#চাকরি নিয়োগ
Explore tagged Tumblr posts
Text
सरकारी नौकरी पाने का शानदार मौका, 2500 से ज्यादा पद के लिए इस दिन तक होंगे आवेदन
সরকারি চাকরি: সরকারি চাকরি পাওয়ার দারুণ সুযোগ, আজ পর্যন্ত 2500-এর বেশি পদের জন্য আবেদন গ্রহণ করা হবে। Source link
View On WordPress
#mahatransco.in#চাকরি 2023#চাকরির খবর#মহাট্রান্সকো#মহাট্রান্সকো চাকরি#মহাট্রান্সকো নিয়োগ#মহাট্রান্সকো নিয়োগ 2023#মহাট্রান্সকো নিয়োগ 2023 2541 পদের জন্য#মহাট্রান্সকো নিয়োগ 2023 রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়েছে#মহাট্রান্সকো শূন্যপদ#সরকারি চাকরি#স্থায়ী কাজ#স্থায়ী চাকরি#হিন্দিতে কর্মসংস্থানের খবর#হিন্দিতে চাকরির খবর
0 notes
Text
Job Circular App
Read job news daily. Read daily job post, read exam preparation guide, see daily new job news, like private jobs, bank jobs, government jobs, medical jobs, school college jobs, engineering jobs, see circular posts of all types of jobs, you can apply very easily. Get all your job news on Job Circular BD. job circular App Read job news every day, visit our website regularly to find the job of your choice, get all kinds of job news News New Job Website, such as government job, company job, bank job, private job, school college job, medical job and other job news, here Weekly magazine news, such as Chakrir Dak and other news magazines, New Job, Govt Job, Private job, Job circular, Job BD, teletalk job নতুন চাকরি, চাকরির বিজ্ঞপ্তি, চাকরি বিডি, সকল চাকরি, All job, job 2023, চাকরি ২০২3, সরকারি চাকরি, বেসরকারি চাকরি, হট চাকরি, বাংলাদেশ চাকরি, সাপ্তাহিক পত্রিকা, সকল পত্রিকার নিউজ, চাকরির খবর, দৈনিক চাকরি, জব আপডেট নিউজ, চাকরির ডাক, সাপ্তাহিক চাকরি, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, সার্কুলার, চাকরির সার্কুলার, নতুন চাকরির সার্কুলার, নতুন সার্কুলার, Govt Job, Private job, Job circular, New Job, Job BD, All job, job 2022, সকল চাকরির নিত্য নতুন আপডেট দেখুন https://jobcircular.app/ New job, job circular, job bd, all job, government job, private job, hot job, Bangladesh job, weekly newspaper, all newspaper news, job news, daily job, job update news, Weekly Job, alljobs teletalk bd, alljobs teletalk, teletalk job circular, govt jobs today, army sainik job circular, teletalk job circular 2023, job news, company job, bank job, school college job, medical job, other job, All job, job 2023, চাকরি ২০২২, Weekly magazine, Chakrir Dak, নতুন চাকরি বিজ্ঞপ্তি, চাকরির বিজ্ঞপ্তি, বাংলাদেশ চাকরি বিজ্ঞপ্তি, চাকরি বিডি, সকল চাকরি, সরকারি চাকরি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, বেসরকারি চাকরি বিজ্ঞপ্তি, সাপ্তাহিক চাকরি পত্রিকা, সকল পত্রিকার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, চাকরির খবর, দৈনিক চাকরি, জব আপডেট নিউজ, চাকরির ডাক, সাপ্তাহিক চাকরি নিয়োগ, নিয়োগ সার্কুলার, All job, job 2023, চাকরি ২০২২, All job, job 2022, see daily new updates of all jobs https://jobcircular.app/
Job Circular App #Recruitment Circular. #Job circular 2023, #gov job, #Circular App
gov job 2023, #Govt job, #JobCircular ##JobCircularApp #Job Circular #Job BD, #Job Circular, #teletalk job bd
JOBS Ministry, teletalk job circular, teletalk job, teletalk all jobs #NTRCAR job Job Circular App 2023, Job Circular app, #NEW JOB, #teletalk job portal
all job bd Circular App gov job 2023 Govt job Mosque Based Child and Mass Literacy Program( MBCMLP) ob Circular app
2 notes
·
View notes
Text
কেয়ার বাংলাদেশে চাকরি, বেতন ২ লাখ ৩২ হাজার
বেসরকারি সংস্থা কেয়ার বাংলাদেশ জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। সংস্থাটি ঢাকায় ইউএসএআইডি বিজয় অ্যাকটিভিটি বিভাগে কর্মকর্তা নিয়োগ দেবে। আগ্রহী প্রার্থীদের অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। পদের নাম: লিড—ইয়ুথ এনগেজমেন্ট অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি পদসংখ্যা: ১ যোগ্যতা: রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট, জেন্ডার স্টাডিজ বা এ ধরনের বিষয়ে স্নাতক/স্নাতকোত্তর ডিগ্রি থাকতে হবে। ইয়ুথ…
View On WordPress
0 notes
Text
সরকারি চাকরি করতে পারবে না নিষিদ্ধ সংগঠনের কর্মীরা, বললেন আসিফ
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, নিষিদ্ধ সংগঠনের কোনো সদস্যকে প্রজাতন্ত্রের কাজে নিয়োজিত করা যাবে না। তিনি বলেন, এসব প্রতিষ্ঠানের সদস্য যাদের নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে তাদেরও বাদ দেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানান আসিফ মাহমুদ। তিনি লিখেছেন, ‘নিষিদ্ধ সংগঠনের কোনো সদস্য প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত হতে পারবে না। যেসব নিয়োগ এখনো প্রক্রিয়াধীন আছে সেখান থেকেও…
0 notes
Text
গাইবান্ধা সিভিল সার্জনের কার্যালয় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২৪
গাইবান্ধা সিভিল সার্জনের কার্যালয় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২৪ Gaibandha Civil Surgeon Office Job Circular অফিসিয়াল ওয়েবসাইট এ প্রকাশিত হয়েছে। গাইবান্ধা সিভিল সার্জনের কার্যালয় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২৪ বাংলাদেশের সবচেয়ে আকর্ষণীয় সরকারি চাকরির সার্কুলারগুলির মধ্যে একটি। আপনি যদি গাইবান্ধা সিভিল সার্জনের কার্যালয় এ কাজ করতে আগ্রহী হন, আপনি http://csgai.teletalk.com.bd/ এ অনলাইনে আবেদন করতে পারেন।
গাইবান্ধা সিভিল সার্জনের কার্যালয় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২৪
গাইবান্ধা সিভিল সার্জনের কার্যালয় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ এ প্রকাশিত হয়েছে। গাইবান্ধা সিভিল সার্জনের কার্যালয় জব সার্কুলার ২০২৪ এর মাধ্যমে, মোট ১০১ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে। অনলাইন আবেদন শুরু হবে ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সকাল ১০ ঘটিকা থেকে এবং আবেদনপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ১৪ অক্টোবর ২০২৪ বিকাল ০৫ টায়।
গাইবান্ধা সিভিল সার্জনের কার্যালয় চাকরির বিজ্ঞপ্তি ২০২৪
গাইবান্ধা সিভিল সার্জনের কার্যালয় চাকরির বিজ্ঞপ্তি ২০২৪ অনলাইনে http://csgai.teletalk.com.bd/ এ আবেদন করার জন্য নতুন সরকারি চাকরি প্রত্যাশিদের আহ্বান করা হয়েছে।
গাইবান্ধা সিভিল সার্জনের কার্যালয় এর চাকরির বিজ্ঞপ্তি সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি পাওয়ার একটি সুবর্ণ সুযোগ করে দিচ্ছে। গাইবান্ধা সিভিল সার্জনের কার্যালয় এর চাকরির বিজ্ঞপ্তি ২০২৪ বাংলাদেশের সেরা সরকারি চাকরির সার্কুলারগুলির মধ্যে একটি। গাইবান্ধা সিভিল সার্জনের কার্যালয় এর অধীনে কাজ করুন এবং উপার্জন করুন এবং সুন্দরভাবে জীবনযাপন করুন। সুতরাং, আপনি যদি সরকারি চাকরিতে আবেদন করতে আগ্রহী হন তাহলে গাইবান্ধা সিভিল সার্জনের কার্যালয় এর চাকরির বিজ্ঞপ্তি ২০২৪ এ আবেদন করে ফেলুন এখুনি।
0 notes
Text
১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট থেকে ১৯৮১ সময়কাল ছিল স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসের কালো অধ্যায়। ঘোর অমানিশার অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের আমল। জিয়ার শাসনামলকে কেবল বাঙালির ইতিহাসের লজ্জা ও কলঙ্কিত অধ্যায় হিসেবেই অভিহিত করা যায়। জিয়া শাসনামলে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষকে সামরিক কার্ফু মাথায় নিয়ে দিনাতিপাত করতে হতো।
জিয়ার শাসনামল বিশ্লেষণ করলে ভেসে ওঠে একজন সামরিক অফিসারের বন্দুকের নলে ক্ষমতা দখল, নিজেকে সেনাপ্রধান ঘোষণা, অবৈধ উপায়ে একই সাথে সেনাপ্রধান ও রাষ্ট্রপতি থাকা, হ্যাঁ-না ভোট, সামরিক শাসন নিয়ন্ত্রিত ঘরোয়া রাজনীতি, যুদ্ধাপরাধীদের পুনর্বাসন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী রাজনীতি, উগ্র সাম্প্রদায়িক রাজনীতির বিষবৃক্ষ রোপণ, মদ, জুয়া ও পতিতাবৃত্তির লাইসেন্স দেওয়ার মাধ্যমে সামাজিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি, ইচ্ছামতো ফরমান আদেশ অধ্যাদেশ জারি, তথাকথিত ক্যু’র অভিযোগে শত শত সৈনিক হত্যা, ইনডেমনিটি অধ্যাদেশের মধ্য দিয়ে ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকা-ের বিচারের পথ রুদ্ধ করে রাখা ও জেলহত্যা বিচারের উদ্যোগ না নেওয়া, খুনিদের সুরক্ষা ও হত্যাকারীদের বিদেশে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করার মতো কলঙ্কিত ইতিহাস। স্পষ্ট হয়ে ওঠে আজকের বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী রাজনীতি, প্রতিহিংসার রাজনীতি, মিথ্যাচার ও অপপ্রচারের রাজনীতি, দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়নের জন্মসূত্র। সহজেই বোঝা যায়, জিয়া প্রতিষ্ঠিত ‘বিএনপি নামক কলুষিত কুহেলিকায়’ নষ্ট হয়ে চলেছে প্রজন্মের বিভ্রান্ত অংশ।
খুনি মোশতাক-জিয়াচক্রের দুঃশাসন ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি ২৪ আগস্ট ১৯৭৫ মেজর জেনারেল কেএম শফিউল্লাহকে সরিয়ে দিয়ে খুনি মোশতাক তার বিশ্বস্ত দোসর মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানকে সেনাবাহিনীর ‘চিফ অব আর্মি স্টাফ’ নিয়োগ করে। ১৯৭৫ সালের ৩০ আগস্ট খুনি মোশতাক-জিয়া চক্র এক অর্ডিন্যান্স জারি করে রাজনৈতিক তৎপরতা নিষিদ্ধ করে। রাজনৈতিক দল গঠন, সংগঠন প্রতিষ্ঠা বা আয়োজন অথবা রাজনৈতিক দলের সদস্য হওয়া অথবা অন্যভাবে রাজনৈতিক তৎপরতায় শরিক হওয়া অথবা কোনোভাবে রাজনৈতিক কাজে সংশ্লিষ্ট থাকার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। যা লঙ্ঘন করলে সাত বছর সশ্রম কারাদ- অথবা জরিমানা অথবা উভয় দ- দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়।
২৬ সেপ্টেম্বর ১৯৭৫, খুনি মোশতাক-জিয়া চক্র বন্দুকের জোরে কুখ্যাত ‘ইনডিমনিটি অর্ডিন্যান্স’ জারি করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ আগস্টের খুনিদের সুরক্ষা প্রদান করে। কারণ মোশতাক ও জিয়া উভয়ই বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন।
১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর খুনি চক্র ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে সকল নিয়মনীতি ভঙ্গ করে কারাভ্যন্তরে প্রবেশ করে জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন মনসুর আলী, এএইচএম কামারুজ্জামানকে ব্রাশফায়ারে নির্মমভাবে হত্যা করে। এদিন ব্রিগেডিয়ার খালেদ মোশাররফ জেনারেল জিয়ার নিজস্ব বেঙ্গল রেজিমেন্টের ৪৬ ব্রিগেডের কিছু তরুণ অফিসারকে দিয়ে জিয়াকে গৃহবন্দি করেন এবং জিয়াউর রহমান সেনাবাহিনীর প্রধান পদ থেকে পদত্যাগ করেন। ৪ নভেম্বর মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ ‘চিফ অব আর্মি স্টাফ’ পদে নিয়োগ পান। এদিকে ৪ নভেম্বর বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে ছাত্রসমাজের উদ্যোগে প্রতিবাদী নীরব শোক মিছিল ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর বাসায় গিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে। এ মিছিল কলাবাগান এলাকায় পৌঁছলে খালেদ মোশাররফের বৃদ্ধা মাতা ও তার ভাই আওয়ামী লীগ নেতা রাশেদ মোশাররফ অংশগ্রহণ করে। বিষয়টি সকল ষড়যন্ত্রকারীর মাথা ব্যথা ও ভীতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ষড়যন্ত্রকারীরা সর্বত্র প্রচার করতে থাকে ভারতের সহযোগিতায় খালেদ মোশাররফ ক্ষমতা দখল করেছে। মিজানুর রহমান চৌধুরী তার ‘রাজনীতির তিনকাল’ গ্রন্থে লিখেছেন ‘পরদিন এই মিছিলের ছবি খবরের কাগজে ছাপা হলে মুহূর্তে খালেদ মোশাররফ আওয়ামী লীগপন্থি হিসেবে চিহ্নিত হয়ে যান। এ রকম একটা অবস্থার সুযোগ নেয় জাসদ এবং তাদের গোপন সংগঠন বিপ্লবী গণবাহিনী। কর্নেল তাহেরের নেতৃত্��ে এই সংগঠনটির তৎপরতা আগে থেকেই সেনবাহিনীর অভ্যন্তরে ছিল।’ ‘… ৪ নভেম্বর সন্ধ্যা থেকে ক্যান্টনমেন্টে থেমে থেমে মাইকে ঘোষণা করা হতে থাকে ‘ভারতীয় সৈন্যরা বাংলাদেশ দখলের প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং তাদের সহযোগিতাকারী খালেদ মোশাররফকে হটাতে হবে।’
এরই মধ্যে জাতীয় চার নেতার দাফন সম্পন্ন হয়। খালেদ মোশাররফের দাবি অনুযায়ী ৫ নভেম্বর খন্দকার মোশতাক বিচারপতি আবু সাদত মোহাম্মদ সায়েমের কাছে রাষ্ট্রপতির দায়িত্বভার অর্পণ করেন। ৬ নভেম্বর জাতীয় সংসদ বাতিল করা হয়। বিচারপতি সায়েম আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা গ্রহণ করেন। এদিকে কর্নেল তাহেরের নেতৃত্বে আরেকটি অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়। ৬ নভেম্বর রাতেই তারা রেডিও স্টেশন দখল করে নেয়। বিদ্রোহী সেনাদের গুলিতে মহান মুক্তিযুদ্ধের অনুপ্রেরণা সৃষ্টিকারী সাহসী সেনাপতি মেজর খালেদ মোশাররফ, মেজর হুদা ও মেজর হায়দার নিহত এবং কর্নেল শাফায়াত জামিলসহ কয়েকজন আহত হন। কর্নেল তাহের মুক্ত করেন জিয়াউর রহমানকে।
বেইমান জিয়া ও কর্নেল তাহেরের ফাঁসি ৭ নভেম্বর ১৯৭৫ সকালে ঢাকার রাজপথ আবার সেনা ট্যাংকে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। জিয়াউর রহমান মুক্তি পেয়ে বেতার ভাষণের মাধ্যমে কোনোরকম নিয়মনীতিকে তোয়াক্কা না করে নিজেই নিজেকে সামরিক আইন প্রশাসক ঘোষণা করেন। মুক্তি পেয়ে জিয়াউর রহমান প্রথমেই তার মুক্তিদাতা কর্নেল তাহেরের সাথে বেইমানি (ষড়যন্ত্রের ভিতর ষড়যন্ত্র) করেন। প্রকৃতপক্ষে ৭ নভেম্বরকে বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্ধকার দিন অথবা মুক্তিযোদ্ধা হত্যা দিবস বা বেইমানি দিবসও বলা যেতে পারে। যদিও জিয়াউর রহমানের অনুসারী ও তার দল বিএনপি তারই মতো গায়ের জোরে দিনটিকে ‘সিপাহী জনতার বিপ্লব দিবস’ বলে থাকে। যা জিয়াউর রহমানের নিজেকে বন্দুকের নলের মুখে সেনাপ্রধান, আইন প্রশাসক ও রাষ্ট্রপতি ঘোষণার নির্লজ্জ অনুসরণ ব্যতীত কিছুই নয়।
১৯৭৫ সালের ৮ নভেম্বর সামরিক অধ্যাদেশ জারি করে সশস্ত্র বাহিনীর তিন প্রধানকে উপ-সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। ১০ নভেম্বর উপ-প্রধান সামরিক প্রশাসকদের মধ্যে দায়িত্ব বণ্টন করা হয়। কিন্তু ১১ নভেম্বর সামরিক আইন প্রশাসকের পরিবর্তে উপ-সামরিক আইন প্রশাসক জিয়াউর রহমান রেডিও ও টেলিভিশনে ভাষণ দেন। ২০ নভেম্বর জিয়াউর রহমান মেজর জেনারেল এরশাদকে সেনাবাহিনীর ডেপুটি চিফ অব স্টাফ নিয়োগ করেন। ৫ ডিসেম্বর সাতজন আঞ্চলিক সামরিক আইন প্রশাসক নিয়োগ করেন জিয়াউর রহমান।
জিয়াউর রহমান কর্নেল তাহেরসহ জাসদ নেতাদের সাথে বেইমানি (ষড়যন্ত্রের ভিতরে ষড়যন্ত্র) করে ২৩ ও ২৪ নভেম্বর এমএ জলিল, হাসানুল হক ইনুসহ সাজদ ও গণবাহিনীর অধিকাংশ নেতাকে আটক করে। ২৪ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লা হলের এক হাউস টিউটরের বাসা থেকে কর্নেল তাহেরকে গ্রেফতার করা হয়। জাসদের সাথে জিয়াউর রহমানের বেইমানির পরিমাণ এতটাই কঠিন ছিল যে ১৯৭৬ সালের ১৭ জুলাই এক বিশেষ সামরিক আদালতে ‘সরকার উৎ��াত ও সেনাবাহিনীকে বিনাশ করার চেষ্টা চালানোর’ অভিযোগে জাসদ নেতা কর্নেল তাহেরকে মৃত্যুদ- এবং এমএ জলিল, আ স ম আবদুর রব, শাহজাহান সিরাজ, হাসানুল হক ইনু, সিরাজুল আলম খানসহ অনেককেই যাবজ্জীবন কারাদ-সহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করে। জিয়াউর রহমানের সিদ্ধান্তে প্রচলিত আইনকানুন লঙ্ঘন করে সামরিক আদালতে ১৯৭৬ সালের ২১ জুলাই পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল তাহেরকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়।
দালাল আইন বাতিল ও যুদ্ধাপরাধীদের পুনর্বাসন ১৯৭৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বাধীন মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী চক্র এক আদেশে ১৯৭২ সালের দালাল আইন বাতিল করে। এরপর Second Proclamation Order No. 3 of 1975-এর প্রথম তফসিল থেকে বাংলাদেশ দালাল আইনের যে সেফগার্ড ছিল তা তুলে দেওয়া হয়। দালাল আইনে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনীর মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য বঙ্গবন্ধুর সরকার ১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি এক অধ্যাদেশ জারি করে। অধ্যাদেশ অনুযায়ী দালালদের বিচারের জন্য সারাদেশে ৭৩টি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। এরপর বঙ্গবন্ধু সরকার ১৯৭৩ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে। জিয়াউর রহমান দালাল আইন বাতিল করে ১১ হাজার সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধীকে কারাগার থেকে মুক্তি দেন। ১৯৭৬ সালের ১৮ জানুয়ারি দেশত্যাগী পাকিস্তানি নাগরিকদের নাগরিকত্ব ফেরত পাবার জন্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করতে বলা হয়।
১৯৭৬ সালের ৩ মার্চ জিয়াউর রহমান এক সামরিক ফরমান বলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভূলুণ্ঠিত করে বাঙালি জাতীয়তাবাদের পরিবর্তে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ঘোষণা করেন।
১৯৭৬ সালের ৩ মে জিয়াউর রহমান এক অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে সংবিধানের ৩৮নং অনুচ্ছেদ বাতিল করে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির নষ্টপথ উন্মোচন করেন। Second Proclamation Order No. 3 of 1976 জারি করে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংবিধানের ৩৮ অনুচ্ছেদের শর্তাবলী তুলে দেওয়া হয়। Second Proclamation জারি করে সংবিধানের ১২২ অনুচ্ছেদ তুলে দিয়ে দালালদের ভোটার হওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়। যা ১৯৭৭ সালের ২২ এপ্রিল সংবিধানের নবম সংশোধনীর মাধ্যমে আইনে পরিণত করেন জিয়াউর রহমান। Proclamation No. 1 of 1977 জারি করে সংসদে নির্বাচিত হওয়ার লক্ষ্যে সংবিধানের কিছু অংশ তুলে দেওয়া হয়। যার ফলে স্বাধীনতাবিরোধী মুসলিম লীগ, জামাতে ইসলাম, পিডিপি, নেজামে ইসলামসহ অপরাপর ধর্মভিত্তিক উগ্রসাম্প্রদায়িক দলসমূহ তৎপরতা শুরু করে। পুনর্বাসিত হয় যুদ্ধাপরাধী মানবতাবিরোধী অপরাধের সাথে জড়িত রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনীর সদস্যরা।
জিয়া কুখ্যাত স্বাধীনতাবিরোধী শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী বানান। এই শাহ আজিজুর রহমান ’৭১ সালে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে জাতিসংঘে গিয়ে বলেছিল, ‘পাকিস্তানি সৈন্যরা পূর্ব পাকিস্তানে হামলা চালিয়ে অন্যায় কিছু করেনি। স্বাধীনতা নামে সেখানে যা চলছে, তা হলো ভারতের মদদপুষ্ট বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন। বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রের উচিত সেটাকে পাকিস্তানের ��রোয়া ব্যাপার হিসেবে গ্রহণ করা।’ ��িয়ার মন্ত্রিসভায় আরও বেশ কয়েকজন রাজাকার ছিলেন। এরা হলেন মসিউর রহমান, সামসুল হুদা, মির্জা গোলাম হাফিজ, শফিউল আলম, আবদুল আলিম, আবদুর রহমান বিশ্বাস।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর আবদুল আলিম, মসিউর রহমান, শাহ আজিজুর রহমানকে পাকিস্তানের দালাল হিসেবে জেলে পাঠানো হয়েছিল। মসিউর রহমান পাকিস্তান সরকারের ঠিকাদার ছিলেন। সামসুল হুদা ছিলেন পাকিস্তান বেতারের একজন প্রযোজক। সে সময় তিনি মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করে পাক বেতার থেকে কতগুলো অনুষ্ঠান প্রচার করেছিলেন। মির্জা গোলাম হাফিজ ছিলেন পাকিস্তান চীন মৈত্রী সমিতির সভাপতি। তিনি বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে স্বাধীনতাবিরোধী প্রচার চালাতেন। তিনি তার বিবৃতিতে বলেন, বাংলাদেশের এই তথাকথিত মুক্তিযুদ্ধ আসলে একটা ভারতীয় ষড়যন্ত্র।
১৯৭৮ সালের ১১ জুলাই পাকিস্তানের পাসপোর্ট নিয়ে গোলাম আজম ঢাকায় আসেন তিন মাসের ভিসা নিয়ে। তার মেয়াদ ফুরিয়ে গেলেও জিয়া সরকার তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। গোলাম আজম আড়ালে থেকে জামাত দলের কাজ চালিয়ে যান। একসময় গোলাম আজমকে জামাতের আমির বলে ঘোষণা দেওয়া হয়।
জিয়া জাতীয় সংসদে যেমন মুক্তিযোদ্ধা আর পাকিস্তানি দালালদের একই আসনে বসান তেমনি মুক্তিযুদ্ধের প্রণোদনা স্বরূপ ‘জয় বাংলা’ ধ্বনিকে জিন্দাবাদে পরিণত করার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা ধ্বংসের ষড়যন্ত্র চালাতে থাকেন। জিয়া বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিদেশে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেন।
রাজনৈতিক দলবিধি ও ঘরোয়া রাজনীতির বদ্ধ প্রকোষ্ঠে গণতন্ত্র ১৯৭৬ সালের ২৮ জুলাই রাজনৈতিক দল বিধির আওতায় নিয়ন্ত্রিত রাজনৈতিক তৎপরতার সুযোগ দেওয়া হয়। শর্ত দেওয়া হয়, ঘরে বসে রাজনীতি করতে হবে, রাজপথে বা মাঠে যাওয়া যাবে না। অদ্ভুত এই রাজনীতির নাম দেওয়া হয় ‘ঘরোয়া রাজনীতি’।
৪ আগস্ট ১৯৭৬ রাষ্ট্রপতি সায়েম রাজনৈতিক দল গঠনের নীতিমালা (পিপিআর) ঘোষণা করে। কিন্তু শাসকচক্র আওয়ামী লীগের সামনে মেনে নেওয়া অসম্ভব এমন একটি শর্তের প্রাচীর তুলে দেয়। ‘কোনো ব্যক্তিবিশেষের প্রতি ভক্তি বা বিশ্বাস গড়ে তুলতে পারে এমন কোনো নাম দল গঠনের প্রস্তাবিত গঠনতন্ত্রে উল্লেখ থাকতে পারবে না।’ এমন শর্ত জুড়ে দেওয়া ছিল আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধুর অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক বিনষ্টের ষড়যন্ত্র। নানা শর্তের শৃঙ্খলে বন্দী রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যেই ৯ আগস্ট থেকে নতুন ভোটার তালিকা প্রণয়নের কাজ শুরু হয় এবং ৯ অক্টোবর ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়। একদিকে ভোটার তালিকা প্রণয়ন-প্রকাশ, ঘরোয়া রাজনীতির অনুমতি অন্যদিকে সারাদেশে সামরিক আদালত প্রতিষ্ঠা করে তথাকথিত রাষ্ট্রবিরোধী এবং ধ্বংসাত্মক কাজের শাস্তি মৃত্যুদ- কার্যকর করা হতে থাকে। ১৪ সেপ্টেম্বর ২৭টি মহকুমায় সংক্ষিপ্ত সামরিক আদালত গঠন করা হতে থাকে। ৪ নভেম্বর তুমুল বিতর্কের মধ্যেই হৃদয়ে এক ��াগর রক্তক্ষরণ বহন করেই বঙ্গবন্ধুর নাম উল্লেখ না করে অনুমোদন নিতে বাধ্য হয় আওয়ামী লীগ।
১৯৭৬ সালের ২১ নভেম্বর রাষ্ট্রপতি ও প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক এএসএম সায়েম এক ঘোষণার মাধ্যমে পূর্ব প্রতিশ্রুত ফেব্রুয়ারি ১৯৭৭-এর নির্বাচন স্থগিত করতে বাধ্য হন। অথচ ১৯৭৫ সালের ২ ডিসেম্বর সায়েম ঘোষণা করেন ‘দেশে জনগণের প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরই বর্তমান সরকারের প্রধান লক্ষ্য।’ ১৫ ডিসেম্বর তিনি নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। ১৯৭৬ সালের ২২ মার্চ নির্বাচনী এলাকার সীমা নির্ধারণের খসড়াও তৈরি হয়।
জিয়ার জোরপূর্বক রাষ্ট্রপতির পদ দখল ও হ্যাঁ-না ভোট ২৯ নভেম্বর ১৯৭৬ সেনাপ্রধান ও উপ-প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক জেনারেল জিয়া প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক পদ গ্রহণ করেন এবং পরবর্তীতে ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল বিচারপতি সায়েমকে রাষ্ট্রপতির পদ থেকে পদত্যাগে বাধ্য করে জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি হন। প্রকৃতপক্ষে, নির্মোহ চিত্তে জিয়াউর রহমানের রাজনৈতিক জীবন পর্যালোচনা করলে কেবল জিয়াউর রহমানের আমলকে জোরপূর্বক পদ দখল আর বন্দুকের নলের খোচায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিনষ্টের অধ্যাদেশ, আদেশ ও আইন জারির সময়কাল বা ষড়যন্ত্রের অমানিশা বলা যেতে পারে। জেনারেল জিয়াউর রহমান নিজেই এক সামরিক ফরমান জারি করে তিনি নিজেকে প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক তো ঘোষণা করেছিলেনই, আবার নিজেই আরেক ফরমান জারি করে ঘোষণা দেন তিনি দেশের ‘প্রেসিডেন্ট’ও। কে তাকে প্রস্তাব দিল, কে তাকে ভোট দিল! কোনো ঘটনারই প্রয়োজন পড়ল না, শুধু সামরিক ফরমান জারি করে বলেছিলেন, ‘এখন থেকে তিনিই দেশের প্রেসিডেন্ট।’
১৯৭৭ সালের ৩০ মে জিয়াউর রহমান একা ‘প্রেসিডেন্ট প্রার্থী’ হয়ে ‘হ্যাঁ কিংবা না’ ভোট দেন। কিন্তু এককভাবে নির্বাচনে প্রার্থী বিষয়ে গণতন্ত্রের প্রশ্ন ছাড়াও বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীর যে বিধিমালা রয়েছে তাতেও তিনি প্রার্থী হতে পারেন না। বাংলাদেশ আর্মি অ্যাক্ট ২৯২ ও ২৯৩ বিধিতে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে, সামরিক বাহিনীর কোনো সদস্য তার চাকরির মেয়াদ শেষ না হতে কোনো নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। জিয়াউর রহমান ১৯৭৭ সালে সামরিক বাহিনীতে সেনাবাহিনী প্রধান হিসেবে চাকরিরত ছিলেন। সুতরাং, ‘হ্যাঁ-না’ ভোটে নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া ছিল সম্পূর্ণ বেআইনি ও আইনের বরখেলাপ। সে হিসেবে জিয়াউর রহমান ছিলেন অবৈধ রাষ্ট্রপতি। ১৯৭৮ সালের ২৮ এপ্রিল জিয়াউর রহমান একই সাথে সেনাপ্রধান ও রাষ্ট্রপতি থাকার জন্য একটি সামরিক ফরমান জারি করেন। দেশের সংবিধান, আইন-কানুন, সামরিক বাহিনীর বিধি অবৈধভাবে বারবার নিজের স্বার্থে পরিবর্তন এবং জারি করেছেন জিয়াউর রহমান।
তথাকথিত অভ্যুত্থান ও সামরিক বিচারের নামে দেশপ্রেমিক সৈনিকদের হত্যা
১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর ঢাকায় সামরিক বাহিনীর একটি ক্ষুদ্রাংশের অভ্যুত্থানের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে সেনাশাসক জিয়াউর রহমানের নির্দেশে বিশেষ ট্রাইব্যুনালের কথিত বিচারে সেনা ও বিমানবাহিনীর সদস্যদের ফাঁসি দেওয়া হয়। ২ অক্টোবরের অভ্যুত্থানের অভিযোগে গঠিত ট্রাইব্যুনালের কথিত বিচারে ঢাকায় ১৯৭৭ সালের ৯ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত এবং কুমিল্লা ২৯ অক্টোবর থেকে ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত ফাঁসিগুলো কার্যকর করা হয়। এদের ��ধ্যে ১৯৩ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়। ওই ঘটনার পূর্বাপর মৃতের সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় এটা স্পষ্ট যে, বিচারের আওতার বাইরে অনেককে মরতে হয়েছে। এমন কী দেশবাসীকে জানানো হয়নি ওই ব্যর্থ অভ্যুত্থানের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে কাদের এবং কতজনকে সুস্পষ্ট কী অপরাধে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল। অভিযুক্ত কয়েকজনের ভাষ্যমতে, অভ্যুত্থান-পরবর্তী দুই মাসে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ সৈনিককে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে কিংবা ফায়ারিং স্কোয়াডে হত্যা করা হয়। ঢাকায় ১২১ জন আর কুমিল্লায় ৭২ জনের ফাঁসি হয়।
এ ছাড়া ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ৫ শতাধিক সৈনিককে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদ-ে দ-িত করা হয়। ১৯৮৭ সালে বিমান বাহিনী থেকে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর ইতিহাস’ পুস্তিকার একটি অধ্যায়ে বলা হয়, ঐ ঘটনার পর প্রশাসনিক ব্যবস্থায় ৫৬১ জন বিমানসেনা প্রাণ হারায়। ঐ পুস্তিকা পরবর্তীকালে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। ১৯৭৮ সালের ৫ মার্চ লন্ডন টাইমস-এর এক প্রতিবেদন বলা হয়, ঐ ঘটনায় সামরিক বাহিনীর ৮ শতাধিক সদস্যের সাজা হয় এবং প্রায় ৬০০ জনকে ফাঁসির মাধ্যমে কিংবা ফায়ারিং স্কোয়াডে হত্যা করা হয়, যার অধ���কাংশই বিমানবাহিনীতে ছিলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমদ রচিত ‘মিলিটারি রোল অ্যান্ড দি মিথ অফ ডেমোক্রেসি’ গ্রন্থে এই তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে, ১৯৭৭-এর ৩০ সেপ্টেম্বর ও ২ অক্টোবর যথাক্রমে বগুড়া ও ঢাকায় ব্যর্থ সেনা-অভ্যুত্থানের পর গোপন সামরিক ট্রাইব্যুনালে দ্রুত বিচার করে সেনা ও বিমানবাহিনীর শত শত ননকমিশন্ড অফিসার ও সৈনিককে ফাঁসিতে ঝোলানে হয়। ১৮, ১৯, ২০ ও ২১ অক্টোবর রাজশাহী কারাগারে এদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। জিয়া ঘোষিত মার্শাল ল’ ট্রাইব্যুনালগুলোতে বিচারের নামে প্রহসনে এক একজন সৈনিকের জীবন-মরণের সিদ্ধান্ত নিতে ট্রাইব্যুনাল প্রধানরা এক মিনিটেরও কম সময় নিতেনÑ যাদের অনেকেরই আর্মি অ্যাক্ট অনুসারে বিচারক হবার যোগ্যতা ছিল না। অভিযোগ রয়েছে জিয়া একদিকে অভ্যুত্থানের নামে, বিদ্রোহের নামে হাজার হাজার সৈন্য ও সৈনিক অফিসার নিধন করেন, অন্যদিকে তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকেও শক্ত হাতে দাবিয়ে রাখেন। এ সময় সেনাবাহিনী ও বিমান বাহিনীর আড়াই হাজার অফিসার হত্যা করা।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ১৯৭৭ সালের এপ্রিলের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ঐ সময় বাংলাদেশে রাজনৈতিক বন্দীর সংখ্যা ছিল ১০ থেকে ১৫ হাজার। বাংলাদেশের সংবাদপত্রগুলোর মতে এই সংখ্যা আরও বেশি, প্রায় ৬২ হাজার।
এসব বন্দীর মধ্যে বেশ কিছু সংখ্যক ছিলেন সাংবাদিক, লেখক ও অন্যান্য শ্রেণির বুদ্ধিজীবী। এদের মধ্যে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য পদার্থবিজ্ঞানী ড. মতিন চৌধুরীর নাম অন্যতম�� তার বিরুদ্ধে দায়ের করা হয় ৭টি মামলা। পশ্চিমা বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থা বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি ড. চৌধুরীর মুক্তি দাবি করে জিয়া সরকারকে চিঠি দেন। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি। ড. চৌধুরীর অপরাধ তিনি বঙ্গবন্ধুর প্রিয়পাত্র ছিলেন। বঙ্গবন্ধু তাকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে নতুন করে গড়ে তোলার জন্য। জেলে ড. চৌধুরীর স্বাস্থ্য একেবারে ভেঙে পড়ে। ১৯৮১ সালের ২৪ জুন হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তিনি মারা যান।
বিএনপির জন্ম ও যুদ্ধাপরাধীদের প্রতিষ্ঠা ১৯৭৭ সালের ১৫ ডিসেম্বর জিয়াউর রহমান এক বেতার ভাষণে বাংলাদেশি জাতীয়বাদের ভিত্তিতে একটি ফ্রন্ট ঘোষণার কথা বলেন। অতঃপর ১৯৭৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জিয়াউর রহমান জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল (জাগদল) নামে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন। তিনি নিজে এই দলের নেতৃত্বে না থাকলেও উপ-রাষ্ট্রপতি আবদুস সাত্তারের নেতৃত্বে এই দল গঠিত হয়। কিন্তু জাগদল সুপরিচিত রাজনৈতিক ব্যক্তিদের আকৃষ্ট করতে ব্যর্থ হওয়ায় জিয়া রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রাক্কালে অন্যান্য দলের সমন্বয়ে জাতীয়বাদী ফ্রন্ট গঠন করেন।
১৯৭৮ সালের ২১ এপ্রিল এক ঘোষণার মাধ্যমে ১৯৭৮ সালের ৩ জুন রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ঘোষণা দেয় জিয়াউর রহমান। জিয়া বিরোধী দলগুলোকে মাত্র ৪০ দিনের নোটিসে নির্বাচনে আহ্বান করেন এবং মাত্র ২৩ দিন তাদের প্রচারণার সুযোগ দেন। অন্যদিকে তিনি নিজের নির্বাচনী প্রচারণার জন্য সরকারি প্রশাসনযন্ত্রকে পুরোপুরি কাজে লাগান। সরকারি মালিকানাধীন টিভি, রেডিও এবং সংবাদপত্রকে একচ্ছত্রভাবে কাজে লাগানো হয়। সর্বোপরি জিয়াউর রহমান একাধারে প্রেসিডেন্ট, প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক, সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক এবং সেনাবাহিনীর স্টাফ প্রধান ছিলেন। আর কিছু ঘটুক বা নাই ঘটুক, এসব ক্ষমতার বলে এটা নিশ্চিত হয়েছিল যে, পুলিশ এবং সরকারি কর্মচারীরা তার পক্ষে কাজ করবে। স্বয়ং জিয়া কর্তৃক ঘোষিত রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অধ্যাদেশ-১৯৭৮ অনুযায়ী ঐ ব্যক্তি প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হতে পারবেন না যিনি সরকারি চাকরি করেন এবং এতে বেতন গ্রহণ করতে থাকেন। জিয়া এই অধ্যাদেশ লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে ১৯৭৮-এর নির্বাচনে দাঁড়িয়ে অবৈধ প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন।
১৯৭৮ সালের আগস্ট মাসে জিয়া জাতীয়বাদী ফ্রন্ট ভেঙে দেন এবং ২৮ আগস্ট নিজের নেতৃত্বে বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দল (বিএনপি) নামে একটি দল গঠন করেন। তখনও জিয়াউর রহমান সেনাপ্রধান। একজন সেনাপ্রধানের নেতৃত্বেই জন্ম হয় বিএনপির। কার্যত, জন্মগতভাবেই বিএনপি স্বৈরশাসন ও গণতন্ত্রবিরোধী রাজনৈতিক মতাদর্শের উত্তরাধিকার। পরে ১৯৭৮ সালের ১৫ ডিসেম্বর প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক ও রাষ্ট্রপতি জেনারেল জিয়া এক ফরমান জারি করে রাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন এনে প্রেসিডেন্টের হাতে প্রায় সকল ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করেন। সকল ক্ষমতা কুক্ষিগত করার পর নির্বাচনী প্রচারের স্বল্প সুযোগ দিয়ে ১৯৭৯ সালের ২৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষিত হয়।
এ সময় আওয়ামী লীগসহ বেশ কয়েকটি দল আপত্তি জানায়। আপত্তির মুখে ২৭ জানুয়ারির পরিবর্তে ১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের পুনঃতফসিল ঘোষণা করা হয়। জিয়া সরকার নিয়ন্ত্রিত কারচুপির এ নির্বাচনে দুই-তৃতীয়াংশ আসন পায় বিএনপি। চলতে থাকে গণতন্ত্রের মুখোশে সামরিক শাসন। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন তার ‘বাংলাদেশ : রক্তাক্ত অধ্যায় ১৯৭৫-৮১’ গ্রন্থে বলেছেন, জিয়াউর রহমান রাজনৈতিক স্লোগান হিসেবে জনতাই ক্ষমতার উৎস বললেও তার মৃত্যু পর্যন্ত সশস্ত্র বাহিনীই তার ক্ষমতার উৎস হয়ে থাকে।
পঞ্চম সংশোধনী ও খুনিদের সুরক্ষায় জিয়াউর রহমান ১৯৭৯ সালের ২ এপ্রিল জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়। সংসদ অধিবেশনের প্রথম দিনেই জিয়ার বিএনপি সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বিল উত্থাপন করে। এই পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকা-, ক্ষমতা দখলকারী খুনি মুশতাক কর্তৃক সংবিধান স্থগিত করা ও অক্টোবরে সংসদ ডাকা, ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট ও ৩ নভেম্বরের হত্যাকা-ের সাথে জড়িতদের বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়া এবং পরবর্তীকালে বৈদেশিক মিশনে তাদের চাকরির ব্যবস্থা করা, খালেদ মোশাররফ, হুদা, হায়দার ও তাদের সহযোগীদের হত্যা, বিচারপতি সায়েমের প্রেসিডেন্ট ও সিএমএল’র পদ গ্রহণ, ডিসিএমএলএ থেকে জিয়ার সিএমএলএ হওয়া, বিচারপতি সায়েমের পদত্যাগ ও জিয়ার প্রেসিডেন্ট পদ দখল, হ্যাঁ-না ভোট, সামরিক পোশাক পরা অবস্থায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করে নিজে প্রেসিডেন্ট হওয়াসহ সকল কর্মকা-কেই সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। সামরিক আইনের বা সামারি ট্রায়ালের মাধ্যমে এক মিনিটে বিচার করে সেনাবাহিনীর সদস্যদের ফাঁসিতে ঝুলানোর বিষয়টিও আইনসম্মত করা হয় এই পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে।
মাত্র তিন দিন সংসদে আলোচনার মধ্য দিয়ে ৫ এপ্রিল পঞ্চম সংশোধনী বিল পাস করে বিএনপি। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট ও ৩ নভেম্বরের হত্যাযজ্ঞ তদন্ত করতে ১৯৮০ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ আইনপ্রণেতা স্যার টমাস উইলিয়ামসের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠিত হয়। ওই কমিশনের প্রতিনিধিরা ঘটনা তদন্তের জন্য বাংলাদেশ সফরে আসতে চাইলেও তাদের ভিসা দেয়নি জিয়াউর রহমানের তৎকালীন সরকার। এরপর ১৯৮১ সালের ১৪, ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনাকে সভাপতি নির্বাচিত করা হলে বঙ্গবন্ধু-কন্যাকে দেশে ফিরতে বাধা দেন জিয়া। সকল বাধা ও হুমকি উপেক্ষা করে ১৯৮১-এর ১৭ মে বঙ্গবন্ধু-কন্যা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করলে ধানমন্ডি বত্রিশস্থ বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনাকে প্রবেশ করতে দেননি জিয়াউর রহমান।
জেনারেল জিয়া জাতীয় প��াকা ও জাতীয় সংগীত পরিবর্তনেরও চেষ্টা করেন। ধুঁয়া তোলা হয় জাতীয় সংগীত হিন্দুর রচিত গান। বিশিষ্ট সাংবাদিক আজিজুল ইসলাম ভূইয়া তার ‘বিএনপি ও সাম্প্রদায়িক রাজনীতি’ গ্রন্থে লিখেছেন, চট্টগ্রামে একটি অনুষ্ঠান শেষে সার্কিট হাউসে জিয়াকে তার দলের একজন নেত��� বলেছিলেন, ‘স্যার, আমাদের পতাকায় ইসলামি রং নেই, এটা আমাদের ভালো লাগে না। এটা ইসলামি তাহজ্জীব ও তমুদ্দুনের সাথে মিলছে না।’ তার কথার প্রত্যুত্তরে জিয়াউর রহমান বলেন, ‘হবে, হবে, সব কিছুই হবে। আগে হিন্দুর লেখা জাতীয় সংগীতটি বদলানো হোক। তারপর জাতীয় পতাকার কথা ভাববো।’
আকণ্ঠ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত ছিল জিয়ার শাসনামল প্রেসিডেন্ট জিয়া রাষ্ট্রীয় টাকার বিপুল অপচয় ঘটিয়ে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক কাঠামোর বিভিন্ন স্তরে নানা কৌশলে দুর্বৃত্তায়নের সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ১৯৭৮ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এক প্রস্থ ভোটার তালিকার দাম ছিল ৬০ হাজার মার্কিন ডলার। বঙ্গবন্ধুর আমলে যেখানে প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় হতো মূল বাজেট বরাদ্দের ১৩ শতাংশ, সেখানে জিয়ার আমলে তা দাঁড়ায় ২৯ শতাংশ।
জিয়া দেশের যুবকদের দুর্নীতিগ্রস্ত করতে যুব কমপ্লেক্সের নামে দেশজুড়ে উন্মুক্ত-চাঁদাবাজির প্রচলন করেন। মাত্র তিন বছরে বাংলাদেশে ৩ হাজার ৬৭০টি যুব কমপ্লেক্স করা হয়। এই যুব কমপ্লেক্সের আয়ের উৎস ছিল দেশের হাট-বাজার ও মেলা থেকে আদায়কৃত টাকা। ১৯৭৯-৮০, ১৯৮০-৮১ এই দুই অর্থবছরে বাজার ও মেলা থেকে আয় হয়েছিল ১২ কোটি ৭৪ লাখ ৮৭ হাজার ২০০ টাকা। এসব টাকা গেছে যুব কমপ্লেক্সের অন্তর্ভুক্ত সমবায় সমিতির পান্ডাদের পকেটে, জিয়া চোখ বন্ধ করে ছিলেন, কারণ ওরাই তো তার রাজনৈতিক সমর্থক। (অ্যান্টনি : বাংলাদেশ : এ লিগেসি অব ব্লাড)।
বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশে পাকিস্তানিদের যেসব সম্পত্তি জাতীয়করণ করেছিলেন, তা জিয়া তাদের ফিরিয়ে দেন। যাদের ফিরিয়ে দিতে পারেন নি তাদের ক্ষতিপূরণ দেন। জিয়া মদ, জুয়া ও পতিতাবৃত্তির লাইসেন্স প্রদান করে সমাজ নষ্টের বিষবৃক্ষ রোপণ করেন। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান তখনকার প্রজন্মকে দুর্নীতিগ্রস্ত করে তুলেছিলেন। এটা করেছেন তিনি বিভিন্ন পন্থায়। গ্রাম্য যুবকদের একাংশ তিনি হাট-বাজারের ইজারার অধিকার দিয়ে দলীয় ক্যাডারে পরিণত করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাত খুনের লোমহর্ষক ঘটনায় আটক সর্বহারা পার্টির সদস্য শফিউল আলম প্রধানকে জেল থেকে মুক্ত করে দেন জিয়াউর রহমান। জিয়া মেধাবী ছাত্রদের নষ্ট রাজনীতির পঙ্কিল পথে টেনে আনেন। এর ফলেই সৃষ্টি হয় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। এসব মেধাবী ছাত্ররা লেখাপড়া ভুলে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে টেন্ডারবাজি, তদবিরবাজি, হলের সিট ভাড়া ইত্যাদি বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত হয়।
১৯৮০ সালের ১০ সেপ্টেম্বর টাইমস অব ইন্ডিয়ার একটি প্রতিবেদনে বাংলাদেশের সরকারি পরিসংখ্যানের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, মুজিব আমলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম ��তটুকু এগিয়েছিল, জিয়ার আমল তার কাছাকাছিও যেতে পারেনি।
পশ্চিমা ভাষ্যকারদের মত সমর্থন করে ঐ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ‘বাংলাদেশ কঠিন অর্থনৈতিক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। বাংলাদেশের পরিকল্পনা কমিশনের তথ্য দিয়ে ঐ প্রতিবেদনে দেখানো হয়, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন দ্রুত কমতির দিকে।’
পাকিস্তানের পাঁচজন নামকরা সাংবাদিক জিয়া হত্যার মাত্র মাসখানেক আগে বাংলাদেশে বেড়াতে এসে দেশের রাজনীতি আর দুর্নীতির এক করুণ চিত্র তুলে ধরেন।
মারকাস ফ্রান্ডা তার ‘জিয়াউর রহমান : বাংলাদেশ’ নামক সমীক্ষা গ্রন্থে বলেন, ‘একটি ক্ষুদ্র নব্য ধনী শ্রেণির হাতে বৈদেশিক সাহায্যপ্রাপ্ত অর্থের নিয়ন্ত্রণ চলে যাওয়ায় দেশে পরস্পর বিরোধী দুই ধরনের অর্থনীতি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এর ফলে, একদিকে ঢাকাকেন্দ্রিক একটি শ্রেণি দিন দিন উন্নত ও ধনবান হচ্ছে, অন্যদিকে গ্রামাঞ্চলের অবস্থা খারাপ থেকে অধিকতর খারাপ হয়ে পড়ছে।’
বিশ্বব্যাংকের হিসাব মতে, ১৯৭২-৭৫ সালে বাংলাদেশের জাতীয় আয় বৃদ্ধির বার্ষিক হার ছিল গড়ে ৫ শতাশ। বাংলাদেশ সরকারের পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাবে এ সময়ে আয় বৃদ্ধির বার্ষিক হার ছিল ৭ শতাংশ। সেখানে ১৯৭৬-১৯৮০ সালে (মুশতাক-জিয়া আমল) জাতীয় আয় বৃদ্ধির হার কমে দাঁড়ায় ৪.৭ শতাংশ এবং ১৯৮০-৮১ হতে ১৯৮৫-৮৬ সালে (জিয়া-এরশাদ আমল) জাতীয় আয় বৃদ্ধির হার আরও হ্রাস পেয়ে মাত্র ৩.৬ শতাংশে দাঁড়ায়। ১৯২-৭৩ সাল হতে ১৯৭৫-৭৬ সাল পর্যন্ত খাদ্য উৎপাদন ৮.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পায় আর ১৯৮০-৮১ সাল পর্যন্ত উৎপাদন ২.১ শতাংশ হারে নেমে যায়। ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর আমলে বিদেশি সাহায্য এসেছিল ১ হাজার ৮৩১ কোটি টাকা, যার সিংহভাগ ব্যবহৃত হয় যুদ্ধোত্তর পুনর্বাসন প্রকল্পে।
বিএনপি আমলে বৈদেশিক সাহায্যের পরিমাণ ছিল ১০ হাজার ৬৮৭ কোটি টাকা। স্বৈরাচার সরকারের আমলে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক সাহায্য আসলেও দুর্নীতি-অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার কারণে তা জনগণের কোনো কাজে লাগে নি। মুষ্টিমেয় কিছু লোক রাতারাতি ধনি বনে গেছেন। যার ফলে ৮৬ শতাংশ লোককে দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করতে হয়েছে। যেখানে আওয়ামী লীগের সময় যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশেও দারিদ্র্যের হার ছিল ৫০ শতাংশ সেখানে জিয়া ও এরশাদের আমলে দারিদ্র্যের হার যথাক্রমে ৬৫ এবং ৮৬ জনে দাঁড়ায়। এমনকি বঙ্গবন্ধুর আমলে যেখানে বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ছিল ৮৬ কোটি ডলার সেখানে জেনারেল জিয়া ও এরশাদের আমলে তার পরিমাণ বেড়ে যথাক্রমে ৩৮০ কোটি ডলার ও ১০৩৫ কোটি ডলারে দাঁড়ালেও দুর্নীতি-অনিয়ম ও অপচয়ের কারণে প্রবৃদ্ধির হার কমে যায়, দারিদ্র্যের হার বৃদ্ধি পায় এবং অর্থনীতি প্রায় ভেঙে পড়ে।
আওয়ামী লীগ আমলে প্রবৃদ্ধির হার ছিল সর্বাপেক্ষা বেশি ৭.০৬ শতাংশ। জিয়ার আমলে প্রবৃদ্ধি কমে গিয়ে দাঁড়ায় ৪.৭৫ শতাংশে। বঙ্গবন্ধুর আমলে ভূমিহীনের সংখ্যা ছিল ৩৫ শতাংশ, জেনারেল জিয়ার আমলে ভূমিহীনের সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় ৫৫ শতাংশ। আওয়ামী লীগের আমলে যেখানে বেকার সংখ্যা ছিল শতকরা ১�� জন, সেখানে জিয়ার বিএনপি আমলে তা দ্বিগুণ হয়ে ৩০ জনে দাঁড়ায়।
0 notes
Link
বাংলাদেশে একটি সময় কোটা ব্যবস্থা কার্যকর ভূমিকা রেখেছে এবং বর্তমানে তা কমিয়ে আনা এখন সময়ের দাবী- ছাত্র -ছাত্রীগণ বা চাকরি প্রত্যাশীরা কোটা ব্যবস্থা যৌক্তিক পর্যায়ে নামিয়ে আনার জন্য রাজপথে আন্দোলন করছে-Total Quota for Govt. Staff 14-20 Gradeবাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে নিয়োগ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে ২০% পোষ্য কোটা প্রযোজ্য। এই কোটা সরকারি চাকরিজীবী বা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক এর সন্তানদের জন্য। পোষ্য কোটায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ, বাংলাদেশ রেলওয়ে, অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি বা নিয়োগ পাওয়া যায়।
0 notes
Text
Air Force Job Circular 2024 – (২০২৪) বাংলাদেশ বিমান বাহিনী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
বাংলাদেশ বিমান বাহিনী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২৪ প্রকাশিত হয়েছে। বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে চাকরি করা সকলের জন্য এটি একটি স্বপ্নের সুযোগ। আপনি যদি চাকরি করতে আগ্রহী হন, তবে নিচে দেওয়া তথ্য দেখুন: পদের নাম: বাংলাদেশ বিমান বাহিনী মৌখিক পরীক্ষা: জুন ২০২৪ আবেদনের শেষ সময়: ২৫ জুলাই ২০২৪ আবেদন প্রক্রিয়া: অনলাইনে আবেদন করুন যোগ্যতা: মাধ্যমিক পাস থেকে স্নাতক পাস পদের সংখ্যা: বিভিন্ন পদে মোট ১০,০০০…
View On WordPress
0 notes
Text
গার্মেন্টস নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২৪
আমি মনে করি আপনি অবশ্যই গার্মেন্টসে চাকরি নিতে চান? আর এজন্যই আপনি এই পোস্টটি মূলত ওপেন করেছেন। তো গার্মেন্টসে চাকরি নেওয়ার জন্য বা কোন পদে আপনি চাকরি করবেন সেটা আপনার যোগ্যতার উপর নির্ভর করবে। বিস্তারিত জানতে...
0 notes
Text
ग्रेजुएशन पास कर सकते हैं IB की इस नौकरी के लिए अप्लाई, सेलेक्ट हुए तो मिलेगी बढ़िया सैलरी
আইবি চাকরি 2023: স্নাতক পাস এই চাকরির জন্য আবেদন করতে পারেন, নিবন্ধন চলছে, নির্বাচিত হলে আপনি ভাল বেতন পাবেন। Source link
View On WordPress
#995 টি পদের জন্য IB ACICO নিয়োগ 2023#IB ACICO নিয়োগ 2023#IB ACICO নিয়োগ 2023 যোগ্যতা#IB ACICO নিয়োগ 2023 রেজিস্ট্রেশন চলছে#IB ACICO নিয়োগ 2023 রেজিস্ট্রেশনের শেষ তারিখ#আইবি নিয়োগ 2023#ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো#এমএইচএ#সরকারি চাকরি
0 notes
Link
0 notes
Text
খাদ্য মন্ত্রণালয় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি 2024
খাদ্য মন্ত্রণালয় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২৪ – Ministry of Food Job Circular 2024 চাকরিক খবর প্রকাশিত হয়েছে। আপনারা যারা খাদ্য মন্ত্রণালয় চাকরি করতে ইচ্ছুক তারা আবেদন করতে পারেন। আমরা সবসময় সকল প্রকার চাকরি যেমন সরকারি চাকরি বেসরকারি চাকরির ��বর সবার আগে প্রকাশ করে আপনাদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টায় কাজ করে থাকি। খাদ্য মন্ত্রণালয় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি নিয়ে আজকের পুরো আলোচনা করবো। আশা করছি আজকে আপনি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বা চাকরির খবর এর কনটেন্ট পুরোপরি পড়বেন।
0 notes
Text
0 notes
Text
আপনি যদি বাংলাদেশের চলমান সকল সরকারি চাকরির খবর দেখতে চান তাহলে আপনার জন্য সহজ একটি সমাধান হতে পারে আমাদের ওয়েবসাইট https://bdgovt.info।
আপনি খুব সহজে আমাদের ওয়েবসাইট থেকে বাংলাদেশের চলমান সকল সরকারি চাকরিরসহ জনপ্রিয় সকল প্রাইভেট চাকরির খবর জানতে পারবেন।
আমরা এই চাকরির বিজ্ঞপ্তি গুলো কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইট থেকে ও বিশ্বস্ত বাংলাদেশের দৈনিক জাতীয় পত্রিকা থেকে সংগ্রহ করে থাকি। যা আপনি নিঃসন্দেহে বিশ্বাস করতে পারেন।
তারপরও আপনাদের সুবিধার্থে আমি কয়েকটি জনপ্রিয় সরকারি চাকরির চলমান বিজ্ঞপ্তি নিচে উল্লেখ করে দিচ্ছি।
০১. বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস করপোরেশন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২৪
০২. জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২৪
এছাড়াও আপনি আমাদের ওয়েবসাইট থেকে চাকরি সম্পর্কিত সকল আপডেট খবর জানতে পারবেন। আমরা চাকরির পরীক্ষার সময়সূচি, চাকরির পরীক্ষার ফলাফল, চাকরির অফিসিয়াল বিজ্ঞপ্তি, সরকারি চাকরির সম্পর্কিত সকল আপডেট খবর প্রকাশ করি।
আমাদের এই আর্টিকেলটি দেখার জন্য আপনাকে আমার মন থেকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আপনার দিনটি শুভ হোক।
0 notes
Text
যদি সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল হয়..! SSC অযোগ্য শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বিরাট মন্তব্য ডিভিশন বেঞ্চের
নিউজ ডেস্ক: স্কুল সার্ভিস কমিশনের অযোগ্য শিক্ষক নিয়োগ মামলায় বড় প্রশ্ন তুলে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। ‘যদি সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল হয়, তবে অনেক যোগ্য প্রার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হবেন’, তাঁদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, জনগণের টাকা কেন এভাবে নষ্ট হবে? প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। এদিন মামলার শুনানিতে SSC র পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, মূল মামলাকারীরা দুর্নীতি করে চাকরি পাওয়ার চেষ্টা করেছেন, পাননি বলে…
View On WordPress
0 notes