#রমজানের শেষ দশকে এ দোয়া বেশি বেশি পড়তে হয়
Explore tagged Tumblr posts
bartatv-blog · 6 years ago
Photo
Tumblr media
রোজার মূল উদ্দেশ্য কী মহান রাব্বুল আলামিন তার পবিত্রগ্রন্থ আল-কুরআনে এরশাদ করেছেন- ‘ও মানুষেরা তোমরা যারা ঈমান এনেছ, রোজা অর্থাৎ রমজান মাসের রোজা তোমাদের ওপর ফরজ করা হয়েছে, যেমনটা ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী জাতির লোকদের ওপর; যাতে করে তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পার বা মোত্তাকি হতে পার’। ‘আস-সউম’ শব্দের অর্থ হলো- রোজা বা একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বিরত থাকা। এটা হলো সাধারণ অর্থ। বাহ্যিক অর্থ এবং এই বাহ্যিক শব্দের মধ্যে তাকওয়া খুঁজে পাওয়া যাবে না, শুধু রোজা রাখা হবে, ক্ষুদার্ত ও তৃষ্ণার্ত থাকা হবে। কিন্তু এই শব্দের আরেকটি অর্থ আছে, যাকে বলে অভ্যন্তরীণ বা ভেতরের অর্থ অথবা বলা যায় কুরআনিক অর্থ। যার মানে হলো- আল্লাহর জন্য রমজানের ফরজ রোজার নিয়তে সেহরি খাবেন। তারপর, ফজরের আজান থেকে নিয়ে মাগরিবের আজান পযর্š— কোনো প্রকার খাদ্য গ্রহণ না করা, স্ত্রীর কাছে না যাওয়া, খারাপ কথা না বলার নাম হলো রোজা। সেই তাকওয়া অর্জন করার জন্য রোজা রাখার নিয়ম আল্লাহর রাসূল সা: এভাবে বলেছেন, যে রোজা আমাদের তাকওয়া দিবে, সংশোধন করবে, পরহেজগার বানাবে ও সম্মানের সাথে পৃথক দরজা দিয়ে জান্নাতে যাওয়ার সুযোগ করে দেবে; সেই ধরনের রোজা রাখতে হলে প্রথমে আমাদের রোজা রাখার নিয়তে সেহরির সময়ে সেহরি খেতে হবে। আল্লাহর রাসূল সা: বলেছেন- ‘তোমরা সেহরি খাও, কেননা সেহরি খাওয়ার মধ্যে বরকত রয়েছে’(বুখারি-মুসলিম)। সেহরি না খেলে আপনার রোজা হয়ে যাবে কিন্তু সেহরির সওয়াব থেকে আপনি বঞ্চিত হবেন। সুতরাং, সেহরির সময় সেহরি খেয়ে আপনি নিয়ত করেন। ফজর পড়েন এবং জামায়াতে পড়তে চেষ্টা করেন। তারপর হাতে বেশি সময় থাকলে একটু ঘুমুতে যান। আর কম সময় থাকলে কিছু সময় কুরআন তিলাওয়াত করেন। বাজে ও মিথ্যা কথা, ধোঁকাবাজী এবং এই ধরনের যাবতীয় গুনাহের কাজ থেকে আপনাকে বেঁচে থাকতে হবে। আপনার চোখ, হাত পাসহ আপনার শরীরের প্রত্যেকটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কিন্তু রোজা রেখেছে, সেটা আপনার মাথায় থাকতে হবে। তাই আপনি অফিস আদালতে এমন কোনো কাজ করতে পারবেন না, যা হালাল নয় বা যা অন্যের ক্ষতি করে। ইসলামি শরিয়তে রোজা রাখা মানে সমস্ত শরীরের রোজা রাখা। ইফতারির আগমুহূর্তে দোয়া কবুল হয়। এভাবে যখন আপনি-আমি পূর্ণ একমাস রোজার হক আদায় করে রোজা রাখব, তখন দেখবেন ইন’শা আল্লাহ আমাদের মধ্যে পরিবর্তন আসবে। এই পরিবর্তনের মাধ্যমে আমরা আগামী ১১ মাস তাকওয়ার সাথে জীবনযাপন করতে পারব। ইসলামের এত গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদাত রমজান মাসের রোজাগুলো যাতে সঠিকভাবে রোজার হক আদায় করে পালন করা যায়, সেজন্য আল্লাহর রাসূল সা: একটি হাদিসের মাধ্যমে আমাদেরকে সতর্ক করে দিয়েছেন। হুজুর সা: বলেছেন- ‘যখন তোমাদের মধ্যে কেউ কোনো দিন রোজা রাখে, তখন রোজা অবস্থায় সে যেন কখনো খারাপ ভাষা, চিৎকার, গালিগালাজ, অপ্রয়োজনীয় তর্কে জড়িয়ে না পড়ে। কেউ যদি তার সাথে গায়ে পড়ে ঝগড়া করতে চায় বা তর্কে লিপ্ত করতে চায় তাহলে সে যেন বলে, ভাই আমাকে ক্ষমা করবেন, আমি রোজা রেখেছি। (বুখারি -মুসলিম) রোজার উদ্দেশ্য হলো- তাকওয়া অর্জন। যেটার জন্য আল্লাহ রোজাকে ফরজ করেছেন। তাই রমজান মাসের সব আমল- সেহরি, ইফতার, তারাবিহ, খতমে কুরআন, তাহাজ্জুদ, সদাকাতুল ফিতর ও ঈদের আনন্দ এ সব ইবাদাতের আগে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে যে, এগুলো করার পেছনে উদ্দেশ্য হলো তাকওয়া অর্জন করা। সুতরাং, রোজা অবস্থায় আমাদের কোনো অহেতুক কথা বা ঝগড়ায় জড়ানো মোটেই ঠিক নয়। এভাবে আমরা রোজা রাখার মাধ্যমে তাকওয়া অর্জন করতে পারব ইন’শা আল্লাহ। লেখক : প্রবাসী, ভার্জিনিয়া, ইউএসএ আরো পড়ুন : রমজান মানুষকে কল্যাণের পথে নিয়ে যায় সালমা সাহলি ইসলামের পাঁচটি রোকনের মধ্যে সাওম চতুর্থ এবং অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি রোকন বা স্তম্��। যা ফরজ করা হয়েছে মুসলমানের জন্য। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ, তোমাদের ওপর সিয়াম ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের ওপর, যাতে তোমরা পরহেজগারিতা অর্জন করতে পারো।’ (সূরা বাকারা-১৮৩)। মহান আল্লাহ তার সৃষ্টি মানবজাতির পথপ্রদর্শনের জন্য এই মাসেই পবিত্র কুরআন নাজিল করেন। এই মাসের শেষ দশকে রয়েছে এক মহিমা¤িœত রাত, যা হাজার মাসের (ইবাদতের) থেকে উত্তম; আল্লাহ তায়ালা যাকে লাইলাতুল কদর বলেছেন। পূর্ণ মর্যাদাসম্পন্ন এই মাসের গুরুত্ব সম্পর্কে কুরআনে বেশ কয়েকটি আয়াত অবতীর্ণের পাশাপাশি অনেক হাদিসও বর্ণিত হয়েছে। যেমন, হজরত আবু হুরায়রা রা: হতে বর্ণিত- আল্লাহর রাসূল সা: বলেন, সিয়াম ঢাল স্বরূপ। সুতরাং অশ্লীলতা করবে না, মূর্খের মতো কাজ করবে না। যদি কেউ তার সাথে ঝগড়া করতে চায়, তাকে গালি দেয় তবে সে যেনো বলে, আমি রোজাদার। ওই সত্তার শপথ; যার হাতে আমার প্রাণ, অবশ্যই সাওম পালনকারীর মুখের গন্ধ আল্লাহর কাছে মিসকের সুগন্ধির চাইতেও উৎকৃষ্ট। আল্লাহ বলেন, সে আমার জন্য পানাহার ও কামাচার পরিত্যাগ করে, সিয়াম আমারই জন্য, আমি নিজেই এর পুরস্কার দান করব। আর প্রত্যেক নেক কাজের বিনিময় দশগুন, (বুখারি, মুসলিম, আহমেদ)। ১) পূর্ণ আন্তরিকতার সাথে আল্লাহমুখী হয়ে রমজান মাসের রোজা পালন এবং একনিষ্ঠ ইবাদতের নিয়ত করা। ২) এই মাসে বেশি বেশি ইবাদতের জন্য সময় বের করার লক্ষ্যে দুনিয়াবি ব্যস্ততা কমিয়ে ফেলা। এ জন্য যতটুকু সম্ভব রোজা শুরু হওয়ার পূর্বেই দফতরিক কাজসহ প্রত্যেকে তার নিজ পেশা অনুযায়ী কিছু কাজ সেরে রাখা উচিত। রোজার সময় অনেক পরিবারে মহিলাদের কাজ বেশি থাকে। কিছু কাজ তারা সংক্ষিপ্ত করতে পারেন। ৩) আগের সব গুনার জন্য লজ্জিত হয়ে তাওবা-ইস্তেগফারের মাধ্যমে তা থেকে ফিরে আসা। খাঁটি দিলে তাওবাহকারীকে আল্লাহ পছন্দ করেন। ইচ্ছা এবং অনিচ্ছাকৃত করা সব পাপ থেকে নিজেকে সরিয়ে এনে তার বদলে বেশি করে নফল ইবাদত করা। কেননা হাদিসে এসেছে, ভুলে কেউ একটি পাপ করে ফেললে সে যেনো একটি পুণ্য করে নেয়। বেশি ইবাদত পাপকে মিটিয়ে দেয়। ৪) পুরুষেরা পাঁচ ওয়াক্ত সলাত মাসজিদে ��ামাতে আদায় করা এবং মহিলারা আওয়াল সময় খুসুখুজর সাথে সলাত পড়া। আমাদের আরো বেশি সচেতন এবং যতœবান হতে হবে সলাতের ব্যাপারে। প্রত্যেকটা রোকন পালন করে ধীর-স্থিরতার সাথে সলাত আদায় করা খুবই জরুরি। হাদিসে দ্রুত সলাতকে মোরগের ঠোকর দেয়ার সাথে তুলনা করা হয়েছে। এমন সলাতকে তার মুখে ছুড়ে মারা হবে এমন সাবধানবাণীও এসেছে। ৫) রমজান মাস কুরআন অবতীর্ণের মাস। নিয়মি�� কুরআন তিলাওয়াত, কুরআন শিক্ষা করা, শিক্ষা দেয়া খুবই মর্যাদাপূর্ণ একটি আমল। কুরআন বুঝে পড়ে আমল করার মর্তবা অপরিসীম। এ বিষয়ে আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা স্বয়ং বেশ কিছু আয়াত নাযিল করেছেন। যেমন, (ক) শুদ্ধ ও যথাযথভাবে কুরআন তিলাওয়াত প্রসঙ্গে, আমি যাদেরকে কিতাব দিয়েছি, তারা তা যথার্থভাবে পাঠ করে। তারাই তার প্রতি ঈমান আনে। আর যে তা অস্বীকার করে, তারাই ক্ষতিগ্রস্ত’ (সূরা বাকারাহ, আয়াত- ১২১)। (খ) কুরআন নিয়ে চিন্তা গবেষণা করা প্রসঙ্গেÑ ‘আমি তোমার প্রতি নাজিল করেছি এক বরকতময় কিতাব, যাতে তারা এর আয়াতসমূহ নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করে এবং যাতে বুদ্ধিমানগণ তা অনুধাবন করে’ (সূরা সোয়াদ, আয়াত- ২৯)। ৬) কিয়ামুল লাইল বা তারাবির সলাত পড়া। তাড়াহুড়া করে বা যেনোতেনোভাবে অনেক বেশি সালাত পড়ার থেকে শুদ্ধ ও তারতিলের সাথে দীর্ঘ সূরা পড়ে কবুলযোগ্য আট-দশ রাকাত সলাত পড়া অনেক উত্তম। সলাতের প্রতি সবার বিশেষভাবে যতœবান হওয়া জরুরি, হোক তা জামাতের সাথে ফরজ সলাত কিংবা ঘরে একাকী সুন্নত বা নফল সলাত। ৭) সময়মতো নিয়ত করা, সেহরি খাওয়া এবং সময়মতো ইফতার করা। ফরজ সিয়ামে নিয়ত একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সময়মতো এবং অন্তর থেকে নিয়াত করা শর্ত। শেষ রাতে সেহরি খাওয়া উত্তম এবং এতে বরকত রয়েছে। সূর্য অস্তমিত হওয়ার সাথে সাথে ইফতার করার নির্দেশ এসেছে হাদিসে। সবাই একসাথে ইফতার করা উচিত। ৮) জাকাতুল মাল ও বেশি বেশি সদাকা করা। নিসাব পরিমাণ সম্পদ থাকলে তার যাকাত বের করে সময়মতো পরিশোধ করা ফরজ। ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে যাকাতের স্থান তৃতীয়। যাকাত অন্যের হক। কুরআনে বার বার সলাতের পর যাকাতের প্রসঙ্গটি এসেছে। রমজান মাসে যেহেতু সব ভালো কর্মের প্রতিদান বেশি, তাই এই সুযোগটি কাজে লাগিয়ে বেশি বেশি দান করা উচিত। ৯) কল্যাণকর কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখা। রামাদানের প্রত্যেকটি মুহূর্তকে ফলদায়ক করাতে নিজেকে সচেষ্ট হতে হবে। আল্লাহর শুকরিয়া আদায়, দ্বীনের দাওয়াতি কাজসহ অন্যের প্রয়োজনে এগিয়ে যাওয়া এবং সর্বক্ষণ জিকিরের মাঝে নিজেকে নিয়োজিত রাখুন। পরিবারের বয়সীদের সেবাযতœ করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা সহজ, বিশেষ করে পিতা-মাতার সন্তুষ্টিতে আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং জান্নাত পাওয়া সহজ হয়। ১০) লাইলাতুল কদর সন্ধান করা।‘সূরা কদর, আয়াত ১-৫। এ ছাড়া সূরা দুখানের তিন নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন- ‘নিশ্চয় আমি একে (কুরআান) এক বরকতময় রাতে নাজিল করেছি। নিশ্চয়ই আমি সতর্ককারী’। এ থেকে বুঝা যয়, এই রাতটি কতটা মহিমান্বিত। এই রাত যেনো হারিয়ে না যায় সেই জন্যে এই রাতের সন্ধানে ইতিকাফ করা উচিত এবং তা করা সুন্ন��।. ১১) ওমরা করা। এই মাসে উমরা পালন করার কথা হাদিসে এসেছে যা গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদাত। ১২) রোজা রাখা অবস্থায় সব রকম পাপ থেকে বেঁচে থাকা। আমাদের সমাজে কিছু অন্যায় অহরহ করা হয়। অনেকে রোজা অবস্থায়ও এসব থেকে মুক্ত হতে পারে না। বিশেষ করে জিহবা দ্বারা সংঘটিত পাপ। উল্লিখিত পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করে এবং বাস্তবায়িত করতে পারলে আশা করা যায়, রামজান মাসটিকে আমরা যথাযথভাবে কাজে লাগাতে সক্ষম হবো ইন’শা আল্লাহ। রাসূল সা: বলেন, যে রমজান মাস পেলো অথচ নিজের গুনাহ মাফ করিয়ে নিতে পারল না, সে সব কল্যাণ থেকে বঞ্চিত। তাহলে আসুন আমরা সচেষ্ট হই রমজানের আদব রক্ষা করে আল্লাহ তায়ালার ইবাদত এবং তাওবাহ ইস্তেগফারের মাধ্যমে গুনাহ মাফ করিয়ে তার নৈকট্য অর্জনে কামিয়াব হতে। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন। আমিন।
0 notes