বন করলে আপনি অনেকটা সাহায্য পাবেন। এর পাশাপাশি সমস্ত ধরনের পুষ্টি উপাদানের সমন্বয়ে একটি নিজের জন্য খাদ্য তালিকা প্রস্তুত করুন।
৩) খাবার মাঝে বিরতি খুব বেশি দেবেন না
প্রত্যেকটি খাবারের মাঝে অন্তত দু’ঘণ্টার বিরতি দিন। এই দু ঘন্টা অন্তর অন্তর একবার বড় মিল এবং একবার ছোট মিল নিন। সেই মতন আপনার খাদ্য তালিকা প্রস্তুত করে নিন, যে সারাদিন কি কি খাদ্য কোন কোন সময় আপনি খেতে পছন্দ করবেন। কেননা পেট যদি বেশীক্ষণ খালি থাকে সে ক্ষেত্রে খিদের প্রবণতা বৃদ্ধি পায় আর খিদে পেটে অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা সকলের মধ্যে লক্ষ্য করা যায়। যার ফলে শরীরে মেদ জমতে সৃষ্টি হয়। কেননা শরীর তার প্রয়োজনীয় খাবার সংগ্রহ করার পর বাকিটা পেটে চর্বি হিসেবে জমতে শুরু করে। তাই খাবার মাঝে দু ঘণ্টা করে বিরতি দিন এবং পরবর্তী আহারটা সময় মত গ্রহণ করার চেষ্টা করুন। বাড়িতে থাকুন’ কিংবা বাইরে এই খাদ্যাভ্যাস মেনে চলার চেষ্টা করুন। এটি তাহলে খুব সহজে আপনার ওজন কমাতে সহায়তা করবে। এই ভাবে যদি এক মাস আপনি সব দিক ঠিক মতন পালন করে চলতে পারেন এক মাস বাদেই ওজন মাপার যন্ত্রে আপনি চমৎকার টা লক্ষ্য করতে পারবেন। তখন নিজেরই নিজেকে দেখে আরো ভালো লাগবে। তাহলে সেই দিনটির জন্য অপেক্ষা করুন আর রোজ দৈনিক খাদ্য তালিকা এবং শারীরিক চর্চা সঠিক ভাবে করুন, যাতে খুব কম সময়ে ওজন কমিয়ে নিজেকে রোগা করে তুলতে পারেন।
রোগা হওয়ায় ব্যায়ামের ভূমিকা : Workout for Weight Loss in Bengali
আমরা জানি ওজন কমানোর ক্ষেত্রে আমাদের ৮০% সহায়তা করে ডায়েট এবং ২০% সাহায্য করে ব্যায়াম। তাই দৈনিক কিছু পরিমাণ শারীরিক চর্চা আমাদের করা প্রয়োজন। যদি দৈনিক জিমে যাওয়া সম্ভব না হয় সে ক্ষেত্রে ঘরে বসেই কিছু কিছু ব্যায়াম এবং ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ আপনি করতে পারেন। এর মাধ্যমে আপনি প্রত্যেক সপ্তাহে বেশ কিছু পরিমাণ ওজন কমাতে সচেষ্ট হবেন। ব্যায়ামের মাধ্যমে ওজন কমানোর পাশাপাশি এটি আপনার মনকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। কেননা ওজন কমিয়ে আমরা সকলেই নিজেকে সুন্দর করে দেখতে চাই, আর সে কারণে শরীর যদি সুস্থ থাকে তাহলে মন ভালো থাকে। এর পাশাপাশি দৈনিক ডায়েট এবং শরীর চর্চা করলে একটি স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা পালন করা যায়। তাই বুদ্ধিমানের কাজ হয় দৈনিক ডায়েট করার পাশাপাশি অন্তত ৩০ মিনিট শরীর চর্চা করা। এতে আপনার শরীরের প্রত্যেকটি পেশিতে রক্ত সঞ্চালন সক্রিয় হয়ে উঠবে এবং অঙ্গ প্রত্যঙ্গ গুলি সক্রিয় হয়ে উঠবে। দিনে অন্তত ১০ মিনিট ভোর বেলায় খালি পেটে হাঁটা এবং ৩০ মিনিট ব্যায়াম করা সম্ভব হলে তা ওজন কমানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। ঘরে বসে ওজন কমানোর ক্ষেত্রে কয়েকটি যোগা এবং ব্যায়াম করুন তার মধ্যে অন্যতম হলো পুশ আপ, সুইমিং দৌড়ানো এ।র পাশাপাশি প্রশিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে কিংবা ইন্টারনেট দেখে যোগা করতে পারেন। যেটি আপনার শরীরকে ভেতর থেকে সুস্থ রাখবে এবং শরীরের পেশি গুলিতে রক্ত সঞ্চালনে ত্বরান্বিত করবে।
নিজেকে ভালোবাসুন এবং নিজের খেয়াল রাখুন :
ওজন কমাতে গিয়ে কিংবা রোগা হওয়ার তাগিদে আমরা সাধারণত বিভ্রান্ত হয়ে পড়ি, যার ফলে শরীরকে ভালোবাসতে ভুলে যাই। তখন আমাদের তাগিদ হয় একমাত্র ওজন কমানো। বলা যায় এটি একটি মরণফাঁদ। যার ফলে শরীরের ওজন কমলেও শরীর কিন্তু অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাই আপনি যদি সত্যিই নিজেকে ভালবাসেন শরীরের ওজন কমানোর পাশাপাশি, রোগা হওয়ার পাশাপাশি নিজের সুস্থতার দিকে নজর দেবেন অর্থাৎ নিজেকে আয়নার সামনে সুন্দর রোগা দেখতে চাইলে অবশ্যই নিজেকে এবং নিজের শরীরকে ভালোবাসার চেষ্টা করুন এবং সেটাকে যত্ন করার চেষ্টা করুন। কেননা কোনরকমে একটা ডায়েট চার্ট ফলো করে কিংবা চটজলদি ওজন তো কমিয়ে নিলেন কিন্তু তার কিরূপ খারাপ প্রভাব আপনার শরীরের ওপর পড়তে পারে সেটি সম্পর্কে আপনার ধারনা নাও থাকতে পারে। হঠাৎ করে ওজন কমলে সে ক্ষেত্রে শারীরিক স্বাস্থ্যের ওপর তার প্রভাব পড়ে এবং শারীরিক স্বাস্থ্য যদি খারাপ হয় সে ক্ষেত্রে মানসিক স্বাস্থ্য কিন্তু জর্জরিত হয়ে ওঠে। তাই রোগা হওয়ার তাগিদে এমন কিছু করবেন না যা আপনার শরীরের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলে। ওজন কমাতে হবে বলে এই নয় সেটা শরীরকে ক্ষতি করে বা শরীরকে আঘাত করে। তাই আপনি রোগা হওয়ার ক্ষেত্রে ঘরোয়া উপায় গুলি অবলম্বন করার পাশাপাশি নিজেকে অবশ্যই এমন ভাবে বোঝান যে, শরীরকে আমায় ভালবাসতে হবে। কেননা শরীর যদি অসুস্থ হয়ে পড়ে সে ক্ষেত্রে ওজন কমিয়ে আখেরে ক্ষতি আপনারই। তাই নিজেকে ভালবাসুন, নিজের খেয়াল রাখুন, ওজন কমানোর প্রাকৃতিক উপায় অবলম্বন করুন এবং স্বাস্থ্যসম্মতভাবে যাতে আপনাকে বাইরে থেকে সুন্দর দেখানোর পাশাপাশি আপনার ভেতরটা যেন সুন্দর এবং স্বাস্থ্যজ্জ্বল হয়ে ওঠে।
ঘরোয়া উপায়ে ওজন কমানোর পদ্ধতি গুলি তো আমরা জেনে নিলাম। এবার আমাদের কাজ হল দৈনিক সেগুলি যথাযথভাবে এগুলি মেনে চলা। কেননা দৈনন্দিন কর্মব্যস্ততার জীবনে এক দুদিন এই রুটিন মেনে চলে তিনদিনের দিন অনেকেই আমরা এর মাঝে বিরতি দিয়ে ফেলি, সেই জিনিসটা মাথায় রাখতে হবে সপ্তাহের ছয়দিন নিজেকে সুন্দর তন্বী করে তোলার জন্য সুষম আহার গ্রহণ করতে হবে, শরীরচর্চা করতে হবে এবং পরিমিত পরিমাণে জল পান করতে হবে। তাই নিজেকে সুন্দর করার তাগিদে এমন কিছু করবেন না যা আপনার শরীরের ওপর কু প্রভাব ফেলে। সুস্থ থাকুন, সুন্দর থাকুন, ভালো থাকুন, রোগা হবার উপায় গুলি মেনে চলুন। অবশ্যই এর ফলাফল খুব শীঘ্রই আপনি ওজন যন্ত্রে দেখতে পাবেন কিংবা আয়নায় দেখতে পাবেন। আর সবচেয়ে আনন্দের বিষয় হলো যেই পছন্দের ড্রেসটা আপনি বিয়ে বাড়িতে পড়ে যেতে পারছিলেন না, সেইটা এবার নির্দ্বিধায় পড়ে সুন্দরভাবে আপনি সকলের সামনে নিজেকে উপস্থিত করতে পারবেন। তাই আর অপেক্ষা কিসের আজ থেকেই শুরু করে দিন নিজেকে সুন্দর করার লড়াই এবং মেনে চলুন ওজন কমানোর উপরিউক্ত ঘরোয়া উপায় গুলি।
আপনার কি জানা আছে আরো কোনো রোগা হওয়ার উপায়? তাহলে জানান আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে।
The following two tabs change content below.
Latest posts by StyleCraze (see all)
StyleCraze
Source: https://www.stylecraze.com/bengali/ojon-komanor-ebong-roga-hoar-upay-in-bengali/
0 notes
bartatv-blog · 6 years
Video
youtube
মালয়েশিয়া প্রবাসী বাংলাদেশী এক ‘নষ্ট মেয়ের’ করুণ কাহিনী !! বিদেশে বাংলাদেশী মেয়েরা দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছে- এ অভিযোগ দীর্ঘদিনের। মালয়েশিয়ার এখানে সেখানে মেয়েরা দেহ ব্যবসায় জড়িয়ে আছে বলে প্রায়ই শোনা যায়। ধারনা করা যায়, কলিং ভিসার নামে যে পরিমান মেয়ে মালয়েশিয়া এসেছে তার চেয়ে কয়েকগুন বেশী এসেছে ট্যুরিষ্ট ভিসায় বা কারো বউ সেজে ডিপেন্ডেন্ট ভিসায়। জীবনে স্বচ্ছলতা আনার জন্য একটি মেয়ে যখন মালয়েশিয়া আসে তখন তার চোখে মুখে থাকে রাজ্যের স্বপ্ন। অবশ্য অনেকের সরাসরি যুক্তি ভালো মেয়েরা বিদেশে কাজ করতে আসে না। তাদের উদ্দেশ্য থাকে ভিন্ন। কিন্তু বহু মেয়ের অভিযোগ, খারাপ কাজ করে পয়সা উপার্জন করতে চাইলে মালয়েশিয়া আসতে হয় না, তা বাংলাদেশেই সম্ভব। টেলিফোনে সাথী (ছদ্মনাম) নামের একটি মেয়ে জানায় তার জীবন কাহিনী। যা মালয়েশিয়ার বহু বাংলাদেশী মেয়ের জীবন কাহিনীও প্রায় একই রকম বলে সাথীর দাবী। ছদ্মনাম প্রকাশের শর্তে সেই মেয়েটির সরল স্বীকারোক্তিতে জানিয়েছে “আমি কেন নষ্ট হলাম”। মুন্সীগঞ্জের মেয়ে সাথী। গত কয়েক বছর আগে ট্যুরিষ্ট ভিসায় আসে মালয়েশিয়া। সর্বসাকুল্যে খরচ পরে ১ লাখ টাকা। বর্তমানে থাকে কুয়ালালামপুরের নিলাই এলাকায়। কথা ছিল সে ভালো বেতনে কাজ করবে, মালিক থাকা খাওয়া ও ওয়ার্ক পারমিটের ব্যবস্থা করে দিবে। কিন্তু এখানে এসে সে দেখেতে পায় সব মিথ্যে। প্রতারনার জালে আটকে পড়েছে সে। ওলট পালট হয়ে যায় তার স্বপ্নগুলো। খুঁজে পায় এক অন্ধকার জগৎ। ঘন্টা খানেকের টেলিফোন আলোচনায় সাথী জানায়, আমার একটি সুন্দর সংসার ছিল। স্বামী সন্তান ছিল। বছর দশেক আগে মা বাবার অমতে অল্প বয়সে বাড়ি থেকে পালিয়ে ভালোবেসে বিয়ে ��রেছিল এলাকার এক ছেলেকে। বছর খানেক পর তাদের সংসারে ফুটফুটে একটি মেয়ে আসে। এরপর আস্তে আস্তে চুরমার হতে থাকে সাথীর সুখের সংসার। স্বামী ফেনসিডিলে আসক্ত হয়ে ঘরের আসবাব পত্র সব বিক্রি করতে থাকে। স্বামী ঠিকমত কাজ কর্ম করে না। সংসারে অভাব অনটন দেখা দেয়। ক্রমশঃ বিক্রি হয়ে যায় তার কিছু স্বর্নালংকারও। সাথী প্রতিবাদ করলে নেশাগ্রস্থ স্বামীর মারধর কপালে জুটে। শিশুর দুধ কেনা দূরের কথা ঠিকমত সে ঘরেও ফিরে না। জীবনটা অতিষ্ঠ হয়ে উঠে সাথীর। সে ভাবে কি ভুল সে করেছে। মা বাবার কাছেও মুখ তুলে দাঁড়াতে পারে না। শিক্ষিত মেয়ে সাথী বেঁচে থাকার অবলম্বন খুঁজতে থাকে। অন্ততঃ সন্তানের জন্য কিছু একটা করতে চায় সে। চাকুরীর জন্য এখানে সেখানে ছুটেও লাভ হয় না। তারপর টাকার জন্য নেশাখোর স্বামীর নির্যাতনের মাত্রা আরো বেড়েছে। একসময় পরিচয় হয় ঢাকার ছেলে জসিমের সাথে। তাকে সে ধর্মভাই বলে ডাকে। জসিমও কথা দেয় সে তার জন্য একটা পথ খুঁজে দিবে। মালয়েশিয়ায় যাতায়াত রয়েছে জসিমের। সে সুবাদে সাথীকে মালয়েশিয়া চাকুরীর প্রস্তাব দিলে সাথী খুশীতে আটখানা হয়ে পড়ে সে। কখনো স্বপ্নেই ভাবেনি বিদেশ আসবে। বড় বোনের কাছে লুকিয়ে রাখা স্বর্নালংকার বিক্রি ও ধারকর্জ নিয়ে মালয়েশিয়ায় ট্যুরিষ্ট ভিসায় আসে সাথী। মেয়েটিকে রেখে আসে বোনের কাছে। কিন্তু মালয়েশিয়া এসে জসিমের কথা ও কাজে মিল খুঁজে পায় না সে। জসিম তাকে তুলে দেয় বাবুল নামে এক প্রতারক দালালের হাতে। পাসপোর্ট গচ্ছিত থাকে বাবুলের কাছে। এদিকে ভিসার মেয়াদ শেষে ওভার ষ্টে হয়ে পরে সে। এক ঘরে তার বন্দী জীবন কাটে। দেশে রেখে আসা মেয়েটির কথা মনে পড়ে। ইচ্ছে হয় দেশে ফিরে যেতে। কিন্তু সে পথ বন্ধ হয়ে গেছে। বাবুলের কথামত তাকে চলতে হয়। বাবুল তাকে খারাপ প্রস্তাব দেয়, সাথী ঘৃনাভরে তা প্রত্যাখ্যান করে। বাবুল ও তার দু’বন্ধু এক রাতে মাতাল হয়ে সারা রাত তাকে উপর্যুপরি করে। কোথাও বিচার দেবার পথ থাকে না তার। সাথী বুঝতে পারে তার ঐ ধর্মভাই (?) বাবুলের কাছে তাকে বিক্রি করে গেছে। একদিন অপর এক বাংলাদেশী তাকে চাকুরী দেবার নাম করে সেখান থেকে তাকে পালিয়ে নিয়ে যায় পুচং এলাকায়। কিন্তু সেও চাকুরী না দিয়ে তাকে সে ভোগ করে। এদিকে কয়েকমাস হলো দেশে একটা টাকাও পাঠাতে পারে না সে। এমন কি নিজের জন্যও টাকা উপার্জন করতে পারে না। ঐ ছেলেটিই তার উপার্জনের পথ খুলে দেয়। সাথী এখন সবার। টাকার বিনিময়ে সে এখন দেহ বিক্রি করে। কখনো পুচং, কখনো কাজাং হয়ে তারপর বর্তমানে নিলাইতে ৫টি মেয়ে একসাথে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকছে। টেলিফোনে সাথী জানায়- এখন আমার টাকার অভাব নেই। মাসে ২ থেকে ৫ হাজার রিঙ্গিতও আয় হয়। অবশ্য বাংলাদেশী দালালরা এর একটা অংশ ভাগ পায়। ওরাই খদ্দের জোগাড় করে দেয়। তবে চায়নীজ নিউ ইয়ারে তার ইনকাম হয়েছে সবচেয়ে বেশী ৫ হাজার রিঙ্গিত। সাথী জানায়, মাঝে মধ্যে তার দালালরাই পুলিশের ঝামেলা থাকলে সেটা মেটায়। টেলিফোন আলাপে সাথীকে বলা হয় অনেকের অভিযোগ আপনাদের এসব কর্মকান্ডের কারনে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে আপনি কি বলবেন? প্রতিবাদীকন্ঠে জ্বলে উঠে সে। কেন, আমি কি বেশ্যাবৃত্তি করার জন্য মালয়েশিয়া এসেছিলাম না চাকুরী করতে এসেছিলাম? যতগুলো মেয়েকে আমি দেখেছি তারা চাকুরী করতে এসে বাংলাদেশী ছেলেদের কারনেই এদেশে এ পেশায় এসেছে। পরিস্থিতি তাকে বাধ্য করেছে। মেয়েরা ছেলেদের কাছে গেলে বেশ্যা হয়, আর ছেলেরা মেয়েদের কাছে গেলে হয় বাদশা। আমাদের জন্য যদি দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয় তাহলে ছেলেরা কেন আমাদের কাছে আসে? তারাতো দেশে বাপ মা কে টাকা না পাঠিয়ে ইন্দোনেশীয়ান মেয়েদের নিয়েও ফুর্তি করছে। কই কেউ তো বলছে না ওদের জন্য দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। রাস্তা দিয়ে হাঁটলে যারা আমাদের নষ্ট বলে নানা মন্তব্য করে তারাই চোরের মতো আমাদের কাছে এসে তাদের ক্ষুধা মেটায়। আমার কাছে রাতের অন্ধকারে বড় বড় বাংলাদেশী ব্যবসায়ী ও নামী দামী বাংলাদেশী লোকও আসে। যদি এদের মুখোশটা খুলে দেই তখন ঐ ভদ্রলোকদের অবস্থাটা কি দাঁড়াবে? দালালরা যখন মালয়েশিয়ায় লোক এনে এখানে সেখানে ফেলে রাখে, দু’নম্বরী কাজ করে, অপহরন করে তখন দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হয় না। আর আমরা পয়সার জন্য দেহ বিক্রি করলে ভাবমূর্তি নষ্ট হয়ে যায়? আমি কেন বেশ্যা হলাম? বাংলাদেশের ঐ নরপশুরাই তো আমাকে বেশ্যা বানিয়েছে। আমি না খ���য়ে দুই দিন এদেশে কাটিয়েছি কেউ তো এসে বলে নি- বোন এই নাও ১০টা টাকা দিলাম এটা দিয়ে খেও। যখন আমি শরীর খুলে দিলাম তখন ওদের টাকার অভাব হয় না। বেশ্যা কে, আমি না ওরা। তাহলে কেন আমাদের ঘাড়ে দোষ চাপানো হয়। সাথীর তীব্র অনুরোধ- দাদা আমার কথাগুলো আপনি পত্রিকায় তুলে ধরবেন। প্রশ্ন করা হয় এ পর্যন্ত দেশে কত টাকা পাঠিয়েছেন? তৃপ্তিমাখা কন্ঠে জানায়, প্রায় ৪ লাখ। মেয়েটি এখন ইংলিশ মিডিয়ামে পড়ছে। দেশে একটা ছোট্ট জায়গা কিনেছি। দেশে যাবেন কবে? কিছুক্ষন নিরুত্তর থেকে সাথী জানায়, কবে যাবো এখনো স্থির করিনি। তবে আর কিছু টাকা হলে আমার একটা স্বপ্ন আছে দেশে গিয়ে একটা ভালো দোকান দেব। মেয়েটিকে ডাক্তার বানাবো।
1 note · View note
paathok · 6 years
Photo
Tumblr media
New Post has been published on https://paathok.news/50135
পুরুষের ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখার সহজ উপায়
Tumblr media
অনেকে মনে করেন, পুরুষেদের রুপচর্চা করার কোনো প্রয়োজন নেই। কিন্তু, এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। ছেলেদের ত্বক মেয়েদের তুলনায় অনেক বেশি পুরু হয়। তাছাড়া এই গরমে ত্বক আরও নিষ্প্রাণ ও তামাটে হয়ে যায়।
অফিসে এসি আবার বাইরে বের হলেই গনগনে রোদ। আবহাওয়ার তারতরম্যের কারণে ত্বকের ওপর অনেক প্রভাব পড়ে। ছেলেদের ত্বকের এই খসখসে ভাব দূর করতে অতিরিক্ত যত্নের প্রয়োজন। তাইতো এখন মেয়েদের পার্লারের পাশাপাশি ছেলেদের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য শহরের বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে ‘জেন্টস পার্লার’।
কিন্তু, পার্লারে যাওয়ার সময় তো আর সবার থাকে না। তাই বাড়িতে বা কাজের ফাঁকে একটু সময় বের করে কিভাবে আপনার ত্বকের যত্ন নিতে পারবেন, আজ আমরা তাই জানাচ্ছি—
রোদ, ধুলাবালি, ঘাম- সব মিলিয়ে তাদের ত্বক রুক্ষ ও মলিন হয়ে পড়লে, দেখা দেয় নানা ধরনের সমস্যা। ব্রণ তো দেখা দেয়ই। তৈলাক্ত ও ঘামে ভেজা ত্বকে ধুলাবালি মিশে লোমকূপ বন্ধ হয়ে গেলে এমনটি ঘটে। ব্রণ হলে প্রতিদিন শেভ না করে একদিন পরপর করাই ভালো। শেভ করার পাঁচ-দশ মিনিট আগে কোনো ভালো ময়শ্চারাইজার লাগানো যেতে পারে।
শেভের আগে রেজারটি অ্যান্টিসেপটিক দিয়ে উষ্ণ গরম পানিতে কিছুক্ষণ ডুবিয়ে রাখা জরুরি। শেভিংয়ের সময় রেজার নিচের দিকে টানতে হবে। অনেকেরই শেভ করার পর ত্বকে র‍্যাশ হয়। সেজন্য হালকা কোনো শেভিং ক্রিম বা ত্বকবান্ধব জেল নয়তো ফোম ব্যবহার করুন।
র‍্যাশ হওয়ার প্রবণতা যাদের রয়েছে, তাদের আফটার শেভ লোশন এড়িয়ে চলা ভালো। শেভিংয়ের পরে কোনো অ্যান্টি-অ্যালার্জিক বা অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম লাগানো জরুরি।
ব্রণ সমস্যায় করণীয়:
ব্রণ সমস্যার জন্য ভালো কোনো পার্লারে গিয়ে হারবাল ফেসিয়াল করতে পারেন। বাসায়ও সে রকম প্যাক তৈরি করা যায়। ব্রণের উপরে দারুচিনি পেস্ট করে ১৫-২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। ময়লা জমে ব্রণ হয়, তাই রুটিনমাফিক ত্বক পরিষ্কার করুন। বারবার পরিষ্কার পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে মুছে নিন।
ব্রণে নখ লাগানো ঠিক নয়। এতে দাগ পড়তে পারে। বেশি ব্রণ এবং সে কারণে ব্যথা বা অস্বস্তি তীব্র হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। প্রচুর পরিমাণ পানি, মৌসুমি ফলমূল ও শাকসবজি খেলে ব্রণ হয় না। বাইরে থেকে ফিরে বেশি করে পানির ঝাপটা এবং ভালো মানের ফেসওয়াশ দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করুন। চা কম খাবেন। রাত জাগবেন না।
সানবার্নে করণীয়:
গরমে ত্বকে ছোপ ছোপ কালো দাগ ও সানবার্ন হয়ে থাকে। ছেলেদের হাতে ও মুখে সানবার্ন বেশি দেখা যায়। তাই বাইরে যাওয়ার অন্তত ১৫ মিনিট আগে সানস্ক্রিন লোশন বা ক্রিম ব্যবহার করুন ত্বকে। আমাদের দেশের আবহাওয়ায় সানস্ক্রিন লোশন বা ক্রিমের এসপিএফ ৪০-৫০ হওয়া দরকার।
প্রতিদিনের ব্যবহার্য কমপ্যাক্ট পাউডারটিও যেন অতি বেগুনী রশ্মি প্রতিরোধক হয়, সেদিকে খেয়াল রাখুন। সানস্ক্রিন লোশন বা ক্রিম লাগানোর ১ ঘণ্টা পর ধুয়ে আবার লাগিয়ে নিন। ১ ঘণ্টা পর সানস্ক্রিন লোশনের কার্যকারিতা থাকে না।
বিকল্প হিসেবে টক দই, গোলাপ জল ও মুলতানি মাটি দিয়ে প্যাক তৈরি করে প্রতিদিন ত্বকে লাগালে দাগ কমে যাবে। আটা, টমেটো ও কাঁচা হলুদের রস দিয়েও প্যাক বানানো যায়। ১৫ মিনিট পর গোলাপ জল দিয়ে মুছে ফেলুন। নিয়মিত ফেসিয়াল করুন।
ধরণ বুঝে ত্বকের যত্ন:
যাদের ত্বক তৈলাক্ত, তারা ঘুমের আগে ভালো মানের ফেসওয়াস দিয়ে মুখ ধুয়ে স্ক্রিন টোনার লাগাতে পারেন। লেবু, শসা দিয়ে প্যাক বানানো যায়। এতে অয়েলি ভাব কমবে, ফ্রেশও লাগবে। তবে দুধ বা দুধের সর এ ধরনের ত্বকে লাগানো ঠিক নয়। দুধের বদলে তিলের পেস্ট লাগাতে পারেন।
শুষ্ক ত্বকে এটি দেয়া যাবে না। এতে ত্বক আরও শুষ্ক হয়ে যায়। দুধ বা অলিভ অয়েল দিয়ে প্যাক বানিয়ে লাগাতে পারেন। ময়শ্চারাইজিং ক্রিম দিতে পারেন ঘুমের আগে। মিশ্র ত্বকে মধু, পেঁপে দিয়ে প্যাক বানিয়ে লাগাতে পারেন।
এছাড়া ফলের রস ত্বক কোমল করার সঙ্গে সঙ্গে রোদে পোড়া ভাব দূর করে। ঘরে বসে যত্নের পাশাপাশি ত্বকের ধরন বুঝে পার্লার থেকে নেয়া যেতে পারে ডিপ ক্লিনজিং, ভিটামিন সি, অ্যান্টি-অক্সি���েন্ট, হার্বাল, স্পেশাল হার্বাল, অ্যালোভেরা, ডায়মন্ড ও ফ্লাওয়ার ফেসিয়াল।
ভালো মানের পার্লারে ফেসিয়াল করুন। তবে ত্বকে বেশি ঘষামাজা করবেন না। এছাড়া দিনে ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করতেই হবে। খাদ্যতালিকায় প্রচুর পরিমাণ ভিটামিনসমৃদ্ধ তাজা ফল ও সবুজ শাকসবজি রাখুন। সতেজ ত্বকের জন্য নিয়মিত পরির্চযার বিকল্প নেই।
0 notes
drhekimrafique-blog · 7 years
Photo
Tumblr media Tumblr media
......   ছেলেদের স্তন ( দুধ / বুক উচু )  মেয়েদের মত  বড় হইলে ছোট করার উপায়, বিনা অপারেশনে,আয়ুর্বেদিক,ইউনানী ঔষধের মাধ্যমে, বিফল প্রমাণে দ্বিগুণ মূল্য ফেরত !   Celeder dud boro hoile choto korar upai    ___  Gynecomastia   (Male Breast Reduction without Surgery)Treatment in Bangladesh.
Gynecomastia is a condition that affects men, in which the breast tissues become swelled and take on a fuller look that can be embarrassing for many. It occurs as a result of irregular levels of hormones in the body during puberty.
Gynecomastia can affect one or both breasts and may also have uneven development. The most common signs and symptoms include swollen breast glandular tissue and breast tenderness.
The condition may require medical attention if it is accompanied by pain, swelling and discharge from one or both the nipples.
The most common cause of gynecomastia is changes in the levels of hormones – androgens and estrogens. This can happen due to a variety of reasons including puberty, age, hypogonadism, low testosterone (male hormone), hyperthyroidism, chemotherapy, radiation treatment, chronic liver disease, exposure to pollutants, kidney failure, use of marijuana, excess alcohol consumption, malnutrition, and side effects of certain medications. Being overweight can also add to the problem.
Though not a serious problem, many men find it really tough to cope with the condition and opt for medication or even surgery. There are many simple home remedies that may also help treat gynecomastia. Also, the problem may regress over time. মেয়েদের স্তন যেমন মেয়েদের জন্য গর্ব অথচ ছেলেদের বেলায় এ চরম লজ্জা। অনেকে লজ্জায় ... ঘরের বের হতে চান না,গেনজি খুলতে পারেন না ! ছেলেদের বুক গুলোতে দেখা যায়, কারও একটি কি দুটি স্তনেরই স্ফীতি দেখা দিয়েছে, কোনটির আকার ছোট,কোনটি মাঝারী কারো কারো মেয়েদের মত স্তন।এসব সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশে একমাত্র আমরাই আল্লাহর উপর ভরসা রেখে গ্যারান্টির সহিত চিকিৎসা করছি। স্তন কত টুকু বড় এর উপর নির্ভর করে কত দিনের চিকিৎসা নিতে হবে: যথা- স্তন ১ ইঞ্চি মত উচু হলে ২ মাসের ঔষধ নিতে হয়, ২ ইঞ্চি মত উচু হলে ৪ মাসের ঔষধ নিতে হয়।   ১ মাসের ঔষধের মূল্যঃ ১৮৫০ টাকা, ২ মাসের ঔষধের মূল্যঃ ৩২৫০ টাকা, ৪ মাসের ঔষধের মূল্যঃ ৫৭৫০ টাকা ( পাঠানো খরচ সহ )। ভিপি / পার্সেল যোগে ঔষধ পেতে কল করুন 01823 691 003:  আমাদের  বিজ্ঞ হেকীম সাহেবের সাথে সরাসরি কথা বলে পরামর্শ নিন   >>>>>  ২২ বৎসরের অভিজ্ঞ যৌন চিকিৎসক ,গভঃ রেজিষ্টার্ড, প্রথম শ্রেণীর হেকীম (চিকিৎসক),আয়ুর্বেদিক, ইউনানী,হারর্বাল,এ্যালোপ্যাথী,হোমিওপ্যাথীতে সরকারী সনদপ্রাপ্তঃ  ....ডা: হেকীম রফিকুল ইসলাম তালুকদার, VD RMP;DHMS;DUMS (Chittagong). প্রযত্নে: বিকল্প ( আয়ুর্বেদিক,ইউনানী, ) চিকিৎসা, চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ । মোবাইল: ০১৭১৪ ৮৩৯ ৪৫৪ / ০১৮২৩ ৬৯১ ০০৩
0 notes
x-crime · 8 years
Video
youtube
১৮+ মেয়েদের জামা খুলে গোসল করা দেখলে কিভাবে মাথা ঠাণ্ডা রাখা যাই ।। Bangla Choti Golpo Bangla Choti Condom খুলে চোদা, Bangla Choti Condom, condom Story, ভোদার বাল আর ভিজা Bangla Choti Condom, কন্ডম খুলে চোদা bangla choti. ... তালিম পেয়েছি| লুকিয়ে ওর বাবার porno মাগাজিনে নগ্ন মেয়ের ছবি দেখেছি| পশ্চিমা মেয়েদের চমদ্কারশরীর দেখে কেমন যেনো অনুভূতি হত – বিশেষ করে ওদের দুধ আর পাছা দেখে আমি ... অনুভব করলাম| এর বেশি যে ���িছু করা যায় তা আমি জানতাম না তখনো| প্রথম নগ্ন নারী – ১২ বছর বয়স তখন| চটি বই পরার অভ্যেস হয়ে গেছে তখন| আর সুযোগ পেলে বিদেশী পর্নো ... মাথা নামলো| কিছু বলার আগেই কাপড় খুলে ফেল্লো আর শুয়ে পরলো খড়ের গাদার উপর| আমি চটপট নেংটা হলাম আর ওর পাশে শুলাম| হাথ দিয়ে ওর দুধ, পাছা আর ভোদা Bangla Choti Condom For more video Subscribe to my Channel :https://goo.gl/RB10zf Follow me on twitter : https://twitter.com/XCrime3 Follow me on Facebook : http://ift.tt/2k9BBKa Follow me on google Plus : http://ift.tt/2kbFcYx Watch this video again : https://youtu.be/P5Sr3vjbBEE by X- Crime
0 notes