#সিরিয়ায় যুদ্ধের অবসান
Explore tagged Tumblr posts
newsinside24-blog · 7 years ago
Text
পশ্চিমা আক্রমণ কি আসাদকে দমাতে পারবে?
Tumblr media
এক বছর আগে সিরিয়াতে যে হামলা চালানো হয়েছিলো, এবারের আক্রমণ ছিলো তারচেয়েও বড় ধরনের। সেবার আক্রমণ করেছিলো যুক্তরাষ্ট্র একা। এবার তাদের সাথে যোগ দিয়েছে ব্রিটেন ও ফ্রান্স। গতবার সিরিয়ার বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে যতো হামলা চালানো হয়েছিলো, এবার তারচেয়েও বেশি অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। বলা হচ্ছে, দ্বিগুণেরও বেশি। খবর বিবিসি
Tumblr media
কিন্তু মূল যে প্রশ্ন সেটা রয়ে গেছে একই- এর মাধ্যমে কি যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব? যুক্তরাষ্ট্র বলছে, তাদের লক্ষ্য সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ যাতে আবারও রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার না করেন। সেজন্যে এই আক্রমণের মাধ্যমে তাকে একটি বার্তা দেওয়া হয়েছে। গত বছরের এপ্রিল মাসের আক্রমণের পর সিরিয়ায় যুদ্ধের অবসান ঘটেনি। কিন্তু দুটো বড়ো ধরনের পরিবর্তন ঘটেছে। প্রথমতঃ এই যুদ্ধে এখনও পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট আসাদ সরকারের জয় হচ্ছে এবং তার কৌশলের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে জনগণকে ভীতসন্ত্রস্ত করে রাখা। প্রেসিডেন্ট আসাদ এখনও হয়তো পুরো সিরিয়ায় তার নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন নি, কিন্তু রাশিয়া ও ইরানের সমর্থন পাওয়ার পর তার বিরুদ্ধে দাঁড়াবার মতো সিরিয়াতে এখন আর কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। দ্বিতীয়তঃ ওয়াশিংটন ও মস্কোর সম্পর্ক- সাধারণভাবে বলতে গেলে রাশিয়ার সাথে পশ্চিমা বিশ্বের সম্পর্কের উল্লখযোগ্য রকমের অবনতি ঘটেছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গেছে যে অনেকেই বর্তমান অবস্থানকে তুলনা করছেন শীতল যুদ্ধের সাথে। এরকম পরিস্থিতিতেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সিরিয়ায় আসাদ সরকারকে শাস্তিমূলক বার্তা দিতে চেয়েছেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই বার্তায় কতোটা কাজ হবে? প্রেসিডেন্ট আসাদ কি কিছুটা হলেও ভীত হবেন? নাকি আরো অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠবেন? এর ফলে রাশিয়ার অবস্থানের কি কোন পরিবর্তন ঘটবে? প্রতিরক্ষা বিষয়ক সাংবাদিক জনাথন মার্কাস বলছেন, এবিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থান খুব একটা পরিষ্কার নয়।ট্রাম্প নিজেও তার দেশের ভেতরে নানা ধরনের সমালোচনার মুখে জর্জরিত। এরকম একটা পরিস্থিতির মধ্যেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে যেসব হুমকি দিচ্ছিলেন তাতে মনে হচ্ছিলো বড় ধরনের সামরিক অভিযানই পরিচালিত হবে। কিন্তু কার্যত সেরকম কিছু হয়নি। সুতরাং এখান থেকে মস্কো কিম্বা প্রেসিডেন্ট আসাদ কি ধরনের উপসংহার টানতে পারেন? পেন্টাগন এমনভাবে এই অভিযান চালিয়েছে যাতে 'বিদেশিরা' বিশেষ করে 'রুশরা' যাতে আক্রমণের শিকার না হয় সেবিষয়ে তারা সচেষ্ট ছিলো। যে তিনটি জায়গাতে হামলা চালানো হয়েছে, বলা হচ্ছে, সেগুলো প্রেসিডেন্ট আসাদ সরকারের রাসায়নিক অস্ত্রের সাথে সম্পর্কিত। কিন্তু একই সাথে এসব জায়গায় বেসামরিক লোকজনের হতাহত হওয়ার ঝুঁকিও ছিল খুব কম। পেন্টাগনের কর্মকর্তারা যেমনটা বলেছেন, সিরিয়ার আরো কিছু জায়গা যুক্তরাষ্ট্রের তালিকায় ছিলো, সেগুলোতে আক্রমণ করা হয়নি। তাদের স্পষ্ট বার্তা ছিল- প্রেসিডেন্ট আসাদের সরকার যদি আবারও রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করে তাহলে তাদের উপর আরো হামলা চালানো হবে। কিন্তু গত এপ্রিলের অভিযানের পরেও কিন্তু রাসায়নিক অস্ত্র বিশেষ করে ক্লোরিন গ্যাস ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে প্রেসিডেন্ট আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে। তখন কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র কোন আক্রমণে যায় নি। এখন পশ্চিমারা আশা করছে যে এর ফলে আসাদের আচরণের পরিবর্তন ঘটবে। কিন্তু সিরিয়ায় যে গৃহযুদ্ধ চলছে তার কি হবে? এই বর্বর যুদ্ধ শেষ হওয়ার কোন লক্ষণই তো চোখে পড়ছে না। অনেকেই বলছেন, সিরিয়াতে যেসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে সেগুলো হচ্ছে ব্যারেল বোমা, বুলেট এবং গোলা-হামলার কারণে। রাসায়নিক হামলার কারণে নয়। কিন্তু এটাই কি শুধু পশ্চিমা বিশ্বকে সিরিয়ায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাতে আগ্রহী করে তুললো? প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যবহারের কারণে পশ্চিমা বিশ্বে ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক কারণে রাসায়নিক অস্ত্রের ব্যাপারে একটা ভীতি আছে। এই অস্ত্রের ব্যবহারকে নিষিদ্ধ করে গৃহীত আন্তর্জাতিক চুক্তিও নিরস্ত্রীকরণের ব্যাপারে একটি গুরুত্বপূর্ণ সমঝোতা। কিন্তু বড় প্রশ্ন হচ্ছে, পশ্চিমা বিশ্বের সবশেষ এই আক্রমণ সিরিয়ার পরিস্থিতির কতোটা পরিবর্বতন ঘটাবে? এর ফলে কি গৃহযুদ্ধ অবসানের জন্যে কোন পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে? দুঃখজনকভাবে এর উত্তর হচ্ছে - না। এই যুদ্ধের অবসান ঘটাতে পরিষ্কার কোন কৌশলও নেই। রাশিয়ার উত্থান আসাদ সরকারের প্রতি সামরিক ও রাজনৈতিক সহযোগিতা প্রদর্শনের মাধ্যমে রাশিয়া ওই অঞ্চলে তার অবস্থানকে আরো জোরালো করেছে। মস্কো যুক্তরাষ্ট্রকে হুশিঁয়ারও করে দিয়েছে তারা যাতে সিরিয়াতে আক্রমণ না করে। কিন্তু এই আক্রমণের পর রাশিয়া এখন কি করতে পারে? বিশ্লেষকরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সরাসরি কোন যুদ্ধে জড়াবে না রাশিয়া। তবে তারা হয়তো যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তাদের প্রচারণাকে আরো তীব্�� করতে পারে। এরকম প্রচারণা ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। তারা বলছে, সিরিয়াতে রাসায়নিক হামলার কোন প্রমাণ তারা পায়নি। শুধু তাই নয়, তারা এও বলছে যে, আসাদ ও মস্কোকে বিপদে ফেলার জন্যে ‘বিদেশি এজেন্টদের দিয়ে এরকম একটি ঘটনা সাজানো’ হয়েছে। নতুন করে শীতল যুদ্ধ নিঃসন্দেহেই এটা বলা চলে যে নতুন করে এক শীতল যুদ্ধের পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। এর ফলে পরমাণু যুদ্ধের হয়তো কোন আশঙ্কা নেই, কিন্তু এটাও ঠিক যে এই পরিস্থিতিতে কি ধরনের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে সেটাও হয়তো আঁচ করা সম্ভব নয়। সোভিয়েত ইউনিয়নের মতো সুপারপাওয়ার নয় রাশিয়া। এই দেশটির এখন আর তেমন কোন আদর্শ নেই যার ফলে সারা বিশ্বের স্বাধীনতাকামীরা তাদেরকে সমর্থন দিতে পারে। রাশিয়া এখন মাঝারি ধরনের আঞ্চলিক শক্তি যার উল্লেখযোগ্য রকমের পরমাণু অস্ত্র রয়েছে। একই সাথে আছে দুর্বল অর্থনীতিও। কিন্তু এই দেশটি এখন জানে কিভাবে তথ্য দিয়ে যুদ্ধ চালাতে হয়। এবং প্রেসিডেন্ট পুতিন তো রাশিয়ার স্বার্থ রক্ষায় বদ্ধ পরিকর। সিরিয়ায় রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান প্রভাব ইসরায়েলের সাথেও সংঘাতের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। সম্প্রতি ইসরায়েল সিরিয়ার একটি ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে বলে ধারণা করা হয়। ফলে উত্তেজনা বাড়ছে। এই উত্তেজনার শেষ কোথায়, কিভাবে ও কখন সেটা কেউ বলতে পারে না। আর যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও ফ্রান্সের সবশেষ এই সামরিক আক্রমণ হয়তো এই উত্তেজনাতেই আরো একটা মাত্রা যোগ করলো। Read the full article
0 notes