#বলি��ড
Explore tagged Tumblr posts
Video
youtube
এত কঠিন কথা কেন? বলি ড. এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী | dr enayetullah abbasi waz
0 notes
Link
বিএনপি’র সঙ্গে সংলাপের প্রয়োজনীয়তা আছে বলে আমরা মনো করি না। আমরা কো
0 notes
Text
"বর্ণ"কথা"কণা"
==============
মোঃ রহমত আলী
================
ক ! ক-জানি না কবি কালের,
কলম তুলি কান কাপেছে ঠোটে,
শিক্ষা মাটি মূর্খ বনীল।
খ ! খুলিতে-ই কিতাব চিন্তামন,
তাই খুদ খোয়াবী,চোখ মুন্দী-
কেমন,শুই তো তখন।
গ ! গাধা আমি আমার পালের,
গুণ বীণে গাফিলতির,
গোলকধাঁধার ওজন গুণে।
ঘ ! ঘাড় নুইয়ে কু-নাম শুনি,
যতক-ততক ঘর ছেড়ে ঘর খুঁজি,
ঘাম মুছে নিজ তবনে।
ঙ ! আঙুল নাহি কারো পানে তুলি,
নিজ ঘুম ভাংগি,
আঙ্গুলে তাসবিহ গুণন চলি।
চ ! চামচামি নাহি কারো করি,
চোখ-দেখে-চোখ দেই,
চা পানিতে জিহ্বা ঝাঁঝায় লই।
ছ ! ছাড় নাহি নিজেকে দেই,
ছত্রাকার-সমাজের-ছাড়পত্র-
পাওয়া ছাত্র গুনী কই।
জ ! জবান সামলে-
জবাব দিয়েই জামিন,
জনাব জ্বলি নিজেই,
অন্যান্য না জ্বালাই।
ঝ ! ঝগড়ার ঝংকার-
শুনেও না শুনি-রে,
ঝুপ করেও চুপ,
ঝই ঝামেলা চল এড়িয়ে চলি।
ঞ ! অজ্ঞ আমি কৃতজ্ঞতাপূর্ণ,
মন রতে মিঞা নাহি চাই হতে,
না- কঞ্জুস বনীতে।
ট ! টাকা-টাকা কয় কথা,
বন্ধনহীন টক্কর,টাকা'র না দেই,
টক কথা না কানে লইরে।
ঠ ! ঠোকর খেয়ে ও
ঠিক হলুম না তাই,
ঠকার পরে-ই সঠিক
হুশ পেলুম সমত ভাই।
ড ! ডুব দিয়ে বিষ খায় কে বলো!
ডাক্তার ডেকে না পাই তো,
ডাকাত ধরতে চোর আনাই।
ঢ ! ঢাক বাজিয়ে না কারো
কু-নাম ছড়াই, তবু ঢাঁট(নির্লজ্জ)
লোকের লজ্জা যে নাই।
ণ ! ণা করি ঘুষ-খোরি,
ঘৃণার পাত্র হতে,
ণা হোই ঘৃণ্য যেন,
নিজ ঘুনি কার্যক্রমে।
ত ! তাবলীগ দ্বীনের
হক চালিয়ে যাই,
চল-তবে,সবুর-সবে,তওবা
করে-করি ভাই।
থ ! থলে নেক-আমলে
কর্মে-করি-ভরি,
��াক যে থাক যেমন,
আমি দ্বীনদার বনি।
দ ! দরুদ পড়ি বেশি-বেশি,
তবেই তো হয়, দুঃখের পারে-ই
সুখ সবে পাবো সদা তো।
ধ ! ধার-দেনা শোধ করে'ই আগে,
হায়াৎ রইতে ধরেই রাখি,
ঈমান সবে সব আমূল।
ন ! না পারার কোনো কিছুই নাই,
সবে চলি না বেখেয়ালী তায়,
চোখের পর্দা করে করি ভাই।
প ! পাপি আমি-আমার পাপে,
পাগল বটে তাপে,
পাপ হতে দূর রোতে,
পারি করিত পুণ্য পূর্ণ।
ফ ! ফরজ আমল পূর্ণ করি,
কুফর শির্ক মুক্ত হয়ে,
ফকিরকে দান দিতে-ই থাকি রে।
ব ! বাবার মতো-ন আপন,
কে? বা বলো !
বন্ধু দুঃখের চিনে রাখি,
পথ চলার চলো।
ভ ! ভয় করি সেই
বিচার দিবস ভাই,
ইসলাম সত্য- যখন
কেউ কারো নয়কো তাই।
ম ! মিথ্যা ছাড়া সত্য বলিব,
মায়ের মতন কে আর আছে কে!
এ জগৎ পানে গো।
য ! যে যেমন যোগ্য,
সম্মান করি সমান,
যথাযথ ফরজ আদায়
দিতেই হবে প্রমাণ।
র ! রাত গভীরে নফল
আমল করি কে ? কি ! আদায়,
রাগ করোনা কেউ এ কথায়।
ল ! লাভের অতি আশায়,
সুদ নাহি লই।
লোভ করি-না,
জনে সবে পরাধনের ধ্যানে।
শ ! শিকড় শিক্ষায়-
কি ? বলে কি ! এ,
শক্তি অন্যায় না দেখাই,
দুর্বল সনে হে।
ষ ! ষড়যন্ত্র কারির বশে,
পাষাণ না হোই-
বিষ পাথর সমান,
আপন জনের তরে তে।
স ! সালাম দিতে জবাব না ভুলি,
যেন সালাত আদায় করি,
সদা সত্য-কথা বলি।
হ ! হক কথা বলেই বলি,
হক না খাই কারো,
ফেলে না দেই হালাল-হারাম,
হক আদায় জীবন গড়ি বলো।
ক্ষ ! ক্ষমতাবান জনে
ক্ষণেকের তরে-র,
ক্ষমাশীল হও তবে,
সকলের হ্যাঁ সনের।
ড় ! জোঁড়া না ভাঙ্গী
মোরা বন্ধোনেরি,
জুড়ি-সব জুড়া-করি এক,
রুখি ভাংগনের।
ঢ় ! দৃঢ়নিশ্চয় পরকালে
জবাবদিহি হবেই হবে,
দৃঢ়ীকরণ ঈমান সবে,
করি থীর তবে।
য়! বিয়োগ হয়ছে
রোজ আয়ু আমার।
হায়াত শেষে বন্ধ সব
আমল করা সবার।
ৎ ! অসৎ না রই,
হঠাৎ হবেই মরণ জানি,
সৎ কর্মের-কার্য্যে সুফল
দো-কালে-রবেই।
০৻ ! অহংকার না করি,
মুসলিম যদি হোই,
সংসারের মোমিন সবে
প্রশংসারত এক রবের।
: ! নিঃশ্বাসে প্রতি
আল্লাহর জিকির করি।
তমঃ হতে বেরিয়ে
আলোক পথ ধর চলি।
৺ ! আঁখি বন্ধ করে
নাহি চলাচল করি,
কি? আঁচকর বুক টাঁনটানে,
আকাশ ছুতে পারি।
অ ! অবগত হয়ে
অবচেতন না হোই,
দ্বীন অনুসরণ করি কি?
হাদিস মোতাবেক সবি।
আ ! আলহামদুলিল্লাহ
জপি দিনরাত,
আল্লাহু"আকবর
জপে জিন্দা দিল করি।
ই ! ইনশাআল্লাহ বলি
কালকর্মের আশায়,
ইনসানবনি-ইনসাফে
সমতা কায়েম করি।
ঈ ! ঈমান তো কম-বেশি
সবার-ই আছে,
ঈমানদার কজনে-ই
আল্লাহতায়ালা জানে।
উ ! উপকার করে-না-করি,
কারো আর অপকার,
উদাহরণ ��োই করে অপক্ষপাত।
ঊ ! ঊষা বেলা উঠে
পায়চারি করি,
ঊর্ধ্ব কণ্ঠে কাক,পঙ্খী ডাকি,
দানা রোজ দান করি।
ঋ ! ঋজু হয়ে নেক
রাহে চলো-চলি,
ঋণ করে কভু কেউ
ফুটানি নাহি করি।
ঌ ! পুরাতন বইয়ে পড়েছি-নু
(লী)কার, ব্যবহার নেই তার,
নব পাতায় ছাপানে তাই।
এ ! এ আমার একান্ত
দিলের আওয়াজ,
এক আল্লাহ জিন্দাবাদ-জিন্দাবাদ।
ঐ ! ঐসব বদখত দের
হতে দূর থাকিব,
ঐ এক মজলুম
আওয়াজ কন্ঠে রাখিব।
ও ! ওজনে কম না দেই কভু,
ওয়াদা খেলাফ না করে।
আমানতদারি পুরো করি,
ওস্তাদের সম্মান না ভুলি।
ঔ ! ঔচিত্য গড়ে তুলি,
ঔৎকন্ঠ্য অর্জনের,ঔৎকর্ষ হবেই,
ঔদার্য মহাঔষধ বনিলে ॥
===০২-০২-২০২৩===
অতঃপর কিছু কথা :–
………………………..
আস্সালামুআলাইকুম ,,
………………………..
সাধারণত বাংলা বর্ণমালার বর্ণনা
তো অনেক ধরনের উপমার কথায়
লিখে দেওয়া যায়। এই কবিতায় আমি যত সম্ভব প্রতি বর্ণের বর্ণনা অল্প কথার মধ্যে দেওয়ার চেষ্টা করেছি।মাত্র।
যা আমাদের জীবন বোধের কিছু
অতি প্রয়োজনীয় হতে পারে।
তবে আমার ভুল হতেও পারে উদাহরণ দেওয়ার মধ্য। যেমন:- বানান,ছন্দ,গদ্য, মিলতাল,তুলনা,ইত্যাদি-ইত্যাদি।
এই কবিতায় আমি কাউকে ব্যথিত
করে কিছুই লেখা লিখি নাই।
তবু আমি আন্তরিক ভাবে সব পাঠকের কাছে, অন্তর থেকে- ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। ।সবাইকে-ধন্যবাদ।
……………………………………
0 notes
Photo
#poetryofdrneyamatbhuiyan যদি মুক্তি চাও || ড. নেয়ামত ভূঁইয়া যেয়ো না, থেকে যাও। থাকার ডেরায় শান্তি আছে যাবার পথে ক্লান্তি আছে। ভেবো না-যে আবেগের বশে এ মিনতি করছি; সত্যি বলছি, এ আমার মর্মের আকুতি। আঙ্গিনার ডুমুর পাতায় বাসা বেঁধেছে যে টুনটুনি তাকেও মিনতি করেছিলাম,’থেকে যাও’, আমার মিনতিকে আমলে না নিয়ে সেও চলে গেছে। ক’দিন বাদেই ফিরে এসেছে ডানার সবগুলো পালক খুইয়ে। আবার আস্তানা গাড়ে পরিত্যক্ত বাসায়। আমার সোনার খাঁচায় লালিত ময়নাকে দুধ-কলা দিয়ে কতো যত্নে পুষেছি, কথা শিখিয়েছি , কত্তো আদুরে আলাপ করেছি। অথচ সেও একদিন বলে ওঠে, ‘এতোই যদি ভালবাসো,বন্দিদশা থেকে মুক্ত করে দিলেই তো পারো!’ এর এমন রুঢ়তায় আমার আঁতে ঘা লাগে; খুলে দেই খাঁচার দুয়ার। ময়না উড়ে যায় অজানায়। ক’দিন বাদে দেখি সব সৌন্দর্য হারিয়ে বসে আছে দুয়ার আঁটা জীর্ণ খাঁচাটার উপর। শেখানো সব বুলির মাথা খেয়েছে আবোল-ত��বোল জংলি ভাষা। অথচ দেখো, পায়রাগুলো নিত্যভোরে খোঁপ ছেড়ে যায়, আবার সময় মাফিক ফিরে আসে নিজ নিজ খোঁপের ঠিকানায়। জীবনের নিরাপদ যাপন, বিনোদন, গ্রাসাহরণ বংশবিস্তার— সবি যেন আনন্দ বিহার। তাই আবারো মিনতি করি, যেয়ো না, থেকে যাও। থাকার ডেরায় অনুরাগি ছোঁয়া আছে, স্বস্তি আছে, শান্তি আছে। যাবার পথে অভাবিত ক্লান্তি আছে। সি:সঙ্গ পথ চলায় আছে নানান ঝক্কি ঝামেলা। আছে প্রকাশ্য হায়েনা, অপ্রকাশ্য আততায়ী, গুপ্ত ঘাতক। মাংস শিকারীরা মুক্ত কৃপাণ হাতে ঘুরে বেড়ায় ভোগের লাইসেন্স পকেটে নিয়ে। ওদের কড়াল থাবা কেড়ে নেবে তোমার শুদ্ধ আত্মা। চলে গেলে অধিকার পাবে না; অধিকৃত হবে, রাজ্য হবে না; হবে করদরাজ্য, দেবী না হয়ে বরণ করবে দাসত্ব। মনের প্রজাপতি আর উড়বে না ঝলমলে পাখা মেলে, বড় জোর হতে পারো রঙমহলের রৌনক-রওশন। হয়তো ভাবছো, কবি-প্রেমিক-রাজনীতিজীবিরা সত্যি বলে না। তবু বলছি, আমার কথার সত্যতা যাচাই করার ইচ্ছায় পথে নেমো না। কোন কোন পথ আছে,ও পথে নামলে আর ফেরার পথ থাকে না। তুমি যদি পরিযায়ী পাখি হতে, তেমনটা বলতাম না। কারণ,ওরা পথে নেমে পথ হারায় না। শীতের বলয় থেকে আসে উষ্ণ বলয়ে, আবার ফিরে যায় নিজ নিজ কুলায়, পথের বক্রতার সাধ্যি নেই তাদের পথ ভোলায়। তাই বলি, যেয়ো না, থেকে যাও; যদি মুক্তি চাও তবে বন্ধনে জড়াও, আমার বুকের উষ্ণ মন্ডলে পৃথিবীর সকল স্বপ্নের বীজ বুনে ভবিষ্যের ফসল ফলাও। - #bengalikobita #apoetic #a_poetics #poetryofneyamat #বাংলাকবিতা #Dr_NeyamatUllahBhuiyan #bengalikobita #কবিতা #englishpoetry #ড_নেয়ামতউল্যাভূঁইয়া #poetsofinstagram #গীতিকা #lyricist #গীতিকবিতা #সাহিত্য #poetrybyneyamat #নেয়ামত https://www.instagram.com/p/CneDJq3hCu-/?igshid=NGJjMDIxMWI=
#poetryofdrneyamatbhuiyan#bengalikobita#apoetic#a_poetics#poetryofneyamat#ব#dr_neyamatullahbhuiyan#কব#englishpoetry#ড_ন#poetsofinstagram#গ#lyricist#স#poetrybyneyamat#ন
0 notes
Text
‘হাওয়া’ সিনেমার পরিচালকের বিরুদ্ধে মামলা, যা বললেল তথ্যমন্ত্রী
‘হাওয়া’ সিনেমার পরিচালকের বিরুদ্ধে মামলা, যা বললেল তথ্যমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি সিনেমা আবার দর্শকদের হলে ফিরিয়ে এনেছে। সেই সিনেমাগুলোর একটি ‘হাওয়া’। এর পরিচালকের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। আমি বিদেশে ছিলাম। জানার পরপরই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলি। সেই মামলা প্রত্যাহারের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যে কর্মকর্তা মামলা করেছে তাকে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আইনের…
View On WordPress
0 notes
Photo
New Post has been published on https://paathok.news/150919
মেগা উন্নয়নের নামে মেগা দুর্নীতি করে কানাডায় পাচার করছে আওয়ামী লীগ
.
মেগা উন্নয়নের নামে আওয়ামী লীগ মেগা দুর্নীতি করে লুটপাটের টাকা কানাডার বেগমপাড়ায় পাচার করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, এ দেশে কী করেছে আওয়ামী লীগ? ১০ হাজার কোটি টাকার পদ্মাসেতু লুট করতে করতে ৩০ হাজার কোটি টাকায় নিয়ে গেছে।
মেগা প্রকল্পের নামে মেগা দুর্নীতি করছে। কর্ণফুলী ট্যানেলসহ উড়াল সেতু, সেতু, বড় বড় প্রকল্পের নামে দুর্নীতি করে টাকা কানাডার বেগমপাড়ায় পাচার করছে।
মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) দুপুরে সিলেট জেলা বিএনপির সম্মেলন ও কাউন্সিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে সকাল ১০টায় সিলেটের রেজিস্ট্রি মাঠে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে সম্মেলন শুরু হয়।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর খালেদা জিয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন, যে নেত্রী জনগণকে সঙ্গে নিয়ে স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটিয়েছিলেন; ফখরুদ্দিন-মঈন উদ্দিন সরকারকে সরে যেতে বাধ্য করেছিলেন; সেই নেত্রীকে গৃহবন্দি করে রেখেছে মিথ্যা মামলা দিয়ে। কারণ একটাই, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া বেরিয়ে আসলে হ্যামিলনের বংশীবাদকের মতো মানুষ বেরিয়ে আসবে।
তিনি বলেন, যে নেত্রী হিজাব পরে ১০টাকা কেজিতে চাল খাওয়ানোর কথা বলেছিল, খাইয়েছে? চালের কেজি এখন ৬০/৭০ টাকা। বিনা পয়সায় সার দেওয়ার কথা, দিয়েছে? ইউরিয়া সারের দাম ১২শ টাকা। দ্রব্যমূল্যের দাম এখন বেড়েছে। মানুষের নাগালের বাইরে��� যারা সরকারে আছে, তারা ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট করে দাম বাড়াচ্ছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, যখন যার স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার কথা ছিল, তখন তিনি পাকিস্তানে পালিয়ে গিয়েছিলেন। সেই সময় মেজর জিয়াউর রহমানের কণ্ঠে ভেসে উঠেছিল স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা। যার ঘোষণার মধ্য দিয়ে আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম। মহান নেতা জিয়াউর রহমান তার দর্শন দিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সব দেশপ্রেমিক দলকে নিয়ে বিএনপি গঠন করেছিলেন বাংলাদেশকে রক্ষা করার জন্য, সামনে এগিয়ে নেওয়ার জন্য।
তিনি বলেন, সে সময় ইউলিয়াম মাইলাম ছিলেন বাংলাদেশের মার্কিন রাষ্ট্রদূত। তিনি তার বইয়ে লিখেছিলেন, যদি ১৯৭৫ সালে জিয়াউর রহমান নিহত হতেন, তাহলে বাংলাদেশ হতো আফগানিস্তানের মতো। আমরা সেই নেতার আদর্শে চলি যিনি কেবল সৈনিক, নেতা ছিলেন না, তিনি দূরদৃষ্টিসম্পন্ন রাষ্ট্রনায়ক ছিলেন। তিনি ধ্বংসস্তূপ থেকে বাংলাদেশকে টেনে তুলেছিলেন। আমরা অন্য কোনো জাতীয়তার কথা বলি না, আমরা অন্য কোনো নেতার কথা বলি না, আমরা আমাদের নেতার কথা বলি। তিনি সব শ্রেণির লোকজনকে নিয়ে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের চিন্তা করেছিলেন। এখানে কেবল বাঙালি নয়, অন্যান্য জাতি, উপজাতি, ধর্মের লোক বাস করে। তাই এটা বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ।
তিনি আরও বলেন, আমাদের চিন্তা, কৃষ্টি, ঐতিহ্য আলাদা। পদ্মা, মেঘনা, যমুনার অববাহিকতায় যে ভূখণ্ড, সেই ভূখণ্ড আমরা। পশ্চিম বাংলা, মেঘালয়, ত্রিপুরা নই। আমরা বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদী। আমাদের অস্তিত্বে এটা হিসেবে রাখতে হবে।
ফখরুল ইসলাম বলেন, আজকে যে স্বপ্ন দিয়ে আমরা ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছিলাম, এখানে অনেক মুক্তিযোদ্ধা আছেন। যারা স্বাধীনতা দেখেননি, তারাও আছেন। স্বাধীন দেশের মূল লক্ষ্য ছিল গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চাই। যাতে আমরা আমাদের রাষ্ট্র ও সমাজকে পরিচালনা করতে পারব, চিন্তা-ভাবনাগুলোকে আমরা বিকশিত করতে পারব। একটা সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গড়তে আমরা যুদ্ধ করেছিলাম। যেখানে আমাদের কথা বলার অধিকার থাকবে। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের, যুদ্ধের পর থেকে আওয়ামী লীগ স্বাধীনতা যুদ্ধের নাম করে জাতির সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে।
এ সম্মেলন ও কাউন্সিলে সভাপতিত্ব করছেন সিলেট জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কামরুল হুদা জায়গীদার। সম্মেলন ও কাউন্সিলের উদ্বোধন করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তাহসীনা রুশদীর লুনা।
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত রয়েছেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ জেড এম এম জাহ��দ হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. মো. এনামুল হক চৌধুরী, খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিম উদ্দিন আহমদ, সহ-ক্ষুদ্র ও ঋণ বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, বগুড়া পৌরসভার মেয়র ও দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. রেজাউল করিম বাদশা, ডা. শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, আবুল কাহের চৌধুরী শামীম, হাদিয়া চৌধুরী মুন্নী প্রমুখ।
দলীয় সূত্র জানায়, কাউন্সিলে জেলার আওতাধীন ১৮ ইউনিটের ১ হাজার ৮১৮ জন ভোটার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত করবেন।
0 notes
Text
কৃষি যান্ত্রিকীকরণে আলীম ইন্ড্রাস্ট্রি গুরুত্বপূর্ণ অবদান: কৃষিমন্ত্রী
কৃষি যান্ত্রিকীকরণে আলীম ইন্ড্রাস্ট্রি গুরুত্বপূর্ণ অবদান: কৃষিমন্ত্রী
কৃষিমন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক এমপি বলেছেন, আমাদের কৃষি যান্ত্রিকীকরণে আলীম ইন্ডাস্ট্রি খুবই গুরুত্বপুর্ণ অবদান রেখে আসছে এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের বিষয়। অনেক স্বপ্ন নিয়ে আমরা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি, আমরা সেই স্বপ্ন এখনও পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয় নাই। তবে আমরা এখন স্বপ্ন বাস্তবায়নের মহা সড়কে যুক্ত হয়েছি, যেটাকে আমরা উন্নয়নের মহাসড়ক বলি। আমি আশাবাদী আমাদের তৃতীয় প্রজন্ম আমাদের এই…
View On WordPress
0 notes
Text
দ্রুত মৃত্যুর পথটি হলো হতাশ হয়ে কিছু না করা
'করোনা' নিঃসন্দেহে প্রাণঘাতী। এটা সৃষ্টি করেছে নানা ধরনের, ভয়, আতঙ্ক যা মনের সংক্রমণও। শরীরের সংক্রমণ দূর করার উপায় চিকিৎসা পদ্ধতি দ্বারাই করতে হবে, কিন্তু আত্মপ্রত্যয় জিনিসটা তো নিজেকেই গড়তে হবে।
করোনায় আক্রান্ত হয়েও যারা সুস্থ হয়েছেন, তারা মূলত, ভয়কে জয় করেছেন। তারা সর্বত্র সবসময় স্বচ্ছন্দ সপ্রতিভ-নিজেদের আত্মপ্রত্যয় সংগ্রহ, সঞ্চিত ও বর্ধিত করেছেন।
চিকিৎসকদের মতে, চিকিৎসা পদ্ধতি আত্মপ্রত্যয় গড়ে তুলতে পারে না। যখন অন্যসব কিছু ব্যর্থ হয় তখন শুধু সুতীব্র লক্ষ্য মানুষকে বাঁচিয়ে রাখতে পারে।
ট্যুলেন ইউনিভার্সিটির স্কুল অফ মেডিসিনের ড. জর্জ ই. বার্চের মতে, "সবচেয়ে দ্রুত মৃত্যুর পথটি হলো হতাশ হয়ে কিছুই না করা।" তার এক ক্যান্সার রোগী মিসেস ডি। তার ক্যান্সার ধরা পড়ে তার ছেলের বয়স যখন মাত্র দুবছর। আরও হতাশাজনক অন্ধকারময় হয়ে উঠে যখন তার রোগ নির্ণয়ের মাত্র তিন মাস আগে তার স্বামীর মৃত্যু হয়। আমরা ডাক্তাররা আশার আলো দেখাতে পারিনি। কিন্তু মিসেস ডি কিন্তু হাল ছাড়েননি। উনি জীবীকার জন্য কঠোর পরিশ্রম করে ছোট্ট ছেলেটাকে কলেজ পর্যন্ত পৌঁছে দেবেন- দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ হলেন। বেশ কয়েকবার তার শল্য চিকিৎসা করা হয়। প্রতিবারই আমরা বলতাম, 'মাত্র কয়েক মাস বাঁচবেন।'
ক্যান্সার সম্পূর্ণ সারেনি। তবে ঐ কয়েক মাস বেড়ে দীর্ঘ ২০ বছর হয়েছিলো। মিসেস ডি ঠিকই ছেলের কলেজ পাস করা দেখে গিয়েছিলেন। সুতীব্র বাসনার এতো শক্তি ছিলো যে তার মৃত্যুকে দুদশক যাবৎ ঠেকিয়ে রেখেছিলো। পৃথিবীর কোনো ওষুধই দীর্ঘ জীবন পেয়ে বেঁচে থাকার তীব্র বাসনার মতো শক্তিশালী নয়।
'করোনা' ভয়- অনিশ্চয়তা, হতাশা দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ, লজ্জা ও আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে।
'হাউ টু লিভ ৩৬৫ ডেজ এ ইয়ার' ড. শিন্ডলারের একটি গ্রন্থ। এটি পড়ে পড়ে একটি একটি করে পৃষ্ঠা উল্টাচ্ছিলাম। আর প্রতিটি পৃষ্ঠায় যেনো ভেসে উঠছিলো, প্রাণঘাতী করোনায় নিহত আপন মুখগুলোর প্রতিচ্ছবি। যার মধ্যে বেশ কয়েকজন সাংবাদিক সহকর্মীর মৃত্যু যেমন আমাদের শোক বিহ্বল করেছে, ঠিক তেমনি আবার আমাদের অদম্য সাহস ও মনস্তাত্ত্বিক শক্তিকে বাড়িয়ে দিয়েছেন-বেশ কয়েকজন সাংবাদিক সম্পাদক করোনাকে পরাস্ত করে।
ড. শিন্ডলার বিভিন্ন রোগভোগ নিয়ে কিছু চমকপ্রদ ঘটনার অবতারণা করেছেন। ক্যান্সারে আক্রান্ত এক উকিল বন্ধুর কথা উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, তাকে নাকি ওই বন্ধু ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার খবর শুনে এই মর্মে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন যে, 'মৃত্যুর আগে মরবো না।' ৭৮ বছর বয়স্ক ওই বন্ধুটি শেষ জীবন দর্শন হলো "মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত আমি বেঁচে থাকবো। জীবন ও মৃত্যু দুটিকে দুটিতে গুলিয়ে ফেলবো না। যতদিন এই পৃথিবীতে আছি, আমি বাঁচতে চাই। আধ মরা হয়ে বাঁচবো কেনো? একটা মিনিটও মৃত্যু হয়ে কাটানোর মানে সেই এক মিনিট আমি মৃত, আমি ঐ মূহুর্তে বেঁচে নেই।"
আত্মবিশ্বাস নিয়ে সে আইন ব্যবসায় ব্যস্ত হয়ে পড়লো। পারিবারিক জীবনযাপন ও জীবনকে উপভোগ করার পথে ক্যান্সার কখনই বাধা হয়ে উঠতে পারেনি। ক্যান্সারের সেই রোগীটি ৭৮ এর সঙ্গে আরও ১৯ বছর যোগ করে ৯৭ বছর পর্যন্ত বেঁচে ছিলেন।
ড. একটা প্লেনে চড়ার কাহিনী তিনি বর্ণনা করেছেন এভাবে-প্লেন টেক অফ করার পর, টিক্ টিক্ আওয়াজ শুনে চমকে উঠলাম। পাশের সিটে বসা ভদ্রলোকটির দিকে তাকালাম, আওয়াজটা সেদিক থেকেই আসছিল।
প্রসন্ন হেসে ভদ্রলোক বললেন, 'ভয় নেই, বোমা নয়, এটা আমার হার্টের আওয়াজ।' ২১ দিন আগে ওর একটা অপারেশন হয়, বুকে একটি প্লাস্টিকের বাল্ব বসানো হয়েছে। এই কৃত্রিম বাল্বের চারদিকে নতুন কোষ তৈরি হওয়া পর্যন্ত বেশ কয়েকমাস টিক্ টিক্ আওয়াজ শোনা যাবে। লোকটি বললেন, 'আরে আমার দারুণ সব পরিকল্পনা আছে। মিনেসোটায় ��িরে আমি আইন পড়বো, ডাক্তার বলেছেন প্রথম কয়েকমাস সাবধানে থাকতে হবে, তারপর একদম নতুন মানুষ হয়ে উঠবো।' তিনি বলেন, বেশিরভাগ মানুষই রোগ নিয়ে আক্ষেপ করে নিজেকে অথর্ব করে ফেলে।
একাধিক ডায়াবেটিসের রোগীর উদাহরণ টেনে বলেন, একজন রোগী ডায়াবেটিস যদিও যৎসামান্য তবুও সে প্রায় অর্ধমৃত। আবহাওয়া পরিবর্তনের ভয়ে প্রায় সব সময়ই সে আপাদমস্তক নিজেকে ঢেকে রাখে। সংক্রমণের ভয়ে সে সামান্য সর্দিকাশির লক্ষণ দেখলেই সেখান থেকে পালায়। অতিরিক্ত পরিশ্রমের ভয়ে সে কিছুই কাজ করে না। তার সমস্যাটা 'কি যে ভয়ংকর' সেটা বোঝাতে গিয়ে অন্যদের অতিষ্ঠ করে তোলে। এই ভদ্রলোকটির আসল রোগ কিন্তু ডায়াবেটিস নয়। এক্মকিউসাইটিসের রোগী।
পাশাপাশি আরেকজন ভদ্রলোকের কথা উল্লেখ করে ড. শিন্ডলার বলেন, এই লোকটির রোগ সত্যিই কঠিন ও দূরারোগ্য। উপরোক্ত ভদ্রলোকটির তুলনায় ৩০ গুণ বেশি ইনসুলিন নেন তা সত্ত্বেও রোগ তাকে জব্দ করতে পারে না। কাজ উপভোগ করা, আনন্দ করার জন্য ইনি বেঁচে আছেন। আমাকে একদিন বললেন, 'অসুবিধা তো হয়ই, তা দাড়ি কামানোটাও তো বিরক্তিকর। তাই বলে বসে শুয়ে, দুশ্চিন্তা করে জীবন কাটাবো নাকি? যখনই ইনসুলিন নিই, তখন ইনসুলিনের আবিষ্কারকারককে ধন্যবাদ জানাই।
এক্মকিউসাইটিস নিরাময়ে উপায় সম্পর্কে বলেন, রোগের ব্যাপারে তা যদি জ্বর, সর্দিকাশিও হয়, যত আলোচনা করবেন ততই গুরুতর হয়ে উঠবে। অসুস্থতার ব্যাপারে কথাবার্তা বলা অনেকটা আগাছায় সার দেয়ার মতো।
সম্প্রতি বিশ্ববিখ্যাত মেয়োকিল্লনিক থেকে অবসর নেয়া ড. ওয়াল্টর আলভারেজ লিখেছেন, "আমি সব সময়ই দুশ্চিন্তাগ্রস্তদের চিন্তাভাবনা নিয়ন্ত্রণ করতে বলি। যেমন এক ভদ্রলোক দেখা করতে আসেন- উনি দৃঢ় নিশ্চিত যে তার পিন্ড কোষ রোগাক্রান্ত যদিও আটটি ভিন্ন ভিন্ন এক্সরে তার বদ্ধধারণাকে ভুল প্রমাণ করে। আমি তাকে অনুরোধ করি পিন্ডকোষের আর এক্মরে যেন না করান। হাজার হাজার হার্টসচেতন মানুষকে আমি ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাম করাতে নিষেধ করি।'
অসুস্থ বোধ করার অবিরাম নালিশ বন্ধ করুন, যেমনটি আছেন তাতেই সুখী হন। এই ভালোবোধ নতুন ব্যথা বেদনা ও ব্যাধি থেকে সুরক্ষিত রাখবে।
নিজেকে প্রায় মনে করিয়ে দিন, 'মরচে ধরার চেয়ে ক্ষয়ে যাওয়া ভালো।' হাসপাতালে শয্যাশায়ী পড়ে আছেন এ কথা কল্পনা করে বাঁচতে ভুলে যাবেন না।
লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্��।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন
0 notes
Text
দ্রুত মৃত্যুর পথটি হলো হতাশ হয়ে কিছু না করা
'করোনা' নিঃসন্দেহে প্রাণঘাতী। এটা সৃষ্টি করেছে নানা ধরনের, ভয়, আতঙ্ক যা মনের সংক্রমণও। শরীরের সংক্রমণ দূর করার উপায় চিকিৎসা পদ্ধতি দ্বারাই করতে হবে, কিন্তু আত্মপ্রত্যয় জিনিসটা তো নিজেকেই গড়তে হবে।
করোনায় আক্রান্ত হয়েও যারা সুস্থ হয়েছেন, তারা মূলত, ভয়কে জয় করেছেন। তারা সর্বত্র সবসময় স্বচ্ছন্দ সপ্রতিভ-নিজেদের আত্মপ্রত্যয় সংগ্রহ, সঞ্চিত ও বর্ধিত করেছেন।
চিকিৎসকদের মতে, চিকিৎসা পদ্ধতি আত্মপ্রত্যয় গড়ে তুলতে পারে না। যখন অন্যসব কিছু ব্যর্থ হয় তখন শুধু সুতীব্র লক্ষ্য মানুষকে বাঁচিয়ে রাখতে পারে।
ট্যুলেন ইউনিভার্সিটির স্কুল অফ মেডিসিনের ড. জর্জ ই. বার্চের মতে, "সবচেয়ে দ্রুত মৃত্যুর পথটি হলো হতাশ হয়ে কিছুই না করা।" তার এক ক্যান্সার রোগী মিসেস ডি। তার ক্যান্সার ধরা পড়ে তার ছেলের বয়স যখন মাত্র দুবছর। আরও হতাশাজনক অন্ধকারময় হয়ে উঠে যখন তার রোগ নির্ণয়ের মাত্র তিন মাস আগে তার স্বামীর মৃত্যু হয়। আমরা ডাক্তাররা আশার আলো দেখাতে পারিনি। কিন্তু মিসেস ডি কিন্তু হাল ছাড়েননি। উনি জীবীকার জন্য কঠোর পরিশ্রম করে ছোট্ট ছেলেটাকে কলেজ পর্যন্ত পৌঁছে দেবেন- দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ হলেন। বেশ কয়েকবার তার শল্য চিকিৎসা করা হয়। প্রতিবারই আমরা বলতাম, 'মাত্র কয়েক মাস বাঁচবেন।'
ক্যান্সার সম্পূর্ণ সারেনি। তবে ঐ কয়েক মাস বেড়ে দীর্ঘ ২০ বছর হয়েছিলো। মিসেস ডি ঠিকই ছেলের কলেজ পাস করা দেখে গিয়েছিলেন। সুতীব্র বাসনার এতো শক্তি ছিলো যে তার মৃত্যুকে দুদশক যাবৎ ঠেকিয়ে রেখেছিলো। পৃথিবীর কোনো ওষুধই দীর্ঘ জীবন পেয়ে বেঁচে থাকার তীব্র বাসনার মতো শক্তিশালী নয়।
'করোনা' ভয়- অনিশ্চয়তা, হতাশা দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ, লজ্জা ও আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে।
'হাউ টু লিভ ৩৬৫ ডেজ এ ইয়ার' ড. শিন্ডলারের একটি গ্রন্থ। এটি পড়ে পড়ে একটি একটি করে পৃষ্ঠা উল্টাচ্ছিলাম। আর প্রতিটি পৃষ্ঠায় যেনো ভেসে উঠছিলো, প্রাণঘাতী করোনায় নিহত আপন মুখগুলোর প্রতিচ্ছবি। যার মধ্যে বেশ কয়েকজন সাংবাদিক সহকর্মীর মৃত্যু যেমন আমাদের শোক বিহ্বল করেছে, ঠিক তেমনি আবার আমাদের অদম্য সাহস ও মনস্তাত্ত্বিক শক্তিকে বাড়িয়ে দিয়েছেন-বেশ কয়েকজন সাংবাদিক সম্পাদক করোনাকে পরাস্ত করে।
ড. শিন্ডলার বিভিন্ন রোগভোগ নিয়ে কিছু চমকপ্রদ ঘটনার অবতারণা করেছেন। ক্যান্সারে আক্রান্ত এক উকিল বন্ধুর কথা উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, তাকে নাকি ওই বন্ধু ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার খবর শুনে এই মর্মে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন যে, 'মৃত্যুর আগে মরবো না।' ৭৮ বছর বয়স্ক ওই বন্ধুটি শেষ জীবন দর্শন হলো "মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত আমি বেঁচে থাকবো। জীবন ও মৃত্যু দুটিকে দুটিতে গুলিয়ে ফেলবো না। যতদিন এই পৃথিবীতে আছি, আমি বাঁচতে চাই। আধ মরা হয়ে বাঁচবো কেনো? একটা মিনিটও মৃত্যু হয়ে কাটানোর মানে সেই এক মিনিট আমি মৃত, আমি ঐ মূহুর্তে বেঁচে নেই।"
আত্মবিশ্বাস নিয়ে সে আইন ব্যবসায় ব্যস্ত হয়ে পড়লো। পারিবারিক জীবনযাপন ও জীবনকে উপভোগ করার পথে ক্যান্সার কখনই বাধা হয়ে উঠতে পারেনি। ক্যান্সারের সেই রোগীটি ৭৮ এর সঙ্গে আরও ১৯ বছর যোগ করে ৯৭ বছর পর্যন্ত বেঁচে ছিলেন।
ড. একটা প্লেনে চড়ার কাহিনী তিনি বর্ণনা করেছেন এভাবে-প্লেন টেক অফ করার পর, টিক্ টিক্ আওয়াজ শুনে চমকে উঠলাম। পাশের সিটে বসা ভদ্রলোকটির দিকে তাকালাম, আওয়াজটা সেদিক থেকেই আসছিল।
প্রসন্ন হেসে ভদ্রলোক বললেন, 'ভয় নেই, বোমা নয়, এটা আমার হার্টের আওয়াজ।' ২১ দিন আগে ওর একটা অপারেশন হয়, বুকে একটি প্লাস্টিকের বাল্ব বসানো হয়েছে। এই কৃত্রিম বাল্বের চারদিকে নতুন কোষ তৈরি হওয়া পর্যন্ত বেশ কয়েকমাস টিক্ টিক্ আওয়াজ শোনা যাবে। লোকটি বললেন, 'আরে আমার দারুণ সব পরিকল্পনা আছে। মিনেসোটায় ফিরে আমি আইন পড়বো, ডাক্তার বলেছেন প্রথম কয়েকমাস সাবধানে থাকতে হবে, তারপর একদম নতুন মানুষ হয়ে উঠবো।' তিনি বলেন, বেশিরভাগ মানুষই রোগ নিয়ে আক্ষেপ করে নিজেকে অথর্ব করে ফেলে।
একাধিক ডায়াবেটিসের রোগীর উদাহরণ টেনে বলেন, একজন রোগী ডায়াবেটিস যদিও যৎসামান্য তবুও সে প্রায় অর্ধমৃত। আবহাওয়া পরিবর্তনের ভয়ে প্রায় সব সময়ই সে আপাদমস্তক নিজেকে ঢেকে রাখে। সংক্রমণের ভয়ে সে সামান্য সর্দিকাশির লক্ষণ দেখলেই সেখান থেকে পালায়। অতিরিক্ত পরিশ্রমের ভয়ে সে কিছুই কাজ করে না। তার সমস্যাটা 'কি যে ভয়ংকর' সেটা বোঝাতে গিয়ে অন্যদের অতিষ্ঠ করে তোলে। এই ভদ্রলোকটির আসল রোগ কিন্তু ডায়াবেটিস নয়। এক্মকিউসাইটিসের রোগী।
পাশাপাশি আরেকজন ভদ্রলোকের কথা উল্লেখ করে ড. শিন্ডলার বলেন, এই লোকটির রোগ সত্যিই কঠিন ও দূরারোগ্য। উপরোক্ত ভদ্রলোকটির তুলনায় ৩০ গুণ বেশি ইনসুলিন নেন তা সত্ত্বেও রোগ তাকে জব্দ করতে পারে না। কাজ উপভোগ করা, আনন্দ করার জন্য ইনি বেঁচে আছেন। আমাকে একদিন বললেন, 'অসুবিধা তো হয়ই, তা দাড়ি কামানোটাও তো বিরক্তিকর। তাই বলে বসে শুয়ে, দুশ্চিন্তা করে জীবন কাটাবো নাকি? যখনই ইনসুলিন নিই, তখন ইনসুলিনের আবিষ্কারকারককে ধন্যবাদ জানাই।
এক্মকিউসাইটিস নিরাময়ে উপায় সম্পর্কে বলেন, রোগের ব্যাপারে তা যদি জ্বর, সর্দিকাশিও হয়, যত আলোচনা করবেন ততই গুরুতর হয়ে উঠবে। অসুস্থতার ব্যাপারে কথাবার্তা বলা অনেকটা আগাছায় সার দেয়ার মতো।
সম্প্রতি বিশ্ববিখ্যাত মেয়োকিল্লনিক থেকে অবসর নেয়া ড. ওয়াল্টর আলভারেজ লিখেছেন, "আমি সব সময়ই দুশ্চিন্তাগ্রস্তদের চিন্তাভাবনা নিয়ন্ত্রণ করতে বলি। যেমন এক ভদ্রলোক দেখা করতে আসেন- উনি দৃঢ় নিশ্চিত যে তার পিন্ড কোষ রোগাক্রান্ত যদিও আটটি ভিন্ন ভিন্ন এক্সরে তার বদ্ধধারণাকে ভুল প্রমাণ করে। আমি তাকে অনুরোধ করি পিন্ডকোষের আর এক্মরে যেন না করান। হাজার হাজার হার্টসচেতন মানুষকে আমি ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাম করাতে নিষেধ করি।'
অসুস্থ বোধ করার অবিরাম নালিশ বন্ধ করুন, যেমনটি আছেন তাতেই সুখী হন। এই ভালোবোধ নতুন ব্যথা বেদনা ও ব্যাধি থেকে সুরক্ষিত রাখবে।
নিজেকে প্রায় মনে করিয়ে দিন, 'মরচে ধরার চেয়ে ক্ষয়ে যাওয়া ভালো।' হাসপাতালে শয্যাশায়ী পড়ে আছেন এ কথা কল্পনা করে বাঁচতে ভুলে যাবেন না।
লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন
0 notes
Text
২৫শে মার্চের হত্যাযজ্ঞের পর যেভাবে এল স্বাধীনতার ঘোষণা
সাতই মার্চ শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের পর বোঝা যাচ্ছিল পূর্ব পাকিস্তানের পরিস্থিতি কোন দিকে এগুচ্ছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে ২৫শে মার্চ ছিল একটি নির্মম গণহত্যার দিন। উনিশ'শ একাত্তর সালের ২৫শে মার্চ রাতে নিরস্ত্র বাঙালির উপর পাকিস্তানি বাহিনীর আক্রমণের ফলশ্রুতিতে ২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের নয় মাস ব্যাপী স্বাধীনতার লড়াই। খবর-বিবিসি। "অপারেশন সার্চ লাইট" নামে পরিচালিত ২৫শে মার্চের সেই অভিযানে প্রায় ৫০ হাজার বাঙালিকে হত্যা করা হয় বলে দাবি করে বাংলাদেশ। ওই অপারেশনের উদ্দেশ্য ছিল ঢাকাসহ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রধান শহরগুলোতে আওয়ামী লীগ নেতা ও ছাত্র নেতৃবৃন্দ এবং বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের গ্রেপ্তার করে ও সামরিক অভিযান চালিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পরিচালিত অসহযোগ আন্দোলন কঠোর হস্তে দমন করা এবং পূর্ব পাকিস্তানে, পাকিস্তান সরকারের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে তখন তুমুল অসহযোগ আন্দোলন চলছে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে জয়ী আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে। আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৯৭১ সালের মার্চের শুরু থেকেই উত্তাল হয়ে উঠেছে ঢাকার রাজপথ। সাতই মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের পর পরিস্থিতি হয়ে উঠেছে আরও অগ্নিগর্ভ।
মুজিব-ইয়াহিয়া বৈঠক
এমন পরিস্থিতিতে ঢাকায় এলেন সে সময়ের পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান এবং ১৬ই মার্চ থেকে শুরু হল মুজিব-ইয়াহিয়া বৈঠক। মার্চের ২৪ তারিখ পর্যন্ত আলোচনায় সময় গড়িয়ে গেলেও সমাধান মিলল না। পঁচিশে মার্চ রাতে ঢাকায় শুরু হলো সামরিক অভিযান। এরই মধ্যে জানা গেল ইয়াহিয়া খান সেদিনই ঢাকা ত্যাগ করেছেন। একদিকে যখন এই আলোচনা চলছে, তখনই পশ্চিম পাকিস্তান থেকে শিপিং করপোরেশনের জাহাজে করে পূর্ব পাকিস্তানে অস্ত্র ও সৈন্য আনার খবর প্রকাশ হয়। ধারণা করা হয় আলোচনার নামে সময়ক্ষেপণ করে পাকিস্তানি বাহিনী তাদের সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করেছে।
পঁচিশে মার্চ আক্রমণ চালানোর সবুজ সঙ্কেত দেন জেনারেল টিক্কা খান
টিক্কা খানের সবুজ সঙ্কেত
সেই সময়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জনসংযোগ কর্মকর্তা সিদ্দিক সালিক তার বই 'উইটনেস টু সারেন্ডার' এ লিখেছেন, শেখ মুজিব আর ইয়াহিয়া খানের মধ্যে আলোচনার কী পরিণাম হয়, তা নিয়ে ২৫শে মার্চ দুপুরে মেজর জেনারেল খাদিম হুসেইন নি��ের দপ্তরে বসে যখন ভাবছিলেন, তখন তাকে ফোন করেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান। সরাসরি বলেন, "খাদিম, আজই করতে হবে কাজটা।" খাদিম এই নির্দেশের জন্যেই অপেক্ষাই করছিলেন। নিজের কর্মচারীদের সঙ্গে সঙ্গে ওই আদেশ পালনের কথা জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। সিদ্দিক সালিক লিখেছেন, "ক্র্যাকডাউনের সময় ঠিক করা হয়েছিল ২৬শে মার্চ রাত একটায়। আশা করা হচ্ছিল যে ততক্ষণে ইয়াহিয়া খান করাচিতে পৌঁছে যাবেন।" পঁচিশ তারিখ রাত প্রায় সাড়ে এগারোটার সময় ঢাকার স্থানীয় কমান্ডার টিক্কা খানের কাছে অনুমোদন চেয়েছিলেন ক্র্যাকডাউনের সময়টা এগিয়ে আনার। সালিক লিখছেন, "জেনারেল টিক্কা আদেশ দিয়েছিলেন যতটা সম্ভব দেরি করতে। এরপর রাত সাড়ে এগারোটায় পুরো শহরের ওপরে পাকিস্তানি বাহিনী হামলা করেছিল। শুরু হয়েছিল অপারেশন সার্চলাইট।"
যুদ্ধের প্রস্তুতি
তৎকালীন আওয়ামী লীগের নেতা ড. কামাল হোসেন বিবিসি বাংলাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতা শেখ মুজিবুর রহমান ২৫শে মার্চ সন্ধ্যায় তার বাসভবন, ধানমণ্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি থেকে টেলিফোনে সারা দেশে যুদ্ধের প্রস্তুতির নির্দেশনা দেন। ড. হোসেন বলেন নির্দেশনা পৌঁছনর ওই প্রক্রিয়ায় তিনিও স���্পৃক্ত ছিলেন। "পঁচিশ তারিখ সন্ধ্যার দিকে আমরা রিপোর্ট পাওয়া শুরু করলাম যে, সব ট্যাংক ক্যান্টনমেন্টে লাইন আপ করা হচ্ছে, আক্রমণ করার প্রস্তুতি সেখানে চলছে। আমরা এটা বঙ্গবন্ধুকে রিপোর্ট করলাম, বঙ্গবন্ধু তখন বললেন, হ্যাঁ এখন তো মনে হয় তারা অ্যাকশনে যাবে। শেখ মুজিবুর রহমানের যুদ্ধের প্রস্তুতির সেই নির্দেশ ছিল খুবই সুস্পষ্ট। "ইনস্ট্রাকশানের একটা ফর্মূলা ছিল, যে মুহূর্তে তারা আক্রমণ শুরু করবে, সেই মুহূর্ত থেকে আমরা স্বাধীন। আঘাত হওয়ার সাথে সাথেই আমরা স্বাধীন। যে যা কিছু পাই, তা নিয়ে আমরা প্রতিবাদ প্রতিরোধে নেমে যাব। এই কথাটা ফোনে আমরা বলা শুরু করলাম। যে যেখানে যে কোন অস্ত্র ধরতে পার, সেটা নিয়ে নেমে প্রতিরোধ গড়ে তোল," বলেন ড. হোসেন।
পাকিস্তানিদের আক্রমণ
পাকিস্তানি বাহিনী ২৫শে মার্চ মধ্যরাতে আক্রমণ চালায় ঢাকায় রাজারবাগ পুলিশ লাইনে এবং পিলখানায় তৎকালীন সীমান্ত রক্ষী বাহিনী ইপিআর-এর সদর দপ্তরে। সেই রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের আবাসিক হল জগন্নাথ হল এবং নীলক্ষেতে শিক্ষকদের একটি আবাসিক এলাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় ট্যাংকসহ ভারী অস্ত্র নিয়ে নিরস্ত্র মানুষের উপর চড়াও হয় পাকিস্তানি বাহিনী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এই হামলার ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছিলেন রবিউল আফতাব। তখন তার বয়স মাত্র ছয়। মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আনোয়ার পাশা ছিলেন তার পিতা। বিবিসি বাংলাকে ওই ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন রাত্রি একটু বেশি হতেই শোনা গেল প্রচণ্ড গোলাগুলির আওয়াজ। তার এটুকু মনে আছে যে অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই তা বেড়ে ভয়াবহ রূপ ধারণ করল। "কান ফাটানো আওয়াজ, কিছুক্ষণের মধ্যে চারিদিকে প্রচণ্ড আলো- এখন যেমন আমরা ফ্লাড-লাইট বলি, সেরকম আলো। কিছুক্ষণের মধ্যে শোনা গেল অনেক গাড়ির আওয়াজ। আমাদের ছাদের ওপর কেমন জানি ভারী মচমচে জুতার আওয়াজ। আমরা ভয়ে খাটের নিচে ঢুকে গিয়েছিলাম।" পরে তিনি শুনেছিলেন ছাদের দেয়ালে চারিদিক থেকে পাকিস্তানি সেনারা এলোপাথাড়ি গুলি চালাচ্ছে। চারিদিকে মানুষের "বাঁচাও বাঁচাও" ভয়ার্ত চিৎকারের মধ্যে ২৫শে মার্চের সেই "বিভীষিকাময়" গোটা রাত্রি কাটায় তার পরিবার। সেই আক্রমণের মধ্যেই ২৫শে মার্চ দিবাগত রাতে পাকিস্তানি বাহিনী গ্রেফতার করে শেখ মুজিবুর রহমানকে । গ্রেফতারের ঘটনার কয়েক ঘন্টা আগে রাত ন'টার দিকে শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে শেষ দেখা করে বিদায় নিয়েছিলেন তাজউদ্দীন আহমদ, ড. কামাল হোসেন এবং আমীর-উল ইসলাম। ড. হোসেন বিবিসিকে বলেন তারা সেসময় নিরাপদ জায়গায় গিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার নির্দেশ পেয়েছিলেন। তাদের বিদায় দেবার সময় শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন তিনি থেকে যাচ্ছেন অন্য এক হিসাব থেকে, বলেন ড. কামাল হোসেন। "বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, দেখ, আমার সারা জীবনে আমি ঘন ঘন অ্যারেস্ট হয়েছি। আমি জানি আমাকে ধরলে হয়ত তাদের আক্রমণের তীব্রতা অন্তত কিছুটা কমবে। আর আমাকে যদি না পায়, তাহলে প্রতিশোধ নেবে তারা এলোপাথাড়ি আরও লোক মেরে।" সেই রাতেই ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি থেকে পাকিস্তানি বাহিনী শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে। তাকে নিয়ে যায় পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে।
পঁচিশে মার্চ দিবাগত রাতে পাকিস্তানি বাহিনী গ্রেফতার করে শেখ মুজিবুর রহমানকে এবং তাকে নিয়ে যায় পশ্চিম পাকিস্তানে। করাচি বিমানবন্দরে পাকিস্তানি সেনাদের পাহারায় শেখ মুজিবুর রহমান
চট্টগ্রামে হামলা
বিভিন্ন বাহিনীর মধ্যে প্রথম প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল সীমান্ত রক্ষী বাহিনী। সেসময় ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস (ইপিআর) নামের এই বাহিনীর চট্টগ্রাম অঞ্চলের নেতৃত্বে ছিলেন বাঙালি কর্মকর্তা মেজর রফিকুল ইসলাম। বিবিসিকে তিনি ব��েন ২৪শে মার্চ রাতেই চট্টগ্রাম অঞ্চলের সীমান্তগুলোতে তাদের বাহিনীতে পাকিস্তানি সদস্যদের হত্যা করে পুরো নিয়ন্ত্রণ নেয়া হয়েছিল। তারা ২৫শে মার্চ রাতেই চট্টগ্রাম শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিলেন। তিনি বলেন ২৫শে মার্চ ষোলোশহরের সেনা হেডকোয়ার্টারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে পুরো শহরের দখল তারা গ্রহণ করেন রাত ১১টা বিশ মিনিটে। "আমি অবস্থান নিয়ে ফেলেছি রেলওয়ে পাহাড়ে-২৫শে রাত্রি- তখন ১১টা কুড়ি মিনিট। কিছুক্ষণ পর রাত ১১টা তিরিশের দিকে দেখি একটা গাড়ি রেলওয়ে হিল এবং বাটালি হিলের মধ্যে যে রাস্তা, সে রাস্তা দিয়ে পোর্টের দিকে যাচ্ছে। আমার এক সুবেদার, আইজুদ্দীন নায়েব সুবেদার বলল যে, সার এখানে তো অনেকগুলো পাকিস্তানি সৈন্য আছে- পাঞ্জাবি, একটা রকেট লঞ্চার মারি! আমি বললাম রাখো, ওরা বোধহয় দেখছে রাস্তাটা পরিষ্কার আছে কিনা!" মেজর ইসলাম বলেন তার ধারণা পাকিস্তানি সেনাদের পরিকল্পনা ছিল রাস্তা পরিষ্কার থাকলে পোর্টে যেসব অস্ত্রশস্ত্র আছে সেগুলো নিয়ে ক্যান্টনমেন্টে যাবে। তিনি তার সুবেদারকে বলেছিলেন সেটা হলে অস্ত্র নিয়ে ফেরার সময় আমরা আক্রমণ চালিয়ে অস্ত্রগুলো ধ্বংস করতে পারব। তিনি জানান ওই গাড়িটা কিছুদূর গিয়ে আগ্রাবাদে ঢোকার মুখে একটা পেট্রল পাম্পে থামে। "ওখানে আমাদের বাঙালিরা টায়ার জ্বালিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছিল। এর দু তিন মিনিটের মধ্যে দেখি খুব দ্রুত একটা জিপ সেখানে গিয়ে পৌঁছয়। সেটাও ওখানে থামে এবং কিছুক্ষণ পর দুটো গাড়িই একসাথে ফিরে আসে। পরে জেনেছিলাম প্রথম গাড়িতে জিয়া সাহেব পোর্টে যাচ্ছিলেন। সোয়াত জাহাজ থেকে অস্ত্র খালাস করার জন্য তাকে দায়িত্ব দিয়ে পাঠানো হয়েছিল। তখনও শহর আমাদের নিয়ন্ত্রণেই ছিল।" তিনি বলেন ওই ব্যারিকেডে আটকে যাবার সময় বাঙালিদের ওপর পাকিস্তানি সেনাদের আক্রমণের খবর জিয়াউর রহামনের কাছে পৌঁছে দেয়া হয় বলে তিনি পরে জেনেছিলেন।
পাকিস্তানি সেনাদের অভিযানের বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল তৎকালীন সীমান্ত রক্ষী বাহিনী। ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস (ইপিআর) মেজর রফিকুল ইসলাম জ��নান চট্টগ্রাম শহরে তাদের নিয়ন্ত্রণের ওপরে পাকিস্তানি বাহিনী আক্রমণ শুরু করেছিল পরের দিন ২৬শে মার্চ। বাংলাদেশের বিভিন্ন শহরে পাকিস্তানি সেনাদের এই অভিযান 'অপারেশন সার্চলাইট' চলে ১০ই এপ্রিল পর্যন্ত।
স্বাধীনতার ঘোষণা
শেখ মুজিবুর রহমান ২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে আটক হবার আগেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। সেই ঘোষণা তিনি দেন ধানমন্ডির ৩২ নম্বর থেকেই। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র তাদের সম্প্রচার শুরু করে ২৬শে মার্চ। তৎকালীন রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত বেতারের চট্টগ্রামের কয়েকজন কর্মী শহর থেকে অনেকটা দূরে নিরাপদ জায়গা হিসাবে কালুরঘাটে বেতারেরই ছোট্ট একটি কেন্দ্রে তাদের প্রথম অনুষ্ঠান করেছিলেন। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম সংগঠক বেলাল মোহম্মদ বিবিসি বাংলাকে বলেন ওই অনুষ্ঠানেই স্বাধীনতার সেই ঘোষণা প্রথম সম্প্রচার করা হয়। শেখ মুজিবুর রহমানের নামে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেছিলেন রাজনীতিকদের মধ্যে চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ হান্নান। "সকালবেলা ২৬শে মার্চ আমরা শুনতে পেয়েছি একটা মাইকিং যে গত রাতে ঢাকায় আকস্মিকভাবে পাকিস্তান আর্মি নিরস্ত্র জনপদে আক্রমণ করেছে। এবং খণ্ড খণ্ড যুদ্ধ চলছে। এই অবস্থায় আমাদের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন। এইটুক মাইকিং আমরা শুনেছি। "ওই সময় দুপুরবেলা একটা লিফলেট পেলাম হাতে। আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন পর্যায়ের ড. আনোয়ার আলি একটা কাগজ আমার হাতে দিলেন। উনি নিজে বললেন একটা তারবার্তা এসেছে ঢাকা থেকে। আমরা এটার অনুবাদ করে এখন লিফলেট আকারে ছেড়েছি আর মাইকিংও করেছি আমরা।" তিনি বলেন কালুরঘাট থেকে প্রথম সেই ঘোষণা সম্প্রচারের ব্যবস্থা তারা করতে পেরেছিলেন সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটে। তিনি বলেন সেই প্রথম অনুষ্ঠানে এম এ হান্নান শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণাটি পড়েন এবং তার ভিত্তিতে একটি বক্তৃতাও দেন। "আর আমরা বেতার কর্মীরা নিজেদের ভয়েসে বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণার তারবার্তার অনুবাদ যেটা লিফলেট আকারে পেয়েছিলাম, সেটা বিভিন্ন কণ্ঠে বারবার প্রচার করি ২৬শে মার্চ প্রথম ট্রান্সমিশানের এক ঘন্টার মত অনুষ্ঠানে।" কালুরঘাট কেন্দ্র থেকে ২৭শে মার্চ সন্ধ্যাতেও দ্বিতীয়বারের মত অনুষ্ঠান সম্প্রচারে সক্ষম হয় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র। সেদিনের অনুষ্ঠানে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন জিয়াউর রহমান। সেসময় তিনি সেনবাহিনীতে মেজর পদমর্যাদায় কর্মরত ছিলেন। বেলাল মোহম্মদ জানান জিয়াউর রহমান ওই ঘোষণা পাঠ করেছিলেন শেখ মুজিবুর রহমানের নামে। "স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার জন্য আমি যখন এদিক ওদিক খোঁজ করছি, এক বন্ধু আমাকে বললেন যে, একজন মেজর আছেন পটিয়াতে। তিনি সোয়াতের অস্ত্র নামাবার অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে দেড়শ সৈন্য নিয়ে হেডকোয়ার্টারের বাইরে আছেন পটিয়াতে। এ খবর শুনে ২৭শে মার্চ দিনের বেলায় আমি পটিয়াতে চলে যাই।" বেলাল মোহম্মদ জানান, তার অনুরোধে বেতার কেন্দ্রের নিরাপত্তা র��্ষায় পটিয়া থেকে সৈন্য নিয়ে কালুরঘাটে যান জিয়াউর রহমান । "পটিয়া থেকে আমরা যখন কালুরঘাট পৌঁছলাম, তখন প্রায় সন্ধ্যা হয় হয়। এবং এসেই প্রোগ্রাম শুরু করা হল। এবং আমি হঠাৎ, কী মনে করে আমি জানি না, বললাম- আচ্ছা মেজর সাহেব, এখানে তো আমরা সব মাইনর। আপনি একমাত্র মেজর। আপনি কি নিজের কণ্ঠে কিছু বলবেন? উনি নড়েচড়ে উঠলেন। বললেন- হ্যাঁ সত্যি তো, কী বলা যায় বলুন তো? কাগজ বের করা হল, উনি কলম নিলেন। প্রত্যেকটি যে শব্দ তিনি উচ্চারণ করেছেন, আমিও উচ্চারণ করেছি। তারপরে লেখা হয়েছে।" বেলাল মোহম্মদ বলেন এভাবেই তৈরি হয়েছিল জিয়াউর রহমান কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে ২৭শে মার্চ রাত সাড়ে সাতটার অনুষ্ঠানে শেখ মুজিবের নামে যে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেছিলেন তার বয়ান। তবে, এই স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশে তৈরি হয় রাজনৈতিক মতপার্থক্য। বিএনপি দাবি করে তাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানই প্রথম স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে স্বাধীনতার ঘোষণার খবর
বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত থেকে দেখা যায়, ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাতের ঢাকার পরিস্থিতি ও শেখ মুজিবকে আটকের ঘটনা ২৭শে মার্চেই বিশ্বের অন্তত ২৫টি দেশের পত্রিকা বা সংবাদ সংস্থার খবরে প্রকাশিত হয়। "বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা: ফ্যাক্টস অ্যান্ড উইটনেস (আ.ফ.ম সাঈদ)" বইতে স্বাধীনতার ঘোষণা সম্পর্কে বিদেশী সংবাদপত্র ও সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্টের একটি সংকলন প্রকাশ করা হয়েছে।
ছাব্বিশে মার্চের প্রথম প্রহরে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে আটকের আগেই শেখ মুজিবুর রহমানের বাংলাদেশকে স্বাধীন ঘোষণা করে তারবার্তা পাঠানোর মধ্যে দিয়ে শুরু হয় ২৫শে মার্চ অভিযানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ এবং নয় মাস ব্যাপী স্বাধীনতার লড়াই ওই সংকলন অনুযায়ী বিবিসির খবরে তখন বলা হয়, "...কলকাতা থেকে সংবাদপত্র প্রতিষ্ঠানের খবরে প্রকাশ যে পূর্ব পাকিস্তানের নেতা শেখ মুজিবুর রহমান এক গুপ্ত বেতার থেকে জনসাধারণের কাছে প্রতিরোধের ডাক দিয়েছেন।..." ভয়েস অব আমেরিকার খবরে বলা হয়: "...ঢাকায় পাকিস্তান বাহিনী আক্রমণ শুরু করেছে। মুজিবুর রহমান একটি বার্তা পাঠিয়েছেন এবং সারা বিশ্বের নিকট সাহায্যের আবে��ন জানিয়েছেন।..." দিল্লির দ্য স্টেটসম্যান-এর খবর ছিল: "বাংলাদেশ স্বাধীনতা ঘোষণা করেছে, সামরিক অভিযানের প্রতিবাদে রহমানের পদক্ষেপ। একটি গোপন বেতার থেকে প্রচারিত ভাষণে শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের পূর্বাংশকে স্বাধীন বাংলাদেশ হিসেবে নতুন নামকরণ করেছেন।" দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ, লন্ডন: ২৭শে মার্চের পত্রিকায় 'সিভিল ওয়ার ফ্লেয়ারস ইন ইস্ট পাকিস্তান: শেখ এ ট্রেইটর, সেইস প্রেসিডেন্ট' শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদে শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা ঘ��ষণা ও ইয়াহিয়া খান তার বেতার ভাষণে শেখ মুজিবকে বিশ্বাসঘাতক বলার কথা উল্লেখ করা হয়। ব্রিটেনের দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকায় ২৭শে মার্চের এক খবরে বলা হয়, "...২৬শে মার্চ প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান জাতির উদ্দেশ্যে রেডিওতে ভাষণ দেয়ার পরপরই দ্য ভয়েস অব বাংলাদেশ নামে একটি গোপন বেতারকেন্দ্র থেকে শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয়েছে। তাঁর এই ঘোষণা অপর এক ব্যক্তি পাঠ করেন।" এর বাইরে ভারতের বহু সংবাদপত্র এবং আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, ক্যানাডা, দক্ষিণ আফ্রিকা, জাপান, হংকং, নরওয়ে, তুরস্ক, সিঙ্গাপুরসহ অনেক দেশের খবরে স্থান পায় বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার খবর। আর্জেন্টিনার বুয়েনস আয়ারস হেরাল্ডের ২৭শে মার্চের সংখ্যার একটি খবরের শিরোনাম ছিলো, "বেঙ্গলি ইন্ডিপেন্ডেন্স ডিক্লেয়ার্ড বাই মুজিব।" নিউইয়র্ক টাইমস-এও শেখ মুজিব ও ইয়াহিয়ার ছবি ছাপানো হয়। পাশেই লেখা হয় "স্বাধীনতা ঘোষণার পরই শেখ মুজিব আটক"। বার্তা সংস্থা এপির খবর ছিল: "ইয়াহিয়া খান পুনরায় মার্শাল ল দেয়ার ও আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণার পর পূর্ব পাকিস্তানে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছে।" আয়ারল্যান্ডের দ্য আইরিশ টাইমস-এর শিরোনাম ছিল - পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা ঘোষণা আর সাথে ছিল শেখ মুজিবের ছবি। ব্যাংকক পোস্ট-এর খবরে বলা হয়, "শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ নাম দিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের স্বাধীনতা ঘোষণার পর পাকিস্তানে গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।"
পঁচিশে মার্চের গণহত্যা ১৯৭১ এ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সূত্রপাত ঘটায় এবং বাঙালিরা দখলদারী পাকিস্তানি বাহিনীকে বিতাড়িত করার সংগ্রামে লিপ্ত হয় পাকিস্তানি বাহিনীর ২৫শে মার্চের আক্রমণের মুখে যে প্রতিরোধ গড়ে উঠেছিল পূর্ব পাকিস্তানে, যে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বাঙালি জনগণকে উদ্বুদ্ধ করেছিল শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা, নিরস্ত্র বাঙালির সেই প্রতিরোধ রূপ নিয়েছিল নয় মাস ব্যাপী সশস্ত্র রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধে। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে ১৯৭১ সালে ২৫শে মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্তানি বাহিনী রাতের আঁধারে নিরস্ত্র ও ঘুমন্ত মানুষের ওপর যে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল, অত্যাধুনিক অস্ত্রসজ্জিত কোনও বাহিনীর আক্রমণের সেই ঘটনা, পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম বিরল ও ভয়াবহ একটি গণহত্যার ঘটনা। পঁচিশে মার্চকে "জাতীয় গণহত্যা দিবস" হিসাবে পালনের জন্য বাংলাদেশের সংসদে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয় ২০১৭ সালের ১১ মার্চ। Read the full article
0 notes
Photo
#banglakobita #bengalikobita #poetryofneyamat মনমূলুকের নবাব ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া সেদিন দেখি,একটা কুকুর, পেছনের দু’পায়ের উপর ভর করে দাঁড়িয়ে সামনের পা দু’টো হাতের মতো নাড়িয়ে নাড়িয়ে হেলেদুলে সটান হয়ে মানুষের মতো জমিদারী স্টাইলে হাঁটছে। আমি বললাম, হায় খোদা, কলি কালে আরো কতো কি যে দেখবার বাকি আছে, কে জানে! কুকুরটা বিরক্ত হয়ে বললো, আরে ব্যাটা রাখ! সে ভাবনা চুলোয় যাক; বলতে পারিস আমার আর তোর মধ্যে স্বভাবের কী তেমন ফারাক? জবাব যদি না জানিস, যা; নিজের চরকায় তেল মাখ! আমি কাঁচুমাচু করে বললাম, হে সারমেয় সাব! আপনি যান, এসব বাতচিত আজ না হয় থাক। ঘেউ ঘেউ করে আচমকা ধমক দিয়ে বললেন, সারাটা জনম কুত্তা-কুত্তি বলেই দিলি ডাক, আজ ক্যান্ এমন ‘সারমেয়’ মোলায়েম বাক? আমি বিনম্র স্বরে বললাম, বেমক্কায় পড়লে আমরা সাধু ভাষায় বিড়ালকেও মার্জার কিংবা বাঘের মাসি বলি। ইঁদুরকে মুষিক, বটবৃক্ষকে মহীরূহ, ঝাঁটাকে শতমুখী, শেয়ালকে বুদ্ধিররাজা,ন্যাংটাকে দিগম্বর আর চোরকে স্যার বলে থাকি। ��ুখ ভ্যাঁংচে টিটকিরির সুরে সারমেয় মশাই আরো বললেন, এখন ক্যান লেজ গুঁটিয়ে পালাস্ ? আমি বললাম, আজ না হয় সে সব আলাপ থাক! এবার আরো ক্ষেপে গিয়ে দর্পের সঙ্গে দিলো দুই পাক, বলে, থাকবে ক্যান্ ! আজই সব কথার রফাদফা হয়ে যাক। আমি বললাম, না, তেমন বিশেষ কিছু না, আজ খানিকটা তাড়া ছিলো! এবার উনি আরো বেশি রেগে গেলেন; তোমাদের নিজেরও তাড়া আছে নাকি? তোমাদের আবার কিসের তাড়া! সারাটা জনম শুনলাম, মানুষদেরকে তাড়া করি কেবল আমরা কুকুরেরা। আমি বললাম, আসলে ব্যাপারটা হলো কি সারমেয় সাব! মানুষ বাইরে বাইরে শার্দুল, ভেতরে কুকুরের স্বভাব। সারমেয় সাহেব বললেন,বাইরে কুকুরেরা জন্তু ভেতরে বিশ্বাস ভক্তি সহমর্মের মনমূলুকের নবাব। আমি কোনো রকমে রক্ষা পেয়ে আমার পথে হাটলাম; আর ভাবলাম, আচ্ছা, আমি কি কুকুরের মতো মানুষ হতে পারবো? নাকি কুকুরের স্বভাবেরও অধম হয়ে ‘মানুষ’ নামের নকশা নিয়ে বাঁচবো? - https://www.instagram.com/p/CcfWtKZBBHu/?igshid=NGJjMDIxMWI=
0 notes
Photo
1: ভাই আপনি কোরআন হাদীছের অনুসারী ? ২: হ্যাঁ ভাই অবশ্যই।🥰 ১: তাহলে তো আপনি আহলে হাদীছ 😮 ২: চুপ কি বলেন , আহলে হাদীছরা হলো ফেতনাবাজ, ওরা লামাজহাবী ,ওরা ইংরেজদের জামনায় তৈরী। ১: কি বলেন আপনি ফেতনাবাজ লামাজহাবী? আপনিও ইংরেজদের জামনায় তৈরী? ২: না আমি কেনো হবো ওরা তো আহলে হাদীছরা। ১: তো আপনিই তো বললেন আপনি আহলে হাদীছ । ২: আমি কখন বললাম আমি আহলে হাদীছ? ১: ওইতো আপনি বললেন , আপনি কোরআন হাদীছের অনুসারী । এটার আরবী করলে হয় আহলুল হাদীছ বা আহলে হাদীছ। তো কোরআন হাদিছের অনুসরণ করলে কি কেউ ফেতনাবাজ হয় নাকি? যদি তাই হয় তাহলে চার ইমামের প্রথম যেই ইমাম , ইমামে আবু হানিফা রহঃ তিনি ছিলেন আহলে হাদীছ বা কোরআন হাদীছের অনুসারী । তাহলে তিনি বড় ফেতনাবাজ ছিলেন? ২: ওহ আচ্ছা ভাই বুঝিনাই তো তাই। ________________ হ্যা ভাই আমরা বাঙালি জাতি এমনি কোনো একটা গোষ্ঠীকে বাজে ট্যাগ লাগাতে গিয়ে আমরা কিসের সাথে বেয়াদবি করছি সেটা একবারো ভেবেও দেখেনি। আল্লাহর রাসূল ছাঃ বলতেছেন আল্লাহর কিতাব ও তাঁর সুন্নাতের অনুসরণ করতে যেটা আমরা পাই বিশুদ্ধ হাদীছ থেকে । সমস্ত সাহাবীরা যেটার অনুসরণ করেছেন , সমস্ত ইমাম ,পন্ডিত মুহাদ্দিস, মুফাস্সির সালফেসালেহীনরা সবাই বলে��েন কোরআন আর হাদিছ অনুসরণ করতে তা অনুযায়ী আমল কলতে। তো কোরআন হাদিছের অনুসরণ করলে কিভাবে ফেতনাবাজ হওয়া যায় একটুও বুঝে আসেনা। জানিনা মুকাল্লিদ খবিশরা কিভাবে বুঝে এটা। আসলে ফেতনাবাজ কেনো বলে সেটাও আমাদের জানা আছে। কারন আমাদেরকেও তাকলীদ বা অন্ধ অনুসরণ করতে হবে ইমাম আবু হানিফা রহঃ এর তাহলেই আমরা ভালো হয়ে যাবো তাদের কাছে। অন্য মাজহাবের মুকাল্লিদদের এতো বাড়াবাড়ি নেই যতো বাড়াবাড়ি এই নামধারী হানাফীদের কাছে। অথচ ইমাম আবু হানিফা রহঃ কি বলেছেন আসুন আবার দেখে নিই ইমাম আবু হানীফা (রহঃ)-এর নিষেধাজ্ঞা : (ক) ‘যখন ছহীহ হাদীছ পাবে, জেনো সেটাই আমার মাযহাব’।(হাশিয়াহ ইবনে আবেদীন ১/৬৩।) (খ) ‘আমরা কোথা থেকে গ্রহণ করেছি, তা না জেনে আমাদের কথা গ্রহণ করা কারো জন্য বৈধ নয়’।(ঐ ৬/২৯৩।) (গ) ‘যে ব্যক্তি আমার দলীল জানে না, আমার কথা দ্বারা ফৎওয়া প্রদান করা তার জন্য হারাম’।(ড. অছিউল্লাহ বিন মুহাম্মাদ আব্বাস, আত-তাক্বলীদ ওয়া হুকমুহু ফী যুইল কিতাব ওয়াস-সুন্নাহ, পৃঃ ২০।) (ঘ) ‘নিশ্চয়ই আমরা মানুষ। আমরা আজকে যা বলি, আগামীকাল তা থেকে ফিরে আসি’।(ঐ।) (ঙ) ‘তোমার জন্য আফসোস হে ইয়াকুব (আবু ইউসুফ)! তুমি আমার থেকে যা শোন তাই লিখে নিও না। কারণ আমি আজ যে মত প্রদান করি, কাল তা প্রত্যাখ্যান করি এবং কাল যে মত প্রদান করি, পরশু তা প্রত্যাখ্যান করি’।(ঐ।) https://www.instagram.com/p/CBXfOa4DGRn/?igshid=xc8q5esdp1tk
0 notes
Photo
ফুলবাড়ী গণঅভ্যুত্থান প্রতিরোধের এক দশক
---------- আনু মুহাম্মদ
আজ ২৬ আগস্ট ঐতিহাসিক ফুলবাড়ী গণঅভ্যুত্থানের এক দশক (২০০৬-২০১৬) পূর্তি হচ্ছে। প্রতিরোধের এক দশক পূর্তিতে আমরা সালাম জানাই শহীদ তরিকুল, সালেকিন, আল আমিন; বীর যোদ্ধা বাবলু রায়, প্রদীপ, শ্রীমন বাস্কেসহ অগণিত সংগ্রামী মানুষকে। মানুষের ঐক্য ও অবিরাম প্রতিরোধ দেশকে রক্ষা করেছে, দিয়েছে নতুন দিশা। তাই ‘প্রতিরোধের এক দশক’ আমাদের উদযাপন করতে হবে তার ভেতর থেকে শক্তি সঞ্চয় করে তা বিস্তৃত করার প্রতিজ্ঞা নিয়ে।এক দশক ধরে বিজয়ের ওপর দাঁড়িয়ে জনগণের প্রতিরোধ জারি থাকার পেছনে অসংখ্য মানুষের ভূমিকা আছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও নির��ধারক ভূমিকা পালন করেছেন ফুলবাড়ী, বিরামপুর, পার্বতীপুর, নবাবগঞ্জ থানাসহ দিনাজপুরের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ। পাশাপাশি এর সপক্ষে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন মানুষের সক্রিয়তা, ছোট-বড় অসংখ্য প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ, লেখালেখি, গবেষণা, একের পর এক চক্রান্ত মোকাবেলা, বুদ্ধিবৃত্তিক ও মাঠের অবিরাম লড়াই সবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।এ রকম প্রশ্ন আমরা প্রায়ই শুনি যে, ‘আপনারা কয়লা উত্তোলন করতে দিচ্ছেন না, গ্যাস উত্তোলন করতে দিচ্ছেন না। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতের বিরোধিতা করছেন, পারমাণবিক বিদ্যুতের বিরোধিতা করছেন। তাহলে বিদ্যুৎ কীভাবে হবে? উন্নয়ন কীভাবে হবে?’ কেউ কেউ প্রশ্নবাণ নিক্ষেপ করেন, ‘আপনারা আসলে কী চান? আপনারা তো সবকিছুরই বিরোধিতা করেন। আপনারা টিকফার বিরোধিতা করেন, তেল-গ্যাস নিয়ে চুক্তির বিরোধিতা করেন, গ্যাস রফতানির বিরোধিতা করেন, উন্মুক্ত খনির বিরোধিতা করেন, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরোধিতা করেন, রেন্টাল-কুইক রেন্টালের বিরোধিতা করেন, বিশ্বব্যাংকের বিরোধিতা করেন, ট্রানজিটের বিরোধিতা করেন। বাংলাদেশকে আসলে আপনারা কোথায় নিতে চান?’ আমি এসব ভদ্রলোকের উদ্দেশে বলি, আপনারা প্রশ্নটা আরো সংক্ষেপে এভাবে করতে পারতেন যে, ‘আপনারা কেন জনগণের সম্পদ ডাকাতি, দুর্নীতি, অস্বচ্ছতা আর জনবিরোধী চুক্তির বিরোধিতা করেন? কেন প্রাণ-প্রকৃতি-দেশকে বিপন্ন করার প্রকল্পের বিরোধিতা করেন?’হ্যাঁ, আমরা এগুলোর বিরোধিতা করি। আমরা এগুলোতে না বলি, কেননা আমাদের মধ্যে জনগণের পক্ষে এক প্রবল হ্যাঁ-র শক্তি আছে। আমরা চাই, দেশের সব সম্পদ জনগণের, তার মালিকানায় তার স্বার্থে এগুলোর সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। আমরা চাই, দেশের সীমিত সম্পদ দেশী-বিদেশী কতিপয় লুটেরার স্বার্থে রফতানির নামে পাচার না হোক। এর শতভাগ দেশের কাজে লাগুক। আমরা চাই, বর্তমানের জন্য ভবিষ্যেক ধ্বংস না হোক। আমরা চাই, দেশের উন্নয়ন নীতির কেন্দ্রে থাকবে মানুষ, কতিপয় গোষ্ঠীর মুনাফা নয়। উন্নয়নের নামাবলি গায়ে দিয়ে এ ভদ্রলোকেরা দেশের প্রধান আশ্রয় সুন্দরবনকেও ধ্বংস করে দখল, লুণ্ঠন ও মুনাফার জন্য উন্মাদ হয়ে ওঠে। আমাদের দায়িত্ব প্রবল ‘না’ দিয়ে সুন্দরবন রক্ষা করা।উন্নয়নের মূলা ঝুলিয়েই তারা বারবার ভয়ঙ্কর প্রকল্প নিয়ে এসেছে। মার্কিন কোম্পানির মালিকানায় দেশের গ্যাসসম্পদ ভারতে রফতানির জন্য একসময় শোরগোল তুলেছিল সরকারের মন্ত্রী, আমলা, কনসালট্যান্ট, বিশ্বব্যাংক, এডিবি, বিভিন্ন দূতাবাস। এরা সবাই মিলে হই হই করছিল এই বলে যে, দেশ গ্যাসের ওপর ভাসছে, অতি শিগগির এ গ্যাস রফতানি না করলে দেশের সর্বনাশ হবে। রফতানি করলে দেশ উন্নয়নে ভরে যাবে। তখন দেশের ব্যবসায়ীদের কতিপয় নেতা ��ার্কিন কোম্পানির কমিশনভোগী হিসেবে এ প্রচারে যোগ দিয়েছিল। এমন প্রচারও হয়েছিল যে, গ্যাস রফতানি না করলে মার্কিন বাজারে গার্মেন্ট প্রবেশ বন্ধ হয়ে যাবে, গার্মেন্ট শিল্প ধ্বংস হয়ে যাবে এবং বেকার হয়ে পড়বে লাখ লাখ মানুষ। আমরা তখন এই প্রবল আওয়াজের বিরুদ্ধে না বলেছিলাম, জনগণ আমাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন এবং গ্যাস রফতানির ভয়াবহ আয়োজন পরাস্ত হয়েছিল। এটা হয়েছিল বলে দেশে এখনো গ্যাস আছে, বাতি জ্বলে, কারখানা চলে, ব্যবসা চলে, সিএনজির কারণে ঢাকা শহরে এখনো শ্বাস নেয়া যায়। যদি তখন এ গ্যাস রফতানি হতো, তাহলে আজ অর্ধেক বিদ্যুৎও উত্পাদন করা সম্ভব হতো না।যারা তখন গ্যাস রফতানির জন্য লম্ফঝম্ফ করছিল, তারাই কয়েক বছর পর শুরু করল বিদেশী আনাড়ি কোম্পানির মাধ্যমে উন্মুক্ত খনি, কয়লা রফতানির পক্ষে প্রচার। উত্তরবঙ্গে গ্যাস না দিয়ে বিদেশে রফতানি করতে চেয়েছিল যারা, তারাই প্রচার করতে থাকল উন্মুক্ত খনি ছাড়া উত্তরবঙ্গের উন্নয়নের জন্য, বিদ্যুতায়নের জন্য আর কোনো পথ নেই! তাদেরই কেউ কেউ এখন সুন্দরবনধ্বংসী প্রকল্পের পক্ষে ভাড়া খেটে যাচ্ছে।কী ছিল ফুলবাড়ী প্রকল্প, যার বিরুদ্ধে জনগণকে ১০ বছর পরও একটানা প্রতিরোধ জারি রাখতে হয়েছে? এই ফুলবাড়ী কয়লা প্রকল্প অনুযায়ী বাংলাদেশের জন্য মাত্র ৬ শতাংশ রয়্যালটি দিয়ে নতুন গঠিত অনভিজ্ঞ একটি বিদেশী কোম্পানি এশিয়া এনার্জি (এখন নাম জিসিএম) পুরো খনির স্বত্ব লাভ করতে চেয়েছিল, ৮০ শতাংশ কয়লা রফতানি করে মুনাফা নিশ্চিত করার আয়োজন করেছিল। সুন্দরবন পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ করে সুন্দরবন বিপর্যস্ত করে সেই কয়লা রফতানি হতো, তার মালিকানা পুরোটাই কোম্পানির। আর রেললাইন নির্মাণের খরচ জোগাতে হতো বাংলাদেশের ভাগের সেই ৬ শতাংশ রয়্যালটি থেকে! ফুলবাড়ী, বিরামপুর, পার্বতীপুরসহ ছয় থানা অঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ কম বলে জমি তিন ফসলি এবং বাংলাদেশের শস্যভাণ্ডার বলে এ অঞ্চল পরিচিত। শুধু খাদ্য উত্পাদন নয়, পানিও এ অঞ্চলে এক বিরাট সম্পদ। দেশের আবাদি জমি, পানিসম্পদ ও মানুষের সর্বনাশ করে মাত্র ৬ শতাংশ রয়্যালটি দিয়ে দেশের কয়লা বিদেশে পাচারের এ প্রকল্পকেই ‘উন্নয়ন প্রকল্প’ বলে ঢোল পেটানো হয়েছিল।এ প্রকল্প একটু খেয়াল করলে তাই এটা পরিষ্কার হয় যে, জনগণ খুবই ন্যায্যতার সঙ্গে অগ্রসর হয়েছে এবং ২০০৫ সাল থেকে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ভয়ঙ্কর এক বিপদ থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করেছে জনগণই। এজন্য জীবনও দিয়েছেন অনেকে। জীবন দিয়েছিলেন শুধু দেশের সম্পদ রক্ষার জন্যই নয়, দেশের নিশানা বদলে দেয়ার জন্য। ফুলবাড়ী গণঅভ্যুত্থান দেশ ও দেশের সম্পদের ওপর লুটেরাদের থাবা মুচড়ে দিয়েছিল। তাদের বার্তা এখনো ধরে আছে মানুষেরা: এ দেশের সম্পদ এই দেশের মানুষের। দেশী-বিদেশী লুটেরাদের স্বার্থে নয়, দেশ ও জনগণের স্বার্থে তার শতভাগ ব্যবহার করতে হবে। গণঅভ্যুত্থানের মুখে তত্কালীন সরকার ��াধ্য হয়েছিল দেশ থেকে এশিয়া এনার্জি বহিষ্কার ও উন্মুক্ত খনি নিষিদ্ধসহ জনগণের দাবিনামা মেনে চুক্তি স্বাক্ষর করতে। কিন্তু সেই চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন না হওয়ার কারণে এখনো চক্রান্ত চলছে, প্রতিরোধও জারি আছে।কোনো বৈধ অনুমোদন না থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশের ফুলবাড়ী কয়লাখনি দেখিয়ে এশিয়া এনার্জি (জিসিএম) লন্ডনে শেয়ার ব্যবসা করছে প্রায় ১২ বছর ধরে। এর মধ্যে চারটি সরকার ক্ষমতায় থেকেছে, কোনো সরকারই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এ পর্যন্ত সরকারের উদ্যোগে বেশ কয়টি কমিটি করা হয়েছে— ড. নুরুল ইসলামের নেতৃত্বে কমিটি করা হয়েছিল ২০০৬ সালে, ২০০৭ সালে আবদুল মতিন পাটোয়ারির নেতৃত্বাধীন এবং ২০০৮ সালে সেটির পর্যালোচনা কমিটি, ২০১১ সালের মোশাররফ হোসেন কমিটি। বিভিন্ন ধরনের চাপ ও কূটকৌশল থাকা সত্ত্বেও কোনোটিই এশিয়া এনার্জির ফুলবাড়ী কয়লা প্রকল্পের পক্ষে দাঁড়ানোর যুক্তি পায়নি, বরং কোম্পানি বা উন্মুক্ত খনির বিরুদ্ধেই মত দিয়েছে।এ প্রশ্ন উঠতেই পারে যে, কয়লাসম্পদ ব্যবহার হবে কীভাবে? আসলে কোন ব্যবহার দরকার, কোন পদ্ধতি গ্রহণযোগ্য, তা নির্ভর করে কার স্বার্থ সেখানে গুরুত্ব পাচ্ছে তার ওপর। বিদেশী কোম্পানির জন্য খনিজসম্পদ যত তাড়াতাড়ি তুলে দেশী বা বিদেশী বাজারে নেয়া যায় ততই লাভজনক; মানুষ, প্রকৃতি, খাদ্য, বাসস্থান নিয়ে তার কী? আর দেশের নাগরিক হিসেবে আমরা চাইব এই অনবায়নযোগ্য সম্পদের প্রতিটি বিন্দু আমাদের কাজে লাগবে। যত দিন সম্ভব এর ব্যবহার করব আমরা এবং তা করব এমনভাবে যাতে মাটির নিচের সম্পদ তুলতে গিয়ে মাটি ও তার উপরের সম্পদ নষ্ট না হয়, পুরো অঞ্চল ধ্বংসস্তূপ, বিরান, বিষাক্ত অঞ্চলে পরিণত না হয়। মানুষই যদি না থাকতে পারে তাহলে বিদ্যুৎ কে ভোগ করবে? ওই অঞ্চলে মানুষ, পশুপাখি, গাছপালা, পুকুর, নদী-খাল, মাছ, হাঁস-মুরগি, কৃষিজমি, ফল-ফুল, সবজি, পুরাকীর্তি আছে, আছে কয়লা। ব্যবসায়ী কোম্পানির চোখে সবকিছু অদৃশ্য হয়ে বিপুল মুনাফার উত্স কয়লায় গিয়ে চোখ আটকে থাকতেই পারে। স্বাধীন মানুষের তা হবে কেন? মানুষ তো সবকিছু দেখে বুঝেই বিচার-বিবেচনা করবে।তাহলে পথ কী? ভূমি, মাটি, পানি, পরিবেশের কোনো ক্ষতি না করে কয়লাসম্পদ কীভাবে ব্যবহার করা যায়, তার জন্য অনেক দিন থেকেই গবেষণা হচ্ছে। আরো নতুন নতুন প্রযুক্তি আসছে। আর বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ঠিকঠাকমতো অগ্রসর হতে গেলে এ দেশেও গবেষণার সুযোগ সম্প্রসারণ করতে হবে। সবকিছু বিবেচনায় যে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ তা হলো, নিজেদের কর্তৃত্বে যদি তেল-গ্যাস, কয়লাসম্পদ থাকে ��বং নিজেদের জাতীয় সক্ষমতা তৈরির ব্যবস্থা যদি করা যায় তাহলে বাংলাদেশের জন্য সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহারের পথ বের করা ঠিকই সম্ভব হবে। আর ভবিষ্যৎ প্রজন্মও যে এই সম্পদের মালিক, সেটাও মনে রাখতে হবে। জাতীয় কমিটির সাত দফায় বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধানে যে রূপরেখা দেয়া হয়েছে, তাতে স্পষ্ট হয় যে, সমাধান খুবই সম্ভব। ফুলবাড়ী, রামপাল, রূপপুর, বাঁশখালীর মতো প্রাণ-প্রকৃতি সম্পদ ধ্বংসকারী ঋণনির্ভর প্রকল্প মোটেই সমস্যা সমাধানের পথ নয়, বরং মহাবিপদের আয়োজন। সমাধানের পথ— স্থলভাগ ও বঙ্গোপসাগরের গ্যাসসম্পদ, কয়লা ও বিদ্যুৎ নিয়ে জাতীয় স্বার্থবিরোধী তত্পরতা ও চুক্তির বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ, জাতীয় সক্ষমতার ওপর দাঁড়িয়ে নবায়নযোগ্য ও অনবায়নযোগ্য জ্বালানির সমন্বয়ে সমাধানের পথনকশা তৈরি। ঘাড় থেকে দুর্বৃত্ত না সরালে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ সম্ভব হবে না।সেজন্য ভুইফোঁড় প্রতারক কোম্পানি বহিষ্কারসহ ফুলবাড়ী চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নই সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহারের পথে একটি সঠিক পদক্ষেপ হতে পারে।ফুলবাড়ীর মানুষ রক্ত দিয়ে এ বার্তাই দিয়ে গেছেন যে, জনগণের সম্পদ জনগণের মালিকানায়, দেশ ও জনগণের প্রয়োজনে শতভাগ ব্যবহার হতে হবে। ফুলবাড়ী গণঅভ্যুত্থান বার্তা দেয়, দুর্বৃত্ত-লুটেরাদের লুট, ধ্বংসযজ্ঞ আর পাচারের কোনো প্রকল্পই মানুষ গ্রহণ করবে না। এ বার্তা ১০ বছর ধরে জারি থাকা এই প্রতিরোধ, জনগণের এই শক্তির প্রকাশ শুধু বাংলাদেশকে নয়, সারা বিশ্বের মানুষকেই অনুপ্রাণিত করার ক্ষমতা রাখে। সুন্দরবনবিনাশী রামপাল প্রকল্পের বিরুদ্ধে সারা দেশের মানুষ যে প্রতিরোধে শামিল হয়েছেন, তা এ শক্তিকে আরো বিস্তৃত করছে।
0 notes
Photo
New Post has been published on https://paathok.news/84967
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে কুশীলবদের মুখোশ উন্মোচন এখন সময়ের দাবি
.
বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা না হলে, সিঙ্গাপুর মালেশিয়ার চেয়েও উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হতো বাংলাদেশ। দেশ যখন সমৃদ্ধির পথে যাচ্ছিলো তখনই এ দেশ যারা চায়নি তারা বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীনতার সাড়ে তিন বছরের মাথায় স্ব-পরিবারে হত্যা করেছ���।
তিনি আজ শনিবার (৩ আগস্ট) বিকেলে চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলা পরিষদ চত্বরে আয়োজিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে মন্ত্র্রী আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখেছিলেন সোনার বাংলা গড়ার। তিনি সোনার বাংলা রচনা করে যেতে পারেননি। বঙ্গবন্ধু হত্যার সাথে যারা সরাসরি যুক্ত ছিলেন তাদের বিচার করা হয়েছে। তবে হত্যাকাণ্ডে নীল নকশার পটভূমি রচয়িতাদের বিচার করা যায়নি। ন্যায় বিচার ও ইতিহাসের স্বার্থে তাদের মুখোশ উন্মোচন করা এখন সময়ের দাবি। বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের যারা কুশীলব তাদের মুখোশ উন্মোচন করতে একটি কমিশন গঠন করা হবে বলে জানান মন্ত্রী।
.
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে না পেরে পরাজিত শক্তি নানাভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু হোক খালেদা জিয়া চাননি। তিনি বলেছিলেন, জোড়াতালি দিয়ে পদ্মা সেতু বানানো ��চ্ছে। যখন তারা দেখলো সেতু নির্মাণ হয়ে যাচ্ছে, তখনই লন্ডন থেকে পোস্ট দেওয়া হলো সরকারের অনুমতি নিয়ে ১ লক্ষ শিশুকে বলি দিতে হবে পদ্মা সেতুর জন্য। এ গুজব ছড়িয়ে কিছু নিরীহ মানুষের প্রাণ সংশয় করেছে তারা। এ গুজব ছাড়ানোর সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।
এছাড়া দেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় সুযোগ নিয়ে বেসিনে হারপিক ও ব্লীচিং পাওডার ঢালার গুজব ছড়িয়ে পরিবেশের ক্ষতি করতে চেয়েছে বিএনপি। ডেঙ্গু মোকাবেলায় সরকার ব্যাপক পদক্ষেপ নিয়েছে এতে আতঙ্কিত না হয়ে বাড়ির আশপাশ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখার আহ্বান জানান তিনি।
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল দেশ গড়ার প্রতিশ্রতি ঘোষণা করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী ঘোষণার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি। তিনি ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করেছেন।
কালুরঘাটে সড়ক কাম রেল সেতু নির্মাণ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, গত সপ্তাহে সচিব কেবিনেটের উদ্যোগে বৃহত্তর চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের উন্নয়ন সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে কালুরঘাটে সেতু নির্মাণে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। পরবর্তী বৈঠকে আবারো বিষয়টি তোলা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, কালুরঘাট সেতু নির্মাণ নিয়ে যে জটিলতা দেখা দিয়েছে তা নিরসনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বোয়ালখালী উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নুরুল আমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মোকারমের সঞ্চালনায় প্রধান আলোচক ছিলেন ছিলেন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরী।
এতে বক্তব্য রাখেন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নুরুল আলম, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক বোরহান উদ্দিন এমরান, মুক্তিযোদ্ধা রাজেন্দ্র প্রসাদ চৌধুরী, আ হ ম নাসির উদ্দিন, আ.লীগ নেতা রেজাউল করিম বাবুল, রিদুয়ানুল হক টিপু, জহুরুল ইসলাম জহুর, শাহজাদা মিজানুর রহমান, সেকান্দর আলম বাবর, ইউপি চেয়ারম্যান এসএম জসিম, কাজল দে, যুবলীগ নেতা আবদুল মান্নান, ছাত্রলীগ নেতা বোরহান উদ্দিন ও ইঞ্জিনিয়ার আবদুল মোনাফ মহিন।
সভায় তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদকে মফস্বল সাংবাদিকদের প্রত্যাশার কথা তুলে ধরে বোয়ালখালী প্রেস ক্লাবের সভাপতি মো. শাহীনুর কিবরিয়া মাসুদ শুভেচ্ছা ক্রেস্ট ও মানপত্র তুলে দেন।
0 notes
Text
বাঙালির অনন্ত প্রেরণার উৎস বঙ্গবন্ধু
বাঙালির অনন্ত প্রেরণার উৎস বঙ্গবন্ধু
ড. ফারজানা ইসলাম ।। ‘আগস্ট’কে আমরা শোকের মাস বলি। এ মাসেই আমরা হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হারিয়েছি। এ মাসে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিবকেও হারিয়েছি। একই সঙ্গে আরও হারিয়েছি বঙ্গবন্ধুর তিন পুত্র, দুই পুত্রবধূ এবং তার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ স্বজনদেরও। আগস্ট বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠপুত্র শেখ কামাল ও বঙ্গমাতা ফজিলাতুননেছার জন্মমাসও বটে।
বাঙালি জাতি হিসেবে আমাদের সবচেয়ে বড়…
View On WordPress
0 notes
Text
করোনায় বিএনপির ৭৩ নেতাকর্মীর মৃত্যু : মির্জা ফখরুল
New Post has been published on https://is.gd/OEkdMH
করোনায় বিএনপির ৭৩ নেতাকর্মীর মৃত্যু : মির্জা ফখরুল
সারা দেশে নভেল করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত বিএনপির ৭৩ নেতাকর্মী মৃত্যুবরণ করেছেন বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এছাড়াও প্রাণঘাতী এ ভাইরাসে এখন পর্যন্ত দলের ২৮৪ জন নেতাকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন বলেও জানান তিনি। বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) দুপুরে উত্তরার নিজ বাসা থেকে এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি। করোনাকালে দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সুস্থ রাখার জন্য কী ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে এবং বর্তমানে তিনি কেমন আছেন, জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তাঁকে সুস্থ রাখতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আপনারা জানেন, করোনা ভাইরাসের কোনো চিকিৎসা নেই। সেজন্য এ ভাইরাস প্রতিরোধ করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। উনি করোনা থেকে মুক্ত আছেন। তবে ওনার যে পুরনো অসুস্থতা, সেটার তেমন উন্নতি হয়নি। চিকিৎসার তেমন সুযোগ নেই। হাসপাতালগুলোতেও যাওয়া যাচ্ছে না। বাইরে যাওয়ার ব্যাপারে তো সরকারের শর্তই আছে যে, বিদেশে যাওয়া যাবে না। অর্থাৎ তাঁর যে পুরোনো অসুখ সেগুলোর চিকিৎসা হচ্ছে না।’ ‘করোনা নিয়ে বিএনপি ও বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা ভুল প্রমাণিত হয়েছে’, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের এমন বক্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তাদের যে ব্যর্থতা সেটা ঢাকতে গোটা জাতির সঙ্গে তারা মিথ্যাচার করছেন। আমাদের কথা নয়, চীনের যে বিশেষজ্ঞ দল এসেছিল তারা বলে গেছে, তাদের (বর্তমান সরকারের) কোনও প্রতিরোধ পরিকল্পনাই ছিলো না। আজ প্রমাণিত হয়ে গেছে, তারা সম্পূর্ণ ব্যর্থ। এটা বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞ ও সাধারণ মানুষকে জিজ্ঞাসা করলেই বুঝতে পারবেন। কত মানুষ টেস্ট করতে পারছেন না, কত মানুষ টেস্ট করতে গিয়ে মারা গেছেন, কত মানুষ অক্সিজেনের অভাবে মারা গেছেন, কত মানুষ সাধারণ চিকিৎসার জন্যও কোনও হাসপাতালে যেতে পারছেন না। স্বাস্থ্যব্যবস্থা যে পুরোপুরিভাবে ভেঙে পড়েছে এটাই তার প্রমাণ।’ সম্প্রতি ত্রাণ বিতরণে বিএনপিকে কোথায়, কে বাধা দিয়েছে- আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তার প্রমাণ চেয়েছেন এবং অভিযোগ প্রমাণিত হলে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়াও আশ্বাস দিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে বলেছি, সাতক্ষীরায় সংসদ সদস্যের ছেলের নেতৃত্বে হামলা করা হয়েছে। ১৫/২০টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। অনেককে আহত করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জের মহিলা কাউন্সিলর আয়শা আক্তারের ওপর হামলা হয়েছে। রাজশাহীতে ত্রাণ দেয়ার সময় ৬ মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। কুষ্টিয়ায় জাহিদুল ইসলাম বিপ্লবকে আটক করা হয়েছে। আমি বলতে চাই সরকার অবৈধ ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করার জন্য সব রকমের কূটকৌশল প্রয়োগ করেছে।’ এ প্রসঙ্গে ফখরুল আরও বলেন, ‘আজকে পত্রিকায় আছে, ২২২ জন কারারক্ষী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। অথচ আমরা প্রথম থেকে বলে আসছি, যাদের মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে আটক রাখা হয়েছে, তাদের মুক্তি দেয়া হোক। আমাদের নেতা আব্দুস সালাম পিন্টু, লূৎফুজ্জামান বাবর- এরা অত্যন্ত অসুস্থ এবং বয়ষ্ক। এরা সবাই রাজনৈতিক মামলায় আটক আছেন। আমরা আশা করেছিলাম, সরকার এদের মুক্তি দিয়ে একটা পরিবেশ সৃষ্টি করবে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে তারাতো সেটা করেইনি, উপরন্তু সংসদে আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নাম উচ্চারণ করতে বাধা দিয়েছে। অর্থাৎ ক্ষমতাসীনরা ফ্যাসিবাদী কায়দায় দেশ চালাচ্ছে। তারা একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায়। ভিন্নমত, ভিন্নদলকে কোনোভাবেই সহ্য করতে চায় না।’ ১৯৯১ থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন কয়টি জেলা হাসপাতালে আইসিইউ, সিসিইউ এবং অক্সিজেন ব্যবস্থা ছিলো- জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপনারা যে তথ্য চেয়েছেন সেটা সময় দিলে জানানো যাবে। পরিসংখ্যানটা বড় বিষয় নয়। (কিন্তু) গত এক দশকে বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে কীভাবে বরাদ্দ কমানো হয়েছে, সেটা দেখলেই বুঝতে পারবেন, বর্তমান সরকারের আমলে স্বাস্থ্যখাতের কোনও গুরুত্বই দেয়া হয়নি। এমনকি এবারের বাজেটেও স্বাস্থ্যখাতকে গুরুত্ব দেয়া হয়নি।’ সম্প্রতি সংসদে বিএনপির সদস্যরা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছেন, এটি দলীয় দাবি কিনা বা এ ব্যাপারে বিএনপি কী মনে করে, জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা তো এই সরকারকেই বলি, তাদের অবিলম্বে চলে যাওয়া উচিত। কারণ তারা নির্বাচিত সরকার নয়। তারাতো জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আসেনি। তারা সব ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে। সে ক্ষেত্রে (আমাদের দলের নেতারা) স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগতো চাইতেই পারেন।’ সরকারের কঠোর সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এ মহামারিতে সরকার দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে পারেনি।’ অপর এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘চীনা বিশেষজ্ঞরাই বলে গেছেন যে করোনা ভাইরাসে বাংলাদেশের কোনও প্রস্তুতি ছিল না। সরকার তাদের ব্যর্থতা ঢাকার জন্য মিথ্যচার করছে।’ ব্রেকিংনিউজ
0 notes